অভিজিত রায়, ওয়াশিকর রহমান বাবু, অনন্তের হত্যাকান্ড নিঃসন্দেহে একটা বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। কিন্ত মাথাটা আওয়ামী লীগের না বাংলাদেশে আই সি সিস সিম্প্যাথাইজারদের সেটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে । অভিজিতের মৃত্যুর আগেও হাসিনা কোনঠাসা ছিলেন গণতন্ত্রের প্রশ্নে। ইউ এন থেকে ইউরোপের নানান দেশ তাকে চাপ দিচ্ছিল খালেদার সাথে বসতে। এখন সেই চাপ উধাও। বাংলাদেশে ব্লগার হত্যা এমন ভাবে বিদেশে প্রচারিত, এখন হাসিনার ওপর চাপ জঙ্গী দমনের জন্য। বিদেশে কেও আর বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে চিহ্নিত না । এটা হাসিনার সামনে বিরাট সুযোগ। তিনি আগামী মাসগুলিতে চোর পুলিশ খেলিয়ে বিদেশীদের চোখে “আমি নইলে চলিবে না ” কনসেশন আদায় করে নিতে পারবেন। ব্লগার হত্যার প্রেক্ষাপটে বিদেশী রাষ্ট্রদূতরা আর বাংলাদেশে গণতন্ত্র নিয়ে হাসিনার ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন না ।
আসলে এই সংসদীয় বুর্জোয়া রাজনীতিতে সব পার্টিই ভোটপন্থী। এরা নানান ভোটিং ব্লককে তুষ্ট করার চেষ্টা করে। কারন ক্ষমতা পাওয়া মানেই কোটি কোটি টাকার বরাত পাওয়া। কোন আদর্শের যদি ভোটিং ব্লক থাকে তবেই এরা সেই আদর্শের কথা শুনবে। বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলমান যেখানে সপ্তম শতাব্দির আরবে বাস করতে চান, সেখানে ক্ষমতাসীন পার্টি কি করে প্রগতিশীল চিন্তাধারাতে চলবে ?
মুশকিল ! কি যে হচ্ছে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না । শুনছি বাংলাদেশের মিলিটারীর মধ্যে একটা অংশ নাকি জঙ্গীদের সাথে-তারা দক্ষিন বাংলাদেশে আগে আই সিসের ফ্ল্যাগ ওড়াবে। বাংলাদেশের মিলিটারী এবং প্যারামিলিটারির একটা অংশ নাকি জঙ্গিদের সাথে যোগ দেবে। গৃহযুদ্ধ আসন্ন ? এগুলো কন্সিপিরেসি থিওরী? অভিজিত-বাবু-অনন্তের মৃত্যুর পরে কোনটা যে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব, আর কোনটা যে বিশ্বাসযোগ্য-কিছুই বুঝছি না । কারন এদের হত্যাকারীরা ধরা পড়ছে না । ফলে আওয়ামী লীগ-জঙ্গী আঁতাতের প্রশ্ন উঠছে। কারন স্বাভাবিক বুদ্ধিতে সেখানেই লাভের গুড়ের গন্ধ পাচ্ছে সবাই।
পশ্চিম বঙ্গে ইসলামিক জঙ্গীদের দুটো উইং কাজ করছে। একটা হচ্ছে সরাসরি বোমা বন্দুক একশন কমিটি। এরা আবার স্থানীয় রাজনৈতিক পার্টির পেয়ারের লোক। কারন এদের বাহুবলেই ভোট হয় আজকাল। অন্যটা হচ্ছে এদের শিক্ষিত ইন্টেলেকচুয়াল উইং-তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বঞ্ছনার প্রশ্ন গুলি তুলে ( যে বঞ্চনাগুলিও বাস্তব রূঢ় সত্য ), একটা বিরাট অংশের মুসলিমকে খেপিয়ে তুলছে। ওপরে দেখাচ্ছে জামাতের নামে মুসলমানদের অধিকার নিয়ে এরা কাজ করছে। এরাই হাসিনার বিরুদ্ধে কোলকাতায় সমাবেশ ডাকছে। বাংলাদেশের দক্ষিন বঙ্গে আই সিসের সমর্থকরা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে সমর্থ হলে, পশ্চিম বঙ্গে চব্বিশ পরগণা, নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদে কাষ্মীরের মতন পরিস্থিতি তৈরী হবে। বদ্বীপের এই সব জেলাগুলিতে মুসলমানদের সংখ্যা বেশী-কিন্ত অর্থনৈতিক ও অন্যান্য ক্ষমতা হিন্দুদের হাতে। ফলে এই সব জেলাগুলিতে কাষ্মীরের স্টাইলে মুজাদিহিন তৈরী হবে। কাশ্মীরি পন্ডিতদের মতন এইসব জেলাগুলি থেকে হিন্দু বিতরন আর কয়েক দশকের অপেক্ষা। ছোটখাট যেসব দাঙ্গা হচ্ছে-সেগুলো বড় ভুমিকম্পের আগের মৃদু কম্পন।
মূল সমস্যাটা অবশ্যই সেই ধনের বৈষম্য এবং সমাজের প্রান্তিক শ্রেনী- পিলসূজ-সেই দরিদ্র নিপীড়িত জনগণের জন্য গণতন্ত্রের ব্যর্থতা । যেখানে এই শ্রেনীটাকে ভাঙিয়ে বাকি সবাই লুঠছে। যন্ত্র সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে এরা আরো প্রান্তিক। এদের কায়িক শ্রমের প্রয়োজন ও আস্তে আস্তে বিলুপ্ত হতে চলেছে। আমি দেখেছি, ১৯৮০ সাল থেকে একজন শিক্ষকের মাইনে বেড়েছে প্রায় ২৫ গুন, ইনফ্লেশন এডজাস্ট করলে সেটা ছগুনের কাছাকাছি। সমসায়মিক সময়ে একজন কৃষি শ্রমিকের লেবার চার্জ বেড়েছে মোটে ছগুন, ইনফ্লেশন এডজাস্ট করলে সেই বৃদ্ধি কিছুই না । আর যারা ফ্যাক্টরি মালিক , তাদের ধনের বৃদ্ধি সম্ভবত কয়েকশোগুন, হাজারগুন ও হতে পারে। এই বঞ্চনাকে ধর্মের নামে চালিয়ে দিয়ে এই বঞ্চিত শ্রেনীকে ধর্মের বুলডগ বানানো খুব সহজ।
ধর্ম এবং জঙ্গীবাদকে আমরা যত ইচ্ছা গালাগাল দিতে পারি, কিন্ত, আমাদের নিজেদের দোষটাও দেখা উচিত। বাস্তবে, আমরা সবাই স্বার্থপর -যে যার মতন নিজেদেরটা গুছিয়েছি । এই হত দরিদ্র শ্রেনীটি কিভাবে আছে, কিভাবে দিনানিপাত করে, তার কোন খোঁজ আমরা কোন দিন নিই নি। আজ তারা তখন একটি বিশেষ ধর্মের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জঙ্গী হচ্ছে, আমরা নিরাপদ দূরত্ব থেকে ইসলামিক জঙ্গীপনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে শুধু লিখে চলেছি। যে মানুষের শরীরে পুষ্টি নেই, তার শরীরে ভাইরাসের আক্রমন সবার আগে হবে। এই জন্যেই জন্ম হয়েছে আই সিসের। সিরিয়াতে দীর্ঘদিন সুন্নীরা বঞ্চিত হয়েছে শিয়াদের ছড়ি ঘোরানো অব্যাহত থাকায়। আসল সমস্যা বস্তুবাদি বঞ্চনার সমস্যা। এবং অপরাধী আমরা নিজেরাও—-রবীন্দ্রনাথের ভাষায়-
সঙ্গী হয়ে আছো যেথায় সঙ্গীহীনের ঘরে
সেথায় আমার হৃদয় নামে যে
সবার পিছে, সবার নীচে
সব-হারাদের মাঝে।
আমার মনে হয় প্রযুক্তি জিনিসটা স্টেরয়েড-এর মত। প্রযুক্তিতে বলীয়ান হয়ে সব কিছুই ফুলে ফেঁপে বেড়ে উঠতে পারে। একটু নজর দিয়ে দেখুন। ধর্মীয় ভাব, বিজ্ঞান চেতনা, বিনোদনে টান, ইন্দ্রি়পরায়ণতা এই সব মানব সভ্যতার নানান দিক। এবং কোনটাই নতুন নয়। কিন্তু প্রযুক্তি সব কিছুই দ্রুত ছড়িয়ে দিতে পারে। এবং শুধু তাই নয় বাড়াবাড়ি পর্যায় নিয়ে যেতে পারে। ধর্মীয় ভাব যদি স্বাভাবিক হয়, ধর্মীয় উন্মাদনা হচ্ছে অস্বাভাবিক। বিজ্ঞান চেতনা যদি স্বাভাবিক হয়, তবে বিজ্ঞান ছাড়া আর সব কিছুকে অবজ্ঞা করা – যেমন সাহিত্য, দর্শন, শিল্প – হল অস্বাভাবিক। কিছু সময় বিনোদনে ব্যবহার করা যদি স্বাভাবিক হয় তবে দিন রাত ফেসবুক, ইউটিউব, হলিউড, বলিউড বা টিভি সিরিয়াল দেখা অস্বাভাবিক। তেমনি ইন্দ্রিও সুখ যদি জীবনের এক স্বাভাবিক অংশ হয়, তবে অতিরিক্ত পর্ণ দেখা, বা কামুকতা অস্বাভাবিক। আমাদের আধুনিক সভ্যতা কিন্তু এমন অনেক মানুষ সৃষ্টি করছে যারা কেমন যেন ভারসাম্যহীন। খায় তো অতিরিক্ত খেয়ে obese হয়ে যায়। ধার্মিক হোল তো মানে ধর্মান্ধ হয়ে গেল। বিনোদন চাই মানে পড়াশোনা, সংসার লাটে তুলে দিয়ে শুধু বিনোদনেই মজে আছে, এই রখম আর কি।
ধর্মের সাথে অর্থনীতির ও রাজনিতির সমন্ধ আছে, এটা অনস্বীকার্য। আমি এর সাথে যোগ করছি প্রযুক্তি। প্রযুক্তিকে আমরা অনেকেই সামাল দিতে পারছি না, এর ক্ষিপ্র বেগ, সমাজকে ব্যস্থ করে তুলেছে। একটা ধর্মীয় উন্মাদ, আজ খুব সহজেই তার বিকৃত মনের পাগলামো সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারে। কিছুই দরকার নেই, দরকার শুধু একটা ফেসবুক স্ট্যাটাস। আর তার পর আর কি সেই বিকৃত ভাবনা চেন রিঅ্যাকশন হয়ে একটা বিরাট আকার ধারন করে।
আদিল ভাইয়ের কথার সাথে ১০০ ভাগ একমত। আমি বর্তমানে কানাডায় থাকি। আশেপাশের ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দেখে আমারও অন্য কিছু মনে হয় না। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ সম্প্রতিকালের যৌন শিক্ষা বিরোধী আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের ৯০ ভাগই মুসলমান। অধিকাংশই সিলেবাস সম্মন্ধে কিছুই জানে না। শুধুমাত্র ধর্মীয় কারণে আন্দোলনে যোগ দিয়েছে।
– আগেও বলেছি আপনার এই তত্ত্বটি সাধারনভাবে মৌলবাদের জন্য খাটলেও বর্তমান বিশ্বজুড়ে ইসলামী মৌলবাদ বা চরম্পন্থার ক্ষেত্রে খাটে না। মোটে আজকের সংবাদ, ঢাকায় কোকাকোলা কোম্পানীর আইটি বিভাগের চিফকে জংগীবাদি সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ কথা সকলেই জানে যে হিযবুত তাহরির নামের যে উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী দেশে সক্রিয় আছে তাদের এক উল্লেখযোগ্য সদস্য দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ছাত্র শিক্ষক। একজন ব্লগারকে বুয়েটের কম্পিউটর সায়েন্সের এক ছাত্র জার্মানী গিয়ে হত্যা করার হুমি দিয়েছে (উল্লেখ্য যে বুয়েট এখন মৌলবাদী গোষ্ঠির শক্ত ঘাঁটি)। ব্লগার রাজীব হত্যার আসামীদের শিক্ষাগত পরিচয় জানেন তো? তারা মোটেই মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র নয়। দেশের অন্যতম আধুনিক নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আমার আশে পাশের বাহ্যিকভাবে মডারেট নামে পরিচিত বহু লোক আছে যারা বিদেশে পড়াশুনা করেছেন, ভাল চাকরি বাকরি করে, মুখে মৌলবাদ ঘৃনা করি বললেও লাদেন হত্যার সংবাদে তারা দূঃখ পান, মনে মনে স্বপ্ন দেখেন বিশ্বময় ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা হবে। শুধু কি বাংগালী নাকি? আমার সর্বশেষ লেখায় দেখেন পাকিস্তানে মাত্র ক’মাস আগে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষার প্রফেসরকে হত্যার ফতোয়া দিয়েছিল (ফতোয়া পালিতও হয়েছে) একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা……এই ধরনের উদাহরন দিতে গেলে আমার রাত কাবার হবে। কথা হল এসব ক্ষেত্রে অশিক্ষা, দারিদ্র জনিত হতাশার ফলে মৌলবাদী হওয়ার সূত্র কতটা খাটে? বুয়েটের কম্পিউটর সায়েন্সে ভর্তি হতে হলে কতটা মেধাবী হতে হয় আমরা জানি। তার মাঝে হতাশার কি আছে?
আচ্ছা, ভারতেও মৌলবাদ আছে সকলেই জানি। ভারতীয় হিন্দুদের মাঝে কি দারিদ্র নেই? পরকালের টোপ নেই? ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা হিযবুত তাহরিরের মত কোন জিহাদী দল খুলে নিজ দেশের সরকার বদলে আর্য সমাজ কায়েম করবে এমন সংবাদ আমরা শুনি না কেন? কেনই বা ভারতীয় অধ্যাপকরা ধর্মীয় জোশে সহকর্মী অধ্যাপককে হত্যার হুমকি দেয় এমন সংবাদ দেখি না? বাংলাদেশের হিন্দুদের মাঝেই বা কেন জংগীবাদ দেখা যায় না? তাদের মাঝে দারিদ্র নেই? তাদের মূলধারার সমাজ যেভাবে আইনী বেআইনী নানানভাবে বহু বছর অত্যাচার করেছে তাতে তো তাদের জংগী হওয়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। ভারতে মুসলমানরা মাইনরিটি হলেও তাদের বহু জংগী দল আছে। এমন কন্ট্রাষ্ট কিভাবে জংগীবাদের কারন দারিদ্র/অশিক্ষা দিয়ে ব্যাখ্যা করবেন?
@আদিল মাহমুদ , আপনার সাথে এক মত। পশ্চিমবঙ্গেও মুসলমানদের মধ্যে দারিদ্র এবং অশিক্ষা বেশি সন্দেহ নেই। সাচার কমিটির রিপোর্টে সেটা উল্লেখ হয়েছে। কিন্তু শতাংশ হিসাবে মুসলমানদের মধ্যে দরিদ্র বেশি হলেও মোট সংখ্যার বিচারে কিন্তু হিন্দুদের মধ্যে দরিদ্রের সংখা কম নয়। এ ছাড়া আদিবাসীদের মধ্যেও দরিদ্র অত্যন্ত বেশি। তারা কিন্তু ধর্মীয় জঙ্গি হয় নি। বরং ভুল হোক বা ঠিক হোক তারা তাদের মত করে প্রতিবাদ করছে। তাদের যুদ্ধ বুর্জওয়া সমাজের বিরুদ্ধে । তারা অনেক আদিবাসীকেও তাদের শত্রু মনে করে। অপর দিকে অনেক অ-আদিবাসিও তাদের বন্ধু হয়েছে। বিশিষ্ঠ লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী তাদের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার মানুষ।
শুধু মাত্র দরিদ্র ও অশিক্ষা দিয়ে এই জঙ্গিবাদের বাখ্যা করা যাবে না। হিন্দুদের মধ্যেও যারা ধর্মীয় মৌলবাদ কে গ্রহণ করেছে তারাও না দরিদ্র না অশিক্ষিত।
আজ পর্যন্ত কোনদিন কেউ দেখেছে কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় দুর্যোগে বা মানবিক বিপর্যয়ে মানুষের পার্শ্বে এসে দাঁড়াতে ? আমি দেখিনি বরং যে কোন বিপর্যয়ের সময় ঈশ্বরের নিকট থেকে সাহায্য পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সর্বস্বান্ত মানুষের কাছ থেকে নগদ কিছু হাতিয়ে নিতে তাদের বেশ তৎপর দেখা যায় ।
আসলে ধর্ম হলো এমন এক বিশ্বাস যা মানুষকে দিয়ে থাকে শুধু আশ্বাস আর এতেই যেহেতু দেশের শিক্ষিত অশিক্ষিত বেশীরভাগ মানুষই মুগ্ধ সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের আর কি দোষ !
Comment… মধ্য যুেগ শাসক শ্রেণী শোসনের হািতয়ার হিসােব ধর্মকে বেেচ নেয়। আজো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
দারিদ্র্যতা ও সংখ্যা বৃদ্ধির আরেকটি কারন হল- মুখ দিয়েছে যিনি, আহার দিবেন তিনি। বাংলাদেশে একটি মৌলবাদি পরিবারের কর্তারা ধরেই নেয় যে, তাদের সন্তাদের দুজন জেহাদে যাবে, দুইজন আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মারা যাবে, দুজন জেলে থাকবে, দুজন চাকুরী করবে, দুজন আওয়ামী লীগে, দুইজন বিএনপিতে… এভাবে একডজনের ধাক্কা।
জনসংখ্যা যেখানে জ্যামিতিক হারে বাড়ে বলে তত্ত্ব আছে, এখানে সেই তত্ত্ব ফেইল। এদের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটে বর্গ হারে। ভারতেও নিশ্চয়ই এর ব্যাতিক্রম নয়। কয়দিন আগে বিজেপি নেতাকে বলতে শুনলাম, হিন্দুরা যেন বেশী করে সন্তান জন্ম দেয়।
এসব ঘটনায় আসলে ঘুরে ফিরে দারিদ্র্যই বাড়ে। তাই আপনার শেষের দিকে যুক্তি কিছুটা দুর্বল বলে মনে হয়।
শেষের কথাগুলোর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ,আমিও এই কথা গুলোই ভাবছিলাম। ধর্ম গুলোর বিস্তার এবং টিকে থাকার প্রধান মাধ্যম হল শ্রেনী বৈষম্য। যতদিন ধনী গরীবের বৈষম্য থাকবে ততদিন নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও মনে হয় ধর্ম গুলো টিকে থাকবে। যার পেটে দু বেলা ভাত জোটে না , তার সামনে যদি
ধর্ম গুলো পরকালে অফুরন্ত সুখ শান্তির মুলো ঝুলিয়ে দেয় তাহলে তো সে এতে প্রভাবিত হবেই। সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়ন এ থেকে পরিত্রানের একমাত্র উপায়
বলে আমার কাছে মনে হয় । সব শ্রেনীর মানুষের কাছে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দিতে হবে ,সে যেন পরকালের কাল্পনিক স্বর্গসুখের লোভ পরিত্যাগ করে এই পৃথিবীতেই স্বর্গ সুখ খোজে সেটা নিশ্চিত করতে হবে ।
আসলেই তো আমরা এভাবে কখনই ভেবে দেখি নি। লেখাটা অতি গাম্ভীর্য পূর্ণ এবং সময়োপযোগী। তবে ঐ এর পেছনের শক্তিটা যে দেশিয় শক্তি নয় তা হলফ করে বলা যায়। আসলে ধর্ম এমন একটা রোগের নাম যা মানুষ কে অন্ধবিশ্বাসী করে তোলে এবং ভয়ঙ্কর কিছু করাতে প্রলুব্ধ করে এটা স্বীকার্য। আর মুক্তচিন্তক দের এভাবে আমরা হারাতে থাকবো কিন্তু কোন প্রতিকার তো পাবই না শুধু তৎক্ষণাৎ কিছু কছড়ামারকা উদ্ধৃতি ব্যতিত। তবে আমি আশা করি খুব অচিরেরি মানুষ এর মন থেকে ৭ম শতাব্দির ঐ কুসংস্কার দূরীভূত হবে।
তবে ঐ এর পেছনের শক্তিটা যে দেশিয় শক্তি নয় তা হলফ করে বলা যায় >> কি করে জানলেন?
কারন আমাদের দেশের মানুষ অতটা উগ্রবাদি নয় যে আরেক জনের বাক স্বাধীনতাকে গলা চিপে ধরবে অন্য দেশের মত।
এই চক্র থেকে বের হওয়া সহজ নয়। কুসংস্কারের জন্যে দারিদ্রতা কাটে না আবার দারিদ্রতার জন্যে কুসংস্কার কাটে না
অর্থনীতির ক্লাসে পড়ানো হত ভিসিয়াস সার্কল অব পোভার্টি-এটা সেটাই
একেবারে সময়োপযোগী লেখা।পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমরা সংখ্যায় যে বেড়েছে,এটা সত্য,তার সাথে এটাও সত্য যে মুসলিমদের অবস্থা যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেছে।তাদের প্রকৃত উন্নয়ন বলতে প্রায় কিছুই হয়নি।যতদিন তারা বঞ্চিত হয়ে থাকবে ততদিন পশ্চিমবঙ্গে ইসলামিক মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বৃদ্ধি কেউ আটকাতে পারবে না।সকলের এই মুহূর্তে তাদের উন্নয়নের ব্যাপারে এগিয়ে আসা জরুরী।
আমাদের দেশে এখন বিরাজ করছে মহা সংকটাপন্ন গণতন্র যার সামনে পিছনে কিছুই নাই ফাঁকা! আছে চাটুকারীতা, হঠকারীতা, চামবাজী ইত্যাদি যে যার মত পকেট ভরছে কেউ কারো খবর রাখে না! সময় খুবই ঘাতক হয়ে দাড়াঁচ্ছে! তবে এই সময়ের মাঝে সব সচেতন মানূষ বুঝতে পারছে যে, অন্তত এই সরকার কোন ব্লগার হত্যার বিচার করবে না সব আই ওয়াস! আমি ব্যাক্তিগতভাবে চাই ও না তাদের কাছে বিচার!কারন, কমজ্ঞানীদের পক্ষে অনেক সফল কাজ করা সম্ভব না! ওরা শুধু জানে অক্টোপাসের মত ক্ষমতাকে আটকে ধরে রাখতে…….!