আপনারা সকলেই এর মধ্যে জেনে গেছেন যে, অন্ধকারের জীব মৌলবাদীদের কাপুরুষোচিত গুপ্ত হামলায় মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় অত্যন্ত নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন। অভিজিৎ রায় শুধুমাত্র মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতাই ছিলেন না, ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তচিন্তা আন্দোলনের প্রধান পুরুষ। বাংলা ভাষায় জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখনিতে তিনি নিজেকে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন, যাকে ছোঁয়ার সামর্থ আর কারো ছিলো না। এই হামলায় তাঁর স্ত্রী বন্যা আহমেদও গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকায় চিকিতসাধীন আছেন। বন্যা আহমেদ নিজেও একজন প্রথম সারির মুক্তমনা। মুক্তমনার সৃষ্টিলগ্ন থেকেই তিনি এর সাথে জড়িত রয়েছেন। তাঁর লেখা ‘বিবর্তনের পথ ধরে’ বইটা বিতর্কহীনভাবেই বাংলা ভাষায় লেখা বিবর্তনের উপর শ্রেষ্ঠতম বই।
এই দুজন মুক্তচিন্তার অগ্রপথিক। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয় কুপমণ্ডুকতা, ছদ্ম-বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছেন অনেকদিন ধরে। অক্লান্ত সেই লড়াই। আর এই লড়াইয়ের কারণেই মৌলবাদীরা টার্গেট বানিয়েছে তাঁদের। অপ্রস্তুত এবং অরক্ষিত অবস্থায় হামলা চালিয়ে একজনকে নিহত এবং অন্যজনকে গুরুতরভাবে আহত করেছে। এই আঘাত শুধুমাত্র অভিজিৎ রায় এবং বন্যা আহমেদের উপর ছিলো না, ছিলো দেশের সমস্ত শুভ শক্তির বিরুদ্ধে।
ঠিক এরকমই এক বিপর্যস্ত সময়ে মুক্তমনা ওয়েবসাইটটিও ডাউন হয়ে যায়। অনেকেই ভেবে নেন যে হয়তো মৌলবাদী জঙ্গীরা এটাকেও হ্যাক করে ফেলেছে। সকলের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, মুক্তমনা হ্যাকড হয় নি। কারিগরগত কারণে এটি অচল অবস্থায় ছিলো। মুক্তমনার কারিগরি বিশেষজ্ঞরা গত দুই দিন ধরে সর্বোত্তম প্রচেষ্টা চালিয়ে এর ত্রুটি সনাক্তকরণে সক্ষম হয়। সেই ত্রুটি মেরামতের সাথে সাথেই মুক্তমনাকে চালু করে দেওয়া হয়। এই অনিচ্ছাকৃত অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
মুক্তমনা এই মুহুর্তে একটি বিপর্যস্ত সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই বিপর্যস্ত অবস্থা সামাল দেবার জন্য আপনাদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ সাহায্য এবং সহযোগিতা পাবো বলেই বিশ্বাস আমাদের। মুক্তমনার লেখকদের কাছে অনুরোধ রইলো অভিজিৎ রায়ের উপর লেখা দেবার জন্য।
বন্ধুরা, এই ফাগুনে আমরা রক্ত ঝরিয়েছি রাজপথে, অপ্রস্তুত এবং অনিচ্ছুকভাবে। আগামী ফাগুনে এই রক্তের দামেই রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া ফোটাবো, এই শপথ নিন সবাই আজ দৃপ্তস্বরে। মৌলবাদীদের হাতে চাপাতি আছে, আছে কিরিচ। আমাদের হাতে আছে কলম, আমাদের হাতে আছে কিবোর্ড। দেখা যাক কোনটার শক্তি বেশি। চাপাতি-কিরিচের, নাকি কলম ও কিবোর্ডের।
মুক্তমনার এই দু:সময়ে সবাইকে পাশে থাকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের পাশে থাকাটা আমাদের সাহস জোগায় অপরিমেয়।
ভালো থাকুন সবাই।
মূর্খ মৌলবাদিরা জানতেও পারবে না, চাপাতির আঘাতে যেই ফুলটি ঝরিয়ে দিলো সেইটি বাঙালি জাতির কত অমূল্য ধন ছিলো। বাংলা ভাষায় এমন বিজ্ঞান লেখক খুব কম জন্মেছেন …… আবার কবে একজন অভিজিৎ রায় উঠে আসবেন এই বাংলা থেকে কে জানে
অভিজিতের আলো দিকে দিকে ছড়িয়ে দিন – ধর্মান্ধ বর্বরেরা সেই আলোতেই ঝলসে যাবে। অভিজিত -দের মরতে দিলে অন্ধকারে সব নিমজ্জিত হয়ে যাবে। অভিজিত যে ভাইরাসের টিকা আবিস্কার করেছিল, কীটগুলো তা জেনে গিয়েছিল।
কি লিখবো ফরিদ ভাই। দাদা নেই এটি এখনো আমি মানতে পারিনি।
দেশ এবং জাতির অনেক ক্ষতি হল অভিজিত রায়ের অকাল প্রয়াণে। তাঁর যুক্তির শাণিত ব্যবহার অদ্বিতীয় – বুদ্ধি প্রতিবন্ধী গোঁড়া ইসলামী চরমপন্থিদের সবচাইতে ভয় ছিল এটাতেই।তাঁরা কোন ভাবেই যুক্তির জোড়ে পেড়ে উঠছিল না – সবচাইতে বড় কথা যেটা নিয়ে তাদের এত বড়াই ওটার উপর জানাশোনাও তাদের সামান্য। এর সাথে যুক্ত আবার কিছু ‘মোডারেট’ – যারা আরও বেশি বিপজ্জনক – কেননা তাঁরা নিজ স্বার্থে সর্বকুল রক্ষা করতে চেষ্টা করে – যাদের আসলে নিজ স্বার্থ ছাড়া কিছুর চিন্তা নেই। তারা জগতেও নির্ঝঞ্ঝাট জীবন যাপন করতে চায় আবার মৃত্যুর পরও বেহেশতে, প্যাড়াডাইসে কিংবা স্বর্গে চিরজীবন থাকতে চায়!
হত্যার এত হুমকি থাকা স্বত্বেও অভিজিৎ জন্মভূমিতে এসেছেন – এত সাহসী একজন মানুষকে সরাসরি মোকাবেলা করতেও সেই দুর্বৃত্তদের ভয়। এজন্য চরম কাপুরুষতার পরিচয়ও দিল।
চিন্তা ভাবনার সীমাবদ্ধতা এবং আচরণে কাপুরুষতার চরম নিদর্শন দেখিয়ে দুর্বৃত্তরা ভেবেছিল সব শেষ!!! তাদের মুখে এখন গুড়ে বালি
নিজ দেহ মৃত্যুর পরও অভিজিৎ মানবতার জন্য দান করে গেলেন।
দেশকে নিয়ে ভয় হয় – আমি ঐসব চরমপন্থি নিয়ে মোটেও ভয়ে নই এই মূহুর্তে অন্তত কেননা তাদের এখনই মুহূর্তে শেষ করে ফেলা যাবে। ভয় হয় সেইসব ‘হীপোক্রেট মোডারেট’ দের আচরণের জন্য – যারা ন্যায় নীতির ধার না ধেরে সর্বকুল রক্ষা করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকে। এসব শ্রেণীর মানুষদের জন্যই চরমপন্থিরা তাদের অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণে সমর্থ-বান হয়। এদের কারণেই আমাদের দেশকে ওই চরমপন্থীরা ইরাক, পাকিস্তান কিংবা নাইজেরিয়ার অবস্থার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছে… যখন এই চরমপন্থিরা সব নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেবে তখন আর করার কিছুই থাকবেনা জাতির – আর এই “মোডারেট” দের যাদের একটু টাকা পয়সা আছে তারা দেশ ছেড়ে পালাবে আর যাদের অত অর্থ নেই তারা তখন আশ্চর্যান্বিত হবে – কিভাবে সোনার বাংলাদেশের এই অবস্থা হয়ে গেল!!
অভিজিৎ রায় যখন আমাকে মুক্তমনার সদস্য করে জানান – ঐ দিনের ব্যাপার এখনো চোখে ভাসছে। তাঁর শাণিত যুক্তির মিথস্ক্রিয়া এবং বিজ্ঞান ভিত্তিক লেখা……… আজ থেকে অর্ধ শতক এবং তার পর পর যখন বাংলা জ্ঞান এবং-সাহিত্য জগতের নতুন এরা ‘পোস্ট-ইন্টারনেট বাংলা’ নিয়ে লেখা হবে – আলোচনা হবে – নিঃসন্দেহে অভিজিৎ রায় অন্যতম প্রধান ব্যাক্তিত্ব হিসেবে থাকবেন – পাইওনিয়ার হিসেবেতো অবশ্যই।
অভিজিৎ রায়ের পরিবার যেন অভিজিতের আদর্শকে ধারন করে শক্ত ভাবে এগিয়ে যেতে পারেন এই কামনা করি।
@সংবাদিকা,
আপনার সাথে অতীতে বহুবার উত্তপ্ত তর্ক হয়েছে।
এখানে যা বললেন তা একেবারে আমার মনের কথাই বলেছেন।
হ্যাটস অফ।
নির্বাক, স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ।
কারো ঘুম ভাঙুক বা না ভাঙুক, আলোকিত পৃথিবীর কথা আমরা বলেই যাবো। কেউ থামাতে পারবে না আমাদের। একটা অভি মারলে সে সূর্য্যতারার ধুলো হয়ে অগণিত অভিজিৎ হয়ে আমাদের মাঝে বাঁচবে অনন্তকাল। অভিজিৎ থেকে আলো নিয়ে আমাদের শোক চক্রবৃদ্ধি হারে শক্তিতে রুপান্তরিত হতেই থাকবে অবিরাম। বন্ধুরা, শক্ত হাতে ধরে থাকুন হাল।
এক অভিজিৎ এর হত্যা জন্ম দেবে হাজার অভিজিৎ।
অভিজিৎরা রক্তবীজ হয়…
যার এক ফোটা রক্তে নতুন অভিজিৎ এর জন্ম হয়…
নিজেকে মনে হচ্ছে নপংশুক…………আক্ষমতা, ক্রোধ,ঘ্রিনাই ভেতরে ভেতরে ফুঁসছি……
খবরটা প্রথমে পেয়েছি টিভি দেখে। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না;ভাবলাম ভুল দেখছি। তারপরে নিশ্চিত হবার পরে মুক্ত না তে দুদিন ঢোকার চেষ্টা করেও ব্যার্থতা। আমিও ভেবেছিলাম যে হ্যাক হয়ে গেছে মুক্ত মনা।
কি আর বলব আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না যে অভিজিত দা নেই। মুক্ত মনার কর্নধার ছাড়া মুক্ত মনা যে বিধাতা ছাড়া নন্দন কানন!
আর কিছু বলার ভাষা নেই আমার।
অপরাধীদের কঠিন শাস্তি দাবী করে গেলাম আর সেই সাথে অভিজিত দার প্রতি শ্রদ্ধা :candle:
আর বন্যা আপার আশু আরোগ্য কামনা করছি এবং দুই পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা।
@অর্ফিউস,
অনেকদিন পর আপনাকে মুক্তমনায় দেখলাম অর্ফিউস। নিয়মিত হোন প্লিজ। নিয়মিত লেখা দিন, মন্তব্য করুন। অভি এইখানে আমাদের মাঝে।
@তামান্না ঝুমু,
আসলে পেশাগত ব্যস্ততার পাশাপাশি নানান ধরনের ব্যস্ততায় একেবারে চ্যাপ্টা হয়ে আছি আর তাই মুক্ত মনা তে আগের মত আসার সুযোগ হয় না ইচ্ছা থাকলেও। তবে তাড়াতাড়িই নিয়মিত হবার ইচ্ছা আছে।
আমাকে মনে রাখার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে! ভাল থাকবেন।
হ্যা অবশ্যই। অভিদা আমাদের তথা সব মুক্তচিন্তক মানুষের মাঝেই বেচে থাকবেন তার কর্ম দিয়ে। অভিদার প্রতি আবার অকৃত্রিম শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
[img]http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/8/83/Candle.svg[/img]
আর কি লিখব!
আভিজিত যেদিন খুন হয় সেইদিনই আমি পেলাম অভিজিতের সদ্য-প্রকাশিত ২য় সংস্করণ-‘বিশ্বাসের ভাইরাস’ যে বইয়ের জন্য অভিজিতকে জীবন দিতে হ’ল। অভিজিতের নিজের হাতে লেখা—আমাকে অশেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে সেই অটোগ্রাফ—আমার চোখের সামনে জ্বল জ্বল করছে—‘আমি অভিজিত লিখছি’। না, অভিজিত তুমি মর নাই—তোমার লেখা যে চিরঞ্জীব।
অভিজিত, বাংলাদেশ যে ইসিসের চাইতেও ভয়ংকর হচ্ছে।
বুকের ভিতরটা মনে হয় ফেটে যাচ্ছে ! মস্তিষ্কের ভিতরটা যেন কেবল আলোড়িত হচ্ছে ! আজ দুপুর নাগাদ অভিজিতের হত্যার খবর শুনে মনটাকে কিছুতেই স্থির করতে পারছি না ! বিশ্বাস করতে পারছি না অভিজিত নেই !! বিশ্বাস করতে পারছি না অভিজিতকে কেউ এমন ভাবে খুন করতে পারে ? কেবল মনে হচ্ছে – আমরা কেন অভিজিতের মত এমন একজন আলোকিত মানবতাবাদী বিরল প্রতিভার অমিত সম্ভাবনার মুক্তবুদ্ধির বিজ্ঞানীকে বাঁচাতে পারলাম না ? বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি কিন্তু আজ কেন জানি মনে হচ্ছে বাংলাদেশ নামক দেশটা মুক্তবুদ্ধির মানুষের জন্য একটা মৃত্যুপুরী ! একটা দানবপুরী – সেখানে ভয়ঙ্কর সব দানবেরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়ায় !!!!, যেখানে হুমায়ুন আজাদের মত একজন আলোকিত মানুষকে তাঁরা খুন করলো সেখানে অভিজিৎ রায় এর মত একজন বিশ্বব্যাপী সাড়া জাগানো মুক্তবুদ্ধির মানুষযে নিরাপদ নয় তা বুঝা কি আমাদের জন্য খুব কঠিন ছিল ! কেন কেউ একজন তাকে বারণ করলো না সেখানে যেতে ???? যেখানে রাষ্ট্রের তরফ থেকে ধর্মান্ধরা নানা ভাবে আশ্রয় প্রশ্রয় পায় সেখানে অভিজিতের মত একজন নক্ষত্র, যে নাকি ধর্মান্ধদের খোদ দুশমন, তাঁর জীবন যে বাংলাদেশের মত ধর্মান্ধ দেশে মোটেও নিরাপদ নয় তা তো বলাই বাহুল্য !!! অনেকে বলবেন কে তাকে হত্যা করেছে জানা যায় নাই, কিন্তু ঘটে একটু বুদ্ধি থাকলেই এটা বুঝতে কারো অসুবিধে হওয়ার কথা না যে মৌলবাদী ধর্মান্ধ কোন ইসলামী গোষ্ঠী তাকে খুন করেছে ! আমাকে ভীষণ ভাবায় যে এই ঘাতকেরা তো ধর্মে বিশ্বাস করে ! এই ধর্মান্ধরা তো আল্লায় বিশ্বাস করে ? কিন্তু এই ধর্মান্ধ ঘাতকেরা কোন ভয়ঙ্কর আল্লাহ বা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে যে আল্লাহ/ঈশ্বর তাদের প্রেরণা যুগায় অভিজিতের মত এমন একজন মানুষ নামক নক্ষত্রকে নিভিয়ে দিতে ???????????????? যদি আল্লাহ বা ঈশ্বর বলে কেউ থাকে তবে তো অভিজিতের মত মানুষতো সেই সৃষ্টিকর্তার গৌরবই বহন করে বেড়ায় (যদি ঈশ্বর বলে কেউ তাকে সৃষ্টি করে থাকে !) তবে তো ঈশ্বর বা আল্লাহ তাকে রক্ষা করার কথা ? মানুষ নামক কতগুলো নরপিচাশের হাতে অভিজিতের এমন নির্মম মৃত্যু কি ঈশ্বর বা আল্লাহ বলে কোন কিছুর অনস্তিত্বই প্রমান করে না ?????
অভিজিৎ চিন্তার জগতে একটি নক্ষত্রের নাম – মুক্তমনা ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অভিজিৎ বাঙালি চিন্তার জগতে একটি বিপ্লবের সৃষ্টি করেছেন – অভিজিতের লেখা, অভিজিতের সৃষ্টি “মুক্তমনা” ওয়েবসাইট একটি মুক্তবুদ্ধির আন্দোলনের নাম ! বাংলাদেশ সহ সাড়া বিশ্বে অভিজিতের অনেক গুণগ্রাহী ! অভিজিতের প্রজ্জ্বলিত মুক্তচেতনার মশাল অভিজিতের অবর্তমানে তাঁরা সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে এমন প্রত্যয়ে আমার বিশাল আস্থা ! তবে অভিজিতকে এত তাড়াতাড়ি হারানোতে বাঙালির তথা সাড়া বিশ্বের মানুষের জন্য এক অপূরনীয় ক্ষতি !!!!! জানি না এই ক্ষতি কি দিয়ে পূরণ হবে !!! অভিজিতকে আমরা ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারলাম না – এটি যে মুক্তবুদ্ধির মানুষদের একটা বড় ব্যর্থতা ! তবে অভিজিৎকে আমরা ঘাতকদের হাত থেকে বাঁচাতে পারিনি সত্য তবে চেতনার “অভিজিৎ” অমর, !সেই চেতনার অভিজিৎ ঘাতক নর-পশুদের নাগালের বহু উর্দ্ধে ! চেতনার অভিজিৎ কায়িক অভিজিতের চেয়ে আরো অনেক বেশি শক্তিশালী ! অভিজিতের রেখে যাওয়া কর্ম, তাঁর মানবতন্ত্রের জয়গানে মুখরিত সৃষ্টি আগামীতে আরো লক্ষ-কোটি অভিজিতের সৃষ্টি করবে !
প্রার্থনা করি অভিজিৎকে হারিয়ে লক্ষ মানুষের শোক আজ শক্তিতে পরিণত হোক ! এই শক্তি অন্ধকারের জীবদের মর্মমূলে আঘাত করুক, অপশক্তির ক্ষয় হোক – মুক্তচিন্তা, যুক্তিবাদ, বিজ্ঞান-ভিত্তিক চিন্তা-চেতনার জয় হোক !
অভিজিতের মত এমন একজন আলোকজ্জ্বল অসাধারণ মানবের প্রতি রইলো আমার হাজার স্যালুট !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
খুব নিরুত্তাপ সময় কাটাচ্ছি ফরিদভাই! কষ্টকে পাতরচাপা দিয়েছি, কিন্তু সে পাথরও ফেটে যেতে চাইছে, ফুসছি ঘৃনা রাগ ও ক্ষোভে! অজয় স্যারের মুকখানা বার বার ভেসে উঠছে! যিনি সারাটা জীবন মানুষের পাশে থেকে হাত বাড়িয়েছেন মানবতার মনুষত্ত্বের তাকে কিনা বইতে হবে পুত্রের কফিন! এ আমি কোন ভাবেই মানতে পারছি না! আমরা একজন মানুষ হারিযেছি, আমরা মেধা হারালাম, বাংলাদেশের অনেক ক্ষতি হলো তো বয়েই গেলো বাংলাদেশীদের! ১৯৭১ সালেও আমরা মেধা হারিয়েছি, ঐ মাটিতেই হারামজাদারা সেইসব শকুনীদের নিয়ে ব্যাস্ত! কখন সিংহাসনে বসবে! আরেক গ্রুপ হারামজাদারা বঙ্গবন্ধুকেও বিক্রী করে মুলধন উঠাতে পারেনি এখন মদীনা সনদের দোহাই পারে! আর রাষ্ট্রে বাস করে অকর্মন্য মূক বধির ও আত্মমর্যাদাহীন কিছু জীব। মানুষ, সেতো নগন্য। মানুষের হাতে থাকে কলম! আর জন্তু গুলোর আছে শিং, ধারালো নখের থাবা কিংবা দাঁত! বেশীর ভাগ জন্তু গুলোই মডারেট সেজে লুকিয়ে রাখে নখর, দাঁত কিংবা শিং, সুযোগ এলেই বেরিয়ে পরে তা! আজও অনেক জন্তু দেখছি যাদের মনে হতো মানুষ! অভিজিৎ দা অন্ততঃ কিছু নতুন জন্তুর সন্ধান আমাদের দিয়েছেন! পঞ্চাশ-ষাটের দশকের মেধা গুলো আমরা হারিয়েছি ‘৭১ এ। সেই মেদা শুন্যতার ঝুলি নিয়েই তো চলেছি! আজ যখন একটু একটু করে আবার শূন্যতার ঘরে স্ফূলিংগ জ্বলে উঠছিলো তখন সেটিও নিভিয়ে দেওয়া হলো চিরতরে! ওরা মূলো আর ভষ্মের বস্তা হয়ে থাকতেই বেশী স্বাচ্ছন্দবোধ করে! যেমন অধুনা আফগানিস্তান! আধুনিকতায় ওদের ফোস্কা পরে! আলোতে অন্ধ হয়ে যায়, শর্ষেফুল দেখে চোখে! যুক্তিকে ভয় ওদের খুব!
অভিজিৎ দা আজ নেই আমাদের মাঝে ঠিক, কিন্তু দিক দর্শনটা একেবারেই স্পষ্ট! যে দাগটুকু তিনি রেখে গিয়েছেন ঐ চিহ্নটুকু মুছবার শক্তি ওদের ধর্মবোধের আবর্জনাতে যে নেই সে আমি শতভাগ নিশ্চিন্ত। আমার শুধু একটাই আপসোস, এই শতবর্ষে এসব ধর্মনামের ভন্ডামীটা আগামী শতবর্ষের উত্তরসূরীরা তামাশা হিসেবে নেবে, আমাকেও হয়তো ভাববে এই সব অভব্যজনদের একজন হিসেবে! যাদের হাতে ছিলো নখর যুক্ত থাবা, মাথায় শিং আর দাঁতাল!
আমি শুধু দেখবো অপেক্ষা করছি যে ঐ মদীনা সনদবাদীরা কি করে! কিকরে মুলো হয়ে বস্তায় আশ্রয় নেয়! ……………!
যারা অভিজিত কে খুন করলো তারা নিশ্চয় খুব ফুর্তি করছে। কিন্তু তোমরা জেনে রাখো তোমাদের ছেলে বা নাতি নাতনি রা যখন আলোক প্রাপ্ত হবে তখন তোমাদের এই কাজের জন্য তোমাদের ঘৃনা করবে। তারা বলবে যারা ছিল আমাদের সত্যিকারে বন্ধু তোমরা তাদের খুন করেছ l আর যারা প্রতি নিয়ত ধর্মের আফিম খাইয়ে আমাদের চরম দারিদ্রের মধ্যে রেখেছিল, যারা আমাদের অন্ধকারের অজ্ঞানতায় ডুবিয়ে রেখেছিল , যারা আমাদের স্বাধীনতা হরণ করে ছিল তোমরা বোকার মত তাদের বন্ধু ভেবে তাদের কু পরামর্শে আমাদের পরম বন্ধুকে খুন করেছ। আমরা তোমাদের নাম মুখে আনতেও ঘৃনা বোধ করি। তোমাদের পিতা- প্রপিতামহ পরিচয় মুছে ফেলতে চাই।
জঙ্গিগোষ্ঠি আর তাদের পেছনের চিহ্নিত মদদ দাতারা যদি ভাবে একজন অভিজিৎকে হত্যা করে মুক্ত চিন্তার বিকাশ বন্ধ করা যাবে, তবে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। যুগে যুগে মুক্তচিন্তার দিশারীরা এভাবেই অন্ধ ধর্ম-বিশ্বাস আর গোঁড়ামির বলি হয়েও তাঁদের শুভ চিন্তার আলো ছড়িয়ে চলেছেন। মুক্তচিন্তার আন্দোলনে প্রাণ-উৎসর্গ করা অভিজিৎ, জীবিত অভিজিৎ-র থেকে অনেক বেশী শক্তিশালী; তাঁর গড়ে তোলা মুক্তমনা, লেখনী আর ক্রমাগত বেড়ে চলা মুক্ত মনের মানুষেরাই তাঁর উত্তরাধিকার।
বন্যা, অভিজিৎ রায়ের পরিবার যে কিসের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন তা অনুভব করার চেষ্টা করলেও শিউরে উঠতে হয়। যারা দেশের কর্ণধার তাদের কাছে অনুরোধ, আমরা তো এই ক্ষণজন্মা মানুষটিকে ধরে রাখতে পারলাম না, এখন অন্তত: রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করে কেউ যেন এই চরম শোকের ঘটনাটিকে অসম্মান না করি।
একজন মানুষ মারা যাবে এটা মানুষ হিসেবে আমিও মেনে নিতে পারি না। মেনে নেওয়ার কথাও না। যা আজ দেখলাম এই ব্লগে তা এইখান কার ব্লগারদের কখনোই লিখা উচিত হয় নি। আমি কি ধর্ম পালন করব তা আমার ব্যাপার। আর সবচেয়ে বড় যে ভূল একটা কথা বললেন যে অভিজিৎ কে মৌলবাদীরা হত্যা করেছে এই কথাটা আপনি ঠিক বলেন নি। কারণ আপনি বা আমি কেউ ই জানে না কে বা কারা হত্যা করেছে। তবে কেন আপনি একটা জাতির উপর দোষ ছাপিয়ে দিছ্ছেন?
আমি ঠিক বুঝি না কেন আপনারা শুধু মুসলমানদের কে দোষারোপ করেন। অন্তত অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের চাইতেও মুসলমানরা অনেক ভাল। প্লিজ স্টপ অল দিজ
আপনি আপনার ধর্ম নিয়ে থাকেন আমাদের আমাদের ধর্ম নিয়ে থাকতে দিন। কোন মুসলমান আপনাকে গিয়ে বলছে না যে আপনি কেন ধর্ম পালন করছেন না। কিন্তু আপনি কেন শুধু শুধু অন্য ধর্মকে নিয়ে কটুক্তি করবেন??
আশা করি আপনি বা আপনারা আমার কথা বুঝতে পারবেন।
@আমিও মানুষ,
অবশ্যই, এবং অভিজিৎদাকে যদি ঠিকমত পড়ে থাকেন, তাহলে দেখবেন, তিনি মানুষের ‘নিজস্ব ব্যাপার’ নিজেই ঠিক করার স্বাধীনতার পক্ষে কলম ধরেছেন। আপনি মুসলিম হতে পারেন, তা আপনার ব্যাপার, হিন্দু হতে পারেন, আপনার ব্যাপার, বৌদ্ধ-খ্রীস্টান হতে পারেন, আদি ধর্মে বিশ্বাস রাখতে পারেন, এমনকি ‘অবিশ্বাসী’ মানে, নাস্তিকও হতে পারেন, আপনার ব্যাপার। কিন্তু কি করছে আপনার ধর্মে বিশ্বাসী উগ্র লোকেরা? ভিন্নমতের মানুষদের ধরে ধরে জবাই করছে, সারা দুনিয়া জুড়েই! তবে অন্য ধর্মে বিশ্বাসী লোকেরাও পিছিয়ে থাকতে চাইছে না, প্রতিটি ধর্ম অন্য প্রতিটি ধর্মকেই খুন করছে, এভাবে এক সময় আপনারা প্রত্যেকেই বিলীন হবেন, চিন্তা করে দেখেছেন? আর অভিজিৎদা কিন্তু মানব জাতির এই আত্মবিধ্বংসী হিংসার বিরুদ্ধেই লিখেছেন।
মৌলবাদীরা যে তাকে একের পর এক ডেথ থ্রেট দিয়ে যাচ্ছিল, তা আপনি এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন? পলিটিকাল গেম যা শুরু হয়ে গেছে, ইতিমধ্যে, মানে, সরকার বিরোধী পক্ষকে, বিরোধী পক্ষ সরকারকে দোষারোপ করে যে বিবৃতি দিচ্ছে, তার উপর আস্থা রাখতে বলছেন? আচ্ছা, এত প্রকাশ্য ডেথ থ্রেট থাকার পরও কেন এদিক-ওদিক তাকাতে হবে, বলুন তো? কেন কন্সপিরসি থিয়োরির জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হবে? এই সমাজে অভিজিৎ রায়রা কি আগেও একই কায়দায় চাপাতির আঘাতে খুন হয়নি? দেখুন, এই সমাজে প্রকাশ্যে ডেথ থ্রেট দিয়েও প্রচুর লাইক কুড়োনো যায়, যদি তা এক অবিশ্বাসীকে দেয়া যায়! আপনি জানেন কিনা, এই সমাজে একজন অবিশ্বাসীকে কুপিয়ে মগজ বের করে ফেললেও অনেকের মধ্যে চাপা উল্লাস বিরাজ করে! সমস্যাটা কোথায়, বুঝে নিন!
ভাল করে পড়ে দেখুন, উনি কখনোই কোন ধার্মিককে দোষারোপ করেননি, বরং প্রতিটি ধর্মের মধ্যে সযতনে লুকিয়ে রাখা অধর্মকে আক্রমন করেছেন, অবশ্য চাপাতি দিয়ে নয়, কলম দিয়ে, কারণ উনি মানুষ ছিলেন।
কিভাবে তার প্রমান হবে? চাপাতি দিয়ে? সবাই-ই তার নিজ ধর্মকে শ্রেষ্ঠ বলে, তারপরও সেই ধর্মের নামেই খুন করে চলে অবিরাম! সব ধর্মের লোকেরাই! আপনি যদি মনে করেন, আপনারাই শ্রেষ্ঠ, তা লিখে প্রমান করুন, যুক্তি দিয়ে বোঝান, এমনকি আপনার যুক্তি অন্য বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসীরা না মানলেও এটাই তো একমাত্র পন্থা, তাই না? অন্য বিশ্বাসের লোকদের খুলি উড়িয়ে দিলে পরে তারা চুপ হয়ে যাবে আর আপনাদের শ্রেষ্ঠত্ব ভয়ে মেনে নেবে, তেমনতাই চাইছেন কি?
থাকুন না, কে আপনাকে বাঁধা দিয়েছে? বরং অভিজিৎ রায় তো চেয়েছেন, আপনাকে যেন একজন হিন্দু বা অন্য ধর্মাবলম্বী শুধুমাত্র বিশ্বাসের ভিন্নতার কারণে খুন না করে বসে! অভিজিৎদা তো এই প্রতিটি মানুষের এই নিরাপত্তা, এই স্বাধীনতাটুকু চেয়েছেন, এরই সাধনা করেছেন! তাকে পড়ুন, বুঝুন। তাহলে বুঝবেন, তিনি মানুষের জন্যই কলম ধরেছিলেন, আপনি যদি ‘মানুষ’ হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি আপনারও ছিলেন!
কে বলেছে, বলছে না? তাকে মুরতাদ ঘোষনা দিয়ে মেরে ফেলার হুকুম দেয়া হচ্ছে! কেউ যদি নিজেকে অবিশ্বাসী ঘোষনা করে, তাহলে আপনার সমাজে সে আস্ত থাকবে? তাকে হয় আপনারা মারবেন, না হয় জেলে পোরা হবে!
কটুক্তি করা উচিত নয়, মানছি, আর যারা করে, তাদের সাথেও আমি নেই; কিন্তু যদি যথেষ্ট যুক্তি-প্রমান হাজির করে কোন ধর্মীয় রীতি-নীতির সমালোচনা করা হয়, তাহলে আপনি তাকে কটুক্তি বলবেন? আপনি কি কখনো কারো সমালোচনা করেন না? অন্তত ধরে নিচ্ছি, সরকারের সমালোচনা অন্তত করেন, সব দেশের সব নাগরিকই করে থাকে, তাহলে সরকারী কোন কাজের সমালোচনা কটুক্তি ধরে নিয়ে সরকার যদি আপনাকে গরাদে ঢুকিয়ে দেয়, আপনার কেমন লাগবে?? আর কটুক্তিও যদি ধরে নেই, আপনার কি ঘটে কিছু নেই, যা দিয়ে ঐ কটুক্তির পাল্টা সমালোচনা করতে পারেন? নাকি, কটুক্তি জ্ঞান করে অনুভূতি আহত হয়ে শেষমেষ চাপাতি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বেন ঐ কটুক্তিকারীর (আপনার বিবেচনায়) উপর?
একটি বিষয় খেয়াল করেছেন? আপনার এই মন্তব্য কিন্তু ছাপাতে একটুও বিলম্ব হয়নি মুক্তমনা মডারেটরদের। কিন্তু ঠিক একই কায়দায় কোন অবিশ্বাসী যদি কোন বিশ্বাসী সাইটে গিয়ে এমন মন্তব্য করত, তা হলে কি হত বলে মনে হয় আপনার? আমি কিন্তু নিশ্চিত, ছাপা তো হতই না, বরং সেই অবিশ্বাসী আপনাদের চাপাতি লিস্টে ঢুকে পড়তে পারত অবলীলায়! দয়া করে পার্থকটা বুঝুন!
@আমিও মানুষ,
অভিকে হত্যা করার হুমকি যারা দিয়ে গেছে অনবরত তার প্রমাণ রয়েছে। আপনি এসেছেন তাদের পক্ষে সাফাই গাইতে?
কি লিখবো ফরিদ ভাই? তিনি কত বড় মাপের লেখক ছিলেন? কত বড় মনের মানুষ ছিলেন? একটা মানুষকে এভাবে হত্যা করার পরেও কিছু মানুষ যা খুশী লিখে যা্চ্ছে। কারা বুঝবে যে অভিজিৎ রায় কেমন ছিলেন? ওরা তো অন্ধ থাকতেই ভা্লবাসে। আলোর রশ্মি ওদের চোখে পড়ে না।
বন্যাপু শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠুক, এই কামনা করছি।
এ ক্ষতি অপূরণীয়।
বন্যা দির অবস্থা কি কেউ কি বলতে পারেন?আর তাদের মেয়েটা কেমন আছে আর কোথায় আছে?যে ক্ষতি বাংলাদেশের হলো তা কখনও পুরণ হবার নয়।
ওরা ব্রুনোকে পুড়িয়ে মেরেছিল, সক্রেটিসকে হেমলক পান করিয়ে হত্যা করেছিল, ইবনে সিনাকেও নাস্তিক আখ্যা দিয়ে সমাজ ছাড়া করেছিল আল্লার বান্দারা।
কিন্তু থামাতে পেরেছে কি তাদের চিন্তাকে? না পারেনি। এনাক্সোগোরাস বলেছিলেন চাঁদের কোন নিজস্ব আলো নেই। এমন ধর্মবিরোধী তত্ত্ব প্রচারের অপরাধে ভয়ঙ্কর নির্যাতনের পর তাঁকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়। সুইস অধ্যাপক প্যারাসেলসাস বলেছিলেন ”মানুষের অসুস্থতা কোন অলৌকিক কিছু বা কারও পাপের ফসল নয় জীবাণু থেকেই রোগের জন্ম।” এই ‘ধর্মবিরোধী’ তত্ত্ব প্রচারের অপরাধে তারা তাঁকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল, শেষ পর্যন্ত দেশান্তরী হয়েই প্রানে বেঁচে যান এই বিজ্ঞানী।
সত্তর বছরের বৃদ্ধ বিজ্ঞানী গ্যালিলিওকে নির্যাতনের মুখে জোর করে তারা স্বীকার করিয়েছিল যে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে না-তিনি জনসম্মুখে সেটা বলতে বাধ্যও হয়েছিলেন। ক্ষমা চেয়েছিলেন চার্চের কাছে। কিন্তু আকাশের দিকে চেয়ে বিড়বিড় করে গ্যালিলিও বলছিলেন ‘তবু পৃথিবী ঘুরছে’।
একজন হুমায়ুন আজাদ, রাজিব বা অভিজিৎ রায়কে স্তব্ধ করে দিয়ে মূর্খরা ভেবেছে জিতে গেল! আসলে তারা জানে না একজন অভিজিতের চিন্তার দুয়ার, আলোর মশাল ছড়িয়ে গেছে বিশ্বব্যাপী। সে আলোই সব অন্ধকারের শক্তিকে দূরে সরিয়ে দেবে একদিন ।
সেদিনই জয় হবে মানুষের।
অভিজিৎ রায়ের মৃত্যুতে বাঙ্গালীর যে কি ক্ষতি হল তা ভবিষ্যৎ ইতিহাস সাক্ষ্য দেবে। সেই ইতিহাসে কাপুরুষদের জয় হয় না, আলো হাতে আঁধারের যাত্রীদের জয় হয়। তবু হৃদয়ে পৃথিবীতে অভিজিতের অনুপস্থিতি একটা বিশাল বেদনা, এক বিশাল অপূর্ণতা রেখে যাবে।
আমরা বন্যা আহমেদের দ্রুত পূর্ণ আরোগ্য কামনা করি। তাঁদের পরিবারের সবার সাথে এই কঠিন সময়ে যেন একাত্ম থাকি। একই সাথে ফরিদ আহমেদসহ মুক্তমনার কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই, এই আঁধারে আলো হয়ে জ্বলবার জন্য।