প্রথম পর্বে খুব সাদামাটা একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা দিয়ে শুরু করেছিলাম। এই পর্ব এবং আগামী পর্বে বিষয়টির উপরে কিছু তথ্য -উপাত্ত নির্ভর আলোচনা উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো এবং আন্তর্জাতিক বিতর্ক গুলোর কিছুটা মুক্তমনার পাঠকদের মাঝে ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা করবো। আমি শুধু বিতর্কের বিষয় গুলোই উস্কে দিতে চাই, কারন এই বিষয়ে আরো অনেকের মতো আমার নিজেরও কোনও সুনির্দিষ্ট অবস্থান নেই। ইসলাম এবং ইসালামোফোবিয়া এক কথা নয়। ইসলাম একটা অদ্ভুত ধর্ম যা নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত ব্যাখ্যা করে চলেছি, যুদ্ধ করে করে চলেছি। ধর্ম হিসাবে ইসলাম আমাদের কে যতটা পিছু টেনে ধরে, আজকের যুগে অন্য কোনও ধর্ম তা করেনা। ইসলাম ধর্ম শুধু পরিবারের উপরেই নয়, সমাজের উপরেও চাপিয়ে দেয় জগদ্দল পাথরের মতো মধ্যযুগীয় নৈতিকতা, সংস্কৃতি এবং আইন-কানুনের ভার। সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর অশান্তি, সন্ত্রাসবাদ এবং পশ্চিমা উন্নত দেশগুলোতে সামাজিক স্তরে মুসলিম জনগোষ্ঠীর অনড় সাংস্কৃতিক চর্চা মুসলমান বা ইসলামের অনুসারীদের সম্পর্কে মিশ্র অনুভুতির জন্ম দিচ্ছে ব্যাপক ভাবে। পশ্চিমা বিশ্বে সামাজিক ভাবে গড়ে উঠছে ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে এক স্থায়ী ভীতি। ইসলাম এবং মুসলমানদের নিয়ে এই ভিতীর সাথে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নানান ধরনের শব্দ বা বর্গ, তাঁরই একটি হচ্ছে “ইসলামোফোবিয়া”। ইসালামোফোবিয়া হচ্ছে ইসলাম সম্পর্কে এবং তার অনুসারীদের সম্পর্কে অমুসলিম জনগনের ভাবনা বিষয়ক সাম্প্রতিক একটি সামাজিক ধারণা বা প্রপঞ্চ। মুসলিম জনগোষ্ঠী যাকে মনে করে থাকে একধরনের বৈষম্য আর অমুসলিম জনগণ মনে করেন এই আতঙ্কের বাস্তব ভিত্তি আছে এবং আতঙ্কজনক কোনও কিছু থেকে সাবধান থাকাটা যে কারও অধিকার।

যদিও সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক ভাবে উচ্চারিত, তবুও “ইসলামোফোবিয়া” শব্দটি প্রায় একশ বছর আগে ফরাসী রাজনৈতিক লেখালেখিতে ব্যবহৃত হয়েছিলো, অবশ্য সেই সময়কার অর্থ আর আজকের অর্থের মাঝে বিস্তর ফারাক তৈরি হয়েছে। মুসলিম এবং অমুসলিম সবাই খুব ব্যবহার করছেন শব্দ টি কিন্তু প্রকৃত অর্থে এই শব্দ টি সামাজিক কিম্বা আইনগত কোনও ভাবেই এখনও সংজ্ঞায়িত হয়নি। যেভাবে বর্ণবাদ বা “রেসিজম” কে আইনগত ভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, ইসালামোফোবিয়া কে সেভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়নি এখনও। তাই দশজন মানুষ এই শব্দ টি ব্যবহার করলে অন্তত চারটি ভিন্ন ভিন্ন অর্থ খুজে পাওয়া যাবে। আধুনিক শিক্ষিত মুসলমানেরা এই শব্দটি ব্যবহার করছেন প্রধানত এটা বলতে যে –

– পশ্চিমা দুনিয়া মুসলিম সমাজের নামে অহেতুক আতঙ্ক ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর মাধ্যমে মুসলিম জনসাধারনের প্রতি এক ধরনের বৈষম্যমুলক আচরন করছে। এটাই ইসালামোফোবিয়া!

আর মুসলিম ধর্মের নন এমন নাগরিকেরা, বিশেষত উন্নত বিশ্বে, উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোর অমুসলিম নাগরিকেরা বলছেন মধ্য প্রাচ্চ সহ সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের সাথে বিভিন্ন ইসলামিক গোষ্ঠী বা দলগুলোর সংশ্লিস্টতার কারনে এক ধরনের স্থায়ী ভীতি তৈরি হয়েছে যার বাস্তব ভিত্তি রয়েছে। যদিও বিভিন্ন দেশের অমুসলিম নাগরিক সমাজের অনেকেই এই ভিতির কারনে মুসলিম দের প্রতি কোনও বৈষম্যমূলক আচরনের কথা অস্বীকার করে থাকেন।

মুসলিম সমাজের এই ধারনার বিপরীতে যে প্রধান প্রশ্ন গুলো উঠে আসে তা হোল –
– আসলেই কি আতঙ্ক টি অহেতুক?
– আসলেই কি সারা পৃথিবীর সন্ত্রাসবাদী ঘটনার জন্যে মুসলিম জনগোষ্ঠী দায়ী?
– পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী ঘটনার জন্যে মুসলিম জনগোষ্ঠী আসলে কতটুকু জড়িত? কতটুকু দায়ী?
– আসলেই কি মুসলিম নাগরিকেরা বৈষম্যের শিকার শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারনে?

আমি একজন সক্রিয় নাস্তিক, পেশায় লেখক নই এবং আমার সামাজিক বিজ্ঞানের চিন্তাপদ্ধতির প্রতি খানিকটা আগ্রহ রয়েছে, তাই আমি বিষয়টিকে একটু খোলামেলা ভাবে দেখতে চেয়েছি, অর্থাৎ আমি কোনও পূর্ব নির্ধারিত ভাবনা নিয়ে বিশয়টিকে তদন্ত করিনি। সংখ্যার প্রতি আমার এক ধরনের প্রীতি আছে, তাই চেষ্টা করেছি খানিকটা পরিসংখ্যান ব্যবহার করে এই প্রশ্নগুলর উত্তর খোঁজার।

মুসলিমদের যুদ্ধপ্রীতি, এবং ইসলাম প্রসার এর ক্ষেত্রে যুদ্ধ এবং বল প্রয়োগের ইতিহাস সবারই জানা। আরব সহ ভারত বর্ষের ইতিহাসে তার বহু নজির আছে। তবে এই আলোচনায় সেসব ইতিহাস খানিকটা অপ্রাসঙ্গিক এই জন্যে যে “ইসলামোফোবিয়া” একটি সাম্প্রতিক ধারণা এবং মুসলমান জনগোষ্ঠীর সাম্প্রতিক ইতিহাসই এই প্রশ্নে প্রাসঙ্গিক। তাই আসুন দেখা যাক, সাম্প্রতিক ইতিহাস কি বলে –

জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের সব চাইতে বড়ো ড্যাটাবেইস টি সংরক্ষন করছে আমেরিকার ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় যা Global Terrorism Database বা GTD নামে পরিচিতি পেয়েছে (http://www.start.umd.edu/gtd/ ) । GTD database ১৯৭০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৪২ বছরের তথ্য সংগ্রহ করছে। ইউরোপে আলাদা ভাবে TWEED ড্যাটাবেইস (http://www.nsd.uib.no/macrodataguide/set.html?id=39&sub=1) যা ইউরোপের একটি প্রধান ড্যাটাবেইস, নরওয়ের বারগেন বিশ্ববিদ্যালয় এই ড্যাটাবেইসটি সংরক্ষন করছে প্রায় অর্ধ শতক ধরে, এবং ইউরোপোল (https://www.europol.europa.eu/ ) গত প্রায় এক দশক ধরে এই ধরনের তথ্য ও পরিসংখ্যান সংরক্ষন করছেন । এই সব কয়টি ড্যাটাবেইস ওপেন সোর্স বা উন্মুক্ত, যে কেউ চাইলেই এই ড্যাটা গুলো পেতে পারেন এবং গবেষণার কাজে ব্যবহার করতে পারেন। ইউরোপোল ২০০৬ সাল থেকে নিয়মিত বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করছেন যা TE-SAT report নামে গুগোল করলেই পাওয়া যাবে। এই সকল ড্যাটাসেট বা প্রকাশনা গুলো আমেরিকা বা ইউরোপের সরকার বা প্রাতিষ্ঠানিক কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রিত প্রকাশনা তাই এই প্রকাশনার তথ্য গুলোকে অন্তত প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে অথেন্টিক বা নির্ভরযোগ্য ধরে নেয়া যেতে পারে।যদিও সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গিবাদ এর সংজ্ঞা নিয়ে মুসলিম বা মার্কিন বিরোধী মহলে বিতর্ক আছে। আপাতত সংজ্ঞা বিষয়ক বিতর্ক একপাশে রেখে বরং আলোচনা টিকে এগিয়ে নেয়া যাক।
মুসলমানদের জঙ্গী ততপরতা বা সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্টতা প্রসঙ্গে, কোনও সন্দেহ নেই, ২০০১ এর ৯/১১ একটা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত হয়ে আছে এবং থাকবে। নিষ্ঠুরতার, বর্বরতার একটা কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে পৃথিবীর ইতিহাসে। একথায় তো কোনও দ্বিমত নেই যে ৯/১১’র আক্রমনের সাথে জড়িতরা সকলেই মুসলমান ছিলেন এবং তার পরে যে গোষ্ঠীটি এই আক্রমনের দায়িত্ব নেয় তাদের সকল প্রকার ব্যাখ্যা – বক্তব্য ধর্ম অনুপ্রানিত বা Religiously motivated ছিল। আমেরিকায় ১৯৭০ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মোট ২৩৮২ টি ঘটনা কে সন্ত্রাসবাদী ঘটনা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে GTD ড্যাটাবেইস এর মতে, এর মধ্যে সন্দেহাতীত ভাবে ৯/১১ র ঘটনা টি সবচাইতে ভয়াবহতম এবং বর্বর ঘটনা।

খানিকটা বিস্ময়কর হলেও সত্যি যে ৯/১১ এর আগে বা পরে কখনই ইউরোপে এবং উত্তর আমেরিকার সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমে মুসলিমদের ব্যাপক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় না। আগ্রহউদ্দিপক সত্যি হচ্ছে উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের গত কয়েক যুগের সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের খুব ছোট একটি অংশ হচ্ছে ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ বা Religious Terrorism এবং যদি মোট সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের সাথে তুলনা করা হয় তাহলে প্রায়শই তা ১০% এর নিচে। অবাক করা বিষয় হচ্ছে এই ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদী ঘটনাগুলোর খুব ছোট একটা অংশ মুসলিম সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা সংগঠিত। আমেরিকায় এটি ঐতিহাসিক ভাবে প্রায় ২% এবং ইউরোপে ১% এরও কম। আমেরিকায় দেশের মাটিতে ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদের একটা বড়ো অংশের সাথে ইহুদি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় যার পরিমান প্রায় ৫% । অর্থাৎ আমেরিকায় ইহুদি ধর্মভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের দ্বারা সংগঠিত ঘটনা গুলোর সংখ্যা ইসলামিক জঙ্গী ঘটনা গুলোর প্রায় আড়াইগুন। তাহলে আমেরিকা বা ইউরোপের এই সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের সাথে মুলত কারা জড়িত? আমাদের সাধারন ধারনার সাথে বাস্তব পরিসংখ্যান কে মিলিয়ে নেয়ে যেতে পারে।
ইউরোপোল ২০০৬ সাল থেকে নিয়মিত রিপোর্ট প্রকাশ করছে এবং ২০০৬ থেকে গত বছর পর্যন্ত প্রত্যেক বছরে ইউরোপের সন্ত্রাসবাদী তৎপরতার প্রায় প্রায় ৭০% বেশী সংগঠিত হয়েছে “সেপারেটিস্ট” বা বিচ্ছিন্নতাবাদী দের দ্বারা। ফ্রান্স, স্পেন এবং ইংল্যান্ড এই তিনটি দেশে ৮০% এর বেশী সন্ত্রাসবাদী ঘটনা ঘটেছে যার সবচাইতে বেশী ঘটেছে স্পেনে এবং প্রতিটি ঘটনাই “স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী” দের দ্বারা সংগঠিত। তিনটি গ্রাফ যুক্ত করছি এখানে মেরীল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের GTD database থেকে, ১৯৭০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদের চল বা ট্রেন্ড টি খেয়াল করে দেখুন। প্রথম গ্রাফটিতে উত্তর আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপের গত প্রায় ৪০ বছরের সন্ত্রাসবাদী ঘটনার ট্রেন্ড বা চল টি দেখা যাবে। উত্তর আমেরিকা এবং প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী ঘটনার সংখ্যা ইউরোপ এবং উত্তর আফ্রিকার চাইতে সব সময়েই অনেক কম ছিল ।দ্বিতীয় গ্রাফটি তে ২০০৪ সাল পর্যন্ত পশ্চিম ইউরোপে সংগঠিত প্রায় ৫০ বছরের সন্ত্রাসবাদী ঘটনার পরিসংখ্যান এবং তৃতীয় গ্রাফটিতে উত্তর আমেরিকা, পশ্চিম ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্য -উত্তর আফ্রিকা এই তিন অঞ্চলের সন্ত্রাসবাদী ঘটনার ঐতিহাসিক চল বা ট্রেন্ড টি লক্ষ্য করা যাবে।
Image and video hosting by TinyPic

Image and video hosting by TinyPic

Image and video hosting by TinyPic

এই তিনটি অঞ্চলের ঐতিহাসিক চল বা ট্রেন্ড টি খেয়াল করে দেখুন মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার সন্ত্রাসবাদী ঘটনাগুলো প্রায় নব্বই দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ইউরোপের চাইতে কম ছিল। এরপরে ২০০২ থেকে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে সন্ত্রাসবাদী ঘটনা রকেটের গতিতে ঘটতে লাগলো, কিন্তু এই অঞ্চল গুলোতে তো আগেও ইসলাম অধ্যুষিত জনগোষ্ঠীরই বসত ছিল, কিন্তু তাহলে কেনও ঐতিহাসিক ভাবে ২০০২ সালের আগে এই অঞ্চলগুলোতে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের বিস্তৃতি এতো ভয়াবহ ছিলোনা? আর ২০০২ সাল থেকে কি এমন ঘটতে থাকলো এই অঞ্চল গুলোতে যা এই অঞ্চলের সন্ত্রাসবাদী ঘটনার হার কে এই রকমের আকাশ্চুম্বি করে তুলল ? আর ২০০২ সালের পরথেকে উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপ দুই অঞ্চলেই সন্ত্রাসবাদী ঘটনার সংখ্যা কমে প্রায় ভুমি অক্ষের সাথে মিশে গেলো, কেনও? অর্থাৎ এই চল বা ট্রেন্ডটির পেছনে কি ধর্ম না রাজনীতি কিম্বা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতির কোনও ভূমিকা ছিলো? বলাই বাহুল্য, আমেরিকা এবং তাঁর ইউরোপের মিত্ররা মিলে ২০০১ সালের ৯/১১ ঘটনার পর থেকে সারা বিশ্বে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশ গুলোতে গণতন্ত্র ফেরী করতে শুরু করে, যার পপুলার না হয়ে উঠেছে “ডেমোক্র্যাসী এক্সপোর্ট” বা “গনতন্ত্র রফতানী”। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশ গুলোতে সন্ত্রাসবাদী ঘটনাবলীর এই রকেট গতি আর মার্কিন ও তাঁর বন্ধুদের “গনতন্ত্র রফতানী”র সময় কাল টি কাকতালীয় ভাবে মিলে যায়, এটা কি আসলেই দৈব মিল? নাকি এর মধ্যে কোনও সম্পর্ক রয়েছে? এই প্রশ্ন টি নৈর্ব্যক্তিক ভাবে উত্থাপনের সময় এসেছে।

“শাখের করাত” সম্ভবত দুই দিক থেকে কাটে, অর্থাৎ যাওয়ার পথে এবং ফিরে আসার পথে উভয় ভাবেই কাটে। মুসলমানদের ধর্ম ইসলাম এক অদ্ভুত শাখের করাত, এর অনুসারীরা নিজেরাই নিজেদেরকে সারা পৃথিবী থেকে আলাদা করে তোলে আবার আলাদা হয়ে যাবার পরে সেটা নিয়ে আক্ষেপ করে, বৈষম্যের অভিযোগ তোলে।

লেখাটি পরিকল্পনা করেছিলাম তিন পর্বে শেষ করবো, এখন মনে হচ্ছে, হয়ত চার পর্বে শেষ করতে হবে। আগামী পর্বে, ইউরোপীয় মুসলমানদের “ না ঘরের, না ঘাটের” পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছা রইলো।