দেশের মালিককে স্টুপিড, গেট লস্ট ও ইতর বলেছে দেশের বেতনভুক কর্মচারী মন্ত্রী আবুল মাল। চড় থাপ্পড় মেরেছে পুলিশ, এই নাগরিককে বিনা পরীক্ষায় পাগল বলেছে সরকার লোকজন সহ উপস্থিত আশপাশের অচেনা মানুষজন। নানান খবর ঘেঁটে বোঝা গেলো যে শাকিল নামের এই নাগরিক ভদ্রলোক অপ্রত্যাশিত কোনভাবে মন্ত্রী আবুল মালের অফিসের দরজায় উপস্থিত হয়. সেখান থেকে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে, হাত ইশারায় ডাকে কথা বলবার জন্য। উপস্থিত সাংবাদিকরা তাদের মাইক্রোফোনে, ক্যামেরায় ও অন্যান্য যন্ত্রে ধারণ করে ফেলে শাকিলের ‘আমি দেশের মালিক’ বলে ওঠা এই সময়ের কিছু ঘটনা।
ভিডিও লিঙ্ক:
এই ক্লিপে পুলিশের চড় মারার আর প্রতিবাদের ব্যপারটা আছে
নাগরিক শাকিল একজন স্বাভাবিক নাগরিক মানুষ, অস্বাভাবিক নাকি বিরক্তির চরম সীমায় পৌঁছানো একজন মালিক? সে কি কর্মচারীর জবাবদিহি চাইতে আসা একজন অসন্তষ্ট মানুষ? পরিস্কার করে কিন্তু বোঝা যায়নি এখনো। বিনা অনুমতিতে আবুল মালের অফিসে যাওয়াই তার প্রাথমিক অপরাধ। মানুষটি তার অসন্তোষের কথা বলতে এসেছিলো মন্ত্রীর কাছে। সাংবাদিক পুলিশরা তাকে বলে ওঠে যে সচিবালয় সাধারণ মানুষদের জায়গা নয়। ক্ষিপ্ত শাকিল তার জবাবে বলে ওঠে, ‘আমি সাধারণ কেউ নই, আমি দেশের মালিক’। মন্ত্রীর ধমক আর পুলিশের চড় খাওয়া মানুষটি সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তার ঠিক পরিচয় দিলেও তাকে দমিয়ে ফেলে তৎক্ষনাৎ লাঞ্চিত করা হয়। খবরে দেখা যাচ্ছে তাকে মানসিক রোগীদের একটি হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া হয়েছে। তারপর কি, তদন্ত কি, দন্ড কি; কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।
======আচ্ছা একজন নাগরিক, জনগণ কি সত্যিই দেশের মালিক?
======সরকারের সবাই কি তার কর্মচারী?
======কোথায় লেখা আছে সেটা?
======দেশের সর্বোচ্চ আইনের বই পবিত্র সংবিধানে?
কথা সত্যি হলে, নিরাপত্তা তদন্ত শ্রদ্ধাশীল এসব না শুনে কর্মচারীর কাছে শুনতে হোল স্টুপিড গেটলস্ট ইতর? মালিকের হজম করতে হল প্রচন্ড থাপ্পড়? মালিকের বেতনভুক কর্মচারী এই আবুল মাল আর পুলিশ এত সাহস? মালিকের গালে থাপ্পড় ? মালিককে বলে স্টুপিড গেটলস্ট ইতর? নাগরিক জনগণ যে দেশের মালিক সংবিধানে কি এমন কথা কি লেখা নেই?
চলুন দেখা যাক সংবিধানের সেই সব ধারা উপ ধারার দু একটা :
=======৭৷ (১) প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে।
সংবিধানের যেখানে এই কথা লেখা আছে
আবার দেখুন,
সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীর সংজ্ঞা: “সরকারী কর্মচারী” অর্থ প্রজাতন্ত্রের কর্মে বেতনাদিযুক্ত পদে অধিষ্ঠিত বা কর্মরত কোন ব্যক্তি;
এবং ব্যাখ্যায় এই কথাটা যেখানে লেখা আছে
আরে, আছে তো। নাগরিক জনগণ মালিক এমন কথা লেখা আছে বটে।
ধন্যবাদ।
==================== =============== ==================
প্রাসঙ্গিক অন্যান্য কিছু লিঙ্ক:
বিডি নিউজ
মানব জমিন
বিডি প্রতিদিন
প্রথম আলো
যায় যায় দিন
ইত্তেফাক
বিডি টুমোরো
স্টুপিড, গ্রেট লস্ট,ইতর আমরা মানে জনগন, আর দেশের মালিক হল মন্ত্রীরা, এ কথাটি মিনিস্টার মহোদয় যেভাবে মিস্টার শাকিলকে বুঝালেন তাতে যে মিনিস্টার কতটা নীচ,দাম্ভিক, ফাতর, তা ত ই প্রমান করলেন।
@গীতা দাস,
হ্যা এই মাল মন্ত্রীর মত জনগনের অন্য বেশিরভাগ গনপ্রতিনিধি চাকরেরা প্রভুর মত আচরণ করে বেড়ায়। উল্টো আচরন করে বোঝাতে চায় ওরাই দেশের মালিক। সহজ সরল জনগনকে গায়ের জোরে বুঝতে দেয় না যে ওরা আসলে জনগনের চাকর। জনগনের দেওয়া চাকরির দায়িত্ব জনগনের সেবা; ওরা তা না করে জনগনকে জিম্মি করার দ্বায়িত্ব পালন করে। তারপর আবার আবার এবং আবার, এভাবেই চলতে থাকে লুটপাট ও দাম্ভিক শাসন অত্যাচার ও শোষন।
নিরাপদে থাকুন।
বাস্তব বড়ই কঠিন। কিছুই করার নেই , এসব মেনে নিতে হবে । এটা কি জানা কথা নয় যে , বাংলা সমাজে মগজের চেয়ে জিহ্বার গতি বেশী ? পশ্চিমে মগজ চলে আগে এবং জিহ্বা চলে পেছনে। বাঙালী সমাজে পশ্চিমের সংস্কৃতি আশা করলে পশ্চিমের অন্যান্য বিষয়ও গ্রহনে তৈরী থাকতে হবে। এটা নেব , ওটা নেব না তা হবে না্। অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় যে, বাঙালী সমাজে প্রকৃত ইতর এবং স্টুপিডদের সাথে ভাল ব্যবহার করার ফল কখনই ভাল হয় না্। এখানে আপনি একজন ইতরের সাথে ভাল ব্যবহার করলে সেও আপনাকে সমগোত্রীয় ইতর মনে করবে ! যে কোন দিন চোর বদমাস সচক্ষে দেখেনি , তার কাছে অবশ্য মনে হতেই পারে যে , চোর বদমাসেরা না জানি কত অসহায় ! (D)
@সংশপ্তক,
কেন? শুধু ভালোটা নিলেই তো হয়। অবশ্য কিন্তু একটা আছে, কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ তা বোঝা যাবে কি করে? চোরের চোখে চুরি করা কিন্তু ভালো কাজ :))
ওহ, আপনার মন্তব্যের শেষটুকু একটু খোলাসা করে বললে একটু সুবিধা হত ভায়া :-s
@কাজী রহমান,
এই আমেরিকায় হোয়াইট হাউজে এভাবে কেউ অবৈধভাবে ঢোকার চেষ্টা করলে গুলি করে মেরে বলা হত – সম্ভাব্য সন্ত্রাসী কিংবা গুপ্ত ঘাতক। এই লোকের ভাগ্য ভাল যে , শুধুমাত্র ইতর বলে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে।
ওটা ‘মানবতাবাদীদের’ উদ্দেশ্যে নিবেদিত।
@সংশপ্তক,
প্রথমত তুলনাটা হয়েছে অসম; হোয়াইট হাউস আর বাংলাদেশের সচিবালয় এক জিনিস নয়। দ্বিতীয়ত হোয়াইট হাউসে অনুপ্রবেশকারীকে নিষিদ্ধ এলাকায় ঢোকার অনেক আগেই ধরে ফেলা হত। জোর করে ঢুকতে চেষ্টা করলেই শুধুমাত্র ফেরে ফেলার ব্যপারটা ঘটতে পারতো; যদি জ্যান্ত ধরতে একান্তই না পারতো তা হলেই।
আরে এ নিয়া তো আইজকাই ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস মারছি –
@অভিজিৎ,
আসলেও কিন্তু তা ই।
ছলে বলে কৌশলে বিভিন্ন দলের রাজনীতিবিদরা দেশের মালিক অর্থাৎ জনগনকে আসলেই পাগল বানিয়ে ফেলেছে। মালিকের সবকিছুর দখল করে নিজেরাই মালিক বনেছে। এটা হয়েছে উল্টো রাজার দেশ।
অদ্ভুত এক রূপকথার গল্পের দেশ আজ বাংলাদেশ।
@অভিজিৎ,
আপনার ষ্ট্যাটাসের মাজেজা ফেসবুকে বুঝি নাই। পরে রহমান ভাই এর লেখা পড়ে বুঝছিলাম।
@আদিল মাহমুদ,
আপনে বাংলা পেপার টেপার পড়ন ছাইড়া দিসেন নাকি? আমিও পড়ি না অবশ্য, তয় পেপার না পড়লেও ফেসবুক তো কাইল থেইকাই এই ব্যাপারটা নিয়া সরগরম দেখতাসিলাম।
@অভিজিৎ,
ফেসবুকে ঘোরাঘুরি করলে আর পেপার পড়ার দরকার হয় না। তবে আলু পত্রিকা নিয়মিত পড়ি। আজকাল মন্ত্রী এমপি সাহেবদের সম্পর্কে পজিটিভ কিছু বাইর হইলে তাইই পড়ি, এইটা অনেক সোজা……
পুরো ঘটনা বুঝলাম না কারন লিংকগুলোয় ঢূঁ মারিনি এখনো।
আওয়ামীপন্থী বলে পরিচিত জাফর ইকবাল স্যারের সাথে গত আওয়ামী সরকারের শিক্ষা মন্ত্রী সাদেকের বেশ কাজিয়া হয়েছিল। দু’জনে পত্রিকায় অভিযোগ, পালটা প্রতিবাদ কয়েক সিরিজে লিখেছিলেন। জাফর ইকবালের একটা কথা মনে আছে, অনেকটা এই রকম,”মন্ত্রী একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের সাথে যে ভাষায় কথা বলেন, ব্যাবহার করেন, না জানি সাধারন একজন জনতার সাথে কেমন ব্যাবহার করেন”।
নাজমুল হুদা গত জোট সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী থাকাকালীন উনি একবার অন দ্যা স্পট একজন ট্রাক ড্রাইভারকে পুলিশ দিয়ে পিটিয়েছিলেন। তার অপরাধ ছিল ভাংগা রাস্তায় মন্ত্রীকে সশরীরে পেয়ে রাস্তা কবে ঠিক হবে জিজ্ঞাসা করা।
@আদিল মাহমুদ,
বোঝেন এইবার। জনগন ওদের চাকুরী দেয় আর ওরা গদিতে বসে রাজা হয়ে যায়। বেমালুম ভুলে যায় ওদের একমাত্র কাজ হচ্ছে জনগনের সেবা করা। সাধারণ মানুষকে প্রজা ভাবা এবং মানুষকে অসম্মান করাটাই যেন এদের একমাত্র কাজ হয়ে ওঠে। ওদের চোখে মুখে অহরহ স্টুপিড, ইতর আর রাবিশ হয়ে যায় সাধারণ মানুষ।
@কাজী রহমান,
অথচ এই ভদ্রলোককে ভদ্রলোক হিসেবেই সকলে জানে। বাকিগুলার কি হাল হতে পারে অনুমান করা শক্ত নয়।
সভ্যতার মানে যে আমরা কোথায়……
@আদিল মাহমুদ,
হা হা হা কথা মন্দ বলেননি। অন্যগুলো সম্ভবত বাঙলায় গাল পাড়ে। কিন্তু এই মাল পাড়েন বিলাতী ভাষায়। মনে করেন জনগন এখনো পরাধীন। ইনি আবার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যমনি হয়েও উপস্থিত যান প্রায়ই। তোষামোদকারীদের তো আর অভাব নেই। পথে আসতে যেতে যে কতবার তিনি তার চাকুরীদাতা জনগনকে রাবিশ রাবিশ করে নাক সিঁটকান তা কেই বা হিসাব করেন!
একজন আমজনতা হিসেবে সচিবালয়ে যেয়ে মন্ত্রীর সাথে দেখা করা বেশ ঝামেলার কাজ। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি সচিবলায়ে ঢুকতে গেলে যে মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সাথে দেখা করবো তার পূর্বানুমতি লাগে। ঐ মন্ত্রীর সাহায্যকারী ওখান থেকে স্লিপ এপ্রুভ করে যেখানে ব্যক্তির নাম, ঠিকানা ও ফোন নাম্বার থাকে। এরপর নিচের নিদ্রিস্ট মন্ত্রণালয়ের কাউন্টার থেকে সাক্ষাৎ প্রার্থী ব্যাক্তির ফোন নাম্বার মিলিয়ে স্লিপ প্রদান করে তারা। একজনার প্রবেশের অনুমুতির স্লিপ কিছুতেই অন্যের হাতেও দেয়না তারা। এরপর ঐ স্লিপ নিয়ে মন্ত্রণালয়ে গিয়ে মন্ত্রীর সাক্ষাতের জন্য অনেক সময় ধর্না দিয়ে থাকতে হয়।
এই রকম সিকিউর জায়গা থেকে শাকিল কিভাবে অর্থমন্ত্রীর রুমের সামনে পর্যন্ত গেলেন কোন বাধা ছাড়া এটাই তো আমি বুঝে পাই না। :-s :-s :-s
@নিলয় নীল,
ওইটা নিরাপত্তা কর্মীরা বুঝুক।
জনগণ বুঝুক কর্মচারীর থাপ্পড় খেতে কেমন লাগে। ইতর উপাধি ধারণ করতে কেমন লাগে। এইসব মাল মন্ত্রীরা কার কর্মচারী এবং তাদের আচরণ কি হওয়া উচিৎ। কে মালিক আর কে চাকুরে।