{একটা প্রশ্নের সম্মুখিন বারে বারে হতে হয়। আপনে নাকি নাস্তিক তাহলে হিন্দুদের নিয়ে এতো লেখা কেন, এতো দরদ কেন? এর একটাই উত্তর- ভিকটিম যদি খ্রিস্টান হতো কিংবা মুসলিমরা যদি সংখ্যার দিক থেকে কম হতো তাহলে আমি খ্রিস্টান মুসলিমদের পক্ষ হয়েই চিৎকার করতাম।}
একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশের পথ চলা শুরু হলেও বাংলাদেশ বেশিদূর এগুতে পারেনি। মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সংবিধানে রচনা হয়েছে চারটি মূলনীতিকে ভিত্তি করে-গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ। সমাজতন্ত্র শব্দটি রেখে একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। বলা হয়, সমাজতন্ত্র মানে হবে, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিচার। তবে চারটি মূল নীতিতে বাংলাদেশ বেশি দিন স্থায়ী হতে পারেনি। অর্থনৈতিক কারণ হোক কিংবা বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর চাপে হোক কিংবা অসহায় একটি দেশের সাহায্যের প্রয়োজনে হোক শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু লাহোরে ওআইসি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন এবং আরব দেশগুলোর চাপে ইসলামিক ফাউন্ডেশন-এর মতো প্রতিষ্ঠান পুনরায় প্রতিষ্ঠান করেন, যা কিনা ১৯৭২ সালে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। শুধু তাই নয় দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভিন্নধর্মালম্বীদের ভিটে মাটি দখলের প্রতিযোগিতা চলে। যুদ্ধের সময় অনেকেই হয়তো প্রাণ ভয়ে ভারতের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন স্বাধীনতার পর এসে দেখেন তার বাড়িটি দখল হয়ে গেছে। এই রূপ দখলের অভিযোগ তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও ছিল। যাই হোক মূল কথায় আসি।
বাংলাদেশ কতোটুকু ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হয়ে উঠছে সেই চিত্রটি দেখা যাক। ৭০-এ দিকে বাংলাদেশের শিক্ষিতের হার ছিল ১৫% কম। কিন্তু বর্তমানে ৫৩.৭%, তার মানে দেখা যাচ্ছে দেশে নিরক্ষর মানুষের হার অনেক কমে গেছে। কিন্তু শিক্ষিতের হারের সাথের সাথে কী অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষের সংখ্যা বাড়ছে? যদি না বাড়ে তাহলে কী আমার সামাজিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় কোন সীমাবদ্ধতা রয়েছে? আমাদের রাষ্ট্র নায়করা বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র দিকে যেতে না দিয়ে বরং ধর্মভীরু একটি রাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ১৯৭৯ সালে সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির-রহমানির রাহিম’ সহযোজন করা হয়। এই সহযোজনের মধ্য দিয়েই প্রকাশ্যে একটি রাষ্ট্রের সাম্প্রদায়িক পথ চলা শুরু হয়। এর পর ১৯৮৮ সালে এসে বিশ্ব বেহায়া স্বৈরাচারী এরশাদ রাষ্ট্রের খতনা দিয়ে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। এর মধ্য দিয়ে আমরা যতোটা না ধর্মপ্রাণ হিসেবে নিজেকে জাহির করলাম তার থেকে বেশি একটি সাম্প্রদায়িক হিসেবে নিজেদের হাজির করলাম। শুধু এখানেই শেষ নয় ২০১১ সালে, সংবিধান পুনরায় সংশোধন করে বলা হলো, “বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিত হইবে।“ বলার অপেক্ষা রাখে না এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িকতা যতটুকু বাকি ছিল তাও বিলুপ্ত হল। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে শুধু কী বাঙালিরা আত্মত্যাগ করেছে? আদিবাসীরা কী একটি স্বাধীন দেশ চায় নি? দেশ স্বাধীনে তাদের কী অবদান নেই? মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীদের ভূমিকা পড়ুন এখানে। যদি থেকেই থাকে তাহলে কেন এই সাম্প্রদায়িক আগ্রাসন? জাতি হিসেবে আরেক জাতির উপর উৎপীড়ন? সাম্প্রদায়িকতা শুধু ধর্মে ধর্মেই থেমে থাকে না জাতিতে জাতিতেও হয়। প্রায়ই শোনা যায় পাহাড়ি বাঙালির মধ্যে দাঙ্গা। এখানে একটু লক্ষণীয় যে; দাঙা হয় সমানে সমানে কিন্তু সংখ্যালঘুর বিপক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠের হামলা হয় অত্যাচার, আগ্রাসন কিন্তু আমাদের মিডিয়া এবং পত্রিকাগুলো খুব সতর্কতার সাথে বিষয়গুলো দাঙা বলে চালিয়ে দেয়। স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পর এসেও শুনতে হয় পাহাড়ে আদিবাসীদের উপর বাঙালিদের হামলা! ভিন্নধর্মালম্বী মানুষের উপর মুসলিম সম্প্রদায়ের হামলা। সাম্প্রদায়িক এসব হামলা দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও থেমে নেই। রাষ্ট্র যতোই চোখ বন্ধ রাখুক না কেন এই হামলাগুলোর পরিসংখ্যান দেখলে বিস্ময় জাগে। কারণ দিনদিন এই হামলার পরিমাণ বাড়ছে। কিন্তু অপরদিকে শিক্ষার হার লক্ষ্য করলে দেখা যায় শিক্ষার হার বাড়ছে। তাহলে মানে কী দাঁড়াল; প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় আমরা শিক্ষিত হয়েও আমরা আমাদের মনে সচেতন ভাবে কিংবা গুপ্তভাবে সাম্প্রদায়িকতার বীজ লালন করে যাচ্ছি। ২০১৩ সালে এসেও দেখতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা যুদ্ধাপরাধী ও সাম্প্রদায়িক দলের পক্ষে মিছিল করেছে, বক্তব্য দিচ্ছে। বর্তমানে সাম্প্রদায়িক বিষ-বাষ্প ছড়ানোর আরেকটি ভয়ানক জায়গা হল মাদ্রাসা। মাদ্রাসা এখন সরকারের একটা মাথা ব্যথার কারণ হয়েও দাঁড়িয়েছে। একদিনে যেমন মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়ন প্রয়োজন অন্যদিকে মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থার সম্পূর্ণ বিপক্ষে মাদ্রাসার পরিচালকরা। এই বছর মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে গিয়েও শেষ পর্যন্ত সরকারকে তার অবস্থান থেকে সরে আসতে হয়। মাদ্রাসায় কীরূপ সাম্প্রদায়িক চর্চা চলে তার একটি উদাহরণ দিচ্ছি- রবীন্দ্রনাথ নাকি নজরুলকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন। কথাটা আমার এক বন্ধুর মুখে শোনা। এখানে খুব সচেতনভাবেই একজন মুসলিমের বিপক্ষে একজন হিন্দুকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। শুধু এখানেই শেষ নয় গ্রাম-গঞ্জে ওয়াজ মাহফিলে সাম্প্রদায়িক চর্চা হয় সবচেয়ে বেশি। অন্য ধর্মের মানুষের অনুভূতি নিয়ে হাসি ঠাট্টা চলে প্রতিনিয়ত। এমন কী ছোট শহরগুলোতেও মাইক লাগিয়ে এমন সাম্প্রদায়িকতার চর্চা করা হয়। কথাগুলো আমার বানান না। আমার এমনই পরিবেশে বড় হয়েছি। উপরে যা বললাম তা তো প্রকাশ্যে সাম্প্রদায়িকতার রূপ। আমাদের মনে গুপ্ত সাম্প্রদায়িকতার প্রমাণ পাওয়া যায় যখন দেখি সেই সুদূর ফিলিস্তিনির জন্য মায়া কান্না অথচ পাশের বাড়ির ভিন্নধর্মের মানুষটির জন্য সামান্য দরদটুকু নেই। আমাদের সমাজেই দেখেছি; এক সময় বাম রাজনীতি করে এসেও জীবনের শেষ বয়সে ডান হয়ে গেছেন। মধ্যপন্থী দল আওয়ামী লীগ করলেও ব্যবহার জামাতিদের মতন। তাই এক্ষেত্রে ভেবে বসে থাকার কোন কারণ নেই যে; কোন দল অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি করলে তার দলের কর্মীরাও অসাম্প্রদায়িক হয়ে উঠবে। রামুতে জামাত-বিএনপি-আওয়ামী লীগ সবাই একসাথে হামলা করেছে। রাজনৈতিক আদর্শে ভিন্নতা থাকলে সাম্প্রদায়িকতার বন্ধনে তারা একই নৌকার মাঝি। আসলে এর কারণ একটাই মনের অগোচরে আমাদের সাম্প্রদায়িকতা লালন। আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র কখনো কৌশলে, কখনো সরাসরি সাম্প্রদায়িকতার চর্চা করে। আর রাষ্ট্রতো অনেক আগেই অসাম্প্রদায়িকতার মুখোশ খুলে ফেলেছে। ৭১-এ বাংলাদেশে সনাতন ধর্মের মানুষের সংখ্যা ছিল ২৭% বর্তমানে তা ৯% এর নিচে। ভবিষ্যতে হয়তো আরও কমবে। এর একটাই কারণ দেশে সনাতন-ধর্মীয়রা নিরাপত্তা-হীনতায় ভোগে। কয়দিন আগে পত্রিকায় দেখলাম কয়েক’শ পাহাড়ি বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতের সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছে এখানেও একই ঘটনা। নিরাপত্তার-হীনতা এবং বারবার ধর্মীয় আগ্রাসনের কারণে দেশে ভিন্নধর্মালম্বী মানুষের সংখ্যা কমছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বৌদ্ধদের উপর নিষ্ঠুরতম সাম্প্রদায়িক হামলা হয়। সরকার বৌদ্ধদের মন্দির পুনরায় বানিয়ে দিলেও ধ্বংস হয়ে গেছে হাজার বছরের ইতিহাস, বিনষ্ট হল সামাজিক সম্প্রীতি। ভাঙা মন্দির আবার গড়া গেলেও বৌদ্ধধর্মালম্বীধের মনে যে ভয় জন্ম নিয়েছে তা কতোটুকু দূর করা গেছে তাই দেখার বিষয়। কয়েক দিন ধরে শুনছি বৌদ্ধ পাড়ায় যুবকেরা পালা করে মহল্লা পাহারা দেয়। আবার হামলা হওয়ার ভয়ে তারা রাত জেগে মহল্লা পাহারা দেয়। এর মধ্যেই স্পষ্ট হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্রের মূল ছবি। ভিন্নধর্মালম্বীদের উপর হামলার কোন বিচার আজ পর্যন্ত হয়নি। কোন ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে সাজা দেওয়া হয়েছে তার নজির নেই। বরং সবসময় রাষ্ট্র ও সমাজ এই বিষয়গুলো চেপে যাওয়ার চেষ্টা করে।
কয়েকদিন আগে ধর্ম অবমাননা নিয়ে জামাতের বি টিম হেফাজতে ইসলাম বিশাল জনসভা করল। কেউ ব্লগ পড়ে, কেউ বা না পড়ে, কেউ বা গুজবের কারণে ধর্মানুভূতিতে আঘাত পেয়েছেন। অথচ রামুর ঘটনায় কারো ধর্মানুভূতিতে আঘাত আসেনি, প্রতিবছর পূজা আসলে প্রতিমা ভাঙলে ধর্মানুভূতি আহত হয় না। ধর্মানুভূতি হল যৌনানুভূতির মতন। কখন কোথায় আহত হয় তা বলা মুশকিল। দেখা যায় কেউ মন্দিরে আগুন দিয়েছে তখন ব্যক্তি আহত হননি কিন্তু কেউ এক-লাইন শব্দ পোস্ট করেছে তাতেই তিনি আহত হয়ে মামলা টুকে দিলেন কিংবা আপনার ঘাড়ে কোপ দিলেন!!!! এই অনুভূতির গতিবিধি খুবই রহস্যময়।
প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই দেখি রাজাকার কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হওয়ার প্রতিবাদে হিন্দুবাড়িতে আগুন, দোকানে ভাঙচুর ও লু্ট। শুধু ভিন্নধর্মালম্বীদের বাড়িতে নয় যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন তারা জামাত-শিবিরের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন। ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা অনেকে খুন হয়েছেন অনেকের বাড়ি পেন্ট্রোল বোমা মেরে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সাক্ষীদের নিরাপত্তা ও রাজাকারের রায় কার্যকর হওয়ার পর দেশ ব্যাপী সহিংসতা থামাতে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সরকারের প্রথম কাজ ছিল সাক্ষীদের নিরাপত্তা বিধান করা কিন্তু সেক্ষেত্রে তারা উদাসীনতা দেখিয়েছে। ফলশ্রুতিতে দেখা যাচ্ছে; সাক্ষী নিজ বাড়িতে খুন হচ্ছেন।
কাদের মোল্লার রায় বাস্তবায়ন হওয়ার পর বাঙালির শক্র আর বন্ধু চেনা আরও সহজ হয়েছে। ৭১-এ যারা আমাদের বিরোধী ছিল বর্তমানে তারা বিভিন্ন ছুতায় বিচার বানচাল করতে মাঠে নেমেছে। জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা আমাদের বিচারের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। শুধু এরাই নয় ইসলামপন্থী দলগুলোও জামাতের পক্ষে, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য মাঠে নামে। এক্ষেত্রে আমেরিকার মিত্র তুরস্কের লম্ফ-ঝম্প বেশ উল্লেখযোগ্য। রায় কার্যকর হওয়ার পর দেশ ব্যাপী নাশকতার সাথে সাথে চল্লিশের বেশি হিন্দুবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয় জামাত শিবির কর্মীরা। আজ যারা ভাবছেন; হামলা তো হিন্দুদের উপর হচ্ছে বা ভিন্নধর্মালম্বীদের উপর হচ্ছে আমার তাতে কী তাদের কে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই; পাকিস্তানে প্রতি জুম্মাবারে মসজিদে বোমা হামলা হয়। তাই মৌলবাদী শক্তির প্রথম শিকার আমরা হলেও শেষ শিকার হবেন কিন্তু আপনারাই। তাই সময় এসেছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার; আমরা কী প্রগতির পথে হাঁটব নাকি হুমায়ুন আজাদের কথাই সত্য হবে। স্যার বলেছিলেন;
এদেশের মুসলমান এক সময় মুসলমান বাঙালি, তারপর বাঙালি মুসলমান, তারপর বাঙালি হয়েছিলো; এখন আবার তারা বাঙালি থেকে বাঙালি মুসলমান, বাঙালি মুসলমান থেকে মুসলমান বাঙালি, এবং মুসলমান বাঙালি থেকে মুসলমান হচ্ছে। পৌত্রের ঔরষেজন্ম নিচ্ছে পিতামহ।
তাই সবকিছু নষ্টদের দখলে যাওয়ার আগে এই সাম্প্রদায়িক দানবকে আমাদেরই রুখতে হবে। যদি না পারি তাহলে এই দানবের থাবায় আমরা ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব। মনে রাখা ভাল-নগর পুড়লে দেবালয় এড়ায় না।
ভবিষ্যৎ বেশি দূরে নয় % আরও করে যাব।
ওরা নায়ক নয় ভিলেন। খল নায়ক। গায়ের জোরে উঠে আসা গদ্দীবাজ। ছদ্মবেশী রাজ ঠিকাদার। ওদেরকে আমাদের বলে ডাকবার দরকার নেই।
এসব করেছে ওরা, ওরা এবং ওরা। খল নায়কেরা। ক্ষমতালোভী ছদ্মবেশী রাজ ঠিকাদারেরা।
দেশের মালিকের নাম নাগরিক জনগণ। ওরা এসব করবার আগে জনগনকে জিজ্ঞাসা করেনি। চাপিয়ে দিয়েছে। চতুরতার সাথে মগজ ধোলাই করেছে। বিষ বৃক্ষ পুঁতেছে সোনার মাটিতে। এদের ক্ষমা নেই।
@কাজী রহমান,
অস্বীকার করার জো নাই। কিন্তু জনগণ আজ তাদের চতুরতায় বুদ হয়ে গেছে। আজ যদি সরকার রাষ্ট্র ধর্ম বাতিল করে দেয় তাহলে সরকার পতন নিশ্চিত। 🙁
ব্যাখা-ট্যাখ্যা দেবার দরকার নেই শুভ। নিজের ভিতরে প্রতারণা না থাকলে, কে কী ভাবলো তাতে কিছু আসে যায় না। সত্যটা মুখের উপরে ঠাস করে বলে দেবার সাহস খুব কম মানুষেরই আছে। যাদের আছে তাদের ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই।
লেখা দারুণ হইছে। এর জন্য চা খাবা না বিয়ার? যাও দুইটাই দিলাম তোমারে। (C) (B)
@ফরিদ আহমেদ,
মাগনা যেহেতু পাচ্ছি তাহলে বিয়ার-ই হোক :))
একেবারে শুরুতেই লেখক সুব্রত শুভকে অভিনন্দন! আমি খুব খুশি আবার আমাদের মাঝে পেয়ে। লেখাটি যথার্থ এবং সত্য উচ্চারণ। আমরা কবে সত্যি সত্যি এ মাতৃভূমির সন্তান হবো জানিনা। কিন্তু দিকে দিকে যেভাবে সাম্প্রদায়িক চেতনার উন্মেষ ঘটছে তার লাগাম টেনে ধরা না গেলে খুব দেরী নেই বোধ হয় পাক অফগান পর্যায়ে পৌঁছে যাবার। অনেকে খুব আয়েশের সাথে একথা বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ!’ পরিসংখ্যান কি তা বলে? সেজন্যেই আফসোস, হয়তো আমরা এখনো ঘুমন্ত জাতি!
@কেশব কুমার অধিকারী,
আমাদের দেশে যেমন গণতন্ত্রের চেহারা তেমনই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রূপ। দুইটাই কাগজে কলমে।
চমতকার হয়েছে লেখা।
– খুবই সত্য কথা। সব ধরনের চরমপন্থীদের মাঝেই এই প্রবনতা দেখা যায়। উগ্রতা স্বভাবের ভেতরেই থেকে থাকলে সেটা প্রকাশ করতেই হবে, সংখ্যালঘুদের নিকেশ করা গেলে তখন আর নিজেদের ভেতর হানাহানি ছাড়া উপায় কি।
গতবার আপনার লেখা মুক্তমনায় প্রকাশের ২ দিনের ভেতর শশুড়বাড়ী পরিদর্শন ঘটেছিল……খোদা না খাস্তা……একটু সাবধানে থাকবেন :)) ।
@আদিল মাহমুদ,
শশুড়বাড়ি জিন্দাবাদ 😛
এক কালে সব বন্ধুদের নিয়ে পুজায় ঘুরতে জেতাম। অথচ এইবার এক সাইদি ভক্ত বলে বসলো প্রতিমা দেখা হারাম। এই পুজায় ঘুরার জন্য একজন বন্ধুকেও কাছে পাইনি। সবচেয়ে কাছের বন্ধুটি নানারকম অজুহাত দেখে নিজেকে সরিয়ে রাখছে। নিরাপত্তার কথা বলে রাত ১১টার আগেই মন্দির ফাকা করতে বলেছে। অথচ যেখানে প্রতিবার চারজন করে গার্ড থাকার কথা সেখানে এবার ছিল মাত্র দুইজন। অনেকের মুখে অভিযোগ শুনি হিন্দু দেখে তাদের বিরুদ্ধে কর্মক্ষেত্রে ষড়যন্ত্র করা হয়ে থাকে। কিন্তু একজন হিন্দু হলেও এই দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। এই দেশ হিন্দুদেরও। বাড়ির বাইরে থাকার জন্য প্রতিটা জামাত শিবিরের হরতাতার আগের রাতে আতঙ্কে থাকতে হয় এই ভেবে যে কালকে মনে হয় আমার বাড়িতে আগুন দিবে।
অনেক ভালো লেখেছেন দাদা।
ঠিক এই কারণেই বাংলাদেশের হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, আদিবাসী ও অন্য দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানের প্রতি টান দেখাই। ব্লগে আমার নিক দেখে অনেকে মন্তব্য করে, দাদাবাবু! বলে, দাদা, লিখতে লিখতে ধুতি খুলে গেছে দেখেন নাই! সে যাই হোক।
এটা একটা লেখার মিলনাক্ত পরিসমাপ্তি হতে পারে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। আমরা আরো ইসলামীকরণ হচ্ছি। মধ্যবিত্ত এখন শরীয়া ভিত্তিক জীবন চালাতে চায়। কাজেই আপনার ডাকে কোন মুসলমান আসবে না!
তাতে ৯০ ভাগ মুসলমানের কি? তারা তো ছিন্ন বিছিন্ন হবে না।
“দেবালয়” পুড়বে, মসজিদ-মাদ্রাসার কিছুই হবে না।
আমাকে মুসলিম ও ইসলাম বিদ্বেষী ট্যাগ লাগানো যেতে পারে।
@সুষুপ্ত পাঠক, আপনার বক্তব্য অস্বীকার করার উপায় নাই।
সম্ভবতঃ স্ববিরোধিতা আছে বলেই আমরা বাঙ্গালী জাতি।প্রমথ চৌধুরীর মতে সুশিক্ষিত মাত্রই স্বশিক্ষিত নয়।তথা কথিত শিক্ষার হার বেড়েছে আমাদের দেশে কিন্তু একই সাথে মুক্ত চিন্তার গলা চেপে ধরা হচ্ছে।আমার কাছে তালেবানেরা জামাত শিবির অপেক্ষা অনেক ভালো। তাদের কোন ভাব ভনিতা নেই , তারা যা বিশ্বাস করে তাই প্রচার করে ও সে অনুপাতে কাজ চালায়।জামাত শিবিরের দল জন্মনিয়ন্ত্রণও করে আবার নিজেদের পিঠ বাচানোর জন্য ইহুদি নাছারাদের ভাড়া করে, একই সাথে নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের মধ্যে ই্লামিক বিপ্লবের স্বপ্ন জন্ম দেয়।তাদের এই দ্বিমূখি নিতি বাংগালী যথেষ্ট ইসলামিক বলেই মনে করে এবং ইসলামের একমাত্র ধারক ও বাহক হিসাবে মান্য করে।
********************************************ধর্মান্ধতা নিপাত যাক, মানবতা মুক্তি পাক*******************
যখন প্রাইমারী স্কুলে পড়তাম তখন শুনতে হত “হিন্দু হিন্দু তুলসীপাতা, হিন্দুরা খায় গরুর মাথা” আর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পর্যায়েও দেখি ক্লাসমেটরা মজ্জাগত সাম্প্রদায়িকতার বীজ ধারণ করে আছে সেই সাথে ছড়িয়ে দিচ্ছে, লেনাদেনা করছে সমমনাদের সাথে।
“নগর পুড়লে দেবালয় এড়ায় না” এটা কবে উপলব্ধি করবে সাম্প্রদায়িকতার ধ্বজাধারীরা!
মনে রাখা ভাল-নগর পুড়লে দেবালয় এড়ায় না। (Y)
আমরা বোধকরি এতটাই বোধহীন একটা জাতি; আমাদের দেশ জ্বলছে আমরা ভাবছি ; যাক আমার ঘরেতো আগুন লাগেনি; আর ঘরে আগুন লাগলে ভাবি যাক আমি তো বেচে আছি ; শরীরে আগুন লাগলে ভাবি এখোনো মরি নাই জ্বলছি জ্বলতে থাকি ….
বোধের উদয় হোক ঘটুক আমাদের ।
তোমাকে শুভকামনা ।
@আসমা সুলতানা মিতা, 🙂
@সুব্রত শুভ,
আপনার বক্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত। আর শুরুর দুটো লাইন (অজুহাত ?) দিয়ে ভাল করেছেন, তা না হলে কয়েকজন অযথা বিতর্ক জুড়ে দিত। মুক্ত থাকেন এবং লেখা অব্যাহত রাখেন—- এ প্রত্যাশা রইল।
@গীতা দাস,
অজুহাত না কেউ কেউ ত্যানা প্যাচাতে শুরু করবে তাই আগেই উত্তর দিয়ে রাখলাম।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। 🙂
বাংলাদেশে আপনি ৰ্ধমনিরপেক্ষতার কথা বলেছেন তার মানে আপনি আওয়ামীলীগ আর আওয়ামীলীগ মানেই “বাকশালী” নাস্তিকের দল। যে দেশের মানুষ এখনো ৰ্ধমনিরপেক্ষতা বলতে ৰ্ধমহীনতা বুঝে সে দেশের শিক্ষিতের হার নিয়ে কথা বলা মানে অযথা সময় নষ্ট করা। আর ৰ্ধমানুভূতি একটা খুবই কাৰ্যকরী অনুভূতি, রাজনৈতিক দল(বিশেষ করে ইসলামী ডেমোক্রেটিক দল ! 😕 ) গুলোর “বিশেষ” প্রয়োজনের সময় ৰ্ধমানুভূতি নামক অনুভূতিটি উষ্কানি দিতে অব্যাৰ্থ ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
=> বাঙ্গালি যদি বাঙ্গালির ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে নিজের ভাবতে শিখে তাহলেই কেবল এই সাম্প্রদায়িক দানবকে ধবংস করা সম্ভব।
ভাল লিখেছেন। অনেকদিন পর আপনাকে লিখতে দেখলাম। হ্যাপি ব্লগিং।
@তারিক,
কথা সত্য। ধন্যবাদ 🙂
ধর্মানুভুতি বলে আসলে কোন বস্তু নেই; সবটাই স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার আর ভণ্ডামি।
আপনার লেখা পড়ার সময় একটা খবর পড়ছিলাম সৌদি আরবে পবিত্র কুরআন অবমাননা: মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভ; আসলে কেউ কেউ লাফায় হুজুগে আর কেউ কেউ লাফায় কুবুদ্ধি নিয়ে। হুজুগে লাফালে কোন সমস্যা নেই কিন্তু কুবুদ্ধি নিয়ে লাফালেই সমস্যা; কারন তারা সাধারন নয়। দুনিয়ার যত অসুন্দর যত গেঞ্জাম যত হাউকাউ সবটাই তাদের সেই স্বার্থান্বেষী পচপচে মগজের সৃষ্ট। এই ঘটনায় তেমন কোন হাউকাউ হবেনা; কিন্তু এটা সৌদিতে না হয়ে যদি আমেরিকায় হতো তবে পুরো দৃশ্যপটটাই ভিন্ন হতো।
কাল পাত্র ভেদে এদের অনুভূতির সুড়সুড়ির পরিমানের কম বেশী হয়; এই অনুভূতি যদি পদার্থবিদ্যার সূত্রের মতন হতো তবে আকাশ বাতাস দোজগ বেহেস্ত সব যায়গায় একই রকম হতো। যেহেতু এই অনুভূতি পরিবর্তনশীল তাই ধর্মানুভুতির বেইল আমার কাছে শূন্য।
ধর্মানুভুতি জিনিসটাই তো গোলমেলে; আমার কাছে ইহা এক বিরাট অর্শডিম্ব :-s
ধর্মানুভুতি ও ধর্মবিদ্বেষ নিয়ে আমার একটি ড্রাফট এবং এলোমেলো লেখা ছিল এখানেঃ ধর্ম অবমাননা ও কিছু সমীকরণ নামে।
কাউকে ধর্ম বিদ্বেষী বলে ফতোয়া দেয়ার আগে লেখাটি পড়ে আরেকবার চিন্তা করে দেখার কথা চিন্তা করা উচিৎ অর্শডিম্বান্বেষীদের।
লেখাটি ভালো ছিল; ধন্যবাদ।
দেখা হবে বিজয়ে 🙂
@এম এস নিলয়, দেখা হবে বিজয়ে 🙂
বহুদিন পর মুক্তমনায় শুভর লেখা। ওয়েলকাম ব্যাক!
@অভিজিৎ, ধন্যবাদ দাদা।
বাংলাদেশ পাকিস্তানের পথেই হাঁটছে।
আসলে বাংলাদেশ না দেশটার কিছু মানুষ…
সমস্যা হচ্ছে এই “কিছু মানুষের সংখ্যাটা” বাড়ছে…
বড় দ্রুত বেড়ে চলেছে…
সময়োপযোগী লেখার জন্য ধন্যবাদ
@আরিফ রহমান, ওয়াজ মাহফিলে তো কয়েক গন্ডা বাচ্চা নেওয়ার পরার্মশ দেয়। জন্ম নিয়ন্ত্রনের বিপক্ষে তারা। তাদের সংখ্যা বাড়ার এটাও একটা কারণ। 🙁