[চিত্র-১) মোল্লার দৌড় কি আসলেই মসজিদ পর্যন্ত?]
মোল্লার দৌড় নাকি মসজিদ পর্যন্ত। আসলেই কি তাই? শাহবাগ – যুদ্ধাপরাধীর বিচার – জামায়াতের ধ্বংসাত্মক রাজনীতি – মাহমুদুর চুদুরবুদুরদের মিথ্যাচার – হাটহাজারীতে গুজব থেকে সহিংস তান্ডব – হেফাজতে ইসলামীর রাতারাতি জনপ্রিয়তা – রামু-সিলেটে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা – ব্লগাবরদের উপর ইসলামী উগ্রবাদী আর আওয়ামী সরকারের উভমূখী খড়গ – ব্লগিং আর নাস্তিকতার সমার্থক বনে যাওয়া – এত কিছুর পরেও কি মোল্লার দৌড় কেবল মসজিদ পর্যন্ত থাকে? আমরা কি আরেকটু সহনশীল হয়ে সভ্যতার পরিচয় দিতে পারি না? অবাক হয়ে ভাবি, আমাদের মতো পশ্চাৎপদশীল দেশগুলোতে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি হলেও, প্রথম সারির দেশগুলোতে তা বলতে গেলে প্রায় নেই-ই কেন? আমাদের এখানে এত-এত অপরাধ হলেও সেসব দেশে অপরাধের মাত্রা এত কম কেন? এই যে সরলীকরণ করলাম – “উন্নত দেশে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কম” – এটা কি আসলেই ঠিক? ধর্ম আর আইন-শৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতির মধ্যে আসলেই কি কোন সম্পর্ক আছে? ধার্মিকদের একটা সাধারণ ধারণা হলো, ধার্মিকতা বাড়লে আইন-শৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতির উন্নতি হতে বাধ্য, যদিও আমরা ধারণা বরং উল্টোটা। সন্দেহ হতো, কয়টা দেশ সম্বন্ধেই বা জানি আমি, এ হয়তো আমার পক্ষপাতমূলক চিন্তার ফলাফল। সন্দেহ দূর করার জন্য, প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য এদিক-সেদিক ঢুঁ মারতাম প্রায়ই। শেষ পর্যন্ত পেয়েছি প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার এক পদ্ধতি।
ডাটা এনালাইসিস আমার একাডেমিক ক্যারিয়ারের একটা অংশ। আমি ভীষণ মজা পাই যখন বাস্তব কোন ঘটনা ডাটা এনালাইসিসের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করতে পারি। কেবল কিছু সংখ্যা বা উপাত্ত থেকে লুকায়িত সত্য বের করা গোয়েন্দা কাহিনীর রহস্য উদঘাটনের মতোই মজাদার। যেমন ধরুন – মানুষের উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে তার ওজন বাড়বে। কি হারে বাড়বে তা বের করা যাবে লিনিয়ার রিগ্রেশন (Linear Regression) নামের এ টেকনিক দিয়ে। এ টেকনিক প্রয়োগ করে এক ধরনের ডাটার সাথে আরেক ধরনের ডাটার সরলরৈখিক সম্পর্ক বের করা যায়। নিচের গ্রাফটার দিকে তাকান। কতগুলো কালো ফোঁটা (ডাটা) পর্যবেক্ষণ করে লাল সরলরেখাটা আঁকা হয়েছে লিনিয়ার রিগ্রেশন টেকনিক প্রয়োগ করে। দেখুন, সরলরেখাটা বাম থেকে ডানে (অর্থাৎ আনুভূমিক-অক্ষ বরাবর উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে) ধীরে ধীরে উপরের দিকে ওঠেছে, অর্থাৎ উলম্ব-অক্ষ বরাবর ওজন বেড়েছে।
[চিত্র-২) ওজন বনাম উচ্চতার গ্রাফ। উইকিপিডিয়ার Linear Regression এর পেজ থেকে নেয়া কাল্পনিক ডাটার উপর ভিত্তি করে গ্রাফটি আঁকা।]
এই প্যারাগ্রাফটাতে সামান্য গণিত, অবশ্যই সাধারণ বাংলায় ব্যাখ্যা সহ। লিনিয়ার রিগ্রেশন টেকনিক টেকনিক অনুসারে, ওজন = ৬১.৩ x উচ্চতা – ৩৯। উচ্চতাকে গুণ করা হয়েছে ৬১.৩ দিয়ে (ঢাল = ৬১.৩), যার মানে হলো- প্রতি ১ মিটার উচ্চতা বাড়লে ৬১.৩ কেজি ওজন বাড়ে।
আমি বের করতে চাই – ধার্মিকতার সাথে আইনশৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতির কোন সম্পর্ক আছে কিনা। একারণে, আনুভূমিক-অক্ষ বরাবর ধার্মিকতার সূচক ও উলম্ব-অক্ষ বরাবর আইন-শৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতির সূচক বসাবো। লিনিয়ার রিগ্রেশন লাইন যদি বাম থেকে ডানে ধীরে উপরে উঠে, তাহলে বলা যাবে – ধার্মিকতা বাড়ার সাথে সাথে আইনশৃঙ্ক্ষলার উন্নতি হতে দেখা যায়। আর বাম থেকে ডানে নিচে নামলে বলা যাবে – ধার্মিকতা বাড়ার সাথে সাথে আইনশৃঙ্ক্ষলার অবনতি হতে দেখা যায়।
সমস্যা হলো – ধার্মিকতা আর আইনশৃঙ্ক্ষলা কোনটাইতো আর যন্ত্র দিয়ে মাপা যায় না। এই ব্যাপারে সাহায্য নিতে হয়েছে কিছু জরিপের। প্রথমতঃ জনমত জরিপের জন্য বিখ্যাত Gallup নামের এক বিখ্যাত কোম্পানি ২০০৯ সালে সারা বিশ্বে একটা জরিপ চালিয়েছিল [১]। বিষয় – “ধর্ম কি আপনার দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ?” উত্তর ‘হ্যাঁ’, ‘না’, ‘জানিনা’ কিংবা ‘বলবো না’ হতে পারে। বুঝাই যাচ্ছে – এখানে একজন মানুষ কোন্ ধর্মে বিশ্বাসী তা নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনে ঠিকমতো ধর্ম পালন করে কিনা তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একেই ‘ধার্মিকতা’ বলছি এখানে। জানি এটাই ধার্মিকতা মাপার জন্য এটা সর্বোৎকৃষ্ট পদ্ধতি নয়, তবে কার্যকর পদ্ধতি বলতে হবে। প্রশ্নের সহজবোধ্যতার কারণে সকলের পক্ষে উত্তর দেয়া সহজ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের উত্তরের মধ্যে গুণগত পার্থক্যও থাকে কম। একটা দেশের কতভাগ মানুষের কাছে দৈনন্দিন জীবনে ধর্ম গুরুত্বপূর্ণ তা থেকে একটা দেশের মানুষের ধার্মিকতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এরপর আসা যাক, আইন-শৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতির দিকে। World Justice Project বিশ্বের অনেকগুলো দেশের আইন-শৃঙ্ক্ষলার সূচক প্রকাশ করেছে ৮ টা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে [২]। ৮টা ফ্যাক্টরে যে দেশের গড় সূচক বেশি, সে দেশের আইন-শৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতি ভাল তা বলা যায়।
ডাটাতো পাওয়া গেল, এখন এনালাইসিসের পালা। এ ডাটা নিয়ে লিনিয়ার রিগ্রেশন করলে নিচের গ্রাফের লাল সরলরৈখিক লাইনটি পাওয়া যায়। কেবল একবার চোখ বুলান গ্রাফটিতে – দেখুন, লাল লাইনটি বাম থেকে ডানে ধীরে ধীরে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝে গেছেন যে, ধার্মিকতা বাড়ার সাথে সাথে আইনশৃঙ্ক্ষলার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে খারাপ হচ্ছে (ব্যাখ্যাত আগেই দিয়েছি)।
[চিত্র-৩) আইন-শৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতি বনাম ধার্মিকতার গ্রাফ। কাল্পনিক নয়, বাস্তব ডাটা প্রয়োগ করে গ্রাফটি আঁকা হয়েছে। প্রতিটা দেশের প্রধান ধর্মও চিহ্নিত করা আছে।]
আরো একবার সহজ গণিত চর্চা করি। এখানে যে সূত্রটি পাওয়া যায় তা হলো, আইন-শৃঙ্ক্ষলার হার = – ০.৩৬ x ধার্মিকতার হার + ৮২.১০। এখানে ধার্মিকতাকে গুণ করা হয়েছে -০.৩৬ দিয়ে, অর্থাৎ, সাধারণভাবে ধার্মিকতার হার ১% বাড়লে আইন-শৃঙ্ক্ষলার হার ০.৩৬% খারাপ হতে দেখা যায়। যারা পরিসংখ্যান সম্বন্ধে জ্ঞান রাখেন, তাদের জন্য বলছি – এই হার নির্ণয়ের P-value < 7.31e-14। অন্যদের জন্য সহজ ভাষায় বলছি- যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সাথে এই হার নির্ণয় করা হয়েছে।
এ ধরনের এনালাইসিসের ভুল-ভাল ব্যাখ্যা অহরহই পাওয়া যায়। তাই বুঝার সুবিধার্থে বলছি – পরিসংখ্যানে Correlation আর Causation নামে দুইটা টার্ম আছে। এই এনালাইসিস ধার্মিকতা আর আইন-শৃঙ্ক্ষলার মধ্যে সম্পর্ক (correlation) প্রকাশ করে, কোনভাবেই কারণ (Causation) প্রকাশ করে না। অর্থাৎ, এই এনালাইসিস বলে:
- যেখানে ধার্মিকতা বেশি, সেখানে আইন-শৃঙ্ক্ষলা ভাল থাকতে দেখা যায়।
- যেখানে আইন-শৃঙ্ক্ষলা ভাল, সেখানে ধার্মিকতা কম থাকতে দেখা যায়।
এই এনালাইসিস কোনভাবেই যা দাবি করে না (খেয়াল করে, এসব দাবিকে মিথ্যাও বলে না ):
- ধর্ম আইন-শৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য দায়ী।
- আইন-শৃঙ্ক্ষলা ব্যবস্থা ধার্মিকতার অবনতির জন্য দায়ী।
এই এনালাইসিস একটা সাধারণ ধারণা (Null Hypothesis) কে বাতিল করে দেয় – “দৈনন্দিন জীবনে ধর্মের গুরুত্ব বাড়লে অপরাধ-প্রবণতা কমে, আইন-শৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়।”
যেহেতু ধর্মবিশ্বাস খুব স্পর্শকাতর ব্যাপার, তাই আমি স্পষ্ট করে বলছি, এই এনালাইসিসকে আস্তিকগণ ধর্মের প্রতি আঘাত হিসেবে না নিয়ে এর পরিসাংখ্যনিক ব্যাখ্যা বুঝার চেষ্টা করুন এবং নাস্তিকগণ একে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে “ধর্ম অপরাধ-প্রবণতা সৃষ্টি করে” এ ধরনের উপসংহারে পৌঁছানো থেকে বিরত থাকুন।
এবার চলুন এই ফলাফলের সম্ভাব্য ব্যাখ্যা কী কী হতে পারে দেখি।
১) প্রথম ব্যাখ্যাটা অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তার সাথে সংযুক্ত। মানুষ যখন অসহায় বোধ করে, তখন ধর্মের কথা বেশি মনে করে। অনুন্নত দেশগুলোতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নেই বললেই চলে। মানুষ প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে দু-মুঠো খাবার যোগাড়ের জন্য। কেবল হাভাতে দিন-আনি-দিন-খাই টাইপের মানুষের জন্য না, বরং মধ্যবিত্তদের জন্যও একই ধরনের ব্যাখ্যা প্রযোজ্য। কেউ একটুখানি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গেলেই বুঝা যায় তারা কতখানি অসহায়। সেই সাথে দুর্নীতি আর সন্ত্রাসের কারণে যোগ্য-মেধাবী-ভাল মানুষটি সবচেয়ে বেশি হতাশায় ভোগে। এসব অনিশ্চয়তার মাঝে তাই সবার একমাত্র সম্বল হয়ে দাঁড়ায় আল্লাহ-খোদা-ভগবান-ঈশ্বর, কেবল যার কাছে ন্যায়বিচারের ভরসাখানি এখনো অটুট। আল্লাহ অপরাধীর শাস্তি দিবেন – এই ভরসায় সঁপে দেন নিজেকে। অন্যদিকে, উন্নত দেশগুলোতে উপার্জনের সুযোগ-সুবিধা যথেষ্ট, আইনের সঠিক প্রয়োগের কারণে নিজের প্রাপ্য বুঝে পেতে সমস্যা হয় না, নিরাপত্তার চিন্তা নেই, তাই গৌণ কারণে আত্মসমর্পণের দরকার হয় না।
২) পরবর্তী ব্যাখ্যাটা ধার্মিকদের মানতে খুবই কষ্ট হওয়ার কথা। ধর্ম আমাদের ভাল পথে থাকার কথা বললেও, কোন ধর্মই আসলে সত্যিকারের সহনশীল হতে শিখায় না, শিখায় না অন্য কোন মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে। বরং নিজের ধর্ম বাদে অন্য সকল ধর্ম মিথ্যা, সেই ধর্মের মানুষরা কাফের, অস্পৃশ্য ছোট জাত – এমন বাণী প্রচার করে সগর্বে। কাফেরদের হত্যা করাতো বড় সওয়াবের কাজ! অনেকেই হয়তো এখানে বলার চেষ্টা করবেন যে, এটা ধর্মের ব্যাখ্যার ভুল। কোন ব্যাখ্যা ভুল নাকি সঠিক সেটা এ আলোচনার বাইরের তর্কের বিষয়, তবে এমন ধারণা যে অনেকেই পোষণ করেন, সেটা ঘটমান সত্য। আজকাল অনেক পড়ালেখা করা মানুষকেই দেখি, ধর্ম নিয়ে কথা উঠলেই উত্তেজিত হয়ে যেতে, অসহিষ্ণু হয়ে যেতে, অকম্পিত কন্ঠে বলে, নাস্তিকদের বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই। ধর্মানুভূতিতে আঘাত বিষয়টা অসহিষ্ণুতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এর সাথে যোগ করুন নারীকে অর্ধেক মানুষ বা পুরুষের মনোরঞ্জনের বাহন হিসেবে দেখার কথা বা ছোট-জাতের গায়ে ছোঁয়ার কারণে ব্রাহ্মণের গোসল করার কথা। এভাবে মানুষে-মানুষে ভেদাভেদ তৈরি করে দিয়েছে ধর্ম, একজন মানুষকে আরেকজন কর্তৃক দমিত করে রাখার উপায় তৈরি করে দিয়েছে ধর্ম। এরকম অসহিষ্ণুতা আর অন্যায় আচরণের শিক্ষা আমরা বহন করে বেড়াই প্রতিটা ক্ষেত্রে। তাই রাজিবদের মারতে আমরা দ্বিধান্বিত হই না, নাদিয়াকে হেফাজতে ইসলামের বর্বরতার শিকার হতে দেখেও আমাদের বিবেক জাগ্রত হয় না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য ভেঙ্গে নিজের সংস্কৃতিকে গলা টিপে হত্যা করার হুমকিকেও মনে হয় “ঠিকইতো আছে, এটাই ধর্মের জন্য লড়াই”। ফলাফল, কিছু মানুষ দিন কাটায় খুন হওয়ার আশংকায়।
৩) তৃতীয় ব্যাখ্যাটি শিক্ষাকেন্দ্রিক। আমাদের যা শিখানো হয়, তাই শিখি। ছোটবেলা থেকেই আমরা শিখি ভূত-প্রেত-দেব-দেবী-নবী-রসুলের কথা। এই গল্পগুলো শুনতে শুনতে এগুলোকেই সত্য বলে ভাবতে থাকি। একটা বড় অংশ তাই দেব-দেবী-নবী-রসুল তো দূরের কথা, ভূত-প্রেতের বিশ্বাস থেকেও বের হতে পারে না। যেদেশের শিক্ষা বিজ্ঞান-কেন্দ্রিক, সেখানে এসব মানুষ যা কিছু দেখে তার একটা বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। কিছুদিন আগে দেখলাম, ইতিহাসের এক অনলাইন কোর্সের লেকচার শুরু করা হয়েছে বিবর্তন দিয়ে। যেখানে বিজ্ঞানের এমন বিস্তার থাকবে, সেখানে অন্ধবিশ্বাসের হার নিশ্চিতভাবেই কমবে।
৪) এর পরের ব্যাখ্যাটা মানসিক। একজন যত বড় সন্ত্রাসী বা দুর্নীতিবাজই হোক না কেন, সে জানে সে অপরাধ করছে, তার ভিতর অপরাধবোধ কাজ করবেই। বেশিরভাগ সময়েই হয়তো সেই অপরাধের পিছনে একটা খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করিয়ে নিজেকে প্রবোধ দেয়ার চেষ্টা করে, তবে মাঝে মাঝে এই অপরাধবোধ নিশ্চয় তাকে দহন করে। নামাজ বা ধর্মকর্ম হয়তো তাকে সেই দহন থেকে কিছুটা মুক্তি দেয়।
৫) আমাদের সমাজে দুর্নীতি এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আমরা আজ আর কাউকে বিশ্বাস করতে চাই না। তবে, কীভাবে কীভাবে যেন ধার্মিকদের প্রতি সেই অবিশ্বাস বা অশ্রদ্ধার অনুভূতি কাজ করে না। সবাই তাদেরকে বেশ সম্মান করে। যে যত বেশি কড়া করে ধর্ম করে, সে তত বেশি সম্মান পায়। আর এই সম্মানের প্রতি মোহাবিষ্ট হয়ে ধর্মের প্রতি অনুরূক্ত হয়ে পড়ে অনেকেই, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেই মানুষটি বুঝেই না যে, সে সম্মানের মোহে ধর্ম করছে। একটুখানি অধর্ম হলে সে যত না অনুতাপ বোধ করে, তার চেয়েও বেশি ভয় করে, লোকে কি বলবে এই ভেবে।
ধর্মাচরণ বৃদ্ধির মাধ্যমে যারা আদর্শ সমাজ গঠনের কথা ভাবেন, তাদের জন্য বলি, চলুন না আমরা একটু ভিন্নভাবে ভাবি। আমরা যদি সবার জন্য কাজের ব্যবস্থা করতে পারতাম, সবার মাঝে বিজ্ঞানচর্চা সৃষ্টির পাশাপাশি মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটাতে পারতাম, এবং সেই সাথে আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতি দূর করতে পারতাম, তাহলে আমাদের ইতিহাস আর ভবিষ্যত দুটোই ভিন্ন হতো, হতো অনেক বেশি সম্মানের!
তথ্যসূত্র:
১) Gallup Poll Research on the topic “Is religion important in your daily life?”, http://en.wikipedia.org/wiki/Importance_of_religion_by_country
২) World Justice Project Rule of Law Index, http://worldjusticeproject.org/rule-of-law-index
দারুণ লাগল পড়ে। বর্তমানে আমিও সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে কিছুটা ঘাটাঘাটি করছি। কিছুটা উপকার হল আর সেই সাথে কিছু প্রশ্ন জাগল-
১.
গুণবাচক ধার্মিকতাকে কি আদৌ সংখ্যাতত্ত্বে ফেলা সম্ভব। আর ফেলার পর শুদ্ধির হারই কতটুকু?
২. আপনার ডাটাগুলো কি যথেচ্ছভাবে(randomly) নেয়া? নাকি এখানে কোনও ধরণের sampling ব্যবহার করেছেন?
@সুদীপ্ত শেল্ডন,
প্রথমেই দুঃখিত, এতদিন আপনার চিন্তাশীল মন্তব্যের উত্তর দেয়া হয়নি বলে।
যেহেতু ধার্মিকতাকে সংখ্যাতত্ত্বে ফেলার একটা উপায়ের কথা লেখাতে উল্লেখ করা আছে, তাই ‘আদৌ’ সম্ভব কিনা এ প্রশ্ন থাকার কথা নয়। তবে হ্যাঁ, এর শুদ্ধির হার কতটুকু সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আসলে শুদ্ধির হার নির্ণয়ের উপায়টা এখনো জানা নেই। তাই শুদ্ধির হার কত তা জানার উপায় নেই। আপনার আগ্রহের সূত্র ধরে বলছি- শুদ্ধির হার বের করা যায় কীভাবে তা নিয়ে ভাবা যেতে পারে।
ডাটাগুলো আমার নেয়া নয়, আমি অন্যের ডাটা ব্যবহার করেছি মাত্র। লেখার নিচে ২টা রেফারেন্স দেয়া আছে, সেখানে গেলে দরকারি তথ্য পাবেন।
ধন্যবাদ, আগ্রহের জন্য।
তবে লেখাটি দারুন হয়েছে, এরকম লেখা আরো চাই, পড়লে শান্তি লাগে।চারিদিকে ধরমপালনের বাড়াবাড়ি আর হিড়িক দেখে অসহ্য লাগে বড়ই অসথির লাগে।
ভাই আমি হতাশ, এবং একশ ভাগ নিশ্চিত আমার জিবনে ধরমের বিরুদ্ধে যুক্তিবাদের জয় দেখে যেতে পারবনা। 🙁
দারুন কাজ
অপরাধ বলতে ঠিক কি বোঝায় তা কিছু ক্ষেত্রে আপেক্ষিক। যেমন কিছু নাস্তিক প্রধান কিংবা ধর্মীয় অনুশাসন বিহীন সমাজে অপরাধের হার কম দেখালেও আমাদের মত ধার্মিক প্রধান দেশের লোকের কাছে তার তেমন মূল্য নেই। সেসব সমাজে যেহেতু বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক অনুমোদিত তাই সেসব দেশের অপরাধের হার কম কোন ব্যাপার নয়।
৪ নং পয়েন্টটা আমার কাছে একটু ভিন্নভাবে মনে হয়। জগতের কোন ধর্মই মানুষকে অপরাধ করতে বলে না (এটাও অবশ্যই সর্বোতভাবে সত্য নয়)। নিজে যে ধর্মের আবহে সারা জীবন ছিলাম তার অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে যে ধর্ম একদিকে লোককে অপরাধ কোর না জাতীয় কথাবার্তা বলে কিন্তু অন্যদিকে এমন কিছু উপায় বাতলায় যাতে সেসব অপরাধ করে ফেললে লোকে মানসিকভাবে পাপ স্খলনের পথ পায়। আমার ব্যাক্তিগত ধারনা এ কারনেই আমাদের দেশে নৈতিকতা অবক্ষয়, অপরাধ হার বাড়ার সাথে সাথে ধর্মের রমরমা বাড়ার কারন। জগতে বিবেকহীন বলে মানুষ তেমন হয় না। বিবেকের কাছে পরিষ্কার হবার রাস্তা ধর্ম করে রেখেছে। সারা জীবন নানান অনৈতিক কাজ করে শেষ বয়সে হজ্জ্ব যাত্রা তীর্থ যাত্রা এসব করে নিষ্পাপ শিশুর মত পূণঃজন্ম নেওয়া যাবার উপায় পাওয়া গেলে ছাড়ে কে?
ধর্মীয় সমাজে কেন অপরাধ বেশী তার কিছু প্র্যাক্টিকেল কারন আছে। দর্শনগত কারণ মনে হয় এখানে যে ধর্মীয় দর্শন মনে করে যে মানুষ পরকালে শাস্তির ভয়ে মন্দ কাজ ছেড়ে ভাল হয়ে যাবে, আর যারা তার পরেও অপরাধ করবে তাদের জন্য ইহকালেই নানান ভয়াবহ শাস্তির ব্যাবস্থা করা হবে। বলাই বাহুল্য পরকালে শাস্তির ভয় বাস্তবে তেমন কাজে আসে না। যেসব সমাজে অপরাধ কম সেসব সমাজ ধর্মীয় কোন কারন তো নয়ই, নাস্তিক্যবাদের প্রভাবেও অপরাধ করে না এমন নয়। সেসব সমাজের দৃষ্টিভংগী হয় প্র্যাক্টিকেল এবং ইহকালমূখি। তারা দীর্ঘদিনের বাস্তব অভিজ্ঞতায় এটা বুঝেছে যে অপরাধহীন সমাজ ইহকালে ভাল থাকার জন্যই দরকার, পরকালের শাস্তি/পুরষ্কারের মূলোর তেমন গুরুত্ব এখানে নেই। পরকালমুখি দর্শন শুনতে ভাল হলেও এর অন্যদিকও আছে।
এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ন দিক হল ধার্মিকরা ধার্মিক বলতে ঠিক কি বোঝে কিংবা কাদের ধার্মিক হিশেবে সার্টিফাই করে সেটা। আমার অবজার্ভেশন বলে যে মুখে যাইই বলুক, বাস্তব জীবনে ধার্মিকরা ধার্মিক বলতে সত জীবন যাপনের তেমন গুরুত্ব আসলে দেয় না। গুরুত্ব দেয় রিচ্যূয়াল পালনের, এবং তাও আবার হতে হবে তার নিজ ধর্মের। এটা ধার্মিক প্রধান সমাজের এক বড় সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য।
আপনি যত বড় বদই হন না কেন ধর্মীয় লেবাস ধারন করে হাঁকডাকের সাথে লোক দেখিয়ে প্রার্থনা জাতীয় নানান রিচ্যুয়াল পালন করে গেলে, নানান ঐশ্বী শক্তি ডাকাডাকি করলে কিংবা দৃপ্তকন্ঠে ধর্মীয় মহাপুরুষদের উম্মত শিষ্য এসব দাবী করে গেলেই আপনি সাচ্চা ধার্মিক। অন্যদিকে যতই নৈতিক সততা থাকুক, এসব কাজ কারবারে অনাগ্রহী হলে সাচ্চা ধার্মিকের সার্টিফিকেট মিলবে না। আপনি নিয়মিত ঘুষ খাচ্ছেন শুনলে ধার্মিক সমাজের অগ্রদূতরা আপনি ধর্মচ্যূত হয়েছেন বলবে না যদি নিয়ম করে মসজিদে হাজিরা দেন, কিন্তু নামাজ রোজা ছেড়ে দিয়েছেন শুনলে আপনি ধর্মচ্যূত হয়েছেন ধরে নেওয়া হবে।
এর চরম প্রকাশ হল আমাদের সমাজে ধর্ম রক্ষকদের বড় দলের কাছে আপনি নিজ ধর্ম ইসলাম প্রকাশ্যে ত্যাগ করলে মুরতাদ হিশেবে মৃত্যুদন্ডযোগ্য অপরাধী, কিন্তু অন্যদিকে গনহত্যায় অংশ নিয়েও রিচ্যূয়ালিষ্টিক ধার্মিক হিসেবে সম্মানের পাত্র হতে পারেন, অন্তত মুরতাদের প্রতি যে পরিমান ঘৃনা দেখানো হয় তার কানাকড়ি ঘৃনাও তারা হয়ত পাবে না।
এই ধরনের দর্শন অবশ্যই উচ্চ নৈতিকতা সৃষ্টির সহায়ক নয়, বরং উলটো। আরো খারাপ দিক হল এই ধরনের দর্শন মানুষকে ভন্ডামি করার শিক্ষা দেয়।
শুধু বিজ্ঞান চর্চায় যুক্তিভিত্তিক সমাজ গড়ে না, যেমন শুধু ডিগ্রী নিলেই প্রকৃত শিক্ষিত হওয়া যায় না।
লেখাটা বেশ ভাল লাগল, যদিও তথ্য উপাত্তগুলির সূত্র আরেকটি বিস্তারিত দেখালে ভাল হত। যেমন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি ধর্ম নিয়ন্ত্রিত, তবে অপরাধের হার কম, সেসব দেশের ইনফ্লুয়েন্স বোঝা যেত। এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত লেখালেখি দরকার, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ন সামাজিক গবেষনা।
@আদিল মাহমুদ,
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। বেশ পয়েন্ট সুন্দরভাবে তোলে ধরেছেন, ধার্মিকগণ সৎ জীবন যাপনের চেয়েও রিচ্যুয়াল পালনের প্রতি বেশি আগ্রহী। আর সুষুপ্ত পাঠকের মতো আপনিও একটা প্রসংগ এনেছেন যে, শুধু বিজ্ঞানচর্চায় যুক্তিভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা যায়না। আমি কিন্তু “শুধুই” বিজ্ঞান-চর্চার কথা বলিনি। আচ্ছা, “শুধু” কোন কিছুর মাধ্যমে কি যুক্তিভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা যেতে পারে? আলোচনার জন্য জানতে চাইছি, যুক্তিভিত্তিক সমাজ গড়ার পিছনে বিজ্ঞানচর্চা কতখানি ভূমিকা রাখতে পারে বলে আপনার মনে হয়?
@প্রতিফলন,
বিজ্ঞান চর্চার ভূমিকা তো অবশ্যই আছে। কোন বিদ্যাই লোকে সিরিয়াসলি নেবে না যতক্ষন না সে বিদ্যার সুফল তারা হাতেনাতে পায়। যুক্তি মনষ্কতার প্রকাশ হল বিজ্ঞান চর্চায় জা থেকে লোকে যুক্তিবাদের সুফল পাবে। তাই যুক্তি মনষ্ক হওয়া দরকার বিজ্ঞানের সঠিক চর্চার জন্যই। এর জন্য বিজ্ঞান শিক্ষা বা অধ্যায়নই যথেষ্ট নয়, তাতে আরো উলটো ফল হতে পারে, যেমন আমাদের দেশে অনেকেই বলেন যে ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়রদের মাঝে জামাত সমর্থন কিংবা গোঁড়ামী প্রবল, বুয়েট/ঢাঃবিঃ এর আইবিএ নাকি এখন ছাগ সম্প্রদায়ে ভরপুর।
শুধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় খুলে গাদা গাদা প্রযুক্তিবিদ বার করা এমনকি বিজ্ঞানের আধুনিক বিষয়ে গবেষনাগার খুলে এলেবেলে গবেষনা করে ডক্টরেট বিলিয়ে যাওয়া এমন কিছু ব্যাপার নয়। কিন্তু বিজ্ঞানের প্রকৃত দর্শন, যুক্তিবাদের ভিত গড়ে না উঠলে চিরকাল কপি পেষ্টের জগতেই থাকতে হবে। ক্রিয়েটিভিটি গড়ে উঠবে না। ক্রিয়েটিভিটি আর ডিগ্রী নেওয়া এক নয়। এর সাথে আমাদের দেশের গনতন্ত্রের মিল আছে। আমরা গনতন্ত্র পেলেও আসলে পেয়েছি কেবল ভোটের মাধ্যমে শাসক বা শোষক যাইই বলা হোক তা বদলাবার অধিকার। প্রকৃত মৌলিক গনতান্ত্রিক মানসিকতাই আমাদের সমাজে চরমভাবে অনুপস্থিত, তাই গনতন্ত্রের যে সুফল পাবার কথা তা পাওয়া যাচ্ছে না, উলটো মাঝে মাঝে জলপাই ওয়ালারা ক্ষমতায় আসলে খুশী হতে হয়।
কাজেই, আমার মতে বিজ্ঞান শিক্ষার আগে পূর্বশর্ত হল যুক্তিবাদী মন তৈরী করা। আমাদের ব্যাবস্থায় নিঃসন্দেহে এ কাজটি অসম্ভবের মত। বিজ্ঞানচর্চা করলেই যুক্তিবাদী হবে এমন নয়, তবে যুক্তিবাদী হলে বিজ্ঞানে উতকর্ষতা অবশ্যই একদিন আসবে। বিজ্ঞানচর্চা যুক্তিবাদ, বস্তুবাদের বিষয়। ভাববাদ বা অন্ধবিশ্বাস আঁকড়ে ধরার দর্শনের সাথে এর বিরোধ সরাসরি।
এটাও খুব গুরুত্বপূর্ন যে বিজ্ঞানের সঠিক উতকর্ষতার জন্য মানবিক বিষয়গুলি যেমন ইতিহাস, সমাজ বিজ্ঞান, নৃতত্ত্ব, দর্শন এসবও অধ্যায়ন দরকার। যুক্তিবাদ বিকশিত করার জন্য একমুখী বিদ্যার জগত থেকে বের হতে হয়। সামাজিক বিবর্তনের ধারা বুঝতে হয়। বিদেশে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়র তো বটেই এমনকি নার্সদেরও মানবিক বিষয় অধ্যায়ন করতে হয়। আমরা ইঞ্জিনিয়ারিং এ সামান্য যা কলা বিভাগের কোর্স পড়ানো হতে তাতে যারপর নাই বিরক্ত হতাম। অনেক পরে এর গুরুত্ব বুঝেছি। আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষিত বিশেষ করে কারিগরী/চিকিতসা বিদ্যার শিক্ষিতদের অতি ধার্মিক বনে যাবার মূল কারণ এখানে, কারণ এরা গুডি বয় হিশেবে বড় বেশী একমূখী বিদ্যার জগতে থাকে। আমার ৯০% বন্ধুবান্ধবের নিজ পাঠ্য বিষয় ছাড়া হুমায়ুন আহমেদ বা সুনীল ছাড়া আর কিছু পড়ার নেই। ফলাফল জা হবার তাই।
@আদিল মাহমুদ,
সংক্ষেপে বললে, আমাদের দরকার “প্রকৃত” শিক্ষা, যা আমাদের মনকে জাগাবে। এই শিক্ষা শ্রেণীকক্ষে না হয়, জীবনের যেকোন স্তরে হতেই পারে। এর জন্য যা যা দরকার, তার পুরোটাই দরকার।
@প্রতিফলন,
অসম্পূর্ন থাকল।
প্রকৃত শিক্ষাই যথেষ্ট নয়। অপশিক্ষা দূর না করতে পারলে তেমন আশাপ্রদ লাভ হবে না। প্রকৃত শিক্ষার সাথে সাথে অপশিক্ষা যা মানূষকে কুসংস্কারাচ্ছন থাকতে শেখায় সেটা শিখিয়ে গেলে অবস্থা বর্তমানে যেমন আছে তেমনই থাকবে। শুধু সিলেবাস সংস্কার নয়, সামাজিক আবহটাও তেমন হতে হবে। আমাদের দেশে এটা অসম্ভব ব্যাপার।
@প্রতিফলন,
“প্রকৃত” শিক্ষা বলতে কী বুঝাতে চেয়েছেন, কোনটা প্রকৃত আর কোনটা অপ্রকৃত? আমাদের মনকে জাগাবে এমন “প্রকৃত” শিক্ষা কী, আর ‘মন জাগা’ বলতেই বা কী বুঝাতে চেয়েছেন?
Napoleon এর ভাষায় বলি- “ Give me an educated mother , I shall give you an educated nation”. আচ্ছা আমাদের খালেদা, হাসিনা কি শিক্ষিত নারী? শুনলাম প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- ‘আগামীতে বায়তুল মোকাররামের মত মসজিদ প্রতিটি জেলায় জেলায় বানিয়ে দিবেন’। সুবহানাল্লাহ বলবেন না? মাদ্রাসা শিক্ষাখাতে নাকি অলরেডি কয়েকশো কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। উচ্চশিক্ষিত মাষ্টার্স, পি এইচ ডি ডিগ্রিদারী লোকেরা শাফির তেঁতুলতত্ত্বে বিজ্ঞান খুঁজে পেয়েছেন, আর কী চাই?
এ গুলো করার দায়ীত্বটা কার? রাষ্ট্রের না? রাষ্ট্রের মাথায় ভুত বাস করে। যেই সেই ভুত না, নুনু কাটা ইসলামী ভুত। আর কেউ নয়, এই ভুতের সেবাকারীরা সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমার সোনার দেশটাকে জ্যন্ত নরকে পরিণত করেছে। দেশের যত ক্ষয়-অবক্ষয়, ধ্বংস-অধঃপতন, অশান্তি সবটুকুর জন্যেই দায়ী রাজনীতিবিদরা যারা দেশ চালায়। এরাই অবিরত চাষ করে চলেছে অশিক্ষা-কুশিক্ষা কুসংস্কার, অপসংস্কৃতি, অপবিজ্ঞান। ভুত যারা তাড়াবেন অর্থাৎ দেশের বুদ্ধিজীবীরা তারাও আজকাল অসৎ মূর্খ রাজনীতিবিদদের কাছে বুদ্ধি বন্ধক দিয়ে ভুতবন্দনায় তাদের সুরে সুর মেলান। পচন ধরেছে মাথায়, সর্বাংশ নষ্ট না হয়ে আর উপায় নাই।
@আকাশ মালিক,
“প্রকৃত শিক্ষা”র ব্যাপ্তি উপলব্ধি করা যতটা সহজ, তার সংজ্ঞা দেয়া ততটা নয়। প্রকৃত শিক্ষা একাডেমিক শিক্ষা হতে হবে এমন নয়, স্কুলে গিয়েই শিখতে হবে এমন নয়, জীবনের যেকোন স্তরেই শিখা যেতে পারে। এ শিক্ষা একজন মানুষকে “প্রাণী” থেকে মানুষে পরিণত করে, অসভ্য থেকে সভ্য করে।
ব্যাপারটা এত সত্যি যে অস্বীকার করার তেমন কোন উপায় নেই। তবে, এ ব্যাপারটাকে ভিন্নভাবে দেখার চেষ্টা করি আমি। অন্যের কাঁধে দোষ চাপানো সহজ, তাই অন্যদের দোষ দিতে চাই না, এছাড়া দোষ দিলেও কোন লাভতো হচ্ছে না। দেখার চেষ্টা করি, এ অবস্থা বদলাতে আমি/আমরা কি করেছি? আমরা কি এসব অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করেছি? দুই দিন পর এগুলো না ভুলে গিয়ে কতটুকু মনে রেখেছি? আমরা নিজেরা কি রাজনীতিতে নেমেছি, বিকল্প নেতৃত্ব গড়ে তোলেছি? অনেকেই হয়তো বলবেন, রাজনীতি করবো কিভাবে, আজকাল তো রাজনীতি আর ভাল মানুষের কম্মো নয়। কিন্তু এভাবে অন্যের উপর দায় চাপিয়ে আর কত দিন? কাউকে না কাউকেতো এগিয়ে আসতে হবে। এসব ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে দেশ সম্বন্ধে বড় বড় কথা বলা যাবে, ছোট-ছোট সাফল্যও পাওয়া যাবে, তবে ব্যাপকভাবে কিছু করতে হলে রাজনীতির বিকল্প কোথায়?
@প্রতিফলন,
এদেরকে অশিক্ষিত বলা যাবে? একবার তাদের বাড়িটা ঘুরে আসুন। আমি নিশ্চিত তারা অনেকেই উন্নতশীল দেশের চাকুরিজীবী, মাষ্টার্স, পি এইচ ডি ডিগ্রিদারী। আল্লামা শাফি, দেওয়ানবাগী ভন্ড মূর্খদের চেয়েও এরা ভয়ংকর, দেশ জাতি ও নতুন প্রজন্মের জন্যে ক্ষতিকর। কারণ এদের কথা সাধারন মানুষ অবিশ্বাস করতে পারেনা, সরল বিশ্বাসী ধর্মপ্রাণ মানুষ এদের দ্বারা প্রভাবিত হয় বেশী। হাটহাজারি মাদ্রাসার শাফির ছাত্রদের, কিংবা পাড়াগাঁয়ের গ্রামাঞ্চলের কউমি মাদ্রাসার ছাত্রদের, বা অশিক্ষিত নিরক্ষর চাষী, কৃষাণ-কিষাণী, জেলে, বেদে, রিকশাওয়ালাদের ঘুম থেকে জাগানো যায়, শিক্ষিত ভন্ডদের জাগানো যায়না কারণ তারা জেগে জেগে চোখ মেলে ঘুমায়। বলে কি না- ‘ গাছগুলো আল্লাহর জিকির করতেছিল, হেফাজতিরা করাত দিয়ে গাছ কেটে গাছের আল্লাহ আল্লাহ জিকির বন্ধ করে দিল’। বাহ, রাজনৈতিক ইসলামের গাঁজা কেমন মজা মতিয়া বেগমরা ভাল জানে।
প্রতিবাদ করবো আমরা? আরে না না, সকল অন্যায় অপরাধের দায়ভার তো আমেরিকা আর ভারতের। মালালা, নাফিস, পাহাড়-সমতল, সাতক্ষীরা, রামু, মতিঝিল, শাপলা সবখানেই আমেরিকা আর ভারত, ‘সি আই এ’ আর ‘রো’। বাঙালি মুসলমান সব সময়ই নিরপরাধ নমস্য তুলশীপাতা।
হ্যাঁ, আমাদের ক্ষুদ্র চেষ্টার ফলে হয়তো ১৬ কোটির মাঝে পায়ে কুড়াল বেঁধে গলায় ছুরি ঝুলিয়ে এক-দুজন তাসলিমা, আহমেদ শরিফ, আরজ আলী, হুমায়ুন আযাদ বেরিয়ে আসতে পারেন কিন্তু তা সমাজ পরিবর্তনের জন্যে যথেষ্ট নয়। রাজনৈ্তিক ইসলাম তাদেরকে জল ছাড়াই খেয়ে ফেলবে। মুক্তমনা অবশ্যই কিছু মানুষকে জাগাতে পেরেছে, অনেকেই মুক্তমনা পড়ে জগত ও জীবনটাকে ভিন্নভাবে ভাবতে শিখেছে তারপরও সমাজ পেছনের দিকে উলটো পথেই হাটছে। কারণ মাথা, রাষ্ট্র। হ্যাঁ, আপনি যা বলেছেন সেটাই-
@আকাশ মালিক,
ভাই, এরা অশিক্ষিত না। কারন বিঙ্গানের প্রতিষ্ঠিত বিষয়(যেমন:বিৰ্বতন) নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি কিংবা অপব্যাক্ষা করতে হলে ঐ বিষয় সৰ্ম্পকে ঙ্গান থাকতে হয়। এরা শিক্ষিত এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন মানুষ। এদের বিভিন্ন লেখায় উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে বিঙ্গানমনষ্কদের হিন্দু/বৌদ্ধ ৰ্ধমাবলম্বী বানিয়ে সম্পূৰ্ন হিন্দু/বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে বিভিন্নভাবে আক্রমন করতে দেখা যায়।
বাঙালী মুসলমান হওয়া সম্ভব না। হয় সে বাঙালী নতুবা মুসলমান(আরব)। বৰ্তমানে বাঙালী মুসলমান মানেই ভন্ড।
আর ভাই রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে ৰ্ধমের গুনগান শুনতে শুনতে আমিও আপনার মতই হতাশ ।
@তারিক,
জানিনা, কি হেতু আপনার মনে হলো যে, বাঙালিত্ব আর মুসলমানিত্ব একসাথে থাকতে পারে না। আমার মত বরং উল্টোটাই। আর “সকল” বাঙালি মুসলমানকে ভন্ড বলাটাও কি বাড়াবাড়ি হয়ে গেলো না? ধর্ম আর সংস্কৃতির মধ্যে অমিল থাকে সকল জায়গাতেই। কিন্তু সাধারণ মানুষজন এর মধ্যে একটা সামঞ্জস্য এনে নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তাই বলে একে ‘গণহারে’ ভন্ডামি বলাটা ঠিক না। সহজ সরল মানুষ মন থেকে বিশ্বাস করেই কাজ করে।
@প্রতিফলন,
ভাই আপনি বাঙ্গালী মুসলমান দাবী করা কোন ব্যক্তিকে জিঙ্গাসা করে দেখুন, কোন পরিচয় তার কাছে অধিক গুরত্ব বহন করে : বাঙ্গালী নাকি মুসলিম? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উত্তর পাবেন “মুসলিম”। এরা শুধু নামে মুসলিম থাকতে চায় না, বাঙ্গালী সংস্কৃতিকে ফেলে দিয়ে ইসলামী সংস্কৃতি(যা মূলত আরবের সংস্কৃতি) গ্রহন করতে চায়। এই দিক থেকে বিবেচনা করে আমি এদের ভন্ড বলেছি, আমার ভুল হতে পারে। এরা হয়ত নিজেদের “মুসলমানিত্ব” রক্ষা করার জন্য উপরোক্ত আচরন করে। আমার জেনেরালাইজড মন্তব্যের জন্য দুঃখিত।
@তারিক,
খুব ভাল লাগলো আপনার স্বীকারোক্তিটা। আমরা অনেকেই ক্ষোভ বা ক্রোধের বসে অনেক সময় এ রকম বলে থাকি যা আসলেই ভুল। এই যুগেও শহরের ইসলাম আর গ্রামের ইসলাম, আধুনিক শিক্ষিতের ইসলাম আর অনাধুনিক অশিক্ষিত ইসলামের মধ্যে রাতদিন তফাৎ। আধুনিক রাজনৈতিক ইসলামের কুৎসিত নোংরা সন্ত্রাসী চেহারার সাথে সাধারন সরল বিশ্বাসী মুসলমানের এখনও পরিচয় নেই। আমাদের দেশে তাদের সংখ্যা এখ্নও বেশী যারা একই সাথে বাঙ্গালী এবং মুসলমান। আর হ্যাঁ, তারা আগে বাঙ্গালী পরে মুসলমান।
@আকাশ মালিক ,
জী ভাই বুঝলাম। এই সরল বিশ্বাসী মুসলমানদের সরলতার সুযোগ খুব ভাল মতই নিচ্ছে ৰ্ধম ব্যবসায়ী রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোই আসলে চায় না এদের ৰ্ধমের প্রতি আসক্তি কাটুক, যেন সময়মত নিজেদের কাৰ্যসিদ্ধিতে এদের লেলিয়ে দেওয়া যায়।
@আকাশ মালিক, যাবে …… অবশ্যই যাবে । কারন যদি তারা ইচ্ছাকৃত ভাবে মিথ্যাচার না করে থাকে মানে তারা যা লিখে তার উপর যদি তারা সত্যিই আস্থাশীল থাকে তাহলে বুঝতে হবে এরা হইল ‘বুঝে না ত কিসু , উটেরে বলে বোম্বাই লিচু ‘ । সেক্ষেত্রে তারা বই পড়েছে অনেক কিন্তু তাদের মুক্তচিন্তার অভাবের কারনে তারা যাই ইসলামের সাথে বিরোধপূর্ণ তাই ভুল প্রমানে উঠে পড়ে লেগেছে …… কিন্তু দেখা যায় তারা আসলে কিভাবে ভুল প্রমান করতে হবে তাই জানে না । এদেরকে আপনি কেম্নে শিক্ষিত ববেন বলেন ত ভাই । এইগুলারে আসলে কি বলা যায় তাই এতদিনে বুঝতে পারি নাই । 🙁
@আকাশ মালিক,
শুরুতেই ধন্যবাদ দেই মন্তব্যের জন্য। আপনার মূল সুরের সাথে অনেকটাই একমত। বিশেষ করে একটা কথা ভাল বলেছেন,
রাজনীতির ইসলামীকরণ রাজনীতি আর ইসলাম দুটাকেই কলুষিত করেছে।
একটু খেয়াল করে, আমি বলেছিলাম ‘প্রকৃত’ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার কথা, যেখানে ‘প্রকৃত’ শব্দটিতে কোটেশন মার্ক দিয়ে জোর দেয়া আছে। ‘কেবল’ শিক্ষিত আর অশিক্ষিতের (একাডেমিকভাবে) মধ্যে পার্থক্যকরণ নিয়ে কোন কথা বলা হয়নি কিন্তু। ছোট করে প্রকৃত শিক্ষার রূপরেখাও টানার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই প্রশ্নটা “এদেরকে কি প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত বলা যাবে?” এরকম হলে বেশি প্রাসংগিক হতো।
@আকাশ মালিক,
আরে ভাই আমি তো আলহামদুলিল্লাহ বলব।
এর চেয়ে ভাল প্রস্তাব কি হতে পারে। এর থেকে ভাল প্রস্তাব হবে পারে যে , সারাদেশে ইসলামী শিক্ষার জোয়ার বইয়ে দেব আর শরিয়াহ আইন চালু করব। এইরকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেটা বাস্তবায়ন করলে আমি ২ রাকাত নফল নামাজ পড়ব ইনশাল্লাহ।
এমনিতেই মেলাদিন নামাজ না পড়ে বেদীন হয়ে গেছি।দ্বীনের রাস্তায় ফিরে আসব কথা দিলাম যদি শরিয়াহ আইনে খালেদা হাসিনার সমুচিত সাজা হয় প্রধানমন্ত্রী হবার অপরাধে।
@অর্ফিউস,
ভাই আস্তে বলেন কোন রাজনীতিবিদের চোখে আপনার এই প্রস্তাব ধরা পড়লে, আগামীতে তাদের নিৰ্বাচনী ইশতেহারে এই প্রস্তাব ঢুকিয়ে দিতে পারে!!! :-O
@তারিক, এইটা কি বলেন ভাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেইতো এইটা শিখসি আমি।উনিই না শরিয়া আইনে বিচারের হুমকি দেন বিরোধী পক্ষ কে :-p
@আকাশ মালিক, যে লিঙ্ক দিলেন রে ভাই, হজম হইতাসে না। আরো বদহজম হইতেসে এই খবরে কিছু হেফাজতি কুত্তার মন্তব্য।পড়ছেন সব মন্তব্য গুলা?হাসিনাকে কেউ কেউ ধুয়ে দিসে । 🙁 বাঙ্গালী আর কিছু না পারুক গালি দিতে আর চামচামি করতে চ্যাম্পিয়ন। তবে হাসিনা মনে হয় ইসলামের চামচামী করেও পার পাবে না এইবার।
@আদিল মাহমুদ,
ভাল কথা, লেখাতে রেফারেন্স দিতে ভুলে গিয়েছিলাম, এখন ঠিক করে দিয়েছি। ধন্যবাদ ভুল ধরিয়ে দেয়ার জন্য।
@আদিল ভাই ,
বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক যেসব সমাজে অনুমোদিত সে সমাজের মানুষ/সংস্কৃতির প্রতি ধর্মপ্রানরা যে পরিমান ক্ষোভ/ঘৃনা প্রৰ্দশন করে, কিন্তু সন্দেহজনকভাবে শিশু যৌন শোষণ(Pedophilia) অনুমোদিত সমাজের মানুষ/সংস্কৃতির প্রতি ধর্মপ্রানদের সে পরিমান ক্ষোভ/ঘৃনা প্রৰ্দশন করতে দেখা যায় না। 😕
৬৩২ খ্রিস্টাব্দে আরাফাতের ময়দানে নবীজি তাঁর শেষ ঐতিহাসিক(বিদায় হজ্জ-এর) ভাষণের মাধ্যমে আরবদের কাবা গৃহ থেকে বিপুল আয়ের পথ সুগম করে দেন। বৰ্তমানে কাবা গৃহের স্বত্তাধিকার ও তত্ত্বাবধান এবং হজ মৌসুমে আয়কৃত অর্থের মালিকানা সৰ্ম্পূন সৌদী আরবের। এই ব্যবসাকে ঘিরে বিলিয়ন ডলারের ৰ্পযটন শিল্প গড়ে উঠছে সৌদীতে। গত বছর(২০১২) বহিরাগত সাড়ে ১৭ লক্ষ হ্বজ পালনকারীরা তাদের সৌদী ভ্রমনে ১৬.৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করে, যা ২০১১ এর তুলনায় ১০% বেশী । প্রতি বছর এই ব্যবসার আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।তথ্যসূত্র: এখানে।
২০১৩-এ সৌদী ভ্রমনকারীর সংখ্যা মোট কত জন হবে তা জানি না, কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ১,২৭,১৯৮ জন এই ভ্রমন করবে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে এই ভ্রমন সম্পন্ন করতে প্রত্যেকের ৩.৪৭ লক্ষ টাকা খরচ করতে হবে। তথ্যসূত্র: এখানে।
আমাদের দেশের মানুষ এই ব্যবসা সৰ্ম্পকে কি জানেনা? :-X নাকি সৌদী ব্যবসার উপর প্রশ্ন করাও পাপ?? :-Y
সহমত। (Y)
@তারিক,
এছাড়া টিকে থাকার তো আর বুদ্ধি নাইরে ভাই। তেল কি আর চিরকাল থাকবে?কাজেই বিকল্প হিসাবে হজ্জ ব্যবসা।
ভাইজান, জান্নাতে যাইতে চান আর নবীজির দেশে এই সামান্য টাকাটাও খরচ করবেন না এইটা কেমন কথা?জান্নাতের টিকেটের দাম ধরে নেন এটাকে, একটু তো দাম বেশি লাগবেই 😀
এইটা কবিরাহ গুনাহর পর্যায়ে যেতে পারে। নবীজির দেশের আয় রোজগার নিয়ে কথাবার্তা! আপনার এত্তোবড় সাহস হুহ ! :guli:
@অর্ফিউস ভাই,
বাংলাদেশ থেকে এই যে বিশাল সংখ্যক মানুষ হজ্জে যায়, তার মধ্যে বেশীর ভাগই মধ্যবিত্ব পরিবারের মানুষ । এই মানুষগুলোর সারা জীবনের সঞ্চয়/পেনসনের টাকার একটা বড় অংশ ঐ ভ্রমনে সৌদীতে দান করে । তারা কি একবারও চিন্তা করেনা যে এই দান তাদের জান্নাতের(বৈশ্যালয়ের) লোভ দেখানো ছাড়া ইহকালে তার জন্য কোন সুফল বয়ে আনতে পারবে না? আসলে এই যুক্তি/বিবেকহীন মানুষগুলো বুঝতেই পারে না যে ৰ্ধমের নামে তাদের ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে!!! :-O
ভয় দেখান কিল্লাই ? 😛 😛 😛
@তারিক,
সেইটাতো জানি রে ভাই। উচ্চ বিত্তরাতো প্রত্যকে বছরেই হজ করে।দেখেন না আমাদের ২ নেত্রী এবং রাজনীতি বিদরা প্রত্যেকেই হাজি। কথায় বলে হাজির বেটা পাজি। এদের দেখে ব্যাপারটা ক্লিয়ার হবেন আরো ভাল ভাবে ।
কি করবেন বলেন ছোটবেলা থেকেই একেবারে প্রোগ্রামড হয়ে গেছে যে সবার মন মগজ। এদের আর দোষ দিয়ে লাভ কি? তবে জাতে মাতাল আর তালে ঠিক কিছু লোকও কিন্তু এর মধ্যে আছেন।যদিও সংখ্যায় এরা খুবই নগন্য। 🙂
সবই এই হলদে পাতার শানিত তরবারির মাজেযা রে ভাই। কিন্তু এইটা কে বুঝাবে তাদের। বুঝাতে যান উলটা কতল হয়ে আসবেন 🙁 ।
ভয় আর আমি দেখালাম কই। এইটা তো বাস্তবতা। নিজের চামড়া বাঁচান। এই দিন আর বেশি দূরে নাই যেদিন নবীজির দেশের আয় ইনকাম নিয়া কথা বার্তা বলাটা কবিরাহ গুনাহ হবে এই দেশে।মুসলিম রা খাক বা না খাক নবীর দেশের রাজপুরুষদের আরাম আয়েশের যেন এতটুকু ঘাটতি না হয় সেইটা খেয়াল করা মানে নবীজির বানীর প্রতি এবং খোদ নবীজির প্রতিই সম্মান দেখানো।
আর নবীজিকে সম্মান করা মানে আল্লাহ কে সম্মান করা।
না করলেই খবর আছে।কল্লা আপনার একটাই তো আমার মত? :-p অবশ্য হাইড্রার মত ১০ মাথা থাকলে ভিন্ন কথা। আমার মাথা ভাই একটাই আর এটা বারবার গজাবে না, কাজেই জান বাঁচানো ফরজ।তাই আপনাকে সমমনা ভ্রাতা হিসাবে সতর্ক করা আর কি 😉
@তারিক,
ঠিকই বলেছেন। এ জন্যেই আমাদের সংগ্রাম রাজনৈতিক ইসলামের বিরুদ্ধে। ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা না করতে পারলে কোনদিনই ধর্মীয় সন্ত্রাস বন্ধ হবেনা। আর সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহ রেখে রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে আলাদাও করা যাবেনা। সুতরাং রাজনৈতিক ইসলাম আমাদের গলায় কাটা, পায়ে কুড়াল হয়ে থাকবে বোধ হয় আরো অনেক দিন।
@আকাশ মালিক,
ভাই, আপনার কি মনে হয় ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা করা (বিশেষ করে যে দেশে সংখ্যাগোরিষ্ঠ মানুষ ইসলাম ৰ্ধমাবলম্বী)সম্ভব?? আপনি অবশ্যই এই ব্যাপারে আমার থেকে ভাল জানবেন যে, সমগ্র আরব জাতিকে একত্র করে আরব সাম্রাজ্য তৈরী কি ইসলামের তথা মুহাম্মদের মূল উদ্দেশ্য ছিল না ?? এখনো মুসলিমেরা যে যেই দেশেই জন্মগ্রহন করুক না কেন তাদের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু ঐ একই, সমগ্র বিশ্বে এক ইসলামী সাম্রাজ্য তৈরি করা। আর এ কারনেই তারা নিজ দেশের রাজনীতিতে থেকে দেশকে আবার ১৪০০ সাল পিছনের সেই অসভ্য/বৰ্বর যুগে ফিরিয়ে নিতে চায়। আমার মনে হয় রাজনীতিতে ৰ্ধমভিত্তিক দল নিষিদ্ধ না করলে রাজনৈতিক ইসলাম থেকে মুক্তি নাই।
@তারিক,
ভাইরে, কাজটা করবে কে? কে ভোট হারাতে চায় বলেন?হাজার হলেও গনতন্ত্র বলে কথা। মধ্য যুগের ইউরোপ ক্যাথলিক চার্চের প্যাঁদানি খাবার পরেই না সোজা হয়েছে। আধুনিক যুগের মুসলিমরা নাকি ভাই ভাই, কিন্তু ভাইদের প্রতি দরদ তখন উথলে উঠে যখন, ইহুদী (!) আমেরিকা আফগানিস্তান আক্রমন করলে।
অথচ মুসলিম জঙ্গিরা যখন বোমা মেরে কাফের নিধনের পাশাপাশি মুসলমান নিধনও করে থাকে, তখন কিন্তু ভাইদের প্রতি এই বিশাল দরদ মুসলিম ভাই দের থাকে না।
মীরজাফর একটা গালি তে পরিনত হয় কারন কাফের ইংরেজদের পক্ষ নিয়ে সে নবাব সিরাজের বিরুদ্ধে বেইমানী করেছিল। এই সিরাজ কিন্তু আদৌ বাঙালী ছিলেন না, জানেনই তো। অথচ ইনার জন্য বাঙালীর কি মাতম!
অপরদিকে গোলাম আজম সহ রাজাকার ভাইজানেরা ৭১ সালে ৩০ লাখ মানুষ মারার পাশাপাশি ৪ লাখের মত মা বোনদের ইজ্জত হানী করেছিল। এই নিয়ে কিন্তু স্বজাতি বাঙালী মুসলিমের এক বিশাল অংশ একেবারেই নিরব। বরং এদের বেশির ভাগের আছে খুনিদের প্রতি গোপন দরদ। মানুষ মারছে তো কি হইসে ভাইরা ভুল করেছিল, এইটা হইতেই পারে!!!
আর সারা জাহানের মুসলিম ভাই বেরাদরের কথা না হয় বাদই দিলাম।সবই করেছে ইসলাম রক্ষার্থে, কাজেই পাকওয়াতানের পক্ষেই সব মুসলিম ভাই বেরাদরের দেশ থাকবে, এইটাই স্বাভাবিক। হাজার হলেও ইসলামী বৃহত্তর পাকওয়াতানের অখন্ডতা বলে কথা।
তো এই রাজনৈতিক ইসলামই যেহেতু ইসলামের আসল রুপ সেখানে আপনি কিভাবে রাজনীতি কে আলাদা করবেন ভাই?অনেক মানুষকে বলতে শুনতাম আগে যে আমাদের ধর্মই তো রাজনীতি। আজ এঁরাই উলটা সুরে গান, যদিও দিল মে ঠিকই পাকওয়াতান বা সৌদি শরিয়াহ। কাজেই কোন সুযোগ দেখি না রাজনীতি থেকে ইসলাম ধর্ম বাদ দেবার, কারন এতে ইসলামই নাই হয়ে যাবে আর এইটা মুসলিম ভাই বেরাদরেরা চাইবেন না সেটাই স্বাভাবিক।
@অর্ফিউস ভাই,
আমার এক দুর সৰ্ম্পকের আত্ত্বীয়ের সাঈদীর ফাসির রায়ের পর মন্তব্য ছিল : “এত বড় আলেমকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারনেই জালিম সরকার অপদস্ত করছে”।কোন এক সময় সেই আত্ত্বীয়ই খুব গৰ্ব করে আমাকে বলতো আল্লামা সাঈদীর মত মহান ব্যক্তির সাথে উনি “হজ্জে” গিয়ে অশেষ সোয়াব হাসিল করেছেন। এই না হইলে বাঙ্গালী মুসলিম!!! :-Y
একমত তাই হতাশ। :-X
পৃথিবীতে প্রচলিত ধর্মগুলোতে ছোটবেলা থেকেই আমাদের যুক্তিবোধ ও বিবেকবোধ নষ্ট করে ৰ্ধমীয় ব্যাপারে অসহনশীল করে তোলা হয় এবং ঈশ্বর/আল্লাহ/জ্বীন/ভুতের মত অযৌক্তিক বিষয়গুলোর ধারনা মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আসলে যুক্তিবোধ ও বিবেকবোধের অভাবকে ধর্ম দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয় । এটি ধর্মগুলোকে টিকিয়ে রাখার একটি প্রধান অবলম্বন । আর একারণে ধার্মিকতাপ্রধান সমাজের মানুষের ভেতর স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি ও সহজাত নীতিবোধ কম থাকে এবং তাদের মধ্যে গড়ে উঠে “উগ্র সাম্প্রদায়িক” দৃষ্টিভঙ্গি ।
সহমত। জোকার নায়েকের/হারুন ইয়াহিয়া ও তাদের অনুসারী “দেশী” মোল্লাদের উট-মূত্র মিশ্রিত অপবিঙ্গান এদেশের মানুষকে আধুণিক ঙ্গান-বিঙ্গান থেকে অনেক দুরে সরিয়ে রাখছে। প্রকৃত বিঙ্গানমনষ্ক মানুষই পারে উট-মূত্র মিশ্রিত অপবিঙ্গান থেকে বিঙ্গানকে রক্ষা করতে।
@তারিক,
ঠিক বলেছেন। (Y)
ভাই, পোষ্টটা সামুতে খুব দিতে ইচ্ছা করতেছে। সামুতে দিলে দেখতেন ছাগুরা কেমতে ফাল পারে…. বেশ খোড়া যুক্তি শোনা যেত।
@প্লাবন ইমদাদ,
মাফ করবেন, কারো ফালাফালি দেখতে ইচ্ছা হয় না।
বিজ্ঞানের ছাত্রদের তো দেখি চরমভাবে বিজ্ঞান বিদ্বেষী! তারা ভূত-প্রেত হয়ত বিশ্বাস করে না, কিন্ত জ্বিন (জ্বিন জাতি) তো বিশ্বাস করে। আর বিবর্তনবাদ তারা হাজারবার পড়বে পার্থিব জীবনের কথা ভেবে। ক্লাশেও বিজ্ঞানের স্যার বলে দেন, এসব পড়বে কিন্তু বিশ্বাস করবে না। আদম-হাওয়া থিউরী তাদের কাছে অনেক বেশি বিজ্ঞানময়…। কাজেই
কাজেই বিজ্ঞান পড়লে অন্ধ বিশ্বাস ঘুঁচে যাবে এটাও একটা অন্ধ বিশ্বাস। সাহিত্য আর ইতিহাস ব্যাপকভাবে পড়াশোনা হলেই একটা সমাজে উদারপন্থি মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। আফসোস, মানুষ এখন আর সাহিত্য পড়ে না। টেলিভিশন দেখে। ইতিহাস পড়ে না…।
@সুষুপ্ত পাঠক,
অনেক ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য। হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন, উদারপন্থী হতে ইতিহাস-সাহিত্যের প্রয়োজন আছে বৈকি, খুব ভাল করেই প্রয়োজন। তবে, বিজ্ঞান পড়লে অন্ধ বিশ্বাস ঘুঁচে যাওয়াকেই কেন অন্ধবিশ্বাস বললেন, তার সাথে একমত হতে পারলাম না। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, আমাদের দেশের মানুষ যেভাবে বিজ্ঞান পড়ে, সেভাবে পড়লে অন্ধবিশ্বাস দূর হওয়া অনেক দূরের ব্যপার। কিন্তু তাকে কি বিজ্ঞান পড়া বলে? তারা তো বাংলা যেভাবে পড়ে, সমাজ যেভাবে পড়ে, ধর্ম যেভাবে পড়ে, সেভাবেই বিজ্ঞান পড়ে। গৎবাঁধা কিছু প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করে পরীক্ষার হলে গিয়ে বমি করে দিয়ে আসে। একইভাবে তারা সাহিত্য আর ইতিহাসও কিন্তু পড়ে! কিন্তু তাকে কি আর ইতিহাস-সাহিত্য পড়া বলে? এইভাবে ইতিহাস-সাহিত্য পড়লে যেমন মনের ব্যপ্তি বাড়বেনা এতটুকু, তেমনি বিজ্ঞান পড়লেও অন্ধবিশ্বাস ঝড়বে না। বিজ্ঞানের ছাত্রের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে – প্রশ্ন করতে শিখা। যেদিন একজন প্রশ্ন করতে শিখবে সেদিন থেকে তার উন্নতি শুরু হবে এবং সেই প্রশ্নের উত্তর তার বিজ্ঞানের জ্ঞানের মাধ্যমে দিতে পারলে তার অন্ধবিশ্বাস দূর হতে বাধ্য।
@প্রতিফলন,
এই প্রশ্ন করতে কে শেখাবে? সবাই তো আর আরজ আলী মাতুব্বর হবে না। এই প্রশ্ন করতে যে সাহস দরকার সে সাহসটা কে দিবে। বিজ্ঞানের ক্লাশে সেটা কেউ পাবে না আমি নিশ্চিত। কারণ ওখানে যারা ছবক দেন তারাও গভীরভাবে কিছু চিন্তা করতে ভয় পান। আলো জ্বালানোর মত মানুষ কোথায় এই সমাজে। আনসারুল্লা বাংলা টিমের মত এরকম হাজারটা টিম এখন সক্রিয়। পাড়া মহল্লায় বহু পরেজগার বড় ভাই আছেন যারা ছোট ভাইদের ছবক দিয়ে চলেছেন দ্বিনি পথের। সেখানে মুক্তচিন্তা, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি ভঙ্গির বদলে কূপমন্ডুতা, অন্ধত্ব ছাড়া দ্বিতীয় কিছু নেই। অতি দুঃখের কথা হচ্ছে বিজ্ঞানের খুব মেধাবী ছাত্র নিজের মধ্যে জঙ্গিবাদ লালন করে চলে। এরকম মনে করার কারণ নেই যে সে বিজ্ঞান মুখস্ত করে শিখেছে। একমাত্র সাহিত্যই পারে মানুষকে মানবিক করে তুলতে। শরৎচন্দ্র একটা পতিতার মধ্যেও মানবিক দিক ফুটিয়ে তুলেন, সেই চরিত্রের প্রতি আমাদের সহানুভূতি তৈরি হয়। ঘৃণা নয় দুঃখবোধ জাগে তাদের জন্য। রবীন্দ্রনাথের গোরা চরিত্র আমাদের শেখায় মানুষের জাতপাত কতটা ঠুঙ্গ আর পলকা। আমি বুঝি মানুষকে মানুষ, স্রেফ মানুষ এই পরিচয় দিতে পারে কেবল সাহিত্য। ভাল সাহিত্য মানুষের মধ্যে একটা বোধ তৈরি করে দেয়। একটা ক্লাশ তৈরি করে দেয়। অথচ এখন কেউ সাহিত্য পড়ে না। তাই মানুষের পতন আরো দ্রুততর হবে।
@সুষুপ্ত পাঠক,
আপনার কথার সাথে একমত, সাহিত্যের অনেক প্রয়োজন। আমি কিন্তু সাহিত্যকে বাদ দিয়ে বিজ্ঞান শিক্ষার কথা কখনো বলিনি। তবে, জানিনা কেন বিজ্ঞান শিক্ষা প্রতি আপনার বাজে ধারণা, হয়তো সেরকম মানুষের দেখাই বেশি পেয়েছেন। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীর প্রতি আপনার অশ্রদ্ধার ভাবটা যে স্পষ্ট তা না বলে পারলাম না। নিচের কথাগুলো একটু বেশি জেনারেলাইজেশন হয়ে গেল না কি? সকল বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীই তো আর এক রকম না, তাই না?
@প্রতিফলন, বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি আমার কোন বাজে ধারনা নেই। বিজ্ঞান ছাড়া কোন জাতির অগ্রগতি হতে পারে না। আমি নিজে বিজ্ঞানমনস্ক ভাবতে ভালবাসি নিজেকে। যে কোন ব্যাপারে বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা পছন্দ করি। আর বিজ্ঞানীদের মনে করি মানব সমাজে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মানুষ। তবে এটা বিশ্বাস করি মানুষকে বিজ্ঞানমনষ্ক করার জন্য সাহিত্যই পারে তার মনটাকে প্রস্তুত করে তুলতে। আমি কিন্তু আপনার লেখার সঙ্গে পুরোপুরি একমত। শুধু একটু যোগ করেছি সাহিত্য মানুষকে মানবিক করে তুলে। অন্যসব মাধ্যমের জন্য মানুষের মনটাকে উপযোগী করে তুলে। আপনার লেখায় সাহিত্যটা উল্লেখ ছিল না। ভাল লেখা না হলে আমি মন্তব্য করি না। আর শুধু শুধু ভালো হয়েছে, দারুণ লেখা বলাও বাহুল্য মনে হয়। লেখাটা পড়ার মত আর ভাবনার মত বলেই মন্তব্য করেছি। আপনার বিজ্ঞানের লেখাগুলো পছন্দ করি। আর হ্যাঁ, বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও যারা অদৃষ্টে, নানারকম ধর্মীয় মিথে বিশ্বাস রাখে তাদের ঘৃণা করি। আর বিশ্বাস করি সবাই এরকম না। যদি হতো তাহলে আমাদের মত মানুষ বিজ্ঞানের লেখা পড়তে পারতো না। লেখাগুলো তো লিখছে খাঁটি বিজ্ঞানমনস্ক মানুষজনই। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ আমার মন্তব্যের উত্তর দেয়ার জন্য।
@সুষুপ্ত পাঠক,
আপনার অবস্থান পরিষ্কার করে জানতে পেরে খুশি হলাম। হ্যাঁ, লেখায় সাহিত্যের উল্লেখ থাকা হয়তো উচিত ছিল। কিন্তু হয়েছে কি, সাহিত্যে বিশেষ দখল নেই তো, তাই সে বিষয়টা শুরুতেই মাথায় আসে না। আপনার মতো আদিল মাহমুদ আর তারিকও বিজ্ঞানশিক্ষার দুর্বল দিকটা তুলে ধরেছেন। কেবল “ভাল হয়েছে” মার্কা মন্তব্যের চেয়ে প্রাপ্য সমালোচনা আর যুক্তিভিত্তিক আলোচনাই তো মুক্তমনার বিশেষত্ব, তাই না?