বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও কিছু মানুষ নিজ লিঙ্গের মানুষকে যৌনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন। আপনি ভাবতে পারেন ভালোবাসা তো ভালোবাসাই- কিন্তু বিষয়টা কি এত সহজ?
২০০১ সালে নেদারল্যান্ড প্রথম সমলিঙ্গের বিয়েকে আইনগত বৈধতা দেওয়ার পর তাদের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করেছে আরও দশটি জাতি। ২০১১ সালে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল ঐতিহাসিক একটি সনদ পাশ করে যেখানে আন্তঃসরকার বডি ‘‘এ মর্মে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, গোটা বিশ্বে যৌনজীবনের ভিন্নতা ও লৈঙ্গিক পরিচিতির জন্য কিছু মানুষকে বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার হতে হচ্ছে।’’
জাতিসংঘের মহাসচিব পরিষদকে বলেছেন যেন এটি ‘‘কর্মক্ষেত্র, বিদ্যালয় ও হাসপাতালগুলোতে বিস্তৃত পক্ষপাতিত্ব এবং যৌন আক্রমণসহ সব ধরনের সহিংস আক্রমণের’’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়’’; তিনি এ প্রসঙ্গে এ সত্যও তুলে ধরেছেন যে, সমকামী নারী-পুরুষদের বন্দী, নির্যাতন ও হত্যা করা হচ্ছে; এটা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
বাংলাদেশে যারা সমলিঙ্গের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আগ্রহী তাদের আইনগত দিক থেকে বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে; তাদের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতাও একবারে নেই। বাংলাদেশ এ রকম গুটিকয়েক দেশের অন্যতম যেখানে রাষ্ট্র শুধু সমলিঙ্গের মানুষদের মধ্যেকার যৌন সম্পর্কের অস্তিত্ব অস্বীকারই করে না, বরং একে শাস্তিযোগ্য বিষয় বলে মনে করে; এ ক্ষেত্রে আইনের প্রসঙ্গটি অস্পষ্ট।
তবে অনেকেই জানেন না যে, বাংলাদেশে সমকামী পুরষের অধিকার আন্দোলনটি গত কযেক বছরে অনেক এগিয়েছে। সামান্য হলেও উল্লেখযোগ্য কিছু বিজয় অর্জিত হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে, ২৯ এপ্রিল জেনেভায় অনুষ্ঠিত ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমণি বলেছেন লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল ও ট্রান্সজেন্ডার মানুষদের (সংক্ষেপে এলজিবিটি) অধিকার সংরক্ষণের স্বীকৃতিদানের কথা; সাংবিধানিকভাবে তাদের সমঅধিকার ও স্বাধীনতা থাকার কথাও বলেন তিনি; একে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষে্ত্রে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন বলা যেতে পারে।
কয়েক মাস আগে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বন্ধু ওয়েলফেয়ার সোসাইটির একটি অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেন যে, জাতীয় আইন কমিশনের সহায়তায় তার কমিশন একটি আইনের খসড়া তৈরির কাজ করছে যেটি ব্যক্তির যৌনজীবনের কারণে তার প্রতি বৈষম্য নিষিদ্ধ করবে। গত বছর আরও তিনজন শান্তিতে নোবেলবিজয়ীর সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি বিবৃতি দেন যেখানে সমলিঙ্গের মানুষদের আইনগত বৈধতা প্রদানের কথা বলা হয়েছে।
আইনের কথা বাদ দিলেও, সমকামীদের ব্যাপারে বাস্তবে যে সব বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয় তার বড় কারণ প্রেজুডিস ও এ সংক্রান্ত তথ্যের অভাব। বাংলাদেশ লিবারেল ফোরাম ও বয়েস অব বাংলাদেশের মতো কিছু সংগঠন এসব ঘাটতি পূরণে কাজ করছে এবং জনগণকে সচেতন করতে শিক্ষামূলক প্রচারাভিযান শুরু করেছে। তারা একটি ব্রোসিউর বের করেছে যেখানে আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল এসোসিয়েশনের কিছু ম্যাটেরিয়াল আছে যার কিছু কিছু, আমার মতে, এখানে পুনঃপ্রকাশ করা যেতে পারে।
যৌনপ্রবৃত্তি কী
যৌনপ্রবৃত্তি বলতে বোঝায় পুরুষ, নারী, উভয়লিঙ্গের প্রতি পারস্পরিক আবেগ, প্রণয় এবং অথবা যৌনআকর্ষণজনিত এক স্থায়ী সম্পর্কাবস্থা। এ প্রবৃত্তির একটি প্রান্তে কেউ কেউ শুধুমাত্র বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে, আর অপর প্রান্তে কেউ কেউ শুধুমাত্র সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। তবে সাধারণত যৌনপ্রবৃত্তিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়: বিপরীতকামিতা (বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ), সমকামিতা (সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ) এবং উভকামিতা (উভয় লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ)।
একজন ব্যক্তি কীভাবে বুঝবে সে সমকামী বা উভকামী
যখন জানবার তখনই জানা যাবে। এটা জানতে কিছুটা সময় লাগতে পারে এবং এ জন্য তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই। মূল আকর্ষণটি প্রাপ্তবয়ষ্কদের যৌনপ্রবৃত্তির ভিত্তি হিসেবে কাজ করে এবং সেটা সাধারণত শিশুকালের মধ্যবর্তী সময় থেকে শুরু করে কৈশোরের শুরুর দিক থেকেই অনুভূত হয়।
এখানে বলা যায় যে, ভিন্ন ভিন্ন সমকামী বা উভকামীদের ক্ষেত্রে তাদের যৌনপ্রবৃত্তির বিষয়ে বেশ ভিন্নরকম অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে। কোনো কোনো মানুষ কারও সঙ্গে প্রকৃত সম্পর্ক স্থাপনের অনেক আগে থেকেই বুঝতে পারেন যে তারা সমকামী ও উভকামী। কেউ কেউ তাদের যৌনপ্রবৃত্তি জানবার বা বুঝবার আগেই অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে। আবার কোনো কোনো মানুষ নিজেদের যৌনপ্রবৃত্তি সম্পর্কে প্রকৃতপক্ষে সুনির্দিষ্টভাবে না জেনেই যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হয়।
এখানে একটা কথা বলতে হয় যে, সংস্কার ও বৈষম্যের ফলে অনেকের পক্ষেই নিজেদের যৌনপ্রবৃত্তি ও পরিচিতি তুলে ধরা বা প্রকাশ করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। তারা বলতে পারে না যে, তারা সমকামী বা উভকামী। ফলে তাদের প্রকৃত পরিচিতি প্রকাশিত হওয়ার বিষয়টি বিলম্বিত বা সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়ে।
কী কারণে একেকজন ব্যক্তির যৌনপ্রবৃত্তি একেক রকম হয়
বিজ্ঞানীরা কখনওই একমত হয়ে বলতে পারেননি যে, কী কারণে একজন ব্যক্তি বিপরীতকামী, সমকামী এবং উভকামী হয়ে থাকে বা ওইসব যৌনপ্রবৃত্তি ধারণ করে থাকে। অনেকেই মনে করেন যে, এ ক্ষেত্রে প্রকৃতি ও পরিবেশ উভয়েই একটি জটিল ভূমিকা পালন করে থাকে। মানুষ তাদের ত্বকের রং যেমন বাছাই করতে পারে না, ঠিক তেমনি যৌনপ্রবৃত্তি নির্ধারণ করার ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা সীমিত।
সংস্কার ও বৈষম্য বিপরীতকামী, সমকামী এবং উভকামী মানুষদের ক্ষেত্রে কী ভূমিকা পালন করে
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে সকল সমকামী বা উভকামী ব্যক্তি প্রকাশ্যে নিজেদের পরিচয় দিয়ে থাকে, তারা অনেকই সংস্কারজনিত ঘৃণা, বৈষম্যমূলক আচরণ এবং সহিংসতার শিকার হয়ে থাকে। অনেকেই তাদের স্কুলে, বিশ্ববিদ্যালযে এবং কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়। তাদের স্বাস্থ্যসেবা ও ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং পরিবারের সদস্য ও বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে তেমন সমর্থন পায় না।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের রেখে যাওয়া ১৮৬০ সালে প্রণীত দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা অনুসারে একই লিঙ্গের দুজন মানুষের যৌনসঙ্গম যাবজ্জীবন কারাদণ্ডযোগ্য অপরাধ। এর ফলে খুব কমসংখ্যক মানুষই তাদের যৌনপ্রবৃত্তির কথা প্রকাশ করে থাকে বা করতে পারে। এর ফলে অধিকাংশ মানুষই গোপনীয়তা ও মিথ্যার জীবন বেছে নিতে বাধ্য হয়। এতে তাদের জীবনাচরণ নৈতিকতাবিরুদ্ধ হয় এবং গোঁড়ামির শিকার হয়।
বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে বিয়ে নারীদের জন্য নির্বাণপ্রাপ্তি বলে ধরে নেওয়া হয়। তাই নারী সমকামীদের ক্ষেত্রে সমাজে সহনশীলতার মাত্রা একেবারেই কম।
সংস্কার ও বৈষম্য একজন ব্যক্তির মানসিক অবস্থার ওপর কী প্রভাব ফেলে
সমকামভীতি বাংলাদেশে ব্যাপক আকার ধারণ করে আছে এবং তা সমকামীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও ভালো থাকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে যখন তা তাদের যৌনপ্রবৃত্তি গোপন রাখতে বা তাকে অস্বীকার করতে বাধ্য করে। সংস্কার, বৈষম্য ও সহিংসতা সমকামীদের ওপর প্রচণ্ড মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান মজুমদার ও অন্যান্যদের এক গবেষণায় দেখা যায় যে, বাংলাদেশের শতকরা ৪৭ ভাগ ‘সমকামী পুরুষ’ অন্তত একবার আত্মহত্যা করার কথা ভেবেছে।
সমকামী এবং উভকামী মানুষদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ও সহিংসতা রোধ করতে কী করা যায়
সমকামী ও উভকামী মানুষ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নিজেদের যৌনপ্রবৃত্তি প্রকাশ করতে পারে। আর যে বিপরীতকামী মানুষেরা সহযোগিতা করতে চায় তারা সমকামী ও উভকামী মানুষদের জানার চেষ্টা করতে পারে এবং একই সঙ্গে এ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত সংগঠনগুলোতে কাজ করতে পারে।
সমকামিতা কি মানসিক ব্যাধি, অক্ষমতা, অপ্রাকৃতিক বা অস্বাভাবিক
না। সমকামী এবং উভকামী প্রবৃত্তি কোনো ব্যাধি নয়। কয়েক দশক ধরে গবেষণা ও ক্লিনিকের অভিজ্ঞতার ফলে প্রধান প্রধান স্বাস্থ্য ও মনোস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, এসব প্রবৃত্তি মানুষদের স্বাভাবিক অভিজ্ঞতারই প্রতিনিধিত্বমূলক। নারী ও পুরুষের মধ্যেকার সম্পর্কের মতোই সমলিঙ্গীয় সম্পর্কও স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯০ সালে মানসিক রোগের তালিকা থেকে সমকামীতাকে বাদ দিয়ে দিয়েছে।
চিকিৎসার মাধ্যমে যৌনপ্রবৃত্তি পরিবর্তন কি সম্ভব
সমকামী বা উভকামী হওয়াটা সম্পূর্ণরূপে স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর। এটা কোনোপ্রকার অসুস্থতা নয় এবং তাই এ জন্য চিকিৎসারও দরকার নেই। আজ পর্যন্ত কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণা দিযে এটা প্রমাণ করা যায়নি যে, থেরাপির সাহায্যে যৌনপ্রবৃত্তি পরিবর্তনের বিষয়টি নিরাপদ বা কার্যকর।উপরন্তু, এসব চিকিৎসার প্রয়াস সমকামীদের সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাগুলো আরও জোরদার করে এবং তাদের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে।
সমকামিতা কি পাশ্চাত্যের ধারণা
না। সমকামিতা প্রত্যেকটি সমাজ ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এমনকি অন্যান্য প্রাণিদের মধ্যেও এর উপস্থিতি দেখা যায়। বিশ্বের বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে যে, প্রতি ১০০ মানুষের মধ্যে ১ থেকে ১০ জন সমলিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকে। প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য, মোঘল চিত্রকর্ম ও অন্যান্য সাক্ষ্যপ্রমাণ থেকে দেখা যায় যে, ইতিহাসের আদিকাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশে সমকামিতা বিরাজমান ছিল।
সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সমকামীদের প্রতি বৈষম্য কি সমর্থনযোগ্য
সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে যেমন বর্ণবাদ ও লিঙ্গবৈষম্য সমর্থন করা যায় না, তেমনি সমকামীদের প্রতি বৈষম্যের অবকাশ নেই। সমকামী বা উভকামী মানুষদের হয়রানি করা, তাদের অধিকার ও মর্যাদা অস্বীকার করা অথবা আইনের কাছে অভিযুক্ত করা ইত্যাদি কোনো ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন নয়, বরং এগুলো অনৈতিক ও অমানবিক।
‘Coming Out’ বা ‘আত্মপ্রকাশ’ দিয়ে কী বোঝায়, এটা গুরুত্বপূর্ণ কেন
অন্যের কাছে নিজেকে সমকামী বা উভকামী বলে পরিচয় দেওয়াকে বলা যেতে পারে Coming Out বা আত্মপ্রকাশ। অনেকের জন্য এটি একটি উল্লেখযোগ্য মানসিক পদক্ষেপ। যে সমকামী বা উভকামী নারী পুরুষরা মনে করেন যে, তাদের যৌনপ্রবৃত্তি গোপন রাখা দরকার তারা প্রায়শই মানসিক উদ্বেগে ভোগেন। অথচ যারা তাদের পরিচয় নিয়ে অনেক খোলামেলা তাদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা কম।
তবে আপনি তখনই আত্মপ্রকাশ করবেন যখন আপনি সেটা করতে চান এবং তার জন্য আপনি প্রস্তুত। যদিও আপনি আশা করতে পারেন যে আপনার বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সদস্যরা আপনাকে সমর্থন দেবে, অনেক সময় হয় তার উল্টো। আপনি যদি অর্থনৈতিক দিক থেকে আপনার বাবা-মার উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকেন, তাহলে তাদের কাছে আত্মপ্রকাশ করার আগে অপেক্ষা করাই ভালো। এমনটি হতে পারে যে তাদের বিদ্রুপাত্মক প্রতিক্রিয়ার কারণে আপনাকে বাড়ি ছাড়তে হচ্ছে, বিপরীত লিঙ্গের কাউকে জোরপূর্বক বিয়ে করতে হচ্ছে, অথবা অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকারক মনোচিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
যখন নিজেকে প্রকাশ করবেন, তখন এমন একজনকে দিয়ে শুরু করবেন যার উপর আপনি ভরসা রাখতে পারেন। সমকামী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করাটা জীবনের সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটি। কিন্তু তা আবার জীবনের সবচেয়ে ফলপ্রসূও হতে পারে। নিজেকে প্রকাশ করে আপনি আপনার এবং অন্যান্য সকল নারী-পুরুষ সমকামী ও উভকামীদের আত্মমর্যাদা নিশ্চিত করতে সহায়ক হচ্ছেন।
সমকামিতা কি পাপ
ইহুদিধর্ম, খ্রিষ্টধর্ম এবং ইসলামধর্মে প্রথাগতভাবে সমলিঙ্গীয় যৌনআচরণকে পাপ বলে গণ্য করা হত। হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, জৈন এবং শিখধর্মে সমকামিতা সম্পর্কিত অনুশাসন যথেষ্ট পরিষ্কার নয় এবং এসব ধর্মেও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা এ ব্যাপারে বিভিন্ন মত পোষণ করে থাকেন। বর্তমানে সকল ধর্মেরই কিছু কিছু নেতারা ক্রমশ সমকামিতাকে মেনে নিচ্ছেন, এমনকি সমকামী বিয়েকেও অনুমোদন করছেন। প্রগতিশীল মুসলমান বিদ্বজনদের মধ্যে কেউ কেউ সমকামিতাকে (সমলিঙ্গীয় ভালোবাসা) নিন্দা না করে এর প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেছেন। বহু বাংলাদেশি সমকামী ও উভকামী আছেন যারা নিজেদের ধর্মীয় অনুশাসনের সঙ্গে যৌনপ্রবৃত্তির বিরোধ খুঁজে পান না।
রেইনার এবার্ট : যুক্তরাষ্ট্রের রাইস ইউনিভার্সিটির দর্শনের ছাত্র, বাংলাদেশ লিবারাল ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং অক্সফোর্ড সেন্টার ফর অ্যানিমেল ইথিক্স-এর এসোসিয়েট ফেলো।
একটা গল্প শোনাব মুক্তমনাদের।বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জন ছাত্রীর প্রানবন্ত সত্যিকারের প্রমের গল্প।যেটা এই প্রবন্ধের সাথে প্রাসংগিক।রেইনার এবার্ট কে আমি টুইটারে এই ঘটনা নিয়ে মেনশান দিয়েছিলাম,তিনি বোধহয় লক্ষ করেন নি।গল্পটা একটু পরেই বলছি…
আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে তিন বছর ছিলাম,পরে আমার সাথে হলের ধর্মক্ল্যাশটা জটিল ও রাজনৈতিক ভাবে ঘড়ানোর কারনে এবং কিছুটা ব্যাক্তিওগত কারনেও ,আমি আমার দুইটা বড় বুকশেল্প নিয়ে, আমি হল ছেড়ে দিই…তাও সেটা দুই বছর আগের কথা।ক্যাম্পাসে থাকার সময়, ছেলেদের হলে থাকলেও, সবার যেমন থাকে আমারও মেয়েদের হলের আশেপাশে কিছু ঘুরাঘুরি ও আড়ড়ার এওক্টা অভ্যাশ ছিল।।ঘটনাটা শুরু এখান থেকে…।
একদিন কুয়েত মৈত্রী হলে্র সামনে আমরা কয়েকজন ছেলেমেয়ে মিলে আড্ডা দিছছি এমন সময় আপরিচিত কয়েকটা মেয়ে এসে আলাদা হয়ে (যাতে আমরা না বুঝি)তারা তাদের আগের রাত্রে হলের একটা ঘটনা নিয়ে প্রচুর হাসাহাসি করে।বিশেষ কারনে অই বিশেষ হাসাহাসিতে আমি জড়াইনি।পরে কিওরিয়াস হয়ে রাতে ফোন করি এবং ঘটনাটা শুনি।ঘটনাটা বাংলাদেশের ইতিহাসে আনেক গুরুত্বপূর্ন –দুইজন লেসবিয়ানের বিশুদ্ব প্রেমের গল্প। হলের ছাদে প্রেম, পরে আবেগে, কিছুটা সেএক্স জড়িয়ে যাওয়ার সময় দুইটা মেয়ে,বিস্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া দুই ছাত্রী, ধরা পড়ে।(যদিও অই দুইটা সম্পর্কে সবাই আগে থেকেই জানে)ফোনে যেটা বুঝতে পারলাম হলের ঐ লেসবিয়ান মেয়ে দুইটা সেক্স,ঐদিন সম্ভবত হলের ছাদে, করার সময় হলের কোন এওক্টা মেয়ে নাকি দেখে ফেলে এবং প্রোভষ্ট ম্যামকে জানায়া দেয়। প্রোভষ্ট স্যার নাকি অইসময় তাদেরকে স্যারের রুমে নিয়া যায়।এবং সেখানে একটা ইন্টারেস্টিং ঘটনাও ঘটে ।ম্যাম এদেরকে সেক্সের কারন জিজ্ঞেস করলে ওরা নাকি বারবার একটা কথাই বলে –ওরা নাকি দুইওজন দুইজনকে ভালোবাসে।ম্যাম ওদেরকে ফোর্স করলেও ওরা নাকি ভালোবাসার দাবি ছাড়ে নি।পরে নাকি এরা এই জন্য প্রচুর কান্নাকাটিও করে। আর এই দুইটা মেয়ের কান্নাকাটি ও নিখাদ ভালবাসার কারনটাই ছিল ওদের হাসার কারন!
ঋতুপরররনা গোষ আভিনীত memories in march e শুধু আমি এই প্রেমের ঘটনাটা দেখেছিলাম।আমি এই প্রথম কোন বাংলাদেশি লেসবিয়ানের ঘটনা, সত্যিকারের প্রেমের ঘটনা শুনলাম।আই এম ডেম সিওর সিধার্থ মারা যাওয়ার পর আর্নব যেভাবে কেদঁছিল তারাও ঠিক সেই ভাবে কেদেঁছিল।হয়ত মনের আজান্তেই বন্ধুহীন খালিবাসায় এই গান্টা গেয়েও উঠেছিল(আপনারা হয়ত গান্টা জানেন)
Kaisi ajeeb daawat hai ye
Daawat shayad khatm hui phir,
sab log ja rahe hain ghar
sirf bin bulaaye khadi hoon main
ghar wala aa jaaye agar..
কারন সমকামিরাও ভালোবাসে অবিকল আমাদের মত ভালোবাসে।আই ভিলিব ইন ইট
আমার জানা মতে বাট আই এম নট সিওর পরে ওদের কে মনে হয় হল থেকে বের করে দেয়া হয়
এই ঘটনাটা আমি ছাড়া মনেহয় আর কেঊ জানে না।আমি ও কখোনো কাওকে বলি নি,কারনটা মুক্তমনায় লিখে জানানোর লোভ।কিন্তু এই দুই বছরে আমারও অনেক কিছু হয়ে গেছে,লেখা ও আর হয়ে ঊঠে নি।।তবে এখন মনে হয় এখানে কিছু লিখে মনের মধ্যে শান্তি পাচ্ছি। ………………… (দুই বছর পর লিখছি..ক্ষমা কইরেন।পুরা তথ্য নিয়ে আমার এওক্টা বড় ব্লগ লেখার ইচ্ছা আছে,…দেখা যাক )
যতদুর জানি সমকামীতা শারীরিক ও মানষিকভাবে একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি, এটিকে প্রতিবন্ধী ভাবার অন্ততঃ বৈজ্ঞানিকভাবে কোন কারন বা প্রমান নাই। সমাজে এটাকে মানুষের স্বাভাবিক আচরন হিসাবে মেনে নেয়া দরকার বলে মনে করি।
লেখাটি মুক্তমনা এবং bdnews24.com দু জায়গাতেই সমানভাবে আলোড়ন তুলেছে দেখে মনে হচ্ছে এ বিষয়ে আরও লেখা,আরও আলোচনা,আরও গবেষণা প্রয়োজন। বাংলাদেশে ওয়েব পেইজ ছাড়া তো এ নিয়ে মুখ খোলাই অসম্ভব প্রায়। ধন্যবাদ লেখককে।
@গীতা দাস,
সেখানকার তুলনায় এখানে তো কিছুই হয় নি। একজন তো চাক্ষুষ সাক্ষী দিয়ে দিলো সে নাকি দেখেছে প্রচুর সমকামীরা চিকিৎসা নিয়ে বিষমকামী হয়ে গেছে। ভাবতেও অবাক লাগে এই অবাদ তথ্য-প্রযুক্তির যুগেও আমাদের দেশের বিরাট সংখ্যক মানুষের কাছে বিজ্ঞান মোটেই পৌছুতে পারেনি। তবে একথাও সত্য, দেশের বাইরে উন্নতশীল দেশে বাস করে অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষও ব্যাপারটি বুঝতে পারেনি। ধর্মবিশ্বাসই বোধ হয় এই না বুঝার আসল কারণ। কী আশ্চর্য! তারা ফ্রয়েডের উক্তি শুনায় অথচ ফ্রয়ডের ধারণা যে বহু আগেই ভুল প্রমাণিত হয়ে গেছে তার খবর রাখেনা।
দেশের সংবিধান সমকামীদের অধিকারের পক্ষে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপুমনি। যেন সাংবিধানিক সুরক্ষায় এদেশের “হিজড়া” খ্যাত সংখ্যালঘু যৌনতার মানুষেরা কতোই না সুখে-শান্তিতে স্বসন্মানে বাস করছে!
এই নিয়ে একজন নারী সাংবাদিক সহকর্মীর ফেবু নোটে আজকেই একজন অকপট মন্তব্য করেছেন:
শেষ পর্যন্ত এই হচ্ছে বাঙালি মুসলমানের মন। বিশ্বাসের কঠিন প্রাচীর ভাঙা খুবই কঠিন কাজ। কেশের আড়ে পাহাড় লুকায়। 😕
@বিপ্লব রহমান,
আপনার ঐ নারী সাংবাদিক সহকর্মীর ফেবু নোট পড়ে ব্যাপক বিনোদন পাইলাম । :lotpot: :lotpot: :lotpot:
ভাই, ওনাকে এই লেখাটা শেয়ার দিয়ে, ওনার অনুভূতি জিঙ্গাসা কইরেন । :))
লেখক মনে হয় আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন না। একটি ব্যাপারে তার মন্তব্য খুব গুরুত্বপূর্ন।
– সূত্র কি? এটা নিয়ে অনেক পানি ঘোলা হতে পারে। সরকার এমনিতেই মৌলবাদীদের তোপের ওপর আছে। সূত্র ভালভাবে নিশ্চিত করা দরকার।
– আমি যতটা জানি সমকামীতার কিছুটা হলেও ক্ষতিকর স্বাস্থ্যগত দিক আছে।
সমকামীরা কেন সমকামী হয় তার বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা জেনেছিলাম অভিজিৎ দার সমকামিতা : একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান বইটি পড়ে। আমি এখন এটুকু বুঝতে পারি; যে কোন প্রাণী জন্মগতভাবে সমকামী হতে পারে, যার পেছনে কারো হাত নেই এবং এটা তাদের কোনো অপরাধ নয়, অপরাধ বরং এই সমসঙ্গমে বাধা দেয়া। আমরা যেমন স্বেচ্ছায় কেউ ‘স্ট্রেইট’ হয়ে জন্মাই না, হই জন্মগতভাবেই, ওরাও তেমনি। আমরা স্ট্রেইট হয়ে নিশ্চয়ই বড় কোনো পূণ্যের কাজ করে ফেলিনি। আমাদের যেমন বিয়ে করে কামক্ষুধা চরিতার্থ করবার অধিকার আছে, সমকামীদেরও আছে সে অধিকার। মানবিকতা ও যুক্তি সমকামীদের এই অধিকার দেয়, ধর্মগাধার দল গায়ের জোরে সমকামীদেরকে তাদের কামক্ষুধা মেটাবার মৌলমানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। আমরাও জন্ম নিয়ে দেখতে পারতাম আমরা বিপরীত লিঙ্গ, আমরা হিজড়া বা আমাদের আঙুল ছয়টা, বা ঠোঁট কাটা, বা কান কাটা, বা শরীরে অন্য কোনো সমস্যা। তো তখন সেজন্য কি আমরা আমাদেরই দোষ দিতাম? যে জন্মান্ধ, বা যে মেয়ের মাথায় টাক পড়েছে, তাকে যদি তার এই ‘অপরাধ’-এর জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান করা হয়, কেমন লাগবে একজন মানুষ হিসেবে আপনার?
তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেই ঈশ্বর বলে কেউ আছেন আর আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাহলে তো আরও বিপত্তি!!!
আস্তিকদের মতে ঈশ্বর তো ক্লীব লিঙ্গ। তার লিঙ্গ, দেহ বা কাম নেই। তাহলে যাদের লিঙ্গ, দেহ ও কাম আছে তাদের একটা শ্রেণিকে তিনি কাম চরিতার্থ করার অধিকার দিয়ে আর একটা শ্রেণিকে কোন্ বিবেকে একই অধিকার থেকে বঞ্চিত করেন?
ইসলামে ও বাইবেলে সমকাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ হলো কেন? এর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবার যুক্তি কী? এবং এই যুক্তিবিহীন আইনকে এতশত বছর ধরে আগলে রাখারই বা মানেটা কী! সমকাম যতবড় শারীরিক সমস্যা, এই আইন তো তার চেয়ে অনেক বড় আইনি সমস্যা! আমার মাথায় খেলে না একজন মানুষ জন্মগতভাবে সমকামী হয়েছে বলে কেন তাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে? আমার দৃষ্টিতে সমকাম মোটেই কোনো অপরাধ নয়। কেউ তো নিজের গড়জে জন্মের আগে অপশন বাছাই করে সমকামী হয়ে জন্মায় না, যিনি ওদেরকে সৃষ্টি করেছেন (এইটাতো দেখি আমার শুধু বলতে না; লিখতেও কেমন যেন লজ্জা লজ্জা আর নিজেকে মাথাফুলা মাথাফুলা লাগে!!!) তিনিই ওদেরকে করেছেন সমকামী। কেউ একজন তার চ্যালাব্যালার দল নিয়ে সংখ্যালঘু সমকামীদের জন্য মৃত্যু নির্ধারণ ও সমকামকে করবে নিষিদ্ধ (কিন্তু বেহেশতে আবার কচি গেলমান আদর-সোহাগ জায়েজ; রিতিমত কচি গেলমানের লোভ দেখিয়েছেন আল্লাজি !!!) অথচ নিজেরা গোটা দশ-বারো বিয়ে করে মৌজ-মাস্তি করবে আজীবন নিরুপদ্রবে, এটা কোনো সভ্যতা!!!
সম্প্রতি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত দুই উচ্চশিক্ষিত সাহসী লেসবিয়ান সকল রক্তচক্ষু ও মৃত্যুপরোয়ানাকে কাঁচকলা দেখিয়ে ইংল্যান্ডে সামাজিকভাবে বিয়ে করেছেন। এখন মুসলিমরা তাদের দুজনকে হত্যা করলে সেটা যতটা অমানবিক, মধ্যযুগোপযোগী, বর্বর ও অশ্লীল হবে, লেসবিয়ানদ্বয় নিশ্চয়ই তার এক শতাংশও অমানবিক ও অশ্লীল কিছু করেনি। আমি তাদের যৌন অধিকার আদায়ের এই সাহসী সিদ্ধান্তকে অভিবাদন জানাই।
প্রিয় রেইনার এবার্ট ব্রো। “তুমি সমকামী??? দায়ী কে??? তুমি নাকি ঈশ্বর??? ” নামে একটা ড্রাফ্ট লিখছিলাম কিছুদিন থেকে। আপনার লেখাটা আমার লেখাকে আরও শক্তিশালী করবে 🙂
ধন্যবাদ :))
@এম এস নিলয়,
তাহলে তো মেনেই নিচ্ছেন সমকামিতা স্বাধারণ আচরণ নয়। হিজড়া ,আঙুল ছয়টা, বা ঠোঁট কাটা, বা কান কাটা, বা শরীরে অন্য কোনো সমস্যা, জন্মান্ধ এদের দলেই সমকামীরা পড়ে।
@আম্মানসুরা,
আমার কথাগুলোর উত্তরে যা বলেছেন তা নিয়ে আর কিছু বলবোনা। নিলয়কে বলেছেন-
আমি বরং সেই ভুলগুলো দেখার অপেক্ষায় রইলাম। আর আপনার দেখানো এই জায়গাটায় এসে তো মনে হলো সকল পথ এক পথেই মিলে গেল তাই না? –
তাহলে আপনি মেনে নিচ্ছেন, হিজড়া ,আঙুল ছয়টা, ঠোঁট কাটা, কান কাটা, শরীরে অন্য কোনো সমস্যা, জন্মান্ধ হয়ে মানুষ নিজের ইচ্ছায় জন্মায়না। সমীকরণটা কী দাঁড়ালো? সমকামীরা নিজের ইচ্ছেয় সমকামি হয়ে জন্মায় না।
ধর্মের অসীম, অন্তহীন ত্যানা নিয়ে আপনি যদি তর্কে না এসে থাকেন, তাহলে আমরা বলতে পারি ইউরেকা, উত্তর আমরা পেয়ে গেছি।
@আকাশ মালিক, মেইল দেখে মনে মনে যে জবাব ঠিক করেছিলাম তার অনেকাংশ এসে দেখি আপনি দিয়ে দিসেন :))
ধন্যবাদ 🙂
আমিতো এখনো সরাসরি কমেন্টের লাইসেন্স পাইনি তাই দিনে একবার সব উত্তর একসাথেই দিতে পারি 🙁
এভাবে লেখার কষ্ট কমাইয়া দিলে ভালই লাগে 😉
আবারো ধন্যবাদ :thanks:
@আকাশ মালিক, এখানে ক্লিক করুন।
@সুষুপ্ত পাঠক,
জানি, প্রথম কমেন্টেই আন্দাজ করেছিলাম। তবে দেখিনা উনি অভিজিতের বইয়ের ভুলগুলো কী কী দেখান। তখন পর্যন্ত আমাদেরকে অপেক্ষাই করতে হবে।
উপরে খুরশেদ সাহেব দারূণ কিছু ইন্টারেস্টিং তথ্য দিয়েছেন। তার মন্তব্য লেখাটাকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলেছে।
@আকাশ মালিক, এই আম্মানসুরার নয়া ধর্মগুরু মজ বাসার তর্কে না পেরে অহেতুক মুক্তমনা ও অভিজিৎকে এবং অবশ্যই আমাকে অশালিন ভাষায় গালাগাল করেছেন দেখুন।( অবশ্য এই ধর্মগুরু এখন এই অভিযোগে নাগরিকে ব্যান!) এই ধর্মগুরুর দ্বারা এখন তিনি নয়া ধর্মীক হয়েছেন। স্বীকার করেছেন মুক্তমনায় গিয়ে ওনার ঈমান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
@সুষুপ্ত পাঠক,
আপনি কি আমার সাথে ঝগড়া করতে চাচ্ছেন? আমি চাই না। আপনার অপছন্দের লোককে যে পছন্দ করবে আপনি কি তার সাথে মারমুখো আচরণ করবেন? এটা তো কোন মুক্তমনার আচরণ নয়?
আর ম জ বাসারের বিষয় টা কি এই পোস্টে অপ্রাসঙ্গিক নয়?
কেন ভাই আপনার হিংসে হয় কেন? এই ভাবে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে আপনি কি বুঝাতে চাইছেন দয়া করে বলবেন?
@আম্মানসুরা, আপনিই কিন্তু মুক্তমনাকে অন্য একটা ব্লগে উল্লেখ করেছেন আপনার নাস্তিকতার ভ্রান্ত পথে চালিত করার অভিযোগ। মুক্তমনাকে ভুল ও ভ্রান্ত জেনেও যখন আপনি এখানে পুনরায় এলেন এবং মন্তব্য করতে লাগলেন নয়া আস্তিকতার জোসে তখন আপনাকে নিয়ে মনে প্রশ্ন জাগে বই কি!
মুক্তমনায় অনেক আস্তিক ব্লগার আছেন। কিন্তু তারা সবাই মুক্তমনের অধিকারী। আপনাকেও মুক্তমনায় স্বগত, কিন্তু মুক্তমন নিয়ে আসতে হবে।
@সুষুপ্ত পাঠক,
আপনার সমস্যাটা কি? আমি কি উল্লেখ করেছি বিস্তারিত ভাবে বলেন। আমার ধর্ম জ্ঞানের অজ্ঞতা আমি মুক্তমনায় এসে টের পাই এবং ভালো না লাগলেও মেনে নিই। তারপর খুঁজতে খুঁজতে একদিন আমার আস্তিকতার সঠিক ভিত্তি (আমার চোখে) খুঁজে পাই। আমার এই কথা গুলি তো ছিল তাই না? এখানে আপনি কি খারাপ খুঁজে পেলেন বুঝলাম না।
আর আমার কোন কমেন্টে আপনি আস্তিকতার জোস পেলেন তাহা দয়া করিয়া এই হতভাগীকে দেখান ।
আমার মুক্ত মন কি না তা ভাবার আগে আপনি এখন পর্যন্ত আমার সাথে যেই আচরণ করেছেন তা মুক্তমনের কি না একটু ভাবুন। আপনার আচরণ নিতান্তই বালক সুলভ।
@সুষুপ্ত পাঠক,
ব্যক্তিগত আক্রমন না করে বিষয়ে মনঃসংযোগ করুণ ।
@আকাশ মালিক,
আমি কথা দিয়েছিলাম যে অভিজিৎ দা এর ‘সমকামিতা’ বইটা নিয়ে লিখব। এখানে যেহুতু লেখার সুযোগ নাই তাই এখানে দিলাম। আশা করি পড়ে কমেন্ট করে জানাবেন।
@আকাশ মালিক,
হিজড়া ,আঙুল ছয়টা, ঠোঁট কাটা, কান কাটা, শরীরে অন্য কোনো সমস্যা, জন্মান্ধ এদের সমস্যা দৈহিক আর সমকামীদের সমস্যাটা মানসিক। এদের অসুস্থ বলতে আমার আপত্তি নেই, এদের প্রতি কোন আক্রোশ নেই। কিন্তু এদের স্বাভাবিক সুস্থ প্রবৃত্তির মানুষ বলতে আমার আপত্তি আছে। আপনি নিশ্চয় জন্মান্ধকে সুস্থ স্বাভাবিক বলবেন না?
@আম্মানসুরা,
আপনার জন্যে আমার একটি লেখা, দয়া করে পড়বেন আর পূর্ণ ছবিটা দেখবেন।
@আকাশ মালিক,
লেখাটি পড়ে কষ্ট লাগল। মন ছোঁয়া লেখা।
@আম্মানসুরা, “স্বাভাবিক সুস্থ ” বলে প্রকৃতিতে কিছু নেই। কাউকে আপাত দৃষ্টিতে সবকিছু ঠিক মনে হলেও হয়তো দেখা যাবে তার বুদ্ধিতে ঘাটতি রয়েছে, কারও দেখা যাবে লিংগ প্রত্যংগ অথবা সেক্স করায় সমস্যা, কারো ভিতরে ভয়াবহ কোনো জেনেটিক সমস্যা লুকিয়ে আছে। সুতরাং একটি বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে কাউকে অসুস্থ অস্বাভাবিক বলতে গেলে পুরো মানবজাতি (এবং জীবজাতিকেই) অসুস্থের তালিকায় ফেলতে হবে।
কেবল মাত্র ধর্ম এবং মৌলবাদী কিছু মতই মানবজাতির সুস্থ স্বাভাবিক একটি অবস্থা নিয়ে চিন্তা ভারাক্রান্ত। প্রকৃতি সবসময়েই সকল প্রজাতির মধ্য সবরকমের ভ্যারিয়েশন করে আসছে। এই ভ্যারিয়েশনই বিবর্তনের চালিকা শক্তি। কোনো একটি প্রজাতির সবাই একরকম হলে, সেই প্রজতি কোন এক সময়ে সকলে মিলেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। যারা সমকামী, তাদের সমাজে বিবর্তনঘটিত কোনো উচ্চমূল্য নিশ্চই আছে। নইলে লক্ষ কোটি বছর ধরে বিবর্তনে এই বৈশিষ্ট্যে অনেক আগেই হারিয়ে যেতো। এছাড়া মানুষ ছাড়া অন্য অনেক প্রানীর মধ্যেই সমকামিতা রয়েছে। সুতরাং এটা যে কেবল মানুষের বিকৃত কামের ফসল, সেটা নিশ্চই বলবেন না।
মানুষের ভ্যারিয়েশনকে স্বাগত জানাতে শিখুন। নানারকমের মানুষই মানবজাতির সৌন্দর্য।
@সফিক,
ভাই আপনার কথা মত চিন্তা করলে তো পৃথিবী থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞান কে গুড বাই বলতে হয়।
@আম্মানসুরা,
এর মাঝে চিকিতসা বিজ্ঞানকে গুডবাই জানানোর কি হল?
পৃথিবীতে স্বাভাবিক এবং অস্বাভাবিক দুয়ের সংজ্ঞা আপেক্ষিক। মানুষ বহু ক্ষেত্রেই স্বকীয় বৈশিষ্ট্য বা বিশিষ্টতা নিয়ে জন্মাতে পারে। জন্মগতভাবে বহু লোকে অস্বাভাবিক হয়ে জন্ম নেয়। কেউ জন্ম নেয় বিকট বিকৃত চেহারা নিয়ে, কিন্তু অন্য আর দশটা মানুষের সাথে তাদের হয়ত তফাত নেই। এদের কি অসূস্থ বলে হেয় করা উচিত? আমাদের দেখতে কদাকার লাগে তাই তাদের পাবলিক প্লেসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেব?
উভকামি মানুষরা কি সকলে সূস্থ? সূস্থ অসূস্থ চিন্তা করলে তো একজন ধর্ষককে আমি একজন সমকামির চাইতে বেশী অসূস্থ মনে করি। এই দুই দলের কাকে নিরাপত্তার স্বার্থে জেলে ভরা দরকার?
আমাদের দেশের মত সমাজে এখনো নামের সাথে বোবা, লুলা, কানা, আন্ধা, ঠসা এসব উপাধী লাগিয়ে লোককে পরিচিত করানো হয়। কালো মেয়ের বিয়ের বাজার এখনো শিক্ষিত সমাজেও কম। এসব কতটা সূস্থ? এসবের মূল কারনই কিন্তু ভ্যারিয়েশনকে সম্মান না করতে পারার মানসিকতা। চিকিতসা বিজ্ঞান তুলে দেবার কথা নয়। আর সমকামিতা এক সময় চিকিতসা যোগ্য রোগ মনে করা হলেও সে ভুল ধারনা বহু আগেই চলে গেছে, এটা কোন শারীরিক এমনকি মানসিক ব্যাধি নয়।
@আদিল মাহমুদ,
আপনি কি সফিক সাহেবের কমেন্ট টা পরেছেন। মনে হয় না।
তবুও বলছি, বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞান জেনেটিক সমস্যা নিরসনে গবেষণা করছে ও কিছু কিছু বিষয়ে সফল ও হচ্ছে। হয়ত কোন একসময় বিজ্ঞানীরা যেকোন সমস্যার জন্য দায়ী জিনকে রিপ্লেস করতে পারবে। এখন যদি রোগীকে সুস্থ ভাবতে হয় তাহলে তো রোগ সারানোর প্রয়োজন পড়েনা। অসুস্থ কে সমবেদনা জানাতে আপত্তি নেই কিন্তু সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবতে আপত্তি আছে।
@আম্মানসুরা,
সফিকের কমেন্ট আমি পড়েই বলেছিলাম।
আপনি মনে হয় সমকামিতা অবশ্যই ‘অসূস্থতা’ এই ধারনা থেকে বার হতে পারছেন না। অদূর ভবিষ্যতে কি হবে না হবে খোদা মালুম। বর্তমান দিনে সমকামিতাকে অসূস্থতা বলে বিবেচনা করা হয় না। সমকামিতা জেনেটিক ব্যাপার কিনা এ নিয়ে বিস্তর গবেষনা হয়েছে, এখনো তেমন কিছু পাওয়া গিয়েছে বলে শুনিনি। অসূস্থতা এবং ভ্যারিয়েশন আপনি এক করে দেখতে চাচ্ছেন।
অদূর ভবিষ্যতে এক্কেবারে নিখূত মানব বলতে যা বোঝায় তেমন কিছু হয়ত বিজ্ঞানীরা বানিয়েও ফেলতে পারেন, তবে সেটা মনে হয় খুব প্রীতিকর কিছু হবে না, সব মানুষই এক রকম হয়ে যাবে। প্রকৃতি বলা হোক আর আল্লাহ বলা হোক, সৃষ্টির মধ্যে ভ্যারিয়েশন আসবেই। স্থান কাল পাত্রের বিবেচনায় সেসবের কিছুও কারো কারো কাছে অসূস্থতা/বিকৃতি মনে হবে।
@আদিল মাহমুদ,
প্রানি বিদ্যার ছাত্রী হিসাবে আমি যেটুকু জানি টা হল, ভ্যারিয়েশন হয় প্রাকৃতিক মিউটেশনের মাধ্যমে। যা বংশগত ভাবে পরবর্তী প্রজন্মে বাহিত হয়। সমকামিতা কি মিউটেশনের ফল?
@আম্মানসুরা,
আপনি প্রানীবিদ্যার ছাত্রী হিসেবে আরো ভাল জানবেন। সমকামিতা ঠিক কিভাবে হয় তা এখনো সঠিক ভাবে নির্নয় করা যায়নি……
আপনার জানামতে কি সমকামিরা ইচ্ছে করেই সমকামি হয়? মানে চারিত্রিক দোষের মত কোন ব্যাপার?
@আম্মানসুরা,
আপনার জন্যে ফরজ হয়ে গেছে এই লেখাটি পড়া–
@আম্মানসুরা, তেনা পেচানি ভালো লাগলো না 🙁
আমি একটু ঘুড়িয়ে যেটা বলতে চাইলাম সেটা হল বাইবেল কোরআন যদি আল্লাজি কিংবা ঈশ্বরজি কিংবা এদের দ্বৈত প্রযোজনা হয়ে থাকে তবে এরা বিজ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞ। এরা জানেনা সমকামিতা একটি জীনগত বেতিক্রম। তাই সমকামিতার জন্য কাউকে মৃত্যুদণ্ড (ইসলামী সারিয়া আইন মোতাবেক) বিধান করা মানে নিজের (আল্লাজি কিংবা ঈশ্বরজি কিংবা এদের উভয়) দোষে অন্যকে দোষী করা!!!
আপনি যদি বলেন মানুষের জীন ঈশ্বরের কিংবা আল্লার কোড করা তবে মেনে নিন এনারা মূর্খ!!!
কারন এরা মনে করেছে (বাইবেল কোরআন মোতাবেক) সমকামিতা একটি বিকৃতমনের বিকৃতকাম!!!
আবার এই জীনগত সমকামিতা যা কিনা তথাকথিত আল্লাজির কিংবা ঈশ্বরজির কোড করা সেই অপরাধে সদোম ও গোমরা (বাইবেলের কাহিনী মোতাবেক) এবং আদ জাতিকে এবং পম্পেই নগরীকে (কোরআনের কাহিনী মোতাবেক) সমূলে ধ্বংস করে দিলেন 😕
কি আজব কথা :-s নিজেই কোড করে নিজেই ধ্বংস :-O নিজে ভুল-ভাল বানাইয়া সেই দোষে সৃষ্ট মানুষ হত্যা :-O আসলেই আজব :-Y
@এম এস নিলয়,
আজব ব্যাপার আমি ধর্মের বিষয়ে কি বলেছি? আমি তো এখানে ধর্ম কে টেনে আনি নাই। আপনি কেন আনছেন তাও বুঝলাম না 😕
@এম এস নিলয়,
কেও জন্মগত ভাবে সমকামী হয় না-এই ধরনের কিছু ভুল্ভাল গবেষনা গত রেজাল্ট গত এক দশকে চালু ছিল, যা বাতিল। কোন সমকামী জেনেটিক মার্কার নেই। সমকামিতা স্বাভাবিক-কিন্ত তার সঠিক কারন এখনো অজ্ঞাত- সদ্য গবেষনার ইঙ্গিত বরং সামাজিক, আপব্রিঙ্গিং কারনগুলির দিকে।
সমকামীতা নিয়ে যত ভুলভাল গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে, তা বিজ্ঞানের জগতের সব থেকে বড় লজ্জাজনক অধ্যায়। রাজনৈতিক দর্শন থেকে বিজ্ঞান তৈরী হয় না।
@বিপ্লব পাল,
মসজিদের হুজুরদের মত ফতোয়া দিবেন না দাদা, একটু কাগজ-পত্র দেখান। সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী সমাজ বা পরিবেশে জন্ম নেয়া ও বড় হওয়া মানুষের মাঝেও সমাকামী আছে না? সৌদি, ইরান, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ টু ইংল্যান্ড, টু আমেরিকা টু অল অভার দ্যা ওয়ার্ল্ড? আমি নিজেই দু-একটা উদাহরণ দেখেছি ইংল্যান্ডে আমার কর্মস্থানে ও বাংলাদেশে মাদ্রাসা জীবনে। তারপর প্রাণী জগতের উদাহরণগুলোর ব্যাখ্যা কী দিবেন?
@আকাশ মালিক,
সামাজিক কারন মানে ইংল্যান্ডের বনাম বাংলাদেশের সমাজ না। একটা বড় কারন হিসাবে ইদানিং দেখানো হয় বাবা মা যদি ছেলে মেয়েকে ছোটবেলায় যথেষ্ট সময় না দেয় বা নেগলেক্ট করে। এই নিয়ে নেচারে একটি যুগান্তকারী গবেষণা বেড়িয়েছিল । আবার বর্তমানে গত দুবছরে শুনছি এপিজেনেটিক্সকেই মূল কারন হিসাবে, গবেষকরা দেখছেন। মোদ্দা কথা সমকামিতার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণাগুলি কনক্লুসিভ না।
@বিপ্লব পাল, আমার মনেহয় কারন যতটা না অজ্ঞাত তার থেকে বেশী হাইড কৃত; যেমন লুকিয়ে রাখা হয় তুরিনের জাদুঘরের যীশুর কাফনের কার্বন ১৪ টেস্টের রেজাল্ট; কারন এই রেজাল্ট সবাই যেনে গেলে ধর্মের দোকান বন্ধ হয়ে যাবে। সম্পর্কিত বই Jesus Lived in India: His Unknown Life Before and After the Crucifixion By Holger Kersten ।
একমত।
এখনো সমকামিতা হয় পাপ কাজ নয়তো ট্যাঁবু হিসেবে গণ্য। কিন্তু গভীরে কেউ ঢুকতে চায়না; তাই গবেষণাও হয়না; হলেও তা আর ১০ তা বিজ্ঞান প্রবন্ধের মতো প্রকাশিত হয়না। কারন এই রেজাল্টের সাথে ঈশ্বর আল্লার মান ইজ্জত জড়িত।
আর সাধারণ জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি হল “আল্লা ঈশ্বর কইসে এইটা পাপ কাজ ব্যাস শেষ; আর কিছু জানার বোঝার কোন দরকার নাই”।
কাহানী হার ঘার কি।
@এম এস নিলয়,
এই দলে অসাধারণ মানুষও প্রচুর আছেন। এইখানে দেখেন অবস্থা-
@আকাশ মালিক, :-O
এতো “লুল” রাখবো কোথায়!!!
ওখানে কমেন্ট করবোনা; কারন পরিবেশ পছন্দ হোলনা। আর বোবা-অন্ধ-বধিরদের জন্য সুসমাচারের প্রয়োজন নেই। রয়েছে সুস্থ সবল আর কর্মক্ষন (পড়ুন চিন্তাক্ষম) মস্তিষ্কের মানুষের জন্য। যারা খিচ কিংবা মটকা মেরে মূর্খ থাকতে চায় তাদের বেহেশত থেকে নতুন নবী কিংবা অবতার ডাউনলোড করলেও বোঝানো সম্ভব নয় :-X
ওদের মূর্খ থাকতে দেয়াই উত্তম; থাকুক তারা হুর-পরীর চিন্তায় বিভোর আর গমন করুক তাদের শস্যখেতে (কিংবা গমন করাক তাদের সাথীকে) যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে 😉
ওদের কথায় মজা নিন আর পান করুন :))
চিয়ার্স (D)
@এম এস নিলয়,
বাঙালী এত আবেগ প্রবণ, আবেগের ভাবাবেগে, কিছু লেখার আগে সব কিছু তথ্য যাচাই করে লেখে না। ভাবাবেগে প্রগতিশীল হওয়া যায়, বিজ্ঞানমনস্ক মন তৈরী হয় না। মুক্তমনাতে প্রগতিশীলতার অভাব নেই-কিন্ত প্রকৃত বিজ্ঞানমনস্ক মন এখনো কম।
গে এবং লেসবিয়ানের কারন আবিস্কারের জন্য গত দুই দশকে অনেক গবেষণা হয়েছে, কিন্ত এই বিষয়টা এত কঠিন, এখনো কোন কনক্লুসিভ আবিস্কার কেওই করতে পারে নি। কখনো জেনেটিক মার্কার, কখনো এপিজেনেটিক্স, কখনো স্যোশাল কগনিশন-নানান ভাবে এর কারন আবিস্কারের চেষ্টা হয়েছে-হাজার হাজার গবেষণাপত্র লেখা হয়েছে এবং বছর ঘুরতেই সেই সব গবেষনাপত্র ভুল ও প্রমানিত হয়েছে। এর মধ্যে কোন কনস্পিরেসি থিওরী নেই। সাবজেক্টটাই বড় জটিল।
মুক্তমনার জন্য একটি উপযুক্ত লেখা । লেখককে ধন্যবাদ ।
সমকামিতা একটি নব্য বাংলা শব্দ যা ইংলিশ Homosexuality শব্দটি প্রকাশ করছে, শব্দটি তৈরির দায়িত্ব আমার হলে আমি একে ‘সমলিঙ্গপ্রেম` শব্দ দ্বারা প্রতিস্হাপিত করতাম । আসলে Homosexuality শব্দটি অর্থের সম্পূর্ণতা পায়না বলে আমার ধারণা । কারণ Sexual Orientation স্রেফ Heterosexuality (বিপরীতকামিতা), Homosexuality (সমকামিতা) ও Bisexuality (উভকামিতা) দ্বারা সীমাবদ্ধ নয় ।
রক্ষণশীল সমাজের একটি ভ্রান্ত সামাজিক প্রচারণা যৌনতার বিষয়ে সম্পূর্ণ ভুল দৃষ্টিভঙ্গী সৃষ্টির জন্য দায়ী যা থেকে পশ্চিমা সমাজ ক্রমশ: বের হয়ে এসেছে । এই ভ্রান্ত ধারণাটি হচ্ছে – ‘যৌনতার প্রধান বিষয় বংশবিস্তার` । একটু চিন্তা করলেই যে কেউ অনুভব করবেন, যৌনতা স্রেফ প্রজননের বিষয় নয় । যৌনতায় সেক্সুয়াল রেস্পন্স সাইক্ল্ (Sexual Response Cycle) এবং অর্গ্যাজম (Orgasm) গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যার সাথে প্রাণীর মনোদৈহিক-স্নায়বিক বিষয়গুলো জড়িত । স্নায়ু ও মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা, মানসিক উদ্দীপনা, হরমোনের সঠিক ক্ষরণ এবং অবসাদ-টেন্শন্-ডিপ্রেশন্-মুক্তি এসব ক্ষেত্রে যৌনতার ভূমিকা রয়েছে ।
Sexual Orientation বিষয়টি বিতর্কিত কয়েকটি কারণে ।
(১) স্বমেহন (Self-abuse) : Paedophilia বা Pedophilia, Necrophilia ইত্যাদিকে abnormal behaviour হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় এবং নি:সন্দেহে এগুলো তাই কিন্তু Masturbation-কে বহু ব্যক্তি স্বাভাবিক হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছেন দুটো কারণে, এর কোন শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকা এবং স্বাভাবিক মানসিকতার মানুষ র্কতৃক এর আচরিত হওয়া । নি:সন্দেহে বাল্য ও সদ্যকৈশোর বয়সীদের ক্ষেত্রে একে স্বাভাবিক বলা চলে । কিন্তু অ্যাডাল্ট এইজ প্রাপ্তদের দীর্ঘকালীন কল্পনাকামী আচরণে অভ্যস্ততার পরবর্তী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বহুলভাবে আলোচিত হচ্ছে না । পরবর্তী সময়ে স্বাভাবিক যৌনতায় সাড়া না দেয়া, পুরুষত্বহানিতা, মানসিক বৈকল্য, সামাজিক মেলামেশার ক্ষমতা হারানো – বহু মানুষের ক্ষেত্রে দীর্ঘকালীন স্বমেহনে অভ্যস্ততার এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো দেখা যায় । বিখ্যাত সিরিয়াল কিলার Jeffrey Dahmer-এর ক্ষেত্রে সম্ভবত নি:সঙ্গ কল্পনাকামী স্বমেহন অভ্যাস কল্পনার গরু গাছে উঠে সত্যি সত্যি তাকে সাকার দিয়েছে । তিনি কিশোর ছেলেদের (কিছু ঘটনায় প্রাপ্ত বয়সী তরুণদেরও) হত্যা করে তাঁদের লাশের সাথে সঙ্গম করে, তাঁদের মাংস খেয়ে, করোটিগুলো ধুয়ে-মুছে রং করে এবং পুরুষাঙ্গগুলোকে সংরক্ষণ করে অবসর সময়ে এই করোটিগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে মাস্টারবেশন করতেন, আবার সমস্ত বিষয়গুলোর ছবি তুলে কিংবা ভিডিও করে রাখতেন অবসর বিনোদনের প্রয়োজনে । তাঁর কথা উল্লেখের কারণ হচ্ছে আদালতে তাঁকে সুস্পষ্টভাবে ‘উন্মাদ` প্রমাণ করা যায়নি । তাঁর উন্নত বুদ্ধিমত্তা অবশ্যই এক্ষেত্রে বিবেচনায় প্রভাব ফেলেছে । ১৯৫০-এর দশকেও নি:সন্দেহে তাঁকে আদালত ‘উন্মাদ` আখ্যা দিয়ে সর্বোচ্চ/সম্ভাব্য সর্বোচ্চ শাস্তি থেকে রেহাই দিতো, কিন্তু ১৯৯০-এর দশকে (Jeffrey Dahmer-এর বিচারকাল) মনোবিজ্ঞান ও সাইকিয়াট্রির দৃষ্টিভঙ্গী আরও উন্নত । আচরণ ও রুচিগত কারণে উন্মাদ শব্দটি এখন খুব সহজে যত্রতত্র ব্যবহার সম্ভব নয় ।
কল্পনাকামিতার মতো Doll ব্যবহারও একটি মাস্টারবেশন পদ্ধতি । Necrophilia বা শবকামিতার সাথে মনো:সামিক্ষণিকভাবে এটি পুরোপুরি এক ।
(২) সমকামী কারা ? : এই প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । ১১ পার হয়ে ১২-তে পা দিয়ে আমি পূর্ণ পুরুষত্ব অর্জন করি (যদিও অন্যান্য ছেলেদের মতোই ইরেক্শন বিষয়টি আরও ছোটবেলা থেকেই ছিলো) । সহপাঠী ছেলেদের সবাই ব্যক্তিভেদে সম্ভবত: ১০-১৪, বেশিরভাগই ১২-১৩র ভেতর পুরুষ হয়েছেন (দৈহিক উচ্চতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছার আগেই) । এসময় এমন দুটো বিষয় সম্পর্কে ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয় যেগুলো সম্পর্কে আগে ধারণা ছিলো না (পূর্বে ধারণার বিস্তৃতি ছিলো বিপরীতলৈঙ্গিক রহস্যময় অনুভূতিকেন্দ্রিক) । একটি সমকামী আচরণ, অপরটি কৃত্রিম যৌনাভ্যাস (অল্পসময় পরবর্তীতে আরও একটি অভ্যাসের কথা শুনেছি) । [বাকি অংশ কাল লিখছি]
[পূর্ব অংশের পর]
পূর্বে একটি বিষয় আলোচনা করতে ভুলে গিয়েছি । প্রাণী বিবর্তনের ক্ষেত্রে সেসব প্রাণীর টিকে থাকার ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছিলো যারা কম খাদ্য ধ্বংস করে অধিক প্রাণশক্তি অর্জনে সক্ষম হয়েছিলো । এক্ষেত্রে অন্যতম একটি উপায় ছিলো কম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা অধিক প্রাণিবাচক কাজ সমাধান । যেমন, ক. ফুসফুসে বায়ু গ্রহণের জন্য একটি প্রত্যঙ্গ প্রয়োজন । খ. ফুসফুস কর্তৃক নিষ্কাশিত বর্জ্য বায়ু বের হওয়ার একটি প্রত্যঙ্গ প্রয়োজন । গ. মস্তিষ্কের ঘ্রাণানুভূতি অংশের সহায়তার জন্য একটি বহির্প্রত্যঙ্গ প্রয়োজন । আবার ঘ্রাণানুভূতির কাজ একটি নয়, এর বিভিন্ন কাজ হচ্ছে যেমন খাদ্য সঙ্গ্রহ, খাদ্যে অতিরিক্ত তৃপ্তি, গ্রহণীয় ও বর্জনীয় বস্তু নির্বাচন, আনন্দানুভূতি, যৌন নির্বাচন ও যৌন আকর্ষণ, শিকার নির্ণয়, শত্রু নির্ণয়, শত্রু কিংবা শিকারের অবস্থান নির্ণয়, পরিবেশ নির্বাচন, এমনকি সঙ্গমকালীন যৌন অনুভূতি বৃদ্ধি ইত্যাদি । এই সমস্ত কাজের ক্ষেত্রে ‘নাক` প্রত্যঙ্গটি প্রধান ভূমিকা রাখছে । আবার কোন প্রত্যঙ্গ অকার্যকর হয়ে গেলে অন্য প্রত্যঙ্গের কাজের সাথে সমন্বয় করে এর অভাব মেটানো হচ্ছে । প্রাণীশরীরের এই কার্যাবলির জন্য যদি ভিন্ন ভিন্ন প্রত্যঙ্গ থাকতো তাহলে একই প্রাণশক্তির একটি প্রাণীর খাদ্যে আরও অতিরিক্ত ক্যালরির প্রয়োজন হতো যা প্রকৃতির অন্য সম্পদের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করতো । অনেক প্রাণীর শিং একাধিক কাজ করছে, ক. আত্মরক্ষা, খ. একই স্পেসিসের দুটো পুরুষ প্রাণীর ভেতর খাদ্য-বাসস্থান-যৌনসঙ্গীর জন্য লড়াই, গ. একই স্পেসিসের বিপরীত লিঙ্গের প্রাণীকে আকৃষ্ট করা । প্রাণী শরীরের প্রয়োজনীয় কিছু অঙ্গ যৌন আকর্ষণের কাজ করছে । মানব নারীর স্তনও তাই । যৌন অঙ্গগুলো ও যৌনকর্মও একই সাথে একাধিক প্রয়োজনীয় কর্ম সম্পাদন করছে । শুধু প্রজননের কারণে যৌনতা নয় বলেই সমকামিতা, স্বমেহন, পশুগামিতা (Bestiality) ইত্যাদি বিভিন্ন প্রাণীতে প্রবর্তিত হয়েছে, অনেক সময়ে স্বাভাবিক যৌনসঙ্গীর অভাবে । কিছুদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় উঠতি বয়েসী পুরুষ হাতীর আক্রমণে অনেকগুলো গণ্ডা মারা যায় যার মূল কারণ ছিলো হাতীগুলো যৌন আক্রমণের উন্মত্ততা । গণ্ডারগুলোর একটি বড় অংশ ছিলো পুরুষ । এক্ষেত্রে নারী হাতীর অনুপস্থিতি ছিলো মূল কার্যকারণ ।
সমকামিতা (Homosexuality), উভকামিতা (Bisexuality), নিষ্কামিতা (Asexuality), স্বমেহন (Self-abuse) ইত্যাদি যৌন অরিয়েণ্টেশনে অভ্যস্ত মানুষের ক্ষেত্রে দুটো ধারা দেখা যায় । ১. জন্মগত বা সহজাত (Natural), 2. অভ্যাস-এক্সিডেণ্টাল-পারিপার্শ্বিকতা ইত্যাদি কারণে প্রাপ্ত (Acquired) । এখানে একটি বিষয় বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ নির্দিষ্ট কোন যৌনমিলন পদ্ধতির দ্বারা সেক্সুয়াল অরিয়েণ্টেশন নির্ধারিত হয় না । পাশ্চাত্যে পুরুষ সমকামীদের অধিকাংশ মিলন হয় ওর্যালি (Orally) ও মিয়ুচুয়াল মাস্টারবেশন (Mutual Masturbation) দ্বারা, অন্যদিকে Anal Sex হেটারোসেক্সুয়ালদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আচরিত যৌনপন্থা Vaginal Sex-এর পর (‘যৌনাসন` বিষয়টিকে বাদ দিয়ে) । সেক্সুয়াল অরিয়েণ্টেশন নির্ধারণের ক্ষেত্রে রুচিবোধ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এটা একটি কারণ কেনো আমি সহজাত সমকামীদের সেক্সুয়াল অরিয়েণ্টেশনকে ‘সমলিঙ্গপ্রেম` বলতে বেশি পছন্দ করি ।
ধর্মীয় রক্ষণশীল আরাব দেশগুলোতে যেমন পর্ণোগ্রাফির চাহিদা পাশ্চাত্যের চেয়ে বেশি (মূল ভোক্তা শ্রেণী স্বমেহনকারীগণ), তেমনি ভারত-উপমহাদেশে অসহজাত সমকামী/উভকামীদের সংখ্যা সর্বাধিক (সহজাত সমকামী/উভকামীদের সংখ্যাও এখানে সর্বাধিক হলেও হতে পারে) । কবছর আগে পাকিস্তানের তত্কালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদে বলেছিলেন পাকিস্তানে বালক ও কিশোর পুরুষ বেশ্যাদের সংখ্যা ২ লক্ষ (অবশ্য এদের একটি বড় ভোক্তা শ্রেণী নারী, পাকিস্তান ও পশ্চিম ভারতে নারীদের পিডোফিলিয়া সামাজিকভাবে সিদ্ধ) । অবশ্য এই বিষয়টি সমকামিতা বা পিডোফিলিয়া – এর কোনটাতেই ধরা যাবে না । অ্যাডাল্ট পুরুষদের ক্ষেত্রে একে বলা চলে Paederasty বা Pederasty (বীর্য উত্পাদনে সক্ষম কিন্তু শারীরিক ও মানসিকভাবে অ্যাডাল্ট নয় এমন বালক ও সদ্যকিশোরদের প্রতি অ্যাডাল্ট পুরুষের যৌন আকর্ষণ), অ্যাডাল্ট নারীদের ক্ষেত্রে একে বলা চলে Ephebophilia (বীর্য উত্পাদনে সক্ষম কিন্তু শারীরিক ও মানসিকভাবে অ্যাডাল্ট নয় এমন বালক ও সদ্যকিশোরদের প্রতি অ্যাডাল্ট নারীর যৌন আকর্ষণ), কিশোর পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি সমকামিতা, কিশোরী নারীদের ক্ষেত্রে এটি হবে হেটারোসেক্সুয়ালিটি । প্রাণীজগতে মানুষ ভিন্ন অন্যান্য প্রাণীদের ভেতর সমকামিতা, স্বমেহন, নেক্রোফিলিয়া, হোমোসেক্সুয়াল নেক্রোফিলিয়া ইত্যাদি কিছু স্পেসিসে দেখা যায়, বিশেষত: বন্দী অথবা বিপরীত লিঙ্গের অনুপস্থিতি অবস্থায়, কিন্তু Paedophilia বা Pedophilia একদমই দেখা যায় না বলেই আমার ধারণা । Bonobo (শিম্পাঞ্জিদের একটি স্পেসিস, Pan Paniscus) এবং আরও অল্প কিছু প্রাণীর (বিশেষত: গৃহপালিত) ক্ষেত্রে Paedophilia বা Pedophilia-র প্রচলনের কথা যা বলা হয় আমার ধারণা তা Paraphilia (সদ্যবয়ো:সন্ধিপ্রাপ্তদের সাথে অ্যাডাল্টদের যৌনতা) ।
উপমহাদেশে ক্লীবলিঙ্গ হিঁজড়াদের সবচেয়ে বেশি দেখা যায় । এদের বেশিরভাগেরই রুটি-রুজির অন্যতম প্রধান উত্স্য বেশ্যাবৃত্তি । মানুষের নারীদের যৌনতা মেনোপজের পর বৃদ্ধি পায় বলে একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, যা পুরুষদের বিপরীত । MSN Health ও Harvard Medical School-এর Endocrinology বিষয়ক কিছু প্রবন্ধে এর উল্লেখ রয়েছে । [বাকি অংশ আগামীকাল : ধর্মীয় দৃষ্টিতে সমকামিতা]
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/uploads/2013/06/Bonobo.jpg[/img]
দু:খিত, বাকি অংশ কাল লিখবো আশা করি । যাঁরা মন্তব্য ও প্রশ্নোত্তর চাচ্ছেন, একটু ধৈর্য ধরুন । আমার কন্সেণ্ট্রেশনে বাধা পড়তে পারে, এধরণের আলোচনা কিংবা লেখা হঠাত্ সচরাচর পাবেন না ।
এ বিষয়ে সম্পূর্ণ একটি লেখা তৈরি করছি যা এই মাসেই পোস্ট করছি ।
ওপরে মাদি বোনোবোর ছবিটি ঠিক আছে তবে Ephebophilia-এর বিষয়টি ঠিক হবে না । তাই বোনোবোর নতুন আরেকটি ছবি দিলাম । সে সাথে পুরুষ সদস্য-বিহীন একটি প্রাকৃতিক সমকামী (লেসবিয়ান) প্রাণীর ছবি দিলাম ।
বাকি বিষয়ের আলোচনা পরবর্তী পোস্টে । এখানে আলোচনা করার মতো যথেষ্ট তথ্য ও যুক্তি দেইনি ।
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/uploads/2013/06/Bonobo1.jpg[/img]
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/uploads/2013/06/New-Mexico-Whiptail-Mating.jpg[/img]
১.সমকামিতা বিষয়টি জৈবিক উৎপাদনের নিরিখে প্রকৃতি বিরুদ্ধ।
২. মানুষের সম্পর্ক যেহেতু শুধুই জৈবিক উৎপাদনের ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করেনা- মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপারও গুরুত্বপূর্ণ এজন্য মনস্তাত্ত্বিক সম্পর্ক স্থাপনে সমকামিতা দেখা যায়।
৩. সমকামিতা পৃথিবীর অনেক সমাজে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণযোগ্য, অনেক সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। যে সমাজে সমকামিতা গ্রহণযোগ্য সে সমাজে হয়ত বহুবিবাহ দণ্ডনীয় অপরাধ। আবার যে সমাজে বহুবিবাহ গ্রহণযোগ্য সেখানে হয়ত সহোদরাদের একত্রে বিয়ে করা গ্রহণযোগ্য নয়। অনেক সমাজে এক মহিলা- বহু পুরুষকে একসাথে বিবাহ করতে পারে। অনেকে আবার দলীয় ভাবে সম্পর্ক গড়ে তোলে- যেখানে ৪-৫ জন নারী-পুরুষ পরস্পরে সম্পর্ক গড়ে তোলে । অনেক সমাজে (সমসাময়িক কালে বিশেষত জনসংখ্যায় ক্ষুদ্র নৃ-জাতি গোষ্ঠীদের মধ্য) incest খুবই গ্রহণযোগ্য- যদিও প্রাচীনকালে অনেক রাজপরিবারে এটা একটা রেওয়াজ ছিল। কিছু কিছু মানুষ আবার নিজের প্রজাতি নিয়েও সন্তুষ্ট নয়- তারা আন্ত-প্রজাতি সম্পর্ক গড়ে তোলে!
এভাবে দেখলে মানব সমাজ খুবই chaotic. সমাজবিজ্ঞানী কিংবা নৃবিজ্ঞানীগণ এজন্য মানব সমাজকে কখনো সুশৃঙ্খল ভাবে compartmentalize করতে পারেননি।
৪. পৃথিবীর অনেক সমাজের মতই বাংলাদেশের সমাজেও অনেক কিছু গ্রহণযোগ্য আবার অনেক কিছু গ্রহণযোগ্য নয়।
ব্লগারদের গ্রেফতারে মুক্তমনা মনে হচ্ছে ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। কারণ, অনেক দিন থেকেই ধর্ম বিশেষ করে ইসলাম নিয়ে কেউ লিখছে না। এতে মুক্তমনা বিরোধীরা বেশ মজা পাচ্ছে।
@হৃদয়াকাশ,
থাক ভাই ঠান্ডা থাক, গরমের দরকার নাই। এই লেখাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয় নিয়ে লেখা। অপ্রাসঙ্গিক কিছু না বলাই উত্তম। আপনি নিজে লিখুন না, ইসলাম ছাড়াও তো অনেক কিছু লেখার আছে।
প্রচণ্ডরকম ভাবে দ্বিমত পোষণ করছি। কারন প্রজননের প্রধান বিষয় হল বংশবিস্তার যা সমকামিতা পূর্ণ করতে পারেনা। সমকামিতা প্রাকৃতিক নয়, ইহা প্রকৃতির বিরুদ্ধাচারন। আমার বর্ণ নির্ধারণে আমি অক্ষম কিন্তু আমার চিন্তা ভাবনা, খাদ্যাভ্যাস, আচরণ নির্ধারণে আমার সক্ষমতা আছে। যৌন প্রবৃত্তি ডিএনএ নির্ভর হলে খাদ্য প্রবৃত্তিও ডিএনএ নির্ভর হওয়া উচিত কিন্তু তাই কি?
সমকামিতা যে বিকৃত মানসিকতা তার প্রমান জেলখানাগুলো। বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গীর অভাবেই এসব জায়গায় সমকামিতা বেশী দেখা যায়।
তবে সমকামীদের উপর নির্যাতন করা উচিত নয়, এক্ষেত্রে একমত। তাদের কাওন্সেলিং এর মাধ্যমে শোধরানো যেতে পারে।
@আম্মানসুরা,
প্র-চ-ণ্ড রকম দ্বিমত পোষণ করলেন, বেশ!
এই বইটি পড়ে ফেলেন কষ্ট করে
সমকামিতা: একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান
@আম্মানসুরা,
এটি পুরোপুরি ভ্রান্ত ধারণা । নিচে আলাদাভাবে মন্তব্য পোস্ট করছি, দেখুন ।
@আম্মানসুরা, আপনার জন্য “সমকামিতা : একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান” বইটা পড়া ফরজ।
দাম তো বেশী না; তবে ভুল ধারনা নিয়ে থাকবেন কেন ???
পড়ে ফেলেন ১ শোয়াতেই 🙂
শুভ কামনা রইলো :))
@এম এস নিলয়,
বই টা অনেক আগেই পরেছিলাম। আমার কাছে অনেক যুক্তিই অগ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা সামনে, নতুবা আমার দৃষ্টিতে ভুল গুলো নিয়ে লিখতাম। তবে পরীক্ষার পর লিখার ইচ্ছা আছে।
@আম্মানসুরা,
বংশ বিস্তার করতে চায়না এমন বেশ কয়েক বিবাহিত যুগল নিজের চোখেই তো দেখলাম। মানুষের দেহে ও মনে যৌনানুভুতি, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ, প্রেম, ভালবাসা এ সবই বংশবিস্তারের কথা চিন্তা করে হয়, আমি মনে করি এ ধারণা সঠিক নয়।
একটু উদাহরণ, তথ্য-সুত্র দিলে ভাল হতো।
আমার মনে হয় আপনি সমকামিতা জিনিসটা কী সেটাই বুঝতে পারেন নাই।
কাউন্সিলিং করে আপনাকে কেউ সমকামী বানাতে পারবে? এই প্রশ্নের মাঝেই লুকায়ীত আছে আপনার অনেক প্রশ্নের সমাধান। মুক্তমনায় সমকামিতা নিয়ে প্রচুর লেখা আছে, সেগুলো পড়ুন, বুঝুন তারপর আপনার মতামত দিলে আলোচনা করতে সুবিধে হয়।
@আকাশ মালিক,
প্রকৃতি কেন যৌন প্রবৃত্তি জীবের মাঝে সৃষ্টি করেছে? নিঃসন্তান দম্পতিকে জিজ্ঞেস করুন তাদের দাম্পত্য জীবন সম্বন্ধে, আশা করি কিছুটা হলেও বুঝতে পারবেন।খাদ্য গ্রহণের মুল উদ্দেশ্য পুষ্টি ও শক্তি লাভ, কিন্তু স্বাদের বিষয়টাও উপস্থিত। এখন কেউ যদি শুধু স্বাদের জন্য খায় যেখানে পুষ্টি ও শক্তি অনুপস্থিত তবে নিশ্চিত কোন সুস্থ ব্যক্তি তা সমর্থন করবে না।
আপনি এর বড় উদাহরণ। আগে আস্তিক ছিলেন , এখন নাস্তিক হয়েছেন। চিন্তা দিয়েই তো এই পরিবর্তন।মুক্তমনার বেশীরভাগ লোকই আগে আস্তিক ছিল এবং তখন জীবন যাপন ও বর্তমান থেকে কিছুটা ভিন্ন ছিল। এই পরিবর্তন কি জেনেটিক ভাবে নাকি মানসিক ভাবে অর্জিত? আশা করি এই প্রশ্নের উত্তরেই আপনি আপনার উত্তর পেয়ে যাবেন।
আপনার মত করে বুঝি নাই তা তো বুঝতেই পারছেন। আমার চিন্তা দ্বারা বুঝেছি। আমার তথ্যটা কি ভুল ছিল? জেলখানাতে কি এই বিষয়টা বেশী নয়?
একটি সুস্থ মানুষকে কি ভুল চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত করা যায় না? মাদকাসক্তদের কি নিরাময় করা যায় না? আবার ধর্ম প্রেমের কথা বলে সধারন ছাত্রদের কি জিহাদি বানানো হয় না? একজন সরল মনের সাধারণ ছাত্র বাবা-মার স্বপ্ন পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় , সেই ছাত্র কিভাবে নিজের জীবন তুচ্ছ করে জিহাদের নামে ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠে পবিত্র মনে। পবিত্রতার নামে এই অপিবত্র বিষয় ছাত্রের মাথায় কিভাবে ঢুকানো হয়?
আমিও আপনার মত করে বলব-এই প্রশ্নের মাঝেই লুকায়ীত আছে আপনার প্রশ্নের সমাধান।
গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষ হয়ে আসছে। ক্যাম্পাস খুললেই পরীক্ষা, তাই সব পড়তে পারব না। যতটুকু পারি পড়ব।
সমকামিতা বা সমকাম নিয়ে মন্তব্য না করে একটি বাস্তবিক চিন্তায় আমরা ফিরে আসলে ভাল হয়।
যারা অতিকামে অভ্যস্ত, বিপরীতলিঙ্গের ব্যক্তিদের সাথে মেলামেশায় অনভ্যস্ত তাদের মাঝে এরকম আচরণ বেশি দেখা যায়
@আম্মানসুরা,
আমি আপনার সঙ্গে একশ ভাগ এক মত । আমি মনে করি সমকামিতা সম্পূর্ণ ভাবে বিকৃত মানসিকতার ফল । এখানে কোন আপস করার কিছু নেই । যা স্বাভাবিক নয় তা গ্রহণ করা যায় না । সমকামিদের মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন ।
@আম্মানসুরা,
জেলখানার যেই কথাটি আপনি বললেন আমার মতে তাদেরকে রুপান্তরকামি বলে, রুপান্তরকামিরা আবার পূর্বের অবস্থায় আসতে পারে বলে আমি জানি। কিন্তু সমকামিরা জন্মগতভাবে সমকামি হয়। তাই ইচ্ছে হলেই পরিবর্তিত হতে পারেনা বলা আমার জানা আছে। তাই সমকামি আর রুপান্তরকামিকে মিশ্রিত করবেননা।
@আম্মানসুরা, শুধূ বংশবৃদ্ধির জন্যই মানুষ যৌন সংঘম করে না পিতা মাতার অনাকাক্ষিত অনেক সন্তান জন্ম গ্রহন করে এবং একজন জীবনে যতবার সংঘম তত সন্তানও কিন্তু হয় না. মানুষের যৌন জীবন খুব বিচিএ কেও সমকামিতার মধ্যমে যদি চুরান্ত যৌন আনন্দ পায় দুষের কিছু নয় তাকে ঘৃনা করার অধিকার কেও রাখে না. রাষ্টও না সমাজও না.