১.
অনেকদিন আগের ঘটনা। মুক্তমনায় আফরোজা আলম একটা লেখা লিখেছিলেন। নোবেল বিজয়ী ডঃ ইউনূস ( নোবেল পুরষ্কার কি ছিনতাই সম্ভব?), এই নামে। এই লেখায় আদিল মাহমুদ একটা মন্তব্য করেছিলেন। সেই মন্তব্যের অংশ বিশেষ ছিল এরকম।
ওনার ক্ষেত্রে আমার কাছে যেটা আজব লাগে তা হচ্ছে যে উনি নোবেল প্রাইজ পাওয়ার পর পরই দেখা গেল হঠাত করেই উনি একজন মূর্তিমান ভিলেনে পরিনত হয়েছেন। এই মানসিকতার কারন কি? নোবেল প্রাইজ না পেলে মনে হয় না এভাবে তার বিরুদ্ধে প্রচারনা হত। এতে অবশ্যই আমার আপত্তি আছে।
এই লেখার নানান মন্তব্য নিয়ে আমি এমনিতেই একটু বিরক্ত ছিলাম। আদিল মাহমুদের এই বক্তব্যের বিপরীতে আমি একটা ঝাঁঝালো মন্তব্য করি। সেটা ছিল এরকম।
আপনি মনে হয় ইয়াজউদ্দীন নামের বিএনপির এক পাপেটের সময়কার দুঃসহ স্মৃতির কথা ভুলে গিয়েছেন। এই লোকের ষড়যন্ত্রে যখন দেশ বিপন্ন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চার উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন ইয়াজুর ষড়োযন্ত্রের প্রতিবাদে। যখন গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছে মানুষ, রাস্তায় রাস্তায় প্রাণ দিচ্ছে, তখন প্রফেসর ইউনুস খোকাবাবুর দেয়া নাগরিক সম্বর্ধনায় যোগ দিচ্ছে। বিদেশে যাবার আগে ইয়াজউদ্দীনকে বলে যাচ্ছে, আপনি যা করছেন ঠিক করছেন, আরো কঠোর হাতে সবকিছু দমন করুন।
এখানেই শেষ নয়, আর্মির ডান্ডা পেটা খেয়ে হঠাৎ করে একদিন ইয়াজউদ্দীন জাতির কাছে মাফটাফ চেয়ে পদত্যাগের পরে যে ছদ্ম সেনাশাসন এসেছিল তখন তিনি রাজনীতিবিদদের দুরাবস্থার সুযোগ নিয়ে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে নেমেছিলেন। রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য কর্মকাণ্ড শুরু করেছিলেন। যখন দেশে রাজনীতি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, তখন তিনি বিনাবাধায় রাজনীতি করে গেছেন সেনা সমর্থনের সুযোগ নিয়ে।
তাঁর এই সব সুবিধাবাদী জনবিরোধী আচরণই তাঁর জনপ্রিয়তাকে ধ্বসে দিয়েছে। তিনি ভিলেনে পরিণত হয়েছেন নোবেল পাওয়ার ঈর্ষা থেকে নয়, বরং তাঁর এই সমস্ত সুবিধাবাদী কর্মকাণ্ড থেকে।
আর নোবেল পাওয়ার পর বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর হাস্যকর ছেলেমানুষী প্রতিক্রিয়াসমূহর কথা আর কী বলবো। আমার নিজেরই লজ্জা লাগতো নোবেল প্রাপ্তি পরবর্তী তাঁর প্রবল উচ্ছ্বাসময় বালসুলভ আচরণসমূহ দেখে। একজন নোবেলপ্রাপ্ত প্রবীন ব্যক্তি এই রকম ছাগলামি আচরণ করে কী করে?
প্রফেসর ইউনুস নোবেল পাবার পরপরই আনন্দে উদ্বেলিত আমি তাৎক্ষণিকভাবে একটা লেখা লিখেছিলাম মুক্তমনায়। আমি আমার কোনো লেখা নিয়েই পরে কখনো অনুতাপ করি না, কিন্তু এই একটা লেখা নিয়ে আমার প্রবল অনুতাপ রয়েছে অদ্যাবধি।
আমার মন্তব্যের পরেই মুক্তমনায় নবাগত একজন আমার ব্যবহৃত ছাগলামি শব্দটাকে হাইলাইট করে আমাকে মুক্তমনার নীতিমালা কোট করে আমি প্রফেসর ইউনুসকে ছাগু ডেকে মুক্তমনার নীতিমালা ভেঙেছি বলে অভিযোগ জানায় একজন। এর প্রতিক্রিয়া হয় তীব্র। অনেকেই তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন এই বলে যে, আমি ইউনুসকে ছাগু বলি নাই, তাঁর আচরণকে ছাগলামি বলেছি। আমি নিজেও বেশ কড়া একটা উত্তর দেই তাঁকে।
ছাগল ছাগলামি করে না, ছাগলামি করে মানুষে। কেউ ছাগলামি আচরণ করছে বলা মানে তাকে ছাগল বলা না। তাহলেতো কেউ গাধামি করছে বললে তাকে আসলে আসল গাধা বলা হয়।
প্রফেসর ইউনুস নিঃসন্দেহে চার পা বিশিষ্ট, থুতনিতে ছাগলা দাঁড়িসমৃদ্ধ ছাগল নন। সেটা তাঁকে বলিও নি আমি। তবে, তিনি নোবেল পাবার অতি আনন্দে ছাগলামি আচরণ যে করেছেন তাতে কোনো সন্দেহই নেই। তাঁর আচরণ শুধু ছাগলামির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, ভীমমরতিতে ধরা বাহত্তুরে বুড়োদের মত পাগলামির সীমাও অতিক্রম করে গিয়েছিল কোনো কোনো সময়ে। ইয়াজুর সময়ের গণবিরোধী আচরণ এবং সেনা সরকারের সময়ে পিছনের দরজা দিয়ে রাজমুকুট মাথায় পরার ধূর্তামি আচরণের কথা আর না হয় নাই বা বললাম।
কাউকে অভিযুক্ত করার আগে অভিযোগ করার মত যথার্থ মেরিট আছে কি না সেটা যাচাই-বাছাই করে নিলেই সবচেয়ে ভাল হয়।
অন্যদের সমালোচনা এবং আমার কঠোর আচরণে বেচারা বেশ ভ্যাবাচ্যাকাই খেয়ে যায়। শেষে আমার সাথে সন্ধি করার জন্য দশটা গোলাপ উপহার দেয় আমাকে। তাঁকে বিশটা গোলা্প ফেরত দিতে বলে। কারণ আমি বলেছিলাম যে, কেউ একটা গোলাপ দিলে, আমি তাঁকে দুটো গোলাপ উপহার দেই আমি। সেই সাথে বিব্রত এবং বিপর্যস্ত সে মুক্তমনা ছেড়ে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়।
এর মধ্যেই আমি জেনে গিয়েছি যে, এই মন্তব্যকারী একজন বাচ্চা ছেলে। আমার তীব্র অনুশোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে ততক্ষণে। সেই অনুশোচনা থেকেই শেষে আমি লিখি।
আপনি এরকম একটা বাচ্চা ছেলে জানলে হয়তো কোনো প্রতিক্রিয়াই জানাতাম না আমি। পুরোপুরি উপেক্ষা করতাম আপনার অভিযোগনামার। প্রফাইল পিকচার দেখে কারো বয়স আন্দাজ করাটা একটু মুশকিলই। এই মুক্তমনাতেইএকজন পূর্ণ বয়ষ্ক ব্যক্তি আছেন, যিনি তাঁর প্রফাইল পিকচারে বালকের ছবি ব্যবহার করেন।
আমার কঠোর পালটা প্রতিক্রিয়া দেখে যদি মুক্তমনা ছেড়ে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেন, তবে খুবই দুঃখ পাবো। লড়াইয়ে আমি দয়ামায়াহীন নির্মম সত্যি, তবে তার চেয়েও বড় সত্যি মনে হয়, ভালবাসাতেও অনুপম আমি।
আমি গুণে গুণে ছেলেটাকে বিশটা বিকশিত গোলাপ উপহার দেই।
আমার মত একজন কঠোর মানুষের কাছ থেকে এতগুলো গোলাপ পাওয়া এই ছেলেটার নাম টেকি সাফি।
২.
টেকি সাফিকে আমি প্রথম দেখি তার নিজেরই পোস্ট করা বইমেলা সংক্রান্ত এই পোস্টে। এক মাথা চুলের রোগা লিকলিকে এক কিশোর। পাখা লাগবে না, এমনিতেই বাতাসে উড়ে যাবে। এতই বাচ্চা একটা ছেলে যে আমাদের মুক্তমনার হাফবুড়োদের সাথে ঠিক একটা মানায় না। শুধু টেকি সাফি একা নয়, মুক্তমনায় বেশ কয়েকজন এরকম বাচ্চা ছেলে আছে। মুক্তমনার মডারেশনে এক সময় থাকার কারণে নানা উপায়ে সেই তথ্যগুলো জানা হয়ে গিয়েছিল আমার। মুক্তমনায় আমি নানা জনের সাথে নানা তর্ক-বিতর্ক, ঝগড়া ফ্যাসাদে জড়িয়েছি। কিন্তু খুব সচেতনভাবে এই বাচ্চাগুলোকে এড়িয়ে গিয়েছি আমি। এরাই আমাদের ভবিষ্যত। আমাদের সামান্য একটু কঠোর আচরণে, সামান্য একটু সমালোচনাতেই এদের বিরাট নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটে যেতে পারে।
৩.
শাহবাগের আন্দোলন নিয়ে বিরাট আশাবাদ ছিল আমার। শুধু আমার নয়, আরো বহু বহু মানুষের ছিল। কিন্তু সেই আন্দোলনই পরে কেমন যেন হয়ে গিয়েছে। স্বতস্ফুর্ত একটা আন্দোলন থেকে যাঁরা নেতা হয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যেই এসে গিয়েছে পুরোনো সব নেতাদের বদ অভ্যাস। টেলিভিশনে চেহারা দেখানো, খবরের কাগজে নাম উঠানোতেই এখন ব্যস্ত তাঁরা। এদিকে আন্দোলনের খরস্রোতা নদী যে গতি হারিয়ে বদ্ধ জলাশয় হয়ে উঠছে, সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই। যে সব চাওয়া পাওয়া নিয়ে তীব্রতর হয়েছিল আন্দোলন, তরুণ তরুণীরা আশায় বুক বেঁধেছিল, সেগুলো এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই স্থবির আন্দোলনে এখন আর আস্থা রাখা দায় হয়ে পড়েছে।
এই স্থবির এবং হতাশার সময়ে হঠাত করেই জ্বলে উঠেছে কয়েকজন তরুণ। এরা সবাই একাত্তরের বীর সেনানী শহীদ রুমি বীর বিক্রমের নামে গড়া শহীদ রুমি স্কোয়াডের সদস্য। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং জামাত শিবিরের নিষিদ্ধের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছে। শুরুতে সাতজন ছিলেন। পরে আরো দুজন যোগ দেয়।
এই দুজনের একজন, একটা রোগাপটকা ছেলে। আমাদের টেকি সাফি।
গত দুই দিন ধরে রাজাকার মুক্ত একটা বাংলাদেশের স্বপ্ন বুকে নিয়ে শাহবাগের রাজপথে না খেয়ে পড়ে আছে এরা।
৪.
টেকি সাফির খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু শফিউল জয়। এই ছেলেটাও মুক্তমনায় লেখে। শুধু লেখে বললে ভুল হবে, এই ছেলেটা যে মানের লেখা লেখে, তা আমি শুধু স্বপ্নেই লিখি। শফিউল জয় সাফির অনশন নিয়ে মহা উদবিগ্ন। সাফি কতখানি সিরিয়াস হতে পারে কোনো বিষয়ে, তা জয়ের চেয়ে আর কেউ ভালো জানে না। জয় লিখেছে,
শাফিকে আমি চিনি। মরার আগ পর্যন্ত তার অনশন ভাঙার কথা না
সাফি জানে কি না জানি না। রুমির ভালো নামও শাফিই ছিল। সেই ছেলেটাও একাত্তরে এরকমই ছিল। মরার আগে মরে নি সে।
৫.
একত্রিশ ঘন্টা অনশনের পর টেকি সাফি ফেসবুকে তার বক্তব্য দিয়েছে।
আমার ফোন নাই, ল্যাপটপ নাই…আপডেট জানাইতে পারি না।
আর জানানোর দরকারও নাই, মানুষ জেনে গেছে তাদের কী করণীয়..আমি মানুষ, আমার শারীরিক সীমাবদ্ধতা আছে। আমি আজকে সুস্থ আছি…অনশন চলতে থাকলে কালকে সুস্থ নাও থাকতে পারি। কিন্তু আমার তো আর ভয় নাই…আমার যতটুকু করার ছিলো, আমি সর্বোচ্চটা করার চেষ্টা করছি, বাকিটা জনতার উপর!
আমি হয়তো পড়ে যাব…সেখানে হাল ধরে দাঁড়িয়ে যাবে আরো দশজন!! আমাদের সাথে যোগ দিচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে…বিভিন্ন পেশার মানুষ।সারাদিন না খেয়ে থেকেও কষ্ট লাগে না…কষ্ট লাগলেও সেটা টের পাই না; কিন্তু তখন খুবই কষ্ট লাগে যখন দেখি যারা পারেন এই আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে তারা নানা ধরণের ভূল-ত্রুটি আবিস্কারে ব্যস্ত। শুধু ভুল-ত্রুটি নয়, অনেক সময় ডাহা মিথ্যা কথা বলারও চেষ্টা দেখা গেছে। ক্যানো ভাই? হয়তো আপনি একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করেন কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য তো একই তাই না? তাই আমাদের কোনো ভুল-ত্রুটি থাকলে আপনি আমাদেরকে জানান…এখন অনশনের ৪৩ ঘন্টা পার হয়ে গেছে, ব্যক্তিগতভাবে আমি এখানে আছি, ৩১ ঘন্টা প্রায়। শুধু খাওয়া নয়, এখানে ঘুমের পরিবেশও নাই…তবু কেউ যখন কথা বলতে আসছেন, আমরা খুব পরিস্কার করে বারবার আমাদের কথাগুলো পরিস্কার করে বলে যাচ্ছি।
আপনি আমাদের সাথে একমত না হইলেও অসুবিধা নাই…কিন্তু যেহেতু আমাদের উদ্দেশ্য এক, তাই প্লিজ আমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্থ কইর্যেন না।
সাফি একদিন আমাকে দশটা গোলাপ দিয়ে জোর করে কুড়িটা গোলাপ আদায় করে নিয়েছিল। আজ ওকে কিছু দিতে হবে না। ওর জন্য লক্ষকোটি গোলাপ হাতে নিয়ে আমি দাঁড়িয়ে আছি। রোগা লিকলিকে এই খেপাটে ছেলেটার জন্য বুকের মধ্যে অসীম ভালবাসা টের পাচ্ছি।
৬.
নেতা হলেই এক সময় সবাই কেমন যেন নেতিয়ে যায়। স্বার্থের বক্র টানেই হয়তো এমনটা ঘটে। এরকম নেতানো নেতা দিয়ে কোনো আন্দোলনই তার গন্তব্যে পৌঁছায় না। শুরুর দিকে এরা আন্দোলনের গতি দিতে চেষ্টা করে, কিন্তু একটা সময় পরেগিয়ে নিজেরাই সেই গতিতে ভীত হয়ে পড়ে। তখন আন্দোলনের পিঠে চড়ে এরা আন্দোলনের গতিতে রাশ পরানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে উঠে। এরকম সময়েই প্রয়োজন পড়ে সাহসী মানুষদের। শহীদ রুমি স্কোয়াডের ছেলেমেয়েগুলো সেই সাহসী মানুষেরই প্রতিচ্ছবি।
একবুক ভালবাসা রইলো শহীদ রুমি স্কোয়াডের সকল সদস্যদের জন্যে।
@ ফরিদ আহমেদ ,ভাই শাহবাগের আন্দোলন একটা চলমান এবং সময়সাপেক্ষ আন্দোলন . এখন অনশনের মাধ্যমে সরকারের উপর
অতিরিক্ত চাপ দেওয়া আর শাহবাগের আন্দোলনকে বিভক্ত করা কি উচিত হচ্ছে ???
আমাদের কিন্তু সব রাজাকারেরই বিচার করতে হবে … 🙁
@তারিক,
উচিৎ হচ্ছেনা।
সরকার কে একটা কিছু করতে গেলে আগে পিছের, শত রকমের বিষয়ের দিকে লক্ষ করে ও বিবেচনায় রেখে অগ্রসর হওয়া লাগে। অনেক কিছু আইন কানুনের উপর ও নির্ভর করে।
সরকার শুধু আবেগের উপর ভর করে কিছু করে ফেলার ও ক্ষমতা রাখেনা। অনেক পদ্ধতি ও পার হওয়ার দরকার হয়।
এজন্য সরকারকে সময় ও সুযোগ দেওয়ার দরকার আছে।
শাহবাগের চলমান ও সময়সাপেক্ষ আন্দোলনের দ্বারাই লক্ষ অর্জিত হওয়া সম্ভব।
মনে রাখতে হবে আমাদের প্রতিপক্ষ মোটেই দুর্বল নয়।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
বেয়াল্লিশ বছর তো সুযোগ দেয়া হয়েছে। দেখলাম তো কত কি হল!
আর শোনেন, ভিন্ন মত মানেই সব সময় ভিন্ন পথ বা ভিন্ন লক্ষ্য নয়। শহীদ রুমী স্কোয়াড থেকে তো বার বারই বলা হচ্ছে, গনজাগরণমঞ্চের সাথে তাদের কোন বিরোধ নেই। কাজে পার্থক্য থাকলেও লক্ষ্যে সবাই অবিচল। লক্ষ্যটা (লক্ষ নয়) জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধ করা। পিনাকীদা যেমনফেসবুকে বলেছেন, সেকভাবেই বলি – ‘এমন শত ভিন্ন মত বিকশিত হয়েছিলো জন্যই তো শাহবাগে শত ফুল ফুটেছে। আরো ফুল ফুটবে’।
চাপ একটা আসতোই। আমি গর্বিত যে শহীদ রুমী স্কোয়াডের তরুণদের থেকে চাপটা আসছে …
@অভিজিৎ,
সত্যিই কী আমরা বেয়াল্লিশ বছর আওয়ামে লীগ সরকারকে সুযোগ দিয়েছি ,এই জামাত-শিবির কে পঙ্গু করতে? নাকি ৭৫ এর পর বরং আওয়ামে লীগকেই নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে এই জামাত-শিবিরকে সমাজের প্রতি স্তরে স্তরে ও প্রশাসন যন্ত্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকিয়ে গেড়ে বসতে দিয়েছিলাম।
সে সময় তো শেখ হাসিনারই বাংলা দেশে প্রবেশ করা নিরাপদ ছিলনা। অনেক সতর্কতা অবলম্বন করে সমবতঃ ৯০ এর দশকে ঢুকতে পেরেছিলেন।
ইতিমধ্যেই এই অপশক্তি, সরকার যে মেসিন দিয়ে কাজ চালাবে,অর্থাত “প্রশাসন যন্ত্র” অর্থাত একজন পুলিস অফিসার,আর্মি জওয়ান,আর্মি অফিসার,সেক্রটারী, প্রতিমনত্রী,এমনকি আদালতের বিচারক পর্যন্ত , ৭৫ এর পর হতে এর মধ্যে ঢুকে ঢুকে ভাইরাসের মত দখল করে নিয়েছে।
এদেরকে ভিতর থেকে বেছে বেছে নির্মূল না করা পর্যন্ত, সরকারের পক্ষে কিছু করা সহজ নয়।
এরা সরকারের প্রতিটা পদক্ষেপকে “সরিষায় ভূত” ধরার মত বাধা গ্রস্থ করে দিচ্ছে।
আবার এদের সংগে প্রকাশ্য ভাবে বিএনপি আপন ভাইএর মত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে পচন্ড শক্তিশালী করে দিয়েছে। এটা বিএনপি কেন করতেছে?
এটা না করলে বিএনপি যে নিজেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
অর্থাৎ এখন সরকারকে শুধু জামাত-শিবিরের সংগেই সংগ্রাম করলেই চলতেছেনা।
সরকারকে এখন জামাত,শিবির.বিএনপি,মৌলবাদী দল সহ তথা দেশের একটি বিপুল জনসংখ্যার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে নামতে হয়েছে।
এই কাজটি যদি কোন দল করতে পারে তা করতে পারে একমাত্র আওয়ামে লীগ।
কাজেই আওয়ামে লীগ কে আগে সুস্থ,সবল ও টিকে থাকতে হবে।
আমাদেরকে এটাও মনে রাখতে হবে, বসে বসে ব্লগে কিছু লেখা লেখি করা আর বাস্তব ক্ষেত্রে একটা দেশকে চালানোর মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।
আমার বিশ্বাষ আছে আওয়ামে লীগ সরকার এ কাজ সমাধান করার জন্য নিয়ম পদ্ধতি অনুসারে ঠিকই অগ্রসর হচ্ছে ও সময় মত করবেও।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
আপনার কি মনে হয় এদেরকে বেছে বেছে নির্মূল করার কোন আন্তরিক ইচ্ছা কোন সরকারের আছে বা কোনদিন হবে? কোন শক্ত প্রকারের চাপ প্রয়োগ ছাড়া ভবিষ্যতেও কি কোন সরকারের পক্ষে সেটা সম্ভব হবে যদি কোন সরকার ক্ষমতায় থাকতে চায়?
@ব্রাইট স্মাইল্,
অবশ্যই চাপ প্রয়োগ ছাড়া দুই দলের কোন দলই এটা করবেনা। উভয় দলই জামাতকে লয়ে তাদের রাজনৈতিক খেলা খেলতে গিয়ে আজ জন সাধারণের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তবে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে আন্দোলনটা দুই পথে ভাগ হয়ে গিয়ে যেন দুর্বল না হয়ে আরো বেশী শক্তিশালী হয়।
আমি এটাই বুঝাতে চাচ্ছি।
তাহলেই আন্দোলনটা সফল হতে পারবে।
এ ব্যাপারে সরকারের নির্লিপ্ততা দেখে তাদের আদৌ মানুষ বলে মনে হচ্ছেনা।
পানি খেতে গেলে পর্যন্ত আমারই নিজের বিবেকে বাঁধছে।কিন্তু দায়ভার মূলত যাদের উপর বর্তায় তারা সবকিছু দেখেও নির্বাক যেন কিছুই হয়নি।
দূর ভবিষ্যতে হয়ত দেখা যাবে এরকমই কোন নির্লিপ্ত সরকার রুমি স্কোয়াডের এই অনশনের জন্য তাদের স্মরণ(!!!) করছে।
আজকাল স্বপ্নের মাঝে খুজে পাই দুঃস্বপ্নের প্রতিছবি, আশা নিয়ে আশাহত হই বারবার। চারদিকে আঁধারের বিষাক্ত ছোবলে দেখতে পাচ্ছি বাঙালি জাতির স্বপ্নগুলো সব মরে কিভাবে ভুত হচ্ছে। শাহাবাগ আন্দোলন যখন তুঙ্গে প্রগতিবাদীরা নতুন করে আশার ঝিলিক দেখছেন তরুণদের মাঝে আমি তখনো ছিলাম সংশয়াচ্ছন্ন। ফরিদ ভাইয়ের এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে দেখতে পাই তিনি জামাতের মৃত্যু দেখতে পাচ্ছেন খুব কাছ থেকেই। পুরনো স্ক্রীন শট সংগ্রহে পারদর্শীতার অভাবে তা তুলে ধরতে পারছিনা এখন। তাঁর সে স্ট্যাটাসে আমি যথারীতি সংশয় প্রকাশ করে মন্তব্য করেছিলাম- ‘শেষতক কি হয় দেখি জামাত কাহিনি’ জাতীয় কিছু। বারবার আশাহত বেদনার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই জামাত নিষিদ্ধের দাবীতে এই অনশন নিয়ে কোন উচ্চশা ছিল না আমার। তাদের দাবী যতই যৌক্তিক হোন না কেন কঠিন বাস্তবতা হচ্ছে জামাতকে নিয়ে আওয়ামিলীগ হয়তো খেলতে পারে তবে জামাতকে নিষিদ্ধ করার মত দুঃসাহস আওয়ামিলীগ কখনো দেখাতে পারবে না। অনশন রত তরুণদের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা ও যথাযোগ্য সন্মান প্রদর্শন করে কায়মন চিত্তে কামনা করছি অসময়ে নিজেদের জীবন বিপন্ন না করে সুস্থ হয়ে তাড়াতাড়ি আবার ফিরে আসুন আমাদের মাঝে। অনাগত দিনে জাতির বড্ড প্রয়োজন আপনাদের মত প্রগতীশীল তারুণ্যের স্পন্দন।
সরকার কি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে কিছুই বুঝা যাচ্ছেনা, চারিদিকে কেমন যেন নির্লিপ্ততা, পত্রিকা, টেলিভিশন কোথাও ডিটেইল্স কোন খবর নাই। খুবই চিন্তার বিষয়।
নিলয় আই.সি.ইউতে… বাঁচবে না হয়ত…
আমিঅভভিূত। পম্চমিবঙ্গবাসী বাঙাল িহলোে শহীদ রুম িস্কােয়াডরে অনমণীয় আন্দােলনরে পাশ েলক্ষ-কােট িগােলাপ নয়ি েআমরাো দঁাড়যি েআছ।ি লখোট িউপহার দোেয়ার জন্য ধন্যবাদ জনাব ফরদি আহমদেক।ে
শ্বাপদে পূর্ণ এ দেশে ওরা হল ক`জন নিষ্পাপ হরিণ শাবক।ওদের স্বদেশ প্রেমকে আমি স্যালুট জানাই কিন্তু এ কাজে ওরা আত্মবিসর্জন দিতে চাইলে তাকে আমি সমর্থন দিব না। তাতে হয়তো আর ক`জন মায়ের বুক খালি হবে এর চেয়ে খুব একটা বেশি লাভ হবে না।আমরা এখনও সভ্য হতে পারিনি তাই সভ্য, সুশৃংখল আন্দোলনকে গুরুত্ব দেওয়ার বা মর্ম উপলব্ধি করার মত বিবেক আমাদের এখনো জাগ্রত হয়নি। চল্লিশ বছর যাবত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছায়ায় লালিত জামাত নিষিদ্ধ হবে কিনা বা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হবে কিনা তা নির্ভর করছে “নির্বাচনে জয়লাভ” নামক জটিল অঙ্কের উপর, এ সব আন্দোলনের উপর নয়। এ সব আন্দোলনের পজিটিভ দিক হল একটাই, তা হল ভণ্ড রাজনীতিবিদদের দেখিয়ে দেয়া এখনও এ দেশে নিস্বার্থ দেশ প্রেমিক জেগে আছে বিনা বাঁধায় এ দেশকে রাজাকরদের অভয়ারন্যে পরিণত করতে দেউয়া হবে না। এ কথা বুঝানোর জন্য এ পর্যন্ত ওরা যতটুকু আত্মত্যাগ করেছে তাই যথেষ্ট মনে করি, এ অনশন আরও দীর্ঘায়িত করে নিজেদের জীবন বিসর্জন দেওয়া সমীচীন হবে বলে আমি মনে করিনা।রুমিরা যখন জীবন দিয়েছিল তখন দেশের প্রয়োজন ছিল আত্মবিসর্জন দেওয়ার মত রুমিদের, কিন্তু এখন দেশের আত্মবিসর্জনকারী রুমিদের চেয়ে বেশি প্রয়োজন আত্মত্যাগী রুমিদের।
অনশনকারীদের অবস্থা ভালো নয়। যাদের জাগাতে ওদের এই পণ তারা কি একবারও জাগবে না?
@নীল রোদ্দুর,
সাফিকে স্যালাইন দিতে হয়েছে দেখলাম, ৪-৫জনকে বার্ডেমে নেয়া হয়েছে আজকে। এখন পর্যন্ত সরকার কোনো শব্দ করেছে বলে শুনলামনা, এদের কে বাঁচাবে?
@রামগড়ুড়ের ছানা, আমি তো কাছে গিয়ে একবার দেখাও করতে পারলাম না ওদের সাথে, একটু আগে নিলয়ের ছবি দেখলাম, অক্সিজেন মাস্ক পরা, অ্যাম্বুলেন্সে! বুকটা ধক করে উঠল। সাফি, নিলয় এদের স্রেফ ছোট ভাইয়ের মত ভালোবাসি… অস্থির লাগছে আমার।
রামগড়ুড়ের ছানা, তোমরা তো শাহবাগ আন্দোলনে ছিলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা মিলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে কি যেতে পারো? হয়ত গুটি কতক মানুষ, কিন্তু কোনভাবে কি অবস্থান নেয়া, প্রধানমন্ত্রীর টনক নড়ানো যায়? আমি জানি, যা বলছি, তা সহজ নয়। কিন্তু কিছু তো করতে হবে! আর যে উপায় নেই!
কালকে সাফিকে দেখে আসলাম। তাদের অনশনের কারণে শাহবাগের মৃত ঘোড়া আবার জাগতে শুরু করেছে। তবে অনশন বিষয়ে এবং জামাত শিবির নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকার আন্তরিক হয়। অন্যদিকে হুজুর বাহিনী সমাবেশ ও আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। দেশ কোন দিকে যাবে বোঝা মুশকিল।
তবে জামাত শিবির নিষিদ্ধ হবে কিনা জানি না তবে সাফির মতন ছেলেরা যা করেছে তা করার সাহস আমাদের অনেকেরই নেই। তারা সুস্থ ভাবে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক তাই চাই।
অনশন কারীদের এখনো ওখান থেকে ফিরিয়ে এনে তাদের অন্ততঃ জীবণটা রক্ষা করুন। ওরা ওখানে না খেয়ে মারা গেলেও সরকারের ওদের দিকে দৃষ্টি দেওয়ার মত সময় তাদের এখন নাই।বরং তাতে জামাত-শিবিররা আরো বেশী উল্লসিত হবে।
ইতিমধ্যেই তো ৬ জন অশুস্থ হয়ে গিয়েছে, এখন তারা ছ্যালাইনের উপর আছে।
আর তা ছাড়াও ওখানে এই পরিস্থিতিতে এক নাগাড়ে অবস্থান করে যাওয়াটা জামাত-শিবির-হিজবুত তাহরীরের আত্মঘাতি হিংস্র পশুদের নিকটও তো নিরাপদ নয়।
আগে জীবণ গুলী রক্ষা করা হোক। তার পর বেচে থাকলে অনেক কিছু করার সুযোগ আসবে।
বর্তমান সরকারতো স্বাধীনতার পক্ষে, তাদের কাছে এমনিতেই আশা করা যায় যুদ্ধাপরাদিতের বিচার হওয়া ।তারাই যদি কোন স্বার্থের কারনে অথবা কোন দুর্বলতার জন্য এদের বিচার না করে তবে অকারণে এই নিরীহ মায়ের বাচ্চাদের প্রাণ দেয়ার প্রয়োজন নেই। প্রাণ যদি দিতেই হবে তবে অন্য কোন মতাদর্শ রাজনৈতিক দলের ক্ষমতার আমলে আমরণ অনশন করা যাবে।হয়তবা তাদের মনে দয়ার উদয় হবে কিংবা রাজনৈতিক চাপের মুখে দাবি মানতে পারে।
ছুটি কাটিয়ে আজকে বিকালে কর্মস্থল চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছি। আফরোজা আপার ফোন পেয়ে মনস্থির করলাম চট্টগ্রাম যাবার আগে রুমী স্কোয়াড এর সাথে সহমর্মিতা প্রকাশ করেই যাব। গেলাম। গিয়ে তো তাজ্জব। সব বাচ্চা ছেলেমেয়ে।সাফির লেখা পড়ে তার বয়সের আন্দাজ করা কঠিন। গিয়েই প্রথমে পড়লাম কে কে সহমর্মী, সহযোদ্ধা। তাদের নামের তালিকা একটা হোয়াইট বোর্ডে লেখা। ব্যক্তির পাশাপাশি অনেক সংগঠনের নামও রয়েছে।আশা জাগল। আসলে আশা নিয়েই গেছি এবং তা অব্যহত রইল। সাফির কাছে আফরোজা আপা বসে আছেন। আমিও বসলাম। এর মধ্যে জি টিভি ও ইন্ডিপেডন্ট টিভির ক্যামারা দেখে উঠে আসলাম। তা না হলে তো অনশনকারীদের রেখে আমরাই বেশি হয়ে যাব।
ফাঁকে দিন দুপুরে একটা পাগল কিশোরী একটা ছেলের তাড়া খেয়ে রূমি স্কোয়াডে ঢুকে আশ্রয় নিল। স্কোয়াডের সংগঠক জাতীয় কেউ ছেলেটাকে একটু উত্তম মধ্যম দিয়ে বিদায় করে পাগলটাকেও সরিয়ে দিল। আমার কাছে পাগল কিশোরীর রূমী স্কোয়াডে আশ্রয় নেওয়াটাকে কেমন যে প্রতিকী মনে হল। পাগলেও বুঝে আশ্রয়স্থল কোনটা!
ভাল থেকো সাফি। জয় হোক তোমাদের অনশনের।
একত্রিশ ঘন্টা অনশনের পর সরকারের টনক নরবে না। হয়ত আর দীর্ঘক্ষন করার পরেও নড়বেনা। জামাতিদের হাত হতে টেকি সাফিদের নিরাপত্তার দরকার।
শাহবাগের এমন মুখ থুবরে পড়া দেখে বুকের ভিতরে মোচড় দিয়ে উঠতো, কিন্তু আমি এটুকু জানতাম এটাই শেষ নয়, ছিল কেবল শুরু। যে পাখি একবার মুক্ত আকাশের স্বাদ পেয়েছে তাকে খাচায় বাধবে সাধ্যি কার। শহীদ রুমি স্কোয়াডের সদস্যরা সেই মুক্ত আকাশের ঠিকানা দেখানো সারথী। সুদুর প্রবাস থেকে তোমাদের সাথে আছি, আমি কাল সারাদিন কিছু খাবোনা।
@সুমন,
আপনার মত যে যেখান থেকে এই সংগ্রামী ছেলেদের অনুপ্রেরনা ও সাহস দিচ্ছেন তাদের সবাইকে ছালাম।
সাফির মতো একটা ছেলে যে দেশের জন্য অনশন করে যুদ্ধ করে যাচ্ছে তার লেখার সাথে পরিচয় আছে ভাবতে ভালো লাগছে। তবে সাফি ও অনশনকারী সবাইর জন্য খুব ভাবনা হচ্ছে। কায়মনোবাক্যে আশা করছি খুব শীঘ্রই সরকারের বোধদয় হবে এবং তারা অনশন থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। অনশনকারীদের এই যুদ্ধ বৃথা যাবেনা, তাদের জন্য রইলো অফুরন্ত ভালোবাসা।
আমার মতে, আমাদের মত দেশে এই পরিস্থিতিতে এখন অনসন ধর্ম ঘটে যাওয়া ঠিক হয় নাই। অনসন ধর্মঘট করে রাতারাতি একটা কিছু সরকারের নিকট থেকে আদায় করা সম্ভব নয়। সরকারকে এখন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই চতুর্মুখী আক্রমনের মুকাবেলা করতে হচ্ছে।
বরং এখন যেটা বেশী প্রয়োজন তা হল শুধু মাত্র শাহবাগের আন্দোলনের উপরই সমগ্র শক্তি,বুদ্ধি,কলাকৌশল, কেন্দ্রীভূত করিয়া আরো বেশী শক্তিশালী করিয়া ও আরো জোরদারে চালিয়ে যাওয়া।
শাহবাগের আন্দোলন দৃঢ় ও সঠিক ভাবে চালিয়ে যেতে পারলেই এর মাধ্যমে লক্ষবস্তু অর্জন হওয়া সম্ভব। শক্তির ভাগাভাগি হয়ে গেলে তাতে প্রতিপক্ষের নিকট আরো বেশী দুর্বল হয়ে যেতে হয়।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
আর কোন উপায় ছিলো বলে কি আপনার মনে হয়? শাবাগের তথাকথিত নেতারা শুধু বেলুন উড়িয়ে মোম্বাতি জ্বালিয়ে, স্মারক লিপির পর স্মারক লিপি দিয়ে আন্দোলন করে যাবেন। আপনার মনে হয় এই পুতু পুতু ভাব দিয়আন্দোলন হয়?
যেদিন থেকে ছাত্র লীগের সোহাগ, ইমরানের ইস্টিয়ারিঙ্গের ভার নিছে তখন থেকেই এক চোখ সরু করে সন্দেহের ৃষ্টিতে দেখেছি এই মঞ্চকে। পরিশেষে আমার আপনার সবার সন্দেহতো সত্যি হলই তাই না? খরস্রোতা আন্দোলন যদি এক্ষণই নেতিয়ে পরে তবে তার থেকে খারাপ আর কিছু হবেনা এই দেশে। যদি একটা ছেলেরও কোন ক্ষতি হয় আমি আও্যামেলীগকে কখনই ক্ষমা করবোনা। আমি জানি আমার মত ছাপোষা একজন মানুষের ক্ষমা বা অক্ষমাতে তাদের কিছু যায় বা আসেনা। কিন্তু আমরা সবাই যদি কিছু ক্ষমা না করি তাহলে তাদের আর উপায় থাকবেনা।
সাফিসহ স্কোয়াডের সদস্যদের স্যালুট। আশা করছি, একজন ডাক্তার বা স্বাস্থ্যসেবার সাথে জড়িত কেউ অনশনকারীদের প্রতি সবসময় সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন।
চমকের ওপর চমক, শীতনিদ্রা ভংগ করে বিশিষ্ট সাহিত্যিক কাম ঐতিহাসিক ফরিদ ভাই এর শুভাগমন। সাথে এই অধমের নাম প্রথমেই দেখে ভয়ে আত্মা উড়ে যাওয়া, এই বেয়াড়া লোকের সাথে ভাবছিলাম পরের দুইটা দিন এখানে ধস্তাধস্তিতে পার করতে হবে। সেই সম্ভাবনা আপাতত নাই বলে স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলতে পারলাম।
ফরিদ ভাই এরও যে পুরনো স্ক্রীন শট সংগ্রহের হবি আছে আগে জানা ছিল নাঃ :)) ।
আমি আন্দোলন নিয়ে প্রথম থেকেই তেমন আশাবাদী ছিলাম না, এখন আরো নেই, এখন সেটা আর বিতর্কের কিছুও নয়। তবে বিশুদ্ধ আবেগ অনুভূতির প্রতি সহর্মিতা না জানিয়ে পারা যায় না। আশা করতে পারি হয় সাফিদের নুতন প্রজন্ম দেখিয়ে দেবে আমাদের ভুল, এদের মাঝে বজলুল হুদার ভাতিজা না কে আছে সে নিয়ে মাথা ঘামাই না।
ফরিদ ভাই, আমি এখন মনে হয় আপনার আরো নিকটে চলে এসেছি।
@আদিল মাহমুদ,
:)) উনারো মনে হয় স্ক্রিনশটে পিএচডি কর্তে ইচ্ছা হইসে, ঐ সাইকো ম্যানিয়াকটার মতো।
কত নিকটে? বেশি নিকটে না যাওনই ভাল হবে। ্নেক্সট টাইম জামাত ক্ষমতায় গেলে শরিয়া আইনে প্রবলেমে পড়তে পারেন। 🙂
@অভিজিৎ,
নেক্সট টাইম জামাত ক্ষমতায় আসবে এইটা মাথায় রেখেই তো ফরিদ ভাই রে ত্যালায় চলার নীতি নিছি।
আমাদের সাফিও অনশন করছে! এই পিচ্চি ছেলে! আমি এখনই জানতে পারলাম এই লেখা পড়ে। কতটুকু আগুন জ্বলছিল এই ছোট্ট ছেলেটির বুকে, যার কাছে খিদার আগুন কিছুই না!
টেকি সাফির সাথে মুক্তমনার যোগাযোগ, পরিণতি কি হতে পারে একটু চিন্তা করে দেখুন….
এই অনশনের উদ্দেশ্যের সাতে আমি একমত নই। জামায়াতকে যারা সকাল বিকাল নিষিদ্ধ করছেন তারা এর পরিণতির কথা ভাবছেন না। সরকার চালাতে গেলে অনেক কিছু ভাবতে হয়, দেশেও, দেশের বাইরেও। এই তরুনদের বুঝিয়ে ফেরত আনার ব্যবস্থা করুন। সত্যি করে বলছি, আমার মনে হচ্ছে না এগুলো কোন কার্যকর কিছু হবে। যেই জানা যাবে সাফি একজন নাস্তিক, সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে চলে যাবে জনমত।
@Rabbi,
খুবই ভাল পয়েন্ট তুলেছেন।
সাফি তোমাকে আমি স্যালুট জানাই।
লেখাটা ফেসবুকে শেয়ার করলাম ।
মনে পরে ওদের আফরোজার ঐ লেখাটায় প্রশয় মেশানো আমন্ত্রন জানিয়েছিলাম
ঐ দুরন্তদের !
আমি বাকহীন!
জানিনা এখন রাত, ভোর হবার আর কত দেরী!
এ জায়গায় এসে কাঁদতেই হল!
অথচ গতকাল খেলার বিজয়ে যখন আ্নন্দোল্লাস করছিলাম, তখন জানিই না ঠিকমত!
মনে আছে, একবার ফরিদ ভাই, আপনার কোন একটি লেখার কোন একটি বিষয় নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছিলাম, এই ভাইটি শক্তভাবে আমার আপত্তির প্রতিবাদ করেছিলেন। আমি তখন নতুন। তাই স্বভাবতই আহত হই, কিন্তু তবু এই ভাইটিকে কখনোই ঘৃনা করতে পারিনি, প্রধানত দুটো কারণে, প্রথমতঃ আমিও আপনার মত সাহসিদের খুব পছন্দ করি , দ্বিতীয়তঃ এত অল্প বয়সে ভাইটির জানাশোনার যে আদিগন্ত বিস্তৃতি অবলোকন করেছিলাম, তাতে মুগ্ধতাই বেড়েছে কেবল!
আমরাও।
হ্যা, আপনি যা করেছেন ভাইয়া, তার কোন তুলনা নেই। আপনি এতটুকুন বয়সে পথ দেখিয়েছেন সব বড় বড় তালেবরদের! আর লজ্জায় ফেলেছেন আমাদেরও!
ভাইয়া, আপনার এই যুদ্ধ বৃথা যাবে না! সত্যি একদিন জনতা জেগে উঠবে! উঠতেই হবে!
রুমি স্কোয়াডকে লাল সালাম…………
রুমি স্কোয়াড নিয়ে কিছু বলতে লজ্জা লাগে কারণ এদের সাথে যোগ দেয়ার মতো সাহস, ক্ষমতা, বড় মন আমার নেই। আজ তাও সাফির সাথে একটু কথা বলতে গেলাম, যদি কিছুটা উৎসাহ পায় সমর্থন পেয়ে সেটা ভেবে, ওকে দেখে মনেই হলোনা এতটা কষ্ট করছে। ছোটো একটা জায়গায় সামিয়ানা টানিয়ে ১৪-১৫ জন মতো থাকছে, রাতে সেখানেই ঘুমাচ্ছে।
ভালবাসা সাফির জন্য, রুমী স্কোয়াডের জন্য।
ওদের সাথে যোগ দিতে ভীষণ ইচ্ছে হচ্ছে।
@মহন,
এই ইচ্ছেটাই ওদের সাথে যোগ দেওয়া। আমি আপনি সকলেই ওদের সাথে যোগ দিয়েছি। ইচ্ছে ঘুড়ির ঠিকানা এখন শাহবাগে।
@ফরিদ আহমেদ,
শুধু ইচ্ছেতেই যে মন ভরছেনা ফরিদ ভাই। আর কিছু করতে মন চাচ্ছে। একটা কিছু করতে না পারলে আজীবন বিবেকের কাছে অপরাধী হয়ে থাকবো।
মুক্তমনার পক্ষ থেকে এই অনশনের সাথে সর্বাত্মক সহমত জানিয়ে একটা ব্যাজ জাতীয় কিছু ঝোলানো যায় কি ? ছেলেগুলো অনশন করছে, ওদের পক্ষের প্রচারণাটা ব্যাপক না হলে এই অনশনের উদ্দেশ্য একেবারে শূন্য হয়ে যাবে।
আগুন ছড়িয়ে যাক। ক্ষুধার আগুন ছড়িয়ে যাক এই রাষ্ট্রের প্রতিটি রাজনীতিবিদের পেটে। রাক্ষুসে ক্ষুধা নিয়ে যারা এতোদিন দেশটাকে গিলে খেয়েছেন, তারা একটাবার বুঝুন যে ষাট ঘন্টা না খেয়ে থাকলে কেমন লাগে।
@শুভজিৎ ভৌমিক,
বুঝবে না। এদের অন্য অনেক ক্ষুধা থাকলেও পেটের ক্ষুধা নেই। ষাট ঘণ্টাতো দূরের কথা মাত্র ছয় ঘন্টা না খেয়েও কখনো থাকে না তারা।
টেলিভিশনে আজ ওদের দেখেছি। সত্যিই দুশ্চিন্তা হচ্ছে। ওদের সবার জন্য ভাবনা হচ্ছে খুব।
ক্ষ্যাপা ছেলে টেকি সাফি আর অনশনরত সবাইকে সুস্থ রাখার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
পথ দেখাবার জন্য ওরা।
ওদের যত্ন করে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
আমাদের সবার জন্য।
@কাজী রহমান,
কীভাবে বাঁচাবেন কে জানে। অনশনের তিন দিন পার হয়ে গিয়েছে। সরকারের কোনো অংশেরই কোথাও কোনো চিত্ত চাঞ্চল্য হয়েছে বলে চোখে পড়ে নি আমার। আওয়ামী সরকার যে জামাতকে কখনই নিষিদ্ধ করবে না, এটা তাদের কর্মকাণ্ড দেখলেই বোঝা যায়। মাঝখান দিয়ে হয়তো অমূল্য কিছু প্রাণ হারাবো আমরা।
বিশুদ্ধ আবেগকে মানুষ ঠিকই চেনে আর মূল্য দেয়। এরি মধ্যে সর্বস্তরের মানুষ ও সংগঠন অনশনকারীদের সাথে সহমর্মিতা প্রকাশে এগিয়ে আসছে।
আমি এখানে একটা ছোট ভবিষৎবাণী করবো। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সেলিব্রেটি ব্লগাররা তাদের সুর পাল্টে অনশনকারীদের সবচেয়ে আবেগময় সমর্থকে পরিনত হবেন। ঠিক যেমনটি ৫ই ফেব্রয়ারী তারা শাহবাগে জমায়েত হওয়া তরুনদের আদালতকে বিতর্ককারী, হঠকারী বাম, স্যাবোটিউর ইত্যাদি বলে তারপরে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে মাঠে নেমে আন্দোলনের নেতৃত্ব হাতে তুলে নিয়েছিলো।
@সফিক,
সঠিক বলেছেন। শাহবাগের আন্দোলন শুরুতে বিশুদ্ধ আবেগের বহিঃপ্রকাশ ছিল। ফলে গণ মানুষের ঢল নেমেছিল সেখানে। সেই বিশুদ্ধতম আন্দোলনকে নানা স্বার্থ এবং আপোষকামিতায় আজ মৃত এক আন্দোলনে পরিণত করেছে কিছু লোক। যে অমিত শক্তি নিয়ে এই আন্দোলনের জন্ম হয়েছিল, সেই শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য একদিন ইতিহাসের কাছে এরা দায়বদ্ধ হবে। দেখেন আপনি।
মানুষের আবেগের সুযোগ নিয়ে কিছু লোক হঠাৎ করেই বিরাট বিরাট সব নেতা হয়ে গিয়েছিল। গণ মাধ্যমও এদের উস্কে দিয়েছিল অবারিতভাবে কিছু নির্বাচিত ব্যক্তিকে প্রচারের সুযোগ দিয়ে। এই অযাচিত সুযোগে যে জনপ্রিয়তা তারা পেয়েছিল, সেই জনপ্রিয়তাই কাল হয়েছে তাদের। বাংলায় একটা কথা আছে। পাছাভারি। এদের সব পাছাভারি হয়ে গিয়েছে। আন্দোলনের উদ্দেশ্য এখন আর মূখ্য নয়, এখন এদের নিজদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এই জনপ্রিয়তা আর নেতাগিরি ধরে রাখা। ফলে একের পর এক আলতু ফালতু কর্মসুচী দিয়ে অহেতুকই এই আন্দোলনকে দীর্ঘায়িত করছে এরা। জনতার স্বতস্ফুর্ত আন্দোলনের ফলাফল হয় তড়িৎ। দেরি করলেই তা খেই হারিয়ে অতলে হারিয়ে যায়। শাহবাগ সেই পরিণতির দিকেই যাচ্ছে। রুমি স্কোয়াডের তরুণদের সেই কারণেই এমন চরম সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের উপর থেকে ফোকাস সরে যাবার ভয়ে শংকিত নেতাগণ। তাই, মিথ্যাচার শুরু হয়েছে এদের বিরুদ্ধে। আজ বলছে এদের সমন্বয়ক বজলুল হুদার ছেলে। কাল হয়তো বলবে এরা নাস্তিক, কাজেই সবগুলো জামাত করে। জামাতি চক্রান্তে আন্দোলনে বিভ্রান্তি আনতে আর স্যাবোটাজ করতে আমরণ অনশনের ভান করছে এরা।
(Y)
আপনে লিখবেন জানলে আমি আর লেখাতে হাত দিতাম না।
সাফি সত্যই আমাদের অবাক করে দিল।
@অভিজিৎ,
উঁহু, আমার লেখার পাঠক সংখ্যা সীমিত। তোমার লেখা অনেক মানুষের কাছে পৌঁছোবে। শহীদ রুমি স্কোয়াডের এত বড় আত্মত্যাগ আর ভূমিকা পত্রিকায় তেমনভাবে আসছে না। টিভিতেও দেখাচ্ছে না তাঁদের। ওদিকে পিয়াল, জেবতিক আর ইমরান হাঁচি কাশি দিলেও তা টিভিতে দেখায়। আমাদেরই এখন এর প্রচারের দায়িত্ব নিতে হবে বিকল্প মাধ্যমে। কাজেই, তোমার ভূমিকাটা এখানে বিশাল।
@ফরিদ আহমেদ,
একদম একমত আপনার সাথে। ওদের এরকম আলো হয়ে ওঠা কে সবার কাছে আমাদেরই পৌঁছে দিতে হবে। অভিজিৎ রায়ের দম নিলে চলবেনা। তবে ফরিদ ভাই, আপনার কাছে চাই আরো লেখা; প্রতিদিনের আপডেট যদি সম্ভব হয় তবে তাও। এমন মর্মস্পর্শী লেখার এখন বড্ড দরকার। যে দিন প্রথম আলোতে এদের সাথে ব্লগার সাফির নাম দেখলাম তখনই সন্দেহ হয়েছিলো এ আমাদের টেকি সাফি। এখন নিশ্চিন্ত। আর যেদিন এই অনশনের খবর প্রথম দেখলাম মনে হলো এরাই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। মনে পরে গেলো হুমায়ুন আজাদের কথাটা, “রাজাকাররা চিরকালই রাজাকার, মুক্তিযোদ্ধারা চিরকাল মুক্তিযোদ্ধা নয়।” আমি সেই জন্যেই এখনো খুব আশাবাদী যে আমাদের তরুনরাই আজ আমাদের কান্ডারী হয়ে উঠবে। হয়ে উঠবে এক একটা আপন আলোয় উদ্ভাসিত তরুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা। আপনার মতো ওদের জন্যে লক্ষ-কোটি গোলাপ নিয়ে আমিও ঠায় দাঁড়িয়ে থাকবো। অনশনে আমাদের টেকি সাফিদের নিস্তেজ করা যাবে না, আরো লক্ষ-কোটি টেকি সাফি সৃষ্টি করতে হবে।
@কেশব অধিকারী,
দারুণ কেশব দা। (Y)
@অভিজিৎ,
আপনি লেখাটা ছেড়ে দিন তাড়াতাড়ি! আপনার কাছ থেকে যে লেখা আসবে সেটা আমি আগেই জানতাম, মানে আমার মন বলছিলো। ফরিদ ভাইয়েরটা পেয়েছি, এবার আপনার আপেক্ষায়!