বাংলাদেশের শাহবাগ আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতের বিভিন্ন বাংলাভাষী অঞ্চলে সংহতি জানাতে নানা অনুষ্ঠান সভা-সমাবেশ শুরু হয়। পশ্চিম বাংলা, আসাম, ত্রিপুরার আগরতলায় সংহতি অনুষ্ঠান হলেও এই অনুষ্ঠানগুলি ছিল নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণীর মধ্যে সীমিত। কিন্তু ত্রিপুরার কমলপুরের জনগণ নির্দিষ্ট কোন সংগঠন বা রাজনৈতিক গণ্ডির মধ্যে না থেকে যেভাবে শাহবাগে সংহতি জানালেন তা অতুলনীয়।
গত দুইদিন আগে এই সমাবেশের প্রধান উদ্যোক্তা দুলাল দা (মানে দুলাল ঘোষ, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি কমলপুর শাখার সম্পাদক) উনার মাধ্যমে খবর পেলাম কমলপুর মহকুমার বিভিন্ন মহলের জনগণ শাহবাগ আন্দোলনে সংহতি জানাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সভা-সমাবেশের আয়োজন করেছেন ২২শে মার্চবিকাল ৪ ঘটিকায়, তিনি আরও জানালেন যে এই সমাবেশ অনুষ্ঠানের কোন রাজনৈতিক বা সাংগঠনিক রং নেই।
অনুরুধ করলেন যদি বাংলাদেশের কোন যুক্তিবাদী, মুক্তমনা অতিথি হিসাবে উপস্থিত হন তাহলে আরও ভাল হয়, সেই হিসাবে আমি ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দেই এবং ফেসবুক ম্যাসেজে জানালে অনেকেই বলেন যে এত তাড়াতাড়ি ভিসা পাওয়া কষ্টকর তবে সবাই সমাবেশকে সমর্থন করেন। যাক নিজে তো সমাবেশে যোগ দেওয়ার লোভ সম্বরণ করতে পারছি না, আবার অন্যদিকে ২৮ মার্চ থেকে আমার পরীক্ষা শেষ পর্যন্ত বললাম যে আমিও সমাবেশে আসছি। সেইমত ২২ তারিখ দুপুর ১২টার ট্রেনে ধর্মনগর থেকে আমবাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। ত্রিপুরার কচ্ছপ গতির ট্রেনের জন্য আধঘণ্টা দেরীতে ২:৩০মি. আমবাসা পৌঁছে ছোট গাড়ি ম্যাক্স ধরলাম সেই যাত্রী উঠানো-নামানোর যন্ত্রণায় ভোগে বিকাল ৪:১৫ দিকে আসলাম কমলপুর। কমলপুর ঢোকার পর পুলিশ আমাদের গাড়ি আটকে দিলো এই বলে যে সামনে র্যালী আছে।
আমার আর বোঝতে বাকী রইল না র্যালীটা কিসের। এক লম্বা দৌড় দিলাম একটু এগিয়ে দেখলাম অগণিত মানুষের বিশাল র্যালী। শেষে র্যালির শেষ লাইনে যোগ দিতে আমাকে ধরিয়ে দেওয়া হলো ভারত বাংলার যৌথ পতাকা। আমার কি আর শান্তি আছে, আমার ডিজিটাল ক্যামেরাতে ভিড়িও মোড অন্য করে অগ্রসর হতে থাকি সামনের দিকে। ধীরে ধীরে লক্ষ্য করলাম এখানে সামিল হয়েছেন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ছাত্র-ছাত্রী, শিল্প সাহিত্যিক থেকে শুরু করে শ্রমজীবী নারী-পুরুষ এমন কি ক্রিকেট ব্যাট হাতে শামিল হয়েছেন প্যাকটিস রত খেলোয়াড়রা। আছেন ক্যামেরা হাতে পশ্চিম বাংলা, ত্রিপুরার টিভি সাংবাদিকরা।
তাদের সবার হাতেই আছে প্লে-কার্ড এবং আকাশ বাতাস কাপিয়ে শ্লোগান দিচ্ছেন।
১)তোমার আমার ঠিকানা ——শাহবাগ মোহনা———————।
২)মৌলবাদ হানায় নিহত রাজীব হায়দার অমর রহে—–অমর রহে————।
৩)শিরা ফুলিয়ে তুলুন আওয়াজ—-মৌলবাদ, সাম্রাজ্যবাদ,সাম্প্রদায়িকতা নিপাত যাক——।
৪)মৌলবাদ সাম্রাজ্যবাদ হুশিয়ার।—————
৫)ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শহীদ জননী জাহানারা ইমাম অমর রহে—- অমর রহে—-।
৬)ধর্মনিরপেক্ষতা গ্রাস করা চলবে না।—————–
৭)রাষ্ট্র তুমি পক্ষ ছাড়ো———-ধর্ম নিরপেক্ষতার পথ ধরো।—————–
৮)শাহবাগের বীর শহীদ অমর রহে—–অমর রহে।——————
৯)এগিয়ে চল শাহবাগ আমরা তোমাদের পাশে আছি—————————-
১০)দুনিয়ার জনগন।——এক হও।——————————
ইত্যাদি।
র্যালির শেষ প্রান্তে একটি গাড়ী সেটিতে মাইকে ভেসে আসছে – ৭১এ আমরা ত্রিপুরা বাংলাদেশের পাশে ছিলাম এখনও মুক্তিকামী মানুষদের পাশে আছি। হুমায়ুন আজাদ, রাজীব হায়দার সহ মৌলবাদীদের দ্বারা যারা নিহত হয়েছেন তাদের কথা বলা হচ্ছে এবং হত্যাকারীদের নিন্দা জানানো হচ্ছে। ৭১এ পাকিস্তানের ত্রিপুরার উপর হামলার কথা বলা হচেছ।
ধীরে ধীরে আমরা এগিয়ে আসলাম কমলপুর বাস টামিন্যালসে যেখানে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। একটু দূর থেকে শুনতে পেলাম স্থানীয় সঙ্গীত শিল্পীরা গাইছেন ও আমার সোনার বাংলা….. আমি তোমায় ভালবাসি…………………., ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা……….., সাত সাগর রক্তের বিনিময়ে…. বাংলার স্বাধীনতা আনলো যারা….. আমরা তোমাদের ভুলবো না………।
সেখানে পৌছার পর আরও মানুষ যোগ দিল, অসংখ্য মানুষের ঢল। বোঝতে পারছিলাম না শাহবাগে আছি না ত্রিপুরার কমলপুরে। এরপর বিশিষ্ট জনেরা শাহবাগে নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহিদ বেদীতে পুষ্পাঘ অর্পণ করেন। নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এক মিনিট দাড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। শাহবাগ আন্দোলন সংহতি মঞ্চে বীরেন্দ্র পালকে সভাপতি করে বসে একটা আলোচনা চক্র। আলোচনা চক্রে বিশিষ্ট-জনেরা বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে উঠে আসে বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মের মৌলবাদীদের কার্যকলাপ, শাহবাগের প্রেক্ষাপট, মৌলবাদের দ্বারা বিশ্ব সংকট, ধর্মান্ধতার বিষবাস্প, ভারতও মৌলবাদ থেকে মুক্ত নয়, কেন আমাদের বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিৎ? শাহবাগের উদ্দেশ্যে কবিতা পাঠ সহ অনেক বিষয়।
আলোচনা শেষে চললো গণস্বাক্ষর নেওয়ার পালা। সবাই সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করে সাক্ষর দিচ্ছেন দেখে ভাল লাগলো। বুঝলাম আমাদের দেশেও মুক্তচিন্তা করার মানুষের অভাব নেই। শাহবাগকে যে আমরা শুধু সমর্থন দিচ্ছি তা না আমরাও শাহবাগের দৌলতে এক হয়েছি, শাহবাগ আমাদের সচেতন করেছে কিভাবে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়তে হয়।
গণস্বাক্ষর শেষে এইদিনের অনুষ্ঠান শেষ হয় কিন্তু পরেরদিন থাকবে ছবি আকা সহ অন্যান্য অনুষ্ঠান। কিন্তু পরীক্ষার জন্য আর একটা দিন নষ্ট করতে পারছি না বলে অনিচ্ছা সত্বেও ধর্মনগরের উদ্দেশ্যে গাড়িতে উঠলাম।
ভারতীয় মুসলিমদের অনাগ্রহ বেদনাদায়ক । অথচ তসলিমা নাসরিন আর সালমান রুশদির বিষয়ে তাঁরা বেশি আগ্রহী । কোন পজিটিভ এটিচ্যুড কথিত ‘ধর্মনিরপেক্ষ` রাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে পাই না ।
নিপাত যাবেই।আমরা যে সীমানাবিহীন ভাবেই জোটবদ্ধ।আপনার লেখাটি ১৯৭১ সালের কথা মনে করিয়ে দিল। তখন আমি আমার পরিবারের সাথে ত্রিপুরায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। পেয়েছিলাম। সেই কাঞ্চনমালা, শেখের কোট,মোড়াপাড়া আর বিশালগড়ের স্মৃতি এখনও মাঝে মাঝে জাপটে ধরে।
কৃতজ্ঞতা আমাদের সংগ্রামের সাথে সংহতির জন্য।
আসলে প্রগতিশীল মানুষদের কোন দেশ নেই। তারা সব দেশেই রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে পৃথক রাখতে চান। তারা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলের মঙ্গলের জন্যই একটি অসাম্প্রদায়িক ধর্ম নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চান। তারা সকল নিপীড়িত মানুষের পক্ষে, পৃথিবীর সকল জীব বৈচিত্রের পক্ষে, পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশের পক্ষে। একটি মাত্র দেশের ভৌগলিক সীমানায় সীমাবদ্ধ থেকে এই আন্দোলন সফল হবে না। দরকার সন্মলিত আন্দোলনের। দরকার দেশে দেশে বিপ্লবী গণ জাগরণের। সন্ত্রাসী ধর্মীয় মৌলবাদীদের মদদ দিয়ে বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদ দেশে দেশে বিভেদ ঘটিয়ে তাদের হীন শ্বার্থ হাসিল করার যে অপচেষ্টা চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য ত্রিপুরাবাসীদের জানাই বিপ্লবী অভিনন্দন।
খুব ভালো লাগলো এই দেখে যে শত প্রতিকুলতাতেও আমাদের শাহবাগ যে ছোট্ট মোমবাতিটা জালিয়েছে তা দিকে দিকে আলো ছড়িয়েই যাচ্ছে।
৭১ এ ত্রিপুরা বাসী আমাদের কে সাহায্য – সহযোগিতা করেছিলো আমরা আজও তার জন্য ঋণী, আজ এক ক্রান্তি লগ্নে আবারো ত্রিপুরাবাসী প্রমান করলো তারা আমাদের কত কাছের, কত বড় সুহৃদ।
@শিমূল, হ্যাঁ সেটা ঠিক শাহবাগ বিশ্বকে একটা রাস্তা দেখিয়েছে। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
সব ধর্মই ভালো।তবে ধর্ম নিয়ে মৌলবাদী করা ভালো না। কিছু বলদ এখনো শাহাবাগকে বিশ্বাস করে না। তবে যাই হোক ধর্ম নিয়ে মৌলবাদী করা ভালো না।অনেকে হয় ত বা ধর্ম বিশ্বাস করে না। তবে এটা মনে রাখা দরকার যে ধর্মবিহীন মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না।কারণ ধর্ম মানুষকে একত্র করে,একজনের প্রয়োজনের সময় অন্য জনকে সাহায্য করেতে শেখায়।আর মানুষের একাকী বাঁচতে পারার সম্ভাবনাও কম।একজন মহা পুরুষ বলেছিলেন যে মানুষ একাকী বসবাস করে সে হয় ত খুব ভালো নয় ত খুব খারপ। তবে বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন কুসংস্কার রয়েছে,আমার মনে হয় সেগুলকে বিশ্বাস করা উচিৎ নয়।
@ফোবিয়ান যাত্রী, ধর্মছাড়া মানুষ বাচতে পারে না তা ঠিক। তবে তা কোন প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম নয়। তাহল মানবধর্ম, মনুষ্যতের ধর্ম। প্রািতষ্ঠানিক ধর্মগুলি মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে। যা যুগ যুগ ধরে প্রমাণিত।
@সুমিত দেবনাথ,
আমার মনে হয়, আসলে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মগুলি মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে না। মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মগুলির কুসংস্কারছন্ন তথ্য এবং কুসংস্কারছন্ন বিশ্বাস।
@ফোবিয়ান যাত্রী,
মানুষে মানুষে বিভেদ কি মানুষ তৈরি করেছে(যদি ধর্ম নামক কুসংস্কার মানব তৈরি না হয়)?তাহলে কোরানে এত হানাহানি কেন?বিধর্মী,ধর্মত্যাগীদের হত্যার নির্দেশ কেন?কেন হিন্দুধর্মে বর্ণপ্রথা?কেন নারীজাতির এত অপমান?এগুলো কি ধর্মের বাহিরে?এগুলো কি কুসংস্কার??এগুলো যদি কুসংস্কারই হয় তাহলে ধর্মের কান্ডারী সেই ধর্মগ্রন্থগুলোই কুসংস্কার সৃষ্টি করেছে।
@ক্লান্ত পথিক,
ভাই আপনার মন্তব্যের জবাব টাও জনাব সুমিত দেবনাথের মন্তব্যের জবাব-এ দেয়ার চেষ্টা করেছি।
@ফোবিয়ান যাত্রী, একটু খেয়াল করেন, প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম যতদিন আছে মানুষ, মানুষকে মানুষ ভাববে না। মুসলমান হিন্দুকে ঘৃণা করবে, হিন্দু মুসলমানকে ঘৃণা করবে কারণ ধর্মগুলির বিসমিল্লাতেই গলদ। এইভাবে প্রত্যেকটা ধর্মগ্রন্থে বিপরীত মতের মানুষকে ঘৃণা করতে শিখানো হয়েছে। তাই পৃথিবীতে ধর্মের জন্য এত রক্ত। ধর্মগ্রন্থগুলিকে একটু খেয়াল করলেই দেখবেন আমরা যাকে কুসংস্কার বলছি, তা বিভিন্ন ধর্মগুরুরাই আমাদের শিখয়েছেন সেই হিন্দুদের কৃষ্ণের মুখ নিসৃত বাণীই হোক, কোরানের বাণীই হোক যিশু খ্রীস্টের মুখের বাণীই হোক। ধর্ম দিয়ে কোন কালেই মানুষকে একত্রিত করা যায় নি মুসলিমদের শিয়া, সুন্নি মারামারি বা অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণা বা হিন্দুদের জাতপাত বা অন্যধর্মের মানুষদের ঘৃণা, খ্রীস্টান ধর্মের জন্য ইউরোপে ‘ডগমা’ সবই প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের ফলাফল। আমি গ্যারেন্টি দিয়ে বলতে পারি প্রাতিষ্টানিক ধর্ম যতদিন আছে মানুষে মানুষে বিভেদ মিটবার নয়। এবং তাও বলতে পারি একদিন প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম বলতে কিছু থাকবে না। কিছু মানুষ মধ্যে একটা ইশ্বর বিশ্বাস থাকে ঠিকই কিন্তু তার কোন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ থাকবে না। এবং তা পৃথিবীতে শুরু হয়ে গেছে।
@সুমিত দেবনাথ,
ভাই, ঐ যে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মগুলির মধ্যে কুসংস্কারছন্ন তথ্য এবং কুসংস্কারছন্ন বিশ্বাস। এই কুসংস্কারছন্ন তথ্য এবং কুসংস্কারছন্ন বিশ্বাস এতই গভীর ভাবে সাধারন মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে,যে সাধারন মানুষ এর থেকে বের হতে পারছে না। আসলে যদি ঈশ্বর থাকেন তাহলে একজন,এটা আমিও মানি। তা ছাড়া বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থগুলোতে প্রচুর পরিমান কুসংস্কার রয়েছে। আমি আবারও বলছি ধর্ম কুসংস্কার ছড়াচ্ছে না, কুসংস্কার ছড়াচ্ছে কিছু অসাধু মানুষ,কিছু ভুল তথ্য, ,কিছু ভুল বিশ্বাস। এই কিছু অসাধু মানুষ,কিছু ভুল তথ্য,কিছু ভুল বিশ্বাস গুলো সংশোধন করতে পারলেই পৃথিবীতে আর মারামারি,হানাহানি হবে না। আর আমি আবারও বলছি যে ধর্ম সকল মানুষকে একত্র হতে সাহায্য করে।আসলে ধর্ম হচ্ছে ব্যবহার করার জন্য।অনেকে অনেক সময় একে খারাপ ভাবে ব্যবহার করেছে আবার অনেকে খারাপ ভাবে ব্যবহার করেছে। শুধু যে হিন্দু ধর্মে বর্ণপ্রথা আছে তা না। আরও অনেক ধর্মে আছে এটা। আফ্রিকায় কিছু উন্নত নয় এরকম বিভিন্ন ধর্মে এর চেয়েও ভয়ংকর বর্ণপ্রথা বহাল আছে । ওরা একজন আরেক জনকে দেখলেই মেরে পর্যন্ত ফেলে।আমি অনেকদিন আগে একটা রিসার্চ করেছিলাম ধর্ম সম্পর্কে ।সেই রিসার্চে দেখলাম বিভিন্ন পরিবেশের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে সেইখানকার মানুষের ধর্ম। যেমন ভারতবর্ষের পরিবেশের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে হিন্দু ধর্ম। মধ্যপ্রাচ্যের পরিবেশের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে ইসলাম ধর্ম। আফ্রিকার পরিবেশের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে অনেক ধর্ম।এরকম আরও আছে।ভারতবর্ষেই প্রচুর ধর্ম আছে এরকম।।আসলে এই ধর্ম সমূহ গড়ে উঠেছে সেই স্থানের মানুষের প্রয়োজনের কারণে এবং তাদের মানসিকতার ওপর নির্ভর করে। কারণ একেক স্থানের মানুষের মানসিকতাও একেক রকম। তারা যে বড় বড় কাজ একা একা করতে পারত না তাই সে সব কাজ করার জন্য অনেকের দরকার হতো।তাই তারা ধর্মের প্রচলন ঘটায়। কিন্তু সকল ধর্মেই প্রচুর কুসংস্কারছন্ন বিশ্বাস রয়েছে। তাই শেষে বলছি যে ধর্মকে উপযুক্ত এবং ভাল ভাবে ব্যবহার করা উচিৎ।
@ফোবিয়ান যাত্রী, আপনি ব্যাপারগুলি সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করছেন দেখে ভাল লাগছে। তবে কোন এক দার্শনিক বলেছিলেন ‘মানুষ প্রথম তার আদিম প্রবৃত্তি চরিতার্থ করে তারপর ধমের আশ্রয় নেয়।’ কথাখানি যথার্থ মনে করি কারণ ধম এমন একটা জায়গা এখানে মানুষের বিশেষ একটি অনুভূতি তৈরি করে যা খুশি করানো যায়। তাই বলি মানবধর্মই শ্রেষ্ঠ ধম। তবে আপনার প্রগতিশীল মানসিকতা ভাল লাগলো৷ ধন্যবাদ৷
@সুমিত দেবনাথ,
হ্যা,আসলে মানবধর্মই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম।
ভাই আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
জানি না, উপমাটি জুতসই হবে কিনা, তবু আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, ত্রিপুরা বাংলাদেশের মায়ের পেটের ভাই। তবে আজকের এই চরম প্রতিক্রিয়াশীল ও সাম্প্রদায়িক পৃথিবীতে ‘মায়ের পেটের ভাই’কেও বিশ্বাস করা যায় না পুরোপুরি (বেশিদূর যেতে হবে না, আমাদের দেশেরই এক শ্রেণীর চরম স্বার্থপর, ও অকৃতজ্ঞ মানুষের দিকে তাকালে ‘মায়ের পেটের ভাই’দেরও আর বিশ্বাস করতে মন চাইবে না)।
যাহোক ত্রিপুরা বোধ করি বাংলাদেশের মায়ের পেটের ভাইয়ের চেয়েও বেশি। ১৯৭১ এ ত্রিপুরা কি করেছে, তা আর নতুন করে বলতে যাওয়া ধৃষ্টতারই সামিল, ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ তা। তবে আপনার লেখা আর ছবি সেই ইতিহাসেরই একটি নতুন ও জীবন্ত ছবি তুলে ধরে যেন আমাদের সামনে।
ত্রিপুরা-বাসীর এই ভালবাসার আসলে কোন পরিমাপ হয় না, আমরা আবেগাপ্লুত, কৃতজ্ঞ।
আর এই খবর জানানোর জন্য সুমিত-দাকেও জানাই অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞতা।
@কাজি মামুন, দাদা, রাজনৈতিক দলগুলি কি করবে জানি না? তবে এতটুকু বলতে পারি এক ডাকে, কালবৈশাখীর ঝড় উপেক্ষা করে যে মানুষগুলি সংহতি জানাতে একত্রিত হয়েছিলেন সেটা সম্পূর্ণ স্বার্থহীন। কোন স্বার্থ থেকেই আসেন নি। যদি স্বার্থের কারণে আসতেন তবে তারা বক্তব্যে হিন্দু মৌলবাদীদের তীব্র সমালোচনা করতেন না। কারণ তাদের অধিকাংশই হিন্দু পরিবার থেকে এসেছেন। এই সংহতির সঙ্গে কোন রাজনৈতিক কোন স্বার্থের সম্পর্ক নেই হলপ করে বলতে পারি। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
এর আগে শুনেছিলাম,ইউরোপ আমেরিকাতেও শাহবাগের গনজাগরণের সমর্থনে সভা-সমাবেশ হয়েছে।এবারে দেখতে পেলাম ত্রিপূরাতেও হল।বুঝতে পারছি শাহবাগ চত্ত্বরের নতুন প্রজন্ম এখন আর একা নয়,সংগে আছে বিশ্ববাসী।জয় আমাদের আসবেই।
@ক্লান্ত পথিক, জয় তো হবেই। উপশক্তিরা বেশিদিন টিকে থাকতে পারে না। তবে সেই সীমিত সময়ে যে আরও কত ঠেলা-ধাক্কা খেতে হবে তাই দেখার।
দুঃখটা কোথায় জানেন সুমিত দেবনাথ? আমাদের তারুণ্যের জাগরণে বিশ্ব অনুপ্রাণিত হয়, আর আমরা এই আলো ঝলমল রদ্দুরকে বিতর্কিত করার প্রয়াস পাই!
@কেশব অধিকারী, হ্যাঁ দাদা, একমাত্র মনে হয় ভারতীয় উপমহাদেশে বাংলাদেশই এমন দেশ যেখানে রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা আনতে হয়েছে। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো স্বার্থন্বেষী গোষ্ঠিরা এই তরুন্যের উচ্ছাসকে দমিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগে যায়। তাদের সঠিক দাম দেওয়া হয় না।
@সুমিত দেবনাথ, আপনার লেখা পড়লাম। ভালো লাগলো। কিন্তু আপনার এই মন্তব্যটির সাথে এক মত হতে পারছিনা। শুধু মাত্র উপমহাদেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্তের মধ্য দিয়ে এসেছে সেটা কে বলল আপনাকে? আমার নিজের দেশের স্বাধীনতা কি ভাবে এসেছে? কত বিপ্লবী প্রান দিয়েছেন আমার দেশের মুক্তির সংগ্রামে তার হিসাব কে রেখেছে? কত জন অজ্ঞাত মরণ পথে হারিয়ে গেছে স্বাধীনতা যুদ্ধে তার লেখা জোখা নেই। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হবার পরও এখন পর্যন্ত ভারতীয়রা স্বাধীনতার যুদ্ধই তো লড়ে যাচ্ছে। প্রতি দিন রক্ত ঝড়াচ্ছে এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্যই তো। আপনি সব কিছু বাদ দিয়ে শুধু ত্রিপুরার দিকে দেখুন, এখানে প্রতি বছর কত নিরাপত্তা কর্মী প্রান দিচ্ছে বা দিয়েছে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে। তারা কি এদেশের স্বাধীনতা, অখণ্ডতাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য রক্ত ঝড়াচ্ছে না? না এমনিতেই নিজের শখে মৃত্যুকে বেছে নিচ্ছে? স্বাধীনতা বা মুক্তি এমনিতে আসে না। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়।
@তন্ময় চক্রবর্তী, ভারতে স্বাধীনতার স্বাদ আমি পাই না। ভারতে শুধু ক্ষমতার হস্তান্তর হয়েছে। আর আজও স্বাধীনতা মুঠিমেয় কিছু শ্রেণীর কাছে সীমাবদ্ধ ৮০% মানুষের জন্য নয়। আর জঙ্গী কে তৈরী করে রাজনৈতিক দলগুলিই তাদের স্বার্থে তৈরী করে। আর তারাই পরে ভা্ল মানুষ সেজে সেনা তাদের পেছনে লাগায়। ত্রিপুরার উগ্রপন্থীরাও তার ব্যতিক্রম নয়।