যদি প্রশ্ন করা হয় বর্তমান পৃথিবীতে সবথেকে বড় ও শক্তিশালী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কোনটি তাহলে নিঃসন্দেহে উত্তর আসবে ক্যাথলিক চার্চ। জন্মের পর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় দুহাজার বছর অতিক্রম করেছে এ প্রতিষ্ঠানটি। এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এর ব্যাপ্তি ও প্রভাব সুদূরপ্রসারী। ক্যাথলিক চার্চের প্রধান পোপের রয়েছে একটি নিজস্ব রাষ্ট্র যা ভ্যাটিকান সিটি নামে পরিচিত এবং যা পরিচালিত হয় ক্যাথলিক আদর্শ দিয়ে। তবে জন্মলগ্ন থেকেই সুবিশাল এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে রয়েছে হাজারো অভিযোগ। উগ্রতা, ধর্মান্ধতা, জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তকরণ,অবিশ্বাসী ও ভিন্নমতাবলম্বীদের নির্বিচার হত্যা, বিজ্ঞান ও শিল্পকলার বিরোধিতা, ব্যাক্তি ও বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, নারী বিরোধীতা, অন্য ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ পোষণ, তাদের সভ্যতা ও স্থাপত্যশিল্পের সম্পূর্ণ ধংসসাধন ইত্যাদি। সম্প্রতি আবার যোগ হয়েছে সমকামীতা ও বালকদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগও। সমকামীতা অবশ্য বর্তমান সভ্য জগতে কোন অপরাধ নয় বরং একটি স্বীকৃত মানবিক অধিকার কিন্তু চার্চের পাণ্ডারা যারা সারা জীবন ধরে এসবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে আসছে ও যুগে যুগে সমকামীদের উপর অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছে তারাই যদি গোপনে সমকামী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয় তাহলে তা ভণ্ডামি ও স্ববিরোধীতার এক উজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে ওঠে। এসব অভিযোগ ও ভণ্ডামির সবগুলি নিয়ে লেখতে গেলে আস্ত একটা বই লিখে ফেলা যায়। যাই হোক, সেসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা আমার লেখার উদ্দেশ্য নয়। আমি এখানে একজন নির্দিষ্ট ব্যাক্তিকে নিয়ে আলোচনা করতে চাই। তিনি হলেন সেন্ট(সাধু? ) জেভিয়ার। ক্যাথলিক গির্জা তাকে খুবই সম্মান ও শ্রদ্ধার চোখে দেখে। তাকে উপাধি দেয়া হয় ভারতের প্রেরিত ধর্মপ্রচারক (Apostle of the Indies) এবং প্রাচ্যের রক্ষাকর্তা সাধু(the Patron Saint of the East)। সমস্ত খ্রিস্টান লেখকেরা তাকে অনুকরণীয় ধর্মপ্রচারক(model missionary) বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাই ভারতবর্ষ এবং পৃথিবীর অনেক স্থানে তার নামে মিশনারিরা গড়ে তুলেছেন নানা ধরণের প্রতিষ্ঠান যেমন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, অনাথালয় ইত্যাদি। আমাদের দেশের সেন্ট জেভিয়ার’স স্কুলটির নামও এখানে স্মরণ করা যেতে পারে। কিন্তু আসলেই কি এই মানুষটি এত শ্রদ্ধা ও সম্মানের ন্যায্য দাবীদার ছিলেন? নাকি অন্যান্য ধর্মীয় মহাপুরুষদের মত তারও ছিল আরেকটা কুৎসিত চেহারা যা মোটেই সুখকর নয়? আসুন পাঠক জেনে নেই এই সাধু সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যার মাধ্যমে আমরা সেন্ট জেভিয়ারকে পূর্ণাঙ্গভাবে চিনতে পারব।
তার পুরো স্প্যানিশ নামটি হচ্ছে ফ্রাঙ্কইস দে জেসু ওয়াই জেভিয়ার। ইংরেজিতে তাকে সংক্ষেপে ফ্রান্সিস জেভিয়ার বলা হয়। তার জন্ম ১৫০৫ সালে নাভারে নামক জায়গায় যা স্পেনের পিরিনিস পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত। তার বাবা জুয়ান দে জেসু কাজ করতেন আরাগনের রাজার রাজদরবারে। তার মা ছিলেন খুব সম্ভ্রান্তবংশীয় একজন মহিলা। জেভিয়ারের একজন বোন রাণী ইসাবেলার সভায় বেশ উঁচু পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। জেভিয়ার উচ্চশিক্ষার জন্য প্যারিস গেলে সেখানে সংস্পর্শে আসেন আরেকজন স্প্যানিশ ইগনেশিয়াসের। ইগনেশিয়াস, জেভিয়ার ও আরও ৪ জন পাদ্রী মিলে গড়ে তোলেন the Society of Jesus সংঘ। এই সংঘের সূচনা হয় ১৫ আগস্ট ১৫৩৪ সালে এবং খুব তাড়াতাড়ি এটি রোমান ক্যাথলিক চার্চের মিশনারি কার্যক্রমের ডানহাত হয়ে ওঠে। এই সংঘের অনুসারীদের জেসুইট বলা হয়। এই সংঘের সূচনা করেই জেভিয়ার অল্পদিনের মধ্যেই একজন কেউকেটা মিশনারি হয়ে ওঠেন। এদিকে প্রাচ্যে ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদ কেবল শুরু হয়েছে। পর্তুগিজরা গোয়া দখল করে ১৫১০ সালে এবং স্থানীয়দের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করতে শুরু করে। এই মিশনারি কার্যক্রম দেখভাল করার জন্য পোপ একজন যোগ্য লোক খুজছিলেন। ইগনেশিয়াস পোপকে পরামর্শ দেন যে জেভিয়ারই হচ্ছেন এ কাজের জন্য উপযুক্ত লোক। পোপ জেভিয়ারকে মিশনের রাজপরিদর্শক হিসেবে নিযুক্ত করেন এবং তাকে গোয়া পাঠান। ১৫৪২ সালে জেভিয়ার গোয়া এসে পৌঁছান। তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান গোয়ার পর্তুগিজ গভর্নর আলফনসো দিসুজা। তিনি তার জন্য বাৎসরিক ৪০০০ স্বর্ণমুদ্রা সম্মানী ধার্য করেন। কিন্তু জেভিয়ার পর্তুগিজদের নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না কারণ তারা ধর্মপ্রচারের থেকে জাগতিক ব্যাপারগুলো নিয়ে মেতে ছিল। গোয়াতে থাকাকালীন তিনি সেন্ট পল’স কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন স্থানীয় খ্রিস্টানদের মিশনারি কার্যক্রমে দক্ষ করে তোলার জন্য। খ্রিস্টান ঐতিহাসিকরা তার এই পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন কারণ এর আগে বিজিত অঞ্চলগুলিতে স্থানীয়দের দিয়ে মিশনারি কার্যক্রম চালানোর কথা কেউ ভাবেননি।
১৫৪২ এর অক্টোবরে তিনি করমানডেল তটে এসে পৌঁছান যেখানে আগে থেকেই পর্তুগিজরা দখল জমিয়েছিল এবং স্থানীয় পারাভা সম্প্রদায়ের জেলেদের ধর্মান্তরিত করেছিল। পারাভারা আগে আরব জলদস্যুদের ভয়ে সন্ত্রস্ত ছিল যারা প্রায়ই সেখানে লুটপাট চালাত। পর্তুগিজরা তাদের সাহায্য ও নিরাপত্তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় যদি তারা ধর্মান্তরিত হয়। পারাভারা এতে রাজি হয় কিন্তু তাদের ভাগ্যের আসলে কোন পরিবর্তন ঘটে নি। পর্তুগিজরা তাদের থেকে চড়া কর আদায় করত। এদের মধ্যে একটি কর ছিল বাৎসরিক ৪০০০ স্বর্ণমুদ্রা যা স্পেনের রাণীর স্লিপার(বাসায় পড়ার নরম জুতো) কেনার জন্য ব্যয় হত! কিন্তু জেভিয়ার পারাভাদের এই দুর্দশা নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত ছিলেন না। তার একমাত্র চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় পারাভাদের অধার্মিকতা। তিনি দেখেন যে পারাভারা এখনও দেব-দেবীর পূজা করে এবং পৌত্তলিক রীতি-নীতি অনুসরণ করে। তিনি এই নিরীহ গরীব জেলেদের শায়েস্তা করার উদ্যোগ নেন কারণ তারা তার মতে “দুষ্ট আত্মা” দের উপাসনা করে। এর নিম্নলিখিত বিবরণ পাওয়া যায়- “যখন ছেলেরা তাকে জানাল যে একজন মূর্তি তৈরি করেছে,তিনি তাদের সাথে গেলেন ও মূর্তিটিকে ভেঙ্গে হাজার টুকরো করে ফেললেন। তার নিষেধ সত্ত্বেও যখন কেউ মূর্তি তৈরি করত তিনি তাদের পারাভাদের গ্রামের সর্দারদের দিয়ে শাস্তি দেওয়াতেন বা গ্রাম থেকে নির্বাসিত করতেন। তিনি যখন একদিন শুনলেন যে একজন খ্রিস্টানের ঘরে মূর্তিপূজা করা হয়েছে তখন ঘরটিকে পুড়িয়ে দিতে বললেন অন্যদের সাবধান করে দেয়ার জন্য।” (History of Christianity in India published by the United Theological Seminary, Bangalore, 1982,Volume 1)
এর মধ্যে ১৫৪৪ সালে তার সামনে আরেকটি সুযোগ আসে যখন ত্রিবাঙ্কুর রাজ্যের রাজপুত্রদের মধ্যে সিংহাসন নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। প্রত্যেকেই পর্তুগিজদের সাহায্য চাইছিল জেতার জন্য। তখন গোয়ার গভর্নর জেভিয়ারকে কুইলনের তিরুবতী রাজার সভায় নিযুক্ত করেন। রাজা বলেন যে পর্তুগিজদের সাহায্যের বিনিময়ে তিনি আর্থিক অনুদান ও মালাবার উপকূলের জেলেদের ধর্মান্তরিত করতে দিতে রাজি আছেন। জেভিয়ার এতে রাজি হন ও মালাবার উপকূলে চলে আসেন। যেসব জেলেরা ধর্মান্তরিত হতে রাজি হয়নি বা পরে ধর্মত্যাগ করে তাদের হুমকি দেয়া হয় যে পর্তুগিজরা তাদের নৌকা আটক করে রাখবে এবং মাছ ধরতে দেবে না। অন্যদের ভয় দেখাবার জন্য কয়েকজনের উপর এই শাস্তি প্রয়োগও করা হয়। এখানেও জেভিয়ার আগের মতই ভয়ানক মূর্তি ও মন্দিরবিদ্বেষী ভূমিকা রাখেন। তার নিম্নরূপ বিবরণ পাওয়া যায়-“গ্রামের সবাইকে দীক্ষিত করার পর জেভিয়ার তাদেরকে গ্রামের মন্দিরটি ভেঙ্গে ফেলতে বলতেন এবং মন্দিরের মূর্তিগুলিকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিতে বলতেন।” (History of Christianity in India published by the United Theological Seminary, Bangalore, 1982,Volume 1)
গরীব জেলেরা এসবের প্রতিবাদ করতে পারত না কারণ এই সাধুকে সাহায্য করার জন্য তার পর্তুগিজ জলদস্যু বন্ধুরা হাতের কাছেই ছিল। জেভিয়ার যে এসব কাজে প্রচুর আনন্দ পেতেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় ১৫৪৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি the Society of Jesus সংঘের প্রতি তার লেখা চিঠিতে-“দীক্ষাস্নান হওয়ার পরে নব্য খ্রিস্টানেরা ঘরে ফিরে যায় এবং তাদের স্ত্রী ও পরিবারকে নিয়ে আসে তাদের দীক্ষিত করার জন্য। সবাইকে দীক্ষিত করার পর আমি নির্দেশ দেই মিথ্যা দেবতাদের মন্দিরগুলি ধ্বংস করার জন্য ও মূর্তিগুলি ভেঙ্গে ফেলার জন্য। আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবোনা আমার কেমন আনন্দ হয় যখন আমি দেখি যে যারা একসময় এসব মূর্তির উপাসনা করত তারাই এখন এসব মূর্তি ভাঙছে।”
ধর্মপ্রচারের এই “মহান” কাজে জেভিয়ারের সহযোগী ছিলেন রোম কর্তৃক নিযুক্ত ভারতের ভিসার জেনারেল(ধর্মরক্ষক)মিগুয়েল ভাস। জেভিয়ারের সাথে পরামর্শ করে তিনি ১৫৪৫ সালের নভেম্বরে পর্তুগালের রাজার কাছে এক বিশাল চিঠি লেখেন। এতে খ্রিস্টধর্ম প্রচারের জন্য ৪১ দফা পরিকল্পনা ছিল। এর মধ্যে ৩ নম্বর দফাটি হল- “আমরা সবাই যেহেতু জানি যে পৌত্তলিকতা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে এক জঘন্য অপরাধ তাই এটাই উচিত হবে যে আপনার রাজ্যের কোন এলাকায় এমনকি সমগ্র গোয়ায় যেন কোন প্রকাশ্য বা গোপন মন্দির না থাকে এবং মন্দির তৈরি করার জন্য কঠিন শাস্তির ব্যাবস্থা করা হয়। কোন কর্মচারী যেন কোন ধরণের মূর্তি তৈরি করতে না পারে, তা পাথর, কাঠ, তামা বা অন্য যেকোনো ধাতুই হোক না কেন……এবং সেন্ট পল’স কলেজের দায়িত্বে যারা আছে তাদেরকে যেন ব্রাহ্মণ ও অন্যান্য হিন্দুদের ঘর তল্লাসি করার ক্ষমতা দেয়া হয় যদি তাদের এমন সন্দেহ হয় যে ওইসব ঘরে মূর্তি আছে।” (Joseph Wicki, Documenta Indica, Vol. 1) এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে রাজা ১৫৪৭ সালের ৮ মার্চ গোয়ার ভাইসরয়কে নির্দেশ দেন সমস্ত মন্দির ভেঙ্গে ফেলতে। তবে মন্দির ধ্বংসের এই প্রক্রিয়া যে আগে ছিলনা এমন কিন্তু নয়। খ্রিস্টান যাজক ও পুরোহিতরা নিজ উদ্যোগেই স্ব স্ব এলাকার মন্দির ধ্বংস করতে উৎসাহী ছিলেন। শুধু ১৫৪১ সালেই ধ্বংস হওয়া ১৫৬টি মন্দিরের তালিকা পাওয়া যায় Tomba da Ilha des Goa e das Terras de Salcete e Bardes বইটিতে যার লেখক Francisco Pais আর বইটি প্রকাশিত হয় ১৯৫২ সালে। তবে রাজার আদেশের পর ধ্বংস প্রক্রিয়া নতুন গতি লাভ করে। History of Christianity in India, Vol. 1 অনুযায়ী সালসেতে ২৮০টি মন্দির ও বারদেজে ৩০০টি মন্দির ধ্বংস করা হয়। বাসেইন, বান্দ্রা, থানা এবং বোম্বেতে ধ্বংস করা মন্দিরের কোন হিসেব পাওয়া যায় না। তবে মিশনারি নথিপত্রে বেশ কিছু মন্দিরকে গির্জায় পরিবর্তিত করার উল্লেখ পাওয়া যায়। সেভিওন এবং নেভেন দ্বীপে অনেক মন্দির পুড়িয়ে দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এমনকি কারো বাসায় দেব-দেবীর ছবি বা মূর্তি রাখাও নিষিদ্ধ ছিল এবং নিষেধ অমান্যকারীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হত। শুধু তাই নয়,পর্তুগিজ এলাকার বাইরে কোন মন্দিরে আর্থিক অনুদান দিলে বা তীর্থযাত্রায় গেলেও প্রচুর জরিমানা দিতে হত ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হত।
স্থানীয়দের উপর চাপানো বৈষম্যমূলক আইনগুলি কেমন ছিল তার কিছু উদাহরণ নিচে দেয়া যেতে পারেঃ
১)ব্রাহ্মণদের বন্দী ও ক্রীতদাস করা হত বা নির্বাসন দেয়া হত।
২)যেসব হিন্দুরা ধর্মান্তরের ভয়ে তাদের পরিবার পরিজনকে অন্য এলাকায় পাঠিয়ে দিত তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হত।
৩)হিন্দু রীতি-নীতি ও উৎসব পালন নিষিদ্ধ ছিল।
৪)হিন্দু পুরোহিত ও যাজকদের শাস্ত্রীয় ক্রিয়াকর্ম করা নিষিদ্ধ ছিল।
৫)হিন্দুদেরকে গির্জার ভাষণ শোনার জন্য বাধ্য করা হত।
৬)পারিবারিক ঐতিহ্য ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হত।
৭)অনাথ হিন্দু শিশুদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা হত।
৮)হিন্দুদের ঘোড়ায় বা পালকিতে চড়া নিষিদ্ধ ছিল।
উপরোক্ত বৈষম্যমূলক নিয়মগুলি অন্যান্য স্থানীয় অখ্রিস্টান অধিবাসীদের জন্যও প্রযোজ্য ছিল তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ও পৌত্তলিক হওয়ায় হিন্দুদের উপর এর প্রভাব সবথেকে বেশি পড়েছিল। একইভাবে ধর্মান্তরিত খ্রিস্টানদের দেয়া হত নানা সুযোগ সুবিধা। তাদের ভূমি কর ১৫ বছরের জন্য মওকুফ করে দেয়া হত। সরকারি উচ্চপদগুলিতে তাদের নির্বিচারে নিয়োগ দেয়া হত। এভাবে ধর্মকে ব্যাবসার মত লাভজনক করে তুলেছিল জেভিয়ার ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা।
ইনকুইজিশন কি ভয়াবহ জিনিস তা নিশ্চয়ই অধিকাংশ পাঠকই জানেন। স্পেনের ইনকুইজিশন তো ভুবনবি(কু)খ্যাত। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে এই উপমহাদেশেও ইনকুইজিশন ছিল আর সেটি ছিল গোয়ায়। পাঠক অনুমান করতে পারেন কে এই ইনকুইজিশনের উদ্যোক্তা? হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন তিনি আর কেউ নন, সেন্ট জেভিয়ার। ভারতবর্ষে এসে তিনি বুঝতে পারেন খ্রিস্টধর্ম এখানের মানুষের মনে কোন স্থায়ী জায়গা করে নিতে পারে নি। বেশিরভাগই জোরজবরদস্তির ফলে বা রাজনৈতিক কারণে খ্রিস্টান হয়েছে। পুরনো ধর্ম ও রীতি-নীতির প্রতি এদের রয়েছে গভীর আকর্ষণ। তাই এদেরকে প্রকৃত খ্রিস্টান করে গড়ে তুলতে হলে প্রয়োজন ইনকুইজিশনের মত ভয়ঙ্কর ও কার্যকরী ব্যাবস্থা। তাই তিনি ১৫৪৫ সালের ১৬ মে পর্তুগালের রাজাকে চিঠি লেখেনঃ”খ্রিস্টানদের জন্য দ্বিতীয় জরুরী জিনিসটি হচ্ছে এখানে যেন পবিত্র ইনকুইজিশন স্থাপন করা হয় কারণ এখনও অনেকেই ইহুদি এবং মুসলিম আইন অনুসারে জীবনযাপন করছে। তাদের মনে ঈশ্বরের কোন ভয় নেই বা কোন চক্ষুলজ্জাও নেই। যেহেতু এই দুর্গের বাইরে এমন অনেকেই রয়েছে তাই প্রয়োজন পবিত্র ইনকুইজিশন ও প্রচুর ধর্মপ্রচারকের। রাজা যেন তার ভারতের বিশ্বস্ত ও বিশ্বাসী প্রজাদের জন্য এইসব জরুরী জিনিসের ব্যাবস্থা করেন।” (Joseph Wicki, Documenta Indica, Vol. IV, Rome, 1956) পর্তুগালের রাজা ও পোপের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকার কারণে ইনকুইজিশন তখনই স্থাপন করা সম্ভব হয় নি কিন্তু জেসুইটদের অব্যাহত চাপের ফলে ১৫৬০ সালে এর কার্যক্রম শুরু হয়। যদিও এর প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল নব্য খ্রিস্টানদের শাস্তি দিয়ে ও ভয় দেখিয়ে “প্রকৃত খ্রিস্টান” বানানো কিন্তু ক্রমে এর শিকার হয় স্থানীয় হিন্দু, মুসলিম, ইহুদি সবাই। খ্রিস্টান যাজকেরা প্রতিটি পাড়ায় নজরদারি করে বেড়াতেন ও কাউকে বিন্দুমাত্র সন্দেহ হলে ধরে এনে অকথ্য নির্যাতন চালানো হত। এমনকি অনেক ইউরোপিয়ানকেও ইনকুইজিশনের শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে। এদের মধ্যে একজন হলেন ফরাসি পরিব্রাজক ডাক্তার চার্লস ডেলন যিনি ১৬৭৪ থেকে ১৬৭৭ সাল পর্যন্ত ইনকুইজিশনে বন্দী ছিলেন। তিনি তার এই কষ্টের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন তার লেখা বইয়ে। বইটি পড়া যাবে এখান থেকে। তার এই বর্ণনার কথা উঠে এসেছে ডক্টর ক্লডিয়াস বুকাননের লেখা Christian Research In India বইয়েও যা প্রকাশিত হয় ১৮১২ সালে। উল্লেখ্য যে ১৫৬০ থেকে ১৮১২ সাল পর্যন্ত এই গোয়া ইনকুইজিশন চলে। বুকানন ১৮০৮ সালে গোয়া যান এবং স্বচক্ষে দেখেন ইনকুইজিশনের সুবিশাল হল, বিচারকক্ষ, বন্দীশালা এবং যেখানে বন্দীদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হত।
কিন্তু ঠিক কত লোককে পুড়িয়ে মারা হয়েছিলো বা অন্যান্য শাস্তি দেয়া হয়েছিলো তার সঠিক কোন রেকর্ড পাওয়া যায় না। এ বিষয়ে সমস্ত নথিপত্র ক্যাথলিক চার্চ খুবই সতর্কতার সাথে গোপন করে গেছে। ১৮১২ সালের ২০ ডিসেম্বর গোয়ার ভাইসরয় পর্তুগালের রাজার কাছে ইনকুইজিশন সংক্রান্ত নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলার আবেদন জানিয়ে একটি চিঠি লেখেন। তাকে একাজ করতে নিষেধ করা হয় এবং টমাস নরিনহো নামে একজন পাদ্রীকে নিয়োগ দেয়া হয় উক্ত নথিপত্র থেকে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহ করতে। পরে ওই নথিপত্রের কি হয় তা আর জানা যায়নি। তবে স্পেন ও পর্তুগাল ইনকুইজিশনের রেকর্ডের সাথে তুলনা করে একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে প্রচুর মানুষ এখানে বিনা অপরাধে প্রাণ দিয়েছে, অত্যাচারিত ও নির্যাতিত হয়েছে এবং প্রত্যক্ষ করেছে ধর্মের নামে মানুষ কত নিচে নামতে পারে। গোয়া ইনকুইজিশন সম্পর্কে বিশ্বখ্যাত মনীষী ও মুক্তচিন্তক ভলতেয়ারের একটি উক্তি রয়েছে-
“Goa is sadly famous for its Inquisition, equally contrary to humanity and commerce. The Portuguese monks made us believe that the people worshipped the devil, and it is they who have served him.” -Voltaire
ভারতবর্ষের এই সাফল্যের পর জেভিয়ার এবার প্রাচ্যের অন্যান্য রাজ্যগুলির দিকে নজর দেন। তিনি ১৫৪৫ সালের সেপ্টেম্বরে মালাক্কায় আসেন এবং পরবর্তী দুবছর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ধর্মপ্রচার করেন। এখানেই তার দেখা হয় একজন জাপানী পলাতক খুনের আসামী আনজিরোর সাথে। আনজিরো খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে এবং জেভিয়ারকে বোঝায় যে জাপানের ধর্ম খ্রিস্টধর্মের মতই ও জাপানীরা খুব সহজেই যীশুকে গ্রহণ করবে। জেভিয়ার তাকে ১৫৪৮ সালে গোয়ায় নিয়ে আসেন এবং মিশনারি হিসেবে প্রশিক্ষণ দেন। দাগী আসামীদের নিজের স্বার্থে ব্যাবহার করা চার্চের বহু পুরনো কৌশল। যাই হোক, জেভিয়ার এবং আনজিরো দীর্ঘ যাত্রা শেষে জাপানের কোগোশিমা বন্দরে এসে পৌঁছান। তখন জাপান প্রায় ২৫০ জন জমিদারের অধিকারে ছিল যাদের উপর মিয়াকোর সম্রাটের তেমন কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তারা উদীয়মান পর্তুগিজ শক্তির ব্যাপারে শুনেছিলেন এবং তাদের অনেকেই স্থানীয় যুদ্ধ বিগ্রহে পর্তুগিজদের সাহায্য নিশ্চিত করতে চাইতেন। এদেরই একজন জেভিয়ারকে সাদরে গ্রহণ করেন এবং তাকে স্বাধীনভাবে ধর্মপ্রচারের অনুমতি দেন। কিন্তু ভারতের মত জেভিয়ার এখানে খুব একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না কারণ তার পর্তুগিজ জলদস্যু বন্ধুরা না থাকায় তিনি ইচ্ছেমত জাপানীদের গণহারে ধর্মান্তরিত করতে পারছিলেন না। তাদেরকে হুমকি ধমকি দেয়া বা শাস্তি দেয়া তার পক্ষে সম্ভবপর ছিল না কারণ তিনি নিজেই জমিদারের অনুগ্রহে বাস করছিলেন। তাছাড়া তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে আনজিরো তাকে ভুল বুঝিয়েছে। জাপানে বৌদ্ধধর্ম ও প্রাচীন শিনতো ধর্মের সংমিশ্রণে যে ধর্ম চালু হয়েছিল তা তার খ্রিস্টধর্ম থেকে হাজার মাইল দূরে ছিল। স্থানীয় বৌদ্ধ ও শিনতো পুরোহিতরাও সংঘবদ্ধ এবং সতর্ক ছিলেন যাতে জেভিয়ার জাপানীদের ধর্মান্তরিত করতে না পারেন। জেভিয়ার তখন তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে তাদের হুমকি দিতে থাকেন যে বুদ্ধ হচ্ছেন স্বয়ং শয়তান আর যারা তার উপাসনা করে তারা পৌত্তলিকতার মত চরম ঘৃণ্য অপরাধ করার কারণে অনন্তকাল নরকের আগুনে পুড়বে। জাপানীরা জেভিয়ার ও তার ধর্মকে নতুনভাবে চিনতে পারল এবং তার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা হল। জেভিয়ার অবস্থা বেগতিক থেকে মিয়াকোর সম্রাটের কাছে গেলেন তাকে ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রস্তাব দেয়ার জন্য। কিন্তু সম্রাট তার নিজের ধর্মে সন্তুষ্ট ছিলেন এবং জেভিয়ারের মতলব বুঝতে পেরে তার সাথে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানান। জেভিয়ার ভগ্নহৃদয়ে ১৫৫১ সালে গোয়ায় ফিরে আসেন। যে অল্প কয়েকজন জাপানীকে তিনি ধর্মান্তরিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন তারা কিছুদিনের মধ্যেই আগের ধর্মে ফিরে যায়।
জেভিয়ার তার ভ্রমণকালে চীনের কথা অনেক শুনেছিলেন এবং জাপানের ব্যার্থ অভিযানের পর সিদ্ধান্ত নেন চীনে ধর্মপ্রচার করার। সেজন্য তিনি ১৫৫২ সালে চীনের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু চীনের মূলভূমিতে পৌঁছানোর আগেই তিনি কুয়ানতাং বন্দরের অনতিদূরে একটি রুক্ষ পাথুরে দ্বীপে ওই বছরেরই ২ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তার সাথে ছিল শুধুমাত্র একজন চীনা ভৃত্য। ১৫৫৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে পর্তুগিজরা তার মৃতদেহ মাটি খুঁড়ে বের করে এবং ১৫৫৪ সালের ১৪ মার্চ তা গোয়ায় ফিরিয়ে আনা হয়। তাকে প্রথমে সেন্ট পল গির্জায় ও পরে বম জেসাস গির্জায় সমাহিত করা হয়। রোম ১৬৬৪ সালে তাকে সেন্ট উপাধিতে ভূষিত করে। তার মৃতদেহ একটি কাঁচের কফিনে রাখা আছে যা বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের সময় প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। খ্রিস্টান অখ্রিস্টান নির্বিশেষে গোয়ার সাধারণ মানুষ তাকে শ্রদ্ধা ও ভক্তি করে এবং বিপদে আপদে তার অনুগ্রহ প্রার্থনা করে। কিন্তু তারা কি একবারও ভেবে দেখেছে এই মানুষটির কারণে তাদের পূর্বপুরুষদের কতটা অত্যাচার ও পাশবিকতার শিকার হতে হয়েছে? ১৫৬০ থেকে ১৮১২ সাল পর্যন্ত এই সুদীর্ঘ ২৫২ বছরে যত নিরপরাধ মানুষকে ইনকুইজিশনের আগুনে প্রাণ দিতে হয়েছে, বন্দীদশা বরণ করতে হয়েছে বা অন্যান্য নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদের কান্না কি এইসব অন্ধভক্ত যারা তাদেরই বংশধর তাদের কানে পৌঁছায় না?
সেন্ট জেভিয়ার সম্পর্কে উপরিল্লিখিত ঘটনাগুলি যে কেউ নেট বা লাইব্রেরি থেকে খুঁজে নিতে পারেন। এত কিছুর পরেও চার্চ জেভিয়ারকে ত্যাগ করেনি বা তার কর্মকাণ্ডের বিন্দুমাত্র নিন্দা করেনি বরং তাকে সেন্ট(সাধু) হিসেবে আখ্যা দিয়েছে, নানা উপাধিতে তাকে ভূষিত করেছে এবং প্রতিষ্ঠানের পর প্রতিষ্ঠান তার নামে উৎসর্গ করেছে। এতেই বোঝা যায় চার্চের কাছে সাধুতার সংজ্ঞা শুধু যেন তেন উপায়ে কার্যসিদ্ধি করা তথা নিজের সাম্রাজ্য ও বাহুবল বাড়ানো। গির্জার সাধুদের অনেকেই যেকোনো সাধারণ মানুষের থেকেও বেশি অসাধু। এদের অনেকেই উপবাস করা, খালি পায়ে হাঁটা, নিজেকে চাবুক মারা, নারীসঙ্গ বর্জন ইত্যাদি নানা ধরণের আত্মপীড়ন করে বেড়াতেন। কিন্তু যা এদের ছিল না তা হল উদার মানবতাবাদী বৈশ্বিক চেতনা। অযৌক্তিক ও মানবতাবিরোধী ধর্মীয় বিশ্বাসগুলি যে মানুষকে কতটা পাষণ্ড ও অমানুষ করে তুলতে পারে তার অনুপম নিদর্শন হচ্ছেন সেন্ট জেভিয়ার।
সাধু জেভিয়াসের প্যান্ট খোলা এই প্রবন্ধ নিসন্দেহে খুব ভাল সন্দেহ নেই-তবে এই ধরনের লেখা আরো উন্নত করা সম্ভব যদি লোকটির ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ নেওয়া যায়।
ক্যাথোলিক, রামকৃষ্ণ মিশন বা তবলীগের জামা প্যান্ট খোলা এমন কি কঠিন-ধর্ম ব্যাপারটার মধ্যে কুসংস্কার, অমানবিকতা বা অযৌত্বিকতা আছে-সেগুলো এদের মধ্যেও এসে যাবে। কিন্ত সমস্যা অন্য যায়গায়। এটা নিয়ে আমি আগেও লিখেছি। একজন ক্যাথোলিক সন্নাসী বা রামকৃষ্ণ মিশনের সন্নাসী, সারাজীবনে ত্যাগ স্বীকার করে কোন গ্রাম বা শহরে খুব ভাল একটা স্কুল বা কলেজ গড়বে। তার আদর্শে ছেলে গড়বে। মুক্তমনাদের মধ্যে আমরা ব্লগ লিখতে যত দড়, এই সন্নাসীদের মতন ত্যাগ স্বীকার করে উচ্চমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়তে আগ্রহী কজন? ভারতের সব সেরা স্কুল প্রতিষ্ঠান গুলি হয় মিশনের না হলে মিশনারীদের। কেন ব্যবসায়ীদের দ্বারা তৈরী কোন স্কুল এদের ধারে কাছে আসতে পারছে না?
আমি মিশনের স্কুলের ছাত্র। সন্নাসীদের অযৌত্বিক জীবনের সাথে সম্যক পরিচিত। আবার তাদের তাগ্যের সাথেও পরিচিত। এদের শুধু শুধু ব্লগ লিখে ওভাবে দৈত্য বানানো যায় না। এর জন্যে নিজের জীবনের মাধ্যমে দেখাতে হবে ধর্ম ছাড়াও অন্য আদর্শে এই ধরনের উচ্চমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্ভব।
আমি বহুদিন আগেই লিখেছি ডিরোজিওর আন্দোলন বিবেকানন্দের চেয়ে বুদ্ধি এবং প্রগতিশীলতায় এগিয়ে থাকলেও বিবেকানন্দ তার দর্শন ছড়াতে ডিরোজিওর চেয়ে ১০০ গুন বেশী সফল কারন বিবেকানন্দ অনেক বেশী সংঘ ভিত্তিক এপ্রোচ ( যেটা আসলে বৌদ্ধদের কাছ থেকে শেখে ক্যাথোলিকরা, আর ক্যাথোলিকদের কাছ থেকে মিশন ) নিয়ে ছিলেন। সমাজের শিক্ষা স্বাস্থ্য অথা অর্থনৈতিক কাঠামোর সাথে মুক্তমনার জড়াতে না পারলে, শুধু বুদ্ধি বৃত্তির চর্চা করে মিশন বা মিশনারীদের খাটো করা যাবে না।
ধর্মের বয়স আর খুব বেশী হলে একশো বছর। প্রযুক্তির সামনেই তারা ধ্বংশ হবে। এটাই ভরসা।
@বিপ্লব পাল,
আপনার পুরো মন্তব্যের সাথেই আমি নীতিগতভাবে একমত। শুধুমাত্র বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা করে যে ধর্মান্ধতা বা কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব না তা আমিও ভালো করেই জানি। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি অনেক বেশি সফল কারণ তারা অনেক বেশি সংঘবদ্ধ, নিজেদের আদর্শে অটল ও দায়িত্বশীল এবং এজন্য অনেক ত্যাগ স্বীকারেও প্রস্তুত। মিশনারি প্রতিষ্ঠানগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তাই গোঁড়া মুসলিমও তার সন্তানকে নটর ডেম বা হলি ক্রসে পড়াতে চায়। কোন সন্দেহ নেই আমাদের মুক্তমনাদেরও এসব কাজে জড়াতে হবে যদি আমরা সাধারণ মানুষের মনে জায়গা করে নিতে চাই। তবে তার মানে এই নয় যে তাদের অন্ধকার দিকগুলিকে তুলে ধরা যাবে না। হয়ত এধরণের লেখা পড়েই কেউ কেউ সেকুলার প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে উৎসাহ পাবে যেগুলি মানবতার জন্য কাজ করবে। আর আমি কাউকে দৈত্য করে তুলতে চাই নি বিপ্লবদা। জেভিয়ারকে যেভাবে বুঝেছি সেভাবেই তুলে ধরেছি। আমি তার এমন কোন দেবতাসুলভ গুণাবলী দেখিনি যার সম্পর্কে লিখতে পারতাম। আপনার যদি তেমনটা মনে হয়ে থাকে আপনি সেগুলি সম্পর্কে স্বচ্ছন্দে লিখতে পারেন। কাউকেই আমি মহানায়ক বা মহাখলনায়ক ভাবি না। ভালো মন্দ সবারই আছে। হয়ত তার কিছু ভালো দিক আমার চোখ এড়িয়ে গেছে। ভালো থাকবেন। (F) (F) (F)
সেদিন ডিস্কোভারি চ্যানেলে দেখলাম, ধর্ম যাজকরা ধর্ম প্রচারের নামে কি নিষ্ঠুরভাবেই না মায়া সভ্যতাকে ধ্বংস করেছে, হত্যা করেছে মায়া আদিবাসীদের। …
সারা পৃথিবী জুড়েই এখনো চলছে ধর্মের নামে এই চাপিয়ে দেওয়ার বর্বরতা। এর শেষ কোয়ায় কে জানে?
ভাবনাটিকে উস্কে দেওয়ার জন্য লেখককে সাধুবাদ জানাই। (Y)
@বিপ্লব রহমান, মায়া সভ্যতার নরবলির ব্যাপারে আপনার মতামত জানতে ইচ্ছে করছে।
@অর্ফিউস, যদিও , যতদুর জানি যে,এর প্রাদুর্ভাব অ্যাজটেক সভ্যতার চেয়ে কম ছিল বলেই ।
@বিপ্লব রহমান,
বিপ্লব দা জানে, বড়জোর একশো বছর।
অসাধারণ একটা লেখা, অনেক দিন পর আলোকের অভিযাত্রীর কাছ থেকে। শুধু একটাই অনুরোধ, আপনি দূর নক্ষত্রপানে মিলিয়ে যাবেন না এক একটা লেখার পর, আপনার দীপ্তশীখা দেখতে চাই মুক্তমনায় বছর জুড়ে। কেননা, আপনার লেখাগুলো মুক্তমনার উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের সাথে ভীষণভাবে যায়!
কাদের বলা হত ইগনেশিয়াস?
এই জায়গাটিতে হঠাৎ করেই চলে আসা হয়েছে মনে হয়। কারণ এর আগের লাইনে বলা হচ্ছিল, ‘ত্রিবাঙ্কুর রাজ্যের রাজপুত্রদের মধ্যে সিংহাসন নিয়ে ঝগড়া’র প্রেক্ষিতে পর্তুগীজ সাহায্য প্রার্থনা করার কথা। এই নিয়োগ কি সেই সাহায্যকে যুক্তিযুক্ত করে?
আমাদের দেশের এক শ্রেণীর ধর্মান্ধদেরও একইভাবে আনন্দ প্রকাশ করতে দেখেছি রামুর বৌদ্ধমূর্তি ধ্বংসের ছবি দেখে। তাই এই লাইনটি কল্পনা করতে কোন অসুবিধা হয়নি। যুগে যুগে ধর্মান্ধদের আনন্দ-হাসির ছবি বুঝি এভাবেই মিলে যায়!
অথচ এখনো এক শ্রেণীর ভারতীয় ‘পশ্চিমা উপনিবেশ-স্থাপনকারীদের’ ত্রাতা মনে করে। অবশ্য এ কথা বলার উদ্দেশ্য এ নয় যে, মুসলিম শাসকরা সবাই ধর্মের ব্যাপারে উদার ছিল, তবে এও তো সত্য যে, দীন-ই-এলাহি এ সময়েই প্রবর্তিত হয়েছিল। কিন্তু ভেবে দেখুন, কি হতো যদি মসনদে এতগুলি শতাব্দী থাকত জোভিয়ারেরা! আমি অন্তত নিশ্চিত, ভারতে মুসলিমদের চেয়ে খ্রিস্টানদের সংখ্যাই বেশী থাকত।
আহা, নরম ধাতুর মূর্তি তো জোভিয়ার গং বরদাশত করে নিতে পারত, কারণ তা হলে সেই নরম ধাতুর নরম-কোমল মূর্তিগুলো ছিন্ন-ভিন্ন করার স্বর্গীয় পুলক লাভ করতে পারত তারা।
যদিও শ্রদ্ধেয় শফিক ভাই মনে করেন, ‘তবে এই আইনের লক্ষ্য এর লক্ষ্য ছিল খ্রিস্টানদের মধ্যেই যারা heretic তদের প্রতি।’, ইনকুইজিশন যে অন্য ধর্মের মানুষ মারার অগ্ন্যুৎসবে পরিণত হয়েছিল, তা আপনার তথ্য থেকেই পরিষ্কার। ভারত বর্ষেও যে ইনকুইজিশন হয়েছিল, তা আপনার লেখা থেকেই প্রথম জানতে পারলাম। শুধু তাই নয়, আমাদের চোখের সামনে গড়ে উঠা এবং (প্রায় প্রত্যহ দেখা মেলে যার নামের স্কুলটির), সেই নামটির অজানা ইতিহাসও জানতে পারলাম এবং সে সঙ্গে আরও অনেক ইতিহাস। শেষ করব একটি তথ্য দিয়ে।
১২২৯ সালে গির্জা একটি নীতি প্রণয়ন করে এই মর্মে যে, শাসকের ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি অপরিহার্য শর্ত হল, তাকে বিরুদ্ধ ধর্মমত উচ্ছেদ করতে হবে। আর কোন শাসক পোপের হুকুমে বিরুদ্ধ মতাবলম্বীদের উপর খড়গহস্ত না হলে, ঐ শাসককেই উচ্ছেদ করা হত, অনেক ক্ষেত্রে তার সহায়-সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হত।
তবে এ গির্জারই দায়, সাধারণ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের কোন দায় নেই এখানে। আজকের এই বড়দিনের শুভলগ্নে বিশ্বের সমস্ত খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জানাচ্ছি শুভেচ্ছা। শান্তি, সুন্দর ও মুক্ত একটি পৃথিবী গড়ায় তারাও নিশ্চয় অন্য সব ধর্মাবলম্বীদের সাথে শরিক হবে। শুভ বড়দিন সবাইকে।
@কাজি মামুন,
কিন্তু মুসলিমরা তো আসলে সম্রাট আকবর কে মুসলমান বলে স্বীকারই করে না, আর ইসলামের দৃশটিতেও আকবর কিন্তু অমুসলিম বলেই স্বীকৃত, কারন অন্য ধর্মমত প্রচার করলে সেই লোক আর মুসলিম থাকতে পারে না।কাজেই মুঘল শাসন মুসলিমদের হলেও আকবরকে মুসলিম ভাবা আর তার শাসনামলকে মুসলিম শাসনামল ভাবা কি যৌক্তিক?
সঠিক কথা।
@কাজি মামুন,
ইগনেশিয়াস একজন ব্যাক্তির নাম।
সম্ভবত। কুইলন ত্রিবাঙ্কুর রাজ্যের অন্তর্গত ছিল আর তিরুবতী সেই রাজ্যেরই একজন রাজা। সুতরাং জেভিয়ারের স্বার্থসিদ্ধি হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ ছিল।
আমিও কিন্তু তাই বলেছি। নব্য খ্রিস্টানদের বেশিরভাগই নামে খ্রিস্টান ছিল। তারা হিন্দু দেব-দেবীর পূজা করত,মূর্তি তৈরি করত ও পৌত্তলিক আচার অনুষ্ঠান পালন করত। এগুলোই তো খ্রিস্টধর্ম ও চার্চের চোখে heresy। এদেরকে প্রকৃত খ্রিস্টান করে তোলার জন্য তথা heresy বিনাশ করার জন্যই ইনকুইজিশনের জন্ম। তবে পরে এর শিকার হয় অন্য ধর্মের মানুষরাও।
কি করব বলুন মামুন ভাই, লেখা পুরোপুরিভাবে মুডের উপর নির্ভর করে। অনেকবার প্ল্যান করেছি সামনের ছুটিতে লিখে ফেলব কিন্তু কিছুই হয়নি। আবার সেদিন এক বসায় পুরো লেখা শেষ করে জমা দিয়ে দিলাম। মুড না আসলে লেখা হয় না। তবে চেষ্টা করব নিয়মিত লেখা দিতে। ভালো থাকবেন। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। (F) (F) (F)
চমৎকার তথ্যবহুল উপস্থাপনা। আগে কখনো চিন্তাই করিনি এই সাধুটি এতোটা জঘন্য ছিল। তিনিতো বাইবেল দ্বারা পরিচালিত, তাই এখানে ব্যক্তি জেভিয়ার এর থেকে ধর্মের জঘন্যতাই বেশি যেহেতু তাঁর সব সকল কিছু ধর্মের বর্ম দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। ধর্ম যাজকদের এমন ডেভিয়েশান কষ্ট দেয় কেননা ধর্ম অসার হোক কিংবা সার হোক পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ ধর্মের প্রতি আস্থাশীল একই সঙ্গে ধর্মীয় সাধুদের দিকে তাকিয়ে থাকে।
অসংখ্য ধন্যবাদ লেখককে
@জটিল বাক্য,
আপনার সাথে পুরোপুরি সহমত। ব্যাক্তি জেভিয়ারকে তার প্রতিষ্ঠান বা ধর্ম থেকে আলাদা করে দেখার সুযোগ একেবারেই নেই। আমার লেখায়ও আমি এই ভাবটিই বজায় রেখেছি। তাই লেখাটি শেষ করেছি এই বাক্যটি দিয়ে-
আর এই সাধুদের দিকে সাধারণ মানুষেরা চেয়ে থাকে দেখেই তাদেরকে পুরোপুরিভাবে চিনে রাখা দরকার কারণ এদের অন্ধ ভক্তের সংখ্যা অগণিত। ভালো থাকবেন। (F) (F) (F)
লেখাটা একটু এডিট করার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এডিট করার অপশন দেখতে পাচ্ছি না। মডারেটর বা অন্যকেউ কি একটু সাহায্য করতে পারেন?
@আলোকের অভিযাত্রী,
প্রথমেই লগ ইন করুন। লেখার নিচে ডানদিকে সম্পাদনা অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করলে এডিট উইন্ডো চলে আসবে, মনের সাধে কাটাকাটি করতে পারবেন। প্রকাশ করার আগে সেইভ করতে ভুলবেন না কিন্তু। লগ ইন করে আপনার প্রোফাইলে গেলেও এডিট অপশন পাবেন।
@আকাশ মালিক,
আপনার কথামত দেখলাম মালিক ভাই। কিন্তু এডিট অপশন পাচ্ছি না। লেখার নিচে কিছু আসছে না আর প্রোফাইলে লেখার নিচে শুধু “দেখাও” অপশন আসছে। প্রোফাইলে Bulk Actions এর ঘরে সম্পাদনা অপশন দেখলাম কিন্তু তাতে ক্লিক করলে কাজ হয় না। বুঝতে পারছি না কোন ঝামেলা হল নাকি? 🙁 🙁 যাই হোক, আপনার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ। (F) (F) (F)
@আলোকের অভিযাত্রী,
দু:খিত, “contributor” দের সম্পাদনা অপশন দেয়া হয়না কারণ তাদের সব লেখা রিভিউ করে প্রকাশ করা হয়। আপনি মেইলে লেখা পাঠিয়ে দিন অথবা এডিট করে একই নামে পোস্ট করুন(mukto-mona-owner[at]yahoogroups.com), আমরা মূল লেখাটি এডিট করে দিবো।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ঠিক আছে। আমি লেখাটি এডিট করে আবার আমার প্রোফাইল থেকে পোস্ট করছি। তবে মনে পড়ছে আমার আগের লেখাটা আমি নিজেই এডিট করতে পেরেছিলাম। এই বিষয়ক নীতিমালা বোধ হয় পরে পরিবর্তন করা হয়েছে। যাই হোক, ধন্যবাদ আপনার পরামর্শের জন্য। 🙂 🙂
@আকাশ মালিক,
নতুন সদস্যদের জন্য মনে হয় এডিটের অপশন অফ লিমিটস করে রাখা হয়েছে। এখানে দেখুন
@সংবাদিকা,
মন্তব্য এডিট অপশন অফ মানা যায় কিন্তু নিজের লেখা এডিট করা যাবেনা কেন বুঝলামনা। আর আলোকের অভিযাত্রী তো নতুন সদস্যও নয়। মডুরা সব ক্রিষ্টমাস হলিডেতে চলে গেলেন নাকি?
@আকাশ মালিক,
গত ৩-৪ দিন ধরে পরীক্ষার মধ্যেও রাত জেগে সিস্টেমের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কাজ করতেসি, ২রাত সাইট বন্ধ রাখতে হয়েছে হয়তো খেয়াল করেছেন, বিভিন্ন জন লগইন-কমেন্ট জাতীয় সমস্যা নিয়ে অভিযোগ করতেসে, আমার ইনবক্সে অনেকগুলো অভিযোগ এসেছে, প্রত্যেককে যত তাড়াতাড়ি পারি সমাধান দিতে চেষ্টা করেছি। এরপরও টেকনিক্যাল সমস্যার ব্যাপারে এধরণের কমেন্ট দেখতে ভালো লাগেনা, আপনার মতো পুরানো সদস্যের বোঝার কথা মুক্তমনায় কোনো প্রফেশনাল কেও কাজ করেনা, সবাই ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ায়।
যাই হোক উপরের কমেন্টগুলো খেয়াল না করার জন্য দু:খিত, আমার আগেই দেখা উচিত ছিলো।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
(Y)
@আকাশ মালিক ভাই,
আমরা যারা সাইটটিকে আপন মনে করি, তাদের অন্তত ঐ লোকগুলোর দানকে সন্মান করা উচিত, যারা সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এই সাইটটির সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।
আমরা যারা কর্মজীবনে রয়েছি, তাদের একটা ধরাবাঁধা অবসর থাকে, যা হয়ত এখনো শিক্ষা-জীবন পার করছেন যারা, তাদের জন্য সোনার হরিণ। দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কঠিনতম কোন সাবজেক্ট নিয়ে অধ্যয়নরত কোন শিক্ষার্থীকে সারা বছরই ল্যাব, পরীক্ষা ও ক্লাসের চাপে নিরাবসর সময় পার করতে হয়, সুতরাং, এমন কোন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আমরা বিনামূল্যে যা পাচ্ছি, তা-ই কি যথেষ্ট নয়??? এমন তো নয় যে, আমরা আর কেউ সাইটটির টেকনিক্যাল দিকগুলো রামগড়ুড়ের ছানা ভাইয়ের চেয়ে ভালভাবে দেখাশুনোর দাবি করতে পারি। ব্লগের সুস্থ পরিবেশের স্বার্থেই আমাদের আরও ধৈর্যাবলম্বন করা উচিত বলেই মনে করি। আর যারা এত কষ্ট করেন, তাদের উৎসাহ দিতে না পারি, অন্তত রূঢ় বা বিদ্রতুপাত্মক মন্তব্য থেকে বিরত থাকি।
ধর্মকে চিরকালই আমার একধরনের মানসিক অসুস্থতা বলে মনে হয়। ধর্ম এবং এর ব্যাপ্তির ইতিহাস তারই প্রমান। অনেক অজানাকে সুন্দর উপস্থাপনে জানাবার জন্যে আলোকের অভিযাত্রীকে ধন্যবাদ।
@কেশব অধিকারী,
ধর্ম মানুষের স্বাধীন বিচারবুদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই সব ধরণের ধর্মীয় ও আদর্শিক মৌলবাদীই একধরণের মানসিক অসুস্থতার মধ্যে বসবাস করে। আপনাকেও ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন। (F) (F) (F)
অভিনন্দন আলোকের অভিযাত্রী, সুন্দর লেখাটির জন্য। (F)
@অর্ফিউস,
একদম ঠিক। যেমন প্রতিষ্ঠান তার কর্মচারীও তো তেমনই হবে। সেন্ট জেভিয়ার রোমান ক্যাথলিক চার্চের একজন যোগ্য প্রতিনিধি ছিলেন। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। (F) (F) (F)
আমি বরাবর ই আপনার লেখার একনিষ্ঠ পাঠক। আজকেও আপনার লেখা টা মুক্তমনায় দেখে বিশেষত লেখার শিরোনাম টা দেখে, কৌতূহলী হয়ে অখণ্ড মনোযোগের সাথে পড়ে ফেললাম। তথ্য গুলো যে আমার সব ই অজানা ছিল এমন নয়। কিন্তু , আপনার লেখা পড়ে মনে হল পুরো বিষয় টা আরো গুছিয়ে জানলাম।
এটা পড়ার সময় বেশ হাসি পাচ্ছিল। 🙂 আর বরাবরের মতই অসাধারন…………না…………চমৎকার……উঁহু………যার পর নাই ভাল লেগেছে। (Y) আর অনেকদিন পরে মুক্তমনায় কমেন্ট করলাম, লেখাটা পড়ে। ভাল থাকুন, ভাল লিখতে থাকুন। (F) (F)
@অনিরুদ্ধ,
ইনকুইজিশনের মত জঘন্য জিনিসও যে এসব ভণ্ড সাধুদের কাছে পবিত্র হতে পারে তা আমাদের কাছে হাস্যকর মনে হতে পারে বৈকি। কিন্তু একবার ধর্ম দিয়ে ব্রেইনওয়াশ হয়ে গেলে মানুষের নিজস্ব ভালো মন্দ বোধ একেবারেই হারিয়ে যায়। অন্ধভাবে নির্দেশ পালনই তার কাছে মহাপুণ্যের কাজ বলে মনে হয়। কষ্ট করে লেখা পড়ার ও একটি চমৎকার মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। (F) (F) (F)
এতো রীতিমতো রাজাকারের মন্ত্রিত্ব লাভ! :-X :-X :-X
@সুমেধ তাপস,
জেভিয়ার কোন রাজা বা রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন সেটাও তো দেখতে হবে। যে ধর্ম ও যে প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব তিনি করেছেন সেখানে রাজাকাররাই মন্ত্রিত্ব লাভের জন্য সবথেকে উপযুক্ত দাবীদার। সাধুতার সংজ্ঞা চার্চের কাছে শুধুই কার্যসিদ্ধি ছাড়া আর কিচ্ছু না। ভালো থাকবেন। (F) (F) (F)
সেন্ট জেভিয়ার এর সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানা ছিল, খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ। (Y)
@নাসিফুল হক,
লেখা পড়ার ও মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। (F) (F) (F)
জার্মান “ফাইনাল সল্যুশন” কারণে বিশ্ববাসী বিশেষত ইউরোপীয়রা স্পেনিশ “ইনকুইজিশন” এর কথা প্রায় ভুলতেই বসেছে।
তথ্যবহুল লেখা, নতুন বিষয় তথা ভারতীয় উপমহাদেশে স্পেনিশ ইনকুইজিশনের ঘটনা সম্পর্কে জানা গেল।
ধন্যবাদ।
@সংবাদিকা,
@আলোকের অভিযাত্রী,
আসলে রোমান ইনকুইজিশন এবং স্পেনিশ ইনকুইজিশন বহুল প্রচারিত।
ব্যাপার হল, পর্তুগালের রাজা প্রথম ম্যানুয়েল, স্পেনিশ রাজকুমারী মারিয়া অফ অ্যারাগনকে বিয়ে করার পথ সুগম করতে এই ইনকুইজেশনের ডাক দেন; যেন স্পেন রাজ মারিয়ার মা-বাবা ফার্ডিন্যান্ড এবং ইসাবেলা খুশি হয়!!!! পরে ম্যানুয়েল পুত্র জনের শাসন আমলে এটা পুরোদমে কার্যকর করা হয়।
ইংল্যান্ডের রাজা অস্টম হেনরির কথা মনে পরে গেল…… :-s
and The Monarchs used to live above the law…..
ভাগ্যভালো রিপাবলিকে জন্মেছিলাম…… 😕
চমৎকার, অসাধারণ তথ্যবহুল একটি লেখা। অনেক অজানা বিষয় জানা হলো। এই মানুষটা সম্মন্ধে কিছু জানা ছিলনা। খৃষ্টানদের এই হিংসা, বিদ্বেষ, পরধর্মের অবমাননা, নিজের শ্রেষ্টত্ব দাবী, সাম্প্রদায়ীকতার সবক তাদের ধর্মগ্রন্থেই আছে। ইংল্যান্ডে সমকামী পাদ্রীদের শিশু ধর্ষণের খবর কিছুদিন পরপরই পত্রিকায় আসে। কিন্তু এরপরও শনি-রবি চার্চে মানুষের ভিড় দেখে অবাক হতে হয়।
@আকাশ মালিক,
ধন্যবাদ মালিক ভাই। খ্রিস্টান সাধুদের অসাধুতার বিস্তারিত বিবরণ দিতে গেলে একটা সিরিজ লিখে ফেলা যাবে। আপাতত আমাদের ভারতবর্ষের এই রক্ষাকর্তা সাধুকে দিয়ে শুরু করলাম। আর জেভিয়ারের কর্মকাণ্ডকে তার ধর্ম থেকে আলাদা করে দেখার সুযোগ একেবারেই নেই। তার প্রত্যেকটি কাজের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন বাইবেলেই আছে। পরধর্ম বিদ্বেষ, অন্যের উপাসনালয় ভাঙ্গা, তাদের উপর অত্যাচার করা এগুলি খ্রিস্টধর্মের জন্মগত বৈশিষ্ট্য। জেভিয়ার নিষ্ঠার সাথে সেই ঐতিহ্য অনুসরণ করেছেন মাত্র। লেখা পড়া ও মন্তব্য করার জন্য শুভেচ্ছা। (F) (F) (F)