অনেক কেষ্ট বিষ্টু থাকার পরও ম্যাডাম শেষপর্যন্ত তার গাড়িতে তুললেন সরলমনা লোকমানকে। জনশ্রুতি আছে, পঞ্চাশোর্ধ লোকমানের মুখে মা ডাক শুনতে বড় ভালবাসেন ম্যাডাম। তাছাড়া, লোকমানের বোকা বোকা প্রশ্নও ব্যাপক আনন্দ দেয় ম্যাডামকে, রাষ্ট্রচিন্তায় উদ্বিগ্ন ম্যাডাম ক্ষণিকের তরে খিলখিল করে হেসে উঠেন। তাছাড়া গোপনীয়তার স্বার্থে ম্যাডাম যার তার সাথে মন খুলে দু’চারটা কথাও বলতে পারেন না। কিন্তু এই সরলমনা লোকমানের সাথে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে বাক্যালাপ করেন। ম্যাডাম ভাল করেই জানেন, লোকমান জান দেবে, তবু ম্যাডামের মান যেতে দেবে না।
লোকমানকে গাড়িসঙ্গি করে ম্যাডাম যে ভুল কাজ করেননি, তার প্রমাণ মিলতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। গাড়িতে ওঠার পর থেকেই সরলমনা লোকমান প্রশ্নের থুবড়ি ছুটিয়ে যাচ্ছে। যেমন, তার প্রথম প্রশ্নটা ছিল:
‘আম্মা, আপনে টিপাইমুখের কথা কইছেন?’
ম্যাডাম হাসেন। এরকম একটা কিছুই তিনি অনুমান করছিলেন লোকমানের কাছ থেকে, বেচারা লোকমানের অস্থিরতা দূরীকরণের প্রচেষ্টা চালান, ‘টিপাই-মুখের কথা বলব না মানে? ইন্ডিয়া আশ্বাস দিয়েছে, তারা বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর হয় এমন কিছু কখনোই বরদাশত করবে না।‘
‘রানি সুলতানারেও তো ইন্ডিয়া একই কথা কইছিল, আম্মা। কিন্তু ইন্ডিয়া তো কথা রাখবার পারে না। টিপাইমুখ টিপ টিপ কইরা আগায় যাইতেছে।’- উদ্বিগ্ন কণ্ঠে প্রশ্নে করে লোকমান।
‘দূর বোকা, সুলতানা মিথ্যা কথা বলেছে! সুলতানা হল নতজানু স্বভাবের। তাই ওকে সত্য-মিথ্যা মিশিয়ে একটি কিছু বুঝিয়ে দেয়, আর ও তাই গড়গড় করে বলে‘ –ম্যাডামের ত্বরিত উত্তর।
‘এইডা তো ভাইবা দেখি নাই, আম্মা। ওরা তাইলে আপ্নেরে বেজায় ভয় পায়! খুব ভাল লাগল, আম্মা। মনে পইড়া যাইতেছে, আপনে একবার এম্পিগো যে চোখ রাঙ্গানিডা দিছিলেন না! মনে আছে, চুপ বেয়াদ্দপ, হো হো, হো হো’ –লোকমানের হাসি থামতেই চায় না।
ম্যাডামও খিল খিল হাসে। লোকমানের বোকার মত হাসি দেখে না হেসে পারা যায়!
‘আইচ্ছা, আম্মা, আপনার এই সফরের উদ্দেশ্য কি?’
‘দেশটির সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানো।‘
‘দেশটির সাথে আপনাদের?’
‘হ্যা আমাদের, কেন তোমার সন্দেহ হচ্ছে?’
‘না, সন্দেহ হইব ক্যান, সম্পর্ক উন্নয়ন তো মাশাল্লা অনেক আনন্দের সংবাদ। তয় আম্মা এই অসাধ্য সাধন কেমনে করলেন? আমরা শুনছিলাম, দ্যাশের সাথে দ্যাশের সম্পর্ক হয়, কিন্তু আপনেরা একটা দল হইয়া শেষমেষ ইন্ডিয়ার মত একটা বড় দ্যাশের লগে সম্পর্ক কইরা ফালাইলেন?’
‘আচ্ছা, এতক্ষণে বুঝা গেল। তুমি আসলেই একটা আহাম্মক। আমি তো ‘আমাদের’ বলতে ‘আমাদের দেশ’কে বুঝিয়েছি। যারা দেশকে ভালবাসে, তাদের কখনো আলাদা করে ‘দেশ’ শব্দ উচ্চারণ করতে হয় না। তারা ‘আমাদের’ বললেই, বোঝা যায়, তারা ‘দেশের’ কথাই বলছে। অথচ তুমি গাধা হওয়ায় তা বুঝতে পারনি।‘
‘আসলেই, আম্মা, আমি কি বুকা। আচ্ছা, আম্মা, আপনে নিশ্চয়ই কড়া কড়া কথা শুনাইয়া দিয়া আসছেন তাগো?’
‘কড়া কথা কেন?’
‘আম্মা, আপনে কি ফেলানি, হাবু শেখের কথা ভুইল্যা গ্যাছেন? বিএসএফ যে গুলি কইরা একের পর এক সীমান্তে মানুষ মারতাছে, তা আপনে কন নাই?’
‘তুমি তো আচ্ছা বেকুব, কোন বাড়িতে বেড়াতে গেলে সেই বাড়ির লোকদের মুখের উপর কি কড়া কথা বলতে আছে? তাছাড়া, আমি ওখানে গিয়েছি আমাদের দুটি দেশের মাঝে ভগ্নিত্ব-বোধ জোরদার করার জন্য। ভগ্নিতে-ভগ্নিতে মিলে মিশে থাকতে চাই আমরা।’
‘এইডা কি কন, আম্মা, আপনে বেড়াইতে গ্যাছেন? কয়দিন আগেও তো আপনে দেশি-বিদেশি সব দখলদারদের প্রতিহত করবার ডাক দিছেন। যারা আমাগো তেল-গ্যাস-পানিসহ সবকিছু লুইটা পুইটা খাইতেছে, ট্রানজিটের মাধ্যমে দেশ দখলের পায়তারা করতাছে, বন্দর, শিল্প, বাণিজ্য সব কিছু হাতায় নেয়ার ষড়যন্ত্র করতাছে, তাগো বিষদাঁত ভাইঙ্গা দেবার আহবান তো আর কেউ না, আপনেই জানাইছেন, আম্মা অবতার। তাইলে সেই শত্রু দ্যাশে আপনে কি কইরা বেড়াইতে যাইতে পারলেন? আমি তো কিছুই বুঝতাছি না, আম্মা। মনে লয়, আমি ভুল শুনছি।‘
‘আচ্ছা বিপদে পড়া গেল তো তোমাকে নিয়ে! তোমাকে বুঝাই একটা। আর তুমি বোঝ আরেকটা। আমি তো তোমাকে একটা উদাহরণ দিলাম মাত্র। ওরা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এখন আমি তো ওদের বাড়ি যেয়ে ওদের সাথে ঝগড়া করতে পারি না। আমি বরং কাজ করছি কৌশলে। স্পষ্ট বলে এসেছি, বর্ডার কিলিং আমাদের দুটি দেশের মধ্যকার বিরাজমান চমৎকার সম্পর্ক নষ্ট করছে।’
‘চমৎকার সম্পর্ক নষ্ট করতাছে??? তার মানে, আগে সম্পর্ক ছিল?‘
‘ওহ, তুমি এসব কুটনৈতিক ভাষা বুঝবে না। শুধু আমাকে বল, আমরা কি এমন দেইনি ইন্ডিয়াকে, যা সুলতানা দিচ্ছে। তবু সুলতানা কিছু কুটনৈতিক কথা বলে সম্পর্ক ভাল করে নিয়েছে। আমিও এখন সেই কথাগুলো বলার চেষ্টা করছি। আসলে পররাষ্ট্রনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নাই, স্থায়ী শত্রু-মিত্র বলে কিছু নাই, স্থায়ী সম্পর্ক বলতে কিছু নাই, ভাল সম্পর্ক-খারাপ সম্পর্ক বলে কিছু নাই। সম্পর্ক একটা কুটনৈতিক শব্দ, বুঝলে হে বোকা লোকমান।’
‘বুঝতে পারছি আম্মা। মানে, কারো লগে সম্পর্ক থাকলে আমরা বুঝুম যে, হেই সম্পর্কের পাছায় একটা কুট নীতি কাম করতাছে, তাই না, আম্মাহুজুর? যাউকগা, আমাগো বুঝুনের কুনো দরকার নাই। আপনে বুঝলেই চলবো, আম্মা। আপনে আমাগো জননী। জননী নিজের জান-সম্ভ্রম দিয়া হইলেও সন্তানরে রক্ষা করে, এইডা আমরা জানি। তয় মনে একটা ছোটটু কৌতূহল জাগতাছে। আগে মনে হইছিল, আপনে এই দ্যাশটারে অন্তর থেকে অপছন্দ করেন।’
‘এখন যে পছন্দ করি, কে বলল? আমি সবাইকে পছন্দ করি না, বুঝলে? সবাইকে পছন্দ করতে হয় না। ভাল দেখে একজনকে বাছাই করতে হয়। যেমন, আমি পছন্দ করি বর্তমান দুনিয়ার মোড়ল আম্রিকাকে। আর বাই ডিফল্ট আম্রিকা যারে ভালবাসে, আমারও তাকে ভালবাসতে হয়।‘
‘কিন্তু আমি তো শুনছিলাম, আপনে চায়নারেও খুব ভালবাসেন।‘
‘ধুর, চায়নার কথা বলো না। ওরা দেহে যেমন ছোট, মনের দিকেও তেমন ছোট। মুখেই যত পিরীতি, কামে নাই। এই দেশে বোমা পড়লেও ওরা কিছু বলবে না। শুধু নিয়ম মাফিক মৌখিক প্রতিবাদ জানিয়ে দায়িত্ব সারবে।‘
‘আইচ্ছা, আরব দেশের লগে আপনের অনেক দহরম-মহরম, তাই না আম্মা? একজন পবিত্র মানুষ হিসেবে আপনি পবিত্র দ্যাশের সাথে সম্পর্ক রাখবেন, এইডাই তো স্বাভাবিক।‘
‘ওরাও আম্রিকার প্রেমিক। কান টানলে মাথা আসে। আমি শুধু আম্রিকারে খুশি করতে চাই, বুঝলে, শুধু আম্রিকা। তাহলেই দেখবে, কেমন সব দেশ সুড়সুড় করে আমার কাছে চলে আসবে। সুলতানার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে সবাই।‘
‘তাইলে, আপনে আপাতত আর ইন্ডিয়ার নাম মুখে লইবেন না, তাই না, আম্মা?’
‘যাকে অন্তর থেকে ভালবাসি না, ভাবছি, তার নাম আর সত্যিই মুখে আনবো না।‘
‘কিন্তু দ্যাশের মানুষ তো তাইলে এই দ্যাশের অপকর্মের কথা ভুইলা যাইতে পারে, আম্মা।‘
‘না, ভুলবে না। আনন্দের ব্যাপার হল, মানুষজন এখন শিক্ষিত হয়েছে। কোন কিছু হলে নিজে থেকেই ইন্ডিয়ার দোষ দেয়। আমাদের কিছু বলে দিতে হয় না। যেমন, লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ লোকদের উপর জরিপ করে দেখা গেছে, তাদের অনেকেই মনে করে, সরকার ইচ্ছাকৃত ভাবে এটা করছে বিদ্যুৎ সেক্টর ইন্ডিয়ার হাতে তুলে দেয়ার জন্য। সুতরাং, বুঝতেই পারছ ব্যাপার কত দূর গড়িয়েছে। এখন সিস্টেম আপন গতিতেই চলবে। আমাদের আর আলাদাভাবে উদ্দীপনা দিতে হচ্ছে না জনতাকে। আজ জেগেছে এই জনতা, এই জনতা….।‘
‘কিন্তু আম্রিকা তো জামাতরে আবার পছন্দ করে না, আম্মা। তাইলে জামাতরে জোটে রাইখা আম্রিকারে কেমনে ম্যানেজ করবার পারবেন?’
‘সিদ্ধান্ত নিয়েছি, জামাতকে আগামী ইলেকশানে জোটেই রাখবো না।‘
‘সেকি আম্মা, তাইলে তো আমাগো ভরাডুবি হইয়া যাইতে পারে।‘
‘কেন, একানব্বই সনে তো জামাত আলাদা ইলেকশান করেছিল। যদিও তলে তলে রেখেছিলাম। এবারও এদের তলে তলে রাখব, ভাবছি। আম্রিকা কিচ্ছুটি টের পাবে না। সত্যি বলতে কি, প্রকাশ্যে ব্যাটাদের নিয়ে সত্যিই লজ্জায় পড়তে হয়! এখনো মধ্যযুগে বাস করে। ‘
‘আম্মা, একটা জিনিস জানতে ইচ্ছা হইতেছে। আপনিই কি একলাই কথা কইছেন? ওরা আপনেরে কিছু কয় নাই? ওগো তরফে কোন দাবী-দাওয়া নাইকা?’
‘হ্যা, ওরা সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছে’।
‘আপনি কি বললেন?’
‘আমি বলে দিয়ে এসেছি, আমার দেশের পবিত্র মাটি ওদের দেশের সন্ত্রাসীদের কখনোই ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।‘
‘কিন্তু আম্মা, এই কথাডা তো রানি সুলতানার মুখেও হুনছি। কম কইরা হইলেও হাজারবার।‘
‘তুমি অকাট মূর্খ। এইটা সুলতানার বা আমার নিজের তৈরি ভাষা না। এটা হইল সরকারী ভাষা। সরকারে থাকলে যে কেউই এই ভাষায় কথা বলতে পারে।‘
‘কিন্তু আম্মা আপনে তো সরকারে নাই। তাইলে আপনের মুখে এই কথা ক্যান?‘
‘তুমি কি সময়কানা নাকি?’
লোকমান ঘড়ির দিকে তাকায়, ‘না, আম্মা, আমার সময় জ্ঞান এখনো ফকফকা। এই দ্যাখেন, আমি আপনেরে সময় কইয়া দিতিছি, এখন সকাল আট ঘটিকা, ৩১ শে অক্টোবার, ২০১২ ইংরেজি সন। আর বাংলা তারিখ হইল…’
‘ঠিক আছে, নিষ্কর্মা বাংলা তারিখ বলার কোন দরকার নেই।‘
‘কিন্তু সময়ের লগে সরকারী ভাষার কি সম্পর্ক, এইডাই তো অহন তামাত মাথায় ঢুকলো না, আম্মাবতার।’
‘তুমি চিরকালই বোকা রয়ে গেলে। সময়ের সাথেই তো সরকারী ভাব ও ভাষার সম্পর্ক। আমার বা সুলতানার কথাবার্তা বুঝতে হলে এখন থেকে ঘড়ি দেখবে সবসময়। আর সঙ্গে নির্বাচনের তারিখটাও মিলিয়ে নিও।‘
লোকমান একবার ঘড়ি দেখে, একবার ম্যাডামের দিকে তাকায়। ম্যাডাম ওদিকে উচ্চস্বরে আওড়ে যাচ্ছেন রবীন্দ্রনাথের কবিতা,
‘দেবে আর নেবে, মেলাবে মিলিবে’।
আপনার লেখার হাত দিনে দিনে খুবই পরিপক্ক হয়ে উঠেছে। তবে গল্পে কোন নাটকীয় চমক টমক থাকলে ভাল হয়। কিছু জায়গা গৎবাধা হয়ে গেছে একেবারে।
তা ম্যাডামের পরবর্তী মিশন কি হতে পারে বলে আপনার মনে হয়? আম্রিকা সফর?
@অভিজিৎ-দা,
আপনার মন্তব্যে পেলে আমার কি যেন একটা হয়, কি জবাব দেব ভেবে না পাই….এমনই পুলকিত হয় চিত্ত, আপনার এমন অপাত্রে স্নেহ বর্ষণ আমাকে আবেগ-রুদ্ধ করে………..
গৎয়ের বাঁধন থেকে নিজেকে মুক্ত করে আনার চেষ্টা করব, সামনের বার থেকে, দেখি……….
ইউনুস ইস্যুতে মহা ত্যক্ত হলেও আম্রিকা আপাতত চুপচাপ। ইন্ডিয়া বুঝিয়ে থাকতে পারে, বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় এলে মৌলবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে, বাংলাদেশ হয়ে যেতে পারে বাংলাস্তান, দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে, ইন্দো-আম্রিকান স্বার্থ বিপন্ন হতে পারে, যা ইউনুস ফ্যাক্টরের চেয়ে অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। যাহোক, ম্যাডাম এই ইস্যুতে হয়ত মুচলেকা দিয়ে এসেছেন ইন্ডিয়ায়, আর এ টুকুই যথেষ্ট হতে পারে আম্রিকাকে কনভিন্স করার জন্য। তবে গুরু দক্ষিণা বলে একটা কথা আছে না! আম্রিকার পদধূলি মেখে নির্বাচন করলে কেমন একটা আলাদা শক্তি পাওয়া যায়! আগে থেকেই যেন এক ধাপ এগিয়ে থাকা যায়!
@কাজি মামুন,
এতক্ষনে না আলোচনার গাত্র রঙ্গী-ন হইলো :))
হহ্ ………… :))
চমৎকার লেখা। ধন্যবাদ লেখককে। (Y) :clap
@ভক্ত,
ধন্যবাদ, ভক্ত।
কাজি মামুন,
লেখার ধরনটা ভালো লেগেছে! উপড়ে জনাব সফিকের সাথে আমিও খানিকটা আশাবাদী তবে, বি এন পি-কে আরোও কিছু ব্যপারে মুখ খুলতে হবে যেমন-
১। যুদ্ধাপরাধী, পাকিস্তান এবং সৌদি তোষন
২। আভ্যন্তরীন সরকারী সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রন
৩। শিক্ষানীতির আধুনিকায়ন
৪। ভারত, চীন, জাপান, দক্ষিন কোরিয়া সহ পূর্ব এশিয়ার শিল্প, শিক্ষা-সংস্কৃতি এবং স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগে তার সরকারের সহযোগীতা নীতির স্পষ্ট কর্মসূচী
৫। রাষ্ট্রনীতি থেকে ধর্ম তথা ধর্মীয় উগ্রতা পরিহার
৬। পার্বত্যচট্টগ্রাম ইস্যূ
৭। ট্রান্সজিট পাস
৮। পরিবেশ দূষন নিয়ন্ত্রন
৯। শক্তি
১০। রপ্তানী বানিজ্য এবং অর্থনীতি।
আমার মনে হয় এই বিষয়গুলোর ব্যপারে তাঁর সরকারের পরিকল্পনা আগামী নির্বাচনের নিয়ামক হবে।
@কেশব অধিকারী,
আপনি সুনির্দিষ্টভাবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট তুলে ধরেছেন যা কমবেশী যে কোন রাজনৈতিক দলেরই নির্বাচনী ইস্তাহারে থাকা উচিত। এগুলোর সাথে চাই সম্পূর্ন স্বাধীন ও শক্তিশালী দূর্নীতি দমন কমিশন আর নির্বাচন কমিশন; চাই সরকারী কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা আর আইনের প্রয়োগ। যেকোন নীতি নির্ধারনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থই হোক প্রধান শর্ত।
@কেশব অধিকারী,
খুব ভাল কিছু দফা তুলে ধরেছেন, কেশবদা! তবে আমি নিশ্চিত, আপনি এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন অংগীকার বিএনপির কাছ থেকে পাবেন না আগামী নির্বাচনে। যেখানে আওয়ামী লিগ ধর্মীয় ইস্যু ও ইন্ডিয়া ইস্যু নিয়ে সোজাসাপ্টা কথা বলতে ভয় পায়, সেখানে আগামী নির্বাচনে বিজয় প্রত্যাশি বিএনপি ভারতবিরোধী ও ধর্মীয় ভোটব্যাংক হারানোর রিস্ক নেবে, সে কথা খুব কস্টকল্পিত মনে হচ্ছে। অভিজ্ঞতা বলে আপনার সুন্দর প্রত্যাশাগুলো বাস্তবায়িত হবে না।
আর উৎসাহিত করার জন্য অনেক ধন্যবাদ, আপনাকে। (F)
সঠিক। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের আচরন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মত।
ভুল। বিএনপি ভারত কার্ড ও ধর্ম কার্ড – দুটোই বহাল রাখবে। তারা জামাতকে যেমন তলে তলে রাখবে, তেমনি স্থানীয় নেতাদের দিয়ে ভারত কার্ডও খেলবে মনের আশ মিটিয়ে। শুধু বাইরের লোকজন কিচ্ছুটি টের পাবে না!
ভুল, অন্তত আমার চোখে। আমার ব্যক্তিগত অবসার্ভেশন হল, ভারত বিরোধীতা মহামারি আকার ধারন করেছে। গার্মেন্টস জ্বালাও-পোড়াও ভারত করাচ্ছে, লোডশেডিং ভারত করাচ্ছে, বিডিআর হত্যাকান্ড ভারত করাচ্ছে, একুশে আগস্ট, নাফিস কাহিনি, ১৭ই আগস্ট, সমুদ্র বিজয়- সব ভারত করাচ্ছে। এভাবেই প্রচার করছে বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা। নিজের কানে মানুষকে এভাবেই ভারতের দিকে অঙ্গুলি হেলন করতে দেখেছি।
একটা উদাহরন দেই। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি শ্রেনীকৃত ঋণের (অনাদায়ী কুঋণ) এর নিয়মকানুন কঠিন করেছে যা অনেক আগে থেকেই প্লান করা ছিল, বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এর ফলে ব্যাংকগুলোর মুনাফা সাময়িক কমে গেলেও দীর্ঘমেয়াদে দেশের ব্যাংকিং ও ফাইনান্সিয়াল সেক্টর শৃংখলা ফিরে পাবে। অথচ কয়েকদিন আগে, কিছু উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিকে বলতে শুনেছিঃ ”ইন্ডিয়া এইবার আমাগো ব্যাংকিং সেক্টরে হাত দিছে। ব্যাংকগুলো ভাল ব্যবসা করতেছিল, দ্যাশ আগাইয়া যাইতেছিল। এখন এই ব্যাংকিং সেক্টরডারে ধ্বংস কইরা দেয়ার জন্য হাসিনার সরকাররে দিয়া এই নিয়ম বানাইছে। ইন্ডিয়া আমাগো ফিনান্সিয়াল সেক্টরও কব্জা করতে চায়। র’ প্লান বাস্তবায়নে মাঠে নামছে।”
তাহলে বুঝুন অবস্থা? তাদের নতুন নিয়মে আপত্তি থাকতেই পারে এবং এজন্য তারা সরকারের সমালোচনাও করতে পারে। কিন্তু তারা সরকারকে সরাসরি দোষ দিচ্ছে না, ইন্ডিয়া সরকারকে দিয়ে করিয়েছে, তাদের ইন্ডিয়া-মেনিয়া তাদের এই বার্তাই দিচ্ছে।
@কাজি মামুন,আমি এখনো বিএনপি’র আগামী নির্বাচনের আগের স্ট্র্যাটেজী ঠিক কি হবে এটা জানতে পারি নি, তাই আমার ভুল হতেই পারে। তবে আজকের এই ইন্টেনসিভ মিডিয়ার যুগে, যেখানে উপজেলা চেয়ারম্যান কাউকে থাপ্পড় দিলে সেটাও জাতীয় নিউজ হয়ে আসতে দেরী হয় না, সেসময়ে থেকে বিএনপি কেমন করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এক স্ট্র্যাটেজী আর তলে তলে আরেক স্ট্র্যাটেজী চালাবে সেটা আমি বুঝতে পারছি না। বিশেষ করে বিএনপি’র মতো একটা ডিসওর্গানাইজড দল।
আপনি হয়তো আপনার আশেপাশে অনেক ভারতবিদ্বেষী লোকজনের দেখা পান এজন্যে আপনার মনে হচ্ছে ভারতবিরোধীতা দিনে দিনে বাড়ছে। আমার নিজের গত পনের বছরের ইম্প্রেশন এর উল্টা বলে। আপনি যেইসব উদাহরন দিয়েছেন, এরকম উদাহরন গত ৪০ বছর ধরেই চলছে। এরকম কথা বাংলার মানুষ আমেরিকাকে নিয়েও বলে। রাস্তায় কলার ছিলকায় পা পিছলালেও বলে আমেরিকা ষড়যন্ত্র করে কলার ছিলকা ফেলে রেখেছে।
আমার মনে হয় দেশের অধিকাংশ লোক খালেদা জিয়ার এই ভারত সফরকে পজিটিভলিই নিয়েছে। এবং বেশীর ভাগই আশা করছে এর ফলে আগামী রাজনীতিতে পজিটিভ পরিবর্তন হবে। অবশ্য বেশ কিছু আওয়ামী নেতা-সমর্থকদের প্রতিক্রিয়ায় মনে হচ্ছে তাদের মাথায় আকাশ ভেংগে পড়েছে।
@সফিক ভাই,
তাই কি? সেক্ষেত্রে ‘পজিটিভিটি’ বলতে কি বোঝানো হচ্ছে, তা পরিষ্কার করতে হবে আগে।
আজ এক চরম ভারত-বিরোধী ব্যক্তিকে প্রশ্ন করেছিলাম, ম্যাডামের ভারত সফরকে সে কি চোখে দেখছে? সে বলল, সে পজিটিভলি (আপনার ‘পজিটিভ’ শব্দ, শফিক ভাই) দেখছে। তার কথা, আগামী ইলেকশানে এই দেশের মানুষ আওয়ামীলীগরে ভোট দেবে না। তারা বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। তবে শক্তিধর ইন্ডিয়া মানুষের এই ইচ্ছা নস্যাৎ করে দিতে পারে। তাই ইন্ডিয়াকে সামান্য ডজ (মানে, ধোকা ) দেয়া দরকার, যাতে অন্তত তারা নিস্ক্রিয় থাকে, বিএনপিতে সমর্থন না দিক। আর খেলায় জিততে এরকম ডজ দেয়া যেতেই পারে। অন্যায় নয়।
এই লোকের যুক্তি এক আওয়ামী ভক্তের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, ছিয়ানব্বইতে খালেদার পতনে জামাতকে শরীক করার প্রশ্নে উনি বলছিলেন, ‘জানেন না, কাটা দিয়ে কাটা তুলতে হয়। যে করেই হোক, আওয়ামি লিগকে ক্ষমতায় যেতে হবে। তারপর ধরা যাবে রাজাকারদের কষে। তার আগে কিছু বন্ধুত্বের অভিনয় করলে কি এমন দোষ’। উপরের আলোচিত ব্যক্তিও হয়ত ভাবছে, বিএনপি কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তারপর ইন্ডিয়ারে দেখে নেয়া যাবে।
আমার প্রশ্নটি নীতি-নৈতিকতার। কোন পক্ষ অবলম্বনের না।
@কাজি মামুন,আমি পজিটিভ পরিবর্তন বলতে কি বুঝিয়েছি তা আমার প্রথম মন্তব্যে পরিষ্কার বলা আছে। আপনি না বুঝতে পারলে সেটা আপনার অক্ষমতা।
বিএনপি তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনে ক্ষমতায় যেতে চাইলে আপনার কোনো আপত্তি নেই বোধকরি? আপনি কোন পক্ষের এটা আমি জানি না, তবে আওয়ামী সমর্থকদের মাথায় আকাশ ভেংগে পড়ার কথা স্পষ্ট তাদের তীব্র অসংলগ্ন প্রতিক্রিয়ায়, যার উদাহরন মুনতাসীর মামুনের লেখাটি।
বিএনপি তার রাজনীতিতে পরিবর্তন আনবে কি না এটা সময়ই বলে দেবে, কিন্তু আপনি যেভাবে স্পষ্ট বলে দিলেন যে আগামী নির্বাচনের আগে তাদের কি স্ট্র্যাটেজী হবে, সেটা অযৌক্তিক Presumption এর পর্যায়ে চলে গেছে।
@সফিক ভাই,
আমি কম বুঝি, এটা ঠিক, তবে আপনি পজিটিভিটি বলতে কি বুঝিয়েছেন, তা বুঝবো না, অতটা বলদ হয়ত নই। আমি আপনার ‘পজিটিভিটি’ নিয়ে কোন প্রশ্ন তুলিনি, আমি প্রশ্ন তুলেছি, আপনার কথিত ‘দেশের অধিকাংশ লোকের’ পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। আপনি যে বিদগ্ধ বলয়ে বাস করেন, সে বলয়ে আমি বাস করি না, আমার দেখা মানুষেরা আপনার দেখা মানুষদের থেকে অন্য দৃষ্টিতে ‘পজিটিভিটি’ ব্যাখ্যা করে, সেটা নিশ্চয়ই আমার অপরাধ না?
আমার দেখা মানুষেরা বলছে, আগামি নির্বাচনি খেলায় জিততে ভারতকে সাময়িক ডজ দেয়া দরকার ছিল, তাই বিরোধী নেত্রী ভারত যেয়ে ঠিকই করেছে। আমার দেখা এই মানুষগুলো আপনার কথিত ”দেশের অধিকাংশ লোকের’ মধ্যে পড়ে না, আর আমি সেটাই বলতে চেয়েছি।
তবু যদি ভুল হয়ে থাকে, দুঃখিত, শফিক ভাই!
@কাজি মামুন,
গোল্ডফিস মেমোরী দিয়ে প্রকৃতি বাংলাদেশীদের সৃষ্টি করলেও ভারতীয়দের মেমোরী তেমন ভোতা মনে হয় না। তাদের নিশ্চয়ই মনে আছে খালেদার চরম পরম অমৃত বাণীসমুহ-
প্রাসঙ্গীক হিসেবে মুনতাসির মামুনের এই লেখাটি পড়া যেতে পারে-
@আকাশ মালিক,
একটা ফটু দেখলাম, মালিক ভাই। দেশনেত্রী মুর্তি পরিদর্শন করছেন। লিংক এখানে। খেয়াল কইরা, দেশনেত্রী কিন্তু দ্যাশে থাকতে তার বিগত শাসনামলে দুর্গাপুজার সময় একটা মন্দিরও পরিদর্শন করেননাই। সি আর দত্ত বীরউত্তম অনেক চেষ্টা কইরাও ওনারে নিতে পারে নাই।
@কাজি মামুন,
খালেদা যখন ভারত অভিমূখী আমারা হবো মদীনাভিমূখী। দেখুন আমার নেত্রী বলছেন-
আমার নেত্রীর শরিয়া আইন জানা আছে হ্যাঁ। এক ঠেলায় দেওবন্দী কউমী মাদ্রাসার কয়েক হাজার ভোট( পড়ুন ভুত) আওয়ামী লীগের বাক্সে ঢুকে গেল। পকেটে পাথর রেডি থাকে যেন। এবার ৭১ এ ধর্ষণকারীদের মাথায় পাথর মারা হবে। নেক্সট টার্ম যদি আল্লায় ক্ষমতায় রাখে, চুরি ব্যাভিচারী বিষয়েও শরিয়া নিয়ে আসবো ইনশাল্লাহ।
@আকাশ মালিক,
দলীয় দৃষ্টিকোন থেকে লেখা। আমাদের বুদ্ধিজীবিরা দলনিরপেক্ষভাবে বিভিন্ন অনিয়মগুলো তুলে ধরলে দেশ ও জনগন অনেক এগিয়ে যেত। দুঃখজনক হলেও সত্যি এটাই যে, আমাদের দেশের বেশীরভাগ বুদ্ধিজীবি যে দল সমর্থন করেন তার নেতৃত্ব ও কর্মকান্ডের খুব কমই সমালোচনা করেন।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত জুজু একটি ফালতু ডিসট্র্যাকশন মাত্র। আমাদের অনেক সমস্যা আছে। সবার উপরে এবং সবচেয়ে বড়ো হলো গুড গভর্ননেন্স এর অভাব। দূর্নীতি, জনসংখ্যা, শিক্ষা, ক্লাইমেট চেন্জ এরকম আরো অনেক ইস্যুর মধ্যে ভারতের কুপ্রভাব (?) অনেক পিছনে। ভারত অনেক সময়ে আমাদের সাথে সুপ্রতিবেশীর মতো আচড়ন করে না। কিন্তু ভারত আমাদের শত্রু নয়। আমাদের বড়ো বড়ো সমস্যাগুলির অধিকাংশই ভারত থেকে উদ্দভুত নয়। একমাত্র বলা যায় নদীর পানি বন্টনের কথা, কিন্তু এই কারনে আমাদের জিডিপি বা পরিবেশের ক্ষতি দশমিকের ঘরে বলা যায়। আমরা নিজেরা নিজেদের পায়ে যতো কুড়াল মারি তার তুলনায় এটা কিছু না।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত বিরোধিতা ক্রমেই আবেদন হারাচ্ছে। দেশবিভাগ আর মুসলিম লীগের ঐতিহ্যের ধারক বাহকেরা দিনে দিনে কমে আসছে। তাদের ইনসটিংকটিভ ভারত বিরোধিতার আপিল এখন বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে নেই। মানুষের কাছে এখন এমনকি ফেলানী-বিএসএফ ইস্যুর চেয়েও দূর্নীতি-পদ্মাব্রীজ এসব ইস্যু বেশী গুরুত্বপূর্ন। এখন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদীদের তুলনায় ভারতবিরোধিতায় বরং বেশী সক্রিয় হলো ইসলামী জাতীয়তাবাদীরা। বাংগালী জাতীয়তাবাদীদের মধ্যেও কখনো কখনো ভারত-মার্কিন বিরোধীতা চাগিয়ে উঠছে।
বেগম জিয়া ভারতে এই বড়ো সফরে গেছেন কেবল মাত্র ক্ষমতায় ফেরার জন্যে। কিন্তু রাজনোৈতিক দল ক্ষমতায় যেতে চাইবে এটাই তো স্বাভাবিক। তবে এই সফরের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে একটা গুনগত পরিবর্তন হবে। আগামী নির্বাচনের আগে ভারত জুজু আর তেমন মাথা চাড়া দেবে না। পার্টিগুলি বাধ্য হবে গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে মাথা ঘামাতে, মানুষের কাছে আবেদন প্রতিষ্ঠা করতে।
@সফিক,
দুঃখিত, আমার মন্তব্যটি আলাদাভাবে নীচে চলে এসেছে। আপনি যেন ই-মেইল সংকেত পেতে পারেন, সে জন্য এই ব্যবস্থা।
পুনশ্চঃ লেখার শিরোনামটি খুবই ভাল লেগেছে।
@গীতাদি,
আমার উপরের মন্তব্যটিতে অনেক বাক্যের মধ্যকার শব্দ বাদ পড়ে গিয়েছে। এই তাড়াহুড়োজনিত ত্রুটির জন্য দুঃখিত।
আর আমারও একটা পুনশ্চ আছেঃ
প্রশ্ন ১. ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলা হাসিনা ইউটিউব বন্ধ করে দিল। কাকে খুশি করতে? কি উদ্দেশ্যে?
প্রশ্ন ২. দখদার ভারত বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলা খালেদা ভারত যেয়ে বাংলাদেশের ভুখন্ড ভারতকে ব্যবহার করতে না দেয়ার অঙ্গিকার করে আসে। কাকে খুশি করতে? কি উদ্দেশ্যে?
উত্তরঃ খুশির টার্গেট ভিন্ন হলেও উদ্দেশ্য কিন্তু একটাই, নির্বাচনি বৈতরনি পার হওয়া।
@কাজি মামুন,
আচ্ছা, ম্যাডাম বাংলাদেশের মুসলমান নারীর সিথির সিঁদুর আর মসজিদের উলু ধ্বনি নিয়ে কোন আলোচনা করেন নি? গল্প লেখার ষ্টাইলটা খুব ভাল লাগলো। (Y)
@আকাশ মালিক,
ধন্যবাদ, মালিক ভাই। আর অনেক দিন বাদে আপনার অনুপ্রেরনামূলক মন্তব্য পেয়ে খুব ভাল লাগছে।
স্বপ্নে দেখলাম, ম্যাডাম প্রনব দাদাকে বলছেন, ”সিথির সিঁদুরে একটা বাঙালি মেয়ের প্রকৃত সৌন্দর্য ফুটে উঠে। ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে আমাদের এই বাংগালি সংসস্কৃতি বিকাশে এক যোগে কাজ করা উচিত। আর উলুধ্বনিও আমাদের সংস্কৃতির অংশ, একে কিভাবে আরো বিকশিত করা যায়, সে ব্যাপারে কিছু পরামর্শ দিন না, প্রনবদা?”
রম্য রচনাটি বড্ড একপেশে ও সরাসরি হয়ে গেল নাকি?
বিভাগের ঘরে গল্প শব্দটি না থাকলেই পাঠকের জন্য সুবিধা হত বলে আমার মনে হয়।
তবে আর যাই হোক,বলার কৌশলটি/ ভঙ্গিটি ভালই লাগল যদিও বিষয়টির সাথে একমত নই। বিরোধী দলে আজ হাসিনা থাকলে আর ভারতে গেলে বোধ হয় এ লেখাটির জন্ম হত না।
অথবা খালেদা ভারত ছাড়া অন্য দেশে গেলেও এমন লেখার জন্ম হয় না।
@গীতাদি,
খালেদার সমালোচনা হচ্ছে এই কারনে যে, উনি সার্বক্ষনিক ভাবে ভারত কার্ড খেলে থাকেন। অহর্নিশি বাংলাদেশের মানুষের মনে ঢুকিয়ে থাকেন, ভারত বাংলাদেশের সব কিছু দখল করে নিচ্ছে, ওরাই আওয়ামীলিগরে ক্ষমতায় বসাইছে গত নির্বাচনে। বাংলাদেশে আজ বিডিআর হত্যাকান্ড বলেন, লোডশেডিং বলেন, বোমা হামলা বলেন—–সব কিছুর পেছনেই ভারত।
ভারত যে এগুলোর পেছনে থাকতে পারে না, তা কিন্তু নয়। তবে আপত্তিটা হল, মানুষের মধ্যে যিনি এমন জিংগোইজম ঢুকিয়েছেন যিনি গঠনমূলক সমালোচনার পরিবর্তে, তার কি সেই শত্রু দেশে যাওয়া উচিত।
আমার কথাটা হল নৈতিক অবস্থানটা ঠিক রাখা নিয়ে। খালেদা জিয়া যদি সত্যি মনে করে ভারত বাংলাদেশ দখলের তরে সদা ব্যগ্র, তাহলে তাকে পরিহার করাই উচিত নয় কি? সামনের নির্বাচনে প্রভাবশালি ভারতের সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে এখন উনি সেইসব কথা বলছেন, যা এদ্দিন শেখ হাসিনা বলত, যেমন, আমাদের মাটি সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে দেয়া হবে না বা ভারত টিপাইমুখে বাধ নির্মান করবে না বলে অঙ্গিকার করেছে।
তাও যদি বোঝা যেত, উনি ভারত ট্রাম্পকার্ড আর খেলতে চান না, ভারতের কাছ থেকে ন্যায্য হিসসা আদায় করে নিতে চান দ্বিপাক্ষিক সংলাপ আর সমঝোতার মাধ্যমে, তাও না হয় তার রাজনৈতিক পরিপক্কতার প্রমান হিসেবে গ্রহনযোগ্য ছিল। কিন্তু উনার লক্ষ্য তো নির্বাচনি বৈতরনি পার হওয়া।
দেখেন রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবার্ষিকির ভারত-বাংলাদেশ যৌথ আয়োজনটি নিয়ে উনি প্রশ্ন তুলেছিলেন। নজরুলকে নাকি উপেক্ষা করা হয়েছে। তাহলে এখন উনি ভারতে যেয়ে রবীন্দ্রনাথ আওরাচ্ছেন কেন? কেন নজরুল দু লাইন শুনিয়ে আসছেন না?
আম্লিগ, হাসিনার পক্ষে এই লেখা লিখিত হয়নি। এইটুকু বিশ্বাস রাখতে পারেন। সুযোগ এলে আওয়ামিলিগের ভারত তোষন নিয়ে লিখব। আমাদের দেশের জাতীয় নেতৃবৃন্দের সুবিধাবাদী রাজনীতির মুখোশ উন্মোচনই এ লেখার উদ্দেশ্য।
অনেক দিন পরে আপনার মন্তব্য আনন্দিত, গীতাদি। আপনার সদুপদেশ মাথায় রাখব।
হাসিনা বেলায় এমনটি হতো না কারন হাসিনা, খালেদার মতো শয়নে স্বপনে জাগরনে শুধু ভারত বিদ্বেষী কক্তব্য দিতো না।@গীতা দাস,
(Y)
লেখা ভাল লাগেছে, ধন্যবাদ
@ভীরুমন,
পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, ভীরুদা! ভাল থাকুন!
আর বাংলা তারিখ হইল…’
‘ঠিক আছে, নিষ্কর্মা বাংলা তারিখ বলার কোন দরকার নেই।‘
কি চমেতকার দেখা গেল!
@স্ফুলিঙ্গ,
মনে হয়, আপনার আরো কিছু বলার ছিল। বলে ফেলুন। নির্দিধায় বলুন। ম্যাডামকে নিয়ে আপনার কোন যুক্তি থাকলে, তাও বলুন। একটা লেখা যদি আপনার কাছে সার্কাসটিক মনে হয়, কেন মনে হয়, তা লিখতে পারেন কিন্তু। আমরা স্বল্প বুদ্ধি ও বিবেচনা থেকে হুট করে অনেক কিছু লিখে ফেলি। আপনার সদুপদেশ আমাদের শুধরে দিতে পারে। আর ব্লগের এটাই তো সবচেয়ে বড় সুবিধা, তাই নয়কি?
পড়ে ভাল লাগল।
আমরা সাধারণ মানুষ সিস্টেমের যাতাকলে আটকে আছি।
@অসীম,
পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ…….
ভাল থাকুন।