ওরা হয়ত জানেনা “লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন” এর মত মহৎ বাণীর মানে। জানে না এর মানে হোল “তোমার ধর্ম তোমার কাছে আর আমারটা আমার”। কোরানের ১০৯ নম্বর সূরা কাফিরুনের ৬ নম্বর আয়াতে লেখা আছে ওই কথা। জানেনা কোরানের ২ নম্বর সূরা আল বাকারার ২৫৬ নম্বর আয়াতে লেখা “ধর্মের ব্যাপারে কোন জোরজবরদস্তি নেই” । পাক কোরানের পাতায় এসব লেখা আছে। কোরান খুলে দেখেন এইসব শান্তির কথা, ঠিকই লেখা আছে। আরো একটু বেশী দেখলে অবশ্য ব্যাতিক্রমও দেখবেন অনেক। অশান্তির কথাও দেখে ফেলবেন। কি দরকার বেশী বেশী দেখা; খামোখা। তার চেয়ে অনেক চতুর মানুষ যা বলে; ধর্ম পালনে স্ববিরোধীতায় জড়ানো কেন; ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করাই ভালো।

আজকাল অর্থসহ কোরান পড়ে অনেকেই বড্ড সুখী, সন্তষ্ট ও তৃপ্ত। সেসব মানুষেরা এখন বলে বেড়ান যে তারা কোরানের মানে জেনে বুঝে পড়েন; মোল্লা নির্ভর পড়া পড়তে হয় না। তারা খুবই খুশী। নামাজ পড়লে আয়াত অথবা সূরা বুঝে বুঝে পড়েন। ইন্টারনেটেও অনায়াসে অর্থসহ কোরান পড়া যায়; সুতরাং ধর্ম পালনে আর কথিত আরবী ভাষা পণ্ডিতদের উপর নির্ভর করতে হয় না। ইন্টারনেটে অনুবাদ ভুল না ঠিক সেটা নিয়ে যদিও প্রশ্ন অবশ্য খুব কমই তোলা হয়। যা হোক, তারা বলেন ইসলাম শান্তির ধর্ম, কোরান শান্তির বানীতে একাকার; নারী অধিকারে আর সন্মানে পরিপূর্ণ; লোকেরা খামোখাই এই ধর্মকে নারীবিদ্বেষী সন্ত্রাসী ধর্ম বলে। হিজাব পরা নামাজ পড়া কি খারাপ নাকি?

নামাজ পড়তে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য যে কোন সূরা বা কোরানের যে কোন আয়াত পড়া যায়। কোরানের ৭৩ নম্বর সূরা মুযাম্মিলের ২০ আয়াতেই লেখা আছে “কাজেই কোরানের যতটুকু তোমাদের জন্য সহজ, ততটুকু আবৃত্তি কর, তোমরা নিয়মিত নামাজ কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে ঋণ দাও যাহা উত্তম ”।

নামাজে ছোট্ট সূরা বা আয়াত অনেকে আবার হৃদয়ঙ্গম না করেই পড়ে থাকেন। এইটা কিন্তু বেশ গোলমেলে। ধরা যাক, এক মহিলা সূরা ফাতিহার পরে ছোট কোন সূরার বদলে সহজ দেখে কোরানের কোন আয়াত পড়বার ইচ্ছা করলেন। বড়ই ভক্তিভরে তিনি কোরানের ২৩ নম্বর সূরা আল মূমিনুনের ১ থেকে ৬ আয়াত পড়লেন:

“মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে, যারা নিজেদের নামাযে বিনয়-নম্র; যারা অর্থহীন কথাবার্তায় নির্লিপ্ত, যারা যাকাত দান করে থাকে, এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে, তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না”।

তারপর আল্লাহুআকবর বলে দিলেন সেজদা। অর্থাৎ পাক কালাম অনুযায়ী নারী স্বামীর যৌনদাসী, চাহিবা মাত্র স্বামীর যৌন ক্ষুধা মেটাতে হবে। নারী তা মহানন্দে মেনে নিলেন কারণ স্বামীর কোরানী লাইসেন্স আছে, আর নারীর আছে ধর্মভয়।

ধরা যাক পরবর্তী রাকাতে নারী পড়লেন ৩নম্বর সূরা আল ইমরানের ১৪ নম্বর আয়াত:

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী, সন্তান-সন্ততি, রাশিকৃত স্বর্ণ-রৌপ্য, চিহ্নিত অশ্ব, গবাদি পশুরাজি এবং ক্ষেত-খামারের মত আকর্ষণীয় বস্তুসামগ্রী। এসবই হচ্ছে পার্থিব জীবনের ভোগ্য বস্তু। আল্লাহর নৈকট্যই হলো উত্তম আশ্রয়”

আল্লাহু আকবর। সেজদা। এখানে নারী নিজেই নিজেকে গবাদি পশুর মত করে ধন্য হয়ে গেলো স্বেচ্ছায়, নেকী কামালো। পাক কোরান থেকেই তো আয়াত পড়লেন, অথচ ব্যাপারটা কেমন হোল? মাথা চুল্কাচুল্কি অবস্থা।

আচ্ছা ধরুন, নারী পড়লেন আন নিসার ৩৪ তম আয়াত:

পুরুষেরা নারীদের হেফজতকারী এ জন্য যে, আল্লাহ তাদেরকেই শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।“

আল্লাহু আকবর বলে সেজদা। এখানে কি হোল? মানে স্বামী অবাধ্য স্ত্রীকে পেটাতে পারবে, পুরুষ নারীদের থেকে উত্তম। কারণ তারা রোজগার ও খরচ করে।

সূরা নিসার এই ৩৪ নম্বর আয়াতকে সমুন্নত রাখতে, কোরানের আয়াত মানতে নারীর আয় রোজগার করা তো উচিৎ নয় তাহলে। ঘরে বসে থাকা দরকার। হিজাব পরে বাইরে চাকরি বাকরি ব্যাবসা বানিজ্য করা বা বেরুবার দরকারটাই বা কি? নারীর তো জোরে পায়ের আওয়াজ পর্যন্ত করতে পারবে না পাছে পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়? কোথায় লেখা? আচ্ছা তাহলে দেখুন, কোরানের ২৪ নম্বর সূরা আন-নূর, আয়াত ৩১: “ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও”। আল্লাহু আকবর। কোরান তো দেখা যাচ্ছে নারী অধিকারের চেয়ে নারী যৌনতার ব্যপারে অনেক বেশী দায়িত্ববান।

আল্লাহতাআলা পাক কোরানের সূরার পাক আয়াতসমূহে অনেক কথাই বলেছেন; প্রায়শঃই যেগুলি মহা অস্বস্তিকর। আচ্ছা ধরুন নারী নামাজ পড়লেন কোরানের ৬৪ নম্বর সূরা আত্তাগাবুনের ১৪ নম্বর আয়াত আবৃত্তি করে:

“হে মুমিনগণ, তোমাদের কোন কোন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের দুশমন। অতএব তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাক। যদি মার্জনা কর, উপেক্ষা কর, এবং ক্ষমা কর, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুনাময়”।

তার পর ভক্তিভরে রুকু সেজদা। পাক কোরান থেকে বাণী পড়ে পাক সেজদা। এইটা কি হোল? স্ত্রী নারী ও তার সন্তান মুমিন স্বামীর কোরানী পথের দুশমন? কি মুশকিল। এবার কি? আছে, আরো আছে, অনেক অনেক সূরা আয়াত আছে যেগুলোর মানে জেনে বুঝে পড়লে যায়নামাজ ছেড়ে হিজাব ছুঁড়ে দৌড়ে পালাবেন নারীগন আর বগল বাজাবে সুযোগ সন্ধানী ভোগী পুরুষগন। তারচেয়ে বরং চেপে যাওয়াই ভালো, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করাই তো দেখা যায় ভালো।

বেছে বেছে খারাপ আয়াতগুলি বাদ দিয়ে পড়বেন? পাক কোরানের আবার খারাপ কি? আপনি আমি ওখানে কি করে বলতে পারি কোন আয়াতটা ভালো আর কোনটা খারাপ? ওই রকম চিন্তা করাও তো গুনাহের কাজ। বাদ দেওয়াটার উপায় নেই কারন কোরানের ২ নম্বর সূরা আল বাকারার ৮৫ তম আয়াতে লেখা আছে “তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দূগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে”। মুসিবতের কথা। তবে আশার কথা এই যে, “ধর্মের ব্যাপারে কোন জোরজবরদস্তি নেই”, ওই যে; কোরানেই তো লেখা আছে। চেপেই যান নাহয়। কোরানও মানলেন নারী আবার নিজেকেও রক্ষা করলেন; হিজাব টিজাব এইসব নিয়ে বাড়াবাড়ি করার দরকারটাই বা কি?

নারী একদিন বিদ্রোহ করবেই করবে। কারণ ধর্মভক্ত নারী এক সময় ঠিকই আবিষ্কার করবেন এই দুনিয়াতেও তাদেরকে পুরুষের দাসী বানানো হয়েছে আর কল্পিত বেহেশ্তেও নারীদের পাওনা মেটানোর কোন পরিষ্কার অঙ্গীকার নেই। তাদের প্রিয় নবী নিজেই বলেছে, সকল খারাপ নারী বাড়ী ও ঘোড়াতে। আরো বলেছেন দোজখে নারী সংখ্যাই বেশী। এসব শুনলে নারী হিজাবে আগুন জ্বালিয়ে বিদ্রোহ করবেনই, কারণ তারা একদিন ঠিকই বুঝে ফেলবেন কথিত ওই বেহেশ্ত পুরুষের জন্য হুর, যথেচ্ছ যৌনাচার, হুরে অরুচী ধরলে গেলমান মানে কচি বালককে নিয়ে পুরুষের যৌনলীলা, মদ্যপান, ফুর্তি আর ফুর্তি; এর সবই তো পুরুষের জন্য। নারী তো বিদ্রোহ করবেই। শুধু সামান্য সময়ের ব্যাপার মাত্র। কাজেই হিজাবীরাও বলবেন; ধর্মীয় বাড়াবাড়ীর দরকারটা কি।

ধর্মভক্ত নারীদের একটা খবর দেই। ধার্মিক পুরুষরা কিন্তু তাদের ধন সম্পদ খরচ করবার জন্য নানান হালাল ছুতো খোঁজে। যেমন একাধিক বৌ রাখা। চারটা বৌ রাখা আর তাদের জন্য খরচ; কিংবা প্রায়ই তালাক ও নতুন বৌ এর জন্য খরচ, এগুলি কিন্তু অনুমোদিত। এরা আল্লার রাহে খরচা করার বদলে নিজেদের জন্যই করে। একাধিক বিয়ে করে, যৌন আয়েশে খরচ বাড়ানো ভালো নাকি প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ আল্লার রাহে খরচা করা ভালো; এমন প্রশ্নই তাদের বিবেচনায় অগ্রাধিকার পায়। দেনমোহর, তালাক, হায়েজ, জায়েজ, ভরণপোষণ এসব খরচ বাড়িয়ে ফেললে আল্লাকে আর দেবার মত বেশী কিছু থাকলো না; তাই দেবে আর কতটুকু? আল্লার সাথে ব্যাবসায়িক জোচ্চুরি? না করেই বা করবে টা কি? অন্যদিকে কোরানী সব নির্দেশ মানলে ঘরের নারীরাই বা নতুন সতীনের শুভ আগমন ঠেকাবে কি দিয়ে? অবশ্য ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করলে হয়ত এটা সম্ভব। তাইতো হয়ে চলেছে, নয় কি? তা যদি না হত, তা হলে তো নারীদের আত্মসন্মান নিয়ে টিকে থাকাই দায় হয়ে পড়ত। তাই মনে হচ্ছে আমাদের দেশের নারীরা, ওই হিজাব টিজাব ছাড়া খুব তেমন বাড়াবাড়ি করছে না। অবশ্য কিছু কিছু নারী পাক্কা ধার্মিক হয়ে পুরুষের দাসী হয়ে পড়বার জন্য খুবই ব্যাগ্র। নারী নির্যাতনের কোরানী ব্যপারটা ফাঁস ও প্রচার পেয়ে গেলে তারা আর তা করবে না বলেই মনে হয়। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে সম্ভবত তারা মোটামুটি আচারিক ধর্মই পালন করবে।

বাংলায় আজকাল অনেকের নাকি প্রচূর টাকা পয়সা আর সম্পদ। এখন তাহলে বরং ধনসম্পদের কথা আর ধনীদের নিয়ে দু একটা আয়াত দেখা যাক। এই আয়াত গুলো আবার নিজেই নিজেকে ব্যাখা করে। ধর্মভীরু অথচ বিত্তবান যারা তাদের জন্য এসব আয়াত তো ভয়ঙ্কর। না মানলেও ভ্যাজাল আবার ধর্ম বাড়াবাড়ি করলেও হবে সর্বস্বান্ত। দেখুনঃ

কোরানের ৬৩ নম্বর সূরা আল মুনাফেকুন এর ১০ নম্বর আয়াত:”আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম”। তার মানে মনে হয় এই রকম হোলঃ

মাল দার মুমিনের
হতে হবে সাবধান
মালামাল রেখে তিনি
মারা যেন নাহি-যান।
জান মাল সবকিছু
করিবেক তিনি দান
মালামাল রহি গেলে
হবে না মোসল-মান।

কোরানের ৮ নম্বর সূরা আল আনফাল, আয়াত ২৮: আর জেনে রাখ, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদেরকে পরীক্ষার উপকরন মাত্র; বস্তুতঃ আল্লাহর নিকট রয়েছে মহা সওয়াব।

কোরানের ৯ নম্বর সূরা আততাওবাহ, ১১১ নম্বর আয়াতঃ আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে। তওরাত, ইঞ্জিল ও কোরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিক? সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেন-দেনের উপর, যা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হল মহান সাফল্য“। ধনীর ধনসম্পদ তার নয়, আল্লার। ধনীরা মানেন না তা? যারা মানেন না, তারা চতুর, তারা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করেন না, তাই চেপে যান। বাড়াবাড়ি করলে তো সম্পদ হাতছাড়া হয়ে যাবে। তাই কি দরকার খামোখা বাড়াবাড়ির?

কোরানের বানী অনুযায়ী সাচ্চা মুসলমানের জীবনযাপন হতে হবে সাধারণ আর বাহুল্যবর্জিত কারন কোরানের ১০২ নম্বর সূরা তাকাসূর তার প্রথম আয়াতেই বলে “প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে দিকভ্রান্ত রাখে”। ওই সূরাতেই শেষ আয়াত অর্থাৎ ৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে “শেষ বিচারের দিনে তোমাদের দুনিয়ার সম্পদ সন্মন্ধে প্রশ্ন করা হবে”। বেঁচে থাকার মৌলিক চাহিদা পূরনের চেয়ে সকল যা কিছু অতিরিক্ত তার কিছুই মুমিনের নয়, আল্লা ও রসূলের অর্থাৎ ইসলামের। সব কিছু দ্বীনের নামে দান করবেন বা আল্লাহকে ঋণ দিয়ে দেবেন। পড়ুন সূরা আত তাগাবুন, কোরানের ৬৪ নম্বর সূরার ১৭ তম আয়াতঃ “যদি তোমরা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান কর, তিনি তোমাদের জন্যে তা দ্বিগুণ করে দেবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ গুণগ্রাহী, সহনশীল।“ ঋণ দেবেন না? হে ধনবান, আপনার মনে ভয় নাই? কোরানের ৯ নম্বর সূরা আত তাওবার ৩৪ ও ৩৫ আয়াতে লেখা আছে, “যারা স্বর্ণ ও রূপা জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না আল্লাহর পথে, তাদের কঠোর আযাবের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন”। “সে দিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্ব ও পৃষ্ঠদেশকে দগ্ধ করা হবে (সেদিন বলা হবে), এগুলো যা তোমরা নিজেদের জন্যে জমা রেখেছিলে, সুতরাং এক্ষণে আস্বাদ গ্রহণ কর জমা করে রাখার”। এত ভয় দেখানোর পরও সম্পদ হাতছাড়া করবেন না? ভরসা পাচ্ছেন না? কোরানে লেখা আছে তো। পছন্দ হচ্ছে না? আচ্ছা তাহলে সম্পদশালীদের একটা গোপন কথা বলি, মরে যাবার একটু আগে তওবা করে ফেলবেন, জান্নাত এক্কেবারে কনফার্ম। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? ঠিক আছে সূরা দিচ্ছি। কোরানের ১৬ নম্বর সূরা নাহল, আয়াত ১১৯: অনন্তর যারা অজ্ঞতাবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর তওবা করে এবং নিজেকে সংশোধন করে নেয়, আপনার পালনকর্তা এসবের পরেও তাদের জন্যে অবশ্যই ক্ষমাশীল, দয়ালু”। যা হোক ধনীগন এখন হিসাব নিকাশ করে দেখুন, বাকির ব্যাবসা করবেন, সারা জীবন না বোঝার সাধনা করবেন আর তাওবা করবেন নাকি চেপে যাবেন, মানে যেমন চলছেন আরকি। কোরানে ওটাও লেখা আছে যখন, মানে খামোখা বাড়াবাড়ির দরকারটাই বা কি?

তথ্যসূত্রঃ আল কোরান

আরো লেখা লিঙ্কঃ কোথা থেকে এলো আজকের কোরান,সূরা মোখতাসার ১,সূরা মোখতাসার ২,সূরা মোখতাসার ৩, সূরা মোখতাসার ৪, সূরা আল মূত্ত্যাজিয়া, হিজাবী মেয়ে বেহেস্তি সুখ
-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-

রেফারেন্সের পেতে আর মুক্তমনে আরো বেশী বেশী জানতে চাইলে, মুক্তমনাদের লেখা পড়ুন, বিশেষ করে এদেরঃ

আবুল কাশেম, ভবঘুরে, সৈকত চৌধুরী, আকাশ মালিক, সাইফুল ইসলাম, নাস্তিকের ধর্মকথা, কৌস্তভ, আল্লাচালাইনা, সংশপ্তক, সাদাচোখ, টেকি সাফি, রূপম(ধ্রুব), অভীক, গীতা দাস, রাজেশ তালুকদার, তামান্না ঝুমু, বিপ্লব পাল, শিক্ষানবিস, ফরিদ আহমেদ, অভিজিৎ, বন্যা আহমেদ, কাজী রহমান এবং বাকিদের