লিখেছেন – অভ্র ব্যানার্জী

ভোরের সদ্যস্ফুট গোলাপে-টগরে আমায় খুজনা,
এত ক্ষণজীবা আমি নই;
পাবেনা আমায় ওদের মাঝে।
বরং খুজে দেখ ঘাসফুলে-যা পদদলিত হয় তোমারি পায়ের তলে
যখন তুমি নগ্ন পায়ে হেটে যাও তোমার গোলাপের ঘ্রান নিতে।
পরের সকালে আবার ফুটে ওঠে সেই ঘাসফুল,যখন শুকিয়ে গেছে তোমার গোলাপ
তাও তুমি ক্ষনজীবি গোলাপের দিকেই চেয়ে থাকো-
ঘাসফুলের দিকে চেয়ে দেখ না।

************************

সমুদ্রের দিগন্ত জোড়া নীলজলে আমায় পাবেনা,
বরং খুজে পাবে মৃদু-স্রোতা কোন নদীতে;
দানবীয় ঢেউয়ের গর্জনে নয়,
ছন্দময় ঢেউয়ের কলকল ধ্বণিতে।
যেখান দিয়ে সুদৃশ্য জলযানে করে যাও তুমি সমুদ্রে অবকাশ যাপনে
মৃদু ঢেউয়ের তাড়ণে দুলতে-দুলতে যাও নীল জল ছুতে;
ফিরেও তাকাও না এই নদীর ঘোলা জলের দিকে।

*************************

হিমালয়ের শ্বেতশুভ্র উচ্চ শৃঙ্ঘে আমায় খুজনা
ব্যার্থ হবে তুমি,
বরং খুজে দেখ সবুজ কোন মেটে পাহাড়ে
যেখান থেকে তীব্র স্রোতে নেমে আসে সুদৃশ্য ঝর্ণা
শৃঙ্ঘ হতে নেমে আসা প্রাণঘাতী তুষার নয়।
তোমার দৃষ্টিসীমা মেটে পাহাড়ের ওপর দিয়ে ছুঁই-ছুঁই করে চলে যায় হিমালয়ের উচ্চ –শৃঙ্ঘে।
চেয়ে থাক তুমি সেই অতুলনীয় সৌন্দর্যের দিকে
যার দিকে চেয়ে আছে অনেকেই।
কিন্তু যে মেটে পাহাড়ে একটা একটা করে ফুটেছে অনেক গুলো বুনো ফুল,
শুধু তোমাকে ভোলাবে বলে।
তাও তোমার দৃষ্টি ছুটে যায় ঐ হিমালয়ের অসাধারণ সৌন্দর্যে;
এই সাধারণ মেটে পাহারের দিকে তাকানো নিস্প্রোয়জন মনে কর।

************************

শরতের চলমান শুভ্র মেঘে আমায় পাবেনা,
বরং খুজে দেখ শ্রাবণের ঘনকাল নিথর মেঘে;
ওদের মাঝে আমায় পাবে তুমি।
তোমায় দেখার জন্য মধ্য আকাশে নিথর হয়ে থাকে সেই ঘনকাল মেঘ,
বুক উজাড় করে ঢেলে দেয় সব দুঃখ,অভিমান,ভালবাসা-তুমি একবার ছুয়ে দেবে বলে।
সেই মেঘটার দুঃখ-কষ্ট-অভিমানকে মাটিতে ঠেলে দিয়ে শুধু ভালবাসাকে শুষে নিয়ে-
বেড়ে ওঠে একগুচ্ছ কাশফুল।
যেখানে দাড়িয়ে তুমি দু’বাহু প্রসারিত করে তাকিয়ে থাক শরতের চলমান মেঘের দিকে
আমার হৃদয় এর আর্তি দিয়ে জন্ম নেয়া সেই কাশফুলকে মাড়িয়ে তুমি যাও-
দৃষ্টি নন্দন সেই মেঘের পিছে ছুটে।
যে স্থবির মেঘটা তার সমস্ত সম্বল নিঃশেষ করে জায়গা করে দিয়েছে ওই-
শুভ্র মেঘের দলকে।
সেই ঘনকাল নিথর মেঘটার কথা পরে থাকে তোমার মনের এক ঝাপসা কোনে,
তুমি আনন্দে মেতে থাকো ওই শুভ্র মেঘের সমাগমে।

******************************

আমার অপেক্ষা কোরো না তুমি ,তোমার রাজপুরী থেকে পঙ্ক্ষীরাজে করে-
নিয়ে যেতে পারবোনা কোনোদিন।
তোমার বাগানের পুরনো কাঠগোলাপ গাছটার পাশে দাড়িয়ে দেখব;
তোমার কল্পনার দিকে চেয়ে থাকা।
আলতো পায়ে হেটে আসলে পাবে আমায় ওখানেই;
দাড়িয়ে আছি তোমারি অপেক্ষায়।
তোমার লাল-নীল স্বপ্ন ছেড়ে জানি তুমি নিচে নেমে আসবেনা।
আমি তোমার কাছে এলে আড়চোখে তাকিয়ে থাকবে;চিনতে পারবেনা আমায়
কারন তুমি এক ভিনদেশি রাজপুত্রের স্বপ্নে বিভোর।
তবুও না জানার ভান করে-যদি জানতে চাও আমি কি চাই
ছন্দহীন ভাবে হাসতে হাসতে তোমার স্বপ্নীল চোখে চেয়ে বলব;
এভাবেই ভালবেসে যাই।।
অভ্র ব্যানার্জী