লিখেছেন : আমান-উদ-দৌলা

যুগে যুগে তরুনরাই ঘুরে দাঁড়ায়। আবারো দাঁড়াবে। আমার ধারনা,আগামী ৫-৭ বছর কিংবা মাত্র এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশে শুধু নয় গোটা বিশ্বের রাজনৈতিক নেতৃত্বের এবং আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে ব্যপক এবং মৌলিক পরিবর্তন সূচিত হবে।পরিস্থিতি খুবি আসন্ন হয়ে উঠছে। বিশ্বের তরুন সমাজ ব্যপক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের জন্য অনুঘটকের ভূমিকা পালন করবে। আমার ধারনার সপক্ষে কয়েকটি প্রধান প্রবনতা ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে পারি।

প্রথমত,ইতিহাস চেতনা দিয়েই বলা যায়,২য় মহাযুদ্ধ-উত্তর বিশ্বে দেশে দেশে প্রত্যক্ষ উপনিবেশ শাসনের অবসানের বিপ্লবে তরুন প্রজন্ম এগিয়ে আসে। কোথাও কোথাও গড়ে উঠে আধুনিক রাষ্ট্র । অনুন্নত রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে যেখানে যেখানে গনতান্ত্রিক রুপান্তর ঘটে নাই সেখানে সেখানে সামরিক একনায়কতন্ত্রের মাধ্যমে পরোক্ষ উপনিবেশ জারি হয়। একদিকে সাম্রাজ্য শক্তির হাত বদল ঘটে,এংলো-ইউরোপীয়দের কাছ থেকে মার্কিন প্রতিপত্তির কাছে। অন্যদিকে, সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক সাম্রাজ্য শক্তির প্রভাবে দেশে দেশে সমাজতন্ত্রের বিপ্লব ছড়িয়ে পরে। চীন এবং কিউবার পথ ধরে বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি তরুন কমিউনিস্ট আন্দোলনে শরিক হয়। জাতীয় মুক্তির লড়াই সশস্ত্র রূপ নেয়। লড়াই প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও ভিয়েতনাম এবং বাংলাদেশের তরুন শক্তি বিশ্বমানচিত্রে প্রায় একি সময়ে দুইটি স্বাধীন দেশের জন্ম দেয়।

কার্ল মার্ক্স মুক্তির যে দর্শন দিয়ে গেছেন,তা ছিল অব্যর্থ এবং ঐতিহাসিক বটে। কিন্তু তার সেই বিপ্লব বহন করতে গিয়ে বিকৃত-যান্ত্রিক-নির্দয় পন্থা চাপিয়ে দিয়ে গেছেন অনেকে। সাম্যমুখি জনকল্যাণের মন্ত্র হয়েছে গণনির্যাতনের যন্ত্র। মানুষ এই বিপ্লব ধরে রাখে নাই।

তবে,ইউরোপে শুরু হওয়া জনকল্যাণমুলক রাষ্ট্র ব্যবস্থার একটি মধ্যপন্থি ধারনা বা সোসাল ওয়েলফেয়ার স্টেট এর কনসেপ্ট এখন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বা গ্রহনযোগ্যতা ধীরে ধীরে বাড়ছে। পুজিবাদের বর্তমান শিরোমনি খোদ আমেরিকাতেও। সাম্প্রতিকতম We are 99% আন্দোলন ‘হঠাত আলোর ঝলকানি’ হলেও এটা মার্কিন মুল্লুকে অভূরপূর্ব ঘটনা । চরম লোভী একাংশের বিরুদ্ধে সাধারন গণ মানুষের ক্ষোভ এবং এই নির্দয় পুজিবাদি রাষ্ট্রের বিপরীতে একটি জনকল্যাণমূলক পরিবর্তন-আকাঙ্ক্ষা আমেরিকান ওয়ার্কিং ক্লাস এবং মিডল ক্লাস সারা বিশ্বকে জানান দিয়েছে। একজন নব্য মার্কিন নাগরিক (বাংলাদেশি-আমেরিকান) হিসেবে আমিও এই আন্দোলনের সমর্থক ছিলাম, থাকবো।

বিংশ শতকের শেষ প্রান্তে এসে সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক সাম্রাজ্যের পতন ঘটলে,দেশে দেশে গনতান্ত্রিক আন্দোলনের নতুন ধারার লড়াই চলতে থাকে।এশিয়া,আফ্রিকা,পুর্ব-ইউরোপ, ল্যাটিন আমেরিকা জুড়ে সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে গনতান্ত্রিক সংগ্রামের পথ ধরে নতুন বিপ্লবের ঢেউ-এ নতুন প্রজন্ম দখল নিতে
শুরু করে ল্যাটিন আমেরিকার আর্জেন্টিনা,পেরু,চিলি,ভেনেজুয়েলা,এল সালভেদর,বলিভিয়া। মার্কিন মুল্লুকের পশ্চাতভুমি হিসেবে ল্যাটিন আমেরিকার উপর মুঠো আলগা হয়ে যায় দুইভাবেই, মার্কিন প্রশাসনের ইন্টারেস্ট রক্ষাকারী সামরিক শাসন আর বিশ্বব্যাঙ্ক-আইএমএফ-এর শেকল ভেঙ্গে নিজ অর্থনীতির আত্ননির্ভর শক্তিও লাভ করতে শুরু করে এইসব দেশ। এ প্রসঙ্গে কয়েক শতকের ইউরোপ-আমেরিকার প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ উপনিবেশ-অবসান সম্পর্কে নোয়াম চমোস্কি’র Latin America Declares Independence লেখাটা সার্চ দিয়ে পড়ে নিতে পারেন।

অন্যদিকে, প্রায় কাছাকাছি সময়ে দক্ষিন আফ্রিকা,ফিলিপাইন,ইন্দোনেশিয়া আর বাংলাদেশে সামরিক একনায়কের পতন ঘটায় তরুন প্রজন্ম। এরপর মাওবাদিধারার প্রভাব নেপালে থাকলেও মুলতঃ গনতান্ত্রিক শক্তির কাছে সেখানে শতাব্দির রাজতন্ত্র ধ্বসে গেল এইতো সেদিন।

পরাশক্তি ও আঞ্চলিক শক্তির প্রভাব বলয়ের শিকার প্যালেস্টাইন আর কুর্দিরা মুক্তির পথ এখনো পায় নি। ব্যর্থ হয়েছে তামিল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার গেরিলা যুদ্ধ। তিব্বত,কাশ্মীর কিংবা আসাম-মনিপুর-নাগাল্যান্ড-এ পৃথক রাষ্ট্র কল্পনা এখন সুদূরপরাহত অনেকটা। পাকিস্তান আর বার্মার মিলিটারী মেশিনকে পরাস্ত করার পথ নিশ্চয় এখনকার তরুন শক্তি আবার খুজে নিবে।

এরই মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন প্রযুক্তি আবিস্কারের ফলে নতুন কিছু বিপ্লব ঘটে গেছে। চীন,কোরিয়া,তাইওয়ান নতুন অর্থনৈতিক শক্তি দেখাতে শুরু করেছে,আমেরিকা,ইউরোপ আর জাপানের পাশাপাশি এরা এশিয়ায় নতুন মেরুকরন ঘটিয়ে ফেলেছে।পশ্চিমা বিশ্বে তথা আমেরিকায় ইনোভেশনের লিডারশিপ থাকলেও সস্তায় উৎপাদনের চাবিকাঠি চীন-ভারত-কোরিয়া-তাইওয়ান-ভিয়েতনাম-বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের হাতে। উৎপাদনের বিশাল বিশাল কারখানা গড়ে উঠেছে এইসব দেশে। চীন এখন কেবল ফ্যাক্টরি নেশন নয়। তারাও নতুন কিছু আবিস্কার করে ফেলার মেধা অর্জন করেছে। উৎপাদনের পরিভাষায় যুক্ত হয়েছে নতুন শব্দ “আউট-সোর্সিং”। সেই পথে ভারত,মালয়শিয়া, ভিয়েতনাম আর থাইল্যান্ড এগুচ্ছে। দক্ষিন আফ্রিকা আর ব্রাজিলও পিছিয়ে নেই। BRICS(ব্রাজিল-রাশিয়া-ইন্ডিয়া-চায়না-সাউথ আফ্রিকা) এখন নতুন অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে দাড়াতে চায়।

অন্যদিকে, ইনোভেশন আর সস্তায় প্রযুক্তি সরবরাহের গণমুখি সহজ-লভ্যতা স্থবির মহাদেশগুলোতে মহাজাগরন ঘটিয়ে দিচ্ছে। মানুষের হাতে হাতে সেলফোন,আর ঘরে ঘরে কম্পুটার-ইন্টারনেট এবং স্যাটেলাইট টিভি।বদলে দিলো চিরচেনা পৃথিবী।এই চিত্র একুশ শতকের প্রথম দশকের ঘটনা মাত্র। ডিজিটাল ডিভাইড হয়তো নব্য মিডল ক্লাসকেই বেনিফিট দিচ্ছে বেশি,বঞ্চিত শ্রেনী ধীরে ধীরে প্রথম সুযোগে প্রাপ্তিযোগ ঘটাচ্ছে। গড়ে উঠছে মহাসংযোগ বিপ্লব বা যোগাযোগ বিপ্লব। বদলে যাচ্ছে লাইফ স্টাইল শুধু নয়,বদলাচ্ছে মনোজগত। একজন মানুষ এখন ফিজিক্যালি দেখা সাক্ষাত না করেও বহুলোকের সাথে কথা বলে সেলফোনে,স্কাইপ-এ,ভয়েস চেটিং-এ,ফেসবুকে। টিভি বা ইন্টারনেটে নিউজ দেখে একাধিক মতামত ও ভিন্নমতের সাথে নিজের পুর্বধারনা মিলিয়ে দেখার সুযোগ পায়। মত বদলায়। গুগল,উইকিপিডিয়া এবং ইউটিউবে অনেক তথ্যভান্ডার জমে যাচ্ছে। ফেসবুকে গড়ে উঠছে নতুন ফ্রেন্ড সার্কেল। সিংগেল ডোমিনেটিং ফ্যাক্টর বা কাল্ট কালচারাল ইনফ্লুয়েন্স উপেক্ষা করে ধীরে ধীরে এখন বেরিয়ে আসছে মানুষ মুক্তবিহঙ্গের আহ্লাদে।

এই ফেসবুক জেনারেশন ‘আরব বসন্ত’ ডেকে আনলো। তিউনিশিয়া, মিশর,ইয়েমেন,লিবিয়া কেবল শুরু। কেঁপে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের শত বছরের রাজতন্ত্র। বিপদ-ও বাড়ছে,ধর্মীয় মৌলবাদের ফ্যানাটিজম একই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। তবে আশার কথা প্রগতিবাদি আধুনিক শিক্ষিত প্রজন্ম এইসব নেতিবাচক-ধারাকে পরাস্ত করে এগিয়ে যাবে।

কাশ্মীরের তরুনরা এখন অস্ত্র প্রশিক্ষণের বদলে উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতের অন্যান্য শহরে,বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হচ্ছে।আফগানিস্থান-পাকিস্তান থেকে সদলবলে সপরিবারে হাজার হাজার মানুষ পাড়ি জমাচ্ছে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়া হয়ে নৌকা দিয়ে সাগর পথে অস্ট্রেলিয়ায় আশ্র্য় নিতে,নিচ্ছেও। পথিমধ্যে ধরাও পড়ছে আবার ডুবেও মরছে। মুলবার্তা হচ্ছে,এরা তালিবানি অপশাসন, পশ্চিমা-পরাশক্তির যুদ্ধ-বোমা আর আত্নঘাতি জীবননাশের অকাতরে মৃত্যুর ঝুকি থেকে বেরিয়ে সুস্থ জীবনের জন্য ঝুকি নিতে আগ্রহী হচ্ছে।

বিশ্বব্যাপি দ্রুত ডেমোগ্রাফিক শিফট-ও লক্ষ্যনীয়। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে,একদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি যেমন ঘটবে অন্যদিকে শহর-নগরে মানুষের জনস্রোত বাড়বে ব্যপক হারে।এএফপির প্রতিবেদনে জাতিসংঘের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভাগের বরাত দিয়ে বলা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে আফ্রিকার দেশসমূহের জনসংখ্যা প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৪১৪ মিলিয়ন থেকে ১.২ বিলিয়ন হবে, যেখানে এই সময়ের মধ্যে এশিয়ায় তা ১.৩ বিলিয়ন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩.৩ বিলিয়ন হবে।

ধারনা করা হচ্ছে শহরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি ঘটবে ভারতে, যার সংখ্যা পূর্বানুমান করা হয়েছে ৪৯৭ মিলিয়ন। এর পরে চীন (৩৪২ মিলিয়ন), যেখানে নাইজেরিয়ার শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধি ২০০ মিলিয়নের কাছাকাছি হবে।
একটি আলাদা তথ্য অনুসারে ভারতের ১.২ বিলিয়ন জনসংখ্যা, যা কিনা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম, ২০২৫ সালের মধ্যে চীনকে ছাড়িয়ে যাবে।বাংলাদেশের কথা এখানে আলাদা করে বলা নেই,তবে সহজেই অনুমেয় কি দাঁড়াবে। আরো বলা হয়েছে,শহরমুখি জনস্রোত ও দ্রুত বৃদ্ধি এশিয়া ও আফ্রিকার দেশসমূহে শিক্ষার নতুন সুযোগ তৈরি করে দেবে, কিন্তু আবাসন, চাকরি, জ্বালানি ও পরিবেশের জন্য তা নতুন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে।

আমার ধারনা,এরফলে,নগরমুখি মানুষ শিক্ষার সুযোগ পেয়ে এশিয়া-আফ্রিকায় মানব-সম্পদের উন্নয়ন ঘটাবে যেমন,পাশাপাশি অধিকতর নাগরিক সুবিধার দাবি হয়ে উঠবে ক্ষমতাসীন কিংবা প্রচলিত রাজনৈতিক ধারাগুলোর জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ। শিক্ষিত সচেতন নতুন নগরবাসী হয়ে উঠবে ক্ষমতাকাঠামো যুগাপযোগী করে পরিবর্তনের পক্ষে দাবিদার নতুন শক্তি।
ক্ষমতায় থাকা ক্ষমতামুখি কিংবা ক্ষমতালোভি পুরনো ধারাকে হটিয়ে দিয়ে নিজেরাই নতুন ধারার সূচনা করবে।

আরো খবর দিচ্ছে, দি নেক্সট সিলিকনভ্যালি ডটকম। আগামি একদশকের মধ্যে ‘নিউ গ্লোবাল মিডলক্লাস’-এর উদ্ভব ঘটবে,এদের সংখ্যা হবে প্রায় ১০০ কোটি। বলা হয়েছে যেভাবেঃ Emerging markets, already an important growth factor in the post-recession global economy, will gain additional importance and power. For example, a new “global middle class” will emerge, with more disposable income, leading to increased opportunity for businesses around the world — big and small. More than 1 billion new middle class consumers will be added to the global economic community, most of whom will be younger than their counterparts in industrialized nations with older demographics.

ধারনা পাচ্ছি,ইন্টারনেট হয়ে উঠবে বিশ্বব্যপী কোটি কোটি তরুন শক্তির পাওয়ারফুল টুলস। বানিজ্য, কেনাকাটা, সামাজিক যোগাযোগ ছাড়াও শিক্ষা ও জ্ঞান বিকাশ এবং মেধা শক্তি অর্জন ও জীবিকা অর্জনের মাধ্যম। পাঠকদের আরো খানিকটা ধারনা দিতে চাই। দি নেক্সট সিলিকনভ্যালি থেকে আরো দুটি প্যারা যুক্ত করিঃ
Technology advances will change how consumers live their lives and perform everyday tasks. In addition, businesses will be transformed as a result of global growth of the Internet, high bandwidth cloud computing, advanced analytical tools and mobile services. For example, society will produce data at an unimaginable rate; harnessing its power will be a competitive differentiator globally, eliminating the concept of data overload. Statisticians and others who crunch and analyze data will be in short supply.
“There is no doubt that the next decade will dramatically change the way we all live and operate, which we have already seen in play over the past year as economic, social and demographic shifts alter the face of consumers and small businesses,” said Steve King, partner at Emergent Research and study co-author. “Particularly exciting are the opportunities for small business creation and success in a global market as businesses become easier to start and manage.”

আরো একটি ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, দুর্নীতি বা শত-আপোসের সুবিধা-ভোগের পথে না গিয়ে এবং অন্যের শ্রম এক্সপ্লয়েট না করেও নতুন বিত্তবান শ্রেনী গড়ে উঠছে দেশে দেশে।কম্পুটিং বা প্রোগ্রামিং-এ নতুন মেধাশক্তির জোরে বহু তরুন প্রতিভা মিলিয়নিয়ার বনে যাচ্ছে। গুগল ফেসবুকের উদাহরণ ছাড়াও ছোট ছোট এপ্লিক্যাশন তৈরি করে বিপুল অংক আয় করছে অনেক তরুন। এরি মধ্যে কয়েক লাখ সফল এপ্লিক্যাশন মেকার যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ ছাড়াও কোরিয়া-তাইয়ান-চীন-ভারতে নিজের বাড়িতে বসেই কোটিপতি বনে গেছে। অদূর ভবিষ্যতে আরো লাখ লাখ প্রতিভা যুক্ত হবার পথে। শুধু এক্ষেত্রেই নয়। ন্যানো-প্রযুক্তিতে অপেক্ষা করছে আরো বিষ্ময়।

বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির বিকাশ অনন্তকাল চলবে। তবে এই দশকের সবচেয়ে রিমার্কেবল ব্যপার হলো,একই সংগে অনেক ক্ষেত্রে দ্রুত কিছু ইনোভেশন ঘটে যাচ্ছে। আর নতুন মেধাবী তরুন বিত্তবানরা হবে ট্রাডিশনাল বিত্তবানদের চেয়ে বেশি নৈতিক শক্তির অধিকারী। এদের পুনর্বিনিয়োগ হবে আরো পরিকল্পিত, আরো ট্রান্সপারেন্ট,আরো স্মার্ট তারুন্য নির্মাণের জন্য নির্ধারক কিংবা প্রভাবক, আরো দ্রুত সৃজনশীল পরিবর্তনের অনুঘটক।

একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকে,আসন্ন আগামির দিকে তাকিয়ে আমি দেখতে পাইঃ বিশ্বের দেশে দেশে সমাজ এমনিতেই গড়াবে না, খুবি সৃজনমুখি ধারায় দ্রুত গড়াবে। ভেঙ্গে পড়বে চলমান নেতৃত্বের কাঠামো। নতুন প্রজন্ম দেশে দেশে নিজেরাই জনকল্যাণের রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।রাষ্ট্রক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে– আরো নিরাপত্তা,আরো নাগরিক আধিকার বিতরণ করে আরো অধিকতর গনতান্ত্রিক সমাজ গঠন করবে।

আমান-উদ-দৌলা, নিউইয়র্ক প্রবাসী লেখক ও সাংবাদিক।
এপ্রিল ২৭,২০১২
Email: [email protected]