লিখেছেন : আমান-উদ-দৌলা
যুগে যুগে তরুনরাই ঘুরে দাঁড়ায়। আবারো দাঁড়াবে। আমার ধারনা,আগামী ৫-৭ বছর কিংবা মাত্র এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশে শুধু নয় গোটা বিশ্বের রাজনৈতিক নেতৃত্বের এবং আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে ব্যপক এবং মৌলিক পরিবর্তন সূচিত হবে।পরিস্থিতি খুবি আসন্ন হয়ে উঠছে। বিশ্বের তরুন সমাজ ব্যপক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের জন্য অনুঘটকের ভূমিকা পালন করবে। আমার ধারনার সপক্ষে কয়েকটি প্রধান প্রবনতা ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে পারি।
প্রথমত,ইতিহাস চেতনা দিয়েই বলা যায়,২য় মহাযুদ্ধ-উত্তর বিশ্বে দেশে দেশে প্রত্যক্ষ উপনিবেশ শাসনের অবসানের বিপ্লবে তরুন প্রজন্ম এগিয়ে আসে। কোথাও কোথাও গড়ে উঠে আধুনিক রাষ্ট্র । অনুন্নত রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে যেখানে যেখানে গনতান্ত্রিক রুপান্তর ঘটে নাই সেখানে সেখানে সামরিক একনায়কতন্ত্রের মাধ্যমে পরোক্ষ উপনিবেশ জারি হয়। একদিকে সাম্রাজ্য শক্তির হাত বদল ঘটে,এংলো-ইউরোপীয়দের কাছ থেকে মার্কিন প্রতিপত্তির কাছে। অন্যদিকে, সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক সাম্রাজ্য শক্তির প্রভাবে দেশে দেশে সমাজতন্ত্রের বিপ্লব ছড়িয়ে পরে। চীন এবং কিউবার পথ ধরে বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি তরুন কমিউনিস্ট আন্দোলনে শরিক হয়। জাতীয় মুক্তির লড়াই সশস্ত্র রূপ নেয়। লড়াই প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও ভিয়েতনাম এবং বাংলাদেশের তরুন শক্তি বিশ্বমানচিত্রে প্রায় একি সময়ে দুইটি স্বাধীন দেশের জন্ম দেয়।
কার্ল মার্ক্স মুক্তির যে দর্শন দিয়ে গেছেন,তা ছিল অব্যর্থ এবং ঐতিহাসিক বটে। কিন্তু তার সেই বিপ্লব বহন করতে গিয়ে বিকৃত-যান্ত্রিক-নির্দয় পন্থা চাপিয়ে দিয়ে গেছেন অনেকে। সাম্যমুখি জনকল্যাণের মন্ত্র হয়েছে গণনির্যাতনের যন্ত্র। মানুষ এই বিপ্লব ধরে রাখে নাই।
তবে,ইউরোপে শুরু হওয়া জনকল্যাণমুলক রাষ্ট্র ব্যবস্থার একটি মধ্যপন্থি ধারনা বা সোসাল ওয়েলফেয়ার স্টেট এর কনসেপ্ট এখন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বা গ্রহনযোগ্যতা ধীরে ধীরে বাড়ছে। পুজিবাদের বর্তমান শিরোমনি খোদ আমেরিকাতেও। সাম্প্রতিকতম We are 99% আন্দোলন ‘হঠাত আলোর ঝলকানি’ হলেও এটা মার্কিন মুল্লুকে অভূরপূর্ব ঘটনা । চরম লোভী একাংশের বিরুদ্ধে সাধারন গণ মানুষের ক্ষোভ এবং এই নির্দয় পুজিবাদি রাষ্ট্রের বিপরীতে একটি জনকল্যাণমূলক পরিবর্তন-আকাঙ্ক্ষা আমেরিকান ওয়ার্কিং ক্লাস এবং মিডল ক্লাস সারা বিশ্বকে জানান দিয়েছে। একজন নব্য মার্কিন নাগরিক (বাংলাদেশি-আমেরিকান) হিসেবে আমিও এই আন্দোলনের সমর্থক ছিলাম, থাকবো।
বিংশ শতকের শেষ প্রান্তে এসে সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক সাম্রাজ্যের পতন ঘটলে,দেশে দেশে গনতান্ত্রিক আন্দোলনের নতুন ধারার লড়াই চলতে থাকে।এশিয়া,আফ্রিকা,পুর্ব-ইউরোপ, ল্যাটিন আমেরিকা জুড়ে সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে গনতান্ত্রিক সংগ্রামের পথ ধরে নতুন বিপ্লবের ঢেউ-এ নতুন প্রজন্ম দখল নিতে
শুরু করে ল্যাটিন আমেরিকার আর্জেন্টিনা,পেরু,চিলি,ভেনেজুয়েলা,এল সালভেদর,বলিভিয়া। মার্কিন মুল্লুকের পশ্চাতভুমি হিসেবে ল্যাটিন আমেরিকার উপর মুঠো আলগা হয়ে যায় দুইভাবেই, মার্কিন প্রশাসনের ইন্টারেস্ট রক্ষাকারী সামরিক শাসন আর বিশ্বব্যাঙ্ক-আইএমএফ-এর শেকল ভেঙ্গে নিজ অর্থনীতির আত্ননির্ভর শক্তিও লাভ করতে শুরু করে এইসব দেশ। এ প্রসঙ্গে কয়েক শতকের ইউরোপ-আমেরিকার প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ উপনিবেশ-অবসান সম্পর্কে নোয়াম চমোস্কি’র Latin America Declares Independence লেখাটা সার্চ দিয়ে পড়ে নিতে পারেন।
অন্যদিকে, প্রায় কাছাকাছি সময়ে দক্ষিন আফ্রিকা,ফিলিপাইন,ইন্দোনেশিয়া আর বাংলাদেশে সামরিক একনায়কের পতন ঘটায় তরুন প্রজন্ম। এরপর মাওবাদিধারার প্রভাব নেপালে থাকলেও মুলতঃ গনতান্ত্রিক শক্তির কাছে সেখানে শতাব্দির রাজতন্ত্র ধ্বসে গেল এইতো সেদিন।
পরাশক্তি ও আঞ্চলিক শক্তির প্রভাব বলয়ের শিকার প্যালেস্টাইন আর কুর্দিরা মুক্তির পথ এখনো পায় নি। ব্যর্থ হয়েছে তামিল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার গেরিলা যুদ্ধ। তিব্বত,কাশ্মীর কিংবা আসাম-মনিপুর-নাগাল্যান্ড-এ পৃথক রাষ্ট্র কল্পনা এখন সুদূরপরাহত অনেকটা। পাকিস্তান আর বার্মার মিলিটারী মেশিনকে পরাস্ত করার পথ নিশ্চয় এখনকার তরুন শক্তি আবার খুজে নিবে।
এরই মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন প্রযুক্তি আবিস্কারের ফলে নতুন কিছু বিপ্লব ঘটে গেছে। চীন,কোরিয়া,তাইওয়ান নতুন অর্থনৈতিক শক্তি দেখাতে শুরু করেছে,আমেরিকা,ইউরোপ আর জাপানের পাশাপাশি এরা এশিয়ায় নতুন মেরুকরন ঘটিয়ে ফেলেছে।পশ্চিমা বিশ্বে তথা আমেরিকায় ইনোভেশনের লিডারশিপ থাকলেও সস্তায় উৎপাদনের চাবিকাঠি চীন-ভারত-কোরিয়া-তাইওয়ান-ভিয়েতনাম-বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের হাতে। উৎপাদনের বিশাল বিশাল কারখানা গড়ে উঠেছে এইসব দেশে। চীন এখন কেবল ফ্যাক্টরি নেশন নয়। তারাও নতুন কিছু আবিস্কার করে ফেলার মেধা অর্জন করেছে। উৎপাদনের পরিভাষায় যুক্ত হয়েছে নতুন শব্দ “আউট-সোর্সিং”। সেই পথে ভারত,মালয়শিয়া, ভিয়েতনাম আর থাইল্যান্ড এগুচ্ছে। দক্ষিন আফ্রিকা আর ব্রাজিলও পিছিয়ে নেই। BRICS(ব্রাজিল-রাশিয়া-ইন্ডিয়া-চায়না-সাউথ আফ্রিকা) এখন নতুন অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে দাড়াতে চায়।
অন্যদিকে, ইনোভেশন আর সস্তায় প্রযুক্তি সরবরাহের গণমুখি সহজ-লভ্যতা স্থবির মহাদেশগুলোতে মহাজাগরন ঘটিয়ে দিচ্ছে। মানুষের হাতে হাতে সেলফোন,আর ঘরে ঘরে কম্পুটার-ইন্টারনেট এবং স্যাটেলাইট টিভি।বদলে দিলো চিরচেনা পৃথিবী।এই চিত্র একুশ শতকের প্রথম দশকের ঘটনা মাত্র। ডিজিটাল ডিভাইড হয়তো নব্য মিডল ক্লাসকেই বেনিফিট দিচ্ছে বেশি,বঞ্চিত শ্রেনী ধীরে ধীরে প্রথম সুযোগে প্রাপ্তিযোগ ঘটাচ্ছে। গড়ে উঠছে মহাসংযোগ বিপ্লব বা যোগাযোগ বিপ্লব। বদলে যাচ্ছে লাইফ স্টাইল শুধু নয়,বদলাচ্ছে মনোজগত। একজন মানুষ এখন ফিজিক্যালি দেখা সাক্ষাত না করেও বহুলোকের সাথে কথা বলে সেলফোনে,স্কাইপ-এ,ভয়েস চেটিং-এ,ফেসবুকে। টিভি বা ইন্টারনেটে নিউজ দেখে একাধিক মতামত ও ভিন্নমতের সাথে নিজের পুর্বধারনা মিলিয়ে দেখার সুযোগ পায়। মত বদলায়। গুগল,উইকিপিডিয়া এবং ইউটিউবে অনেক তথ্যভান্ডার জমে যাচ্ছে। ফেসবুকে গড়ে উঠছে নতুন ফ্রেন্ড সার্কেল। সিংগেল ডোমিনেটিং ফ্যাক্টর বা কাল্ট কালচারাল ইনফ্লুয়েন্স উপেক্ষা করে ধীরে ধীরে এখন বেরিয়ে আসছে মানুষ মুক্তবিহঙ্গের আহ্লাদে।
এই ফেসবুক জেনারেশন ‘আরব বসন্ত’ ডেকে আনলো। তিউনিশিয়া, মিশর,ইয়েমেন,লিবিয়া কেবল শুরু। কেঁপে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের শত বছরের রাজতন্ত্র। বিপদ-ও বাড়ছে,ধর্মীয় মৌলবাদের ফ্যানাটিজম একই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। তবে আশার কথা প্রগতিবাদি আধুনিক শিক্ষিত প্রজন্ম এইসব নেতিবাচক-ধারাকে পরাস্ত করে এগিয়ে যাবে।
কাশ্মীরের তরুনরা এখন অস্ত্র প্রশিক্ষণের বদলে উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতের অন্যান্য শহরে,বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হচ্ছে।আফগানিস্থান-পাকিস্তান থেকে সদলবলে সপরিবারে হাজার হাজার মানুষ পাড়ি জমাচ্ছে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়া হয়ে নৌকা দিয়ে সাগর পথে অস্ট্রেলিয়ায় আশ্র্য় নিতে,নিচ্ছেও। পথিমধ্যে ধরাও পড়ছে আবার ডুবেও মরছে। মুলবার্তা হচ্ছে,এরা তালিবানি অপশাসন, পশ্চিমা-পরাশক্তির যুদ্ধ-বোমা আর আত্নঘাতি জীবননাশের অকাতরে মৃত্যুর ঝুকি থেকে বেরিয়ে সুস্থ জীবনের জন্য ঝুকি নিতে আগ্রহী হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপি দ্রুত ডেমোগ্রাফিক শিফট-ও লক্ষ্যনীয়। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে,একদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি যেমন ঘটবে অন্যদিকে শহর-নগরে মানুষের জনস্রোত বাড়বে ব্যপক হারে।এএফপির প্রতিবেদনে জাতিসংঘের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভাগের বরাত দিয়ে বলা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে আফ্রিকার দেশসমূহের জনসংখ্যা প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৪১৪ মিলিয়ন থেকে ১.২ বিলিয়ন হবে, যেখানে এই সময়ের মধ্যে এশিয়ায় তা ১.৩ বিলিয়ন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩.৩ বিলিয়ন হবে।
ধারনা করা হচ্ছে শহরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি ঘটবে ভারতে, যার সংখ্যা পূর্বানুমান করা হয়েছে ৪৯৭ মিলিয়ন। এর পরে চীন (৩৪২ মিলিয়ন), যেখানে নাইজেরিয়ার শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধি ২০০ মিলিয়নের কাছাকাছি হবে।
একটি আলাদা তথ্য অনুসারে ভারতের ১.২ বিলিয়ন জনসংখ্যা, যা কিনা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম, ২০২৫ সালের মধ্যে চীনকে ছাড়িয়ে যাবে।বাংলাদেশের কথা এখানে আলাদা করে বলা নেই,তবে সহজেই অনুমেয় কি দাঁড়াবে। আরো বলা হয়েছে,শহরমুখি জনস্রোত ও দ্রুত বৃদ্ধি এশিয়া ও আফ্রিকার দেশসমূহে শিক্ষার নতুন সুযোগ তৈরি করে দেবে, কিন্তু আবাসন, চাকরি, জ্বালানি ও পরিবেশের জন্য তা নতুন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে।
আমার ধারনা,এরফলে,নগরমুখি মানুষ শিক্ষার সুযোগ পেয়ে এশিয়া-আফ্রিকায় মানব-সম্পদের উন্নয়ন ঘটাবে যেমন,পাশাপাশি অধিকতর নাগরিক সুবিধার দাবি হয়ে উঠবে ক্ষমতাসীন কিংবা প্রচলিত রাজনৈতিক ধারাগুলোর জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ। শিক্ষিত সচেতন নতুন নগরবাসী হয়ে উঠবে ক্ষমতাকাঠামো যুগাপযোগী করে পরিবর্তনের পক্ষে দাবিদার নতুন শক্তি।
ক্ষমতায় থাকা ক্ষমতামুখি কিংবা ক্ষমতালোভি পুরনো ধারাকে হটিয়ে দিয়ে নিজেরাই নতুন ধারার সূচনা করবে।
আরো খবর দিচ্ছে, দি নেক্সট সিলিকনভ্যালি ডটকম। আগামি একদশকের মধ্যে ‘নিউ গ্লোবাল মিডলক্লাস’-এর উদ্ভব ঘটবে,এদের সংখ্যা হবে প্রায় ১০০ কোটি। বলা হয়েছে যেভাবেঃ Emerging markets, already an important growth factor in the post-recession global economy, will gain additional importance and power. For example, a new “global middle class” will emerge, with more disposable income, leading to increased opportunity for businesses around the world — big and small. More than 1 billion new middle class consumers will be added to the global economic community, most of whom will be younger than their counterparts in industrialized nations with older demographics.
ধারনা পাচ্ছি,ইন্টারনেট হয়ে উঠবে বিশ্বব্যপী কোটি কোটি তরুন শক্তির পাওয়ারফুল টুলস। বানিজ্য, কেনাকাটা, সামাজিক যোগাযোগ ছাড়াও শিক্ষা ও জ্ঞান বিকাশ এবং মেধা শক্তি অর্জন ও জীবিকা অর্জনের মাধ্যম। পাঠকদের আরো খানিকটা ধারনা দিতে চাই। দি নেক্সট সিলিকনভ্যালি থেকে আরো দুটি প্যারা যুক্ত করিঃ
Technology advances will change how consumers live their lives and perform everyday tasks. In addition, businesses will be transformed as a result of global growth of the Internet, high bandwidth cloud computing, advanced analytical tools and mobile services. For example, society will produce data at an unimaginable rate; harnessing its power will be a competitive differentiator globally, eliminating the concept of data overload. Statisticians and others who crunch and analyze data will be in short supply.
“There is no doubt that the next decade will dramatically change the way we all live and operate, which we have already seen in play over the past year as economic, social and demographic shifts alter the face of consumers and small businesses,” said Steve King, partner at Emergent Research and study co-author. “Particularly exciting are the opportunities for small business creation and success in a global market as businesses become easier to start and manage.”
আরো একটি ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, দুর্নীতি বা শত-আপোসের সুবিধা-ভোগের পথে না গিয়ে এবং অন্যের শ্রম এক্সপ্লয়েট না করেও নতুন বিত্তবান শ্রেনী গড়ে উঠছে দেশে দেশে।কম্পুটিং বা প্রোগ্রামিং-এ নতুন মেধাশক্তির জোরে বহু তরুন প্রতিভা মিলিয়নিয়ার বনে যাচ্ছে। গুগল ফেসবুকের উদাহরণ ছাড়াও ছোট ছোট এপ্লিক্যাশন তৈরি করে বিপুল অংক আয় করছে অনেক তরুন। এরি মধ্যে কয়েক লাখ সফল এপ্লিক্যাশন মেকার যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ ছাড়াও কোরিয়া-তাইয়ান-চীন-ভারতে নিজের বাড়িতে বসেই কোটিপতি বনে গেছে। অদূর ভবিষ্যতে আরো লাখ লাখ প্রতিভা যুক্ত হবার পথে। শুধু এক্ষেত্রেই নয়। ন্যানো-প্রযুক্তিতে অপেক্ষা করছে আরো বিষ্ময়।
বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির বিকাশ অনন্তকাল চলবে। তবে এই দশকের সবচেয়ে রিমার্কেবল ব্যপার হলো,একই সংগে অনেক ক্ষেত্রে দ্রুত কিছু ইনোভেশন ঘটে যাচ্ছে। আর নতুন মেধাবী তরুন বিত্তবানরা হবে ট্রাডিশনাল বিত্তবানদের চেয়ে বেশি নৈতিক শক্তির অধিকারী। এদের পুনর্বিনিয়োগ হবে আরো পরিকল্পিত, আরো ট্রান্সপারেন্ট,আরো স্মার্ট তারুন্য নির্মাণের জন্য নির্ধারক কিংবা প্রভাবক, আরো দ্রুত সৃজনশীল পরিবর্তনের অনুঘটক।
একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকে,আসন্ন আগামির দিকে তাকিয়ে আমি দেখতে পাইঃ বিশ্বের দেশে দেশে সমাজ এমনিতেই গড়াবে না, খুবি সৃজনমুখি ধারায় দ্রুত গড়াবে। ভেঙ্গে পড়বে চলমান নেতৃত্বের কাঠামো। নতুন প্রজন্ম দেশে দেশে নিজেরাই জনকল্যাণের রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।রাষ্ট্রক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে– আরো নিরাপত্তা,আরো নাগরিক আধিকার বিতরণ করে আরো অধিকতর গনতান্ত্রিক সমাজ গঠন করবে।
আমান-উদ-দৌলা, নিউইয়র্ক প্রবাসী লেখক ও সাংবাদিক।
এপ্রিল ২৭,২০১২
Email: [email protected]
আমান সাহেব ধন্যবাদ.আর্টিকেলটির 70 ভাগ প্রত্যয়কে বান্চিত মনে করছি. কিন্ত কাষ্মিরের স্বাধীনতার প্রশ্নে আমার মতামত ভিন্ন কিছু না খাকলেও 2 খবরদারী রাষ্ট্রের যবর দখল থেকে যুদ্ব করে বের হওয়ার পরিবর্তে জ্বান অর্জনের পথটিও তাদের কে সঠিক পথ দেখায়নি..2012 এ একটা অন্চলের মানুষের স্বাধীনতা থাকবেনা, এটা ফেইজবুক জেনারেশনরা চিন্তা করবে কেন? |ছোট্র বেলায় 1টা লিফলেটের প্রতি খুব বিশ্বাস জেগে ছিলো… পুরনো ঢাকার আদালত পাড়ায় 1টা চেম্বারের উকিল সাহেব সেটি বন্টন করতো..ভিশা মুক্ত বিশ্ব আন্দোলন.. হ্যাঁ উপার্জন হিন বেকারের ঐ আন্দোলনের মেম্বার হওয়ার যথার্থ কারন ছিলোই! তখন ভাবতাম…বৃটিশদের কেনো তাড়ালো এদেশ– এরা থাকলেতো আমি অটু বৃটিশ হতে পারতাম…বিলেত যাওয়া আশা কোন ব্যাপার ছিলোনা. বেকার থাকতে হতো না অভাব বন্চনা কিছুই থাকতো না.. কিন্ত সেটা কি পারফেক্ট প্রত্যয় ? বন্চনা বিষাদ ঝন্ত্রনায় পতিত জীবন সুমুহের প্রতি জ্বান অর্জনের উপদেশ শুধুই অবান্তর নয় 1টা আগ্রাসী বর্বর শক্তিকেই সমর্থন করার হিন চেষ্টা ছাড়া আর কি হতে পারে? কাষ্মির সমস্যা আন্তর্জাতিক, বিষয়টির ইতিহাস খুব জানা নেই..তাই কান্ত দিয়ে বাংলাদেশের কথায় যেতে চাই, গনতন্ত্রের সাইনবোর্ড বাংলাদেশে লেগেছে 20-22 বছর,কিন্ত সে গনতন্রে আমাদের কি দিয়েছে? 2008 এর আগে ভেবেছিলাম আওয়ামী জোয়ারের নতুন প্রজন্ম নাটকের মন্চস্থ হলে সারা বিশ্বের প্রযুক্তি হাওয়ার মতো হাসিনা ও পরিবর্তনের হাওয়া বয়ে দেবে.. রাজনৈতিক সংঘাত প্রতিশোধ পরায়নতা দ্বিমতপোষনকারীদের শত্র না ভেবে 1টা শুভ দিনের সূচনায় আমরা পাবো সমৃদ্বি! বয়ষের কারনে হলেও বর্তমান আওয়ামীলীগ নেতৃত্বের ভালোবাসা বাড়তে পারে… দেশপ্রেমের ইবাদতে ন্যায় বিছার প্রতিষ্টিত হবে—-কি হলো..? দেশবাসী তা টের পাচ্ছে হারে হারেই পাচ্ছে-যে দেশে 1টা জীবনের অপঘাতে প্রতি নূন্যতম মমতা থাকেনা সে দেশে অন্তত ফেইজবুক জেনারেশনে কিছু হচ্ছেনা আমান সাহেব.কিন্ত সেটা হোক কামনা করি. বরাবরের মতোই আমাদের হতাশ হতে হয়েছে.
ইতিহাসের কথা বলি আমরা ইতিহাসের শিক্কা আমাদের বেচেঁ থাকা পর্যন্ত হয়না,হবেও না. সবশেষে আর 1টি কথা বলে থেমে যাবো— রাষ্ট্র সরকার জনগন কোথাও কি খুজেঁ পাবেন যেখানে মিথ্যাচার নেই?
ইন্টারের বাংলা পরীক্কায় —ভাব সম্প্রসারণ সম্ভবত..সত বাছতে গ্রাম উজার,,, লিখেছিলেম অনেক–কিন্ত যা লিখিনি তা হলো সত্যবাদী শুন্য বাংলাদেশ-ধন্যবাদ এস বর্ণ ভাই–
স্বাগতম। লেখাটি ভাল লেগেছে।
আপনার লেখা পড়ে পৃথিবীতে সুখ ছাড়া আর কিছু আছে বলে মনে হচ্ছে না। অবশ্য সুখ স্বপ্ন দেখানো কারো কারো কাছে আনন্দময়।
আপনার লেখার টোনে মনে হচ্ছে এটা আপনার কাছে খুবই আনন্দময় ঘটনা। বাঙলাদেশকে নিয়ে যদি দুটো ক্ষমতাশালী কুকুর টানা হ্যাচরা করে আর দেশের সমস্ত যুবক যুবতীরা আপনার কথায় “জীবননাশের অকাতরে মৃত্যুর ঝুকি থেকে বেরিয়ে সুস্থ জীবনের জন্য ঝুকি নিতে আগ্রহী…।” হয় তাহলে এখানে আনন্দের কিছু আছে কি? যদিও আপনার কথায় ঝুকি শব্দটা ব্যাবহার করার কোন কারন পাচ্ছি না। তারা যদি ঝুকিই নিত তাহলে দেশের বাইরে ন্যাখাপড়া করতে যাবে কেন? ঝুকির জন্যে দেশে থাকাই যথেষ্ট নয় কি?
মুক্তমনায় স্বাগতম।
@সাইফুল ইসলাম,
কাশ্মীরের যে তরুণেরা অস্ত্র হাতে নিয়েছে, আপনার মতে তারা সবাই মুক্তির জন্য, দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়ছে? সত্য হচ্ছে, আপনি যে ক্ষমতাশালী কুকুরদ্বয়ের কথা বললেন, আলোচ্য তরুণেরা তাদের পাশেই অবস্থান করছে এবং একে অপরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রহর গুনছে! কাশ্মীরের তরুণদের ক্রমবর্ধমান হতাশাকে কাজে লাগিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই তাদের টেনে আনা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের আখড়ায়। আমার মতে, এই তরুণরা যদি উচ্চশিক্ষা নেয়, তাহলে লাদেনপন্থিদের দ্বারা তাদের ব্যবহৃত হওয়ার সুযোগ কমে আর তারাও স্বাধীনতার সত্যিকারের অর্থ উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়। অন্তত পাকিস্তান বা ভারতের অধীনতা যে স্বাধীনতা নয় সেই উপলব্ধি তাদের জাগ্রত হতে পারে এবং সত্যিকারের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করার শিক্ষা পেতে পারে।
@কাজি মামুন,
আপনার জ্ঞ্যানে আমি সবসময়েই চমৎকৃত হই। এখনও হইলাম।
“সত্য হচ্ছে, আপনি যে ক্ষমতাশালী কুকুরদ্বয়ের কথা বললেন, আলোচ্য তরুণেরা তাদের পাশেই অবস্থান করছে এবং একে অপরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রহর গুনছে! কাশ্মীরের তরুণদের ক্রমবর্ধমান হতাশাকে কাজে লাগিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই তাদের টেনে আনা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের আখড়ায়।”
বলেন কী? আমি এতদিন জম্মু-কাশ্মির লিবারেশন ফ্রন্ট নামে যে একটা সংগঠনের নাম জানতাম ঐটা তাইলে গুজব ছিল? খাইছে এত বড় ভুল একটা তথ্য থেকে আমারে বাঁচানোর জন্য আপনারে ধইন্যা।
মতটা যখন আপনার তখন ঐখানে কোন ভুল নাই। কিন্তু আমি বুঝতে অক্ষন খালি পড়ান্যাখা কইরা কেমনে কাশ্মিররে স্বাধীন করা যায়? অবশ্য জ্ঞ্যানের ধাক্কায় সব উইড়া যাইতেও পারে। অসম্ভব না। যেমন আপনার জ্ঞ্যানের ধাক্কায় আমার একটা অজ্ঞ্যানতা এই মাত্র উইড়া গেল।
বলেন কী? এইটা তারা জানে না? তাইলে জম্মু-কাশ্মির লিবারেশন ফ্রন্ট কী চায়??
ও হো!! ভুইল্যাই গেছিলাম। ঐটাতো আবার একটা গুজব, যেইটা ৭৭এর মে মাসের ২৯ তারিখ থিকা এখন পর্যন্ত প্রচলিত। 🙁
@সাইফুল ইসলাম,
আমি কিন্তু বলি নাই, শুধু পড়ান্যাখার তোড়েই স্বাধীনতাডারে তালুবন্দী করন যায়! আসল কথা হইল, স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে জানতে হয়! তরুণরাই পারে সেই স্বপ্ন দেখতে এবং দেখাতে, আমজনতাকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে প্রাণপণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে! চে গুয়েভারা (যে কিনা দুই দুইডা মহাদেশ জুইড়া স্বাধীনতার বীজ বুননে সক্ষম হইছিল!) কিন্তু অনেক পড়ান্যাখা করত। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা কি ছিল? যুদ্ধ বলতেই অস্ত্র হাতে নিয়া যুদ্ধ বোঝায়? মুক্তমনাও কিন্তু যুদ্ধ করছে বিজ্ঞানময় বাংলাদেশ গড়তে, আর যতদূর বুঝি, পড়ান্যাখা এই যুদ্ধের একটা প্রধান অস্ত্র!
জম্বু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট কি পুরো কাশ্মীরের প্রতিনিধিত্ব করে? অনেকেই লড়ে, অনেকেই সংগঠন করে, কিন্তু সেই লড়ার উদ্দেশ্য বা সংগঠনের প্রকৃত লক্ষ্য কয়জন তরুণ সম্যক উপলব্ধি করতে পারে? অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ঐ সকল তরুণেরা ব্যবহৃত হয় হীন রাজনৈতিক স্বার্থে, যদিও তাদের আহবান করা হয়েছিল দেশমাতৃকার সেবা করার কথা বলে। তাছাড়া অনেক বড় বড় সংগঠন লক্ষ্যের দোদুল্যমানতায় থেকে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে!
@কাজি মামুন,
আসেন দেখি আপনি বলছেন কি না। বলছেন
আশা জাগানিয়া খবর! আসলে এই পথেই আসতে পারি মুক্তি! কাশ্মীরের সত্যিকারের স্বাধীনতা! শুধু কাশ্মীর কেন, বিশ্বের যেকোন মুসলিম অধ্যুষিত দেশের জন্যই কথাটা সত্যি। মুসলমান তরুনদের জেহাদি জোশ ছেড়ে বিজ্ঞানের খিদমতে আত্মনিয়োগ করতে হবে!
আপনার কি মনে হয় স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে হার্ভার্ড থিকা পিএইচডি কপচাইতে হইব? ৭১এ তো তাইলে নিশ্চই সমস্ত জনতা অক্সফোর্ড থিকা একদশক লেখা পড়া কইরা তারপরে জ্ঞ্যানের অস্ত্রতে পাকিস্তানি ধাওয়াইছিল? কী জানি, হইতেও পারে!
খাইছে এর সম্পর্কে দেখা যায় অনেক জানেন। আমি ভাই তেমন কিছু জানি না। আমি খালি জানি উনি নিজে বিরাট পাঠক হইলেও যাগোরে নিয়া কাজ করছে হেরা মোটেই জ্ঞ্যানের বটবৃক্ষ আছিল না। আমার ঘরে আমি থাকুম, এইটা বুঝতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাইতে হয় না। একজনের ঘরে যাইয়া জোর কইরা থাকতে চান। পিডানি খাইয়া এমনেই বুঝবেন।
ভাই আপনিই কন কী আছিল। হেরা নিশ্চই পালে পালে নিরক্ষর আমজামকাঁঠাল জনতারে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে ডিগ্রি আনতে পাঠায় নাই। নাকি পাঠাইছিল? বলা যায় না। আপনার তথ্য আমার থিকা আলাদা হইতে পারে।
মুক্তমনা বাঙলাদেশে স্বাধীন করা মহান পদক্ষেপ সামনে নেয় নাই। “বিজ্ঞানময় বাঙলাদেশ” গড়া আর বাঙলাদেশরে পাকিস্তানের কাছ থিকা স্বাধীন করা যদি আপনার কাছে এক হইয়া থাকে কোন প্রকার দ্বিধা না কইরা পাবনা চইলা যান। হেমায়েতপুরে একটা নামকরা প্রতিষ্ঠান আছে যারা এইরকম সমস্যার সমাধান দেয়।
৭১এর যুদ্ধের সময় বাঙলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করত কারা? কোন দল?
এইটা এমন হইতে পারে যে, আপনার বাড়ি কেউ দখল করতে আসছিল, তখন আপনি স্বধীনতার সংজ্ঞা বুঝতে ইন্ডিয়া কিংবা আমেরিকা গিয়া স্বাধীনতা বুঝার উপ্রে একটা একটনি ডিগ্রি নিয়া আসলেন। ঐ ডিগ্রির ধাক্কায় আপনার বাড়ির দখলদার উইড়া গেল। বলা যায় না, এইটা হইতেও পারে। সেই ক্ষেত্রে আমি আপনার দাবি মানতে পারি। ভাই ক্ষ্যামা দেন। আপনার জ্ঞ্যানগর্ভ কথা দিয়া মুক্তমনার ব্যন্ডউইডথ আর নষ্ট কইরেন না। আমরা আপনার কথা বুঝতে পারছি। ধইন্যা।
@সাইফুল ইসলাম,
কাশ্মীর পরিস্থিতি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি এবং রাজনৈতিক নেতাদের বলি হয়েছেন কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ।
আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি যে, যেকোনো জনগোষ্টির অধিকার আছে নিজেদের দেশ গঠন করার। এবং কোনো বৃহৎ দেশ থেকে বেরিয়ে এসে স্বতন্ত্র সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার।
ভারত এবং পাকিস্তান এই দুটি শক্তি জবরদস্তি কাশ্মীর দখল করে রেখেছে- ভারতীয় হয়েও তত্ত্বগতভাবে এই অবস্থানের সমর্থন করি।
এবার আশা যাক বাস্তবে। কাশ্মীরের একদিকে ভারত, একদিকে পাকিস্তান অন্যদিকে চোখ চেয়ে আছে চীন।
মধ্যিখানে কাশ্মীরের কিছু আদর্শবাদী তরুণ যারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে স্বাধীনতা আনার স্বপ্ন দেখছেন।
এদের লড়াইতে পিষে গেছে কাশ্মীরের অর্থনীতি, শেষ হয়ে গেছে সেইখানকার দৈনন্দিন জীবন।
ভারত এবং পাকিস্তান, দুই রাষ্ট্রের কাছেই কাশ্মীর বিশাল বড় প্রেস্টিজ ইস্যু। এদের মধ্যে কেউ একজন হাত গুটিয়ে নিলেই অন্যজন ঝাপিয়ে পড়বে কাশ্মীর দখল করতে ।
দুই জনেই পিছু হঠে গিয়ে কাশ্মিরকে ছেড়ে দেবে এমন ভাবার কোনো কারণ নেই।
ধীরে ধীরে হলেও, কাশ্মীরের নতুন প্রজন্ম তা বুঝতে পারছে।
স্বাভাবিক জ্ঞান বুদ্ধি লাগিয়ে এইটাও বুঝছে যে, জিহাদী জোশে পাকিস্তানের মতন ব্যর্থ এবং সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রের থেকে ভারতের অংশ হওয়া শ্রেয়তর।
তাই কাশ্মিরি যুবক যুবতীরা ভারতের বিশ্ব বিদ্যালয়গুলোতে বেশি করে পড়তে আসছে, আসছে বানিজ্যিক কারণে।
স্বাধীনতা খুবই ভালো কথা, কিন্তু যারা স্বাধীনতা সংগ্রামী তারাই যদি বিপ্লবের নামে দেদারসে সাধারণ মানুষ, নিজের দেশের লোক মারতে থাকে তাহলে আর দখলদারিদের সাথে তাদের আর কি পার্থক্য রইলো?
কাশ্মিরে বছরের পর বছর যেমন ভারতীয় সেনা সেইখানকার লোকদের পিটিয়েছে, তেমন জঙ্গীরা জিহাদের নামে কাশ্মিরি পন্ডিত এবং শিখদের উপর নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে।সেই সংগে মুসলিম কাশ্মীরিদেরও মেরেছে।
একপক্ষের অত্যাচার অন্যপক্ষের অত্যাচারকে বর্ধিত করেছে।
এই বিষাক্ত চক্র থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায় হচ্ছে কাশ্মিরে ভারতীয় সেনার থেকে ক্ষমতা সরিয়ে নিয়ে প্রশাসনকে জোরদার করা এবং সেই অঞ্চলের অর্থনীতিকে জাগিয়ে তোলা।
@অনামী,
আপনার কথার সাথে মোর ওর লেস একমত। কাশ্মির, ভারত যখন নিজে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পরাধীন তখন থেকেই একটি সায়ত্বশাসিত অঞ্চল। এখন আশেপাশে দুটো তুলনামূলক শক্তিশালী দেশ নিজেদের প্রেস্টিজ ইস্যুতে কাশ্মিরের উপরে খবরদারি চালিয়ে যাচ্ছে। মাঝখানে চিপায় পড়েছে কাশ্মির।
আপনার
এ কথায় “সন্ত্রাস” শব্দটা নিশ্চই পসিটিভিলি ব্যাবহার করছে তাই না? নইলে একটু বুঝিয়ে বলেন।
@সাইফুল ইসলাম,
ধৈর্য ধরে পুরো কথপোকথনটা পড়লাম।
বলতে বাধ্য হচ্ছি কোনো এক অজানা কারনে আপনার মেজাজ সর্বক্ষণ চড়া থাকে, এবং বাতচিতের সময়ও এর প্রতিফলণ আমরা লক্ষ্য করি। এখন ‘বিপ্লবের’ জোশে যদি আপনি জঙ্গী হয়ে থাকেন কথাবার্তাতেও, তবে এই প্লাটফর্মে আলোচনা কিভাবে চলতে পারে?
কাজী মামুনের কথা আপনার পছন্দ না ও হতে পারে, কারন তিনি পড়ালেখার কথা বলছেন, কিন্তু তাকে পাবনায় সরাসরি পাঠিয়ে দেবার মাসালা দেয়াটা কি এক ধরনের ধৃষ্টতা হয়ে গেলো না?
অন্য এক পোস্টেও দেখলাম আপনি সরলীকরনে বেশি আগ্রহী। কি বলা হচ্ছে তা গভীরভাবে না বুঝে সবখানে বিপ্লব করে ফেলবার এই ওষুধ প্রেসক্রাইব করাটা কেন?
@আরিফুর রহমান,
বাঙলাদেশে বসে আমি কুল থাকার মতন কোন পরিবেশ পাই না। মেজাজ খারাপ থাকার এইটা একটা কারন হইতে পারে। আর মেজাজ খারাপ থাকলে বাতচিতে যে প্রকাশ পাইব মাঝে মাঝে এইটা স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি যেইটা মিস করছেন ঐটা হইল, আমি কমজানা মানুষজনের সাথে মেজাজ খারাপ করি না। মেজাজ খারাপ হয় বেশি জানা মানুষের জ্ঞ্যান শুনলে। কোন জিনিস সম্পর্কে না জাইন্যা ফালাফালি করলে আমার সবসময়ের জলন্ত মেজাজ আবার নতুন কইরা ফুইট্যা পরে। যেমন ধরেনঃ
পছন্দ না হইলে আমি সাধারনত চিল্লাইয়া বলতেই পছন্দ করি। কারন আমার যতটুকু যুক্তিতে কুলায় তাইতে অযৌক্তিক কোন কথায় আমি চিল্লায়েই বিরুদ্ধাচারন করি। এরপরে আপনি যদি দেখাইতে পারেন আমার কথা অযৌক্তিক আমি আপনার কথা মানতে এক সেকেন্ডও দেরি করব না। ধৃষ্টতা আবার কী জিনিস? প্রলাপের বিরুদ্ধাচারন যদি ধৃষ্টতা হয় তাইলে আমি সারা জীবন ধৃষ্টতা দেখাইছি, সামনেও দেখাইতে থাকব।
তারমানে আপনি জটিলিকরনে আগ্রহী? অবশ্য নাও হইতে পারে। আমি সাধারন চিন্তার মানুষ এই জন্য হয়ত সরলীকরন করি। কিন্তু সমস্যাটা অন্যখানে, এখন পর্যন্ত অসরলীকরনকারী কোন বোদ্ধা পাইলাম না যে কিনা কোন সমস্যার সুস্থ সমাধান দিতে পারছে। যেমন ধরেন এইখানে মামুন কাশ্মিরের জনগনের মুক্তির জন্য তরুনদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আগে “স্বাধীনতাবোধ” জাগাইতে চাইতেছে। আমার কাছে এইটা স্রেফ পাগলের প্রলাপ মনে হইছে। কেউ একটা দেশ জোর কইরা দখল করার সময় যদি আপনি বলেন পড়ালেখা কইরা আগে শিক্ষিত হইতে হইব তাইলে আপনার ব্রেইন নিয়া সন্দেহ জাগাটা মোটেই অমূলক না। কী বলেন?
আর এখন যারা যাইতেছে তারা সুবিধাবাদী ছাড়া কিছুই না। আর যারা এইটারে সাপোর্ট করে তারাও সাধারন আরামপ্রিয় ভদ্রনোক। এদের দিয়া আর যাই হউক, কাশ্মির স্বাধীন হইব না। কাশ্মীর স্বাধীন হইব তাগোরে দিয়াই যারা ভবিষ্যতের কথা চাঙ্গে উঠাইয়া স্রেফ যুদ্ধে নামছে। আর এরা পরে দেশে আইসা দেশপ্রেম দেখাইব। মানে বুদ্দিজীবি হইব।
আমার কাছে এইটা অত্যন্ত সহজ-সরল তরল একটা ব্যাপার। আপনার কাছে যদি এর থেকে কোন অসরলীকরন কিংবা জটিলকরন পদ্ধতি জানা থাকে জানাইতে পারেন। যদিও আমি বুঝতেছিনা সরলীকরন প্রক্রিয়া থাকতে জটিলিকরন প্রক্রিয়া কবে থেকে বিজ্ঞানের দরবারে প্রতিষ্ঠিত হইছে।
@সাইফুল ইসলাম,
দুঃখের সাথে জানাচ্ছি, কিছু বুঝেন নাই; আমার সহজ-সরল কথারে আপনি আপনার মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়া অন্য লাইনে নিতেছেন খালি।
আপ্নি যে উদ্ধৃতি দিছেন, তার পর আমার আর উত্তর দেয়া লাগে না, কারন ওখানে স্পষ্ট কইরাই কথাডার প্রাসঙ্গিকতা উল্লেখ আছে। মুসলিম বিশ্বের তরুণদের জিহাদি জোশ ছাইড়া যে পড়ান্যাখ্যা, বিজ্ঞানসাধনায় মন দেওন দরকার, এ কথা মনে অয় সবাই স্বীকার করব। মুস্লিমরা সমাজ বিবর্তনে পিছায় আছে, শিক্ষাই দিতে পারে তাদের মুক্তি। হিন্দু সমাজ এ পথেই আগাইছে। খ্রিষ্টানরাও।
জম্বু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট আর ১৯৭১ এর মুক্তিবাহিনী এক নয়। ১৯৭১ এ সমগ্র বাংলাদেশ স্বাধীনতা চেয়েছিল, কিছু রাজাকার ব্যতীত। কিন্তু কাশ্মীরবাসীর একটা বড় অংশ পাকিস্তানের অধীনতার জন্য লড়াই করছে, যাদের সর্বপ্রকার সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান ও অন্যান্য ইসলামী দেশ। আর একটি অংশ চাচ্ছে ভারতের সাথেই থাকতে। তবে সবচেয়ে আশংকাজনক হল, কাশ্মীরের অনেক তরুণ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত হয়ে পড়ছে। প্রায় ৬০ বছর ধরে যুদ্ধাবস্থা চলে যে দেশে, সে দেশের তরুণরা যে বিপথগামী হবে তাতে সন্দেহ কি। কাশ্মীর মুক্তির আন্দোলন লক্ষ্যভ্রষ্ট, দ্বিধাবিভক্ত। কাশ্মীরের তরুণরা অনেক ক্ষেত্রেই দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছে না, বরং সন্ত্রাসবাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। এই তরুণরা যদি অস্ত্র ছেড়ে কিছু পড়াশোনা করে (যা আমাদের দেশের জঙ্গি বনে যাওয়া তরুণদের জন্যও সত্য), তাহলে তারা তাদের জাতির উন্নয়ন (দারিদ্র থেকে মুক্তি, রাজনৈতিক স্বাধীনতা) ত্বরান্বিত করতে পারবে।
স্বাধীনতার সংগ্রাম করার জন্য ডিগ্রি লাগে এমন কথা কেউ কইছে? আমি যদি আমার নিজের বাড়ি রক্ষা করার কথা না ভাইবা পাশের বাড়ির লাইগা ধ্যান করতে থাকি, পাশের বাড়ির পরামর্শে ও বুদ্ধিতে চলি, অস্ত্র হাতে কার্য সিদ্ধি করি পাশের বাড়ির, তাইলে আমার নিজের মুক্তির কি লবডঙ্কা বাস্তবায়িত হইল? এমতাবস্থায় বরং অস্ত্র ছাইড়া দিয়া কিছু পাঠে মনোবিশেশ করন ভাল (যার জন্য বই হাতে আসলেই যথেষ্ট), হয়ত এমন পাঠ ভুল পথ থেকে সঠিক পথের দিক নির্দেশ দিতেও পারে।
আগেও বলছি, আপনি সর্বদাই ঘটনার ‘হাল্কার উপর ঝাপসা’ ব্যাখ্যা করতে ও তদ্রূপ চিন্তা করতে পছন্দ করেন। মুক্তমনার আন্দোলন আর মুক্তিযুদ্ধ এক বলা হইছে কোথাও? মুক্তমনার আন্দোলনের উদাহরণ টানা হইছে কেবলমাত্র এইডা বোঝনোর জন্য যে, যেকোন আন্দোলনে একটি চিন্তাশীল বা বুদ্ধিবৃত্তিক অংশ থাকে। ১৯৭১ এমনি এমনি আসে নাই। ঘরের উপর ডাকাত পড়ছে আর মানুষ প্রতিরোধে ঝাঁপায় পড়ছে ব্যাপারটা তা নয়। নেতারা, বুদ্ধিজীবীরা একটু একটু করে মানুষের মাঝে স্বাধীনতার মন্ত্র রোপিত করেছিলেন, যা মহীরুহ হয় ১৯৭১ এ। এই মানুষেরা কিন্তু পাকিস্তানের জন্যও লড়ছে, তাদেরকে নিজ ভূমের স্বাধীনতার কথা বুঝাইতে সময় লাগছে; যারা বুঝাইছেন তারা কিন্তু জ্ঞ্যাণী-গুনি আছিলেন, যারা স্বাধীনতার প্রয়োজনীয়তা আগেই উপলব্ধি করছিলেন; তাদের জ্ঞ্যানের মূল্য এইখানেই।
হেরা আমজনতারে ডিগ্রি আনতে পাঠায় নাই, তবে নিজেগো ডিগ্রিকৃত জ্ঞ্যানে হেরা ঐ আমজামকাঁঠাল জনতারে বুঝাইছে, আমাগো পাকিস্তান থাইকা আলাদা হইতে হইব। বুঝছেন এইবার?
হেরা মানে আমজনতা কখনই জ্ঞ্যানের বটবৃক্ষ থাকে না, কিন্তু যে তরুণদের নিয়ে এত কথা, তাদের ভিতর যদি একজনও চে বাইর হয়, তাইলে ক্ষতি কি কন?
তাই কি? আপনি একজনের ঘরে গেলে, তারা ভয়ে পালাইতে পারে আপনারে সব কিছু ছাইড়া দিয়া, অথবা আপনার সাথে আপোষে আসতে পারে যে আপ্নেরে থাকতে দিব এবং আপ্নিও উনাগো কিছু কইবেন না, বা আর একটা হইতে পারে, আপনি দেশের গণ্যমান্য লেখক-কবি ভাইবা আপনার উপস্থিতিতেই তাদের সর্বসুখ বিশ্বাস নিয়া আপনার পদলেহন করতে পারে! তো পাকিস্তান যখন স্বাধীন হইল, তখন পূর্ব পাকিস্তানবাসীর মনে কি আছিল?
এর উত্তর মনে হয় আগেই দিছি। তাই এখানে আর দিতেছি না, যেহেতু মুক্তমনার একজন দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে আপনি ব্যান্ডউইথ নষ্ট না করার ব্যাপারে আগেই সতর্ক করে দিয়েছেন।
@কাজি মামুন,
(Y)
@কাজি মামুন,
আবার আপনার এই মন্তব্যের উত্তর দিতে গেলে আজাইরা পেচাল পাড়তে হইব। এই জন্য বাদ দিলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পইড়া সমস্য কাশ্মিরি জনগন পাকি আর ইন্ডিয়ান মিসাইলের জবাব দেউক। কাশ্মিররে উদ্ধার করুক। আমেন।
@সাইফুল ইসলাম,
আমি এমনটা বলছি? কোন প্রেক্ষিতে মূল মন্তব্যটা করেছিলাম, তার বিশদ ব্যাখ্যা দিলাম। তবু আপনি তার ধারে-কাছে না যেয়ে আমার মুখে আপনার বানানো কথা সেঁটে দিচ্ছেন। এইটা ঠিক না ভাই। আপনার সাথে আলোচনায় অংশ নেই বোঝার জন্য, জানার জন্য, মাথায় আসা প্রশ্নগুলোর উত্তর সন্ধানের জন্য। আমার ভুলও হতে পারে! আপনার যুক্তির কাছে মাথা নত করতেও আমার আপত্তি নাই। কিন্তু আমি যা বলি নাই, তাই আমাকে দিয়ে বলানোর চেষ্টা করা হলে, এমনকি বিশদ ব্যাখ্যা দেয়ার পরও আগের মতই ধরে রাখা হলে খারাপ লাগে, ভাই।
মুক্তমনায় স্বাগতম। চমৎকার লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
আশা জাগানিয়া খবর! আসলে এই পথেই আসতে পারি মুক্তি! কাশ্মীরের সত্যিকারের স্বাধীনতা! শুধু কাশ্মীর কেন, বিশ্বের যেকোন মুসলিম অধ্যুষিত দেশের জন্যই কথাটা সত্যি। মুসলমান তরুনদের জেহাদি জোশ ছেড়ে বিজ্ঞানের খিদমতে আত্মনিয়োগ করতে হবে!
তারুন্যের জয়গান ভালই লাগল!