অনেক দিন ধরেই আমার মুসলিম ভাইদের অনেক ব্লগ কিংবা ফেসবুক নোট পড়লাম, কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছি আমি কিছুটা হলেও হতাশ। আমার এই হতাশার নেপথ্য বিশ্লেষণের জন্যই আজ লিখতে বসলাম। লেখাটি ফার্স্ট পারসন এ লেখা হলেও আমি নিজে ইসলামে বিশ্বাসী না, এরকম লেখা আসলে মুসলিমদেরই লেখা উচিত ছিল, তাই মুসলিম হলে যেভাবে লিখতাম সেভাবেই লিখেছি।
১।
শুধু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলই নয়, অনেকেই মনে করেন ইসলামের মূল শত্রু হল ইহুদি-নাসারা, আরও স্পষ্ট করে বললে আমেরিকা। আমি এই কথাটির সাথে তীব্র দ্বিমত পোষণ করি। আমার মতে ইসলামের মূল শত্রু মুসলমানরা। আমাদের তীর্থভূমি সৌদি আরব এর দিকে তাকালেই বুঝবেন প্রকৃত অবস্থা। এই যে আমেরিকাই মূল শত্রু বলে ভাবি আমরা, চলেন না আগে সৌদি আরব কে ঠিক করি, মানুষ কে আগে বুঝাই সহিহ ইসলাম কোনটা, তারপর তারা মুসলমানরা কেমন বিচার করুক। ইরানে হামলা করতে পারে দেখে আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি মুসলিম ভাইদের কথা ভেবে, অথচ সৌদি আরব কিন্তু খুশিই হবে আমেরিকা হামলা করলে। আর এক মুসলিম রাষ্ট্র জর্ডান ইসরায়েল এর সাথে খুব দহরম মহরম সম্পর্ক। আমরা মুসলিমরা বোকার মত ভাবি এইটা একটা ধর্ম যুদ্ধ, আসলে কি তাই? এইটা হয়ত কোন এক সময় ধর্ম যুদ্ধ ছিল, কিন্তু এখন এইটা হয়ে পড়েছে অর্থনৈতিক যুদ্ধ। তেল আছে বলেই আমেরিকার এত আগ্রহ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায়, আর আমেরিকা প্রধান ক্রেতা বলে সৌদি আরব হুজুর হুজুর করে আমেরিকা কে। আমেরিকা যুদ্ধ ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে করছেনা, যুদ্ধ করছে অর্থনৈতিক লাভের আশায়।
সৌদি আরব এর কিছু ভালো না লাগলেই আমার মুসলিম ভাইরা বলে উঠে, ‘ইহা সহিহ ইসলাম না। কোন সাহসে প্রিয় নবীর দেশে সৌদি আরব আমাদের প্রিয় ইসলাম অবমাননার সুযোগ পায়? কেন আমরা সেই জালিম শাসকদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করিনা? কেন তাদের বিরুদ্ধে রাস্তায় মিছিলে নামতে আমাদের তীব্র অনিহা? পশ্চিমা কোন দেশে হিজাব নিষিদ্ধ করল এইটা নিয়ে আমাদের চিন্তার শেষ নেই, কিন্তু সৌদি আরব এ যে নারীদের বুকের দুধ খাইয়ে গাড়ির ড্রাইভার কে পরপুরুষ না করার দীক্ষা দিল, ওইটা নিয়ে আমাদের চিন্তা কম। কুরানে সরাসরি কোন ‘পরিমাণ’ বলা না থাকলেও সৌদি আরব এ যখন কোন খুন হয়, তখন নিম্নোক্ত উপায়ে তার ‘ব্লাড মানি’ নির্ধারণ করা হয়ঃ
নিহত ব্যক্তি মুসলিম পুরুষ হলে ৩০০,০০০ রিয়াল, মুসলিম নারী হলে ১৫০,০০০ রিয়াল, খ্রিস্টান বা ইহুদী পুরুষের জন্য ১৫০,০০০ রিয়াল, খ্রিস্টান বা ইহুদী নারীর জন্য ৭৫,০০০ রিয়াল, অন্য কোন ধর্মের পুরুষের জন্য ৬,৬৬৬ রিয়াল, অন্য কোন ধর্মের নারীর জন্য ৩,৩৩৩ রিয়াল।
http://en.wikipedia.org/wiki/Diyya
আপনি যদি বদ্ধ পাগল না হোন, তাহলে বুঝতেই পারছেন, কি রকম ঘৃণ্য এবং অসম এই বিচার। ইসলাম এ কোথাও বলা নাই যে এই রকম অসম উপায়ে ব্লাড মানি নির্ধারণ করো, এইটা সৌদি আরবের শাসকদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনার ফসল। তারপর ও আমরা চুপ করে থাকব, আর মাঝে মাঝে হিজাব নিয়ে একটু আহা-উহু করব। হিজাবের কথাই আপনি ধরুন, কুরানে তো পুরুষের পর্দার কথাও বলা আছে। কিন্তু হিজাব বা নারীর পর্দা নিয়ে যে পরিমাণ ব্লগ, নোট, বই লেখা হয়েছে, তার ১% ও পুরুষের পর্দা নিয়ে লেখা হয়েছে কিনা সন্দেহ আছে। সেই দিন দেখলাম এক মুসলিম ভাই ব্লগ লিখছে যে আজকাল মেয়েরা এত সিনথেটিক কাপড় পরে যে অন্তর্বাস পর্যন্ত দেখা যায়, যেখানে আল্লাহ এক নারীর দিকে ২ বার তাকাইতে নিষেধ করছেন, সেইখানে কি রকম কুদৃষ্টি নিয়ে তাকালে এই জিনিস আবিষ্কার করা যায় আপনিই বলেন। এই কয়দিন আগেই দেখলাম মিশরে মৃত নারীদের সাথে তাদের স্বামী সেক্স করতে পারবে মারা যাবার পর ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত। স্বাভাবিক ভাবেই নাস্তিক এবং বিধর্মীদের মধ্যে এইটা নিয়ে বিশাল আলোচনা আর টিটকারি। কিন্তু আমাদের মুসলিম ভাইরা মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকলেন। আরও হতাশার বিষয় এই আইন প্রচলন করেছে এক ইসলামিক দল। এহেন আজব এবং নৃশংস আইনের বিরুদ্ধে কেন আমরা জিহাদ করিনা? মুসলমান ভাইদের এই নীরবতা দেখে আমার মনে পড়ে আমাদের দেশের সরকারের কথা, যারা দেশে যাই অনাচার হোক না কেন তা দেশের বাইরে প্রচার না করার অনুরোধ জানান, পাছে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। তেমনি আমার মনে হয় মুসলিম ভাইরা মুসলিম অধ্যুষিত দেশ গুলোর কঠোর সমালোচনা করতে লজ্জা পান, পাছে আমাদের প্রিয় ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।
২।
মাঝে মাঝেই দেখা যায়, আমার মুসলমান ভাইরা যাকে-তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে বসেন। শুধু হুমকি দিয়েই অনেকে ক্ষান্ত হননা, অনেক লেখক, কবিই আজ আমার মুসলমান ভাইদের জিঘাংসার শিকার। যখন ই কাউকে হত্যা করা হয়, যখন নাস্তিক-বিধর্মীদের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায়, তখনও ছোট করে আমাদের মুসলমান ভাইরা একটা মন্তব্য দিয়ে যান, ‘ইহা সহিহ ইসলাম না’। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য আজ পর্যন্ত আমি এখনও কোন মুসলিম ভাই কে আগ বাড়িয়ে বলতে শুনিনি যে হুমায়ূন আজাদ কে হত্যা করা উচিত হয়নাই, খুনিদের বিচার হওয়া উচিত ইত্যাদি। কার্টুনিস্ট আরিফ কে বিনা প্রয়োজনে যখন কারাগারে পাঠানো হল, তখন ও আমরা মৌনতা পালন করলাম। সালমান রুশদির বিরুদ্ধে যে হত্যা পরোয়ানা জারি আছে সেইটা নিয়েও আমাদের কোন উচ্চবাচ্য নাই। এই কয়দিন আগে হামজা কাশগারি নামের এক সৌদি সাংবাদিক মুহাম্মাদ এর নামে অপমান সূচক টুইট করায় সে মালয়েশিয়া পালিয়ে গেলেও তাকে সৌদি আরবে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য করে, তার ভাগ্যে কি আছে তা বুঝতেই পারছেন। ১৪০ ক্যারাকটার এর এক টুইট এর জন্য একজন কে হত্যা করা হবে, এতে আমরা সামান্যও বিচলিত হইনা। মুখে যাই বলুক, আমি যেইটা বুঝছি তা হল, আমার মুসলমান ভাইরা মোটেই মন খারাপ করেনি যখন হুমায়ূন আজাদ কে কোপানো হল কিংবা সালমান রুশদির নামে হত্যা পরওয়ানা জারি হল।
আমাদের একদম প্রধান সমস্যা যেইটা তা হল, আমরা মুসলমান রা মনে করি, তুমি মুসলিম হও আর না হও আমাদের আচার, নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। মুহাম্মাদ কে আঁকা নিষেধ, এইটা আমরা মুসলমানরা সবাই জানি, কিন্তু একজন অমুসলিম, নাস্তিক কেন এইটা মানতে বাধ্য হবে? হ্যাঁ, যদি কোন ব্যক্তি নিজেকে মুসলিম দাবি করে এবং একই সাথে মুহাম্মাদ এর চিত্র অঙ্কন করে, তাহলে সেইটা চিন্তার বিষয় হয়ত হত, কিন্তু তা তো কেউ করছেনা। মুহাম্মাদ কেন ৯ বছরের বালিকা বা নিজের পালিত পুত্র বধু বিবাহ করেছিলেন, এইটা নিয়ে গবেষণা করার দায়িত্ব অমুসলিম দের না। তারা যদি তাদের ভাসা ভাসা জ্ঞানেও মুহাম্মাদ কে খুব ভালো মানুষ না মনে করে, এইটা তাদের কি এতটাই গর্হিত দোষ যে তাদের মেরে ফেলতে হবে? বলতেই পারেন আমাদের ধরমানুভুতি তে আঘাত করল কেন? খুব ভালো প্রশ্ন, তাইলে চলুন দেখে নেই, আমাদের ধরমানুভুতি তে আঘাত লাগাতে কত কষ্টই না করতে হয়। এই ধরা যাক, আসিফ মহিউদ্দিন এর কথা। ভদ্রলোক এতটাই আক্রমণাত্মক যে আপনার ধরমানুভুতি তে আঘাত লাগতে বাধ্য। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয়, এ দেশের বিশাল এক অংশ খুব করে চায় তাদের ধরমানুভুতিতে আঘাত লাগুক। এইজন্য এরা কষ্ট করে আসিফ মহিউদ্দিন কে ফ্রেন্ড রিকুএস্ট পাঠাবে অথবা সাবস্ক্রাইব করবে, আর এরপর চলবে শুধু একের পর এক ধরমানুভুতিতে আঘাত আর আঘাত। যখন আর সহ্য হয়না, তাকে করা হয় মেসেজ, সাথে থাকে গালাগালি আর মৃত্যু হুমকি। আপনারা আমাকে বলুন এতই যখন আঘাত পান আসিফ মহিউদ্দিন এর কথা শুনে, আপনাকে কোন অদৃশ্য শক্তি তাকে হাইড বা ব্লক করা থেকে আটকিয়ে রেখেছিল। আর হত্যা করাই যদি হয় সমাধান, তাহলে চিন্তা করুন কত লক্ষ-কোটি মানুষ কে মুসলমানদের হত্যা করতে হবে। কত শত মানুষ যে প্রতিনিয়ত ইসলাম ধর্ম আর মুহাম্মাদ এর অবমাননা করছে এদের হত্যা করা শুরু করলে মুসলমান রা নিজেরাই একে শান্তির ধর্ম বলে প্রচার করতে লজ্জা পাবে।
অনেককেই বলতে শুনি কুরানের এই অনুবাদ ভুল, এই ব্যাখা ভুল। এই অনুবাদ কে করে? ইউটিউব এ দেখবেন দেয়া আছে নাস্তিকদের হত্যা করার, স্ত্রীকে প্রহার করার সহিহ তরিকা। এগুলো ভুল তীব্র প্রতিবাদ জানান, এদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করুন। অমুসলিমদের ইসলাম অবমাননা যদি তাদের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে, তাহলে মুসলিমদের এসব ভুল ব্যাখার বিরুদ্ধে মুসলিমরা চুপ কেন?
অথচ কে কোন অমুসলিম ইসলামের অবমাননা করল এইটার চাইতে আরও বড় সমস্যা চোখ মেললেই দেখতে পাই। এই যে এত মাজার, পীর ভালো মত ধর্ম ব্যবসা জাঁকিয়ে বসল আমাদের চোখের সামনে আর ইচ্ছে মত শিরক, গুনাহ আর ইসলামের অবমাননা করতেই আছে, তাতে আমাদের সমস্যা নাই। আমরা কোন পীরের বিরুদ্ধে হত্যা পরওয়ানা জারি করা তো দুরের কথা, ভালো মত প্রতিবাদও করিনা। আমরা ব্যস্ত জানতে কিভাবে প্যারিস হিল্টন মুসলিম হল, কিভাবে নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে আজান শুনল। এই সব বানোয়াট গল্প শুনেই আমাদের শান্তি হয়। অবস্থা এতটাই খারাপ যে ফটোশপ করে, এডিটিং করে মানুষ কে ইসলামের পথে আনতে হচ্ছে। নীচের ছবিটি দেখুনঃ
৩।
ছোট বেলায় যখন এক কথায় প্রকাশ পড়তাম, ‘যে আল্লাহ্র অস্তিত্ব কে বিশ্বাস করেনা- নাস্তিক’, আমি বুঝতে পারতাম না এইটা কিভাবে সম্ভব! পরবর্তীতে বুঝলাম এরকম মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। বাস্তব জীবনেও এরকম অনেকের সাথে পরিচয় হল, ফেসবুক-ব্লগ এর কল্যাণে আরও অনেকের সাথে পরিচিত হলাম। স্বাভাবিক প্রশ্ন, এরা কেন নাস্তিক? এ দেশের একটা বিশাল মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস যখন তখন যার তার সাথে সেক্স আর ইচ্ছা মত চুরি-বাটপারি করার জন্যই মানুষ নাস্তিক হয়। অনেক নাস্তিকের সাথে পরিচয় থাকলেও এরকম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী কোন নাস্তিকের সাথে এখনও পরিচিত হইনি। আপনি মানুন আর নাই মানুন, একটা বিশাল অংশ ধর্ম বিশ্বাস করে শুধু মাত্র তার পরিবার সেই নির্দিষ্ট ধর্ম মানে বলে। এই বিশাল অংশ ধর্ম নিয়ে ভয়াবহ উদাসীন, বলতে গেলে কিছুই জানেনা ধর্ম নিয়ে, শুধু জানে ধর্মে অনেক ভালো ভালো কথা বলা আছে। এরপর তারা নিজের ইচ্ছে মত জীবন যাপন করে। অনেকেরই বিবাহপূর্ব শারীরিক সম্পর্ক থাকে। যা বলতে চাই তা হল, বিবাহ পূর্ব সম্পর্ক রাখতে আজকাল ধর্ম বিসর্জন দেয়া লাগেনা। বরং ধর্ম বিসর্জন দিলে হাজারো সমস্যা দেখা দেয়। এই নাস্তিকদের খুব কম সংখ্যকদের পরিবার ই জানে যে তারা নাস্তিক, জানলেও খুব একটা ভালো ফল হয়না। আত্মীয় স্বজন জানলে আরও বিপদ। ছেলে মেয়ে কি রকম শয়তানের পাল্লায় পড়লে ধর্ম বিসর্জন দেয় এইটা কারোরই মাথায় ঢুকেনা। ধার্মিক বন্ধু-বান্ধবও নাস্তিকতাকে ভালো ভাবে নেয়না। বস্তুত আমি আজ পর্যন্ত নাস্তিক হবার ফলে কোন ‘সুবিধা’ খুঁজে পাইনি। বরং ‘মডারেট মুসলিম’ দের মত ধর্ম আর পার্থিব জীবন চালানোতে অনেক অনেক সুবিধা দেখতে পাই। অনেকে নাকি ‘ফ্যাশান’ করে নাস্তিক হয়। এরকম ২-১ তা গাধা আমিও অবশ্য দেখছি। কিন্তু ‘ফ্যাশান’ করে লোক দেখানো নাস্তিক হওয়া আসলে খুব কঠিন। কেউ যদি মনে মনে বিশ্বাস করে আল্লাহ্ আছে আর মুখে নাস্তিকতা কপচায়, এর মত সু-গাধা পৃথিবীতে একটাও নাই। আল্লাহ্ এর অস্তিত্ব কে স্বীকার করলে তার ভালো মতই জানার কথা নাস্তিকতার শাস্তি কি। আর এ জীবনে যদি ভুল করে আল্লাহ্র অস্তিত্ব বিশ্বাস ও করি, ক্ষতি তো নাই। নাস্তিক হবার জন্য তো কোনই পুরস্কার নেই, কোনই লাভের আশা নেই পরকালের জীবনে।
তাহলে মানুষ কেন ইচ্ছে করে নাস্তিক হয়? ধার্মিক দের হজম করা খুব কষ্ট হলেও উত্তর হল, ‘সত্যের জন্য’। পথভ্রষ্ট হোক আর যাই হোক, তারা মনে করে ধর্ম অনেক অন্যায় কে ন্যায় বানিয়ে দেয়, অনেক অবিশ্বাস্যকে বিশ্বাস করতে বলে কোন যুক্তি ছাড়াই। তাই অসুবিধার কথা ভেবেও তারা ধর্ম বিশ্বাস ত্যাগ করে।
নাস্তিকতা কি মুসলমানদের জন্য খুবই খারাপ সংবাদ? আমি একদমই মনে করিনা। এই সেদিনই এক নাস্তিকের সাথে আস্তিকের আলোচনা দেখছিলাম। নাস্তিক জানতে চাইলো, কেন ইসলামে দাসপ্রথা হারাম নয়? কেন ২ জন নারী সাক্ষী ১ জন পুরুষ সাক্ষীর সমান? আস্তিক বন্ধুটি জানালো, সে পড়াশুনা করে এসে জানাবে। খুব দুঃখজনক হলেও সত্য নাস্তিকদের মোকাবিলা করার জন্য আমাদের পড়াশুনা করতে হয়, এর আগে এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন আমরা বোধ করিনা। নাস্তিকদের জন্য হলেও হয়ত তারা নতুন কিছু জানতে পারছে।
তাই সবশেষে শুধু বলতে চাই, একটু আত্মসমালোচনা করতে শিখুন, একটু আপনার মুসলমান ভাই দের দিকে তাকান, সব কিছুকেই সহিহ ইসলাম নহে আর বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে হয় চালানো যায়না।
সবকিছু পড়ে মনে হচ্ছে আমরা মারামারি করছি ইসলাম কতটা ভাল বা কতটা খারাপ তা প্রমাণ করার জন্য। একজন মানুষ ও মুসলমান হিসাবে আমি বিশ্বাস করি ইসলাম একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবনবিধান, ইসলামকে শুধুমাত্র কিছু প্রথাগত ও পারিপার্শিক বিষয়ের মাধ্যমে বিচার বিশ্লেষণ করাটা সমুচিত নয়। প্রতিটি ধর্মই তাদের অনুসারীকে খারাপ কাজে উদ্ভুদ্ধ করে না বরং ভালকাজের পরামর্শ দেয়। আমি নিজে প্রতিটি ভাল ও খারাপ কাজের জন্য প্রশংশিত বা নিন্দিত..আমার কর্মের জন্য আমি নিজে দায়ী..এভাবে নিজের কর্মের জন্য সরাসরি ধর্মের উপর দোষারপ করা কি আমাদের উচিৎ?
ভাই যারা বলছেন ইসলাম খারাপ..তারা কি আরো বলবেন কতটা খারাপ?…ইসলামের/মুসলমানদের খারাপ হওয়া কি…১ম ও ২য় বিশ্বযুদ্ধকে ছাড়িয়ে গেছে? আমাদের খারাপ হওয়া কি আমেরিকার, আফ্রিকার উপর অত্যাচার করাকে ছাড়িয়ে গেছে? আমরা কি সমকামী বিয়েকে আইনগতভাবে প্রতিষ্ঠা করার মত খারাপ কাজ করে ফেলছি?….
আমরা এইরকম খারাপ হতে চাই না বা খারাপ হওয়ার প্রতিযোগিতায় নামতে চাই না…..
আমি যদি কোন খারাপ কাজ করি তা..আমাকে ইসলাম করতে বলেনি…
আরো অনেক কিছু বলতে ইচ্ছা করে কিন্তু আপনাদের মত ভাল করে গুছিয়ে লিখতে বা বলতে পারি না…আর তার চেয়ে বেশী যেটা পারি না..তা হল..তর্ক/বিতর্ক করা…
আমার এইটুকু মতপ্রকাশে কারো মনে যদি ব্যাথা দিয়ে থাকি..আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
@মাহবুব আলমগীর, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। প্রথমে আপনাকে আশ্বস্ত করি, আমি আপনার মন্তব্যে মনে আঘাত পাইনি। 🙂 আমি আমার লেখায় কোথাও ইসলামের সমালোচনা করেছি বলে মনে পরেনা, শুধু মুসলমানদের কিছু অযৌক্তিক কাজ নিয়ে লিখেছি। আমি এইটা বলছিনা যে ইসলাম ধর্ম আমার কাছে সমালোচনার ঊরধে, বরং এর ঠিক উল্টো, ইসলাম নিয়ে অনেক সমালোচনাই করা যায়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি, সেই সমালোচনা না করেও আপনারা ধরেই নিয়েছেন যেহেতু নাস্তিক, তাই ইসলাম নিয়ে যা খুশি লিখেছে।
আর ধর্ম কি কে কত কম খারাপ এইটার প্রতিযোগিতা? ইসলাম কে আপনি কেন তাইলে আমেরিকা বা অন্যদের সাথে তুলনা করছেন? আপনি মনে করছেন, সমকামী বিয়ে খুব খারাপ। এইটা কেন খারাপ নয়, সেই ব্যাখা দেয়া আমার ধারণা ‘উলুবনে মুক্ত ছড়ানো’ হবে, তাই শুধু বলি আপনার কি মনে হয় নাস্তিক দের হত্যা করা কি ‘সমকামী বিয়ের’ তুলনায় কম খারাপ?
বুঝতে পারছি, আপনি একজন মডারেট মুসলিম যাদের ধারণা ধর্মে শুধু ভালো ভালো কথা লেখা আছে। এত যে আত্মবিশ্বাস এই ধর্ম নিয়ে একটু পড়াশুনাই করে দেখুন না। একটু জানুন কেন নাস্তিকদের ইসলাম হত্যা করতে চায়, কেন দাসীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক ইসলাম জায়েজ করল কিংবা ২ জন নারী সাক্ষী কিভাবে ১ জন পুরুষ সাক্ষীর সমান হয় একটু ঘাঁটা ঘাঁটি করুন। তারপর বলুন আসলেই শুধু ভালো ভালো কথা লেখা আছে নাকি ধর্মে। আর খুব মনঃপুত উত্তর পেলে আমাদের জানাবেন কিন্তু। 🙂
ভালো থাকবেন।
@মাহবুব আলমগীর, আপনি ভাল কথা বলেছেন…এবার ধর্ম বাদ দিয়ে কর্ম করেন তাহলেই হবে…কেন বললাম এ জন্য মোতাহার হুসেনের সংস্ক্রিতি কথা বইটি পরে দেখতে পারেন……
নাস্তকিতার অপরাধ েবন্ধুমহল েগ্রহণযোগ্যতা হারয়িছে,ি কারো কাছ েঘৃণতি আবার কউে কউে তাচ্ছল্যি তামাশাও কর।ে তব েআম িহতাশ নই, কারণ আম িজান িএটাই সত্য। তাদরে জন্যই আমার করুনা হয়। অলীক বশ্বিাস নয়ি েমর েযাব,ে অথচ কখনো জানতওে পারব েনা তার জীবনরে সরো মথ্যিাটাক।ে
রজিওয়ান, আপনার লখোটা খুব ভালাে হয়ছে।ে ধন্যবাদ।
@আরিফ, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আমি নিজেই মুক্তমনায় নতুন। এই নিয়ে মাত্র ৫ টি পোস্ট দিলাম। আমার চাইতে আরও কয়েকশ গুন ভালো ব্লগার এখানে আছেন, তাদের লেখা পড়ুন, অনেক ভালো লাগবে আশা করি। ভালো থাকবেন। 🙂
রিজওয়ান – দারুন লিখেছেন। আমি মুকতমনার একজন নুতুন পাঠক। আজ এক বনধু এর থেকে এই সাইট টির খবর পেলাম। মনে হলো এত দিন পর নিজের সঠিক একটা ঠিকানা পেলাম।
জনাব জাফর সাদিক চৌধুরী—- আপনার কথা গুলো খুব ভালো লাগলো। কিনতু একটি কথা মেনে নিতে পারছি না। ( ৮০% মুসলিমই হয়ত মডারেট মুসলিম)। হবে ২০% মডারাটেড।
@HumanityLover, মুক্তমনায় আপনাকে স্বাগতম। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ৮০% মুসলিমই মডারেট এইটা আমিই বলেছি। তারা মডারেট কারণ তারা ইসলাম নিয়ে বেশি জানেনা, নিজের বিচার বুদ্ধিতে চলে। বাংলাদেশের শহরের কথা ধরলে আমি নিশ্চিত অবশ্যই প্রায় ৮০% লোকই মডারেট মুসলিম, গ্রামাঞ্চলের মানুষ তো আরও জানেনা ধর্ম নিয়ে, হুজুরদের ওয়াযই তাদের ভরসা, এদের নিয়ে খুব ভালো ধারণা নেই বলে আমি নিশ্চিত নই তারা কোন ক্যাটেগরিতে পড়ে। ভালো থাকবেন।
@রিজওয়ান, প্রথমে বলি, সাহস করে তোমার পোস্টে নিজের পুরো নাম নিয়ে কমেন্ট করেই ফেললাম। :))
অসাধারণ লিখা। তোমার বলার ভঙ্গি ও বিশ্লেষণ করার ধরণের প্রশংসা না করে উপায় নেই।
আমি চিন্তা করি, মাঝে মাঝে খুব ঝাঁঝ দিয়ে কিছু সত্য কথা স্ট্যাটাস দিতে ইচ্ছে করে, কিন্তু পারি না। বিষয়টা যতটা না তথাকথিত বিশ্বাসে আঘাত করার ভয়ের, তার চেয়ে বেশি সমর্থন না পাওয়ার।
ঠিক কথা। আমি মনে করি, তাদের এই হাস্যকর বিশ্বাসটা পরিবর্তন করতে হবে নাস্তিকদেরই। সেটা কিন্তু হচ্ছে। আমি অন্তত অনেকজনকে বিশ্বাস করাতে সমর্থ হয়েছি যে নাস্তিকরা শান্ত, বিনয়ী, যুক্তিবাদী তো বটেই, সহনশীলও হয়। বাকীটা যেন নিজেই যাচাই করে।
এর চেয়ে সত্যি আর কি হতে পারে?
বিষয়টা এমনই যেন মনে হয়, এরা ইসলামের সত্য লুকাতে ব্যস্ত এবং তাই তারা আসিফের সত্য কথাগুলো বন্ধের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এরা গালি দেয়ার মাঝে কোন গুনাহ্ নেই। সব গুনাহ্ ইসলামের কিছু সত্য তুলে ধরার মধ্যে। আবার এরাই আমাদের শিখাবে কিভাবে যুক্তি দিয়ে বিশ্বাস করতে হবে যে ‘আল্লাহ’ আছে।
মুসলিমরা চুপ সেটা পুরোপুরি ঠিক না। তবে এরা “মুসলিম যতই ভুল হোক, ঈমান থাকলে চলবে” নীতিতে বিশ্বাসী। একটা ব্যাপার হল, ইসলামের মধ্যে এত এত বিভক্ত দলের অন্যতম কারণও কিন্তু এটা। ইসলামের চার মাজহাব হানাফী/শাফেয়ী/হাম্বলী/মালেকী মাজহাবগুলো কিন্তু বিভিন্ন আয়াত আর হাদীসের বিভিন্ন অর্থ নেয়ার কারণেই এসেছে। অনেকে বলে, যে কোন একটা মাজহাব ধরে এগুলেই জান্নাত নিশ্চিত। এই কথা কোন হাদীসে লিখা আছে সেটা একটা প্রশ্ন। কারণ ইমামগুলো নবীর সময়ের পরে এসেছে। তুমি মুসলিম হতে গেলে যে কোন একটা মাজহাব অনুসরণ করতেই হবে।
চালিয়ে যাও। খুব শিঘ্রী ৩ নম্বর সিরিজটা দেখতে চাই। 🙂
@জাফর সাদিক চৌধুরী, ধন্যবাদ তোমার মন্তব্যের জন্য। হাহা, সমস্যা নাই, স্ট্যাটাস দাও, সমর্থন দেব। 😛 আর ঠিকই বলেছ, নাস্তিক-আস্তিক যেই হোক না কেন, কাওকে আমি তার ‘বিশ্বাস’ দিয়ে বিচার করতে নারাজ, আস্তিকরাও এক সময় আশা করি এভাবেই ভাবতে শিখবে। 🙂 আর হ্যাঁ, গোঁরা মুসলিম হয়ত কম, ৮০% মুসলিমই হয়ত মডারেট মুসলিম, কিন্তু সেই তুলনায় তাদের প্রতিবাদের স্বর অনেক স্তিমিত। 🙁
@রিজওয়ান, এইটা ঠিক। মডারেট মুসলিম বেশি। তবে তাদের প্রতিবাদের স্বর স্মিত হওয়ার একটা কারণ এই যে, কেউ ধর্ম নিয়ে ল্যাদাইতে চায় না। আমি অনেককেই দেখলাম, যে কোন প্রসংগে একেবারে জ্ঞানী ‘হিরু’ সাজার চেষ্টা করে, কিন্তু ধর্ম নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করতে রাজী না। বুঝতেই পারতেছ, “ইহা সহীহ্ ইসলাম নহে”! :-s
বেশ অল্প পরিসরে সুন্দর একটা লেখা।বেশ ভাল লাগল।তবে পরবর্তীতে হিন্দু প্রেক্ষাপটে এরকম একটা লেখা হলে ভাল হয়।আমি নিজে সেরকম একটা বিষয় নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি।যেহেতু আমি মুক্তমনা’র লেখক নই,সুতরাং আমি আপনাকে আমার লেখার বিষয়বস্তু ও তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সাহায্য করতে আগ্রহী।আমার ই-মেইলে যোগাযোগ করলে আনন্দিত হব।([email protected])।তাহলে একটা বহুযাচিত লেখা আসবে হয়ত মুক্তমনায়।
@অভ্র ব্যাণার্জী, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আমি আসলে আমার কিছু এক্স-হিন্দু বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করছিলাম এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে। এখন মনে হচ্ছে আপনার কাছেই প্রয়োজনীয় সাহায্য পাব। :))
(F) (F) (F)
@ঢাকা ঢাকা, (F)
একজন আস্তিক হয়েও আপনার পোস্টের সাথে একমত । আমার কাছে প্রচলিত ধর্মীয় রীতিগুলো একজিনিস, আর আল্লাহকে বিশ্বাস অন্য জিনিস ।কারন সমাজ পরিবর্তনশীল হওয়ায় ধর্মীও রীতিনীতি কখনো সব সময়ের সব সমাজের জন্যে উপযুক্ত না। আর আল্লাহকে বিশ্বাস আমার মনে এক ধরনের মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।
@দ্বিধান্বিত আস্তিক, ব্যক্তিগত ভাবে কে কোন ধর্মে বিশ্বাস করল কিংবা আল্লাহ্-ভগবান বিশ্বাস করল কিনা এইটা আমার কোন বিশেষ মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু সব সমাজের জন্য যে সব রীতি-নীতি চলার যোগ্য না, এই সহজ কথটাই তো মানুষ মানতে চায়না। তারা মনে করে ধর্ম গ্রন্থে যা আছে, তা চিরকালের সব সমাজের জন্যই এসেছে, আর তাতেই না যত সমস্যার শুরু। ভালো থাকবেন, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
“এই নাস্তিকদের খুব কম সংখ্যকদের পরিবার ই জানে যে তারা নাস্তিক, জানলেও খুব একটা ভালো ফল হয়না। আত্মীয় স্বজন জানলে আরও বিপদ। ছেলে মেয়ে কি রকম শয়তানের পাল্লায় পড়লে ধর্ম বিসর্জন দেয় এইটা কারোরই মাথায় ঢুকেনা। ধার্মিক বন্ধু-বান্ধবও নাস্তিকতাকে ভালো ভাবে নেয়না। বস্তুত আমি আজ পর্যন্ত নাস্তিক হবার ফলে কোন ‘সুবিধা’ খুঁজে পাইনি।” – যে মানুষ বুঝে শুনে নিজের ইচ্ছায় এই সবচেয়ে মাইনরিটি গ্রুপে আসেন তার জন্য আমার অনেক অনেক শ্রদ্ধা। বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয় নাস্তিক জানা তো দূরের কথা, মাঝে মাঝে সামনা সামনি খুব নিরীহ বিষয়, যেমন নারীদের ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অবমাননা করা হয়, এই জাতীয় কথা বললেই আর রেগে কথা বলে না। এতটুকু সামান্য সমালোচনা তারা শুনতে চায় না। এর থেকে দুঃখের আর কি থাকতে পারে! আপনার লেখার মত যদি সত্যি সত্যি আস্তিকদের মন, চাহুনি ও কথা পরিমার্জিত হত তাহলে মানুষ হিসেবে এই সমাজে মাথা উচু করে বেচে থাকা যেত। আস্তিকদের কাছে তো নাস্তিকরা মানুষই না!
@নির্মিতব্য, সমালোচনা শুনবে কিভাবে ভাই? ভালো করে দেখেন আমি সরাসরি এই লেখার কোথাও ধর্মের সমালোচনা করিনি, শুধু ধার্মিকদের করেছি। তারপরও মানুষের আঘাত লাগছে, ধর্মের সমালোচনা হলে যে কি হত চিন্তা করেন! সব আস্তিকই যে মনে করে নাস্তিকরা মানুষই না, তা কিন্তু নয়। মানুষ হিসেবে ভালো হলে আপনাকে সবাই গ্রহণ করবে একদিন, আপনি মুসলিমই হোন আর নাস্তিকই হোন। ভালো থাকবেন, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
নাস্তিকের এই সংজ্ঞাটা সত্যিই অসাধারণ লাগলো। আমিও প্রথম প্রথম ফেসবুক বন্ধুদের নাস্তিকতা বিষয়ে কোন লেখা শেয়ার করতে বা এই বিষয়ে আলোচনা করতে ইতস্তবোধ করতাম। ভাবতাম সবাই জেনে যাবে আমি নাস্তিক। কিন্তু অনেক চিন্তা করে দেখলাম, “অন্যায় করা আর অন্যায় সয়ে যাওয়া সমান অপরাধ”। ধর্মীয় অন্ধ বিশ্বাস, অনাচারগুলো সমাজ থেকে দূর করা না গেলে সত্যিকার জ্ঞানের আলো থেকে আমরা দূরে চলে যাবো। আমার এলাকায় খুজলে হয়তো অনেক নাস্তিক পাওয়া যাবে,তবে প্রকাশ্য এ বিষয়ে কাউকে কিছু বলতে শুনিনি, কিন্তু আমি যখন সরাসরি আমার পরিচিত জনদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করলাম তাঁদের মধ্যে মধ্যে থেকে ২/১ জন আমার সাথে একমত হয়েছে, অনেকে এই বিষয় জানার জন্য পড়াশুনা শুরু করেছে, বেশির ভাগই বলেছে ছেলেটা গোল্লায় গেছে আবার অনেকে বলে ধর্মটা যদি মিথ্যাও হয় তা পালন করলে সমস্যা কোথায় (যদি মিথ্যা হয় তাহলেতো সব চুকে গেল আর যদি সত্য হয় তাহলেতো দোযখের আগুনে জ্বলতে হলোনা বরং ৭২টা হুরসহ বেহেস্ত :)) ) কিন্তু যদি তাঁদের কাছে বলি ধর্ম মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করছে, অন্যায় করার প্ররোচনা যোগাচ্ছে তখনই প্রসঙ্ঘ পাল্টে ফেলছে। এই জন্য আমাকে আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা বলে তোমার কপালে বউ জোটবেনা, কেউ জেনে-শুনে নাস্তিক ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দেবেনা। :-Y
সব শেষে বলবো লেখাটা অনেক ভাল লেগেছে।
@জিল্লুর রহমান, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আর বউ জোটা নিয়ে এত চিন্তা করবেন না, আশেপাশে কম নাস্তিক তো দেখলাম না, নাস্তিক হবার কারণে যে তারা খুব একাকিত্তে জীবন যাপন করছে তা কিন্তু না। 🙂 ওই যে বললাম না, কেউ তো বলতে গেলে আজকাল ধর্মের কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেনা, মানেনা বলেই রক্ষা, ঠিক ঠাক মানলে আসলেই বউ পাইতে কষ্ট হত। 😛
ইসলামী রুল অনুযায়ী বাংলাদেশের বেশিরভাগ মুসলিমই মুরতাদ…
@মহাপুরুষ, আমার বন্ধুদের মতে পৃথিবীর কোন দেশই ইসলামিক না, বাংলাদেশ তো না-ই।
“সৌদি আরব এর কিছু ভালো না লাগলেই আমার মুসলিম ভাইরা বলে উঠে, ‘ইহা সহিহ ইসলাম না।” এই তথ্যটা কতটা সঠিক ? সৌদি আরব যে ইসলাম মেনে চলে সেটা অন্য অনেক কঠোর ইসলাম ধর্মীয় দেশের সাথেই মিলবে না । আর বেশিরভাগ মুসলিম ইসলামের জন্মভূমি হিসাবে সৌদি আরবকে আলাদা চোখে দেখলেও সৌদি আরবের ধর্মীয় ব্যাখ্যা নয় , বরং নিজের দেশের স্থানীয় ধর্মীয় ব্যাখ্যা মেনে চলে । শুধুমাত্র জিহাদি জোস ব্যবহার করে নিজের স্বার্থসিদ্ধীর ধান্দা করা সন্ত্রাসীরা ছাড়া কেউ আমেরিকার সাথে যুদ্ধ বা বিরোধকে ধর্মযুদ্ধ বলে না ।
“মাঝে মাঝেই দেখা যায়, আমার মুসলমান ভাইরা যাকে-তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে বসেন।” এটা সাধারন , শান্তিকামী মুসলমানদের জন্য অপমানজনক । কতজন মানুষ এধরনের হুমকি দেয় ? সালমান রুশদি-হুমায়ুন আজাদ নিয়ে লেখক কতজনের সাথে কথা বলেছেন আমি জানি না, কিন্তু উনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে সংখ্যাটা খুব কম এবং শুধু একটা ক্ষুদ্র গন্ডিতে আবদ্ধ কিছু মানুষের মধ্যে ।
”এত মাজার, পীর ভালো মত ধর্ম ব্যবসা জাঁকিয়ে বসল আমাদের চোখের সামনে আর ইচ্ছে মত শিরক, গুনাহ আর ইসলামের অবমাননা করতেই আছে, তাতে আমাদের সমস্যা নাই। আমরা কোন পীরের বিরুদ্ধে হত্যা পরওয়ানা জারি করা ” এই কথাগুলো কি লেখকের মূল লেখার বিষয়বস্তুর বিপরিত নয় । লেখক আশা করছেন আমরা অন্য ধর্মের মানুষের ইসলাম নিয়ে অজ্ঞতাপ্রসুত লেখার প্রতিবাদ না করে সহনশীল হব, তাহলে কেন শুধুমাত্র আমার দৃষ্টিতে তাদের ইসলামের পথটি ভ্রান্ত বলে আমি পীর-মাজারের অনুসারিদের হত্যার হুমকি দেব ? যদিও বেশিরভাগ মুসলিম স্বীকার করবে না, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ট আমরা মোটামুটিভাবে মেনে নিয়েছি যে ইসলামের বিভিন্ন পথ-মত এবং এদের মতভেদ আছে এবং এদের সবার সাথে আমার মতের মিল না হলেই তাদের মুশরিক-মুরতাদ-কাফের ঘোষনা করার প্রয়োজন নেই । তাই শুধু আমি অনুসরন করি না বলেই পীরের মুরিদদের উপর জিহাদ বা মৃত্যুর পরওয়ানা জারির দাবি কেউ তোলে না ।
কিছু পথভ্রষ্ট মানুষের কাজের জন্য যদি একটা বিশাল ধর্মীয় গোষ্টীর সবাইকে ‘মডারেট মুসলিম/সু-গাধা’ বা উগ্রপন্থি/আত্মপ্রতারক বলে দেওয়া হয় তবে লেখকের আত্মসমালোচনার ডাকটাকেও ফাঁকা বুলি মনে হতে থাকে ।
@রিশাদ উন নবি,
“মাঝে মাঝেই দেখা যায়, আমার মুসলমান ভাইরা যাকে-তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে বসেন।” এটা সাধারন , শান্তিকামী মুসলমানদের জন্য অপমানজনক । কতজন মানুষ এধরনের হুমকি দেয় ? সালমান রুশদি-হুমায়ুন আজাদ নিয়ে লেখক কতজনের সাথে কথা বলেছেন আমি জানি না, কিন্তু উনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে সংখ্যাটা খুব কম এবং শুধু একটা ক্ষুদ্র গন্ডিতে আবদ্ধ কিছু মানুষের মধ্যে ।”
শান্তিকামী মুসলিমদের জন্য এইটা অবশ্যই অপমানজনক, তবে আমার অভিযোগ না, তাদের অন্য মুসলমান ভাইদের ব্যবহারের জন্য তাদের লজ্জা পাওয়া উচিত। এই শান্তিকামী মুসলিম একটু বেশিই শান্তিকামী, এরা সাতক্ষীরায় হিন্দুদের উপর হামলা চালাইলে চুপ করে থাকে, ৮-৯ বছরের বাচ্চাদের খুন্তির ছ্যাকা দিলেও চুপ করে থাকে। খুব সাধারণ একটা অনুরোধ করেছি, প্রতিবাদ করুন। এই হুজুর বা গোঁরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। ড্যানিস কার্টুনিস্ট এর বিরুদ্ধে হত্যা পরওয়ানা জারি হল, ডাচ পরিচালক ভান গগ কে মেরে ফেলা হল, তখনও শান্তিকামী মুসলিমরা চুপ। এই সেদিনও দেখলাম এক বন্ধু স্ট্যাটাস দিল, ডাচ পণ্য বর্জন করো কারণ ডাচ পরিচালক ‘সাবমিসন’ চলচিত্রে ইসলামের অবমাননা করেছে, আর এক মুসলিম যে সেই পরিচালককেই হত্যা করে বসে আছে সেই খবর কেউ রাখেনা। এদের বিরুদ্ধে কথা বলতে এই শান্তিকামী মুসলিমদের কেন এত অনীহা?
“সৌদি আরব এর কিছু ভালো না লাগলেই আমার মুসলিম ভাইরা বলে উঠে, ‘ইহা সহিহ ইসলাম না।” এই তথ্যটা কতটা সঠিক ? ”
আমি আমার ফ্রেন্ড লিস্ট এর কোন মুসলিমকে এখন পর্যন্ত সৌদিরা যে বাংলাদেশের মানুষদের শিরশ্ছেদ করল এইটা নিয়ে কোনই কথা বলেনাই, আমি ফেসবুক এ একটা নোট লিখেছিলাম। সেইটা তে যে কয়জন মুসলিম উত্তর দিয়েছিল তাদের একটাই ভাষ্য ছিল ইহা সহিহ ইসলাম না। আর ২-১ জন প্রশ্ন করছিল অপরাধিদের শাস্তি হইছে, এইটা নিয়ে আফসোসের কি আছে। এত যে অন্যায়, দুর্নীতি হয় সৌদিতে, একটু খানি সমালোচনা তো আশা করতেই পারি নাকি?
”কিছু পথভ্রষ্ট মানুষের কাজের জন্য যদি একটা বিশাল ধর্মীয় গোষ্টীর সবাইকে ‘মডারেট মুসলিম/সু-গাধা’ বা উগ্রপন্থি/আত্মপ্রতারক বলে দেওয়া হয় তবে লেখকের আত্মসমালোচনার ডাকটাকেও ফাঁকা বুলি মনে হতে থাকে ।”
সু-গাধা, উগ্রপন্থি/আত্মপ্রতারক এগুলা কই বললাম? আর আপনি কি ‘মডারেট মুসলিম’ কথাটাকে অপমানসূচক ভাবছেন?
@রিজওয়ান,
আপনার বন্ধু ভাগ্য খুব খারাপ বলেই মনে হচ্ছে যদি ফেসবুকে এত বন্ধুর মধ্যে একজনকেও না পান যে ধর্মের গোড়ামির আগে মানবতাকে স্থান দেবে । সৈদি বা আমেরিকা – যেখানেই দূর্ণীতি আর মানবতা বিরোধি ঘটনা হয় তার সবই আমি সমালোচনা করি , অন্তত বন্ধুদের কেউ ভুল করে এগুলো সমর্থন করলে প্রতিবাদ করি , এমনটা আমার অনেক বন্ধুই করে , মুসলিম-হিন্দু উভয় ধর্মাবলম্বী বন্ধুরাই । কেউ যখন ফেসবুকে আজগুবি কুদরতের গল্প বলে ধর্মকে মহিমান্বিত করতে চায় সেটারও প্রতিবাদ করি আমরা । কিন্তু তাই বলে কারো বিশ্বাসকে আক্রমন করাটাকে বা কিছু মানুষের অন্যায়ের জন্য একটা গোষ্টির সবাইকে ঢালাওভাবে দোষী করাকে সমর্থন করি না ।
সাতক্ষীরায় হিন্দুদের উপর হামলা, হাটহাজারিতে মন্দিরের ক্ষতিসাধন এধরনের ঘটনাগুলোকে ততটুকুই ঘৃণা করি যতটুকু পার্বত্য চট্টগ্রামে আমাদের সেনাবাহিনী কিংবা ফিলিস্তিনে ইসরাইলের সেনাবাহিনীর অত্যাচারকে করি । আমি নাস্তিকদের কঠোর যুক্তিবাদিতার একজন বড় ভক্ত এবং ধর্মকে প্রত্যেকের একান্ত ব্যক্তিগত বলে মনে করি বিধায় অন্যকে ধর্মশিক্ষা দেওয়ার জয় নিজেকে যথেষ্ট যোগ্য মনে করি না । সাধারনত আমি কোনও ব্লগ নিয়মিত ফলো করি না, কিন্তু আপনার লেখাটায় ঢালাও ভাবে সব মুসলিমের দিকে ইঙ্গিত করায় আপত্তিটুকু না জানিয়ে পারলাম না ।
@রিশাদ উন নবি, আপনার কথা শুনে আমার আসলেই আমার বন্ধুভাগ্য নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে। 🙁 আপনাকে সাধুবাদ যে আপনি নিজ নিজ ধর্মের আগে মানবতার বানী বুঝতে পেরেছেন। 🙂 আমি অবশ্যই বুঝাইনাই যে মুসলামান মাত্রই সন্ত্রাসী। কিন্তু আপনার ৩ সন্তানের মধ্যে যদি ১ সন্তান বখে যায়, তাকে শুধু প্রয়োজন অনুযায়ী শাসনের উপর রাখতে বলছি। এই তো, এর বেশি কিছু তো বুঝাইনি। 🙂
@রিশাদ উন নবি,
বিশ্বাসে আঘাত লাগছে অতএব বলা যাবেনা এবং সমালোচনা করা যাবেনা এই যুক্তি দিলে তো কোনো রকম প্রগতির কথাই বলা হয়ে উঠবেনা। কারণ যা রামের কাছে সহনীয়, রহিম তা শুনে মনে করে তার ধর্ম বিপন্ন। রহিম যা দুবেলা করে, রাম তার ছায়া মারালে তার জাত যাবে। সব্বাইকে খুশি করে, মন যুগিয়ে কথা বললে কোনো প্রয়োজনীয় কথা বলাই দায়।
একটা ঐতিহাসিক ঘটনা উল্লেখ করছি। উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে একজন ব্রাহ্মন বাংলাদেশে দুইটি বই লিখলেন যার সারমর্ম হলো হিন্দুসমাজে বিধবাদের বিয়ে দেওয়া উচিত। ভদ্রলোকের নাম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। চতুর্দিকে ছিছিক্কার পরে গেল এবং ওনার নামে অভিযোগ হলো যে উনি “তাবৎ জনরুচিকে আহত করেছেন”! বিদ্যাসাগর প্রবল সামাজিক বাধার মুখে পড়লেন। লোকের খিস্তি খেউর আর চটুল গানে কলকাতায় কানপাতা দায় হয়ে গেল। কারণ বিধবার বিয়ে! এত বড় অনাসৃষ্টি। যে বিধবাদের ‘শুচিতা এবং পবিত্রতার’ উপর হিন্দু সমাজ টিকে তারা আবার বিয়ে করে সহবাস করবে?সমাজের আর বাকি কি থাকবে তাহলে?
প্রবল প্রতিরোধ সত্ত্বেও বিদ্যাসাগর সই সংগ্রহ করলেন। তার দাবী সমর্থনের জন্যে প্রায় ৯৫০ সই সংগৃহীত(ধরে নিন হাজার) হলো ।অপরদিকে হিন্দু রক্ষনশীল সমাজের চূড়ামণি রাজা রাধাকান্ত দেব প্রস্তাবের বিপক্ষে সই সংগ্রহ করলেন প্রায় ৩৬৫০০(ধরে নিন ৩৭ হাজার)। অর্থাৎ ভোটাভুটিতে দেখা গেল প্রায় ৩৭ গুন লোকে চাননা বিধবাদের বিয়ে হোক। কারণ তাদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত লাগবে ।
কর্তৃপক্ষ তত্সত্ত্বেও সেই আইন পাস করে দিলেন হিন্দু সমাজে বিধবারা পুনর্বিবাহ করলে, তাদের দ্বিতীয় পক্ষের সন্তানেরাও বৈধ এবং সম্পত্তির অধিকার পাবে।বিধবার পুনর্বিবাহ বৈধ পেল।
আমরা যদি আজকে বর্তমানে বসে অতীতের পর্যালোচনা করি তাহলে কি দেখব? কর্তৃপক্ষ সেইদিন জনমত অগ্রাহ্য করে ঠিক করেছিলেন না ভুল করেছিলেন? আজকের সভ্য সমাজের সংখ্যাগরিষ্টরা বলবে ঠিক করেছিলেন। অথচ এদের পূর্বপুরুষরাই তো একদিন লেঠেল লাগিয়েছিল বিদ্যাসাগরের মাথা ফাটাতে।
সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। লোকাচার, জনরুচি বা ধর্মানুভুতিতে আঘাত লাগবে বলে বসে থাকলে তিলমাত্র প্রগতির কথা বলা যাবেনা।
নিজে যুক্তিবাদী, প্রগতিশীল মুক্তমনা হব, অথচ পাশের বাড়ির ছেলেটার সাপে কাটার চিকিত্সা anti venom -এর বদলে কবিরাজি, homeopathy বা মাদুলি জলপড়া বা ওঝা বা গীতার শ্লোক দিয়ে হচ্ছে দেখেও যদি চুপ মেরে যাই, তাহলে ছেলেটার মরে যাবে।
ছেলেটার বাপ মা হয়ত ইনজেকসানকে শয়তানের অস্ত্র মনে করে, কিন্তু তাদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত লাগলেও ছেলেটাকে বাঁচাতে anti venom লাগাতেই হবে ।
তার বাপ মার ধর্মানুভুতিতে আঘাত লাগলো বলে বসে থাকাটা তখন মানব হত্যারই শামিল হয়ে যায়।
@অনামী, খুব ভালো বিশ্লেষণ করেছেন, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ধর্মানুভুতি এতটাই আপেক্ষিক আর সার্বজনীন যে এইটা নিয়ে আসলেই চিন্তার সময় নাই। এই দেশের ছাগু সম্প্রদায়ের কাছে তো পহেলা বৈশাখ উদযাপন তাদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত দেয়। সুতরাং মুক্ত চিন্তা করতে হলে কার কোথায় আঘাত লাগবে এইটা নিয়ে গবেষণা যদি বন্ধ রাখা যায় তাতেই মনে হয় মঙ্গল।
@অনামী,
সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। লোকাচার, জনরুচি বা ধর্মানুভুতিতে আঘাত লাগবে বলে বসে থাকলে তিলমাত্র প্রগতির কথা বলা যাবেনা। (F) (F) (F)
@অনামী, কেউ যদি ধর্ম কে ঠিকমত না জেনে নিজের মত করে বানিয়ে নেয় আর এরপরে সেটাকে কেউ ভেঙ্গে ফেললে সে যদি বলে আমার ধরমানুভুতিতে আঘাত লেগেছে!!!! ;-( ;-( তাহলে আমার
আর কিছুই বলার নাই। অমানবিক ভাবে ধর্ম বিশ্লেষণ করলে একদিন এর দায় তার উপরেও পড়তে পারে সেও এর বলি হতে পারে তখন কিছুই বলার থাকবে না
@রিশাদ উন নবি, নীচের এই ভিডিও টি দেখুন। প্রথমে হয়ত হাসিই পাবে, কিন্তু চিন্তা করে দেখুন তৃণমূল পর্যায়ে ধর্ম কিন্তু এরাই প্রচার করছে, এদের অবস্থান তাই আমাকে কিছুটা হলেও শঙ্কায় ফেলে দেয়।
http://www.youtube.com/watch?feature=player_embedded&v=Ulyfz28f6mo
(Y) অসাধারণ, চমৎকার, খুবই সুন্দর একটা লেখা পেলাম। ধন্যবাদ লেখককে। হিন্দু ধর্মের মধ্যে বর্তমান ভেদাভেদ (ব্রাহ্মন, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য,নমঃশূদ্র,শূদ্র)সম্পর্কে কেউকি দয়া করে লিখবেন এই ব্লগে?
@ভক্ত, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ভবিষ্যতে অন্যান্য ধর্ম নিয়ে লেখার ইচ্ছা আছে। 🙂
আমার এক বন্ধুর সুবাদে জানলাম মিশরের ওই ‘ফেয়ারওয়েল সেক্স’ আইন নিয়ে অনেক সন্দেহ আছে, এইটা হোক্স হতে পারে, যদিও এই আইনের কথা দেখলাম আল-আরাবিয়া পত্রিকা প্রকাশ করছে। কেউ একটু নিশ্চিত করতে পারলে খুশি হতাম, হোক্স হলে আগেই মাফ চেয়ে নিচ্ছি, এই ভুল সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত, ভবিষ্যতে আরও যত্নবান হবার চেষ্টা করব।
পড়াশোনা করে এসে আস্তিক বন্ধুটির উত্তর কি ছিল জানতে ইচ্ছুক। আমার মনে হয় সে বলবে যে ওই আমলে নারীদের বুদ্ধিমত্তা কম ছিল(আল্লাহই জানে কোন পরীক্ষার মাধ্যমে বাইর করা হইসিল)। আর দাসের ব্যাপারটা মনে হয় সুন্নত দেখে হারাম নয়।
@সাদ বিন শহিদ, এখনও কোন উত্তর দেয়নাই, কে জানে হয়ত ভুলেই গেছে, আবার কোন তর্কে আটকে গেলে হয়ত মনে পরবে। 🙂
চমৎকার, পুরা কোপা হইছে ভাই। সরল ভাষায় অসাধারণ লিখলেন।…..নতুন কিছু কথা শুনলাম ভাল লাগলো।….লিখে যান ভাই আমরা পড়ার জন্য রেডি আছি। :rotfl: :guru:
@সুব্রত শুভ, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। 🙂
:lotpot:
চিন্তার বিষয়!!!
@অর্নব, বুঝেন অবস্থা তাইলে। 😛
খুব ভালো ………… আপনি যেহেতু মুসলিম নিয়ে লিখলেন, এটারে তো লেখা বলা যায় না বলা যাই খোঁচানো ও উস্কানিমুলক পোস্ট, আর সেই ধর্ম যেটা মুলত টার্গেট এর বিষয় বস্তু, উদ্যোগ খারাপ নেননি ভালই, আর তাসারা ইসলামের বিরুদ্ধে লেখা আজকে থেকে শুরু হয়নি। ইংরেজি সহ আরো অনেক ভাষাতে এইটা অনেক আগে থেকে শুরু হয়েছে। সুধু ইসলাম নিয়ে মাথা ব্যথা। আসলে আপনার মাথা আছে, তবে সুস্থ চিন্তা করার সেই ব্রেইনটা নেই, তাই আপনাদের কর্মকাণ্ডের কিছু অংশ তুলে ধরি, এইতো কিছুদিন আগে Fear, Inc. The Roots of the Islamophobia Network in America শিরোনামে ১৩০ পৃষ্ঠাব্যাপী ওদের রিপোর্ট প্রকাশ করে। 😕
ওদের রিপোর্ট মতে আমেরিকায় অনেকগুলো সংগঠন মিলে গত দশ বছরে প্রায় ৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যায় করে মুসলিম ও ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকান্ডের জন্যে। :-O
গত ১০ বছরে USAএর বিভিন্ন সংগঠন এত টাকা খরচ করেছে।ধরে নেয়া যায় USA এর ভেতর থেকে আরও $ খরচ করা হবে নিকট ভবিষ্যতে এবং এটি চলমান থাকবে। :-O :-O
অথচ USA সরকার তার Budget ঘাটতি মেটানোর জন্য প্রতি বছর ব্যাংক থেকে টাকা ধার করছে,নাগরিকদের যাবতীয় সুবিধা দিতে টাকা ধার করছে ব্যাংক থেকে।আর অবাক করা ব্যাপার হল,ফেডারেল সরকার এই ধারকৃত টাকা শোধ করার জন্য পুনরায় ধার করছে।ফলে যা ঘটছে তা হল গত ১৯৭০-১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এই শক্তিশালী(!?) দেশটি Budget ঘাটতির মধ্যে ছিল।১৯৯৮-২০০১ সাল পর্যন্ত Budget Surplus ছিল। আর ২০০৯ এ এসে USA এর Budget ঘাটতি Trillion ছাড়ায়। দেখলেন কত টাঁকা খরচ করতেছে। :-O
এছারাও Center For American Progress এর রিপোর্ট অনুযায়ী,ইসলামের বিরুদ্ধে conspiracy ছাড়াও, একটি শক্ত নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে যারা পুরো আমেরিকার মানুষের কাছে পৌছানোর ক্ষমতা রাখে,কিছু influential মানুষের মাধ্যমে,মিডিয়া পার্টনার এবং রুট লেভেলের কিছু সংস্থার মাধ্যমে। তাদের কাজ ছিল ভুল তথ্য প্রদান করা,মিস গাইড করা মুসলিমদের এবং Give a rise to Islamophobia। এই ভুল তথ্য প্রদান করা,মিস গাইড শুরু হয় ৫জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং তাদের সংস্থার মাধ্যমে। :-O
গত ১০বছরের ও বেশি সময় ধরে ৪০মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে ৭টি সংস্থা এই কাজে।
আর এই ভুল তথ্য প্রদান করা,মিস গাইড করার Experts রা হলেন
• Frank Gaffney at the Center for Security Policy
• David Yerushalmi at the Society of Americans for National Existence
• Daniel Pipes at the Middle East Forum
• Robert Spencer of Jihad Watch and Stop Islamization of America
• Steven Emerson of the Investigative Project on Terrorism
Center For American Progress এর রিপোর্ট অনুযায়ী–
“Speaking at their conferences, writing on their websites, and appearing on their radio shows, these experts rail against Islam and cast suspicion on American Muslims. ”
উল্লখযোগ্য, আমেরিকাতে এই anti-Muslim, anti-Islam grassroots network সফল,কারন তারা বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে যেসব কিনা গত ১০বছরে রাজনৈতিক প্রচারনায় ব্যবহার করে সফলতা এসেছিল–রিপোর্টটি তে বলা হয়েছে।আরও বলা হয়েছে, Internet কে তারা একটি গুরুত্বপুর্ণ মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে ইসলামের বিরুদ্ধে প্রচারনা চালানোর জন্য এবং কিছু Website এবং Blog এ ইসলামকে ভুল ভাবে Present করার জন্য এবং মুসলিমদের Misguide করার জন্য। :-O
ইহুদিরা বিপুল অর্থ ব্যয় করে ইসলাম বিষয়ক এক্সপার্ট তৈরির জন্য। ২০০২-২০০৩ সালের বাজেটে আমেরিকা “ ইসলাম বিষয়ক এক্সপার্ট ” তৈরির জন্য বরাদ্দ করেছে ৩৫ বিলিয়ন ডলার, যা গণচীনের পূর্ণ সামরিক বাজেটের সমান। :-O
ধরে নিয়েন না আমি উপরের তথ্য দিয়ে বুঝাতে চাইলাম টাঁকা পইসা পেয়ে ইসলাম এর বিরুদ্ধে লিখতেছেন, এতটা নিচে আমি আপনাকে নামাতে পারি না আপনার মান স্মমান এর কথা বিবেছনা করে, বুজলেন আমার অবিশ্বাসী বন্ধু। আর লিখলেন নাস্তিকতার পক্ষে … এ ব্যাপারে আমি কিছু মানুষ চিনি যারা নাস্তিক। তারা প্রিয় তাদের কর্মের কারণে। তারা নাস্তিক আমি আস্তিক কিন্তু তারা কখনই আমার ধর্ম বিশ্বাসে আঘাত করেনি। :guru:
আমার ধারনা সত্যিকারের নাস্তিকেরা কে কোন ধর্ম পালন করল আর করল না তা নিয়ে মাথা ঘামায় না। তারা তাদের কর্মের মধ্যে ডুবে থাকে। কিন্তু আপনার মত ভণ্ড নাস্তিক আছে তারা আসলে নাস্তিক না, তাদের কাজ একটাই সেটা হলো শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের বিশ্বাসে যেভাবে পারো আঘাত কর। এটা আর যাই হোক কোন নাস্তিকের কাজ হতে পারেনা। নাস্তিকেরা হয় কোন ধর্ম নিয়ে কথা বলবেনা অথবা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করা চেষ্ট করবে পৃথিবীর সকল ধর্ম মিথ্যা। অথচ আপনি দুইয়ের কোন পর্যায়ে পড়েন না । 😛
@বেয়াদপ পোলা, ধন্যবাদ আপনার বিশাল মন্তব্যের জন্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও দেখছি লেখার সাথে আপনার মন্তব্যের কোন মিল নাই। দেখে মনে হল একটা ‘টেমপ্লেট’ রেডি ছিল, সুযোগ পেয়েই দিয়ে দিয়েছেন। লেখার সমালোচনা করেন, উত্তর দিতে পারব। আর ইহুদী-নাসারাদের টাকায় নাস্তিকরা লেখালেখি করে এই অভিযোগ আর কত দিন! এই রকম চিন্তা ভাবনা নিয়ে ক্যান যে আবার মুক্তমনায় ঘুরাঘুরি করতে আসেন সেইটাই মাথায় ঢুকে না। আর আমি নিজে এক্স- মুসলিম, তাই ইসলাম নিয়েই বেশি জানি। বাংলাদেশের ৯০% মানুষ ও মুসলিম, এখানে আফ্রিকার উপজাতিদের ধর্মের প্রতিবাদ করে কি লাভ? তারপরও লেখার শিরোনাম যেহেতু ‘ আমার বিশ্বাসী বন্ধুদের জন্য’। পরবর্তী পর্বে অন্যান্য ধর্ম নিয়েও লিখব। আর এই লেখার মাধ্যমে আপনি কিভাবে আঘাত পেলেন এইটা জানলে আমার সুবিধা হত।
”নাস্তিকেরা হয় কোন ধর্ম নিয়ে কথা বলবেনা অথবা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করা চেষ্ট করবে পৃথিবীর সকল ধর্ম মিথ্যা। অথচ আপনি দুইয়ের কোন পর্যায়ে পড়েন না ।”
এই জিনিস কই পাইছেন? নাস্তিকদের এই সংবিধান কে লিখছে ভাই?
বাহ! চমৎকার! খুব সহজ ভাষায় কমন কিছু প্রশ্নের সমুচিত জবাব দেয়া হয়েছে। এরকম আরও লেখা চাই,অথবা এই লেখাটাই আরও বড় হলে খুশি হতাম! 🙂
@আমি কোন অভ্যাগত নই, এই লেখাটির প্রত্যেকটা অংশই আরো বড় হতে পারত সত্যি, কিন্তু বেশি বড় হয়ে গেলে পাঠকের মনোযোগ থাকবে কিনা এই চিন্তা থাকেই, তার সাথে যোগ করুন আমার আলস্য। ভালো থাকবেন, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভালো লাগল, ধন্যবাদ আপনার এই বিশ্লেষণধর্মী লেখাটির জন্য ।(Y)
@আস্তরিন, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। 🙂
ইসলামে আত্মসমালোচনা নাই। আপনি যাই বলুন না কেন, আত্মসমালোচনার আলোতে ইসলামকে দেখা সম্ভব নয়।
@মুক্ত, হাহা!! আসলেই!
@মুক্ত, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ফেসবুক এ আমার এক বন্ধু লেখাটি শেয়ার দেয়ার পর ২ জন কমেন্ট করল, লেখাটি নাকি ইসরায়েল এর প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট, বুঝেন অবস্থা! মুমিন ভাইদের পড়ার যোগ্য করে লেখার চেষ্টা করেও তাই খুব সফল মনে হলনা।
@মুক্ত, ভাই সাহিহ আল জাম্মি থেকে একটা হাদিস পড়লাম যে
“যে ব্যাক্তি আত্নসমালোচনা করতে পারে সেই সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান”
হাদিসটা যতদূর জানি জঈফ না।
তাহলে আমরা কেন আত্নসমালচনা করতে পারব না? আর আপনি আপনার লেখাতে ঠিকই বলেছেন আমরা আসলেই মুসলিম নামের কলঙ্ক আমাদের থেকে মুশরিক আর নাস্তিক রাও আজকাল বেশী দেশপ্রেমিক হয়ে উঠেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ প্রবন্ধটির জন্য।
সমাজের ভাবনাটা এরকমই! নাস্তিক মানেই ধরে নেয়া হয় বেলাল্লাপনার লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তি! অথচ সব ধরণের জঘন্য কাজকে হালাল করে নেয়া যায় আস্তিকতার ডোজ দিয়ে!
লেখা ভাল লেগেছে!
@কাজি মামুন, কি আর বলব ভাই, দাঁড়ি-টুপির বদৌলতে বাচ্চু রাজাকার এ দেশে বছরের পর বছর ধর্ম ব্যবসা করে গেল, কারো কোথাও তাতে আঘাত লাগলো না। আজ পর্যন্ত কোন ধর্ম ভিত্তিক দল কে জিহাদ ঘোষণা করতে দেখলাম না সেই সব হুজুরদের বিরুদ্ধে যারা বাচ্চা ছেলে মেয়ে ধর্ষণ করল, এই হুজুরদের কেউ পাথর মারার ফতোয়া দেয়না। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
একেবারে প্রত্যেকটা বাস্তব পয়েন্ট তুলে ধরেছ।
এই ব্যাপারটা আমারও মাথায় আসছে। এর সাথে দেখবা ইসলামে যদিও গালি দেয়া হারাম, মুসলিম ভাইরা নাস্তিকদের মোকাবেলা করে এই গালি দিয়াই। কি বলমু?
সারকথা হইল দেশে যে কোন মূল্যে ধর্মনিরপেক্ষতা চাই। মূর্খের মত আরেক জনের ঘরে উকি দিয়ে খারাপ কাজ হচ্ছে কিনা দেখে চিল্লা চিল্লি করার আগে নিজের ঘরে কি আছে তা নিয়ে চিন্তা করারও গিলু এদের নাই।
এই পোস্ট পড়ে বলবে, আস্তাগফিরুল্লাহ, আউযুবিল্লাহে মিনাশ শায়তানির রাজিম। সব কিছু শয়তানের ধোকাবাজি। আল্লাহ রহম কর। ইসলামের নামে সবই জায়েজ।