১৮৫৯ সালে বৃটিশ প্রকৃতিবিদ চার্লস ডারউইনের প্রায় বিশ বছরের গবেষণালব্ধ ফলাফলের উপর ভিত্তি করে লিখিত বই, ‘অন দ্য অরিজিন অফ স্পিসিজ’ এর মাধ্যমেই মূলত বিবর্তনের ধারণাটি মানুষের সংগৃহীত প্রাকৃতিক জ্ঞান ভাণ্ডারে প্রথমবারের মতো প্রবেশ করে। বিবর্তনের ধারণাটি আমাদের মাথায় পরিষ্কার হতে কেনো এতো দীর্ঘ সময় লাগলো? অরিজিন অফ স্পিসিজ প্রকাশেরও প্রায় দুইশ বছর আগে নিউটনের হাত ধরে, কিংবা যদি বলি আর্কিমিডিসের কথা, তাহলে প্রায় দুই হাজার বছর আগে মানুষের সংগৃহীত সেই প্রাকৃতিক জ্ঞান ভাণ্ডারে যে ধরনের পদার্থবিদ্যা, গণিতবিদ্যা সঞ্চিত হয়েছিলো, তার তুলনায় অনেক সহজ, বৈচিত্র্যময় বিবর্তনের ধারণাটি কেনো আমাদের অনুধাবন করতে এতো দেরি হলো? ডারউইন প্রথম যখন তার বন্ধু হাক্সলিকে ব্যাখ্যা করেছিলেন বিবর্তনের ধারণাটি, হাক্সলি সব শুনে অবাক হয়ে বলেছিলেন- “আমি কতবড় গাধা, এই ব্যাপারটা আগে চিন্তা করি নি !”? [১]
বিজ্ঞানের দার্শনিকরা কারণ হিসেবে অনেক কিছুর কথাই ভেবেছেন। হতে পারে, পৃথিবীতে টিকে থাকার সময়কালের প্রায় ৯৯ ভাগ সময় গুহাবাসী মস্তিষ্কের বিবর্তনের মতো একটি ধারণা গ্রহণের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হতে এতো দীর্ঘ সময় লেগেছে। হতে পারে, স্বল্প আয়ু নিয়ে পৃথিবীতে আসা মানুষ তার তুলনায় অকল্পনীয় এক সময়ের কথা ঠিকমতো ভাবতে পারেনি, বা ভাবার মতো সাহসী হতে পারেনি। হতে পারে চোখের মতো অঙ্গ, চারপাশের জটিল প্রাণ জগত আমাদের ভাবতে বাধ্য করেছে সবকিছুর পেছনের এক অলৌকিক মহা-পরিকল্পক সত্তার অস্তিত্বকে। বিংশ শতকের অন্যতম খ্যাতনামা জীব বিজ্ঞানী আর্নস্ট মায়র অবশ্য ভিন্ন এক কারণের কথা প্রায়ই বলেছেন এখানে, ওখানে। মায়রের কাছে এই সমস্যার মূলে রয়েছে প্রাচীন দর্শনের একটি ভাবধারা, বা ধারণা বা আইডিয়া- আধুনিক সভ্য মানুষের কাছে যার আধুনিক নাম ‘এসেনসিয়ালিজম’। স্রষ্টা প্লেটো। প্লেটোর ভাববাদী দর্শনের কালো হাতই টেনে ধরে রেখেছিলো বিবর্তন বিদ্যার দরজাকে এমনটাই মনে করতেন মায়র [২]।
প্লেটো, অন্তরে তিনিও ছিলেন একজন গণিতবিদ। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক ইউক্লিডের মতো তিনিও প্রচার করেছেন, সমুদ্রের বালিতে আঙ্গুল দিয়ে আঁকা ত্রিভুজটি আসলে কোনো এক সত্যি ত্রিভুজের আবছা, এলোমেলো নির্যাস বা এসেন্স মাত্র। সত্যি ত্রিভুজের রেখা গুলো খাঁটি ইউক্লিডিয়ান রেখা, যাদের দৈর্ঘ্য আছে কেবল, কোনো প্রস্থ নেই, নেই সামান্যতম উচ্চতাও। সত্যি ত্রিভুজের তিনটি কোনের সমষ্টি সর্বদাই দুই সমকোণ অর্থাৎ ১৮০ ডিগ্রি, সামান্যতম কমবেশি ছাড়া। বালির মধ্যে আঁকা ত্রিভুজটির পক্ষে সত্যি ত্রিভুজের এই শর্তগুলো পূরণ কখনই সম্ভব হবেনা। বালিতে আঁকা ত্রিভুজ এক সত্য ত্রিভুজের নির্যাস ছাড়া কিছু নয়।
মায়রের মতে, জীববিজ্ঞানের চিন্তা ধারাও প্লেটোর এই ভাববাদের জীববিজ্ঞানীয় সংস্করণে বৃত্তবন্দী হয়ে ছিলো। জীববিজ্ঞানীরা মাত্র দেড়শ বছর আগেও খরগোশের অসংখ্য প্রজাতি দেখে ভাবতেন, এক অদৃশ্য সত্যি খরগোশের কথা, পৃথিবীর অসংখ্য প্রজাতির অসংখ্য খরগোশ যেই অদৃশ্য খরগোশের নির্যাস বা ছায়াসত্তা মাত্র। প্রাণের মাঝে এতো এতো বৈচিত্র্য, আবার একই সাথে এতো এতো সাদৃশ্য দেখেও তারা ভাবতে পারেন নি, এরা সবাই হয়তো একে অন্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তারা ভেবে নিয়েছেন প্রত্যেকেই আসলে আলাদা আলাদা সত্যি প্রাণীর ছায়া। যে প্রাণীগুলোকে সৃষ্টি করেছেন মহা-পরিকল্পক স্রষ্টা। চরমতম অ-বিবর্তনীয় দৃষ্টিভঙ্গি।
পদার্থবিদ এবং জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখক মিসিও কাকু মনে করেন, মানুষ জন্ম নেয় বিজ্ঞানী হয়েই [৩]। চারপাশের সবকিছুকে সে প্রশ্ন করে, সবকিছু জানতে চায়। এরপর বিদ্যালয়ে যাবার পরেই সমাজ তার প্রশ্ন করার আকাঙ্ক্ষাকে কবর দেবার প্রক্রিয়া শুরু করে। পাঠ্যপুস্তকে ভূগোল পড়াতে গিয়ে একগাদা খনিজ পদার্থের নাম মুখস্থ করানো হয়, শেখানো হয়না, কন্টিনেন্টাল ড্রিফটের মতো বিজ্ঞান যার উপরই দাঁড়িয়ে আছে ভূগোল বিদ্যা। এভাবে ধীরে ধীরে প্রশ্ন করা ভুলিয়ে আমাদের মুখস্থ বিদ্যা আত্মস্থ করানো হয়। আমাদের কাছে বিজ্ঞান আবির্ভূত হয় চেতনাহীন আইপড হিসেবে, কিংবা এক গাদা রাসায়নিক বিক্রিয়া অথবা অংকের সূত্রে মাধ্যমে।
সমাজের চাপে আমাদের আইনস্টাইনীয় গুন খুব সহজেই গুম হয়ে যায়, আমরা হয়ে যাই সাধারণ মানুষ। আমরা প্রশ্ন করা ভুলে যাই, আমরা সত্য অন্বেষণ ভুলে যাই, আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া কেমন হওয়া উচিত সেটা ভুলে যাই, আমরা প্রমাণ ছাড়া কোনো কিছু বিশ্বাস না করার কথাও ভুলে যাই। আমরা একগাদা গল্প আর নিয়মের বেড়াজালে আটকা পড়ে চিন্তাহীন দিন কাটাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। ভাগ্যিস বিজ্ঞান নামে একটি প্রতিষ্ঠান আমরা মানুষেরা সৃষ্টি করতে পেরেছি। বিজ্ঞানের আওতাভুক্ত হওয়া খুব কঠিন। এখানে গণতন্ত্র চলেনা, চলেনা আবেগ, চলেনা ঘুষ আদান প্রদান। প্রমাণিত প্রাকৃতিক জ্ঞান, প্রাকৃতিক সূত্র, প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যই বিজ্ঞান।
বিবর্তন বিদ্যা প্রস্তাবনার পর সামান্য কিছু সময় জীববিজ্ঞানীরা বিভ্রান্ত ছিলেন, ডারউইন নিজেও বিবর্তনকে একটি হাইপোথিসিস হিসেবেই প্রস্তাব করেছিলেন, কারণ তার হাতেও এখনকার মতো পর্বতসম প্রমাণ ছিলোনা। কিন্তু অত্যন্ত অল্প সময়ের মাঝেই অসংখ্য আবিষ্কার বিবর্তনকে আজকে বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ শাখা অর্থাৎ তত্ত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেই ক্ষান্ত হয়নি, ঘোষণা করেছে আমাদের এখন পর্যন্ত আহরিত জ্ঞানের বিবেচনায়, আমাদের বাস্তবতা বিবেচনায় সকল সন্দেহের ঊর্ধ্বে থাকা বাস্তবতা [৪]। বিজ্ঞানের চোখে বিবর্তন গাছ থেকে আপেল পড়ার মতো বাস্তবতা। জীববিজ্ঞান এবং এই সংক্রান্ত আরও অসংখ্য প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের শাখা যেমন জেনেটিক্স, ফসিলবিদ্যা, অণুজীববিজ্ঞান সব বিষয়ের ভিত্তি বিবর্তন এবং এর বিবর্তনের কারণ ‘প্রাকৃতিক নির্বাচন’ তত্ত্ব [৫]।
বিজ্ঞানে খুব দ্রুত অধিষ্ঠিত হলেও সাধারণ মানুষের কাছে বিবর্তন আজও ব্রাত্য। পাঠপুস্তকে সংযুক্ত হয়না বিবর্তন এখনো বিশ্বের অনেক দেশেই। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে সাধারণ মানুষের মাঝে বিজ্ঞানের চেতনাগত উপলব্ধির অনুপস্থিতিকেই দায়ী করা যায়। আমরা মানুষেরা কোনো বিষয়ের প্রমাণ খোঁজার সময় আমাদের পূর্বে ধারণকৃত অবস্থানকে সমর্থন করে এমন প্রমাণই খুঁজে বেড়াই, আমাদের ধারণকৃত ধারণাকে বাতিল করবে এমন কিছুর সন্ধান না করে [৬]। প্রকৃতিতে আমরা কেবল আমাদের ধারণার সত্যতা খুঁজে বেড়াই। আর এ কারণেই খ্রিস্টানরা চিজের গায়ে যীশুর প্রতিকৃতি দেখে, হিন্দুরা পুকুর ঘাটের শ্যাওলায় দেখে শীতলার পায়ের ছাপ, মুসলমানেরা রুটি কিংবা মাছের গায়ে খুঁজে পায় আল্লাহকে [৭]। বিবর্তন তত্ত্বের থেকে অনেক গুন জটিল, এবং সাধারণ জ্ঞানে চিন্তার সীমারেখার বাইরের বিজ্ঞান কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে মানুষ চিন্তিত না থাকলেও, না জেনে না বুঝে বিবর্তনের বিরোধীতা করতে আগ্রহী। আজ আমরা ধর্মীয় সৃষ্টিগল্পের ধারণা বদলাতে অপারগ, আমরা নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু দেখতে অপারগ, মানুষ হিসেবে আমরা এখনও কতো দুর্বল মানসিকতার। আমরা চিন্তা করতে চাইনা- আমাদের উদ্দেশ্যে জগতের সকল পশুপাখির সৃষ্টি করা হয়নি, আমাদের সেবার করার জন্য তো নাই। আমরা সৃষ্টির সেরা এ ধারণাটি অত্যন্ত স্থূল একটি ভাবনা যে ভাবনা ত্যাগ করে আমরা এখনও স্বীকার করতে পারিনি প্রাণী জগতে আমরা সবাই একে অন্যের আত্মীয়।
সমাজে বিবর্তন আজও তাই সীমাহীন বিতর্কের জনক এক বিষয়ের নাম। সমাজে এখনও তর্ক হচ্ছে বিবর্তন তত্ত্ব নাকি হাইপোথিসিস এই বিষয়ে অপরদিকে বিবর্তন বিদ্যাকে ব্যবহার করে একের পর ওষুধ তৈরি করছে বিজ্ঞান, নেকড়েকে ব্রিডিং করে করে কৃত্রিম নির্বাচন প্রক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে কুকুর। বিবর্তন একমাত্র বিষয়, যে বিষয় সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা না থাকা সত্ত্বেও মানুষ নিজের মতামত প্রকাশ করতে দ্বিধাবোধ করেনা। বিবর্তন আজ সমাজে তাই জন্ম দিয়েছে অসংখ্য প্রশ্নের, বিবর্তন আসলেই পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নাকি? বিবর্তন তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্রকে লঙ্ঘন করে নাকি, বিবর্তনের পক্ষে সাক্ষ্য প্রমাণ কী, চোখের মতো এতো জটিল একটি জিনিস কেমন করে বিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া সম্ভব ইত্যাদি, ইত্যাদি।
এমন একটা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মাঝে বিবর্তন জনপ্রিয় করার জন্য এই প্রশ্নগুলোর যথাযথ উত্তর প্রদান করাটাই সবচেয়ে ভালো সমাধান। সত্যি বলতে, এই প্রশ্নগুলো কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের দ্বারা সৃষ্টি, মানুষকে দ্বিধাগ্রস্ত করে ধর্মের বলয়ে বেঁধে রাখার জন্য। তারপরও অনেকেই আগ্রহী হয়ে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজেন। সে আগ্রহের তৃষ্ণা মেটাতে পারলে তিনি হয়তো আরও গভীরভাবে বিবর্তনকে জানার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠবেন। বলা যায়না, হয়তো অচিরেই চিনতে শিখবেন নিজের অতীতকে, মহাজগতে নিজের সত্যিকার অবস্থানকে।
কাঠগড়ায় বিবর্তনের অবতারণা সে জন্যই। বছর আগে বন্যা আহমেদের ডাকে সাড়া দিয়ে বিবর্তন আর্কাইভের কাজ শুরু হয় [৮],[৯]। যেখানে বাস্তবে এবং ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া দীর্ঘ এক প্রশ্ন তালিকা তৈরি করে উত্তর লেখার কাজ শুরু হয়। সংক্ষেপে এবং যথাযথ তথ্যসূত্র উল্লেখ করে অল্প কিছু প্রশ্ন ছাড়া অনেক প্রশ্নের উত্তর ইতিমধ্যেই সংযোজিত হয়ে গিয়েছে অভিজিৎ রায়, বন্যা আহমেদ , পৃথ্বী সহ আরও কয়েকজন অনিয়মিত প্রদায়কদের হাত ধরে। এই প্রজেক্টটি আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে মুক্তমনার পক্ষ থেকে এবার আমরা “কাঠগড়ায় বিবর্তন” নামে একটি বই প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে বিবর্তনকে পৌঁছাবার সুযোগ তৈরি করার জন্য। এখানে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো নিয়ে আরেকটু দীর্ঘ আলোচনা থাকবে, থাকবে প্রাসঙ্গিক তথ্যসূত্র, থাকবে বিবর্তন সম্পর্কে নাতি-দীর্ঘ একটি আলোচনা।
মুক্তমনা পাঠকদের সমীপে এখন থেকে কিছু প্রশ্নোত্তর নিয়মিত ব্লগাকারে পোস্ট করা হবে। উদ্দেশ্য দুইটি। এক. পাঠকের সাথে সেগুলোকে কিভাবে আরও ধারালো, আরও যুক্তিসঙ্গত, আরও প্রাসঙ্গিক করা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা সুযোগ নেওয়া। দুই. ফেসবুকের মতো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রশ্নগুলোর উত্তর যতোটা সম্ভব ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা। চোখ রাখুন মুক্তমনায় 🙂
যুক্তির মিছিলে বাজুক মুক্তির গান।
তথ্যসূত্রঃ
১। “How extremely stupid for me not to have thought of that!” (Thomas Huxley’s first reflection after mastering, in 1859, the central idea of Darwin’s Origin of Species)
২। Richard Dawkins, The Greatest Show on Earth: The Evidence For Evolution, Page: 21, Simon & Schuster, 2009.
৩। All Kids are born geniuses,but are crushed by society itself – Michio Kaku. http://www.youtube.com/watch?v=LelNYqVEOZQ&feature=youtu.be
৪। Jerry A. Coyne, Why Evolution is True?, Viking Adult, 2009
৫। Theodosius Dobzhansky, “Biology, Molecular and Organismic”, American Zoologist, volume 4 (1964), pp 443-452. The phrase appears on page 449 as “nothing makes sense in biology except in the light of evolution, sub specie evolutionis.”
৬। Lewis Wolpert, Six Impossible Things Before Breakfast: The Evolutionary Origins of Belief, W. W. Norton & Company, 2007.
৭। Michael Shermer,Why People Believe Weird Things : Pseudoscience, Superstition, and Other Confusions of Our Time, W.H. Freeman & Company, 1998
৮। বিবর্তন নিয়ে প্রশ্নগুলো- বন্যা আহমেদ, মুক্তমনা বাংলা ব্লগ, এপ্রিল, ২০১০। লিংক https://blog.mukto-mona.com/?p=6811
৯। মুক্তমনা বিবর্তন আর্কাইভ- http://mukto-mona.com/evolution/
“বিবর্তন” ব্যাপারটা মোটেই ডারউইনের হাত ধরে আসেনি, উনি তো শুধু এর একটা যুতসই ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছেন।
প্রাচীন গ্রিক বিজ্ঞানী Anaximander কে বলা হয় এই মতবাদের প্রথম প্রবক্তা। স্টিফেন হকিং এর The Grand Design থেকে কপি করছি
“Anaximander (ca. 610 BC – ca 546 BC), a friend and possibly a student of Thales argued that since human infants are helpless at birth, if the first human first somehow appeared on earth as an infant, it would not have survived. In what may have been humanity’s first inkling of evolution, people, Anaximander reasoned, must therefore have evolved from animal whose young are hardier.”
২ টা প্রশ্ন ছিল। প্রশ্ন দুটি আমার এক বন্ধু আমাকে করেছে।
১। প্রাণীর ক্ষেত্রে কি শুধু বিবর্তন হয় উদ্ভিদের ক্ষেত্রে হয় না?
২। বিবর্তনের মাধ্যমে শুধু মানুষর মস্তিস্কই এত উন্নত হল কেন?
প্রশ্ন দুটির উত্তর দিতে পারিনি। নিজের জ্ঞানস্বল্পতা খুব লজ্জা পেয়েছি। বিস্তারিত বললে খুব খুশি হব।
@রনি,
প্রাণী এবং উদ্ভিদ সবার ক্ষেত্রেই বিবর্তন হয়।
বিবর্তনের ফলে মানুষের মস্তিষ্কই এতো উন্নত হলো কেন? আহা! এই কেনোর তো উত্তর নেই। বিবর্তন কিভাবে হলো তার উত্তর দিতে পারে। মানুষের মস্তিষ্কের এতোটা উন্নতি হয়েছে বলেই মানুষ এই প্রশ্ন করতে পারছে। কাকের হলে কাক প্রশ্ন করতো, কাকের মস্তিষ্কই কেনো এতো উন্নত হলো?
খুব ভালো উদ্যোগ রায়হান ভাই। বিবর্তন এখনও সাধারণ মানুষের কাছে একটা ভিত্তিহীন ধারণা। বেহেস্তের হুর মিস হয়ে যাওয়ার ভয়ে মানুষ এখনও এই তত্ত্বকে মেনে নিতে চায় না। বিবর্তন বিষয়ক প্রশ্নগুলিকে একসাথে রাখার এই প্রয়াস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিবর্তন বিষয়ে আমার নিজের অনেক সংশয় কেটে গিয়েছিল মুক্তমনার বিবর্তন আর্কাইভ পড়ে। চলুক। (F) (F)
@আলোকের অভিযাত্রী,
দোয়া কইরো।
খুবই ভাল উদ্যোগ এটা। আমি শুধু একতা কথা বলতে চাই, বিবর্তনের ব্যাপারে বইটা পেপারব্যাক করলে ভাল হয় আর দাম কম হওয়া উচিত। শুদ্ধস্বরের বইয়ের দাম তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হয়। আমি নিজেই এবার “সখি ভালবাসা কারে কয়” বইটা কিনতে পারিনাই 🙁
@লীনা রহমান,
ভালো প্রস্তাব করেছো।
অরিজিন অফ স্পিসিস পড়া হয়নি এখনও। সপ্তাহ খানেক আগে কিনে নিলাম একটা পেপারব্যাক। বিবর্তন নিয়ে পড়াশুনা করেছি মূলত ডকিন্স এর লেখা থেকে। আর অবশ্যই মুক্তমনা আর মুক্তমনাসূত্রে পাওয়া হাজারও লেখার।
তবে ডারউইন এর আত্মজীবনি পড়েছিলাম কিছুদিন আগে। ছোটোখাটো একটা বই। মানুষের চিন্তার জগতে আমূল পরিবর্তন আনার মত কিছু ভাবতে হলে একজন মানুষকে কী কঠোর সাধনার মধ্যদিয়ে যেতে হয়, তার চিত্র দেখে শ্রদ্ধাবনত হয়েছি। অরিজিন অফ স্পিসিসটাও পড়ে ফেলব। আমি নিশ্চিত, এই বইগুলো পড়লে শুধু বইয়ের বিষয়গুলোই না। জীবন, জগৎ, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসা সম্পর্কেও অনেক গভীর ধারণা লাভ হয়।
যেমন বিজ্ঞান চর্চায় গণিতের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটা কিন্তু এক ধরনের ‘আর্ট’। যাকে বলে ‘আর্ট অফ আস্কিং দ্য রাইট কোয়েশ্চেন’। এত এত বিকল্প এতএত ধোয়াশার মধ্যে ডারউইন কীভাবে সঠিক প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করতে পারলো এটা নিশ্চয়ই দারুণ কৌহলউদ্দিপক ব্যাপার হবে। ইন ফ্যাক্ট প্রিয় সব বিজ্ঞানীর, গুরুত্বপূর্ণ সব আবিষ্কারের ব্যাপারে এই ব্যাপারটা খোঁজ করার চেষ্টা করি সব সময়।
এই লেখাটা ভালো হয়েছে। আর বই আকারে লেখার সময় বন্যা আপুর মন্তব্যের সঙ্গে মিলিয়ে বলি। বইটাকে হতে হবে নৈর্ব্যক্তিক। বিবর্তন হচ্ছে ‘কোয়ান্টাম মেকানিক্স ফর বায়োলজি’। এটাকে তেমন ‘রিগর’ এর সাথেই স্থাপন করতে হবে বই এ। বইয়ের একেকটা প্রসঙ্গ নিয়ে পাঠকরা, ব্লগাররা হাজার হাজার লেখা লিখবে। কিন্তু বইকে হতে হবে ইউক্লিড এর ইলিমেন্টস এর মত। বিউটিফুল, প্রিসাইস, অ্যান্ড ব্রুটাল। 🙂
@তানভীরুল ইসলাম,
(Y)
রায়হান, অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ, কাজটা করতে পারলে বেশ বড় ভালো একটা কাজ হবে। তবে তোমার এই ভূমিকাটা নিয়ে দুটো কথা বলছি, আশা করি কিছু মনে করবে না। এটাকে বড্ড বেশী ডিফেন্সিভ মনে হচ্ছে আমার কাছে (অবশ্য এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত অভিমত) । হ্যা, স্বীকার করছি, কেন বিবর্তনের প্রশ্নগুলো নিয়ে আমরা একটা বই করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি সেটা ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন রয়েছে, কিন্তু তার জন্য এতটা রক্ষণাত্মক একটা অবস্থান নেওয়াটা জরুরী কিনা সেই ব্যাপারে আমি ঠিক নিশ্চিত নই। তবে এটুকু বলতে পারি যে আমি বইটা সম্পাদনা করলে হয়তো সেভাবে যুক্তিগুলো দাঁড় করাতাম না। আমার কাছে মনে হয় তাতে করে লেখার অবজেক্টিভিটি বা নৈর্ব্যক্তিকতা নষ্ট হয়, ইমোশানের ভারে লেখাগুলো কাত হয়ে পড়তে শুরু করে। একটা উদাহরণ দেই, যেখানে সেখানে খুব স্থূলভাবে ধর্মের রেফারেন্স টেনে নিয়ে আসাটা আমার কাছে নিরর্থক মনে হয়, যেমন ধর এই কথাগুলোর কি এখানে কোন দরকার ছিল?
সম্ধপাদনার সময় এই ধরণের কিছু ব্যাপার বিবেচনা করে দেখতে অনুরোধ জানাচ্ছি।
@বন্যাপা,
প্রশ্নের উত্তর পোস্ট করার আগে ক্যামনে কন রক্ষণাত্মক ভঙ্গীতে যুক্তি দেওয়া মানতে পারতেছেন না :)) আর এইটা তো বইয়ের ভূমিকা না, মুক্তমনার পাঠকের উদ্দেশ্যে লেখা। আর মুক্তমনা পাঠকদের উদ্দেশ্যে লেখা বলেই একটু অন্য তারের কথাবার্তা। বইয়ের লক্ষ পরিষ্কার, সুতরাং পরিষ্কারভাবে ভূমিকাটাও সেভাবে লেখা থাকবে। চিন্তা নাই।
রায়হান, এ ধরণের লেখা ব্লগে পোস্ট করারা আগে আমার মনে হয় এডিট করে পোস্ট করা উচিৎ। আর বইয়ের কথা ভেবে যখন লেখা হচ্ছে তখন, বানান টানান এবং অনুষঙ্গিক বিষয়গুলোতেও আরেকটু খেয়াল করা উচিৎ। আমিও বানানে খুব একটা ভাল তা নই, কিন্তু মুশকিল হচ্ছে বই বের করার সময় যখন প্রুফরিডিং এর দুর্বলতার কারণে (শুদ্ধস্বরের ক্ষেত্রে এটা খুবই প্রকট) ভুল বানানে বই ছাপাখানায় চলে যায়, পরে সে বই দেখে লজ্জিতই হতে হয়।
যেমন, বিবর্তনবিদ্যা, মুখস্তবিদ্যা – এই শব্দগুলো একসাথে হবে। আলাদা আলাদা নয়। মানে ‘বিবর্তন বিদ্যা’ নয়, এটা বিবর্তনবিদ্যা।
গুণ শব্দটা মূর্ধন্য। গুন নয়। বানানের ব্যাপারটা প্রথম থেকেই নজরে রাখলে পরে এ নিয়ে হাপিত্যেশ করতে হয় না।
বানান ছাড়াও আরো কিছু বিষয়ে নজর রাখতে হবে। বিজ্ঞানের লেখার ক্ষেত্রে উপমা, উদাহরণ যেগুলো ব্যবহার করার কথা চিন্তা করছ, সেগুলো সঠিক এবং যথোপযুক্ত হতে হবে। বিশ্লেষণের সময় যতদূর সম্ভব আনতে হবে সবদিক। অনেক সময় হালকাভাবে লিখতে গিয়ে ব্যাপারটা খেলো হয়ে যায়। যেমন এই প্যারাগ্রাফটার কথা ধর –
এখানে তোমার বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেও কিছু কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি। সাধারণ মানুষের এই অজ্ঞতার পেছনে কেবল তাদেরকে দায়ী করে বসে থাকলে কিন্তু ভুল হবে। বিবর্তনবিরোধী ক্যাম্পেইনের পেছনে সাধারণ মানুষের অজ্ঞতা যেমন আছে তেমনি সেটাকে জিইয়ে রাখতে আছে রাষ্ট্রশক্তির অব্যাহত চাপ, আছে অর্থপুষ্ট ধর্মীয় সংগঠনের মত মদদ এবং প্রচারণা। এ ব্যাপারটা ভুলে গেলে চলবে না। সেজন্যই দেখা যায় একাডেমিক জার্নালে, বিজ্ঞানীদের কাজে কিংবা বিদ্যায়তনে ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন নিয়ে কোন ‘গবেষণা’র কোন হদিস না পাওয়া গেলেও অর্থ, প্রচারণা আর মদদে রাজনৈতিক আর সামাজিক অঙ্গন কাঁপাতে এদের জুড়ি নেই। এগুলো জিনিস বিশ্লেষণে আনতে হবে। কেবল, “এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে সাধারণ মানুষের মাঝে বিজ্ঞানের চেতনাগত উপলব্ধির অনুপস্থিতিকেই দায়ী করা যায়” – বলে শেষ করে দিলে চলবে না।
@অভিদা,
হিল্লোল দাকে পাঠাইছিলাম বানানটা ঠিক করে দিবেন এই উছিলাম। ভাইয়া বোধহয় নেটে ছিলেন না, আমি অভ্র স্পেল চেকার দিয়ে যতোটা সম্ভব ঠিক করার চেষ্টা করেছিলাম। এতো বানান ভুল করি। তারপরও যেগুলো রয়ে গেছে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ। চেষ্টা করছি।
না, ভুল হবেনা। রাষ্ট্রের চাপে হোক, আর সমাজের চাপে হোক মানুষ অজ্ঞ থাকে বলেই সমস্যা। দোষটা মানুষরের স্বভাবেরই। বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রে বসে আমরা মুক্তচিন্তা করছিনা? কিন্তু সাধারণোভাবে মানুষ কমফোর্ট জোন থেকে স্বেচ্ছায় বের হতে চায়না বলেই সকল সমস্যা। রাষ্ট্র কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে সেটা ব্যবহার করে কিংবা এই ধরণের ব্যবহারকে ট্রিগার করে মানুষের মাঝে। আর রাষ্ট্র কিংবা অন্য কোনো কিছুর আদলে মানুষই কিন্তু সকল গুটি চালছে।
আর রাষ্ট্র কিংবা স্বার্থান্বেষী মহলের কথা আমি কিন্তু ভুলেও যাইনি। পোস্টে উল্লেখ করেছি-
@রায়হান আবীর, অভ্র বানান-ভুল শুধরানোর চেয়ে ভুল করে বেশি। অবিশ্বাসের দর্শনে ‘র’ আর ‘ড়’ গুলিয়ে ফেলার কাজটা অভ্র’র অবদান।
আমি কিন্তু অভিজিতের মন্তব্য পড়ে সত্যিই অবাক হলাম যে তিনি এ পোস্টের সহ-লেখক অথচ তাঁর অগোচরেই লেখাটা প্রকাশিত হয়ে গেলো!
@প্রদীপ দা,
ঝামেলাটা আমি বাঁধিয়েছি আসলে। এই প্রজেক্টে অভিদার ব্যাপক সম্পৃক্ততার কারণে, ঠিক একই প্রজেক্ট নিয়ে বই করার ঘোষণায় কেবল নিজের নাম থাকবে এটা কেমন যেনো লাগছিলো। আর এই কারণে নিজের পেপারে যেমন অটো শেষে স্যারের নাম চলে আসে, তাই অভিদার নাম যোগ করে দিয়েছিলাম।
@অভিজিৎ,
মুক্তমনায় কি প্রশ্ন উত্তরের জন্য আলাদা কোন পোষ্ট রাখা যায় ?
অনেকদিন থেকেই ভাবছিলাম, মুক্তমনার বিবর্তন আর্কাইভের প্রশ্নোত্তরগুলো নিয়ে একটা বই বের করার কথা কারো মাথায় আসছেনা কেন। যাক, আমি শুধু একাই এ নিয়ে ভাবছিলাম না, রায়হান আবীর, অভিজিৎ, বন্যা এরাও ভেবেছেন। আর্কাইভের লেখাগুলো নিয়ে একটা কেন কমছেকম দুটো বই হতে পারে, আমার মনে হয়। কাজ শুরু করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
মগজধোপারা এমন ধারণা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মনে গেঁথে দিয়েছে খুব নিষ্ঠার সাথে। মনবন্দি পচা ধারনাগুলো যুক্তি আর বিজ্ঞান দিয়ে চটজলদি উড়িয়ে দেওয়া কঠিন হবে বলেই বুঝি। নতুন ধারণাগুলো সঞ্চারন পদ্ধতিতে যত্ন নেবার অনুরোধ রইলো।
বিবর্তন বাদের জটিল জটিল প্রশ্নের কীই বা উত্তর দেওয়া সম্ভব হতে পারে? আমাদের আয়ূষ্কাল ধরা যাক ৫০-১০০ বৎসর।
আর বিবর্তনের ফসল আসে হাজার হাজার বা লক্ষ লক্ষ বৎসর ধরে।তার পর আবার এর সোজা সাপ্টা ধরা বাধা কোন নির্দিষ্ট গতিপথ নাই। এর গতিপথ অত্যন্ত বিচিত্র। সম সাময়িক পারপার্শিক প্রকৃতি ও পরিবেশের সংগে খাপ খাইয়ে প্রানীকে টিকে থাকার বাস্তব তাগিদে জেনেটিক কোডের পরিবর্তন ঘটে প্রানী বংসানুক্রমিক ভাবে পারিপার্শিক পরিবেশের সংগে খাপ খাইয়ে টিকে থাকার উপযোগী হয়।
প্রাকৃতিক পরিবেশেরও কোন স্থিতবস্থা নাই। এটাও বড় বিচিত্র।
এটা কোন রাতা রাতি বা যুগ যুগান্তরের ঘটনা নয়। বরং এটা লক্ষলক্ষ বৎসর ব্যাপীর ঘটনা যা আমাদের মত ক্ষনজন্মা প্রানীর ধরা ছোয়ার অনেক দুরে।
এই আমাদেরকেই তো শুধুমাত্র চতুস্পদ হতে দ্বিপদে পরিনত হইয়া হাতকে পৃথক ভাবে ব্যবহার করতে শিখতে ও অভ্যস্ত হতে লক্ষ লক্ষ বৎসর প্রয়োজন হয়েছে।
আর অন্যান্য পরিবর্তনের ব্যাপার তো অনেক দুরের ব্যাপার।
একটি মাটির পুতুল বানিয়ে একটা ফু দিয়ে প্রান দিয়ে তৎক্ষনাৎ একটি জীবন্ত মানুষ তৈরীর ব্যবস্থা থাকলেতো ব্যাপারটা একেবাবারেই সহজ হয়ে যেত,তাহলেতো আর কোন কথাই থাকতোনা। কিন্তু বাস্তবে তো এরুপ ঘটেনা।
ধন্যবাদ আপনাদের মহান উদ্যোগের জন্য।
দারুন। (Y)
বিবর্তন নিয়ে পড়া হয়ে উঠেনি। মুক্তমনায় প্রকাশিত লেখাগুলোতে সময় পেলে চোখ বুলাই। মন্তব্যের পা দেবার মত মাথা নেই, তাই নীরব থাকি।
ভাবনাগুলোকে বাতিল করে দিয়ে, যে ভাববাদের জন্ম, তার আশ্রয় বিশ্বাস। বিশ্বাসে ভাবনার স্থান নেই, আছে আনুগত্য। সমাজ রাষ্ট্র পরিবার – এগুলোর জন্য আনুগত্য খুব জরুরী। সেকথাগুলো বলেছেন –
চমৎকার পর্যবেক্ষণ।
আনন্দ হয়। আবার মনে ভয়ও জাগে। যেমন জেগেছিল সংশপ্তকের লেখা, ‘জেনেটিক যুদ্ধাস্ত্রঃ একটি ধারাবাহিক পর্যালোচনা’ পড়ে।
আর মানুষের আচরণের কারণে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে কত কত প্রাণী। কেঁচু থেকে মৌমাছি – সবাই আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
ততদিনে আমাদের ভবিষ্যত, অতীত হয়ে যাবে না তো?
যুক্তির সাথে একটুখানি আবেগের মিশেল না থাকলে মিছিল যে প্রাণহীন হয়ে পড়বে – এই দ্বিধা নিয়ে আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
অনন্ত বিজয় দাসের একটি লেখায় আমি দুটি প্রশ্ন রেখেছিলাম উত্তর হয়তো পেয়েছি তবে পরিষ্কার হয় নি তাই প্রশ্ন দুটি আবারও হুবহু তুলে ধরলাম আপনার এই পোষ্টে আর উত্তরের অপেক্ষায় থাকলাম…………………
অনেকদিন ধরে একটা প্রশ্ন মা প্রশ্নটি হলো বিবরতনের ধারা অনুযায়ী মিউটেশনের ফলে যে নতুন প্রানীটির উদ্ভব হয় তা নিশ্চয় একটি হয় পুরুষ অথবা নারী সে ক্ষেত্রে প্রজনন কি করে হয় ?
শরীরের রং সাদা কালো আবহাওয়া থেকে নির্ধারিত হয় কিন্তু শারীরিক ঘটন চাইনিজ বা আফ্রিকান এটা তো আবহাওয়া থেকে হতে পারে না না-কি ?
প্রশ্ন দুটির উত্তরের অপেক্ষায় থাকলাম , অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
@আস্তরিন,
মিউটেশনের ফলে নতুন প্রজাতির উদ্ভব রাতারাতি হয়ে যায় এমনটি নয়। সুতরাং প্রজনন হতে কোনো সমস্যা নেই। উদাহরণ দিয়ে বললে সহজ হবে। মিউটেশনের ফলে কোনো ব্যাঙ প্রজাতির একটি ব্যাঙ অধিক লম্বা পা নিয়ে জন্মালো। এখন সেটা লম্বা পা হওয়ার জন্য যদি জীবন-ধারণ ও চলাফেরায় অন্যদের চেয়ে অধিক সক্ষম হয় তবে ঘটনা কী হবে দেখি। ধরে নিলাম, ব্যাঙটির লম্বা পা থাকার কারণে সে অধিক জোরে লাফাতে পারে, এতে সে প্রজননের বেলায় অধিক সুবিধা পাবে, আর জীবন ধারনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও কেউ অধিক সুবিধা পেলে তা সাধারণত তাকে প্রজননের ক্ষেত্রে অধিক সুবিধা ও সুযোগ প্রদান করে। এখন ঐ লম্বা পা ওয়ালা ব্যাঙটি স্বাভাবিক ব্যাঙের সাথে মিলিত হয়ে বাচ্চা জন্ম দিলো, বাচ্চাদের মধ্যে অনেকগুলোই লম্বা পা ওয়ালা হবে ( একটি লম্বা পা ওয়ালা থেকে এখন কিন্তু অনেকগুলো লম্বা পা ওয়ালা)। তারপর এভাবে এই বৈশিষ্ট্য পরবর্তী প্রজন্মেও সঞ্চারিত হবে। লম্বা পা ওয়ালাদের দৌরাত্মে প্রজননের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক পা ওয়ালারা হারতে থাকবে। কয়েক প্রজন্ম পরে হয়ত আমরা দেখব ঐ প্রজাতির পুরো টাই লম্বা পা যুক্ত।
আসলে শরীরের রং আবহাওয়া নির্ধারণ করে না। সেটাও বিবর্তনের ফল। এমনিতে সূর্যের তাপে বা ভিন্ন কারণে শরীরের রং কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে -সেটা ভিন্ন বিষয়, এ বৈশিষ্ট পরবর্তী প্রজন্মে যাবে না। শারীরিক গঠণের বিবর্তনগত পরিবর্তনে পরিবেশ যেহেতু ভূমিকা রাখে আর আবহাওয়া পরিবেশের সাথেই প্রবলভাবে আছে তাই আবহাওয়ার ভূমিকা এখানে থাকারই কথা।
@আস্তরিন,
চমৎকার প্রশ্ন। আমার সুপারভাইজার স্যারের সাথেও কয়েকদিন আগে এই বিষয় নিয়ে কথা হলো। আস্তরিন, বিবর্তন খুব ধীর একটি প্রক্রিয়া। প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি বছর ধরে বিবর্তন চলমান। বিবর্তনে পরিবর্তন হয় খুব ধীরে। প্রানী দেহে মাঝে জেনেটিক মিউটেশন হয়, কিন্তু মিউটেশনের কারণে হঠাৎ বাদরের গর্ভে মানুষ জন্ম নেয় না। নেয় না বলেই, আরেকটি বিপরীত লিঙ্গের মানুষেরও একই সময়ে থাকার কথা আলোচনা থেকে বাদ পড়ে যায়।
বিবর্তনটা হয় জনপুঞ্জে। একটা নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক পরিবেশে বসবাসী কোনো প্রজাতি একই সাথে বিবর্তিত হতে থাকে। প্রকৃতির সাথে সংগ্রামে সেই জনপুঞ্জের অযোগ্যরা ঝরে যায়, আর ঝরে যায় বলে তারা পরবর্তী প্রজন্ম রেখে যেতে পারেনা এবং এ কারণে একসময় এরা বিলুপ্ত হয়ে যায়। এভাবে ধীরে ধীরে জনপুঞ্জে পরিবর্তন আসে।
মিউটেশনের ফলে ধুম করে এক প্রজাতির প্রাণীর গর্ভে অন্য প্রজাতি জন্ম নেয় না।
শরীরের রঙ আবহাওয়া দ্বারা নির্ধারিত হয় এভাবে না বলে বলা উচিত নির্ধারিত হয় পারিপার্শ্বিক পরিবেশ দ্বারা। একই সাথে চাইনিজ এবং আফ্রিকান হওয়াটাও।
@রায়হান আবীর,
পারিপার্শ্বিক পরিবেশ বলতে এখানে আসলে কি বোঝায় এবং কি প্রক্রিয়ায় সেটা ঘটে ?
@সংশপ্তক,
বিষয়টা নিয়ে একটা চমৎকার বিবর্তনীয় চিত্রের জন্য মুহাম্মদের এই পোস্টটা চমৎকার http://blog.mukto-mona.com/?p=24670
@রায়হান আবীর,
আমার প্রশ্ন ছিল :
আপনার উত্তর :
জীববিজ্ঞানের একটা অন্যতম বড় সমস্যার উত্তর যে এত সহজ হয় – এখন জানলাম এবং যে লেখাটার লিংক দিলেন সেটার দায় দায়িত্বও স্বেচ্ছায় নিজের উপর নিয়ে নিলেন।
@সংশপ্তক,
ভাইয়া, পরীক্ষায় ফেল করার জন্য প্রথমেই সরি 🙂 প্রথমবার পরীক্ষার ব্যাপারটা বুঝতে পারিনি। তাই লিংক ধরে দিয়েছিলাম। বোঝার জন্য না, একটা চিত্র পাওয়ার জন্য। আপনাকে বোধহয় এভাবে লিংক ধরিয়ে দিয়ে অপমানই করে ফেলালাম। আমি স্থূলভাবে চিন্তা করেই বলেছিলাম, একটি নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক পরিবেশ সেখানে অবস্থানকারী কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির জনপুঞ্জের চেহারা কেমন হবে সেটা ডিটারমাইন করে। প্রাকৃতিক নির্বাচনের কথা ভেবেই এমন বলা। জিনেটিক মিউটেশনের ফলে সৃষ্টি ভ্যারিয়েশন সেই নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণেই একটি দিক পায়। বন্যাপা বললেন, পরিবেশকে এক্ষেত্রে দায়ী করা ভুল। আপনি আলোকিত করুন 🙂
@রায়হান আবীর,
মানুষ গুম করার প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে গিয়ে এই লেখায় জড়িয়ে পড়লাম। 😛
একজন বিজ্ঞানী প্রথমেই চীনা , ককেশিয়ান এবং কালোদের শারীরিক বৈশিষ্ঠগুলোর মুলে যে জীনগুলো আছে সেগুলো চিহ্নিত করবেন। তারপর সেই জীনগুলোর উৎসের দিকে নজর দেবেন – অর্থ্যাৎ cause and effect correlation এবং সেই সাথে এই correlation গুলোর সপক্ষে অবশ্যই পর্যবেক্ষনয়োগ্য প্রমান খোঁজা হবে। দূঃখজনক হলেও সত্য যে, ‘অকামের ক্ষুর’ দিয়ে এটা করা যাবে না – ডিএনএ খ্যাত ফ্রান্সিস ক্রিকের ভাষায় । কারন জীববিজ্ঞানে ‘অকামের ক্ষুর’ কাজ করে না প্রায়ই। :))
আসিতেছে , আংশিক রঙীন , পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে , ‘ক্রসফায়ারে বিবর্তনবাদ – ২’ । stay tuned (@)
@সংশপ্তক,
সে লেখাটায় সার্বজনীন ভাব থাকবে না কি ব্রাহ্মণভাব থাকবে? পড়তে ভয় পাবো না তো? :-s
@কাজী রহমান,
শুনতে হয়তো অকিঞ্চিৎকর মনে হতে পারে , কিন্তু বিজ্ঞান আত্মিক-মানসিক তৃপ্তি কিংবা সৌন্দর্যময়তা দিয়ে সংজ্ঞায়িত হয় না। অন্যদিকে ব্যক্তিগত অনুভুতি এবং আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটে শিল্প-সাহিত্যে। একজন শিল্পী যদি বলেন যে , তার লেখাটা তার হৃদয়ের গভীরে কোন কিছুর বহিঃপ্রকাশ , সেখানে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতারা হয়তো হাততালি দেবেন। কিন্তু একজন বিজ্ঞানী যদি বলেন যে, দেখানোর মত কোন প্রমাণ তার হাতে নেই, তবে তার হৃদয়ের গভীর থেকে কিছু বলছে যে তার বক্তব্য সত্য, উপস্থিত সবাই চোখ কপালে তুলে কক্ষ ত্যাগ করবেন । বিজ্ঞান কি উচিৎ তা নিয়ে নয় বরং কিভাবে ‘প্রাকৃতিক জগৎকে’ প্রমাণ সহ ব্যাখ্যা করা যায় সেটা নিয়ে কাজ করে। অবশ্যই , কোন কোন বিজ্ঞানী ব্যক্তিগত পর্যায়ে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বানুসন্ধান প্রক্রিয়ায় সৌন্দর্য খুঁজে পেতে পারেন তবে সেটা কখনই একটা অনুকল্পের বৈধতা প্রদানের মানদন্ড হয় না।
খুব ভাল লাগলো। অপেক্ষায় থাকলাম। বিবর্তন নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে সেইটা কোথায় করব?
@রিজওয়ান,
আর্কাইভে খুঁজে দেখতে পারেন প্রথমে। না পেলে মন্তব্যে দিলেই হবে।
আমাদের যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে সেটা কোথায় করব?
@আমি কোন অভ্যাগত নই,
এখানেই করতে পারেন।
মহান উদ্যোগ। সাধুবাদ (Y) (Y)
চরম কাজ হবে। সঙ্গে আছি।
এর মধ্যে উইকির কাজটা শুরু করা গেলেও ভাল হতো। কিন্তু সেটা এফটিপি সার্ভারের ইউজার নেম, পাসওয়ার্ড ও ডেটাবেজ একসেসের অভাবেই আটকে আছে 🙁
আপডেট:
এফটিপি সার্ভার কাজ করছে। অতি শীঘ্রই কাজ শুরু করা যাবে। তবে ডেটাবেজ একসেস টা শুধু লাগবে এখন।
@শিক্ষানবিস,
সাব্বাস। তাহলে আমাকে এড করে নিস। একসাথে আপডেট করবোনে।
হেঃ হেঃ মুক্তমনায় বিবর্তন নিয়ে প্রশ্নোত্তরের আর্কাইভের কাজটা আমি একসময় শুরু করলেও (এর সাথে পৃথ্বী সহ অনেকেই জড়িত ছিলেন) এই লেখার একভাগও কিন্তু আমি লিখি নাই। সকালে উইঠা এই লেখায় আমার নাম দেইখা টাস্কিত হইলাম। যাউক, রায়হান স্যার যখন আমার নাম দিছে, তাইলে নিশ্চয় আমার কোন কন্ট্রিবিউশন আছে! 🙂
তবে এইকাজটা কারো না কারো করা দরকার ছিলো। বিবর্তন নিয়ে প্রশ্নোত্তরগুলোকে বই আকারে দেখলে খুবই ভাল লাগবে। এই মহান উদ্যোগের জন্য রায়হানকে ধন্যবাদ।
@অভিদা, অ্যাকাডেমিক কার্টেসি মোতাবেক বিবর্তন প্রশ্নত্তোর আর্কাইভের পক্ষ থেকে আপনি অটো এই সংক্রান্ত সকল পাবলিকেশনের অথোর হওয়ার কথা, সেই কারণেই 🙂
পৃথ্বি তো আছেই। পোস্টেও ওর কথা উল্লেখ করছি। পরীক্ষা শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি ব্যাটার। বিএনপি যে হারে হরতাল লাগানো শুরু করছে কবে শেষ হবে আল্লাহই জানে।
অসাধারণ সত্যানুসন্ধান! শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিভাবে আইনস্টানীয় গুনগুলোকে চিরতরে নষ্ট করে দেয়, হয়ে উঠে রোবট গড়ার কারখানা, তার প্রত্যক্ষদর্শী মনে হয় আমরা সবাই!
‘গীতার পায়ের ছাপ’ কথাটা কি ঠিক আছে?
‘বিরোধীরা’র স্থলে ‘বিরোধীতা’ হবে। আর বাক্যটা পড়ে মনে হচ্ছে, কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে মানুষ মাথা না ঘামালেও বিবর্তন নিয়ে না জেনেই বিতর্কে অংশ নেয়; তাহলে কোয়ান্টাম মেকানিক্সকে কি ‘বিবর্তন তত্ত্বের থেকে অনেক গুন জটিল বলা’ হবে, নাকি উল্টাটাই লেখকদ্বয় বলতে চেয়েছেন?
অথচ আমি এমন অনেক ডাক্তারের সন্ধান পেয়েছি যারা রোগীকে বিস্তর আধুনিক ঔষুধপত্র খাইয়ে থাকেন, তবু বির্তনের ‘ব’ও বিশ্বাস করেন না! এই স্ববিরোধীতার উৎস কি জানতে বড় মঞ্চায়!
পরিশেষে, লেখকদ্বয়কে অসংখ্য ধন্যবাদ। মুক্তমনা বিজ্ঞান লেখার জন্য পরিচিত হলেও বেশ কিছুদিন লেখা প্রকাশের গতি শ্লথ ছিল। কিন্তু গত কিছুদিনে, আগের চেয়েও বেশী গতিবেগ নিয়ে একের পর এক ‘মুক্তা-মাণিক্য’ লেখা হাজির করছেন লেখকেরা, বিজ্ঞান-উল্কায় ভাসিয়ে নিয়ে চলেছেন পাঠকদের, তার জন্য সীমাহীন কৃতজ্ঞতা জানাই মুক্তমনা ও তার লেখকদের!
@কাজি মামুন,
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। হ্যাঁ! আইডিয়া হিসেবে বিবর্তনের তুলনায় কোয়ান্টাম মেকানিক্স অনেক জটিল এবং বোঝার দিক থেকেও যদি চিন্তা করি বিবর্তনের আইডিয়াটি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের আইডিয়া থেকে বুঝতে সহজ।
গত কয়েকদিন আগে এক ডাক্তার বন্ধু সাথে এই ব্যাপারে আলোচনা হয়েছিলো। উত্তরগুলো এতোটাই স্ববিরোধাতায় পরিপূর্ণ উল্লেখ করতেও ইচ্ছা হচ্ছেনা।
গীতা না আসলে শীতলা হবে। দুঃখিত। টাইপোটাও ঠিক করে দিয়েছি।
একটা প্রশ্ন কিছুদিন ধরেই মাথায় ঘুরছে। মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ক্ষেত্রে কি মিউটেশন ঘটে না?
@রনবীর সরকার,
অবশ্যই হয়। কিন্তু বিবর্তন সম্পর্কিত আলোচনায় আমরা সেটাকে তেমন একটা নিয়ে আসি না কারণ বিবর্তনের ক্ষেত্রে এর ভূমিকা নেই। কিন্তু শুক্রাণু ও ডিম্বাণূ যেহেতু মিয়োসিস বিভাজনের সাহায্যে তৈরি হয় তাই একেত্রে যে মিউটেসন ঘটে তা গুরুত্বপুর্ণ কারণ এর দ্বারা যে পরিবর্তন ঘটে তা পরবর্তী বংশধরে সঞ্চারিত হয়। মিয়োসিস বা শুক্রাণু-ডিম্বানুর ক্ষেত্র ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে ঘটা মিউটেশনের ফল ব্যক্তিবিশেষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। যেমন মিউটেসনের ফল হিসাবে কারো টিউমার বা ক্যান্সার হল, এটি কিন্তু পরবর্তী বংশধরে সঞ্চারিত হচ্ছে না।
@সৈকত চৌধুরী,
আমি আসলে বলতে চাচ্ছিলাম যদি মাইটোসিস বিভাজনে অনবরত মিউটেশন হতে থাকে তবে তো অবস্থা কাহিল হয়ে যাবার কথা। কারন মিয়োসিস কোষ বিভাজনের ফলে নতুন প্রজন্মের সৃষ্টি হয়। তাতে কিছু ভেরিয়েশন থাকে। কিন্তু সেক্ষেত্রে এক প্রজন্ম থেকে আরে প্রজন্মে মাত্র একবার মিউটেশন ঘটতেছে। পরবর্তী প্রজন্মে আবার মিউটেশন ঘটার ফলে ভেরিয়শন হয়।
এখন মাইটোসিস কোষ বিভাজনে যদি প্রতিনিয়ত মিউটেশন হয়ে থাকে তবে এক কোষ হতে অন্য কোষ সৃষ্টিতে ভেরিয়েশন হতে থাকলে তো অবশেষে তাদের মধ্যে ভেরিয়েশনটা অনেক বেশি হয়ে যাবে।
গুছিয়ে হয়ত লিখতে পারলাম না। কিন্তু কি বলতে চাচ্ছি তা আশা করি বুঝাতে পেরেছি।
@রনবীর সরকার, চমৎকার একটি প্রশ্ন করেছেন। হ্যা, অবস্থা তো কাহিলই! এই যত ক্যান্সারের কেস দেখছেন তার বেশীর ভাগই তো সোমাটিক কোষে মিউটেশনের ফল। ক্যান্সার নিয়ে যে সিরিজটা লেখার চেষ্টা করছি তাতে এই ব্যাপারটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকবে। দুই একদিনের মধ্যেই লেখাটা দেওয়ার ইচ্ছে আছে, যদি শেষ করতে পারি।
@বন্যা আহমেদ,
তাড়াতাড়ি লেখা ছাড়েন আপু। আপনার লেখার অপেক্ষায় আছি।
রায়হান, তুমি যে প্রশ্নগুলো নিয়ে কাজ করার চিন্তা করছো সেগুলোর লিস্টটা কী এখানে দেওয়া যায়?
@বন্যাপা,
প্রশ্নের লিস্টগুলা দিতে পারলে ভালো হতো। মাথায় আসেনি। ড্রাফট প্রশ্নের লিস্ট বিবর্তন আর্কাইভের লিস্টটাই। যে কেউ আপাতত এখান থেকেই দেখে নিতে পারবে।
@রায়হান আবীর, লিঙ্কতো কাজ করেনা, আর আমি যতদূর বুঝছিলাম, তুমি প্রশ্নগুলা নতুন করে সাজাচ্ছো। আপডেটেড লিষ্টটা দিয়ে দিও। এখানে সবার ফিডব্যাক নিয়ে সেটাকে ফাইনাল করা যাবে।
@বন্যা আহমেদ,
রায়হানের লিঙ্ক ঠিক করে দিছি। এখানে
আপাতত প্রস্তুতকৃতগুলোর লিস্ট
বিবর্তনের মাধ্যমে এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীর উদ্ভব হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য।
বিবর্তনের পক্ষে কী কী প্রমান আছে, শুনি?
বিবর্তন তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্রকে লংঘন করে।
চোখের মতো জটিল অঙ্গ কখনও বিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি হতে পারেনা।
বিবর্তন নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্ক থেকে বোঝা যায় যে, বিবর্তনবাদ আসলে ভুল, ডারউইনের তত্ত্বের কোন ভিত্তি নেই।
নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্ব দিয়ে যেমন মুক্তিবেগ অনুমান করা সম্ভব হয়েছে বিবর্তন তত্ত্বও কি এমন কিছু অনুমান করতে পারে?
বিবর্তন কি শুধুই একটি তত্ত্ব?
বিবর্তন তো দেখা যায়না? ঈশ্বরের মতো অদৃশ্য বিবর্তনবাদকেও কী তবে বিশ্বাস করে নিতে হয়?
বিবর্তন তো শুনেছি অনেক আগে ঘটেছে। অতীতে যেয়ে বিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা তো অসম্ভব। সেক্ষেত্রে এটিকে মিথ্যা প্রমাণের তো কোনো উপায় নেই।