১৬ ডিসেম্বর ২০১১ সন্ধ্যায় সিলেটের সদর উপজেলার বাদাঘাটের চেঙ্গেরখাল ডুবন্ত সূর্যের যে আলোয় লাল হয়েছিল তাতে মিশেছিল দুজন তরুণের তাজা রক্ত। বিজয় দিবস উদযাপন করতে আর নয়নাভিরাম প্রকৃতির মাঝে কিছুক্ষনের জন্য হারাতে সেদিন নৌকা ভ্রমণে যায় সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ ছাত্রী ও ৫ ছাত্র। একসময় নৌকার ইঞ্জিনে গোলমালের কথা বলে মাঝি নৌকাটি এক স্থানে থামালে বখাটেরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়ে মারধর করে তিন ছাত্রকে পানিতে ফেলে দেয়। এদের একজন সাঁতার কেটে তীরে উঠলেও মারা যায় কেমিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র খায়রুল কবীর ও দীপঙ্কর ঘোষ অনিক। পরদিন সকালে নদী থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ প্রথমে নৌকার মাঝি গুলজার মিয়াকে গ্রেফতার করে এবং তারপর যে তথ্য বেরিয়ে আসে তা রীতিমত ন্যাক্কারজনক। ঘটনার দিন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নৌকার ঘাটে উপস্থিত থাকা পার্শ্ববর্তী নলকট গ্রামের জামাল, ছইল, শাহীন ও ছাইম মাঝিকে ছাত্রছাত্রীদের বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। এ সময় বখাটেরা তাদের কাজে সহযোগিতা করলে মাঝিকে একটি মোবাইল ফোন দেয়ার প্রলোভন দিলে সে তাতে সম্মতি জানায়। গুলজার মাঝি বখাটেদের কথা অনুযায়ী নৌকাটি চেঙ্গেরখালের পুটিখাটারমুখ ব্রিজের পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিয়ে যায় ও ফেরার পথে বখাটেদের নৌকা আসছে দেখে নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে মাঝির হাতে লাঠি দিয়ে একটি আঘাত করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে জামাল ও তার অপর সহযোগীরা নৌকায় ওঠে তিন ছাত্রীকে টানাহেঁচড়া করে এবং ছাত্রীদের তাদের নৌকায় তুলে নিতে চায়। এতে সঙ্গে থাকা ছাত্ররা বাধা দিলে জামাল, শাহীন, লাল, ছাইম, রকিব ও সেলিম নৌকায় ওঠে তাদের মারধর করে তিন ছাত্রকে নদীতে ফেলে দেয় ও বখাটেরা ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল ফোন, ক্যামেরা, মানিব্যাগ ও ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। গুলজার মাঝি জানায়, তীর থেকে একজন পুলিশ আসছে বলে চিত্কার শুরু করলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। এরপর নৌকা নদীর দক্ষিণ পাড়ে ভিড়িয়ে অপর ছাত্রকে মাঝি নৌকায় তুলে নেয় ও পুলিশের ভয়ে সে অন্য দুজকে তোলার কোনো সুযোগ না দিয়েই নৌকা নিয়ে বাদাঘাটে চলে আসে এবং ছাত্রছাত্রীদের নৌকা ছেড়ে চলে যেতে বলে। এরপর নৌকা ঘাটে রেখে সেও চলে যায়। হত্যাকাণ্ডে ঘটনায় জড়িতদেরকে গ্রামবাসীরা পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়, নিহত খায়রুল ও অনিকের পরিবার এবং সহপাঠীদের বুকফাটা আর্তনাদ ভেসে বেড়াতে থাকে সিলেটের আকাশে-বাতাসে। ভয়াবহ এই ঘটনাটি কিছু বড় প্রশ্ন সামনে এনে দিয়েছে আমাদের। নারীকে এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকেও লাঞ্ছিত করার আকাঙ্ক্ষা ও সুযোগ কি দুর্বৃত্তদের কাছে সবসময়ই সুলভ হবে? এদেশে জীবনের বিশেষত মেধাবী প্রাণের নিরাপত্তা কি সোনার হরিণের চেয়েও দুর্লভ রবে? খেয়াল করে দেখা গেছে যে বখাটেরা এই ঘৃণ্য কাজে অংশ নিয়েছে তাদের প্রত্যেকেরই বয়স ২০-২২ বছরের মধ্যে। তারুণ্যের অবক্ষয়, মূল্যবোধ ও মানবতার অপচয় কিভাবে আমাদের অজান্তে বেড়ে চলেছে সে বিষয়ে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র কি খুব বেশি সচেতন হতে পারছে? পারিবারিক ও সামাজিকভাবে অশিক্ষা ও মূল্যবোধ গঠনে অযত্নের কারণেই এই ছেলেগুলো ছাত্রীদের লাঞ্ছিত করা ও ছিনতাইয়ের মত দুঃসাহসিক ও ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা নিতে পেরেছিল, আর মাঝি সামান্য একটা মোবাইল ফোনের বিনিময়ে বিকিয়ে দিতে পেরেছিল মনুষ্যত্ববোধ। সংকীর্ণমনাদের কাছে নারী সর্বদাই লাঞ্ছনার যোগ্য, কিন্তু সেজন্য কি আমরা এই ঘটনার পর থেকে নারী নিজেকে গৃহবন্দী করে রাখবে? আর কোন শিক্ষার্থীর দল কি প্রকৃতির সাথে একাত্ম হতে পা বাড়াবেনা বাইরের পথে? বরাবরের মত আমরা কি ধরে নেব যে নারী ধরার অমিয়ধারায় অপাঙক্তেয়? একটা সাধারণ কথা সবার মনে রাখা দরকার- ফোঁড়া কাটতে হবে, অঙ্গ নয়। যা স্বাভাবিক এবং যাতে কোন অন্যায় নেই সে জীবনধারা আমরা অন্যায়কারীদের জন্য বিসর্জন দেবনা। প্রকৃত অস্বাভাবিকতা হল অন্যায়, তাই অন্যায়কেই বিদায় নিতে হবে আমাদের মধ্য থেকে, নারী-পুরুষ একত্রে বাঁচার ও চলার স্বাভাবিকতাকে নয়। আবারো বন্ধুরা মিলে বেড়াতে যাবে চেঙ্গেরখালে, শুধু হটাতে হবে ওই অমানুষ বখাটে দল ও মাঝির মত প্রাণীগুলোকে। একটা বড় আশার বিষয় হল ইতিমধ্যেই এলাকাবাসী মিলে এমনকি এলাকাবাসীর চাপে পড়ে কোন কোন বখাটের বাবা দুর্বৃত্ত ছেলেকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে প্রমাণ করেছেন যে অপরাধ সর্বদাই শাস্তির দাবি রাখে। এখন পরিবারের ও সমাজের দায়িত্ব হবে নারী-পুরুষের প্রথাগত দূরত্ব দূর করে পারস্পরিক সম্মানের ক্ষেত্র তৈরি করা এবং অপরাধের প্রতি ঘৃণা ও অসহিষ্ণুতা তৈরির মাধ্যমে একযোগে সকলকে প্রতিবাদে মুখর করে তোলা । আর রাষ্ট্রের দায়িত্ব হল কঠোর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে অপরাধের সুযোগ শূণ্যের কোঠায় নিয়ে আসা। অনিক ও খায়রুল আর কখনো ফিরবেনা, তাদের সহপাঠীরা হয়ত সে আগের মত উচ্ছল জীবনে আর ফিরতে পারবেনা, তবু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ও বিচারব্যবস্থার আছে অনেক কিছু করার। তাদের নিশ্চিত করতে হবে যাতে অনিক আর খায়রুলই হয় এমন নির্মমতার শেষ বলি, অপরাধীরা যেন আর কখনোই সাহস না পায় অমানুষ হবার।
লেখাটা দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত হয়েছিল বেশ কিছুদিন আগে। গতকাল এক ভাইয়ের সাথে আড্ডা দিতে গিয়ে মেয়েদের নিরাপত্তা, যৌন হয়রানি, ইভটিজিং ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলাপ করছিলাম, তখনকার কথাগুলো মাথায় রয়ে গেছে বলেই পুরনো এই লেখার সূত্র ধরে কিছু লিখতে বসলাম। ভাইয়া প্রশ্ন করেছিলেন, সমাজের যে অবস্থা তাতে আমার মেয়ে (যার এখনো জন্মই হয়নি, উনি অবিবাহিত যুবক!) কিভাবে বড় হবে? ভাল থাকবে? তিনি বলছিলেন তিনি সবসময় ভয়ে থাকবেন ইভটিজারদেরকে নিয়ে বা খারাপ মানুষদেরকে নিয়ে যাদের কাছ থেকে আমাদের সমাজে একটা মেয়ের শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবার আশঙ্কা রয়েছে। আমি তখন আমার কিছু মত বলেছিলাম যা এখানে তুলে ধরছি। আমি মনে করি আশেপাশের যে মানুষগুলো আছে, যারা একটা মেয়ের দিকে বাকা চোখে তাকায়, কটু মন্তব্য করে, নারীকে শুধুই ভোগ্য বস্তু মনে করে, স্বাধীনচেতা মেয়েদেরকে কটাক্ষ করে, তাকে নিয়ে রসালো গল্প করতে ভালবাসে, একজন নারীকে সফল হতে দেখলে চোখ টাটায় বলে খুব তুচ্ছ ব্যাপার যেমন তার পোশাক পরার ধরণ-হাঁটার ধরণ-ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে সকলের সাথে সহজভাবে মেলামেশা ইত্যাদিতে ইজ্জত গেল গেল বলে চেচায় তাদেরকে আমি কখনোই বদলাতে পারবনা। তাই যেটা আমাকে করতে হবে তা হল আমাকে শক্তিশালী হতে হবে। একজন মানুষ যখন আমাকে নিয়ে অকারণ বাজে মন্তব্য, কটাক্ষ বা সমালোচনা করবে তখন সে কিন্তু নিজের নীচু মানসিকতারই প্রমাণ দেবে। আর যেই মানুষটার মানসিকতা নীচু, চিন্তাধারা মধ্যযুগীয় তার কথায় আমি কেন কান দেব? আমি নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে শক্ত হতে শিখেছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, অর্থনৈতিকভাবে পুরোপুরি স্বাবলম্বী, স্বাধীনভাবে চলি, তবু আমার আগের বাসার হুজুররা-আন্টিরা এবং আশেপাশের বাসায় আন্টি আঙ্কেলরা নির্ঘুম রজনী কাটাচ্ছেন বোরকা পরা মায়ের মেয়ে আমি কেন প্যাকেট মুড়িয়ে চলিনা তা নিয়ে এবং প্রতিনিয়ত তাদের বিনিদ্র রজনীযাপনের কথা আমার মাকে বলে আমার জীবনটা রীতিমত নরকের পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমার কষ্ট হচ্ছে কারণ আমার মা ছোটবেলা থেকে শিখে এসেছেন, বুঝে এসেছেন, এবং ভয় পেয়ে এসেছেন, “পাছে লোকে কিছু বলে/ মেয়ে হল মেয়ে। মেয়ে মানুষ যাই করুক তাদের নীচু হয়েই চলতে হবে ” ইত্যাদি। এই হল মোটামুটি একটা উদাহরণ। এভাবে সমাজ প্রতিনিয়তই অন্যের স্ত্রী-কন্যা-বোন-ভাবী নির্বিশেষে নারীদেরকে নিয়ে ভেবে ভেবে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন আর কারণে-অকারণে জাত গেল-জাত গেল বলে চেচাচ্ছেন। আমার মা তাদেরকে গুরুত্ব দেন, আর আমি দিইনা। আর ঠিক এই জিনিসটাই আমি আমার মেয়েকে শেখাব এবং আমি চাই প্রত্যেকটা মেয়ে শিখুক, নীচু মানসিকতার মানুষের কথাকে মূল্য দেবার কোন দরকার নেই। কিন্তু এই কথাটা শুধুমাত্র একজন মেয়েকে ভাবলেই চলবেনা, তার স্বজনদেরও ভাবতে হবে, কারণ সমাজ ও প্রথার রক্ষকদের (যাদের অনেকের দিকেই আঙুল তুলে একশ একটা কথা শোনানো যাবে) একশটা কথা মেয়েটাকে যতটা না ভেঙে দেবে, তার চেয়ে বেশি ভাঙবে যখন আপনি আপনার স্বজন মেয়েটিকে কোমল বা কঠোরভাবে বলবেন ও বোঝাবেন , “পাছে লোকে অনেক কিছু বলছে তো, তাই লোকের মন যুগিয়ে চল”। আমি এর আগে যৌনি হয়রানি নিয়ে একটা লেখায় বলেছিলাম, যৌন হয়রানির স্বীকার একটি মেয়ের আত্মহত্যা বা মনোবল ভেঙে দেয়ার জন্য উত্যক্তকারীর চেয়ে বেশি দায়ী মেয়েটির পরিবার যেখানে কোন সহায়তা না পেয়ে পায় দোষী খেতাব “নিশ্চয় তুই কিছু করেছিস, নইলে ঐ ছেলে তোকে উত্যক্ত করতে সাহস পেল কিভাবে?” ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি নিজেই আমার অনেক বন্ধুদের দেখেছি সচেতনভাবে “মেয়ে” হয়ে অর্থাৎ সংকুচিত হয়ে চলতে, একটা বাজে মন্তব্যে খুব বেশি ভেঙে পড়তে এমনকি কোন এক তুচ্ছ দোকানদারের বা রাস্তার ছেলের মন্তব্যকেও গুরুত্ব দিয়ে মানসিক বিপর্যয়ে পড়তে… কিন্তু কেন? অসুস্থ এবং সংকীর্ণ মানসিকতার একজন মানুষ কেন এত গুরুত্ব পাবে? আমাদের জীবনটা অনেক ছোট এইসব ফালতু মানুষের কথায় কান দিয়ে নিজের জীবনের হাসি-আনন্দ ও স্বাধীনতাকে মাটি করার জন্য। তবে হ্যা সমাজে অমানুষের অভাব নেই, তাই থাকতে হবে সতর্ক কিন্তু বন্দী নয়। নিজেকে গুটিয়ে নেয়া কোন সমাধান নয়। আশা করি প্রতিটি মেয়ে শিখবে কিসে গুরুত্ব দিতে হয় আর কিসে দিতে হয়না আর তারা সকলেই পাবে পরিবারের সহায়তা। এবং তারা নিজেরা যে সহায়তা পরিবার থেকে পায়নি নিজের পারিবারিক জীবনে নিজের অনুজদের বা সন্তানদের সেই সহযোগিতা দেবে। বাবা-মার মত একটা বয়সে এসে গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়ে কনজারভেটিভ হয়ে নিজের অনুজদের সম্ভাবনা ও আনন্দ নষ্ট করবেনা। আমার আশেপাশের কেউই বদলায়নি (এমনকি আমার মাও না) কিন্তু আমি “মানুষ” হয়ে বাঁচতে চাচ্ছি বলেই ফালতু মানুষ বা ফালতু কথা আমার গুরুত্ব পাচ্ছেনা, আর এই চেষ্টায় শত যুদ্ধের মাঝেও আমি উঁচু মাথা আর আত্মসম্মান নিয়ে ভাল আছি।
“তারুণ্যের অবক্ষয়, মূল্যবোধ ও মানবতার অপচয় কিভাবে আমাদের অজান্তে বেড়ে চলেছে সে বিষয়ে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র কি খুব বেশি সচেতন হতে পারছে?”- আপনার কথা দিয়েই আপনাকে জবাব দিচ্ছি। আপনারা নারীরা আছেন শুধু নারীকে নিয়েই। নিজেই দেখছেন, বলছেন যুবকদের মধ্যে অবক্ষয়, মূল্যবোধ ও মানবতার অপচয়ই এসবের উৎস কিন্তু তাদের এগুলো ফিরিয়ে দেবার পরিবর্তে দাবী করছেন কঠোর আইন, কঠোর ঠ্যাঙ্গানি। একজন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন যুবক কখনোই ইভটিজিং এর মতো নোংরা কাজ করবেনা। অথচ আপনারা যুবকদের সঠিক পথে ফেরানোর কথা, ব্যক্তিত্ব উন্নয়নের কথা কখনোই কলছেন না। মেয়েদের কাউন্সেরিং এর কথা, আত্ম উন্নয়নে প্রশিক্ষনের কথা বলবেন কিন্তু যুবকদের আরও পেছনে ঠেলে দেবার জন্য কঠোর শাস্তির প্রস্তাব করবেন। আজব লাগে। এসব ছেলেদের কথাও ভাবুন, তাদের মূল ধারায় ফেরানোর কথা ভাবুন্ দেখবেন এরাই হয়ে উঠবে সমাজের রক্ষাকবচ। আর কতকাল নারীবাদী হয়ে থাকবেন, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মানববাদী হয়ে উঠুন।
আর লিখতে ইচ্ছে করছে না। যদি আপনার বোধোদয় হয়, আগ্রহ হয় এসব তথাকথিত নষ্ট যুবকদের নিয়ে কিছু করতে জানাবেন। এ বিষয়ে আমার কিছু লেখা পাঠাবো। প্রয়োজনে আরও কথা হবে। এক সাখে কাজ করবো, যদি মমতা থাকে পুরুষদের জন্যও। ধন্যবাদ।
আপনার লেখাটা ভালো হয়েছে। তবে যে জায়গাটতে জোর দেয়া বেশি উচিত ছিল তা হলো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা । একটা বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে মানসিক বা আচরণগত পরিবতর্ন আনতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবতর্ন আনা খুবই স্বাভাবিক। শিক্ষার মধ্যে নেই কোন দশর্ন। যেহেতু আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই এখনো ঠিকমত আচার-আচরণই করতে জানে না। পরিবার টু পরিবার বুঝাতে যেটুকু সময় লাগবে। শিক্ষার কারিকুলাম -এর পরিবতর্ন হলে আরো দ্রুত সমাজের চেহারা বা মানসিকতার চেহারা পরিবতর্ন হতো।
@লীনা,
অসম্ভব সুন্দর একটা প্রতিবাদী লেখা। মনন, মেধা বিকাশের সাথে সাথে আত্মসম্মান বোধের বিকাশ ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা সমাজ পরিবর্তনে সহায়ক। আমাদের পুরুষ সমাজের চিন্তাচেতনা যেমন অতি সহজে পরিবর্তন হবেনা, অপরদিকে নারীসমাজকে হতে হবে প্রতিবাদী- সমাজের এই কুপ্রবৃত্তি পরিবর্তনের। আশা রাখি আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা সফল হবে। আরও লিখুন, আপনাকে দেখে হয়ত আরও অনেকেই এগিয়ে আসবে, প্রতিবাদ করবে । মানবতার জয় হোক। (Y)
@আমি আমার, ধন্যবাদ।
@আমি আমার,
লীনা, খুব সহজেই পুরুষদের গালি দেওয়া যায়! আর পুরুষদের গালি দেওয়াটাকে আপনারা আধুনিকতা মনে করেন। আপনি কি মনে করেন একজন সুস্থ যুবক, ব্যক্ত্বিত্বসম্পন্ন যুবক ইভটিজিং এর মতো নোরা কাজ করবে? তাহলে বুঝতে হবে যারা করছে তারা সুস্হ নয়্। “অপরদিকে নারীসমাজকে হতে হবে প্রতিবাদী”- আপনারা নারীকে কাউন্সেলিং করবেন, শক্তি, সাহসের প্রশিক্ষণ দিবেন আর এসব যুবকদের জন্য রাখবেন শুধুই গালাগালি আর কঠোর শাস্তির প্রস্তাবনা। শুধুই নারী না হয়ে যদি মানুষ হন, এসব যুবকদের জন্যও মমতা ধারণ করুন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মানুষের জন্য আসুন কিছু করি। না পারলে থাকুন -শুধুই নারী হয়ে।
লীনা, অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়লাম। আসলে নেটে আসার তেমন সময় পাই না।
আপনার লেখাখানি পড়ে তেমন মন্তব্য করার কিছূ নেই। শুধু এইটুকু বলব- যারা অপরাধ করে তারা জেনেই তা করে এবং এ দিক থেকে তারা দুর্বলতায় থাকে। প্রতিপক্ষকে দুর্বল ভাবলেই এরা ঝাপায়। আর পতিপক্ষ যদি কঠোর হয় রুখে দাঁড়ায় এরা নিজেকে গুটিয়ে নেয়।
আমরা অনেকেই নিজেকে মুক্তমনা,উদারমনা বলে দাবী করি- ভাষণে, মন্তব্যে। কিন্তু কতটুকু নিজের জীবনে তা প্রয়োগ করতে পারি তাই ভাবতে বিষয় :-s । না হলে সমাজের এই হাল হত না। :-Y ধন্যবাদ
@সুমিত দেবনাথ,
চরম সত্য কথা।
@সুমিত দেবনাথ, আপনার সাথে একমত না হয়ে পারছিনা 🙂
যৌন হয়রানিকে ইভটিজিং না বলাই ভালো মনে হয়। এই রকম হয়রানির নতুন একটা নাম দরকার, দরকার এটিকে ঘৃণ্য একটি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে কড়া আইন করবার। সেই সাথে আইনি নালিশ গ্রাহ্য করবার ব্যাবস্থাও করতে হবে। মেয়েদেরকে যারা হয়রানী করবে তাদেরকে দাগী আসামী হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। ওই সব আসামীদের নাম কোন ডাটাব্যাঙ্কে রেখে জনসমক্ষে প্রকাশ ব্যাবস্থা থাকতে হবে। কি করে ওইসব ব্যাবস্থা নেওয়া যায় সেগুলো আলোচনা করা দরকার। পদ্ধতিসমূহ নির্ধারণ করে ব্যাবস্থা নিতে হবে।
@কাজী রহমান, একমত আপনার সাথে। তবে যে বিপুল সংখ্যক কিশোর তরুণ এর সাথে জড়িত তাদের রিহ্যাবিলিটেশনের জন্যও গণমাধ্যম, পরিবার ও সমাজের সব ক্ষেত্রে কথা বলতে হবে আমাদের, কারণ এদেরকে তো আর আমরা বাদ দিতে পারিনা। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। 🙂
ইস ! লেখা টা আগে পরিনি ! এরকম লেখা আমি লিখতে পারি না কেন ? আমার যত ক্যাচাল মার্কা লেখা লেখার থেকে আপনার লেখা টা অনেক অনেক অনেক ভালো । (F) (F) (F) এরকম লেখা আরও আরও চাই !
@মহসিনা খাতুন, আমিও তো ক্যাচালই করলাম, প্যাচালই পাড়লাম 😛
আপনার লেখা আমি পড়েছি, আর জানি যে সেগুলোর বিষয়বস্তু চমৎকার। তাই ছাই দিয়ে আগুন চাপার চেষ্টা করবেননা :)) আপনার লেখা চলুক এই কামনা করি।
একটা কথা ঠিক মেয়েদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মেয়েদেরকেই অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে। কিন্তু আমাদের সমাজ বাস্তবতা কি তাদের সেই সুযোগ দেবে। আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সম্পর্কে জানি। তারা সবাই “আমার দেখা” সবাই মেয়েদের শুধু মেয়ে মনে করে। তারা ভাবতেই পারে না মেয়েরাও মানুষ।তাদের মতে পৃথিবীর যত সমস্যা তার মূলে আছে মেয়েরা। এই কয়েকদিন আগে একটা মেয়ে নাকি গন ধর্ষণের শিকার হয়েছে কারন সে তার প্রেমিকের সাথে সন্ধ্যার পর বসে গল্প করছিল এবং তাদের মতে সব দোষ ঐ মেয়েটির।এই যদি হয় আমাদের সমাজের অবস্থা তাহলে একটা মেয়ে নিজেকে মানুষ হিসাবে কিভাবে গড়ে তুলবে?
আমি আমার শিক্ষাজীবনের কোন পর্যায়েই কোন শিক্ষককে তিনি মহিলা কিংবা পুরুষ বলতে শুনিনি মেয়েরাও মানুষ। তারা সবসময় মনে করেন মেয়ে হচ্ছে মেয়ে।
তারপরও আশা করি আমাদের সমাজে মেয়েরা নিজেদেরকে মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।
সবশেষে এইরকম একটি লেখার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং আপনার কাছ থেকে এইধরনের আরও লেখা আশা করছি।
@নিঃসঙ্গ আগুন্তক, আপনি প্রথমে যা বলে৩ছিলেন এই মেন্টালিটিই তো আসলে সমস্যা। তবে ধীরে হলেও বদলাচ্ছে ব্যাপারপগুলো। আরো বদলাবে যদি সবাই নিজের ও অন্যের মর্যাদার ব্যাপারে সচেষ্ট হয়।
আর আপনাদের এমন অণুপ্রেরণায় আরো লেখা লিখব নিশ্চয়… 🙂
সহমত ।
লেখকের জন্যে (F) (F) (F) (C) (C) (C)
@ঢাকা ঢাকা, ফুলের ঘ্রাণ পাচ্ছি, চাও খেলাম এক কাপ 😉
ধন্যবাদ। 🙂
জগতে কেউ কাউকে কিছু এমনিতে দেয় না, নিজের ভাগ নিজের আদায় করে নিতে হয়। সমাজও কিছু দিবে না, এটা একরকম নিশ্চিত। তাই নিজেদের অবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হলে মেয়েদের নিজেদেরই এগিয়ে যেতে হবে, নিজ উদ্যোগে, আপন শক্তিতে। আত্মশক্তিতে বলীয়ান মানুষদের (“মেয়ে” নয়) জন্য আমার নিরন্তর শ্রদ্ধা!
@প্রতিফলন, ধন্যবাদ আপনাকে 🙂
যেহেতু শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় আমার অস্তিত্বের বিশাল একটা অংশ তাই আপনার লেখাটা আমায় আন্দোলিত করলো , সারবস্তু ছাড়াও।
কিছু লড়াই আছে ব্যাক্তিগত লড়াই, আমার মনে হয় শিরদাঁড়া সোজা করে উঠে দাড়িঁয়ে এই পথ চলা সম্ভব। সে যাত্রা তে সঙ্গী মিলবে আশা করা উচিত নয়, আপনি যেমন করছেন না। আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হওয়ায় আপনার যাত্রা কিছুটা হলেও সহজ যা শিক্ষাহীন আর্থিক ভাবে পরনির্ভর কোন নারীর জন্যে ততখানি সহজ নয়।
সময় টা বোধ করি ১৯৯৭ সাল , আমার ছাত্র ছাত্রী দের নিয়ে ৮ মার্চের র্যালী করেছিলাম। সহকারী প্রভোষ্ট হিসেবে হলে আয়োজন করেছিলাম মেয়েদের আইনী অধিকার নিয়ে তথ্য বহুল সেমিনার। সেটি ছিল শাহজালাল ক্যাম্পাসে প্রথম ৮ মার্চ উদযাপন। বিশ্বাস করুন লীনা পরদিন সকালের কাগজে আমায় কি ভিষন এক দানব এ পরিণত করে কত কি যে লেখা হয়েছিলো। আমার নাম দেখে আমার ধর্মীয় পরিচয় নির্ধারন করে সেটিও ব্যাবহার করা হয়েছিলো। পশ্চিমা আদলে উশৃংখলতার প্রশ্রয় দেয়ার জন্যেই নাকি ওই অনুষ্ঠানের প্রচলন করা। এ সব অধ্যায় অবদমনের কারনে ভুলে গিয়েছিলাম , আপনার লেখা পড়ে মনে পড়ে গেলো।
যখন অপমানকর কথা বার্তা লেখা বা বলা হয় তখন কিন্তু শিক্ষক, ছাত্রী অথবা শিক্ষাহীন কোন নারীর মধ্যে কোন পার্থক্য করা হয় না। আর যে কাজটি করছেন সে ২০ বছরের অশিক্ষিত কেউ হতে পারেন অথবা কোন পত্রিকায় নিয়মিত লেখেন , প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত এমন কেউ ও হতে পারেন।
দেখুন ১৬ ডিসেম্বর যখন পুরো জাতি বিজয় দিবস পালন করছে ঠিক তখন একজন নারীর স্বাধীন ভাবে হেঁটে চলে বেড়ানোও নিরাপদ নয়।
তাই বলছিলাম জোয়ারের সাথে বেনো জল আসবেই, আবর্জনা আসবেই তবুও আমাদের এই ব্যাক্তিগত লড়াইয়ের প্রয়োজন আছে। গোপনে বলি, আমি একদা বিশ্বাস করতাম সংগঠিত মানুষের মোর্চার প্রয়োজন সবার আগে, এখন বুঝি ব্যাক্তিগত লড়াই , আত্ম মর্যাদা র লড়াই প্রথম পাঠ হওয়া উচিত নারী পুরুষ সবার জন্যেই। প্রচলিত সমাজ ব্যাবস্থা থেকে নিজেকে মুক্ত করার এই যুদ্ধ একটি মহাকাব্যের অপেক্ষা করছে অথবা সেই মহাকাব্য আরো একটি যুদ্ধের।
@কেয়া রোজারিও, ধন্যবাদ অসম্ভব সুন্দর মন্তব্যের জন্য। (F) আপনার কাজের জন্য পত্রিকাগুলো আপনাকে যাই দিয়েছে তা হয়ত বেদনার ছিল, কিন্তু আমিসহ হাজারো মানুষের স্যালুট যে প্রাপ্তির খাতায় এসেছে তা কি বুঝতে পারছেন?
এটাই আমার বেদনা আরো বাড়ায়, তাহলে শিক্ষার মূল্যটা কোথায় এমন হতাশ প্রশ্নও জাগে, তবু বুঝি, আশা আছে।
এত অসাধারণ আর খাঁটি কথা গোপনে বললে অন্যায় হবে। :))
এই যে হালচাল, বাস্তবতা; এমনকি আপনার মায়ের সাথে আপনার চিন্তার বা দেখার যে পার্থক্য – এমনি এমনি তৈরি হয়নি। আপনি জগৎ-জীবনকে জানার-বুঝার পথে পা বাড়িয়েছেন; এরকম একটা জগতের সাথে মানুষের আত্মিক সম্পর্ক কিভাবে গড়ে তোলা যায়, এ নিয়ে কিছুটা ভাবা যেতে পারে। মানুষ তো পালটায়, হয়তো পরিমাণটা লক্ষণীয় নয়। আপনি কিছুটা আলোচনা করেছেন, ভাল লেগেছে।
মানুষের যৌথ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের জায়গা দখল করে নিচ্ছে বাজারি সংস্কৃতি। এগুলো বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে যে প্রতিযোগিতা তৈরি হচ্ছে; তার ফল হল বিচ্ছিন্নতা ।
মানুষ ও মানুষের মধ্যকার সম্পর্কগুলো যেভাবে ভেঙ্গে পড়ছে; তাতে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বাড়বে।
সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা গেলে যে যার অবস্থান থেকে বা যৌথভাবে কিছু করার দাবি তো এসে যায়।
ভাল থাকুন। ধন্যবাদ, একটু উস্কে দেবার জন্য।
@স্বপন মাঝি, আপনাকেও ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আর আমিও মানি পরিবর্তন এসেছে, আসছে। শুধু সেই পরিবর্তনের হাওয়ার বাইরে অধিকাংশ মানুষকে দেখে যে বেদনাবোধ তা থেকেই এই লেখার জন্ম।
সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যপার বাংলাদেশের আদালতগুলো এই মানুষ রূপী সামাজিক আবর্জনাগুলোকে ইভটিজার, বখাটে, দুষ্টু ইত্যাদি নামে সঙ্গায়িত করে এবং তাদের কর্ম কান্ডকে বখাটেপনা, ইভটিজিং প্রভৃতি নামে বর্ননা করে। আসলে এরা সাবাই যৌন অপরাধী, সেক্স অফেন্ডার এবং তাদের কীর্তিকলাপকে যৌন নির্যাতনই বলতে হবে। আইনের স ঠিক প্রয়োগ সব একদিনে ঠান্ডা। লেখা ভাল। (Y)
@শাখা নির্ভানা, ”সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যপার বাংলাদেশের আদালতগুলো এই মানুষ রূপী সামাজিক আবর্জনাগুলোকে ইভটিজার, বখাটে, দুষ্টু ইত্যাদি নামে সঙ্গায়িত করে এবং তাদের কর্ম কান্ডকে বখাটেপনা, ইভটিজিং প্রভৃতি নামে বর্ননা করে। আসলে এরা সাবাই যৌন অপরাধী, সেক্স অফেন্ডার এবং তাদের কীর্তিকলাপকে যৌন নির্যাতনই বলতে হবে।”
একদম মনের কথা বলেছেন। বখাটে শব্দটাই আমার দুর্বল মনে হয় এসব ক্ষেত্রে।
@শাখা নির্ভানা,
এব্যাপারে আপনার সাথে আমি একমত।
এখানে একটু দ্বিমত আছে। আইনের সঠিক প্রয়োগে কাজ হবে কিন্তু পুরো ব্যাপারটা নির্মূল করার জন্য করতে হবে মানসিকতা ও মূল্যবোধের পরিবর্তন। মোটামুটি সবার মানসিকতার। তাছাড়া যৌন নির্যাতন শুধু নয়, যারা টিজিং করে থাকে তাদের একটা বড় অংশ কিশোর থেকে তরুণ, যাদের এ ধরণের মানসিকতার জন্য অনেকটাই দায়ী পারিবারিক ও সামাজিক পরিবেশ, গণমাধ্যম ইত্যাদি। এদেরকে ছেটে না ফেলে তাদেরকে মূলস্রোতে নিয়ে আসতে হবে। এই বোধ তৈরি করতে হবে যে নারীকে সে নীচু হিসেবে ট্রিট করতে পারেনা, সে নিজেও এত নিচে নামতে পারেনা। সবাই মিলে কাজ করলে কিন্তু এই কিশোর-তরুণদের বোঝানো যাবে, আর মেয়েদের মধ্যেও বেশি করে আত্মসম্মানবোধ আনতে হবে। এ সবই করতে হলে মূলত পরিবারের ও সমাজের প্রতিটি সচেতন মানুষকে কথা বলতে হবে, কাজ করতে হবে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভালো লেগেছে লেখা, এরকম লেখা আসলেই আরও দরকার, বিশেষ করে মেয়ে দের কাছে থেকে। আমার মনে হয়, শিক্ষিত নারীর দায়িত্ব একজন অশিক্ষিত নারী থেকে বহুগুন বেশি। শিক্ষিত নারীর এই ‘অধিকার’ বোধ অবশ্যই খুব প্রবল হতে হবে। আর নিচু মানসিকতার লোক দের কথায় কান দেয়া বেশি উচিত না, এইটা আমিও বুঝি, কিন্তু এই ধরনের মানুষ রা এত প্রবল ভাবে মেজরিটি যে হতাশ হয়ে পড়ি মাঝে মাঝে। অবশ্য নারীদের হেয় করে দেখার সমস্যা শুধু যে বাংলাদেশে দেখা যায় তা নয়, সারা পৃথিবীতেই আসলে কম বেশি এই সমস্যা আছে। ২ দিন আগে ফেসবুক এ এই চমৎকার লেখাটি শেয়ার দিয়েছিলাম
http://www.cracked.com/article_19785_5-ways-modern-men-are-trained-to-hate-women.html
কথা গুলো বেশ যুক্তিযুক্তই মনে হয়েছে।
@রিজওয়ান, আমিও এই আর্টিকেলটা পড়েছি। কথাগুলো আসলেই মোটামুটি ইউনিভার্সাল টাইপের। :-Y আমি ভেবেছিলাম এই লেখাটার সূত্র ধরে একটা পোস্ট দিব, কিন্তু এখনো সময় করে উঠতে পারিনি 🙁
ধন্যবাদ মন্তব্য আর লিঙ্কের জন্য। 🙂
ধন্যবাদ আপনাকে, লীনা।
কিছু কথা আছে কেউ না কেউ শুরু করতে হবে, আপনি করেছেন, তাই আপনাকে প্রনাম।
@নাফিস, ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আমি নই, অনেকেই শুরু করেছে। এখন এই স্রোতে যাতে সবাই মেশে তাই আমাদের আশা। 🙂
অসাধারন আপনার বোধ, ভাবনা। তার চেয়েও ধারালো আপনার বিশ্বাস।
আপনার এই ছোট্র বাক্যটিতে অপরিমেয় আত্মশক্তির নিনাদ রয়েছে। এভাবে ভাবতে পারলে অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যায়; পথ চলা হয় অনেক সহজ।
এই অসাধারণ আত্মপ্রত্যয় সবার ভিতরেই গ্রথিত হওয়া উচিত।
সম্পূর্ণ একমত।
ধন্যবাদ এমন সুন্দর লেখার জন্য। লেখাটিকে কিছু প্যারায় ভাগ করে দিলে পঠন আরও সহজ হত। আপনার লেখা নিয়মিত পড়তে চাই।
@কাজি মামুন, তাড়াহুড়া করে লেখা তো, তাছাড়া আমি অগোছালো মানুষ, তাই প্যারা করা হয়নি। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। 🙂
আমার তো মনে হয়, মেয়েরা যতোদিন নিজেদের মানুষ না ভেবে মেয়ে ভাববে ততদিন তার মুক্তি নেই। আমার আত্মীয় বন্ধুদের মধ্যেও অনেক কে দেখেছি আমার কথা শুনে ক্ষনিকের জন্যে হলেও নিজেকে মানুষের পর্যায়ে ধরে রাখতে চেষ্টা করে, কিন্তু যেই না তার স্বামী কিংবা শ্বশুর বাড়ির কেউ সামনে থাকে তখনই সে চিরাচরিত মেয়েতে পরিবর্তিত হয়! কাজেই কেনো যেনো মনে হয় এই ৩টি বিষয় জরুরী,
১. মেয়েদের শিক্ষিত হয়ে স্বাবলম্বী মানুষ হওয়া
২. আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন
৩. মেয়েদের স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠার সামাজিক এবং পারিবারিক পরিবেশ সৃষ্টি করা।
একেবারেই শুরু থেকেই।
@কেশব অধিকারী, একমত। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। 🙂
লীনা, বিশ্ব্যবিদ্যালয় থেকে পাশ করে মেয়েদের যখন নিজেদের কর্ম, স্বাধীনতা বিসর্জন দিয়ে শ্বশুড়বাড়ীর অনুগত হয়ে চলতে দেখি, কতটা কষ্ট যে লাগে। অবাক লাগে, ঐ মেয়েদের কেন কিছু লাগে না? আমার এক বান্ধবী, স্কুল কলেজে সবস্ময় ভালো রেজান্ট করত… বুয়েটে ভর্তি হয়ে বস্তা ধরল, চোখও কাউরে দেখায় না। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে শতভাগ গৃহবধূ! বাচ্চা কোলে ঘুরে বেড়ায় সারাদিন! আর বলে, এটাই মেয়েদের জীবনের আসল সুখ! তাকে বোঝানোর কোন পথ পাইনা, উলটো আমাকে শুনিয়ে দেয়, তুমি তো ধর্মের মর্যাল বুঝ না। সমাজ বুঝো না। 🙁
@নীল রোদ্দুর, আপু, আমারো সেম অবস্থা। দিন দিন সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। এমনকি বিয়ের পর আমার নিজের বোনকে যখন বললাম পড়াশোনা শেষ করতে অথচ সে অলরেডি ইয়ার ড্রপ দিয়ে বসে আছে। আর ওর স্বামী আগে থেকেই বলে দিছিল বৌ চাকরি করতে পারবেনা, আর এতেও আমার বোন রাজি। আমি যখন বলতে গেলাম যে এভাবে রাজি হয়ে যাওয়ার কোন অর্থ নেই তখন আমাকে শুনিয়ে দিল “তুমি হয়ত এমন কাউকে বিয়ে করবা যেখানে সংসার চালাতে হলে দুইজনকেই চাকরি করা লাগবে। ও একাই এত ইনকাম করে যে আমার কখনোই কষ্ট করতে হবেনা”
গাধী এইটাও বুঝেনা যে ওর স্বাধীনতা নিয়ে কথা হচ্ছে, টাকা নিয়ে না। :-Y আর বান্ধবীদের কথা তো বললামই, একসময় না একসময় তারা “মেয়ে”র পরিচয় দিবেই দিবে, আর কিছু বোঝাতে গেলে এক্সট্রিমিস্ট বলবে, বিরক্ত হবে… আর ভাল লাগেনা…
লীনা, নিজে নিজে আপনার মত অনেকেই বদলে গেছেন বদলাচ্ছেন। সবার খবর হয়তো আমরা জানি না। আধুনিক মনন তো সৃষ্টি করা যায় না ভাই, বিবর্তনের মাধ্যমে গড়ে উঠতে হয়। যেভাবে আপনি গড়ে উঠেছেন – আরো অনেকেই উঠে আসবে। পরিবেশটা তৈরি করা জরুরি। এবং তা ধীরে ধীরে হচ্ছেও। পেছনের দিকে হাঁটা কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে আপনি দেখবেন আজ যত মেয়ে মুক্তচিন্তা করার সুযোগ পাচ্ছে দশ বছর আগেও এতটা ছিল না। আজ সবগুলো শহরে মেয়েদের জন্য বেসরকারি পর্যায়ের অনেক হোস্টেল তৈরি হয়েছে। একা একটা মেয়ের এখন থাকার সমস্যা ততটা নেই যতটা ছিল কয়েক বছর আগে। এটাও তো অনেক উত্তরণ।
@প্রদীপ দেব, ঠিকই বলেছেন। কিন্তু আমার খুব খারাপ লাগে যখন উচ্চশিক্ষিত বা অশিক্ষিত, নানা অবস্থার ও পর্যায়ের একদল মেয়েদের মাঝে তাদের নিজের মূল্য না বোঝার ব্যাপারে মিল পেয়ে যাই। তবে আমিও মনে করি পরিবেশ আস্তে আস্তে তৈরি হচ্ছে, প্রয়োজন আরো চেষ্টার আর আরো সময় দেয়ার। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। 🙂
নারীকে যে সম্মান করা সভ্যতার অংশ এটা স্কুল,পরিবারে,সমাজে শিক্ষ্যা দিতে হয়। পৃথিবীর যেসব দেশে এই শিক্ষ্যা দেয়া হয় সেখানেও নারী নির্যাতন কম এ কথা মনে করার কোন কারন নেই। তারপরেও নারী- পুরুষের সম্পর্ক সম্মানজনক পর্যায়ে উন্নিত করার চেষ্টা ত থাকতে হবে। আমাদের দেশে জন্ম থেকেই পুরুষ দেখে নারী করুনার পাত্র, মা বাবার পরে খাবে, বুয়া একজন পশু, বোন ফ্রক ছাড়ার পর বারান্দায় যেতে পারবে না, বধু বাসর রাত থেকেই বাসন মাজবে… এই ত আমাদের সমাজের নারী। পুরুষ ত ভেবেই নেয়, যে নারী উচ্চ স্বরে হাসে সে শয়তানের প্রতিনিধি। পুরুষ কখনো নারীবাদি হয় না , হতে পারে না। বিদ্যাসাগর আর রাজা রামমোহন রায়দের কর্মের জন্য কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করা গেলেও দিন শেষে সব পুরুষ একই। নারীকে নিজের কথা নিজেকেই ভাবতে হবে, অন্য কেউ ভাব্বে এ কথা মনে করলে কাজের কাজ কিছুই হবে না। পুরুষ কবে নারীবাদি হবে এই আশায় বসে থাকলে নারী দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক থেকে যাবে অনাদিকাল। পুরুষের নারীবাদি হওয়াটা ফ্যাশান, এটা নারী যেন বুঝে এ কামনাই করি।
@সপ্তক,
এ ধরণের উক্তিগুলো আমাকে কিছুটা অস্বস্তি দেয়। আমার মনে হয় নারীবাদ বলে নারীকে যেন আলাদা করে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর “দিন শেষে সব পুরুষ একই” এ ধরণের কথাও স্টেরেওটাইপিং মনে হয়। একজন নারী যখন লাঞ্ছিত হয় তখন শুধু সেই ছোট হয়না, ছোট হয় লাঞ্ছনাদানকারী ব্যক্তিও সে পুরুষ বা নারী যেই হোক না কেন। দুজনকেই মানুষের স্তরে উঠে আসতে হবে, সম্মান থাকতে হবে একে অপরের প্রতি। তবে হ্যা নারী নিজের অধিকার বা আত্মসম্মান বোঝে কম এটা একটা কমন ব্যাপার, বিশেষত আমাদের দেশে, তাই তাকেই আগে জাগতে হবে, নিজের মর্যাদা ও গুরুত্ব জানতে ও মানতে হবে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। 🙂
@লীনা রহমান,
সামাজিক, পারিবারিক, পারিপার্শিক সব ধরণের প্রতিকূলতার শিকার শুধু মেয়েদের হতে হয় কেন। আমরা শুধু ইভটিজিঙের কথা শুনি কিন্তু আদমটিজিঙের কথা কভু শুনিনা কেন?
@তামান্না ঝুমু,
এ প্রশ্নের উত্তরটা তো আমাদের সবারই জানা থাকার কথা 🙁 ।
@তামান্না ঝুমু,
কথাটা মনে হয় খুব বেশি জেনারালাইজড হয়ে গেল। প্রতিকূলতার শিকার মুক্তমানুষ মাত্রেই হয়, মেয়েদের ক্ষেত্রে মুক্ত বা বদ্ধ যাই হোক না কেন বাধা বেশি এটা ঠিক। আর ইভ টিজিং যেমন কাম্য নয়, আদম টিজিং এর কথা শুনতে না পাওয়াটাও কিন্তু ভাল ব্যাপার (যদিও এডাম টিজিং ব্যাপারটি কিন্তু অবাস্তব বা অশ্রুত নয়।) কেউ অত্যাচারিত না হোক আর পুরুষ-নারী নির্বিশেষে সবাই প্রথাবদ্ধতা ও সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে মুক্ত হোক এটাই সবশেষে আমার কাম্য। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। 🙂
@লীনা রহমান, ঠিক বলেছেন । টিজিং যেমনই হোক না কেন , কাম্য নয় ।
এ ধরণের লেখা আরো বেশি করে সাইটে আসা উচিৎ।
কাজটি করার জন্য অনেক ধন্যবাদ, লীনা! (Y)
@অভিজিৎ, খোঁচার বিনিময়ে লেখা 😛
ধন্যবাদ আপনাকে। :))
@লীনা রহমান, তাহলে আরও বেশি করে খোঁচা খান , আর এরকম লেখা আরও লিখুন 🙂
@মহসিনা খাতুন, নিশ্চয় লিখব। 🙂
(Y)