লিখেছেনঃ মহসিনা খাতুন
ছোট বেলা থেকে বাড়ীতে আম্মি, আব্বু কে মাঝে মাঝেই বলতে শুনেছি— ইসলামে ৭৩ ফেরকা…৭২ ফেরকা দোযখ, ১ ফেরকা জান্নাত। মাঝে মাঝে প্রশ্ন করতে ইচ্ছা করতো আব্বু কে…আচ্ছা আব্বু! আমার ফেরকা কোথায় যাবে? জান্নাত না জাহান্নাম? আব্বু কে ভয়ে শুধাতে পারিনি। আম্মিকে একদিন শুধালাম, “আম্মি আমরা কোথায় যাবো? জান্নাত?” আম্মি বললো, “ ভালো কাজ করলে জান্নাত আর খারাপ কাজ করলে দোজখ”। আম্মি কে আবার বললাম, আম্মি, “তুমি যে বল ৭৩ ফেরকা,এক ফেরকা জান্নাত। আমরা কি জান্নাত এর ফেরকা ?” আম্মি বলল, “কে জানে মা। আল্লাই জানে।” আমি সেদিন বুঝেছিলাম এর উত্তর আম্মির জানা নেই।
নবি হজরত মহম্মদ (সাঃ) বলেছেন, ইহুদিদের ৭১ টি ও খ্রিস্তিয়ান দের ৭২ টি সম্প্রদায় বর্তমান কিন্তু ইসলামের ৭৩ টি ভাগ হবে (অর্থাৎ ইসলামে ৭৩ টি সম্প্রদায় হবে) যাদের মধ্যে ৭২ টি্র পরিনাম হবে জাহান্নাম…ও ১ টি সম্প্রদায় এর জান্নাত নসিব হবে। অনেক ইসলাম প্রচারক থেকে শুরু করে অনেকেই বলেন, যে বা যারা ইমান এর পথে চলবে তারাই জান্নাত পাবে। কিন্তু নবি ত তা বলেন নি। নবি (সা: ) কি বলতেন তা আমরা সব মুসলিমরা-ই খুব পরিস্কার ভাবে জানি।
এই ৭২ টি সম্প্রদায় এর অন্তর্ভুক্ত তারা ইমান এর পথে চলে কিনা জানি না…তবে আমি নিশ্চিত যে এদের মধ্যে অনেক ভাল ব্যাক্তি আছেন যারা মানুষের উপকার করেন। মানুষের দুঃখে কষ্ট পান। কিন্তু তবুও হাদিস অনুযায়ী তারা জাহান্নাম পাবেন। এটা কেমন বিচার ?
আমরা যারা মুসলিম হয়ে জন্মেছি তারা কেউ –ই নিশ্চিত নই যে, কোন কোন সম্প্রদায় জাহান্নাম এর আগুনে পুড়বেন। আর কোন একটি আল্লাহ-র পেয়ারে সম্প্রদায়ের জান্নাত এর সুখ নাসিব হবে। তবু আমরা নিজেদের মুমিন বলে বড়াই করতে ছাড়ি না আর অন্যধর্মী দের ও কাফের বলতে ছাড়ি না। বস্তুতপক্ষে, আমাদের ইসলামের অধিকাংশ সম্প্রদায় ও আসলে কাফেরদের পরিনতি ই প্রাপ্ত হবে…একথা নবি (সাঃ) বললেও এখন আমাদের স্মরন করানোর কেউ নেই। যারা দিন রাত আমাদের ইসলাম এর শিক্ষা দেন তারা কেন বলতে ভুলে যান এই কথা গুলো? কিম্বা হয়ত জেনে শুনেই এড়িয়ে যান । কিন্তু যারা প্রবাবিলিটির গনিত এতোটুকু ও জানেন তারা জানবেন আমাদের প্রত্যেকের সত্যিকারের মুসলিম হওয়ার চান্স ১/৭৩ । (অর্থাৎ আপনার চোখ বেঁধে দেওয়া হল। একটি পাত্রে ৭৩ টি সমান মাপের বল রেখে দেওয়া হল এবং একটি বল এর গায়ে দাগ দিয়ে সেটিকে সেই পাত্রে রেখে মিসিয়ে দেওয়া হল। আপনাকে বলা হল যে চোখ বাঁধা অবস্থায় ওই দাগ দেওয়া বলটি একবার পাত্রে হাত দিয়ে তুলতে হবে। প্রথম বার পাত্রে হাত দিয়ে আপনার ঐ দাগ দেওয়া বল টি ওঠাতে পারার সম্ভবনা যতটা আপনার তথা আপনার সম্প্রদায় এর সত্যিকার মুসলিম হওয়ার সম্ভবনা ও ততটা।)
কোন একটি সম্প্রদায় যদি জান্নাতে যাওয়া নিশ্চিত করে ফেলে তাহলে বাকি সম্প্রদায় গুলোর জাহান্নাম এ যাওয়া নিশ্চিত। আর জাহান্নামে গেলে তো মেনে নিতেই হয় যে ওই ৭২ টি সম্প্রদায় এর লোকদের আর কাফেরদের মধ্যে কোন পার্থক্যই নেই। তাহলে আমাদের নিজেদেরকে কি করে আমরা মুসলিম বলে মনে করতে পারি, যেখানে আমাদের কাফের হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি।
আবার যে সৌদি দের পারলে আমরা মাথায় তুলে নাচি, সেই সৌদি রা তো এই বলে দীর্ঘদিন প্রচার চালাচ্ছে যে, একটি মাত্র মাজহাব এর জন্মস্থান আরব। বাকি সব অন-আরবিয়। সেগুলির জাহান্নাম নাসিব হবে। আর নবির জন্মস্থান পবিত্র আরবে যে সম্প্রদায় এর উৎপত্তি তারাই একমাত্র জান্নাতের অধিকারী হবে। অর্থাৎ যদি আমরা ইসলাম কে সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম বলে মেনেও নি, তাহলেও আমার ধর্মই প্রকৃত ইসলাম কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। সুতরাং আমি মুসলিম… আমার ধর্ম সব চেয়ে পবিত্র… এই ধরনের কথা আমার কাছে খুব জল মেশান মনে হয়। মন প্রশ্ন করে… আমি কি সত্যিই মুসলিম?
কে জানে হয়ত অবচেতন মনে লুকিয়ে থাকা জান্নাত এর লোভ এর পরিনতি এই ধর্ম নিয়ে পড়াশুনা ও গবেষণা । তবে সে যাই হোক না কেন, আজ জান্নাত এর উপর আমার বিন্দুমাত্র লোভ নেই। ইসলামেও আমার কোনো আকর্ষণ নেই। আমি সত্যিকারের মুসলিম কিনা সেটা আমার কাছে আজ গুরুত্ব হারিয়েছে। মুসলিম হওয়ার চাইতে সত্যিকারের মানুষ হওয়া সহজ এবং অধিক কাজের কাজ বলে মনে করি। আজ আমি মানুষের কথা বলি।
ভাইরে এতদিন কি জানতাম, আর এখন কি জানছি…।।
আর বাড়ী হেনি! সৈয়দ অয়ালিউল্লার মতে ইয়ানে আলু হটলের লান মোল্লা চাষ হর। আর দূর হইম্পরকার মেলা চাচা মউলানা,ছুদুবেলায় আর এক বেয়াইদ্দপ কাহা ইজ্ঞা মাউলানের জিজ্ঞার ,আইচ্ছা হুজুর হাশরের ময়দানে যাই যুদি দেহি রাম কৃষ্ণ আঙ্গরে স্বাগতম জানাইবার লাই দাঁড়াই রইছে তহন কিয়া কইতাআম?।:lotpot:
দেলোয়ার হসেন সাইদির অয়াজ শুনতে গেছিলাম ছতবেলায়,বেটা বলে, আহা আল্লার কি কেরামতি যদি বটগাছের ফলের বোটা বট গাছের মত বড় হইত তাইলে কি পথিক গাছের নীচে ঘুমাইতে পারিত?,এমন ই ছোট ফল যে মাথায় পড়িলে মনে হয় বিলি কাটিতেছে!!:-)
এক ই অনুষ্ঠানে হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদি অয়াজ ফরমাইলেন,আলিফ এর নক্তা নাই আজকাল নারীদের মাথায় কাপর নাই,বে এর নীচে দুই নক্তা নারীর বুকের কাপর নাই। বুঝলাম হুজুর রাও বুঝে ওয়াজ জমাইতে হইলে নারীর অঙ্গ লইয়া কথা বলা জরুরী। এরপর পুরা ওয়াজ এর বিষয় ই ছিল নারীপুরুষ এর অবৈধ সম্পর্কের ওপর যা কিনা সুরসুরি মুলক।:hahahee:
@সপ্তক, আমিও ওরকম একতা জলসা শুনেছি ।
@সপ্তক,
আশির দশকে ঢাকার ফার্মগেট সংলগ্ন তেজতুরী বাজারে মাওলানা যুক্তবাদি আমাদের নিকট প্রতিবেশী ছিলেন, স্পষ্ট মনে আছে সেই সময় তিনি তাঁর তরুণী কাজের মেয়েকে গর্ভবতী করে পাড়ায় আলোড়ন তুলেছিলেন।
লেখক মহসিনা খাতুনকে একটা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ বিষয় তুলে ধরার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
এ সম্পর্কে নিচের ঘটনাটি যে কেহ একটু পড়ে দেখতে পারুন।
সে বহু বৎসর পূর্বে ছোটবেলায় পার্শবর্তি একটি মাঠে একটি জনসভায় একজন মওলানা সাহেব অত্যন্ত দাপটের সহিত কোরান হাদিছ দ্বারা ওয়াজ নছিহত করিয়া জনগনের বেশ প্রশংসা ও ভক্তি অরজ্ন করিয়াতেছিলেন। সভাশেষে স্থানীয় একজন ষ্পষ্টবাদী চেয়ারম্যান মাতুব্বর ,সম্ভবতঃ তিনি কোরান হাদিস পড়াশুনা করতেন,মওলানা সাহেবকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করিলেন, আচ্ছা মওলানা সাহেব বলুনতো,কেয়ামতের দিন তো সমস্ত মুসলমান জাতিকে ৭৩ টা লাইনে বিভক্ত করা হইবে। এর মধ্য হইতে মাত্র একটি লাইনকে বেহেশতে ঢুকানো হইবে আর বাকী ৭২ টা লাইন কে নরকের আগুনে ঢুকিয়ে দেওয়া হইবে।
ঐ দিনে আপনার অবস্থান কোন লাইনে হইবে একটু বলবেন কি ?
মওলানা সাহেব হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন এবং কোন উত্তর দিতে পেরেছিলেন না।
আমরাও হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম বরং মনে করেছিলাম চেয়ারম্যান সাহেব যা বলেছেন এটা হাদিছ অন্তর্ভুক্ত কোন কথা নয়। চেয়ারম্যান সাহেব নিজের মনগড়া একটি পশ্ন করেছিলেন। এতদিন তাই বিশ্বাষ করে আসতেছিলাম।
একারনেই আমি এই হাদিছটির সূত্রটা জানতে অত্যন্ত আগ্রহি ছিলাম।
ভাই আকাশ মালিকের সৌজন্যে উপরে আমি এই অতীব গুরুত্ব পুর্ণ হাদিছটি অর্থ ও সুন্দর ব্যাখ্যা সহ পেয়ে গিয়েছি। এজন্য তাকেও আবার অশেষ ধন্যবাদ।
(F) (আলডাস হাক্সলি)।
এজন্যই তো ধর্ম রক্ষার্থে খুন খারাবিও জায়েজ বলে প্রচার করে ধার্মজীবিরা। তাই তো আহমদিয়া, শিয়া, সুন্নি অথবা অন্য ধর্মাবলম্বিদের নৃশংসভাবে হত্যার জন্য মহামূল্যবান পুরষ্কার রয়েছে জান্নাতে।
অজ্ঞতা ও মূঢ়তাকে মারাত্মক পাপের শ্রেণীভুক্ত করে বুদ্ধদেব যে কতটা বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিলেন তা এখন পরিষ্কার বুঝতে পারছি। কাউকে সত্যি মুসলমান, হিন্দু, খ্রীস্টান ইত্যাদি হবার প্রয়োজন নেই, খাঁটি মানুষ হলেই চলবে, তবে এটি বড়োই কঠিন কাজ। কারণ সমাজ মনে করে ধর্ম পালন না করলে সে লোক খাঁটি হয় কি করে? ওরা মনে করে খাঁটির একমাত্র মানদন্ডই হলো ধর্ম!
যাহোক, ধর্মীয় এই বিভ্রান্তিকর অবস্থা থেকে এই পৃথিবী বা তার কোন অংশকে রক্ষা করার চেষ্টার মধ্যে যে প্রচণ্ড বিপদের ঝুঁকি আছে, তাতে কোন সন্দেহ নাই তবু এগিয়ে যেতে হবে। ধন্যবাদ সবাইকে। ভালো থাকবেন, সুস্থ্য থাকবেন এই কামনায় কফিল।
@কফিল কাঙ্গাল,
মহসিনা খাতুনকে ধন্যবাদ এমন একটি লেখা উপহার দেয়ার জন্য।
[বিভ্রান্তিকর অসংখ্য আদর্শের কোনটিই আমাদের পেক্ষ গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কেননা দেখা যাচ্ছে যে, সব পরস্পরবিরোধী আদর্শই বিশেষ বিশেষ সামাজিক অবস্থার ফল। …স্বর্গরাজ্যে পৌঁছবার যে একটা সংক্ষপ্তি পথ আছে, এ বিশ্বাস আমাদের মনে এত বদ্ধমূল এবং আমাদের অনুরূপ মতাবলম্বীদের সম্পর্কে আমরা এমনই অন্ধ যে, আমাদের পেক্ষ এ ব্যাপারে ভাবাবেগমুক্ত হওয়াই কঠিন। বরঞ্চ আমরা বিশেষ জোর দিয়েই বলি যে, সৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য নিশ্চিতভাবে অসৎ পথ অবলম্বন করাও ন্যায়সঙ্গত…।] (আলডাস হাক্সলি)।
@কফিল কাঙ্গাল,
ভাই, একেবারে খাটি কথাটাই প্রকাশ করে ফেলেছেন। বাস্তবে এটা অহরহ ঘটছে। এবং আমরা তার শিকার ও।
ধন্যবাদ
(F)
লাইনগুলি গভীর তাৎপর্যময় ও চিন্তাজাগানিয়া, এবং পড়তে খু-ব-ই ভাল লেগেছে। (Y)
মুক্তমনায় স্বাগতম এবং ফুলেল (F) (F) (F) (F) শুভেচ্ছা রলো।
১/৭৩ সম্ভাবনার কথা তো জানতাম না। ধর্মের কতকিছু যে জানি না, মুক্তমনায় না হলে হয়তো জানাও হতো না।
ধর্মকে কাটাছেড়া করলে ঘৃণা ছাড়া তো আর কিছু থাকে না। তবুও মানুষ মানে, কেউ মানে কিছু পাওয়ার বাণিজ্য করতে গিয়ে আর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মানে, না-পাওয়া জীবনে আর কিছু পাওয়ার নেই বলে।
খুব ভাল লেগেছে আপনার পর্যবেক্ষণ।
(Y) :clap
সুকুমার রায়ের পাজি পিটারের গল্পে পড়েছিলাম সে একটা বাক্সে ঢুকে বসেছিল… উদ্দেশ্য মানুষকে স্বর্গে যাবার লোভ দেখানো। মানুষও লোভে পা দিল… স্বর্গে যাওয়া এতোই সোজা!
ধর্মের কাজও ঠিক তাই। মানুষকে লোভ দেখানো। মানুষ লোভে পড়ে ধর্মের পথে আসবে, আসতেই থাকবে… কিন্তু বেশী চলে এলে আবার ধর্মগুরুদের এক্সক্লুসিভিটি থাকে না, তাই তখন ব্যাপারটাকে খুবই কঠিন বলে প্রচার করা লাগে। আর যেখানেই বিনাশ্রমে ইনকাম, সেখানেই ঝগড়া আর মতোভেদ। সেখান থেকেই ভাগাভাগি… আর শ্রেষ্ট আয়ের পথটা দখলে রাখতে সবাই নিজের পথকেই একমাত্র বলবে এটাই স্বাভাবিক।
তবে কালচার বাইন্ডিং ব্যাপারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ ধর্ম বদলাতে পারে, বিশ্বাস বদলাতে পারে, কিন্তু সংস্কার বদলানো খুব কঠিন। এটা আমাদের রিফ্লেক্স অ্যাকশনের মতো। অভ্যাসের বসে হয়ে যায়।স্বর্গচিন্তাও সেই কালচার বাইন্ডিং এরই অংশ। যতোই ঈশ্বরে অবিশ্বাসী হই না কেন, ভাল কাজের পরে ক্ষনিকের জন্য হলেও স্বর্গচিন্তা একটু খেলে যাবেই। কথা হল এতো কিছুর মাঝে থেকেও সত্য চিনতে পারছি কি না!
@থাবা,
সংস্কার না সংস্কৃতি, না দুটো একই কথা বলতে চাইছেন? সংস্কৃতি ব্যপারটা কিন্তু আমাদের অনেক আশার আলো দেখায়, কি বলেন?
@কাজী রহমান, না, আমি সংস্কৃতি বোঝাই নি। সংস্কারই বোঝাতে চেয়েছি। তবে এক্ষেত্রে কুসংস্কারকেই প্রাধান্য দেব। সংস্কৃতি আমার দৃষ্টিতে একটু ভিন্ন, ওটা একটা জাতিকে রিপ্রেজেন্ট করে, তার পরিচয়কে সামনে তুলে ধরে, এর মধ্যে ধর্ম ও ধর্মীয় সংস্কার এমবেডেড থাকে অনেক সময়, তবে আম্পনি যেমন বললেন আশার আলো দেখায়, কথাটা খুবুই সত্য। তবে সংস্কারের বেলায় এভাবে ভাবার অবকাশ নেই, কারন সংস্কার বেশিরভাগই হয় ধর্মীয় এবং কু-সংস্কার। আমার বক্তব্যে সেটাই বুঝিয়েছি আমি!
@থাবা,
বুঝেছি এখন। ব্যখ্যাটির জন্য ধন্যবাদ।
:guru: :guru:
ধর্ম কেন স্তিমিত হতে যাবে ? আর্থিক শক্তিই বড় শক্তি। ধর্ম- জগতে অর্থের অভাব নাই। এই তো গত জুমার দিনে ইমাম সাহেব দাড়িয়ে ভাসন দিলেন, মসজিদে ফান্ডের প্রয়োজন, কে কে আছেন ১০০ ডলারের বিনিময়ে বেহেশতে একখানা ঘর খরিদ করিতে চান ? তাহলে তিনি এই আল্লাহর ঘরটিকে ১০০ টি ডলার এখনি মানি ব্যাগ হতে বের করে দান করুন, আর যার কাছে এই মুহুর্তে না আছে তার নামটি ও ফোন নাম্বার টি লিখিয়ে যান।
১০০ ডলারের বিনিময়ে বেহেশতে এক খানা ঘর ক্রয় করিবার শিক্ষিত ও জ্ঞানী লোকদের মোটেই অভাব হইলনা।
আর অভাব হইবেই বা কেন ? এরকম লাভ জনক ব্যবসা তারা হারাতে যাবে কেন ?
ঠিক একই পদ্ধতিতে গ্রামে গন্জে একের পর এক কওমি মাদ্রাসা গজিয়ে উঠতেছে মিডিল ইশ্ট নিবাসি অভিবাসিদের দানের টাকায়। এই সমস্ত মাদ্রাসা গুলিতে শুধু মাত্র ধর্মিয় বিষয় ছাড়া আর কিছুই শিক্ষা দেওয়া হয়না। এদের কোন সরকারী সার্টিফিকেট দেওয়া হয়না। এরা কোন চাকুরী করতে পারেনা।
এখান থেকে পাশ করার পর এরাই আবার জীবিকা নির্বাহের তাগিদে নূতন নূতন মাদ্রাসা ও মসজিদ প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্য হয়।
এভাবেই ধর্মিয় প্রচার ও প্রশারের গতি দিনে দিনে বৃদ্ধি পাইতেছে।
১/৭৩ সম্ভাবনার মাঝে থাকার জন্য মুসলিমদের এত্ত মারামারি, কাটাকাটি, ঘৃণা, আরাধনা। তার মধ্যে চৌদিগো মতে, আমাদের মত বাংগালীগো সে সম্ভাবনার মধ্যে পড়ার কোনই চান্স নেই। চৌদিগো দোষ দিয়েও লাভ নেই, কেননা আল্লাহই কইছে সে কথা কোরানেঃ “Nay, it is the Truth from thy Lord, that thou mayest admonish “a people” to whom no warner has come before thee: in order that they may receive guidance” (কোরান ৩২:৩)। অর্থাৎ আল্লাহ এমন এক জনগোষ্ঠির জন্য কোরান নাজিল করেছেন, যাদের কাছে পূর্বে কোন নবী আসেনি। সে জনগোষ্ঠি যে আরবরা সে ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নেই।
আমাগো বাংগালী নতুন প্রজন্ম বোধহয় আল্লাহর এ আয়াতের মানে বুঝতে শুরু করেছে। বাংলায়, ইংরেজীতে কোরান পড়া যাচ্ছে বলে কথা। মানে বুইঝা কোরান পড়লে মানবতার জয়, ইসলামের পতন হবে নিশ্চিত। লেখিকাকে মানবতাদের পতাকাতলে স্বাগতম।
এগিয়ে চলুন সত্য, সাম্য ও ঐক্যের পথে। যে ধর্ম অপরকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে নিচু চোখে দেখতে শিখায় সেই ধর্ম কখনো মানুষ্য জাতির উপকার করার সামর্থ্য রাখে না।
একদিকে আমাদের দেশের লোকজন আগের চেয়ে অনেক বেশী মৌলবাদী হচ্ছে দেখে যেমন হতাশ হচ্ছি অন্যদিকে বিভিন্ন ব্লগে ধর্মের অন্ধকার দিক উন্মোচনের সুবাধে প্রচুর তরুণ তরুণীরা প্রগতিশীল হচ্ছে দেখে আশান্বিত হচ্ছি।
@রাজেশ তালুকদার,
দাদা, আপনার বক্তব্যের সাথে একমত৷
৭৩/৭২ ফেরকার হাদিছটির সূত্রিট কি কেহ দিতে পারেন? তাহলে আমি কৃতজ্ঞ হইব।
ধন্যবাদ
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
এই নিন তরজমা ও ব্যখ্যাসহ-
ستفترق أمتى ثلاثا وسبعين فرقة كلهم فى النار إلا واحدة : قالوا من هى يا رسول الله! قال: ما أ نا عليه وأصحابى
অতিশীঘ্র আমার উম্মত তেহাত্তর(৭৩) ফের্কায় বিভক্ত হয়ে পড়বে। তন্মধ্যে মাত্র একটি দলই মুক্তিপ্রাপ্ত এবং জান্নাতী হবে। সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেনঃ সেই মুক্তিপ্রাপ্ত সৌভাগ্যশালী দলটি কারা এবং এত বড় সৌভাগ্য লাভের ভিত্তি কোন নীতি বা আদর্শের উপর ? উত্তরে নবী(সাঃ) বললেন,যে নীতি,তরীকা ও আদর্শের উপর আমি এবং আমার সাহাবায়ে কেরাম আছেন।
(তিরমিজী শরীফ,ইবনে মাজা,মুসনাদে আহমদ,আল-মুসতাদরাক)
হাদিসের ভাবার্থ-
মুহাম্মদ বলছেন, তিনি যেমন সত্যের মাপকাঠি,এবং তার যেমন সমালোচনা করা যাবেনা, প্রশ্নাতীতভাবে তার অনুসরণ ও অনুকরণ ব্যতিরেকে যেমন নাজাতের বা মুক্তির কোন পথ নাই, তেমনি তার সাহাবাগণও সত্যের মাপকাঠী ও সকল প্রকার সমালোচনার উর্দ্ধে এবং তাঁদের অনুকরণ ও অনুকরণ ব্যতিরেকে উম্মতের নাজাতের বা মুক্তির কোন বিকল্প পথ খোলা নাই।
@আকাশ মালিক,
অসংখ্য ধন্যবাদ এই অতিমুল্যবান হাদিছটি অর্থ ও ব্যাখ্যা সহ দেওয়ার জন্য। মওলানা সাহেবদের মুখে প্রায়ই এটা শুনা যেয়ে থাকে। এটা আমার প্রয়োজন ছিল। আমি save করে রাখলাম।
এখন এটা পরিস্কার হল কিভাবে মুসলমান জাতির স্বাধীন চিন্তা শক্তিকে ১৪০০ বছর আগেই ক্রয় করে চিরদিনের তরে আবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে এবং বংশানুক্রমে মুসলমান ঘরে জন্ম লওয়া প্রতিটা নূতন শিশুটিও তার অজান্তে এই খাচার মধ্যে ঢুকে বসে থাকতেছে,তার নূতন কিছু চিন্তা ভাবনা করার সুযোগ থাকতেছেনা বা দরকার ও মনে করতেছেনা।
খুব বেশী দূরে ষেতে হবেনা।
গত শুক্রবার বিবিসি বাংলার রাত ১০-৩০ মিঃ অনুষ্ঠানে (যারা শুনিয়া থাকিবেন}বাংলা দেশে কওমি মাদ্রাসা ছাত্রদের কোরবানী চামড়া সংগ্রহের উপর একটি প্রামান্য অনুষ্ঠান প্রচার করেছিল। এতে এক পর্যায়ে বিবিসি প্রতিনিধি একটি ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করেছিল, আপনারা এখানে লেখা পড়া করার পর তো কোন চাকুরী করতে পারবেন না,তাহলে কি করে আপনারা আপনাদের মা বাপ স্ত্রীঅত্যনত ও সন্তানদেরকে দেখা শুনা করবেন ?
ছাত্রটি অত্যন্ত স্বচ্ছন্দ ভাবে উত্তর দিয়েছিল, যিনি সৃস্টি করেছেন তিনিই মৃত্যু পর্যন্ত রুজী দিবেন।
এটাই তো খুব ভাল ভাবেই প্রমান করে যে:
কিভাবে মুসলমান জাতির স্বাধীন চিন্তা শক্তিকে ১৪০০ বছর আগেই ক্রয় করে চিরদিনের তরে আবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে এবং বংশানুক্রমে মুসলমান ঘরে জন্ম লওয়া প্রতিটা নূতন শিশুটিও তার অজান্তে এই খাচার মধ্যে ঢুকে বসে থাকতেছে,তার নূতন কিছু চিন্তা ভাবনা করার সুযোগ থাকতেছেনা বা দরকার ও মনে করতেছেনা।
এই খাচা হতে রক্ষা পাওয়ার কী পথ আছে আমার জানা নাই।
ধন্যবাদ
@আকাশ মালিক, এখানে (তিরমিজী শরীফ,ইবনে মাজা,মুসনাদে আহমদ,আল-মুসতাদরাক) এটা রেফারেন্ছ হয়না ভাই। প্রতিটি বইয়ের অনেকগুলো করে ভলিউম আছে, প্রতিটি ভলিইমে আরও অনেকগুলো করে বই আছে। তার ভিতরও আবার হাজার হাজার হাদিস আছে। সব পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করবেন দয়া করে।
লেখাটি এবং আপনাদের মন্তব্য আমার ভালো লেগেছে। হাসিদের রেফারেন্স জানালে উপকৃত হবো।
ওমর ফারুক লুক্স
কে জানে হয়ত অবচেতন মনে লুকিয়ে থাকা জান্নাত এর লোভ এর পরিনতি এই ধর্ম নিয়ে পড়াশুনা ও গবেষণা । তবে সে যাই হোক না কেন, আজ জান্নাত এর উপর আমার বিন্দুমাত্র লোভ নেই। ইসলামেও আমার কোনো আকর্ষণ নেই। আমি সত্যিকারের মুসলিম কিনা সেটা আমার কাছে আজ গুরুত্ব হারিয়েছে। মুসলিম হওয়ার চাইতে সত্যিকারের মানুষ হওয়া সহজ এবং অধিক কাজের কাজ বলে মনে করি। আজ আমি মানুষের কথা বলি।
উপরের প্যারাটি অনেক ভাল লেগেছে, আসুন আমরা “মানুষের জন্যই সত্যিকার মানুষ হয়ে উঠি”। তাহলে কোন ধর্মই মানব ধর্ম থেকে আমাদের বিচ্যুতি ঘটাতে পারবেনা।
@জিল্লুর রহমান,
এই কথাটা কাকে বা কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলছেন, বলবেন একটু?
@কাজী রহমান, কে জানে হয়ত অবচেতন মনে লুকিয়ে থাকা জান্নাত এর লোভ এর পরিনতি এই ধর্ম নিয়ে পড়াশুনা ও গবেষণা ।
এই কথাটা কাকে বা কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলছেন, বলবেন একটু?
ধন্যবাদ প্রশ্নের জন্য, আমরা যারা অন্ধের মত ধর্ম গ্রন্থগুলোকে বিশ্বাস না করে এর পক্ষে বিপক্ষে যুক্তিতর্ক দেখাচ্ছি, যারা ধর্ম বিশ্লেষণমূলক একটি লেখার জন্য মুক্তমনায় পথ চেয়ে বসে থাকি। আমার মনে হয় তাদের উদ্দেশ্যেই এই উক্তিটি।
@জিল্লুর রহমান,
যারা বিপক্ষে তারা তো এর বিরোধিতা করবার জন্যই পড়েন, তারপর লেখেন বা বলেন, তাই না? তাদের তো জান্নাত বলে কিছুর প্রতি লোভ থাকার কোন কারন নেই।
যারা পক্ষে বলার জন্য পড়ে, লেখে বা বলে; তাদের হুর গেলমান জান্নাতের লোভ আছে বলেই তারা তা করে। কি বলেন?
পক্ষ আর বিপক্ষকে এক করে ফেললে চলবে কেন? :-s
@ সৈকত চৌধুরী,
হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসা ধর্মগুলোকে এক দশকেই খোঁড়া করে দেয়া সম্ভব যদি আমরা ঠিকভাবে এগিয়ে যাই।
আমিও স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। তবে আমি আমার গ্রামের দিকে তাকালে সেই স্বপ্ন ম্লান হয়ে যায়। যেখানে প্রতি বছর নিয়মিতভাবে যাত্রা, বাউল গান, পালা গান ইত্যাদি হত, সেখানে সৌদি পেট্রো ডলারে পাড়ায় পাড়ায় মসজিদ-মাদ্রাসা হয়ে এ সব বন্ধ করা হয়েছে। নিয়মিত জিকির ও ওয়াজ মাহফিল হচ্ছে, হয়তো খুব শীঘ্রই ফতোয়াও শুরু হয়ে যাবে।
বাংলাদেশে কারো সাথে দেখা বা ফোনে কথা হলেই যে হারে সালাম দেয়া ও নামাজ-রোজার কথা জিজ্ঞেস করে, মনে তো হয় ইসলামিক রাষ্ট্র হওয়া সময়ের ব্যাপার।
মধ্য প্রাচ্যের ডলার বন্ধ না হলে পুরু দেশ পাকিস্তান হতে বেশী সময় লাগবে না।
@হেলাল,
বাংলাদেশের অজপাড়াগাঁয়ের চেয়ে উন্নত বিশ্বের অবস্থা আরো বেশি হতাশাজনক। সেখানে প্রতি ব্লকে ব্লকে মসজিদ মোক্তব গড়ে তোলা হয় প্রতিযোগিতা দিয়ে। যে এলাকায় যত বেশি মসজিদ সে এলাকার বাসিন্দারা তত বেশি ঈমানদার। কোন বাংলা স্কুল নেই। অথচ মসজিদের সংখ্যা বাড়ির সংখ্যার চেয়ে বেড়ে যাচ্ছে। মসজিদ নির্মানের জন্য টাকা চেয়ে পত্রিকা ও টিভিতে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। ঈমানদারগণ উৎফুল্লচিত্তে টাকা দিয়ে থাকেন সওয়াব হাসিলের জন্যে। কী অবর্ণনীয় দুঃখ!
ভাল লাগল।
মানুষ স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে নিজের মা-বাবার ধর্মে বিশ্বাস করে, এমনকি মা-বাবা তাদের ধর্মের যে শাখায় বিশ্বাস করে ছেলে-মেয়েরা ঐ শাখায়ই বিশ্বাস করে; এর অন্যথা বিরল। আমার আশ্চর্য লাগে, একজন ধর্মবিশ্বাসী মানুষ কোনোরুপ যাচাই বাছাই না করেই পরম আত্মবিশ্বাসের সাথে তার নিজের ধর্ম যেটি কিনা তিনি তার পরিবার থেকে পেয়েছেন তাকেই একমাত্র সত্য বলে মনে করে।
আকজন ধর্মবিশ্বাসীর মন বিশ্বাসের বিষে পরিপূর্ণ হয়ে থাকে ও হতে বাধ্য। অন্যধর্মের লোকেরা কাফের, নিজ ধর্মের অন্যান্য শাখাগুলো ভুলপথে, নিজেরা ছাড়া বাকিরা যাবে নরকে ইত্যাদি বিষাক্ত বিশ্বাস বজায় রেখে একজন মানুষ অসাম্প্রদায়িক হবে কিভাবে? তবে আশার কথা অনেক ধর্মবিশ্বাসীই ধর্মের সকল কথাকে হুবহু মেনে নিতে চান না।
ইসলামের শান্তির রুপ দেখেন নিচের ভিডিও ফুটেজে-
httpv://youtube.com/watch?v=TCCyK87hH9M
আহমদিয়াদের উপর বিশ্বব্যাপী হামলার চিত্র ও ভিডিও খুজলেই পাবেন। যেটি দিলাম ওটা ওদিক নৃশংস হওয়ায় কিছু অংশ দেখায় নি, পুরোটাও খোঁজলে পেয়ে যাবেন- একদম সাপের মত নিরীহ মানুষকে পিটিয়ে মারার চিত্র। পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নি হত্যার খবর শোনে আমরা অভ্যস্ত।
আমি কোরান পড়ছি ছোটবেলা থেকেই। অনেকগুলো তফসির পড়েছি। কিন্তু যিনি একদিনই কোরান পড়েন নি এরকম অনেককেও দেখি মনে করেন- কোরানে সব জ্ঞান আছে তখন আশ্চর্য হই। জাকির নায়েক বা এরকম কোনো ভন্ড কোরানের আয়াতের মনগড়া ব্যাখ্যা দিলে ইমানদারগণ খুশিতে হাততালি দিতে থাকেন। কিন্তু হায়, একটিবার কেউ কোরান খুলে বা ভাল করে খেয়াল করে বুঝার চেষ্টা করেন না, আসলে ও যা বলছে তা কতটুকু সঠিক।
এ দশকটা আমাদেরকে ধর্মের বিরুদ্ধে ভাল ভাবে ধৈর্য ধরে লড়ে যেতে হবে। হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসা ধর্মগুলোকে এক দশকেই খোঁড়া করে দেয়া সম্ভব যদি আমরা ঠিকভাবে এগিয়ে যাই।
অবাধ তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে এই মানুষ গণহারে ধর্মবিশ্বাসকে ত্যাগ করছে। তার একটা নমুনা-
http://wikiislam.net/wiki/People_Who_Left_Islam
ভাল লাগল