শান্ত জলের সবুজ কচুরিপানার মত সে একটা জীবন ছিল
নির্বিঘ্ন, নিশ্চিন্ত মৃদুমন্দ দুলুনিতে; বিশাল অশত্থের ছায়ায়।
একটু করে বেড়ে উঠতেই বড্ড ঘুরে বেড়ানোর সাধ হলো;
ভাব হলো বেশ; কথা হলো শ্যাওলা আর জলপদ্মের সাথে।
একদিন হঠাৎ গল্প শুনলাম ছটফটে ঝিলমিল পাখিটার কাছে;
অনেক দুরদেশ, উজ্জ্বল শীতের গল্প, আর উদ্ভিন্ন বিদেশীনির।
প্রলোভন আর আনমনে প্রাচীন জলধারাকে করলাম অস্বীকার,
চাপা আভিমানে জলপদ্ম; শ্যাওলা আড়ি নিলো আমার সাথে।
বহুদিন কেটে গেছে তারপর, বেশ অবিরাম একাগ্র বাগ্রতায়;
হীম তাড়াতে পশমী মোটা পোশাকের প্রয়োজনে, ঐ শালহীন।
অশত্থের কথা তো মনেই পড়েনি বিদেশিনীর মোহের আড়ালে,
মনে পড়েনি যে বেড়ানোর নেশায়, কড়া পানীয়ের ঝিমুনিতে।
হলিউড ফুটপাত পানশালায় আমি যেন উদাস তরুণীর অগত্যা,
নতুন বিস্ময়ে দেখলাম যেদিন নির্বিকার কিছু সুন্দরীর পাশকাটা;
সেইদিনই আবার পড়লো মনে শ্যাওলা এবং জলপদ্মের কথা,
বাকি সবটুকু ধোঁয়াটে ঝাপসা হয়ে গেলো অনভিজ্ঞ আবিস্কারে।
রোজ রোজ না হয়, অন্তত প্রতি সপ্তাহে এমনি একটি করে কবিতা প্লিজ- (Y) (F)
৪০টা বছর অতিবাহিত প্রায়, কোনদিনই ভুলতে পারিনি,
শয়নে কিংবা জাগরণে। আমি মাতাল হয়ে মরতে পারি,
মরেও তারে ভুলতে পারিনি, এক মুহুর্তের জন্যেও না
সে আমার দেশ, আমার জন্মভূমি।
@আকাশ মালিক,
কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে…………………
ওদের তো সবাই ঘিরে থাকে দেশে,
আমাদের শুধু আমরা,
শুধুই আমরা
একা
@আকাশ মালিক,
এহ হে আপনার আবেগী মন্তব্যের উত্তরে তো আপনাকে ধন্যবাদ দিতেই ভুলে গিয়েছি। মন ছোঁয়া মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকুন। (D)
কবিতাটি কতটুকু ভালো লেগেছে তা বোধ হয় সবুজ (যে সবুজ অবর্ণনীয়) কচুরিপানা যে জল সহ হাতে তুলে নিয়েছিলো কোন একদিন সেই জানবে।
শান্ত জলের নীরবতার সাথে যার মৌন কথোপকথন হয়েছে সেই জানবে।
শ্যাওলার চরিত্র আর জলপদ্মের হাসির সাথে যার শৈশবের পরিচয় সেই জানবে।
এখন বলব অনেকের মন্তব্য নিয়ে।
প্রথমত –
সংশপ্তকের মন্তব্যটি অ সা ধা র ণ। অনেক কিছু শেখার/বোঝার আছে এতে। এই ধরনীর দেশ অথবা প্রকৃতিকে ওভাবে দেখতে পারলে একই ধরনীর মানুষদেরও ওই দৃষ্টিতে অনায়াসেই দেখা যায়। কত সুখই না হতো/হয় তাতে!
ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কাজী রহমানের –
এটি আরেকটি কবিতা। শুধুই কবিতা। ধন্যবাদ বোধ হয় সংশপ্তকের প্রাপ্য, ওনার মন্তব্যের বদৌলতেই একই কবির আরেকটি কবিতার পাঠক আমরা। 🙂
***প্রকৃতির জন্য ব্যাকুলতা শুধুমাত্র প্রবাসে যারা থাকেন তাদের জন্য সীমিত নয়। ঢাকা শহর একা নয়, যে হারে পুরো দেশে (এবং পৃথিবীতে) প্রকৃতি বিনাশ চলছে, গ্রামকে শহরে পরিনত করার নিষ্ঠুর প্রতিযোগিতা চলছে, কদিন পর নয়, এখন হতেই দেশে বসেই দেশের মানুষেরা গাছের জন্য, সবুজের জন্য হা পিত্যেশ করছেন সামনে আরো করবেন। এর মূল্য চড়া দামে আমাদের সবাইকে দিতে হবে।***
মাহবুব সাইদ মামুনের লিখা –
প্রবাসে দুঃখজনক ভাবে আমরা অনেকেই ওভাবে ভাবি। আসলে দেশের বাহিরে গেলেই যে রুচিশীল হয়ে যায়না কেউ, অথবা কথা বার্তায় সৌন্দর্য চলে আসেনা তার প্রমাণ কিছু কিছু বিরক্তিকর বাঙ্গালী যারা প্রথম পরিচয়ে হাঁড়ির খবর জানতে চাইবেন, নইলে কোন বাঙ্গালীর সূত্রে কোন ভাবে আগে হতে চেনা কিনা, সে তদন্তে ব্যস্ত থাকেন। তাই রুচিগত দিক হতে মিল না হলে সত্যিই একলা বসে গান শোনাই আমরা শ্রেয় ভাবি।
****স্বপন মাঝির উত্তর আর দক্ষিণ পাড়ার প্রতিযোগিতা/প্রতিদ্বন্দ্বিতা জীবনের সব দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এর শেকড় অনেক গভীরে। কারণ – “আমি অঙ্কুরিত হবার আগেই আমার মধ্যে বপন করা হলো প্রতিযোগিতার বীজ”।****
অরণ্যের এ কথায় আমি :lotpot:
*****(হাসি) কত কিছু হয়ে যাচ্ছে কাজী রহমানের এই কবিতাকে কেন্দ্র করে! বেশ লাগছে!*****
@ মাহবুব সাঈদ মামুন,
সিডনি থাকতে তৌহিদি জনতা ও তাবলিগিদের আখেরাতের ঘর-বাড়ি ও সুখ-শান্তি কেনার দাওয়াতের জ্বালায় ছিলাম অতিষ্ঠ। ছোট থাকতে শুনেছিলাম ঘোড়া কামড় দিলে নাকি ছাড়েনা (?) , তেমনি তাবলিগিদের হাতে একবার এরেস্ট হলেও নিস্তার নেয়, তবে নিজেকে হিন্দু হিসেবে পরিচয় দিলে বেশ কাজ হত।
হোবার্টে এসে আহা বাংলা কথা মিস করি। বাংলা মেলা মিস করি। বাঙ্গালী হোটেলের শুটকির ভর্তা, বেগুন পোড়া ভর্তা মিস করি।
@হেলাল,
এখানেই হলো আমাদের জ্বালা আর আকুতি,নিজেরা যে পরিবেশে জন্মগ্রহন করে ভাতে-মাছে-শাক-সব্জি,আলো-বাতাসে বড় হয়েছি তার অভ্যস্থতার কারনে পরবাসী হয়ে সে আবহাওয়ার আমরা সব সময় মিস করি বলে এতো অন্তরবেদনা।
কথা আছে,এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার শ্রেষ্ঠ সময় তার,অথচ আমাদের নষ্ট,ভষ্ঠ রাজনীতি ও মাফিয়া রাজনৈতিক নেতাদের বলির পাঠা হয়ে আমাদের কে পরবাসী হতে হয়। আবার গত ২৫ বছরে ঐসব তরুনের রক্তভেজা পরিশ্রমের টাকা দেশের নষ্ট,ভষ্ঠ রাজনীতির মাফিয়া রাজনৈতিক নেতারাই লুটেপুটে খেয়ে উজাড় করেছে এবং ভবিষৎতেও করবে। আমরা দেশের রেমিটেন্স বাড়াই আর হালুয়া-শিন্নি খায় শকুনের দল। :-[ :-[ :-[ :-Y :-Y অথচ আজো ঐ পোঁড়া দেশের সামান্যতম জনগনতন্ত্রের লেবাস উম্মোচিত হয়নি।আমি নিশ্চিত বলতে পারি যদি মিনিমাম গনতন্ত্রের ভিত্তি আমাদের তৈরী হতো তাহলে হাজার হাজার বাঙালী ঘরমুখী হত,বিশেষ করে পরবাসের প্রথম প্রজন্মের লোকজন দেশে ফেরত যেত।
জয় হউক জনগনতন্ত্রের।
@ স্বপন মাঝি,
‘দেশের অচেনা মানুষ পেলেও
বুকে জড়িয়ে ধরি।
আর ভাবি,
এ গ্রহ ছেড়ে যদি অন্য কোন গ্রহে চলে যাই কোনদিন
তবে কি পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ হয়ে উঠবে
উত্তর পাড়ার কালো মুখ?’
আহা আমার বেলায় নির্মম সত্য হয়ে উঠে কথা গুলো। বেশ কয়েক মাস যাবত সিডনি ছেড়ে হোবার্টে এসে আস্তানা গেড়েছি। এ দীর্ঘ দিনে মাত্র একজন বাঙ্গালী প্রিয় মুখ চেনা হয়েছে এখানে।
আমি আকুল হয়ে চেয়ে দেখি কাউকে বাঙ্গালীর মত মনে হলে।
কাজীদা’র কবিতাও মনে দোলা দিয়ে যায়।
@হেলাল,
আর আমি বাঙালী দেখলে ভয়ে পালাই,কারন নতুন কোন লোকের সাথে দেখা হলে ভূমিকা ছাড়াই জিজ্ঞেস করে বসে একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়াদি মনে হয় যেন সে আমার চৌদ্দজনমের আত্বীয় বা বন্ধু।প্রথম ১০ বছর আপনার মতো ঐরকম আকুল হয়ে থাকতাম এবং অনেক তিত্য অভিজ্ঞতা নিজের ঝোলায় আছে বলে এখন আর তাদের ধারে-কাছেও ঘেঁসতে চেষ্ঠা করি না।তার চেয়ে বরং একলা মৌসুমী ভৌমিকের গান শুনা অনেক আরামদায়ক বলে মনে হয়।
আপনি দেশে চলে আসলে আবার তুষার, হীম অথবা ডাঁশা তরুণীর স্মৃতি কাতরতায় ভুগবেন না? নদীর এপারই কী সবসময় সুন্দর? এমনি এমনি জিজ্ঞেস করছি আর কী 🙂
কবিতাটা সুন্দর!
@টেকি সাফি,
কে জানে? ভূগতেও পারি। মানুষের আচরণ বড়ই বিচিত্র।
বেশ কদিন পর দেখে ভালো লাগলো।
(F)
@প্রতিফলন,
আচ্ছা আপনার জন্যও (F) তবে এইটা কিন্তু ওরিয়েন্টাল না, খাঁটি বাংলাদেশী লাল গোলাপ।
দারুণ (Y)
তবে আমার মত যারা ঢাকা শহরে বড় হয়েছে, তারা হয়ত প্রবাসে এই ব্যাকুলতা অনুভব করবে না।
@পৃথিবী,
এই মাত্র ক বছর আগেও ঢাকার চারপাশে সবটাই ছিলো গ্রাম। দু এক মাইল হাঁটলেই পাওয়া যেত মেঠোপথ। অদ্ভূত সুন্দর সব দৃশ্য। ধান শর্ষের ক্ষেত, পাখীদের উড়াউড়ি, কখনো বিষণ্ণ বিকেল, প্রনবন্ত মানুষ আর মাটির গন্ধ। শহরের খুব কাছে ছিলো সেসব। চাইলেই হেঁটে যাওয়া। অসংখ্যবার গিয়েছি, রেললাইন পেরিয়ে প্রথম একটি গ্রাম, আঁকাবাঁকা মেঠো পথ। দানবযানের চলার বড় রাস্তাটা পেরোলেই, বড় আরও কটা গ্রাম, মনকাড়া নাম তাঁর একটার, নিশ্চিন্তপূর। পাড় উঁচু করা কাঁঠাল বাগান দিয়ে ঘেরা শান্ত পুকুর। অশত্থের ছায়ায়। দু চার দল কচূরী পানাও ছিলো ওটাতে। খুব প্রিয় পালাবার যায়গা ছিল ওটা আমার। নির্মলেন্দু গুনের মত বর্ষা আমারও কিন্তু খুব প্রিয়, অথচ জন্মেছি রৌদ্রদগ্ধ ঢাকায়। বেড়েও উঠেছি সেখানে। এখন তা হলে –
এই কথাটার কি হবে? :-s
আমি সেই দ্বীপে আর যেতে পারি না।
@ফরিদ আহমেদ,
ভীষণ অপরাধ বোধ হচ্ছে। বিষণ্ণ লাগছে।
@কাজী রহমান,
বিষন্নতা একটি রোগ। লারগাকটিক খান। সিবা-গেইগি।
@ফরিদ আহমেদ,
সংগে কি ক্যামাড্রিনও খাবো, অর্ধেকটা, বলছি-রোগী :))
খেতে পারেন পুরোটাই, হলে স্বাস্থ্যের উপযোগী।
আহা! কি অপূর্ব মিল দেখা যাচ্ছে আমাদের নবীজির সাথে। উনিও রাস্তায় এক ডাঁশা যৌনাবেদনময়ী তরুণী দেখে কাতর হয়ে গেলেন–তড়িঘড়ি করে গৃহে ফিরলেন।
সেই জন্যেই ত আপনিও নবী হচ্ছেন!
@আবুল কাশেম,
হা হা হা হা…… কাশেম ভাই, মুক্তি নাই মুক্তি নাই, আপনার হাত থেকে নবীর কোন মুক্তি নাই 😀
@আবুল কাশেম,
মোহাম্মদকে নিয়ে আপনার মোহাচ্ছন্নতার বিষয়টা অনেকদিন ধরেই জ্ঞাত। প্রয়োজনে এবং অপ্রয়োজনে সব জায়গাতেই আপনি মোহাম্মদকে টেনে নিয়ে আসেন, সেটাও জানি। আপনার এই মন্তব্য পড়ার আগেই অনুমান করে নিয়েছিলাম যে কোনো না কোনোভাবে মোহাম্মদকে এখানে পাওয়া যাবেই। পড়ার পরে দেখলাম অনুমান শতভাগ সঠিক। কাজী ভাইয়ের অসাধারণ এই স্মৃতিকাতরতাময় কবিতাটাতে বেচারা মোহাম্মদকে রেহাই দিলেও পারতেন। এই সৌন্দর্যমণ্ডিত স্মৃতিবিধুরতায় সে ঠিক খাপ খায় না।
@ফরিদ আহমেদ,
থাক থাক, কাশেম ভাই এমনি ঠাট্টা করেছেন। ঠিক না কাশেম ভাই। এইবার আপনার বাল্যপ্রেম নিয়া একটা স্মৃতিময় রগরগে লেখা ছাড়েন তো কাশেম ভাই, সবাইরে দেখায়া দেন আপনিও পারেন। এক্কেবারে ফাটায়া ফেলেন (I)
@ফরিদ আহমেদ,
(Y) (Y)
@ফরিদ আহমেদ,
মোহাম্মদ যে কবর থেকে আমাদের জীবন নিয়ন্ত্রণ করছেন তা আস্বীকার করার উপায় নাই।
যাই হোক, অপরাধ করেছি–কবি কাজি রহমানের কাছে মাফ চেয়ে নিলাম। আপনার কাছেও।
ভবিষ্যতে আর মন্তব্য করব না।
@আবুল কাশেম,
আমাদের সবার নয়, কারো কারো। । মোহাম্মদের মতন এরকম নিয়ন্ত্রণ অনেক ট্যাশগরুও করছে। সেজন্য সবকিছুর মধ্যে ট্যাশগরুকে টেনে আনি না আমরা।
কাজী ভাইয়ের কাছে কী করেছেন জানি না। তবে আমার কাছে আপনি কোনো অপরাধ করেন নি। মোহাম্মদকে এখানে টেনে না আনলে ভালো করতেন, এটুকু শুধু বলেছি আমি। আপনার টেনে আনার পিছনে যুক্তি থাকলে আপনি বলতে পারেন। তার বদলে অপরাধ করেছি। সেজন্য মাফ চাচ্ছি। এগুলো একটু বেশি নাটকীয় হয়ে যাচ্ছে।
আমার এই মন্তব্যের কারণে এমন একটা চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দুঃখ পেলাম। আশা করছি যে, এটা একটা অভিমানী কথা হিসাবেই থাকবে। সিদ্ধান্ত হিসাবে নয়।
@ফরিদ আহমেদ,
না, অভিমান নয়।
আমি অপ্রাসঙিক মন্তব্য করেছি–যা আমার করা উচিত ছিল না। এই ব্যাপারটা আমি স্বীকার করে নিয়েছি।
তাই বলতে চাচ্ছিলাম যে আমি ঐ ধরণের অপ্রাসঙিক মন্তব্য করব না। এই আর কি।
মনে হচ্ছে আপনি ঠিক বুঝতে পারেন নাই অথবা আমি ঠিক মত বুঝাতে পারি নাই।
আসলে আমি কবি কাজী রহমানকে ঠাট্টাচ্ছলে ঐ মন্তব্য করেছিলাম–সেটা উনি নিজেও বুঝেন।
@আবুল কাশেম,
মনটা অনেক ভালো করে দিয়েছেন কাশেম ভাই। থ্যাঙ্কইউ (D)
তবে, আমি কিন্তু আপনাদের সময়ের প্রেম কাহিনী স্টাইল সত্যিই শুনতে চাই। এখনকার ছেলেমেয়েরা দেখুক, আমরাও দেখি ওটা কেমন ছিলো :))
@কাজী রহমান,
ডাঁশা তরুণীর সাথে ধাক্কা মনে হয় আপনাকে বেশ ই………য়ের মত ইয়ে………ইয়ে্……… মানে রোমান্টিক করে তুলেছে 😀
@রাজেশ তালুকদার,
হেঁহ হেঁ আপনি আবার পাত্থরের লগে খাক্কা খান, বুঝবেন কেমনে মজা কোথায়? :))
সবুজ কচুরীপানা, শুভ্র তুষার কিংবা কান্তার মরু – এ সবই একই ধরণীর দেহের নানান অঙ্গের নানান রূপ।
ধরণীর সন্তানেরা তাদের মাতৃদেহের নানান অঞ্চলে বসবাস করলেও মা ধরনী থেকে তারা পৃথক হয়ে যায় না।
ধরনীতে জন্ম এবং ধরনীতেই মৃত্যু। নিজ মাতৃগৃহ ধরনীতে তাই পরবাস বলে কিছু নেই এবং এই সরল স্বীকারোক্তিতেই লুকিয়ে রয়েছে ভাবনার সত্যিকারের মুক্তি।
@সংশপ্তক,
হা ডু ডু খেলা হবে —
উত্তর আর দক্ষিণ পাড়ায়।
উত্তর পাড়ার পরাজয়ের
কালো মুখ আঁকতে আঁকতে ,
ঘুম এলো না সারারাত দু চোখে।
পাড়া নয় শহরে এসে,
উত্তর পাড়ার কালো মুখ দেখে
আমার সেকি আনন্দ !
তারপর
শহর নয় দেশ নয়,
প্রবাসে,
উত্তর পাড়ার কালো মুখ খুঁজি,
শহরের চেনা মুখ খুঁজি।
দেশের অচেনা মানুষ পেলেও
বুকে জড়িয়ে ধরি।
আর ভাবি,
এ গ্রহ ছেড়ে যদি অন্য কোন গ্রহে চলে যাই কোনদিন
তবে কি পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ হয়ে উঠবে
উত্তর পাড়ার কালো মুখ?
ছন্দ লয়হীন কিছু ভাবনা।
@স্বপন মাঝি,
বেলা শেষে আমে দুধে মিশে যাবে আর আঁটি গড়াগড়ি খাবে
সেই মহাজাগতিক মহাবিন্দুতে যার সম্প্রসারিত রূপ আমাদের এই মহাবিশ্ব।
অতএব, জয় হোক মহাজাগতিক ভালোবাসার।
@সংশপ্তক,
তথাস্তু।
আগে তো জাগতিক, তারপর না-হয় মহাজাগতিক। সিঁড়ি ভেঙে পার হ’তে গেলে, পা পিছলে, হাড়গোড় ভেঙে না যায়।
@সংশপ্তক,
ধূলো মাখতে চাই যদি শুভ্র তুষারে?
মন যদি চায় কান্তার মরুতে বর্ষার সাথে ইলিশ ভাজা খেতে?
শাপলা শালুক যদি খুঁজি অশত্থের ছায়ায়, সবুজ কচুরীপানার মাঝে?
বাতায়ন পাশে যদি মা’র নকশী কাঁথা গায়ে মুড়ে কদমের ভিজে যাওয়া দেখতে চাই?
নস্টালজিয়ার দুঃখবিলাস যদি আপেক্ষিকতায় পায় অগ্রাধিকার, কি হবে তখন? বন্ধু, কি হবে তখন?
:-s
আজকাল মনে হয় মুক্তমনায় লেখকদের পরবাসের বিক্ষিপ্ত করুন জ্বালা-যন্ত্রণাময় একঘেঁয়েমীপূর্ণ জীবনের কথা বার বার তাদের লেখায় উঠে আসছে। হয়ত অনেকেই পরবাসের কারনে দেশে অনেকদিন যান না,তাই নিজ দেশের জন্য এক নষ্টালজিয়ায় ভোগেন এবং ভোগাটাই স্বাভাবিক।(U)
বলতে গেলে আপনার কবিতার মত আমিই আমার ছেলেবেলার গাঁ-গেরামের কথা,ভোর বেলার চুড়ই পাখীর টুনটুনি আওয়াজে ঘুম ভাংগা,শীতের সকালে উঠে আগুনে আগুন পোয়ানো,খেজুরের রস পান করা,জৈষ্ঠ্য-বৈশাখ-ভাদ্র মাসে বেল-তাল-আম কুড়ানোর কথা ,ঝিল-ডোবায় সবুজ কচকচে কচুরিপানার সবুজ সমারোহ অবলোকন করা,বিকেল বেলা ছেলেবেলার সাথীদের সাথে হা-ডু-ডু,কানামাছি,কৈটডান্ডা,গোল্লাছোট আরো কতরকমের খেলার কথা মনে হয় যা আর কোনদিনই এজীবনে ফিরে আসবে না তা ভেবে আমিও নষ্টালজিয়ায় ভূগি, যা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
কাজী রহমানের কবিতার আজকে আর প্রশংসা করব না শুধু বলব চালিয়ে যান অনবরত।
(F)
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
লেখাটাকে পোস্ট করবার আগে একটু দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম। আপনাদের উৎসাহ যোগানো মন্তব্য দেখে অনেক ভালো লাগছে। একটু নস্টালজিক হতে খারাপ লাগেনা তেমন, তাই না? :))
শ্যাওলা আর শাপলার শান্ত স্নিগ্ধ ঝিলের মতই সুন্দর কবিতা!
@লাইজু নাহার,
মন্তব্যে মন জুড়ালো, আপনার জন্য (C)
কখনো কখনো কোন কোন লেখা পড়ে আর কিছু বলতে ইচ্ছে করে না। চুপচাপ, চুপচাপ, নিজের ভেতরে অনুভূত কান্না, হাহাকারটুকু আর কারো সাথে ভাগ করে নিতে মন চায় না বা করা যায় না।
এ এক অন্য রকম অনুভূতিজাত কবিতা এবং কবিকেও নতুনভাবে আবিস্কার করা।
@স্বপন মাঝি,
আপনার মন্তব্য মন ছুঁয়েছে বন্ধু। মাঝে মাঝে ভাবি, কষ্ট করে কষ্ট কেনার কি দরকার? কিন্তু আনন্দকে অনুভব করতে অন্তত তুলনার জন্য ওটা থাকা দরকার। কি বলেন?
ভালো থাকুন, খুব আনন্দে থাকুন। (C)
খুব খুব খুবই ভালো লাগলো কবিতাটি। এতই ভালো লাগলো যে বিশেষ কোন বিশেষণ ব্যবহার না করে এক শব্দ তিনবার…
তবে একটি শব্দ >>> [ডাঁশা (?) তরুণী]
সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের কিনা, তাই নারীর প্রতি কিছু কিছু ব্যবহ্রত শব্দ খুব কানে লাগে।
@ছিন্ন পাতা,
কিছু কিছু ছেলে অকপট, কেউ কে বা আড়ালবাদী। ডাঁশা শব্দটি কাব্যিক করে দেখলে উদ্ভিন্ন বিদেশীনিকে দেখা যাবে বৈকি, অতটা খারাপ লাগবে না মনে হয়। আমি কিন্তু সৌন্দর্যের প্রশংসা করেছি মাত্র।
শুভেচ্ছার জন্য অন-নেক ধন্যবাদ। (F)
পরবাসের দুঃখবোধ নিয়ে লেখাটা বেশ প্রাঞ্জল এবং মনকে নাড়া দেয়।
@শাখা নির্ভানা,
ভুক্তভোগীরা মনের দিক থেকে প্রবাসে যে কত মন-অভাবী, খুব নজর করে না দেখলে দূর থেকে দেখা মুশকিল।
সুখের জন্য মাঝে মাঝে একটু নস্টালজিক হবার বিলাসিতা করা যায় বোধহয়, কি বলেন? (D)
দারুন হয়েছে। (F)
ভাবনায় অবশ্য বারবার জীবনানন্দ চলে আসছিলেন, সে যাই হোক কাজী রহমান নামটা ভালোভাবে গেঁথে নিয়েছি স্মৃতিতে। :))
@পাপিয়া চৌধুরী,
আপনার ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের হালনাগাদ’ লেখাটা আর ওতে দেওয়া মন্তব্যগুলো পড়লাম। খুব কাজের কাজ হয়েছে ওখানে। তা নতুন কিছু লেখা দিন, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রটিতে কিছু আলোচনা চলুক, কি বলেন? অন্য কিছু নিয়েই লিখুন নাহয়।
মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
@কাজী রহমান,
ধন্যবাদ উৎসাহ দেওয়ার জন্যে। আমিও ভাবছি লেখালেখি আবার শুরু করার কথা। বিষয়ের তো পৃথিবীতে অভাব নেই। খালি ভেবে ভেবেই দিন শেষ :)) লেখা আর হয়ে উঠে না।
পাথরে পাথরে ঘর্ষণে আগুন জ্বলার মত করে ধাক্কা ধাক্কিতে মোহ কাতরতার জ্বলাটা কি আরো বাড়লো? :))
প্রকৃতি প্রেমের ঘ্রাণ সুন্দরভাবে ছড়িয়ে পড়েছে আপনার কবিতায়।
@রাজেশ তালুকদার,
বাড়লো মানে, জ্বলে যাচ্ছে রে ভাই। উপেক্ষা সইবার যে কি জ্বালা………বুঝবেন। ইয়ে মানে, ওই মধুর মোলায়েম ধাক্কা ধাক্কিতে পাথরের স্পর্শ পেলেন কি করে? অরনামেন্টের পাথর নাকি? এত কিছু থাকতে শুধূ ওইটাই লাগলো? 😀
রমণীর কাছে মাতৃভূমির পরাজয়?? 🙁 🙁
চলুন দেখি সামনে কি হয়…
হা হা হা! জানতাম এই হবে শেষটায়
ফিরতেই হবে এই ছাপোষা দেশটায়! 🙂 🙂
@অরণ্য,
কাজী রহমানের কবিতায় শ্যাওলা আর জলপদ্মের সাথে ভাবের কথা পড়ে আপ্লুত হয়ে, পরে পরবাসের দুঃখবোধ নিয়ে যখন মন্তব্যের দিকে নামলাম তখন পেলাম আপনার পংক্তি
—-
এখন বলতে হচ্ছে
‘সোনার হাতে সোনার কাঁকন। কে কার অলংকার?’
কারটা নিয়ে কথা বলব? কাজী রহমানের কবিত্বের না আপনার মন্তব্যের!
শেষে জীবনানন্দকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য কাজী সাহেবকেই এমন চমৎকার একটি কবিতার জন্য ধন্যবাদ দিচ্ছি।
কবিতাটি বড্ড ভাল হয়েছে।
@গীতা দাস,
অবচেতনে নিশ্চয় ছিলো প্রিয় জীবনানন্দ। লেখার সময় জীবনানন্দ মোটেও মাথায় ছিলোনা কিন্তু।
আপনি এত সুন্দর করে অরন্য আর আমাকে কমপ্লিমেন্ট করেছেন, দেখে মন জুড়িয়ে গেলো।
ভালো থাকুন (F)
@গীতা দাস,
বিশেষণ? সে তো রূপের ভূষণ
যেখানে আছে রূপ
সেখানেই তাঁর অন্বেষণ!
অসম্ভব সুন্দর কিছু লাইন পড়ার পর নিজের অজান্তেই দু’চার লাইন মাথায় এসে যায়। ভালো কবিতার এমনই গুন। কাজী রহমানের সূর্যালোকে আমি তো ২৫ ওয়াটের ফিলিপস বাতি মাত্র!
@অরণ্য,
😀 😀 :hahahee:
প্রাণ খুলে হাসলাম। চমৎকার দু’টি লাইন। (Y)
@পাপিয়া চৌধুরী,
প্রাণ খুলে হাসুন এবং কবিতাকে ভালবাসুন।
@অরণ্য,
হা হা হা আমি জানি ছন্দে ছন্দে উত্তর দেওয়া আপনার খুব পছন্দ। দোষ তো স্বীকার করেই নিয়েছি। শাস্তিও তাই মেনে নেব। এত মজার দুটো লাইন লিখে তো হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন। :))
@কাজী রহমান,
ধন্যবাদ আপনাকে, দু’লাইন কবিতা(?) লেখার ক্ষেত্র তৈরি করে দেবার জন্য। আসলে সুন্দর কবিতা বলেই সুন্দর মন্তব্য। আপনার কবিতার নীল সমুদ্রে আমার এ দুটো লাইন ভেসে যাওয়া নীলকণ্ঠ ফুল মাত্র। সমুদ্রের নিলের কাছে যা নিতান্তই মলিন।
@অরণ্য,
মার-রা গেছি, বিনয় মন্তব্যবর্ষণে আমি শ্যাশ ( বিব্রত বোধ করছি বটে, কিন্তু মনে মনে আবার ঠিকই দাঁত ক্যালাচ্ছি, কি বৈপরীত্য, এবার ক্ষ্যান্ত দ্যান প্লিজ )
@কাজী রহমান,
আর একটু বলি?? :))
হঠাৎ মনে জাগা বি্রররররাট প্রশ্নটা না করে পারছি না। 🙁
জীবনানন্দ পরবর্তী প্রায় সব কবিরাই বাংলাদেশ নিয়ে কবিতা লিখলে বিশাল বিরাট অশ্বত্থের কথা লিখে কান?? সবার বাড়িতেই কি অশ্বত্থ গাছ থাকে নাকি?? বেশি হলে বট বা পাকুড় গাছ থাকা সম্ভব। তাও দশ গ্রাম মিলাইয়া 😛 ।
মাঝে মাঝে আমার কি মনে হয় জানেন? মনে হয়, বাংলাদেশ মানেই প্রকাণ্ড এক অশ্বত্থ গাছ। আর তাঁর ঠিক নিচেই বাঁশি নিয়া রাখাল ছেলে বইসা আছে!! (H)
@অরণ্য,
আপনার হিসেবে তো নক্ষত্রে নক্ষত্রে তাহলে সব বাঙ্গালী লেখকদের লেখা সয়লাব হয়ে যেত। তা হয়েছে কি? জীবনানন্দকে নক্ষত্র ছাড়া ভাবা যায়? যত দোষ; অশ্বত্থ ঘোষ?
বাংলাতে জীবনানন্দ পূর্ব ও পরবর্তী আরো যে অনেক অনেক সফল কবি সাহিত্যিক লেখক রয়েছে, তাদের প্রভাব কি কোথাও পড়ছে না?
অন্তত ৮০ পর্যন্ত ঢাকার ভেতর আর আশপাশটাতে গর্ব করবার মত গাছ গাছালি ছিল। পুরোনো ঢাকার যে এলাকাটাতে আমি বড় হয়েছি ওখানে প্রতিটি বাড়ি ছিল ছোট বড় অনেক গাছ। নতুন ঢাকাও খুব একটা কম যেত না।
@কাজী রহমান,
প্রভাব নয় অনুপ্রেরণা নয়
নয় অনুসরণ অথবা অন্ধ অনুকরণ
শুধু জানতে ইচ্ছে হয়
কেন অশ্বত্থেই জুড়ায় কবির মন!
কত তরু কত লতা
ভরে রাখে এই বাংলার পথ
লেখা হয় কত কবিতা
কেন তব সকলের শ্রেয় অশ্বত্থ!
……
অশ্বত্থ, তুমি কি রূপে-গুণে মহীয়ান?
না কি শব্দ-অশ্বত্থে মহান?
অথবা দুজনে পরিপূরক স্বজন!
…
এ সব সাধারণ প্রশ্নই জানতে চেয়েছিলাম,ভাই, কবি কাজী রহমান!!
@অরণ্য,
বুঝেছি, আপনার ছন্দব্যাঙ্ক এক্কেবারে টইটম্বুর। এইবার একটা লেখা ছাড়েন, পোস্ট দেন। দেখি।