মমতা ব্যানার্জি এই মুহুর্তে ভারতের সব থেকে বড় জনপ্রিয় নেত্রী-আর কোন রাজনৈতিক নেতার পেছনে এত জনসমর্থন নেই। কিন্ত এই জনসমর্থনের ভিত্তি কি-এর জন্যে পশ্চিম বঙ্গ কি খেসারত দিয়েছে এবং ভারত বর্ষ কি কি দিতে চলেছে সেইসব অপ্রিয় প্রশ্ন প্রবল মিডিয়া জোয়ারে ভেসে গেছে।
সেই ফর্দ বাদ দিয়ে বর্তমানে আসা যাক। মঙ্গলবার মনমোহন সিংহের বাংলাদেশ সফর শুরু হচ্ছে। বহুদিন থেকে ফেলে রাখা দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি নিয়ে সেখানে চুক্তি সাক্ষর করার কথা। এর মধ্যে তিস্তা এবং ফেনীর জল বন্টন চুক্তিও আছে। চুক্তির খসরা দীপুমনির কালকের বক্তব্য অনুযায়ী শেষ। অর্থাৎ দীর্ঘদিনের তিক্ততার আঁধার শেষ করে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের এক নতুন সূর্যের উদয় হতে পারত মঙ্গলবার।
আপাতত সেসব আশা সেগুড়ে বালি। কয়েক ঘন্টা আগে মমতা ঘোষনা করেছেন তিনি মনমোহনের সফর সঙ্গী হচ্ছেন না। মনমোহনের সাথে ভারতের আরো ৫ মুখ্যমন্ত্রী আসার কথা-কারন এই সব চুক্তির সাথে পশ্চিম বঙ্গ, আসাম, মিজোরম ত্রিপুরা ইত্যাদি রাজ্যও জড়িত। তারা একমত না হলে মনমোহন চুক্তির বয়ান ঠিক করতে পারেন না-সেক্ষেত্রে পরবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেস এই সব রাজ্যে বাজে ফল করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মতি ছারা জলবন্টন চুক্তি সম্ভব না। উচিত ও না।
এর মধ্যে আসাম নিয়ে চিন্তা নেই-ওটা কংগ্রেস শাসিত রাজ্য-তরুন গগৈ দিল্লীর ইয়েস ম্যান-সুতরাং সেখান থেকে বিরোধিতা আসার প্রশ্ন নেই। ত্রিপুরাতে বাম সরকার নীতিগত ভাবে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর পক্ষে। বিরোধিতা সেখান থেকেও প্রত্যাশিত না। মমতাও যাবেন বলে ঠিক ছিল-প্রধানমন্ত্রীর সেক্রেটারী, তিস্তার জলবন্টন চুক্তিটির বয়ানের জন্যে বেশ কিছু দিন কোলকাতায় ছিলেন। তাতে মমতার সায় ছিল। মমতা মঙ্গলবার যাচ্ছেন-এমনটা ঠিকই ছিল।
কয়েক ঘন্টার আগের খবর, মমতা চুক্তির বয়ানে অসম্মতি প্রকাশ করেছেন। তাকে যা বলা হয়েছিল, চুক্তি নাকি সেই মত হয় নি। স্টার আনন্দ খবর দিচ্ছে মমতা চেয়েছিলেন বাংলাদেশকে সর্বাধিক ২৫,০০০ কিউসেক জল দেওয়ার কথা। সেখানে নাকি চুক্তি অনুযায়ী ৩০,০০-৪০,০০০ কিউসেক জল দিতে হতে পারে। আমার পাটিগণিত মিলিল না-তিস্তাতে যতদূর জানি ২৫,০০০ কিউসেক জলই থাকে না-গড় প্রবাহ ১২,০০০ কিউসেকের। সেখানে এই নাম্বারগুলো কে পেল, কোথা হইতে পেল জানি না। বাংলাদেশ বা ভারতের কোন মিডিয়ার কাছে চুক্তির কোন খসরা নেই! এ চুক্তি নিয়ে কোন দেশেই কোন পাবলিক ডিবেট হল না। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর দুই সচিব আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং পাঁচটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে ঠিক হয়েছে এই চুক্তির বয়ান। দুই দেশের জনগণই অন্ধকারে।
এবার মমতা বেঁকে বসায়-মনে হচ্ছে গোটা সফর আর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সব দস্তানা এখন বিশ বাঁও জলে। মমতা জানিয়েছেন এই চুক্তি পশ্চিম বঙ্গের স্বার্থ বিরোধি। তাই তিনি যাবেন না। কেন স্বার্থ বিরোধি তার কোন ব্যখ্যা নেই। না গিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন! কি অদ্ভুত! যদি ব্যপারটার বিরোধিই তিনি হোন-মনমোহনকে জানালেই হল-তিনি মানছেন না। আবার খসড়া হোক। এই ধরনের নাটক কেন? আমি অবাক নই-আসলে এই ধরনের নাটক না করলে-মিডিয়াতে প্রমান হবে না তিনি দেশপ্রেমী রাজনীতিবিদ। মিডিয়া ম্যানুপুলেশনে মমতা ১০০ তে ১০০ পাবেন-এই ভাবেই তিনি আজ জননেত্রী।
এই ভদ্রমহিলা অবশ্য এমনই নাটক করেন। যেহেতু বাংলার মিডিয়া সম্পূর্ন মমতাময়ী-তার দেশপ্রেমের জন্যে সবাই দুহাত তুলে নাচবে। চারিদিকে মমত বন্দনায় ভরে উঠবে। এই লেখার জন্যে তৃণমূলি এবং দিদি বন্দনায় নিবেদিত প্রাণ ভাইদের গালি খেতে হবে আমাকে।
কিন্ত ক্ষতি হবে বাংলাদেশের। এই জল বন্টন চুক্তিগুলি বাংলাদেশের ভীষন ভাবে দরকার। দীপুমনি সহ হাসিনা সরকার দীর্ঘদিন চেষ্টা করছেন, ভারতের সাথে এই বিবাদ্গুলি মিটিয়ে নিতে। সব কিছু যখন হয়ে গেছে, তখনই ইন্দ্রপতন ঘটালেন মমতা।
মমতা পশ্চিম বঙ্গের স্বার্থ অবশ্যই দেখবেন-কিন্ত বাংলাদেশের মতন প্রতিবেশীরা জলের অভাবে কিভাবে ভুগছেন, সেটা যদি না দেখেন-তাহলে বিশাল ভুল করছেন। প্রতিবেশীর বাড়িতে আগাছা জন্মালে, সেটা নিজের বাগানেও আসে। উনি নিশ্চয় জানেন ভারত বিরোধিতা হচ্ছে বাংলাদেশের মৌলবাদি শক্তি মূল বারুদ। আর সেই বারুদের মসলা আসে এই জল বন্টন চুক্তিগুলো অমীমাংসীত থাকায়।
ভারত বিগত দুই দশকে বাংলাদেশের স্বার্থ দেখতে ব্যর্থ হয়েছে। জল বন্টন চুক্তি সহ বাকী যা কিছু বাংলাদেশীরা ভারতের কাছ থেকে সুবিচার আশা করে-সেটা হাসিনা সরকারের দীর্ঘ চেষ্টাতে প্রায় মিটতে চলেছে। বাংলাদেশের জন্যে মনমোহনের সফর এবং সেই সফরে এই জলচুক্তিগুলি সার্থক হওয়া জরুরী।
এটা কি মমতা বোঝেন?
মনে হয় না বোঝেন। তার কাছে রাজনৈতিক জনপ্রিয়তাই শেষ এবং আসল কথা। এতদিন আমরা ভুগেছি। এবার মনে হচ্ছে বাংলাদেশীদের পালা।
এর মধ্যে তিনি যদি বোঝেন এই চুক্তির গুরুত্ব ত ভাল-নইলে এমন নাটক করে, বাংলাদেশের কাছে নিজেদের লজ্জা বাড়িয়ে লাভ নেই।
বিপ্লব পাল,
লেখাটা ফেস বুকে নিচ্ছি!
মমতা স্ট্যান্ট খোলাসা করার জন্য বিপ্লবদা’কে উত্তম/ জাঁঝা। এখন দেখা যাক, কোথাকার জল (তিস্তার নয়), কোথায় গড়ায়! 😕
@ফরিদ আহমেদ,
আপনাকে স্যালুট!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
ফাটাফাটি লেখা। মনের কথাগুলা লেখসেন্ রে ভাই।।। তবে এদের লজ্জা নাই, এরাম হাজার লিখা লিখলেও কিছু হবে বলে মনে হয়না।
মমতা এদ্দিকে খাঁটি সত্য কথা বলেছেন। সেটা হচ্ছে তিস্তাতে জলই নেই-চুক্তিটা কি হাওয়াতে হবে?
এই ব্যাপারটা আমি আমার লেখাতে প্রথমেই বলেছিলাম। এদ্দিন বাদে তিনি বুঝেছেন, এসব চুক্তি ফুক্তি দিল্লী ঢাকার রাজনীতি। তিস্তা প্রকল্পের খবর নিয়ে তিনি জেনেছেন তিস্তার জল ও গঙ্গার মতন উজানেই লোপাট-ফিডার ক্যানেলে জল নেই।
এটা ঠিক -তিস্তাতে জল ফেরাতে কর্মসূচী নিতে হবে আগে।
পদ্মা জল বন্টন চুক্তি করে যেমন পদ্মা বাঁচানো যায় নি। তিস্তা চুক্তি করেও তিস্তা বাঁচানো যাবে না-হাসিনার গদি অবশ্য বাঁচলে বাঁচবে। তিস্তা বাঁচবে না। কারন উজানে জল তোলা হচ্ছে এত বেশী চুক্তি যায় হোক না কেন, জল বাংলাদেশে পৌঁছাবেই না। যেমন পদ্মায় হয়েছে।
শেখ হাসিনা, মনমোহন এরা এই সব চুক্তি নাটক রদ করে, য এটা করা উচিত সেটা হচ্ছে দেশের জন্যে আরো বেশী বৃষ্টির জল ধরতে পারে এমন ক্যানাল বানাক। নদী রাজনীতি করে লাভ নেই। ক্যানাল আরো তৈরী হোক।
@বিপ্লব পাল,
মমতাকে ইস্যু করে বাংলাদেশী কিছু ছেলেপিলে ভারতীয় হাইকমিশনের ওয়েবসাইট হ্যাক করেছিলো। (খবর এখানে), ফেসবুকে আবার কেউ কেউ এটা নিয়ে প্রচারণার রাজনীতি করে বেড়াচ্ছিল। সবই আসলে রাজনীতির খেলা।
আসলেই তিস্তাতে জলই নেই। জল কিভাবে বাড়ানো যায় সেটাই দেখা উচিৎ আগে। অথচ সেটা নিয়েই কারো মাথাব্যাথা নেই, না এপাড়ে না ওপাড়ে।
@অভিজিৎ,
1. না, হ্যাকিং টাও ফেক। জাস্ট এই চ টি এম এল কপি পেস্ট মেরেছে। লিংক ক্লিক করলে দেখবে পিডিএফ নেই। মানে ফেক হ্যাকিং করে চেঁচাচ্ছে।
২। পদ্মা, তিস্তা সব এক কেস। এত লোকের চাপ, উজানে সব জল মেরে দিচ্ছে,। এই সব চুক্তি ফুক্তি ফালতু। করে কিছু লাভ হবে না। বৃষ্টির জল আটকানোর জন্যে অনেক জলাধার,ক্যানাল দরকার। সেই নিয়ে কারুর চিন্তা নেই।
৩| কারুর চিন্তা নেই বলাটা ভুল-মমতা নিজেই কাল এই দুই নাম্বার পয়েন্টটা নিয়েই বলেছেন।
@বিপ্লব পাল,
উজানে কারা জল মেরে দিচ্ছে? ভারতের মানুষ নাকি varoter vভারতের বাইরের কেউ? তিস্তার পানির অধিকার শুধু উজানের নয়, ভাটিরও। উজানের লোকেরা যেন সব মেরে দিতে না পারে তার জন্যেই প্রয়োজন চুক্তি। অথচ আপনি এক কথায় বলে দিলেন চুক্তি/টুক্তি সব ফালতু। মাঝে মাঝে এমন সব কথা বলেন রাজনীতিবিদদেরকেও হার মানিয়ে ফেলেন :-Y ,
বৃষ্টির জল আটকানোর জন্যে জলাধার দরকার সেটা ঠিকাছে, কিন্তু সেখানেও প্রয়োজন চুক্তি। কারণ উজানের মানুষ নদীর সব পানি মেরে দিবে, আর ভাটির মানুষ জলাধার নির্মান করবে একক খরচে, সেটাও মেনে নেওয়া যায় না। আর জলাধার নির্মান করতে চাইলেই করা সহজ নয়। বিশেষ করে যেখানে মানুষেরই বসবাসের জায়গা নেই, সেখানে জলাধার নির্মানের জন্যে পর্যাপ্ত স্থান কোথায়?
@স্বাধীন,
আমার ধারনা তুমি চিরকাল ঢাকাতে কাটিয়েছ। নদী থেকে কিভাবে জল নিয়ে চাষ হয় জান?
গঙ্গার উজানে এমন ১০,০০০ এর ও বেশী নালা কেটেছে বিহার ইউপির চাষীরা। কে আটকাবে এই চাষীদের? ভারত সরকার? এমন উন্মাদের কল্পনা করতে পারে এক তুমি আর হাসিনা সরকার। কংগ্রেস বাংলাদেশকে জল দিতে গিয়ে এই বেআইনি নালাগুলো আটকে দেবে? কংগ্রেস সরকারই পড়ে যাবে!!! দেখতেই পেলে মমতা হাঁচতেই চুক্তি চরকাবাজি খেয়ে শেষ। এটাই রাজনীতি। গণতন্ত্র। এখানে মব রুলস। মনমোহন রুল করে না। এবং সেটা গণতন্ত্রের জয়।
বাস্তব সমাধান চাও? বাংলাদেশের উচিত ভারতের কাছ থেকে ক্ষতিপূরন চাওয়া এবং ক্ষতিপূরন বাবদ ক্যানাল, বৃষ্টির জল ধরে রাখার ড্যাম ইত্যাদি বানানো সেই টাকায়।
আর কোন সমাধান নেই। আন্তর্জাতিকতা বড় দেশের ক্ষেত্রে খাটে না-ভারতের বাজার এত বড় কে ভারতের বিরোধিতা করবে বাংলাদেশের পক্ষ নিয়ে? এই সব বাস্তব অবস্থা বুঝতে হবে। না বুঝলে অরণ্যে রোদনই সার-যা হয়েছে এতদিন ধরে।
@বিপ্লব পাল,
হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন যে, পাকিস্তানিরার গোলাপ নিয়ে এলেও আমি তাদের বিশ্বাস করি না। আমি পাকিস্তানিদের সাথে সাথে ভারতীয়দেরকেও যুক্ত করে নিয়েছি এর সাথে। বাংলাদেশের প্রতি ভালবাসায়পূর্ণ তোমার এই লেখা দেখেও আমার বিশ্বাস হয় নি যে, আসলেই তুমি বাংলাদেশের মঙ্গল চাও। চাও যে না সেটা পরিষ্কার হয়েছে তোমার মন্তব্যসমূহ পড়ার পরেই। তোমার এই লেখা শুরু হয়েছে তিস্তার নদীর জলবন্টন না হওয়াতে কীভাবে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন সূর্যের উদয় হতে পারলো না তার আহাজারি দিয়ে। কীভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলো ইত্যাদি ইত্যাদি বহু কথা বলার শেষে এসে বোমা ফাটালে এই বলে যে তিস্তায় আসলে জলই নেই। তিস্তায় যদি জল নাই থাকে, তাহলে এই বালু ভাগাভাগির চুক্তি দিয়ে নতুন সূর্য উঠাতে তুমি কীভাবে চাইলে?
তিস্তায় কেন জল নাই? এর উত্তরে তুমি বললে যে, পশ্চিম বঙ্গের আগেই উজানে জল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যে নদী আন্তর্জাতিক তার জল যে নায্য বন্টন ছাড়া ইচ্ছা করলেই উজানের দেশ সবটুকু নিয়ে যেতে পারে না, এটা না জানার কথা তোমার নয়। অথচ তুমি এক্ষেত্রে নিয়ে এলে মবস রুল ফুল কী সব কথাবার্তা। আমরা ভারতের মব রুলসকে থোড়াই কেয়ার করি। বাংলাদেশের নায্য পাওনা জল পেতে গিয়ে কংগ্রেস পড়লো কী থাকলো তা আমাদের বিষয় নয়। আন্তর্জাতিক নদীতে আমাদের যতটুকু পাওনা ততটুকু ভারতকে দিতেই হবে। এর উত্তরে তুমি কী বলবে তা জানি আমি। ইতোমধ্যেই বলে দিয়েছো তুমি তা। তোমার ভাষ্য অনুযায়ীই।
তোমাদেরকে এই অসভ্য অহমিকাটা মনে হয় জাতিগতভাবেই শেখানো হয়। আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকও দেখলাম এরকমই একটা অসভ্য মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের বিষয়ে। তিনি লিখেছেনঃ
ভালোই একজন সম্পাদক বলতে হবে। বাংলাদেশের তুলনায় তারা যে কত বড় সেই কল্পনা করতে করতে কী তুমুল আত্মপ্রসাদ আর আত্মরতিতেই না ভুগছেন তিনি। বাংলাদেশ অতিরিক্ত ছাড় চায় নি। প্রাপ্যটাই যে বুঝে পাচ্ছে না আগ্রাসীর কাছে থেকে, তার যে অতিরিক্ত চাওয়া পোষায় না, সেটুকু বোঝার ক্ষমতা বাংলাদেশের আছে।
আন্তর্জাতিক একটা নদীর জলবন্টন হবে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে। সেখানো কে বড় কে ছোট, কার পেশী শক্তি বেশি আর কার কম এই সব বিষয় আসে কেন? বাংলাদেশতো ভিক্ষা চাইছে না তোমাদের কাছে। তার আইনসঙ্গত পাওনটাই চাইছে। সেখানে তোমাদের এই জোর যার মুল্লুক তার ধরনের মনোভাব কেন? আরো আশ্চর্যের বিষয় যে, সেটা আবার গর্ব করে বলতেও তোমাদের কোনো দ্বিধা বা লজ্জা দেখি না আমরা।
এই সমস্ত ফালতু কথা আমাদের শুনিয়ে লাভ নেই। ভাটিতে আমাদের বদলে চিন থাকলে তোমাদের চাষীরা দশ হাজার কেন দশ লাখ নালা কাটলেও সেগুলো ঠিকই সুড়সুড় করে বন্ধ করে দিতো তোমাদের কংগ্রেস সরকার। পাকিস্তানের সাথে কোনো নদীতেই জলবন্টন নিয়ে কোনো ঘাপলা তোমারা করো না। করো কি? যত ঘাপলা সব এই তোমাদের ভাষ্য অনুযায়ী ছোট বাংলাদেশের সাথে।
ভালোই সমাধান বাতলেছো তুমি। ঈশ্বরপ্রদত্ত বিনা পয়সার পানিই আটকে রাখছো তোমরা, আর সেই তোমরাই আমাদের দেবে ক্ষতিপূরণ। বলিহারি বাস্তবতা বটে।
নদী দিয়ে যদি পানিই না আসে, ক্যানাল, ড্যাম বানিয়ে কী করবো আমরা? বর্ষায় তোমরা যখন অতিরিক্ত জল ছেড়ে দিয়ে আমাদের ডুবিয়ে মারবে, তখন সেগুলোকে ধরে রাখা যায় অবশ্য। কী বলো?
আমাদের ভাগ্য ভালো যে সূর্য তোমাদের দেশে উঠে না বা দক্ষিণা বায়ুটাও তোমাদের দেশ থেকে আসে না। নাহলে জলের মত সেগুলোকেও হয়তো আটকে দিতে তোমরা। আমার শুধু আশ্চর্য লাগে এই ভেবে যে, এত বড় একটা দেশ, নিজেদের কত বিশাল ভাবে এখনই তারা, সেই তাদের বিবেকে কী একফোঁটা খোঁচাও কখনো লাগে না বাংলাদেশের প্রতি এই পরিমাণ অবিচার করতে।
@ফরিদ আহমেদ,
ভাইয়া, আপনার দেশপ্রেম আমাকে স্পর্শ করেছে। উদ্বুদ্ধও করেছে! পাশাপাশি অনেক ‘কিন্তু’ও এসে জমা হয়েছে মনে। আমি পয়েন্ট আকারে তুলে ধরছিঃ
(১) বিহার-ইউপির চাষিরা যে ১০,০০০ এরও বেশি নালা কেটেছে উজানে, তা কি সত্যই আটকে দিতে পারে কংগ্রেস সরকার? কি পরিমাণ রক্তক্ষয় হতে পারে চিন্তা করেছেন? বাংলাদেশে অর্পিত সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে পারছে না কেন আওয়ামী লিগের তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী প্রুতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার?
(২) ন্যায্য হিসসা কি বড় দেশের কাছ থেকে সব সময় আদায় করা যায়, যখন পৃথিবী (আধুনিককালে জাতিসংঘ বা অন্যান্য বহুজাতিক সংস্থা বা কোম্পানির মাধ্যমে) শাসন করছে এই বড় দেশগুলো! ইরাক আক্রমণ এমনকি জাতিসংঘের অনুমোদনও পায়নি; তারপরও কি ইউএসএ এই অন্যায্য কাজটি করতে পিছপা হয়েছে? আপনারা আমেরিকায় বসে শুধু প্রতিবাদ-মিছিল ছাড়া আর কিছু করতে পেরেছেন? ইরাক-বাসির নির্ঘুম রাতের অবসান হয়েছে?
(৩) জাত্যভিমান বা অহং শুধু ভারতীয়দেরই রয়েছে? আমি নিজে দেখেছি, পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের কি হেয় চোখে দেখা হয়! তাদের ভূমির অধিকারকে বাঙালি জাতির সংখ্যাধিক্যের জোরে কিভাবে চূর্ণ করা হয়, তা যে কেউ একটু খবর নিলেই জানতে পারবেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যখন ভুটান সফর করেন, তখন অনেক বিদগ্ধজনকে বলতে শুনেছি, এই সফর একজন মন্ত্রীকে দিয়ে করালেই হতো।
(৪) ভারতের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে বৃষ্টির জল ধরে রাখার ড্যাম বানানো কি অর্থহীন ‘গঙ্গা চুক্তি’ বা ‘তিস্তা চুক্তি’ এর চেয়ে অধিক বাস্তবসম্মত ও উপযোগী সমাধান নয়?
ভাইয়া, আমার প্রশ্নগুলো দুর্বিনীত মনে হলে ক্ষমা করবেন! আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, দেশপ্রেম-স্বজাতি-প্রেম-গোত্র-প্রেম এই পৃথিবী ও মানব সভ্যতার জন্য একটি বিষফোড়া; পৃথিবীর সব যুদ্ধ-অশান্তি-অনর্থের মুলে রয়েছে এগুলো। এজন্য আমি সিমান্তবিহীন একটি পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি, যেখানে মানুষ সেভাবেই বিচরণ করতে পারবে, যেভাবে পাখিরা ডানা মেলে ঘুরে বেড়ায় এক দেশ থেকে আরেক দেশে।
@কাজি মামুন,
ধন্য আমি। একে দেশপ্রেম বলে কিনা জানি না। তবে এটা সত্যি, বাংলাদেশের প্রতি বুকের মধ্যে গভীর মমতা নিয়ে ঘুরি আমি। ওই দেশটাতে জন্মেছি আমি, তার জল হাওয়াতেই বেড়ে উঠেছি আমি। সেই বন্ধনটা এখনও ছিন্ন হয় নি।
আপনার কিন্তুর উত্তর দিয়ে আপনাকে সন্তুষ্ট করতে পারবো কি না জানি না। কারণ,আপনি বিপ্লব পালে এখনো মুগ্ধ। তারপরেও চেষ্টা করছি।
নালা চাষীরা নিজ দায়িত্বে কেটেছে, বিপ্লবের এই তথ্যকে আপনি বিনা প্রমাণে মেনে নিচ্ছেন কেন? ওই নালা কাটায় সরকারের কতটুকু ভূমিকা আছে সেটা আগে জেনে নিন। জেনে নিন কেন ভারত আন্তর্জাতিক নদীতে প্রচলিত নিয়মকানুন অমান্য করে এরকম নালা কেটে পানি প্রত্যাহার করে। আপনি নিজে সমস্যা সৃষ্টি করে এখন বলবেন যে জট অনেক জটিল তাই খোলা যাবে না, তাতো হবে না। কথা আরো আছে, ভারতের চাষীরা এরকম নালা কি শুধু বাংলাদেশের সাথে অভিন্ন নদীগুলোতেই কাটে নাকি অন্য দেশ, যেমন পাকিস্তানের সাথের গুলোতেও কাটে? সেখানে যদি না কেটে থাকে তাহলে কেন ওই নদীগুলোর পাশের চাষীরা নালা কাটলো না সেটাও খতিয়ে দেখা উচিত।
আদায় করা যায় না বলেই কি হাত পা গুটিয়ে বসে থাকতে হবে? অভিন্ন নদীতে সম অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বের বহু দেশেই। সেখানে কেউ এরকম যুক্তি দেয় নি যে বড় দেশ সব পানি লুটে নিতে পারবে। কাজে ছোট দেশ বসে বসে শুধু আঙুল চোষো, আর বড়-র তোষামদি করো।
(
আমাদের যদি জাত্যাভিমান থাকে, তবে সেটা দূর করার প্রচেষ্টাও আমাদেরই নিতে হবে। কিন্তু এর কারণে শিষ্টাচার বহির্ভূত ভারতীয় জাত্যাভিমান উদ্ভূত অপমানকেও আমাদের হজম করতে হবে নাকি?
নদী দিয়ে যদি জল না আসে, তবে আগামী পঞ্চাশ বছর পরে বাংলাদেশে নদী বলতে কিছু থাকবে না। পলি পড়ে সবই সমতলভূমি হয়ে যাবে। মরুকরণের ফলে বৃষ্টিও যাবে কমে। ফলে, ড্যাম বানিয়ে সেখানে কীভাবে পানি আটকাবেন তা আমার মাথায় ঢুকছে না।
কোনো ভারতীয়ের সাথে টাকা-পয়সার লেনদেন জাতীয় কোনো বিষয়ে আপনি জড়ান নি, এটা আমি নিশ্চিতভাবেই বলে দিতে পারি। সে কারণেই ক্ষতিপূরণ দাবী করার মত হাস্যকর কথা আপনি বলছেন। ভারতীয়দের কাছ থেকে টাকা-পয়সা আদায় করার চেয়ে পাথরের কাছে বসে কান্নাকাটি করাটাও অনেক ভালো। সেক্ষেত্রে তার বুক চিরে জল ঝরলেও ঝরতে পারে হয়তো।
@কাজি মামুন,
আপনার সাথে একমত হতে পারলামনা!
আমাদের ধীনতা যুদ্ধে সাহায্য ছাড়া ভারত আমাদের কিছুই করেনি!
চল্লিশ বছর ধরে আমরা ওদের নিম্নমান পণ্যের উন্মুক্ত বিশাল বাজার!
ইউরোপে সব নদী ছোট বড় সব দেশ গুলো সমান ব্যবহার করে।
ভারতের মত পেশীর শক্তি দেখিয়ে স্বার্থপরের মত সব নদীর পানি
আটকে দেয়না!
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান গরীব একটা দেশ!
এর পরিণতি কি হবে চিন্তা করতে পারেন?
আমি চুয়াত্তর দেখেছি, দেখেছি মানুষের কঙ্কাল!
আমাদের এখন সিরিয়াসলী ভাবার সময় এসেছে!
আমরা যদি একযোগে ভারতের সব পণ্য বর্জন করি,
তাতে দেখব তাদের প্রতিক্রিয়া কি হয়!
আমাদের ন্যায্য অধিকার আমাদেরই আদায় করে নিতে হবে,
বড় দাদারা তা শুধু শুধু দেবেনা!
ধন্যবাদ!
@ফরিদ আহমেদ,
(১) আমার শুরুর ব্লগটা ছিল তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া-তখনো ব্যপারটা আমি গভীরে ঘাঁটি নি। মমতাও ঘাঁটেন নি। চুক্তি যাদের করার কথা, তারাও অনেক কিছুই ভাবেন নি। সেগুলো সামনে আসতে পরিস্কার নদীতেই জলই নেই-ত কালনেমীর লঙ্কাভাগ করে হবে টা কি?
(২) পাকিস্তানের সাথে ভারতের যে নদীগুলি জল শেয়ার করতে হয়-যেমন ধর চেনাব নদী-তাই নিয়ে পাকিস্তানের সাথে ভারতের বিরোধ নেই এমন অসাধারন তথ্যের উৎসটা দিলে ভাল হয়। কল্পনার ডানাতে ভেসে রাজনৈতিক যুক্তি সাজানো যায় না। এটা বোঝ আগে।
(৩) ব্রহ্মপুত্রের বাঁধ দিয়েছে চীন। ভারতের তোয়াক্কা না করেই। ভারত মেনে নিয়েছে। না মেনে নিয়ে হই চই করাটা হত সময়ের অপচয়।
(৪) উজানের জল যদি সরকারি বাঁধ না নিয়ে চাষীরা নিয়ে নেয়, সেটা ঠেকানোর ক্ষমতা কোন গণতন্ত্রের নেই। এই সাধারন “বোধের” বদলে যদি “আন্তর্জাতিকতা” নামে এক বিমূর্ত শব্দের সাথে সহবাস করতে চাও, আপত্তি নেই। তাতে কবিতা, প্রতিবাদপত্র, পিটিশন অনেক কিছু হবে-কাজের কাজ কিছু হবে না। সত্যিকারের গণতন্ত্রে মব রুলস। যা সম্ভব না, তা ধরে কবিতা হয়, রাজনীতি হয় না।
(৫) রাজনৈতিক আর কবিতার ব্লগের মধ্যে পার্থক্য আছে। নির্মোহ এবং সত্য কথাগুলো বলাটা আমার কাজ। কারুর পক্ষে বলাটা আমার কাজ না। যা সম্ভব না, সেটা বলতেই হবে। সরকার বাঁধ দিলে, সেই বাঁধ রোধ করার কথা বলতে পারি, সেটা একটা সম্ভাবনা। কিন্ত চাষীরা জল তুলে নিলে, তা রুখবে কোন চুক্তি?
রাজনীতিতে আকাশ কুসুম আবেগের স্থান নেই-বাস্তবের ফুটিফাটা মাঠে দাঁড়িয়েই ভাবতে হবে। সমাধান খুঁজতে হবে। এখানে আমার ভূমিকা নেহাৎই একজন ভাস্যকারের-এর মধ্যে আমি ভারতীয় না অন্য কিছু খুঁজে লাভ নেই। ভারত কোন বিমূর্ত কনসেপ্ট না- মনমোহন সিং, মমতা, চাষীরা-সবাই মিলেই ভারত। এটা বোঝ আগে। তাতে ভুলবোঝাবুঝি কমবে।
@বিপ্লব পাল,
আচ্ছা বুঝলাম যে, আমরা যে রকম হুট করে ব্লগ লেখার সিদ্ধান্ত নেই, বাংলাদেশ এবং ভারত দুটো দেশও সেরকমই একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে আসো আমরা তিস্তার জলবন্টন নিয়ে একটা চুক্তি করি। কিন্তু কেউ তখন জানতো না যে, এই নদী পশ্চিম বঙ্গের আগেই নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে। শুধু বালু পড়ে আছে। সেই বালু নিয়ে বালু ভাগাভাগি চুক্তি হতে পারে হয়তো, জল ভাগাভাগি কিছুতেই নয়। কাজেই, মমতা সঠিক। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে, দুই দেশ এখনো কেন যেন মরিয়া এই চুক্তি সম্পাদনে। বলছে যে তিনমাসের মধ্যেই তিস্তা চুক্তি হবে। মমতাকে এখনো ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বোঝাচ্ছে যাতে তিনি সম্মত হন। আমাদের সরকার না হয় গর্দভ (ছোট দেশ হতেই পারে), কিন্তু তোমাদের এত বড় গণতান্ত্রিক একটা দেশের ঝানুঝানু লোকজনও যে নির্বোধ হয়, সেটা জানা ছিল না আমার। তিস্তায় যে জল নেই সেটাতো অন্তত ভারতীয়দের জানার কথা। জল নেই জেনেও কেন তারা জলবন্টন চুক্তি করতে চাইছে? এটা কি এক ধরনের প্রতারণা নয় বাংলাদেশের সাথে?
বিরোধ আছে এমন উদাহরণ তুমিই বরং আমাকে দাও। সিন্ধু জলবন্টন চুক্তির পরে ভারত কথা রাখে নি, আর পাকিস্তান অসন্তুষ্ট হয়েছে এমন মাত্র একটা উদাহরণ থাকলে দেখিও আমাদের। আমরা পয়ত্রিশ বছর ধরে তোমাদের দুয়ারে মাথা ঠুকে মরছি এই বলে যে, পানি আটকে তোমরা আমাদের দেশটাকে ধ্বংস করছো। পাকিস্তান কি সেরকম কিছু করেছে? কেন করে নি?
কেন মেনে নিয়েছে সেটা কি জানো তুমি? চিন যখন নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, এই বাধ শুধুমাত্র জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হবে, এর ফলশ্রুতিতে ভাটিতে জলপ্রবাহের বিন্দুমাত্র কোনো পরিবর্তন হবে, তখনই শুধু মেনে নিয়েছে। তার আগ পর্যন্ত তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে গভীর উদ্বেগের সাথে চিনের কাজকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে ভারত।
(
কীভাবে চাষীরা জল নেয়? তারা কি নদীর পাড়ে সারি বেধে দাঁড়িয়ে থাকে বালতি হাতে নিয়ে। তারপর তুলে নিতে থাকে সব জল। তিস্তায় যদি দশ হাজার ক্যানাল করে করা হয়ে থাকে, তবে আমি বলে দিতে পারি যে এর সাথে সরকার অবশ্যি জড়িত রয়েছে। বাংলাদেশে কোনো নদী থেকে একটা ক্যানাল বের করার সক্ষমতাও কোনো চাষীর নেই। রাষ্ট্রের অনুমতি এবং সাহায্য ছাড়া এ কাজ হয় না কখনো। আর কথা হচ্ছে যে, যে নদীগুলো বাংলাদেশে আসে শুধুমাত্র সেগুলোর জলই চাষীরা তোলে কেন? যে পাঁচটা নদী ভারত হয়ে পাকিস্তানে যাচ্ছে তার জল কেন ভারতীয় চাষীরা তুলে নিঃশেষ করতে পারে না পাকিস্তানে ঢোকার আগেই? সেখানে কি নদীর দুই পাড়ে ভারতীয় চাষীরা থাকে না?
তোমার নির্মোহ এবং সত্য কথা কী তা আমরা জানি। আমি যতটুকু বাংলাদেশি, তার চেয়েও অনেক বেশি পরিমাণে ভারতীয় তুমি। খামোখা নিরপেক্ষ ভাব নেবার প্রয়োজনটা কি? আমিতো নিরপেক্ষ সাজি না। বাংলাদেশের প্রতি আমার পক্ষপাত পরিষ্কার। ভাটির দেশের অধিকারের কথা রাষ্ট্রেরই উচিত তার জনগণকে বোঝানো। এর জন্য সব ধরনের অস্ত্রই রাষ্ট্রের হাতে আছে। চাষীরা জল তুলে নিচ্ছে এই খোঁড়া যুক্তি ব্যবহার করার চেয়ে, সেটাই অনেক বেশি জরুরী।
সেটা আমরা খুব ভাল করে জানি। তোমাদের নিরাবেগ আচরণ, অনুভূতিহীনতা আমাদের দেশটাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই অঞ্চলের সবচেয়ে সবুজ জলকাদাময় কোমল দেশ্টা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে রুক্ষ, কঠিন মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। ধূসর থেকে ধূসরতর হচ্ছে এর সবুজ। তোমরা তোমাদের বিশাল শরীরের অহংকার নিয়ে বিকট শব্দে অট্টহাসি হাসছো আমাদের সেই করুণ দশা দেখে। মরিয়া আমরা চেষ্টা করছি তোমাদের বোঝাতে। যখন আর পারবো না, নিশ্চয়ই কোনো না কোনো বিকল্প সমাধানের পথ খুঁজে নেবো আমরাও।
@ফরিদ আহমেদ,
উত্তর হ্যা। এর কারন রাজনৈতিক ফয়দা তুলতে মরিয়া ছিল হাসিনা এবং মনমোহন। হাসিনার ব্যাপারটা জান। ভারতের ব্যপারটা জান না। কংগ্রেস এখন ভারতের মূল ভুখন্ডে কোন রাজ্যেই ভাল করছে না-উত্তরপূর্ব রাজ্য গুলিতে ভাল করছে। তাদের ট্রানজিট দিতে পারলে, সেখানে খাবারের দাম কমত। কংগ্রেসের রাজনৈতিক ফয়দা ছিল।
জল বন্টন নিয়ে পাকিস্তানের সাথে ভারতের সম্পর্ক তিক্ত-বাংলাদেশের মতন। তবে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে পাকি নদীগুলি উজান ভারতের সমতলে না-পার্বত্য জায়গায়। অর্থাৎ যেখানে চাষবাস হয় না। ফলে জল থাকে। তাই বন্টনের সমস্যা কম।
তুমি চিরকাল ঢাকায় কাটিয়েছ বোঝা যাচ্ছে। শ্রেফ নলকূল বসিয়ে নদী থেকে জল টানা হয় একট নালায়-সেখান থেকে জল চলে যায় চাষের কাজে। এটা ওরা যুগ যুগ ধরে করে আসছে। উচ্চফলনশীল ধান, জন সংখ্যার চাপে জল তোলা বেড়ে গেছে বহুগুন। সমস্য সেখানে। আগে চাষীরা নদীর জল কিভাবে কাজ লাগায় সেটা দেখে এস।
আর নদীকে মেরে ফেলা? এই জল তুলে ভারতের অসংখ্য নদীকেই মেরে ফেলা হয়েছে। তুমি ত মোটে সেই নদীগুলিকে দেখছ যেগুলো বাংলাদেশে আছে। পশ্চিম বঙ্গের নদীগুলিও উজানে মারা যাচ্ছে। আমার বাড়ির সামনের নদীটাও গত কুড়ি বছরে মারা গেছে। এর কারন উচ্চফলনশীল ধানের জন্যে প্রচুর জল লাগে। এই নিয়ে একটা ডকুমেন্টারীও বানিয়েছিলাম কিভাবে আমার বাড়ির আশে পাশের নদীগুলোকে মেরে ফেলা হচ্ছে
httpv://www.youtube.com/watch?v=YiwWG1ZDmjc
ভারত ইউরোপ না-এখানে কোন পরিবেশ সচেতনতা নেই।
ভারতের অধিকাংশ নদীই যেখানে মৃত্যুপথে, সেখানে তোমার উপোরক্ত উত্তর থেকে পরিষ্কার এই সব ব্যপারে কিছু না জেনে, এবং কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা ছাড়াই দেশপ্রেমের বাজনা বাজাচ্ছ। তাতে কেও কেও খাজনা দিতে পারে, কিন্ত লাভ কি?
@বিপ্লব পাল,
তুমি যে একজন অতি বড় স্ববিরোধী ব্যক্তি সেটা আবারো প্রমাণ করলে। তোমার স্ববিরোধিতার রূপ এমনই যে, নিজের লেখার যুক্তিকে ডিফেন্ড করার পরিবর্তে তুমি সেগুলোকে খণ্ডন করতে মেতে উঠেছো এই মুহুর্তে। এই যে এখন বলছো যে, হাসিনা রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে মরিয়া ছিলো, অথচ এই তুমি-ই এই লেখাতে হাসিনার বিষয়ে লিখেছো যে, হাসিনার কারণেই বাংলাদেশিরা ভারতের কাছ থেকে যে সুবিচার আশা করে তা প্রায় মিটিয়ে ফেলার পথে। দেখো তোমার ভাষাতেই।
তোমার স্ববিরোধিতার কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এই লেখার শুরুই করেছো মমতাকে হঠকারী বলে। তিনি নাটক করেন, সাজানো দেশপ্রেম দেখান ইত্যাদি কতকিছু বলে গেলে তারপর।
এখন হঠাৎ করেই তুমি ঘুরে গেছো একশো আশি ডিগ্রি। বলছো যে হাসিনা মনমোহনই নাটক করছে। মমতাই খাঁটি কথা বলছেন।
এখন তোমার কাছে চুক্তির কোনো মূল্য নেই। অথচ তোমার লেখাতে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। এর গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে তুমি লিখেছোঃ
জলই যদি না থাকবে, তবে কেন খামোখাই এই চুক্তিগুলো বাংলাদেশের ভীষণভাবে দরকার পড়বে? জাদুঘরে বাঁধাই করে রাখার জন্য নাকি?
জল বন্টন নিয়ে পাকিস্তানের কোনো ক্ষোভ নেই ভারতের প্রতি। ষাট সালে করা সিন্ধু জল চুক্তিতে কোনো ক্ষতি হয় নি তাঁদের। এখন যে তিক্ত সম্পর্ক সেটি ভিন্ন কারণে। পাকিস্তানের আশংকা যদি কখনো যুদ্ধ বাঁধে তবে ভারত হয়তো জলকেই অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করতে পারে। এটা যাতে ভারত না করতে পারে সে কারণে মাঝে মাঝে হাউকাউ করে তারা। বিশ্বব্যাংককে ডেকে টেকে নিয়ে আসে সালিশ মোকদ্দমার জন্য। ওখানে চুক্তিটা হয়েছে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে। একজন আরেকজনকে ছোট ভেবে ঠাকানোর মানসিকতা নেই সেখানে।
এ বিষয়ে এখনো আমি আমার অবস্থানে স্থির থাকবো। সরকারী সহযোগিতা, আনুকূল্য এবং পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে নালা কেটে নদীর জল নলকূপ বসিয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা চাষীদের নেই। জল যা নেওয়া হয়েছে উজানে, তার সবটুকুই সরকারের জ্ঞাতসারেই ঘটেছে, সম্মতিতেই ঘটেছে। অগোচরে বা অজান্তে কিছু ঘটে নি।
তোমাদের নিজেদের নদীগুলোকে তোমরা মারো না কাটো তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু আন্তর্জাতিক নদী, যেগুলো ভারত ডিঙিয়ে বাংলাদেশে এসেছে, সেগুলোতে আমাদের ভাগ রয়েছে। সেটাকে বিবেচনায় না নিয়ে সেই নদীগুলোর স্তন একা একা চুষে খেয়ে তাদেরকে নিঃস্ব করে দেওয়াটা কোনো সুপ্রতিবশীর কর্ম নয়।
ভারতের অধিকাংশ নদী মৃত্যুপথে নাকি বার্ধক্য ঝেড়ে তন্বী তরুণীতে পরিণত হচ্ছে সে বিষয়টা আরেকটু খোঁজখবর নাও। দেশপ্রেমের বাদ্য বাজাচ্ছি না। আমাদের অধিকারের কথা উচ্চস্বরে বলার চেষ্টা করছি। সেটাই তোমাদের অনভ্যস্ত কানে বাজনার মত মনে হচ্ছে। এগুলো শুনতে যে তোমরা প্রস্তুত নও।
@ফরিদ আহমেদ,
[১] আমি আগেই ব্যপারাটা পরিষ্কার করেছিলাম, ব্লগ লেখার সময় সব তথ্য আমার হাতে ছিল না। আমি এটাও লিখেছিলাম তিস্তার জল মোটে ১২,০০০ কিউসেকের কাছে, সেখানে এসব চুক্তি কিভাবে হচ্ছে আমি জানি না।
সুতরাং জল চুক্তি নিয়ে আমার সংশয় ছিল। সেই সময় কারুর কাছেই কোন স্পষ্ট কোন তথ্য ছিল না।
কিন্ত আমার বক্তব্য হচ্ছে, শুধু জল চুক্তি ত হয় নি।
এর সাথে আরো অনেক বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে। সেগুলো ভারত-বাংলাদেশের স্বার্থে দরকার ছিল। এবং সেখানে এই ভাবে মমতার ওয়াক আউট করার কোন দরকার ছিল না। উনি মনমোহনের সাথে সরাসরি কথা বলে, চুক্তিটি পোষ্টপন্ড করতে পারতেন-তাতে মনমোহনের সফরটা অনেক সলিড দেখাত।
তিস্তা ছারাও এই চুক্তিতে বাংলাদেশের গারমেন্ট শিল্প ৪৬টা দ্রব্যের ওপর শুল্ক ছাড় পেয়েছে। যার প্রভাবে ভারতে বাংলাদেশ রপ্তানি বাড়াতে পারে প্রায় ১ বিলিয়ান ডলারের ওপরে। এগুলোত দরকার ছিল। আবার উত্তর -পূর্বের জন্যে ট্রানজিট দরকার ছিল। ভাল সম্পর্কের বিকল্প নেই। সেটা মমতা বোঝেন নি। উনি তখন নিজেও জানতেন না, আসলে তিস্তার কি অবস্থা। সেটা খবর নিয়ে জেনেছেন মাত্র দুদিন আগে।
[২] হাসিনা এবং মনমোহন নিয়ে আরো দুকথা বলা দরকার। উনারা এই সম্পর্কের ব্যপারে আন্তরিক। শুধু তিস্তা চুক্তি দিয়ে এই সফর বা উনাদের সদিচ্ছাকে খারাপ বলা উচিত না। তিস্তা ছারাও আরো অনেক ব্যপারেই চুক্তি হয়েছে যেগুলো দরকার ছিল। তিস্তার চুক্তিও হবে।
মৌলিক প্রশ্ন যেটা-সেটা হচ্ছে নদীগুলিকে সংস্কার না করে এই সব নদী চুক্তি একধরনের প্রতারণা। রাজনীতির খেলা।
একজন বিজ্ঞান সচেতন মানুষ হিসাবে যদি আসল সমস্যাটার দিকে না ফোকাস করে, রাজনীতির দিক ফোকাস না করি-যা তুমি করছে-অধিকার ইত্যাদি প্রশ্ন তুলে-তাহলে, নিজেদের বিজ্ঞান মনস্ক বলা ছেড়ে দাও-তার থেকে বরং দেশপ্রেমী ফরিদ আহমেদ বি এন পিতে ভাল পজিশন পাওয়ার ক্ষমতা রাখে।
[৩] কেও যদি দাবী করে , ভারতের লোকগুলো শুধু বাংলাদেশের দিকের নদীগুলি থেকেই জল তুলছে , তাহলে সেই যুক্তি বিরুদ্ধে সব থেকে ভাল তথ্য বাকী নদীগুলির কি অবস্থা। সেগুলোতে
ভাটির দিকের লোকেদের কি হাল হয়?
এই খবরটা দেখ-গত ত্রিশ বছরে ভারতের নদীগুলিতে জল ধারনের ক্ষমতা ৬০% হ্রাস পেয়েছে প্রায় ( ৩২ এম সি এম থেকে ১৪ হয়েছে)
http://indiatoday.intoday.in/video/Indian+river+basins+drying+up/1/48847.html
লক্ষ্য কর আসল ব্যপারটা হল তিস্তা এবং ব্রহ্মপুত্রে ভারতেও জল নেই
http://southasia.oneworld.net/todaysheadlines/major-rivers-in-india-bangladesh-drying-up-fast
গুগল করলে এই নিয়ে আরো জানতে পারবে। যেখানে সমস্যাটার শিকড় আরো গভীরে সেখানে এই সব রাজনীতি করে লাভ আছে? শিকড়টাকে না ওপরাতে পারলে কে জল দেবে?
(৪) পাকিস্তানের সাথে ভারতের জল বন্টন নিয়ে কি অবস্থাঃ
এই খবর গুলো পড়-এর থেকে বাংলাদেশের অবস্থা কি আলাদা?
To fill the newly constructed dam, Pakistani officials say India has consistently obstructed the Chenab’s flow into their country. The Indus River System Authority, Pakistan’s water distribution body, claims to have received only 19,351 cusecs on 9 October and 10,739 cusecs on 11 October from the Chenab River when it should be receiving a minimum of 55,000 cusecs.
Pakistan’s top negotiator on water issues, Jamaat Ali Shah, told ISN Security Watch that Islamabad was seeking compensation for the loss of over 0.2 MAF (million acre feet) of water last month from the Ravi, Sutlej and Chenab rivers
http://www.isn.ethz.ch/isn/Current-Affairs/Security-Watch-Archive/Detail/?lng=en&id=93519
http://www.nytimes.com/2010/07/21/world/asia/21kashmir.html
আরেকটু গুগল করলে দেখবে-এখানেও ভারতের বক্তব্য জলই নেই ত দেব কোত্থেকে?
সুতরাং সমস্যার গভীরে না গিয়ে আমার অধিকার বলে চিল্লালে চিড়ে ভিজিবে না।
খালেদা জিয়া সুলভ মনোভাব ছেড়ে বিজ্ঞান মনস্ক ভাবে এই সমস্যাটা নিয়ে ভাব আগে।
এত অস্থিরতা ক্যান দাদা? বাংলাদেশের জন্য প্রাণটা কি খুব কেঁদে উঠেছিল? সব তথ্য হাতে নিয়ে লিখলেইতো এখন আর মমতার মত উল্টো দিকে ডিগবাজী খেয়ে নিজেরই বিরোধিতা করতে হতো না। 🙂
প্রথম অংশ ঠিক আছে। তুমি সত্যি সত্যিই সংশয় প্রকাশ করেছিলে। কিন্তু দ্বিতীয় অংশ ঠিক নেই। তথ্য সবার কাছেই ছিল, ভারতের কাছেও ছিল, বাংলাদেশের কাছেও ছিল। এমন কি মমতার কাছেও ছিল। কারণ, তাঁকে পুরো বিষয়টাই জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তিনিও তাঁর সম্মতি জানিয়েছিলেন। তথ্য অস্পষ্ট হলে তিনি সম্মতি দিতেন না। চুক্তি সম্পাদনের দুই দিন আগে হঠাৎ করে তিনি যে তথ্য আবিষ্কার করেছেন তার সাথে ভারত এবং বাংলাদেশ সরকার একমত হয়েছে বলে এখনো শুনি নি আমি।
হ্যাঁ হয়েছে বাণিজ্যিক চুক্তি। কিন্তু এর জন্য এত বিশাল আয়োজনের প্রয়োজন ছিল না। দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী-ই তা করতে পারতেন। আমাদের জন্য সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ছিল তিস্তার জলবন্টন চুক্তি, সেটা হয় নি। আমরা হতাশ, ক্ষুব্ধ। তোমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ট্রানজিট। তোমরা তা পাও নি। কাজেই তোমরাও হতাশ। এই সফরটাকে হাজারো সাইড ডিশ দিয়ে ভরপুর বলে স্বার্থক বলা যাবে না, কারণ ডিনারে মূল কোর্সটাই সার্ভ করা হয় নি। এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী মমতার দায়িত্বহীন কিশোরীর মত আচরণ। তবে, ভারত সরকারও তার দায় এড়াতে পারে না মমতার দোহাই দিয়ে। আন্তর্জাতিক একটা চুক্তি হবে, সব কিছু চুড়ান্ত। শেষ মুহুর্তে তুমি এসে বলতে পারো না যে আমার ঘরে এই সমস্যার কারণে আমি সেটা করতে পারি নি। কাজেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের যে নতুন সূর্য উঠার প্রত্যাশা তুমি করেছিলে, সেটিকে পূর্ব দিগন্তেই ডুবিয়ে দেবার দায়ভার এককভাবেই ভারতের।
আবারো স্ববিরোধিতা করছো। এদের দুজন সম্পর্কেই তুমি বলেছো যে তাঁরা নাটক করছেন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য। 😀
নদী সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার সাথে একমত আমি। কিন্তু নদী চুক্তি মোটেও প্রতারণা নয়, যদি না তুমি উজানের দেশ হবার কারণে সেই চুক্তির বরখেলাফ করো। চুক্তি ভাটির দেশকে এক ধরনের স্বস্তি দেয়, আশ্বাস দেয়। অনিশ্চয়তা এবং উদ্বেগকে কমিয়ে দেয়। একে রাজনীতির খেলা বলে দূরে ঠেলে দেওয়াটা ঠিক নয়।
বিপ্লব, আমারতো বিজ্ঞান বোঝার দরকার নেই। আমার দরকার আমার নদীতে পানি। এই নদীর উজানে যদি পানি থাকে, আর ভাটিতে আমি পানি না পাই, আমাকেতো হইচই করে আমার অধিকারের কথা বলতেই হবে। বিজ্ঞান সচেতনতা দিয়েতো আমার তৃষ্ণা মিটবে না।
বাংলাদেশ সম্পর্কে তোমার ধারণা যে কত অগভীর তাঁর প্রমাণ পাওয়া যায় দেশপ্রেমিক ফরিদ আহমেদকে বিএনপিতে পজিশন পাওয়ার ক্ষমতা বলে। তোমার ধারণা যে বাংলাদেশে যারা বিএনপি করে তাঁরাই শুধু দেশপ্রেমিক। তারাই শুধু অহেতুক ভারত বিরোধিতা করে। শোনো, তুমি কোনদিন রাজনীতি করো নাই। আমি করেছি। ছাত্র বয়স থেকে রাজনীতির সাথে যুক্ত আমি। এমন কি যখন চাকরী করেছি তখনও রাজনীতি করেছি। আমি এমন এক পেশায় ছিলাম যে পেশায় সরকারী চাকুরীজীবি হয়েও রাজনীতি করার অধিকার সংরক্ষিত। তোমার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি আমার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বি এনপি-র বিপরীত পক্ষেই ছিল। সেই রাজনৈতিক দর্শন থেকে এখনও বিচ্যুত নই আমি।
তবে একটা ইন্টারেস্টিং বিষয়। তোমার এই অবজ্ঞা করা বিএনপিও কিন্তু ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কের এই মোড় ঘোরানো কর্মকাণ্ডের বিষয়ে মমতার মত ফালতু কোনো আচরণ করে নাই। যথেষ্ট দায়িত্বশীল আচরণ করেছে তাঁরা। এর মানে হচ্ছে যে পর্দার অন্তরালে আওয়ামী লীগ এই সমস্ত চুক্তির বিষয়ে বিএনপির সাথে যে আলোচনা করেছে সেখানে তারা ঠিকই বিএনপিকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যে এই চুক্তিগুলোতে বাংলাদেশের উপকারই হবে।
পাকিস্তানের বক্তব্য হচ্ছে যে চেনাব নদীতে বাধ দেবার কারণে সে পানি কম পাচ্ছে। ভারত তা অস্বীকার করেছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যে তৃতীয় পক্ষকে দায়িত্ব দিয়েছিল সেই ব্যক্তিও ভারতের পক্ষেই মত দিয়েছেন। যদিও পাকিস্তান তা মানতে নারাজ। চেনাব নদীয়ে জল নেই এমন কোনো বক্তব্য ভারতকে দিতে শুনি নি আমি।
চিড়ে যে ভিজছে না সেতো হাড়ে হাড়েই টের পাচ্ছি। জলই নেই, চিড়ে ভিজাবো কী দিয়ে বলো। দাদাদের তৃষ্ণা এত বিপুল যে আমাদের জন্য আর কিছুই থাকে না।
আমাদের নদী আসে তোমাদের দেশ ডিঙিয়ে। ফলে, পানি না পেলে আমরা তোমাদেরকেই দুষবো। এটাই স্বাভাবিক। সমস্যার গভীরে যদি যেতে চাও যাও, আমরাও সাথে আছি। কিন্তু তোমরা গভীরে যেতে চাও কি না তাই নিয়েইতো আমাদের সন্দেহ আছে। গঙ্গার জলপ্রবাহ বাড়ানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ভারতকে বলেছিল নেপালকে সঙ্গে নিয়ে নেপালে জলাধার তৈরি করতে। ভারত রাজী হয় নি। কেন রাজী হয় নি, সেটা একটু খুঁজে দেখো। পানি সমস্যার সমাধান চাও নাকি পানি নিয়ে রাজনীতি করতে চাও, এই বিষয়টা যতদিন না পরিষ্কার হবে ততদিন তোমাদের বিষয়ে আমাদের দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকবেই।
মমতাসূলভ ডিগবাজী মার্কা আচরণ ছেড়ে আরেকটু চিন্তাভাবনা করে কথাবার্তা বলো। এতে তোমারও লাভ, আমাদেরও লাভ। দুই পক্ষেরই সময় বাঁচে। 🙂
@বিপ্লব পাল,
এজন্যই আপনার লেখা এত ভাল লাগে, দাদা! আপনি সমস্যার একেবারে মুলে নিয়ে যান! উজানে কাটা হাজার হাজার নালার জন্যাই যে চুক্তি করেও পানি পাবে না বাংলাদেশ এবং এই নালা আটকে দেয়ার সামর্থ্য যে ভারত সরকারেরও নেই, তা আমার মনে হয় এমনকি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বা পররাষ্ট্রমন্ত্রীও জানেন না! দেশের বুদ্ধিজীবীদের বহু লেখা পড়লাম, টক শো দেখলাম। কিন্তু বিশ্বাস করুন, কোথাও আপনার দেয়া বিস্ময়কর তথ্যগুলো নিয়ে কাউকে আলোকপাত করতে দেখলাম না; সেই গতানুগতিক কচকচানি; অথচ আপনার দেয়া তথ্যগুলো ছাড়া তো এই সমস্যার কোন সমাধানই সম্ভব না! তাছাড়া, কেন ভারত সরকারের পক্ষে চাষিদের কাটা নালা আটকে দেয়া সম্ভব নয়, তা আমি সহজেই উপলব্ধি করতে পারছি! বাংলাদেশের তিন-চতুর্থাংশ সংসদীয় আসনে বিজয়ী প্রধানমন্ত্রীর পক্ষেও সম্ভব হয়নি মুন্সিগঞ্জের আড়িয়াল বিলে তার পিতার নামে একটি বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা করা। একইভাবে বাংলাদেশের প্রুতিশ্রুতিবদ্ধ বর্তমান সরকারের পক্ষে সম্ভব হয়নি বেআইনি অর্পিত সম্পত্তি হিন্দু সম্প্রদায়ের হাতে ফিরিয়ে দেয়া; কারণ বারুদ জলে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে যে! আর বারুদ নিয়ে কেউ খেলতে চায় বলুন? সরকার তো নয়ই! ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের আশা-ভরসার স্থল কংগ্রেস সরকার কি পেরেছে ‘বাবরি মসজিদ’কে অরিজিনাল অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে? বরং কোর্ট থেকে ‘মিথ’কেই প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে, বৈজ্ঞানিক সত্যকে নয়!
সুতরাং, আপনার সাথে একমত, বাংলাদেশের উচিত ক্ষতিপূরণ বাবদ ক্যানেল/ড্যাম নির্মাণে ভারতের সহায়তা দাবি করা। তা না করে অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিসসা দাবি করে বাংলাদেশ হয়ত চুক্তিই করতে পারবে, পানি পাবে না কিছুই (যেমনটা, গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তির ক্ষেত্রে হয়েছে)।
অনেক ধন্যবাদ বিপ্লব-দা আবারো ফাটাফাটি তথ্য দেয়ার জন্য!
@স্বাধীন,
বলা হয়, তৃতীয় বিশ্ব-যুদ্ধ হলে,তা হবে জল নিয়ে। ভারত-সরকার ছোট দেশগুলোর উপর জল নিয়ে মাস্তানি করছে। এবার চিন মাস্তানি করছে ভারতের উপর। ব্রহ্মপুত্রের উৎসমুখে বাঁধ নিয়ে তার প্রবাহ ঘুরিয়ে দে’বার এক মহাযজ্ঞ শুরু করেছে।
এ নিয়ে দৈনিক জনকন্ঠ বেশ কিছুদিন আগে তথ্যভিত্তিক একটা প্রতিবেদন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করেছিল।
http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-06-14&ni=61722
@বিপ্লব পাল,
হ্যা এখন মমতা এগুলো বলছেন বটে, কিন্তু প্রথমে তিনি পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থের কথাটাই বলেছিলেন, কেন তিনি এই চুক্তি মানেন না – বাংলাদেশকে এত জল তিনি দিতে চান না ইত্যাদি। এখন সমালোচনা শুরু হওয়ায় সম্ভবতঃ মিডিয়া ম্যানিপুলেশন বাদ দিয়ে বাস্তবে ফিরেছেন। 🙂
@বিপ্লব পাল,
গঙ্গার উজানে ফারাক্কা দিয়ে,
মেগা প্রজেক্ট করে বাংলাদেশের পশ্চিম অঞ্চল মরুকরন করা হয়েছে
তিস্তার উজানে গজল ডোবায় প্রজেক্ট করে এখন ঊত্তরের শস্য ভান্ডার
খ্যাত আট জেলার কৃষিকাজে মহা দূর্যোগ নেমে আসবে!
জীব বৈচিত্রে নেমে আসবে ভারসাম্যহীনতা!
নদীর পানি যেখান দিয়ে বয়ে যায় সেখানের মানুষেরও তাতে
সম অধিকার থাকে।
ইউরোপে রাইন নদী সহ অনেক নদী ৫/৬ টা দেশের ওপর
দিয়ে পরম মমতায় বয়ে যাচ্ছে! উজানের কোন দেশ তার
পানি স্বার্থপরের মত শুধু নিজেদের জন্য রেখে দেয়নি!
সবাই সমঅধিকারে তা ভোগ করে।
আবার সিলেটের উজানেও বাঁধের কথা পড়ি পত্রিকায় মাঝে মাঝে!
মনমোহন সিং এর বাংলাদেশ সফর ফলপ্রসু না হওয়ার জন্য শুধু মমতাকে দোষ দেয়া যায় না। আমলীগ, বাজাদল, জমাত সবাই দায়ী বলে মনে হয়।
@বিপ্লব পাল, আপনি কি ভুলে যাচ্ছেন মমতা জেতায় ও বামফ্রন্ট বিদায় হওয়ায় আপনি কী লিখেছিলেন? এক মুখে দু’কথা মানায় না।
@প্রপঞ্চ,
মানে???
মমতা মুখ্যমন্ত্রী থাকুক। এখনো তাই চাইছি। কিন্ত তার মানে কি তার সমালোচনা করা যাবে না -নাকি??? আমি ইস্যুভিত্তিক রাজনীতি করার জন্যে লোকজনকে উৎসাহিত করি।
@প্রপঞ্চ, আমার মনে হয় মমতা জেতা ও বামফ্রন্ট বিদায় বিপ্লব পালের এই লেখাটা আপনার আবার ভালো পড়া দরকার ।
মনমোহন সিং এর মতন সরকারী চাকুরীজীবি,যিনি পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি নির্বাচনে দাড়ান নি,যার সরকারী ঠিকানাটাই ভূয়া,যার রাজনৈতিক যোগ্যতা গান্ধী পরিবারের চাটুকারিতা – তার নেতৃত্বে এরকম একটা পরিণতি হোয়াই স্বাভাবিক। দুটি দেশের মধ্যে জলবন্টনের মতন জটিল ব্যাপারকে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির সাথে যথাযথ আলোচনা না করে সোনিয়ার দোহাই দিয়ে মমতাকে ম্যানেজ করবেন ভেবেছিলেন। কোন মরসুমে কোথায় কত জল আছে তার কোন বৈজ্ঞানিক এবং দুই দেশের মান্য মাপজোখ, হিসেব নিকেশ না করে ৭৫-২৫%, ৫৮-৪২%, ২৫ হাজার- ৩০হাজার কিউসেক ইত্যাদি হাওয়াবাজি করে একটা গোজামিল চুক্তি করে ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নত করবেন ভেবেছিলেন। এই চুক্তি হলে ভবিষ্যতে আরো ঝামেলা হত।
তিনদিক ঘেরা,দশগুণ বড় দেশ ভারতকে বাংলাদেশ কোনদিনই বন্ধু হিসেবে ভাবতে পারবে না। হাজার হাজার ভারতীয় সৈন্যের বলিদানের পরেও স্বাধীনতার তিন বছরের মধ্যেই ভারত ভিলেন। এপিজমেন্টের মাধ্যমে কোন সম্পর্ক তৈরী হয় না। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী জলবন্টন (কোন দিদি বা আপার মর্জি নয়)ও স্ট্রিক্ট বাণিজ্যিক আদান প্রদানের মাধ্যমেই সুসম্পর্ক হতে পারে।
মনমোহনের এইবারের সফর মাইলফলক হতে পারতো কিন্তু মমতার পপুলিস্ট রাজনীতি করবার খায়েস পুরা সফররের সাফল্যের উপর বলা যায় পানি ঢেলে দিয়েছ ,বাংলাদেশ সরকারের নীতি নির্ধারকরা লাস্ট মুহূর্তে তিস্তা পানি চুক্তি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছে একটু আগে প্রথম আলোয় পড়লাম
বাংলাদেশ বিচ্ছিন্নবাদি সংগঠন উলফাকে দমন সহ ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগগুলি দূর করতে আন্তরিক পদক্ষেপই নিয়েছে , কিন্তু ভারত এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের তিন বিগা করিডোরে ইস্যু হোক কিংবা সাগরের মেরিটাইমের সীমা ঠিক করা কোনটাতেই খুব একটা আগ্রহ নিয়ে অগ্রসর হয়নি
এভাবে চলতে থাকে দিল্লী বাংলাদেশ সম্পর্কে শীতলতা আসবার সম্ভাবনা আছে ভবিষ্যৎতে ।
@কালো ওঝা,
সেটা ত আমি বলেই দিয়েছিলাম, এই সফরটা ভোগে গেছে।
কিন্ত দেখলাম লিখে লাভ নেই। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ট্রানজিটের বিরুদ্ধে। তারা ভাবছে ভারতকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
পশ্চিম বঙ্গের মানুষ ও ট্রানজিটের বিরুদ্ধে-কারন তাহলে চট্টগ্রাম বন্দর রমরমা হবে, হলদিয়া বন্দর বসে যাবে। শিলিগুড়ি শহরের ব্যবসা ডুবে যাবে।
ক্ষতি তাহলে কাদের? আসামের, মিজো, খাসি এদের।
ওরা বাঙালী না :guru:
ফালতু আর কাদের জন্যেই বা লিখি :-Y
বরং স্থিতাবস্থাই থাকুক! বাংলাদেশের লোকেরাও চাইছে না, মমতাদিদি সহ পশ্চিম বঙ্গও এইসব চুক্তি চাইছে না। :hahahee: :hahahee:
তাহলে ত ঠিকই আছে। মব রুলস :guli:
@বিপ্লব পাল,
মব রুলস বলে বসে থাকলে কি আর মবের চরিত্র বদল হবে? বরং মবকে বুঝানোর জন্যেই তো লিখে যেতে হবে। এই লেখাটি বেশ সুন্দর বিশ্লেষণ হয়েছে। মমতা তার খেলা খেলেছে যেটা মনমোহন বা কংগ্রেস ভাবে নি ;-(
@বিপ্লব পাল,
মমতাকে কিছু অন্যরকম ভেবেছিলাম। কিন্তু এই মহিলাও দেখছি কম যান না। হঠাৎ ক্ষমতায় গিয়ে
‘ কিছু হনুরে ভাব দেখাচ্ছে
আর তার উপরে ওঠার সিড়ি হচ্ছে সিঙ্গুর। এইটা কারো অজানা নয়। ওটা ভেঙ্গে কদিন খাবে কে জানে- 😕
তার simplicity তার মানে একটা ভেক :-O
তবে হা আশ্চর্য হইনি। কেনোনা সব রাজনিতিকরাই এক একটা জুয়াড়ি। দেশ নিয়ে জুয়া খেলে
মমতা এমন করলো ছিঃ (N)
মমতার মত নেত্রীরা নিজেদের ইমেজ ধরে রাখতেই বেশি ব্যস্ত। সিঙ্গুরে ‘টাটানগর‘ প্রতিষ্ঠা করতে দিল না, অথচ পরে শুনলাম জমি ফেরত নেয়ার জন্য কৃষকই নাকি পাওয়া যাচ্ছিল না। দুঃখের বিষয় হল অনেক আগে থেকেই এসব নেতাদের মাত্রাতিরিক্ত ‘ইগো‘ র বলি হয়ে আসছে দেশের জনতারা। আমাদের বাংলাদেশেও এ রকম অনেক ঘটেছে পূর্বে এবং এখনও ঘটছে। সেখানে আরেক দেশের জন্য মমতা ‘মমতাময়ী‘ হবেন তা আশা করাও কষ্টকর।
🙁
@অনির্বাণ, পশ্চিম বঙ্গের লোকদের সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষের একটা সাধারণ ধারণা আছে। দাদা খেয়ে আসছেন, না গিয়ে খাবেন … তাদের যোগ্য প্রতিনিধি হচ্ছে মমতা। লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে উনি কংগ্রেসের সাথে যেভাবে দর কষাকষি করেছেন … সেই সময় বুঝা গেছে … উনি কি জিনিস।
@ওয়াহিদ আদনান, ভালো বলেছেন। 😀 এখন তাদের দেশের মিডিয়াতেই মমতার ভূমিকা নিয়ে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। এতবড় একটা পানি চুক্তি হবে আর তিনি জানতেন না পানির ভাগাভাগির বেপারটা এটা শুধু খোড়াই নয় একটি নগ্ন যুক্তি। যাই হোক ‘Tit for tat.’ আমরাও ট্রানজিট দিইনি ভারতকে। 🙂
@বিপ্লব পাল,
দাদা, আমি আমার পর্যবেক্ষণ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, তিস্তা চুক্তি হলে এবং এমনকি বাংলাদেশের পক্ষে গেলেও খালেদা জিয়া নিশ্চিত হরতাল ডাকতেন এবং বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষকে বিশ্বাস করাতেন যে, ”ভারত বাংলাদেশকে ঠকিয়েছে এবং বাংলাদেশের নতজানু সরকার এ জন্য দায়ী”। যে ফারাক্কা চুক্তিকে এখনও পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ-বিরোধী মনে করেন মমতা, সেই চুক্তি সম্পর্কে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষকে বলতে শুনেছি যে, “ভারত চুক্তির নামে প্রহসন করেছে! কারণ, বাংলাদেশ কোন পানিই পায়নি”। প্রকৃতপক্ষে, খালেদা জিয়া এভাবেই ব্যাখ্যা করেছেন এবং বহু মানুষ তা বিশ্বাস করেছে। কথা হচ্ছে, তাহলে আমরা কিভাবে আপনার বর্ণিত ‘উইন-উইন’ সিচুয়েশন নির্ধারণ করব? কারণ কেউই তো সুখী নয়!
তিস্তা চুক্তি না হওয়াতে এখন বিএনপির বুদ্ধিজীবীরা বলবে, “বাংলাদেশ তার সবগুলো ট্রাম্প কার্ড ব্যবহার করে ফেলেছে, মানে তার সমস্ত স্ট্রাটেজিক সুবিধাগুলো (ট্রানজিট, বন্দর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা বন্ধ, জঙ্গি নিধন ইত্যাদি) ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে; বিনিময়ে কিছুই পায়নি। এমনকি শুল্কমুক্ত পণ্যের লিস্টে বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলো নেই।”
আমি অবাক হব না, যদি এখন তাদের ভাষায় ‘বিশ্বাসঘাতক সরকার’ এবং ‘নব্য দখলদার ভারত’ এর হাত থেকে ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব’ রক্ষা করতে বিএনপি-জামাত জোট দেশে ব্যাপক গণবিক্ষোভ ঘটায় এবং হাসিনা সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে! অবধারিত ফলাফল – বাংলাদেশে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ পুনরায় জাঁকিয়ে বসা! আমি জানি, এতে ভারতের অগ্রযাত্রার বিন্দুমাত্র ক্ষতি হবে না; কারণ পাকিস্তানের হাজারো শত্রুতার মুখেও ভারত এখন অন্যতম বিশ্বশক্তি। পাশাপাশি আরেকটা বিষয় আমি দিব্য চোখে দেখতে পাচ্ছি, তা হলো, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ‘পাকিস্তান’, ‘আফগানিস্তান’, ‘ইরাক’ ইত্যাদি দেশের পাশে বাংলাদেশ নামক নতুন একটি মুসলিম দেশের স্থায়ী অভ্যুদয় ঘটবে!
@কাজি মামুন, যদি সত্যি মৌলবাদী বাংলাদেশের জন্ম হয় তবে ভালই হবে। মুসলমান রা,বিশেষ করে ধার্মিক মুসলিম রমণীরা ( যারা ইসলামের স্তুতি করেন মুসলিম পুরুষদের থেকেও বেশি) ইসলামের মাজেজা টের পাবেন, খারাপ কি তাতে।আর আমরা যারা নাস্তিক ন, সবাই আল্লাহর দয়াতে খুব দ্রুত জান্নাতবাসী হতে পারব। এমনিতে ত জান্নাত আমাদের জন্য হারাম, কিন্তু শুনেছি যে খুন হলে নাকি বেহেশত ফ্রি( অবশ্য নাস্তিকের ক্ষেত্রে এতা কাজ করার কথা না) কিন্তু যেহেতু নাস্তিক্যবাদ কে এদেশে ফ্যাশান ভাবা হয় তাই মোল্লারা হইত জান্নাতের টিকিট দিতেও পারেন, তাই সবাই রেডি হয়ে জান হা হা ।
মমতা বন্দোপাধ্যায়কে ছোট বেলা হতে চিনি তখন ওঁ কলেজে পড়তেন।কারন কালীঘাটের আদি গংগার(বস্তুত পক্ষে একটা বড় নর্দমা) জ্যেঠামশায়ের বাসার থেকে কয়েক কদম দূরেই ওঁদের বাসা। নাম ধরে ডেকে আদর করতেন মনে পড়ে।বাস্তবে সত্যিই পরোপকারী কিন্তু ওই বলে না রাজনীতির মুখ আর বাস্তবতার মুখ একই মানুষের দুটি ভিন্ন মুখ।আমার মনে হয় শেষ পর্যন্ত ওঁ রাজি হলেও হতে পারেন কেন্দ্রের সাথে। মাঝখানে এক্টু নাটক করছেন ভবিস্যতে পশ্চিম বংগের মা্নুষ যাতে দোষ না দেয়।
তবে একটু সুখানোভূতি হছে এইটা ভেবে যে দিল্লি বুঝতে পেরেছে যে তার পায়ের তলার মাটি অচিরেই চিনের হুমকিতে কম্পিত হবে। সাথে নাই কেউ। নাই শ্রীলঙ্কা,নাই নেপাল,নাই ভুটান, পাকিস্তানতো এক পায়ে খাড়া হয়ে আছে কবে চিন কবে ভারতের অরুনাচল প্রদেশ আক্রমণ করবে। সেই দিন পাকিস্তানের হবে মহাশান্তি। বি এন পি ও শান্তি পাবে। আর উত্তর পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্ন বাদিরাত তাই চায়।
ভারত দেরী করে হলেও বুঝেছে বর্তমানে কিছুতেই বাংলাদেশ কে চিনের বেস করা যাবে না। আর বাংলা্দেশের কট্টোর পন্থি মুস্লিমিস্ট রাই খালি ভারত কে দোষারপ করছে না।বলতে গেলে উদার পন্থিরাও করবে। ভারতের পক্ষে এর পরিনতি হবে ভয়াবহ। কারন দেশের মধ্যে দেশ বাংলাদেশ।
জন্মেই তোমার আলো তোমার বাতাস তোমার মধুমোতি আমাকে সঞ্জিবীত করেছিল।আমি সেই পূন্য ভুমির ন্যাজ্য অধিকারের ফল চাই।
তিস্তা চুক্তি বাতিল হল
http://starananda.newsbullet.in/national/60-more/9366-2011-09-05-11-12-14
কেন্দ্র জানাচ্ছে মমতার সাথে সম্মতি ছাড়া এই চুক্তি সম্ভব না। এটা আমি কালই জানতাম-এই প্রবন্ধে লিখেও ছিলাম মমতাকে এড়িয়ে কিছু করার ক্ষমতা কেন্দ্রের নেই কারন-বর্তমান সরকার মমতার ওপর নির্ভরশীল-আগামী নির্বাচনে মমতা পশ্চিম বঙ্গে বোধ হয় ৩৫-৩৮ টির ও বেশি সিট পাবেন-ফলে সেই নির্ভরশীলতা আরো বাড়বে।
মমতা অন্তত এই চুক্তির বয়ান কি হবে, সেটা নিয়ে আলোচনার জন্যে ঢাকাতে আসতে পারতেন।
মমতা বাংলাদেশে না এসে শেখ হাসিনার বড় উপকার করলেন মনে হচ্ছে! আমাদের ভারতী বেগম (ভারত বিরোধীতাই যার রাজনীতির অন্যতম শক্তি)যখন বাংলাদেশ-ভারত চুক্তিকে দেশবিক্রির দাসখত আখ্যা দিয়ে নিদেনপক্ষে একদিন হরতাল করবেন,তখন খুব একটা সুবিধে করতে পারবেন না|কারন,হাসিনা বেগম তখন বলবেন,”খালেদা জিয়া বাংলাদেশের না,পশ্চিমবংগের স্বার্থ দেখছেন মমতার মতো?” তাই শেখ হাসিনার উচিত নূন্যতম (১)একটা টাংগাইলের তাঁতের শাড়ি,(২)এক হালি ইলিশ মাছ, এবং(৩)এক ঝুড়ি ফজলি আম মমতার কাছে পাঠিয়ে দেয়া |আর বিএনপি জামাতের রাজনীতির মেঠো-তালিকায় আরো কিছু উপকরণ যোগ হবে ,এই আনন্দে তাদেরও পুলকিত হওয়াই উচিত!
@ভজন সরকার,
চুক্তি্টি হলে নিসন্দেহে দুই দেশই লাভবান হতো। কিন্তু বাংলাদেশে বিরোধী দল থেকে ইতিমধ্যে বলা আরম্ভ হয়েছে যে মমতা ঠিক কাজটিই করছেন কারন যাদের কারনে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন তাদের স্বার্থকেই তিনি রক্ষা করে চলছেন। বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ তাঁর থেকে শিক্ষা গ্রহন করা। এখানে আসলে নিজ দেশের স্বার্থ বা পশ্চিমবংগের স্বার্থ কোনটাই মুখ্য নয়, মুখ্য হলো নিজের স্বার্থ, এই কারনে শত্রুর শত্রু অনেক সময় বন্ধু হয়ে যায়।
পত্রিকার খবর অনুযায়ী, গত কাল চুক্তির চূড়ান্ত খসড়া দেখার পরে মমতা যখন বেঁকে বসেন, তখন বাংলাদেশের তরফেও তাঁকে বোঝানোর একটা চেষ্টা হয়। মমতার কালীঘাটের বাড়িতে শেখ হাসিনার চিঠি নিয়ে আসেন তাঁর এক দূত। সেই চিঠিতে জল-চুক্তি নিয়ে মমতার সাহায্য প্রার্থনা করেন হাসিনা। মমতা হাসিনার প্রতিনিধিকে বোঝান, তিনি বাংলাদেশের বিরোধী নন। রেলমন্ত্রী হিসেবে তিনি ভারত-বাংলাদেশ যোগসূত্র বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। বাংলাদেশের মানুষের সুবিধার জন্য বনগাঁ থেকে অজমের শরিফ পর্যন্ত ট্রেন চালু করেছেন। কিন্তু এই বিষয়টা তাঁর রাজ্যের স্বার্থ সম্পর্কিত।
অন্যদিকে,মমতা দূত মারফৎ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুযোগ জানিয়েছেন যে, গঙ্গা চুক্তির সময় তৎকালীন দেবগৌড়া সরকার পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেছিল। এ বারে তা করা হল না কেন! মমতার অবশ্য অভিযোগ, গঙ্গা চুক্তির ফলে আখেরে রাজ্যের ক্ষতিই হয়েছে।
আসলে ক্ষতির চেয়ে কি মমতার ইগুতে বেশি চাপ লেগেছে? ভারতের কেন্ত্র মমতাকে এড়িয়ে যাওয়ায় মমতা এর বদলা নিচ্ছেন?
ফলে, পাটা পোতায় ঘষাঘষি মরিচের দফা শেষ। ভারতের কেন্ত্র তাদের রাজ্য সরকারকে জড়িত না করার খেসারত কি আমরা দেব?
@গীতা দাস,
ভুল টা কে করেছে বোঝা যাচ্ছে না। মমতার মতে, তার সাথে যা কথা হয়েছিল ২৫,০০০ কিউসেক বাংলাদেশকে দেওয়া-সেটা না হয়ে ৩৩,০০০ কিউসেক হচ্ছে। সুতরাং কেন্দ্র খেলাপ করেছে। অন্যদিকে মেনন বলছেন, না তিনি সব কিছুই মমতাকে জানিয়েছেন এবং সম্মতি আদায় করেছেন।
আমি তৃতীয় সম্ভাবনার কথা ভাবছি। আসলে কেন্দ্রের দোষ নেই-মমতাকে তারা বুঝিয়েছিল এবং তিনিও হ্যাঁ বলেছিলেন। এর পরে উত্তর বঙ্গে গন্ডোগল শুরু হয়- আর এস পি এই চুক্তির বিরুদ্ধে পথে নামে। মমতাও হাওয়া মোরগ-তিনিও ফলে মুখ ঘুরিয়ে নেন।
বিপ্লব-দা,
অসংখ্য ধন্যবাদ এমন একটি সময়োপযোগী লেখা উপহার দেয়ার জন্য। আবারো আপনি সমস্যার গভীরে যেয়ে ভাবতে বাধ্য করেছেন।
আপনি বলেছেন:”উনি নিশ্চয় জানেন ভারত বিরোধিতা হচ্ছে বাংলাদেশের মৌলবাদী শক্তি মূল বারুদ। আর সেই বারুদের মসলা আসে এই জল বণ্টন চুক্তিগুলো অমীমাংসিত থাকায়।” সত্যি বলেছেন দাদা! বাংলাদেশের বিরোধী দল বিএনপি-জামাতের নেতৃবৃন্দ এবং সমর্থক বুদ্ধিজীবীদের অনেক টক শো আমি দেখেছি। তাদের একটাই কথা, ভারত আসলে পাকিস্তান ভাঙ্গার জন্য বাংলাদেশকে একাত্তরে সহায়তা দিয়েছিল; বাংলাদেশের প্রতি ভালবাসা থেকে নয়। তাই যদি হতো, তাহলে অভিন্ন নদীর পানি বন্টনজনিত সমস্যাগুলো জিইয়ে রাখত না; ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল মরুভূমি বানাতো না; টিপাইমুখ বাঁধ পরিকল্পনা করতো না; সীমান্তে বেড়া দিত না বা মানুষ হত্যা করতো না; ছিটমহল সমস্যা জিইয়ে রাখত না; আমাদের টিভি চ্যানেলগুলোর পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রচারে বাঁধা দিত না, আমাদের পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা রদ করত না ইত্যাদি। এইসব বুদ্ধিজীবীদের কথার উপসংহার হলোঃ আসলে ভারতের সেভেন সিস্টারসের উন্নয়ন, বিদ্রোহ দমন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রভাব হ্রাস প্রভৃতির জন্য সহজ কানেক্টিভিটি দরকার; আর এজন্য দরকার ট্রানজিট; তাছাড়া বাংলাদেশের বন্দর, সমুদ্র বক্ষের তেল-গ্যাস প্রভৃতির উপর নিয়ন্ত্রণ নেয়াটাও ভারতের জন্য জরুরি; এইজন্য ইঙ্গ-মার্কিন সহায়তায় ভারত হাসিনার পুতুল সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে এবং হাসিনাও ক্ষমতায় থাকতে বাংলাদেশকে পুরোই বিক্রি করে দেবে ভারতের কাছে (লক্ষণীয় হলো, এখন আর দেশ দখলের কথা বলা হয় না, বরং দেশের সার্বভৌমত্ব, স্ট্রাটেজিক স্বার্থ এবং বাজার বিকিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়)। কোন কোন বিএনপন্থি বুদ্ধিজীবী তো চ্যালেঞ্জ করেই বলেছেন, বাংলাদেশ কোন সুবিধাই আদায় করতে পারব না; বরং নিজের স্ট্রাটেজিক ট্রাম্প কার্ডগুলো হাসিনা তার ‘প্রভুর’ কাছে হাতছাড়া করবে!
সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, মানুষ এদের প্রচারণা বিশ্বাস করছে! অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, ভারতের বিদ্যুৎ বিক্রি বা ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তাকে পর্যন্ত মানুষ সন্দেহের চোখে দেখছে! বলা হচ্ছে, আমাদেরকে ঋণের জালে জড়িয়ে অর্থনৈতিক খাতে পঙ্গু করার জন্যই ভারত এই পরিকল্পনা নিয়েছে। অবিশ্বাস কোন পর্যায়ে যেয়ে ঠেকেছে যে, মানুষ বলাবলি করছে, ভারত বিদ্যুৎ বিক্রি করবে ঠিকই, কিন্তু প্রয়োজনের সময় সুইচ অফ করে রাখবে (মানে সাবোটাজ আরকি!)।
আপনি লিখেছেন, “ভারত বিগত দুই দশকে বাংলাদেশের স্বার্থ দেখতে ব্যর্থ হয়েছে।” এর ফলাফল কি হয়েছে জানেন, দাদা? বাংলাদেশে এখন পাকিস্তানের পক্ষে বরং বলা সহজ; কিন্তু ভারতের পক্ষে বলতে গেলে লোকজন তেড়ে আসে; এমনকি ১৯৭১ এর কথা বলেও রক্ষা নেই; যুক্তি তৈরি থাকে, ঔ সময় তো ভারত শত্রু পাকিস্তানকে ভাঙ্গার জন্য বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়েছিল! সুতরাং, যেভাবে আমেরিকার হাত থেকে মধ্যপ্রাচ্যকে বাঁচানোর কথা বলে অসংখ্য জঙ্গি রিক্রুট করা গেছে, তেমনি বাংলাদেশেও শত্রু ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য একটি ব্যাপক আকারের ‘জঙ্গি আবাদের’ সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না, যদি এইবারও বড় প্রতিবেশী ভারত ছোট্র ”বাংলাদেশের স্বার্থ দেখতে ব্যর্থ’ হয়।
@কাজি মামুন,
ব্যবসা বা চুক্তি সব সময় উইন-উইন ভাবে হয়। ট্রানজিট চুক্তিতে “যদ্দুর” জানি দুই দেশের লাভ। সমস্যা হচ্ছে চুক্তির খসরাটাই কেও জানে না। ফলে বাজারে প্রচুর রটনা।
একটা চুক্তিতে দুই দেশই যাতে যেতে, সেই ভাবেই দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি করতে হয়। সমস্যা হচ্ছে চুক্তিটা আসলে কি হচ্ছে কেও জানে না-ফলে পশ্চিম বঙ্গে বিশেষত উত্তরবঙ্গ রাগে ফুঁসছে এবং ফলশ্রুতি-এবার ও হইল না। শুধু চুক্তি সাইন ই হবে, কাজের কিছু হবে না-যেহেতু এটি ইন্টারিম চুক্তি এবং মমতার চাপে দুদিনেই অন্তর্বত্তী চুক্তি বসে যাবে।
@কাজি মামুন, ভাল লাগল আপনার মন্তব্য পড়ে,সেই সাথে বিপ্লব দার লেখাটা ত দারুন তথ্য সমৃদ্ধ। আসলে বাংলাদেশের মানুষের ভিতর অনর্থক ভারত বিদ্বেষ কাজ করে থাকে অনেক সময় যেমন ফেসবুকে একটা তথাকথিত দেশপ্রেমিক পেজ যেখানে শেখ হাসিনাকে বেশ্যা বলে গালি দেয়া হল আর ইন্ডিয়া কে বলা হল রেন্ডিয়া। কারন হিসাবে দেখান হল যে তিস্তা চুক্তি হলে নাকি বাংলাদেশের ক্ষতি হত মারাত্তক! আমি প্রতিবাদ করে কিছু কথা লিখলাম ( গালিগালাজের বিরুদ্ধে)আর বললাম যে এই গালি গুলোর মানে কি এবং ভদ্র সমাজে এগুল ব্যবহার যোগ্য কিনা।যাহোক আমি আর পেজ তা দেখতে পাচ্ছি না। সম্ভবত ব্লক করে দিয়েছে আমাকে কারন আমিও অফফেন্স দিয়ে অফফেন্স গুল ঠেকাতে চেয়েছিলাম। যাহোক কাউকে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়া তা কতখানি মানানসই তা আমি জানি না, সেটা খালেদা জিয়াই হন বা শেখ হাসিনা।সত্যি আমার বমি পাচ্ছিল। সত্যি আমাদের মন মানসিকতা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে ভাবতেই লজ্জা লাগে।
পেজ তা হল এই আপনারা দেখতে পারেন।
http://www.facebook.com/odhom.aro.odhom
আপনারা কিভাবে ভুগলেন? মাথায় যে আসছে না। একটু বুঝিয়ে বলুন।
@ফারুক, বিষয়টি আমিও ঠিক বুঝলাম না!
সংবাদ প্রতিদিন-এর খবর ” মমতা অন্তত নিজের ইমেজ বাড়াতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ বিসর্জন দেননি।” ৪ মে, ২০১১
খুব সহজ করে তাৎক্ষণিকভাবে পাঠকদের সামনে যে সমস্যাটার দিকে আঙ্গুল তুলে ধরলেন,ধন্যবাদ।
@স্বপন মাঝি,
দাঁড়ান-আজ আবার আরেক প্রস্থ নাটক হবে। মনমোহন এবং হাসিনার প্রতিনিধিরা বা তারাও নিজেরাও মমতাকে আজ কল করবেন। ব্যাপারট হচ্ছে এই-এই চুক্তি অন্তর্বত্তী-অর্থাৎ দুদিন বাদে বাতিল হতে পারে। এবং মমতা যদি দেখেন উত্তর বঙ্গে তার সমর্থনে ধ্বস নেমেছে-যেটা আপাতত বোঝা যাচ্ছে-উনি এই চুক্তি মানবেন না-ফলে কেন্দ্রকে চুক্তি বাতিল করতে হবে। সুতরাং মমতার আপত্তি নিয়ে এই চুক্তি করা যাবে-কিন্ত টিকবে না। সেটা সবাই জানে।