:: হাইপেশিয়া :: রুকসানা/আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট :: অ্যাডা :: তসলিমা নাসরিন :: হুমায়ুন আজাদ :: দালাইলামা :: সুরের রাণী মমতাজ ::
বাঙালি, না-কি বাংলাদেশি? বিচার চাই, না-কি চাই না? শহীদ প্রেসিডেন্ট, না-কি জনক প্রেসিডেন্ট? বিশাল হৃদয়, না-কি বাকশাল হৃদয়? বুদ্ধিজীবীর পর বুদ্ধিজীবী তাদের জীবন পার করে ফেলেছেন; সেমিনারের পর সেমিনার আয়োজন হয়ে গেছে, পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লেখা হয়ে গেছে, তবু এই সব বিতর্কের সমাধান হয় নি। কারণ সমাধান করার জন্য যে ধানের চাল খেয়ে বড় হতে হয়, সে ধান বাংলার মাটিতে জন্মায় না। তবে, একটা স্বত্ত্ব নিয়ে বাঙালি কখনো বিতর্ক করে নি; সমাধান করাতো দূরে থাক, সমস্যাই সৃষ্টি হয়নি। দল-মত, ধনী-দরিদ্র, উঁচু-নিচু, শিক্ষিত-অশিক্ষিত অবিসংবাদিতভাবে সবাই মেনে নিয়েছে সেই স্বত্ত্ব, পুরুষত্ব; সহজ বাংলায় বলতে গেলে পুরুষ স্বত্ত্ব। তাই, পুরুষত্ব এখানে প্রতিস্থাপিত হয়ে গেছে পুরুস্বত্ত্ব দিয়ে।
কিন্তু আউশ-আমন ধান প্রধান এই অনুন্নত, অর্থহীণ বিতর্কের দেশেও মাঝে মাঝে এমন কিছু সাহসী সন্তানের জন্ম হয়, যাদের উপস্থিতি তিনবেলা পেট পুরে খেতে পারা উন্নত বিশ্বও শুধু স্বপ্নেই কল্পনা করতে পারে। সহস্র মানুষের শিরশ্ছেদ করে বীরের সন্মান পাওয়ার যে-যুগ, সে-যুগ পার হয়ে, ভূখন্ড আর খাজনা আদায়ের যে-যুগ, সে-যুগ পার হয়ে আজকের পৃথিবী অবতীর্ণ হয়েছে অধিকার আদায়ের যুদ্ধে। ডানে-বামে, উপরে-নীচে, দুই হাতে সমানে তীর, ধনুক আর তরবারি চালাতে পারলেই এ-যুদ্ধের যোদ্ধা হওয়া যায় না। তীব্র মনোবল আর অসংকোচ প্রকাশের দুর্বার সাহস দিয়েই শুধু এ-যুদ্ধে নাম লেখানো যায়। নাম লেখানোর পর পিছু না হটে, তীব্র দাপটের সাথে যারা এগিয়ে যেতে পেরেছে তাদের সংখ্যা নগণ্য, এক-দুই শতকে একজন-আধজন। কুবিতর্কের চারণভূমি, যেখানে বিতার্কিকরা সুবিশাল তৃণভুমিতে চারণ করে যায়, সেই তৃণভোজীদের দেশে কপালগুণে অথবা কপালদোষে জন্মেছিলো একজন দুরন্ত যোদ্ধা, তসলিমা নাসরিন।
১৯৬২ সালের ২৫ শে অগাস্ট ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করা ‘তসলিমা নাসরিন’ কে পরিচয় করানোর প্রচেষ্টাই প্রহসণ। কিন্তু, কিসের বিরুদ্ধে তাঁর এই সংগ্রাম, তার এই অভিযান? কোন সে সংঘাতে লিপ্ত আজ গোটা মানবজাতি? উত্তরটা তসলিমা নিজেই দিয়ে রেখেছেন- মানব জাতির এই সংঘাত ধর্মে-ধর্মে নয়, পুর্ব আর পশ্চিমের মধ্যেও নয়; এই সংঘাত যৌক্তিক-মুক্তচিন্তার সাথে অযৌক্তিক-অন্ধবিশ্বাসের, এই সংঘাত প্রথাগতদের সাথে প্রগতিশীলদের; মুক্তির মন্ত্রে যারা দীক্ষিত তাদের সাথে স্থবিরদের এই সংঘাত।
এক ডাণ্ডা বেশিওয়ালা বাংলার পুরুষ হাঁটে ঘাটে মাঠে ময়দানে, যখন যেখানে পারছে, অন্ধকার কি-বা আলোতে ডাণ্ডা ব্যবহার করে চলছে। প্রতিবন্ধী বালিকা, আট বছরের শিশুকন্যা, হাসপাতালের রোগী, প্রাইমারী স্কুলের ছাত্রী, অবুঝ কাজের মেয়ে, এমনকি মাঠের লাল গরুটাও নিস্তার পায়নি ‘ডাণ্ডা’র হাত থেকে। তাতে কারো কোনো সমস্যা হয়নি,হচ্ছেও না। সমস্যা হচ্ছে তখন, যখন কেউ জোর গলায় বলতে আসছে সেই অন্যায় অনাচারের কথা। আর সে যদি জোরগলার কোনো মেয়ে হয়, তাহলেতো কথাই নেই; পুরুস্বত্বের স্বত্বাধিকারী গোটা রয়েল বেঙ্গল পুরুষ জাতি জেগে উঠে, তাদের ডান্ডাগুলো জিহাদী চেতনা নিয়ে শামিল হয় জঙ্গী মিছিলে। একে একে জড়ো হতে থাকে ডাণ্ডা গুলো; জড়ো হতে থাকে বাড়ীর সামনে, চৌরাস্তার মোড়ে, রাজপথে, বায়তুল মোকাররমে।
চরম উত্তেজনায় জেগে উঠা ডাণ্ডাগুলি এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠে যে, তাতে ভীত হয়ে উঠে সরকার, সরকারি দল, বিরোধী দল, আমলা-মন্ত্রী-প্রশাসন। তাই, এতগুলো ডাণ্ডার ঘুম পাড়ানোর জন্য বলি দিতে হয় অধিকার আদায়ের সংগ্রামে লিপ্ত কোনো এক বীরযোদ্ধা-কে। রয়েল বেঙ্গল পুরুষজাতির ডাণ্ডাময় আক্রোশের কাছে অসহায় হয়ে বছরের পর বছরজুড়ে নির্বাসনে তসলিমা নাসরিন। বিদেশের মাটিতে বসে দিনের পর দিন হাহাকার করছেন, আকুতি জানাচ্ছেন দেশে ফিরবার জন্য, একটা একটা করে অসহ্য দিন পার করছেন। কিন্তু কারো যেন সে-দিকে তাকানোরও সময় নেই। সকল দেশের রানী সোনার বাংলা, এদেশের না-কি একটা সংবিধানও আছে! সেখানে না-কি মানুষের অধিকারের কথাও আছে! একদল বানর না-কি সে-সংবিধান নিয়ে আবার লাফালাফিও করে! কি জানি, হয়তো ডাণ্ডার ভারে চাপা পড়ে গেছে তাদের সেই সংবিধান।
তসলিমা বিদেশি কোম্পানীর কাছে দেশের সম্পদ বিক্রি করে দেয়নি, লুট করে নেয়নি দরিদ্র মানুষের সমস্ত কিছু, খুন করেনি, চুরি-ডাকাতি করেনি, পল্টন ময়দানে মাথা ফাটিয়ে দেয়নি; তসলিমা শুধু বলেছিলো, ঘুষ না খেলেই একজন পুরুষ সৎ, সে-যদি হাজারটা নারীর সাথে সম্পর্ক রাখে তাহলেও সৎ। কিন্তু, হাজারটা ভালো কাজ করলেও, শুধু মাথায় ওড়না না দিয়ে, বোরখা না-পরে চললেই একজন নারী অসতী হয়ে যায়, কেন? কেন সততার সংজ্ঞা নারীর জন্য আলাদা? এই বঙ্গীয় বদ্বীপে কেন বলার, প্রশ্ন করার অধিকার যে একমাত্র পুরুষের, সে-নিয়ম ভেঙ্গে ফেলেছিলেন তসলিমা। আর যেন কোনো নারী এ দুঃসাহস করতে না পারে, মাথা উঁচু করে কথা বলতে না পারে, অন্য আর সব নারীদের সামনে সে-উদাহরণ সৃষ্টি করার জন্য বিতাড়িত করা হয় তসলিমাকে।
ধরে নিলাম, তসলিমা বাংলাদেশের সবচেয়ে নিম্নযোগ্যতা সম্পন্ন নিচু মানের লেখক; ধরে নিলাম, তসলিমা বঙ্গদেশিয় তথাকথিত সতী-সাবিত্রী মেয়ে নয়। তাতে কি তার দেশে থাকার অধিকার শেষ হয়ে যায়? তথাকথিত সামাজিক প্রথা ভেঙ্গে ফেলা, ধর্মের নামে দমিয়ে রাখাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ঘরের বাইরে বেরিয়ে যাওয়া, জীবনকে নিজের মত করে চালিয়ে নেয়া, এরকম মেয়েতো বাংলায় এখন আর কম নেই। তাদেরতো দেশ থেকে বিতাড়িত হতে হচ্ছে না। তাহলে, কেন তসলিমাকে নির্বাসনে থাকতে হবে? উত্তর হয়তো এরকম, যা খুশি করুক, কিন্তু সেটা মুখে বলবে কেন? কাগজে লিখবে কেন? হায়রে ভণ্ডের দল! তসলিমার দোষ তাহলে তসলিমা ভণ্ড নয়; মুখে এক, কাজে-কর্মে আরেক, তসলিমা সেই মেয়ে নয়। তাই তসলিমার মত সাহসী, স্পষ্টভাষী যোদ্ধাকে নিজেদের পাশে স্থান দেয়ার সাহস কিংবা যোগ্যতা ভণ্ডদের হয়ে উঠেনি।
তথাকথিত, যুদ্ধাপরাধীরা বাংলায় মন্ত্রী হয়। তাদেরকে নির্বাসনে যেতে হয়-না। কারণ, তাদের ডাণ্ডা আছে। তাদের ক্ষেত্রে, রয়েল বেঙ্গল ডাণ্ডাধারী পুরুষজাতির ডাণ্ডাগুলি ঘুমিয়ে থাকে। চোর-বাটপার, গুণ্ডা-বদমাশ, পীর-দরবেশ, স্মাগলার, ছিনতাইকারী, রাজাকার, খুনী, ধর্ষক, মাস্তান সবার জায়গা আছে বাংলায়; জায়গা নেই শুধু তসলিমা নাসরিনের।
জুন ১৮, ২০১১
[email protected]
কিছু কিছু আতেলেকচুয়াল আছে যারা তসলিমার কথা উঠলেই তার লেখার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলে। আমি বুঝি না, যেখানে একজন মানুষকে সত্যি কথা বলার জন্য দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে সেখানে সেই লেখক কি চটি সাহিত্য রচনা করে নাকি মহাকাব্য রচনা করে সেটা তো বিবেচ্য হবার কথা নয়। একজন মানুষ হিসেবেই তো তার নিজের দেশে থাকার অধিকার তার জন্মগত। সেখানে লেখার মানের কথা আসে কেন?
ধন্যবাদ সুন্দর প্রতিবাদি লেখাটার জন্য।
@সাইফুল ইসলাম,
অনেকেই লেখার মান নিয়ে কথা বলে। সেটা আসলে অন্য প্রসংগ এবং আপেক্ষিক ব্যাপার। লেখার মান খারাপ হলেতো আর মানুষকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিতে হয় না।
ধন্যবাদ আপনাকে।
@মইনুল রাজু, তসলীমা নাসরিনের লেখার মান খারাপ নাকি? আমি তো কয়দিন আগেই আমার মেয়েবেলা পড়লাম। ভালোই তো মনে হলো। যদিও লেখার সাহিত্যমান বুঝার ক্ষমতা আমার কমই। তাই আপনার একটা মন্তব্য আশা করছি।
@আতিকুর রাহমান সুমন,
আসলে লেখার মান জিনিসটা কিছুটা আপেক্ষিক। সেটা পাঠকের উপর নির্ভর করে। তসলিমার লেখার মান আমার কাছে ভালোই মনে হয়। কিন্তু, এটা ঠিক যে, বাংলায় তসলিমার চেয়ে অনেক বেশি সাহিত্যমানসম্পন্ন লেখক আছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় তসলিমার বড় দিক তার লেখার সাহিত্যমান নয়, তার বড় দিক হচ্ছে লেখার মধ্য দিয়ে অসংকোচে সত্য বলার সাহস। যেটা বাংলাদেশের মত একটা দেশে খুব বিরল এবং কঠিন।
ধন্যবাদ।
@মইনুল রাজু,
শতভাগ সত্য। তসলিমা এমন কোন হাতিঘোড়া সাহিত্যিক নয়। কিন্তু আমি তাকে যে কারনে সমর্থন করি তা হল তার সত্য বলার সাহস। সত্যের কামানের গোলায় আমাদের সমাজে গড়ে ওঠা ভন্ডামী, মিথ্যার যে দেয়াল উঠেছে সেটাকে ভাঙতে উদ্যোগী হয় কয় জন? সেই দুএকজনের মধ্যে একজন হলেন তসলিমা।
I disapprove of what you say, but i will defend to the death your right to say it. আমি সম্পূর্নভাবেই এই মতমতে বিশ্বাসী।
@মইনুল রাজু, একমত।
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান বলেন আর যাই বলেন, ওরা সবাই তথাকথিত সেন্সিটিভ ইস্যু বলে এড়িয়ে যাবে। আর, আমাদের মতো দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানে যারা নিয়োগ দেয় তারা সবাই মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী। সবকিছু নষ্টদের হাতে চলে গেছে। অন্যদিকে, অধিকার আদায়ের জন্য মানুষ যায় আদালতে, সেটারইতো কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। অতএব, সবকিছু কমপ্লিকেটেড্।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
@মইনুল রাজু,
উত্তরটা অনেকেরই জানা। তাই যখন মানবধিকার- মানবধিকার খেলা খেলে
তথাকথিত বুদ্ধিজীবীর দল। টেলিভিশনের পর্দায় ঘন ঘন দেখা যায়। নিতান্তই হাস্যকর লাগে।
আসলে সবই সাজানো দাবার গুটি। তসলিমা নাসরিন দেশে এলে কারা কারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে জানে বোকা মানুষের দলও। তাই এই নিয়ে আমাদের আসলেই কি বা করার আছে। নিস্ফল আস্ফালন করা ছাড়া। ধন্যবাদ তবু আপনি অন্ততঃ মনের কথাটা বলেছেন, যা অনেকের মনের কথাই প্রতিধ্বনী।
অনেকদিন পর মুক্তমনায় এলাম। এমন একটা লেখা পড়লাম যে লেখা কিনা অনেকের মনের কথার আকুতি।
এখানে অনেকেই অনেক মূল্যবান কথা বলেছেন। আমি তাই পূনুরুক্তি করতে চাইনা। কেবল একটা কথা জানি তসলিমা নাসরিন দেশে ফিরে এলে হয়তো অনেকের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে তাই আসবার অনুমতি পাচ্ছেন না তিনি।
সেই অনেকের মাঝে তথাকথিত বুদ্ধীজীবী মহল, সরকারি মহল, লেখক মহল,
অনেকেই আছেন। যেহেতু তিনি সত্য কথা বলতে দ্বিধা করেন না তাই এই সকল মানুষজন তার আগমনকে আতঙ্কের চোখে দেখবেন।
প্রশ্ন এত উচিত কথা বলার যে প্রতিষ্ঠান – মানবধিকার প্রতিষ্ঠান-
তারা কি করে চুপ মেরে আছেন বছরের পর বছর?
নিজ দেশে ফিরে আসার এতোটুকু অধিকার কি তারা তসলমা নাসরিন কে ফিরিয়ে দিতে পারেন না?
জাতি হিসাবে আমাদের যদি গর্ব করার মত কয়েকটি জিনিস থাকে তার মাঝে তসলিমা নাসরিন একজন। এভাবে নিজের জীবন বিপন্ন ক’রে আর কে বলেছে মানবাধিকারের ক্থা, কে মানুষকে দেখিয়ে দিয়েছে ধর্মের ঘৃণ্যতা? আর সত্য বলার জন্য তাঁকেই হতে হল নির্বাসিত, তাঁর একের পর এক বই করা হল নিষিদ্ধ! কিন্তু যেই ধর্মগ্রন্থগুলো আজেবাজে কথায় ভর্তি সে বইগুলো কেন নিষিদ্ধ হলনা? তাঁকে নির্বাসিত ক’রেও তারা তাঁর তেজদীপ্ত কণ্ঠ রোধ করতে পারেনি, তাঁর জীবন হরণ করার আপ্রাণ চেষ্টা ক’রেও তারা তাঁর কলম হরণ করতে পারেনি।
@তামান্না ঝুমু,
জীবন হরণ করা তাদের জন্য অনেক সহজ, জীবন হরণের হুমকি দেয়া আরো সহজ; কিন্তু কলম হরণ করা অত সহজ নয়, তসলিমা সেটারই নমুনা।
এতটা অকপট, সাহসী, প্রথাবিরুধী কন্ঠ কখনোই বেশি ছিলনা। তাদের সবচেয়ে বড় গুণ ও অপরাধ হচ্ছে তারা সমাজের বিভিন্ন স্তরের চরিত্রগুলোর মুখোশ খুলতে পারেন, অবলিলায় ভাঙ্গতে পারেন হাজার বছর ধরে লালিত কুপ্রথা, অকপটে বলতে পারেন নিজের এবং অন্যের ভূগান্তির কথা। তারা শালীনতা, ধর্ম ও প্রথার দোহাই দিয়ে কন্ঠ রুদ্ধ করতে চায়। মুখোশধারী ভণ্ডদের আন্দোলনের মূখে যেতে হয় নির্বাসন, দিতে হয় প্রাণ। আপনার অনেকের ভীড়ে একজন প্রবন্ধে তাসলিমাকে নিয়ে এই লেখাটি যথাযথ মূল্যায়ন বলে মনে করি। ধন্যবাদ আপনাকে ।
@বাদল চৌধুরী,
আপনার মন্তব্যের সাথে একমত। আপনাকেও ধন্যবাদ। 🙂
আমার প্রিয় একজন লেখককে নিয়ে অসাধারণ একটি লেখা। ধন্যবাদ (F)
@রৌরব,
আপনাকেও ধন্যবাদ। 🙂
@মইনুল রাজু,
আপনার কন্ঠের তীব্রতাকে স্বাগত জানাই। আমাদের প্রথাগত সমাজটাই এমন, বিশাল বন্দী কারাগার তো বটেই, মেয়েদের জন্য কারাগারটা বিশালও নয়, কেবল একটা বোরকার আয়তনের সমান। অথবা শাখা সিঁদুরের প্রতীকি চিহ্নের তলায় গুটিশুটি মেরে থাকা। এই লেখার লেখক আপনি না হয়ে আমি হলে দেখতেন, মুক্তমনার মত মুক্ত চিন্তার প্ল্যাটফর্মেও অনেকেই হয়ত মনে মনে বলত, এমন উগ্র আক্রোশী কন্ঠে চিৎকার করে কেন মেয়েটা? তসলিমা নাসরিন যত যাই কিছু করুক, তার জীবনদর্শন, মতামত, ধর্মমত, কিংবা জীবন যাপন রিতী নিয়ে যতগুলো প্রশ্নই করা হোক না কেন, তসলিমার সাথে যা করা হয়েছে, তা স্রেফ মানবাধিকার লংঘন। এই একটা প্রশ্নের মুখোমুখি হবার সাহস দেখাতেও কেউ রাজি না। আর এই মানবাধিকার লংঘন করেছে সংবিধান ধারী রাষ্ট্র নামের একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে একদিন মানুষের মত বাঁচার জন্যই একাত্তর এসেছিল। তাও আবার ধর্মবেশ্যাদের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে… 🙁
তসলিমা নামটার সাথেই তারা এমন ভাবে ঘৃণার আবরণ জড়িয়ে দিয়েছে, যে কোন ভদ্র সামাজিক নারীও তাদের ভদ্র সমাজে তসলিমার নাম পারতপক্ষে উচ্চারণ করতে চায় না, পাছে লোকে খারাপ ভাবে। তসলিমার পক্ষে নয়, তসলিমার মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলা তো দূরে থাক।
আমাদের দেশের বা পৃথিবীর অধিকাংশ নারী বাদীই এখন জীবন যাপনের অধিকারের জন্য দাবী তুললেও (শিক্ষা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ইত্যাদি) মানুষ হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য দাবী তুলেছেন কজনা? এদেশে থেকে বীরঙ্গনা নারীরা পায়নি তাদের সামাজিক মর্যাদা, যুদ্ধিশিশুরা পায়নি মানবাধিকার, আমিনী ঠিকই ভোট পায়, ধর্মবেশ্যাগুলো ঠিকই সংসদে পা রাখে। ঘেন্না জানাই এই মানসিকতার জন্য। সেখানে তসলিমা নাসরিনের দেশে থাকার অধিকার লংঘন হলে কি আসে যায়?
ধন্যবাদ রাজু ভাইয়া, আপনার বলিষ্ঠ লেখার জন্য।
@নীল রোদ্দুর,
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আমি জানি, একই জিনিস আপনি লিখলে আপনি যা বলেছেন ঠিক তাই হতো। আমাদের এখনো অনেক পথ পাড়ি দেবার বাকী। কাগজে-কলমে মুক্তচিন্তা দিয়ে ভরিয়ে ফেলে কোনো লাভ নাই, যতক্ষণ না অন্তরে তার প্রতিফলন ঘটছে। তবুও, ভালো লাগে, একটু একটু করে হলে মানুষ সুন্দর করে চিন্তা করতে শিখছে। 🙂
“তথাকথিত” শব্দটি এখন বাংলার মানুষের জীবনে-মরনে প্রিয়তম শব্দ।তথাকথিতরাই ডান্ডা মেরে দিয়ে যেন কঠিন পাথরের মতো পুরো জাতির ঘাড়ে সওয়ার হয়ে গিয়েছে।যত বিভৎসতা,হিংসা,দ্বেষ,জোর-জুলুম,যেন আমাদের জীবনের নিয়তি। এখানে তথাকথিতরাই এখন আমাদের জীবনের নিয়মকর্তা।এখানে এখন শুধু ঘোর অনামিশার রাত।আমরা আলোকে মারাত্বক ভয় পাই,তাই অন্ধকারকে জীবনের ভালবাসা বলে মেনে নিয়েছি। সেইজন্য আলোকিত মানুষজনকে আমরা আমাদের জীবন থেকে কবর দিয়ে দিয়েছি।অথবা দেশান্তরী করেছি।
তসলিমার সাথে আমার ২০০৯ সালে দুইবার একান্ত ঘরোয়া পরিবেশে দেখা হয়েছিল।তাঁর সাথে আমাদের দেশের “তথাকথিতদের”এবং তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে অনেক অনেক কথা হয়েছিল।তার সাথে আমার ছবি ও ভিডিও করেছিলাম। সে আমাকে বলেছিল তাঁর ছবি বা ভিডিও যেন কাউকে না দেই।তাঁকে কথা দিয়েছিলাম আমার তোলা ছবি কাউকে দিব না,এমন কি অজয় রায় স্যারকেও না।আমি আমার কথা আজো রেখেছি।
রাজুর “তসলিমাকে” নিয়ে এই লেখা পড়ে শেষতঃ অশ্রু সংবরন করা কঠিন হয়ে যায় কারন তাকে আমি এতো কাছ থেকে জেনেছি ,শুনেছি তার দেশে ফেরা জন্য কি আকুতিময় আকুতিভরা মিনতি।শুনেছি তার নিজমুখে শেষতঃ নিজদেশে না হলেও অন্ততঃ যেন শেষমেষ কলিকাতায় থাকা যায় এ চেষ্ঠা করবেন।।প্রশ্ন করেছিলাম যদি শেষতঃ কলিকাতায়ও থাকতে না পারেন তাহলে কি করবেন ? তখন আশিমণ ওজনের ভারী করা এক নিঃশ্বাস নিয়ে এর উত্তর দিয়েছিল হয় ফ্রান্সে অথবা নিউওয়ার্ক থাকার চেষ্টা করবেন।
তসলিমা এখন কোথায় আছে জানি না।একবার শুনেছি সে নাকি নিউওয়ার্কে থাকে।
রাজুকে ধন্যবাদ না দিয়ে শুধু বলব এ লেখাটি অন্যসব লেখারগুলির মতোই আরো অনেক অনেক বলিষ্ট এবং জোরালো।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
মামুন ভাই,
আপনার সাথে তসলিমার দেখা হয়েছে শুনে ভালো লাগলো।এরপর যোগাযোগ করার কোনো উপায় পেলে আমাকেও একটু জানাবেন দয়া করে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
@ফারুক,
আমি খুবই অবাক হয়েছি যে আপনি এই পোষ্টের সাথে একমত। আসলে মতভেদ থাকতেই পারে, তাই বলে তেড়ে আসা বা দেশ থেকে বের করে দেয়া বর্বরতা ছাড়া আর কিছুই না।
তসলিমাকে দেশ ছাড়া করে শুধু তসলিমাকেই ক্ষতি করেনি। মোল্লারা দেশের সকল প্রগতিশীলদের প্রতিবাদের সাহস ভেঙ্গে দিয়েছে। বাক স্বাধীনতাকে বাস্কবন্ধি করেছে নষ্টরা। আমিনির মত ছাগলরা এখন আমাদের নেতা। পত্রিকাওয়ালারা এখন কোন কিছু ছাপানোর আগে দুইবার ভাবে মোল্লাদের কথা, হুজুরদের মনে যাতে কষ্ট না লাগে। সরকার অধিকাংশ জনগণের কথা না ভেবে গুটিকয় মোল্লার মেজাজের দিকে তাকিয়ে আইন তৈরি করে। আর জনগণ ধীরে ধীরে হলেও মোল্লাদের দলের দিকেই যাত্রা করছে। গ্রামে স্কুলের চেয়ে মসজিদ তৈরির প্রবণতাও বাড়ছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান গ্রামে কমতে কমতে শূন্যের কোটায়। পশম ওয়ালারা ব্যাপক হারেই বাড়ছে।
তসলিমার মত সাহসী মানুষের বড়ই অভাব আজ।
@হেলাল,
মোল্লাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হলে, এরা এমনভাবে ব্রেইনওয়াস করে যে, কিছু নির্বোধ মানুষ নিজের জীবন উৎসর্গ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে থাকে। সরকার অনেক সময় আসলেই অসহায় হয়ে পড়ে। তবে, এভাবে অসহায়ত্ব দেখিয়ে বাক্সে ঢুকে থাকলে, একসময় আর বের হবার সুযোগ থাকবে না।
লেখককে ধন্যবাদ তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে লেখাটা উপহার দেয়ার জন্য। লেখাটির বিষয়-বস্তুর সাথে একমত পোষন করছি।
এটাই আসল কথা। তসলিমা নাসরিনকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে নেবার জোর দাবী জানাচ্ছি।
@ব্রাইট স্মাইল্,
এখানে দাবী জানালে আসলে কি কোনো কাজ হবে। আমাদের কারো দ্বারা যদি সম্ভব হয়, তাহলে জায়গা মত দাবী পৌঁছানোর চেষ্টা করলে হয়তো কিছুটা কাজ হতো।
পোস্টের বক্তব্য ও দাবীর সাথে একমত। (Y)
@ফারুক,
ধন্যবাদ। 🙂
হয়তো নয়, আসলেই উত্তর এটা। তথাকথিত আধুনিক অথবা প্রাচীন ধার্মিক নর ও নারীরা পর্দার আড়ালে ভন্ডামী, নোংরামী, অসৎ কাজ, মিথ্যাচার, ধর্মের আইনলঙ্ঘন অহরহই করছে। অথচ কেউ তা মুখে বললে বা কগজে লিখলে এরাই ডান্ডা নিয়ে আসবে ধর্ম রক্ষায়।
এবার কলম ধরুন এই কুৎসিত ডান্ডার বিরুদ্ধে। মানবজাতি আজ অসম্ভব নোংরা, অদৃশ্য এক লৌহশক্ত দেয়ালঘেরা কারাগারে বন্দী। এ থেকে পরিত্রাণের একটাই পথ, সাংস্কৃতিক বিপ্লব।
@আকাশ মালিক,
একমত!
আর বাংলাদেশে এটা আরও বেশী সরকারগুলো ভোট হারাবার ভয়ে একজন
তসলিমার কান্না শোনেনা!
তাছাড়া তসলিমারও উচিত বাংলাদেশের লেখকদের সংঘটিত করা!
তাদেরইতো তার জন্য উচ্চকন্ঠে রাজপথে নামা উচিৎ!
তাদের অনেককেই তসলিমা লেখা দিয়ে আহত করেছেন!
তসলিমার পাশে আজ কেউ নেই শুধু তার সমব্যথীরা ছাড়া!
দেশেও এদের সংখ্যা কমই মনে হয়!
এটাই বাস্তবতা!
এত মিছিল মিটিং হয়!
দুঃখজনকভাবে দেশের বুদ্ধিজীবিরা তসলিমার ব্যাপারে অবাক করার মতই নীরব!
@লাইজু নাহার,
বাংলাদেশের লেখকদের সংগঠিত করা তসলিমার জন্য একটু কি কঠিন নয়? আর যে লেখকদের কথা বলছেন, তাদের মধ্যেওতো বেশিরভাগই পুরুস্বত্ব নামক ক্যান্সারে আক্রান্ত।
@আকাশ মালিক,
আর এটা শুরু করা যায় নিজের এলাকা থেকেই, ছোট-খাটো পাঠাগার, পাঠ-চক্র, সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে। যদি সম্ভব না হয়, তো পালাগান, কবিগান বা বাউল গানের আসর বসিয়েও কাজটা শুরু করা যায়। বাঙলা বিভাজনের পর সাংস্কৃতিক দিক থেকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, গ্রাম। সেখানে বরং সৃষ্টি হয়েছে শূন্যতা আর সে জায়গাগুলো দখল করছে ‘মরজিদ-মাদ্রাসা’ (গ্রামাঞ্চলের মানুষ মসজিদ বলতে পারে না বা বলে না) মগজের মাঠ তো আর খালি থাকবে না।
মানুষের পেটে ভাত নেই, মগজের শান্তি ঈশ্বরও থাকবে না, তা কি করে হয়? কিন্তু এই ঈশ্বরও যে ভাত-কাপড়ের বাঁধা, এটা উম্মোচন করতে পারলে, মানুষ তার অস্তিত্বের প্রশ্নেই হয়তো আর একটু এগুবার সাহস পাবে।
@স্বপন মাঝি,
আকাশ মালিকের
এই পথটাকে মোটা দাগে রেখে আপনার
এই কথাটা খুব মন কাড়লো। আমি কবিগানের পক্ষে।
তৃণমূল পর্যায়ে বাঙ্গালি সংস্কৃতিকে মোল্লারা সুপরিকল্পিত ভাবে যে নোংরা করে চলেছে তা তো আর বলবার অপেক্ষা রাখে না। গ্রাম বাংলার মানুষের সারল্যকে নিয়ে ব্যাবসা এই মোল্লাদের। এই সহজ মানুষগুলোকে ধর্মের ভয়সহ অন্যসব ভয় দেখিয়ে বেচারাদের জীবন ভীতিময় ও ধর্মময় করে দিয়েছে। কবিয়ালদের যুক্তির লড়াইয়ের আসরের বদলে ভয় ভিত্তিক মোল্লা সাঈদী ধরনের ওয়াজ শুনতে বাধ্য করা হচ্ছে। গ্রাম বাংলার সহজ সরল মানুষেরা এখন সারারাত ধরে অন্ধ বিশ্বাসের ধমক শুনে ভয় নিয়ে ঘুমাতে যায়।
যুক্তিহীন ধর্মভয়ের বদলে কবিয়ালদের যুক্তিপূর্ণ কবিগান ছিল আমাদের সংস্কৃতির আরো একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। গ্রামে এটি ফিরিয়ে আনতে পারলে তৃণমূল পর্যায়ে বাঙ্গালি সংস্কৃতিকে মেরামত করা হয়ত সম্ভব। নতুন করে প্রতিরোধ সম্ভব।
গ্রাম পর্যায়ে কবিগানের সংগঠন, সম্বেলন, প্রতিযোগিতা, প্রসার, আর পূরস্কারের মাধ্যমে হয়ত তৃণমূল পর্যায়ে বাঙ্গালি সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করা যাবে।
এগুবার জন্য সংগঠক আবশ্যক।
@আকাশ মালিক,
কলম ধরে কতটুকু হবে জানি না। যারা কলম ধরে তারাওতো বিক্রি হয়ে গেছে। জানি, তবুও থেমে থাকলে চলবে না। দেখা যাক, অবিক্রিত কলম কতদিন ধরে রাখা যায়।
তসলিমা নাসরিনকে লিখেছেন, খুব ভাল লেগেছে।
কবি শামসুর রাহমান আক্রান্ত হয়েছিলেন, ডঃ আহমদ শরীফের ফাঁসির দাবিতে পোস্টারে পোস্টারে ভরে গিয়েছিল সারা দেশের অলি-গলির দেয়াল। ডঃ হুমায়ুন আজাদকে খুন করা হয়েছে। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর উত্থান তো একদিনে হয়নি, রাষ্ট্র বেশ ভালভাবেই পুস্টি সরবরাহ করে এসেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিছু প্রতিরোধ এসেছে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। জংগিরা যথারীতি আদালত থেকে বেরিয়ে এসে হামলা করেছে প্রতিবাদী জনগণের উপর। জনগণের প্রতিরোধ ভেংগে দে’য়া এবং ধর্মীয় রাজনীতির উর্বর ভূমি নির্মাণে কারা কি ভূমিকা রেখেছে ঐ সময়ের পত্র-পত্রিকাগুলো নাড়ানাড়া করলে বেরিয়ে আসবে। রাষ্ট্র কেন তসলিমার বা জনগণের পক্ষ নেবে?
প্রগতিশীল ও অগ্রসর চিন্তকদের অনৈক্যও এক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। শুধু তাই নয়, কেউ কেউ বলেছেন, বিদশি চর, কেউ বলেছেন, জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দে’য়া ঠিক নয়। জনগণ আর ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে পার্থক্য তাদের চোখে ধরা পড়েনি।
তসলিমা নাসরিন যখন আক্রান্ত, তখন তার কাছের মানুষরা উধাও। মাঠে নামা তো দূরের কথা।
@স্বপন মাঝি,
প্রগতিশীলরা আসলে অস্ত্র নিয়ে মাঠে নামতে পারে না বা নামতে চায় না, প্রগতিশীলরা দাবী আদায় না হলে হরতাল ডাকে না বা ডাকতে চায় না। কিন্তু, আপনি হয়তো অনুধাবন করতে পারেন যে, এ-সব ছাড়া বাংলাদেশে দাবী আদায় করা কঠিন।
মাঠে নামতে হয়তো কেউ কেউ চায়। কিন্তু, সেটাতে কি হয়? ঘরে বসে বসে কিছু লোক জাবর কাটে আর শান্তি পায় এই ভেবে যে, যাক কিছু লোক হলেও মাঠে নেমেছে। কিন্তু নিজে মাঠে নামে না। অন্যদিকে, মাঠে নামা লোকগুলো বলির পাঁঠা হয়ে পড়ে।
সব মিলিয়ে আমরা একটা অচল সমাজ ব্যবস্থা এর মধ্যে বসবাস করছি। যুক্তি নির্ভর সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠতে হয়তো অনেক দেরী আছে এখনো। তবে, সুখের কথা হচ্ছে, আস্তে আস্তে আমরা যুক্তি নির্ভর সমাজ ব্যবস্থার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি। আশা করি সামনে অন্তত প্রগতিশীল ও অগ্রসর চিন্তকরা ঐক্যবদ্ধ হবার সাহস ও পরিবেশ খুঁজে পাবে। 🙂
আপনার সাথে আমিও একমত।ভালো লিখেছেন।
একজন লেখক যুক্তি দিয়ে কথা বলবেন কিন্তু তা যদি আমাদের পা চাটা কথা না হয় তবে তা সহ্য করতে আমরা রাজি নই!!!হায়ে রে গনতান্ত্রিক দেশ!!!হায় রে বাক স্বাধীনতা।
আপনি বলেছেন এমন মেয়ে অসংখ্য।আমি কিন্তু আমার চারপাশে প্রথাভঙ্গ সাহসী মেয়ে হাতে গোনা মাত্র কয়জনকে পেয়েছি।
এদেরকে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হচ্ছে না কিন্তু এরা ভালো অবস্থানেও নেই।এদের সম্পর্কে আমদের দেশের ‘সামাজিক’ মানুষের ধারনাও কিন্তু খুব নীচু মানের।
তসলিমাকে শ্রদ্ধা।উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা যিনি পুরুষতান্ত্রিক প্রথাকে নারী হয়ে ভাঙ্গার ট্রেন্ড তৈরি করে গিয়েছেন।তিনি দেখিয়ে গিয়েছেন লজ্জা নয় সাহসীকতা নারীর ভূষন একজন মানুষ হিসেবে।
@রাহনুমা রাখী,
আপনার সাথে একমত। আমি অসংখ্য বলে আসলে বুঝাতে চেয়েছিলাম, তাদের সংখ্যা খুব একটা কম নয়। অসংখ্য শব্দটা সঠিক হয়নি। মূল লেখায় পরিবর্তন করে দিলাম। ধন্যবাদ। 🙂
১৯৬৫ সালটা কি ঠিক আছে। একটু খটকা লাগছে।
তসলিমা নাসরিণকে নিয়ে আজ কাল আর কেউ মুখ খুলে না। শিল্পী-কবি-সাহিত্যিকরাও মুখ ফিরিয়ে থাকে। আপনার ক্ষোভ ভরা লেখা খুব ভাল লাগল। দেশে সংবিধান আছে। আইনের শাসন আছে। তসলিমা আইন অমান্য করলে তাঁর বিচার হতে পারে। দেশের নাগরিক দেশে ধরে না রাখতে পারার দায় কার?
@নৃপেন্দ্র সরকার,
সালটি হবে ১৯৬২। সামনের আগস্টে তাঁর বয়স হবে ৪৮।
when is the birthday (day of the year on which the date of birth fell) of Taslima Nasrin, also spelled Taslima Nasreen and popularly refrerred to as ‘Taslima’, her first name rather than ‘Nasreen’ (born 25 August 1962 in Mymensingh, Bangladesh), the Bengali Bangladeshi author?
http://www.trueknowledge.com/q/when's_taslima_nasrin's_birthday
@নৃপেন্দ্র সরকার,
অনেক ধন্যবাদ নৃপেন্দ্র’দা। আমারই ভুল হয়েছিলো। ঠিক করে দিলাম জন্মসালটা। 🙂
@নৃপেন্দ্র সরকার,
উনি উনার টুইটার অ্যাকাউন্ট এবং ওয়েবসাইটের ডোমেইন নিবন্ধন করেন Taslima Nasreen স্পেলিং এ। যাহক এটা কোন ব্যাপার না। এমনি বলছি। 🙂
মইনুল রাজু একটা দারুন লেখা লিখেছেন। তিনি খুব স্বাভাবিক কারনেই ভাষার ব্যবহারে মাত্রা রাখেন নি। এটার প্রয়োজন ছিল। কোন যুক্তিপূর্ণ কারন ছাড়াই তসলিমা নাসরিনকে নিজ দেশে ফিরতে না দেয়াটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। তসলিমা নাসরিনের লেখা যদি কারো ভাল না লাগে, তার জবাব লেখা দিয়ে দিক!
তসলিমা নাসরিনের দেশে ফেরা নিয়ে বহুদিন ধরেই আমার নিজের কিছু একটা লেখার ইচ্ছা ছিল। তাই কঠিন এই লেখাটা কিছুটা হলেও আমার স্বস্তি পাওয়ার কারন হল।
@নাসিম মাহমুদ,
আমি অনেক কষ্টে ভাষার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে, এই পর্যায়ে এনেছি। :)) যে-ভাষা মনে এসেছে তার অর্ধেকও এখানে লিখতে পারি নি। 😛
দীর্ঘদিন মনের মধ্যে জমতে থাকা ক্ষোভগুলোর প্রতিফলন এই লেখায় পেয়ে ভাল লাগল। এদেশে এত এত প্রগতিশীল লেখক-বুদ্ধিজীবী , এত এত প্রগতিশীল পত্রিকা। তারা সবাই সমাজ থেকে ধর্মীয় ভণ্ডামি দুর করতে চায়। অথচ তসলিমা নাসরিনের ব্যাপারে নিরুত্তর। সরকারের কি এই অধিকার থাকা উচিত কোন নাগরিককে দেশ থেকে বের করে দেবার? মোল্লারা তার জন্য হুমকি হলে সরকার তার নিরাপত্তা দিবে, সে যেহেতু রাষ্ট্রের জন্য কোন হুমকি না, তাহলে সরকারকে এই অধিকার কে দিল , তসলিমাকে দেশ থেকে বের করে দেবার? ইদানীং তো আদালত স্বেচ্ছায় বহু অর্ডার দিতেছে সরকারকে , এই বিষয়ে কিছু বলছে না কেন? তসলিমা কি চেষ্টা করেছে আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি ফয়সালা করার যাতে সরকার প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেয়?
তসলিমাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে মুক্তমনা কি কিছু করতে পারে?
মইনুল রেজাকে ধন্যবাদ তসলিমার জন্য এমন সুন্দর একটি লেখার জন্য।
@হেলাল,
মুক্তমনা বা আমরা হয়তো লিখে কিছু করতে পারি। কিন্তু প্রকৃত ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা আমাদের হাতে খুব কমই আছে। অন্যদিকে, তসলিমা নাসরিনের সাথে কারো যোগাযোগ থাকলে হয়তো আমাদেরকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে পারেন বা জানাতে পারেন আমরা কিছু করতে পারি কি-না। মুক্তমনার কোনো পাঠক যদি প্রশাসনিক পর্যায়ে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন, সেটাতেও হয়তো কাজ হতো।