আজ ১2 ই মে। ২০১১।
গত দুমাস ধরে পশ্চিম বঙ্গ বাসী সহ সব ভারতীয় বাঙালীরা তীর্থের কাকের মতন চেয়ে আছে এই দিনটির জন্যে। ৩৪ বছর ধরে যে কমিনিউস্ট রাহু পশ্চিম বঙ্গকে গ্রাস করেছিল-অদ্য তা মুক্ত। দুঃখ একটাই রুমানিয়াতে ১৭ ই ডিসেম্বর বা বার্লিন প্রাচীর ভাঙার উৎসবে আমি ত ছিলাম না সেখানে-আজ ১৩ ই মেতেও আমি পশ্চিম বঙ্গে নেই। কিন্ত স্যোশাল মিডিয়ার দৌলতে এখন অনুভব করতে পারছি কমিনিউস্টদের হাত থেকে মুক্তির স্পন্দন। মমতার বাড়ির চারপাশে সবুজ আবীর উড়ছে। মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব হারছেন। অর্থমন্ত্রী হারছেন। রাস্তায় সবুজের ঢল নেমেছে-শুধু টিভি ফিডের মাধ্যমেই দেখতে হচ্ছে। মমতা কি করবেন-কেও জানে না। শুধু কমিনিউজমের নাগপাশ থেকে একটা রাজ্য মুক্ত হচ্ছে-তাতেই সবাই খুশী।
কেও যদি ভেবে থাকে কমিনিউস্ট শাসন বিজেপি বা জামাতের শাসনের থেকে ভাল-খুব ভুল ভাববে। বুদ্ধদেব দেশের সবথেকে সৎ এবং গরীব মুখ্যমন্ত্রী সন্দেহ নেই। কিন্ত তাতে কি? যদি লোকে খেতে না পায়, দৈনন্দিল লেবাররা বছরে চল্লিশ দিন কাজ পায় না-সেখানে লোকজন কি মুখ্যমন্ত্রীর সততা ধুয়ে জল খাবে? তারপর যদি মানুষের স্বাধীনতাকে হরন করা হয়, খুন করে শ্রেনী তত্ত্ব দিয়ে জাস্টিফাই করার চেষ্টা হয়-এবং দলবাজি করতে লোককে বাধ্য করা হয়-লোকজন কোথায় যাবে?
লেনিনবাদি কমিনিউজম একটা জনবিরোধি ফ্যাসিজম ছারা কিছুই না। পৃথিবীর ইতিহাস তারই সাক্ষ্য বহন করে-পশ্চিম বঙ্গে সিপিএমের ৩৪ বছরের ইতিহাসও কুখ্যাত ফ্যাসিস্ট ইতিহাস হিসাবেই গণ্য হবে। প্রশ্ন হচ্ছে এবার তাহলে দান উলটালো কি করে? কারন এবার ছ দফাতে সেনা লাগিয়ে ভোট হয়েছে এবং সিপিএম বিরোধিরা এই
প্রথমবারের মতন ছিল সম্পূর্ন সঙ্ঘবদ্ধ। সাথে সাথে মধ্যবিত্ত এবং বুদ্ধিজীবিরাও সিপিএম বিমুখ। মমতাকে ভাল লাগুক বা না লাগুক সিপিএমের
ঔদ্ধত্ব এবং স্বৈরাচারে মানুষ এতই বিরক্ত ছিল-সিপিএমের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া জন্যে শুধু তারা সংকল্পবদ্ধই হয় নি-অন্যদেরও কাছে টেনেছে। আমি অনেকেই জিজ্ঞেস করেছি -মমতার মতন একজন ১০০% অভিনেত্রীর পার্টি কি সিপিএমের থেকে ভাল হতে পারে? অধিকাংশেরই প্রশ্ন সিপিএমের থেকে খারাপ কি হতে পারে?
১৯৭৭ সালে সিপিএম মোটেও কোন খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে ক্ষমতাতে আসে নি। এসে গণতান্ত্রিক উপায়ে কিছু সমাজতান্ত্রিক পরীক্ষাও শুরু করেছিল। কিন্ত বিধি বাম। ১৯৮৯ সালে ডঃ অশোক মিত্র সোভিয়েত ইউনিয়ানের পতন নিয়ে যে কথাটি লিখেছিলেন-আজ সিপিএমের পতনেও সেই কথাই লিখতে হচ্ছে। উনি লিখেছিলেন সমাজতান্ত্রিক চেতনা মানুষের মধ্যে তৈরী না হলে কোন সমাজতন্ত্রই টেকে না। সমাজতান্ত্রিক চেতনা বলতে উনি যেটা লিখেছিলেন- সমাজতান্ত্রিক উৎপাদন কাঠামোতে মানুষ সমাজের জন্যে আরো বেশী উৎপাদন দেবে। বাস্তবে হয় উলটো। পশ্চিম বঙ্গ সরকারের চালিত স্কুল, হাঁসপাতাল থেকে টুরিজম সব ব্যাবসাতেই পার্টির লোকেরা এমন বাস্তঘুঘুর বাসা করে রেখেছে-এগুলোর থাকা না থাকা সমান। এমনকি রাজনীতির ধাক্কায় পশ্চিম বঙ্গে পুলিশের হাল এমন-সিপিএমের নেতারারা মার খেলে-তাকে বাঁচানোর ক্ষমতাও এদের আর নেই। এ এমন রাজ্য যেখানে পুলিশ প্রশাসন সরকার বলতে বহুদিন থেকেই কিছু নেই। পার্টি অফিস থেকেই রাজ্য চালিয়েছেন সিপিএম নেতারা।
এমন অপদার্থ এক সরকারের পতন না হলে গণতন্ত্রের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠত। আমি খুশী যে গনতন্ত্রে লোকজনের আস্থা ফিরেছে যা সিপিএমের বদৌলতে প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল। আমি আরো খুশী এই জন্যে যে এই যুদ্ধ হয়েছে মূলত দলবদ্ধ বাম বা লেনিনবাদি বামেদের বিরুদ্ধে বাস্তববাদি এবং বাম এনার্কিস্ট এর জোটের। এই যুদ্ধের ফল এই যে বাম আন্দোলন এনার্কিস্টদের হাতেই যাবে-লেনিনবাদিদের মতন খুনী এবং ফ্যাসিস্ট শক্তির হাতে বাম আন্দোলনের কোন ভবিষ্যত নেই।
যখন এই লেখা লিখছি-তৃনমূল জোট ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। সিপিএম তাড়ানোর জন্যে মমতা ব্যানার্জিকে ১০০/১০০ দিতে হচ্ছে যদিও উনি
প্রশাসক হিসাবে কি করবেন-আমার সন্দেহ আছে। আরো সবারই আছে। কিন্ত কিছুই যায় আসে না। সিপিএমের থেকে খারাপ প্রশাসন কিছু হতে পারে না।
সিপিএম নামক (অ) কমিউনিস্টরা এতোদিন ভোটবাজীতে টিকে ছিল কি করে, সেটাই এক বিস্ময়। এরা নামে বাম হলেও কাজে মিল্লাত বাম তো দূরের কথা, টাইগার বামও নয়। অথবা বলা যায়, এই লালেরা হচ্ছে মূলো-কমিউনিস্ট। বাইরেরটা মূলোর মতো লাল, ভেতরে সাদা।… :))
আমার লেখার উত্তর দেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আসলে এনার্কিজমের সঠিক অনুবাদ হতে পারে নৈরাজ্যবাদ নয়, বরং নৈরাষ্ট্রবাদ। মার্কসের সাথে বাকুনিনের বিতর্ক ছিল সমাজতান্ত্রিক পর্যায়ে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নিয়ে। মার্কস সমাজতান্ত্রিক পর্যায়ে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বজায় রাখার পক্ষে ছিলেন, তবে রাষ্ট্র নামক নিবর্তন যন্ত্রকে ক্রমান্বয়ে শুকিয়ে মারার পক্ষে ছিলেন মার্কস। এনার্কিজম মূলত রাষ্ট্র ও authority বা কর্তৃত্বকে কেন্দ্র করে। এ কারণে এর সঠিক তর্জমা হতে পারে নৈরাষ্ট্রবাদ। যা হোক, ইংরেজি থেকে এসব শব্দ বাংলা ভাষা আসার সময় এরকম কিছু সমস্যা রয়েই গেছে। আপনি বলেছেন সঠিকভাবে এনার্কিজম মানে যারা ক্ষমতাহীন। আপনার এই সংগা মেনে নিয়ে প্রশ্ন রাখা যায় যে, মমতা একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েও কি করে ক্ষমতাহীন হলেন? ক্ষমতাসীন কংগ্রেস দলকে নিয়ে জোটকে বলছেন ক্ষমতাহীনদের জোট? আপনি আরো বলেছেন, বর্তমান ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াইকে নৈরাজ্যবাদ বলা যায় – একদম ভুল কথা। কেননা, সেটা আরেকটা কর্তৃত্ব তৈরী করবে, ক্ষমতাবানরাই আবার এসেছে, রাজ্যে পাইলট আলাদা। গোড়াতেই যে ধারণাগত ত্রুটি রয়েছে তা থেকেই আপনি ভুল সিদ্ধান্ত উপনীত হয়ে জনগণের পরিবর্তনের সংগ্রামকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছেন বলে মনে হয়। এ বিষয়ে আমি এখানেই ইতি করছি। আপনার জন্য আমার অনেক শুভেচ্ছ রইল। ধন্যবাদ
@আখতার সোবহান খান,
মমতা এনার্কিস্ট এরকম দাবীত করিনি-কিন্ত উনার সাথে থাকা অনেকেই এনার্কিস্ট বাম। যারা ক্ষমতার অপব্যাবহারে ক্রুদ্ধ ছিল। আপনি আমার লাইনটা পড়তে ভুল করেছেন-নন্দীগ্রামে বা সিঙ্গুরে আন্দোলনের প্রথমে ছিল এই এনার্কিস্ট বামেরা যারা ক্ষমতার শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই এ নেমেছিল।
আর আমার বক্তব্য হচ্ছে লেনিনবাদি বামেদের দিন শেষ। প্রতিরোধ আন্দোলন এনার্কিস্ট আন্দোলনের মাধ্যমে ছারা আর সম্ভব না। ওয়াইকিলিক্স বা মধ্যপ্রাচ্যের পরিবর্তন ও সেই এনার্কিস্ট আন্দোলন-সেখানেও লেনিনবাদি নেই কিন্ত। ইতিহাসে লিখন বুঝতে এবং পড়তে আপনাদের ভুল হচ্ছে।
@বিপ্লব পাল,
আপনার “লেনিনবাদী বাম” এর বিপক্ষে লেখা পড়লে মনে হয় আপনি “নইরাস্ট্রবাদে” (এনার্কিজম) এ ‘বিশ্বাসী’ এবং “লেনিনবাদ” এর বিপক্ষে। আপনার চিন্তার পদ্দতিটি এসেনশিয়ালিস্ট মনে হয়। আসোলে “লেনিনবাদী” বলতে আপনি কি ধরনের বইশিস্টের কথা বলেন? আপনার চিন্তা পদ্দতি সিপিএম এর কোন কোন ব্যার্থতা রয়েছে তা facts ভিত্তিক না বললে, “ওরা ভুল, আমি ঠিক” জাতীয় ডিসকোর্স এ হারিয়ে যায়…
খান আসাদ
@খান আসাদ,
দেখুন সিপিএমের পতন নিয়ে আমি এর আগে প্রায় শ খানেক ছোট বড় প্রবন্ধ লিখেছি। তাই এই আনন্দের দিনে, নতুন কোন বিশ্লেষনের প্রয়োজন দেখছি না। মৃত্যুর আগেই পোষ্ট মর্টেম শেষ এখানে। আপনি বোধ হয় আমার এই লেখাটা পড়েন নিঃ দুবছর আগের লেখা-সাধারনত ভারতীয় রাজনীতি নিয়ে আমার কোন লেখা আমি মুক্তমনাতে দিই না খুব রেলিভ্যান্ট না হলে।
http://sites.google.com/site/biplabpal2000/cpmdefeat
@বিপ্লব পাল
ডঃ পাল
আমেরিকান হেরিটেজ ডিকশনারি আনুযায়ী Anarchism শব্দটির অর্থ হলো (1) The theory that all forms of government are oppressive and undesirable and should be abolished; (2) Active resistance and terrorism against the state, as used by some anarchist; (3) Rejection of all forms of coercive control and authority.
নৈরাজ্যবাদ ও নৈরাষ্ট্রবাদের মধ্যে পার্থক্য খুবই সূক্ষ্ম । রাষ্ট্র সম্পর্কে মার্ক্স ও বুকুনিনের পার্থক্যের যে ব্যাখ্যা সোবহান খান দিয়েছেন তার সাথে একমত ।
ডঃ পাল একদিকে রাষ্ট্রের বিলুপ্তি চান, অন্যদিকে মমতার (মমতা রাষ্ট্রের বিলুপ্তি চান না) বিজয় খুশিতে টকবক করে নাচেন । তাই পদার্থবিদ্যার গবেষণাগারে বসে ডঃ পাল রাজনীতির যে ব্যাখ্যা দেন, তা বুঝতে সমস্যা হয় । তার ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি পপারের উদার রাজনৈতিক কাঠামো ও নৈরাজ্যবাদ/নৈরাষ্ট্রবাদে বিশ্বাসী । তিনি আবার মার্ক্সবাদে আস্থাবান, কিন্তু বার্ণষ্টাইনের মত সমালোচনা করতে আগ্রহী । তিনি মনে করেন সমালোচনা ছাড়া মার্ক্সবাদ কোরাণের মত অচলায়তন হতে বাধ্য । লেনিনবাদ তার কাছে পরিত্যাক্ত । তিনি সব কিছু নিয়ে একটা জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলেছেন । তার ভাষ্য অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে তিনি “ডুডু” খেতে চান আবার “টামুক”ও খেতে চান ।
কোরাণে হলো আল্লাহর বানী লিপিবদ্ধ । বিপরীতে মার্ক্সবাদ হলো কতগুলি তত্ত্বের সমন্বয় । “বানী” ও “তত্ত্ব” এর মধ্যকার পার্থক্য ডঃ পাল কি বুঝেন ? দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ, ঐতিহাসিক বস্তুবাদ, অর্থনৈতিক তত্ত্ব ও মার্ক্সীয় রাজনৈতিক তত্ত্বের সমন্বয়কে বলে মার্ক্সবাদ । বিকল্প তত্ত্ব উপস্থাপন ছাড়া তত্ত্বের সমালোচনা হয় না । মার্ক্সের রাজনৈতিক তত্ত্ব ছিল পুজিবাদে সৃষ্ট সর্বহারারা শাসক শ্রেনীর শোষণে অতিষ্ঠ হয়ে স্বয়ংক্রিয় ভাবে বিপ্লব ঘটিয়ে রাষ্ট্রীয় কাঠোমার পরিবর্তন ঘটাবে । লেনিনের তত্ত্ব হলো শোষকের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য সঠিক নেতৃত্বপ্রদানকারী দল থাকলে বিপ্লব আগেও ঘটিয়ে দেয়া যায় । পুজিবাদি ব্যবস্থায় রূপান্তর হওয়ার পূর্বেই সামন্তবাদি রাশিয়ায় বিপ্লব ঘটিয়ে লেনিন তা প্রমান করেছেন । অনুরূপ ভাবে সামন্তবাদি চীন ও কিউবায় বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে ।
তাই বাস্তবায়িত বিকল্প তত্ত্ব ছাড়া বার্ণষ্টাইনের মত যারা মার্ক্সবাদের সমালোচনা করেন, তারা পুজিবাদের সমর্থক । মধ্যপ্রাচ্যের শাসকদের বিরুদ্ধে বর্তমান গণবিস্ফোরণ মার্ক্সীর রাজনৈতিক তত্ত্বের বহির্প্রকাশ । তবে পার্থক্যটা হলো গণবিস্ফোরণকারীরা সর্বহারা নয় । এবং ভারতীয় মার্ক্সবাদিদের কৃতিত্ব হলো, তারা বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিভিন্ন রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে পেরেছিল । কিন্তু তাদের অসুবিধা ছিল, (১) কেন্দ্রে অবস্থানকারী বুর্জোয়া শাসক গোষ্ঠির বিমাতা সুলভ আচরণ; (২) সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বুর্জোয়া দলগুলোর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি । পশ্চিম বঙ্গে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মূল নায়িকা ছিলেন মমতা ব্যানার্জি, আর পিছন থেকে ইন্দন যোগিয়েছে কংগ্রেস । ফলে হাওরায়, নন্দিগ্রাম ও সিঙ্গারে শিল্প উন্নয়নে বাম ফ্রন্ট ব্যর্থ হয়েছে । তাই নতুন কাজের সৃষ্টি হয়নি । তাছাড়া ধর্মীয় ইস্যুতে বাম ফ্রন্ট মুসলমানদেরকে যথাযথ প্রোটেকশন দিতে ব্যর্থ হয়েছে । তাই মুসলমানেরা বাম ফ্রন্টকে ভোট দেয়নি । ফলে ভোট যুদ্ধে তারা হেরেছে ।
পদার্থবিদ্যার গবেষণাগারে বসে ডঃ পাল মার্ক্সবাদের এবং পশ্চিম বঙ্গের বাম ফ্রন্টের ব্যর্থতা নিয়ে বহু রাজনৈতিক প্রবন্ধ লেখেন, যার কোন আগা-মাথা থাকে না । ফলে আমরা যারা রাস্তায় অবস্থান করি তাদের পক্ষে বুঝা মুশকিল ।
মহিউদ্দীন
@আ হা মহিউদ্দীন,
তাহলে এত মার্কসবাদ পড়ার পর, এটা হচ্ছে কনক্লুশন সিপিএম এবং মার্কসবাদি পার্টিগুলির ইসলামকে রক্ষা করার কাজে নিয়োজিত থাকা উচিত। এই উক্তি যে ব্যক্তি করে, তার সাথে মার্কস বা লেনিন নিয়ে বিতর্ক করার কোন ইচ্ছা আমার নেই।
তবে মুক্তমনার পাঠকদের জন্যে দুটো কথা জানিয়ে রাখি। সিপিএম ভোটের আগে ৩০০ টি মাদ্রাসা চালু করার কথা ঘোষনা করে। সাথে সাথে তিনটি ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মঞ্জুর হয়।
বাস্তব হচ্ছে মুসলমানরা এসব কিছুই চাইছিলেন না-তারা চাইছিলেন চাকরী এবং জীবিকা। সিপিএম দিচ্ছিল ইসলাম। ভাঁওতাবাজি আর কদিন চলতে পারে!
বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আপনি পুঁজিবাদের স্বর্গ আমেরিকাতে বসে রাস্তায় অবস্থান করছেন আমি জানি। কারন এমন নিরবিচ্ছিন্ন প্রলাপ শুধু তাদের কাছ থেকেই আসতে পারে, যাদের কথা এবং কাজের সাথে কোন ঠিক নেই।
আল্লাতেও আছি, মার্কসেও আছি এহেন খোরাকদের সাথে সময় নষ্ট করার ইচ্ছা আমার নেই।
মমতা বাম- নৈরাষ্ট্রবাদী? বাম এবং নৈরাষ্ট্রবাদ কাকে বলে সেই ABCD জ্ঞান পর্যন্ত বিপ্লব পালের নেই। নৈরাষ্ট্রবাদীরা কোন ধরনের রাষ্ট্র বা কর্তৃতে আস্থাবান নন। এ বিষয়ে জ্ঞানার্জনের জন্য N P Bakunin, S.G Nechaeve, Peter Kroptkin এর লেখা পাঠ করা যেতে পারে। সিপিএম হেরেছে জনতা চায়নি বলে, ঠিক আছে। ৩৫ বছর কি তবে জোর করে ছিলো? না, জনতাই রেখেছে। যে মমতা সামম্প্রাদায়িক বিজেপির আর কংগ্রেসের সময় রাষ্ট্রের মন্ত্রী ছিলো সে কিনা বাম ও নৈরাষ্ট্রবাদী? বিপ্লব পালের হাস্যকর বিজ্ঞতা দেখে অবাক হতে হয়। ক্ষমতা কোন স্থায়ী বিষয় নয়, এই হারটা বরং সিপিএম-এর দরকার ছিলো, তাদের শুধরানোর জন্য। দীর্ঘ ক্ষমতা তাদের প্রতিষ্ঠায় পরিণত করেছে। শিল্প দরকার, তাই বলে জোর করে কৃষক হত্যা করে? তার শিক্ষাটা এবার তারা পেলো। ক্ষমতা যেমন চিরস্হয়ী নয়, হারা মানেও ধ্বংস নয়, নিজেদের শুধরে নেবার সুযোগও হতে পারে এটা। লাল দুর্গ আর বাম রাজত্ব- এসব ধারণা ভুল। জনতার মনোদুর্গে কোন বিষয়ই ওভাবে স্হায়ী থাকেনা। সমগ্র বুর্জোয় মিডিয়া এখন বামদের খাটো করতে চাইছে। এই সুযোগে বাম বিরোধীরাও, বিপ্লব পালের লেখা তারই অংশ।
@আখতার সোবহান খান,
প্রথমত নৈরাষ্ট্রবাদ এনার্কিজমের সঠিক বাংলা না। সঠিক ভাবে এনার্কিজমের মানে যারা ক্ষমতাহীন বা পাওরারের অস্তিত্বে না মুক্ত কনট্রাক্টে বিশ্বাস করে। রাষ্ট্রএর অনস্তিত্ব অনেক ছোট ব্যাপার এসবের মধ্যে। মুলত বর্তমানে ক্ষমতার বিরুদ্ধে স্বতস্ফূর্ত লড়াইকেই এনার্কিজমের পর্যায়ভুক্ত করা যায়। এনার্কিজমের সংজ্ঞা ভীষন ভাবেই বড়।
মমতার সাথে বিক্ষুব্ধ বামগোষ্ঠি ছিল-যারা লেনিনবাদি পার্টিভিত্তিক ক্ষমতার অপব্যাবহারের বিরুদ্ধে নেমেছিলেন। তাদের বৃহত্তর অর্থে এনার্কিস্ট বামই বলব। কারন তাদের মতাদর্শের সাথে বাকুনীনের অনেক মিল আছে।
@বিপ্লব পাল,
ডঃ পাল Anarchism এর অভিধানিক অর্থ নৈরাজ্যবাদ । বর্তমানে আপনি পপারকে ছেড়ে বুকুনিনের মতবাদে বিশ্বাসী হয়ে উঠছেন । এরকম ঘনঘন মত পরিবর্তন করলে কেমন করে চলে । পপার ও বুকুনিন উভয়ই মার্ক্স বিরোধী । তবে মার্ক্স বিরোধিতার ব্যাপারে অপনার কোন পরিবর্তন নাই । বুকুনিনের মতবাদ কিন্তু ভাববাদী, বাস্তবতা বহির্ভূত ।
মহিউদ্দীন
@আ হা মহিউদ্দীন,
আমি বাকুনীনের এনার্কিজমে বিশ্বাসী এটা আপনাকে কে বললো? এনার্কিজমের আরো অনেক ভ্যারিয়ান্ট আছে। আমি যা লিখেছি তা বোঝেন নি।
রাজনীতিতে গঠন মূলক দক্ষিন পন্থী শক্তি এবং প্রতিরোধ মূলক বাম শক্তি থাকবেই। আমি লিখেছি প্রতিরোধ মূলক বাম শক্তি লেনিনবাদি দের কাছ থেকে এনার্কিস্ট বামেদের হাতে যাবে। পপারত কোন জন প্রতিরোধ বা জন আন্দোলনের তত্ত্ব দেন নি। উনি বিশ্লেষনের পথ দিয়েছেন।
তবে ক্ষমতার অপব্যাবহারের ক্ষেত্রে উনার তত্ত্ব ১০০% সঠিক-মার্কস কিন্ত ব্যর্থ।
পপারের লিব্যারাল পলিটিক্স এ স্ট্রাকচার এবং এনার্কিজম দুটিই আছে। আমিও সেটাতেই বিশ্বাসী।
আর আমি মার্কসবাদ বিরোধি এই ধারনা হল কি করে? আমি কিন্ত বার্নস্টাইনের একটা উক্তি দিয়েছিলাম-তাতে বার্নস্টাইন লিখেছিলেন মার্কসবাদকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শ্রেষ্ঠ উপায় মার্কসবাদের সমালোচনা করে, তার ত্রুটিকে ঢাকা। তা না হলে মার্কসবাদের অবস্থা কোরানের মতন অচলায়তন হতে বাধ্য। আমার সব রাজনৈতিক প্রবন্ধেই মার্কসিয় বিশ্লেষন থাকে তবে তা লেনিনবাদি বিশ্লেষন থেকে মুক্ত কারন লেনিনবাদকে আমি সম্পূর্ন ফালতু এবং ক্ষতিকর রাজনৈতিক মতবাদ বলে মনে করি।
গণতন্ত্রের স্বার্থে সত্যিই পরিবর্তনটা দরকার ছিল। তবে বাংলাদেশের এই প্রতি ৫ বছর পরপর পরিবর্তনটারও পরিবর্তন দরকার। এ দেশে একটানা ১৫ বছর একটা দল ক্ষমতায় থাকা দরকার।
একটা দল দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকলে তাদের চরিত্রে স্বৈরাচারী ভাব আসবেই, গনতন্ত্রের বিকাশ তাতে বাধা গ্রস্ত হবেই। তখন তার পতন অবশ্যম্ভাবী। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা। সেটাই সিপিএম পেয়েছে এবার।
(Y)
পরিবর্তনটা যেমন প্রয়োজনীয় ছিল তেমনি নিশ্চিত ছিল। ৩৫ বছর ধরে সিপিএম যে অনাচার করেছে তার চরম পরিনতি আজ জনগনের রায়ের মাধ্যমে প্রকাশ পেল। গরীব দরদি এই সরকারের রাজ্যে মানুষ পিঁপড়ার ডিম খেয়ে জীবন যাপন করে। শিল্প উন্নয়নের নামে উর্বর কৃষি জমি দখল করে অত্যাচার চলে। মুখে মাক্সীয় আদশের্র বুলি তুলে লুটের রাজ্য কতদিন চলতে পারে? মানুষ তো এত বোকা নয়। জনসাধারণ যেমন মাথায় তুলতে পারে তেমনি পায়ের নীচে আনতেও সময় লাগে না। তার ফল সরূপ পশ্চিমবঙ্গ নামক পবিত্র মক্কা আজ সিপিএম এর হাতছাড়া হল সঙ্গে কেরলেও হার। বাকী রইল ত্রিপুরা। মক্কা যেহেতু গেছে অতএব ত্রিপুরা যেত্েও সময় লাগবে না। কারণ ত্রিপুরার জল পশ্চিমবঙ্গের স্রোতে চলে। আমি এই অপেক্ষায় আছি এই মুখোশদারী শয়তানগুলিকে মানুষ যেদিন ভারত ছাড়া করবে।
মমতার এই ঐতিহাসিক বিজয়ে সুমনের এই গানটার কথা মনে পড়লো –
httpv://www.youtube.com/watch?v=Pvuz3bl1nvk
গানের কথাগুলোর সাথে একমত হলেও গানের আগে প্রক্ষিপ্ত ভার্জিন মেরী তোষণের সুমনীয় সংলাপের সাথে একমত নই মোটেই।
@অভিজিৎ,
গানের শেষ কথাগুলো এবং তৃণমুলের জয়ে একটা বিশাল অশনি সংকেত আছে।
জন আন্দোলন বাম দিক ছেরে ধর্মীয় প্রতিবাদি আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে। এর মূল কারন জনআন্দোলন বা বামপন্থা বহুদিন থেকেই লেনিনিস্ট গুন্ডাবাহিনী হাইজ্যাক করেছে। বাঙালী বাম হিসাবে স্টাম্পড হতে গেলে, লেনিনের হেগো পোঁদ ( কথাটা সুভাষ চক্রবর্ত্তী অন্য অর্থে ব্যাবহার করেছেন-আসলে এর থেকে ভাল কাব্যিক লাইন আমার জানা নেই) চাটতে হবে-এটা স্বতসিদ্ধ হয়েছে। ইসলাম, হিন্দু ধর্ম দিয়ে রাজ্য শাসনের চেষ্টা শুধু অবাস্তব না। এইসব লেনিনবাদ দিয়ে রাজ্য শাসনের চেষ্টা আসলেই আরো ভয়ংকর। ফলে জন আন্দোলন ক্রমশ ধর্মীয় দিকে যাচ্ছে।
এর জন্যেই আমি বিকল্প বামপন্থার জন্যে লিখি। জন আন্দোলনের জন্যে নতুন দল-নতুন মত চাইছি। লেনিনবাদিদের হাতে বামপন্থা থাকলে ধর্মীয় প্রতিবাদি আন্দোলন মানুষের ক্ষোভকে হাইজ্যাক করবে যা প্রগতিশীল চিন্তাধারার বিরুদ্ধে যাবে।
@অভিজিৎ, কিন্তু দাদা সুমন যে মাও দের সাথে যোগ দিয়ে এগান টা লিখলো, মাও ও কি মার্কসের বাইরে?
ড: পালের ভাষ্য অনুযায়ী পশ্চিম বংগের বাম মোরচা অপদার্থ কিনা, তা সময় বলে দিবে । প্রগতিশীল ইন্দ্রিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় কেন্দ্রীয় কংগ্রেস সরকারেরও নির্বাচনে পরাজয় ঘটেছিল । তাই বলে কংগ্রেস অপদার্থ এমন অপবাদ কেউ দেয়নি । পশ্চিম বঙ্গে অবস্থিত মার্কিন কনসোলেটের যে সকল পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, তা থেকে দেখা যাচ্ছে যে মমতা বান্যার্জি মার্কিন লভির লোক । মার্কিন অর্থনীতি আজ বিপর্যস্ত । বিপরীতে ভারতীয় অর্থনীতি উদয়মান । এমনাবস্থায় মমতার নেতৃত্বাধীন পশ্চিম বঙ্গের সরকারের সাথে ভারতীয় কেন্দ্রিয় সরকারের সম্পর্কটা কি হবে তা দেখার বিষয় ।
মহিউদ্দীন
@আ হা মহিউদ্দীন,
সিপিএম প্রশাসন কতটা অপদার্থ ছিল এটা ভারতের অন্য রাজ্যের সাথে তুলনা না করলে বুঝবেন না।
১৯৭৭-সিপিএম ক্ষমতায় এল। ভারতের ১৬% শিল্প উৎপাদন তখন পশ্চিম বঙ্গ থেকে হত। রাজ্যের স্থান ছিল চতুর্থ।
২০১১-আজকে ওরা গেল। সারা দেশের মাত্র ৩% শিল্প উৎপাদন এ রাজ্য থেকে হয়। কর্নাটক ২৮ বিলিয়ান ডলারের সফটোয়ার রপ্তানী করে-পশ্চিম বঙ্গ ১ বিলিয়ান সব করেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে পশ্চিম বঙ্গের মেধা সম্পদ এখনো সেরা-ব্যাঙ্গালোর বা দিল্লীতে সব টপ প্রযুক্তিবিদ বা ম্যানেজমেন্টেই প্রচুর বাঙালী আছে। অথচ রাজ্যের হাল এই।
@বিপ্লব পাল,
ডঃ পাল, পশ্চিম বঙ্গ প্রদেশের কমিউনিষ্ট সরকার ভারতের কেন্দ্রিয় পুজিবাদি সরকারের বিমাতা সুলভ আচরণের শিকারের কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে শিল্পায়নের পূর্ণ ব্যর্থতার দায় বাম সরকারের উপর চাপিয়ে কমিউনিষ্টদেরকে এক হাত নিয়েছেন ।অর্থ্যাৎ যাকে দেখতে পারি না, তার চরণ বাকা । আপনার দেয় পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, ১৯৭৭ পূর্ব পুজিবাদি প্রদেশিক কংগ্রেস সরকারের ৩০ বছরের শাসন আমলে শিল্প উৎপাদন মাত্র ১৬% এ উন্নিত হয়েছে । যদিও আরো বেশি হওয়া উচিত ছিল ।
বৃটিশ ভারতের কংগ্রেস নেতা গোগেলের বাংগালি সম্পর্কীয় মন্তব্য “বাংগালিরা যা আজকে ভাবে, ভারতীয়রা তা আগামি কাল ভাবে” আপনি শুনে থাকতে পাড়েন । বাংগালিদের দোষ হলো তার মেধা এবং আর একটি দোষ, তা হলো দলাদলি । আমার মনে হয় ভারতীয় পুজি, সফটোয়ার শিল্প পশ্চিম বঙ্গে নিবে না । তবে কিছু শ্রমঘন শিল্প পশ্চিম বঙ্গে নিতে পারে, তাও নির্ভর করবে কিছু শর্তের উপর । এই শর্তগুলো মমতা ব্যানার্জি পুরন করতে পারে কিনা দেখা যাক ।
মহিউদ্দীন
@আ হা মহিউদ্দীন,
কেন্দ্রের বৈমাতৃসুলভ আচরন কথাটা সংখ্যাতাত্ত্বিক দিক দিয়ে ভীষন ভুল।
গত ২০০৪ সাল থেকে দিল্লীর চাবি ছিল বাঙালীদের হাতে-দিল্লীর সব সরকারই ছিল পশ্চিম বঙ্গের কোন না কোন পার্টির ওপর নির্ভরশীল। সেই সুত্রে দেখা যাচ্ছে পশ্চিম বঙ্গে প্রায় ১৭% মত কেন্দ্রীয় সাহায্য টেনেছে, যেখানে আনুপাতিক হারে টানার কথা ১১% এর মতন। কিন্ত তাতেও পশ্চিম বঙ্গ অন্য সবরাজ্য থেকে পিছিয়ে গেছে।
এই রহস্যের কারন কেন্দ্রীয় সাহায্যের ৮০% আবার দিল্লীতেই ফিরে গেছে -কারন পশ্চিম বঙ্গের সিপিএম নেতারা সেই ফান্ডের ব্যাবহার ই করেন নি। এর মূল কারন-তারা ভেবেছিলেন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পার্টি অফিস শক্তিশালী করা দরকার-উন্নয়নের দরকার নেই। উন্নয়ন না করে গুন্ডাবাজি এবং পার্টি অফিস দিয়ে রাজ্যটাকে ঘিরে, ভোটে ত জিতে যাচ্ছিলেন।
এবার কমিশন গুন্ডাবাজি কেন -কোন উত্তেজক কথা বললেও, ডিসকোয়ালিফাই করে দিত। তাই এবার কিছু হল না।
গণতন্ত্রে ভোট হচ্ছে ফুটবল ম্যাচ। ভাল রেফারিং জরুরী। নইলে গায়ের জোরে জেতার একটা চেষ্টা চলে। এবার ইলেকশন কমিশন সেটাই হতে দেয় নি। গায়ের জোরত দূরের কথা উত্তেজক, সাম্প্রদায়িক বা লিঙ্গভিত্তিক কথা বললে-সেই পার্থীর মনোনয়ন বাতিল করার হুমকি দিয়েছে। এই রেফারির নাম ওয়াই কুরেশি। মমতা সহ প্রায় সবাই বলছেন এই নির্বাচনে আসল চ্যাম্পিয়ান কুরেশি। উনি যা করে দিয়ে গেলেন, তা গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পৃথিবীর সর্বত্র অনুসরনযোগ্য।
@বিপ্লব পাল,
ডঃ পাল
ভাষ্য অনুযায়ী দিল্লির চাবি ২০০৪ থেকে কংগ্রেস নেতা বাংগালি প্রনব মুখ্যার্জীর হাতে । আমার প্রথম প্রশ্ন, প্রনব বাবু কি বাম ফ্রন্টের বন্ধু; দ্বিতীয় প্রশ্ন, ইচ্ছা থাকলেই কি অর্থমন্ত্রী বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে কোষাগার খুলে দিতে পারেন; তৃতীয় প্রশ্ন, কি শর্তে দেয় অর্থ ছাড় করা হয়, শ্রেনী বিভক্ত সমাজে পুজিপতিদের স্বার্থে সরকারি বিধি-বিধান তৈরী হয়, তাই কংগ্রেস বলেন বা বিজেপি বলেন এরা সকলেই পুজিপতিদের স্বার্থের এপিঠ আর ওপিঠ । মুনাফা না হলে বিনিয়োগ করবে না । বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক শান্তি । আর বাম ফ্রন্টের শাসন আমলে এই শান্তি বারবার নষ্ট করেছে কংগ্রেস ও তৃণমূল, উদহারণ নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গার ।
কংগ্রেস পশ্চিম বঙ্গ শাসন করেছে ত্রিশ বছর এবং দিল্লির শাসনভারও ছিল কংগেসের হাতে । তারপরও একজন বাংগালি পুজিপতি সৃষ্টি হয়নি । কারন গোগেলের ভাষ্য অনুযায়ী ভারতীয়রা বাংগালিদেরকে ভয় পায় । তৃণমূল জোট ৪৯% ভোট পেয়ে আসন পেয়েছে ২২৭টি (তৃণমূল ৩৯% ভোট – আসন ১৮২, কংগেস ১০% ভোট – আসন ৪২টি, এসিউসিয়াই – আসন ১টি) । বিপরীতে বাম ফ্রন্ট ৪১% ভোট পেয়ে আসন পেয়েছে ৬১টি । তাই বাম ফ্রন্টকে দুর্বল ভাবাটা ঠিক হবে না ।
@আ হা মহিউদ্দীন,
বাঙালীরা শিল্পপতি হবে কি করে? সবাই ত নাটক, গান, লেখক, দার্শনিক হতে ব্যাস্ত। এর মধ্যে চক্রান্ত তত্ত্ব খোঁজা হাস্যকর।
কোলকাতায় হাতে গোনা কিছু বাঙালী শিল্পপতি হয়েছেন। তাদের অনেকের সাথেই আমার ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব আছে-ব্যবসার কিছু সম্পর্কও আছে। এদের মধ্যে একজনের সাথে অফিসে বসে গল্প করছি-ব্যবসার কারনেই গিয়েছিলাম-পাঁচ মিনিট বাদে তার লেখা নাটক নিয়ে আলোচনা শুরু হল। দুঘন্টা কেটে গেল-শেষ মেশ তার নাটকের পরের শোতে আমি দেখলাম-খুবই উৎকৃষ্ট নাটক নামিয়েছেন। কিন্ত ভদ্রলোক একটা পাঁচ মিলিয়ান ডলারের সফটোওয়ার ব্যবসা কি করে চালাচ্ছেন উনিই জানেন। আরেকজন এখন প্রায় এক বিলিয়ান ডলারের শিক্ষা ব্যবসা চালাচ্ছেন। তার অফিসে বসে রাত নটা পর্যন্ত গল্প হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস নিয়ে। উনি নিজেও লেখেন। একদিক দিয়ে ভাল-যে বাঙালী শিল্পপতিরা শিল্পর চেয়ে শিল্পকলা নিয়ে বেশী ব্যস্ত। ভালোই লাগে এরা মারোয়ারী নন। কিন্ত ঐভাবে বোধ হয় ব্যবসায়ী হওয়া যায় না বা শিল্প বাড়ানোও মুশকিল। পশ্চিম বঙ্গের বাইরে দিল্লীতেও বাঙালীর এক অবস্থা। দিল্লীতে ১৫ লাখ বাঙালী থাকে, কেরানী, শিক্ষক, ডাক্তার, সাংবাদিক, হিন্দি লেখক সব কিছুতেই বাঙালী আধিপত্য-কিন্ত কোন শিল্পপতি নেই। কারন সেখানেও দেখবেন সব লেখক, সাংবাদিক, গায়ক, আর্টিস্ট বাঙালী। যা যাদের ধাঁচে নেই-হবে না।
“প্রশাসক হিসাবে কি করবেন-আমার সন্দেহ আছে। আরো সবারই আছে।কিন্ত কিছুই যায় আসে না”
এমন একজন কে ক্ষমতাতে আনলো যে কিছু বছর আগে বিজেপির মতো দলের সাথে জোট করেছিল 😀
@মনটি ব্যারেট,
তারা এখন কংগ্রেসের সাথে আছে। তৃণমূল ধর্ম নিরেপেক্ষ দল এবং দলের একমাত্র আদর্শ সিপিএম বিরোধিতা-ওদের আর কোন নীতি নেই। দলটা কদিন টিকবে জানি না। তবে, মুসলমানদের সব ভোট ওরাই পেয়েছে।
@বিপ্লব পাল, তৃণমূল কংগ্রেস ১৯৯৮ সালে কংগ্রেস থেকেই ভেঙ্গে বের হয়ে এসেছিল এবং ১৯৯৯ সালে বিজেপির সাথে জোট গঠন করে
তাদেরকে আমি কিভাবে ধর্ম নিরেপেক্ষ দল বলতে পারি
কেবল তাই নই যে দল ভেঙ্গে এই দল হয়েছিল সেই দল কংগ্রেসর সাথেই আবার জোট করাটা কিসের ইঙ্গিত বহন করে তা আমার চাইতে আপনিই ভাল বলতে পারবেন মনে হই
আমার দুঃখ একটাই ভণ্ড বামদের প্রতিবাদ করতে গিয়ে কাদেরকে ক্ষমতাই আনা হোল
আমার মনে হই না আনন্দিত হওয়ার কিছু আছে
মুদ্রার এপিট আর ওপিট
প্রসঙ্গত বাংলাদেশে হিন্দুরাও আওয়ামীলীগ কে ভোট দেই এতে কিছুই প্রমান হই না 🙂
@মনটি ব্যারেট,
তৃনমুলের একটাই আদর্শ । সিপিএম হটাও।
১৯৯৯ সালে কংগ্রেসের পাশে থেকে সিপিএম সরানো যেত না। কারন দিল্লীতে সরকার গঠনের জন্যে কংগ্রেস সিপিএমের ওপর নির্ভর করেছে। সুতরাং সিপিএম তাড়াতে মমতা বিজেপির সাথে যেতে বাধ্য হয়। ১৯৮৯ সালে সিপিএম ও কংগ্রেস তাড়াতে বিজেপির সাথে জোট করেছিল। সুতরাং এতে কিছুই প্রমান হয় না।
@বিপ্লব পাল,”তৃনমুলের একটাই আদর্শ । সিপিএম হটাও।”
কিন্তু কেন?
জানগনের প্রতি ভালবাসা নাকি ক্ষমতার লোভ
“১৯৮৯ সালে সিপিএম ও কংগ্রেস তাড়াতে বিজেপির সাথে জোট করেছিল।”
সিপিএম নিয়ে আমার ব্যাক্তিগত কোন আগ্রহ নাই
আপনি যদি সিপিএম এর এই জোট করাকে ইঙ্গিত করেন তাহলে তৃণমূল কে আমরা হিসাবের
বাইরে রাখতে পারি না
আর আসল কথা ১ টি দল নিজেদেরকে ধর্ম নিরেপেক্ষ দাবি করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার এর জন্য
বিজেপির মত মৌলবাদিদের সাথে জোট গটন করেছিল এর পর তাদের চরিত্র নিয়ে কথা বলাটাই সময় নষ্ট :clap
আর নির্বাচন হতে প্রাপ্ত জনগনের মতামত সবসময় টিক হবে এটা চিন্তার বিষয়
কারন বাংলাদেশে দেলওার হুসাইন সাইদির মত কুখ্যাত রাজাকারও নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ
করেছিল
“বাম ফ্রন্ট ৪১% ভোট পাইছে সেটা মোট ভোটের হিশেবে তৃণমূল থেকে ২% বেশি” :))
পশ্চিমবংগে নতুন দিনের আগমনকে স্বাগতম। পার্টি এবং ক্যাডার দিয়ে কেমন করে একটি গনতান্ত্রিক দেশে গনতন্ত্রকে বন্দী করে রাখা যায় সেটাই এতোদিন দেখালো সিপিএম। মমতা যদি শুধু রাজ্যজুড়ে গেড়ে বসা সিপিএম এর ক্ষমতা এবং পেট্রনাইজেশন এর নেটওয়ার্ক ভেংগে দিতে পারেন তাহলেই তার সরকার অনেক সফল পরিগনিত হবে।
বাংলাদেশে এখনো অনেক তথাকথিত বুদ্ধিজীবি আছে যাদের প্রকৃত আদর্শ সিপিএম এর মতো পরোক্ষ একদলীয় সমাজতন্ত্র। তারা এখন নানা রকম অজুহাত দেখাবেন নন্দীগ্রাম-কোলকাতার ভদ্রসমাজ ইত্যাদি। কিন্তু সিপিএম-রাজ্যের একদলীয় চরিত্র তাদের বিশ্লেষনে কখনো আসবে না।
@সফিক,
লেনিনের একদলীয় চরিত্র ভয়ংকর জিনিস। সেটা লোকে হারে হারে বুঝছে এবং মুক্তি চাইছে।