আবুল কাশেম
সহিংস জিহাদ হলো ইসলামের প্রাণ, যার বিনা ইসলাম হয়তোবা সপ্তম শতাব্দীতেই মৃত্যুবরণ করতো৷ — এম, এ, খান (জিহাদ, পৃ ৯৫)
এটা খুবই উৎসাহের খবর যে, লেখক এম, এ, খানের আমেরিকা থেকে প্রকাশিত অত্যন্ত প্রসংশিত “Islamic Jihad: A Legacy of Forced Conversion Imperialism and Slavery” বইটি বাংলা অনুবাদে প্রকাশিত হয়েছে ঢাকায় (ব-দ্বীপ প্রকাশন, কনকর্ড এম্পোরিয়াম, কাটাবন; পৃষ্ঠা ৪৭০; মূল্য ৫০০ টাকা)।
খানের “জিহাদ” বইটি ইসলাম ও জিহাদি সহিংসতার সঠিক কারণ অনুধাবণের জন্য বর্ধনশীল পাঠ্য-তালিকায় এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। বইটি সুস্পষ্ট করে তোলে যে, ইসলাম তার প্রাণে সাম্রাজ্যবাদি ও সহিংস, এবং বর্তমানে চলমান ইসলামি সন্ত্রাস ইসলামের শুরুতে নবি-কর্তৃক সূচিত জিহাদের বহমানতা মাত্র। বইটি এ বার্তা দেয় যে, জিহাদ আজও জীবন্ত ও সক্রিয়, এবং বর্তমান সভ্যতা এর হুমকিকে অগ্রায্য করলে কেবলই নিজস্ব ধ্বংস ডেকে আনবে।
জিহাদ গ্রন্থটি সাতটি প্রধান অধ্যায়ে বিভক্তঃ জিহাদের প্রকৃত অর্থ নিয়ে চলমান বিতর্ক দিয়ে শুরু করে ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস, নবির জীবনী ও জিহাদের জন্ম নিয়ে পর্যালোচনা এবং ইসলামে ক্রীতদাসত্ব প্রথার আলোচনা দিয়ে বইটির সমাপ্তি। ৪৭০ পৃষ্ঠার এ বইটি ইসলামি ধর্মতত্ব ও ইতিহাসের উপর একটি ব্যাপক ও প্রভাবশীল গবেষণামূলক সাহিত্যকর্ম।
খান আলোকপাত করেছেন ইসলামি জিহাদের নানা বিষয়ের উপরঃ নবি মোহাম্মদের সহিংসতা; ইসলামে ইহুদি, খৃষ্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ ও অন্যান্য ধর্মগোষ্ঠীর প্রতি আচরণ; এবং বিশ্বের বিভিন্ন অংশে ইসলামি সাম্রাজ্যবাদ ও আরব আধিপত্য আরোপ। এখানে আমি বইটির প্রধান বিষয়গুলোর আলোকপাত করব।
ইসলামি সাম্রাজ্যবাদ
বিজিত জনগণের সাংস্কৃতিক ধ্বংসসাধনের উপর খান লিখেছেন:
…মুসলিম বিজয়ীরা একনিষ্ঠভাবে বিধর্মী বিজিতদের সংস্কৃতি ধ্বংসের কাজে লিপ্ত হন – এ বিশ্বাসে যে, ইসলামপূর্ব ‘জাহিলিয়া’ যুগের সমস্ত চিহ্ন বা সাক্ষ্য মুছে ফেলে তদস্থলে ইসলামের ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সভ্যতা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। (পৃ ২০৮)
এটা একটা সাংঘাতিক বক্তব্য যা বলে যে, ইসলামে ধর্মান্তরকৃতরা তাদের আদি সংস্কৃতি, ভাষা, ঐতিহ্য ও সভ্যতাকে ঘৃণা করে; ইসলাম সম্পূর্ণরূপে বিজিত ও ধর্মান্তরিত জনগণের অতীতের সাথে সম্পর্ককে নস্যাৎ করে; এবং এটা ব্যাখ্যা করে: কেন একজন ভারতীয় মুসলিম প্রথমে নিজেকে মুসলিম মনে করে, তারপর ভারতীয় বা অন্য কিছু। বইটি সুস্পষ্ট করে তুলে: কেন একজন সদ্য-ধর্মান্তরিত মুসলিম ইসলামের জন্য নিজ জীবন বিসর্জন দিতে মরিয়া হয়ে উঠে এবং বিস্ফোরকপূর্ণ আত্মঘাতী-কোমরবন্ধ পরে নেয় তারই সম্প্রতি-অতীতের নিস্পাপ সহধর্মীদেরকে গণহারে নিধন করতে। সে সম্পূর্ণরূপে নিজেকে তার শিকড়, বংশ-পরম্পরা, অতীত ধর্ম ও সম্ভবত তার ভাষা-সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। খানের বইটি অবশ্য পঠিতব্য সেসব মুসলিমদের জন্য, যারা তাদের অতীতকে হারিয়েছে।
লেখক বিশ্বের বিভিন্ন অংশে ইসলামি আক্রমণ চিত্রায়িত করেছেন, যা শুরু হয় নবি মুহাম্মদের দ্বারা ও চলমান থাকে তার মৃত্যুর পর। প্রধাণত মুসলিম ইতিহাসবিদ-লিখিত খাটি ঐতিহাসিক দলিল থেকে সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে খান ভারত, মধ্যপ্রাচ্য, বলকান অঞ্চল, স্পেন, আফ্রিকা ও ইউরোপে ইসলামের আক্রমণ চিত্রিত করেছেন; সেই সাথে বর্ণনা করেছেন দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ইসলামের প্রসার। এসব আক্রমণের বর্ণনা বিস্তারিত ও মনোযোগ আকর্ষণকারী; বহু অজানা তথ্য যুক্ত হয়েছে। এবং বইটি কেবল ইসলামের ইতিহাস নথিবদ্ধ করে নি, বরং বর্তমানকাল পর্যন্ত বিস্তৃত। পণ্ডিত ও শিক্ষাবিদদের জন্য বইটি ইসলামি জিহাদের ইতিহাসের জন্য একটি মূল্যবান সূত্র হিসেবে কাজ করবে। মুসলিম পাঠকরা নিজেদের সভ্যতা-সংস্কৃতির শিকড় অনুধাবনে বইটিকে পাবেন একটি অনন্য সাহিত্যকর্ম হিসেবে, যা তাদেরকে বুঝাতে সহায়তা করবে তারা কেন বা কীভাবে আজ মুসলিম। গবেষক ও লেখকদের জন্য বইটি হবে মূল্যবান তথ্য ও সূত্রের উৎস।
খান ভারত, দক্ষিণপূর্ব এশিয়া ও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে ইসলামি আগ্রাসন ও ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদের তুলনা করে দেখিয়েছেন দু’টোই ছিল উপনিবেশবাদি প্রকৃতির – অথচ এসব অঞ্চলের ধর্মান্তরিত মুসলিমরা সেখানে ইসলামের আগমণ বা ইসলামি সাম্রাজ্যবাদকে গৌরবান্বিত করে, যা তাদের পূর্বপুরুষের উপর ইসলামের নিষ্ঠুরতার সাথে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পশ্চিমা শাসন বা সাম্রাজ্যবাদের আগমনকে দেখে দাসত্ব, মূল্যবোধের অবক্ষয় ও শোষন হিসেবে। লেখক যথার্থ প্রমাণ সহ দেখিয়েছেন যে, পশ্চিমা উপনিবেশীরা ইসলামি দখলদারদের তুলনায় কম দাসত্বের চর্চা ও সহিংসতা করেছে, এবং অনেকক্ষেত্রে বিজিত জনগণের আদি সংস্কৃতি-ঐতিহ্যকে ব্যাহত করে নি। খান জোর দিয়ে বলেছেন যে, ইসলাম দখলকৃত ভুখণ্ডে স্বাধীনতা ও মুক্তি এনেছিল – মুসলিমদের এরূপ ধারনা সম্পূর্ণ ভুল। সত্যটি হলোঃ ইসলাম তাদের পূর্বপুরুষদের জন্য এনেছিল সাংঘাতিক ক্রীতদাসত্ব, অধীনতা, জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, আদি সংস্কৃতি-ঐতিহ্যকে বিনাশকরণ, অমুসলিমদেরকে জিম্মিকরণ, ধর্মীয় নির্যাতন ও গণহত্যা। পশ্চিমা উপনিবেশীরা এরূপ অপকর্ম করেছে কম ক্ষেত্রে বা কম মাত্রায়।
জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ
খান সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন কীভাবে মুসলিম আগ্রাসীরা রক্তঝরা যুদ্ধ, সন্ত্রাস, লুটতরাজ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণের মাধ্যমে ভারতে অনুপ্রবেশ করে ও অগ্রসর হয়। ইসলামি আগ্রাসীরা সুচিন্তিতভাবে তাদের নাগালের মাঝে আসা যুদ্ধ-বয়সী হিন্দুদেরকে হত্যা করে, তাদের ধর্মীয় মন্দির-সৌধ লুটপাট ও বিধ্বস্ত করে, এবং তাদের নারী-শিশুদেরকে ক্রীতদাস হিসেবে কব্জা করে। ক্রীতদাসকৃত সেসব হিন্দু শিশুদের অনেককে মুসলিম ধর্মযোদ্ধা হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাদেরই ধর্মগোত্রীয় হিন্দুদেরকে নিধনমূলক জিহাদে অংশ নিতে। মুসলিম যোদ্ধারা সন্তান-প্রশব-বয়সী হিন্দু মেয়েদেরকে সুপরিকল্পিতভাবে যুদ্ধের ‘গনিমতের মাল’ হিসেবে কব্জা করে নিয়ে গিয়ে তাদেরকে ধর্ষণ করে। এসব অসহায় হিন্দু নারীদের ইসলাম গ্রহণ বিনা কোনো উপায় থাকে না, এবং তারা এভাবে মুসলিম সন্তানের জন্ম দেয়। এ প্রক্রিয়া ভারতে (ও অন্যত্র) ধর্মীয় জনসংখ্যার বণ্টনকে বিশেষভাবে পরিবর্তিত করে; যেমন খান লিখেছেনঃ
সুতরাং মুসলিমরা ভারতের যেখানেই সার্থকভাবে আক্রমণ করেছে, সেখানেই হিন্দু পুরুষদেরকে গণহারে হত্যা ও তাদের নারী-শিশুদেরকে বন্দি করে হিন্দু জনসংখ্যা সরাসরি হ্রাস করেছে৷ পরোক্ষভাবে, সন্তান উৎপাদনক্ষম নারীদেরকে বন্দি করে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে হিন্দু পুরুষদেরকে যৌনসঙ্গী থেকে বঞ্চিত করে হিন্দুদের বংশবৃদ্ধিতে অন্তরায় সৃষ্টিও হিন্দু জনসংখ্যা হ্রাস করে৷ যেহেতু হিন্দু পরিবারগুলোর নারীরা পরবর্তিকালে মুসলিম সন্তান জন্মদানের যন্ত্রে পরিণত হয়, সেহেতু গণহারে ক্রীতদাসকরণের চূড়ান্ত ফলাফল দাঁড়ায়: হিন্দু জনসংখ্যার দ্রুত হ্রাস ও মুসলিম জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি৷ আর দ্রুত বর্ধিত এ মুসলিম জনসংখ্যার রক্ষণাবেক্ষণ হতো পরাজিত হিন্দু বা অমুসলিমদেরকে নিষ্পেষিত করা করের মাধ্যমে৷ এটা মূলত সে একই আচরণবিধি, যা নবি মোহাম্মদ বানু কোরাইজা ও খাইবারের ইহুদিদের উপর প্রয়োগ করেছিলেন৷ (পৃ ১২৪)
খান জানান: সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশকে ইসলামে ধর্মান্তরকরণে এটা ছিল মুসলিম দখলদারদের একটি ইচ্ছাকৃত কৌশল ভারতের ধর্মীয় জনসংখ্যা চিরতরে বদলে দিতে। এ প্রচেষ্টা এতটাই কার্যকর হয়েছিল যে, ভারত আজ দু’টি ইসলামি রাষ্ট্র পাকিস্তান ও বাংলাদেশ দ্বারা দু’দিক থেকে ঘেরা (অন্যত্র তা আরো বেশী সফলতা পেয়েছে)। যারা আজও পাকিস্তানি-বাংলাদেশী মুসলিমদের শিকড় বা উৎপত্তি সম্বন্ধে ধারনাহীন, খানের বইটি পড়লে বিষয়টি তাদের কাছে স্বচ্ছ হয়ে উঠবে। সত্যি বলতে খানের বইটি আমাকে আমার হিন্দু শিকড় ও ঐতিহ্যকে খুজতে উদ্বুদ্ধ, এমনকি বাধ্য করেছে, যা বইটি পড়লে অন্যান্য মুসলিমদের ক্ষেত্রে ঘটবে বলে আমার বিশ্বাস।
ভারতে ইসলামের প্রসার মানবতাবাদি মুসলিম সুফি বা পীরদের দ্বারা ঘটেছিল শান্তিপূর্ণ উপায়ে বলে বহুল জনপ্রিয় ধারণাটিকেও খান ছিন্নভিন্ন করেছেন। অকাট্য ঐতিহাসিক তথ্য-প্রমাণ দ্বারা তিনি দেখিয়েছেন যে, ওসব তথাকথিত সুফি-পীররা মোটেও শান্তিপ্রিয় ছিলেন না। বরং অনেক বিখ্যাত সুফিরা – যেমন খাজা মইনুদ্দিন চিস্তি, নিজামুদ্দিন আউলিয়া ও শাহ জালাল – ছিলেন ভয়ংকর জিহাদি, যারা জিহাদি যুদ্ধ, লুটপাট কিংবা জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণে লিপ্ত হয়েছিলেন।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ইসলামের বিস্তার
খানের বইটি আরেকটি বহুল সমাদৃত ধারণাকে চুরমার করেছে যে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় (মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ থাইল্যাণ্ড ও দক্ষিণ ফিলিপিন) তলোয়ার উচিয়ে ইসলামের কোনো বাহিনী যায় নি; সে অঞ্চলে ইসলামের বিস্তার ঘটায় শান্তিপ্রিয় মুসলিম বণিক-সুফিরা। সুষ্ঠ গবেষণার মাধ্যমে উদ্ধারকৃত তথ্যের মাধ্যমে খান যথার্থভাবে দেখিয়েছেন যে, মুসলিম ব্যাবসায়ীদের মাধ্যমে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ইসলামের গোড়াপত্তন ঘটলেও সেখানে ইসলামের বিস্তৃতি ঘটে মূলত ধোকা, ষড়যন্ত্র, গুপ্ত জিহাদ এবং শেষে জবরদস্তি ও রক্তপাতের মাধ্যমে। এ বিষয়ে ইবনে বতুতার উদ্ধৃতি দিয়ে খান লিখেছেন:
ইবনে বতুতার বর্ণনায় দেখা যায়, সামুদ্রার মতো ক্ষুদ্র নগর-রাজ্যে মুসলিমরা রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জনের সাথে সাথে আশেপাশের বিধর্মীদের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুর ও নির্মম জিহাদ শুরু করে দেয়। (পৃ ১৭২)
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ইসলামি রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ভারতের তুলনায় স্বল্প সময়ে জনগণের মাঝে ইসলামের দ্রুত বিস্তৃতি ঘটে। খানের ধারণা: এর পিছনে কাজ করেছে সেখানে প্রয়োগকৃত ‘শাফি আইন’, যা পৌত্তলিক জনগণকে কেবলমাত্র ইসলামগ্রহণ বা মৃত্যুর পথ দেয়। অথচ ভারতে আরোপিত কিছুটা নমনীয় ‘হানাফি আইন’ পৌত্তলকদেরকে জিম্মি প্রজায় উন্নীত করায় তারা প্রাণে বেঁচে যায়; যার ফলে ভারতে ইসলামের প্রসার কম সফল হয়।
মুসলিম রাষ্ট্রে অমুসলিমদের প্রতি আচরণ
খান ‘ওমরের চুক্তি’তে ধারণকৃত তেরটি অবমাননাকারী শর্ত উল্লেখ করেছেন, যা আদর্শ মুসলিম রাষ্ট্রে ইহুদি, খৃষ্টান ও অন্যান্য জিম্মি প্রজাদের উপর আরোপিত হবে। অমুসলিমদের জন্য এ শর্তগুলো অবশ্য-পঠিতব্য এবং যারা মনে করে ইসলাম অমুসলিমদের প্রতি সহনশীল ও দয়াশীল, তাদের জন্য দৃষ্টি উন্মোচনকারী। ‘ওমরের চুক্তি’র বিষয়ে খান লিখেন:
জিম্মিদের প্রতি ব্যবহার সম্পর্কিত ‘ওমরের চুক্তি’টি সুস্পষ্টভাবে আল্লাহর কোরান ও নবির দৃষ্টান্তের সঙ্গে সমন্বিত৷ অতএব অষ্টম শতাব্দীর বিখ্যাত ‘হানাফী’ আইনশাস্ত্রবিদ আবু ইউসুফ লিখেছেন: ‘ওমরের চুক্তি পুনরুত্থানের দিন পর্যন্ত বৈধ ও চালু থাকবে। (পৃ, ১২৯)
সুতরাং প্রকৃত ইসলামি সমাজে অমুসলিমরা তাদের মানবাধিকার রক্ষার আশা করতে পারে না, ঐতিহাসিকভাবে যা সাধারণত ঘটেছে এবং আজও ঘটছে, যেমন সৌদি আরব এবং তালেবানী আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের অংশবিশেষে।
খানের বইটি অদম্য জিহাদিদের আধিপত্যাধীন ভবিষ্যত পৃথিবীর এক শংকাজনক সম্ভাবনা চিত্রিত করে, যখন বিশ্বব্যাপী মুসলিম জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে: যেমন সম্প্রতি-অতিতের খৃষ্টান-প্রধান লেবানন, বেথলেহেম, সারাজেবো ও নাইজেরিয়ায় খৃষ্টান সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে, এবং সেই সাথে ফিলিস্তিন, মিশর, ইরাক ও অন্যান্য মুসলিম-অধ্যুষিত মুসলিম রাষ্ট্র থেকে তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে। এটা একটা সাংঘাতিক বিশ্ব-পর্যায়ের সঙ্কটে রূপ নিচ্ছে।
ইসলামি জাতিভেদ
জিহাদ গ্রন্থটি কোরান-হাদিস থেকে অনেক সূত্র উল্লেখ করেছে, যা জাতিভেদ ও বর্ণবাদের প্ররোচনা দেয়, যা আরবরা নবির জীবনকাল থেকে আজ পর্যন্ত চর্চা করে এসেছে। আজও আরব দেশগুলোতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত ও আফ্রিকা থেকে আগত শ্যামল-কৃষ্ণ বর্ণের মুসলিমদেরকে মানবেতর ও নীচ হিসেবে দেখা হয়; তাদের প্রতি অবজ্ঞা ও বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়, এবং তাদেরকে খুবই অল্প পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। এটা একটা অতি জনপ্রিয় দাবী যে, ইসলাম সমতাবাদি এবং সর্বজনীন ভ্রাতৃত্বের বার্তা প্রচার করে, যার ধারক ও প্রচারক অনেক সুখ্যাত অমুসলিম পণ্ডিতও। এরূপ দাবি বা ধারণা যে কতটা ভিত্তিহীন ও হাস্যকর, খানের বইটিতে উল্লেখিত অকাট্য দৃষ্টান্তগুলো পড়লে সবাই সেটা অনুধাবন করবেন।
ধর্মীয় নির্যাতন
বইটির সবচেয়ে আকর্ষক ও বিস্ময়-সৃষ্টিকারী বিষয়বস্তু আলোচিত হয়েছে ‘ভারতে ইসলামি সাম্রাজ্যবাদ’ ও ‘ইসলামি ক্রীতদাসত্ব’ অধ্যায় দু’টোতে। প্রথমোক্ত অধ্যায়ের একটি অংশঃ
ভারতে মুসলিম দখলদারদের দ্বারা এমন ব্যাপক হারে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ ধ্বংসের মত দৃষ্টান্ত বিজয়ের ইতিহাসে বিরল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এক-একটা মন্দির ধ্বংসের পর সেখানে রক্ষিত মূর্তি ভাংচুর ও ধনভাণ্ডার লুটপাট করার পর বিধ্বস্ত মন্দিরের সাজ-সরঞ্জামাদি দিয়ে সে স্থানেই মসজিদ নির্মাণ করা হতো। দিল্লির ‘কোয়াত-উল-ইসলাম’ (ইসলামের শক্তি) মসজিদটি ঐ এলাকার ১৭টি বিধ্বস্ত মন্দিরের সাজ-সরঞ্জাম দিয়ে নির্মাণ করা হয়। আমির খসরু, সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক ও অন্যান্যদের বর্ণনা অনুযায়ী মন্দিরের পুরোহিত ও সন্যাসীদেরকে সাধারণত হত্যা করা হতো৷ (পৃ ২৪৭)
ক্রীতদাসত্বের উপর অধ্যায়টি উন্মোচন করবে জগণ্যতম অমানবিকতার কাহিনী, যার ভুক্তভোগী হয়েছিল ভারত থেকে মধ্য-এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, ইউরোপ ও এমনকি আমেরিকার মিলিয়ন-মিলিয়ন মানুষ।
উপসংহারে বলতে হয়: খানের বইটি পাণ্ডিত্যপূর্ণ, সহজবোধ্য, মনোযোগ আকর্ষক ও প্রত্যয়-জাগরণকারী। বইটি পড়া শুরু করলে পাঠকরা তা শেষ করার স্পৃহা অনুভব করবে। ইসলামের প্রতি উৎসাহী পাঠকদের বইটিকে অগ্রাহ্য করা সঠিক হবে না। বইটি পড়লে সহজবোধ্য হয়ে যাবে: আজ সহিংস জিহাদিরা যা করছে, তা কেন করছে! বিশেষত ভারত-বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মুসলিম পাঠকরা বইটি পড়লে হতভম্ব হয়ে যাবেন যে, তাদের অমুসলিম পূর্বপুরুষরা কী জগণ্য ও নির্মম বর্বরতা ভোগ করেছে মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য-এশিয়া থেকে আগত মুসলিম আগ্রাসকদের হাতে। মুসলিম বিশ্বের অন্যত্র এবং এমনকি ইউরোপ-আমেরিকার পাঠকরাও তাদের পূর্বপুরুষদের উপর ইসলামের নির্মম প্রভাবের যোগসূত্র খুঁজে পাবেন।
বইটি আজকের মুসলিম-অমুসলিম সকল রাজনৈতিক নেতাদের জন্যও অবশ্য পঠিতব্য, বর্ধনশীল ইসলামি গোড়ামি ও সহিংসতার প্রতি তাদের নিস্পৃহতা ছুড়ে ফেলতে। জিহাদ গ্রন্থটির বক্তব্যকে ফিলিস্তিনের প্রখ্যাত সমাজতত্ববিধ ও জাতিসংঘের UNRAWA প্রকল্পের শিক্ষা বিষয়ক উপদেশদাতা ডঃ আলি ইসা উসমানের নিম্নোক্ত উক্তির মাধ্যমেঃ
‘ইসলামের বিস্তার ঘটে সামরিক পন্থায়৷ মুসলিমদের মাঝে এ ব্যাপারে কৈফিয়ত দেওয়ার একটা ঝোঁক রয়েছে এবং আমাদের সেটা করা উচিত নয়৷ ইসলামি বিশ্বাসের জন্য তোমাকে অবশ্যই লড়াই করতে হবে – এটা কোরানেরই নির্দেশ। (পৃ ১৭৮)
বইটা অবশ্যই কিনব। এ ধরণের বই বাংলা ভাষায় প্রকাশ হয়েছে ভেবে অবাক হচ্ছি। সরকার কি এটাকে ব্যন্ড করবে? এই ধরণের আরও বই বাংলায় প্রকাশ হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি, তাহলে ইসলামের মুখোশ খুলে যাবে।
লেখককে, রিভিউয়ারকে ধন্যবাদ।
তাহলে কিনতেই হয় বইটা।
বইটির দাম কত?
নিজ ধর্মের প্রসারের জন্য হিংসার ব্যবহার মৌলবাদীদের কাছে কোন নূতন ব্যাপার নয়।
তবে এ ব্যাপারে ইসলাম বোধ হয় সব ধর্মকে ছাড়িয়ে গিযেছে।
ইসলাম ধর্মের ইতিহাস জেনে সমৃদ্ধ হলাম ।
বইটা পড়ার আগ মূহূর্তে এই পর্যালোচনাটা পড়ে ভালই হলো। ধন্যবাদ লেখককে।
@এমরান, বইটির দাম যদিও একটু বেশী মনে হয়েছে বাংগালী পাঠকের জন্য, তথাপি আমি বেশ কয়েকটি কপি কিনে বিলি করেছি বন্ধুদের মাঝে। বইটি কিনে ঠকবেন বলে আমার ধারনা।
@Bangla Murtad,
বইটি কিনে ঠকবেন বলে আমার ধারনা।
বুঝলাম না?????
@এমরান
আমার পড়া থেকে মনে হয়েছে, জিহাদ বিষয়ের উপর এটি একটি ভাল বই। লেখকের ওয়েবসাইটে পাঠকের যেসব মন্তব্য এসেছে তাও সেটাই বলে (About the book)। কখনো কখনো দামি বই কিনে মনে হয় পয়সাটা জলে গেল, বিষয়বস্তু আশানুরূপ না হওয়ার কারণে।
বিধর্মীদের ইসলামের ধর্মান্তরকরন প্রচেষ্টার কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা আমার নিজের জীবনে সরবে এসেছে বহুবার তাও আবার নিজের দেশে নয়, সুদূর যুক্তরাজ্যের মাটিতে। কারো সাথে পরিচয় হলে স্বাভাবিক ভাবে নাম জিজ্ঞেস করা হলে আমি উত্তর দিই ‘রাজ’।
আলাপ গভীর হতে থাকলে কেউ কেউ জানতে চায় আপনি কি?
প্রশ্নটা আমি বুঝেও না বুঝার মত করে উত্তর দিই- কেন আমি মানুষ! তারপর ওরা আবার সবিনয়ে জানতে চায় না মানে-‘ আমি বলছিলাম কি আপনি কি মুসলমান’? আমি মুসলমান নই জেনে মনে মনে বেশ অখুশি হয় তবে ভদ্রতার খাতিরে তারা তা প্রকাশ করতে লজ্জা পায়।পরিচয় থেকে ধীরে ধীরে ঘনিষ্টতা বাড়ে, এদের লজ্জার পরিমান আস্তে আস্তে কমে। এই সব অন্ধ কিছু মানুষ থেকে বিভিন্ন সময় ‘দাওয়াত’ আসে ইসলাম কবুলের।
ইনিয়ে বিনিয়ে ধর্ম প্রসঙ্গ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে গেলেও বিফল হই। ওরা বার বার প্রসঙ্গ টানে ইসলামের মহীমার, আল্লার কুদরতের।সাথে যোগ করে বর্তমান সময়ের ইসলামের নব্য পীর ‘জোকার নায়েকে’র নানা কুযুক্তি। ভাবটা এমন, আমি মুসলমান হলে ওদের জীবনটা শান্তিতে ভরে যাবে।
চাপিয়ে দেওয়ার চাপ বাড়তে থাকাতে আমাকে অনেক বার বলতে হয়েছে-যে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না তাকে ধর্মের বাণী শুনিয়ে কোন লাভ আছে?
TO ALL, ভাই আপনেরা সবি কইছেন দামটা যদি এট্টু কইতেন……।কেনার আগে আমাগো মতো বেকারগর তো প্রস্তুতি লাগে। 😛 হে হে হে ।। 😛 :guli: :candle:
@অগ্নি,
দাম তো মূল লেখায় আছে।
২০% কমিশনে ৪০০ টাকা হবে। ঢাঊস সাইজের একটা বই।
@ আবুল কাশেম,
বাংলা বইটা কি আমেরিকাতে পাওয়া যাবে?
@Truthseeker,
আমি জানিনা। আপনি ব-দ্বীপ প্রকাশনে খোঁজ নিতে পারেন।
মূল ইংরাজি বইটা আমাজন থেকে কেনা যেতে পারে।
@আবুল কাশেম,
কিনেই ফেল্লাম, দুই কপি। মুক্ত-মনায় যে ভাবে সবাই বলছে এটা ব্যান হতে পারে । তাই আর দেরি না করে কিনে ফেল্লাম।
বইটির সম্পকে লেখার জন্য আবুল কাশেম কে ধন্যবাদ।
এধরনের বই এর খবর মুক্ত-মনায় আরো চাই
বইটা পড়তে হবে । সুন্দর আলোচনার জন্য ধন্যবাদ ।
সবাই যদি এত ব্যান ব্যান করে তাহলে তো ব্যান হয়েই যেতে পারে। কাজেই হয়ত এত ব্যান ব্যান করার দরকার নেই। শুনেছি ব-দ্বীপ প্রকাশনিকে বইমেলাতে স্টল খুলতে দেইনি।
@আদিল, শ্রাবণঃ বইটি ব্যানের দাবী উঠতে পারে। তবে আমার ধারণা, যারা এটি পড়ে নিষিদ্ধের দাবী তুলবেন, তারা সেটি চাবেন ইসলামের ইজ্জ্বত বাঁচানোর জন্য, ইসলামকে মিথ্যা কলংক দিচ্ছে সে অভিযোগে নয়। তবে খানের বইটি এমন ভাষায় ও তথ্যের ভিত্তিতে লেখা, আমার ধারনা কেউ নিষিদ্ধ করার দাবী তুলবে না, আক্কেল থাকলে। এটা তসলিমা নাসরিনের, হুমায়ুন আজাদের, সালমান রুশদির নিষিদ্ধ বইগুলো থেকে ভিন্ন।
আর ‘নিষিদ্ধ বই কাটে বেশী’ কথাটা সত্যি। এ বইয়ের ক্ষেত্রে সেটা করলে বাংলায় ইসলামকে বাচানো দুস্কর হতে পারে।
বইটি ব্যান হতে বা ব্যানের দাবী উঠতে কতদিন লাগতে পারে বলে কার কী ধারনা?
(আমার তো মনে হয় এরা মূল বই না পড়ে শুধু এই রিভিউ পড়েই ব্যানের দাবী তুলতে পারে)
@শ্রাবণ আকাশ, আমি নিজেও এই প্রশ্নটা করতে যাচ্ছিলাম 😕
ব্যান হওয়ার আগেই কিনে ফেলতে হবে…
এ বই তো মনে হয় অচিরেই বানিজ্যিকভাবে সফল হতে চলেছে, কারন শুনেছি যে কোন বই নাকি নিষিদ্ধ হলেই তার কাটতি বাড়ে 🙂 , কথাটি হুমায়ুন আজাদের।
আশা করি এই লেখক ভদ্রলোক গ্রহনযোগ্য ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে বইটি লিখেছেন।
@ আবুল কাশেম
বাক রুদ্ধ করা লেখা। প্রচুর ধন্যবাদ।
“বিশেষত ভারত-বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মুসলিম পাঠকরা বইটি পড়লে হতভম্ব হয়ে যাবেন যে, তাদের অমুসলিম পূর্বপুরুষরা কী জগণ্য ও নির্মম বর্বরতা ভোগ করেছে মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য-এশিয়া থেকে আগত মুসলিম আগ্রাসকদের …”
দঃ এশিয়ার বেশির ভাগ মুসলমান ভাবেন তাঁরা পৃথিবীর শুরু হতেই মুসলমান। তাঁরা আবার কে সঈয়দ কে কুইরেশি বংশজাত তাই নিয়ে ঝগড়াও করেন যেন তাঁরা আরব বংশজাত।
তাঁরা ভাবতে চান না যে তাদের পুর্ব পুরুষ খাটি হিন্দু ছিলেন। যদি কখন বলা হয় তাঁদের শরীরে, ধমনিতে তাঁদের পুর্ব পুরুষদের ওই হিন্দু রক্ত ধারা আজও বইছে তবে তাঁরা খুন্ন হন বা রাগান্নিত হন।
কি অদ্ভুত, শুধু ধর্মান্তরিতই করেনি তার সাথে সাথে সাংস্কৃতিক
নামও আরবিতে রাখিয়েছে যাতে অতিতের সাথে সমস্ত প্রকার লিঙ্ক বিলুপ্ত হতে পারে। ধর্মের পার্থক্যের সাথা সাথে নামের এই পার্থক্য অধর্মান্তরিত ও ধর্মান্তরিত মধ্যে সৃষ্টি করেছিল এক বি্পুল সাম্প্রদায়িক ব্যবধান।
দঃ এশিয়ায় যারা মুসলমান ধর্মকে বয়ে নিয়ে এসেছিল তারা এই উপমহাদেশের যে কি পরিমান ক্ষতি করে চলে গেছে তা আমারা আজ হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করতে পারছি।
বাংগালী মুসলমানেরা কথা কয় বাংলা ভাষায়। বাংলা ভাষার জন্যে পরান দেয় কিন্তু নাম বাংলাতে রাখেন না, রাখেন আরবি কিম্বা ফারসি কিম্বা উর্দুতে। বাংলা নাম নাকি হিন্দুদের নাম। বাংলা ভাসা ও বাংলা নাম ত’ হিন্দুদের বাপ দাদাদের কেনা সম্পত্তি না। বাংলা ভাসা ও বাংলা নাম বাংগালীর সম্পত্তি ও সংস্কৃতি। ধর্ম প্রচারকেরা দাসত্বের আর একটি নির্মম বোঝা ধর্মান্তরিতদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে ছলে গেছে।
কিন্তু ইন্দনেশিয়ার বেশির ভাগ মুসল্মানদের ও অমুসল্মান্দের নামের পার্থক্য নাই। ইন্দ্র মহেন্দ্র পাঁচ ওক্ত নামাজ পড়া কোন মুসলমানের নাম হতে পারে তা ইন্দনেশিয়া না গেলে দেখা যাবে না । এদের পদবিও খান, মোল্লা, কুরেসি না।
এদের পদবি এদের সেই পূর্বজদেরই পদবি।
সাবিত্রী, সুপার্বতি, লখস্মি, রতি মাথায় ওড়না জড়ান মুসলমান মেয়েদের নাম হতে পারে তা এই দেশে না এলে দেখা যাবে না। এরা মুসল্মান ধর্ম নিলেও নিজস্ব সাংস্কৃতিক স্বত্তাকে বি্সর্জন দেই নাই। তাই এরা অনেক বশি নমনিয়।
দঃ পূর্ব এশিয়ার মুসল্মানেরা দঃ এশিয়ার মুসল্মান হতে অনেক নমনিয়। দঃ পূর্ব এশিয়াতে মধ্য এশিয়ার কোন সশস্ত্র লুটেরার যায় নাই। এই দেশে উত্তর পশিম ভারতের বনিকেরা (প্রধানত গুজরাতি) ও ইয়েমেনের কিছু মিস্টভাসী লোকেরাই ধর্ম প্রচার করেছে। তবে ইদানিং কালে এই দেশে কিছু কিছু মৌলবাদী বিক্ষিপ্ত ঘটনা দেখা যাচ্ছে যার ফাইনান্সার হল মরুভুমির তেলের বনিকেরা।
খান সাহেবের বই যদি ব্যান্ড না হয় তবে তা বাংগালীদের মধ্যে বিশাল আলড়ন তুলতে পারে।
@সেন্টু টিকাদার,
আপনার মতব্যের প্রতিটি ্কথা অক্ষরে অক্ষরে সত্যি। এই ধরণের কাণ্ডকে বলা হয় ইংরাজিতে cultural genocide. এর প্রকৃত বাংলা আমি পাচ্ছিনা।
খানের বই পড়ার আগে আমি ভাবতেই পারতাম না যে আমাদের বাঙ্গালিদের একটা সত্যিকার সং`স্কৃতি ও সভ্যতা ছিলা–যার ব্যাপ্ত্তি ছিল অনেক বিশাল। খানের বই আমাকে জানিয়েছে কি নির্দয় ও নিষ্ঠুর ভাবেই না আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে হত্যা করা করেছে এই অসভ্য, বর্বর, ভয়াল মরুভুমির বেদুইন এবং তাদের দোসর তুর্কীরা। এই বই পড়লে জানা যাবে কেন আমরা আরবি নাম রাখি–এটা ইচ্ছাকৃত না। এই ভয়ঙ্কর ব্যবস্থা আমাদের উপর তরবারির ডগায় বসানো হয়েছে।
এই বই পড়ার পর মনে হল আমি যেন আবার নতুন জন্ম লাভ করলাম—বাঙ্গালি অথবা ভারতীয় হিসেবে–মুসলিম হিসেবে নয়।
এই বই যে বাঙ্গালি অথবা ভারতীয় পড়বে সে আমার মতই নতুন জন্মলাভ করবে।
@আবুল কাশেম,
আপনি কি ভারতীয়দের কথা বলছেন না বিশেষভাবে বাঙালীদের? বাঙালী মুসলিমরা উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্তও “হিন্দু” নাম রাখত, বিশেষত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে। হিন্দু ডমিনেেটড ভারতীয় জাতীয়তাবাদের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসবের পরিবর্তন হয়। যদিও এর মধ্যে অবশ্যই একধরণের সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদের ছায়া রয়েছে, তারপরও জবরদস্তিটা অত বেশি মাত্রায় হয়নি বলেই মনে হয়।
@রৌরব,
উভয়ের। একজন ব্রিটিশ ব্রিটেনের নাগরিক, সে আবার ইউরপিয়ানও; একজন ফরাসি ফ্রান্সের অধিবাসী কিন্তু সেও ইউরোপিয়ান। তেমনিভাবে আমরা বাঙ্গালি এবং বৃহত ভাবে আমরা ভারতীয়ও। এই ব্যাপারটা অনেকেই ভ্রুকুণ্ঠিত করে দেখবেন। কিন্তু এই সত্য এড়াবার কোন উপায় নাই।
ভারতবর্ষ কেটে কেটে যত টুকরা হউক না কেন। আমরা যে তার একটা টুকরা তা ভুললে চলবে না। অনেক বাঙ্গালি ভারতবর্ষের নাম শুনলে ক্ষেপে যেতে পারেন–কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে যে আমাদের স্বল্প ্পরিধিতে বাঙ্গালি হওয়া যায়–কিন্তু ব্যাপক ভাবে আমরা ভারতীয় সভ্যতার অঙ্গ সে সত্য থেকে বের হবার কোন উপায় নাই। যারা বিদেশে আছেন তাঁরা এই ব্যাপারটা মর্মে মর্মে জানেন; যেমন জানেন ইউরোপিয়ানরা।
মুসলিম বাঙ্গালিরা নিজেদেরকে যতই আরবের বংশধর অথবা তুর্কিদের ভ্রাতা হিসেবে মনে করে ততই তারা হাস্যের পাত্র হয়ে থাকে। আসল কথা হচ্ছে আমাদের শিকড় আরবের মরুভু্মিতে অথবা তুরস্কের নীল সাগরে অথবা পারস্যের গুলিস্তানে নয়। যারা বিদেশে আমাদের এইসব বংশধরদের সাথে কাছে আসার চেষ্টা করেছেন তাঁরা খুব ভালভাবেই জানেন এই মুসলিম ভ্রাতার আমাদের কি চক্ষে দেখে।
দুঃখিত এই ব্যাপারে আমি মন্তব্য করতে পারছি না; কারণ আমি এটা ভাল জানিনা। আপনার কাছেই প্রথম জানলাম।
@আবুল কাশেম ঠিক কথা।
@রৌরব,
এ একটা কি কথা বললেন ? হিন্দু নাম । বাংলা ভাসায় যে নাম তাকে হিন্দু নাম বললে আবার সেই ভেদা ভেদের স্পর্শ পাই।
আকাশ, অয়ন,অসিম,বিপ্লব,বীর, বিক্রম, কমল, ইত্যাদিকে কি হিন্দু নাম বা হিন্দু সব্দ বলা ঠিক ? এই যেমন মুক্তি যোদ্ধাদের যখন উপাধি দেয়া হয় বীর বিক্রম তখন কি তা হিন্দু নাম বা মুসল্মান নামের উপাধি হয়? না । আমরা বলি শুদ্ধ বাংলা উপাধি বা নাম।
বাংগালী মুসলমানেরা উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্তও বাংলায় নাম রাখতেন কিনা আমি জানিনা বা কোন দিন শুনিও নি। তবে দেখেছি আমার দাদুর অনেক মুসল্মান বন্ধুরা ধুতি পরতেন কিন্তু কাছা দিতেন না।
অবস্য পশ্চিম বংগে অনেক অভিজাত মুসলমান পরিবারে পুরুসেরা কাছা দিয়ে ধুতি পরতেন। আমি বিখ্যাত লেখক সঈয়দ মুস্তফা সিরাজকেও ধুতি পরতে দেখেছি।
@সেন্টু টিকাদার,
রৌরবের বলা ১৫০ বছর আগের বাংগালী নাম তত্ত্ব আমিও আগে জানতাম না। আমার ধারনা ছিল ব্যাপারটা চিরকালই এখনকার মতই, বাংগালী মুসলমান নিজেদের নাম রাখে বাংলা বাদে খুজে খুজে আরবী/ফার্সী এসব বের করে। এর কারন মনে হয় সে আমলের যত মুসলমান চরিত্রের কথা বইতে পড়েছি তাদের কারো নামই বিশুদ্ধ বাংলা নাম নয় এ কারনেই।
মুসলমান একটি মৌলিক বিশ্বাস অনুযায়ীই তারা নিজেদের এক জাতি ভাবতে পছন্দ করে। মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই। এই মৌলিক বিশ্বাসের কারনেই তাদের মাঝে একটি কৃত্রিম দ্বৈত জাতিস্বত্তা আছে যা কখনো সরাসরি বা কখনো পরোক্ষভাবে প্রকাশ পায়। বাংলাদেশের যেকোন সাধারন মুসলমানকেও যদি প্রশ্ন করা হয় যে তিনি আগে বাংগলাদেশী নাকি আগে মুসলমান তবে মনে হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জবাব পাওয়া যাবে যে তিনি আগে মুসলমান। এই দ্বৈত জাতিস্বত্তা জন্ম দেয় আইডেন্টিটি ক্রাইসিসের, যা পশ্চীমের বিধর্মী দেশগুলিতে থানা গাড়লে ব্যাপকভাবে প্রকাশ পায়।
এ কারনেই বাংলা নাম ছেড়ে আরবী/ফার্সী এসব নাম রাখায় আগ্রহ অনেক বেশী, কারন বাংলা হল সেই প্রাচীন হিন্দু সভ্যতার সংস্কৃতের অবদান। অনেক ওয়াজ মাহফিল এসব অনুষ্ঠানেও মোল্লা মাওলানারা সরাসরিই মুসলমানদের জন্য মুসলিম নাম রাখা সুন্নত বা ওয়াজিব এ ধরনের কথা বলে থাকেন। যদিও ইসলাম আসার পরেই সেসব মুসলমান নাম জগতে নাজিল হয়েছিল কিনা এই সরল প্রশ্ন করার মত সাহস কারোই হবে না বলাই বাহুল্য।
@আদিল মাহমুদ,
ধীরে ধীরে পরিবর্তনটা হয়েছে। অবশ্যই মধ্যযুগেও আরবী-ফার্সী নাম পাওয়া যায়, যেমন কবি আব্দুল হাকিম বা সুলতানদের নাম। কিন্তু জনসাধারণের নামের “ইসলামীকরণ” বহু শতাব্দী ব্যপী ধীরে ধীরে হয়েছে এবং জোর পেয়েছে উনবিংশ শতাব্দীতে। কেন বিশেষ ভাবে ওই শতাব্দীতে, তার জবাব আপনিই দিয়েছেন
প্যান-ইসলামিজম ওই সময়ই তীব্র আকার ধারণ করে নানান কারণে। ভারতীয় মুসলিমদের আলাদা “জাতি” নির্মাণের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বাংলা/হিন্দু নামটা মোটামুটি উঠে যায়।
হে হে। ফার্সী-র ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং কিন্তু। সোহরাব, রুস্তম এবং আরো অসংখ্যা ফারসী নামের সাথে ইসলামের বিন্দু মাত্র সংশ্লিষ্টতা নেই। ইসলামী দৃষ্টিতে সোহরাব আর রবীন্দ্রনাথের মধ্যে পার্থক্য থাকার কথা না। কিন্তু আছে। কেন?
@সেন্টু টিকাদার,
আমি “হিন্দু” শব্দটা উদ্ধরণ চিহ্নের মধ্যে রেখেছি, লক্ষ্য করেননি বোধহয় 🙂 । যাহোক, দলিলি দস্তাবেজে মুসলিম কৃষকদের “নারায়ণ মণ্ডল” জাতীয় নাম পর্যন্ত পাওয়া যায় উনবিংশ শতাব্দীতে, যাকে সত্যিই হিন্দু নাম বলতে হয়।
@রৌরব,
উনবিংশ শতাব্দী তো দুশ বছর আগের কথা। আমার এক ছাত্র, রশীদের (বর্তমানে REBএর GM) বাবার নাম “নিবারণ” (তিনি নিশ্চয় মারা গেছেন এদ্দিনে।) আমার বাড়ী থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে “গোপালের” বাড়ী। গোপাল একজন মুসলমান। তিনি এখনও জীবিত। গতবারও কথা হয়েছে। আধা কিলোমিটার দূরে একগ্রামের নাম “হরিদাসপুর” একটা হিন্দু কখনও বাস করেনি ওই গ্রামে। হরিদাসপুরকে মুহম্মদপুর করার চিন্তা করেছিল কিছু যুবক মাত্র পনের বছর আগে। গ্রামের নাম মুখে মুখে চলে। কাগজে থাকে না তাই কাজ হয়নি। কিন্তু ঢাকা ময়মনসিংহ রেলপথের কিছু নাম পরিবর্তন হয়েছে এরকম –
সেনবাড়ী –> আহম্মদ বাড়ী
রামঅমৃতগঞ্জ –> আওলিয়ানগর
কালির বাজার –> ফতেমা নগর
ষোল আনা মুসলমান হওয়ার তাড়নাই বোধহয় আরব দেশীয় নামের আসল কারণ। শুধু নাম কেন। পূর্বপুরুষদের অনেক শব্দও মুসলমানরা ব্যবহার করেনা। হাতের কাছের উদাহরণ “পানি”। পানি আবার হিন্দি-উর্দু ভাষীরা ব্যবহার করে। হিন্দিভাষীরা নাকি গঙ্গার পানি না বলে গঙ্গার জল বলে থাকে। কী বিচিত্র সব কিছু।
ইদানীং ভাল অর্থবাহী দেশী শব্দভিত্তিক নাম মুসলমানরা রাখছেন। যেমন আমাদের “বিপ্লব” রহমান।
বাংলাভাষায় এই বইটি একটা বিপ্লব আনবে মনে হয়।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
বলেন কি? এটা কেন হবে?
@রৌরব,
হা হা এটা বেশ মজার জিনিস। জল সংস্কৃত শব্দ। আর পানি বোধ হয় “পানীয়” শব্দের অপভ্রংশ। ভারতের বলিউডি হিন্দীতে জল হয়ে যায় পানি। তাই রেলস্টেশনে বোর্ড থাকে “পীনে কা পানি”।
আর শুদ্ধ হিন্দীতে সেটা থাকে জল। তাই সব সরকারী দপ্তর থেকে শুরু করে সমস্ত লিখিত হিন্দীতেই সেটা জল। সেটা “দিল্লী জল উন্নয়ন বোর্ড” বা “কেন্দ্রীয় জল আয়োগ” (সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন”) যাই হোক না কেন। পানি দিয়ে কোনো দপ্তর নেই কোনো হিন্দিভাষী রাজ্যে। এমনকী রেল দপ্তরের জল এর যোগান দেয় “রেল নীড়”। হিন্দিভাষীরা স্কুল লেভেলে জলচক্র আর জলবিজ্ঞান পড়ে। (হাইড্রোলজিক সাইকেল)
আর বাঙ্গালীদের হিন্দু নাম-মুসলমান নাম এর পার্থক্য বোধ হয় জোরদার আকার ধারন করে ফারায়েজী আন্দোলন এর সুচনার পর থেকে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
কিছু শিক্ষিত সংস্কৃতিবান পরিবার সন্তানদের বাংলা নাম রাখে।
দেশে আজকাল বেশিরভাগ বাচ্চাদেরই ডাক নাম বাংলা।
তবে আকীকা করে আরবী নাম রাখে বেশীরভাগ বাবামা ই ।
ঐযে রাখা সুন্নত তাই!
আমার জানা মতে বিশ্বাস, বৈরাগী, মন্ডল, মজুমদার, ঠাকুর এখন পর্যন্ত
টিকে আছে হিন্দু ও মুসলিম নামে!
ডারউইনের ন্যাচারাল সিলেকশনের মত!
@সেন্টু টিকাদার,
দাদা ঠিক ই বলেছেন। বাংলা নাম রাখলে এখনতো অন্যান্য মুসলিমরাই বলেন হিন্দুয়ানি নাম কেনো রাখা হল? আমার তো স্কুল থেকেই এই অভিজ্ঞতা।
আমার বাবা মা দুজনের ই বাংলা নাম, পদবীও মজুমদার। আর যায় কোথায়, আমি যে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নই সেটাই কেও বুঝেনা।
এম এ খানের “Islamic Jihad: A Legacy of Forced Conversion Imperialism and Slavery” মূল বইটি এক বছর আগে পড়েছিলাম। অসংখ্য তথ্যসমৃদ্ধ সুখপাঠ্য এ বইটি পড়ার পর আমাদের পূর্বপুরুষরা কিরুপ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিল তা জেনে মনটা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। বাংলায় এ বইটি অনূদিত ও প্রকাশিত হয়েছে জেনে খুবই ভাল লাগছে। এটি অবশ্য পাঠ্য ও সংগ্রহে রাখার মত একটি বই।
কাশেম ভাইকে ধন্যবাদ বইটির পর্যালোচনা লিখার জন্য। বইটির অনুবাদককেও অসংখ্য ধন্যবাদ। অনুবাদকের নাম কি জানাবেন?
@গোলাপ,
আমি যতটুকু জানি এই বইএর অনুবাদক তাঁর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
এই ব্যাপারে প্রকাশককে লিখতে পারেন। আমি লিখেছি, এখনও উত্তর পাই নি।
এ কথা সত্য যে- জিহাদ আজও জীবন্ত ও সক্রিয়। ভারতীয় মুসলিম প্রথমে নিজেকে মুসলিম মনে করে, তারপর ভারতীয় বা অন্য কিছু এরা ভারতীও গনতন্ত্রের কলঙ্ক।আগে দেখেছি বিশ্বকাপ এর সময় পাকিস্থান এর খেলা নিয়ে বড্ড মাতামাতি করে এই সব মুসলিমরা।এরা যে পাত্রে খায় সেই পাত্র ফুটো করে।সমাজ অ সভ্যতার কাছে এই ঘটনা ধিক্কার জনক।ইসলাম যতই বলুক না কেন ইসলাম শান্তির পীঠস্থান তার আড়ালে আছে অগুন্তি মানুষের চাপা কান্নার সুর।র এর জন্য আজীবন দাই হএ থাকবে ইসলাম অ তার জিহাদ।ধরমান্ধকরনের জন্য নবী তথা তার অনুগামীরা যে জিহাদ ঘোষনা করেছে এবং যার রোষানল এ মানুষ আজও দগ্ধ হছে তা একদিন তাদেরই নিসচিহ্ন করে দেবে।সত্য অ ন্যায় প্রতিষ্ঠার নামে নিষ্ঠুর বর্বরোচিত অকথ্য অত্যাচার করে চলেছে ইসলামের জিহাদিরা।
বইটি খুব ভাল তথ্য বহুল হবে বলে মনে হচ্ছে।পস্টটি খুব ভাল লাগল।আরো অনেক সত্য জানার অপেক্ষায় রইলাম।
@নীল,
বাংলাদেশেরও কিছু হিন্দু নাকি বাংলাদেশ ভারতের ম্যাচ হলে ভারতকে সমর্থন দেয়। আমি দেখিনি অবশ্যই। এ সম্পর্কে কি বলবেন?
@আদিল মাহমুদ,
কথা সত্য। লজ্জার কথা আর কী বলবো, পরিচিতদের মধ্যেই আছে। আচ্ছা, আমিই বা লজ্জা পাই কেনো??
@ব্লাডি সিভিলিয়ান,
ভারতের মুসলমানরা পাকিস্তানকে সমর্থন দেয় কিংবা বাংলাদেশের হিন্দুদের ভারতকে সমর্থন দেওয়া নিয়ে শুনতে খুবই বাজে মনে হলেও এ সম্পর্কে একটু ভিন্ন মতও আমার আছে।
আমি নিজে কোনদিন সংখ্যালঘু হবার মজা টের পাইনি। এই শ্রেনীর লোকে হয়ত সংখ্যালঘু হবার যাতনা থেকেই এই মানসিকতা ডেভেলপ করে।
@আদিল মাহমুদ, আমি নিজেও এখনো দেখি নি, তবে পাকিস্তান-ভারত ম্যাচ এর সময় নিজে পাকিস্তান-বিদ্বেষী বলে ভারতের সমর্থন করায় এটা শুনতে হয়েছে যে আমি হিন্দু বলে ভারত কে সমর্থন করি।
যারা বলেছিল, তাদের আমি তখন জিজ্ঞেস করেছিলাম যে তারা কেন পাকিস্তানকে সমর্থন করে, যদিও আমার প্রশ্নের উত্তর কেউ-ই এখনো দেয় নি…
@সৌরদীপ,
ভারত পাকিস্তান খেলায় কে কি সমর্থন করে তাতে কিছু যায় আসে না। আমি নিজে এক সময় পাকিস্তানের ঘরতর সমর্থক ছিলাম। ভাল খেলা যত না তার চাইতে ধর্মের ভাই বোধটাই নিঃসন্দেহে বেশী কাজ করত। পাকিস্তানের চেয়ে ভাল খেলত একাধিক দলই ছিল। অন্যদিকে ভারতের বিপক্ষে যেইই খেলত না কেন তারই সমর্থক বনে যেতাম 🙂 ।
কথা হচ্ছে বাংলাদেশ ভারত ম্যাচ নিয়ে।
@আদিল মাহমুদ,
এটার আসল কারন আমারও ঠিক জানা নেই।তবে কএকটা কারন এর সপক্ষে দেখাতে পারি-
১.কিছু মনে করবেননা, ভারতের ক্রিকেট টিম বাংলাদেশের তুলনায় অনেক প্রবীন তাই বাংলাদেশের তুলনায় ভারতের প্রতি ভরসা পাওয়াটা স্বাভাবিক।মাফ করবেন আমি কোন টীম ক ছোট করতে চাইনা।তরকের খাতিরে আমি এই দিকটা তুলে ধরলাম।একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবলেই বোঝা যাবে যে আমরা পরিক্ষার সময় নতুন পেন এর তুলনায় পুরনো পেন নিতে বেসি পছন্দ করি।জানি যে নতুন পেন এও লেখা যাবে তবুও পুরনটাকে বেছেনি।এখেত্রেও একে ঘটনা ঘটেছে,তাই তারা এরকম করে বলে মনে হয়।
২.একথা হামেসাই শোনা যায় যে ভারত হিন্দু রাস্ট্র।তাই বাংলাদেশকে যদি মুসলিম রাস্ট্র ধরা হয় তাহলে বাংলাদেশী হিন্দুরা ইন্ডিয়াকে সমর্থন দেবে এটাত খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।ঠিক যেমন করে পাকিস্থান কে নিয়ে বড্ড মাতামাতি করে ভারতীয় মুসলিমরা।তবে হ্যাঁ একথাও ঠিক যে কে কোন দল কে সমর্থন দেবে এটা তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার।
প্রিয় আবুল কাশেম,
ধন্নবাদ বইটার কথা বলার জন্ন। বাংআলিরা অনেক সত্তি কথা জানতে পারবে।
বইটি পড়েছি। এটা একটিমাত্র বই, যেটা দু’বার পড়তে বাধ্য হয়েছি।
আবুল কাশেমের এ পর্যালোচনাটি আমার ধারনাকে প্রায় পুরোটা প্রতিধ্বনিত করে। বইটি পড়ে আমি হিন্দু না হয়ে গেলেও, মুসলিম থেকে হিন্দু-বৌদ্ধ সভ্যতা-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মানুষ হয়ে গেছি।
লেখা আর মন্তব্য দেখে বুঝতে পারছি সংগ্রহ হিসেবে এইটা একটা দারুণ বই হবে। খুশীর খবর এটা। :clap
ইসলামের শান্তিময় চিত্র কোরানের দুটি সুরা , সুরা আনফাল ও সুরা তওবা তে এঁকেছেন স্বয়ং আল্লাহ্ পাক। আচ্ছা সুরা তওবার শুরুতে বিস্মিল্লাহ্ নেই কেন?
এরকম একটা বই বাংলাদেশে প্রকাশিত হল জেনে ভাল লাগছে।
একাজটা অটোমানরা করেছে খ্রীস্টানদের নিয়ে জানতাম, ভারতে হয়েছে জানতাম না। আরো কিছু তথ্য পাওয়া যায় এ ব্যাপারে?
লজ্জার সাথে বলতে বাধ্য হচ্ছি, এটা শুনে একটু স্বস্তি পেলাম 😛 । রূপম (ধ্রুব)-র সাথে এবিষয়ে অন্যত্র আলোচলা হচ্ছিল, এবং আমি সুফীদের সাধুত্ব নিয়ে একটু সন্দেহ প্রকাশ করছিলাম 🙂 ।
উমম। এবার সত্যিই বিস্মিত হইলাম। এমন না যে ও অঞ্চল সম্বন্ধে বিশেষ কিছু জানি, শুধু নাইপলের লেখাগুলি পড়া আছে। আমার একটা কেমন ধারণা ছিল, ও অঞ্চলে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্ম তেমন অর্গানাইজড ছিলনা এবং বেশ একটা ছাড়া ছাড়া animist ধরণের বস্তু ছিল বলে যুদ্ধ-বিগ্রহের প্রয়োজনটা অতটা পড়েনি (এটা হয়ত পূর্ব বাংলার ক্ষেত্রেও কিছুটা প্রযোজ্য)।
@রৌরব,
একাজটা অটোমানরা করেছে খ্রীস্টানদের নিয়ে জানতাম, ভারতে হয়েছে জানতাম না। আরো কিছু তথ্য পাওয়া যায় এ ব্যাপারে?
@আবুল কাশেম,
আটোমানরা এই প্রথাকে বল্`ত Devshrime. ভারতেও এই প্রথা চালু হয়েছিল তবে কি নাম ছিল জানা নাই। তবে এই প্রথা যে তুর্কীদের প্রথার মতই ছিল তাতে কোন সন্দেহ নাই। আমরা যদি আমাদের অতীত ইতিহাস ঘাঁটি তবে হয়ত আবিষ্কার করা যাবে যে আমাদের কোন পূর্ব পুরুষ হয়`ত Devshrime-এর ভুক্তভুগী ছিল।
এই ইসলামিক প্রথা যে কত নিষ্ঠুর বর্বরোচিত ভাবে ভারতবর্ষে আরব এবং তুরষ্কের লুটেরারা আমাদের পুর্ব পুরুষদের উপর চালিয়েছিল তা আমি জানলাম খানের বই পড়ার পর।
এর আগে `অন্যদের মত আমিও বিশ্বাস করতাম ইসলাম ভারতবর্ষে ঢুকেছিল শান্তির পতাকা নিয়ে–শুধুমাত্র সিন্ধুর আক্রমন ছাড়া।
@রৌরব,
:-X
চুলায় যাক শাহাজালাল ফাহাজালাল। আমি নিজ হাতে একটা শান্তিপ্রিয় নব্যসুফিবাদী ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবো। :guli:
@রূপম (ধ্রুব),
😀 (*)
বইটিতে জিহাদ নিয়ে চমৎকার আলোচনা রয়েছে। অনুবাদটা বেশ হয়েছে।
‘জিহাদঃ জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, সাম্রাজ্যবাদ ও দাসত্বের উত্তরাধিকার’
লেখকঃ এম এ খান
প্রকাশকঃ ব-দ্বীপ প্রকাশনী
৬৩ কনকর্ড এম্পোরিয়াম শপিং কমপ্লেক্স
২৫৩-২৫৪ এলিফ্যান্ট রোড
কাঁটাবন, ঢাকা-১২০৫
[img]http://a7.sphotos.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-snc6/182084_194513533901863_100000296529859_669762_3332740_n.jpg[/img]
সূচি
১। জিহাদ সম্পর্কে বিতর্ক
২। ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস
৩। নবি মোহাম্মুদের জীবন ও জিহাদের জন্ম
৪। ইসলামের বিস্তারঃ শক্তির জোরে নাকি শান্তিপূর্ণ উপায়ে?
৫। আরব-ইসলামি সাম্রাজ্যবাদ
৬। ভারতে ইসলামি সাম্রাজ্যবাদ
৭। ইসলামে ক্রীতদাসত্ব
৮। শেষ কথা
@সৈকত চৌধুরী,
প্রচুর ধন্যবাদ। আমি এতই আনাড়ি–জানিনা কেমন করে ছবি…ইত্যাদি যোগ করতে হয়। এক`টু শিখাবেন কি?
@আবুল কাশেম,
img তে ক্লিক দিয়ে ছবির লিংক যোগ করে দেন। যেমন আমার দেয়া ছবির লিংক এটা । ইচ্ছা করলে এটি আপনার পোস্টে যোগ করতে পারেন। যেখানে ছবি যোগ করবেন সেখানে আগে কার্সর রাখবেন।