(বইমেলা নিয়ে আপডেট জানানোর দাবি এসেছে অনেকের কাছ থেকে, তাই শুরু করলাম এই সিরিজ। কয় পর্ব হবে তা ঠিক করিনি। বইমেলা নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতাগুলো এখানে শেয়ার করব। নানা কাজে ব্যস্ত থাকায় মেলায় খুব কম সময়ের জন্য যাওয়া হচ্ছে তাই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাভারাক্রান্ত হয়ে উঠছে পোস্টগুলো। আর আমার লেখার হাতও খুব ভাল নয়, তাই কারো বিরক্তি লাগা শুরু করলে এবং সেটা বুঝতে পারলে ক্ষান্ত দেব। :-)।)

১ম পর্ব
বইমেলা নিয়ে আর কেউ লিখছেননা কেন? আরো অনেকে মিলে পোস্টে বা কমেন্টে মেলা নিয়ে অভিজ্ঞতা, মেলার হাল চাল শেয়ার করলে মনে হয় যারা দেশের বাইরে আছেন অনেক ভাল করে সিনারিওটা দেখতে পারতেন মনের পর্দায়।
আজ ৪ঠা ফেব্রুয়ারি সামান্য সময়ের জন্য মেলায় যাবার সুযোগ হয়েছিল। নানা ব্যাস্ততা পেরিয়ে গেলাম কাঙ্খিত বইমেলায়। মামুন ভাইকে এই সুযোগে ধন্যবাদ জানিয়ে যাই আমার জন্য অপেক্ষা করেছেন বলে। ওখানে গিয়ে দেখা হল তানভীর ভাইয়ার সাথে। উনার বইমেলা প্রীতি দারুণ, তাই তো পরশু প্লেন থেকে নেমেই নাকি সোজা ছুটেছিলেন মেলায়। একথা শুনে ভীষণভাবে অনুভব করলাম “একুশে বইমেলার” আকর্ষণ কি জিনিস। আমি জানি যারাই দেশের বাইরে এবং ঢাকার বাইরে আছেন প্রতিটি মুহূর্তে একবার করে ছুট্টে আসতে মন চাইছে মেলায়। অন্য সময় যেমন তেমন, ফেব্রুয়ারিতে আপনারা কিভাবে বাঁচেন দেশ থেকে, ঢাকা থেকে দূরে থেকে, তাই ভাবছি…

এরপর আসলেন রায়হান ভাই। মামুন ভাইকে অরেকবার অন্নেক অন্নেক ধন্যবাদ উনার উপহারের জন্য। অভি দা ও রায়হান ভাইয়ের “অবশ্বাসের দর্শন” এবং গীতাদির “তখন ও এখন” বগলদাবা করে ফেললাম উনার কল্যাণেই। :)) নইলে মুক্তমনার উৎকৃষ্টতম প্রবন্ধগুলো একসাথে করে অভি দা রায়হান ভাইয়ের এত এত টাকা রোজগারের ধান্দায় আমার তরফ থেকে একটু ভাটা পড়ত বৈকি। 😛 আবার ধন্যবাদ জানাচ্ছি মামুন ভাইকে, আমাকে এত স্নেহ করেন বলে। এমনিতেই মুক্তমনাকে আমার খুবই আপন লাগে তার উপর মামুন ভাইয়ের স্নেহ একেবারে আপ্লুত করে ফেলে আমাকে 🙂

মামুন ভাইরা খেতে চলে যাবার পর আমি বন্ধুদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে লাগলাম। আমার বাজে ক্যামেরা দিয়ে আর কোন ছবি তোলা গেলনা রাতে তাই কোন ছবি আপলোড দিতে পারলামনা আজ। আপনারা সবাই মিলে তানভীর ভাইরে ধরেননা! উনি গাব্দা সাইজের একটা ক্যামেরা নিয়ে ঘুরছেন! আশা করছি উনার কাছ থেকে বইমেলার সচিত্র একটা পোস্ট পাবো। তবে শুনলাম উনি নাকি দেশে আসার পর থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন না। কি জানি কি সমস্যা 😕

শুদ্ধস্বরে বই দেখছি, হঠাৎ শুনলাম শুদ্ধস্বরের স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে এক লোক বলছেন ১২ ই ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত “ডারউইন দিবস” পালন উপলক্ষ্যে টি.এস.সি তে অনুষ্ঠিতব্য প্রোগ্রামের কথা।(যারা পারবেন চলে আসবেন ওটায়। আমি থাকার যথাসাধ্য চেষ্টা করব ওখানে। রায়হান ভাইও থাকবেন বলে শুনলাম) কৌতুহলী হয়ে কথা বলতেই জানলাম উনি সামহোয়ার ইন এর প্রখ্যাত ব্লগার পারভেজ আলম ভাই। সেই একই সুযোগে দেখা হয়ে গেল আসিফ মহিউদ্দিন ভাই এবং আনাস ভাইয়ের সাথে। জমিয়ে আড্ডা দিলাম ওখানে। খুব মজা লাগল। তবে এখানে একটা মজার কথা বলি। অদ্ভুত কান্ড হল, শুদ্ধস্বরের পাশের স্টলটাই হচ্ছে আমার চাচাদের প্রকাশনী।(আমার ১৪ গুষ্টি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ইসলামিক দলের সমর্থক। তাই আমার থেকে সাবধান থাকবেন। আমি দ্বীনি স্পাইও হইবার পারি 😉 ) তারা এইসব নাফরমানদের সাথে আমার গলাগলি দেখে বাসায় কি বিচার পাঠায় সেটাই চিন্তার বিষয় :-s

শুদ্ধস্বর থেকে এক কাপ গরম চা খেয়ে আরো কিছুক্ষন মেলা ঘুরেত ফিরলাম আজকের মত। যখন বাসায় ফিরে আসছি টি.এস.সি তে আড্ডা দিয়ে তখনই শুনলাম মামুন ভাইরা আবারো ফিরছেন মেলায়। যেতে পারলামনা। (মাঝে মাঝেই মনে হয় বাংলাদেশি মেয়ে হওয়াটা খুব একটা কাজের কথা না :-s )

এবার মেলাটা আমার অনেক বেশি ভাল লাগছে কারণ গত বছরও এই সময় আমার দুনিয়াটা অনেক ছোট ছিল। অথচ এবার আমি লেখকদের অনেককে চিনি, অনেক অপরিচিত চেহারার মানুষদের সাথে প্রতিদিনই জমিয়ে আড্ডা হচ্ছে কারণ তাদের চেহারা না চিনলেও চিন্তা চেতনা চিনি। এটা থেকেই বুঝেছি কতটা জড়িয়ে পড়েছি ব্লগের সাথে। কতটা আপন হয়ে পড়েছি একসাথে অনেকগুলো অসাধারণ বন্ধুদের। It seems like i belong in much bigger world than that of Leena’s before 1 year… feels great… :))

সবার অবগতির জন্য জানাচ্ছি আমি আগামীকাল মেলায় থাকব বিকেল ৪টা থেকে এবং শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গীতাদিও থাকছেন। যারা যারা আসতে চান চলে আসতে পারেন। আড্ডা মারা যাবে ভাল রকম।
চলবে…