নীরবতা ভেঙে গেলে
বৈশাখের এই অবিন্যস্ত মধ্যদুপুরে ঝিলিক মেরে ওঠে রোদউদভ্রান্তি,
কিছু হাওয়া চূর্ণ করে বুকপকেটে জমে যায় নীলতিমিদের সমুদ্রপ্রথা;
ধূসর পাহাড়যাত্রীদের তীর্থঅনুভব।
সায়ানোব্যাকটেরিয়া রঙা নীলবইগুলোর প্রথমপাতা থেকে উঁকি দেয়
বেদনাচিহ্ন, কারো চুলের সিঁথির মতো টানটান হরফেরা চেয়ে থাকে,
নিঃসঙ্গ কচ্ছপের অনিয়ন্ত্রিত জলটান।
দূরের বিমর্ষ ব্যালকনি আরামচেয়ার
ওকসবুজ আকুলতায় নুয়ে পড়ে কিছুটা;
ভাল-দঅরের মেয়েটির নাকের ‘পরে আবেগঘন হতে থাকে ঘাম।
হঠাৎ বৃষ্টিতে বিছানা ভিজে যাবে জেনেও খুলে রাখতে ইচ্ছে হয় জানলা
যেইসব রেইনবো লোরিকীটের পালক থেকে ঝরে পড়ে সময়শূন্যতা-
বয়েসের দ্বিধা, তাদের বৃত্তচক্রে শ্লথ হয়ে আসে ঘড়ির ঘণ্টার কাঁটা।
নীরবতা ভেঙে গেলে
স্মৃতির উত্তল কাচে
খতিয়ে দেখি
প্রপঞ্চ ঘড়ির ডানাগুলো,
আমাদের সমস্ত দ্বিধা।
নিরীক্ষণ করি
মিমিকজনিত দায়বদ্ধতা,
ওপাশের অস্ফুট ঘরে
কারো রেখে যাওয়া রঙঘনত্ব।
ভালো লেগেছে অভি!
মুক্তমনায় স্বাগতম।
আপনার প্রকাশিতব্য বইয়ের জন্য অভিনন্দন রইলো।
@ফরিদ আহমেদ, আপনাকে-ও ধন্যবাদ জানাই।
আশরাফ ভাই,
অপূর্ব শব্দমালার এই কবিতাটা বুঝতে আমাকেও সাহায্য করুন প্লিজ।
@কাজী রহমান, এখানে বোঝার কিছু নেই, এটা গাণিতিক সমীকরণ তো নয়। আচ্ছা, আপনি এখানে কী “বুঝতে” চাইছেন? 🙂
@আশরাফ মাহমুদ,
আপনি রেগে গেছেন বলে মনে হচ্ছে। কম্পপ্লিমেন্ট মন থেকেই দিয়েছিলাম। কবিতাটা সহজবোধ্য হয়নি বলেই আপনার সাহায্য নিয়ে বুঝতে চেয়েছিলাম। যাই হোক, ভালো থাকুন এবং আরও লেখা উপহার দিন।
@কাজী রহমান, আরে, আমি রেগে যাবো কেনো! আপনি বরং বুঝতে চাইছিলাম আপনি ঠিক কী “বুঝতে চাইছিলেন, সাহায্য করা যেতো। যেমন- কোনো শব্দ অপরিচিত লাগলে, কোনো জিনিস, বা প্রয়োগ।
পাঠ করার জন্য ধন্যবাদ।
@আশরাফ মাহমুদ,
এই ব্লগটায় একটা ব্যাপার খুব পরিষ্কার আর তা হচ্ছে সহজতম পথে মানুষের কাছে পৌঁছানো। বিজ্ঞান, যুক্তি, মানবতা ইত্যাদি ব্যাপারগুলো নিয়ে পৌঁছানো তো রীতিমতো একটা শিল্পে রুপান্তরিত হয়েছে। যা কিছু অস্পষ্ট, ধোঁয়াটে, ঝাপসা কিংবা দুর্বোধ্য এখানে এসে তা সচ্ছতা পায়। কেউ কেউ জিজ্ঞেস করে জেনে নেয়, বুঝে নেয়। অকপট আন্তরিকতায় তা বুঝিয়েও দেওয়া হয়। আন্তরিকতা এবং স্পষ্টতা এখানে জ্বলজ্বলে তারার মত। আমরা সবাই সেই তারার আলোয় পথ চলতে চাই। আসুন সবাই সবাইকে পথ চেনাই। ভালো থাকুন। আনন্দে থাকুন।
@আশরাফ মাহমুদ,
আপনি একই কবিতা দু’ইবার লিখেছেন।নাকী এডিট করতে গিয়েছিলেন, ভুল করে এমন হয়ে গেল।
কি জানি বুঝতে না পেরে মাথা তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে :-O ভুল বললে শুধরে দেবেন।
তবে কবিতা’টা সুন্দর।
@আফরোজা আলম, না দুইবার লিখি নি। এই কবিতায় পুনরাবৃত্তি কৌশলের আশ্রয় নেয়া হয়েছে।
পাঠ করার জন্য ধন্যবাদ।
@আশরাফ মাহমুদ,
কবিতা কম বুঝলেও পড়তে ভালবাসি। ভাল লেগেছে আপনার চিত্রকল্প, উপমা আর রুপকের ব্যবহার।
রোদ কি আপনার প্রিয় প্রসঙ্গ? কাব্যগ্রন্থের নাম ‘রোদের অসুখ’ আর এ কবিতায়ও রোদের ঝিলিক।
অভিনন্দন একুশের মেলায় ‘রোদের অসুখ’ এর জন্য।
@গীতা দাস, জ্বি, রোদ খুব প্রিয় প্রসঙ্গ। তুষারদেশে থেকে থেকে মায়া পড়ে গেছে! :))
শুভেচ্ছা।
হুম পড়লাম। এইবার বুঝিয়ে দেন 🙂
@শ্রাবণ আকাশ,
:lotpot:
@শ্রাবণ আকাশ, সাহিত্যের ব্যাপারে সবার ইন্টারপ্রিটেশন, উপলব্ধি এক হয় না, আমার ধারণার সাথে আপনার ধারণা মিলবে না। কবিতা যতোটা না “বোঝার” জিনিস, তারচেয়ে বেশি উপলব্ধি বা অনুভবের বিষয়। আপনি পাঠোত্তর কী অনুভব করলেন বা উপলব্ধি করলেন তাই বলুন না।
কথা হতে পারে…
@আশরাফ মাহমুদ, এমন নয় যে এই প্রথম কবিতা পড়ছি। আর যাই হোক না কেন, স্কুল-কলেজে তো দু-চারটে কবিতা ঠিকই পড়তে হত, তা সম্পর্কে পরীক্ষার খাতায় লিখতেও হত। তবু কবিতা পড়ে ঐ উপলব্ধিটা এত সহজে কেন আসে না বলেন তো? ঐ যে নোট মুখস্ত করে উত্তর লিখতে হত যে!
তবুও নিজে কি উপলব্ধি করলাম সেটা না বুঝলেও কবিতায় কি বলা হয়েছে সেটা ঐ নোটবই মুখস্ত করতে করতে এক সময় কিন্তু বুঝতে পারতাম। তাই পাঠোত্তর কী অনুভব করলাম সেটা টিচাররাও কোনদিন জিজ্ঞেস করেনি বা সে সুযোগও কেউ কোনোদিন দেয় নি।
যেসব কবিতাগুলো আমরা পড়ি বা যাই বুঝি না কেন- সেসব কবিতাগুলোর কিন্তু কমবেশী কিছু ইতিহাস থাকে; কবিতাগুলো কেন কোথায় কিভাবে লেখা হয়েছিল- তার একটা ইতিহাস। সেসব জানা যায় বলেই পরবর্তীতে আমাদের বুঝে নিতে বা উপলব্ধি করতে সুবিধা হয়। ।আবার অনেক সময় কবির জীবনচরিত থেকেও আমাদের মনে কবিতা পাঠোত্তর একটা ধারনা জন্মে।
ব্লগে অধিকাংশ সাহিত্য সম্পর্কে সেরকম জানা যায় কম। আর এ জন্যই মনে হয় মন্তব্যও কম পড়ে। তো ব্লগে কেউ এরকম লিখলে আমার আগে জানতে ইচ্ছে করে কবি বা লেখকরা কোন সময়ে কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বা কিসের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে কবিতা বা সাহিত্যকর্মগুলো সৃষ্টি করছেন। তাই অনেক কবিকেই ব্লগে কবিতা দিলে শুধু কবিতা না দিয়ে সাথে আরো কিছু কথামালা যোগ করার জন্য অনুরোধ করি যাতে সহজে উপলব্ধিটা আসে।
এবার একটা উদাহরণ দেই- “তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা…” সেই ভীরু ভীরু মনে প্রথম শুনেই ধারনা করেছিলাম এটা একটা উৎকৃষ্ট মানের প্রেমের গান! প্রেমের বয়স- বুঝতেই পারছেন। তো সেটা মীন করে একজনকে শোনাতেই ঝাড়ি কাহাকে বলে, উহা কত প্রকার ও কি কি, উদাহরণসহ শুনতে হয়েছিল। :-X
পরে ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে কিন্তু ঠিকই বুঝেছিলাম ঐ গানের মর্মার্থ। তবে এখন যেহেতু আর নামাজ-পূজা-প্রার্থনা কিছু করি না তাই রবীন্দ্রপ্রেমীরা খেপলেও কিছু করার নাই; এটাকে আমি প্রেমের গান হিসাবেই চালাতে পছন্দ করবো। 🙂
@শ্রাবণ আকাশ,
আপনার এই কৌতুহলদ্দিপক প্রশ্ন আমাকে মুগ্ধ এবং বিস্মিত করল। যেমন আমার নিজের ব্যপারে বলতে পারি ,যে প্রত্যেকটা কবিতা লেখার পেছনে এক-একটা অনুভূতি কাজ করেছিল। মনের এক সময়কার
মিশ্র প্রতিক্রিয়া পরবর্তি কালে দেখেছি কবিতা হয়ে গিয়েছি।
বিশ্বাস করুন -কবিতা লিখব বলে কোনদিন কাগজকলম নিয়ে বসিনি। আমি তো এমনেই কাগজ কলম নিয়ে সেকেলে পদ্ধতিতে লিখি। 🙁
এই বার মনে হচ্ছে লেখা দেবার সময় তখনকার অনুভূতি প্রকাশ করতে হবে।
কিন্তু আমাদের মতন চুনোপুটি লেখক যদি এই সব লেখে লোকে হাসবে (L) । সেটা একটা লজ্জার কথা বটে।
আর এমন কিছু ঘটনা আছে লেখার পেছনে তাহলে তো চিচিং ফাঁক হবে। :-s কি বলেন?
@শ্রাবণ আকাশ, আপনার উপলব্ধি সঠিক। আমাদের দেশে সাহিত্যের ক্লাসটা হয়ে থাকে সবচেয়ে নিরস, অথচ এটিই টুইটুম্বর হওয়ার কথা ছিলো। নোট পড়ে বিশ্লেষণ, কবিতার অর্থ বের করা ইত্যাদির মাধ্যমেই আমরা আমাদের কল্পনাশক্তিটাকে সংক্ষিপ্ত করে ফেলি।
হ্যাঁ, কবিতার কমবেশি ইতিহাস থাকে, তবে কবি সেটা প্রকাশে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না-ও করতে পারেন। যে যাকগে, আপনি কিন্তু সঠিক উদাহরণ দিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথ প্রেমের গান হিসেবে না লিখলে-ও আপনি এটাকে অনুভব করছেন প্রেমের গান হিসেবে, হয়তো এইকারণেই শুনে থাকেন, দেখুন, এটিই কাম্য, পাঠক হিসেবে আপনার স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা দিতে পারাটাই একটি সাহিত্যকর্মের অন্যতম গুণ। গানটি “বুঝলে” আপনি কিন্তু আপনার দিক থেকে মূল আবেগটা টের পাচ্ছেন না, কিন্তু আপনার মতো করে ভাবতে পারলেই আপনি স্বস্তি পাচ্ছেন।
আলাপ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ জানবেন।
@শ্রাবণ আকাশ,
আপনার সহজ সরল মন্তব্য দেখে খুব মজা পেয়ে যে ইমো দিয়েছি তা বোধহয় ঠিক হয়নি। যাই হোক মনের ভাব মুক্ত ভাবে প্রকাশের ব্যাপারেও সাবধান হতে হবে মনে হচ্ছে। কি আর করা। ভালো থাকুন।
@কাজী রহমান, আহা, মুক্তমনারাও তো মানুষ, তাই না? একটু রসকষ বা মজা না থাকলে চলবে কি করে! আমি তো নীতিমালায় এমন কিছু দেখিনি।
ইমোটা কেন দিয়েছেন সেটা আমি ১০০% বুঝতে পেরেছি। আর আমি যে কেন বুঝতে পারছি সেটা আপনিও মনে হয় বুঝতে পারছেন। 🙂
@শ্রাবণ আকাশ,
বুঝতে পারছি। শুভেচ্ছা থাকলো। 🙂
@কাজী রহমান, ইমো দেয়া খারাপ কিছু নই। আমি নিজে-ও ইমো খুব পছন্দ করি। আপনি নির্দ্বিধায় মনের ভাব জানাতে পারেন। কবিতা সম্পর্কে শঙ্খ ঘোষ একটি কথা বলেছিলেন, “কবিতা পাঠের পর যে উপলব্ধি হবেই সেটিই কবিতার অর্থ।”