১৩৭০ সনের রবীন্দ্র পুরস্কার পাওয়া বই”কড়ি দিয়ে কিনলাম”।
আমার কাছে অনুরোধ এসেছে “আমার প্রিয় বই” সম্পর্কে কিছু লিখতে। কী ভাবে শুরু করব বুঝতে পারছিনা।
লেখক এই বই শুরু করেছেন শেষ থেকে। অনেকটা যেন শেষ থেকে শুরুর মতনই বিষয়টা। সেই দীপু তখন আর দীপু নেই। এখন সে দীপঙ্কর সেন। মিস্টার দীপঙ্কর সেন।
সেই দীপু এখন রেল কোম্পানির বড় চেয়ারের বড়ো সাহেব।
লেখকের ভাষায় –
১৯৬০ সালের ১লা জানুয়ারি “দেশ” পত্রিকায় দীপঙ্কর সেই যে যাত্রা শুরু করল। আরম্ভ হল সন্ধান। ফ্রি-স্কুল স্ট্রীট থেকে শুরু করে একেবারে কালীঘাটের ডাস্টবিন পর্যন্ত পরিক্রমা শুরু হোল তার।
দিনে দিন প্রতিদিনের অভিজ্ঞতায়,প্রতি মুহূর্তের অণূভাবনায় দীপঙ্কর তখন মানুষ হয়ে উঠছে আর মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছে।
এমন ভাবেই সূচনাপর্ব ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম বই এর। বিংশ শতকের দ্বিতীয়-তৃতীয় দশকের মাঝামাঝি। বিরাট একটা যুদ্ধ হয়ে গিয়েছে পৃথিবীতে।
দীপঙ্করের মা রাঁধুনি। এক কৃপণ ব্রাহ্মণের আশ্রয়ে থাকে মা আর ছোট দীপু। বাড়ির মালিক’কে দীপু অঘোর দাদু বলে ডাকতো। খিটখিটে মেজাজের ঐ বৃদ্ধ কেন জানিনা দীপুকে গোপনে ভালবাসত।
আর প্রকাশ্যে “মুখ পোড়া” বলে গাল দিতো।
ওদিকে অঘোর দাদুর সব সময় এক কথা কড়ি দিয়ে সব কেনা যায়। মানুষের ঘরে ঘরে পুজো দেন,বিনিময়ে যা পান তা সঞ্চয় করে রাখেন গোপন সিন্দুকে। কোন অজানা বিশ্বাসে দীপুর মায়ের ঘরেই সেই সিন্দুক ভরা টাকা থাকে,সোনার মোহর লুকান থাকতো।
এমনই বাল্য অবস্থায় সতী আর লক্ষ্মী নামে দুই বোন তার নিজ পরিবারের সাথে অঘোর দাদুর ভাড়াটে হয়।
পরিচয়ের সূত্রপাত ওখান থেকেই।তখন দীপু ভাবতেও পারেনি এই সতী আর লক্ষ্মী দুই বোনের সঙ্গে তার জীবন এমন করে জড়িয়ে যাবে।
সব চাইতে অপার বিস্ময়ের ব্যাপার সতীকে দীপুর ভালো লাগলেও মুখ ফুটে কোনও দিন কিছু বলেনি বড় হয়েও।
দীপু জানে তার মা রাঁধুনি। তার বাবাকে ডাকাতে মেরে ফেলেছে বলেই তো তাদের এই দুরবস্থা। এই জন্যই মা’কে অন্যের আশ্রয়ে থেকে রাঁধুনির কাজ করতে হচ্ছে। দীপুর প্রতি মায়ের অনেক আশা। দীপুকে পাশ করে নিদেন পক্ষে একটা কেরানীর চাকরি হলেও করতে হবে।
তাইতো দীপুর মত নিরীহ মুখচোরা অথচ চারিত্রিক ভাবে বলিষ্ঠ হওয়া মানুষরা নিজের আবেগের কথা বলতে পারেনা। ভাবতে পারেনা সংসারী হয়ে থিতু হবে দীপু।
গল্প এভাবেই চলে –
দীপু একদিন দেখে কংগ্রেসের মিটিং। একটা কারবাইড গ্যাস বাতি। অন্ধকার হলে জ্বালানো হবে।খবরের কাগজের লোক,পুলিশের রিপোর্টার বসে আছে কাগজ পেনসিল নিয়ে।
ভীতু দীপু প্রশ্ন করে—“সুভাস বোস কোনটা রে?
কিরণ বলে- সুভাস বোস আসেনি। জ্ঞ্যানাঞ্চন নিয়োগী এসেছে।দেখনা এমন বক্তৃতা দেবে তুই কেঁদে ফেলবি- লন্ঠন বায়স্কোপ হবে।“
দীপু ভাবে কিরণ কত জ্ঞানী কত বুদ্ধিমান। কিরণের বাবার কুষ্ঠ রোগ হয়েছে। ঘরে ভাত নেই। স্কুল কামাই দিয়ে মাঝে মধ্যে প্রায় লুকিয়ে ভিক্ষে করে,অথচ কিরণ কত জ্ঞানী। আর দীপু নিজে কত বোকা। বড়বড় চোখ নিয়ে চারদিক তাকায়। কিরণ কে বন্ধু পেয়ে গর্বিত অনুভব করে কিশোর দীপু।
দেখতে দেখতে গোলমাল লেগে গেল। দীপু কোনমতে প্রাণ নিয়ে ফিরে গেল। অথচ দীপু জানেনা ও কেন সেখানে গিয়েছিল। সে তো আর স্বদেশী করেনা।
ওকে পড়াশোনা করে মায়ের দুঃখ ঘুচাতে হবে।অন্যের আশ্রয়ে থাকে ওরা। মা রাঁধুনির কাজ করে।
লিখছি আর ভাবছি”কড়ি দিয়ে কিনলাম” তো মহাভারত। এতো বড় বিশাল দুই খণ্ড বই নিয়ে কিছু লেখায় আমি কতটুকু সফল হব। তবু আমাকে লিখতেই হবে।মনের এক তাড়না অনুভব করছি। ব্যর্থ হলেও সান্ত্বনা এই যে কিছু তো বলতে পেরেছি।
বিমল মিত্রের প্রিয় ছিল “রামায়ণ”। আমার ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম”।
বই’এ ফিরে যাই-
অঘোর দাদু কৃপণ ছিল। তাঁর বখে যাওয়া দুই নাতিকে বাড়ি ঢুকতে দিত-না। তাঁর ভয় সব টাকা-কড়ি লুটে-পুটে খাবে। দীপুর মা লুকিয়ে তাদের জন্য ভাত রেখে দিত। ওরা রাত,বা ঘুম দুপুরে পাঁচিল টপকে এসে খেয়ে যেত। নাম ছিটে আর ফোঁটা।
মাঝে মধ্যে চিৎকার শোনা যেত-
মেরে ফেলব মুখপোড়াদের নির্ঘাত মেরে ফেলব –বেরো মুখপোড়া বেরো,
খড়ম পায়ে বুড়ো মানুষ দোতালার বারান্দার এদিক থেকে ওদিক ছোটাছুটি করছে। কিন্তু চোখে দেখতে পায়না অঘোর দাদু।তাই ছিটের মাথায় মারতে গিয়ে লাঠিটা কখনও পড়ছে দেয়ালে,কখনও পড়ছে মেঝেতে। ছিটে,ফোঁটা ততক্ষণে কোথায় টুপ করে পালিয়ে গেছে। অঘোর দাদু জানতেই পারেনি।
দীপুর মা বুঝিয়ে সুঝিয়ে ধরে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে হাওয়া দেয়। তাকেও বলে –“ও মুখপোড়া মেয়ে তুইকি আমায় শান্তি দিবিনা।‘
এমন করেই ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ এগিয়ে চলে মহাকাব্যের মত।
এমন করেই ঈশ্বর গাঁঙ্গুলি লেনের কত ঘটনা দীপুর জীবনকে ওলট পালট করে দিয়েছে।
ঈশ্বর গাঁঙ্গুলি লেনে পরের গলগ্রহ, নগদ তেত্রিশ টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি হওয়া জীবন, সে হবে বড়,সে ভুলে যাবে। যেন দীপঙ্কর গরীব হবার দুঃখ বোঝেনা, যেন দীপঙ্কর অর্থাভাব কাকে বলে জানে না। যেন তার মা পরের বাড়ি রান্না করে, মুড়ি ভেজে কাঁথা সেলাই করে তাকে মানুষ করেনি।
তার চাকরি হওয়া যে কি জিনিস তা গাঙ্গুলী বাবু, কে-জি বাবুকে কেমন করে বুঝাবে।
দীপঙ্কর কি কা-পুরুষ? না এখানে আমরা দেখতে পাই-অন্য দীপঙ্করকে।
সমস্ত কালীঘাট সুদ্ধ লোক যখন বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়েছিল তখন সত্যি যদি সতীর গায়ে হাত তুলতো তারা? তার শরীরের সাথে সতীর শরীরটাও একাকার হয়ে গিয়েছিল তখন।
সতী তার বুকের মধ্যে মুখ লুকিয়ে নিশ্চিন্তে নির্ভর করেছিল। বাইরের সমস্ত ঝড় ঝাপটা থেকে একমাত্র দীপঙ্করই তাকে বাঁচাতে পারে।
দীপঙ্করের মনে হয়েছিল যেন আরও লুটপাট হোক,তবু সতীকে সে তো বুকের মধ্যে পেয়েছে।
একসময় দীপঙ্কর অনুভব করে-
সত্যি এবার তাকে নতুন পথে চলতে হবে। যখন সবাই একে একে ছেড়ে চলে গেল দীপঙ্কর কে, তখন তার নিশ্চয়ই নতুন একটা পথ আবিষ্কার করতে হবে।
লক্ষীদির ও তাকে প্রয়োজন নেই। সতীর প্রয়োজনও ফুরিয়ে গিয়েছে। কিরণ তাকে ত্যাগ করেছে। সকলের সব চাওয়ার সব পাওয়ার ভেতরকার চাওয়া-পাওয়ার পরিচয় পেয়েছে।
সবাই বলেছে-
এই বিচ্ছেদ থেকে আমাকে উত্তীর্ণ করো। অথচ তাদেরই মতন দীপঙ্কর ও তো একদিন মিশতে চেয়েছিল সকলের সাথে। যেখানে যার সঙ্গেই মিশতে চেয়েছে,
সেখান থেকেই এসেছে বিচ্ছেদ।
এমন মিল কি তার হয় না, যা পেতে হলে বিচ্ছেদের মূল্য লাগেনা।
হায় দীপঙ্কর!
চোখে জল আসেনা এই লাইনগুলো পড়তে। কেমন এক অনুভূতি হয়। কি অনবদ্য সৃষ্টিই না দিয়েছেন ‘বিমল মিত্র” আমাদের।
কোনটা ছেড়ে কোনটা বলি। কাকে ফেলে কাকে আনি।
সেই এমন এমন অবস্থা বিরাজমান –
সমস্ত ইন্ডিয়া তখন আরও উদগ্রীব হয়ে চেয়ে রয়েছে মহাত্মা গান্ধীর দিকে, জহরলাল নেহেরুর দিকে, বল্লভ ভাই প্যাটেলের মুখের দিকে। সুভাস বোস নেই, সি আর দাশ নেই। কুইট ইন্ডিয়া। ইন্ডিয়া থেকে যাও। আমরা আমাদের দেশ চালাব। হরিজন পত্রিকায় গান্ধী
লিখেছেন-
Whatever the consequences, therefore to India, her real safety and Britain’s too lie in orderly and timely withdrawal from India.
সমস্ত পৃথিবী স্তম্ভিত হয়ে গেছে কংগ্রেসের প্রস্তাব শুনে। বেয়নেটের মুখে জবাব দাও। চার্চিল মুখে চুরুট পুরে হেসেছে শুধু।
এভাবেই গড়িয়ে চলেছে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’। এভাবেই এগুতে থাকে যেন বিশাল মহাভারত।
বিমল মিত্র এই বই’এ যে দিনক্ষণ উল্ল্যেখ ্করেছেন তখনকার ঘটনার বর্ণনা দিলে আমরা দেখতে পাই-
সন্তোষ –কাকার মৃত্যু দিয়ে। তিনি এসেছিলেন দীপঙ্করের বাড়িতে আত্মীয় হিসাবে দাবি নিয়ে।তাঁর মনে আশা ছিল দীপঙ্করের সাথে তাঁর মেয়ের বিয়ে দেবেন।
দীপঙ্করের মায়ের মৃত্যুর পর তিনি চাপ সৃষ্টি করেন দীপুর প্রতি। এক সময় তার কন্যা ক্ষীরোদা ক্ষুব্ধ হয়ে বাবা’র প্রতি রাগ করায়, বাবা রাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এবং এক মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটে।
লেখকের বর্ণনায়-
সেদিন সন্তোষ –কাকার সেই অপঘাত মৃত্যুটা দেখে মনে হয়েছিল যেন শুধু সেটা অপঘাত মৃত্যুই নয়, সে মৃত্যু যেন মানুষের সঙ্গে মানুষের যুদ্ধের প্রথম বলি। প্রথম হত্যা।
মানুষের সাথে মানুষের যুদ্ধ অনেক বেধেছে। যুদ্ধের শেষ হয়নি পৃথিবীতে। মানুষ শিক্ষা পেয়েছে, সভ্যতা পেয়েছে, ধর্ম পেয়েছে, সমাজ পেয়েছে – সব পেয়েও যে কিছুই পায়নি, সন্তোষ-কাকার মৃত্যু তার প্রমাণ।
সন্তোষ কাকা কি পৃথিবীতে একজন! হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি সন্তোষ-কাকারা আত্ম বলিদান দিয়েছে মানুষের লড়াইয়ে। সন্তোষ-কাকারা জানেনি কী তাদের অপরাধ, আর কেনই বা তাদের এই শাস্তি! সন্তোষ –কাকারা বুঝতে পারেনি কে তাদের ভাগ্য বিধাতা।
আর কি-ই বা তার বিচার।
শুধু ভারত বর্ষের প্রদেশ প্রদেশেই নয়, সমস্ত পৃথিবীর জলে স্থলে জনপদে- জনপদে সন্তোষ-কাকারা আত্ম বলি দিয়েছে অকারণে।
তারা জানতে পারেনি কেন এই যুদ্ধ, কেন এই শত্রুতা।
তারা জার্মান দেখেনি, ইটালী দেখেনি, আমেরিকা দেখেনি, জাপানও দেখেনি। তারা বোঝেনি কেন জার্মানী তাদের শত্রু, আবার কেন আমেরিকা তাদের বন্ধু। শুধু দেখেছে,
প্রচন্ড দুর্ভিক্ষ, শুধু দেখেছে প্রাণঘাতী মৃত্যু।
মৃত্যুই সন্তোষ-কাকাদের সব প্রশ্নের নির্বাক উত্তর দিয়ে দিয়েছে।
যদি বেঁচে থাকতো সন্তোষ কাকারা, তবে হয়তো দীপঙ্করের মতই জানতে পারতো তাদের মৃত্যুর জন্য মিলিটারি , লরী দায়ী নয়। দায়ী আমেরিকার ডলার, দায়ী ইংলন্ডের পাউন্ড, ইটালীর লিরা, জার্মানীর মার্ক, ফ্রান্সের ফ্রাঙ্ক, জাপানের ইয়েন, আর ইন্ডিয়ার টাকা।
এক অদ্ভুত চরিত্র সতীর স্বামী সনাতন বাবুর। সব সময় বই মুখে থাকা আত্মভোলা মানুষও একদিন সংবিত ফিরে পেলেন সতীর বাড়ি ছেড়ে চলে যাবার পর। শাশুড়ির অত্যাচারে বাড়ি ছেড়েছিল সতী।
সতীকে পেতে চান তিনি,
সনাতন বাবু বলেন-
-আমার মা তো তোমারও মা। তুমি আমি কি আলাদা? তুমি আমি, আমার মা-সকলকে জড়িয়ে সংসার। তোমাকেও যেমন ছাড়তে পারিনা। মা’কে ছাড়লে তোমাকেও ছাড়তে হয় যে।আর তোমাকে ছাড়লে নিজেরই তো অস্তিত্ব থাকে না।
কূট চালাকিতে পারদর্শী সতীর শাশুড়ি। তবু সনাতন বাবুর কাছে তিনি মা। সতী তাঁর স্ত্রী।
দীপঙ্কর সতীর সুখের জন্য হাল ছাড়েনা। সনাতন বাবুকে বলে,-
-আপনার কাছে একটা অনুরোধ,রাখবেন?
সনাতন বাবু কথা দিয়েছিলেন – আমি রাখব।
-সতীকে সুখী করবেন?
-হ্যাঁ করবো।
ট্যাক্সিতে ওঠার সময় সনাতন বাবুর হাসির মানে বুঝেনি দীপঙ্কর। পরে বুঝেছিল। তখন সতী সত্যি সুখী হয়েছিল।
পরিশেষে বলি,এতো বিশাল, এতো ব্যাপক বই এর সমালোচনা করতে আমি অক্ষম। আমার এই অক্ষমতা পাঠক নিশ্চয় ক্ষমা করে দেবেন।
শেষ করার আগে একটা উদ্ধৃতি দেই-
দীপঙ্কর সংসার ত্যাগী হয়ে গ্রামের স্কুলে যায় সেখানে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলে-
‘আমি এখান থেকে চলে যাচ্ছি। তোমরা মনে করোনা এই এত বড় পৃথিবীতে আমার কোনও আশ্রয় মিলবেনা।
‘পৃথিবী অনেক বড়। তোমরা যত কল্পনা কর তার চেয়েও বড়। আমি একদিন আর এক জায়গা থেকে এখানে এসেছিলাম। আবার এখান থেকেও চলে যাবো।
‘প্রয়োজন হলে পৃথিবীর সব জায়গায় আমি খুঁজবো- দেখবো ‘কোথায় মানুষ পাই”। আমি হতাশ হইনা,হতাশ হবোনা। সনাতন বাবু আমাকে শিখিয়েছেন হতাশ হতে নেই।
আমি আশা নিয়ে সারা পৃথিবী খুঁজবো – কোথাও না কোথাও মানুষ পাবোই।‘
আমার প্রিয় বই ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’। যে বই এর আলোচনা সমালোচনা করার যোগ্যতা আমার নেই। আমায় ক্ষমা করুন।
পড়লাম। এখানে বইটির গল্পের কিছু অংশ তুলে ধরা হয়েছে বা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে বইটি কেন প্রিয় তার যথেষ্ট কারণ এখানে উপস্থাপিত হয়নি–আমার এমনটিই মনে হয়েছে। লেখাটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
শুভকামনা রইল।
@মোজাফফর হোসেন,
হ্যাঁ, বইটার অনেক অংশ না তুলে দিলে পাঠক বুঝবে কি করে কেন এই অংশটা প্রয়োজন, আর কেনই বা এই সব অংশ না দিলে আলোচনাটাই ব্যার্থতায় পরিনত হবে।
আমি বার বার বলেছি বইটা নিয়ে আলোচনার অনেক অবকাশ থাকা সত্বেয় আমার দ্বারা সম্ভব হয়নি। আমি অপরাগ। আর কেউ যদি পারেন তবে তিনি নিশ্চয় আমার চাইতে সুন্দর ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করবেন।
কড়ি দিয়ে কিনলাম কেন প্রিয় তা আরও বিষদ লিখতে গেলে আরও বিশালায়াতন হয়ে যেত।
তাই যতটুকু লিখে গিয়েছি,ততটাই আমার পক্ষে সম্ভব হয়েছে। পুরো বইটাই প্রিয় আলাদা করে আর কি ই বা বলি। আপনাকে ধন্যবাদ মুজাফফর।
আমি সাহিত্যের সৃষ্টি এক মানুষ মনে হয়। আজ পর্যন্ত একফোঁটা সাহিত্য সৃষ্টি করতে পারিনি, ও আমার সাধ্যাতীত। তবে সাহিত্য থেকে মুক্তি চেয়েছি এককালে। কড়ি দিয়ে কিনলাম পড়িনি আমি, ভালো লাগল আপনার রিভিউ। সাথে আরো কিছু কথাও মনে পড়ে গেল… আমাদের অনুভূতি, স্ররমতি, বর্তমান, ভবিষ্যত, সবই বাঁধা পড়ে আছে বিংশ শতাব্দীর উত্তাল দিনে, বাঁধা পড়ে আছে দারিদ্রে, বিপ্লবে। আমাদের অমর সাহিত্যগুলো সুখের নয়, কষ্টের, সংগ্রামের।আমরা কষ্টে বুক ভেসে গেলেও বেঁচে থাকতে জানি, এই যেন আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জন।
নবম শ্রেনীতে দীপাবলি ছিল আমার আইডল, একাদশে পা দেবার আগেই আবিষ্কার করলাম, আমি ছাড়িয়ে গেছি দীপাকে। ঠিক করলাম, আর না… এবার বেরুতে হবে সাহিত্য সৃষ্ট হবার হাত থেকে। বেড়িয়ে এলাম। এখন সহজে বাংলা উপন্যাসের ছায়া মাড়ায় না, ভেতরের আবেগী মনকে শুধু শুধু উত্তাল করে কি হবে? কবিতায় ছাড় দেইনি। এরপরও যে পড়িনি তা না, তবে মনকে শাসিয়ে…
পড়তে ইচ্ছে হলে, ইংরেজী সাহিত্যের দ্বারস্থ হই। ভারতের রক্তাক্ত ক্লেদাক্ত অতীত পড়ে পড়ে আর কাটা ঘাইয়ে নুনের ছিটা দিতে ভয় লাগে।
@নীল রোদ্দুর,
আপনার প্রাণখোলা আলোচনা আমার মন কেড়ে নিল। দীপাবলীর শেষ পরিণতিতে আমি লেখকের উপরে যারপরনাই অসন্তুষ্ট হয়েছিলাম। এখন মনে হলে হাসি পায়, প্রথম প্রতিশ্রুতি পড়ে অনুভূতি
অব্যক্ত রেখে রক্তাক্ত হয়েছি, সাত সাতকাহন সেও তো একই কথা।
ঠিক কথা। এ প্রজন্ম কতটা বুঝবে জানিনা।
‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ আমার মন অনেক আগেই কেড়ে নিয়ে সাত আসমানের ওপরে নিয়ে গিয়েছে।
যার ওপরে আর বই পাইনি।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে।
আমাদের জীবনে অধিকাংশ মানুষেরই বুঝি এমন হয়। ভালো লাগার কথাটা মুখ ফুটে অনেক সময়ই বলা হয় না বা বলা যায় না।
@মাহফুজ,
আপনাকে ধন্যবাদ ” কড়ি দিয়ে কিনলাম ” বইয়ের প্রচ্ছদটা তুলে ধরার জন্য।
বইয়ের কভার:
[img]http://3.bp.blogspot.com/_ufAq8VKxRcE/TIgdyvP2jYI/AAAAAAAACNM/F5oc_xfdPc0/s320/Kori_Die_Kinlam.jpg[/img]
@মাহফুজ, বইটা কি পড়তে পারছেন? তবে যে লিখলেন ওপেন হচ্ছে না?
@রুশদি,
ডাউনলোড করেছি কিন্তু ওপেন হয় না। কারণ র্যার ফাইল। এই ফাইল ওপেন করার তরিকা জানি না। আমারে হেল্প করতে কেউ এগিয়ে এলে কৃতজ্ঞ থাকবো।
@মাহফুজ, http://www.win-rar.com/
@শ্রাবণ আকাশ,
প্রথমে ডাউনলোড তারপর ইন্সটল করেছি। এরপর ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ র্যার ফাইল ওপেন করতে গেলাম, হলো না। বলল, ড্যামেজ।
একটু বিস্তারিতভাবে সাহায্য করুন।
@মাহফুজ, যদিও আমার কাছে প্রিন্টেড ভার্সনটা আছে, আমি এখানে থেকে এই মাত্র ডাউনলোড করে দেখলাম, আমি ঠিকই ওপেন করতে পারছি।
Part1- 37.5MB
http://www.mediafire.com/?4nalx8rpn1j9aai
Part2- 29.3MB
http://www.mediafire.com/?ys66i3uuz398448
বুঝতে পারছি না কেন আপনার সমস্যা হচ্ছে। ফাইল এত বড় না হলে সরাসরি মেইল করে দিতে পারতাম।
অনেক ধন্যবাদ লেখাটার জন্য। আমার পড়া শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হল “আরন্যক”। আমি ম্যাট্রিক পাশ করার পর শহরে এসে এই বইটা ,সাহেব বিবি গোলাম,আর আসামী হাজির,তিনটাই পড়েছিলাম। একটা জিনিস,আমার মনে হয়েছিল,তিনটির বর্ণনার ধরনটা এক। আমি থ্রিলারভক্ত হওয়া সত্বেও এই বইগুলি যে ভাল লেগেছিল,তা বলাই বাহুল্য।
@রুশদি,
এই তিন বইই আমি পড়েছি। খুব ভালো লেগেছে। আপনি কষ্ট করে আলোচনাটা পড়লেন আমি কৃ্তজ্ঞ।
সুপ্রিয় পাঠক,
যারা এই আলোচনাটা পড়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে জানাই, আবারও কিছু নতুন সংযোজন করেছি।
পুনরায় না পড়লে পড়তে পারেন এইখান থেকে,
” বিমল মিত্র এই বই’এ যে দিনক্ষণ উল্ল্যেখ ্করেছেন তখনকার ঘটনার বর্ণনা দিলে আমরা দেখতে পাই-
সন্তোষ –কাকার মৃত্যু দিয়ে। তিনি এসেছিলেন দীপঙ্করের বাড়িতে আত্মীয় হিসাবে দাবি নিয়ে।তাঁর মনে আশা ছিল দীপঙ্করের সাথে তাঁর মেয়ের বিয়ে দেবেন।
দীপঙ্করের মায়ের মৃত্যুর পর তিনি চাপ সৃষ্টি করেন দীপুর প্রতি। এক সময় তার কন্যা ক্ষীরোদা ক্ষুব্ধ হয়ে বাবা’র প্রতি রাগ করায়, বাবা রাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এবং এক মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটে।
লেখকের বর্ণনায়-
সেদিন সন্তোষ –কাকার সেই অপঘাত মৃত্যুটা দেখে মনে হয়েছিল যেন শুধু সেটা অপঘাত মৃত্যুই নয়, সে মৃত্যু যেন মানুষের সঙ্গে মানুষের যুদ্ধের প্রথম বলি। প্রথম হত্যা।
মানুষের সাথে মানুষের যুদ্ধ অনেক বেধেছে। যুদ্ধের শেষ হয়নি পৃথিবীতে। মানুষ শিক্ষা পেয়েছে, সভ্যতা পেয়েছে, ধর্ম পেয়েছে, সমাজ পেয়েছে – সব পেয়েও যে কিছুই পায়নি, সন্তোষ-কাকার মৃত্যু তার প্রমাণ।
সন্তোষ কাকা কি পৃথিবীতে একজন! হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি সন্তোষ-কাকারা আত্ম বলিদান দিয়েছে মানুষের লড়াইয়ে। সন্তোষ-কাকারা জানেনি কী তাদের অপরাধ, আর কেনই বা তাদের এই শাস্তি! সন্তোষ –কাকারা বুঝতে পারেনি কে তাদের ভাগ্য বিধাতা।
আর কি-ই বা তার বিচার।
শুধু ভারত বর্ষের প্রদেশ প্রদেশেই নয়, সমস্ত পৃথিবীর জলে স্থলে জনপদে- জনপদে সন্তোষ-কাকারা আত্ম বলি দিয়েছে অকারণে।
তারা জানতে পারেনি কেন এই যুদ্ধ, কেন এই শত্রুতা।
তারা জার্মান দেখেনি, ইটালী দেখেনি, আমেরিকা দেখেনি, জাপানও দেখেনি। তারা বোঝেনি কেন জার্মানী তাদের শত্রু, আবার কেন আমেরিকা তাদের বন্ধু। শুধু দেখেছে,
প্রচন্ড দুর্ভিক্ষ, শুধু দেখেছে প্রাণঘাতী মৃত্যু।
মৃত্যুই সন্তোষ-কাকাদের সব প্রশ্নের নির্বাক উত্তর দিয়ে দিয়েছে।
যদি বেঁচে থাকতো সন্তোষ কাকারা, তবে হয়তো দীপঙ্করের মতই জানতে পারতো তাদের মৃত্যুর জন্য মিলিটারি , লরী দায়ী নয়। দায়ী আমেরিকার ডলার, দায়ী ইংলন্ডের পাউন্ড, ইটালীর লিরা, জার্মানীর মার্ক, ফ্রান্সের ফ্রাঙ্ক, জাপানের ইয়েন, আর ইন্ডিয়ার টাকা।”
এটুকু-ই। ধন্যবাদ।
@আফরোজা আলম,
নতুন সংযোজিত অংশটুকু পড়লাম।
আসলে প্রতিটি উপন্যাসের মধ্যেই এমনকিছু চরিত্র থাকে যেগুলো এক একজন পাঠকের মনে দাগ কাটে। ভালো হয়েছে সন্তোষ কাকার অংশটুকু জুড়ে দিয়ে।
@মাহফুজ,
সন্তোষ-কাকার এই অংশটুকু বাদ পড়লে সেই সময়কার প্রেক্ষাপটের অনেক কিছুই বাদ পড়ে যেত।
যেমন দূর্ভিক্ষ, মানুষের দূর্ভোগ, যুদ্ধের কারনে মানুষের নাজেহাল অবস্থা। অনেক অনেক কিছু এমন ব্যপার আছে।
আসলে এতো ব্যাপক আকারের বই ‘রিভিউ’ করতে গিয়ে অনেক কিছুই বাদ পড়ে গিয়েছে। আর বেশি লিখতে গেলে আর একটা ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ এমন বইয়ের আকার ধারণ করত।
তাই বার বার বলছি এই বই নিয়ে আলোচনায় আমি হয়তো ব্যর্থ, অক্ষম।
@আফরোজা আলম,
আপনার ও মাহফুজ ভাইয়ের মেইল পেয়েছি!
না না মুক্তমনা ছেড়ে চলে যাইনি!
আপনারা আমার আত্মার আত্মীয়!
ভূলি কি করে!
দীর্ঘ শীত নিদ্রায়…:-)
মানে বাংলাদেশ ভ্রমনে গিয়েছিলাম।
সাথে ছোটভাইয়ের বিয়ে!
খুব মজা করেছি!
আপনারা ভাল আছেন?
মনে রাখার জন্য অশেষ ধন্যবাদ!
এজন্যই পৃথিবীকে এত ভাল লাগে!
রিভিউটা খুব ভাল হয়েছে।
ইন্টারমিডিয়েটে স্কলারশীপের টাকা দিয়ে আসামী হাজির কিনে গোগ্রাসে গিলেছি! কি সব দিন ছিল!
ভাল থাকুন, রিদয়,মনে শরীরে সর্বক্ষণ!
@লাইজু নাহার,
ইশশ! আপনি তবে ভালো আছেন এইটাই বড় কথা। মন বড্ড চঞ্চল ছিল এই ভেবে যেন অসুখ বিসুখ না হয়। আজকাল সুস্থ থাকা মানেই সে ধনী ব্যক্তি। আপনি দেশে এলেন আর জানতে পারলাম না। খুব কষ্ট লাগছে। এইবার এলে নিশ্চয় কথা হবে,আমি ফোন নং দিয়ে দেব।
আসলে আপনার কথা ঠিক যার সাথে আত্মার সম্পর্ক সেই তো আত্মীয়
‘আসামী হাজির” আমার সংগ্রহে আছে। তবে মন কেড়ে নিয়েছে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’
আজও পড়তে ক্লান্তি লাগেনা।
আপনার দীর্ঘ অনুপস্থিতি আমাকে অন্তত পীড়া দিয়েছে। অনেক অনেক শুভকামনা থাকল।
@রুশদি,
আপনার পড়া শ্রেষ্ঠ উপন্যাসের শেষের অংশটুকুতে এভাবে লেখা আছে:
মানুষের বসতির পাশে কোথাও নিবিড় অরণ্য নাই। অরণ্য আছে দূর দেশে, যেখানে পতিত-পক্ব জম্বুফলের গন্ধে গোদাবরী-তীরের বাতাস ভারাক্রান্ত হইয়া ওঠে, ‘আরণ্যক’ সেই কল্পনালোকের বিবরণ। ইহা ভ্রমণবৃত্তান্ত বা ডায়েরি নহে-উপন্যাস। অভিধানে লেখে ‘উপন্যাস’ মানে বানানো গল্প। অভিধানকার পণ্ডিতদের কথা আমরা মানিয়া লইতে বাধ্য। তবে ‘আরণ্যক’-এর পটভূমি সম্পূর্ণ কাল্পনিক নয়।
@মাহফুজ, আপনি ভাই জিনিস একটা। ফুল রেফারেন্স ম্যান বলা চলে। কোডটাতে কাজ হয়েছে কিনা জানতে চাইছিলাম।
@রুশদি,
আশরাফুল মাখলুকাতকে এভাবে জিনিস কইলেন! যাক, তবু তো স্যাটানিক ভার্সেসের মত মহাউন্দ বলেন নাই।
ফুল মানে যদি বোকা হয়, তাহলে কথাটা ঠিক আছে।
ই-বার্তায় যাওয়া যাচ্ছে না বিধায় ই-মেইলে জানিয়েছি।
কড়ি দিয়ে কিনলাম সাধারণ উপন্যাসের তুলনায় আকারে দীর্ঘ, ছোট ফন্ট এবং space between linesও কম। তারপরেও বইটি প্রথম খন্ড ৮৪৮ এবং দ্বিতীয় খন্ড ৬৪৮ পাতা দীর্ঘ।
আফরোজা আলম ঠিকই বলেছেন – এই বইটির রিভিউ করা দুরুহ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে চীন-ভারত যুদ্ধের সময় কাল এর পঠভূমি।
ইংরেজ সৈন্যদের যুদ্ধ লরী নিত্য চলাচল করে কলকাতা শহরে। সন্তোষকাকা লরী চাপা পড়ে একদিন মারা গেলেন। কে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী? বিমল মিত্র দায়ী করলেন ইতালীর লীরা, আমেরিকার ডলার, ব্রিটেনের পাউন্ড, ফ্রান্সের ফ্রাঙ্ক, জাপানের ইয়েনকে।
১৯৬৬ সনে পড়েছি। ট্রেনে চাপা পড়ে সতীর মৃত্যু দৃশ্য আমি দেখেছি যেন। এখনও ট্রেনের হেড লাইট দেখলে ভয় পাই। অগনিত পাঠক বিমল মিত্রকে অনুরোধ করেছিলেন, সতীর যেন মৃত্যু না হয়। বিমল মিত্র বলেছিলেন – বাল্মিকি সীতার পাতাল প্রবেশ রোধ করতে পারেননি, আমি সাধারণ মানুষ হয়ে সতীকে অবধারিত মৃত্যুর হাত থেকে কীভাবে বাঁচাব?
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দৃশ্যমান অগণিত পাঠকের অনুরোধের মূল্য না দিয়ে বিমল মিত্র অদৃশ্য দেবতার প্রতি আস্থা রাখলেন। মানুষের চেয়ে দেবতাকে বেশি শক্তিশালী মনে করলেন। তিনি বড়ই দেবতাভক্ত ছিলেন দেখছি। ইচ্ছা করলে কলমের খোচায় দেবতাকেও মেরে ফেলা সম্ভব।
@মাহফুজ,
অনেক ঘটনার সাথে মিলাতে গেলে লেখক কলমের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন।তাই বিমল মিত্রের ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম” এই বইটার এইখানেই সার্থকতা। আশা করি বোঝাতে পারলাম। জানিনা সহমত হবেন কিনা।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
প্রথমেই আপনাকে নতূণ বছরের শুভেচ্ছা। অনেক দিন যাবত আপনার অনুপস্থিতি অনূভব করছি।
আপনার আগমনে সত্যি আনন্দিত হলাম।
কড়ি দিয়ে কিনলাম সাধারণ উপন্যাসের তুলনায় আকারে দীর্ঘ, ছোট ফন্ট এবং space between linesও কম। তারপরেও বইটি প্রথম খন্ড ৮৪৮ এবং দ্বিতীয় খন্ড ৬৪৮ পাতা
দীর্ঘ।
ঠিক বলেছেন। এই দীর্ঘ বই রিভিউ করতে যে শ্রম দিতে হত তাতে হয়তো আমি ব্যার্থ,তবু চেষ্টা করে গিয়েছি মূল বিষয়গুলোকে তুলে ধরতে।
সন্তোষ কাকার মৃত্যু যেন আসলেই দেখিয়ে দিল ‘অপঘাত মৃত্যুই নয়,সে মৃত্যু যেন মানুষের সঙ্গে মানুষের যুদ্ধের প্রথম বলি। প্রথম হত্যা’।
আর সতীর মৃত্যু যেন অবধারিত ছিল,যেখানে বিমল মিত্রের কিছুই করার ছিলনা। ঘটনার গতীতে তাই মনে হয়।
আবারও ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আপনাকে আর একদফা ধন্যবাদ জানাই,আমি এক বিরাট অংশ আলোচনা করা থেকে বাদ রেখেছিলাম।
আপনার উক্তিকে মনে পড়ে গেল। তাই কিছুটা সংযোজন করলাম। আর তা হচ্ছে “সন্তোষ-কাকার” মৃত্যু। বড্ড ভুল হয়ে গিয়েছিল আমার। আপনাকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই আমার।
`অনেক পরিচ্ছদ, যতবারই পড়েছি ততবার কেঁদেছি। এছাড়াও পড়ার পর অশ্রুপাত করেছি, ঘুমাবার আগে অশ্রুপাত করেছি, ঘুম থেকে উঠেও অশ্রুপাত করেছি।
আর একটা বাংলা বই যেটা আমাকে প্রচুর কাঁদিয়েছে সেটা হচ্ছে ‘অপরাজিত’–বিভূতি ভুষণের লেখা—পথের পাঁচালির অরেক পর্ব। অপূর মায়ের মৃত্যুর বর্ণনা পড়ে আমি লাইব্রেরিতে আশ্রুপাত করেছি।
@আবুল কাশেম,
ইতিমধ্যেই আমি অভিজিত’কে বলেছিলাম “পথের পাঁচালী”র কথা। বিভূতি ভূষনের আর এক অনবদ্য সৃষ্টি।
অপুর মায়ের মৃত্যু এবং আর একটা ঘটনাতেও মন কেমন করেছে তা হল অপূর বোন দূর্গার মৃত্যু। মৃত্যুর পরে অপূ আবিষ্কার করে সেই পুতুল গুলো দূর্গাই নিয়েছিল।
সত্যি বলতে দ্বিধা নেই।কেঁদেছি প্রতিবারই। মনে দাগ কেটে দিয়েছে। অপূ সেই যে ট্রেন’এর হুইসেল শুনলে দৌড়াতে দৌড়াতে যেত।
নিজের শৈশবের কথা মনে পড়ে যায়। যেখানে নদী’র ওপারে প্রায়ই চলে যেতাম। ডাকাতিয়া নদী,
এক মাঝি ছিল তার তার “ষোলো দানা” বড্ড অদ্ভূত নাম তাই না? আমি আর ছোট ভাই দু’জনা মিলে হেলিকপ্টার দেখতে যেতাম। সেই — কবেকার কথা।
তবে সত্যজিৎ রায় কতটুকু ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন আমার সন্দেহ। তবে তিনি ছাড়া আর কেউ অবশ্য ছিলনা যে “অপুর সংসার”এর মত ছবি বানাবেন।
ভালোই লাগছে আলোচনা করতে।
@আফরোজা আলম,
@আফরোজা আলম,
সত্যজিতঁ রায়ের ব্যাপারে আমি হয়ত বিপরীত। আমার কাছে মহানগরী বড়ই পানসে এবং ইংরাজীতে যাকে বলে বোরিং মনে হয়েছে। এই চলচিত্র কেমন করে সম্মানিত পুরষ্কার পায় আমি বুঝিনা।
বিভূতি ভূষণের ‘অপরাজিতের’ সাথে সত্যজিত রায়ের ‘মহানগরীর’ কোন তুলনায় হয় না। প্রথমটা হচ্ছে উত্তপ্ত ভাত আর দ্বীতিয়টা হচ্ছে পানসে অথবা বাসি ভাত। একই কথা চলে টলস্টয়ের ‘ওয়ার এণ্ড পিস’ এবং তার চলচিত্র। এই চলচিত্র ‘ওয়ার এণ্ড পিসের’ ধারে কাছে যায়নি।
টলস্ট্যের ওয়ার এণ্ড পিস পড়ে সোনিয়ার দুঃখে আমি কেঁদেছি, কিন্ত চলচিত্র দেখে তেমন কোন আবেগই আসে নাই।
বাংলাদেশের বাইরে এসে সত্যজিত রায়ের অনেক ‘সৃষ্টি’র দেখা সুযোগ হয়েছিল–যথা ‘আকালের সন্ধানে’—ইত্যাদি। সত্যি বলতে কি ‘আকালের সন্ধানে দেখার সময় আমি ঘুমিয়ে পরেছিলাম। এত বোরিং এবং নিষ্প্রাণ ছবি হয়ত আমি দেখি নাই।
যাক, জ্ঞানীগুনীরাই সত্যজিতের মেধা বুঝবেন।
@আবুল কাশেম,
খটকা লাগলো। বিভূতি ভূষণের ‘অপরাজিত’ নিয়ে বানানো সত্যজিতের ছবিটার নামও কিন্তু ‘অপরাজিত’, ‘মহানগরী’ নয়। আর যতটুকু মনে পড়ে মুভিটার নাম ‘মহানগর’ মহানগরী নয়।
@ইরতিশাদ,
খটকা আরো আছে। মৃণাল সেনের ছবি ‘আকালের সন্ধানে’-কে সত্যজিত রায়ের নামে চালিয়ে দিয়ে বেশ এক হাত নিয়েও ছেড়েছেন। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
আপনি সঠিক।
এই সব ছবি অনেকদিন পূর্বে দেখা। পরিচালকের নাম, এমনকি ছবির সঠিক নামও মনে নেই। তবে বিদেশে এই ছবি টিভি তে দেখানো হয়েছিল যেহেতু ছবিটি অনেক পুরষ্কারপ্রাপ্ত।
আমার কাছে ছবিটি তেমন উল্লেখযোগ্য মনে হয় নাই। এটাই কথা। অবশ্যই এ হচ্ছে নিতান্তই ব্যক্তিগত মতামত। ছবি দেখতে অর্ধেক ঘুমিয়ে পড়েছিলাম–এইই আর আর কি।
আমার মতিভ্রমের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলাম।
@ইরতিশাদ,
বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী ও অপরাজিত, এবং নরেন্দ্রনাথ মিত্রের ‘মহানগর’ ছবি তিনটির পরিচালকই সত্যজিৎ রায়।
@আকাশ মালিক,
হ্যাঁ, আপনার তথ্যই ঠিক :yes:
@ইরতিশাদ,
আপনি ঠিক লিখেছেন। আমি যে ছবিটার কথা লিখেছিলাম তা খুব সম্ভবতঃ ‘অপুর সংসার’ হবে। ছোট বেলায় নবম অথবা দশম শ্রেনীতে পড়াকালে গুলিস্তান সিনেমা হলে ছবিটা দেখেছিলাম। এই ছবিটি ‘অপরাজিত’ বইএর অনূকরণে হয়েছিল মনে হচ্ছিল।
আমার মতিভ্রম ঘটছে–বয়স বাড়লে এই রোগ হয়।
@আবুল কাশেম,
আমি আপনার সাথে একমত। তবে সত্যজিত রায়ের কথা বলেছিলাম এই কারণে চলচিত্রে রুপান্তরিত করার মতন আসলে কেউ ছিল না।
অপুর চরিত্রের বিশেষ দিক গুলো তেমন করে ফুটাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন নির্দ্বিধায় বলছি। তেমন করেই
অপরাজিত ও ফুটিয়ে তুলতে পারেননি। আসলে আমরা কিছু বাঙালি আছি অনেক সময় যেমন রবীন্দ্র সঙ্গিত ভালো না লাগলে যদি জনসমক্ষে বলি তাহলে মনে হয় যেন বলে বিশাল অপরাধ করে ফেলেছি।
ঠিক তেমনই সত্যজিত রায়ের ছবি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার বিশ্লেষন করলে লোকে বলবে ‘আরে তুমি কী বোঝো ” এই বিশাল ব্যাক্তিত্ব সম্পর্কে?
আসলেই হয়তো তাই।
আরো দেখুন,”দা ভিঞ্চি কোড”। বইএ পড়লাম কি উত্তেজনাকর।
ছবি দেখে ততটাই নিরাশ হলাম। সিনেমা হলে দেখিনি তবে টিভিতে দেখেই ঘুম পাচ্ছিল।
আর মনে হয়েছিল পরিচালক খুব তাড়াহুড়া করছেন শেষ করার জন্য ছবিটা। কি জানি আমার তো তাই মনে হয়েছিল।
আর”মহানগরী”তে মাধবী অভিনয় করেছিলেন সম্ভবতঃ ওটা আর একটা ছবি। ওটাও ক্লান্তিকর ছিল বটে।
‘পথের পাঁচালী” ছবি তৈ্রিতে আসলেই আমি কেবল ব্যর্থতাই দেখেছি।
@আফরোজা আলম,
আরো দেখুন,”দা ভিঞ্চি কোড”। বইএ পড়লাম কি উত্তেজনাকর।
ছবি দেখে ততটাই নিরাশ হলাম। সিনেমা হলে দেখিনি তবে টিভিতে দেখেই ঘুম পাচ্ছিল।
আর মনে হয়েছিল পরিচালক খুব তাড়াহুড়া করছেন শেষ করার জন্য ছবিটা। কি জানি আমার তো তাই মনে হয়েছিল।
খুব সত্যি কথা। ‘দা ভিঞ্চি কোড’ এক অনন্য সৃষ্টি। ড্যান ব্রাউন কি নিপুনতার সাথেই না এই অসাধারণ লিখা লিখেছেন।
দা ভিঞ্চি কোডের মুভি একেবারেই ব্যার্থ–আমার মনে হয়ছে এই মুভি দেখলে যারা এই বইটা পড়ে নাই–তারা কোনদিন এই অপূর্ব বইটা পড়ার প্রতি অনুপ্রানিত হবে।
মোট কথা মুভি ভার্সান ও অরিজিনাল লিখার মধ্যে বিশাল পার্থক্য থাকতে পারে। যা আমি অন্যান্য অনেক চলচিত্রেই দেখেছি।
আবার অপর দিকও আছে–যেমন ‘প্রাইড আণ্ড প্রেজুদিস’ আমার কাছে অন্যতম বোরিং বই মনে হয়েছে। কিন্তু এর মুভি ভার্সানটা আমার খুব ভাল লেগেছে। ছবি দেখতে ঘুমিয়ে পড়িনি। একই কথা লিখা যায় ‘হাঞ্চব্যাক অব নটারদাম’ সম্পর্কে।ছবিতে আন্টনি কুইনের অভিনয় আমাকে কাঁদিয়েছিল–কিন্তু বইটা পড়ে তেমন অনুভব আসে নাই।
এই-ই আর কি–এসবই হচ্ছে ব্যক্তিগত অনুভব।
কোনো বই নিয়ে মুভি বানালে বইটি আগে পড়া থাকলে পরে মুভি দেখে অনেকবারই হতাশ হয়েছি। আসলে বই পড়তে পড়তে নিজে নিজে পুরো ঘটনাগুলো নিজের মত করে কল্পনা করে নেই। মুভি দেখতে গেলে তখন অনেক কিছুই মেলে না। লেখক একটা জিনিস একভাবে বর্ণনা করেন, পড়তে গিয়ে সেটা নিজের মত করে গড়ে নেই, আবার পরিচালক তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দৃশ্যগুলো তুলে আনেন। সুতরাং বইয়ের সাথে মুভিকে জড়িয়ে ফেললে কিন্তু মজাটা ওখানেই নষ্ট হয়ে যায়।
আবার উল্টোটাও হয়- আগে মুভি দেখা, পরে বই পড়া। তখনও অনুভূতিগুলো উল্টো হতে পারে।
@শ্রাবণ আকাশ,
আপনার মন্তব্যটা ভাল লাগল; আপনার কথা খুবই সত্যি।
@আবুল কাশেম,
ভাইজান, আপনার দিল তো মোমের মত নরম। বই আপনাকে কাঁদায়। আমার ধারণা ছিল পুরুষ মানুষেরা এসব উপন্যাসের কথা ভুলেই যায়। আপনি তো সুন্দর মনে রেখেছেন। আপনার অবস্থা দেখে নতুন করে কড়ি দিয়ে কিনলাম পড়তে ইচ্ছে করছে।
@মাহফুজ,
ভাই মাহফুজ;
ছিঃ ছিঃ এ আপনি কি লিখলেন! দেখুন, স্বয়ং হুজুরের দিল ছিল মোমের মত। তিনি আল্লার কাছে কেঁদে বুক ভাসিয়েছেন–তাঁর কৃত বর্তমান, ভূত, ও ভবিষ্যতের পাপ, অপকর্ম সব মাফ করে দেবার জন্য। বলাবাহুল্য আল্লা পাক হুজুরের অনুরোধের প্রতিটি বাক্য রক্ষা করেছেন।
হুজুরের সুহৃদ আবু বকর কেঁদে কেঁদে দাড়ি ভিজিয়ে দিয়েছেন। হুজুরের জামাই খলিফা ওসমান হাউমাউ করে কেঁদে প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন তাঁর খুনিদের কাছে। এছাড়া হদিসে আমরা পড়ছি নবিজীর সাহাবা, তাবীয়…ইত্যাদি নবিজীর কথায় কথায় কেঁদেছেন। লক্ষ্ লক্ষ মোমিনরা আজও কুরান পড়ার সময় কাঁদে।
কুরান পড়ার সময় দাড়ি ভিজিয়ে কাঁদলে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়। এও তো মোমের দিলের লক্ষন।
তা আমি কোন ছার। আমি তো মাত্র দুই একটি বই পড়ে দুই তিন বিন্দু আশ্রপাত করেছি মাত্র। এই সব বই ই হারামি কাফেরদের লেখা।
@আবুল কাশেম,
ভাইজান, আমার তো দাড়ি নাই, তাহলে সোয়াবের আশা করা বৃথা!
একবার একজনের কোরান তেলায়াত শুনে কেঁদেছিলাম। কোরানের কারণে নয়, ছেলেটির সুন্দর তেলায়তের জন্য। এতটুকু বাচ্চা ছেলের কি মিষ্টি মধুর কণ্ঠ! পড়ার ভঙ্গী আর টান দেখে চোখ দিয়ে আপনা-আপনি পানি ঝরেছিল গাল বেয়ে। এতে কি আমার কোনো সোয়াব হবে?
@মাহফুজ,
হবে। দাড়ি থাকলে বেশী সয়াব পাবেন এই আর কি। তাই এখনো সময় আছে–দাড়ি কামানো বন্ধ করুন, দাড়ি গজতে থাকুক, শুধু মোচ কামাবেন।
মনে পড়ছে–একটা হাদিসে যেন পরেছিলাম যে মোমিন কুরানের আয়াতের তেলাওয়াত শুনে কাঁদবে সে বেহেশতের বাসিন্দা হবে। ইবনে মাসুদের কুরান তেলাওয়াত শুনে হুজুর কান্নায় ভেঙ্গে পড়তেন। সাহাবা ইবনে মাসুদও(রাঃ) সুমধুর সুরে কুরান তেলাওয়াত করতেন।
তাই আপনার কোন ভয় নাই—আপনি অবশ্যই সোয়াব পাবেন। কোরানের তেলাওয়াত শুনে, তাও এক শিশুর কণ্ঠের—তেলাওয়াত শুনে আপনি কেঁদেছেন–এর চাইতে ভাল নেকী আর কি হতে; একমাত্র ব্যতিক্রম কাফের হত্যা করা ছাড়া।
হাতের কাছে কোন হাদিস বই নাই–তাই রেফারেন্স চাইবেন না। আমি স্মৃতি থেকে লিখেছি–ভূল পেলে বেশী বাড়াবাড়ী করবেন না; আপন গুনে মাফ করে দিবেন–এই আরজ করলাম।
এই বই কারো প্রিয় হতে পারে- এই প্রথম শুনলাম! 🙂
নাহ্, নেগেটিভ মাইণ্ডে নিবেন না প্লীজ।
জানিনা, যখন পড়েছিলাম তখন হয়তো বয়সের দোষেই কাহিনীটা সহজ ভাবে নিতে পারছিলাম না। যার ভালোর জন্য হৃদয়ের সমস্ত প্রার্থনা ঢেলে দিয়েছিলাম, সারা বই জুড়ে তাকেই কোনো ভাবেই সহ্য করতে পারছিলাম না। সতী। সে যে বোকা না চালাক না কি, এসব ভেবেই মাথার চুল ছিঁড়তাম! সমাজের নানা অন্ধকার দিক দেখানোর উদ্দেশ্য; সাথে দীপু কেন্ত্রীয় চরিত্র হলেও আসলে নজর কেড়েছিল ঐ সতী। কিন্তু সে যতবার কাহিনীতে এসেছে, ততবারই ঘাড়টা শক্ত হয়ে গিয়েছিল আর মনে হচ্ছিল মাথার রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছে। পড়তে পড়তে ভাবতাম- আগে একবার শেষ করি; জীবনে দ্বিতীয়বার আর এই বই হাত দিয়ে ছোঁবো না!
সতীর প্রতি দিপুর ফিলিংস্টা ইদানিং হাড়ে হাড়ে টের পাই। এটা দীপু যেমন সতীকে বলতে পারেনি, নিজেরও মনে হয় ঠিক তেমনি, অন্য কাউকেও বলা যায় না, বোঝানো যায় না। বলা হয় প্রেমের দুই চোখই নাকি অন্ধ তাই দেখে না ভালো-মন্দ। কিন্তু এই ভালো-মন্দ দীপুর মত আরো অনেকের কাছেই ধরা দেয়- তবুও মনে হয় আজীবন এই টানটা কাটানো যায় না।
গত উইকএণ্ডেই বইগুলো থেকে একটু ধূলো উড়াচ্ছিলাম। কেমন করে যেন এটা হাতে উঠে এল। অভ্যাস ছিল পড়া শেষ হলে শেষ পাতায় সাইন করে তারিখটা লিখে রাখা। দেখলাম- জুলাই ১৭, ২০০৩। সামারের ছুটিতে শেষ করেছিলাম। সেদিনও ঘাড়টা শক্ত হয়ে উঠেছিল। আজ অনেকটা কৌতুকচ্ছলে আপনার রিভিউটা পড়লাম। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না; সব মনে পড়তে আবার ঘাড়টা শক্ত হয়ে উঠল।
তবে সতীর পরিনতিটা মেনে নেয়ার মত বয়স তখন ছিল না। এখনো ওরকম কারো হোক- চাই না। দীপুর জন্য দুঃখ হয় না। কাপুরুষদের ওরকম হওয়াটাই স্বাভাবিক। এতদিন পরে কিছু কিছু কাহিনী যখন বাস্তবতার সাথে মিলে যায়- তখন দীপুর অসহায়ত্বকে ঢাল বানিয়ে তার আড়ালে লজ্জার মুখটা ঢাকার একটা জায়গা খুঁজি শুধু।
(অ.ট: রক্তের ধারা আর মনের অন্ধকার দিকগুলোর উৎস আর কারনগুলো খুঁজি আরেকটি প্রিয় বইয়ে- তারাশংকরের “কীর্তিহাটের কড়চা”য়।)
উপন্যাসটি শেষ হয়েছে W. H. Auden-এর একটি কবিতা দিয়ে। (লোভ সামলাতে পারলাম না) তার শেষ লাইনঃ
@শ্রাবণ আকাশ,
আপনার দীর্ঘ আলোচনাটা আমার মন কাড়লো। আমি সু-নিশ্চিত আপনি “কড়ি দিয়ে কিনলাম”কে অনেক অনেক ভালোবেসেছেন। নাহলে বলতেন না দ্বিতীয়বার এই বই হাত দিয়ে ছোবেন না।
আমিও সে দিন আমার মেয়েকে বলেছি “একা এবং কয়েকজন” পড়ে তুমি অনেক দিন কেঁদেছ।অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলে।তাই আমি তোমাকে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম”বইটা পড়তে দেবনা।”
ও আমার কথা রেখেছে পড়েনি। আরও একটা লাইন পড়েছে আমার রচনায়-পড়ল,
মেয়ে বল্লো ‘আমি পড়বনা এই বই।
তাহলে আপনিই বলুন এই বইটাকে আপনিও কতো ভালোবাসেন।
@আফরোজা আলম,
শুধু সতী চরিত্রটি নিয়ে আলাদা একটা লেখা দিতে পারেন।
সেই সাথে এই মুহূর্তে আরো মনে পড়ছে দীপাকে। সাত কাহনের দীপাবলী।
@শ্রাবণ আকাশ,
আপনার জবাব পেয়ে ভালো লাগল। সতী– হুম সতী সত্যি একঅদ্ভূত চরিত্রের ছিল। দীপুকে শাস্তি দেবার জন্য মিস্টার ঘোষালের মত লম্পটের কাছে চাকরি নিল।
আর যখন শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে দীপঙ্করের বাড়ি চলে এল, তখনও দীপঙ্করের কিছুই করার ছিল না।
যতই আমরা দীপঙ্করকে কা-পুরুষ বলি না কেন।
একটা ব্যপার বড্ড অবাক করে দীপঙ্কর আর সতী কেউ কারও কাছে মনের ভাব প্রকাশে স্বচ্ছ ছিল না।
বড্ড কঠিন কাজ দিলেন। চেষ্টা করব লিখতে সতিকে নিয়ে, তবে “সাত কাহনের”
দীপাবলী’ কে নিয়ে লিখতে গেলে আরও কয়েকবার পড়ে বুঝতে হবে।
এই বইটাও এক আশ্চর্য সৃষ্টি লেখকের। দীপাবলীর শেষ’টুকু পড়ে আর মন চায়না কিছু বলতে।
দুই’ প্রজন্ম ঠাকুমা আর দীপাবলী যেন একাকার হয়ে গেল।
তবু চেষ্টা করব। আমার দ্বারা ত্রুটি হবে না। মনে করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
@আফরোজা আলম,
‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ বইটা কবে পড়েছিলাম, আর ঘটনাটা বা কী ছিল আজ আর মনেই নেই। ৪২০ টাইপের একটা বয়স ছিল, ঘাটপাড়ে কিংবা নৌকার আগায় বসে লোক দেখানো বই পড়া, যাতে লোকে বলে- বাপরে, পাঠ্যপুস্তক সব শেষ করে আউট বইও পড়ে, ব্যাটা বিদ্যান বটে। আমার পড়া বিমল মিত্রের অন্য বইটি ছিল ‘সাহেব বিবি গোলাম’।
বাংলা সাহিত্যিকদের মধ্যে একজন সুপরিচিত লেখককে আমি ব্যক্তিগত ভাবে অপছন্দ করি, তিনি আমাদের হুমাহুন আহমেদ। শুধু তার পারিবারিক কারণেই নয়, তার লেখা ও চিন্তায়, গ্রাম ও গ্রামের মানুষকে নিয়ে একপ্রকার শহুরে অহমিকা দেখতে পাই। নিজে ধার্মিক না হয়েও অনেক যায়গায় অকারণে ধর্মের বিশেষ করে ইসলামের দালালি করেছেন। কেন হঠাৎ করে তার নাম এখানে নিয়ে আসলাম সেই কথাটা তার ভাষায় বলি-
ঔপন্যাসিক বিমল মিত্র এসেছেন বাংলাদেশে। উঠেছেন সোনারগাঁও হোটেলে। ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’, ‘সাহেব বিবি গোলাম’-এর বিমল মিত্র ঢাকায়- শুনেই ভালো লাগল। এক সন্ধ্যায় বিমল মিত্রের কাছ থেকে টেলিফোন, হুমায়ূন, আস আমার সঙ্গে দেখা করে যাও। আমার আনন্দিত হয়ে ছুটে যাওয়া দরকার ছিল। তা না করে বিনয়ের সঙ্গে বললাম, আমি কারোর সঙ্গে দেখা করি না। আমি আসছি না। আপনি কিছু মনে করবেন না। যত বিনয়ের সঙ্গেই কথাগুলো বলা হোক, বিমল মিত্রের কাছে তা সুখকর নিশ্চয়ই ছিল না। আমার কর্মকান্ডের ব্যাখ্যা- লেখককে চিনব তাঁর লেখা দিয়ে। ব্যক্তিগতভাবে তাকে চেনার কিছু নেই। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব লেখকের প্রতি আমার একধরনের বিরাগও ছিল। তারা পিঠ চাপড়ানো কথা বলতে ভালবাসেন। নিজেদের ব্রাহ্মণ ভাবেন। বাংলাদেশের লেখকদের জল-চল জাতের ওপরে কিছু ভাবেন না। (একটি বাংলা ব্লগ থেকে নেয়া)
তার এ অভিযোগের সত্যতা যাচাই না করেও বলা যায় তিনি বাংলাদেশের অনেক লেখকদেরও অবজ্ঞার চোখে দেখেন, তার কিছু লেখায় তা আমি নিজেই পড়েছি।
আপনার রিভিউ ভাল হয়েছে। এখানে বানান নিয়ে কচকচানি করার সুযোগ নাই বললেই চলে। কতবছর জীবন থেকে হারিয়ে গেছে, বাংলাদেশে যাওয়া হয়নি আজ বহুদিন। বিমল মিত্রের ‘বেগম মেরী বিশ্বাস’ আর হুমায়ুন আহমেদের ‘মধ্যাহ্ন’ বইদুটো পড়ার বড় ইচ্ছে হচ্ছে। যদি পড়ে থাকেন, সময় সুযোগ করে একদিন এই বইদুটোর উপর তুলনামূলক কিছু আলোচনা শুনালে খুশি হবো।
@আকাশ মালিক,
হয়তো আগেকার প্রেক্ষাপটে এই কথা সত্য হলেও হতে পারে। তবে এখন সেই সুযোগ নেই। কোলকাতার বই মেলায় দেখা যায় বাঙ্গাদেশি বই’এর স্টলে ভীড় থাকে অনেক বেশি।আর ক্রেতাও অনেক বেশি।।
তবে,আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে একজন শিল্পীকে জানব তার কর্ম কান্ডের মধ্যে দিয়ে।ব্যক্তিগত জীবনে অনেক জ্ঞানী-গুনী মানুষের মাঝেও আমরা নানান ত্রুটি দেখতে পাই। আমরা নিজেরাও তার উর্ধে নই।
“বেগম মেরী বিশ্বাস” আমার না পড়া বই। তাই স্বল্প সময়ের আলোকে এই বই নিয়ে আলোচনা করতে পারবো কিনা বুঝতে পারছিনা।
আর ‘মধ্যাহ্ন’ লেখক হুমায়ুন আহমদ। তাঁর লেখা নিয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছে করে না। কেননা একমাত্র তাঁর “জোছনা ও জননীর গল্প” আর অনেক কাল আগে লেখা ’নন্দিত নরকে” এই বই দু’টো ভালো লেগেছিল। বাদবাকী তথৈবচ।
তবু চেষ্টা করব। নিশ্চয়ই করব। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
@শ্রাবণ আকাশ,
ইশশ! “কীর্তিহাটের কড়চা”। একদম ভুলে গিয়েছি। আবার পড়তে হবে।
@শ্রাবণ আকাশ,
আশা করি শীঘ্রই ‘কীর্তিহাটের কড়চা’ বইয়ের একটি সুন্দর গ্রন্থ-আলোচনা পাবো আপনার কাছ থেকে, অনেকটা আফরোজা আলমের মত। গ্রন্থ আলোচনা পড়তে ভালোই লাগে। পুরো বই না পড়লেও অনেক সময় বই সম্পর্কে ধারণা জন্মে যায়। কখনও কখনও বই পড়তে উৎসাহিত হওয়া যায়।
@মাহফুজ,
ফাঁদে পড়িয়া বগা কান্দেরে…মনে হচ্ছে নিজের পায়েই কুড়াল মারলাম 🙂
এই ভাবে আলোচনা আমাকে দিয়ে সম্ভব হলে তো কাজই হত। তবুও দেখা যাক, ভাবনাগুলো একত্র করে লিখিত রূপ দেয়া যায় কিনা…
নিউজপ্রিন্টে ছাপানো দুটো খণ্ড বাড়িতে ছিল। বিশাল মহাভারতের মতই বড়। নারীরা নেশাগ্রস্থের মত পড়তো। চোখের পানিতে বুক ভাসাতো।
বিমলমিত্র ছিলেন কথাসাহিত্যিক। বর্তমানে জীবিতদের মধ্যে উপন্যাস লিখে চলেছেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।
“কড়ি দিয়ে কিনলাম” বইয়ের সমালোচনা তো ভালই লিখলেন। মুক্তমনা থেকে কিছু বই দিতে হবে সমালোচনা লেখার জন্য। আশা করি হতাশ করবেন না।
@মাহফুজ,
কেবল নারীরাই বুক ভাসাতো? সে কী? তবে পুরুষেরা পড়ে কি করতেন। :heart:
মুক্তমনা থেকে কোনো বই যদি আমাকে আলচনার জন্য দেয়া হয় করতে পারি। ভালোভাবে না পারি চেষ্টা করে দেখতে পারি। আপনাকেও ধন্যবাদ।
@আফরোজা আলম,
পুরুষরা একটু কঠিনই হয়। উপন্যাস পড়ে চোখ দিয়ে পানি পড়লে তাদের পৌরুষে আঘাত লাগবে না? 😀
আফরোজার প্রাণঢালা রিভিঊ পড়ে আমি মুগদ্ধ। এত সুন্দরভাবে, এত প্রানবন্ত করে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম; এর মত বিশাল উপন্যাসের রিভিউ লিখা সত্যিই এক অপূর্ব কাজ।
যে দুটি উপন্যাস আমার জীবনে গভীর রেখাপাত করেছে সে গুলো হচ্ছে ্টলস্টয়ের ‘ওয়্যার এণ্ড পিস’ আর বিমল মিত্রের ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’। আফরোজার রিভিউ পড়ে অনেক স্মৃতিই মনে পড়ে গেল।
খুব ভাল লাগল এই মন্তব্যটা পড়ে।
আমিও তাই করেছিলেম—নেশাগ্রস্তের মত, খাওয়া দাওয়া, খেলাধুলা, আড্ডা ভুলে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ পড়েছিলাম।
@আবুল কাশেম,
আমি অনেক কিছুই আনতে পারিনি এই বই’র আলোচনা লিখতে গিয়ে।পারিনি ঘোষাল এর মতন নীচ মানুষ কে আনতে। অনেক ভেবে চিন্তে দেখলাম অনেক’কে আনতে গেলে আলোচনাটাই এক বিশাল
“কড়ি দিয়ে কিনলাম”এর মতন বড় হয়ে যাবে। অথচ কেন জানিনা মনে হচ্ছে মিস্টার ঘোষাল’কে আনা দরকার ছিল। দরকার ছিল লক্ষী’দি কে, যার জন্য দিপুকে ব্যাবহার করেছিল সেই দাতার বাবুকে,
সনাতন বাবুর চরিত্র আরও বিস্তারিত আলোচনার দরকার ছিল।
দীপু কেন কা-পুরুষে ভুষিত হল তার একটা ভালো বিশ্লেষনের দরকার ছিল। দীপুর মায়ের ভূমিকা, সেই সময়কার রাজনৈ্তিক নেতারাও এখনকার মতই সুবিধাভোগী ছিল তাও বলা দরকার ছিল। কিরণ’কে আরও বিস্তারিত করতে পারতাম।
কিন্তু,পারিনি কেন পারিনি তার জবাব নেই।
ঐ যে বলেছি ‘আমায় ক্ষমা করুন” আসলে এমন মহাভারতের সুন্দর আলোচনা করতে আমি অক্ষম।
তবু,আপনি আর সবাই পড়েছেন তাতেই আমার লেখা সার্থক।
@আবুল কাশেম,
ভাইজান, পড়ার সময় চোখ দিয়ে পানি-টানি কি বের হতো? 😥 করতেন কিনা?
আমাদের বাসায় অনেকগুলো বিমল মিত্র আর সুবোধ ঘোষের বই ছিলো। আমার যখন ওগুলো পড়ার বয়স হয়নি, তখনই পড়া হয়ে গিয়েছিলো সব। ছোটবেলায় পেকে গেলে যা হয় আর কি! 🙂 নিঃসন্দেহে কড়ি দিয়ে কিনলামও পড়েছিলাম। কিন্তু আমার অবস্থা রৌরবের মতই। একে তো পড়েছি অনেক আগে, এত আগে যে কিছুই মনে নেই। এমনকি, রিভিউ পড়েও স্মৃতি সেভাবে ফিরে এল না। এমনকি এখন সন্দেহই হচ্ছে, আসলেই কী পড়েছিলাম? :-/
যাহোক, প্রাণবন্ত রিভিউইয়ের জন্য ধন্যবাদ। এর আপনার লেখার এই লাইনটি বেশ লাগলো –
:yes:
@অভিজিৎ,
আমার অনেক প্রিয় বইগুলোর মাঝে বিভূতি ভূষণের”পথের পাঁচালী” আর ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম” বইটাগুলো কতবার পড়েছি মনে নেই। তবে নিঃসন্দেহে “কড়ি দিয়ে কিনলাম” প্রথম স্থান দখল করে নিয়েহে অনেক আগেই কেন জানিনা।
আপনি নিশ্চয়ই পড়েছেন নাহলে ভেবে দেখুন কেন এই লেখাটায় দৃষ্টি আকর্ষণ করল।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
অনেক…অনেক আগে পড়েছিলাম এই বই, ছোটবেলায়। মোটা বইটা প্রায় নেশাগ্রস্তের মতো পড়ে শেষ করে মন খারাপ করে বসেছিলাম। বহুদিন পর এই আলোচনা পড়ে আবার বইটার কথা, সতী, লক্ষ্মী, দীপঙ্করের কথা মনে পড়ছে। বইটা নিয়ে আলোচনা ভালো লাগলো।
@বইখাতা,
আসলেই এই বইটা নেশাগ্রস্থের মতই পড়া হয়। পড়তে পড়তে কখন শেষ হয়ে যায় মনেই থাকেনা।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও।
পুরানো স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন। ছাত্র জীবনে কষ্ট করে কেনা অনেক বইয়ের মধ্যে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ও একটি। এক অতিথি বিকেলে বাসায় বেড়াতে এসে বইটা ধার নিয়ে আর ফেরত দেয়নি। তখন মোবাইল থাকলে ফোন করে করে অতিষ্ঠ করে ফেরৎ নিয়ে আসতে পারতাম।
যা হোক, গ্রন্থ সমালোচনা করতে বিমল মিত্রকে বেছে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
@গীতা দাস,
ঠিক বলেছেন বই নিয়ে ফেরত না দেয়া অনেকেরই অভ্যাস। ইদানীং তাই কাউকে বই দেইনা।বলি কিনে পড়তে আগ্রহ থাকলে। তবে আমার নিজস্ব পাঠশালায় বইটা আছে।
বইটি পড়েছিলাম ৯৪ সালে, অসম্ভব ভাল লেগেছিল। সেই সরল মহিলার এক তরফা পতি প্রেম দূঃখ দারুন ভাবে ছুয়ে গেছিল।
@আদিল মাহমুদ,
আপনিও পড়েছেন আর ভালোলেগেছে’কড়ি দিয়ে কিনলাম” বাহ শুনে মন ভরে গেল।
@আফরোজা আলম,
সেই মহিলার সারল্য মন ছুয়ে গেছিল, আমাদের অঞ্চলের মহিলারা যে কত সরল ও পুরুষ নির্ভর ছিলেন তার জ্বলন্ত প্রমান ও বইটা।
বিমল মিত্রের লেখার ষ্টাইল এখন আর পাওয়া যাবে না। এর পর ওনার লেখা “দেওয়াল” বইটা পড়েছিলাম, মোতামুটি ভাল লেগেছিল।
@আদিল মাহমুদ,
বিমল মিত্রের এই স্টাইলটাই আমার ভালোলাগে,মনে হয় যেন মুখোমুখি কথা শুনছি। আবার অনেকের কাছে নাকি এই স্টাইলটা ভালোলাগে না।
আসলে কথাটা একদম ঠিক। এখনও কি তার ব্যাতিক্রম আছে? কেবল ধরণটা বদলেছে এইটুকুই।
অত মোটা বইটা যে, কী ভাবে শেষ করেছিলাম, তা এখন ভাবতেই অবাক লাগে!!!!!
সুন্দর স্মৃতি….
@সেজবা,
বই যতো মোটা হয় আমার ততই ভালো লাগে,তবে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম” তো আর বার বার রচনা হবে না,এইটাই দুঃখ। ধন্যবাদ আপনাকে।
বইটি পড়েছি, কিন্তু এত আগে যে কিছুই মনে নেই। এমনকি, আপনার রিভিউ পড়েও স্মৃতি সেভাবে ফিরে এল না।
তারপরও আপনার সুখপাঠ্য রিভিউ পড়ে ভাল লাগল। :rose:
@রৌরব,
আবার পড়ুন দেখবেন নতুন করে ভালোলাতেও পারে।
ছোটবেলায় বইটি পড়েছিলাম।
@সৈকত চৌধুরী,
বইটি কেনা যাদের পক্ষে একান্ত অসম্ভব তারা এখান থেকে নিয়ে পড়তে পারেন।
@সৈকত চৌধুরী,
লিংক অনুসরণ করলাম। কিন্তু কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। এখানে দ্বিতীয় খণ্ড রয়েছে। ডাউন লোড করলাম, কিন্তু সেটা আর ওপেন হলো না।
@মাহফুজ, আমার কাজ হয়েছে। দুই পার্টই আছে ওখানে।
@মাহফুজ,
এটা rar ফাইল। ওপেন করার সফটওয়্যার গুগলিং করে বের করে নিন।
@সৈকত চৌধুরী,
আপনাকে ধন্যবাদ লিঙ্ক দেবার জন্য,যে যারা আগ্রহী তাঁরা পড়তে পারবেন।
অনেক ভালো লাগলো। মন ভরে যায়…
@অনন্ত বিজয় দাশ,
আপনার ভালোলাগলো দেখে আমার ও মন ভরে গেল।