আমার মেয়ের পাসপোর্ট করতে আবেদন জমা দিয়েছি গত ৩০ নভেম্বর ২০১০ হরতালের দিন। ভিড় কম। আবেদন ফর্মে এক জায়গায় বড় হরফের জায়গায় ছোট হরফ লিখে ফেলার পরও ফর্মটি অযোগ্য ঘোষণা করে ফেরত না দিয়ে আর্মির লোকটি ঠিক করে দিলেন। এক দিনে দালাল ছাড়া টাকাসহ সব সেরে জমা দিয়েছি। পাসপোর্ট সরবরাহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০১০। মাঝে পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়ে গেল। ২২ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে আমার মেয়ের মোবাইলে এস এম এস এবং ই মেইলে বার্তা আসল পাসপোর্ট তৈরি। যেন সংগ্রহ করা হয়। অর্থাৎ নির্ধারিত তারিখের সাতদিন আগেই ২৩ ডিসেম্বর পাসপোর্ট সংগ্রহ করে নিয়ে আসলাম। চমৎকার সেবা। মনে হল যেন একটি আধুনিক দেশে বাস করছি। এর আগে আমার পাসপোর্ট করা নিয়ে নাইটমেয়ারের ইতিহাস মনে হল। সে স্মৃতি থাক। আমার মেয়ে অনায়াসে পাসপোর্ট পেল আর আমি যেন নাগরিক অধিকার উপভোগ করলাম। মনটা ফুরফুরে। আওয়ামীলীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ডিজিটাল বাংলাদেশ। তাদের সাফল্যের একটি উদাহরণ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট সরবরাহ।
মেয়ে পাসপোর্টটি উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখে আমার হাতে দিল। আমি দেখতে দেখতে পাতা উল্টিয়েই মনে মনে খুশী। মায়ের নাম, বাবার নাম, উচ্চতা, ঠিকানা — এসবের বালাই নেই। চশমাটা পড়ে ভাল করে খেয়াল করে দেখে খটকা লাগল।
লেখা বংশগত নাম (Surname) ও প্রদত্ত নাম (Given Name) । আমার মেয়ের নাম প্রত্যাশা প্রাচুর্য। কাজেই বংশগত নামের নীচে লিখেছে প্রাচুর্য আর প্রদত্ত নাম লিখেছে প্রত্যাশা। হা হা করে হাসি ছাড়া উপায় কি? আমার মেয়ের বংশগত পরিচয় প্রাচুর্য!!! শেখ হাসিনার বংশগত নাম কি হাসিনা হবে আর প্রদত্ত নাম শেখ হবে? তবে কীভাবে পাসপোর্ট অফিস তা ঠিক করবে? নামের প্রথম (first), মধ্য (middle) এবং শেষ (last) অংশ লিখলে কি ভাল ছিল না?
তাছাড়া,আমি যতই ‘জন্ম হোক যথা তথা / কর্ম হোক ভাল’ দর্শনে বিশ্বাসী হই না কেন, রাষ্ট্রীয় সেবা মাধ্যম আমাকে তা করতে দিবে না। আমার আইডেন্টিটি বংশে তথা ধর্মীয় পরিচয়েই সীমাবদ্ধ রাখবে। আমার মেয়ে বাংলাদেশে বংশগত নামের আবরণে ধর্মীয় সংখ্যালঘু আর আমার বন্ধুর মেয়ে খানম ইউরোপে গিয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘু । সংখ্যালঘু হিসেবে জন্মই আজন্ম পাপে বাংলাদেশীদের বন্দী করে রাখাই যেন নিয়তি। মানুষ হিসেবে বসবাসের অধিকার নেই।
‘আমি বাংলায় গান গাই
আমি বাংলার গান গাই
আমি আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই।’
খুঁজে পাই কি? বাংলায় কথা বলার সময় শব্দ চয়নে হিন্দু মুসলমানকে চিহ্নিত করা যায়। পার্থক্য পাওয়া যায়। নিজেকে সীমাবদ্ধ বলয়ে আবিষ্কার করে বিমর্ষ হই। জল আর পানি পান করা ছাড়াও হিন্দুরা পাঠা বলির মাংস পছন্দ করে, আর মুসলমানের খাসী জবাই করে গোসত খাওয়া ফরজ। মুসলমানরা খাসী জবাই করা গোসত না খেলে ইসলাম যায়। হিন্দুরা গলা ধর থেকে আলগা করে খায় বলির মাংস। পাশাপাশি থেকেও আলাদা। আর একই বাড়ির বিভিন্ন ফ্ল্যাটে বসবাসের সুবাদে হিন্দু মুসলিম মিলে ভাগে খাসী কিনে আর্থিক সুবিধার জন্য। কিন্তু হিন্দুর আর বলির মাংস খাওয়া হয় না। নিজের তথাকথিত ধর্মীয় আচারকে জবাই করতে হয় মানিয়ে নেওয়ার সভ্যতা ও ভব্যতার কারণে। এর ফলে নিজেরা স্নায়বিক দুর্বলতায় ভোগেন। হারাম আর হালালের আবর্তে পড়ে আমি তো মাঝে মাঝে আদেশ আর নিষেধ ঘুলিয়েই ফেলি। আমি জবাই করা গোসতে আর বলির মাংসে স্বাদের কোন পার্থক্য পাই না। পশু হত্যা চলে দুটোভাবেই।
‘মা কথাটি ছোট্ট অতি’ জানা থাকলেও বেশিরভাগ মুসলমান আম্মার সাথে বেশি আবেগীয় সম্পর্ক অনুভব করে এবং বাবার স্নেহের আবরণে আব্বাকে দেখেন।
কাজেই আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই না।
আবার অনেক শব্দ কোন কোন পরিবারে ধর্মীয় পরিচয় হিসেবে নিলেও সাংস্কৃতিক প্রভাবে অন্য ধর্মের পরিবারেও ব্যবহার করে। যেমন—- বিসমিল্লাহ বলে শুরু করে দাও। এক হিন্দু পরিবারের সদস্যের সংলাপ। সিনেমা দেখার জন্য সিডি চালানো শুরু করার আগের সংলাপ। অথচ ঔ পরিবারই সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ শব্দটি সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সোচ্চার।
আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বন্ধুর স্বামী সরকারী কর্মকর্তা এক এগারো এর ঝামেলায় পড়েছিল। চাকরি ছেড়ে পালিয়েছিল। দৈনিক পত্রিকার খবর পড়ে খোঁজ খবর নেওয়ার জন্যে চেষ্টা করেও পাইনি। পরে শুনেছি ভয়ে মোবাইল বদলে ফেলেছিল এবং সীমান্তের ওপারে পাড়ি জমিয়েছিল। । তবে আমার এ বন্ধুটি এক এগারো এর ঝামেলাকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক চর্চার নেতিবাচকদিক হিসেবে দেখে না, স্বামীর দুর্নীতির বিষয়টি বেমালুম মুছে দিয়ে বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক ইস্যু হিসেবে দেখে।
এখন আওয়ামীলীগ আমলে আমার সহকর্মীর এক স্বামী বাসস এর মুসলিম ধর্মাবলম্বী সাংবাদিক চাকরিচ্যুত হয়ে বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িকতার কালিতে চিহ্নিত করেন ঘরোয়া কথাবার্তায়। তাঁর জায়গায় হিন্দু ধর্মালম্বী একজনের নিয়োগ নিয়মানুযায়ী হলেও আওয়ামীলীগ আমল বলে হিন্দুরা রাজত্ব চালাচ্ছে এমনটাই মনে করেন তিনি।
সাম্পদায়িকতার এ মনোভাব কাটানোর উপায় কে বলে দেবে? আর কে ই বা তা দূরীকরণে এগিয়ে আসবে। নিজের অক্ষমতা, অসম্পূর্ণতা, অরাজকতা,অপরিপক্কতা ঢাকতে সাম্প্রদায়িকতার অস্ত্রহানে এবং জানে এ বড্ড ধারালো, শক্ত ও দীর্ঘস্থায়ী অস্ত্র।
আমার কথা বলি – আমি জরুরী পাসপোর্ট করতে জমা দিলাম ৬০০০ টাকা । পাসপোর্ট ডেলিভারী – ১৩/১২/২০১০ , পুলিশ ভেরিফিকেশন হল – ১৭/১২/২০১০ (কী মজা!) । আজকে ফোন দিলাম অফিসে – এখন পুলিশ মামা নাকি রিপোর্ট জমা দেয় নাই !!
ডিজিটাল বাংলাদেশ !!!
@sayem,
আমার পাসপোর্ট রিনিঊ করতে ৩০ নভেম্বরই জমা দিয়েছি। যথারীতি পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন নেই এবং ৩০ ডিসেম্বর সরবরাহের তারিখ। আজ ২৭ ডিসেম্বর এস এম এস ও ই মেইল পেলাম পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য।
আমাদের দুটোর জন্যই কিন্তু জরুরী ছিল না বলে ৩,০০০ টাকা করে জমা দিয়েছিলাম।
আপনার দুর্ভাগ্যের জন্য দুঃখিত।
পুলিশ ভেরিকেশনের সম্য ঘুষ দিয়েছিলেন কত ??
ভাল লাগল। অনুভুতি গুল সহজ়েপ্রকাশের জন্য ধন্যবাদ।
@কামরুন নাহার,
পাঠকের ভাল লাগায়ই লেখার সার্থকতা।
ধন্যবাদ মুক্ত-মনায় নিয়মিত মন্তব্য শুরু করায়।
গীতা দি,
আপ্নেরে মাইনাস! কৈষা মাইনাস! দালাল ও ঝামেলা ছাড়াই আর্মির লুক দিয়া পাসেপার্ট পাইছেন, কৈ খুশীতে আটখানা হৈবেন, তা না আপ্নে আবার এই সরকারের কাছে ইসমার্টনেসও খুঁজেন। 😀
@বিপ্লব রহমান,
বিপ্লব,
চাওয়ার যে শেষ নেই।
বাহ! প্রত্যাশার পাসপোর্ট ঝামেলাবিহীনভাবে এত দ্রুত পেয়ে যাওয়া দেখেতো মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এরকম কি সবার ক্ষেত্রেই হচ্ছে? তাহলে বলতে হবে যে এই সরকার ভাল কিছু কাজও করছে। এই সমস্ত ভাল কাজের জন্য নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদারও তারা। আমরাতো সরকারকে খারাপ কাজের জন্য শুধু গালমন্দ করতেই অভ্যস্ত, ভাল কাজের জন্য প্রশংসা করতে কেন যেন কার্পণ্যবোধ করি।
@ফরিদ আহমেদ, আMআর চেনাজানা সবাই দেখলাম ঝক্কিঝামেলা ছাড়আঈ পাসপোর্ট পেয়ে গিয়েছে। আর্মি না থাকলে অবশয় অন্য কাহিনী হত।
@পৃথিবী,
সিভিল সরকারের সিভিল কাজ অসিভিল লোকের হাতে কেন?
@ফরিদ আহমেদ ও @পৃথিবী
ফরিদ,
পৃথিবী,
দুইজনের সাথেই একমত।
আপনার লেখাটিতে কিছু বাস্তব চিত্র ফোটে উঠেছে খুব ভাল লাগল। বাংলাদেশে যারা সংখ্যাগুরু বলে দাবি করে, তারা নিজেদের অন্যায় দুর্নীতির কারণে যখন চাকরি চলে যায় বা আইনে ফেসে যায়, তখন সংখ্যালঘুদের উপর দোষ দিয়ে নিজে দোষ মুক্ত হতে চেষ্টা চালায়। অনুরুপ ভাবে রাজনীতিবিদরাও একেই দোহায় দেয়।
@Arupa,
অন্যদিকে, সংখ্যালঘুরাও সুযোগ বুঝে নিজেদের অপরাধ ঢাকতে সংখ্যালঘুত্বের অজুহাত তুলে।সংখ্যালঘু অবস্থানকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। মুদ্রার দুটো পিঠই তো দেখতে হবে।
@গীতা দাস,
ঠিক বলেছেন গীতাদি। লেখাটাও খুব ভাল লাগলো।
আর আপনার মেয়ের পাসপোর্ট দ্রুত পেয়ে যাওয়ায় অভিনন্দন!
@অভিজিৎ,
ধন্যবাদ।
সাম্প্রদায়িতকতা বেশি আসে ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতের কাছ থেকে। ঘুরিয়ে পেচিয়ে তাদের দিকটা এগিয়ে রাখতে চাইবেই। সংখ্যাগরিষ্ঠদের এ আচরণে সংখ্যালঘুরা এটাকে নিয়তি হিসেবে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
একদিন এক হিন্দু ধর্মালম্বীর মামলা লিখতেছেন একজন আইনজীবী। মামলার বিষবস্তু হচ্ছে “সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা”। তার এ আচরণে আমি খুব লজ্জিত। কারণ আবেদনে মামলার বাদীর স্বাক্ষরও থাকবে। তার মানে তিনি নিজেকে সংখ্যালঘু মেনে (তুচ্ছ) এ দেশে বসবাস করেন।
এটা কিভাবে সম্ভব!!
@সবাক,
উপায় কি
@গীতা দাস,
এতো স্বল্প সময় নিয়ে উপায় বলে দেয়াতো মুশকিল। আবার “উপায় কি!” বলে হতাশাগ্রস্থ হতেও চাই না। আমি মনে করি খুব ভালো পরিবর্তন হচ্ছে। এবং আপনার পোস্টে আক্ষেপের ঘটনাগুলো এক সময় মহামারি আকারে থাকলেও এখন সহনশীল পর্যায়ে চলে আসছে।
আমাদের গ্রামের অর্ধেক হিন্দু পাড়া, অর্ধেক মুসলিম পাড়া। বাড়ির সামনে দিয়ে হিন্দু ধর্মালম্বীরা বাজারে যেতেন। বাড়ির ছেলে মেয়েদের নিয়ে দল বেঁধে দরজায় দাঁড়িয়ে হিন্দু ধর্মালম্বীদেরকে টিজ করতাম। যেসব ভাষা ব্যবহার করতাম টিজ করতে গিয়ে তা হতো অত্যন্ত নোংরা অশ্লীল। এখন ভেবে আশ্চর্য হই- আমাদের মুরুব্বীরা এসব সমর্থন করতেন এবং আমাদের সাথে সুর মেলাতেন। অথচ ওই সময়ে যদি লাটিম খেলতে যেতাম, তবেই বাধা পড়তো।
শেষে দেখা গেলো এসএসসি পরীক্ষার পর আমাদের যে বন্ধুমহল সৃষ্টি হয়েছে, তাতে সবচে হিউমারাস এবং প্রাইওরিটি পাপ্ত বন্ধুরা ছিলো হিন্দু ধর্মালম্বী। তারা আমার অত্যন্ত প্রিয় ছিলো। সেই করে মাথা থেকে ধর্ম এবং সাম্প্রদায়িক ভুত নেমেছে!!
আমার মাথা থেকে সাম্প্রদায়িক ভুত নামার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে সৃজনশীলতা। যখন আমি সাহিত্য এবং সিনেমা নিয়ে ভাবতে শুরু করি, পড়তে শুরু করি, তখন থেকেই সভ্য হতে শুরু করি।
সবাই এভাবে কোন না কোন কিছুর সাহায্য পেয়ে সভ্য হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি খুব সহজ হয়, যদি সভ্য হয়ে যাওয়া মানুষগুলো সক্রিয় থাকে। নিজের ভেতর লুকিয়ে না থাকে।
আপনাকে ধন্যবাদ।
@সবাক,
আপনার ব্যাখ্যার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
অত্যন্ত চমৎকার রচনা!
:yes:
:rose2:
:rose:
:coffee:
@ক্রান্তিলগ্ন,
ধন্যবাদ ।
ভারতের উত্তর পশ্চিমের লোকেরা যারা হিন্দিভাষী তারা জল কে পানি বলে, হিন্দু মুসলমান সবাই। গুজরাতি হিন্দুরা যারা শুদ্ধ শাকাহারী তারাও জলকে পানি বলে। উত্তর প্রদেশ ও দিল্লির হিন্দু মুসলমান সবাই জলকে পানি বলে,বিহার ও উড়িয়ারাও সবাই জলকে পানি বলে। উর্দুতেও পানি বলে।
কিন্তু জল একটি শুদ্ধ বাংলা শব্দ হওয়া সত্তেও বাংগালী মুসলমানেরা বলে পানি। আবার কবিতায় ও গানে পানি লেখা হয় না, বেশি্র ভাগ সময়ে জল লেখা হয় জল। আবার চোখের পানিকে মুসলমানেরা বেশীর ভাগ সময়ে (সাহিত্যে) জল বলে। তাহলে এমনটি বলা যায় যে – চোখের পানিকে বলা হয় জল, আর খাবার জল কে বলা হয় পানি।
এই ব্যপারটা নিয়ে অনেক ভেবেছি কিন্তু এর পেছনে কি কারন তা আজ অবধি বুঝতে পারলাম না।
শুনেছি বংগদেশে মুসলমান ধর্ম প্রচারে পশ্চিম ও ঊত্তর ভারতের (অবিভক্ত ভারত) প্রচারকদেরও ভুমিকা ছিল আগ্রগন্য। এরাই কি (হিন্দু) বাংগালীদেরকে ধর্মান্তর করনের কালে জল শব্দ ব্যবহার না করতে উতসাহিত করেছিল? কারন এই পদার্থটি এমনি একটি বস্তু যার ব্যবহার ও উচ্চারন দিনে সব থেকে বেশী হয় এবং মুসলমানেরা যে হিন্দুদের থেকে সম্পুর্ন সাতন্ত্র , এটা বোঝানোর জন্যেই কি ধর্মান্তরকরনের সময়ে জলকে পানি বলতে উতসাহিত করেছিল? যা আস্তে আস্তে অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। তাই জল খেয়ে তৃষ্ণআ নিবারন যতটা হয় তার থেকে হাজারগুন বেশী নিবারিত হয় পানি খেয়ে। উল্ট ভাবেও বলা যেতে পারে।
বাবা শব্দটি আরবি শব্দ। হিন্দু মুসলমান সবাই এটা বলে। আব্বা শব্দটি হল শুদ্ধ উর্দু যা উর্দুভাষী ভারত ও পাকিস্তানিরা বলে। এই আব্বা শব্দটি মনে হয় উর্দুভাষী মুসলমান ধর্ম প্রচারকেরা নব্য ধর্মান্তরিত বাংগালী মুসলমানদের মধ্যে সংস্কারন করেছিল।
বাংগালিদের মধ্যে এই জল ও পানির বিভেদকে আমি সাম্প্রদায়িক বিভেদ অপেক্ষা ছোট করে দেখি না।
কিন্তু আশাবাদি আমি।
একই বৃন্তে দুটো কুসুম
হিন্দু মুসলমান
সব বিভেদের হোক অবসান ।
@সেন্টু টিকাদার, আপনার যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এ ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন- সেটা দারুন লাগছে।
তবে হিন্দু- মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ কোনোদিন কমবে বলে মনে হয় না। দেখুন একটা সময়ে যখন সবাই “অশিক্ষিত” ছিল তখন কিন্তু জনগনের মধ্যে এই বিভেদ কম ছিল। শুচিবায়ু বলে একটা ব্যাপার ছিল, কিন্তু সেটা তথাকথিত শিক্ষিত ব্রাহ্মণদের মধ্যে।
আবার উনিশ শতকের দিকে যখন বাঙালী হিন্দুদের একটা অংশ ইংরেজী শিখে নিজেদেরকে শিক্ষিত ভাবা শুরু করল- তাদের মধ্যেও এই শুচিবায়ুটা ১০০% না থাকলেও একটা অবজ্ঞার ভাব ছিল। আবার ইদাইং মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষিতের হার বাড়ছে; আর সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এই বিধর্মীদের প্রতি ঘৃণার মনোভাব। এই সবগুলো “শিক্ষা”ই কিন্তু “মুখস্তবিদ্যা” ছাড়া আর কিছু নয়। অন্যদিকে যারা চিন্তাশীল, তারা কিন্তু এ ধরনের কাজ কখনোই করেন নাই বা করবেন না।
@শ্রাবণ আকাশ,
একমত নই। কারণ, চিন্তাশীলদের কিন্তু আবার রকম ফের আছে।
@গীতা দাস, ওকে, আমি তাহলে “চিন্তাশীল” বলতে কাদেরকে মীন করেছি সেটা ঠিক বুঝাতে পারি নাই। আচ্ছা একটু উলটিয়ে বললে- যারা ঐ ধরনের কাজ করেন নাই বা করবেন না তারাই প্রকৃত চিন্তাশীল- এভাবে বললে কি বোঝা যায়? 🙂
@শ্রাবণ আকাশ,
বোঝা গেল।
@সেন্টু টিকাদার,
আমিও আপনার সাথে বিভেদ অবসানের জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
@সেন্টু টিকাদার,
আপানার জানায় কিছুটা ভুল আছে।
পানি শব্দটি এসেছে সংস্কৃত মূল “পান্য” থেকে। এটা কোন উর্দূ/হিন্দি শব্দ নয়।
বিস্তারিত জানতে এখানে দেখুন।
http://www.sachalayatan.com/ragib/21371
পাশপোর্ট অফিসের এ তেলেসমাতি কান্ড (দ্রুত এবং ঝামেলা ছাড়া) যে ঘটতে পারে তা বিশ্বাসই হচ্ছেনা। এখানে এমনও কি হতে পারে?
গীতাদি, ইচ্ছা হচ্ছে আবারও বাংলাদেশে গিয়ে পাশপোর্ট করাই।
surname এর বাংলা ‘নামের শেষ অংশ’ দিলে দোষ কোথাই?
যে ব্যাটা এর অর্থ বংশের নাম লিখেছে সেকি এটা জানেনা? নাকি ধর্মের ফ্লেবার ছাড়া ভাল লাগেনা? [img]httpv://www.youtube.com/watch?v=sTFa0dmbJAE&feature=related[/img]
@হেলাল,
আমারও মনে হয়েছে তাই। এজন্যই তো এ লেখার অবতারণা।
Surname মানে শুধুমাত্র বংশগত নাম (family name) বোঝায়না। এটা নামের দ্বিতীয় অংশকে প্রতিনিধিত্ব করে যা নামের প্রথম অংশ (given name) থেকে ভিন্ন। আইনগত সুবিধার্থে পৃথিবীর সবদেশের পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্টে এই ধারা (Given name, Surname) অনুসরণ করা হয়। নিচে একটা মার্কিন পাসপোর্টের নমুনা দেখুন :
[img]http://andrew.jorgensenfamily.us/files/2007/09/passport.jpg[/img]
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্টেও একই ধারা বজায় রাখা হয়েছে। নিচে দেখুন একটা জার্মান পরিচয়পত্র যা পাসপোর্টের অনুরূপ :
[img]http://cache1.asset-cache.net/xc/76185816.jpg?v=1&c=IWSAsset&k=2&d=13C5FB272151A388972DF19B50B478BAB51C42A943CF44D02A180B7AD0B0BAB1E30A760B0D811297[/img]
কোনটা given name এবং কোনটা surname হবে তা নির্ধারন করার দ্বায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির। মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক নীতিমালা রয়েছে যা প্রতিটি রাষ্ট্রকে মানতে হয় এবং নামকরন পদ্ধতি তার একটা গুরুত্বপূর্ন অংশ ।
@সংশপ্তক,
অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা বিষয়টিতে আলোকপাত করার জন্য।