আমার একটা স্বপ্নভূক মন আছে, আছে ভালোবাসাভূক হৃদয়। এই কথাটিই মনে হয়েছিল আজ সকালে চোখ মেলে সবার আগে। আর কি কিছু আছে আমার? হুমায়ুন আজাদ স্যার তার “নারী” বইটির অবতরণিকায় লিখেছেন, অনেক তরুনী উনাকে জানিয়েছে, নারী বইটি পড়েই তারা জেনেছে, তাদের একটা শরীর আছে, শরীরে নানা প্রত্যঙ্গ আছে। এই জানাটাকে আমি ভালো চোখেই দেখি। যেকোন জানাই আমার কাছে স্বাগত। কিন্তু কথাটা পড়তে পড়তেই একবার নিজেকে জিজ্ঞেস করেছি, আমি কি জানি এই কথাটা? আমার মনে হয়েছে, আমি আমার শরীরের কথাটা এতোটা জানিনা, যতটা জানি আমি আমার মনের অস্তিত্বের কথা। কোনদিন যদি জানতেও পারি, আমার একটা শরীর আছে, তাকে মনোযোগ দেয়া দরকার, সেই জানাটা হয়ত আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে অথবা উঠবে না। বর্তমানে বসে ভবিষ্যতের কথা কইতে পারবো না। কিন্তু একটা ব্যাপার খুব নিশ্চিত ভাবেই জেনেছি, xx ক্রোমজম নিয়ে জন্মেছি বলেই, বুঝতে শেখার আগেই শরীরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ নিয়ে আমাকে লজ্জিত হতে শিখিয়ে দিয়েছে সবাই। আজ নিজেকে শুধালাম, আমি কি আমার শরীর নিয়ে লজ্জিত? আমি খুব স্পষ্ট ভাবেই জানি, না, আমি লজ্জিত না। শালীনতার সঙ্গা একেকজনের কাছে একেক রকম হতে পারে, আমিও ধারণ করি আমার সামাজিক, সাংস্কৃতিক সহজাত শালীনতা। শালীনতা বোধকে অতিক্রম করি্নি কখনো, কিন্তু আমি আমার শরীর নিয়ে লজ্জিত নই, বরং গর্বিত। আমার এই শারীরিক গড়নের কারণেই প্রথাভেঙ্গে আমার মন হয়েছে তেজদীপ্ত, বাঁধা আছে বলেই বাঁধ ভাঙ্গার এমন নেশা আমার। আর একদিন, আমার এই শরীরের গভীরেই একটি নতুন প্রাণ একটু একটু করে প্রানচঞ্চল হয়ে উঠবে। এই শারীরিক গঠনের কারণেই সেই অসাধারণ অনুভূতিটা উপভোগ করতে পারব আমি। একটি নারী শরীর অবশ্যই কোন পুরুষ শরীরের চেয়ে উন্নত না মহত কিছু নয়। শারীরিক এই গড়নে ব্যক্তি আমার কোন হাত নেই, বিবর্তনই মানব এবং মানবী গড়েছে, সেও জানি। কিন্তু এই শারীরিক গড়নই আমাকে দিয়েছে অনন্য ব্যক্তিস্বত্তা আর দেবে মাতৃতের অনুভূতি। যদিও জানি, সেই ব্যাক্তিস্বত্তাকে তার অনন্যতার স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত নয়, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের সবচেয়ে নির্যাতিত মানুষটিও।
তবু নিজেকেই শুধাচ্ছি, আমি কি কোনদিন নারী হয়ে উঠব সর্বোতভাবে? নারী হবার অনেক আগেই যে আমি মানুষ হতে শিখে গেছি। আমাকে আমার পরিবার, সমাজ, বন্ধু স্বজন, সবাই তো নারীরূপেই দেখতে চেয়েছিল। তাদের চাওয়া মত নিজেকে পুতুল করে গড়ার প্রথা ভাংতে গিয়ে আমি হয়ে উঠেছি মানুষ, নারী নয়। এমন কি, লিঙ্গসর্বস্ব শব্দ, মানবী শব্দটিতেও আমার আপত্তি আছে। আমি আমার বাবা মায়ের সন্তান এবং কন্যা, কিন্তু কখনই কন্যাসন্তান নই। তারা যতবার আমাকে কন্যাসন্তান বলে মর্যাদাবোধ শেখাতে চেয়েছে, ততবারই আমি জ্বলে উঠেছি বারুদের মত, পরিণত হয়েছি অগ্নিতে। ফলশ্রুতিতে, আমি আমার বাবা-মায়ের সুযোগ্য সন্তান নই, হয়ে উঠেছি “প্রবলেম চাইল্ড!” রক্ষনশীল পরিবারের দৃষ্টিকোণ থেকেও আমার জীবন যাপনকে কোনভাবেই অমার্জিত বলা চলে না, তবু আমি জানি, আমার ঔদ্ধত্য অমার্জনীয়। কারণ, আমি কন্যাসন্তান হতে রাজি হইনি।
আমার সহপাঠিনীরা সবাই যখন এক এক চিকিৎসক হবার বাসনায় জীববিজ্ঞানকে আবশ্যিক বিষয় হিসেবে নিতে শুরু করল, তখন আমি বিদ্রোহ করে নিলাম উচ্চতর গণিত। সে ছিল আমার এক অপরাধ! আমি কোন বিষয় পড়ব বা পড়ব না, সে স্বাধীনতাও আমার ছিল না। শেষটাই যখন নিলামই, তখন সাথে একটা শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছিল আমাকে, জীববিজ্ঞানকে যথাযথ গুরুত্বের সাথে পড়তে হবে, ব্যাপারটা এমন পর্যায়ে গিয়েছিল, প্রতিদিন অন্যকোন বিষয় পড়ি বা না পড়ি, জীববিজ্ঞান পড়তেই হবে! ভাবখানা এমন, রোজ জীববিজ্ঞান পড়লেই আমার চিকিৎসক হওয়া নিশ্চিত, আমি কি পড়তে চাই সেটা বিষয় না। করতাম বিতর্ক, বিচারকও একদিন ঠাট্টাচ্ছলে বলেছিল, বিতার্কিক মেয়েকে বিয়ে দেয়া সমস্যা, পাত্রপক্ষ ভয় পাবে! সেদিন জেনেছিলাম, আমি বিতার্কিক হলেও মেয়ে বিতার্কিক। ভালো লাগেনি আমার। ভালো লাগেনি, সেকথা জানাবারও জায়গা ছিল না। এরপর করেছি আরেক যুদ্ধ, আমার জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার স্বপ্ন গুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল, আমাকে ঢাকা বিশ্ব্যবিদ্যালয় বা অন্য কোথাও ভর্তি পরীক্ষা দেবার সুযোগ না দিয়ে। আমিও পরিবারের সবার ইচ্ছার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে ভর্তি হলাম বুয়েটে, তাও আবার ১২০টা সহপাঠী নয়, ছেলের সাথে যন্ত্রকৌশলে! আমাকে ভবিষ্যতে কর্মক্ষেত্রে ১০০টা ছেলের সাথে কাজ করতে হবে, এই ভয়ে বুক শুকিয়ে গিয়েছিলো অনেকেরই। আমি সে নিয়ে চিন্তিত ছিলাম না, চিন্তিত ছিলাম বরং ছেলে সহপাঠীদের নিয়ে, কারণ ওরা আসলে আমার স্বগোত্রের নয়, কোনদিন মানুষরূপে দেখার সুযোগ হয়নি তাদের, আপাদমস্তক ছেলেই থেকেছে! সুযোগটা আমিও নিয়েছি। সেশনালের বোর্ড ভাইভার দিন যখন ছেলেরা শেভ করে, চুল আঁচড়ে, সুন্দর শার্ট-প্যান্ট-জুতো পড়ে ক্লাসে আসতো, আমি ঘুরে ঘুরে ওদের দেখতাম, আর বলতাম, সাজগোজ করা ছেলে দেখি। বলেই সবকটা দাত দেখিয়ে দিতেম। সে জন্য খ্যাতিও ছিল আমার, ওরা ইচ্ছাকৃত ঠাট্টা করেই আমার ব্যাগ নিয়ে ঘাটাঘাটি করত, কেউ যখন বলত, “ঐ জানিস না, মেয়েদের ব্যাগ ধরতে হয় না”, তৈরী করা উত্তরটা দিতে সময় লাগতো না ছেলেবন্ধু গুলোর। “মেয়েদের ব্যাগ ধরতে হয় না, কিন্তু ওর ব্যাগ ধরা যায়!”
পহেলা ফাল্গুনে নিজে সেজেগুজে বাসন্তী রঙের শাড়ী না পরে, ছেলেগুলোকে গিয়ে বলতাম, পাখি দেখবা না? চল, পাখি দেখে আসি। হৈ হৈ করে উঠত সবকটা। বলত, তুমি পাখি দেখবা কেন? ওগুলো তো আমাদের ব্যাপার। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে হাঁটতে হাঁটতে ছেলেগুলোকে সুসজ্জিত পাখি আমি আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েই ছাড়তাম। এগুলো যে আমার বাড়াবাড়ি ছিল, সে আমি জানি, সে আমি মানি। কিন্তু তবু এই বাড়াবাড়ি গুলো করতে আমি কখনও দ্বিধা করিনি। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তো এরচেয়ে অনেক অনেক বেশী বাড়াবাড়ি সহ্য করেছে কোটি কোটি নারী জন্ম। সে হিশেবে এ যে নগন্য, কে না জানে? তবু কে মানে!
বর্তমানের অবস্থা আরো করুণ, মেক্যানিকাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আমার বৃত্তান্ত পেশাগত কারণে কোথাও দেখাতে হলে, পুরুষশাষিত সমাজের ভুরু যে একটু কুঁচকে উঠে, চোখদুটো যে একটু বিস্ফোরিত হয়, আড়াল করবার অনেক চেষ্টা করলেও তা আড়ালে যায় না। যন্ত্রকৌশলীর পেশাকে পুরুষেরা তাদের একচেটিয়া সম্পত্তি বলেই মনে করে, সেখানে উৎকট আপদের মত এক মেয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করলে যে পুরুষের পেশা হিসাবে এর গুরুত্ব কমে যায়! দুটি পুরুষ যখন পেশাগত প্রতিদ্বন্দীতায় নামে, তখন তারা বিচার করে দক্ষতা আর মেধাগত উৎকর্ষ, কিন্তু যখনই একজন নারীর সাথে এই তুলনা করার ব্যাপারটা আসে, সেটা তাদের কাছে চরম অপমানজনক বলেই মনে হয়, তুলনাটা তখন কেবলই হয় পেশীশক্তিতে। কোনভাবে যদিবা মেয়েটিই উৎরে যায় এ বিচারে, তখন মেয়েটার চোখের আড়ালে বা প্রকাশ্যেই তার নারী জন্ম নিয়ে বিদ্রুপ করা হয়, যাতে মেয়েটা অনুভব করতে পারে, যোগ্য হওয়াটাও তার একটা অপরাধ! বাংলাদেশের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গগী বলে কথা। আমার বুয়েটে চান্স পাওয়া আর আমার কাকাতো ভাইয়ের না পাওয়াটাও যেমন ছিল আমার অপরাধ। আজো প্রতিদিন ভিন্ন বিষয়ে পড়েও আমাকে আমার পরিবার তুলনা করে চলে আমার কাকাতো ভাইয়ের সাথে। আমার পেশাগত জীবনের দূর্ঘটনায় তারা কষ্ট পায়না, বরং গোপনে একটা তৃপ্তির হাসি হাসে, হাসিটা প্রকাশ্যে আসতে আক্ষরিক অর্থেই দুদিনের বেশী সময় লাগেনি কখনও। কিন্তু কাকাত ভাইটির ক্ষেত্রে দূর্ঘটনার কারণ ব্যাখ্যার ঝুড়িটা এতোই বড় থাকে, আমার দম বন্ধ হয়ে আসে (বলাবাহুল্য, ব্যাখ্যা আমার চাওয়ার দরকার হয়নি কোনদিন, এভাবে ব্যাখ্যা করাটা তারা তাদের নৈতিক দ্বায়িত্ব এবং মানবতা বোধের প্রকাশ বলেই মনে করে তখন)। যেন আমার সব অপরাধ আর অযোগ্যতা লুকিয়ে আছে আমার XX ক্রোমজমে!
সে যাক, আমি নাহয় মানুষ হিশেবে পাইনি এখনও আমার সম্মান, পুরুষেরা নিজেরা মানুষ নয়, পুরুষ বলেই মানুষকে সম্মান দিতে শেখেনি আজো। কিন্তু আজ আর কিছুতেই মানতে পারিনে, মানুষ নয়, কেবল এবং কেবল মাত্র নারীই হতে হবে আমাকে। আমার কন্যা, জীবনসংগী, মা হতে আপত্তি নেই, কিন্তু তীব্র আপত্তি আছে কন্যাসন্তান, অর্ধাঙ্গিনী বা জননী হতে। সেই অর্থে, নারী হবার যোগ্যতা আসলে আমার নেই। সানন্দে শিরোধার্য করে নিয়েছি আমার এ অযোগ্যতাকে।
এতো কথা বলে ফেললাম, আমার স্বপ্নভূক মনের কথা বলতে গিয়ে, বলতে গিয়ে আমার ভালোবাসাভূক স্বত্তার কথা। আমি স্বপ্ন খাই, স্বপ্নে বাঁচি। আমি স্বপ্ন দেখি বিশাল লাইব্রেরীর, স্বপ্ন দেখি শিল্পী মনের গুনগুনানির জন্য দারুন একটা স্টুডিওর, স্বপ্ন দেখি একটা গবেষনাগারের, স্বপ্ন দেখি একদল সহযোদ্ধার যারা লড়ছে মানবতার জন্য, হাতে হাত ধরে, স্বপ্ন দেখি একটি দেশের লাল সবুজ পতাকা সবাইকে বিস্মিত করে দিয়ে পতপত করে জয়ের গৌরবে উড়ছে, বাংলাদেশী, শুনলেই শ্রদ্ধার চোখে তাকাচ্ছে সারাবিশ্ব! আমি স্বপ্ন দেখি, বিজ্ঞান গবেষক হবার। নারীত্বের সামাজিক সঙ্গা বা সুভাষিত মহিমায় এই স্বপ্নগুলোকে বন্দী করা যায় না। আর স্বপ্ন দেখি, আমারই মত আরেকটি স্বপ্নভূক মানুষ, ঘরে বাইরে সর্বত্র ধরে রেখেছে আমার হাতখানি, একসাথে হাঁটছি স্বপ্নের অলিতে গলিতে, স্বপ্নের পথে পথে। নারী না হয়ে মানুষ হতে চেয়েছি, তার মানে এই নয়, আমি একাই সর্বেসর্বা, আমার দরকার নেই আমার সংগীটিকে, সংগীকে কাছে পাবার বা চলার পথে সাথে পাবার আকাঙ্খাও আমি বিসর্জন দিয়েছি নারীত্বের তথাকথিত সঙ্গার সাথে! ভালোবাসার জিনটুকুতো আমার মধ্যেই আছে, ঘর বাঁধার সামাজিক অভ্যস্ততা কিংবা নিজের জিনগুলোকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেবার বাসনা আমার কোষে কোষে। এই স্বপ্ন দেখার প্রবণতা বা ভালোবাসা পাবার বাসনা জিনের মাঝে লেখা আছে, সে আমি জানি, কিন্তু স্বপ্ন এবং ভালোবাসা, এইগুলো দেহের কোনখানে, মনের কোন অজানা অধ্যায়ে লেখা আছে, কোথায় বসে বেঁচে থাকার জন্য শ্বাসের মত বা রক্তস্রোতের মত আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে, সে আমি জানিনা। আমি কেবল জানি, নারী নয়, মানুষ হিসেবে বাঁচার অধিকার দরকার আমার, চিন্তার স্বাধীনতা, কর্মের স্বাধীনতা, সৃষ্টির স্বাধীনতা, স্বপ্নের স্বাধীনতা এবং প্রানমেলে ভালোবাসার স্বাধীনতা চাই আমার। xx ক্রোমোজমের মানুষগুলোর এমন বাঁচার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে প্রতিদিন পুরুষেরা কত লক্ষ লক্ষ খুন করছে, তার হিসাব কে দেবে? তার বিচার চাইবো আমি কোন আদালতে? বাঁচার এই লড়াইটা নারী মুক্তির নয় কেবল, মানব মুক্তির! মানবতার মুক্তির!
আকাশ মালিকের সাথে একমত পোষণ করছি। মন্তব্য অ্যপ্রুভ করার সময় (যেই এপ্রুভ করুক) পুরো মন্তব্য পড়ে অ্যপ্রুভ করার অনুরোধ করছি মডারেটরদের।
বন্ধগুপ্তের ভাষা, টোন এবং ইঙ্গিত সব কিছুই আপত্তিকর। এই মন্তব্য মডারেশনের ফাঁক গলে অ্যপ্রুভ হওয়াটা মোটেই সমীচীন হয়নি। বন্ধুগুপ্তের মন্তব্য মুছে ফেলার (সেই সাথে আকাশ মালিকেরটিও) অনুরোধ করছি।
@অভিজিৎ, বন্ধুগুপ্তের মন্তব্য মুছে দিয়েছি, আকাশ মালিকের মন্তব্য ঠিক ভাবে মুছেছি কিনা একটু দ্বিধান্বিত আমি। একটু চোখ বুলালে ভালো লাগবে আমার।
@অভিজিৎ,
আকাশ মালিক নাকি আল্লাচালাইনা?
@আকাশ মালিক, আমি ভুল করে মনে হয় আপনার মন্তব্য মুছে দিয়েছি, সে জন্য ক্ষমা চাচ্ছি।
@নীল রোদ্দুর,
ভালু ভালু। :laugh: :laugh:
@বিপ্লব পাল,
:yes: আমার তো মনে হয় নিশ্চিত ভাবে সব কিছু জেনে গেছে , এমন লোকের সংখ্যাই এই ব্লগে বেশি।
@ফারুক,
কী ভাবে বুঝলেন? কেউ কি এই ব্লগে এমনটি কখনও দাবী করেছেন? দু-একটা উদাহরণ প্লীজ।
আর নিশ্চিত ভাবে সব কিছু জেনে গেছে এমন লোকের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে এই ব্লগের চেয়ে কোন্ ব্লগে কম তা’ও দয়া করে একটু জানাবেন।
@আকাশ মালিক, ‘আমার তো মনে হয়’ এর অর্থ – আমার উপলব্ধি। আমার উপলব্ধির সাথে তো আপনার উপলব্ধি মেলার কথা নয় , সেকারনে উদাহরন দিয়ে শত্রু বাড়ানো ছাড়া আর কোন লাভ হবে কি? আর আমার উপলব্ধির সাথে যদি আপনার উপলব্ধি মেলেই , তাহলে উদাহরন না দিলেও আপনি বুঝবেন তারা কারা। একারনেই উদাহরন দেয়া অপ্রয়োজনীয়ই শুধু নয় বরং না দেয়া টাই শান্তি বজায় রাখতে সহায়ক হবে।
@ফারুক,
আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
মুক্তমনা ব্লগ সম্বন্ধে আপনার সবসময়কার শ্লেষমাখা কথা (‘নিশ্চিত ভাবে সব কিছু জেনে গেছে , এমন লোকের সংখ্যাই এই ব্লগে বেশি’, ‘কি বিচিত্র এই বিজ্ঞানমনস্কতা’ সহ আজকের শ্লেষমাখা মন্তব্যগুলোর দিকেই তাকা্তে পারেন) , আর শত্রুভাবাপন্ন মনোভাবও কিন্তু অপ্রকাশিত নয়, যদিও যখনই এটা বলি তখনই আবার আপনি বলার চেষ্টা করেন যে, কেউই নাকি আপনার শুত্রু নয়। 🙂
আপনার যেমন উপলব্ধি আছে, আপনার সম্বন্ধেও কিন্তু অন্যদের একটা উপলব্ধি গড়ে উঠেছে। তবে সেগুলো বিস্তৃতভাবে না বলাটাই শান্তি বজায় রাখতে সহায়ক হবে, কী বলেন?
@অভিজিৎ, আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক।
আমরা দুই মেরুর লোক , মন্তব্যের বিরোধীতা করতে গেলে শ্লেষ আসতেই পারে। তবে তা মন্তব্যের মাঝে সীমাবদ্ধ। আপনার মতো আমার স্মরনশক্তি ভালো না , তবে আমাকেও ঠগ বা আরো বেশি শ্লেষের মুখোমুখি এই ব্লগেই হতে হয়েছে। তবে তা কোন পক্ষেই সীমা ছাড়ায়নি বলেই আমার উপলব্ধি। একারনেই মাঝে মাঝে কমেন্ট করি এখানে।
প্রতিপক্ষতা আর শত্রুতা নিশ্চয় এক নয়। আপনাদের কোন ক্ষতি কখনো চেয়েছি তা কিন্তু বলতে পারবেন না।
এব্যাপারে সম্পুর্নরূপে একমত।
@ফারুক, যারা ঈশ্বরের কর্ম(যেমন ঈশ্বর সবকিছু বানিয়েছেন) ও ঈশ্বরের মনস্তত্ত্ব(যেমন, কি কি কাজ করলে ঈশ্বর খুশি হবেন) নিয়ে দিনরাত গবেষণা করে এবং তাদেরকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করলে ঈশ্বরকে যুক্তি-প্রমাণের উর্ধ্বে স্থান দেওয়ার পায়তারা করে, তাদের জ্ঞানতত্ত্বের গন্ডি নিয়ে আপনার মতামত কি? আস্তিক দাবি করে ঈশ্বর সব সৃষ্টি করেছে, নাস্তিক সেই দাবি অস্বীকার করে। এখানে আপনার কাছে কে জ্ঞানের দাবিদার বলে মনে হয়?
এই বিষয়ে অবশ্য আর তর্ক করতে চাচ্ছি না, নারীবাদের পোষ্টে আস্তিক-নাস্তিক যুদ্ধ করা অর্থহীন। শুধু আপনার মনোভাবটা জানালেই চলবে।
@পৃথিবী,
দুজনি জ্ঞানের দাবিদার । আপনি এদের যে কাউকে বলে দেখুন না “আপনার জ্ঞান কম/নেই” , দেখেন আপনার কি অবস্থা করে!!
আমি ভাই খামাকা অপদস্ত হতে চাই না। তাছাড়া আমার রায়ের মূল্যই বা কতটুকু?
মোটামুটি এই ব্লগ থেকে বোঝা গেল মুক্তমনায় কোন মহিলা ব্লগারকে ন্যাকা বলা যাবে না। কারন লেখিকাকে ন্যাকা বলা থেকেই যত ঝামেলার শুরু-
এটিকে তাহলে আইনের পর্যায়ভুক্ত করা হৌক। কারন লেখিকাদের ন্যাকামো দেখলে-আবার তাদের ন্যাকা লিখে দেব হয়ত। বাক স্বাধীনতার লিমিটি আমিও বিশ্বাস করি-তবে নানান ব্লগে এই টুকু স্বাধীনতা থাকে। এখানে যদি সেটা না থাকে, আইন করেই বন্ধ হোক।
@বিপ্লব পাল, আপনি আমাকে ন্যাকা বলতে পারেন, আপত্তি নেই। এসব নিয়ে আসলেই আমি চিন্তিত নই। আপনার কমেন্ট পড়েছি বেশ আগেই, ব্যস্ততায় উত্তর দেয়ার সময় পাইনি। পড়ে স্রেফ এটুকু বুঝেছি, আপনাকে বুঝতে আমার সময় লাগবে। চট করে আপনার ব্যাপারে আমি কোন মন্তব্য করে ফেলবো না। লেখা অপরিণত হওয়া অস্বাভাবিক নয়, আমি যে একটা প্রসেসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, সে সবচেয়ে ভালো করে আমিই জানি। মানুষের চিন্তা কোন অটল পাহাড় নয়, সময়ের সাথে সাথে তা পরিণত হবে না। আশা করি, আমিও একদিন আমার মত করে, আমার পথেই পরিণত হব।
আমি আপনার কমেন্ট এবং লেখা যতখানি পড়েছি, তাতে ঝাপসা করে একটা চিন্তা মাথায় এসেছে। আমরা যখন একটা অবসবাসযোগ্য সমাজকে সংস্কার করে বসবাসযোগ্য করতে চাচ্ছি, আপনি তখন একে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে অথবা ভেঙ্গে ফেলে নতুন রূপে দেখতে চান। যদি আমার চিন্তা সঠিক হয়, তাহলে, ভাঙ্গা গড়ার মধ্যবর্তী সময়ে মানুষ কোন অবস্থান নেবে, সে নিয়ে ভেবেছেন কি? সভ্যতার এতোগুলো বছর পার করে কি ভূমিধসের মত করে বর্তমান মানব সভ্যতাকে ধসিয়ে দেয়া সম্ভব আমাদের পক্ষে? রাজনৈতিক বিপ্লব হয়ত সম্ভব, কিন্তু মানব সভ্যতায় এমন বিপ্লব কি একটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার না? আমি চিন্তিত এই ব্যাপারে। আমার চিন্তা সঠিক না হলে উত্তর দেবার প্রয়োজন নেই।
প্রগ্রতিশীলতার সাথে মনে হয় প্রতিক্রিয়াশীলতার কোন সাংবিধানিক দ্বন্দ না থাকলে ব্যবহারিক দ্বন্দ আছে। প্রথাবাদীদের প্রতিক্রিয়াশীলতা আর প্রগতিবাদীদের প্রতিক্রিয়াশীলতার মাত্রায় তারতম্যও আছে। 🙂
@নীল রোদ্দুর,
না। একটু বুঝতে ভুল হল। সমাজের বিবর্তনের ব্যাপারে আমি গোঁড়া মার্ক্সবাদি ( লেনিনবাদি নই) । বিবর্তন হয় দ্বন্দের মধ্যে দিয়ে-আর এই দ্বন্দ আসে প্রযুক্তির উন্নতি থেকে-অর্থাৎ উৎপাদন ব্যাবস্থার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। জন বিপ্লবের মাধ্যমে আসলেই কোন পরিবর্তন আসে না।
আমি উদাহরন দিচ্ছি। ধর এই প্রবন্ধটির সময় কাল ৭ শতাব্দির ভারত। তখন ৭০-৮০% শিশু মারা যেত-এক জন মা ৭-৮ টি করে সন্তানের জন্ম না দিলে জন সংখ্যা টেকানোই দায় হত। সেই প্রেক্ষিত তৎকালীন সময়ের জন্যে নর নারীর সমানাধিকার বা উইমেন লিবার্টি অপ্রসাঙ্গিক ছিল।
কিন্ত আজকে এই লেখাটি বা নারীবাদি আন্দোলন প্রাসঙ্গিক কেন?
মূলত দুটি কারন-এবং উভয়ের পেছনেই আছে প্রযুক্তি বিপ্লব।
[১] শিল্প বিপ্লবের জন্যে যে শ্রমিক চাহিদা তৈরী হয়েছে, সেখানে দরকার নারী শ্রমিক-ফলে নারীকে ঘর থেকে চাকরী করতে বেড়তেই হবে।
[২] চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নতির জন্যে শিশু মৃত্য নেই-ফলে একজন নারীর দুটি সন্তান যথেষ্ট। সুতরাং একজন নারীর মা হওয়া এবং চাকরী আটকাচ্ছে না।
অর্থাৎ আজকের নারীবাদি আন্দোলনের যে তাৎপর্য্য আছে তার ভিত্তি বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিপ্লব।সেটা উৎপাদন ব্যাবস্থাকে এমন ভাবে পরিবর্তন করেছে, যে নারীবাদ একটি সামাজিক চাহিদা হিসাবে উদ্ভুত হচ্ছে। ১০০০ বছর আগে, এসব আন্দোলন কেও পুছত না-কারন তখন এক জন মেয়ের ৭-১০ টি সন্তান না হলে সমাজ টেকানো যেত না।
সুতরাং ইতিহাসের এই বিবর্তনকে ধরেই নারীবাদকে বুঝতে হবে।
এবার ঘরির কাঁটা এগিয়ে দিই-২০০ বছর ভবিষ্যতে-খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থানের কোন সমস্যা নেই-মানুষকে কাজ ও করতে হয় অল্প রোবটদের জন্যে। ক্ষমতার বিন্যাসে কমিনিউজম ( লেনিনের মতন নয়-ওসব ভুল ভাল কমিনিউজমের ব্যখ্যা) আসবে-অর্থাৎ ক্ষমতার স্ট্রাকচারে প্রভুত্ব থাকবে না, মানুষের প্রয়োজন মেটাবে সমাজ। ব্যাক্তি সম্পত্তি ও থাকবে না।
তখন কি নারীবাদ থাকবে? যে যারটা নিয়ে সুখে থাকলে, যেখান বঞ্চনা নেই, ক্ষমতা বিন্যাসে আছে সরাসরি গণতন্ত্র, সেখানে মানুষ কিসের জন্যে আন্দোলন করবে?
তাই আমি এটাই বলতে চাইছি-এইসব আন্দোলন আসলেই আমাদের একটা মানবিক চেতনা দেয়। তার বেশী কিছু না। আসল পরিবর্তন আসবে প্রযুক্তির পরির্তনে।
সেই জন্যেই ১৩০০ বছর আগের লেখা কালিদাসের নায়িকাদের মধ্যে মা নেই-সবাই প্রেমিকা-বেশ শরীরাচ্ছন্ন প্রেমিকা। সেখানে নারীবাদ নেই-নারী আছে-কারন সমাজের সেটাই ছিল চাহিদা।
@বিপ্লব পাল, :yes:
@বিপ্লব পাল, আপনি অতীত আর ভবিষ্যত নিয়েই থাকবেন? বর্তমান তো নিশ্চুপ কাটালেই ভবিষ্যত চলে আসবে, তাই না?
আমি আবার ঘোর বর্তমানবাদী, ভবিষ্যতবাদী না। আপনার কাছে যা কেবলই মানবিক চেতনার উৎস, আমার কাছে তা না, বরং জলজ্যান্ত সমস্যা, যা ঘাড়ে করে আমরা ঘুরে বেড়াচ্ছি। ভবিষ্যতে একদিন নারী-পুরুষের মাঝে শাসক আর শোষিতের শ্রেনীবিভাগ থাকবে না, এই আশা আমিও করি, কিন্তু সেই ভবিষ্যত যদি পুরুষেরা যেভাবে চাই, সেভাবেই আনতে হয়, তাহলে আমি বাগড়া দিতেই চাই। প্রযুক্তির কথা বলছেন? নারীকে তো এখনো প্রযুক্তির বাইরেই রাখা হয়েছে। এই প্রশ্ন বারবার করা হয়, নারী কেন দার্শ্নিক, সুসাহিত্যিক, বিজ্ঞানী ইত্যাদি ইত্যাদি হয়ে ওঠে না। যখন নারীকে ধোঁকা দেয়া হচ্ছে ব্রিটনীর উদাহরণ দিয়ে, আদর্শ নারী, আদর্শ মায়ের সঙ্গা দিয়ে, সেইখানে এইসব প্রশ্ন কিন্তু অযৌক্তিক। ডরথী রীডকেও রীড-স্টের্নবার্গ সেল আবিস্কারের পর গবেষনাগার ছেড়ে ঘরে আটকে পড়তে হয়েছে, যা নিয়ে পরে সে আফসোস করতে হয়েছে!
রোবটের কথা বললেন, তাই না? মেকাট্রনিক্স বা মাইক্রো রোবটিক্সের মত আজকের দিনের বিষয়গুলো পড়ার সুযোগ থেকে নারীদের বঞ্চিত করার যুক্তি কি আছে? কিন্তু এই সাবজেক্টের নাম পর্যন্ত জানতে পারছে কয়টা মেয়ে? আজ থেকে পঞ্চাশবছর পর যখন এইগুলো কম্পিউটার সাইন্সের মত জনপ্রিয়তা লাভ করবে, তখন মেয়েরা জানবে, এগুলো আসলেওনেক আগেই ছিল, শুরুর দিকে এগুলো নিয়ে কাজ করেছে কেবল পুরুষই। নারী-পুরুষের শ্রমবিভাগের বযাপারটা বর্তাম, এই প্রভাব কিন্তু রোবটের কাজেও পড়বে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কিন্তু বর্তমানকে উপেক্ষা করে পুরুষতান্ত্রিক সমাজই বহাল রেখে দিচ্ছেন আর আমাদের বাংলাদেশের মেয়েরা হুমায়ুন আজাদ পড়ে তাদের শরীরের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানে, সেই নিয়ে উন্নাসিকতা প্রকাশ করছেন।
যুক্তির মাঝে ফাঁক ফোকরগুলো যে অনেক বেশী করে চোখে পড়ছে, সে কি বুঝতে পারছেন? আলগোছে, ফাঁক ফোকঅর গুলো নিয়ে ভাসা ভাসা মন্তব্য করাই যায়। কিন্তু সবাই যে ভাসা ভাসা মন্তব্যে ভেসে, নারী মুক্তির তথা মানবতার মুক্তির আন্দোলনকে মানবিক চেতনার উৎস ভেবে বসবে না, তাও মনে হয় সত্য!
আপনার যুক্তির শক্ত গাঁথুনির উদ্দেশ্যে শুভ কামনা করছি।
@নীল রোদ্দুর,
তোমার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে তুমি বয়সে বেশ ছোট এবং আশেপাশের পৃথিবী ও নিজের অভিজ্ঞতাকেই গোটা পৃথিবী ভাবছ।
আমি গৌতম বুদ্ধের একটি গল্প বলি।
এক সন্তান হারা মা বুদ্ধের কাছে এল-তার সন্তানহীনতার বেদনা কিছুতেই ঘুচতে চাইছে না। বুদ্ধ বললেন তুমি এক কাজ কর-আমি সারিয়ে দেব-যদি তুমি এমন এক ঘর থেকে আমাকে একমুঠো চাল এনে দাও যে ঘরে কোন মৃত্যুশোক কোনদিন ছিল না। বৃদ্ধা বেশ কিছু বাড়ি ঘোরার পরে বুঝল-আসলে বিচ্ছেদ বেদনা একটি চিরন্তন সত্য-সে শুধু নিজেকে ছারা অন্যর বেদনা কোনদিন বোঝার চেষ্টা করে নি বলে, তার কাছে এটা ধরা পড়ে নি।
তা তোমার কি মনে হয়? নারীরা শুধু বঞ্ছিত? পুরুষ অত্যাচারিত বঞ্ছিত না? তাছারা তুমি যা লিখেছ তাতে অনেক তথ্যগত ভুল আছে। নারীর জন্যে এখন একাডেমিক্সের সব দুয়ারই খোলা-কিন্ত নানান সামাজিক কারনে-বিশেষত মাতৃত্বের চাপ থাকাতে অনেকেই চ্যালেঞ্জিং ক্যারিয়ারে যেতে চাই না। আবার তোমার দুঃখটাও বুঝি-পেশাদারি সার্কেলে অনেকেই মেয়েদের পছন্দ করে না। এই জন্যে না যে তারা সক্ষম না-সাধারনত ইমোশনাল স্টেবিলিটির জন্যে অনেকে পুরুষ কর্মীই নারী সহ কর্মিনী পছন্দ করে না। কিন্ত এই কারনে অনেকেই অনেক পুরুষ পছন্দ করে না তাদের পারসোনালিটির জন্যে।
সুতরাং শোষনের বৈষম্যের ব্যাপারটা বিচ্ছিন্ন কিছু না। পুরুষ নারী-সবাই শোষিত। আর প্রযুক্তির উন্নতি ছারা এ ঘুচবেও না।
বর্তমানকে অতীত বা ভবিষত থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখলে-অনেক ভুল সিদ্ধান্তে আমরা পৌঁছায়। তোমার লেখাটা এবং নারীবাদি আন্দোলন এই দোষে দুষ্ট। কালের যাত্রাকে না বুঝলে, পিপিলীকার হস্তি দর্শন হইবে।
@বিপ্লব পাল,
যেতে চাইনা, ব্যাপারটা সর্বাংশে সত্যি না। যেতে দেয়া হয় না অনেক ক্ষেত্রেই।
বয়স ২৬। বয়সের হিসাব সবসময় আমি দেহঘড়ি ধরে করিনা। এইকারণেই বয়সের ঘড়িতে কেউ শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করলে আমার হাস্যকর লাগে।
আমি কিন্তু কখনই বলিনি, পুরুষ নির্যাতিত হয় না। আমি পুরুষবিদ্বেষী না, এটাও বোঝার কথা।নারীর বঞ্চনার স্বরূপটা অনেকাংশেই জানি বলেই নারীর কথা লিখেছি। যা জানিনা ভালো করে তা নিয়ে লেখার সাহস আমার নেই। যেকোন বঞ্চনার বিরুদ্ধে দাড়ানোর মানসিকতা আমার আছে। অনুরোদ জানাচ্চি তাদের, যারা জানে আর সব বঞ্চনার স্বরূপ তাদেরো বদলে দেবার প্রত্যয়ে সামনে আসার
আমি কোন দুঃখ দেখানোর জন্য লিখি নি। লিখেছি আমার বদলে দেয়ার মানসিকতা থেকে।
আর যা লিখেছি, তার সবটা আমার একার জীবনের প্রতিচ্ছবি নয়, আমার মত আরো অনেকের প্রতিচ্ছবি। আরেকটা উদাহরন দেই, আমার সবচেয়ে কাছের বান্ধবীকে অসময়ে অবাঞ্চিত সিঁদুরের চিহ্ন মাথায় তোলার হাত থেকে বাঁচতে দেশ ছাড়তে হয়েছে, ছেড়েছে সে পরিবারের মানসিক আশ্রয়।
কি করছে সে এখন? ন্যানোটেকনোলজীতে উচ্চশিক্ষা। অথচ এই প্রতিভাটাকেই শাখা সিঁদূরে বন্দী করার চেষ্টা ছিল সবচেয়ে বেশী।
কালের যাত্রা কতটুকু বুঝি সে নিয়ে তর্কে যাব না, শুধু বলব, আমি যখন কোনকিছু বোঝার চেষ্টা করি, তখন সময়সীমা বাড়িয়েই করি। আপনি ২০০ বছর পরের যে সমাজের কথা ভেবেছেন, সেই সমাজে কামনা ছাড়া আর কোন জায়গায় নারী-পুরুষের সহাবস্থানের দরকার আছে বলে মনে করেছেন, তা মনে হয়নি। সেটা আমার কাম্য কোন সমাজ না।
প্রযুক্তি বিজ্ঞানের একনিষ্ঠ পথিক আমি, ঐ আমার ধর্ম। বিজ্ঞান ২০০ বছর পরে আমাদের কোন জায়গায় নিয়ে যাবে, সেই আশায় আজকের বদলে দেয়ার মানসিকতা ভুলে যাবার কোন যৌক্তিকতা আমি দেখিনা। বিজ্ঞানের লোভে প্রতিবাদী কন্ঠ চুপ হয়ে যাবে, সেও আমার কাম্য নয়।
@নীল রোদ্দুর,
একমত।
@নীল রোদ্দুর,
আমার চেনা অভিজ্ঞতা সার্কেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটা মেয়েদের স্বেচ্ছা সিদ্ধান্ত।
গবেষনালদ্ধ ফল না দেখলে বলা মুশকিল।
শ্রেষ্টত্বের দাবি কোথায় করলাম। আমি ত পয়েন্ট বাই পয়েন্ট উত্তর দিচ্ছি।
বয়সের সাথে অনেক কিছুই বদলায়। তোমার মতন বয়সে আমার ও মেয়েদের প্রতি বৈষম্য দেখলে রক্ত গরম হত। আস্তে আস্তে বুঝলাম বৈষম্যের উৎস প্রযুক্তির বিবর্তন যা সমাজের ক্ষমতার বিন্যাস করে উন্নততর রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেসের জন্যে। এবং নারী পুরুষ সবাই নির্যাতিত অনেক ভাবে -সেটা প্রযুক্তির সঠিক বিবর্তনেই ঘুচবে-কারন প্রযুক্তির জন্যেই সমাজের এই বিন্যাস।
খুব ভাল কথা। একটু যুক্তি দিয়ে আমাকে বোঝাও। যে সমাজে দুজন পুরুষের মধ্যেই অনেক অসমতা-একদল পুরুষ অন্য পুরুষকে শোষণ করে-বা অধিকাংশ পুরুষই শোষিত এবং নির্যাতিত-সেখানে একজন নির্যাতিত শোষিত পুরুষের সাথে কি সমতা মেয়েরা দাবী করে? এটা বালখিল্যতা না?
আলাদা করে নারীর জন্যে সমানাধিকার দাবি করা বা বৈষম্যে বিরুদ্ধে লড়াই করা আমার কাছে হাস্যকর লাগে ( যদিও আমি অপরিণত বয়সে তাই করেছি)-কারন গোটা সমাজের অধিকাংশ পুরুষ ও নির্যাতিত। এবং নারী পুরুষের বঞ্চনা ও বৈষম্যের পেছনে আছে উৎপাদন ব্যাবস্থার ওপর মানুষের মালিকানার অধিকার। সেই সমান অধিকার অর্জিত না হলে শুধু মেয়েদের জন্যে এই ধরনের কান্না হাস্যকার এবং বালখিল্যতা এবং পরিস্কার ভাবেই বুর্জোয়া মনোভাব যাদের দৃষ্টি সমাজের ওপরের দিকে-সেখানে তাদের চোখে পড়ে না বাড়ির মাসিটিকে, মায়েরাই শোষন করে।
এটাত তোমার আবিস্কার। আমার না। কামনা একটা রাসায়নিক অনুভব-ভবিষ্যতে নিউরো সিম্যুলেটর দিয়েই সব ধরনের সেক্সুয়াল এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া যাবে-সঙ্গী সঙ্গীনির দরকার হবে না। মুক্তমনাতেই আমার একটা কল্পবিজ্ঞানের গল্প আছে।
@বিপ্লব পাল,
এই লাইন দুইটা দেখলেই বুঝার কথা, আমি আলাদা করে কোন অধিকার চাই নি, চেয়েছি মানুষ হিসাবে বাঁচার অধিকার। আর নারীমুক্তির আন্দোলন কোন বিচ্ছিন্ন আন্দোলন নয়, মানব মুক্তির একটি অংশ। এককালে সতীদাহ ছিল, প্রযুক্তি সতীদাহ বিলোপে এগিয়ে আসেনি, এসেছে মানুষই! এককালে দাস প্রথা ছিলো, সেও বিলুপ্ত হয়েছে মানুষের উদ্যোগেই। এখনও পৃথিবী জুড়ে চলছে বর্ণ নির্যাতন, ধর্ম নির্যাতন। এগুলোও প্রযুক্তি বিলোপ করবে না, করবে মানুষই। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই চাওয়া হচ্ছে মানবাধিকার।
কেন পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার উপর এতো আক্রমন? কারণ পুরুষ নির্যাতন করছে পুরুষ, নারী নির্যাতন করছে পুরুষ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে। তাই বিলোপ দরকার আগ্রাসী পুরুষের, যারা ভাবে মানুষের উপর নির্যাতন চালানোর অধিকার তাদের আছে।
আমার হেঁটে, বড়জোড় দৌড়ে পথ চলতেই ভালো লাগে, লাফিয়ে লাফিয়ে না। কল্পবিজ্ঞান এখনও কল্পবিজ্ঞানই। যেকালে কল্পবিজ্ঞান বাস্তব হবে, সেই কালে আমরা না হয় আর বিতর্কে যাবো না। আমি মনে হয় একটু ভুল ভেবেছিলাম, আসলে আপনার চিন্তাতে কোন জায়গাতেই মনে হয় নারী-পুরুষের সহবস্থানের দরকার হবে না।
প্রযুক্তির উৎকর্ষ আসে চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতেই। বিজ্ঞান হেটে চলে না, মানুষ যখন পালে পালে রোগে মরে, তখনই আমরা মরন রোধে বিজ্ঞানে পথ খুঁজি।
বর্তমানকে পাশ কাটিয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্নে বিভোর হলে কিন্তু ঘুম ভাংলে ভবিষ্যতের দেখা মিলবে না। ঘুম ভেঙ্গে কেবল মনে হবে, আসলে এতোক্ষন ঘুমিয়েই ছিলাম, ঘুমের সময়টাতে তেমন কিছুই বদলায় নি পৃথিবীতে। 🙂
@নীল রোদ্দুর,
মহিলা মালকিনরা ছেরে কথা বলে? যার হাতে সম্পদ আছে, ক্ষমতা আছে, সেই অত্যাচারী হয়ে ওঠে। খালেদা জিয়া তার স্বামীর থেকে কম শোষন ছিলেন এমন দাবী করতে চাও? হাস্যকর না ব্যাপারটা?
আসল সত্যটা হল উৎপাদন ব্যাবস্থার ওপর মালিকানা।
আর মানব মুক্তির আন্দোলন ইতিহাসের প্রথম দিন থেকেই ছিল, থাকবে। প্রতিটা ধর্মের সৃষ্টিই হয়েছে মানব মুক্তির জন্যে প্রতিবাদি আন্দোলন হিসাবে-কিন্ত প্রতিটি আন্দোলন ই শোষক শ্রেনীর ক্রীড়ানকে পরিনত। এই নিয়ে আমার এই লেখাটা পড়তে পার।
আমি কিন্ত ভবিষয়ত না, অতীতের উদাহরন ও অনেক দিয়েছি। সেগুলো অস্বীকার করতে পার না।
:yes: :rose:
এই পোস্টে আলোচনাকারীদের ভাষা ব্যবহারে সতর্ক হতে অনুরোধ করা হচ্ছে। মডারেশন নীতির পুনরায় লঙ্ঘন পরিলক্ষিত হলে, মন্তব্যকারীকে মডারেশনের আওতায় আনা হবে।
গরুর চার পা আছে, ছাগলেরও চার পা আছে। তাই গরুর মাংশের দাম, ছাগলের মাংশের দাম সমান হওয়া উচিৎ। তা যদি না হয়, সেটা বৈষম্য। অধিকাংশ নারীবাদীদের লজিক, উপরোল্লেখিত লজিকের উপরে চলে।
লেখা পড়ে মনে হল না, আপনি ঐ গোষ্ঠীর। আপনাকে অভিনন্দন।
পুরুষতান্ত্রিকতা জিনিষটা যে এত শক্তিশালী, সেটা আগে বুঝতাম না। এখন বুঝি, অনবরত এটাকে আক্রমন হতে দেখে। এবং এটাও বুঝি, কিছু না কিছু তো আছে পুরুষতান্ত্রিকতার ভিতরে। আমগাছে লোকজন ঢিল মারে, শ্যাওড়া গাছে কেউ ঢিল মারে না। এত আক্রমনের পরেও নাকি পুরুষতান্ত্রিকতা সমাজে এখনও বিদ্যমান। আবার নারীও নাকি, পুরুষতান্ত্রিক। হুমায়ূন আজাদে বলছে, বাংলাদেশের নারীবাদীরাও নাকি পুরুষতন্ত্রের সেবাদাস। আফসোস।
ভাষা নিয়ে বেশী ভাব মারার কারনে, আরাম করে পড়া গেল না।
@বন্ধুগুপ্ত,
পুরুষ এবং নারী কোনো গরু-ছাগলের মত ভিন্ন প্রজাতির কিছু নয় তাই ‘তাদের মাংসের দাম সমান‘ দাবি করা যেতেই পারে। আর ‘অধিকাংশ নারীবাদী’ সম্পর্কে আপনার যে ধারণা সেটা দুঃখজনক।
হ্যাঁ পুরুষতান্ত্রিকতা যুগে যুগে ল্যাংড়া, ফজলি, মোহন ভোগের মত দারুণ সব আম জন্ম দিয়ে যাচ্ছে। আর শ্যাওড়া গাছ তো বড়জোর কিছু ভূতের নিবাস। বাই দ্য ওয়ে, আপনার হাত ঘড়িতে এখন কয়টা বাজে, মধ্যযুগ?
@বন্ধুগুপ্ত, আপনাকে জবাব দিতে চাইলে জবাব দেয়া যায়। কিন্তু শোভন ভাষায় যে আপনার সাথে কথা বলা যায় না, সে তো আপনার কমেন্ট পড়েই বোঝা যায়। যুক্তিবাদীদের ফ্যালাসী ধরার আগে সুন্দর ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করুন, কথা হবে তখন।
@বন্ধুগুপ্ত,
বন্ধুগুপ্ত রামছাগলটা কিন্তু আমাকে মুক্তমনা থেকে ব্যান করানোর স্কীম হাতে নিছে। সবাইকে দেখিয়ে এইটা আমি একটা জিডি করে রাখলাম। ছদ্মনিকে সদালাপ হতে প্রেরিত কোন রাসুল নয়তো এটা? আমাদের হেদায়েত করতে চায়? রাসুলটিকে কি আমরা লুত নবীর উম্মতদের মতো ট্রিটমেন্ট দিবো?
@আল্লাচালাইনা,
:lotpot:
মুক্তমনাদের নমুনা :hahahee:
@ তানভীরুল ইসলাম, আপনার মন্তব্যের প্রতিউত্তর লিখেছিলাম। মডারেশন মুক্তি দিলনা, মন্তব্যটা। :-Y
@আকাশ মালিক, আচ্ছা ঠিক আছে। মন্তব্য তুলে নিচ্ছি, লেখক আমার মন্তব্যটি মুছে দিন।
@আল্লাচালাইনা,
ভাল লাগলো যে আপনি ভুলটা বুঝতে পেরেছেন।
আর আমি কিন্তু এক্সপ্লিসিট কিছু বলি নাই আকাশ মালিক। তার ঐ চারপায়া গরু ছাগের উপমাটির বিনিময়ে তাকে অন্তত একটা মৃদু কটু কথা বলা যাবে না? রামছগলের চেয়ে ডিসেন্ট আর কি বলা সম্ভব ছিলো? আমি কিছুদিন আগে সদালাপের প্রতিষ্ঠাতার সাথে আপনার একটা কথোপকথন দেখেছিলাম। এত্তোবড় একটা শূঁয়োরের সাথে আপনি কতোটা বন্ধুত্বপূর্ণ, সোহার্দপূর্ণ ব্যাবহার করেছেন আমি দেখেছি। ফল কি হয়েছে? সে মুক্তমনাকে তুলনা করেছে ভেড়ার খোঁয়াড়ের সাথে। অথচ এর পরেও কিন্তু আপনি তাকে দিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক একটি মানুষের ট্রিটমেন্টই। এটাতো নর্মাল মোড অফ হিউম্যান বিহেইভিয়ার না? সুশীল হওয়ার মানে যদি এটা হতো যে একটি ইটের বিনিময় অন্তত আধটি পাটকেল মারা যাবে না, তবে আমাদের আর চিন্তা করতে হতো না, natural selection would have taken care of us.
@আল্লাচালাইনা,
আপনাকে একটা অযাচিত উপদেশ দেই কারন উপদেশ দেয়া আমাদের মজ্জাগত আর এটা পাওয়াও যায় ফ্রি। উপদেশটা হলো- যার তার মন্তব্যের ওপর মন্তব্য করতে নেই , তাতে করে অনেক গুরুত্বহীন ব্যক্তিও গুরুত্ব পেয়ে যায়। আর তর্ক করে কখনো জেতা যায় না। আপনাকে উপদেশটা ফ্রি দিলাম কিন্তু আমি অনেক ঠেকে এটা শিখেছি। 🙁
@ভবঘুরে, আপনারই উপদেশ দেওয়ার আগেই আমার নিজের মাথাতেই সবসময় এটা গেথে রাখার চেষ্টা করতাম। কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু সময় পা পিছলে যায়। তবে যা বলেছেন সেটা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ।
@আল্লাচালাইনা, এইসব মধ্যযুগীয় কদালাপীদের নিয়ে কথা বলে সময় এবং মুক্তমনার বল্গ স্পেস নষ্ট না করাই বোধ হয় ভালো, এ তে শুধু গন্ধই ছড়ায়। ওদের দুর্গন্ধ ওদের চারপাশেই থাক, এখানে সেটা বয়ে এনে কি লাভ?
@আল্লাচালাইনা,
বিশ্বাস করুন আস্তিক অথবা নাস্তিক, মুসলিম অথবা অমুসলিম আমি কাউকে ইচ্ছে করে দুঃখ দিতে পারিনা।
উনি মুক্তমনাকে যখন ভেড়ার খোঁয়াড় বলেছিলেন আমি প্রতিবাদ করেছি। তাদের বাউন্ডারি আমাদের জানা, অনেক পুরনো পরিচিত। সাধু সুলভ ব্যবহার দেখায়ে যখন কোন লাভ হয়না, তখন গালির বদলে গালি দিয়ে কি কোন লাভ হবে? হবেনা। সুতরাং ‘তুমি খারাপ বলে আমি ভাল হবোনা কেন?’
স্যরি, আল্লাচালাইনা। আমি আপনার ফ্রাস্ট্রেশনটা বুঝি তারপরও মুক্তমনার স্বার্থে, মুক্তচিন্তা, মুক্তবুদ্ধি চর্চাকারী সত্যভাষী মানুষের স্বার্থে কথাগুলো বলেছি, মনে কিছু নিবেন না।
@আকাশ মালিক,
বিবর্তনবাদ তত্ত্ব অনুযায়ী জীবন যুদ্ধে যারা টিকে থাকে তারাই জগতে রাজত্ব করে। সেখানে পরাজিতদের কোন স্থান নেই। তাই যখন যুদ্ধ অনিবার্য তখন পিছু হঠা মানে পরাজিত হওয়া ও ধ্বংস হয়ে যাওয়া। তাই ভাল ব্যবহার সব সময় কাজ দেবে এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। মাঝে মাঝে ইটের বদলে পাটকেল মারা জরুরী হয়ে পড়ে নইলে কিন্তু নিজেরই শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পৃথিবীর ইতিহাস সেকথাই বলে।
@ভবঘুরে,
ওকে, বস। এই কথোপকথনে ইতিরেখা টানার আগে আরো দুটো কথা বলে নিই। এখানে ” Survival of the fittest… না বলে বলবো, Those who are best fitted to survive.
কারা, কোথায়? The most suited to their environment.
আপনি বিজয়ের পূর্বাভাস দেখতে পান না? মা প্রকৃতির কসম মুক্তমনা, যুক্তিবাদী, বিজ্ঞান মনস্কদের বিজয় অনিবার্য, তারাই টিকে থাকবে তা আপনাকে ১০০% গ্যারান্টি দিয়ে বলে দিলাম। দূর্ভাগ্যবশত আমরা তা দেখে যেতে পারবোনা। পৃথিবীর Environment দিনদিন ধর্মহীনতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে, ধর্মবাদীরা এই পরিবেশে নিজেকে খাপ খাওয়ায়ে না নিতে পারলে তারা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ধর্ম নিজেকে বাহুবলে অস্ত্রবলে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে বিজ্ঞানকে থামিয়ে দিতে গালি দিয়েছে,বিজ্ঞানের গলা টিপে, আগুনে পুড়ে হত্যা করেছে, কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা টেকাতে পারেনি। বিজ্ঞান ধর্মকে গালি দেয়নি, কোন প্রতিশোধও নেয়নি।
আপনারা কি দেখেন নি ঘাসের মাথায় বসা শিশির বিন্দু প্রশান্ত মহাসাগরকে চ্যালেঞ্জ করতে? সাগর কি দাঁড়াবে, তার কথায় কান দেবে? কোন সাড়া নেই কেউ কথা কয়না, কেউ তার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেনা। সে পরিবর্তিত পরিবেশে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারছেনা। আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার লক্ষ্যে সে গালি দেয়। সাগরপারের চিৎকার যতই বিকট মর্মান্তিক হউক না কেন, ঢেউয়ের তাতে কিছু যায় আসেনা, সে একটি পাহাড় বা দ্বীপ সৃষ্টি করেই ছাড়বে।
চলুন আমরা এখানে ক্ষান্ত দিয়ে সামনে অগ্রসর হই। আমাদের এ আলোচনা সংশ্লিষ্ট প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয় নয়।
@আকাশ মালিক,
আপনার কথাই সই । চলুন এগোন যাক
@ভবঘুরে, আমারও তাই মত 😎 চলুন এগোনো যাক।
@ সাইফুল ইসলাম, আপনার সাথে সম্পুর্ণই একমত এবং আপনাকে ধন্যবাদ।
@আল্লাচালাইনা,
আমি আপনার সাথে সম্পুর্ন একমত দাদা। এতে যদি সারা দুনিয়া আমার বিরুদ্ধে যায় তাতেও আমি রাজি আছি। পুরুষ, নারীদেরকে যারা গরু ছাগলের সাথে তুলনা করে তাদের রামছাগল বলাই যায়।
মালিক ভাই,
সত্যি বলছি আপনার ধৈর্য্য আমাকে সবসময়ই মোহিত করে, কিন্তু মাঝে মাঝে কিন্তু আসলেই কিছু কথা শোনানর দরকার হয় কিছু পাবলিককে। এরা যা ইচ্ছা তাই বলে যায় যখন তখন। মাথা কি সবসময় ঠিক থাকে বলেন? তবে এটাও ঠিক আমাদের সবারই ধৈর্য্য ধরা উচিত। কিভাবে পারেন এইটা মালিক ভাই?
মডারেটরটের প্রতি বিনীত অনুরোধ,প্লিজ দেরি না করে মন্তব্যটিকে মডারেশনের আওতায় আনুন।
@বন্ধুগুপ্ত, ভাষায় ভাবটুকু ছিল বলে এখন সুখ সুখ লাগছে। আরাম করে পড়া গেলে হয়ত আপনার রাতের ঘুমটা আরামের হত না। 🙁
আপনি নারী-পুরুষকে চতুষ্পদী প্রানীর মাংসের সাথে তুলনা করছেন? আপনি কি নিজেকেও তাই ই ভাবছেন? তাহলে আসলেই কিছু বলার নেই, আপনার স্বাধীনতা আছে, আপনি কিভাবে নিজেকে মূল্যায়ন করবেন।
আমার ধারণা, আরাম করে পুরোটা পড়তে পারলে আপনি আমাকে অভিনন্দন জানাতেন না। শান্ত ভাবে কথা বলি ঠিক, তবে কোন পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ঝান্ডাধারীর সাধ্য নেই, আমাকে আমার অবস্থান থেকে সরানোর। 🙂
@নীল রোদ্দুর,
না, আমি যেটা করেছি সেটা হচ্ছে নারীবাদের অন্যতম একটা লজিকাল ফ্যালাসিটা নিয়ে বলেছি। নন-সিক্যুইটার (অসংলগ্ন যুক্তি)। সহজ কথাটা কেউ বুঝলা না। যদিও তারা দাবী করে তারা যুক্তিবাদী। যুক্তিবাদীদেরও তাদের যুক্তির ফ্যালাসি দেখালে
অনেকেই বলছেন নারীবাদি আলোচনায় পুরুষবিদ্বেষ তুলে ধরা হয়। এমন কয়েকটি লেখার লিংক বা রেফারেন্স কি দেওয়া যায়? পশ্চিমের উদার সমাজ তো বটেই, আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজেও নারীবিদ্বেষী পুরুষের সংখ্যাই বেশি। ঘরের ভেতরে-বাইরে চব্বিশ ঘন্টা যখন কয়েক জোড়া চোখ লীপ্সা নিয়ে তাকিয়ে থাকে, তখন একজন নারী অতিষ্ঠ এবং আবেগতাড়িত হয়ে সব পুরুষকে লম্পট ঘোষণা করতেই পারে। বাংলাদেশের কোন নারীবাদি(বা পশ্চিমা নারীবাদি, লেসবিয়ান ফেমিনিজম বাদে) কি আজ পর্যন্ত্য একাডেমিক কোন রচনায় দাবি করেছে যে পুরুষ মাত্রই লম্পট?
লেখাটিতে একদম আমার মনের কিছু কথা খুঁজে পেয়েছি। ভাল লেগেছে। লেখাটা অন্য ধাঁচের কারণ এতে তথাকথিত নারীবাদী আলোচনার নামে পুরুষবিদ্বেষ দেখানো হয়নি। পুরুষদের কাছ থেকে নারী হিসেবে কিছু সুবিধা আদায় করা আমাদের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত নয়। আবার তাদের প্রতি অকারণ বিদ্বেষ উগরানো আর অবাস্তব অযৌক্তিক অধিকার আদায়ের নামে বিবাদ করাও কাম্য নয়। আমরা উভয়েই মানুষ। আমি নারী হয়ে জন্মেছি বলে আমি অন্য কোন জীব নই, পুরুষদের চেয়ে ভিন্ন শারিরীক গঠনের মানুষ মাত্র। ঠিক তেমনি পুরুষরাও আমাদের চেয়ে ভিন্ন শারিরীক গঠনের মানুষ মাত্র। এছাড়া আর কোন পার্থক্য নেই। তাই আমি বলতে চাই নারী যে একজন মানুষ এই সত্য কথাটি বোঝা, বোঝানো, আর প্রতিষঠিত করার লড়াই ই হচ্ছে যথাযথ নারীবাদী আন্দোলন।
@লীনা রহমান,
স্বল্প কথায় এত সুন্দর কিন্তু জোরাল ভাবে শ্বাস্বত বাণীটাকে ব্যক্ত করতে খুব কম জনই পারে। সপ্রশংস ধন্যবাদ। :rose2:
@লীনা রহমান, দারুন বলেছেন! :rose2:
@বিপ্লব পাল,
বস্, আইতে না আইতে শুরু কইরা দিলেন। কথা কতক সত্য কিন্তু হুমায়ুন আজাদ না পড়লে দেহের উপস্থিতী অনুভব করা যায় না এমন দাবি কোথায় করা হয়েছে ? বুঝিনাই।
আমরা প্রায় কোরাসের মত লেখাটার প্রসংশা করে ফেলেছি। বোঝা গেল, আপনার মত পরিনত হতে আমাদের খবর আছে। 🙁
মৃত্যু যেহেতু নিয়তি, সুতরাং নো হ্যাজান্তিস, বাচ্চা জন্ম দাও, সংস্কৃতি প্রবাহিত হতে থাকবে। চিরন্তন সত্য। বাহ, অভিরাম !!!!!!!
@আতিক রাঢ়ী,
জীবন যে উদ্দেশ্যহীন সেটাত নাস্তিক চিন্তা প্রসূত তাই না?
আর এই বিলিয়ান বছরের মহাবিশ্বে, বিলিয়ান তারার মধ্যে এই ক্ষুদ্র আমি কি করিলাম কি যায় আসে? এটা কি অসত্য? এটাও নাস্তিকতা প্রসূত চিন্তা।
এতদিন ত জানতাম জীবনের অর্থ খোঁজে আস্তিকরা!
@বিপ্লব পাল,
কিন্তু জীবনের অর্থ খোঁজার কথাতো নাস্তিকের কারন নাস্তিকের কাছে পৃথিবীর জীবনটাই সব কিছু সেটা উদ্দেশ্যহীন হউক আর যাই হউক। আর আস্তিকের কাছেতো এই জীবন কিছুই না, পরকালই হচ্ছে জীবনের আসল উদ্দেশ্য। ব্যাপারটা বুঝলাম না।
@বিপ্লব পাল,
এটা কি সত্য কথন হল? শুধু আস্তিকেরাই জীবনের অর্থ খুঁজে? আমার তো মনে হয় মানুষ মাত্রেই জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে। আস্তিকেরা তাঁদের ভার্সনে সন্তুষ্ট থাকে নাস্তিকেরা তাদেরর ভার্সনে। আমি যেমন খুঁজে পেয়েছি আমার নিজের জীবনের উদ্দেশ্য। , তেমনি আরেকজন খুঁজে নিবে তার জীবনের অর্থ। পুরো বিশ্বের উদ্দেশ্য উদ্দেশ্যহীন হতে পারে, কিন্তু ব্যক্তি আমি কি উদ্দেশ্যহীন ভাবে জীবন যাপন করছি।
@বিপ্লব পাল,
তোমার কিছু মন্তব্য দেখলে বুঝতে পারি না যে, নিছক বিতর্ক সৃষ্টি করার জন্য বল নাকি পপ বিজ্ঞানের বদ হজম হচ্ছে বলে এসব কথা বল । তুমি তো দেখি মেয়েদের সম্পর্কে সবকিছুই জানো, তোমার মত পন্ডিত মানুষকে কি আর বলবো! মেয়েদের বিষয়ে তোমার ডিটারমিনিস্টিক কথাবার্তা শুনলে আসলেই কি বলবো বুঝতে পারি না। হুমায়ুন আজাদের এই কথাটা শুনে আমার কিন্তু মনে হয়েছিল, এটা তো হতেই পারে, আসলেই তো দেশে আমরা মেয়েরা নিজেদের শরীর নিয়ে কত কমই না জানি! আর তুমি এখানে এসে কি অদ্ভুতভাবে এইধরণের একটা ইন্সেনসিটিভ মন্তব্য করে বসলে। ‘ন্যাকামো’ কথাটা খুব শক্ত একটা কথা, জওশন এর এই লেখাইয় মন্তব্য করতে গিয়ে এই ধরণের শব্দ প্রয়োগের কোন প্রয়োজন ছিল বলে মনে হয় না । আর তুমি বোধ হয় হুমায়ুন আজাদের লেখা পড়নি, পড়লে হয়তো ব্যাপারটা বুঝতে পারতে।
লেখাটা তোমার কাছে ‘অপরিণত’ মনে হতেই পারে, সেটা পাঠক হিসেবে তোমার প্রিরোগেটিভ। কিন্তু মেয়েদের নিয়ে পরের এই ডিটারমিনিস্টিক কথাটা খুবই আপত্তিকর। ‘একটাই লক্ষ্য থাকে’ – হুম, তুমি তো দেখি মেয়েদের বিষয়ে পন্ডিত হয়ে বসে আছো, তোমার এই সব মন্তব্য দেখে এত বিরক্ত হই যে মাঝে মাঝে ক্লান্ত হয়ে মন্তব্য না করেই পালিয়ে বাঁচি :-Y । মা হওয়ার পরে মেয়েদের অন্যতম প্রধাণ লক্ষ্য বাচ্চার কথা ভাবা এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই, তবে এই শতাব্দীতে বসে এটাকে ‘একমাত্র লক্ষ্য’ বলার আগে তোমার বোধ হয় আরেকবার ভাবা উচিত ছিল। আমার চারপাশে শ’য়ে শ’য়ে প্রফেশানাল মেয়ের উদাহরণ দিতে পারি যারা মা হওয়ার পর সন্তানের দেখভাল করেও নিজের পেশায় আরো ভালো করার জন্য মনোযোগী হয়, নিজের ভবিষ্যতের কথা ভাবে, তার পার্টনারের সাথে সম্পর্ক নিয়ে আলাদা করে ভাবে। এখানে মেয়েদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার পাশাপাশি আরও একটা ফ্যাক্টরও কাজ করে। উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তনের ফলে এখন পুঁজিবাদী সমাজে বাপ মা বুড়ো বয়সে অনেক ক্ষেত্রেই আর ছেলের উপর নির্ভশীল থাকে না, আর তার ফলে সমাজে ছেলেমেয়ে কেন্দ্রিক চিন্তাভাবনাটাও অনেক বদলাতে শুর করেছে। এখানে বায়োলজিকাল ব্যাপারটাই একমাত্র ফ্যাক্টর নয়, মানব সমাজে এর বাইরেও অনেক ফ্যাক্টর কাজ করে, সেগুলো না বুঝলে বিশ্লেষণগুলো যান্ত্রিক হয়ে যেতে বাধ্য।
এখন কর্মজীবি মেয়েরা যে বয়সে মা হয় সে সময়ে (বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই) তারা তাদের পেশায় একটা বিশেষ অবস্থানে চলে যায়। আমি অনেক মেয়েকেই দেখেছি যাদের মধ্যে এসময়ে নিজের প্রফেশানে উন্নতি করার ব্যাপারটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মেয়েরা এগুলোকে ব্যালেন্স করেই চলে, সাধারণভাবে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সন্তানের জন্য অনেক বেশী ইনভেস্টমেন্ট করতে হয় ( বায়োলজিকালি সেটা সত্যি)। আগের একটা মন্তব্যে এই কথাটাই বলতে চেয়েছিলাম যে কর্মজীবি মহিলারা বাইরের কাজ করেও অনেক বেশী বাসার কাজ করতে বাধ্য হয়, তুমি সেটারও বিরুদ্ধে কথা বলেছিলে। আমার একটাই অনুরোধ, এ ধরণের কথাগুলো এত ডিটারমিনিস্টিকভাবে না বলে একটু অন্যভাবে বলা যায় কিনা সেটা একটু চিন্তা করে দেখতে পারো।
তোমার কথাগুলো পড়ে এখন মনে হচ্ছে হয়তো তুমি জওশানের লেখাটা বুঝতে পারোনি। আর ‘হেজানো’ মানে কি, এর অর্থ যাই হোক না কেন, শুনতে খুবই খারাপ শোনাচ্ছে এটুকু বলতে পারি। এখানে মা থেকে সন্তানে কি প্রবাহিত হচ্ছে সেটা একান্তই অপ্রাসঙ্গিক!! আমার আসলেই মনে হচ্ছে তুমি লেখাটার মাথামুন্ডু কিছুই বোঝনি। অযথাই কতগুলো ‘পুস্তক গেলা’ মন্তব্য করে চলে গেলে।
নাহ, এটা তো দেখি আরও আপত্তিকর কথা!!! নাস্তিকেরা কখনোই বলে না জীবন অর্থহীন, বরং তাদের যেহেতু পরকালের মাধ্যমে জীবনের অর্থ খুঁজতে হয় না তারা এই জীবনকেই অনেক অর্থবহ করার চেষ্টা করে। অত্যাচার নির্যাতন, স্ট্যাটাস কো, বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, এই পৃথিবীটাকেই আরও ‘সুন্দর’ করে গড়ে তোলার কথা চিন্তা করে। আর জীবন মানেই পুরানো সংষ্কৃতি মূল্যবোধকে বজায় রাখা, অন্যায়, অসচেতনতা, স্থবিরতাকে আলিঙ্গণ করে বেঁচে থাকা – এগুলোতো সেই চোখ বন্ধ করে থাকা ধার্মিকদের কথা মতই শোনালো।
@বন্যা আহমেদ,
সমাজ বিজ্ঞানের গবেষণাতে যেটা দেখা গেছে, সেখানে কিন্ত দেখছি, মেয়েরা এই যে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা চাইছে, তার মূল কারন কিন্ত তার সন্তানের নিরাপত্তা।
নিজের জন্যে কোন মা সেটা করে না-আমি একটা রেফারেন্স দিলাম।
( আমার মনে হচ্ছে তোমার কথাটা আবেগপ্রসুত)
এই খানে দেখ মায়েরা সন্তানের জন্মের এক বছরের মধ্যে কাজে ফিরে যায়
-এবং তার একটা বড় কারন এই যে তারা মনে করে তাদের সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে সে সন্তানকে আরো ভাল মানুষ করতে পারবে।
বুঝলাম না। মানব সভ্যতার বয়স কত বছর? ১০,০০০ বা ২০,০০০।
ধরে নেওয়া যাক মানব বিবর্তনে বয়স মেরেকেটে ৫০ মিলিয়ান বছর।
যদি ধরে নিই আমি বলে এই সত্তাটি সমাজ বিচ্ছিন্ন পৃথক কোন অস্তিত্ব তাহলে আমাকে বোঝাও কি ভাবে সেই বিচ্ছিন্ন সত্তা এই বিবর্তনে ছাপ রাখবে?
সামাজিক পরিবর্তন একমাত্র প্রযুক্তি পরিবর্তনেই হয়। এটা মার্ক্সীয় বুলি শুধু না , বাস্তব সত্যও। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উন্নতিতে আশা করা যায় খাদ্য চিকিৎসার সমস্যা না থাকলে , ন্যানো প্রযুক্তির উন্নতিতে উৎপাদনের উন্নতি চরমে পৌছালে যেখানে সব কিছুই সবার হাতের মধ্যে থাকবে, এই সব বৈষম্য , অবিচার সব কিছুই অর্থহীন হবে। জীবনের কি উদ্দেশ্য থাকবে তখন?
চূরান্ত নাস্তিকতাই জীবনের উদ্দেশ্য থাকতে পারে না। কারন যা একদিন বিগ ব্যাং এর মাধ্যমে শুরু হয়েছিল-তাও ছিল এক্সিডেন্ট-এই মহাবিশ্ব একদিন বিলীন হবে-সব সৃষ্টিই আবার বিন্দুতে ফিরে যাবে-তাহলে আমি আন্দোলন করি বা না করি তাতে কি? সব কিছুরই শেষ হবে সেই একই পথে। আমার কাজ কি, মহাবিশ্বের অন্তিম গতি যেখানে সব তারা এবং গ্রহের মৃত্যু অনিবার্য্য-অনিবার্য্য প্রতিটি প্রানের মৃত্যু – তাকে কি ভাবে রোধ করবে?
সুতরাং নাস্তিকতা মানতে গেলে জীবনের একটি উদ্দেশ্য নিয়ে থাকতেই পার-কিন্ত সেটিকে পরম উদ্দেশ্য বলে চালনা করা যায় না। কারন তাহলে আমরা যে কারনে নাস্তিক-সেই কারনটাকেই অস্বীকার করতে হয়। গাছের খাব আবার তলারটাও কুড়াব-সেটা কি করে সম্ভব?
@বিপ্লব পাল,
ওহহো, তাই তো, ভাগ্যিস তুমি বললে, না হলে তো আবেগের ঠ্যালায় ধপাস করে পড়েই যেতাম :-Y . আমি অবশ্যই ‘আবেগপ্রসূত’ভাবে বলছি, আমার জেনারেশন, আমার আগের এবং পরের জেনারেশনের শ’য়ে শ’য়ে পেশাজীবি মহিলারা সবাই আবেগপ্রসূত হয়েই এটা বলছে, কোন সন্দেহই নেই এ ব্যাপারে, তুমিই ঠিক, তুমি জানো না এমন কিছু আছে নাকি? আর তোমার যুক্তি কুযুক্তি সব কিছুকে ঠ্যাক দেওয়ার জন্য পপ, নন-পপ সব ধরণের জারনাল তো সটাং হয়ে দাঁড়িয়েই আছে। এই তো, যা ভেবেছিলাম, এখানেও রিসার্চের ঢিল মেরে দিয়েছো দেখছি!! খালি এবারের ঢিলটা বড্ড বেজায়গায় পড়ে গেছে। আসলেই পড়ে দেখেছো কি বলেছে এই লেখাটায়? নাহ বোধ হয়, কেমন যেন একটু সন্দেহ হচ্ছে। দাঁড়াও তোমাকে একটু হেল্প করি পেপারটা পড়তে, দুর্ভাগ্যবশতঃ তুমি যে রিসার্চটার কথা বললে সেটা নিয়ে আমেরিকায় পেশাজীবি মহিলাদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে, (আমি সেদিন অন্তত পক্ষে ৫ টা ইমেইল পেয়েছিলাম এ নিয়ে আমার মেয়ে বন্ধুদের কাছ থেকে)। ভালোভাবে একবার পরে দেখ কি বলছে, আমি নিশ্চিত লেখাটা সত্যি সত্যি একবার পড়লে দেখবে কত বড় ফাউল করে ফেলেছো। ‘কেউ একমাত্র এই কারণেই ইহা করিতেছে’ আর ‘ ইহা করিবার ফলে এই উপকারটি পাইতেছে’র মধ্যে যে পার্থক্য আছে তা বোধ হয় তোমার জানা নেই। দেখো কি বলছে পেপারটাতে…
Children whose mothers worked were also likely to benefit from higher-quality childcare outside the home, because their parents could afford to shop around for the best nannies and nursery places.
But Professor Waldfogel said she hoped that the new study, which was published last week by the Society for Research in Child Development, would reassure working mothers that they are not harming their children.
“The findings reflect what I think many working mothers would say, which is that they have balanced all the different considerations and they feel that they are doing the best thing for their families over all, and yes it’s tough in some ways that they are working, but there are also important benefits that come with that,” she said
সরি বিপ্লব, বলতে বাধ্য হচ্ছি, is this the best you could do? ফরিদ ভাইয়ের মতই জিগাই, যুক্তির( বা কুযুক্তির) ভান্ডার কি একেবারেই শেষ ?
আহহ, এতক্ষণে বুঝলাম, সেই বস্তাপঁচা যান্ত্রিক বিবর্তনবাদ :-X । জন্ম নিয়ন্ত্রণ, পেশাজীবি বা শিক্ষিত মেয়েদের মধ্যে কম হারে সন্তান হওয়ানো, মেয়েদের সমানাধিকার, টিকে থাকার জন্য মারামারি কাটাকাটি না করা, অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসার মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখা, ইমিউনাইজেশন – মানব সমাজে এরকম হাজারটা উদাহরণ দিতে পারি যেগুলোর কোনটাই বিবর্তনের পক্ষে যায় না, কিন্তু তারপরও আমরা মানুষ হিসেবে সেগুলো করি। এক কাজ কর, এখনি এগুলো বন্ধ করার ডাক দিয়ে একটা ভিডিও ছেড়ে দাও ইউটিউবে। মানুষের বিবর্তন যে অনেক কারণেই প্রাকৃতিক বিবর্তনের উর্দ্ধে চলে যেতে পারে তা নিয়ে আর নতুন করে বিতর্ক করতে ভালো লাগছেনা। আবারও বলি, আমার আপত্তি ছিল তোমার ‘একমাত্র’ কথাটাতে। সন্তানের ভালো চাওয়াটা অবশ্যই একটা ফ্যাক্টর, কিন্তু এটাই মেয়েদের ( আমেরিকায় সন্তান জন্ম দেওয়ার পর ছয় সপ্তাহের মধ্যে কাজে ফিরতে হয়) জীবনের ‘একমাত্র’ ফ্যাক্টর নয়। এই ভুল কথাটাকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য যতই খুঁড়তে থাকবে দুর্ভাগ্যবশতঃ গর্তটার সাইজ ততই বড় হতে থাকবে…
তুমি কি রামকৃষ্ণ মিশনের সদস্য হয়ে গেলা নাকি আবার? এ সব তো এতদিন জানতাম আস্তিকরা বলে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে!!! আসলেই তো চল সবাই মিলে বসে বসে আঙ্গুল চুষি, খামাখা এত কষ্ট করে মধ্যবিত্ত সব ব্লগে এসে ফালাফালি করেই বা লাভটা কি?
ওহো, এতক্ষণ তো বুঝিই নি যে আমরা একটা হাইপোথিটিকাল অজানা ইউটোপিয়ান সমাজ নিয়ে বিতর্ক করছিলাম। আজকের দিনটা তো মনে হচ্ছে রীতিমত ‘ডে অফ ডিভাইন রিভিলেশন’! (অবশ্য দুর্মুখেরা একে এ্যমেনশিয়া বা বাইপোলারিজমের লক্ষণ বলেও মনে করতে পারে! )। আহারে বেচারা নাস্তিক মার্ক্স!! তার ভাগ্য বড্ড ভালো যে সে মরে বেঁচেছে। এইরকম একটা বাক্যে তার নামের রেফারেন্স দেখলে বেচারা মনে হয় গলায় কলসি বেঁধে থেমস নদীতে ডুবে মরতো। তোমার মত লোক যে কিনা কয়দিন পরপর সংগঠনের ডাক দেয়, বিভিন্ন রকমের প্রজেক্ট হাতে নিয়ে পৃথিবী উল্টানোর কাজে আত্মনিয়োগ করে সেই আবার ক্যাম্নে ‘কিছু করলাম কি করলাম না তাতে কি আসে যায়’ গোছের কথা বলে তা বোঝার ক্ষমতা আসলেই আমার নাই। যাক গিয়া, কি আছে জীবনে? সব কিছুই যে আমার বুঝতে হবে এমন তো কোন কথা নেই। এই পৃথিবীতে কয়জন মানুষই বা তোমার মত সব বিষয়ে ‘পন্ডিত’ হবার মত সৌভাগ্য নিয়ে জন্মায়!!!!
@বন্যা আহমেদ,
চাকুরীজীবি মায়েদের নানান সিদ্ধান্ত প্রবনতা নিয়ে আরো ২ টে রেফারেন্স দিলাম। আমার আগেরটাকে প্রশ্ন করতেই পার এই জন্যে যে ভদ্রলোক লিখেছেন, এতে মেয়েদের গিল্টি ফিলিংস এর কিছু নেই। ঠিক আছে ওই রেফারেন্সটা বাদ গেল। আরো তিনটে দিলাম
[১]
এই পেপার অনুযায়ী যেসব মেয়েদের মধ্যে ক্যারিয়ার এবং মাতৃত্বের দ্বন্দ চিরন্তন-সাধারনত যার এই দুটীর মধ্যে কমন অবজেক্টিভ বার করতে পারে-তাদের এই দ্বন্দ কম।
[২]
Public discourse however, has it that women lack career advancement. It is typically assumed
that women are inherently less ambitious than men or that a magical disappearance of ambition
takes place once children arrive (e.g., Sools, van Engen & Baerveldt, 2007).
আমি কিন্ত এই কথাটাই লিখেছিলাম যা গবেষনাতেও সমর্থিত-এখানে দেখ
তবে এটাও সত্য যে শেষ তিন দশকে ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে ক্যারিয়ার এম্বিশন আস্তে আস্তে একরকম হচ্ছে। এবং তাতে আশ্চর্য্য কিছু নেই-আমি এটা আগেও লিখেছি উন্নত প্রযুক্তির সামনে সাংস্কৃতিক পার্থক্য ম্যাটার আর করবে না।
সেটাত আমার বক্তব্য ছিল না। বক্তব্য ছিল কালচারাল সিলেকশনের বিবর্তন কিভাবে এল। নাস্তিক কালচার ত আস্তিক কালচারের অনেক আগেই ছিল। তাও আস্তিকতার জন্ম হল কেন?
আমার বক্তব্য কিন্ত মোটেও এটা না যে বিবর্তনের পক্ষে যায় না বিপক্ষে যায়। আমি খুব পরিস্কার ভাবেই লিখেছি উন্নত প্রযুক্তির জন্যে বিবর্তনের পদ্ধতিটা ম্যাটার করে না-কারন প্রাকৃতিক নির্বাচনটাই আমাদের মধ্যে এখন স্বব্ধ।
তারা আস্তিক বলে বলেই সেটা ভুল? এটা ত আস্তিকদের বুদ্ধির প্রতি অবজ্ঞাসূচক মন্তব্য-যা মাঝে সাঝে আমিও করি-কিন্ত সেটা আমার ও ভুল তোমার ও ভুল।
আমি অভিজিতকে এর উত্তর দিয়েছি। তাই নতুন করে লেখার দরকার নেই।
আহারে বেচারা নাস্তিক মার্ক্স!! তার ভাগ্য বড্ড ভালো যে সে মরে বেঁচেছে। এইরকম একটা বাক্যে তার নামের রেফারেন্স দেখলে বেচারা মনে হয় গলায় কলসি বেঁধে থেমস নদীতে ডুবে মরতো।
@বন্যা আহমেদ,
মার্কস আমার কথাকেই সমর্থন করে গেছেন-যে জীবনের আসলেই কোন উদ্দেশ্য নেই বলে ধর্মের অস্তিত্ব আছে।
It is the fantastic realization of the human essence since the human essence has not acquired any true reality.
ঠিক এই কারনেই মার্কস নাস্তিকতা এবং কমিনিউজমের মধ্যে প্রভেদ করেছেনঃ
The philanthropy of atheism is therefore at first only philosophical, abstract philanthropy, and that of communism is at once real and directly bent on action.
আর আমি যেটা বললাম সেটা মার্কসীয় একটি শাখায় চর্চা হয়-যাদের মার্কসবাদি এস টি আর বলে। তারা মনে করেন মার্কসবাদ আসলেই এডিয়াবেটিক-অর্থাৎ জন বিপ্লব করে সমাজ পরিবর্তন মার্কসবাদ থেকে আনা যায় না। প্রযুক্তি বিপ্লব দিয়েই সেটা করাটাই মার্কসবাদের সাথে খাপ খায়। যদিও মার্কস পরে নিজেই জন বিপ্লবের কথাই বলেছেন-এবং স্বীকার ও করেছেন এই সব আন্দোলনে ঠিক মার্কসবাদি বলা যায় না- সেটা নিয়ে নাই বা লিখলাম।
মার্কসবাদ নিয়ে লিখতে বসলে অনেক ভুল ই ভাঙাতে হয় যাতে ১৫০ বছর ধরে শাওলা জমেছে।
তিন তিনটি আশ্চর্যবোধক চিন্হ সম্বলিত বন্যা আহমেদের এই-
মন্তব্যটি পড়ে হাসতে হাসতে পরে গিয়ে মরে পচে কার্বনডাইঅক্সাইড রূপে প্রকৃতিতে ফেরত গেলাম :laugh: :laugh: :laugh:। জওশনের প্রতি সমবেদনা থাকলো। আশা করি তার চোখে এইটা পরবে যে অন্যান্য কোন সদস্যই বিপ্লব পালের ঐ প্রদাহী মন্তব্যটির সাথে সহমত প্রকাশ করেনি। এখন, স্ব্য়ং বিপ্লব পালের চোখে এটা পরবে কিনা সেটাই হচ্ছে আসল ব্যাপার। যদি পরে এবং যদি ভুল করে হলেও এই ভাবনা বিপ্লব পালের মগজে উদিত হয় যে- ‘কেউ যেহেতু আমার সাথে সহমত প্রকাশ করছে না, then perhaps I was wrong’, তবে মনের খুশীতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে আমি একটি বাডওয়াইজারের বোতল ফাটাবো। :laugh:
@বিপ্লব পাল,
জীবনের চিরন্তন অর্থ খোঁজে আস্তিকরা। একটা চিরন্তন অর্থ আছে, এমনটা ধরে নিয়েই তাদের খোঁজাখুজি চলে। নাস্তিকরা জীবনের অর্থ তৈ্রী করে নেয় যার যার মত। কিন্তু আপনি দেখছি একটা চিরন্তন অর্থ খুঁজে পেয়েছেন। আমি এখনো পাইনি। অপনি যদি আপনার এই চিরন্তন এর মানেটা আরেকটু ব্যাখ্যা করেন, তো বুঝতে সুবিধা হয়।
@বিপ্লব পাল,
আপনার বক্তব্যের সাথে দ্বিমত রয়েছে, লেখক এখানে বলেননি যে সবাই নারী লেখা পড়েই জেনেছেন, বলেছেন অনেকে।
আর বিশেষ করে আপনার ভাষার ব্যবহার পছন্দ করিনি। আপনার বক্তব্য আপনি অন্য ভাবেও বলতে পারতেন। বিশেষ করে নুতন লেখকদের পুরোনো ব্লগারদের উচিত সুন্দর ভাবে ভুল গুলো ধরিয়ে উৎসাহ দেওয়া। কেউই প্রথম লেখায় পারফেক্ট লেখা দিবে সেরকম প্রত্যাশা করা ভুল। আপনার মত পুরোনো ব্লগারদের থেকে আমি সেটাই প্রত্যাশা করি। যদি বলেন সে রকম প্রত্যাশা করা অনুচিত, তবে বলার কিছু নেই। ভাল থাকবেন।
@স্বাধীন,
একদম ঠিক কথা। মাঝে মধ্যে বিপ্লবের লেখা আর মন্তব্য পড়ে মনে হয় সে খুবই প্রগতিশীল, সকল সংস্কারের উর্ধ্বে। আবার সেই একই বিপ্লবের উপরের মন্তব্যের মতো কিছু পড়লে মাঝে মধ্যে মনে হয় সেই বিপ্লবের মধ্যেই আসলে বাস করে এক মূঢ় লোলচর্ম, প্রগতিবিমুখ আর প্রতিক্রিয়াশীল এক উন্মত্ত সত্ত্বা। কোনটা আসল বিপ্লব কে জানে। হয়তো দুটোই। 🙂
@অভিজিৎ,
সত্যের সন্ধানে কোন দুর্বলতা রাখতে নেই। নারী জাতির প্রতি তোমার এই দুর্বলতায় সত্যের স্থলনের সম্ভাবনা সর্বাধিক। আমার আগাম সাবধান বাণী।
@স্বাধীন,
ওই লাইনটা আমার অসহ্য লেগেছে। কেও যদি দাবী করে বাঙালী মেয়েরা এতই রিপ্রেসিভ সমাজে বড় হয়, যে তারা তাদের দেহগত কামনা নিয়ে সজাগ নয় এবং হুমায়ুন আজাদের বই পড়ে তাদের মনে সেই কামনাকে তারা টের পায়-এটাকে গালাগাল না দিয়ে পাড়লাম না।
বাঙালী গ্রামে অনেক রক্ষনশীল। কিন্ত এটা মনে করা ভুল যে সেখানে মেয়েরা আদি রসাত্মক পরিবেশ থেকে বঞ্চিত থাকে বা তাদের দেহের কামনাকে খুব ঋণাত্মক চোখে দেখা হয়। এগুলো বাঙালীর ওপর চাপানো একধরনের মধ্যবিত্ত ভিক্টরিয়ান ভ্রম, যা কিছু শিক্ষিত মধ্যপরিবারের ছোয়াছে রোগ, যার সাথে অধিকাংশ বাঙালী মেয়ের সম্পর্ক নেই।আমি দেখেছি গরীব বা নিম্ন পরিবারের খুব অল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিত মেয়েরা খুব স্বাচ্ছন্দে পুরুষ বদলায় ( কারন এদের অনেকের স্বামী অনেক দিন আগেই ভেগে গেছে)-প্রেমের ব্যাপারে ঢ্যামনামো করে না-বা মেয়েও মায়ের প্রেম নিয়ে আপত্তি করে না।
বাঙালী মেয়ে বলতে মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত মেয়ে যদি কেও মনে করে যেখানে আদি রসাত্মক কথাকেও অশ্লীল বলা হয়-তাদের ব্যাপার আলাদ।
@বিপ্লব পাল,
স্যরি বস, এই কথাটা মানতে পারলাম না। আপনার কোন লেখা পড়ে অসহ্য লাগতে পারে, বিরক্ত লাগতে পারে, কিন্তু তার জন্য কোন প্রকার গালাগাল হালাল হয়ে যায় না কারোর জন্য।
পাব্লিক স্পিকিং বলে একটি বিষয় আছে। ব্লগ মাধ্যম যেহেতু একটি ওপেন স্পেস এখানে কথা বলা উচিত রয়েসয়ে। মনে করুন অফিসে আপনার কারোর মতামত ভাল লাগলো না, আপনি কি তাকে গালি দিয়ে বসিয়ে দিবেন, নাকি সুন্দর ভাবে তার নিজের বক্তব্যের দ্বিমতে আপনার মতামত তুলে ধরবেন। আপনি নিজে রাজনীতি নিয়ে চিন্তা করেন। একজন মুখ খারাপ করা রাজনীতিবিদকে মানুষ ভোট দিবে নাকি যিনি সুন্দর করে কথা বলে তাকেই ভোট দিবে। একই বক্তব্য নানান ভাবে দেওয়া যায়। আমি সে কথাটি বলার চেষ্টা করছি।
আর নুতন লেখকদের ব্যাপারে আমি কিছুটা ছাড় অবশ্যই দিব। একজন নুতনকে যদি উৎসাহ না দেই কিভাবে একটি গ্রুপ বড় হবে? আর নারীদেরকেও আলাদা সম্মান আমি দিব, এটা যদি আমার পুরুষতান্ত্রিক চিন্তা হয় তাও। আমি মনে করি না যে কাউকে সম্মান করলে আমার তাতে সম্মান কমে যায়। বরং উলটোটাই মনে করি যে কাউকে অসম্মান করলেই নিজের সম্মান কমে যায়। সে আমার শত্রু হলেও তাকে আমি যুক্তি দিয়েই, আমার বক্তব্য দিয়েই আমার কথা শুনতে বাধ্য করবো। আর যিনি আমার সহযাত্রী, তার ক্ষুদ্র ভুল তো একটু ভাল কথা দিয়েই বোঝানো সম্ভব।
অথচ, আপনার নিজের পরিচিত এখন কি? সবার ব্লগে যেয়ে ধুম করে একটি মন্তব্য করে দেওয়া এবং বেশির ভাগ সময়ই মন্তব্যটি লেখকের ত্রুটি ধরা নিয়ে, তাও খুব কড়া ভাষায়। এতে সবার ধারণা যে আপনার কাজই এই। আমার অনুরোধ থাকবে প্রয়োজন নেই সবার লেখায় মন্তব্যের। মন্তব্য করতেই হবে এমন তো নয়। আপনি বরং লেখায় আরো বেশি মনোযোগ দিন। বেশি বেশি লেখা দিন, অন্যরা আপনার লেখায় মন্তব্য করুক।
আশা করি আমার মন্তব্যটিকে ভুল বুঝবেন না। চলেন জনসংগঠনটি নিয়ে চিন্তা করি, সেটিকে বাস্তবে পরিণত করার চিন্তা করি। সেটির সংবিধান নিয়ে কাজ শুরু করি। আপনি খঁসড়া সংবিধান অথবা আপনার পরিপূর্ণ চিন্তাগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করুন। ভাল থাকবেন।
@স্বাধীন,
না না সবসময় ওনাকে অত সিরিয়াস হতে বলবেন না। মাঝে মাঝে ঐ রকম কিছু মন্তব্য না করলে আসলে ব্লগ জম-জমাট হয় না। 😀
@ব্রাইট স্মাইল্,
স্যরি, এই মন্তব্যটিও কোন পজিটিভ মন্তব্য নয়। এমন মন্তব্য শুধু বিভেদ বাড়ায় ।
@স্বাধীন,
এমন মন্তব্য কি করে বিভেদ বাড়ায় দয়া করে একটু বিস্তারিত বলবেন কি? আমার তরফ থেকে বলতে পারি মন্তব্যটি পজিটিভ নেগেটিভ কোনটাই নয়, এটি খুব সাধারন একটা মতামত। আপনার যদি কারও প্রতি অনুরোধ থাকে সবার লেখায় মন্তব্য না করার জন্য তো অন্য কারও অনুরোধ থাকতে পারে মন্তব্য করার জন্য, এখানে বিভেদের গন্ধ কোথায় পেলেন বুঝতে পারলাম না।
@ব্রাইট স্মাইল্,
মন্তব্যটি যেহতু আপনার, এবং আমি বুঝতে ভুল করেছি, তাহলে আপনিই দয়া করে বিস্তারিত বলুন না, এই মন্তব্যের মাঝে দিয়ে কি বুঝিয়েছেন। বিপ্লব’দা মন্তব্য ছাড়া কেন ব্লগ জম-জমাট হয় না, একটু পরিষ্কার করবেন কি? আপনি আসলে কি বুঝাতে চেয়েছিলেন এই মন্তব্যে যেটা আমি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছি 😥 ।
@স্বাধীন,
“বিপ্লব পালের মন্তব্য ছাড়া ব্লগ জম-জমাট হয় না” আমার মন্তব্যের টোন নিশ্চয়ই এটা ছিলোনা। ওনার প্রসংগ এসেছে যে এই কারনে যে পার্টিকুলারলি ওনাকে আপনি সবার লেখায় মন্তব্য করতে নিষেধ করলেন বলে।
মন্তব্য যিনি করেন অনেক সময় ভাবটা সেখানে ক্লিয়ার নাও থাকতে পারে অথবা পাঠকগন সেটা বুঝতে ভুল করতে পারেন, সেখানে মন্তব্য ও পাল্টা মন্তব্য করার ফলেই অনেক আলোচনার অবতারনা হয় এবং সে আলোচনাগুলোও কম মুল্যবান নয়। কিন্তু গোড়াতেই কাউকে মন্তব্য করতে নিরুৎসাহি করলেতো আলোচনার স্কোপ কমে যায়। ব্লগের জম-জমাট বলতে আমি সেটাই বুঝাতে চাচ্ছিলাম। খুব জটিল কিছু নয়।
এই প্রসংগে আপনি অপার্থিব, ভবঘুরে তাঁঁদের মন্তব্যগুলি দেখতে পারেন, আবার ওনাদের প্রতি উত্তরে বিপ্লব পালের মন্তব্য দেখতে পারেন। ওঁনাদের আলোচনাগুলো আমার অন্ততঃপক্ষে ভালো লেগেছে। আলোচনা করলে বিভেদ বাড়ে জানা নেই। বিভেদ কথাটা এখানে অপ্রাসংগিক বলে মনে করি। আশা করি আপনাকে বুঝাতে পেরেছি।
@ব্রাইট স্মাইল্,
উনাকে আমি যে মন্তব্য করেছি সেটা বুঝে শুনেই করেছি, সেটা না হয় বিপ্লব’দা আর আমার মাঝেই না হয় থাকুক।
আপনি এখন যে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন আমি দুঃখিত সেটাকে গ্রহন করতে পারছি না। আমার কাছে মনে হয়েছে আপনি সেই টোনেই বলেছেন, কিন্তু এখন সেটাকে ঢাকার চেষ্টা করছেন। যদি আপনি আসলেই সেই টোনে না বলে থাকেন তবে আমি আমার কথা উঠিয়ে নিচ্ছি। এই বিষয়ে এখানেই আলাপ শেষ হোক তাহলে।
@স্বাধীন,
আমার ব্যাখ্যা আপনি গ্রহন করুন না করুন সেটা আপনার বিষয়।
ব্যাখ্যা না মানলে আপনার কথা উঠিয়ে নিবার কোন প্রয়োজন দেখিনা।
অবশ্যই আপনাদের মধ্যে থাকবে। আপনার মন্তব্যে অনধিকার প্রবেশ করা আমার বোধ হয় ভুল ছিল। ভুলের জন্য মাফ চেয়ে নিচ্ছি। ধন্যবাদ।
@স্বাধীন,
বিপ্লবের সাথে জনসংগঠন? একটু আগেই না শুনলাম – নাস্তিকের জীবনের কোন উদ্দেশ্যই নেই, তাহলে আর ঘটা করে সংগঠন করার উদ্দেশ্য আসে কোথা থেকে? 🙂 । একমাত্র বিপ্লবের পক্ষেই সম্ভব হাজারো আবোল তাবোল পরস্পরবিরোধী প্রলাপ আউড়িয়ে সবগুলোকেই আবার ‘বিজ্ঞান দিয়ে’ ডিফেণ্ড করার। 😀
@অভিজিৎ,
আপনি একটু ভাল করে আইপি দেখে নিশ্চিত হোন উনার একাউন্ট কি মাঝে মাঝে হ্যাক হয় কিনা 😀 ।
@অভিজিৎ, বিপ্লব পালের এই
উক্তিটি নিয়ে আমি একটি অনুর্ধ্ব ষোল ভাব সম্প্রসারণ প্রতিযোগীতার আয়োজন করবো বলে ঠিক করেছি। আর প্রতিযোগীতাটির নাম দিবো ‘যা বুঝো তাই লেখো।’ বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা শেষে ‘যেমন খুশী তেমন সাজো’ এর একটি সুন্দর বিকল্প হতে পারে এটি। 😀
@অভিজিৎ,
এই ত মুশকিল। আমি দুটো কথা বলেছি, যার পার্থক্য কেও বুঝলো না। একটা জীবনের পরম লক্ষ্য-দ্বিতীয়টা আপাত লক্ষ্য। আমি কিন্তু লিখেছি আপাত লক্ষ্যে আপত্তি নেই- কেও যদি বলে তার জীবনের পরম লক্ষ্য আছে এবং সেই লক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে সে তার রাজনৈতিক দর্শনের চর্চা করে-যা কমিনিউস্ট হিন্দুস্ট এবং ইসলামিস্টদের সবাই করে [ এবং অনেক নারীবাদির কাছে
নারীদের জন্যে ফাইটমাস্টার ( মতান্তরে টাইট মাস্টার) হওয়া জীবনের পরম লক্ষ্য ]-আমি শুধু এটাই বলতে চেয়েছি এই ধরনের এসার্টেভ জীবন দর্শন নাস্তিকতা বিরোধি একটি রাজনৈতিক পথ। নাস্তিকতা বলে আলাদা কিছু আমি বুঝি না-শুধু এটুকু বোঝার চেষ্টা করি যেটা আমি ভাবছি তা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ঠিক কি না।
এখন জীবনের যেহেতু পরম উদ্দেশ্য নেই-কেও নারীবাদি, কেও পুরুষবাদি-কেও ইসলামবাদি হলে সত্যই কি কিছু যায় আসে? নাস্তিকতার চরম যুক্তিতে কিছু যায় আসে না। এটি নাস্তিক দর্শনের ব্যার্থতা বলা যায়। আবার সেটিই সাফল্য যে ভুল কিছু কেও আমরা জীবন দর্শন বলে মানছি না।
তাহলে কি আমরা বলতে পারি, শুধু বিজ্ঞান দিয়েই আমাদের জীবন দর্শন তৈরী হতে পারে না? কারন বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে আমরা যা কিছু করি না কেন, শেষ আলাদা হতে পারে না। সবই এক বিন্দুতে শেষ হবে। তাহলে শুধু বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে একটি অবজেক্টিভ জীবন দর্শন হচ্ছে না। আমাদের বিজ্ঞানের বাইরে গিয়েই সংস্কৃতি থেকেই তুলে আনছি-যার মূলে আছে মানবিকতা। সুতরাং বিজ্ঞানের বাইরেও জীবন দর্শনের অস্তিত্বকে মানতে হচ্ছে। এটাই ছিল আমার পয়েন্ট-যেটা আমি বলি নি-কিন্ত দেখা গেল, কেও বিষয়টার গভীরে গেল না।
আর মনের দ্বন্দ থাকাটা সিন্থেসিসের জন্য জরুরী- যে মন সব কিছু নিশ্চিত ভাবে সব কিছু জেনে গেছে ভেবে বসে আছে-সেই মনের অগ্রগতি সম্ভব না।
আর জন সংঘটন অবশ্যই দরকার। কারন রাজনীতি এবং অর্থনীতির মধ্যে আমাদের সংস্কার মুক্ত বিজ্ঞান ভিত্তিক মনের প্রবেশ নিশ্চিত ভাবেই দরকার। এর কোন পরম কারন নেই । কিন্ত আপাত কারন আছে।
@বিপ্লব পাল,
আপনার বিষয়টা হয়ত সামান্য হলেও আমি ধরতে পেরেছি। নাস্তিক্যবাদীতা আমাদেরকে কোন রকম জীবনদর্শন গড়তে সাহায্য করে না বা নাস্তিক্যবাদীতা কোন বাদ ও হতে পারে না প্রকৃতপক্ষে। আসল বিষয় হলো – যা বিজ্ঞান কর্তৃক প্রমানিত নয় তা বিশ্বাস্য নয়, তাই এটাকে ঠিক নাস্তিক্যবাদ বলা যায় না। সমস্যা হলো -মানুষ একটা পরিবেশে বেড়ে ওঠার পর সে সেরকম পরিবেশেই স্বাচ্ছন্দ বোধ বেশী করে। যেমন বাংলাদেশের মানুষ চরম দারিদ্রসীমার মধ্যে বাস করেও দারুনভাবে সুখী জীবন যাপন করে যার একটা অন্যতম কারন হলো তারা যা পায় তাতেই সন্তুষ্ট থাকে। সেখানে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসও একটা বড় ভুমিকা পালন করে। এখন কোন ভাবে এসব লোককে যদি আপনি বিজ্ঞান মনস্ক করে গড়ে তোলেন তাহলে দেখা যাবে এরা যা পাবে তাতে আর সন্তুষ্ট থাকবে না। ফলে এরা হয়ে পড়বে দারুন অসুখী। পাশ্চাত্য দেশে মানুষ তাদের মৌলিক চাহিদার সবগুলোই সহজে পায়। আনন্দ উল্লাসের অন্যান্য উপাদানও তাদের কাছে সহজ লভ্য। তারা খুবই ব্যক্তিকেন্দ্রিক জীবন যাপন করে । বিষয়টা একটা সমাজে বাস করেও তারা এক একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত বাস করে যা তাদেরকে এক সময় দারুন রকম একাকীত্বে আক্রান্ত করে। সঙ্গ নেই কেউ, যে যার মতো ব্যস্ত, এমত অবস্থায় সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস থাকলে তা নিয়ে বেশ আনন্দে সময় কেটে যেত , সে বিশ্বাসে চিড় ধরায় সেটাও করা যাচ্ছে না । এর ফল হলো তাদেরকে আপাত বেশ সুখী মনে হলেও ভিতর থেকে তারা মোটেই সেইরকম সুখী নয়। আমি বেশ কয়বার ইউরোপে গিয়ে ইউরোপিয়ান ফ্যামিলিতে বেশ কিছুদিন তাদের সাথে কাটিয়ে খুব কাছ থেকে বিষয়টা পর্যবেক্ষন করেছি। তাদের থেকে আমি নিজেকে অনেক সুখী মনে করেছি সব সময় আর তারা এর কারনও জিজ্ঞেস করেছে। আমি অকপটে সব বলেছি যে আমাদের ফ্যামিলি বন্ডেজ আমাদের সুখী করার এক বিরাট দাওয়াই। আরও বলেছি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস ও ধর্মচর্চাও একটা ভাল ভুমিকা পালন করে হোক সেটা অন্ধ বিশ্বাস।এখন সমস্যা হলো বিজ্ঞান মনস্ক হওয়ার পর মানসিক সুখ পাওয়ার রাস্তাটা এখনও বিজ্ঞানী বা দার্শনিকরা দেখাতে পারেনি। সেকারনেই কিন্তু আমরা দেখি পাশ্চাত্যে মাঝে মাঝে কেউ কেউ ঘটা করে ইসলাম বা হিন্দু বা বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হয় শুধুমাত্র মানসিক শান্তি পাওয়ার আশায়। তাই সময় এসেছে নতুন এক ধরনের জীবন দর্শন বা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা যাতে মানুষ একাকীত্ব বোধ করবে না। এটা করতে না পারলে এমন এক দিন আসবে যখন দেখা যাবে মানুষ আবার দলে দলে ধর্মান্ধ হতে শুরু করেছে। কারন সব কিছুর আগে মানুষ নিজের মানসিক শান্তিই খুজবে, নাস্তিক্যবাদ বা বিজ্ঞানবাদ নয়।
@ভবঘুরে,
এটা গবেষনায় প্রমানিত আস্তিকরা বেশী খুশী। এবং তার কারন ও এই যে তারা জীবনের একটা পরম উদ্দেশ্য মেনে চলে-সেটা যতই জলবৎ হোক না কেন।
আমি এই ব্যাপারটা নিয়ে বহুদিন আগে থেকেই লিখছি-যে নাস্তিকতা আদৌ কোন জীবন দর্শন না-সেরকম কিছু হতে পারে না। আবার বিজ্ঞান ভিত্তিক জীবন দর্শন কিছুটা আছে ত বটেই-তবে সেটাকেও পরম বলা যায় না।
@অভিজিৎ,
একটু ব্যাখ্যা দরকার। এটা বিপ্লবকে ভুল বোঝা মনে হচ্ছে আমার। দুটো ব্যাপার এখানে বিবেচ্য। কোন মানুষকে প্রগতিশীল বা প্রতিক্রিয়াশীল বলাটা একটা ব্যক্তিগত বা আত্মনিষ্ঠ বিচার । সাধারণভাবে প্রগতিশীল বা প্রতিক্রিয়াশীল ধারণা/মত/চিন্তা কি তা আমাদের অধিকাংশরাই জানি মনে করলেও সেখানেও আত্মনিষ্ঠতা কাজ করে। ফলে কার মনে আসলে কোন ধারণা/মত/চিন্তা কাজ করছে তা সন্দেহাতীতভাবে নিরূপণ করা ট্রিকি ব্যাপার । কারণ ধারণা/মত/চিন্তা ব্যক্ত করার ভাষার দুর্বলতা, অসম্পূর্ণতার কারণে অথবা ভাষা নির্ভুল বা সঠিক হলেও বিচারকের বিচারের দুর্বলতার কারণে। কাজেই আমি কাউকে প্রগতিশীল বা প্রতিক্রিয়াশীল বলে রায় দেয়ার আগে অনেক ভাবনা চিন্তা করব। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল কেউ যদি মত দেয় প্রকৃতিতে এরকমই ঘটে বা দেখা যায়, বা এটাই পারিসাংখ্যিকভাবে বেশি সত্য সেটা বলার অর্থ এটা নয় যে বক্তা নিজেই সেরকমটি হওয়া বা ঘটাটাই উচিৎ বলে মত দিচ্ছে। এটাই তো Naturalistic Fallacy. আমার মনে হয় না বিপ্লব নিজে কোন প্রগতিবিরোধী কাজ বা চিন্তায় বিশ্বাসী বলে প্রমাণ করেছে। তার তথ্য পরিবেশনে ভুল হতে পারে। সেটা যাচাইয়ের ব্যাপার। কিন্তু যাচাই করার আগেই শুধু তা শুনতে অপ্রীতিকর বলেই উড়িয়ে দেয়াটা বিজ্ঞানসুলভ হবে না। বিবর্তনের সত্য যে সুখকর হবেই তা নয়। সত্য অনেক সময় নিষ্ঠুর হয়।
আমার মনে হয়না বিপ্লব বলেছে যে “নাস্তিকের জীবনের কোন উদ্দেশ্যই নেই”। তার মন্তব্যে আমি দেখছি “চূরান্ত নাস্তিকতাই জীবনের উদ্দেশ্য থাকতে পারে না” আর “সুতরাং নাস্তিকতা মানতে গেলে জীবনের একটি উদ্দেশ্য নিয়ে থাকতেই পার-কিন্ত সেটিকে পরম উদ্দেশ্য বলে চালনা করা যায় না।” এই দুটো লাইন আছে এই প্রসঙ্গে। প্রথমটি ব্যাকরণগতভাবে ভুল। হয়ত বলতে চেয়েছিল “চূরান্ত নাস্তিকতাই জীবনের উদ্দেশ্য হতে পারে না” (থাকতে->হতে) । তবুও ঐ দুটোর কোনটারই অর্থই “নাস্তিকের জীবনের কোন উদ্দেশ্যই নেই” বোঝায় না।
পরম উদ্দেশ্য নেই বলেও অনেক কিছু করাটা (বা করার তাগিদ অনুভব করাটা) স্ববিরোধিতামূলক নয়। পরম উদ্দেশ্য বলতে মানুষের মনের বাইরের কোন বস্তুগত উদ্দেশ্য বোঝান হচ্ছে, যা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং মানুষের মস্তিষ্কে সৃষ্ট নয়। যেহেতু আমাদের জানা মতে বিবর্তন বা পদার্থবিজ্ঞান কোন বিশেষ মানুষের জন্য তার জীবনের কোন উদ্দেশ্য প্রেস্ক্রাইব করে দেয়নি তাই এটা বলা হয় যে মানুষের জীবনের পরম কোন উদ্দেশ্য নেই। কিন্তু প্রত্যেক মানুষের মনের ভেতর তার নিজস্ব একটা “জীবনের উদ্দ্যেশ্য” এর অনুভূতি থাকতে পারে (বা আছে)। সেটা অন্যান্য অনুভূতির মত (যেমন স্বাধীন ইচ্ছা) বিবর্তনের এক উৎপাদ্য। এটা একটা ইল্যুশন হলেও এর উদ্বর্তন মূল্য আছে।
কাজেই “এগুলো করে জীবনে আসলে কি হবে, আমরা তো মরে ভূত হয়ে যাব, সামান্য কিছুদিনের জন্য এই পৃথিবীতে আমরা এসেছি। কোটি কোটি মানুষের মধ্যে আমি একজন, বা কোটি কোটি তারার মধ্যে একটার একটি গ্রহে আমরা মাত্র।” এধরণের সত্য কথা বলার পরেও নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকাটা সম্ভব নয়, বিবর্তনের তাগিদেই, প্রবৃত্তিগত কারণে।
@অপার্থিব, আমার মতে বিপ্লবের সমস্যা অন্য জায়গায়, সে হুট করে না ভেবে অত্যন্ত ডিটারমিনিস্টিকভাবে মন্তব্য করে বসে, তারপর চ্যালেঞ্জেড হলে ধীরে ধীরে তার কথা পাল্টাতে থাকে। নীচের কথাগুলো খেয়াল করুন, আমি তাকে বলেছিলাম আমার আপত্তি ‘একমাত্র’ শব্দটাতে।
তার উত্তর দিতে গিয়ে প্রথমে যে পেপারটা দেওয়া হল তা কিন্তু তার বিপক্ষেই যায়, তারপর আবার নতুন পেপারের রেফারেন্স দিয়ে বলা হল ‘কমন অব্জেক্টিভ’ খোঁজার কথা। আরে কি মুশকিল, সেটাই তো বলছিলাম প্রথম থেকে, সন্তানের জন্মের পর মেয়েদের জীবনে সন্তানের দেখভালটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও ‘একমাত্র’ লক্ষ্য নয়। তার প্রথম মন্তব্যের সাথে পরে মন্তব্যগুলোর বিবর্তন খেয়াল করুন…।
আবার দেখুন বিপ্লব প্রথমে বলছে, নাস্তিকেরা নাকি জীবনের ‘অর্থ’ খুঁজতে পারে না…
এখানে কিন্তু ‘পরম’ কথাটা নেই, ‘উদ্দেশ্য’ কথাটাও নেই, সেটা পরে এসেছে। ‘উদ্দেশ্য’ আর ‘অর্থ’ এর মধ্যে কিন্তু পার্থক্য আছে। হুট করে বলা কথাগুলো শুধু ফালতু বিতর্কেরই সৃষ্টি করে না, মন্তব্যকারীর ক্রেডিবিলিটি নিয়েও প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করে।
@বন্যা আহমেদ,
হ্যা, আমিও মনে করি “একমাত্র” উদ্দেশ্য বলাটা ভুল। প্রধান উদ্দেশ্য বলাটা ঠিক হত। আর সেটা তো শুধু মায়েদের বেলায় কেন, বাবাদের বেলায়ও সমভাবে সত্য। সেটাই তো বিবর্তনের তাগিদ। তবে এটাও ভুলে গেলে চলবে না যে বিবর্তনীয় সত্য পারিসাংখ্যিকভাবে সত্য। ব্যতিক্রম থাকবেই। অনেক ছেলে ও মেয়ে চিরকুমার থাকাটা বেছে নেয়। কিছু মা ও বাবা আছে তারা সন্তানদের মঙ্গলের চিন্তা বিন্দুমাত্র না করে নিজেদের সুখের জন্য ছুটে বেড়ায়। এর চরম উদাহরণ হল পরকীয়া প্রেমকে বাঁচাতে মা নিজের সন্তানদের হত্যা পর্যন্ত করে, যেটার উদাহরণ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে উভয় দেশেই আছে। আর বিপ্লবের “এতদিন ত জানতাম জীবনের অর্থ খোঁজে আস্তিকরা” কথাটায় হয়ত বিপ্লব বলতে চেয়েছিল “পরম অর্থ”। তাহলে কথাটা সত্য । নাস্তিকেরা পরম অর্থ না খুঁজে নিজের পছন্দমত অর্থ খোঁজে (আসলে তৈরী করে)। এই উদাহরণ থেকেই বুঝা যাচ্ছে নিজের মত/ধারণা/ কে সুষ্ঠুভাবে ব্যক্ত করতে না পারলে কেমন বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়। আর বিভ্রাট সৃষ্টি হলে যা করা দরকার বিপ্লব সেটা ঠিকমত করছেনা বলে আমার মত।
@অপার্থিব,
সব কিছু যদি বাদও দেই – প্রথম মন্তব্যেই ‘ক্যাবলামো’, ‘ছ্যাবলামো’, ‘হেজানো’ ধরণের বিদ্ঘুটে শব্দ নিয়ে এসে আক্রামণ শানানোটা আপত্তিকর। আমার মনে হয় যারা বিপ্লবের সাথে দ্বিমত করেছেন বেশিরভাগই তার এই ধরণের আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায়। আসলে পুরোন ব্লগাররা আরেকটু সহনশীল না হলে নতুন লেখকদের জন্য মুক্তমনা কোন আলাদা আবেদন তৈরি করবে না, ইন্টারনেটের হাজারো গালাগালিমার্কা ব্লগ সাইটে পরিণত হবে। আমাদের নিজেদেরও নজর দিতে হবে নিজেদের আচরণে। এ ব্যাপারটি মাথায় রাখা উচিৎ আমাদের সবারই।
যা হোক ব্যাপারটির নিষ্পত্তি কামনা করছি।
@অভিজিৎ,
সেটাই, আমিও কিন্তু উনার ভাষার ব্যাপারেই মূলত আপত্তি জানিয়েছিলাম। একই বক্তব্য ভিন্ন ভাবেও বলা যায়। আর উনার মত পুরাতন ব্লগারের কাছে থেকে সেটা আরো বেশি প্রত্যাশা করি। দ্বিমত থাকতেই পারে যে কোন বিষয়ে। কিন্তু সেই দ্বিমত যদি ভদ্র ভাষায় উপস্থাপন না করতে পারি তবে আমার মতে তার মন্তব্যই করা উচিত নয়।
@অভিজিৎ,
সেকি মুক্তমনার অভিধানে ন্যাকামো, হ্যাজানো লিঙ্গো গুলি থাকবে না? এগুলি অশ্লীল শব্দের পর্যায়ভুক্ত না-ভাষা বিজ্ঞানে এদেরকে লিঙ্গো বলে জানতাম।
আর গালাগাল দিলেই সব কিছু গেল এমন ভাবার কারন নেই। বিষয়টা আসল। আমাদের ভারতের দিকে একটা খুব পিউরিটান ফোরাম আছে ইন্ডিয়ান পলিটিক্স বলে আর একটি খুবই খিস্তিবাজ ফোরাম আছে পলিটিক্স ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল বলে। শেষেরটি অনেক বেশী জনপ্রিয় এবং আলোচনার মান ও অনেক গভীরে। শুধু খিস্তি দিলে ব্লগ খারাপ হয় [ যদিও আমার শব্দগুলি খিস্তি না শব্দ বিজ্ঞানে]
এটা ভাবা ভুল।
যুক্তির ভাণ্ডার কি খালি হয়ে গেছে নাকি বিপ্লব, যে গালাগালির ভাণ্ডার খুলে বসতে হবে?
লেখা ভালো না লাগলে কি সুন্দর করে বলা যায়না? :no: :no: ।
@বিপ্লব পাল,
সন্তানের খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদির নিরাপত্তা যদি মেয়েদের দিতে হয় তো ছেলেদের বাবা হবার পর করার কিছু আর বাকী থাকে কি?
@ব্রাইট স্মাইল্,
এটা হাল্কা বিষয় না। দেখা গেছে, মায়েরা যখন আবার চাকরীতে ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন সেই সিদ্ধান্তের পেছনে সব থেকে বড় কারন থাকে সন্তানের উন্নতি-সেটা অর্থনৈতিক কারনেই হোক বা দুর্দশার কারনেই হোক। ডীভোর্সের সময় ও দেখা যায়, অনেক মেয়েই প্রথমে সন্তানের কথা চিন্তা করে এবং চিন্তা করে, অনেক সময় স্বামীর পরকীয়া বা অনেক দোষ মেনে নেয়।
এখন আমি বলতেই পারি-এগুলো আমাদের সংস্কৃতির নেগেটিভ দিক। কিন্ত সেক্ষেত্রে আবার বিবর্তনকেই অস্বীকার করা হয়- প্রথম সংস্কৃতিটি যদি দ্বিতীয়টি অপেক্ষা শক্তিশালী সন্তানের ( যার শিক্ষা, স্বাস্থ্য বা খাদ্য) উৎপাদন ( মানুষ করা) জন্ম দেয় সেক্ষেত্রে প্রথমটিই টিকবে।
তবে এসব অর্থহীন আলোচনা। কারন ভবিষ্যতে উন্নত প্রযুক্তির জন্যে সংস্কৃতির পার্থক্যে এখন যে রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেসে পার্থক্য হয়-তা থাকবে না।
সেক্ষেত্রে কালচারাল সিলেকশনের সমস্যাও থাকবে না-এখন যেটা আছে-ফলে হেডোনিজম চলবে। চিন্তা নেই। আর একশো বছর।
@বিপ্লব পাল,
সন্তানের উন্নতি কামনায় মা-বাবা দুজনেই অর্থ উপার্জন করেন কেউ সেটা অস্বীকার করছেনা। কথা সেটা নয়, কথা হচ্ছে একজন পুরুষের মতো একজন মেয়েও তার প্রফেশনে নিজের কর্ম ক্ষমতাকে কাজে লাগাবার উদ্দেশ্যে বা আনন্দেই কাজ করে যায়, ক্যারিয়ারে নিজের জ্ঞান ও মেধা প্রতিষ্ঠিত করার ব্যাপারে তারা পুরুষের মতোই সিরিয়াস। স্রেফ অর্থ উপার্জনের জন্য কর্ম ক্ষেত্রে যোগ দেয় বা সেটাই একমাত্র ও প্রধানতম কারন তা ঠিক নয়।
:clap2: বাহ, বাহ বেশ, সাত জনমের পুন্য না থাকলে কি স্বামী হওয়া যায়?
@ব্রাইট স্মাইল্,
না পড়েই লিখে ফেললে-কেও বলে নি স্বামীর পরকীয়া মেনে নেওয়াটা ঠিক।
@বিপ্লব পাল,
এই কথা তো বলিনি। 🙂
আমি পড়তে গিয়ে জটিলতার তেমন আভাস পাইনি, আপনার চিন্তাভাবনাও যথেষ্ট পরিষ্কার বলে মনে হল। সত্যিকারের মুক্তমনা একটা লেখা, অনেক ভাল লাগল পড়ে। এমন অনন্য নারীরাই আনবে নারীমুক্তি- এমনই আমার বিশ্বাস। এগিয়ে যান। স্বপ্নভুক আপনি একা নন, নিজেকে একাকিত্বের ভারাক্রান্ত করে তুলবেন না। যে স্বপ্ন আপনি ব্যক্ত করেছেন তাতে উজ্জীবিত আছি আমরা অনেকেই, আমরা যতই তা প্রকাশ ও প্রচার করব ততই তা মহামারীর মত ছড়িয়ে পড়বে। আর সহস্রের স্বপ্ন বাস্তবায়িত কি একদিন হবে না? তবে একটা কথা (এবং আপনি সম্ভবত এটাই বলতে চেয়েছেন- নারীমুক্তি আসবে মানবতার প্রকৃত মুক্তি ঘটলেই। প্রকৃত জ্ঞান যখন সাধারণ হয়ে উঠবে তখনই সম্ভব হবে সেই মুক্তি।
আপনার লেখার জন্য আবারও ভাল লাগা জানাই।
চোখ দিয়ে গিলে খাবার ব্যাপারে আমার একটু ভিন্ন অভিজ্ঞতা আছে। একবার আমি মামা বাড়ি যাচ্ছিলাম, তখন চৈত্রের ভর দুপুর। জনশূন্য প্রান্তরে একদম একা হেটে চলেছি, দেখলাম দুই বেদের মেয়ে উলটা দিকে থেকে আসছে, মাথায় সাপের ঝুড়ি। হেলেদুলে এগিয়ে আসছিল তারা। দুজনেই সরাসরি আমার প্যান্টের জিপার সোজা তাকিয়ে একে অপরকে ধাক্কা দিচ্ছিল। আমি পরীক্ষা করে দেখলাম জিপার ঠিক মতই লাগান আছে। তারা আমার চাইতে বয়সে বড় ছিল। তারা আমাকে অতিক্রম করে চলে গেলে,আমার সেই বয়সে (২০/২১ হবে) বেশ ভাল লেগেছিল। এখনো ভাবলে খারাপ লাগে না। তাদেরকে আমার স্বাভাবিক মানুষ মনে হয়েছিল। তারা ইচ্ছাকে গোপন করেনি আবার মাত্রাও ছারায়নি। এই মাত্রা জ্ঞানেরই প্রচন্ড অভাব আছে আমাদের। এই অভাবের কারনেই শ্লীল ব্যাপারগুলোকে অশলী্ল করে ফেলা হয় প্রায়ই।
@আতিক রাঢ়ী,
চমৎকার বিশ্লেষণ। :yes:
হিজাব-বোরখা পরা পর্দানশীল নারীদের মাঝে এই প্রবণতা আরো বেশী।
@আকাশ মালিক,
এদেরকে আমার চলমান বস্তা ছাড়া কিছুই মনে হয় না। ফলে তাদের চোখ কোথায় তাক করা থাকে খেয়াল করা হয়না। মনেহয় নিজেকে লুকানোর পরে তারা স্বাভাবিক আচরন করতে পারে। আমাদের সমাজে স্বাভাবিকতার প্রকাশ মেয়েদের জন্য নয়। এটা একটা দুঃখজনক সত্য।
আর বানান- এই জনমে মনে হয় ঠিক হবার নয়।
ছুঁচোর গায়ের গন্ধ কি যায় গোলাপ জল দিলে ? 🙁 ( সৌজন্যে লালন)
@আতিক রাঢ়ী,
আপনেরে এডাম টিজিং করল আর এইটা আবার আপনার ভাল লাগলো। 🙂 :-/
@সৈকত চৌধুরী,
ভাল লাগলো কি ?পরিস্কার করে বলেছি, এখনো ভাল লাগে। মনেহয়, আপনার চোখ এড়িয়ে গেছে। 🙁
@আতিক রাঢ়ী, অল্প স্বল্প অ্যাডাম টিজিং হয়ত সুখকর লেগেছে, তয়, এইটা ইভ টিজিং এর মত্রায় আসলে হয়ত আমরা আলখাল্লা আর হিজাব পড়া পুরুষও দেখতে পাবো। :-/
আমিও কোন দার্শনিকতা দেখলাম না লেখাটায়, কথাগুলো আমার কাছেও বেশ সোজা সাপ্টাই মনে হলো।
সেই সাথে মূগ্ধ হয়েছি আপনার লেখার সাবলিলতায়, চিন্তার পরিপক্কতায়।
আমাদের জন্য আর লিখুন।
শুভেচ্ছা রইলো।
“উম্মে মুসলিমা” নামক এক লেখিকার লেখা দিয়েই নারীবাদি দর্শন সম্পর্কে প্রথম জানতে পারি। দুঃখজনক হলেও সত্য, এরপর আর কোন ভাল নারীবাদি লেখা চোখে পড়েনি(হুমায়ুন আজাদের “নারী”কে গোনায় ধরছি না, একজন নারীবাদির লেখা সবসময়ই পুরুষের নারীবাদি রচনার চেয়ে শক্তিশালী হয়)। পত্রিকার কলামে যেসব নারীবাদিদের দেখতে পাই, তাদের সবাইকেই আমার খুব কমফরমিস্ট মনে হয়েছে। নারীমুক্তি মানবমুক্তিরই একটি অংশ, আর মানবমুক্তি রেডিক্যাল আন্দোলন ছাড়া অর্জন করা সম্ভব না বলেই আমার বিশ্বাস। বাংলাদেশের পত্রিকাগুলোতে একজন নারী যখন একটি কনফরমিস্ট কলাম লিখে, তখন সে গোটা নারীসমাজকে একশো বছর পিছিয়ে দেয়।
আপনার লেখাটা খুবই ভাল লাগল, প্রিয় পোষ্ট রাখার ব্যবস্থা থাকলে এই পোষ্ট অবশ্যই প্রিয়তে যেত। আমি তো ভাবতাম যন্ত্রপ্রকৌশলীরা যান্ত্রিক হয়, আপনার কাব্যিক লেখাটি পড়ে আলোকিত হলাম 😛
@পৃথিবী,
নারীবাদী হওয়ার আগে হওয়া দরকার মানবতাবাদী। আমি আসলে নারী(মানুষ) নারীবাদী বা পুরুষ(মানুষ) নারীবাদীদের চেয়ে আতঙ্কে থাকি নারী(নারী)-নারীবাদী এবং পুরুষ(পুরুষ)- নারীবাদীদের নিয়ে। না জানে কোন অপচিন্তা লুকিয়ে আছে তাদের মাঝে।
নারীকে মুক্ত চিন্তা তো করতে দেই নি আমরা, মানে সমাজ! মানসিক বন্দীত্ব থেকে তো সে মুক্ত নয়। তাই সে তাই বলে, যা সমাজ তাকে দিয়ে বলাতে চায়। এইটাই নিয়ন্ত্রনের সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং নিরাপদ পথ। আইনের আশ্রয় নেব, কিন্তু আইন যদি অন্যায়ের পক্ষে কথা বলে, তাহলে কার আশ্রয় নেব? নারী যদি, নারী বন্দীত্বের পথ সুগম করে দেয়, তাহলে তো আর কথাই নেই। পরে বলা যাবে, নারী চেয়েছে মুক্তি নয়, বন্দীত্ব!
ঐটেই তো হতে পারলাম না।
নিজেদের নারী বা পুরুষ হিসেবে না দেখে আমাদের উচিৎ নিজেদের স্রেফ মানবীয় ব্যক্তি হিসেবে দেখা। তাতে করে আমাদের সফলতা কিংবা ব্যর্থতাকে লিঙ্গ নির্ভর হয়ে থাকতে হবে না।
@সংশপ্তক, লিঙ্গ নির্ভরতার(প্রাধান্যের) বোধ জন্মেছে প্রাধান্য বিস্তারের ইচ্ছা থেকে। আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে, যেকালে মানুষ ছিল অরণ্যবাসী, সেকালে কতটা কেমন ছিলো এই ব্যাপারটা। বই পড়ে যা জানি, তাতে তো আসলে ঝাপসা ধারণা পাই। ঠিক কল্পনা করতে পারিনা প্রকৃত রূপটা।
@নীল রোদ্দুর,
এর উত্তর জানতে হলে পড়ুন আমাদের অতি পরিচিত চার্লস ডারউইনের The Descent of Man and Selection in Relation to Sex [ 1871] বইটা পড়ার পর আপনি যা জানতে চেয়েছেন তা জানার পাশাপাশি মনে আরও কিছু ভাবনার উদ্রেক হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
@সংশপ্তক, ডারউইনের মূল বই গুলো এক এক করে পড়ে ফেলবো বলে সংগ্রহে নিয়েছি দু মাস আগে। এখনও সময় পাইনি। এই বইটাও আছে লিস্টে। পড়ব অবশ্যই।
:yes:
আপনার লেখার হাত সত্যই ভাল। আপনি যে যন্ত্রকৌশলী তাই তো জানতাম না। আপনি তো দেখছি আমার লাইনেরই।
মুক্তমনায় মেয়েরা যে কোমল সাহিত্য আর প্রেম প্রেম কবিতা নিয়েই পড়ে থাকেনা, আপনার শক্তিশালী লেখনী তারই প্রমাণ। লিখে যান আমাদের জন্য এরকমভাবে সবসময়…
আর ঢাক ঢাক গুড় গুড় হবে বোধ হয়, গূঢ় না। ‘গূঢ়’ শব্দিটির অর্থ কিন্তু আলাদা। অবশ্য আপনি যদি প্রবচন হিসেবে ঢাক ঢাক গুড় গুড় না ব্যবহার করে থাকেন তো আলাদা কথা।
@অভিজিৎ, আমি আসলে বলতে চেয়েছিলাম কিছুটা রহস্যমিশ্রিত গোপনীয়তার কথা। এই গোপনীয়তা আমরা শিখি বুঝে উঠার আগ থেকেই। প্রথম শেখাটা কাপড় পড়া থেকে। কিন্তু আমাদের সমাজ কাপড় পরিয়েই ক্ষান্ত হয় না। আমার কাকু আমাকে ক্লাস এইটে পড়ার সময় বাহারী স্কার্ফ এনে দিয়েছিল, মাথায় পড়ার জন্য। ঐটা পড়ে কি লাভ হবে, কি উদ্দেশ্যে এটা পড়ানো হয়, তাই তখনো বুঝতে পারিনি। একটা অতিরিক্ত জিনিস, যেটা পড়লে গরমে হাস ফাস লাগে সেটা পড়তে হবে ভেবেই খারাপ লাগছিল। সেই বস্ত্র খন্ড মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে অনেক দিন সময় লাগছিল আমার। ছোট ছিলাম, শাসনে ছিলাম, পারিবারিক ঐতিহ্য নামে কিসের যেনো একটা অবাস্তব চাপ ছিল। অনেক শারিরীক ব্যাপার ছিল, যা প্রাকৃতিক, আমাকে লজ্জায় মনে হয় কেউ শেখানোর জানানোর দরকার মনে করেনি। সবাই জানে, অথচ কেমন গোপন কথা! সেই রহস্য মিশ্রিত গোপনীয়তার কথা বলতে চেয়েছি।
আপনি যে মেক্যানিকাল এর সে জেনেছি সপ্তাহ দুই আগে। আমিও জানতাম না। 🙂
আমি কিন্তু সব লিখি, যা মনে চাই।
দারুন লিখা ভাললাগল চালয়ি েযান ভালবাসা রইল
দারুন লেখা লেখাটা পড়ে ভাল লাগল। নারীরা পুরুষের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে উঠে আসুক তা আমরা মানবতাবাদী পুরুষরা চাই। নারীরা যদি তাদের অধিকার সম্পর্কে আপনার মত সচেতন হয় তা হলে আমার মতো মানবতাবাদী পুরুষরা সব সময় আপনাদের সঙ্গে থাকবে এবং নারীরাও পুরুষের পাশাপাশি উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছুক তা সর্বাত্মক ভাবে কামনা করব। “একটি নারী শরীর অবশ্যই কোন পুরুষ শরীরের চেয়ে উন্নত না মহত কিছু নয়।” লাইনটা পড়ে ভাল লাগল না কারণ আপনারা যদি নিজেরাই নিজেদের হেয় করেন তা হলে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের পশুরা তো আরো সুযোগ পাবেন।
@সুমিত দেবনাথ, হেয় কি করেছি? আমি কিন্তু বলিনি অনুন্নত! অন্তত আমি যদি তাই মনে করতাম, তাহলে আমি গর্বিত হতাম না। উন্নত, সে দাবী না করা মানেই হেয় করা নয়।
একটু খেয়াল করে দেখুন, যদি লিখতাম, “একটি নারী শরীর কখনোই একটি পুরুষ শরীরের চেয়ে অনুন্নত না নিকৃষ্ট কিছু নয়” আর “একটি নারী শরীর কখনোই একটি পুরুষ শরীরের চেয়ে উন্নত না মহৎ কিছু নয়”, কথা দুটোর মানে আমার কাছে একই। কিন্তু প্রথমটিতে আছে, অনুন্নত, সেটাকে অস্বীকার করা। আর দ্বীতিয়টাতে আছে শ্রেষ্ঠত্ব না দাবী করা। আমার কাছে শ্রেষ্ঠত্ব দাবী না করাটাই ভালো লেগেছিল বলে এই ভাবে লিখেছি।
আসলে কথাটা মানার ব্যাপার না, তারচেয়ে বলতে পারেন, কথাটা না বলাই হয়ত যৌক্তিক ছিল। কিন্তু আমার মনে হয়, বিনীত আচরনকে দূর্বলতা ভাবার অভ্যাসটাও আমরা পুরুষশাষিত সমাজের সংস্কৃতি থেকেই পেয়েছি। বিনয় মানে যে দূর্বলতা নয়, সেও আমাদের আত্মস্থ করতে হবে। 🙂
@নীল রোদ্দুর, ধন্যবাদ আমার ভুল ধরে দেওয়ার জন্য। :yes:
@নীল রোদ্দুর,
সুন্দর ব্যাখ্যা দিলেন। স্বল্প শব্দচয়নে এর চাইতে ভাল ব্যাখ্যা আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না। ধন্যবাদ।
মোক্ষম বলেছেন। বিনয় বা ভদ্রতা মানেই যে দূর্বলতা নয় একথাটাই ছদ্ম নারীবাদীরা বোঝেন না। তখন গিয়ে তাদের বক্তব্যটা স্বশিক্ষা বা উন্নয়নপণ্থী থাকে না, খোঁচাপণ্থী হয়ে যায়।
যে যাই হোক, আপনার লেখাটা পড়ে অন্যরকম ভাল লাগলো। শুভেচ্ছা রইলো আপনার দৃপ্ত যাত্রায়। :rose2:
মানতে পারলাম না। এখানে উন্নত বা অনুন্নত কথাই আসছে কেন। যে যে যার যার দিক থেকে ইউনিক। তাই না?
আপনার লেখাটা চমৎকার লাগল। অসাধারন আপনার লেখনী।
সুন্দর লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
@সাইফুল ইসলাম,
ইউনিক বোঝাতেই বলেছি, তুলনা চলে না। কিন্তু তবুও তুলনা হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিপরীত দিক থেকেই। ক্ষীন, কোমল এই ব্যাপারটা তখন আর সুন্দর থাকে না, আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হয়ে যায়। 🙁
@নীল রোদ্দুর,
পাঠক ,আর
সত্যি এই সময় আপনার লেখা যে কাব্য না হয়ে একটা নীরব প্রতিবাদি লেখা হয়ে উঠেছে তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
নারীবাদ ট্যাগের আড়ালে ছদ্মনারীবাদী আর অহেতুক পুরুষবিদ্বেষী হালকা ধরনের একপেশে লেখা পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। এই লেখাটিতে এসে সেই ক্লান্তি ঝরে গিয়ে সতেজতা ফিরে পেলাম। 🙂
দুর্দান্ত!! মুগ্ধতার আবেশ বোঝানোর ভাষা নেই আমার। আপনার এই সাহসী ভূমিকা অনাগত দিনেও অক্ষুন্ন থাকুক, সেই কামনা রইলো।
আমাদের সমাজে নারী তার শরীর নিয়ে কী রকম বিড়ম্বনায় থাকে সে বিষয়ে স্নিগ্ধার একটা দারুণ আর্টিকেল আছে My body my shame নামে। পড়েছেন কি না জানি না। না পড়ে থাকলে, পড়ে দেখতে পারেন।
@ফরিদ আহমেদ, আমি তো নতুন এখানে, সবটা পড়ে কুলিয়ে উঠতে পারিনি। স্নিগ্ধা আপুর লেখাটা পড়ব। ধন্যবাদ!
আমি তো ভয়েই ছিলাম, কি না কি লিখে ফেললাম। আসলে এই লেখার কথা মাথায় ছিল না। লিখতে বসেছিলাম আজকের দিনলিপি। আপনার ক্লান্তি যে ঝরাতে পেরেছি, জেনে খুশি লাগছে। একটা গোপন কথা বলি, আমিও ছদ্মনারীবাদ আর পুরুষবিদ্বেষে ক্লান্ত। :-X
@ফরিদ আহমেদ, স্নিগ্ধা আপুর লেখাটা পড়লাম, আসলে এই লেখা না পড়লেও এই আমাদের সাংস্কৃতিক চিত্র! এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি, এমন মেয়ে বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া কষ্ট। চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে নারীদের রোজই, কতটা কষ্টকর তা, সে জানি। এই সন্ত্রাসটাই অনেক নারীকে বাধ্য করে বোরকা পড়তে, গড়ে তুলছে বোরকা বর্মের সংস্কৃতি! নিরাপত্তার অভাবে বোরকা পড়া তাদেরকে শান্তনা দেয়, অন্তত আমাকে এখন কেউ চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে না। আমি অবাক হয়ে মাঝে মাঝে ভাবি, পুরুষরা যদি বুঝত, তাদের পাশবিকতার ভয়েই নারীরা বোরকা পড়ছে, তাহলে তো তাদের নিজেদের নিয়ে লজ্জা পাওয়া উচিত। কৈ তা তো পাচ্ছে না! পাশবিকতাও কি তাদের কাছে হয়ে গেছে একধরনের অহংকার? :-Y
লেখাটি ভাল লাগলো খুব। ভাল লাগাটুকু জানিয়ে গেলাম।
@স্বাধীন, ধন্যবাদ। 🙂
অদ্ভুত ভালো লাগলো। কী বলবো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। একটু ধাতস্থ হয়ে নিই। পরে কমেন্ট করব।
তবে প্রথমেই আপনার জন্য শুভকামনা। :rose2:
@নিটোল, ধন্যবাদ আপনাকেও। কমেন্টের অপেক্ষায় আছি। 🙂
@ নীল রোদ্দুর, প্রথমে ভেবেছিলাম দুই একটা জায়গায় দ্বিমত করবো আপনার লেখার সাথে, তবে পুরোটা পড়ে মনে হল ভালো লাগাটা জানিয়ে যাই, তাহলেই হবে, কারণ আপনার লেখার সাথে মোটামুটিভাবে একমত। আপনার এই কথাটার সাথে সবচেয়ে বেশী একমত, এই পার্থক্যটাই অনেকে করতে পারেন না।
আমার মতে সমাজের তথাকথিত ‘নারী’ হওয়ার যোগ্যতা আপনার না থাকলেও একজন সম্পূর্ণ মানুষ ( এবং সেটা নারী হলে আমার কোন অসুবিধা নেই) হওয়ার যোগ্যতা আছে আপনার, আমার এবং সব মেয়ের। সে হিসেবে একজন ছেলের যেমন ‘ছেলে’ হতে অসুবিধা নেই, সেরকমই আমারও একজন ‘মেয়ে’ বা ‘নারী’ হতে কোন অসুবিধা নেই।
আপনি যে একে তথাকথিত ‘নারী আন্দোলনের’ মধ্যে আটকে না রেখে মানব মুক্তির একটা অংশ হিসেবে দেখেছেন সেজন্যই আপনাকে ধন্যবাদ দেওয়া দরকার। আজকের সমাজে নারীরা পুরুষের চেয়ে বেশী নির্যাতিত তা তে কোন সন্দেহ নেই, তবে আমাদের সমাজে পরুষেরাও যে অন্যান্য অনেক নির্যাতনের শিকার সেটা অস্বীকার করার কোন উপায়ও নেই। একজন নির্যাতিত পুরুষ বাসায় গিয়ে নারীর উপর নির্যাতন করে, এটা মেনে নিয়েও বলতে হয় যে নারী মুক্তি বিচ্ছিন্ন কোন আন্দোলন নয়। বিচ্ছিন্নভাবে ‘সম্পূর্ণ’ নারী মুক্তি অর্জন সম্ভব কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ থেকে যায়। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, নারী এবং পুরুষের একসাথে কাজ না করলে মানব সভ্যতার এই বড় বড় সীমাবদ্ধতাগুলোকে অতিক্রম করা সম্ভব হবে না।
পৃথিবীটা খুব অদ্ভূত, আগে ফরিদ ভাইএর এক লেখায় মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছিলাম যে অনেক কিছু দেখে আজকাল মনে হয় জীবনটা যেন এক তাশ খেলা, কখন কার কোন পিঠ উঠে আসবে তা আগে থেকে বলার কোন উপায় নেই। তবে যে কোন সময় স্বপ্নগুলো যেমন ভেঙ্গে গুড়িয়ে যেতে পারে তেমনি আবার যে কোন মূহুর্তেই স্বপ্নগুলো সত্যিও হয়ে যেতে পারে। পথচলার সংগীটিকে পেয়েও যেতে পারেন সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত কোন মূহুর্তে…
একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করার লোভ সামলাতে পারছিনা, আপনি কি শেষ পর্যন্ত চাকরি পেয়েছিলেন মেকানিকালের ফিল্ডে (ধরে নিচ্ছি আপনি নিজের কথাই বলছেন এই লেখায়)? ইচ্ছা করেই হয়তো এই বিষয়টা একটু ধোয়াশা রেখেছেন। প্রশ্নটার উত্তর না দিলেও কোন অসুবিধা নেই।
ভালো থাকবেন।
@বন্যা আহমেদ, পেশাগত অভিজ্ঞতাটা আসলে ভয়াবহ। হুম কিছুটা ধোঁয়াশা রেখেছি। আমি আসলে মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইনি। পাস করার পর পরই কিছু একটা করতে হবে, এই চাপ থেকেই মেক্যানিকাল ইঞ্জিনিয়ারের চাকরির জন্য আবেদন করেছিলাম। সুভাষিত রিপ্লাই পেয়েছিলাম অনেক। 🙂 শেষটাই মেক্যানিকাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আবেদন করা ছেড়ে দিয়েছি, যখন দেখেছি, নামকরা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীগুলোর ইন্টারভিউ বোর্ডেও যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখার পরও শুনছি, আমাদের এখানে শিফটিং ডিউটি, দরকারে যেকোন সময় কাজ করতে হয়, ফ্যাক্টরির পরিবেশ এখনো অত ভালো নয়। ক্যারিয়ার গড়তে চেয়েছি বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। মাঝে কিছু দিন, মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট প্ল্যানিং এর কাজের সাথে জড়িতও থেকেছি। মাসদুয়েক আগেই ছেড়েছি তা। বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবেই গড়তে চাই নিজেকে, এখনো সেই চেষ্টাই চলছে। আমরা যেকজন মেয়ে একসাথে পড়তাম মেক্যানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ, তাদের মধ্যে কেউই এখনও এই ফিল্ডে হাতেকলমে কাজ করছে না, অধিকাংশেরই অভিজ্ঞতা আছে শিক্ষকতায়!
আপু, মানুষ হিসেবে নারী-পুরুষের অবস্থান তো হওয়ার কথা ছিল সহযোগিতা আর ভালবাসার। কিন্তু আমরা এখন করছি শোষন, স্বীকার হচ্ছি শোষনের… ভালোবাসার মানুষটার জন্য আবেগটুকু থাকলেও নারী হিসেবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অধস্তনের মর্যাদায় দেয়া হয় নারীকে, আর নারীও দেখে পুরুষকে প্রভুরূপে। যতই আধুনিক মানসিকতার হোক না কেন, হাজার বছরের সভ্যতা আর সামাজিক কাঠামোর শৃংখল থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না কেউই, না নারী, না পুরুষ। মানবমুক্তি দরকার এইখানেই, দরকার এই শৃংখল মুক্তির!
যেদিন নারীরা মানুষ হিসেবে সম্মান পাবে, সেদিন আর কারোরই নারীর তথাকথিত সঙ্গাতে বন্দী হতে হবে না, পুরুষও নেমে আসবে দেবতার আসন থেকে মানুষের সারিতে। তথাকথিত সঙ্গাগুলো না থাকলে নারী বা পুরুষ তো মানুষই শেষ পর্যন্ত, আপত্তি থাকার জায়গাটাই তো আর থাকছে না। 🙂
@নীল রোদ্দুর,
অসাধারণ! অনেকদিন পর মুক্তমনায় এমন ধারালো ভাষায় একটি প্রাণবন্ত লেখা পড়লাম। চিন্তার স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যক্তিগত কথনটুকুও ভাল লাগলো। অনেক শুভেচ্ছা। :rose:
নীল রোদ্দুর/জওশন আরা,
দর্শন থেকে নারীবাদে পদার্পণ। স্বাগতম। তবে নারীবাদে পদার্পণ ঘটলেও লেখায় দার্শনিকতার প্রভাব বেশ প্রকট যা আবার আমি সব সময় বুঝি না। মাঝে মাঝে অনেকের মত আপনার লেখাটিরও রূপক জাতীয় কথা বার্তা বুঝিনি। আমাদের মত সাধারণের জন্য আরেকটু সহজবোধ্য লেখার প্রত্যাশা রইল। ঢাক ঢাক গূঢ় গূঢ় এর গর্জনে দূরে সরিয়ে দেবেন না।
@গীতা দাস, উমম, কি বলব, চিন্তাভাবনা জটিল হয়ে গেছে মনে হয়। লিখতে গেলে কোনটা যে দার্শনিকতা প্রকাশ করে, আর কোনটা যে মুক্ত থাকে টের পাই না ঠিক। কেউ কেউ আবার বলে বসে, ইনফরমাল টোনটি ঠিক আমাতে মানায় না। আমার খুশি খুশি লাগলে আমি লিখে ফেলি ইনফরমাল টোনে। আসলে এই লেখাটা একটা দীর্ঘ দহনের ফলাফল তো, লিখতে পারিনি সেভাবে। সহজ ভাষায় লেখার চেষ্টা করব আশা করি।
@নীল রোদ্দুর,
লিখতে থাকুন। লিখতে লিখতেই নিজের চিন্তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
@নীল রোদ্দুর, ভালো লাগলো আপনার লেখাটা, ধন্যবাদ। আমি কিন্তু তেমন কোন দার্শনিকতা দেখলাম না লেখাটায়, কথাগুলো বেশ সোজা সাপ্টাই তো লাগলো 🙂 ।
@নীল রোদ্দুর,
বন্যা আহমেদ আপনার পেশা প্রসঙ্গে যে ধোঁয়াশার কথা বলেছেন সেটাকেই আপনার লেখার বিভিন্ন ক্কেত্রে আমার দার্শনিকতা মনে হয়েছে।
যাহোক, এ মন্তব্যটি আমাকে ভুল না বোঝার জন্য লেখা। আমার মেয়ে এখন যন্ত্রকৌশলে বুয়েটে পড়ছে। আমি আগেও আমার লেখায় তা উল্লেখ করেছি। গতানুগতিক মা হিসেবে আমি তার ভবিষ্যত পেশাগত জীবন নিয়ে চিন্তিত হলেও সে মোটেই নয়। এখানেই আমাদের উত্তর প্রজন্মের এগিয়ে থাকা।
আপনার কলম অব্যহত থাকুক।
@গীতা দাস, আপনার মেয়ের জন্য আমার শুভকামনা রইল। ওকে জানাবেন, সহযোদ্ধা দরকার হলে আমাকে ডাকতে পারে। পাশাপাশি হাঁটতে ভালোই লাগবে।
নিজেদের জীবনের দ্বায়িত্ব নিজেদের নেয়ার সময় বোধহয় আমাদের এসেছে। আগের প্রজন্মের দুশ্চিন্তা এইখানে পজেটিভ কোন ভূমিকা রাখে না। জীবন যখন আমাদেরই, চিন্তা করতে হলে আমরাই করি। মা কে , বাবাকে পাশে দরকার পড়লে তো ডাকবোই আমরা। দুশ্চিন্তার চেয়ে আমাদের অনেক অনেক বেশী দরকার বাবা মায়ের আত্মবিশ্বাস! বাবা-মা আমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করছে, ভাবতে ভালো লাগে না। বরং তারা আমার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী, এই অনুভূতিটা অনেক সাহস যোগায়।