[ফরিদ আহমেদের “শিশু মন” গল্পটা আচমকা এই হযবরলটি লিখতে অনুপ্রাণিত করল। আমি honestly বলছি জীবনে গল্প-টল্প লিখার কথা স্বপ্নেও ভাবিনি। অকস্মাৎ একটা তাগিদ অনুভব করলাম। পড়ার মত কোন লেখা এটি নয়। মুক্তমনায় পাঠকের অভাব নেই। কেউ না কেউ পড়বে। পাঠক সংখ্যা দশ পর্য্যন্ত আমি একাই নিয়ে যেতে পারব।
লিখতে যেয়ে মাহফুজের কথাটা বেশী করে মনে পড়ছিল। লেখাটি তাই ওর জন্য থাকল। বাংলাদেশে বসে পড়বে। মাহফুজ আমার ১১ নম্বর পাঠক। তারপর আর কেউ না পড়লেও হবে
হেমেন এবং রানু দুটো ছদ্ম নাম]
নীচে মশারীর ভিতরে বসা ছবিটা আমার কাকাত মামার। পশ্চিম বংগের কুচবিহারে এখনও বেঁচে আছেন। দ্বিতীয় মামা কলকাতায়। তৃতীয় মামা কুচবিহার জেনারেল হাসপাতালের গাইনীর ডাক্তার ছিলেন। সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন। এখন শুধু তাঁকেই কল করি। ভাল একটি খবরের আশায়। – মামা এখনও মরেনি?
– নারে। আর সহ্য হয় না। দাদার পেনসনের টাকায় বাড়ী। বলতে গেলে এখনো পেনসনের টাকায় সংসার চলে। ছেলে দুটো বাসায় বসেই গিলে। ইদানীং বাপিটা তো প্রায়ই রাস্তায় পড়ে থাকে। ওর বৌটা মেয়েটাকে নিয়ে চলে গেছে। ভালই করেছে।
২০০১ সালে গিয়ে মামার সাথে সারাদিন ছিলাম। তখনই একটা পা টেনে হাটতেন। আমেরিকাতে ফিরে আসার পরে টেলিফোনে বার কয়েক কথা হয়েছে। একদিন বললেন – তোর মামী তো নেই। ক্যান্সারে মারা গেছে। তারপর একদিন লক্ষ্য করলাম দুই পুত্র বধু সবসময় একই উত্তর দেয় – বাবা তো ঘুমুচ্ছেন। রহস্যটা বুঝলাম ২০০৮ সালে ডিসেম্বরে যেয়ে। দিনরাত, চব্বিশ ঘন্টা। মশারীর ভিতরে শুয়ে থাকেন। একজন নার্স জাতীয় কেউ গা মালিশ করে দিয়ে যায়। ঘর ভর্তি গন্ধ। নাক কামড়ে ধরে। বৌরা ঘরে ঢুকে না। টেলিফোনটা মামার হাতে পৌঁছে দেবে কে? এই জন্যই একই উত্তর – বাবা তো ঘুমুচ্ছেন।
আমি গন্ধ ঠেলে মশারির ভেতরে বসলাম। মামা তাকিয়েই বললেন – খুশী? দিদি কেমন আছেরে? তারপর অনেক কথা বলতে থাকলেন। একসময় বললেন – ছাগলের ব্যবসাই ভাল। খায় কম। আমরা এখন ছাগলের ব্যবসাই করি।
ছাগলের ব্যবসাই করি? বুঝলাম মাথাটাও গেছে। বললাম – মামা তুমি বসতে পার? উঠে বসলেন। হাটুর উপরে লুঙ্গি। পা দুটো চামড়া দিয়ে ঢাকা। ছেলে-বৌরা নূন্যতম খাবার খেতে দেয়। যত খাবার তত পায়খানা। নার্স চব্বিশ ঘন্টা থাকে না।
১৯৭১ সাল। আগষ্ট মাস। শিলিগুড়ি শহর থেকে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে। আমি রিফিউজী হয়ে এই মামাটির বাসায় ছিলাম কিছুদিন। তখন তিনি চারু মজুমদারের নক্সালবাড়ী-খড়িবাড়ীর ব্লক সুপারভাইজার। মাস শেষে ৩২৭ টাকা বেতন। কচকচে এক টাকার নোট। স্ট্যাপল করা। যত্নে একটি কি দুটি খুলেন। খরচ করেন। বাকিটা জমান ভবিষ্যতের জন্য।
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলছে। সর্বোদয় নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ বড় বড় দেশের বড় বড় নেতাদের সাথে দেখা করে এসেছেন। মুক্তিকামী বাংলাদেশীদের সাহায্য আর সমর্থন দরকার। এডোয়ার্ড কেনেডী এসেছেন শরনার্থী শিবির পরিদর্শন করতে। শিলিগুড়ি থেকে একটি রাস্তা বাগডোগরা এয়ারপোর্টে গেছে। একটু আগেই এপথ দিয়ে গেলেন। নেমেও ছিলেন। নাদুস নুদুস মেয়ে দুটোর সাত বছরের ভাইকে কিছু একটা প্রশ্নও করেছেলেন। ভাইটি এসে তাই বলল আমাকে।
রাস্তার একপাশে নর্থ বেংগল ইউনিভার্সিটি। অন্য পাশে একটা অদ্ভূত বাড়ি। মাঝখানে বর্গাকার উঠান। চারপাশে দালান। এক এক রুমে একটি করে পরিবার। ঘেষা দুপাশে দুতলা। অপর দুপাশে একতলা। একটি একতলার খানিকটা সাড়ি করে রান্নার ব্যবস্থা। মামী নীচে এসে তারই একটাতে রান্না করে নিয়ে যান। একতলা দুটির কোণায় একটি বাঁধানো ইঁদারা। জলের একমাত্র ব্যবস্থা। একটি একতলার পেছনে কয়েকটি গন শৌচাগার। সকালে একটা বালতি ও বদনায় জল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কাজ শেষে বালতির জল দিয়ে ঝাপ্টা মারতে হয়। ফ্লাশিং।
দুতলায় চারটি ঘর। উত্তর-পুব কোনায় মামা। তারপরে তরুণবাবু – পশুহাসপাতালের ডাক্তার। তারপর ইন্দ্র মোহান্তি। শেষ মাথায় স্ত্রী এবং একবছরের ছেলে সহ থাকেন মহেশবাবু। রাতে মামার ঘর থেকে দার্জিলিংএর পাহাড় দেখি। ল্যামপোষ্টের বৈদ্যুতিক বাতি দেখে মনে হয় আকাশের তারাগুলো যেন মাটিতে মিশে গেছে। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে গাড়ী চলে। হেডলাইট গুলো উপরে উঠে, নীচে নামে। দক্ষিন দিকে দূরে একটি রেল লাইন। দিনের বেলা মালগাড়ীর ডাব্বা গুনি। ১০৫টা। ১১২টা।
মামার ঘরটির পুব পাশে প্রাইমারী স্কুলের মত লম্বা একতলা ঘর। ওপাশে দোকান। এপাশে পেছনে ঘরটির সাথে টিন ফিট করে কয়েকটা ঘর। মামার জানালা দিয়ে নীচে তাকালেই দেখা যায় একটি নেপালী পরিবার। দুইটি কিশোরী। দুধে-আলতা গায়ের রং। নাদুস-নুদুস চেহারা। একটা কাপড় বগলের নীচ দিয়ে সামনে লুঙ্গির মত গিট দিয়ে আটকানো। কখন হঠাৎ খুলে যায়। ভয় হয়। একটা মেয়ে রোজ মহেশবাবুকে এক লিটার করে দুধ দিয়ে যায়। ছেলেটি একাই খায়। বেজায় মোটা হয়েছে। বড় হয়ে জাপানী সুমু রেসলার হবে।
মামার নীচ তলায় থাকে এক নার্স। মামী রাতে পেছনে বারান্দায় খাবারের জিনিষ ধোয়। একটা চোঙ্গা দিয়ে জল নীচে পড়ে। ঝাপ্টা খেয়ে জল তার বারান্দায় উঠে আসে। ভাজখাই গলায় বলে উঠে – নরোত্তম বাবু, আপনি জল ফেলছেন, নাকি আপনার বাপি প্রস্রাব করছে। মামাও গলা উচিয়ে বলে – শুধু বাপি না। বড়টাও।
সাত সকালে সপ্তাহে বার কয়েক মহেশবাবুকে দেখা যাবে কূয়োতলায়। স্ত্রীর শাড়ি থেকে ব্রা পর্য্যন্ত সাবান লাগানো। তারপর বালতিতে জল দিয়ে খোছানো। মামা তখনই বলবেন – তরুণবাবু নীচে তাকিয়ে দেখুন। মহেশবাবু। তরুণবাবু বলবেন – একটাই বালতি। নষ্ট করে দিলেন। আজ স্নান ছাড়াই অফিসে যেতে হবে।
বাপি দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। বড় বেশী ট্যাকনা। ইউনিভার্সিটির সবাই যেন চিনে ওকে। – বাপী কেমন আছ? বাপী বলবে – ভাল। তোমাদের খবর কী কাকু। দেখিনা অনেকদিন।
রাস্তা পাড় হয়ে যেতে হয়। দ্রুত গাড়ী চলে। মিলিটারী ট্রাক। বাপি আমাকে হাত ধরে ওপারে নিয়ে যায়, এপারে নিয়ে আসে। সাবধানে। বলল – জান, খুশীদা! মিলিটারীরা বাবাকে খুব ভয় পায়। বললাম – কেন?
– একবার বাবা ঐ দোকান থেকে সিগারেট কিনছিল। একটা মিলিটারী ট্রাক থামিয়ে মাকে টানল। বাবা দেখেই দৌড়ে এল। আর বাবাকে দেখেই ট্রাকটি চলে গেল।
– তা ঠিক। যে রকম হাতীর মত দেহ তোর বাবার।
– বাবার কি হাতীর মর শুড় আছে? তোমার পেট খারাপ, না মাথা খারাপ?
বাপি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান ধরে
আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা
আর কতকাল আমি রব দিশাসারা (দিশাহারা)
রব দিশাসারা
রানূ এবং বন্দনা ইউনিভার্সিটির ছাত্রাবাসে থাকে। মাঝে মাঝেই মামার বাসায় বেড়াতে আসে। বন্দনা সরাসরি মোহান্তিবাবুর ওখানে চলে যায়। বাপি বলে – খুশীদা তুমি জান? মোহান্তী কাকুটা ভাল না। বন্দনা পিসিকে শুড়শুড়ি দেয়। পিসির ভাল লাগে না। তাও দেয়। পিসিটা বোকা। ওখানেই যাবে।
রানূ বলে – আমার জামাইবাবু, হেমেন্দ্র চক্রবর্তী। ফেব্রুয়ারী মাসে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বেড়াতে এসে আটকা পড়ে গেছে। আপনার কথা চিঠিতে লিখেছি। দেশের খবর নিতে আপনার সাথে দেখা করতে আসবে।
জামাইবাবু আমার পূর্ব পরিচিত। আসলেন। কিন্তু দেশের কথা কিছুই জানতে চাইলেন না। বিকেলেই রানুর সাথে দেখা করতে নিয়ে গেলেন। একটা মনিপুরী ছাত্রী সংবাদ নিয়ে ভিতরে গেল। শোনা গেল আর একটি মেয়ে জিজ্ঞেস করছে – কার রে?
রানূ এল। প্রায় ঘন্টা খানেক কী গল্প করলেন কিছুই বুঝলাম না। ফেরার পথে জামাইবাবু বললেন – নৃপেন, শুনেছ? একটি মেয়ে জিজ্ঞেস করল – কার রে? মেয়েগুলো ভারী দুষ্ট।
মামা-মামী একটা চৌকিতে শোন। আমাদের জন্য নীচে একটা পাটি পেতে বিছানা। তিনি কয়েক দিন থাকবেন। দীর্ঘদিন স্ত্রী ছাড়া আটকা পড়ে আছেন। পরদিন আমাকে নিয়ে শিলিগুড়ি শহরে গেলেন। কয়েকটি ছোট হোটেলে গেলেন। থাকার ভাড়া সংক্রান্ত তথ্যাদি জানলেন। বাসায় ফিরে এলাম। জামাইবাবু শৌচাগারে গেলেন। মামা জেনে গেলেন ফেরার পথে দুজনের ভাড়া পঁচিশ নয়া আমিই দিয়েছি। তাঁর রাগ দেখে কে। – তোর কিছুই হবে না। ও তোকে নিয়ে গেল। আর তুই পঁচিশ নয়া খরচ করে ফেললি?
প্রথম দিনের পর থেকে জামাইবাবু একাই ছাত্রাবাসে যাতায়াত করেন। চার পাঁচ দিন হয়ে গেছে। জামাইবাবু আছেন। একদিন দুপুরে খেয়ে আমরা দুজন গাটা এলিয়ে দিতে যাচ্ছি। মামা-মামী সেই মূহুর্তে রান্না ঘরে। বাপিও ছিল। সে সিড়ি বেয়ে দৌড়ে উঠে এল। ঘরে ঢুকেই বলল
– কাকু, তুমি আমাদের বাসা থেকে যাচ্ছ কবে?
জামাইবাবু হতভম্ব। আমি হতভম্ব। কারও মুখে কথা নেই। বাপি আবার বলল – এই যে তুমি এসেছ। আর যাচ্ছ না। থাকছ। ভাত খাচ্ছ। আমাদের খরচ হচ্ছে না? আমাদের তো মাস চলবে না।
জামাইবাবু লুংগি ছেড়ে প্যান্ট পড়লেন। ব্যাগটা গুছায়ে বাইরে দাঁড়ালেন। মামা এলে বললেন – দাদা। অনেক দিন থাকলাম। যাচ্ছি। মামা সন্দেহ করলেন। কিছু বলতে পারলেন না। জামাইবাবু চলে গেলেন। খানিক পরে মামা বললেন – খুশী। বাপি কি হেমেনকে কিছু বলেছে? আমি সব বললাম। মামা আমার উপর ক্ষেপে গেলেন – তুই আগে কেন বলিস নি। আমি এখন কী করি? একথা নীলাম্বরের কানে গেলে ও কী করবে তুই জানিস? তুই যা রানুর ওখানে। ওখানেই গেছে। নিয়ে আয়।
বাপি পা দুটো ভাঁজ করে ফ্লোরে বসে আছে। বাবার রক্তচোখ দেখে কাঁপছে। আমার দিকে তাকাল। রাস্তা পার করার জন্য আমার সাথে আসার সাহস করল না। চুপ করে বসে রইল। আমি ছুটলাম। রাস্তা পার হয়েই দেখলাম ওরা আসছে। রানুর ব্যাগে দু-তিন রাত থাকার মত কাপড়-চোপড় হবে হয়তো। বললাম মামা যেতে বলেছেন। রাজী হলেন না।
– এখন তো জলপাইগুড়ি যাওয়ার মত কোন ট্রেন বা বাস কোনটাই নেই। যাবেন কোথায়?
জামাইবাবু কোন উত্তর দিলেন না। মনে পড়ল সেদিন তিনি হোটেলের রেট জেনে নিচ্ছিলেন।
বাসায় ফিরে দেখলাম মামা গুম হয়ে বসে আছেন। বাপি নীচে শুয়ে। মামী কপালে মলম লাগেচ্ছেন। কপালে আড়াআড়ি ভাবে কেটে গেছে। চুটটা বেশ জুড়েই লেগেছে।
পরদিন বাপি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। দুপুর বেলা কেউ নেই। বললাম – মামা তোকে মারল কেনরে?
– কাকুকে যে যেতে বললাম, তাই।
– কেন বললি?
– মা-বাবাই তো বলতে চাইছিল। বাবা বলল মাকে বলতে। মা বলল – আমি পারব না। তুমি বল। কেউ বলতে রাজী হল না। তাই আমি বললাম।
আমি বললাম – বাপি, আমিও তোদের এখানে থাকি। ভাত খাই। তোদের খরচ হয়। তাই না? বল। হয় না?
বাপি বলল – বলব না।
– বল না, শুনি।
– না, বাবা মারবে।
টেক্সাস, ১৫ আগষ্ট ২০১০।
আমার কেমন যেন তিন নম্বর পাঠক হতে ইচ্ছে করছে। আর হ্যা, লেখাটা যে আমার ভাল লেগেছে তা বলা হয়নি।
@সৈকত চৌধুরী, পড়েছেন জেনে খুশী হলাম।
তিন নম্বর কেন? এক-দুই নম্বরেও টাই দেখানো যেতে পারে।
আপনার প্রথম গল্প। অনেক আবেগ জড়িত এর সাথে। সমালোচনা করা ঠিক হবে কিনা বা সেই যোগ্যতা আছে কিনা সে ব্যাপারে দ্বিধা নিয়েই বলছি। গল্পের শেষে এসে গল্পের মজাটা পেলাম কিন্তু শুরু থেকে কয়েকবারই মাঝ পথে এসে থেমে গেছি। কিছু একটা ভাল লাগছিল না। পরে দেখলাম বাক্য বিন্যাসে সরল বাক্যের প্রাচুর্য। এটা একটা একঘেয়ে ছন্দ তৈ্রী করেছে পুরো লেখায়। জানিনা অনেকের হয়তো এটাই ভাল লেগেছে। তবে আপনার কাছ থেকে আরো গল্প পাবার আশা রাখি। এমনিতেই মুক্তমনাতে গদ্য সাহিত্যের আকাল। আপনাকে তাই এই ভুবনে পদার্পনের জন্য প্রানঢালা অভিনন্দন।
@আতিক রাঢ়ী,
O Man!
অনেকেই এভাবে মন্তব্য করে না। প্রায়শই দেখা যায় খুব ভাল, দারূণ ইত্যাদি ধরনের মন্তব্য। এতে লেখকের কোন কাজে আসে না। কেউ না বললে লেখক জানবে কীভাবে তার দুর্বল জায়গা গুলো? আপনাকে সাধুবাদ জানাই আপনার সততার জন্য। আমি গল্প লেখার কথা কখনোই ভাবি না। হঠাৎ করে লিখে ফেলেছি। হয়ত আর কোনদিন লিখব না। লিখলে আপনার এই মন্তব্য আমাকে সবচেয়ে বেশী সাহায্য করবে। শুধু গল্প নয়। অন্য যে কোন লেখাতেই আপনার মন্তব্য আমাকে সাহায্য করবে।
আপনাকে বাড়তি ঝামেলা দিচ্ছি না কোন জায়গায় একঘেয়ে লেগেছি। এটা আমার নিজ দায়িত্ব খুজে বের করা।
আপনার মন্তব্যকে দারূণ, অসাধারণ ইত্যাদি বিশেষণে ভূষিত করব না। এটা অত্যন্ত মূল্যবান। অন্তত আমার তাই মনে হয়েছে। আপনি আমাকে উপকার করেছেন। এজন্য আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
গল্পটি মন ছুঁয়ে গেল!
আমাদের প্রতিবেশীরা একাত্তরে ভারতে শরণার্থী হয়েছিলেন।
সম্ভবত ভাল ব্যবহার পাননি নিকটআত্মীয়দের কাছ থেকে।
সেরকমই শুনেছিলাম!
হয়ত নিজেদের অর্থসংকটেই এর কারণ!
মাহফুজ ভাইয়ের জন্য খারাপ লাগছে!
মডারেটদের স্কুল ছাত্রসুলভ এই শাস্তির আশুঅবসান
কামনা করছি!
@লাইজু নাহার,
এমনিতেই আতিথেয়তা নিয়ে পশ্চিম বংগের লোকদের নিয়ে নানারকম রসিকতা বাজারে প্রচলিত আছে। ১৯৭১ সনের অবস্থা আমি নিজে দেখেছি। বন্যার কারণে আউশ ধরতে পারেনি। আমন ধান শেষ। আমনের একনাগাড়ে পড়ে থাকা খালি মাঠ দেখেছি। দশ পয়সা দিয়ে ডাল আনার কথা আকাশ মালিকের মন্তব্যে বলেছি। ভুলে গিয়েছিলাম তাঁরই বড় ভাইয়ের আর একটি করুণ চিত্রের কথা। কলকাতা ফেরার পথে স্কুলে দেখা করলাম। কে কেমন আছে জানতে চাইলেন না। বাড়িতে তোর কাকীর সাথে দেখা করে যা এই কথাটিও মুখ দিয়ে বেরোল না। শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে অসহায়ের মত তাকিয়ে থাকলেন। এই কাকাটি পশ্চিম বংগে যেয়ে বদলিয়ে যাননি। আর্থিক দৈন্যাবস্থাই তাঁকে বদলিয়ে দিয়েছে।
ধন্যবাদ অবস্থাটা বুঝেছেন।
আমি মনে হয় ২০০ নম্বর পাঠক।
রিফিউজি জীবনের জ্বালা যন্ত্রনা স্বচক্ষে দেখার দূর্ভাগ্য হয়নি, তবে বৃদ্ধ বয়সে মানুষ কত অসহায় হয়ে পড়তে পারে তা চাক্ষুস দেখি। সে বয়স আসতে এখনো দেরী আছে, তবুও ভয় হয়।
ধন্যবাদ নৃপেনদাকে এই অপ্রীতিকর আশংকা আবার মনে করিয়ে দেওয়ায়। মানুষ আসলে বড় অসহায়, এই ভাবটা মাঝে মাঝে মনে আসা দরকার।
@আদিল মাহমুদ, আপনি আমার দুই নম্বর পাঠক। এক নম্বরটা আকাশ মালিককে দিয়ে দিয়েছি।
ছোট মামাকে মূলত একটি কারণেই কল করি। আমি তাঁর মৃত্যু সংবাদটাই জানতে চাই।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দুই নম্বর শব্দটা শুনতে কিঞ্চিত অস্বস্থিকর হলেও এই সম্মানে আমিও অভিভূত।
আপনার অনুভূতি আমি পুরো বুঝতে পারছি। শুনেছিলাম যে অরিগনে নাকি সুইসাইড লিগ্যাল। মাঝে মাঝে মনে হয় যে অন্তত কিছু ক্ষেত্রে লিগ্যাল করে দিলে মন্দ হয় না।
@আদিল মাহমুদ,
আসলেই তো। আমি খেয়াল করিনি। কী মীন করেছি সেটা বুঝতে পেরেছেন। তাই আমার দুঃখবোধ নেই। ধন্যবাদ।
ছোট মামা ডাক্তার। তাঁর সাথে সরাসরি এব্যাপারে কথা বলেছি। কিন্তু বুঝতেই পারছেন, অন্যের কষ্ট মুক্তির চেয়ে নিজেদের আবেগটাই বড়।
@নৃপেন্দ্র সরকার,আমার এক ডাঃ বন্ধু ইরানে গ্রামের ক্লিনিকে কাজ করত। তার কাছে শোনা।
তার কাছে নিয়মিতই এক পক্ষাগাতগ্রস্থ বৃদ্ধা রোগিনীকে কয়েক বছর ধরে তার ছেলে নিয়ে আসত চিকিৎসার জন্য। প্রতিবারি জিজ্ঞাসা করত , ডাক্তার কবে আমার মা মরবে , বলোতো। আর তো পারিনা। অবশেষে যখন সত্যিই তার মা মারা গেল , তখন তার সেকি কান্না। সে কান্না কিন্তু মেকি ছিল না!!
@ফারুক,
মানব চরিত্র বড়ই বিচিত্র।
@ফারুক,
মনে হয় আবেগের ব্যাপার-স্যাপার। আবেগ জিনিষটা শশীরের কোন জায়গায় কী ভাবে সৃষ্টি হয় আমি কিছুই বুঝিনা।
এদেশে কোন কোন স্টেটে (আদিল মাহমুদ একটু ইংগিত দিয়েছিলেন) Assisted Suicide লিগ্যাল। ডাক্তার য্যাকভর্কি (নামটা exactly হচ্ছে না) সাহায্য করতে গিয়ে জেলে আছেন। আবার Pro-Life মোভমেন্টেও প্রচুর লোক। Life Support দিয়েও Terminal patient দের বাঁচিয়ে রাখে। সবই তো আবেগের বশে।
ভীষণ মন:কষ্ট হচ্ছে যে মাহফুজ ভাইয়ের মত একজন মুক্ত মনের মানুষের আইডি টি লক করা হয়েছে। আমি মুক্তমনায় নতুন, তাই বুঝিও কম,তাই বলে কি শরীরের একটা অংশ বাদ দিয়ে! বাকি শরীরটা ভাল থাকে কিভাবে?
আর জনাব মাহফুজ সাহেব তো প্রশ্ন করেছিলেন, প্রশ্ন করা কি পাপ?
“যার বিয়া তার খবর নাই পারা-পরশির ঘুম কামাই” যাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তাকে লাগেনি আর লেগেছে অন্য জনের। এর ফলে বন্ধ করে দেওয়া হলো মহফুজ ভাইকে।
যাহোক মাহফুজ ভাই আবার আমাদের কাছে ফিরে আসুক…………..তার জন্য :rose2:
@রিমন,
এই পোস্টিংটি একটি গল্প। গল্পটি ভাল বা মন্দ হলে তাই বলুন।
প্রথম চার পাঁচ জনের মধ্যেই ছিলাম লেখাটা দেয়ার সময় তবে মন্তব্য করা হয় নি। ভালো লাগল লেখাটা। নৃপেন দা আপনি আরও লিখুন। :yes:
@সাইফুল ইসলাম,
আমি জানি আপনি পড়ে থাকবেন। ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগছে।
ধন্যবাদ।
নৃপেন্দ্র দা,
আমি পড়ার আগেই দেখলাম পাঠাকের সংখ্যা শতক ছাড়িয়ে গেছে। আপনার এটি আমার মনে হয় গল্প তবে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের গল্প। মনে করিয়ে দিলেন কিছু ক্ষতের কথা। আপনার সাথে রিফুজি জীবনের ছোট একটি ফোঁটা দিলাম।
আমারা ত্রিপুরায়্র কাঞ্চনমালায় আমার জেঠামশাইয়ের বাড়িতে উঠেছিলাম।উনি বহু আগে থাকতেই ওখানকার সরকারী ডাক্তার। সতীন্দ্র নাথ দাস।
বিশালগড়ের মুড়াপাড়া ক্যাম্পে আমারা সংযুক্ত থাকলেও আমার মা সেখানে থাকতে আরামবোধ করতেন না বলে কাঞ্চনমালায় জেঠামশাইয়ের বাড়িতেই থাকতেন। বাবা থাকতেন ক্যাম্পে। একদিন জেঠিমার সাথে কি হয়েছে জানিনা, মা সন্ধ্যায় রওয়ানা দিয়ে যে মুড়াপাড়া ক্যাম্পে গেছেন আর জেঠামশাইয়ের বাড়িতে যাননি। পূজার নিমন্ত্রণেও নয়। এমনকি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সৌজন্য সাক্ষাৎ করতেও নয়। রিফুজি জীবনের এ দিকটাও আলোকপাত হওয়া প্রয়োজন।
খুব ভাল লেগেছে।
৭১ এর ভারতের জীবন যাপন নিয়ে তখনকার রিফুজিরা লিখলে তো বেশ হয়।
@গীতা দাস, ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্য থেকে লেখালেখির নতুন খোরাক পাওয়া গেল।
আপনার জেঠামশাই আর জেঠিমার কান্ড শুনে বিনাদ্বিধায় বলতে পারি আমার ৩২৭ টাকা বেতনের মামা ও তাঁর স্ত্রী আমাকে স্বর্গে রেখেছিলেন।
মাহফুজ ভাই,
বলুন তো “বড় প্রেম শুধু কাছে টানে না, দূরেও ঠেলে দেয়”- উক্তিটির তাৎপর্য কী?
@Mostafiz,
মাহফুজ যে বোবা এখন উনাকে প্রশ্ন করলে জবাব কি করে দেবেন বেচারা? পায়ে বেড়ী লাগালে কী কেউ দৌড়াতে পারে?
@আফরোজা আলম,
কাউকেই বেড়ি পরানো হয়নি। মাহফুজ সাহেব বা যে কেউই মন্তব্য করতে পারেন। কেবল অসুস্থ প্রলাপগুলো যেন প্রকাশিত হয়ে ব্লগের বারোটা না বাজায় সেজন্যই মডারেটরের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ। আপনি নিশ্চয় চান না কারো স্ত্রী নিয়ে, সঙ্গি নিয়ে, সম্পর্ক নিয়ে বিকৃত রুচির কমেন্ট করা হতে থাকবে, আর সেগুলো প্রকাশিত হতে থাকবে। মাহফুজ সাহেবকে আগেও সতর্ক করা হয়েছিল উনি শোনেন নাই। যারা সে সময় কমেন্টগুলো দেখেছিলেন তারা সবাই জানেন যে সেটাই সঠিক পদক্ষেপ ছিল। আমরা সবাই পরিস্থিতি দেখছি। পরিস্থিতির উন্নয়ন হলে তিনি আবারো মডারেশন ছাড়াই কমেন্ট করতে পারবেন।
ভাল থাকুন।
@অভিজিৎ,
নৃপেন্দ্র সরকার এর কথা অণুসারে আমার আর কিছু এখানে বলার ছিলনা। কিন্তু অভিজিতের জবাবে জানাচ্ছি ,
আমি আগেই বলেছি আমি এই বিষয়ে জানা ছিলনা।যদি কথা ব্যাক্তিগত হয়ে থাকে তাহলে আমার সে ক্ষেত্রে বলার কিছু নেই। সে ক্ষেত্রে সকলের যা মতামত তাই মেনে নিতে হবে।
অভজিত আপনাকে ধন্যবাদ।
লেখাটি খুবই মনে ধরল। :rose:
@রৌরব, লেখাটি সত্যি সত্যি মনে ধরে থাকলে আমার ভাল লাগছে। ভাল হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস ছিল না। ধন্যবাদ। :rose2:
@নৃপেন্দ্র সরকার,
সত্যি 🙂 । ভাল না লাগলে সাধারণত চুপচাপ থাকি।
আমি এখনো বুঝলাম না উনি এমন কি করেছেন যে উনাকে ব্যানড্ করে দিতে হল? :-/ :-/ :-/
(সেদিনে উনার মন্তব্য আসলে পড়া হয়নি, তাই হয়ত বুঝা সম্ভবও না 😥 😥 😥 )
@রনবীর সরকার, এই পোস্টিংটিতে আপনার প্রশ্ন নিয়ে আলোচনার scope নেই। দুঃখিত।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
লেখাটা খুব’ই উপভোগ্য সন্দেহ নাই। আপনি আরো লিখুন আমরা আরো পড়ি।
অফ টপিক ঃ পরিশেষে বলছি,মুক্ত-মনার মুক্ত পরিবেশ আদৌ আছে কী? যদি থেকেই থাকে তবে মাহফুজের সাথে এমন আচরণ কেন করা হল? আর ডজন খানেক মডারেটর’রা ভুলভ্রান্তি করলে তার কি কোনো বিচার ব্যাবস্থা আছে? জানতে ইচ্ছে করে। অনেকেরই মনে ধারনা মুক্ত-মনা নামটা তুলে দেয়া দরকার। যেখানে স্বাধীণতা হরণ করা হয়ে থাকে সেখানে মুক্ত পরিবেশ কী আদৌ বজায় থাকে? দুঃক্ষজনক, এই রকম আচরণ লজ্জাজনক বটে। যদিও জানিনা মাহফুজ সাহেবের অপরাধটা কী ছিলো। তবু ,মনে হয় লঘু পাপে গুরু দন্ডের মত।যাই হোক আমার এই বক্তব্যে আবার আমার অপরে কোন খড়গ নেমে আসে জানিনা। কেননা প্রশ্ন করে আমি অপরাধ করিনি।প্রশ্ন করার অধিকার সবারই আছে।
@আফরোজা আলম,
ধন্যবাদ।
এইমাত্র Mostafiz সাহেবকে একটা উত্তর দিলাম। দয়া করে উত্তরটা দেখে নেবেন। একই উত্তর আবার লেখার মানে হয়না। আমি আমার এই লেখায় মাহফুজ বিষয়ক কোন মন্তব্য না করা জন্য অনুরোধ রেখেছি। বিস্তারিত ওখানে দেখে নিন প্লিজ।
আমিও পাঠক হলাম তবে কয় নম্বর তা ঠিক বলতে পারি না।
মাহফুজ ভাই এর জন্য খারাপ লাগছে। তার সম্পর্কে আমার কিছুটা জানাশোনা থাকার কারণে মুক্ত-মনার প্রতি তার আকুলতাটা বুঝি। আমার কাছে একটা মেইল করেছিলেন যার দুটো লাইন এরকম-
আমি মাহফুজ ভাইকে অনুরোধ করব পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য ধৈর্য ধরে কিছুদিন অপেক্ষা করতে।
@ফরিদ, @সৈকত চৌধুরী,
মুক্তমনার প্রতি মাহফুজের দরদটা একটু বেশীই।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা, ৫৩ জন পাঠক পড়ার পর কত নম্বরে আমার স্থান হবে জানিনা। তবে আমার অবস্থান সব সময়েই-
আমি তোমার যাত্রীদলের রইবো পিছে / স্থান দিও হে আমায় তুমি সবার নীচে।
সবার শেষে যা বাকি রয় তা হয় লবো—–
এত সুন্দর করে গল্প লেখার পরেও ভাবি কেমনে আপনি এর আগে গল্প লিখেন নাই? তাড়ি বাড়ি ঝাড়ি খাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েই জানতে চাই-
এখানে শব্দটা কি কোণায় হবে?
মাহফুজ ভাইকে নিয়ে ব্লগে আলোচনা দ্বীর্ঘায়িত না করাই ভাল হবে কারণ এতে তিনি আরো লজ্বাবোধ করবেন। আমি তো মনে করি এক অর্থে মুক্তমনা একটি পরিবারের নাম, তাই এখানে তর্ক ঝগড়া থাকবে, মতভেদ-মতানৈক্য থাকবে, কিন্তু সব শেষে আমরা সকলেই সুস্থ সুন্দর পারিবারিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট থাকবো এটাই বাঞ্ছণীয়।
তবে একখান কথা জিজ্ঞাসা না করে পারছিনা,
বিষয়টা কি দাদা?
@আকাশ মালিক,
প্রথম কতগুলো অবস্থান রেজার্ভ ছিল। আপনার অবস্থান এক নম্বরে।
আপনার ভাল লেগেছে? সত্যি? আবার বলেন ভাই।
সবাই গল্প-কবিতা লিখে হাত পাকা করে ছোট বয়সে। ৬২ বছর বয়সে প্রথম গল্প লিখলাম। তামাশা করেন নাই তো বস্?
আপনার বানানটাই ঠিক। ঠিক করে দিচ্ছি।
ঠিক বলেছেন। মুক্তমনা একটা অসাধারণ Platform. এর বিকল্প নেই। এর সুস্বাস্থ্য রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। তবে ঝাড়িটা মাত্রাতিরিক্ত হলে হজম করা কষ্ট হয়। যারা ঝাড়ি মারে তাদের উচিত একটু দম নিয়ে ঝাড়ি দেওয়া।
এর উত্তর দিতে পারছি না গুছায়ে। কথা বলতে বলতে মুখ থেকে অনেক কথা বেড়িয়ে আসে অটোমেটিক। মনে করেন এটা তেমনি।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
এ সন্মান, এত আদর, এ সুখ এত আনন্দ আমি রাখবো কোথায় দাদা? মাঝে মাঝে আমার মনে হয় কী জানেন, এই পৃথিবীতে আমাদের আসাটাই তো চলে যাওয়ার জন্যে। আমাদের কণ্ঠস্বর বাতাসে মিলিয়ে যাবে, আমাদের পদচিহ্ন ধরণী থেকে চিরতরে মুছে যাবে, কিন্তু আমাদের লেখাগুলো বেঁচে থাকবে আরো কিছুদিন। নজরুল কামনা করেছিলেন, তিনি যেন কবর থেকে মুয়াজ্জিনের আযানধ্বনি শুনতে পান। আমি যদি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, আমি যেন কবর থেকে শুনতে পাই ‘মুক্তমনা’ এর কলরব, আমার প্রার্থনা কি মঞ্জুর হবে।
দাদা হঠাৎ মনে হল আপনাকে একটি গান শুনাই। গানটি আগে বহুবার শুনেছেন, ছবিটিও হয়তো দেখেছেন।
@আকাশ মালিক,
গতরাতেই পড়েছি আপনার এই মন্তব্যটা। আবেগে দিশাহারা হয়ে পড়ি। উত্তর গোছাতে পারিনি। এখনও কিছুই লিখতে পারছি না। আকাশ ভাই কী বলব জানিনা।
অকপটে বলছি। আমি আপনারই আশায় ছিলাম। আপনি পড়ার পরেই বুঝলাম গল্পটি একেবারে খারাপ হয় নাই। তখনই নীচের এডিটিং গুলো করলাম।
গানটি শুনলাম। সিনেমাটি বিশেষ একটি বক্তব্য নিয়ে তৈরী হয়েছে নিশ্চয়। বাংলা সিনেমা আমি খুব একটা দেখিনা। ঋতুপর্ন ঘোষের হল মিস করি না। (গোপনে শুধু আপনাকেই বলি – সত্যজিত রায়ের ছবির চেয়ে ঋতুপর্ণের ছবি আমার বেশী ভাল লাগে)
আপনার পরের মন্তব্যের উত্তর পরেই দিচ্ছি।
@আকাশ মালিক,
অতি চমৎকার মধুর প্রতারণাপূর্ণ বাক্যগুচ্ছ। আমি আজই প্রথম মুক্তমনায় মতামত জানাচ্ছি। বিগত কয়েকমাস থেকে দেখে আসছি মাহফুজ মুক্তমনার একান্ত অনুরক্ত সদস্য হিসেবে নিজে মুক্তবুদ্ধির চর্চা করে আসছেন এবং যখনই বিশেষ কোনো গুরুত্বপূর্ণ লেখা পেয়েছেন সাথে সাথে, আমিসহ, তাঁর কয়েকজন সহকর্মীকে ডেকে তা পাঠ করে শুনিয়েছেন। অথচ বিগত কয়েকদিন যাবত তাঁকে ম্রিয়মাণ দেখতে পাচ্ছি, তিনি নতুন কোনো লেখা আমাদেরকে ডেকে শোনাচ্ছেন না, নতুন কোনো ভাবনার কথা বলছেন না। সত্যি এটা দু:খজনক।
যে-বিষয়কে কেন্দ্র করে উদ্ভূত এই পরিস্থিতি, সেটির পুনর্মূল্যায়নের দাবি রাখে বলে আমি মনে করি। মাহফুজ যদি মুক্তমনা পরিবারের সদস্যই হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁকে এখনো কেন বাইরে রাখা হয়েছে? পরিবারের কোনো সদস্যকে বাইরে রেখে অন্য সদস্যরা কি স্বস্থিতে সময় কাটাতে পারে? এই সিদ্ধান্তটি কি মানবিক?
কেউ যদি তাঁর ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ জনসমক্ষে উপস্থাপন করতে পারেন, তাহলে তাঁর ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা অশোভন হয় কেমন করে, তা ঠিক আমার বোধগম্য নয়।
স্বাধীন সাহেবের “খুবই অপ্রাসঙ্গিক ও ফালতু মন্তব্য। কারোর ব্যক্তিগত বিষয়ে এরকম কৌতুহল যে খুবই অশোভন সেই ধারণাটুকু যে আপনার মাঝে গড়ে উঠেনি এটা দেখে খুব হতাশ হলাম।” _ এই মন্তব্যটি কতটা শোভন তাকি তিনি নিজে ভেবে দেখেছেন? মাহফুজ সম্পর্কে তিনি এই যে মন্তব্যটি করেছেন, তাও কি শোভনতার সীমা অতিক্রম করে যায় নি? আমার মনে হয় শোভন-অশোভন, শ্লীলতা-অশ্লীলতাজাতীয় স্পর্শকাতর শব্দসমূহের সংজ্ঞা মুক্তমনা পরিবারের জন্য নতুনভাবে নির্ধারণ করা আবশ্যক। আশা করি ভেবে দেখবেন।
মোস্তাফিজ
@Mostafiz,
এই বাক্যটি সঠিক নয়। আপনি আবার পড়ে দেখুন।
আপনার উপরের মন্তব্যটি যদিও আমার উদ্দেশ্যে নয় তবুও আমিই খানিকটা উত্তর দিচ্ছি আকাশ মালিকের উক্তিটি দিয়েই
আমাদের আবেগ আছে। তাই রাগও আছে। প্রত্যেকের রাগই তার বড় শত্রু। আপনার খারাপ লাগা, রাগ, অভিমান যদি কিছু থেকেই থাকে আমাকে দিন। আমি নীলকন্ঠের মত পান করি। মুক্তমনা একটি অসাধারণ প্ল্যাটফরম। এই প্ল্যাটফরম সব কিছুর উর্দ্ধে।
আকাশ মালিকের উক্তি মুক্তমনার সব সদস্যেরই উক্তি।
আর তাছাড়া আমি চাই না আমার এই পোস্টিংটাতে কেউ মাহফুজ বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করুক। ভবিষ্যতে যদি কেউ মন্তব্য করেন তাদের জন্যও একই অনুরোধ রাখছি। আমার এটা যে একটি ভাল গল্প হয়েছে তা নিজেও বুঝতে পারিনি। আকাশ মালিক ধরিয়ে দিয়েছেন উনার দুই নম্বর মন্তব্যে। আমি এখনও উনার সেই মন্তব্যের উত্তর গুছিয়ে উঠতে পারি নি। মাহফুজ নিয়ে কথা বললে আমার গল্পটি মাটি হয়ে যাবে।
ভাল থাকুন।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
এইতো স্বাধীনতার ইতিহাস। মুক্তিযোদ্ধা হওয়া তো দূরের কথা একজন রিফিউজিও হতে পারলামনা। কি মুলফত, মাগনা একটি স্বাধীন দেশ একটি কথা বলার ভাষা পেয়ে গেলাম।
যে কষ্ট, যে মনঃব্যথা নিয়ে দেশ ত্যাগী ঘর ছাড়া রিফিউজিগণ দ্বীর্ঘ নয়টি মাস পরবাসে কাটিয়েছিলেন তাদের সেই সময়ের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে প্রকাশ করা জরুরী।
@আকাশ মালিক,
এই উদ্ধৃতিটির আসল মানে তো আমি নিজেও খেয়াল করিনি। লেখার সময় ঘটনাগুলো এবং বাপিকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। (কেউ ভুল বুঝবেন না প্লিজ যে আমি আত্মপ্রশংসায় মশগুল। আমার ভাল লাগছে আমার বোকামীর জন্য(!)। আমি নিজেই বুঝিনি যে গল্পটার সারকথা এই উক্তিটির মধ্যে।)
গীতাদি তাঁর জেঠা-জেঠিমার কথা বলেছেন। জেঠামশাই সরকারি ডাক্তার ছিলেন। উনাদের অবস্থা অনেক ভাল ছিল। তাঁদের ব্যবহারের কথা দেখুন। আমার ৩২৭ টাকা বেতনের মামা-মামীর বিশাল হৃদয়টা নতুন করে আবিষ্কার করছি।
ঐ সময়টা পশ্চিম বংগের মানুষের আর্থিক দুরবস্থা ছিল ভয়াবহ। বন্যায় সব ভেসে গেছে। চারিদিকে হাহাকার। আমার বাবার পিসতুত ভাই একদিন দশটি পয়সা দিয়ে মেয়েটিকে বললেন। “দুপুরে খাবি কী? যা ডাল নিয়ে আয়।” এই অবস্থায় আমরা রিফুজিরা কী রকম বাড়তি বোজা ছিলাম সহজেই অনুমেয়।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
তাইতো বলি দাদা, তাদের নিয়ে আরো লিখুন যারা সেদিন সাহায্য চেয়েছিলেন আর যারা সাহায্য করেছিলেন। তাদের নিয়ে আরো লিখুন যাদের কোনদিন কারো কাছে হাত পাতার কথা নয়, অথচ হাত পেতেছিলেন একটি নতুন দেশের আশায়, যেখানে মাথা পাতার কথা নয় অথচ মাথা রেখেছিলেন একটি নতুন গানের আশায়, যাদের ঘরহারা হওয়ার কথা ছিলনা অথচ গৃহহীন হয়েছিলেন একটি নতুন কবিতার আশায়।
যারা একটি নতুন পতাকা বিশ্বের মানচিত্রে এঁকে দিলে, আমি একবার
আমার মাথা নত করে দিতে চাই তাদের চরণতলে।
@আকাশ মালিক,
আপনি আমাকে গল্প লেখায় উদ্বোদ্ধ (বানানটা চোখে ঠিক লাগেছে না) করছেন। ভাল লাগছে।
ছোট ছোট অনেক গল্প আছে আমার। লেখার হাত নেই। সেটাই কারণ। আপনারা যেভাবে অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন, তাতে অনেকেই এগিয়ে আসবেন আশা করি। আপনাদের অনুপ্রেরনার জন্য হয়ত নতুন একটা দিকই খুলে যাবে মুক্তমনায়।
বোজা চোখে পড়েছিল হাতের নাগালের বাইরে যাওয়ার পরে। ঠিক করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। একটি জায়গায় “পরে”র স্থলে “পড়ে” লিখেছি।
দশকের ঘরে যাবার আগেই পাঠক হলাম আমি।
মাহফুজ সাহেবের জন্য আমিও আন্তরিকভাবে দুঃখিত। মুক্তমনার প্রতি তাঁর নিখাঁদ ভালবাসায় কারোরই কোন সন্দেহ নেই। প্রতিষ্ঠানের বৃহত্তর স্বার্থে অনেক সময়ই অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয় এর পরিচালকদের। সেরকমই এক সিদ্ধান্তের বলি হয়েছেন তিনি।
তবে এতে হতাশ বা মন খারাপের কিছু নেই। মাহফুজ সাহেব আগের মতই মুক্তমনাতে অবাধে বিচরণ করতে পারছেন। তাঁর মন্তব্য করার অধিকারও রহিত করা হয়নি, শুধুমাত্র সেগুলোকে মডারেশন পেরিয়ে আসতে হচ্ছে এই যা। আমি যদ্দুর জানি আরো অনেকই এই সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়েই মন্তব্য করতে হয়। মডারেশনের জন্য অপেক্ষমান মন্তব্যগুলোকে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে মডারেটররা মুক্ত করে দেন বলেই আমার ধারণা।
মডারেটররা নিশ্চয়ই খেয়াল রাখছেন পুরো বিষয়টিতে। যে সমস্যার কারণে মাহফুজ সাহেবের অধিকারকে কিছুটা খণ্ডিত করা হয়েছে, সেই সমস্যা থেকে তিনি উত্তরিত হলেই হয়তো আবারো তাঁর অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।