মডারেটরের নোট: ঈশ্বরহীন (সামির) আমাদের ছেড়ে অকস্ম্যাৎ চলে গেছেন, কিন্তু আমাদেরকে দিয়ে গেছেন তার শক্তিশালী লেখনীগুলো। সামির বেঁচে রইবেন আমাদের মাঝে, অগনিত মুক্তমনাদের হৃদয়ে। সামিরের স্মৃতি চির জাগরুক রাখতে তার লেখাগুলো স্মরণ করব বারে বারে। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার প্রকাশ হিসেবে আমরা তার একটি ক্ষুরধার লেখা মুক্তমনার প্রথম পাতায় পুনঃপ্রকাশ করছি। |
:line:
এ যাবত কালে বোরখা বা পর্দা প্রথাকে নিয়ে বিশ্বে যত বিতর্ক-সমালোচনার জন্ম হয়েছে তার সবখানেই বোরখা-হিজাব-পর্দা বিষয়টি শুধুমাত্র সামাজিক দৃষ্টিকোন থেকে বিচারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। জেলখানার কয়েদীদের মতো নারীদের পর্যাপ্ত আলো-বাতাস থেকে বঞ্চিত করে শারীরিক নিপীরন চালানোর ফলে তাদের দেহে যে সকল গুরুতর সমস্যার জন্ম হয় তা বেশীরভাগ মানুষের কাছে আজও উপেক্ষিত ও অজানা। তাই আমি পুরো লেখাটিতে সামাজিক জীবনে পর্দাপ্রথার অপ্রয়োজনীয়তা প্রমানের সাথে সাথে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে বোরখার ক্ষতিকর দিক গুলো সকলের সামনে তুলে
ধরার চেষ্টা করব। প্রাসাঙ্গিক কারণে কখনো কোন অশ্লীল বিষয় চলে আসলে তা যৌক্তিক বিচারে গ্রহন করার জন্য সকলের নিকট অনুরোধ রইল।
প্রসংগঃ বোরখা ও ভিটামিন “ডি”
“পুরুষদের তুলনায় নারীদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর চাহিদা অনেক কম। বোরখা ব্যাবহারের ফলে নারীরা সূর্যের আলো থেকে রক্ষা পায় যা কিনা তাদের শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিন ডি এর উৎপাদন রোধ করে, যে অতিরিক্ত ভিটামিন ডি নারীদেহের জন্য মারাত্ত্বক ক্ষতিকর।’’
পর্দা প্রথার সপক্ষে মুসলমানদের এমন বৈজ্ঞানিক দাবির কথা কয়েক মাস আগে মুক্তমনারই কোন এক সদস্যের কাছ থেকে জানতে পারি। বোরখা সংক্রান্ত এই লেখাটি তৈরী করার সময় মুসলমানদের এই দাবীটির গ্রহন যোগ্যতা কতটুকু তা অনুসন্ধান করতে গিয়ে হাতে এমন সব তথ্য এসে পড়ল তা দেখে সতিই মাথা ঘুরে যাওয়ার উপক্রম। “লাগাতার প্রচারের ফলে মিথ্যাও গন-মানুষের কাছে সত্য হয়ে ওঠে’’- প্রতিক্রিয়াশীল মুসলমানেরা মনে হয় তাদের হাজার বছরের পুরানো অমানবিক সব রীতি-নীতিকে আধুনিক সমাজের কাছে গ্রহনযোগ্য করে তুলতে আজকাল বোমা-বারূদের সাথে সাথে এই নীতি মেনে মাঠে নেমেছে। আসুন আর কথা না বাড়িয়ে এবার আমরা প্রকৃত সত্যের দিকে একটু বিস্তারিত ভাবে আলোকপাত করি।
পুরূষদের তুলনায় নারীদের শরীরে কম ভিটামিন ডি প্রয়োজন -এটি একটি সম্পূর্ন মিথ্যা ইসলামী প্রোপোগান্ডা, বরং প্রকৃত সত্যটা ঠিক এর উল্টো। মেয়েদের গর্ভকালীন সময়ে বিশেষ করে শিশুর হাড় তৈরী হওয়ার পিরিওডে নারীদের পুরুষেদের থেকে অনেক বেশি পরিমান ভিটামিন ডি এর দরকার হয়। আর মাত্রারিক্ত যে কোন উপাদানই প্রানীদেহের জন্য ক্ষতিকর, তবে শুধুমাত্র সূর্যের আলো থেকে শরীরে মাত্রাধিক ভিটামিন ডি এর উৎপত্তি কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়।
সুস্থ শরীরের জন্য প্রতিটি মানুষের, একটি নির্দিষ্ট পরিমান সূর্যালোক প্রতিদিন প্রয়োজন। স্বাভাবিক আবহাওয়ায় সুর্যের আলো আমাদের চামড়ার মধ্যে বিদ্যমান তৈল-এ ভিটামিন ডি তৈরী করে থাকে, যেটা পরবর্তীতে হাড়ের গঠনের জন্য ক্যালসিয়ামকে বৃহৎ আকারে সাহায্য করে।
বোরখা এবং বেশীরভাগ সময় ঘরে থাকার কারনে অধিকাংশ পর্দাশীল নারীদের শরীরে osteomalacia বা “bad bones” নামক মারাত্তক রোগের সৃষ্টি হয়ে। এছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাবে শরীরে osteoporosis (হাড়ে ছেদ), depression (অবসাদ), heart desease( হৃদ রোগ) , strode, cancer, diabetes, parathyroid problems, immune function, weight loss(ওজন হ্রাস) এর মতো মারাত্তক মারাত্তক সব রোগের জন্ম হয়। নিয়মিত বোরখা পরিহিত নারীরা ভিটামিন ডি ও মেলাটোনিন ( melatonin) এর অভাবে হাড় ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যার সাথে সাথে নিজেদের ত্বকে বিশুদ্ধ বাতাস প্রবেশের থেকেও বঞ্চিত হয়। যার ফলে ত্বক তার স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস চালানোর সুযোগ থেকে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে থাকে, যেটা কিনা মানব শরীরের সবথেকে বড় ইন্দ্রিয়।
প্রায় এক যুগ আগে বিখ্যাত nutritionist, Adele Davis লিখেছিলেন:
Osteomalacia this disease its name literally means bad bones… results primarily from a severe vitamin-D deficiency. Arabian and Indian women who keep themselves havily veiled frequently develop such painful backs that they can scarcely rise, and they suffer multiple spontaneous fractures and have extremely rarefied bone, all of which clears up dramatically when vitamin D is given them.”(Davis, Let’s Get Well, p.256.)
একই বিবেচনা থেকে In deficient sunlight in the aetiology of oseromalacia in muslim women, Dr, OP Kapoor বলেন:
“…In most of the Sunni Muslim women (who form majority of the muslims), in spite of high intake of calcium, osteomalacia is often seen. There are two reasons for this:
1. Use of burkha which prevent sunlight reaching the skin.
2. Living indoors- most of the muslim women specially those staying in the muslim localities, do not move out of the house and thus are not exposed to the sun and often develop osteomalacia.”
ভিটামিন ডি উৎপাদনের পাশাপাশি সূর্যের আলো মানব দেহের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন কার্য সাধন করে থাকে। যেমন এটা চোখের মধ্য দিয়ে আমাদের শরীরে পৌছে সেখানে হরমোন মেলাটোনিন তৈরী করতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। যে সমস্ত নারীরা সম্পূর্ন বোরখা (চোখের ওপর পাতলা কাপড়) পরিধান করে থাকে তারা শরীরকে এই প্রয়োজনীয় কেমিকেলটুকু সরবরাহ করতে অনেকটা বঞ্চিত হয়, যেটা কিনা মানুষের স্বাভাবিক ঘুম ও মানষিক প্রশান্তির জন্য খুবই দরকারী। শুধুমাত্র ভিটামিন ডি এবং মেলাটোনিন সাপ্লিমেন্ট ব্যাবহার করে কখনোই সুর্যের আলোর মতো শরীরের জন্য অন্যান্য কার্যকারী সুবিধা গুলো পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব না যেকারনে সাপ্লিমেন্ট কখনই আমাদের শরীরের জন্য পুরোপুরি সঠিক সমাধান নয়।
প্রথমদিকে বাজারে যে সমস্ত সানস্কিন লোশন পাওয়া যেত সেগুলোও একই ভাবে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরীর ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাড়াতো। কিন্তু এখন ওগুলোকে এমন বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরী করা হয় যে তা ত্বকে লাগানোর পরও সূর্যের প্রয়োজনীয় ওয়েভ লেন্থ টুকু সহজেই আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। তবে সব থেকে দুঃচিন্তার বিষয় হল শরীরে একই পরিমান ভিটামিন ডি তৈরী করার জন্য সাদা চামড়ার মানুষদের চেয়ে কালো বা শ্যাম বর্নের মানুষদের অধিক সুর্যের আলোর প্রয়োজন হয়, কিন্তু সেখানে অধিকাংশ শ্যাম বা কালো বর্নের নারীরাই হল এশিয়া ও আফ্রিকায় বসবাসরত মুসলিমগোষ্ঠির, যারা কিনা দিনের বেশির ভাগ সময়ই ঘরের মধ্যে কাটাতে পছন্দ করে আর বেরোলেও বোরখার সাথে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার মতো অতি উষ্ণ আবহওয়ার দেশ গুলোতে নীল ও কালো রঙের মতো অধিক ব্যবহৃত বোরখাগুলো সন্দেহহীন ভাবে সেখানকার নারীদের হিট স্টোকের প্রধান কারন হিসাবে কাজ করে থাকে।
নরওয়েতে সূর্যের আলোর অভাবে ওখানকার বেশিরভাগ মানুষের শরীরেই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি রয়েছে, যে ঘাটতি খাদ্যে ভিটামিন ডি এর সাপ্লিমেন্ট দিয়েও পুরোতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর এই ঘাটতির পরিমানও আবার অন্য নরওয়েয়ানদের চেয়ে ওখানে অবস্থানকারী পর্দাশীল মুসলিম নারীদের শরীরে তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি। তাই ওখানকার ডাক্তারেরা বাধ্য হয়ে এরুপ রোগীদের উদ্দেশ্যে প্রায়ই বলে থাকেন “বাচতে চাইলে এখনি বোরখা খুলুন!”
প্রসংগঃ পর্দা নারীদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ও নারীকে পুরুষের কুদৃষ্টি থেকে রক্ষা করে।
১) পর্দা প্রথা নারীদের জন্য যতটা অবমাননা জনক, পুরুষদের জন্য ততটাই অপমানকর। নারী দেখলেই পুরুষ কামাষাক্ত হয়ে পড়ে কিংবা তার কুদৃষ্টি দিয়ে সামনে থাকা নারীকে মানষিক ভাবে ভোগ করতে থাকে, ইসলামের এমন দাবী সত্যিই অসুস্থ । কারো সৌন্দর্যে মুগ্ধ হওয়া আর যৌন উত্তেজনা অনুভব করা কখনোই এক কথা নয়, যা কিনা নারী পুরূষ উভয়ের ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে।
২) নারীকে কোন পোষাকে দেখলে পুরুষ উত্তেজনা বোধ করবে তা একান্তই নির্ভর করে সে ব্যক্তিটির সামাজিক পরিমন্ডলের ওপর। যে কারণে কো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছেলেরা সহজ ও স্বাভাবিক ভাবে মেয়েদের সাথে ওঠা-বসা করতে পারে, যেটা আমাদের সমাজের অনেকের কাছেই হয়তো দুরুহ ব্যাপার। আর যদি এই একই তুলনাটা করা হয় কোন গ্রাম বা মফস্বলের মাদ্রাসা আর রাজধানীর কোন নামধারী ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্রদের মধ্যে সেক্ষেত্রে বৈষম্যটা আরো প্রকট ও দৃশ্যমান হবে। ছোটবেলা থেকে এক সাথে পড়াশুনা, খেলাধুলা, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপচারিতা করতে করতে বেড়ে ওঠার কারণে সেখানকার ছেলেদের নারী বিষয়টির প্রতি তেমন কোন বিশেষ কৌতুহল থাকে না, যেটা অন্য অনেকের মধ্যে দেখা যায়। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বতা আর সহযোগীতা-সহমর্মিতা সমাজের আর বাকি দশটা সম্প্রর্কের মতোই নারী-পুরুষের সম্পর্কেও সুস্থ-স্বাভাবিক রূপ দেয়। তাই বিশ্বনবীর (মোহাম্মদ) মত শুধুমাত্র বিপরীত লিংগ হওয়ার দরুন সেখানকার ছেলে-মেয়েরা সাধারণত একে অন্যের প্রতি কোন বিশেষ আকর্ষণ বোধ করে না।
আবার সামাজিক মুল্যবোধ পাল্টানোর সাথে সাথে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন হয়। তাইতো দেশে থাকলে সাধারণ জিন্স টি-শার্টে কোন মেয়েকে দেখলেই চোখে লাগতো, বিদেশের মাটিতে অতি ছোট কাপড়ের কেউ গা ঘেষে হেটে গেলেও সেটা কেউ লক্ষ্যই করেনা। কারণ এখানকার পরিবেশে এটাই মেয়েদের স্বাভাবিক পোষাক, যেমনটা আমাদের দেশে থ্রি-পিস। একই ভাবে মেয়েদের মোটর বাইকের পেছনে এক পাশে দু’পা একত্র করে বসাকে আমরা শালীনতা মনে করলেও এখানকার মানুষজন এটাকে সার্কাসের উৎপাটং কসরত ছাড়া আর কিছুই ভাববে না।
শালীনতা বলতে হয়তো ইসলামে ভিন্ন কিছু বুঝায়। তাইতো মুহাম্মদ বিবাহের(জয়নব) মাধ্যমে কারো(যায়েদ) বিগতা স্ত্রীকে তার মায়ের স্থানে বসিয়ে, “মা” শব্দটিকে পৃথিবীর সবথেকে নোংরা অশ্লীন শব্দে পরিনত করার পরও ইসলামের পক্ষ থেকে দাবী তোলা হয় এটি নাকি পৃথিবীর সবথেকে শালীন ধর্ম, এর জীবন-বিধান পৃথিবীর সবচেয়ে শালীন জীবন-বিধান! কোন ছেলে-মেয়েকে এক সাথে দেখলেই মোল্লারা গেল গেল বলে চিৎকার জুড়ে দেয় অথচ ইসলামী বিবাহপ্রথানুযায়ী বন্ধুত্বহীন ভালবাসাহীন পরিচয়হীন নারী্র শরীরের ওপর(পুরুষের) প্রথম অন্ধকারে ঝাপিয়ে পড়াটা তাদের চোখে বন্য অশালীন বলে ধরা পড়ে না।
এ বিষয়গুলো আরো ভালভাবে উপলব্ধি করার জন্য আমাদের বাঙ্গালি সমাজের সাদামাটা চেহারার যে কোন থ্রি-পিসধারী মেয়েকে উদাহরণ হিসাবে নেওয়া যেতে পারে। ঢাকা শহরে রোজকার চলার ভীড়ে যার স্তন পিঠ ঘেসে চলে গেলেও শরীর বিন্দু মাত্র শিহরণ বোধ করে না। অথচ এই মেয়েটিকেই তার রোজকার স্বাভাবিক পোষাকে বোরখা-হিজাবী কোন কঠোর পর্দাশীল ইসলামী সমাজে ছেড়ে দেওয়া হলে বোরখা-হিজাবের ভিড়ে মুহুর্তেই সেখানকার পুরুষদের কাছে সে-ই সব থেকে উত্তেজক নারীতে পরিণত হবে। তদ্রূপ খোলা চেহারার কোন সাধারণ হিজাব পরিহিত নারীকে একদল হাত-মোজা, পা-মোজা আর বোরখা নিবিষ্ট নারীদের মাঝে দাঁড় করিয়ে দিলে তুলনামূলক পোষাকি বৈষম্যের কারণে সেখানে অবস্থানকারী বিপরীত লিঙ্গের কাছে ঐ সময়ের জন্য আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে, যা কিনা পশ্চিমা কিংবা আমাদের স্বাধারন সাধারণ বাঙ্গলি সমাজে কখনো চিন্তাও করা যায় না।
এবার আসুন আমরা এমন একটি কাল্পনিক সমাজের কথা চিন্তা করি যেখানে কোন এক বিশেষ কারণে এক যুগের চেয়েও দীর্ঘ সময় ধরে নারীদের উপস্থিতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পানিহীন ধু ধু মরুভুমির মতো, নারীহীন সেই সমাজ। তার যে প্রান্থেই ছোটা হোক না কেন শুধু পুরূষের অস্থিত্বই নজরে পড়বে। নারী যেন সেখানে পুরোপুরি বিলুপ্ত কোন প্রাণী। এমন স্থানে যদি কোন সন্ধ্যায় হটাৎ করে বোরখা পরিহিত কোন কঠিন পর্দাশীল নারীর আবির্ভাব ঘটে তবে তাকে ঘিরে পুরুষদের মধ্যে কেমন উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে একবার চিন্তা করে দেখুন। পুরুষদের কুদৃষ্টি থেকে রক্ষা করার বদলে ঐ বোরখাই হবে পুরুষদের যত উত্তেজনার কারণ, যা কিনা স্পষ্ট ভাবে নির্দেশ করে চলেছে পর্দার আড়ালের মানুষটি একটি নারী, তোমাদের দ্বিতীয় লিঙ্গ। বোরখার বদলে বব চুল আর জিন্স-সার্টে থাকলে মেয়েটি হয়ত পুরুষের বেশে সকলকে ধোকা দিয়ে সে বারের যাত্রায় সহজেই রক্ষা পেত কিন্ত তা না হওয়ায় যুগ-যুগ ধরে চাপা থাকা কামনার স্রোতে তার কি পরিণতি ঘটবে তা হয়তো সৃষ্টিকর্তা আল্লাহই ভাল বলতে পারবেন।
৩) “পর্দা নারীর মর্যাদা বৃদ্ধি করে” -পর্দা প্রথার সপক্ষে মুসলমানেদের সব থেকে উচ্চারিত এই অদ্ভুত ধ্বনিটি বেশী শুনতে পাওয়া যায়। বোরখাকে নারী দাসত্বের প্রতীক উল্লেখ করে ফরাসি সরকার সম্প্রতি সেখানে বোরখার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, আইন অমান্য করলে আছে মোটা অঙ্কের জরিমানা। এখন এটাকে যদি কোনো মুসলমান ফরাসি সরকারের মর্যাদা প্রর্দশনের নিজস্ব কায়দা মনে করেন সেক্ষেত্রে আমার সত্যি তাকে বোঝানোর কিছু নেই। মানুষের মেধা, কার্যকালাপ, আচার-ব্যাবহার প্রভৃতির বদলে শুধুমাত্র পোষাকি বিচারে কারো মর্যাদা নির্ধারণ করা চরম মূর্খামি ছাড়া কিছু নয়, সেখানে নারী পরাধীনতার চিহ্ন বহনকরে এমন একটি বিশেষ পোষাক কিভাবে মর্যাদার স্মারক হতে পারে তা বুঝে ওঠা দায়। সম্মান দেওয়া তো দূর বরং বোরখা পরিহিত কোন নারীর কাছাকাছি বেশিক্ষণ দাঁড়াতে আমার খুবই অস্বস্তি বোধ হয়, বিশেষ করে বোরখাওলীটি নিকটাত্বীয়া কেউ হলে। মনে হয়, প্রকাশ না করলেও সামনে থাকা নারীটি ভেতরে ভেতরে আমার সম্পর্কে একটি নিচু ধারণা পোষন করে আছে, তাইতো আমার কাছ থেকে নিজেকে বাঁচাতে তার বোরখার মতো এমন কুৎসিত একটি আয়োজন। পুরুষজাতি সম্পর্কে তাদের গড়পড়তা নোংরা দৃষ্টিভঙ্গী রাখার প্রত্যুত্তরে কোন বোরখাওয়ালী দেখলে অন্তরে ঘৃণার জন্ম রোধ করতে পারি না, ভেতর থেকে বমি উগড়ে ওঠে। যদি প্রশ্ন রাখা হয় স্বয়ং নবীপত্নীদের মধ্যে সব থেকে মর্যাদাশীল নারী কে ছিলেন, তবে সবার আগে কোন বিশেষ নামটি উচ্চারণ করা উচিত হবে বলে মনে করেন? খাদিজা নামক সেই মহীয়সী নারীর যে আত্ননির্ভরশীল চরিত্র কিনা আজকের মতো আধুনিক সমাজেও বিরল, দাসীতো দূরে থাক যাকে অন্য নবী-পত্নীদের মতো কখনো সতীনদের সাথে বিছানা ভাগাভাগি করতে হয়নি, ঘরের সম্রাজ্ঞী বনে অন্ধকার কোণে সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র হিসাবে পড়ে থাকতে হয়নি, বিশ্ব জননীর যন্ত্রনা নিয়ে একাকী স্বামীহারা জীবন কাটাতে হয় নি, নিজের ভাত-কাপড়ের জন্য কখনো স্বামীর মুখ চেয়ে থাকতে হয় নি, সর্বোপরি নারী অবদমনের ইসলামী চক্রান্তকে জীবনে একটি বারের জন্যও গায়ে মুড়তে হয়নি! নাকি শুধুমাত্র গায়ে বোরখা জড়ানোর দরূন আয়েশা, হাফসা, সফিয়ার মতো মুহাম্মদের ভোগ লালসার শিকার অসহায়-নিপিড়িত-ধর্ষিত সে সব নারীদের অধিক মর্যাদাশীল মনে করবেন, যাদের কাছে বিবি খাদিজার মতো জীবন যাপন স্বপ্নেও অধরা ছিল। তাই কোন নারী জোব্বা না বিকিনি পড়ে আছে সে দিকে নজর না দিয়ে সমাজ-সভ্যতা সম্পর্কে তার অবদানটুকু বিচার করে বিনা লৈঙ্গিক বিভাজনে প্রাপ্য মর্যাদাটুকু প্রদান করাই হবে বিচক্ষণতা আর সুবিবেচনার লক্ষণ। তবেই কিনা নারী প্রকৃত মানুষের মর্যাদায় অলংকৃত হবে।
৪) বোরখার মতো কোন বিশেষ পোষাক কি নারীর নিরাপত্তা প্রদান করতে আসলেই সক্ষম? পৃথিবীর ইতিহাসে কি বোরখা-হিজাবে মোড়া কোন নারী কখনো ধর্ষিত হয়নি? হয়ে থাকলে ধর্ষণকারী পুরুষেরা তাদের কি দেখে উত্তেজিত হয়েছিল? কেন তখন সে বিশেষ ইসলামী পোষাক নিরাপত্তা প্রাচীর হয়ে হিজাবধারী নারীদের সম্মান রক্ষা করতে পারল না? পৃথিবীর সব থেকে বোরখা আক্রান্ত মুসলিম রাষ্ট্রটিতে যদি সরকারের পক্ষ থেকে ধর্ষণের জন্য সব রকম শাস্তির ব্যাবস্থা তুলে ফেলা হয় তবে কালো, হলূদ, সবুজ নীল কোন জিরিঙ্গা রঙের বস্তার কি সাধ্য থাকবে নারীকে ধর্ষিত হওয়া থেকে রক্ষা করার, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার?
৫) আল্লাহর বিচারে নারীকে তার নিজের ভাই-বোনের ছেলেদের সামনে পর্দা করার কোন প্রয়োজন না থাকলেও স্বামীর ভাই-বোনের ছেলেদের সামনে পর্দা করার বিধান রয়েছে। তবে কি মুসলমানরা তাদের ফুফু খালাকে দেখে মায়ের দৃষ্টিতে আর চাচী মামীকে বউয়ের দৃষ্টিতে? আর মামা-চাচা? শুধুমাত্র ইসলামের মতো কোন পুরোপুরি বিকারগ্রস্থ সংস্কৃতির মানুষদের পক্ষেই নিজের পরিবার সম্পর্কে এমন অসুস্থ দৃষ্টিভঙ্গী পোষণ করা সম্ভব।
৬) ইসলামে যেখানে আপন মামা-চাচার মতো অতি ঘনিষ্ট রক্তের সামনে পর্দা রক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সেখানে কেন দাসদের সামনে নারীর পর্দা রক্ষার কথা বলা হল না, সে দাস পুরুষ হলেও? ইসলামের বিচারে দাসেরা কি অন্ধ, নপুংসক না যৌন অনুভূতিহীন?
৭) ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে মানুষের মানষিক ও শারিরিক বিকাশ ভিন্ন ভাবে হয়। সেক্ষেত্রে বাচ্চা ছেলে বলতে কোন বয়স বোঝানো হবে?
৮) যত গুণী তত মতের মতো বোরখা বা হিজাবের বাহ্যিক গঠন নিয়েও মোল্লা মহলে যথেষ্ট মতভেদ আছে। কারো মতে নারীদের পুরো বস্তায় পুরা উচিত, কেউ আবার কেউ বলে গোটা মালটাকে বস্তায় পোড়ার প্রয়োজন নেই।শুধু হাত-মুখ-চোখ খোলা রেখে আগা পাছা তলা ছালা দিয়ে মুড়ে দিলেই চলবে!
তাইতো জাকির মোল্লার লেকচারে এমন হিজাবী মহিলাদেরই বেশী দেখা যায়। সেক্ষেত্রে বোরখার প্রকৃত রূপ কেমন হওয়া উচিত? আবার এসব হাত-মুখ-চোখ খোলা বোরখাগুলো কুরানের হিজাবী আয়াতের সাথে কতটা সামাঞ্জস্যপুর্ণ সেখানেও একটা প্রশ্ন প্রশ্ন থেকে যায়।
৯) কুদৃষ্টিতে তাকানো তো দূরের কথা, সমকামীদের বিপরীত লিঙ্গের প্রতি বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই তা সে যতই আকর্ষণীয় হোক না কেন তাহলে এদের সামনে নারীর পর্দা রক্ষার প্রয়োজন কি? আর মুষ্টিমেয় কিছু পুরুষ সমকামীদের কুদৃষ্টি থেকে বাঁচতে আমাদের পুরুষদেরও কি বোরখা মুড়া দিয়ে থাকতে হবে আর নারী সমকামীদের সামনে নারীদের?
১০) নারীরা কি সালমান, টমক্রুসের মতো সুদর্শন ছেলেদের দেখে কখনোই বিন্দুমাত্র আকর্ষণ বোধ করে না? নাকি এই স্বাভাবিক অনুভূতিটুকুও পুরুষতান্ত্রিক আল্লাহপাক শুধুমাত্র তার সমলিঙ্গের পুরুষদের জন্য শুধুমাত্র বরাধ্য করেছেন? যদি তাই হয়ে থাকে তবে, লজ্জার বিষয় হলো মহান আল্লাহ পাকের সেই পবিত্র আইন ভেঙ্গে, নারীদের হাতে পুরুষের ধর্ষণ হওয়ার ঘটনা পৃথিবীতে বিরল হলেও একেবারে অস্তিত্বহীন নয়। ‘’female sex offender’’ কি ওয়ার্ডটি দিয়ে গুগল এ সার্চ দিলেই এর একটা লম্বা লিস্ট পাওয়া যাবে, যার বেশীর ভাগ শিকার টিন এজ কিশোরেরা। শুধু তাই নয়, খোদ পাকিস্তানের মতো রক্ষনশীল ইসলামিক রাষ্ট্রেও এমন female sex offence এর উদাহরণ রয়েছে।
তাই সব দোষ পশ্চিমের বেলাল্লা নারীদের ওপর চাপানোরও কিছু নেই। এত কিছুর পরে একটা প্রশ্ন কিন্ত থেকেই যাচ্ছে, নারীদের কুদৃষ্টি থেকে বাচতে পুরুষদের ওপর বোরখার বিধান রেখে সমপন্থা অবলম্বনের বদলে কুরানে তাদেরকে(পুরুষ) আধা-নাঙ্গা (ইসলামে পুরুষদের শালিন পোশাক হিসাবে শুধু নাভি থেকে পায়ের গোড়ালির ওপর পর্যন্ত ঢাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে) অবস্থায় পৃথিবীতে ঘুরপাক খেতে বলা হলো কেন ?
১১) যে আল্লাহ নগ্ন ভাবে পৃথিবীতে মানুষ প্রেরণ করেছিল, তার হঠাৎ করে নারীর নগ্ন উরু দেখে বিচলিত হওয়ার কারণ কি? মুহাম্মদের পুর্বকার নারীদের কি বেপর্দা থাকার জন্য শাস্তি পেতে হবে?
১২) একটি সামান্য ছুতা দিয়ে দুনিয়ার অর্ধেক মানুষকে বস্তাবন্দি না করে আল্লাহ তো চাইলেই বিপরীত লিঙ্গের কারো দিকে কুদৃষ্টিতে না তাকানোর নির্দেশ আর কঠোর শাস্তির বিধান রেখে এর একটি সহজ ফয়সালা করতে পারতেন। মুহাম্মাদও এর জন্য তার আনুসারীদের নিকট আহ্ববান রাখতে পারতেন, বিদায় হ্বজে যেমনটা রেখেছিলেন দাসদের প্রতি স্বদব্যবহার করার জন্য। তা না করে মশা মারতে কামান দাগানো হল কেন? আর খোলামেলা নারী অপকর্ম ঘটানোর জন্য পুরূষের মনে ইন্দন যোগাতে পারে, এই হাস্যকর যুক্তিটি মেনে নিলে তো খাবার-দাবার, জামা-কাপড়, স্বর্নালঙ্কার, বাড়ি-ঘর, উড়োজাহাজ সহ পৃথিবীর তামাম জিনিষই কাপড় দিয়ে মুড়ে রাখা উচিত যাতে দেখার পর মানুষের মনে ওসবের জন্য অভাববোধ না জন্মে, কেননা পরে তা মেটানোর জন্য অনেকেই অনেক রকম অসৎ পন্থা অবলম্বন করে থাকে। বিশেষ করে আমাদের মতো যে সব দেশে ক্ষুধার্ত আর বস্ত্রহীন মানুষের ছড়াছড়ি সেখানে তো খাদ্য-বস্ত্রের ওপর পর্দা ব্যাবস্থা নারীদের থেকেও বাধ্যতামুলক করা উচিৎ!
১৩) বিনা পর্দা-রক্ষার অপরাধের জন্য নবীপত্নীদের ওপর দ্বিগুন শাস্তির বিধান রাখা হল কেন? তারা কি দিন-দুনিয়ার সকল নারীদের থেকে দ্বিগুন সুন্দরী না দুশ্চরিত্রা ছিলেন?
১৪) সুন্দরী বোরাকের পিঠে চড়ে অক্সিজেন বিহীন বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে নিতে আর বায়ুহীন আকাশে প্রশস্ত দু’ডানা বজ্র শক্তিতে ঝাপটাতে ঝাপটাতে আলোর থেকেও দ্রুত গতিতে মুহাম্মদ যখন দোযখের দ্বার প্রান্তে পৌছাল নরকের ক্ষুধার্ত শয়তান তখন ডিনারের জন্য কয়েকজন অপরেযগার নারীকে আগুনে ছেকে সিক কাবাব বানাতে ব্যাস্ত। এসব নারীর অপরাধ কি জানতে চাইলে উত্তর আসে এরা…………
উত্তরটি শুনা মাত্র আমার মতো মহা বেকুবের মনে এখন যত গুলো প্রশ্ন আসছে তার একটাও কেন হযরতের মতো মহা জ্ঞানীর মনে তখন উদয় হল না? আসলে যে শষ্যের ভেতরই ভূত রয়েছে সেই শষ্য অন্যের ভূত ছাড়াবে কি ভাবে? তেমনি মুহাম্মদ নিজেই রূপকথার মেরাজের রূপকার ছিল বলে প্রশ্ন করা তো দূর বরং অন্যদের প্রশ্নবাণে নিজের জর্জরিত হতে হয়েছে। আজকের দ্বিগ বিজয়ী দ্বিগবিজয়ী আধুনিক নারীরা, নারী-দাসত্বের সবচেয়ে বড় প্রতীকটিকে গায়ে জড়ানোর আগে একবার কি ভেবে দেখবেন দোযখে যে নারীদের দেখে বোরখা প্রথা চালু করা হল রোজ হাসরের আগে তারা দোজখে আসল্ কি ভাবে? তাহলে কি আল্লাহ বসে বসে বিরক্ত হয়ে কিয়ামতের আগেই মানুষকে শাস্তি দেওয়া শুরু করে দিয়েছেন? যদি তা না হয় তবে কি এরা ভিন্য গ্রহের অন্য মানুষ? তার মানে আমরাই প্রথম মানুষ নই আল্লাহ এর আগেও এক বা একাধিক দফা মানুষ সৃষ্টি করেছেন? তবে আবার নতুন করে আল্লাহর মানুষ সৃষ্টির কামনা জাগলো কেন? এত হাবিজাবি কথা আর এক আয়াতের একাধিক পুনরাবৃত্তি দিয়ে কুরানের পাতা ভরা হলেও এমন গুরুত্বপূর্ন তথ্যগুলো জানাতে আল্লাহ ভূল করলেন কিভাবে? আর আল্লাহ পাক নিশ্চয়ই এতটা অবিবেচক হবেন না যে আগে থেকে বোরখা পড়ার জন্য নির্দেশনা না দিয়ে হটাৎ করে একদিন তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন? তবে সে নির্দেশনা তাদের কি ভাবে দেওয়া হয়েছিল কুরানের মতো কোন মহা গ্রন্থ পাঠিয়ে? তেমনটা হলে সে আসমানি কিতাবের নাম কি আর কার উপরই বা তা নাজিল হয়েছিল? সব মানূষের জন্যই আল্লাহর জীবন বিধান এক হওয়া উচিত, তবে কি সেখানেও কুরান পাঠানো হয়েছিল? যদি তাই হয় তবে কুরানের মুহাম্মাদ সংক্রান্ত অজস্র আয়াতগুলো সেখানে কি কাজে আসবে? উউফ এ সংশয়বাদীর প্রশ্ন যে আজ আর শেষ হবার নয়……
অসাধারন লেখা। এত চমতকার করে সব তথ্যগুল সজান দারুন লেগেছে।এরকম লেখাকি আর আছে?
লেখাটি পূর্বে দেখেছিলাম। মনে পড়ছে খুব দ্রুত চোখ বুলিয়ে নিয়েছিলাম। ভালো করে পড়া হয়নি তখন…
আজকে পড়তে গিয়ে দেখি লেখাটির দিকে তাকাতে পারছি না। বারে বারে তার মুখচ্ছবি ভেসে উঠছে। মনে পড়ছে ফোনালাপের কথা।
উজানস্রোতের যাত্রী সামির, কেন এত অভিমান তৈরি হল, কেনইবা এত আশাহত হলে জীবনের প্রতি…
কত দুর্গম পথ পাড়ি দেবার জন্য তৈরি হচ্ছিলে, তার আগেই কেন ঝড়ে যেতে হল? কিছুই কি করার ছিল না বিকল্প…?
আমি সামিরের লেখা-লেখির সাথে পরিচিত নই। মুক্তমনার মাধ্যমে তার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে, পুনঃপ্রকাশিত ” বোরখা সংক্রান্ত কিছু বেয়াড়া প্রশ্ন” পড়ে চোখের পাতা ভারী হয়ে গেল। এমন মেধাবী-মননশীল-কৌতূহলী, প্রখর যুক্তিবোধ সম্পন্ন একজন অগ্রসর চিন্তার মানুষ আমাদের মাঝে নেই।
চোখের জলে ভাসতে ভাসতে
মৃত্যু নয়, একটুখানি আলো
আনন্দ, চলে এসো
‘অন্ধকার কবরের পাশে’।
@বিপ্লব পাল, একদমই ঠিক কথা। একটি মুসলিম মেয়ে ধর্মের কারনে বরখা পরে না। এটি পরার মাধ্যমে সে তার স্বামীর কাছে এবং সামাজিক পরিমণ্ডলে নিজের পবিত্রতা ফুটিয়ে তুলতে চায়। কিন্তু এটা আসলে একটা মানসিক ব্যধি যা ধর্মের নামে চলছে। “মেয়েদের ওপর অধিকার-অর্থাৎ গর্ভের ওপর অধিকার রাখার আদিম পুরুষালী বাসনা। আমেরিকাতে অতটা পারে না-কারন এখানে ওসব জোর করে করলে পুলিশ জেলে দেবে।”
অসাধারন যুক্তিপূর্ণ একটা লেখা…
ঈশ্বরহীনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা… :guru:
সামিরের এই চমৎকার লেখাটি আবারো পড়লাম, এবং অভিভূত হলাম। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা (F)
@অভিজিৎ,
ঈশ্বরহীনের বাকি কয়েকটা লেখা পড়ে মনে হল,
কৃত্রিম সুনামী – স্রষ্টা আমেরিকা নিয়ে তিনি যে মজাটি করতে চেয়েছিলেন আমরা তা বুঝতে পারিনি।
তাঁর লেখা, চিন্তা এবং স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপণ করছি।(F)
আগেই পড়েছিলাম। মন্তব্য করতে পারিনি। ফেসবুকে একটা গ্রুপ আছে, সেখান থেকে প্রায়-ই মজার মজার মেইল আসে। আমি যত্ন করে সেভ করি রাখি সেগুল। সেই মেইলটাই তুলে ধরি।
হাউ থটফুল :-X :-X :lotpot: :lotpot:
@আনাস,
এটাই সমস্যা। অনেক মুসলমনই নারীকে টাকার মত বা তার চাইতে মূল্যবান %
@আনাস,
এটাই সমস্যা। অনেক মুসলমনই নারীকে টাকার মত বা তার চাইতে মূল্যবান মনে করে, কেবল নূন্যতম মানুষের মূল্যটুকু দিতে নারাজ। সব পুরুষ প্রধান সমাজেই নারীকে একটা পন্যের চেয়ে বেশী কিছু মনে করা হয় না। পুরুষ প্রধান সমাজের একটা বড় স্তম্ভ হিসাবে মুসলমানরাও এর ব্যাতিক্রম না।
@আনাস,
নারীকে পণ্য বানানোর দর্শন থেকেই বোরখার উৎপত্তি। এর বিপরীত দর্শনেই বোরখার বিনাশ হতে পারে।
* সংশোধনী: পণ্য= ভোগ্যপণ্য।
যে ধর্মে পুরুষরা পরাজিত জাতি-তারাই মেয়েদেরকে বেশী ঘরে ঢোকায়। সেই ধর্ম বেশী আচার সর্বস্বয় হয়। এটা ইতিহাসের গতি-বিবর্তন জনিত কারন ও থাকতে পারে।
প্রথমত বোরখার সাথে ইসলামিক কিছু নেই। ইসলামের জন্মের বহু বছর আগে মধ্য প্রাচ্যের প্যাগান জিউ সবার মধ্যেই বোরখার প্রচলন ছিল।
ইসলামের বিজয় সূর্য্য যখন মধ্য গগনে -ধরুন মুঘল সাম্রাজ্যের সময় মুসলিম মেয়েদের বোরখা পড়ার প্রচলন ছিল না প্রায়। তখন হিন্দু মেয়েদের জোর করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হত-যার সাথে হিন্দু ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই। কারন হিন্দুরা আশঙ্কায় ভুগত তাদের মেয়েদের মুসলিমরা ধরে নিয়ে যাবে। তখন তারা বিজিত জাতি।
এখন সময় বদলেছে। যুদ্ধের শক্তি এখন টাকার শক্তিতে রূপান্তরিত। তেলের দেশ বাদ দিলে মুসলিম বিশ্ব প্রায় ভিখিরিই বলা চলে। অধিকাংশ মুসলিম পুরুষই গরীব-ফলে আশঙ্কাতে ভোগে তার বিবি অন্যকোন ধনীর কাছে চলে গেল বা যেতে পারে। তারজন্যে তাকে বোরখার মধ্যে রাখতে হয়।
বা ইংল্যান্ডে বা ইউরোপে ব্যাপারটা হতেই পারে। যদি ছেলে মেয়েদের মধ্যে ধর্মীয় বিধি নিশেধ না থাকে , ইউরোপের ছেলেদের মধ্যে মুসলিম মেয়েদের সাথে ঘর বাঁধার সম্ভাবনা খুব বেশী থাকবে-ফলে ইউরোপে মুসলিমরা আরো মারাত্মক বোরখাবাদি। মেয়েদের ওপর অধিকার-অর্থাৎ গর্ভের ওপর অধিকার রাখার আদিম পুরুষালী বাসনা। আমেরিকাতে অতটা পারে না-কারন এখানে ওসব জোর করে করলে পুলিশ জেলে দেবে।
মুসলিম বিশ্ব শিক্ষা দীক্ষায় উন্নত হয়ে সবার সমান হলেই এসব কেটে যাবে।
বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্যদিয়ে লেখাটি আপডেট করে দেওয়া হল। তাই লেখাটি নীড় পাতায় পুনঃ প্রকাশের জন্য মুক্তমনা কতৃপক্ষের নিকট অনুরোধ রইল।
একটি বিষইয় উল্লেখ করছি-প্রাসঙ্গিক বলেই মনে হয়েছে।ধানমন্ডি লেকে দৌড়ানোর সময় ডজন ডজন বোরখাওয়ালীকে প্রেমিকসহ বসে থাকতে দেখা যায়-অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমি দৌড়ে পাশ দিয়ে যাবার সময় প্রেমিকপ্রবর তড়িঘড়ি করে প্রেমিকার বোরখার ভেতর থেকে হাত বের করে নেন।বিষয়টি এতই দৃষ্টিকটূ লাগতো যে মাঝে দৌড়ানোর রূট পরিবর্তন করে নিয়েছিলাম।প্রেমিক-প্রেমিকার ঘনিষ্ঠতায় আমার আপত্তি নেই কিন্তু যখন বোরখাওয়ালীদের এসব করতে দেখি তখন প্রচন্ড হাসি পায় এই বোরখা প্রথার প্রতি।
@এম হোসেন,
বোরখাটা অনেক কাজে লাগে বৈকি! কথায় বলেনা বোরখার তলে ক্ষেমটা নাচে।
@এম হোসেন,
বোরখার মধ্যেই তো ঐ কামটা করতে সুবিধা। নজরে কম পড়ে মানুষের। আমার মনে হয়- এটা বোরখা পরার একটা উপকারীতা হিসাবে ধরা যায়।
আমার কাছে নারীদের অবস্থার জন্য নারীরাও কম দায়ী নয়। বাংলাদেশে অনেক মেয়েই এখন উচ্চ শিক্ষিত ও ভাল চাকরী করে; মানে তারা স্বাবলম্বী। এমন অবস্থাতেও তারা নারীদের এসব বিষয় নিয়ে তেমন উচ্চকিত তো নয়ই, খুব একটা দুশ্চিন্তাও করে বলে মনে হয় না। তার মধ্যে অনেকে আবার আপাদ মস্তক বোরখা মুড়ি দিয়ে জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেদের বাচাতে ব্যস্ত। বেশ ভাল সংখ্যক শিক্ষিত নারীদেরকে ইদানিং দেখা যায় তাবলিগ করতে। জাতীয় নির্বাচনের সময় জামাত ইসলামী বোরখাধারী নারীদেকে বাড়ীর দুয়ারে দুয়ারে পাঠিয়ে দেয় ভোট ভিক্ষা করার জন্য। ইসলামী টিভিতে ইসলামিক যে সব আলোচনা অনুষ্ঠান হয়, সেখানে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অংশ গ্রহন করে। দেখা যায় পুরুষরা যেখানে বসে , পাশে ঘেরা দিয়ে বেশী কিছু দুরে নারীরা বোরখা মুড়ি দিয়ে ভুতের মত বসে থাকে আর কান পেতে খালি শোনে, আলোচনায় অংশ নেয় খালি পুরুষরা, নারীদের সে অধিকার নেই। এসব নারীরা বলা বাহুল্য অশিক্ষিত নয়। এখন শিক্ষিত নারীর এসব আচরন দেখে অন্য অনেক নারীই প্রভাবিত হয় ও শৃংখলিত জীবনের প্রতি আর খারাপ ধারনা পোষণ করে না। তাই কুরান হাদিস ছাড়াও শুধু নারীরাও নারীদের আচরনের ও অবস্থার জন্য কম দায়ী নয়।
@ভবঘুরে,
– সত্য। কিন্তু মনে রাখতে হবে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত হয়ে আসা কালচার রাতারাতি বদল হয়ে যায় না। কয়েক জেনারেশন সময় লাগে তার জের যেতে।
@আদিল মাহমুদ,
কিন্তু বদলটাতো মনে হয় উলটো দিকে হচ্ছে এবং সেটা বলা যায় রাতারাতিই হচ্ছে। ৯০ -এর আগেও দেশে বোরখা হেজাবের এতো চল্ ছিলনা, এখন মনে হয় দিন দিন বেড়েই চলেছে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
দুটো ধারাই এগুচ্ছে। ধর্মের বাহ্যিক রমরমার কিছু বিশেষ কারন আছে। ৯১১ তার একটি, এ ঘটনা নুতন করে মুসলমান জাতীয়তাবোধের প্রয়োযনীয়তা দেখিয়েছে। সাথে সাথে মানুষের নৈতিক অধঃপতনের ফলে পাপ বোধ থেকে মুক্তির উপায়ও বলা যায়।
উলটো ধারার সমস্যা হচ্ছে এরা এখনো সংখ্যায় লঘূ বলে নিজেদের মত, যুক্তিতর্ক পাবলিকলি সেভাবে উপস্থাপন করতে পারছে না। সামাজিকভাবে সমস্যায় পড়তে হবে এই ভয় তো আছে, আরো মামলা হামলার ভয়ও আছে।
বেশ ভালো লাগল। :yes:
ঈশ্বরহীনের দারুন একটা লেখা পড়লাম। :rose: আরো চাই।
@ঈশ্বরহীন,
এই লেখাটিতে “ভালো লেগেছে”, “সুন্দর হয়েছে”, “দারুন হয়েছে”, কিম্বা “অসাধারণ হয়েছে”-এমন ধরনের শব্দগুচ্ছ উচ্চারণ করে মন্তব্য করাটা আমার জন্য যথেষ্ঠ নয়। পুরো লেখাটি কীভাবে পড়লাম তার একটা বর্ণনা এবং কী ঘটলো তা জানানোটা ফরজ মনে করছি। তাহলে চিত্রটা তুলে ধরি-
ছোটবেলায় শব্দ করে পড়তাম। বড় হলে সেই অভ্যাস ত্যাগ করেছি। কিন্তু আজ সেই ছোটবেলায় ফিরে গেলাম। অবশ্য মাঝে মাঝেই ফিরে যাই।
আমার পাশে দুজন। পড়ে যাচ্ছি, মানে রিডিং। মাঝে মাঝে থেমে যাচ্ছি আর বলছি ‘শুনছিস তো’। দুজনেই মাথা ঝাকায়ে ‘হু’ উচ্চারণ করছে। বলে রাখা ভালো, এরা দুজন আপনার মত ঈশ্বরহীন নয়; ঈশ্বরযুক্ত, মানে আল্লাহভক্ত। ১১ নং পয়েন্ট পর্যন্ত পড়েছি। হঠাৎ ডান পাশের বন্ধুটি বলে উঠলো- হায়, হায়, আজ না তারাবী, নামাজ পড়তে যেতে হবে। ডানের বন্ধুটি বলে উঠলো- ‘তাই তো!’ বললাম, ঠিক আছে- তোরা যা, আমি একাই পড়ি। তবে যাওয়ার আগে বলে যা, যতটুকু শুনলি, তাতে কেমন লাগলো।
একজন বলল- আল্লাহ ন্যাংটা করে দুনিয়াই পাঠাইছে, বইলাই কি আমরা এখন ন্যাংটা হইয়া ঘুরবো? লেখক ন্যাংটা হলে হোক; অন্যদের ন্যাংটা করার খায়েশ জাগছে ক্যা?
দ্বিতীয়জন বলল- নাম দেইখাই তো বুঝা যায় লোকটা আল্লাহর সাথে নাই। তাই ন্যাংটা হইবার চাই।
বলেই ওরা চলে যেতে উদ্যত হলো। বললাম- এবার আমি একটু কথা বলি। বলল- “টাইম নাই। পরে শুনবো।” -বলেই চলে গেলো।
আমি একাকী বাকী অংশটুকু নীরবে পাঠ করলাম। এই পড়ার বর্ণনার চিত্র।
এবার লেখাটি নিয়ে হাল্কা চালে (মেজাজে) কথা বলি:
– ‘যুবককে ধর্ষণের পর নদীতে ফেলে দিল তিন যুবতী’ পেপার কাটিংটি পড়ে বুঝলাম ঘটনাটি পাকিস্তানের। যেখানেই হোক সেটা বিষয় না। বিষয়টি হচ্ছে তসলিমা নাসরিনের কানে ঘটনাটি পৌছলে কী রকম প্রতিক্রিয়া দেখাবে? তসলিমা তার লেখার মধ্যে বলেছেন- ‘আজ থেকে নারীও ধর্ষণ করতে শিখুক।’ এই তিন যুবতী কী তসলিমার কথা ফলো করছে নাকি?
তসলিমার কথা এখানে টেনে আনলাম কারণ আদিল মাহমুদ ভাই বলছেন- “পুরুষ মাত্রই মুখিয়ে আছে কিভাবে নারীর উপর ঝাপিয়ে পড়া যায় (এই ধারনা অবশ্য তসলিমা নাসরিনো দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন);” তসলিমা বিভিন্ন সময় নানা ধরনের উক্তি করেন। কোন্ প্রেক্ষাপেট কোন্ ধরনের উক্তি করছেন, সেটা কিন্তু জানা জরুরী। তিনি তো তার লজ্জা বইতে ‘শুয়োরের বাচ্চা বাংলাদেশ’ বলেছেন। আসলেই কি তিনি বাংলাদেশকে ‘শুয়োরের বাচ্চা’ বলে গালি দিয়েছেন? কিন্তু সেটা ঐভাবেই প্রচার হলো। অথচ ঘটনা যদি ভালোমত দেখা যায় তাহলে বিষয়টি তেমন না।
যেসব প্রশ্ন আপনি রেখেছেন? আল্লাহভক্তরা কী জবাব দিবে সেটা বাস্তবেই দেখালাম।
আবুল কাসেমের ইসলামিক ভুদুস বইটিতে পর্দা সম্পর্কে কোরান হাসিসের উল্লেখসহ কিছু পেতে পারেন। কিছু ছবিও পাবেন। আপনার এখানে দেয়া একটা ছবি সেই বইটার মধ্যে দেখেছি বলে মনে হচ্ছে।
ধন্যবাদ পর্দা সম্পর্কিত মূল্যবান লেখা উপহার দেয়ার জন্য।
@ঈশ্বরহীন,
বেশ ভালো যুক্তি। এটা বুঝার পরেও যদি নারীদের পর্দা প্রথায় সমর্থনকারী পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়।
সকলকে ধন্যবাদ। তবে কিছু সমালোচনা শুনতে পারলে আরো বেশী ভালো লাগত।
লেখাটি শক্তিশালী যুক্তিতে পরিপূর্ণ। কিছুদিন আগে ভার্সিটি এক বোরখা পড়া নারীকে একটি লোকের সাথে যেতে দেখে আমার এক নাস্তিক বন্ধু মন্তব্য করে “প্যাকেট করে নিয়ে যাচ্ছে,বাসায় গিয়ে……..”. কথাটা আপাত দৃষ্টিতে অফেন্সিভ মনে হলেও এটাই কি সত্যি না? ধর্ম কি এভাবেই নারীকে প্যাকেটবন্দি করেনি?
@রামগড়ুড়ের ছানা,
নগদ মোহরানা উশুলে বিবাহকে তাহলে কি বলা যাবে?
নগদে খরিদ? কোন বাকির কারবার নাই?
ধর্মগুলি প্রাচীন কালে যে সমাজে নাজিল হয় সে সময় চিন্তা করলে এসব আইন কানুন মানবিক মনে হতে পারে। তাই বলে আজকের দিনে এসব হালাল করার চেষ্টা চালালে হাস্যকর ঠেকতে বাধ্য।
@আদিল মাহমুদ,
কিছুদিন আগে আমার এক মামার বিয়ের কথা চলছিলো। মা আমাকে এটা জানানোয় আমি বললাম,’কতো টাকায় খরিদ হবে? নগদ কতো আর বাকিই বা কতো?” মা অবাক।প্রথমে বোঝে নি। পরে বুঝিয়ে বলার পর মা এমন দাবড়ানি দিলো! বড় হওয়ার পর; আসলে অনেক বছর পর এমন দাবড়ানি খেলাম। ওই কথার এমনই প্রভাব!!
@নিটোল,
নিজে করার সময় লাভ ক্ষতি বাকি ভাল হিসেব করে নিবেন 😀 ।
@আদিল মাহমুদ,
আদিল সাহেব , আজকাল মৌলবাদ শুধু ধর্মে সীমাবদ্ধ নেই । প্রায় সব মতবাদেই এখন মৌলবাদী খুজে পাওয়া যায়। পরিবেশবাদী থেকে শুরু করে হালের প্রেমিক-প্রেমিকা পর্য়ন্ত মৌলবাদীদের বিস্তার। এরা পান থেকে চুন খসলেই সব গেল বলে চেঁচিয়ে ওঠে । সমঝোতার কোন চেষ্টা এরা করেনা ।
@সংশপ্তক,
কথা সত্য।
সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে দুটি ধারাই প্রজ্বলিত হচ্ছে।
@আদিল মাহমুদ, অসাধারণ কথা বলেছেন । আমি নিজে নাস্তিক আর সংশয়বাদীর মাঝখানে ফ্লাকচুয়েট করলেও ধর্মের অবতারনাকে তেমন গালি দেই না । তখনকার কিছু মানুষের তৈরি কিছু নিয়ম- সমাজের মানুষের কাজকরম নিয়ন্ত্রনের জন্য । যদিও ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ও অনেক কথাবার্তা আনা হয়েছিল ,তারপরও সব মিলিয়ে তখনকার জন্য মানা যায় । কিন্তু মেজাজটা খারাপ হয় যখন এই যুগেও আমাদের দেশের “শিক্ষিত”, “ভালছাত্র” রা এসব ভুলেভরা জিনিস জানার পরও , ভুলটা স্বীকার না করে , উপেক্ষা করে সেটা মানতে থাকে, সেটার সপক্ষে যুক্তি দেয় । । এদের পড়াশুনা যে কি কাজে আসছে বুঝতে পারি না । 🙁
নারীর নিরাপত্তার জন্য বোরখার আবশ্যকতা এখান থেকেই আসলে ব্যাখ্যা করা যায়। যার কাছে যেটা স্বাভাবিক সে তাতেই অভ্যস্ত হয়। বাংলাদেশে শার্ট প্যান্ট পরা মেয়ে দেখা মানেই তুমুল উত্তেজনার খোরাক। সেখানে বিদেশে মিনি স্কার্ট পরা পাশ দিয়ে গেলেও কোন বিকার হয় না।
বাংলাদেশেও পাহাড়ি উপজাতি মেয়েদের বেশ ভূষা নিঃসন্দেহে অনেক স্বল্প। সে সমাজ কি ধর্ষন, গুম খুনে ভেসে যাচ্ছে? আমার তো আরো উলটা মনে হয় সে সমাজে ধর্ষন জাতীয় অপরাধ আরো কম।
ইসলামী নিয়ম কানুনে ষ্পষ্টতই মনে হয় যে নারী পুরুষ এই কম্বিনেশনটা যাকে বলে রেডিও এক্টিভ ম্যাটারের মতই সেন্সিটিভ। নারী পুরুষ মানেই হল যৌন দূর্ঘটনা। পুরুষ মাত্রই মুখিয়ে আছে কিভাবে নারীর উপর ঝাপিয়ে পড়া যায় (এই ধারনা অবশ্য তসলিমা নাসরিনো দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন), আর অপরাধী নারীরই দায়িত্ব হল বেচারী পুরুষেরা যেন তাদের উপর ঝাপিয়ে না পড়ার ইন্সপিরশন না পায় তা নিশ্চিত করা। এ জন্য তাদের আজীবন দ্বিতীয় শ্রেনীর মর্যাদা পেতে হবে, চলাফেরা হবে অতি সীমিত, এবং পুরুষের ইচ্ছাধীন।
ইসলামে প্রেম নিষিদ্ধ এতে মনে হয় কোন সন্দেহ নেই। পরপুরুষের সামনে দেখা দেওয়া নারীর জন্য নিষিদ্ধ, কথা বলা যেতে পারে পর্দার আড়াল হতে। আমি জানতে চাই যে সহি ইসলামী মতে বিয়ে করার পদ্ধুতিটা কি? আমি কার সাথে সারা জীবন বসবাস করব সেটা নির্ধারন সিদ্ধান্ত আমাকে নিতে হবে পর্দার আড়াল থেকে কারো সাথে কথা বলে? নাকি বাবা মা ঠিক করে দেবেন, আর আমি শুধু কবুল বলে ব্যাক্তি স্বাধীনতা প্রয়োগ করব?
ইসলামী যাবতীয় কালাকানুনের মত পর্দা নিয়েও খোদ ইসলামবিদদের মাঝেই জোর বিতর্ক আছে।
এখানে দেখতে পারেন, কিছু কোরান হাদীসের রেফারেন্স পাবেন।
@আদিল মাহমুদ,
তসলিমার বিষয়টা এখানে অপ্রাসঙ্গিক। পুরুষ মাত্রই মুখিয়ে আছে কিভাবে নারীর উপর ঝাপিয়ে পড়া যায় তসলিমা নাসরিন তা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন এটা তার কোন কথা বা লিখায় কি প্রকাশ পেয়েছে?
কয়েক মাস আগে জ্যোতি বসুর উপর তসলিমার একটি লিখা পড়েছিলাম।
@আকাশ মালিক,
তসলিমার লেখা আমি অনেক দিন পড়িনি, আমার কাছে ওনার কোন বই নেইও। তবে তার প্রথম দিককার লেখায় এমন ভাব গোপন থাকেনি। পুরুষ তান্ত্রিক সমাজকে গালাগাল করতে গিয়ে ষ্পষ্ট করেই এমন ভাব প্রকাশ করেছেন। এই মুহুর্তে বই এর নাম বলতে পারছি না।
@আকাশ মালিক, আমি তসলিমা নাসরিনের “ক” পড়েছি শুধু, ক তে তসলিমা নাসরিনের “পুরুষ মাত্রই মুখিয়ে আছে কিভাবে নারীর উপর ঝাপিয়ে পড়া যায়” মনোভাবটা খুবই স্পষ্ট মনে হয়েছে আমার কাছে
আমি তসলিমার ২-১ টি বই পড়েছি । এর মাঝে “লজ্জা” অসাধারণ লেগেছে । এটা উপন্যাস । বাকি গুলোতে সে তার যুক্তি ভালোভাবে উপস্থাপন করেছে । কিন্তু খুব অল্পতেই ইমোশনাল হয়ে জান তিনি। তখন কিছু উল্টাপাল্টা কথা বলেন যেগুলোর মুল কথা প্রতিটি পুরুষই নরপশু । হয়ত তার ব্যক্তিগত কিছু ঘটনার জন্য তিনি এরকম করেন। এটা আমাদেরকে বুঝতে হবে । শুধুমাত্র নিজের মনের কথা, ধর্মীয় বিশ্বাস বইয়ে লেখার কারনে তাকে দেশ ছারতে হয়েছে ।ক্ষোভ তো থাকবেই । একটা মুসল্মান সমানে তার ধর্মকে “সাইন্টিফিক”, ‘সত্য” বলে প্রচার করতে পারবে। ১ জন নাস্তিক কেন পারবে না??যা হোক,এরকম তার ব্যক্তিগত আবেগ থেকে আসা ২-১ টা কথা ছাড়া তার সব যুক্তি, কথা অনেক শক্তিশালী ।।
খেয়াল করে দেখলাম হাদিস-কুরানের কোনো রেফারেন্স ছাড়া লেখাটি খুবই দুর্বল লাগছে। কেউ কি আমাকে লেখাটির সাথে সামাঞ্জস্যপুর্ন কুরান-হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে সাহায্য করতে পারেন?
@ঈশ্বরহীন,
কোন দরকার নেই। এমনিতেই যথেষ্ঠ যুক্তিসিদ্ধ, শক্তিশালী লেখা। তাছাড়া কুরাণ হাদিসের উদ্ধৃতি দিলে কিছু কিছু মুক্ত-মনাদের অনুভূতিতে আঘাত লাগে। প্রয়োজনে দিতে হলে দেবেন। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন কারণ দেখছিনা। দারুণ লিখেছেন। এতে অন্তত একজন বিশ্বাসীকে নতুন করে ভাবতে উদবুদ্ধ করবে আশা করা যায়।
@যাযাবর, কিন্তু নতুন পাঠকেরা কিন্তু লেখাটির দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাতে পারে!
@ঈশ্বরহীন,
চমৎকার যুক্তিপূর্ণ লেখা। মধ্যযুগীয় বোরখার অবসান চাই। চাই নারী-পুরুষ সহমর্মিতাময় সম অধিকার। :yes: