[ আজ থেকে বছর দু এক আগে আমি ছিলাম মুক্ত-মনার খুব নিয়মিত সদস্য। মাঝে ব্যক্তি জীবণে খুব একটা খারাপ সময় কাটায় সরে গিয়েছিলাম মুক্ত-মনা থেকে। তবে ওই সময় বিভিন্ন নন মডারেশন ব্লগে লিখা লিখি করতে শুরু করি। আমার ব্লগ নিক ”খারাপ মানুষ”এ হয়তো আপনারা কেউ কেউ আমাকে চিনতে পারেন। ব্লগের পাঠকের ইনষ্টেন্ট রিয়েকশন খুব ভালো লাগে, তাছাড়া পোষ্টের আকার ছোট হলেও কোন সমস্যা নেই। তবে নন মডারেশন ব্লগ থেকে সবচেয়ে বড় পাওয়া খুব ভালো কিছু বন্ধু!! এদের কেউ কেউ অসাধারণ লিখে। কারো কারো পোষ্ট নেটে ১০,০০০ বারের বেশিও পড়া হয়েছে। ইচ্ছা আছে আমার সেই সব ব্লগ বন্ধুদের নিয়ে পরবর্র্তিতে একটি পোষ্ট দেবার। আমার নীচের এই ছোট ছোট লেখাগুলো বিভিন্ন ব্লগে বিভিন্ন সময়ে ছাপিয়েছিলাম। আজ মুক্ত-মনার পাঠকদের জন্যে পোষ্ট করলাম।]
ব্যতিক্রমি ৩ শিল্পীর কথা!!
কালো গ্রাফাইটের এক শিল্পীর কথা!!
ছোটবেলায় আমরা যখন পেন্সিল দিয়ে লিখতাম, লিখতে গিয়ে কতবার না ভেঙ্গে ফেলেছ গ্রাফাইটে তৈরি পেন্সিলের শিশ। ভেঙ্গে যাবারি কথা, কারণ খুব হালকা এই গ্রাফাইট। আজ আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে যাচ্ছি ডাল্টন গেটি নামের একজন শিল্পী ও তার শিল্প কর্মকে, যিনি পেন্সিলের সরু সেই কালো গ্রাফাইটের খুদাই করে তৈরি করেন অদ্ভুত সুন্দর সব শিল্প কর্ম। পেশায় রাজমিস্ত্রি ব্রাজিলিয়ান বংশভূত আমেরিয়ায় বসবাস কারি এই শিল্পি যদিও প্রথমে সাবান ও চক কেটে কেটে শিল্প কর্ম তৈরি করতেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি পেন্সিলের এই গ্রাফাইটকেই শিল্পকর্ম তৈরির মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন। এসব একেকটি ছোট ছোট শিল্প কর্ম তৈরিতে তার যে সময় ব্যয় তা তার গভীর ধৈয্যশিলতারই পরিচয় পাওয়া যায়। কোন কোন শিল্প কর্ম তৈরিতে তার বছর খানেকও লেগে যায়।এই শিল্প কর্ম তৈ্রি করতে তিনি একটি রেজার ব্লেইড, একটি সূচ ও একটি ছুড়ির মতো ৩ টি সাধারণ যন্ত্র ব্যবহার করেন। তিনি তার শিল্প কর্ম গুলো বিক্রি না করে বন্ধু ও পরিচিত জনদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। আর বিনিময়ে নেন কিছু পেন্সিল।
চলুন দেখা যাক ডেল্টনের তৈরি কিছু শিল্প কর্ম-
নিজের তৈরি শিল্প কর্ম দর্শকদের দেখাচ্ছেন ডেল্টন।
পেভমেন্ট পিকাসোর কথা!!
আমার কাজিনকে বিদায় দিতে গত জানুয়ারিতে গিয়েছিলাম হিথ্রো এয়ারপোর্টে। এয়ার পোর্টের ৩ নাম্বার টার্মিনালেন সামনে গিয়ে দেখি সেখানে মাটিতে বসে এক হুইস্কি কোম্পানীর জন্য বিজ্ঞাপন চিত্র আকছেন আমার এক প্রিয় শিল্পি জুলিয়ান বেভার। চক দিয়ে পেভমেন্টে অসাধারণ সব ত্রিমাত্রিক ছবি আকার জন্যে ব্রিটিস এই শিল্পিকে বলা হয় পেভমেন্ট পিকাসো। জুনিয়ান গত প্রায় ১০ বছর যাবৎ তার এই বিখ্যাত পেভমেন্ট ছবি একে বেড়াচ্ছেন পৃ্থিবীর নানা দেশে।শুধু মাত্র একটি কেমারার লেন্স ও চক ব্যবহার করে আঁকা তার ছবি গুলো একটি নিদৃষ্ট এঙ্গেল থেকে দেখলে ছবি গুলোর ত্রিমাত্রিক আকৃ্তি দর্শকের চোখে ধরা পরে। হিথ্রো এয়ারপোর্টে আমি তার সাথে কথা বলে অবাক হই, এতো বড় শিল্পি কিন্তু কত সহজ ভাবে কথা বলছেন সব দর্শকের সাথে, দিচ্ছেন তাদের প্রশ্নের জবাব।আমাকে দেখতে দিলেন তার আঁকা কিছু পেভমেন্ট ছবির একটা এলবাম।চলুন সেদিন আমার মোবাইলে তোলা জুলিয়ানের দু’টি ছবি দেখে নেই,
চলুন এবার দেখি julian এর আঁকা কিছু পেভমেন্ট আর্ট-
এক প্রথা বিরোধী শিল্পীর কথা!!
আমার খুব প্রিয় একজন আর্টিষ্ট ‘বান্সকিb’। ১৯৭৪ সালে ব্রিষ্টলে জন্মগ্রহণকারী নিভৃতচারী এই শিল্পির ক্যানভাস হলো কখনো কোন দেয়াল, কখনো বা রাস্তা আবার কখনো বা রাস্তার পাশের পড়ে থাকা কোন ডাষ্টবিন।Banksy এর ছবি ছড়িয়ে আছে লন্ডন, ব্রিষ্টল, প্যারিস, নিউইর্ক থেকে শুরু করে সূদুর ইসরাইল-পেলেষ্টাইন বর্ডারের দেয়ালে। মেইল অব সানডের প্রতিবেদনে তার নাম প্রকাশ করা হয় রবিন গানিঙহাম বলে। যদিও এ বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে, আসলে কেউই ভালো করে জানে না তার আসল নাম। সাধারনত রাজনৈতিক, সামাজিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক বিভিন্ন ছবি আঁকেন Banksy। চলেন দেখে নেই অসম্ভবগুণী এই শিল্পির আঁকা কিছু ছবি-…
এবং সব শেষে আমার সবচেয়ে প্রিয়…
মুক্তমনাদের শুভেচ্ছা!!
জাহিদ রাসেল
আগষ্ট,২০১০
অ সা ধা র ন !!!!!!!!!!!!!!
@ জাহিদ রাসেল,
ছবি বা আর্ট দেখলে সেগুলো দেখি। অধিকাংশই বুঝতে পারি না। কী বুঝাতো চায় ছবিগুলো? আর তখনই আমার অজ্ঞানতা ধরা পড়ে। অনেক গান রয়েছে মুগ্ধ হয়ে শুনি বুঝি বা না বুঝি। ছবির বেলাতেও তাও।
ড. হুমায়ুন আজাদের ‘শিল্পকলার বিমানবিকীকরণ’ নামে একটি বই রয়েছে। এই বইটি পড়লে নাকি চিত্রকলা সম্পর্কে জ্ঞান জন্মে। বইটি পড়ে দেখতে হবে। তারপর পুনরায় ছবিগুলো দেখে এর মর্ম অনুধাবন করা যায় কিনা পরীক্ষা করতে হবে।
আপনার সবশেষে প্রিয় ছবিটি দিয়ে কী বুঝানো হচ্ছে দয়া করে একটু ব্যাখ্যা করবেন কী? আপনার প্রোফাইলেও সেই ছবিটি যুক্ত করেছেন দেখছি।
@মাহফুজ,
বোমা না ছুঁড় েফুল ছোঁড়া হচ্ছ,ে এটাই আর ক.ি.. আপন িদখে িসোজা জনিসি বুঝনে না, উল্টোপাল্টা জনিসি বোঝাত েনা চাইলওে বুঝ েফলেনে।
লখেকক েঅসংখ্য ধন্যবাদ। দ্বিতীয় শিল্পীর ছবগিুলো আগইে দখেছে িচনে-মলে।ে তারপরও ধন্যবাদ।
জাহিদ রাসেলকে ধন্যবাদ এমন তিনজন শিল্পীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য। খুব ভাল লাগল। আরও জানার প্রত্যাশায় রইলাম।
ভালো লাগলো। ব্যতিক্রান্ত কিছু ছবিও দেখা হলো। অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকে আমার ব্লগে দেখি। কোনদিন ভাবতে পারিনি যে আপনিই মুক্তমনার জাহিদ রাসেল। আপনার পুরনো বেশ কিছু লেখা আমি পড়েছি, চিন্তা মননে অনেক সাহায্য করেছে।
শিল্পীরা আসলেই অনন্য। বিশেষ করে পেভমেন্ট পিকাসো সাহেবের ৩-ডি ছবিগুলি মুগ্ধ বিস্ময়ে দেখেই যাচ্ছি। মানুষের ভেতর কত না ক্ষমতা লুক্কায়িত থাকে!
@আদিল মাহমুদ,ধন্যবাদ! এখন থেকে মুক্ত-মনাতেও ডেখা হবে।
রাসেল ভাইকে এখানে দেখে কেমন যেন আবেগ প্রবণ হয়ে পড়লাম। এখানে আপনার পুরনো লেখা গুলোর লিংক দিলে সবাই একটু ঘুরে আসতে পারতেন। নিয়মিত লেখবেন আশা করি।
@সৈকত চৌধুরী, তুমি ভালো আছো!? চেষ্ঠা করবো লিখতে
@জাহিদ রাসেল,
এ রকম ব্যতিক্রমী লেখা নিয়ে আবারো মুক্ত-মনায় হাজির হওয়ার জন্য স্বাগতম। :rose2:
লেখাটি পড়ে অনেক আরাম পেলাম। :yes:
ধন্যবাদ।
@মাহবুব সাঈদ মামুন, 🙂
দেয়াল চিত্র শিল্পীদ্বয়ের মধ্যে একটা সাযুজ্য খুঁজে পেলাম। চলৎকার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
@রৌরব, আপনাকেও ধন্যবাদ!
ভাল লাগল!
@লাইজু নাহার, ধন্যবাদ!
আমিও উঠতি বয়েসে প্রথা বিরোধী কিছু একটা হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু একবার ত্রিদিব দস্তিদার(তখন বেচেছিলেন) এর চেহারা দেখে ভয় পেয়ে ও রাস্তা আর মাড়াইনি। ভাবলাম, নতুন বয়েসে প্রথা বিরোধী ব্যপারটা একটা রোমান্টিক ভাব বিলাস, বাস্তবে তা খুবই কঠিন। তাই বর্তমানে প্রথার মধ্যে থেকেই কিছু করতে চেষ্টা করছি, 🙂
@ভবঘুরে, চেষ্ঠা করছেন এটাই বড় কথা!
কল্পনাই করতে পারিনি, ‘আমার ব্লগ’ এর ‘খারাপ মানুষ’ নিকের মানুষটিই আমাদের ‘মুক্তমনা’ র চির পরিচিত জাহেদ রাসেল। দেখে খুব খুশি হলাম, আশা করি এখন থেকে নিয়মিত লিখবেন, আমাদের সাথেই থাকবেন। আর হ্যাঁ, ছবিগুলো ঠিক মত আসছেনা, ছোট বড় সাইজ হয়ে গেছে, এডমিনকে বলে ঠিক করে নিলে ভাল হয়।
অফ টপিকঃ একমাত্র শুদ্ধস্বরের টুটুল ভাই রাজি হয়েছেন আমার বইটি ২০১১ সালের বই মেলায় প্রকাশ করতে। তবে মৌলবাদীদের প্রতিক্রীয়া কী হতে পারে সেই ভাবনাটাও তাদের মাথায় রেখে এগুতে হচ্ছে। বইটার ইংরেজি অনুবাদও প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে, অনুবাদকের নাম আপাতত বলছিনা। দোয়া করবেন আল্লায় যেন তাকে সুস্থ শরীরে রাখে, একদিন সারপ্রাইজ দেবো।
@আকাশ মালিক,
আপনার বই প্রকাশিত হচ্ছে শুনে খুব ভাল লাগল। সাগ্রহে অপেক্ষা করছি।
@আকাশ মালিক, ধন্যবাদ!! আপনার বই পাঠের প্রত্যাশায় রইলাম!
@আকাশ মালিক,
আপনার অফ টপিক নিয়ে-
খুব ভালো লাগছে শুনে যে- ‘যে সত্য বলা হয়নি’ কাগজের মলাটে দেখতে পাবো। প্রকাশ্যে কিম্বা গোপনে উভয়ভাবেই বইটির প্রচার চালিয়ে যাবো। সম্ভব হলে ট্রেনের মধ্যে হকারের মত করে বইটি বিক্রি করবো। আমি জানি, পিঠে ছালা বেধেই একাজে নামতে হবে। কুচ পরোয়া নেহি। সে অভ্যাস আমার আছে। এখনো ছয় মাস বাকি ফেব্রুয়ারী আসতে। এই ছয় মাসে বইটির উপর সংক্ষিপ্ত নোট তৈরী করে বক্তৃতা প্র্যাক্টিস করবো।
জয় হোক আমাদের রোমান্টিক হুজুর আকাশ মালিকের।
জয় হোক বাংলার আবু রুশদ আকাশ মালিকের।
@মাহফুজ,
:yes:
বাংলার বায়রন নজরুল, বাংলার বাঘ শেরে বাংলা (মতান্তরে আশু মুখুজ্যে), বাংলার ডান্ডি নারায়ণগঞ্জের পরে বাংলার আবু রুশদকেও পাওয়া গেল। জয়তু।
@রৌরব,
এত উপাধী নিয়ে আকাশ মালিক ভাই কোথায় রাখবেন? তাছাড়া অন্যরাও হিংসায় মত্ত হয়ে উঠতে পারে।
জাহিদ, একটি চমৎকার লেখা নিয়ে মুক্তমনায় পুনরায় ফিরে আসায় শুভেচ্ছা। এখানে নিয়মিত লিখবেন আশা করছি।
@অভিজিৎ, ধন্যবাদ দা!!
খুব ভাল লাগল।
@পৃথিবী, ধন্যবাদ!!
অনেক অনেক অনে-এ-এ-এ-এ-এ-ক ধন্যবাদ এত চমতকার ৩ জন মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য। খুব ভাল লেগেছে। আপনাকেও ফুলের শুভেচ্ছা। :rose2:
@লীনা রহমান, ধন্যবাদ!! আপনার ভালো লেগেছে শুনে ভালো লাগলো!