অথবা মিড লাইফ ক্রাইসিস-এই ভাবেই শুরু করা যেত। চারিদিকে যত বন্ধু বান্ধব আছে-যে দিকে তাকাচ্ছি-সবাই নিজের চাকরি নিয়ে অসন্তুষ্ট। এদের সবার একটা কমন প্রফাইল আছে-ছাত্র জীবনে সবাই মেধাবী ছাত্র। আই আই টি থেকে পাশ করার পর সবাই নামকরা কর্পরেটে ঢুকে গেছে। আর্থিক দিয়ে কেওই অসফল না-মানে জীবনে সেই অস্তিত্ববাদি সংকট নেই। কিন্ত ইদানিং সবাই আমাকে বলে-জীবন চেটে গেছে! সবাই নাকি সেই কর্পরেট জীবন থেকে বেড়তে চাইছে। দ্বাসত্ব মুক্তি টাইপের ব্যাপার।
আমি লেখা লেখি এবং নানান কাজে ব্যাস্ত থাকায় আসলে নিজের চাকরিতে অত সময় দিতে পারি না-চাই ও না। গত পাঁচ বছর ধরে এটাই আমার রুটিন। কারন কর্পরেট জীবনের অন্তঃসারশুন্যতা নিয়ে ২০০৩ সালেই আমার গভীর উপলদ্ধি হয়। কঠিন অভিজ্ঞতা থেকে বুঝি ধণতন্ত্র আসলে একটা জাঁতাকল। প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে এতদিনে বেড়লাম না কেন? ব্যাপারটা হচ্ছে এখানে যাও বা কিছু করছি-তা বাস্তবে সমাজ বা মানুষের কাজে আসে। একাডেমিক্সএ আমাদের লাইনে যে গবেষনা হয়-তার পুরোটাই ফালতু। শুধু পেপার উৎপাদনের জন্যে ধান ভাঙাগীত। ফলে বাকী উপায় ছিল-ব্যাবসাতে ঝাঁপ দেওয়া বা এন জি ও খুলে দেশোদ্ধার করা। শেষেরটিতে এত দুর্নীতি নিজের চোখে দেখা-ভরসা হয় নি। তবে চাকরি ছেরে দুবার ব্যাবসা করার চেষ্টা করেছি-দুবারই ব্যার্থ হয়ে চাকরিতে ফিরে যেতে হয়েছে। শেষে বুঝেছি আসলে কয়েক মাসে ব্যাবসা নামে না-দীর্ঘ দু তিন বছর একটানা চেষ্টা করলে-কিছু দাঁড়ায় হয়ত। তাও সেটা কর্পরেট বেতনের প্রতিস্থাপক হওয়া কঠিন-ফলে কর্পরেট ঘানির কালো তৈল উৎপাদনই জীবন কায়া।
বাকীদের উপলদ্ধি হয়ত এত দ্রুত আসে নি-ফলে তারা জীবনের একটা দশক কর্পরেটকে দিয়ে এখন নিজেদের প্রশ্ন করছে-জীবনে কি করিলাম? বিলগেটসের মতন মাইক্রোসফট ও বানাইতে পারি নাই-লালনের মতে গান ও বাধিতে পারি নাই! রাস্তার ধারে একজন চায়ের দোকানের মালিকের দোকানটার ও একটা লেগাসি থাকে- কর্পরেট বাবুদের মাইনা ছারা কিছু নাই! জীবনের ইঁদুর দৌড়ে কর্পরেট গুহাতে জোরে দৌড় মেরে সবাইকে পেছনে ফেলে ঢুকে সবাই দেখছে-সেই গুহাতে যত ঢুকবে-ততই অন্ধকার-টানেলের শেষে আলো নেই।
এই বেশ ভাল আছি বলে উইকেন্ডে পার্টি করে অনেকেই বহুদিন চালিয়েছে। বরং বলা ভাল-এই সব অসস্তিকর প্রশ্নগুলো আসলে আগে এরা কেও নিজেদের জিজ্ঞাসা করে নি। প্রশ্নটা আইডেন্টিটির এবং লেগাসির। একটা না একটা দিন এগুলো মানুষকে তাড়া করবেই। অনেকেই তাদের হিন্দু মুসলিম আইডেন্টি নিয়েই খুশি-তাদের সীমিত পরিচিতির পরিসরে লোকজন তাদের গুরুত্ব দিলেই, তারা নিজেদের জীবন সার্থক বলে মনে করে। সমস্যা হচ্ছে তাদের নিয়ে-যারা ভাবে জীবনে কিছু করতে পারত-সেটা করতে হয়ত কর্পরেটে ঢুকেছিল-শেষে বুঝেছে কিছু করার জন্যে কর্পরেটে ঢোকা মুর্খামি-ওটা ঘানি টানার জায়গা।
তবে কে জানে-সম্পূর্ন জীবন বলে হয়ত সত্যিই কিছু নেই। অসম্পূর্ন জীবনই হয়ত আসল জীবন। অথবা হতেও পারে এটা আঙুর ফল টক টাইপের একটা মনোলগ।
এটাত কল্প বিজ্ঞানের প্রশ্ন-সেটাত আমি আমার ফিকশনে লিখে গেছি
বিপ্লব দা, ভাল বিষয় নিয়ে লিখেছেন। আলোচনাও খুব ভাল হচ্ছে।
আমি চাকরি করেছি, এখন ব্যবসা করছি। আসলে মজা ঐ যতদিন বাবার হোটেলে খাওয়া গেছে সেটাই। 😀
তবে তুলনামূলক ভাবে আমার কাছে ব্যবসাটাই ভাল লাগছে। এখানে স্বাধীনতা
কিছুটা বেশী, তবে সেটা যতটানা ব্যাবহারিক তারচেয়ে বেশী মনস্তাত্তিক। এখানেও অক্লান্তভাবে সাপ্লাই চেইনে তেল দিয়ে যেতে হয় আর সারাক্ষণ ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। আগে যেটা বসের সাথে করতে হতো।
আচ্ছা ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি, উৎপাদন শক্তি আর উৎপাদন সম্পর্কের ধরনের পার্থক্যের কারনে ইতিহাসকে আমরা এই যে দাস যূগ, সামন্ত যূগ, ধণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদিতে ভাগ করি, এখানে প্রতিটা পর্বই শুরুতে প্রগতিশীল ভূমিকা নেয় তার পরে সেটা নতুন উৎপাদন শক্তি ও সম্পর্কের আগমনে ধীরে ধীরে প্রতিক্রিয়াশীল রূপ ধারন করে। আমি জানতে চাচ্ছি, ধণতন্ত্রের পরবর্তি
ব্যাবস্থা, মানে সম্ভাব্য ব্যাবস্থা কি হতে পারে বলে আপনি মনে করেন ?
এটাই আস্তিকদের সুবিধা। তারা বিশ্বাস করে তাদের জীবন অনন্ত কাল। কিন্ত আমরাত জানি, আমাদের কাজ করার সময় শেষ হয়ে আসছে-আর বড় জোর কয়েকটা বছর।
@বিপ্লব পাল,
মনে হয় না আমার আস্তিক বিশ্বাসের সাথে এর যোগ আছে। বলা যায় যে এই জীবনে আমি তৃপ্ত, পরিপূর্ন তৃপ্তি বলে কিছু নেই; তবে অতৃপ্ত নই।
কাজ করা বলতে ঠিক কি বোঝাচ্ছেন? চাকরি বাকরি তো করতেই হবে? নিশ্চয়ই বিনা বেতনে আমরা সবাই দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য খাটব না।
করোপরেট বিশ্বকে গালি সবসময়ই দেই। কোন সন্দেহ নেই আমরা তাদের কাছে জিন্মী। কিন্তু এর বিকল্প কি সেটা বলেন। ব্যাবসা করতে গেলে লাভ কিভাবে বাড়ানো যায় সে চিন্তা কি ব্যাবসায়ীরা বাদ দেবে? নৈতিক অনৈতিক এসব চিন্তা তেমন করবে না।
আরেকটা বিষয়, ধনতন্ত্রকে যতই গালি দেই; নুতন উদ্ভাবন কিন্তু ধনতন্ত্র ছাড়া খুব বেশী সম্ভব মনে হয় না। এক কালে রাশিয়া থেকে নামজাদা বিজ্ঞানীরা পালিয়ে আমেরিকা এসে থানা গাড়তেন। একই ব্যাপার এমনকি প্রকট মাত্রায় বহিঃবিশ্বের কাছে অত্যন্ত উন্নত জীবন যাত্রার দেশ বলে পরিচিত কানাডার লোকদের মাঝেও দেখা যায়। কানাডার সাধারন জীবন যাত্রার মান আমেরিকার থেকে কাগজে কলমে অনেক উপরে। কিন্তু নিজেদের নিজস্ব উদ্ভাবনী ক্ষমতা বলতে কিছুই নেই। কারন সব ব্রেন চলে যায় আমেরিকার দিকে। আমি দু দেশেই থেকেছি। সবার ধারনা কানাডায় করোপরেট প্রভাব কম, কারন সিষ্টেম অনেকটা ইউরোপীয়ান সোশালিষ্টিক টাইপের। আমার কাছে মনে হয়েছে এই ধারনায় বড় ধরনের কিছু ভুল আছে। কানাডায় জীবন যাত্রা আরো ভালভাবে কিছু করোপরেটই নিয়ন্ত্রন করে। অবস্থা বরং আমেরিকার থেকেও খারাপ। আমেরিকায় তাও তীব্র প্রতিযোগিতার জন্য কোম্পানীগুলি অনেক সুবিধে নেয়। কানাডায় এসব কিছু নেই। প্রতিযোগিতা যেন তেমন গড়ে না ওঠে তার ব্যাবস্থাই সোশালের নামে নিশ্চিত করা হয়েছে।
@আদিল মাহমুদ,
ধনতান্ত্রিক পদ্ধতি ছারা উদ্ভাবন সম্ভব না-সেটা আমি মানি-সেই নিয়ে বিস্তারিত লিখেওছি -কিন্ত তার মানে এই না-সেই কোম্পানীকে ব্যাক্তিমালিকানাধীন হতে হবে। স্টার্টাপ কিন্ত সমষ্টি মালিকানাতেই বেশী সফল।
@বিপ্লব পাল,
– কিছু উদাহরন দিতে পারেন? সমষ্টি বলতে কি রাষ্ট্র বোঝাচ্ছেন (আশা করি না), নাকি সেই একের যায়গায় অধিক মালিক, নাকি পাবলিক শেয়ার জাতীয় কিছু?
আমেরিকাই কেন তাহলে উদ্ভাবনে একচেটিয়া হয়ে থাকছে?
ডেনমার্কের সাথে কিছু তূলনা দিতে পারেন। জাপান বা ডেনমার্কের ব্যাবস্থা আসলেই কেমন?
@আদিল মাহমুদ,
সমষ্টি মালিকানা মানে যেখানে কর্মীরা মালিক। রাষ্ট মালিকানা আলাদা।
সিসকো, গুগল, ফেসবুক-যেকোন নামী আমেরিকান আই টি কোম্পানীই কর্মীরা শুরু করেছে-পরে কিছুটা অংশে মালিকানা এসেছে-কিন্ত কর্মীদের হাতে একটা বড় অংশ মালিকানা বড়াবর ছিল। ভারতে ইনফোসিস এই ধরনের কোম্পানী-কিন্ত তারা উদ্ভাবনে গোল্লা।
@বিপ্লব পাল,
সেই বড় জোর কয়েকটা বছর যদি বিল গেটস হতে না পারার দুঃখে যাতনাময় হয়ে যায়, তা হলে বলতে হবে জীবনের ষোল আনাই মিছে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
কাওকে বিল গেটসকেন হতে হবে? সবাই তার নিজের মতন করে হবে। সমস্যাটা সেখানে না-আবার বলছি, সবাই একটা লেগাসি রেখে যেতে চায় নিজের মতন করে। আমার দাদু তার দশ সন্তানকে মানুষ করে-সেটাকেই তার লেগাসি হিসাবে ভেবে খুশী ছিলেন।
@বিপ্লব পাল,
কেউ তার লেগাসিতে, সেটা যে ধরনের বা যে মাপেরই হউক না কেন, খুশী থাকবে সেটাই বড় কথা। আসলে প্রত্যেকেই নিজের সামর্থ্য অনুযায়ীই একটা লেগাসি রেখে যায়, কেউ সন্তুষ্ট, কেউ নয়।
বলতে বাধ্য হচ্ছি, আপনার অসম্পূর্নতার গল্প আমার কাছে অনেকটাই দূঃখ বিলাসের মত মনে হচ্ছে। সোজা বাংলায় সুখে থাকলে ভুতে কিলায়।
চাকরি যতক্ষন আছে ততক্ষন করোপরেট এর জন্য করলাম নাকি আঞ্জুমানে মফিদুলের জন্য করলাম, জীবনে কি করতে পারতাম, কি লক্ষ্য ওসব গুরুতর কিছু নিয়ে কখনোই ভাবি না।
কে জানে, আমি হয়ত বড় বেশী মধ্যবিত্ত মেন্টালিটির বা কারো চোখে স্বার্থপর টাইপের লোক। তবে অল্পে তুষ্ট হতে পারি।
মিড লাইফ ক্রাইসিস কি একে বলা যায়? মিড লাইফ ক্রাইসিস তো জানি মধ্য বয়সে দাম্পত্য সমস্যা।
@ ড. বিপ্লব পাল,
বাইবেলের সলোমন সবকিছু উপভোগ করার পর বলেছিলেন- অসারের অসার সবই অসার।
ড. আজাদ বলেন- সবকিছুই নিরর্থক। জগত পরিপূর্ণ নিরর্থকায়।
তিনি একটি চমৎকার কবিতা লিখেছেন-
একপাশে শূণ্যতার খোলা, অন্যপাশে মৃত্যুর ঢাকনা,
প’ড়ে আছে কালো জলে নিরর্থ ঝিনুক।
অন্ধ ঝিনুকের মধ্যে অনিচ্ছায় ঢুকে গেছি রক্তমাংশময়
আপাদমস্তক বন্দী ব্যাধিবীজ। তাৎপর্য নেই কোনো দিকে-
না জলে না দেয়ালে- তাৎপর্যহীন অভ্যন্তরে ক্রমশ উঠছি বেড়ে
শোণিতপ্লাবিত ব্যাধি। কখনো হল্লা ক’রে হাঙ্গরকুমিরসহ
ঠেলে আসে হলদে পুঁজ, ছুটে আসে মরা রক্তের তুফান।
আকস্মিক অগ্নি ঢেলে ধেয়ে আসে কালো বজ্রপাত।
যেহেতু কিছুই নেই করণীয় ব্যাধিরূপে বেড়ে ওঠা ছাড়া,
নিজেকে-ব্যাধিকে-যাদুরসায়নে রূপান্তরিত করছি শিল্পে-
একরত্তি নিটোল মুক্তোয়!
কবিতাটির ব্যাখ্যায় তিনি বলছেন- ব্যাধিকে ঝিনুকের ব্যাধির মতো রূপান্তরিত করছি শিল্পকলায়। এ হচ্ছে চূড়ান্ত অর্থহীনতাকে অর্থপূর্ণ করার এক সুন্দর ব্যর্থ করুণ প্রয়াস।
প্রিয় মডারেটর,
একটা রেখে বাকি দইটা ডিলিট করে দিন, প্রথম দেখলাম যাচ্ছে না পরে দেখি তিন টা হয়ে গিয়েছে সরি
আব্দুল হক Says:
আগস্ট 4th, 2010 at 10:02 অপরাহ্ণ
আপনার এই উপলব্দির জন্য ধন্যবাদ। কর্পোরেট প্রচারণার কারণে আমরা ঠান্ডা খুঁজি কোক-পেপসিতে, ভুলে গেছি ডাব ও কাগজি লেবুর শরবতের কথা। এখনও আমরা যারা কাগজি আর ডাব খুঁজি, পাই না, পেলেও দেখি অনেক দাম, কারণ চাহিদা নাই বলে উৎপাদন ও কমে গেছে। আমাদেরকে সেকেলে বলত যারা তারাও এখন জানতে পারছেন কোক-পেপসিতে পেষ্টিসাইড আছে, মুনাফার জন্যে মানুষকে বিষ খাওয়াচ্ছে, এমনকি দুধেও তারা মেলামাইন মেশাচ্ছে। কর্পোরেট মুনাফা শিকারীদের রুখতে, গণমানুষের পক্ষে লড়বেন নাকি আমাদের সাথে নতুন পৃথিবী গড়তে? এখানে কাজ আর কাজ, নতুন মানুষ, নতুন সমাজ, নতুন পৃথিবী গড়ার কাজ। সৃষ্টির আনন্দ আর সৃষ্টি সুখের উল্লাস!
আপনার এই উপলব্দির জন্য ধন্যবাদ। কর্পোরেট প্রচারণার কারণে আমরা ঠান্ডা খুঁজি কোক-পেপসিতে, ভুলে গেছি ডাব ও কাগজি লেবুর শরবতের কথা। এখনও আমরা যারা কাগজি আর ডাব খুঁজি, পাই না, পেলেও দেখি অনেক দাম, কারণ চাহিদা নাই বলে উৎপাদন ও কমে গেছে। আমাদেরকে সেকেলে বলত যারা তারাও এখন জানতে পারছেন কোক-পেপসিতে পেষ্টিসাইড আছে, মুনাফার জন্যে মানুষকে বিষ খাওয়াচ্ছে, এমনকি দুধেও তারা মেলামাইন মেশাচ্ছে। কর্পোরেট মুনাফা শিকারীদের রুখতে, গণমানুষের পক্ষে লড়বেন নাকি আমাদের সাথে নতুন পৃথিবী গড়তে? এখানে কাজ আর কাজ, নতুন মানুষ, নতুন সমাজ, নতুন পৃথিবী গড়ার কাজ। সৃষ্টির আনন্দ আর সৃষ্টি সুখের উল্লাস!
আপনার এই উপলব্দির জন্য ধন্যবাদ। কর্পোরেট প্রচারণার কারণে আমরা ঠান্ডা খুঁজি কোক-পেপসিতে, ভুলে গেছি ডাব ও কাগজি লেবুর শরবতের কথা। এখনও আমরা যারা কাগজি আর ডাব খুঁজি, পাই না, পেলেও দেখি অনেক দাম, কারণ চাহিদা নাই বলে উৎপাদন ও কমে গেছে। আমাদেরকে সেকেলে বলত যারা তারাও এখন জানতে পারছেন কোক-পেপসিতে পেষ্টিসাইড আছে, মুনাফার জন্যে মানুষকে বিষ খাওয়াচ্ছে, এমনকি দুধেও তারা মেলামাইন মেশাচ্ছে। কর্পোরেট মুনাফা শিকারীদের রুখতে, গণমানুষের পক্ষে লড়বেন নাকি আমাদের সাথে নতুন পৃথিবী গড়তে? এখানে কাজ আর কাজ, নতুন মানুষ, নতুন সমাজ, নতুন পৃথিবী গড়ার কাজ। সৃষ্টির আনন্দ আর সৃষ্টি সুখের উল্লাস!
@আব্দুল হক,
সমস্যা হচ্ছে অর্গানেজশন ছারা ত কিছু হয় না। এন জি ও করে অনেক কিছু করার চেষ্টা করে বুঝেছি ওভাবে কিছু হয় না। ফলে ধণতন্ত্রের পথেই সামাজিক দ্বায়িত্ববোধ আনতে হবে। আমেরিকাতে আমি কোক না কিনে ক্যান করা ডাবের জল কিনি-খেতে অনেক ভাল। কিন্ত ভারতে ডাবের জল নিয়ে কেও প্যাকেজিং করতে পারল না। এটা কিন্ত ধণতন্ত্রের পথে না করলে উপায় নেই-শুধু শুধু কিছু স্বপ্নাবিষ্ট কথা আর বাস্তবে লোকেদের জন্যে কিছু করার মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। আমি কথাতে নেই-কাজে আছি।
আমেরিকাতে আপনি প্যাকেজড ডাবের জল চৈনিক দোকানে পাবেন-কাগজি লেবুর রস ও পাবেন। ভারতে এব কিছুই পাওয়া যায় না। ডাব ছারা ডাবের জল পাওয়া যায় না।
কর্পরেট গণতন্ত্রে থাবা বসিয়েছে সেটা সত্য। কিন্ত কমিনিস্টরা গণতন্ত্রটাকে তুলে দিয়েছিল-তার থেকে এটা ভাল।
নতুন দিগন্ত আসতে পারে সমবায় আন্দোলনের মাধ্যমে। বা সামাজিক কর্পরেশনের মাধ্যমে। রাষ্ট্র এবং এক চেটিয়া পুঁজি-কেও কারুর চেয় কম ভয়ংকর না।
@বিপ্লব পাল,
আমেরিকাতে ক্যান করা যে ডাবের পানি পাওয়া তাতে চিনি মেশানো থাকে বলেই জানি। আর অন্যান্য যে কি মেশানো থাকে কে জানে?
@ব্রাইট স্মাইল্,
আমেরিকাতে খাবারে যা মেশানো থাকে, তা গায়ে লেখা থাকে। নইলে এফ ডি এ জেলে ভরে দেবে। পাকা ধনতন্ত্রে এই ভাবে লোকের ক্ষতি করে না-সেখানে শোষনের পদ্ধতি অনেক বেশি উন্নত।
@বিপ্লব পাল, আপনারা যেটাকে গণতন্ত্র বলে চালাতে চাইছেন তার নাম আসলে ( Plutocracy) মুষ্টিমেয় ধনীদের শাসন । অরুনদ্যুতি রায় ভাল বলেছেন যে আপনাদের এই গণতন্ত্রটা পাহাড়ের ঢাল বেয়ে খাড়া নীচের দিকে গড়িয়ে পড়ছে যার পরিনতি কেবল ধ্বংস।
আপনার লেখা পড়ে আমি তো ভেবেছিলাম ইরাক দখল করতে আসা সেই সব সৈন্যদের কথা যারা বুঝতে পেরেছে এদেরকে তো শুধু মানুষ খুন করতেই পাঠানো হয়েছে।
পুঁজিবাদ এখন সেই পুঁজিবাদ নেই যে তার শাসন পদ্ধতি থাকবে গণতান্ত্রিক, পুঁজিবাদ এখন সাম্রাজ্যবাদী স্তরে উন্নীত হয়েছে তার শাসনরূপ হচ্ছে ফ্যাসীবাদ যা বর্তমানে চলছে, শুধু মুনাফা দিয়ে যার তুষ্টি হয় নাই , তাই
লুটপাট, যুদ্ধ-ধ্বংস। এরা পুরো সমাজটাকেই আজ মুনাফামুখি করে ফেলেছে যেখানে মানুষের জীবনের কোন দামই নেই। মানুষের জীবন, সম্পদ ও প্রকৃতি রক্ষা করতে হলে পুরো ব্যবস্থাই উল্টে দিতে হবে যা সংস্কার দিয়ে হবে না। ধন্যবাদ
@আব্দুল হক, \
ফ্যাসিবাদ ধনতন্ত্র সমাজতন্ত্র সর্ব রূপেই বিরাজমান হয়েছেন। শোষন এবং শাসনে অত সহজ কোন রিকাশনিজম করা মূর্খামো।
@বিপ্লব পাল, আপনি কি জন পার্কিনস এর কনফেশান অফ এন ইকনমিক হিটম্যান বইটা পড়েছেন? অথবা দেবীপ্রাসাদ চট্রপাধ্যায় এর ভাববাদ খন্ডন /মার্ক্সবাদ পড়েছেন?
আমি দুইটা ছবিএখানে লোড করতে চাইছি পারছি না। আপনার ইমেইল এ পাঠাতে পারব?
ধন্যবাদ
@আব্দুল হক,
ইকনমিক হিটমান বই টির ভিত্তিতে আমার একটি বাংলা লেখা আছে
“অর্থনৈতিক ঘাতক”
কিন্ত সেটাই ধণ তন্ত্রের সব না। পুঁজি ভাল বা খারাপ দুই হতে পারে।
সমাজতন্ত্র বা ধনতন্ত্রকে মনোলিথিক ভাবাটা সব থেকে বড় ভুল।
@বিপ্লব পাল, “অর্থনৈতিক ঘাতক” এর লিংক দিন
@আব্দুল হক,
আমি প্রবন্ধটিতে বইটির উল্লেখযোগ্য কিছু অংশের অনুবাদ করেছি
অনলাইন না পড়ে ডাউন লোড করে পড়ুন।
@বিপ্লব পাল,
দাদা, আপনি দেখছি অনেকগুলো বিষয় নিয়ে লিখেছেন। আপনার সবগুলো লেখা একত্রিত করে যদি ভালো কোনো ফাইল শেয়ারিং সাইটে(যেমন- মিডিয়াফায়ার ইত্যাদি) আপলোড করে দিতেন। scribd এ কেমন যেন এলোমেলো লাগে। ধন্যবাদ।
@সৈকত চৌধুরী,
আমি আগেই লিখেছি ডাউনলোড করে পড়তে। অনলাইনে স্ক্রাইবে বাগ আছে।
@বিপ্লব পাল,
ডাউনলোড করেছি কিন্তু হচ্ছে না, ফন্ট সমস্যা কি না বুঝতে পারছি না। তবে মূল বইটা আমি পড়েছি।
আমি আপনাকে জ্ঞান দিতে চাইনি, সেটা আমার পক্ষে সম্ভবও নয়। কেননা আমার জ্ঞানের পরিধিটা আপনার জ্ঞানের পরিধি থেকে বেশ ছোটই বলা যাবে, তবে, একটা পার্থক্য আছে সেটা হলো আমার জ্ঞানটা নেহাতই সাদামাটা মেহনতকারীর তরফের জ্ঞান আর আপনারটা পন্ডিতি জ্ঞান। যতবড় বিজ্ঞানীই হউন বা পন্ডিতি জ্ঞানই আপনার থাকুক না কেন খাবার আপনাকে গ্রহন করতেই হবে। আর তা করতে হলে মাটি কর্ষণ ছাড়া (সেটা ট্রাক্টর দিয়ে হলেও), পৃথিবীর সঙ্গে সংগ্রাম ছাড়া অর্থাৎ কায়িক শ্রম বা মেহনত ছাড়া একছড়া ধান বা গম আপনি পাবেন না, আপনার সমস্ত পন্ডিতি জ্ঞান জুড়ে দিলেও না। সমস্যা এটাই যে যারা এসব উৎপাদন করে তারা খেতে পরতে পায় না। এটা একটা সামাজিক অন্যায়, ছল-চাতুরী, প্রতারণা, জোর-জবরধ্বস্তি যে-ভাবেই হউক অন্যের শ্রম ও সম্পদ কেড়ে নেয়া অপরাধ। সরাসরিই হউকক আর বাজারের মাধ্যমেই হউক। ধনতন্ত্রই বলুন আর গণতন্ত্রই বলুন বর্তমান ব্যবস্থায় তাই হচ্ছে। ন্যায়কামী মানুষরা দূর্বলের উপর সবলের এই অত্যাচার মেনে নিতে পারে না।
এসবই আপনার জানা কথা। এসব জানার পরেও ধনতন্ত্রে ভাল কিছু দেখছেন, এর বাইরে মানব সমাজের আর কোন ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন না। তা ভালো, এতে আপনার অবস্থান পরিস্কার করেছেন। তবে এটি শুধু আপনার একার কথা নয়, জনাব ফুকুয়ামা আপনার আগেই এই কথা বলেছেন, বলেছেন ধনতন্ত্রই নাকি শেষ কথা, এ্যান্ড অফ দা হিস্টরী। তাদেরকে উত্তর আধুনিক না কি যেন বলে! আপনাকে সেই দলে ভাবতে খারাপ লাগছে। এই সেদিন আমার এক ছাত্রও বলছিল এরকমই একটা কথা “স্যার আপনার সমাজ বিপ্লবের কথা সব ঠিক আছে, সব মানি কিন্তু আপনি যে ইসলাম আর মুহাম্মদকে বাদ দিয়া রাখছেন এইটা মানিনা”। বিচার মানি কিন্তু তাল গাছটা আমার টাইপের কথা। আপনাকে এতটা হালকা এখনও ভাবছি না কারণ ধনতন্ত্রের ত্রুটিটিও আপনার জানা। এর অসংগতিগুলো আপনাকে পীড়া দেয়, আপনি সৎ ও মানবিক চেতনা সম্পন্ন মানুষ। যার জন্যে চাকুরী, ব্যবসা, এনজিও সব বাদ দিয়ে সমবায় সমিতি/ আন্দোল গড়ে তুলতে চাইছেন। ধনতন্ত্রের ব্যক্তি মালিকানা ছেড়ে সমষ্টির মালিকানা এটা অনেক প্রগতিশীল চিন্তা আমি এটাকে সমর্থন করলাম (মার্ক্স-এর আগে রবার্ট ওয়েন এটি করেছিলেন)। শ্রম ও সম্পদের যৌথ মালিকানা! বাঃহ চমৎকার! আপনার মতো জ্ঞানী-বিজ্ঞানীরা এই ফিল্ডে আসলে অনেক উপকৃত হবে শ্রমজীবি মানুষ। আপনাকে তারা মাথায় করে রাখবে। তারা ধনতন্ত্রের খারাপ দিকটিই শুধু দেখেছে, তারা হাড়-ভাঙা খাটুনি দিয়ে সম্পদ তৈরি করেও দেখেছে তাদের পেট পিঠ খালি থাকে, আর যারা কোন শ্রম দেয় না তারা সেইগুলি ভোগ করে। আমি আশাবাদী মানুষ উইন্ডোজ আর বিজয়ের বিপরীতে আরও বেশি করে উবুন্তু আর অভ্রুতে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে।
করবেন নাকি একটা সমবায় বাংলাদেশে আমার নিকট ভালো আইডিয়া আছে। আপনার বর্তমান ইনকাম কত তা তো জানি না তবে বাংলাদেশের একজন সরকারী কর্মকর্তার সর্বোচ্চ পারিতোষিক ও সুবিধাদি আপনাকে দেয়া হবে, আর কাজের সন্ত্যুষ্টিও আপনার থাকলো। ভেবে দেখুন।
ধন্যবাদ
@আব্দুল হক,
সমস্যাটা কি জানেন? অধিকাংশ লোকই ধণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ক্যাম্পে ভাগ হয়ে গেছে। এবং কারনটা এই যে যে ধনতন্ত্রের ভাল দেখেছে, সে দারিদ্র দেখেনি-যে দারিদ্র দেখেছে, সে ধনতন্ত্রের ভাল দিকটা দেখেনি।
জাপান ডেনমার্কের মতন দেশগুলো ধনতন্ত্রের পথেই দারিদ্র সম্পূর্ন দূর করেছে আর ভারত বা আমেরিকাতে ধনতন্ত্রের পথে দারিদ্র আরো বাড়ছে-বাড়ছে মিলিয়ানের সংখ্যাও।
আমি সমষ্টি মালিকানাতে বরাবরই বিশ্বাসী। কিন্ত সেই মালিকানা যদি হয় সরকারের, তাহলে রাশিয়ার মতন পতন অনিবার্য্য। আবার শুধু সমবায় কেন কর্পরেটেও কর্মীদের কোম্পানীর অংশীদার করে, কর্পরেট সোশ্যালিজম আনা যায় যা আমেরিকাতে স্টার্ট আপে সব সময় চলে। দ্বিতীয় মডেলটা অনেক কার্যকরী-যা অনেকেই চালিয়ে সফল হয়েছে।
আমি ভারতে একটি সমবায় এন জি ওর সাথে যুক্ত ছিলাম যারা আদিবাসিদের মধ্যে নানান কাজ করে-ওদের কিছু প্রচারের আর আই টির কাজ করে দিতাম-কিন্ত তারাও দেখছে সমবায়ে কিছু লিমিটেশন আছে। এখন তারাই লিমিটেড কোম্পানী করে কর্মীদের শেয়ার দিয়ে নিজেদের রিমডেল করছে যাতে আরো বেশী কাজ তারা করতে পারে।
আমি একটা কথাই বলবঃ শুধু খাওয়া দাওয়া আর যৌন জীবন চালনা করা কোন মানুষের কাজ না, তাহলে আর দশটা প্রাণীর সাথে কোন পার্থক্য থাকে না। জীবনটা জীবনই, এটা উপভোগ করার জন্য। তবে এ উপভোগ সস্তা উপভোগ নয়। যে কাজে মানবীয় তৃপ্তি পাওয়া যায় না সে কাজ করে আর যাই হোক মানুষ হয়ে বেঁচে থাকা যায় না। হতে হয় পশু।
আমার কাছে এই দর্শনটা মূখ্যঃ যে কাজই করি না কেন তাতে যদি মানবীয় তৃপ্তি আর আনন্দের খোরাক না পাই তা করব না, হোক না আমি ফকীর থাকব, আমার কাছে আমার বিবেকের দায়টা সবচেয়ে বড়,
জীবন একটাই পাব, এই জীবনে যদি ফালতু কাজে গা ভাসিয়ে দেই তাহলে এর থেকে বড় আফসোস আর থাকবে না। তাই যাই করি না কেন যাতে মানুষের মত মানুষ থেকে এই জীবনটা স্বার্থক করতে পারি সেটাই উদ্দেশ্য।
আর না, ধন্যবাদ নানা ফালতু আলোচনার মাঝে বিপ্লব দা এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের অবতাড়না করেছেন।
আসলে জীবনের তো কোনো পরম অর্থ নেই আর হ্যা সম্পূর্ণ জীবন বলতে হয়ত কোনো কিছুই বুঝায় না। তবে কদাচিৎ এমন কিছু মানুষ পাওয়া যায় যারা নাকি তাদের জীবনকে সার্থক বা সফল বলে মনে করেন – এতে আমার মনে হয় জীবনের সার্থকতা নিজের ব্যক্তিগত উপলব্ধির উপরই নির্ভর করে। আবার অন্যে যখন কারো জীবনের সার্থকতা বিশ্লেষণ করতে যাবে তখন তার দৃষ্টিকোণ থেকেই তা করবে।
আমার এক আত্মীয় আছেন যার অনেক গুলো বাচ্চা। তিনি এতগুলো বাচ্চা জন্ম দিয়ে মানুষ করতে পেরেছেন বলে নিজেকে পরম সার্থক বলে মনে করেন অথচ একই ব্যাপার আমার কাছে হাস্যকর বলে মনে হয়।
একজন মানুষের জীবনে খেলার শেষ বাঁশি বাজানোর ক্ষমতা কেবল মৃত্যুর । সেখানই খেলার সমাপ্তি । সেই সাথে সমাপ্তি খেলোয়াড়ী জীবনের। এরপর শুধুই শূন্যতা।
আর এমন খেলায় আয়োজক মানুয নিজেই। সে নিজেই নিজের প্রতিপক্ষ এবং দর্শক, এমনকি নিজে রেফারি হওয়ার সুযোগও তার পুরোমাত্রায় রয়েছে । কিভাবে প্রতিটি মানুষ নামী খেলোয়ার এ খেলা খেলবে , তার সিদ্ধান্ত খেলোয়ারকই নিজ দ্বায়িত্বে নিতে হবে । আসুন আমরা সবাই ওয়াক ওভার না করে , শেষ পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যাই । জয়-পরাজয়ের হিসাব না হয় শেষ বাঁশি বাজানো পর্যন্ত মুলতবী থাকুক ।
ব্যাপারটা অতটা সোজা রৈখিক সমীকরণ না। সেটুকু সমাধান করার ক্ষমতা এদের আছে। শুধু খাওয়া আর প্রজনন-এই যদি হয় সাফল্য, তাহলে পশুদের জীবনের থেকে মানুষের পার্থক্য কি রইল? খোঁয়ারের বলদ ও জন্ম নেয়, খায়-বাচ্চা দেয়-তারপরে মারা যায়।
@বিপ্লব পাল,
আমার মতে জীবনটা সম্পূর্ন হয়ে গেলে অর্থাৎ জীবনের সব চাওয়া পাওয়া মিটে গেলে জীবনটাই অর্থহীন হয়ে যায়। জীবনটা অসম্পূর্ন আছে বলেইতো মানুষ প্রানপনে ছুটে চলছে, প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছে জীবনটাকে সম্পূর্ন করতে। আর সেই ছুটে চলা, চেষ্টা পৃথিবীটাকে এত প্রানবন্ত করে তুলছে। ছুটে চলার মধ্যেই সুখ। একবার যদি সেচুরেটেড লেভেলে চলে যায় তাহলে নদীর স্রোত বন্ধ হয়ে এই পৃথিবী থেমে যাবে, সব অসার আর অসহ্য হয়ে যেতে বাধ্য।
ছাত্র জীবনে সব মেধাবী ছাত্র বিলগেটসের মতন মাইক্রোসফট বানাতে না পারলে অথবা লালনের মতো গান রচনা না করতে পারলে জীবন বিফল হয় না। সব মেধাবী ছাত্রই কোন না কোনভাবে পৃথিবীতে তাঁদের মেধা দান করে যাচ্ছেন বলেই পৃথিবী টিকে আছে। সমস্যা হয় বিলগেটস, লালন অথবা বিখ্যাত কিছু হতে না পারার যন্ত্রনায়, ‘জীবনে কি করিলাম’ এই চিন্তায় মেধাবী ছাত্রটির জীবন যখন দুর্বিষহ হয়ে পরে। সে কারনেই হয়ত লক্ষ্য করা যায় মেধাবী লোকটি এক সময় ধর্মীয় বা অন্য কোন আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে যন্ত্রনাকে উপশম করার ব্যর্থ(?) প্রয়াসে লিপ্ত হয়।
যে যে পেশায় থাকুক না কেন, কর্পোরেট চাকুরি, কি ব্যবসা, কি গবেষনা একবার না একবার একঘেয়েমির ক্লান্তি আসবেই। সবসময়ই মনে হতে থাকবে, আমারটাই নগন্য অন্যেরটাই গৌন। এ থেকে মানুষ নামের প্রানীটির কোন উদ্ধার নাই। এর কারন হয়তো আমরা প্রাপ্তির চেয়ে অপ্রাপ্তিটাই মনে রাখি বেশী এবং সন্তুষ্টির চেয়ে অসন্তুষ্টিটাই আমাদের মনে সারাক্ষন কাটার মতো খচ খচ করতে থাকে।
এখন থেকেই চিন্তা করছি কিভাবে এই অবশ্যম্ভাবী বিপর্যয় এড়ানো যায়। সরকারী চাকুরী করা স্থপতি বাবার মিডলাইফ ক্রাইসিস দেখে বুঝতে পারছি এটা মোটেই ফেলনা কোন বিষয় না। আমার ইচ্ছা একটা গবেষণানির্ভর ক্যারিয়ার গড়া, কিন্তু সেখানে যে টাকা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার আগেই সিদ্ধান্ত নিতে চাই টাকা বড় নাকি জব সেটিসফেকশন বড়। বাংলাদেশের বেশিরভাগ ছেলেমেয়ের মত বুয়েটে প্রকৌশল পড়ে টেলিকম অথবা কমার্সের লাইনে চলে যেতে চাই না।
@পৃথিবী,
ধণতন্ত্রের নিয়ম হল যেদিকে সে স্কিল কাজে লাগবে-সে সেদিকেই টানবে। যখন এখানে টেলিকমের বুম চলেছে ইঞ্জিনিয়ারিং ত দূরের কথা ইতিহাসের ছাত্ররাও টেলিকমে ঢুকেছে। তারপরে যখন মহাপতন শুরু হয়েছে-তখন টেলিকমে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন পি এই চডিরাও চাকরী শুন্য অবস্থাতে দিন কাটিয়েছে।
এখানে বেঁচে থাকার একটাই নীতি-অভিযোজন।
ডঃ পাল,
বিল গেটস কিংবা লালন কি তা মনে করতেন? আসুন না আগামী মেধাবীদের জন্যে যদি ওরকম একটা পথের সন্ধান দেওয়া যায়! অন্ততঃ তৃতীয়বিশ্ব উপকৃত হবে নির্দ্বিধায় বলা যায়। আমার কাছে একটা বিষয় মনে হয় ইদানিং, আর তাহলো কর্পোরেট কর্পোরেট করে আমরা বোধকরি স্বকীয়তা হাড়িয়েছি। সাথে সাথে একের অর্জন দশে কাড়াকাড়ি করি। নির্লজ্জ্বভাবে, কারণ কর্পোরেট প্রথাই হলো ঢাল তা নিবারণের! কালেভদ্রে পৃথিবীর দেশে দেশে দুএকটা বিচ্ছিন্ন মেধার আলোকচ্ছটা ছাড়া সবই হতাশা আর অন্ধকারে মোড়া।
@কেশব অধিকারী,
আসলে সামাজিক সিস্টেমটা পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে। বেশ কিছু শিল্পপতির সাথে আমার আলাপ আছে-যারা জীবনে সেই অর্থে সফল-কিন্ত সমস্যা হচ্ছে ভারতে বা বাংলাদেশে আর্থসামাজিক পরিবেশ এমন না যে আপনি প্রথম প্রজন্মের সৎ ব্যাবসায়ী হয়ে, দাঁড়াতে পারবেন। আমেরিকানরা এদিকে ভাগ্যবান-এখানে সৎ ভাবে দাঁড়ানো যায়।
মানুষ যা করতে চাই-তাই করবে-এটাও ঠিক সম্ভব না। কারন তাহলে সব বাঙালী কবিতা লিখতে চাইবে-নইলে বাংলা ব্যান্ড করবে। নেহাত সেখানে টাকা নেই বলেই লোকে কাজ কর্ম করতে বাধ্য হয়। জীবনের এই অসম্পূর্ণতা সিস্টেমের প্রয়োজনেই দরকার।
বেশ কিছুদিন আগে একটা ছবি দেখেছিলাম, শাহরুখ খানের-ওম শান্তি ওম। ছবিতে কয়েকটা ডায়লগ খুব ভাল লেগেছিল- এর ভিতর একটা ডায়লগ অনেকটা এরুপ – যদি জীবনের শেষটা ভাল না হয়, সমাপ্ত সুন্দর না হয় তাহলে ভা্ববে “পিকচার আবিভি বাকি হ্যায়” মানে এখন জীবনের বাকি আছে। জীবনের সমাপ্ত এক সময় ভাল হতেই হবে, নয়ত জীবনের অভিনয় যেকোন সময়/কালের স্তরে স্তরে একটি না একটি চরিত্রের ভুমিকা পালন করে যেতেই হয়।
আপনার মত সুন্দর করে লিখতে পারিনা, তাই বুঝাতে পারলাম কিনা জানিনা।
ধন্যবাদ
@Russell,
ওই লাইনগুলো শারুখ সেক্সপীয়ার থেকে ঝেড়ে দিয়েছে।
এন্টনি এবং ক্লিওপেট্রা নাটকে প্রথম রোম সম্রাট অক্টাভিয়াস সিজার মৃত্যশয্যায়
If I have played my part well, clap your hands, and dismiss me with applause from the stage