ইদানিং একটি প্রবচন খুব বেশী বেশী শোনা যায়- ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম। রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে ইসলামী পন্ডিত কাঠ মোল্লা সবাই এক বাক্যে তারস্বরে চিৎকার করে বলছে- শান্তির ধর্ম ইসলাম, ইসলাম কোন সংঘাত, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বা উগ্রবাদীতাকে প্রশ্রয় দেয় না। তার মধ্যে আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ বা বৃটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার যেমন আছে, তেমনি আছে জাকির নায়েক, হারুন ইয়াহিয়া এমনকি বাংলাদেশের দেলোয়ার সায়েদি। ইসলামি পন্ডিতদের বক্তব্য- সেই অতীত কাল থেকে মানুষ যে ইসলামের পতাকা তলে এসেছে তা এসেছে মূলতঃ ইসলামের শান্তির বানী ও সাম্যতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- হঠাৎ করে ইসলাম যে একটা শান্তির ধর্ম ঘটা করে সেটা এভাবে প্রচারের জন্য কেন এত হাক ডাক? এমন কি ঘটল যে- এখন রেডিও, টিভি, পত্র-পত্রিকা খবরের কাগজ, ইসলামি মজলিস, ইন্টারনেট সব যায়গাতে জোরে সোরে ইসলামের পে এভাবে সাফাই গাওয়া শুরু হলো যে ইসলাম একটা শান্তির ধর্ম?

আগেও হয়ত এ বিষয়টা ছিল কিন্তু তত প্রকাশ্য বা জোরে শোরে ছিল না। বিষয়টা ব্যপক ভাবে সাধারন্যে আসে ২০০১ সালে নিউইয়র্কের সেই বিখ্যাত বিশ্ব বানিজ্য কেন্দ্রে কতিপয় ইসলামী জঙ্গি কর্তৃক সন্ত্রাসী হামলা করা ও তাকে গুড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান পার্ল হারবারে যে ভয়াবহ আতর্কিত আক্রমন করেছিল তাতে লোক মারা গেছিল তিন হাজারের কিছু বেশী। কিন্তু বিশ্ব বানিজ্য কেন্দ্রে লোক মারা গেছিল তার চাইতেও বেশী। আমেরিকার ইতিহাসে সন্ত্রাসী হামলা তো দুরের কথা গত দুই দুটি বিশ্বযুদ্ধ সহ কোন যুদ্ধেই এক সাথে এত মানুষ কখনও মারা যায় নি। বিশ্ব বানিজ্য কেন্দ্রে সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে সেটা গুড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা এতটাই বিস্ময়কর ছিল যে প্রথমে অনেকেই খবরটি শুনে বিশ্বাসই করতে চায় নি। তার মধ্যে আমিও অন্যতম। পরে যখন টেলিভিশনে দেখি তখন সেটা বিশ্বাস করি। আর যেহেতু ঘটনার নায়করা ছিল সবাই মুসলমান ও একটি মুসলিম জঙ্গি গোষ্ঠির সদস্য বা সমর্থক, তাই সব দোষ গিয়ে পড়ে মুসলমানদের ওপর পড়ে। বিষয়টির ভয়াবহতা ও গুরুত্ব এতটাই ছিল যে- আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জুনিয়র বুশ আবেগ ও উত্তেজনার বশে ঘোষনাই দিয়ে ফেলেছিলেন যে- আবার মুসলমানদের সাথে ধর্ম যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। যদিও বিষয়টি পরবর্তীতে নানা কারনে চেপে যাওয়া হয়। তবে এ ঘটনার পর পরই আমেরিকায় সন্ত্রাসী আক্রমন ঠেকাতে গঠন করা হয় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি যার পেছনে হাজার হাজার কোটি ডলার প্রতি বছর খরচ করা হচ্ছে। বিশ্ব বানিজ্য কেন্দ্রে সন্ত্রাসী আক্রমনের হোতা ওসামা বিন লাদেনকে ধরতে আমেরিকা আফগানিস্তান আক্রমন ও দখল করে। রাসায়নিক ও পারমানবিক অস্ত্র তৈরী করছে অজুহাতে তারা ইরাক আক্রমন ও দখল করে। আর স্বাভাবিক ভাবেই এসব আক্রমন ও দখলে ল ল নিরীহ লোক এ পর্যন্ত প্রান হারিয়েছে। যে কারনে মুসলমানদের মধ্যে জঙ্গিবাদী চিন্তা চেতনার আরও প্রসার ঘটেছে। বিশ্ব বানিজ্য কেন্দ্রে সন্ত্রাসী হামলার কারন জানাতে গিয়ে আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন বলেছিলেন যে পবিত্র আরব ভুমিতে আমেরিকান ইহুদি নাসারারা ঘাটি গেড়ে বসেছে বলেই আমেরিকায় হামলা করা হয়েছে। বিষয়টি কিন্তু গুরুত্বপূর্ন। ১৯৯১ সালে ইরাক যখন কুয়েত আক্রমন করে, তখন তথাকথিত বহুজাতিক বাহিনীর নামে আমেরিকান সৈন্যরা মুসলমানদের পবিত্র আরব ভুমিতে পদার্পন করে। কুয়েত থেকে সাদ্দাম বাহিনী হটে গেলেও আমেরিকান সৈন্যরা আরবের প্রতিটি দেশেই ঘাটি গেড়ে বসে। মুসলমানদের কাছে আরব দেশ বিশেষ করে বাদশাহ শাসিত সৌদি আরব হলো অতি পবিত্র দেশ কারন সেখানে ইসলামের নবী মোহাম্মদের জন্ম ও মুসলমানদের প্রধান ও সবচাইতে পবিত্র মসজিদ কাবা শরিফ সেখানে অবস্থিত। সুতরাং পবিত্র ভুমিতে কাফের নাসারা ইহুদি বাহিনী ঘাটি গেড়ে বসে থাকবে তা সাচ্চা মুসলমান মাত্রেরই সহ্য হওয়ার কথা না, সহ্য হয়ও নি। ফলাফল- আমেরিকায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে টুইন টাওয়ার ধ্বংস করে দেয়া। এ হামলার পর আমি অন্তত আমাদের দেশে একটা মানুষকেও খুজে পাইনি যারা মনে মনে অখুশী হয়েছে। মুখে এর নিন্দা করলেও মনে মনে যে দারুন খুশী হয়েছে তা ছিল প্রকাশ্য। এর কারনও বহুধা। আমাদের দেশে এর কারন আরও বিচিত্র। যারা ইসলাম পন্থি রাজনীতি করে বা তাদেরকে মনে মনে সমর্থন করে তারা খুশী হয়েছিল ঠিক আগের উল্লেখিত কারনে। আর যারা ধর্মনিরপে রাজনীতি করে বা সমর্থন করে তারা খুশী হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমেরিকার পাকিস্তানের পে অনৈতিক ও অমানবিক সমর্থনের কারনে , এছাড়াও প্রথমোক্ত কারনও এদের মনের মধ্যে কাজ করেছিল কারন এরাও তো সব মুসলমান। এরাও চায় না ইসলামের পবিত্র ভুমিতে আমেরিকা ঘাটি গেড়ে বসে থাকুক। সুতরাং চুড়ান্ত বিচারে বিষয়টি ছিল ধর্মীয় চেতনার। কিন্তু সবচাইতে গুরুত্ব পূর্ন বিষয় হলো- উক্ত আত্মঘাতী হামলায় যে কথিত ১৯ জন মুসলমান অংশ গ্রহন করেছিল তাদের বয়স ছিল ১৮ থেকে ৩০ এর মধ্যে যারা প্রত্যেকেই প্রায় আমেরিকায় স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে বসবাস করছিল। এখন প্রশ্ন হলো- আমেরিকার মত একটা দেশে বসবাসকারী সেসব নবীন তরুনদের সামনে ছিল জীবনকে উপভোগ করার অবারিত সুযোগ সেসবকে অকাতরে জলাঞ্জলী দিয়ে আত্মঘাতী হামলায় অংশ নিয়ে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিল কোন্ আদর্শে উজ্জিবীত হয়ে? বিষয়টি আমার মনে হয়না হালকা ভাবে নেয়ার কোন সুযোগ আছে। গোটা বিশ্বে বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ-বিগ্রহ, সন্ত্রাসী হামলায় মদদ দান ইত্যাদি বিষয়ে প্রত্য বা পরো ভাবে আমেরিকার ইন্ধনের বিষয়টি সুবিদিত। সেকারনে যুক্তির খাতিরে হলেও ধরে নেয়া যেতে পারে যে- তাদের এসব অনৈতিক অপকর্মের জন্য একটা শিা পাওয়া দরকার ছিল যা কোন দেশ কখনো দিতে পারেনি। সেদিক দিয়ে চিন্তা করলে এ তরুনরা দারুন বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে বলাই বাহুল্য। কিন্তু আসল বিষয়টা হলো- কি এমন সে আদর্শ যাতে উজ্জিবীত হয়ে এভাবে তরতাজা তরুনরা তাদের জীবনকে অকাতরে শেষ করে দিল স্বেচ্ছায়? এর একটাই উত্তর ইসলাম। আত্মঘাতী হামলার উদাহরন যে এটাই একমাত্র তা কিন্তু না। শ্রীলংকায় তামিল টাইগারদের আত্মঘাতী হামলার কথা আমরা জানি, এমনকি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়েও কিছু বাঙালীও পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু সেসব ছিল পরাধীনতার হাত থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার উদগ্র কামনায়। তারা স্ব স্ব দেশেই পরাধীনতার শৃংখল থেকে দেশকে স্বাধীন করতে এসব হামলা চালিয়েছিল। অন্য দেশে গিয়ে কিছু করেনি। অথচ ১৯ তরুনের সবার জন্মস্থান ছিল আরব দেশ আর তারা আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে আমেরিকাতে। আমেরিকা কিন্তু কোন আরব দেশকে দখল করে পরাধীনও করেনি, কিছু সংখ্যক সৈন্য মোতায়েন রেখেছিল তাও সেসব দেশের বাদশাহ আমীরদের অনুমতি ক্রমেই। সুতরাং গোটা বিষয়টি বিশ্লেষণের দাবী রাখে। ইদানিং বিভিন্ন পশ্চিমা দেশে বসবাসকারী পাকিস্তানী বংশোদ্ভুত মুসলমান তরুনদের এধরনের আত্মঘাতী প্রবোনতা বেশ লনীয়। ২০০৫ সালে লন্ডনে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল এরকম একজন পাকিস্তানী, সম্প্রতি নিউইয়র্কে ফয়সাল নামের আর এক পাকিস্তানীকে পাকড়াও করেছে এফ বি আই সন্ত্রাসী হামলা পরিকল্পনার অভিযোগে। খেয়াল করুন এসব তরুনরা ওসব দেশে জন্ম গ্রহন করেছে, ওখানকার পরিবেশে মানুষ কিন্তু শুধু ধর্ম ইসলাম হওয়াতে তারা কিন্তু ওদেশের সংস্কৃতিকে আত্মস্থ দুরের কথা গ্রহনও করতে পারেনি, উল্টো ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নিরীহ মানুষকে আত্মঘাতী হামলার মাধ্যমে হত্যা করার মধ্যে পবিত্র দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ হয়েছে আর তা করা পবিত্র কাজ মনে করেছে। এসব ঘটনা থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার তা হলো- মুসলমানদের মানসিকতার ন্যূনতম কোন পরিবর্তন নেই তা সে যে দেশে বা পরিবেশে জন্মগ্রহন করুক অথবা বাস করুক। হয়ত সব মুসলমান এরকম সন্ত্রাসী আক্রমনে অংশ নেবে না , কিন্তু আশংকা থেকেই যায় যে , যে কেউ যে কোন সময়ই জিহাদী আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে এ ধরনের কাজে অংশ নিতে পারে। অর্থাৎ মুসলমানরা শূধুমাত্র তাদের ধর্মের কারনেই সবার কাছে অবিশ্বস্থ হয়ে পড়েছে যা গোটা মানবজাতির জন্য সবিশেষ হুমকির কারন। কারন তাদের সংখ্যা কম করে হলেও গোটা পৃথিবীতে ১.৫ বিলিয়ন। এখন দেখা যাক, তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতরা ইসলাম শান্তির ধর্ম বলে তারস্বরে এত চিৎকার চেচামেচির পরও কেন এসব তরতাজা তরুন এধরনের আত্মঘাতী সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে? এটাও বিশ্লেষণ করা যাক, ইসলাম কি আদৌ শান্তির ধর্ম? আর ইসলাম যদি সত্যি সত্যি শান্তির ধর্ম হয়েই থাকে তাহলে তো তার কিতাবেই তা ভালমতো লেখা থাকবে, তারস্বরে চিৎকার করে বা মিডিয়াতে ব্যপক প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে তো তা প্রচার করার দরকার নেই। এটাও দেখা যেতে পারে যারা আত্মঘাতী হামলা চালাচ্ছে এরা সাচ্চা মুসলমান নাকি যারা ইসলাম শান্তির ধর্ম বলছে এরা সাচ্চা মুসলমান?

বিশ্লেষণের আগে আমাদের জানতে হবে ইসলাম কি ও মুসলমান কারা। ইসলাম হলো কোরানের ভাষায় শেষ নবী মোহাম্মদ প্রবর্তিত ধর্ম। মুসলমান হলো যারা ইসলামে বিশ্বাস করবে। ইসলামের পাচটি স্তম্ভ- ইমান, নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত। তার মধ্যে ইমান বা বিশ্বাস হলো সর্বপ্রথম ও সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন। কিসে বিশ্বাস? আল্লাহ ও তার রসুলের ওপর বিশ্বাস, শর্তহীন বা প্রশ্নহীন চুড়ান্ত বিশ্বাস। যে এতে সামান্যতম সন্দেহ বা প্রশ্ন করবে সে মুসলমান না। তবে সবার আগে আল্লাহ কে সেটার ফয়সালা আগে করা দরকার। তা না করলে আলোচ্য নিবন্ধের মূল ভাবটা বোঝা মুসকিল হবে। আমরা প্রচলিত অর্থে যাকে সৃষ্টিকর্তা বা ঈশ্বর বলি তারই অনেকটা আরবি নাম আল্লাহ। তবে কোরান খুব মন দিয়ে পাঠ করলে দেখা যায়, কোরানে বর্নিত আল্লাহ আমাদের ধারনা করা প্রচলিত সৃষ্টিকর্তা বা ঈশ্বর এর সাথে মেলে না। কোরানের বানী গুলো পড়লে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে এর আল্লাহ আসলে স্বয়ং মোহাম্মদ নিজেই। মোহাম্মদ তার নিজের কথাগুলোকেই আসলে আল্লার বলে চালিয়ে দিয়েছেন। নিচের আয়াতটি লক্ষ্য করুন-

যে লোক রসুলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহর হুকুমই মান্য করল। ৪ঃ ৮০

এখানে মোহাম্মদ আর আল্লাহ হুবহু এক বা সমার্থক অর্থাৎ মোহাম্মদ ও আল্লাহর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই এখানে।কোরানের বানী প্রচার করা ছাড়াও মোহাম্মদ অনেক হুকুম দিতেন, বিচার সালিশ করতেন, আদেশ উপদেশ দিতেন। আর বলা বাহুল্য তা সবই ্েয প্রকারান্তরে আল্লার হুকুম , বিচার সালিশ, আদেশ নিষেধ তা কিন্তু উক্ত আয়াতে পরিষ্কারভাবেই প্রকাশ পেয়েছে। এখানে কোন রূপক নেই, নেই কোন অস্পষ্টতা। উপরোক্ত আয়াতটির পরের অংশ দেখা যাক-

আমি আপনাকে( মোহাম্মদকে) তাদের জন্য রক্ষনাবেক্ষনকারী রূপে পাঠাইনি। ৪ঃ ৮০

উক্ত আয়াত থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে, মোহাম্মদ অনেকটা হিন্দু সনাতন ধর্মীয় মতানুযায়ী নিজেকে আল্লাহর অবতার রূপে প্রতিষ্ঠা করে লোকদেরকে বলছেন যে- তার হুকুম, আদেশ নিষেধ সবকিছু বিনা প্রশ্নে মানতে হবে, কারন তার অত সময় নাই মানুষকে দেখা শোনা তথা রক্ষনাবেক্ষন করার।

এরা কি লক্ষ্য করে না কোরানের প্রতি? পক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ ছাড়া অপর কারো পক্ষ থেকে হতো তবে এতে অবশ্যই কিছু বৈপরিত্য দেখতে পেত। ৪ঃ ৮২

তার মানে মোহাম্মদের দাবী তার কোরানে কোন বৈপরীত্য নেই। এবার দেখা যাক, কোন বৈপরিত্য আছে কি নেই।

দ্বীনের ব্যপারে জবরদস্তি বা বাধ্যবাধকতা নাই। ২ ঃ২৫৬

কি সুন্দর কথা। সত্যিই মনে হয় ইসলাম হলো মহা শান্তির বানী। মূলতঃ এই একটি বানী প্রচার করতে করতে ইসলামী পন্ডিতরা মুখে ফেনা তুলে ফেলেছে। আর প্রান পনে প্রমান করার চেষ্টা করছে ইসলামের চেয়ে মহাশান্তির ধর্ম সত্যি সত্যি আর নেই। এখন এর পরেই আয়াতটি দেখা যাক-

আর তোমরা লড়াই কর যে পর্যন্ত ফেতনার অবসান না হয়, আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত না হয়। অতঃপর যদি তারা বিবৃত্ত হয়ে যায় তাহলে কারো প্রতি জবর দস্তি নাই, কিন্তু যারা যালেম তাদের কথা আলাদা। ২ঃ ১৯৩

ল্ক্ষ্য করার বিষয়, এক ফুৎকারে শান্তির বানী হাওয়া হয়ে গেছে। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই করতে হবে। তাহলে দ্বীনের ব্যপারে জবরদস্তি বা বাধ্যবাধকতা নাই- কথা গুলি কোথায় গেল? তারা যদি নিবৃত্ত হয়ে যায় তাহলে তাদের প্রতি জবর দস্তি নাই- এর অর্থ কি? তার মানে অমুসলিমরা যদি আত্মসমর্পন করে বা পালিয়ে যায় তাহলে তাদের ওপর চড়াও হতে নিষেধ করছে। মনে হয় আহা কি সুন্দরই না ব্যবস্থা, অনেকটা আজকের যুগের জেনেভা কনভেনশনের মত যাতে বলা আছে যুদ্ধেক্ষেত্রে আত্মসমর্পনকারী শত্র“র ওপর কোন অত্যাচার নির্যাতন বা তাদেরকে খুন করা যাবে না। এখন এই আক্রমনাত্মক আয়াতের যে ব্যখ্যা ইসলামী পন্ডিতরা করে থাকে তা হলো-মোহাম্মদ কখনই আগ বাড়িয়ে আক্রমন করেননি, সব সময় তিনি আত্মরার্থে যুদ্ধ করেছেন। এবার নীচের হাদিসটি দেখা দেখা যেতে পারে তিনি আগ বাড়িয়ে আক্রমন কারী নাকি আক্রান্ত হয়ে আত্মরাকারী।

ইবনে আনু থেকে বর্নিত- আমি নাফির কাছে একথা জানতে চেয়ে একটা বার্তা পাঠিয়েছিলাম যে কোন গোত্রকে আক্রমনের আগে ইসলামের প্রতি দাওয়াত দেয়া আবশ্যক কিনা। তিনি উত্তরে জানিয়েছিলেন ইসলামের প্রাথমিক যুগে সেটা প্রয়োজন ছিল। আল্লাহর নবী আবু মুত্তালিক গোত্রের লোকদের ওপর যখন আক্রমন করলেন তখন তারা অপ্রস্তুত ছিল আর তারা তাদের গবাদি পশুকে পানি পান করাচ্ছিল। যারা তার সাথে যুদ্ধ করেছিল নবী সবাইকে হত্যা করলেন আর বাকীদেরকে বন্দী করলেন। সেদিনই তিনি জুরাইয়াকে দখল করলেন। নাফি বর্ননা করেন- এ রীতিটি আব্দুল্লাহ বিন ওমরের সাথে সম্পর্কিত ছিল যিনি নিজেই আক্রমনকারী দলের সাথে ছিলেন। সহী মুসলিম, বই-১৯, হাদিস-৪২৯২

এখন উপরে কোরানের আয়াতটি পড়েও কিন্তু বোঝা যায় যে মোহাম্মদই আক্রমনকারী।কারন তিনি বলছেন- লড়াই কর যে পর্যন্ত দ্বীন প্রতিষ্ঠিত না হয় । একজন বলশালী মতাবান ব্যক্তিই এমন ধরনের জঙ্গী কথা তার অনুসারীদের বলতে পারে। দুর্বল কোন নেতার পক্ষ এ ধরনের কথা বলা সম্ভব নয়। যখন উনি দুর্বল ছিলেন সেই মক্কাতে তখন তার বানী ছিল-

দ্বীনের ব্যপারে জবরদস্তি বা বাধ্যবাধকতা নাই। ২ ঃ২৫

আর যেই তিনি শক্তিশালী হয়ে গেছেন, লড়াই করে অন্য গোষ্ঠিকে পরাস্ত করার মত মতা অর্জন করে ফেলেছেন তখন তার বানী হয়ে গেছে- লড়াই কর যে পর্যন্ত দ্বীন প্রতিষ্ঠিত না হয় । তো এধরনের আচরন তো কোন আল্লাহর নবীকে মানায় না, মানায় একজন গোষ্ঠি নেতাকে।

যাহোক, মদিনার আশে পাশে যে সব গোত্র ইসলাম কবুল করেনি, অথচ মোহাম্মদের বাহিনী ততদিনে যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, আশে পাশের ছোট ছোট গোত্রগুলিকে আক্রমন করে পরাস্ত করতে পারঙ্গম, তাই এভাবে মোহাম্মদ তার বাহিনীকে আল্লাহর বানীর নামে ক্রমাগত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। আর বলাবাহুল্য সে েেত্র মোহাম্মদ ই আক্রমন কারী। যেটা উপরের হাদিসে বর্নিত ঘটনা তাকেই সমর্থন করছে। এেক্ষেত্র মোহাম্মদের সর্বাত্মক আগ্রাসী চরিত্রও ফুটে উঠেছে খুব সুন্দরভাবে। হাদিসটি পড়ে বোঝা যায়- সেই যুগেও অর্ধ সভ্য আরবরা যতই বর্বর হোক না কেন, তারা একটা নীতি অনুসরন করত আর তা হলো কাউকে বিনা প্ররোচনায় আক্রমন করত না। তারা যেটা করত- কোন একটা গোত্র প্রথমে কোন একটা ব্যপারে অন্য গোত্রকে আহবান করত তাদের শর্ত মেনে নেয়ার জন্য। যদি অন্য গোত্র সে শর্ত না মানত তারপরেই তারা আক্রমন করতে উদ্যত হতো। প্রথম দিকে মোহাম্মদও সেটাই করতেন কারন তখনও মদিনা বাসীদের ওপর তিনি নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তার করতে পারেন নি। যে কারনে প্রথম দিকে আশে পাশের গোত্রকে আহ্বান করা হতো ইসলাম কবুল করে তাদের অধীনে আসতে। অর্থাৎ দুর্বল গোষ্টিগুলি একটা সুযোগ পেত। যেটা হাদিসটিতে খুব স্পষ্টভাবে বর্ননা করা হয়েছে। পরবর্তীতে মোহাম্মদ যখন মদিনা বাসীর ওপর নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তার করলেন তখন নিয়মটি আমুল পাল্টে যায়। তখন থেকে যখন তখন মোহাম্মদ তার বাহিনী নিয়ে অপ্রস্তুত ছোট ছোট গোত্রের ওপর আক্রমন করত, পুরুষ মানুষগুলোকে হত্যা করত, নারীগুলোকে বন্দী করে গনিমতের মাল হিসাবে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিত যৌন আনন্দ করার জন্য, ধন-সম্পদও সব লুটপাঠ করে নিজেদের মধ্যে বিলি বন্টন করা হতো। উপরোক্ত ঘটনায় দেখা যায়-মোহাম্মদ জুরাইয়া নামের এক সুন্দরী যুবতীকে ভাগে পেয়েছিলেন, অবশ্য পরে তাকে তিনি বিয়ে করেছিলেন। বিনা উস্কানীতে একটা অপ্রস্তুত গোত্রকে আক্রমন করে তাদের পুরুষ মানুষগুলোকে হত্যা করার পর তাদের সুন্দরী নারিদেরকে ধরে এনে জোর পুর্বক বিয়ে করা কি ধরনের মহত্ব তা সত্যিই আমি বুঝতে অপারগ। আর এ ধরনের কাজটি করেছেন কে ? আল্লাহর প্রেরিত রসুল, সর্বশ্রেষ্ট মানুষ, মহামানব আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ। যে একটা সভ্য নীতি অর্ধ সভ্য আরবরা পর্যন্ত অনুসরন করত, যা হলো- বিনা উস্কানীতে কাউকে আক্রমন না করা, আমাদের প্রিয় নবী মহামানব আল্লাহর রসুল মোহাম্মদ তাও এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে চুড়ান্ত ভাবে আগ্রাসী ও অনৈতিক আক্রমনকারী হিসাবে আবির্ভূত হলেন।আর এসব করার পর তার ধর্মকে বলা হচ্ছে চির শান্তির ধর্ম। এর চাইতে নিষ্ঠূর কৌতুক আর কি হতে পারে? এটা আমার কোন নিজস্ব বক্তব্য না, কোরানের আয়াত আর হাদিস যা বলছে সেটাই এখানে ব্যখ্যা করা হচ্ছে। অথচ এসব ঘটনাকেই আবার একদল ইসলামী পন্ডিত আত্মরার্তে যুদ্ধ বলে চালিয়ে দিতে কি প্রান পাত চেষ্টা টাই না করে যাচ্ছে। ধুরন্ধর এসব তথাকথিত পন্ডিতরা এসব করে, প্রকারান্তরে গোটা মুসলমান জাতিরই অপরিসীম তি সাধন করছে।

এবারে শান্তির ধর্ম ইসলামের আরও কিছু আয়াত দেখা যাক।

তোমরা কিতাবধারীদের (ইহুদি ও খৃষ্টান) সাথে তর্ক বিতর্ক করবে না, কিন্তু উত্তম পন্থায়, তবে তাদের সাথে নয় যারা তাদের মধ্যে বে ইনসাফ। এবং বল আমাদের প্রতি ও তাদের প্রতি যা নাজিল করা হয়েছে, তাতে আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমাদের উপাস্য ও তোমাদের উপাস্য একই এবং আমরা তারই আজ্ঞাবহ। ২৯ঃ৪৬

আয়াতটি পড়লে মনে হয় মুসলিম খৃষ্টান ইহুদি ভাই ভাই, কোন ঝগড়া বিবাদ নাই। আরও মনে হয় ইসলামের মত উদার ও শান্তিপ্রিয় ধর্ম আর নাই। আর বলা বাহুল্য উক্ত সূরার আয়াতটি মক্কাতে অবতীর্ন যখন মোহাম্মদ ছিলেন অতিশয় দুর্বল, দুই চারজন ছাড়া তার কোন অনুসারী ছিল না। কারও সাথে ধর্ম নিয়ে তর্ক বিতর্ক তো দুরের কথা, নিজের জীবন বাচাতেই তাকে সব সময় তটস্থ থাকতে হতো। ঠিক আজকের মত অনেকটা , কোন মুসলিম দেশে আপনি ইসলাম নিয়ে সামান্যতম সমালোচনাও করতে পারবেন না, যদি করেন যে কোন সময় আপনার কল্লা কাটা যেতে পারে। ঠিক সেকারনেই মোহাম্মদের কন্ঠ থেকে কুরানের বানীর নামে মহাসাম্য আর মহা শান্তির বানী ঝরে পড়ছে।কিন্তু এর পরেই দেখেন একই মাহাম্মদের বানী যা তিনি আল্লাহর বানী রূপে প্রচার করছেন-

তোমরা যুদ্ধ কর আহলে কিতাবের ঐ লোকদের (খৃষ্টান) সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরের ওপর ইমান রাখে না, আল্লাহ ও তার রসুল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহন করে না সত্য ধর্ম, যতন না তারা জিজিয়া প্রদান না করে। ৯ঃ ২৯

আমাদের মহান আল্লাহর নবী মোহাম্মদের মুখ থেকে সাম্য, মৈত্রী আর শান্তির বানী উধাও হয়ে গেছে। আমাদের মহামানব মোহাম্মদের মুখ থেকে কেন তা উধাও হয়ে গেল? কারনটা কিন্তু সহজেই বোধগম্য। এ সূরার আয়াত মদিনাতে অবতীর্ন। মদিনাতে ততদিনে লুট তরাজের মালের ভাগ দেয়ার লোভ দেখিয়ে একটা বড় সড় শক্তিশালী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। তখন তিনি মক্কার মত আর এতিম ও দুর্বল নন। তখন আর মদিনার আশে পাশের এলাকাতে ছোট ছোট গোষ্ঠিতে বাস করা ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে আর ভয় করার কিছু নেই। বরং যে কোন সময়ই তাদেরকে আক্রমন করে নিঃশেষ করে দেয়া যায়। তাই এবার মোহাম্মদ সিংহের মত হুংকার ছাড়ছেন।আয়াত দুটো লক্ষ্য করলেই কিন্তু তা সহজে বোঝা যায়, বেশী চিন্তা ভাবনা করা লাগে না। এখন পাঠক আপনারাই বলুন ইসলাম কি শান্তির ধর্ম?

শুধু তাই নয়, পক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ ছাড়া অপর কারো পক্ষ থেকে হতো তবে এতে অবশ্যই কিছু বৈপরিত্য দেখতে পেত। ৪ঃ ৮২- এ আয়াতে আল্লাহ চ্যলেঞ্জ করেছিলেন যে কোরানে কোন বৈপরিত্য নেই। এখন উপরোক্ত সূরাগুলো কি প্রমান করে? স্ববিরোধিতা বা বৈপরিত্য নেই? মোহাম্মদ যখন দুর্বল একাকি তখন তার মুখে শান্তি আর সাম্যের বানী ঝরে পড়ে, আর যখন তিনি শক্তিশালী তখন বাঘের মত হুংকার দিয়ে দুর্বলের ওপর ঝাপিয়ে পড়েন। এ হলো আমাদের শ্রেষ্ট মানব আল্লাহর নবী মোহাম্মদের চরিত্র , আর আল্লাহ প্রেরিত কোরানের ঐশি বানীর নমুনা। মহানবী যে একই মুখে দুইরকম কথা বলছেন তা কিন্তু তিনি ভালই বুঝতে পেরেছিলেন , আর মক্কায় থাকতে কোরানের বানীর নামে যে সব সাম্য ও শান্তির বানী তিনি বলেছিলেন মদিনাতে কয়েক বছর থেকে শক্ষিশালী হওয়ার পর হঠাৎ করে কেন তিনি উল্টো সুর ধরলেন এ ব্যপারে তার সাহাবীরা তাকে প্রশ্ন করতে লাগল। ফলে এরও একটা যুত সই ব্যখ্যা দেয়ার দরকার হয়ে পড়ল, আল্লাহও আর বিন্দু মাত্র দেরী না করে ওহি পাঠিয়ে দিলেন মোহাম্মদের চাহিদা মোতাবেক-

যখন আমি এক আয়াতের স্থলে অন্য আয়াত উপস্থিত করি এবং আল্লাহ তিনি যা অবতীর্ন করেন তিনি সে সম্পর্কে ভাল জানেন, তখন তারা বলেন, আপনি তো মনগড়া উক্তি করেন, বরং তাদের অধিকাংশ লোকই জানে না। ১৬ঃ ১০১
কি আজব কথা , সর্বজ্ঞানী সব জান্তা আল্লাহ কিছুদিন আগে এক কথা বলেছিলেন , আর কিছু কাল পরেই তা যথার্থ মনে না হওয়ায় তা বাতিল করে নতুন আয়াত উপহার দিচ্ছেন ? এ আয়াত দিয়ে এটাই বোঝানো হচ্ছে যে-অমুসলিমদের ব্যপারে পূর্বে যেসব সাম্য ও মৈত্রীর কথা বলা হয়েছিল , পরবর্তী আয়াত সমুহে জেহাদের আহ্বান তথা যুদ্ধ করে তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়ার মাধ্যমে অতঃপর সেসব সাম্য ও মৈত্রীর আয়াত সমূহ বাতিল হয়ে গেল। এর পর কোরানের বানী শান্তি বানী তথা ইসলাম শান্তির ধর্ম কেমনে হয় যেখানে স্বয়ং আল্লাহ আগেকার সাম্য মৈত্রী বর্ননাকারী আয়াত নিজেই বাতিল ঘোষণা করে নতুন আয়াত নাজিল করেছেন?

একমাত্র অর্ধ বা পুরোপুরি অসভ্য এক দল মানুষকেই এ ধরনের কথা বলে ধোকা দেয়া যায়। অবশ্য আজকের যুগেও একশ্রেনীর ইসলামী পন্ডিতরা মুসলমানদেরকে ধাপ্পা দিয়ে চলেছে। এ ধরনের কথা বলাটা যে আল্লাহর সর্বজ্ঞানী সত্ত্বাকে অস্বীকার করা হচ্ছে সেটা বোঝারও মতা সেই আরবদের ছিল না। আর থাকলেও কারও সাহস ছিল না কিছু বলার। কারন সেরকম কিছু বললেই তো গর্দান কাটা পড়ত খোলা তলোয়ারের নীচে। অথচ কি বিস্ময়কর ব্যপার , স্বয়ং আল্লাহ তথা মোহাম্মদ যেখানে আগের এসব সাম্য মৈত্রীর আয়াত বাতিল করে দিয়ে গেছেন, সেখানে এখন কিছু তথাকথিত ইসলামী পন্ডিত মহাসমারোহে প্রচার করে চলেছে ইসলাম হলো একটা শান্তির ধর্ম। এছাড়াও আয়াত টি ভাল করে ল্ক্ষ্য করলে দেখা যায়, এটা রচনা করতে গিয়ে নিরক্ষর মোহাম্মদ দক্ষতারও পরিচয় দিতে পারেন নি, বাক্যটি যে তার নিজের তা কিন্তু খুব সহজেই বোঝা যায়। দেখুন- বাক্যটি শুরু হয়েছে আমি সর্বনাম দিয়ে মানে খোদ আল্লাহ বলছেন, যা হলো- যখন আমি এক আয়াতের স্থলে অন্য আয়াত উপস্থিত করি , ঠিক এর পরেই একই বাক্যে (যৌগিক বাক্য) বলা হচ্ছে- এবং আল্লাহ তিনি যা অবতীর্ন করেন তিনি সে সম্পর্কে ভাল জানেন। এটা কেমনে সম্ভব ? তার মানে সহজেই বোঝা যাচ্ছে মোহাম্মদ নিজে কথা শুরু করেছিলেন পরে মনে পড়ে গেল এটা তো আসলে আল্লাহর বানী তাই তিনি বাক্যের পরের অংশেই বললেন আল্লাহ তিনি যা অবতীর্ন করেন—–। একই বাক্যে ফার্ষ্ট পারসন (আমি) ও থার্ডপার্সন( আল্লাহ) একই সাথে কর্তা বা সাবজেক্ট ব্যকরনর কোন ধারায় হয় তা আমি বুঝতে একেবারেই অম। আরবী ব্যকরনে বোধ হয় এটা সম্ভব তার কারন আসলে আরবী ব্যকরন টা মনে হয় কোরান নাজিল হওয়ার পরই সৃষ্টি করা হয়েছে আর তাতে কোরানের ব্যকরনকে বজায় রেখে সেটাকেই আসল ব্যকরন বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। কারন কয়দিন আগে একজন ইসলামী চিন্তাবিদের কথা বার্তা শুনে তাই মনে হলো।শুদ্ধ ব্যকরনের এটা ব্যকরনের ধারায় এটা অমার্জনীয় ভুলের এক উজ্জ্বল নিদর্শন।

এক পর্যায়ে অবস্থা ও পরিবেশ অনুযায়ী যা মনে আসত সেটা বলেই মোহাম্মদ তাকে আল্লাহর বানী বলে চালিয়ে দিতেন এটা তার এক উজ্জ্বল নমুনা। কারন আল্লাহ কিছুদিন আগে এক কথা বলেছিলেন আর এখন অন্য কথা বলছেন, এটা বললে যে আসলে আল্লা সবজান্তা বা সর্বজ্ঞানী এটা অস্বীকার করা হয়, এটারও ধার ধারতে মোহাম্মদকে দেখা যাচ্ছে না আলোচ্য আয়াতে। আর এটা নিয়ে সাধারন সাহাবীদেরও কোন মাথা ব্যথা ছিল না কারন তারা ততদিনে মোহাম্মদের বাহিনীতে যোগ দিয়ে আশেপাশের জনপদ আক্রমন করে তাদের ধন সম্পদ লুটপাট করছে, তাদের সুন্দরী নারীগুলোকে দেদারসে ভোগ করছে, আর কি চাই। তখন মোহাম্মদ আল্লাহর বানীর নামে কি বলল না বলল এটা তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ন ছিল না।

এখন যদি কোন মুসলমান এটাকেই আল্লাহর আমোঘ বানী মনে করে, তাহলে তার পক্ষে তো চুপ করে বসে থাকা যায় না, ইসলামের জন্য জান বাজী রেখে অমুসলিমদের ওপর ঝাপিয়ে পড়বে সময় সুযোগ পেলেই, যা বর্তমানে দেখা যাচ্ছে। আর সেকারনেই মুসলিম তরুনেরা আত্মঘাতী সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।