আল্লাচালাইনা’র ‘কেন ইসলামকে না বলবো’ খুব আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। এমন ক্ষুরধার লেখনী, আবেগের এমন শৈল্পিক প্রকাশ, এর আগে খুব একটা চোখে পড়েনি। মুক্তমনায় আমিও তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। যাহোক ঈশ্বর, ধর্ম, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে ওনার ক্ষোভকে উনি যথেষ্ট আবেগঘন ভাষাতে তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছেন। তবে আবেগের ঘনঘটায় সামগ্রিকভাবে যুক্তির কিছুটা অনুপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। ওনার লেখার কিছু কিছু বিষয় নিয়ে ওনার লেখাতেই হয়ত মন্তব্য করা যেত। কিন্তু মন্তব্যের কলেবর অনেকটা বড় হয়ে যাবে বলে আলাদা করে এই লেখাটা লেখা।
আমি যদি বলি “আসুন আমরা চিৎকার করে ঘুষকে ‘না’ বলি”, তবে এর মাধ্যমে ঘুষের বিরুদ্ধে তা হবে আমার একধরনের symbolic (প্রতীকী) প্রতিবাদ। মানুষ বুঝবে আমার অবস্থান সামগ্রিকভাবে ঘুষের বিরুদ্ধে এবং নীতির মানদন্ডে আমাকে মূল্যায়ন করবে একজন যোদ্ধা হিসেবে। সমস্যা হলো, ধর্ম ব্যাপারটা এতটাই inclusive (অন্তর্ভূক্তকারী) একটা ব্যাপার যে, মানুষ স্বভাবতই এখানে এই ‘না’ টার কোনো না কোনো deterministic (নিরূপনকারী) একটা অর্থ খোঁজার চেষ্টা করবে। আল্লাচালাইনা ধর্মকে ‘না’ বলে দেয়া বলতে আসলে ঠিক কি বুঝিয়েছেন তা স্বভাবতই আমার কাছে ততটা পরিষ্কার নয়। অবশ্য, এটা আমার বুঝার অক্ষমতাও হতে পারে। ধরে নিই, উনি মানুষের ‘ধর্মবিশ্বাস’কে ‘না’ বলা বুঝিয়েছেন এবং বর্তমান যুগের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামী ধর্মবিশ্বাসকে ‘না’ বলেছেন। কারন হিসেবে মুসলিম সন্ত্রাসবাদের কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি উনি কোর’আনের অমানবিক কিছু আয়াতের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন এবং একইসাথে ইসলামের নবীর অমানবিক কিছু কিছু কার্যকলাপের বিষয়েও উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি ঈশ্বরের অস্তিত্বে ওনার অবিশ্বাস কেন, সেটারও কিছু কিছু বিবরন দিয়েছেন।
পৃথিবীর রক্তাক্ত ইতিহাসের বড় একটা অংশের পেছনে রয়েছে ধর্মের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পৃক্ততা এবং সামগ্রিকভাবে ধর্মের বিরুদ্ধে কারো প্রতীকী ‘না’ অবস্থানও একধরনের প্রতিবাদ এবং মানবতার নিরিখে প্রতিবাদী মানুষটা একজন যোদ্ধা। যেহেতু ধর্মবিশ্বাসের পেছনে রয়েছেন একজন অদৃশ্য ঈশ্বর (আরও একধাপ এগিয়ে হয়ত বলা যায় ‘কল্পিত’ ঈশ্বর), ওনার যুদ্ধের একটা অংশ সেই অদেখা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যা ওনার প্রবন্ধটাতে উনি সুস্পষ্টভাবেই তুলে ধরেছেন। ওনার যুদ্ধের এই অংশটা নিয়ে আসলে বিতর্কে গিয়ে লাভ নেই কেননা এটা বিশ্বাস অবিশ্বাসের ব্যাপার এবং ঈশ্বর মানুষটা আমাদের সকলেরই ধরাছোঁয়ার বাইরে।
ওনার যুদ্ধের দ্বিতীয় অংশটা হলো ধর্ম তথা ধর্মবিশ্বাসের বিরুদ্ধে যা ধর্মগ্রন্থ, ধর্মীয় মহাপুরুষ, ধর্মপালন, ধর্মের প্রয়োগ, ইত্যাদি সবগুলো বিষয়কেই সামগ্রিকভাবে অন্তর্ভূক্ত করে। এই অংশটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে কেননা ব্যাপারটা পার্থিব (এগুলোর উপস্থিতি, চর্চা ও প্রয়োগের ক্ষেত্র পৃথিবী) এবং সামগ্রিকভাবে দেখলে ধরাছোঁয়ার মধ্যে। আমি কালের ওপরে উঠে কেবল ইসলাম ধর্মের বিরোধীতাকে নয় বরং সনাতনি বা প্রাতিষ্ঠানিক সবগুলো ধর্মের বিরুদ্ধে ওনার সামগ্রিক ‘না’ অবস্থানকে (যা উনি নিজেও ওনার লেখায় বা প্রতিমন্তব্যে দাবী করেছেন) যুক্তির আলোয় দেখার চেষ্টা করবো।
উনি বলেছেন, হিন্দু ধর্মকে মানবতার প্রয়োজনে একসময় আমরা ‘না’ বলেছি এবং এখন ইসলামকে ‘না’ বলার সময় এসেছে। এই স্টেট্মেন্টটা থেকে খুব সহজেই কিন্তু এই অনুসিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় যে, ইতিহাসের কোনো এক সময়ে হিন্দু ধর্মকে ‘না’ বলে আমরা অনন্তকালের সফলতা পেয়েছি এবং হিন্দু ধর্ম ‘না’ হয়ে গেছে। বাস্তবতা কি আমাদেরকে তা বলে? হ্যাঁ, হিন্দু ধর্ম থেকে অমানবিক সতীদাহ প্রথাকে তুলে দেয়া হয়েছে। বর্ণবাদকেও হয়ত নামিয়ে আনা হয়েছে সহনীয় পর্যায়ে। কিন্তু ভারতের হিন্দু মৌলবাদী রাজনৈতিক দল, বিজেপি’র বিপুল ভোটে গত নির্বাচনের বিজয়কে বিবেচনায় আনলে যে কেউই সহজেই এই অনুসিদ্ধান্তে পৌঁছুতে পারবেন যে, হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসের প্রগাঢ়তা সাম্প্রতিককালে বরং বেড়েছে। সারাজীবন যিনি মানুষের গান গেয়েছেন সেই ভূপেন হাজারিকা’র বিজেপিতে যোগদান (হোক তা নির্বাচনে পাশ করার জন্যে), ভারতের গোরাখপুরের চরমপন্থী ‘হিন্দু ইউভা বাহিনী’র কর্মী একদল যুবকের আমেরিকার এ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে বসে রিচ্যুয়াল পালনের মহড়া, সর্বোপরি ভারতের রাজনীতিতে বিজেপি’র (যা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের হিন্দু ভার্শন) সাম্প্রতিক উত্থান- এ সবই কিন্তু একটা বিশেষ সিগ্নাল দেয় যে, ‘something is going wrong somewhere’ (কোথাও একটা সমস্যা হয়ে গেছে)। হিন্দু মৌলবাদের দৈত্যটা আবার যেন মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে! তবে কি হিন্দু ধর্মকে পূনর্বার ‘না’ বলার সময় এসেছে? তাহলে ঠিক কাকে বা কোন্ বিষয়টাকে আমরা এখন ‘না’ বলবো হিন্দু ধর্মের? হিন্দু ধর্মবিশ্বাসকে? রামায়ন, বেদ কিম্বা গীতাকে? দেব-দেবীকে? নাকি, হিন্দু ধর্মপালনের কোনো রীতি-নীতিকে? জটিলতার এখানেই শেষ নয়। হিন্দু ধর্মকে শত বা হাজার বছর আগে যে ‘না’টা আমরা বলেছি সেই একই ‘না’ কি আজও বলবো, নাকি ভিন্ন কোনো ‘না’ বলবো?
উনি এও বলেছেন, মধ্যযুগে মানবতার প্রয়োজনে খৃষ্টধর্মকে একসময় আমরা যেভাবে ‘না’ বলেছি, ইসলামকে সেভাবেই আজ ‘না’ বলার সময় এসেছে। একইভাবে, এই স্টেট্মেন্টটা থেকেও একই অনুসিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় যে, খৃষ্ট ধর্মকে ‘না’ বলে আমরা অনন্তকালের বিজয় পেয়েছি। বাস্তবতা কি তাই? হ্যাঁ, চার্চের শাষনকে eliminate (দূরীভূত) করা গেছে। রাষ্ট্রের শাষন ব্যবস্থাকে চার্চের বা বাইবেলের রাহুমুক্ত করা গেছে। আমার ঠিক জানা নেই মধ্যযুগে খৃষ্টধর্মকে আমরা কিভাবে ‘না’ বলেছিলাম। তাকি খৃষ্টধর্মকে? বাইবেলকে? মহাপুরুষ জেসাসকে? নাকি চার্চের শাষনকে? খৃষ্ট ধর্মবিশ্বাস, বাইবেল বা মহাপুরুষ জেসাসকে ‘না’ বলে থাকলে তাতে আমরা খুব একটা সফল হয়নি কেননা সংখ্যার দিক দিয়ে খৃষ্ট ধর্মাবলম্বীরা আজো পৃথিবীর সংখ্যাধিক্য ধর্ম অনুসারী। পৃথিবীতে চার্চের সংখ্যা একদিকে যেমন এককভাবে মসজিদ বা মন্দিরের সংখ্যার চেয়ে সম্ভবত বেশী, তেমনি করে চার্চগামী মানুষের সংখ্যাও এককভাবে মসজিদ বা মন্দিরগামী মানুষের সংখ্যার চেয়ে সম্ভবত বেশী। পরিসংখ্যান মতে, সমসাময়িক ধর্মগ্রন্থগুলোর মধ্যে সর্বাধিক প্রকাশিত ধর্মগ্রন্থ হলো বাইবেল। আর যদি চার্চের শাষনকে ‘না’ বলে থাকি তবে কেন তা বলেছি, তা বোধগম্য এবং আমাদের বিজয় পাওয়ার কারনটাও ব্যাখ্যাযোগ্য। আর চার্চের শাষনকে ‘না’ বলা দলটার মাঝে খৃষ্ট ধর্মাবলম্বীদেরই যে সুবিশাল একটা অংশ ছিল যাদের প্রয়োজন পড়েনি ঈশ্বরবিশ্বাস বা বাইবেলকে ‘না’ বলার, তা প্রমানের জন্যে বোধহয় পরিসংখ্যান বা তথ্য-সূত্রের প্রয়োজন নেই। ঠিক যেমনি করে বর্তমান বিশ্বের কোনায় কোনায় ‘শরিয়া আইন’ ও তথাকথিত ‘ইসলামী শাষন’-এর বিরুদ্ধে লড়ছেন অসংখ্য মুসলমান। হ্যাঁ, তারা হয়ত এখনও ততটা সুসংহত নয়, তথ্যের সার্বিক নিয়ন্ত্রনকারী পশ্চিমা মিডিয়াতে এখনও হয়ত তাদের সম্বিলিত voice (কন্ঠ) তৈরী হয়নি কিম্বা তাদের বিক্ষিপ্ত বিজয়ের কাহিনী বিশ্ববাসী এখনও হয়ত জানতে শুরু করেনি। তাছাড়া পজিটিভ শক্তিকে রাষ্ট্রের আইন-কানুন মেনে চলতে হয়, পাল্টা বোমা মেরে সরব প্রতিবাদ করা তাদের পক্ষে তো আর সম্ভব নয়। নেগেটিভ শক্তির বহির্প্রকাশ সবসময়ই সহিংস, তাৎক্ষনিক ও সরব; প্রচারটা সেকারনেই ব্যাপক। পক্ষান্তরে পজিটিভ শক্তির বহির্প্রকাশ সাধারনভাবে অহিংস, ধীরলয়ে, তুলনামূলক নীরব, কিন্তু সুসংহত; প্রচারটা সেকারনেই অধিকাংশ সময় নোটিসবিহীন। পজিটিভ শক্তিকে যুদ্ধ করতে হয় আইনের মধ্যে থেকে (প্রচলিত আইন দিয়ে) এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলে। আর ইতিহাস সাক্ষী, অহিংস বা non-aggressive (অনাগ্রাসী) হলেও চুড়ান্ত বিজয় সবসময় পজিটিভ শক্তির পক্ষেই হয়। বাংলাদেশের ৬৪ টা জেলায় একসাথে বোমা হামলা চালিয়ে সরব উপস্থিতির জানান দিয়েছিল যে চরমপন্থী ইসলামী দল জেএমবি, সেই দলের শীর্ষস্থানীয় দুই নেতা, জেএমবি’র সকল সদস্য ও সমর্থকদের তথাকথিত ‘ইসলামী শাষন’-এর স্বপ্নদ্রষ্টা, শায়খঃ আব্দুর রহমান ও বাংলা ভাইকে বাংলার মাটিতেই বিচারের মাধ্যমে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বিজয়ী হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষ। কেউ যদি ধর্মীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশীদের এই প্রতিবাদ ও বিজয়কে যথেষ্ট সরব মনে না করেন, তবে তা অনেকাংশেই তার বুঝার অক্ষমতা।
আবার ফিরে আসি খৃষ্টধর্মে। খৃষ্ট ধর্মাবলম্বীরা পৃথিবীর সংখ্যাগুরু নাকি সংখ্যালঘু ধর্ম অনুসারী, পৃথিবীতে চার্চের সংখ্যা মসজিদ বা মন্দিরের সংখ্যার চেয়ে কম নাকি বেশী, তাতে কার্ কি আসে যায়? ক’জন খৃষ্ট ধর্মাবলম্বী চার্চে গেল আর ক’জন গেলনা, তা নিয়েই বা কার্ মাথাব্যথা? কিন্তু মাথাব্যথা সেটা যখন দেখা যায়, আমেরিকার প্রখ্যাত ও leading (অগ্রগামী) ক্যাথোলিক প্রিষ্ট, প্যাট রবার্টসন (যিনি Christian Broadcasting Network, CBN-এর স্বতাধিকারী যেটা প্রায় ৭১ টা ভাষায় ১৮০ টার ওপর দেশে তার evangelical message প্রচার করে, যার আমেরিকান evangelical ভক্তের সংখ্যা ৪০ থেকে ৬০ মিলিয়নের মধ্যে এবং যিনি আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, জর্জ বুশের American Religious Right-এর অন্যতম প্রধান মৈত্রী) হাইতির সাম্প্রতিককালের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সেটাকে ‘ঈশ্বরের রোষ’ হিসেবে অভিহিত করেন। কিম্বা তিনি যখন ভেনিজুয়েলার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজকে assassinate (গুপ্তহত্যা) করার প্রস্তাব দেন। ইসরায়েলের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, এরিয়েল শ্যারোন কমাতে (coma) চলে গেলে সেই তিনিই (প্যাট রবার্টসন) যখন সেটাকে বলেন ‘ঈশ্বরের রোষ’ এই যুক্তিতে যে, গাজা ও ওয়েষ্ট ব্যাংক থেকে ইহুদীদের কিছু কিছু আবাস (স্থাপনা) উচ্ছেদ করে ফিলিস্তিনী মুসলমানদের প্রতি অনুগ্রহ দেখানোয় শ্যারোন প্রকারান্তরে ইসরায়েলের পবিত্রভূমিকে অপমান করে ঈশ্বরকে রাগান্বিত করেছেন। মাথাব্যথা সেটা যখন এহেন রেডিক্যাল ও চরমপন্থী প্যাট রবার্টসনের স্থাপিত CBN University’র (যার বর্তমান নাম Regent University) মত ‘লো রেটিং’-এর একটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা ১৫০ জনেরও বেশী গ্রাজুয়েটকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বুশ তার এ্যাডমিনিষ্ট্রেশনে নিয়োগ দেন। মাথাব্যথা সেটা যখন এহেন চরমপন্থী একজন ধর্মগুরুর টাকায় ক্যাম্পেইন চালিয়ে বব্ ম্যাক্ডোনেল-এর মত চরম কন্জার্ভেটিভ একজন রিপাবলিকান (যিনি নিজেও CBN University থেকে পাশ করা এবং ডিগ্রী প্রোগ্রামের থিসিসে কর্মজীবী মহিলাদেরকে ‘সমাজের জন্যে ক্ষতিকর’ বলে উল্লেখ করেছিলেন যিনি) জনগণের ভোটে ভার্জিনিয়ার গভর্ণর পদে নির্বাচিত হন। মাথাব্যথা সেটা যখন ইসরায়েলী সৈন্যরা নিরীহ ফিলিস্তিনী নারী ও শিশুদের মিসাইলের আঘাতে হত্যা করলে কিম্বা বোমা মেরে গাজা উপত্যখার কোনো হাসপাতাল উড়িয়ে দিলে আমেরিকার কেবল্ নিউজের ওয়েবসাইটগুলোতে সে খবর পড়ে শত শত আমেরিকান নারকীয় উল্লাসপূর্ণ কমেন্ট করেন কমেন্ট বিভাগে এই বলে যে, গাজা উপত্যখার অনুকরনে পৃথিবীর সমস্ত মুসলমানদেরকে হত্যা করা হোক, প্রতিটা পশ্চিমা দেশ থেকে মুসলমানদেরকে লাথী দিয়ে বের করে দেয়া হোক, কিম্বা গোটা পৃথিবীর তাবৎ মুসলমানকে ক্রিশ্চিয়ানিটি, জুডাইজম বা অন্য ধর্মে দীক্ষিত করা হোক। এ সবই কিন্তু একটা বিশেষ সিগ্নাল দেয় যে, ‘something is going wrong somewhere’ (কোথাও একটা উল্টোপাল্টা হয়ে যাচ্ছে)। খৃষ্টধর্মীয় মৌলবাদের দৈত্যটা আবার যেন মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে! তবে কি খৃষ্টধর্মকে পুনর্বার ‘না’ বলার সময় এসে গেছে আমাদের? কিন্তু এখনতো আর মধ্যযুগীয় চার্চের শাষন নেই। কিম্বা নেই মধ্যযুগের মত ক্ষমতার প্রতিযোগিতা চার্চের সাথে সম্রাটের। তাহলে ঠিক কাকে বা কোন্ বিষয়টাকে আমরা এখন ‘না’ বলবো খৃষ্টধর্মের?
উল্লেখ্য, আমরা যারা কেউ কেউ হাততালি দিয়ে সমর্থন দিচ্ছি মুসলমানদের বিরুদ্ধে খৃষ্টান, জিউ বা হিন্দুদের এহেন নারকীয় উল্লাস ও বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাবকে এই যুক্তিতে যে, ‘every action has a reaction’ (প্রতিটা ক্রিয়ারই একটা প্রতিক্রিয়া আছে), তারা নিজেরা বোধহয় এটা ভুলে যাচ্ছি যে, আমাদের এহেন action-এরও কিন্তু কোথাও না কোথাও একটা reaction আছে। আফটার অল্ (সর্বোপরি), শত্রুর শত্রু কিন্ত সবসময় বন্ধু নয়। একটা দলের মৌলবাদী শক্তির উত্থান বা সন্ত্রাসকে দমন করার পথ্য হিসেবে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা আরেক দলের মৌলবাদী শক্তিকে যদি উস্কানী আর ইন্ধন দিই আমরা (যা বোধহয় প্রকারান্তরে একসময়ের ‘না’ বলা কোনো কোনো ধর্মকে নতুন করে আবার ‘হ্যাঁ’ বলার সমতূল্য), perhaps we are standing on the wrong side of the history (আমরা সম্ভবত ইতিহাসের ভুল দিকে দাঁড়িয়ে আছি)। কেননা সাপ যদি একবার গর্ত থেকে বের হয়ে এসে ফণা তোলে, তখন তার পরিচয় কেবল একটাই তা হলো ‘সাপ’- না বন্ধু, না শত্রু। সামনে যাকে পাবে, তাকেই দংশন করবে।
সবশেষে আসুন, ভারতের সেক্যুলার নীতিমালার কংগ্রেস পার্টির একজন নেতার কথা কল্পনা করি, যিনি হিন্দু মৌলবাদের সাম্প্রতিক উত্থানের বিরুদ্ধে লড়ছেন। যিনি লড়ছেন হিন্দু মৌলবাদী রাজনৈতিক দল, বিজেপি’র বিরুদ্ধে তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করার জন্যে। লড়ছেন গুজরাটের মুসলিম নিধনের বিরুদ্ধে। লড়ছেন মুসলিমদের বাবরী মসজিদ সুরক্ষার জন্যে। সংসদে আইন পাশ করার জন্যে লড়ছেন যেন নিম্নবর্ণের হিন্দু, পাহাড়ি উপজাতি এবং মুসলমানদের জন্যে সরকারি চাকরিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কোটা চালু করা হয়। সংসদে আইন পাশ করার জন্যে লড়ছেন যেন সংখ্যালঘু মুসলমানদেরকে ভারতীয় পুলিশবাহিনী ও সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেয়া হয়। লড়ছেন শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার জন্যে যেন বাচ্চাদের স্কুলগুলোতে এমন পাঠ্যবিষয়কে অন্তর্ভূক্ত করা হয় যেখানে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়ীকতার বিরুদ্ধে বাচ্চাদেরকে শিশুবেলা থেকেই শিক্ষা দেয়া হবে যেন বড় হয়ে তারা ভিন্ন বর্ণের এবং ভিন্ন ধর্মের মানুষের সাথে সহনশীল ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করতে শেখে। মন্দিরের হিন্দু পুরোহিতদের জন্যে সরকারি উদ্যোগে ট্রেইনিং-এর ব্যবস্থা করার পক্ষে লড়ছেন যেখানে পুরোহিতদেরকে ধর্মীয় সহনশীলতার বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলা হবে যেন মন্দিরগামী সমস্ত মানুষদেরকে তারা ধর্মীয় সহনশীলতাকে শিক্ষা দিতে পারেন। পাশাপাশি, হিন্দু ও মুসলিম নেতৃত্বকে একই প্ল্যাট্ফর্মে ডেকে এনে মুখোমুখি বসার সুযোগ করে দিচ্ছেন যেন তারা পারষ্পরিক পার্থক্যকে উপলব্ধি করে এবং তা মেনে নিয়ে দূরত্বকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্যে সচেষ্ট হয় যেন এর মাধ্যমে পারষ্পরিক সহিংসতাকে পরিত্যাগ করা সম্ভব হয়।
আমি সামান্যও কেয়ার করিনা তিনি যদি বাড়ী থেকে বের হওয়ার আগে পুজার ঘরে ঢুকে ভগবানের মূর্তির সামনে ঝুলানো ঘন্টাটা ধরে তাতে মৃদু টুংটাং আওয়াজ তুলে থাকেন। আমি সামান্যও কেয়ার করিনা তিনি যদি ঘর থেকে বের হওয়ার আগে স্ত্রীর সামনে মুখ নীচু করে ধূপের ধোঁয়া তার চোখে-মুখে লাগাতে দেন স্ত্রীকে। আমি সামান্যও কেয়ার করিনা তিনি যদি ঘর থেকে বের হওয়ার আগে স্ত্রীর ভালবেসে দেয়া লাল তীলক কপালে এঁকে দিতে দেন প্রশ্রয়ের হাসি হেসে এবং দিনভর সাবধানে ও সযত্নে মুখখানা ধুয়ে নেন যেন তীলকখানা মুছে না যায়। তার যুদ্ধ হয়ত ভারতের আশি কোটি হিন্দুর হৃদয় থেকে ভগবান বিশ্বাসকে উচ্ছেদ করার জন্যে নয়। তার যুদ্ধ হয়ত আশি কোটি ঘরকে রামায়ন, বেদ কিম্বা গীতাবিহীন করার জন্যে নয়। তার যুদ্ধ হয়ত আশি কোটি ঘরকে গনেশের মূর্তিবিহীন করার জন্যে নয়। কিন্তু মানবতার নিরিখে তিনি একজন যোদ্ধা এবং একজন শক্তিশালী যোদ্ধা। কেননা তার enemy line (শত্রুরেখা) অনেক ছোট ও well defined (সুস্পষ্টভাবে সংগায়িত), তার লক্ষ্য ও কর্মপদ্ধতি সুনির্দিষ্ট এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে ও ধর্ম নিরপেক্ষতার পক্ষে তার যুদ্ধে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশী।
আমার নিজস্ব সীমাবদ্ধতার জন্যে আমি যদি তাকে ‘যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নাও পারি, তবুও একসময়ের অমানবিক সতীদাহ প্রথার প্রচলনকারী, মনুষ্যত্ববিহীন বর্ণবাদের প্রচলনকারী সনাতনি হিন্দুধর্মের বর্তমান কালের জারজ সন্তান মডারেট হিন্দু ধর্মের কাচ্চি-বিরানীখোর একজন মডারেট হিন্দু বলে তাকে অপমান করার ধৃষ্টতা আমি অন্তত দেখাবো না।
লেখাটা শেষ করবো আমার খুব পছন্দের বিখ্যাত একটা ‘প্রেস রিলিজ’এর উল্লেখ করে। নাইন-ইলেভেন-এর দু’মাস পর এবং আফগানস্থান আক্রমনের প্রায় মাস তিন/চার আগে প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ প্যাট রবার্টসনকে Afghan Children’s Fund-এর পরিচালকের পদে নিয়োগপ্রদানকালে নিম্নোক্ত প্রেস রিলিজ দিয়েছিলেন হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে।
PRESIDENT APPOINTS DR. PAT ROBERTSON TO MANAGE AFGHAN CHILDREN’S FUND
Press Briefing by the President
White House, December 9, 2001
THE PRESIDENT: Good afternoon. As you know, today is Sunday- the Lord’s day, a day of rest, and a day of prayer- not to mention the only Federal holiday that comes 52 times a year. And so it seems only appropriate that I break with my usual Sunday routine of six straight hours of televised sports to make a very important announcement to the good people of this country.
Last week, one of this nation’s great moral pillars, Dr. Pat Robertson, announced his retirement from the Christian Coalition of America. This mighty institution, which under Dr. Robertson’s stern guidance has so successfully protected America from all manner of smut-peddlers, Jesus-killers, lesbos, fetus-murderers, faggots, and Darwinists, is of course the same one that was so gloriously responsible for installing both my father and myself in the Executive Branch. For all these things, we are eternally grateful- which is why today, it is my pleasure to return the favor by appointing Dr. Robertson to the highly compensated position of General Manager of the Afghan Children’s Fund.
In his new position, Dr. Robertson will have absolute authority to apply the full balance of the fund to work to bring Christian relief to the Godless, unwashed pre-adult hordes of Afghanistan. With the nearly $35 million that has been raised to date, the fund will make it possible for Dr. Robertson to not only bathe Afghanistan’s children in the bright light of Christ’s love, but to also equip every last boy and girl with their very own keepsake Gideon’s bible- to be embossed with the special commemorative message, “Spiritual Salvation From the Taxpayers of the United States of America.”
I regret that Dr. Robertson can not be here with us this morning. But he is busy, tirelessly crusading to do his part to alleviate yet another American challenge- the energy crunch. He has, however, sent a telegram, in which he states, “Dear Mr. President. I am both honored and humbled to accept this immensely lucrative appointment, and I want to assure the American people that during my tenure, the Afghan Children’s Fund will not rest until the scourge of Islam has been sandblasted off the souls of each and every Afghan child, or until the depleted fund can no longer contribute to my many mortgages, which ever comes first.” Beautiful sentiments from a beautiful man. I’m sure he’ll do a bang-up job.
God bless America, and God bless Pat Robertson.
[বঙ্গানুবাদঃ (জর্জ বুশের বক্তব্য)- শুভ বিকাল। আমরা সবাই জানি আজ রোববার- যা ঈশ্বরের দিন, আরামের দিন, প্রার্থনার দিন এবং বলার অপেক্ষা রাখেনা যা একমাত্র সরাকারি ছুটির দিন যা বছরে ৫২ বার আসে। কাজেই টিভির পর্দায় টানা ছয় ঘন্টার খেলা দেখার নিয়ম ভাঙ্গার উপযুক্ত কারন হলো, দেশবাসীকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ঘোষনার কথা জানানো।
গত সপ্তায় জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ নৈতিক স্তম্ভ, ড. প্যাট রবার্টসন Christian Coalition of America থেকে অবসর নিয়েছেন। এই শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানটা যা ড. রবার্টসনের দৃঢ হাতের পরিচালনায় আমেরিকাকে সফলভাবে রক্ষা করেছে সব ধরনের শরীরী-ব্যবসায়ীদের, যীশু-হত্যাকারীদের, মেয়ে-সমকামীদের, ভ্রূণ-হত্যাকারীদের, ছেলে-সমকামীদের, এবং ডারউইনবাদীদের কুচক্র থেকে এবং সেই একই প্রতিষ্ঠান যা মহামান্বিতভাবে স্থাপন করেছে আমার বাবা ও আমাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমায়। এ সব কিছুর জন্যে আমরা চিরকালের জন্যে বাধীত এবং এটা আমার জন্যে অত্যন্ত সন্মানজনক Afghan Children’s Fund-এর অত্যন্ত সুবিধাভোগী, জেনারেল ম্যানেজার পদটাতে ড. রবার্টসনকে নিয়োগ দেয়া।
তার নতুন পদে ড. রবার্টসনের চুড়ান্ত ক্ষমতা থাকবে ফান্ডের পুরো অর্থ ব্যবহার করে আফগানস্থানের ঈশ্বরবিহীন, অপবিত্র, অপ্রাপ্তবয়ষ্কদেরকে ক্রিশ্চিয়ান রিলিফের আওতায় আনার ব্যাপারে। অদ্যাবধি যে ৩৫ মিলিয়ন ডলার উঠেছে, তার বদৌলতে ড. রবার্টসন আফগানস্থানের শিশুদেরকে কেবল জেসাসের ভালবাসাভরা উজ্জ্বল আলোয় পূণ্যস্নান করাতেই সমর্থ হবেননা, শেষের চেয়ে শেষতম প্রতিটা বালক-বালিকার প্রত্যককে একান্ত নিজের রাখার জন্যে একটা করে Gideon’s bible দেয়া হবে স্যুভেনির হিসেবে- যার ভেতর খঁচিত থাকবে সবিশেষ শুভেচ্ছাপূর্ণ বাণী- “আমেরিকার ট্যাক্স প্রদানকারীদের পক্ষ থেকে ধর্মীয় মুক্তি স্বরূপ”।
আমার আফসোস হচ্ছে ড. রবার্টসন আজকের এই সকালে আমাদের মাঝে উপস্থিত থাকতে পারেননি বলে। তবে তিনি ব্যস্ততম, অনিদ্রিত সংগ্রাম করছেন তার দায়ীত্ব পালনে- আরেকটা আমেরিকান চ্যালেঞ্জকে প্রশমিত করার জন্যে- ‘এনার্জি স্বল্পতা’। তিনি অবশ্য একটা বাণী পাঠিয়েছেন যাতে বলেছেন- “জনাব প্রেসিডেন্ট, এই আকর্ষনীয় পদে নিয়োগ পেয়ে আমি খুবই সন্মানিত বোধ করছি এবং আমেরিকান জনগনকে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে এ পদে আমার অবস্থানকালে Afghan Children’s Fund একটুও বিরতি দেবেনা যতক্ষণ না প্রতিটা আফগান শিশুর আত্মা থেকে ইসলামের অভিষাপকে ধূলিস্বাৎ করা হবে কিম্বা এই ফান্ড ফুরিয়ে যাবে আমার আরো বিভিন্ন কর্মকান্ডে, যেটার উদ্ভব ঘটবে সর্বাগ্রে”। সুন্দর একজন মানুষের কাছ থেকে এটা সুন্দর একটা আবগের প্রকাশ। আমি নিশ্চিত, উনি আঘাত-হানার মত কার্য সম্পন্ন করবেন।
ঈশ্বর আমেরিকাকে আশীর্বাদ করুন। ঈশ্বর প্যাট রবার্টসনকে আশীর্বাদ করুন]
আসুন আমরা এর ঠিক উল্টো দৃশ্যপটটা কল্পনা করি। আমেরিকার ওক্লাহোমা প্রদেশের হোয়াইট সুপ্রিমিষ্ট খৃষ্টানদের একটা কাপুরুষ সন্ত্রাসী দল আফগানস্থানে গিয়ে কাবুলের সর্বোচ্চ ভবনে আত্মঘাতী বিমান হামলা চালিয়ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ৩,০০০ নিরীহ মানুষকে হত্যা করলো আফগানস্থানের নোংরা ফরেন পলিসির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ স্বরূপ। বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি আফগানস্থানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই প্রতিশোধ স্বরূপ আমেরিকায় সামরিক হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেন এবং হামলা চালানোর আগ দিয়ে সেদেশের ধর্মীয় নেতা মোল্লা ওমরকে মিলিয়ন আফগানী আফা’র (সেদেশের টাকার) American Children’s Fund-এর দায়ীত্ব দিলেন যুদ্ধোত্তর যুদ্ধে নিহত বাবা-মা’দের পিতৃহারা, মাতৃহারা প্রতিটা এতিম খ্রীষ্টান শিশুর প্রত্যককে একান্ত নিজের ব্যবহারের জন্যে মখমল কাপড়ে জড়ানো একটা করে কোর’আন উপহার দেয়ার জন্যে স্যুভেনির হিসেবে- যার ভেতর খঁচিত থাকবে সবিশেষ শুভেচ্ছাপূর্ণ বাণী- “আফগানস্থানের ট্যাক্স প্রদানকারীদের পক্ষ থেকে ধর্মীয় মুক্তি স্বরূপ”।
মনুষ্যত্বের এতবড় অপমানকে চোখে ঠুলি এঁটে না দেখার ভান করে বর্তমানকালের মুসলমান ঠেঙ্গানোর জনপ্রিয় কোরাস গানে অংশগ্রহন করে আমাদের বিবেক ও rationality (মননশীলতা) কে পদতলে মাড়াচ্ছি কিনা তা ইতিহাসই একসময় বিচার করবে।
সবাই ভাল থাকুন।
আব্দুর রহমান আবিদ
রচনাকালঃ মে ২০১০
*** লেখাটা যখন প্রায় শেষ করে এনেছি, তখন দেখলাম ফেসবুককে অনির্দিষ্ট কালের জন্যে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। অন্যান্যদের মত আমিও এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এশা’র মন্তব্যর সাথে পুরোপুরি একমত, আমি ঠিক এই কথাগুলোই বলতে চেয়েছিলাম। ধন্যবাদ। মডারেট মুসলিম বলতে আমরা যাদের বুঝি তারা আগে মুসলিম পরে মানুষ। পৃথিবীর সব প্রান্তে মুসলিমরা শোষিত এটা তারা বলতে চান কিন্তু সাবসাহারান অঞ্চলে হাজার হাজার শিশু না খেয়ে মারা গেলে তাদের কিছু আসে যায় না কারন তারা মুসলিম না। ঠিক একি রকম দেখা যায় মায়াম্মার এর সমস্যা র ক্ষেত্রে মানুষ মারা যাওয়া বা বাস্তুহারা হবার চেয়ে গুরুতপূর্ণ হয়ে যায় তারা মুসলিম এইটা। ফেসবুক জুড়ে দেখা যায় মুসলিম বাঁচাও মাতম, আশ্চর্য আমাদের মানবতাবোধ।
আর ইতিহাস সাক্ষী, অহিংস বা non-aggressive (অনাগ্রাসী) হলেও চুড়ান্ত বিজয় সবসময় পজিটিভ শক্তির পক্ষেই হয়। “আব্দুর রহমান আবিদ” আমরা বেশিরভাগ সময় এই ধরনের কথা বিশ্বাস করি। কিন্তু আসলেই কি চূড়ান্ত বিজয় সবসময় পজিটিভ শক্তির পক্ষে হয়। এটাও একটা অন্ধ ধর্ম বিশ্বাস এর মত। বিজয় যদি পজিটিভ শক্তির পক্ষে হত তাহলে আমাদের মুক্তমনায় আলোচনা করতে হত না। ২০১২ সাল যাবত মানুষ ধর্মকে মেনে চলত না। বিজয় বেশিরভাগ সময় শক্তশালির পক্ষেই হয়।
সময়াভাবে মন্তব্যের প্রত্যুত্তর দেয়ার অপারগতা প্রসঙ্গে উপরের মন্তব্যটি লিখতে গিয়ে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতেই ভুলে গেছি। সেটা হলো, আমি আশা করবো পাঠকরা আমার লেখা পড়ে মন্তব্য করবেন। কেননা এর মাধ্যমে আমাদের সবার জানার পরিধি বাড়ে। হ্যাঁ, আমি হয়ত প্রত্যেকের মন্তব্যের আলাদা আলাদা উত্তর দিতে সমর্থ হবোনা সময়াভাবে, তবে এখন থেকে এটুকু অন্তত চেষ্টা করবো যে, মন্তব্যগুলো স্ক্যান করে ক্রিটিক্যাল কিছু কিছু বিষয় (গুরুত্বপূর্ণ বলছিনা যেহেতু প্রতিটা পাঠকের মন্তব্যই আসলে গুরুত্বপূর্ণ) আমার একটা প্রত্যুত্তরের মধ্যে সংক্ষেপে দেয়ার চেষ্টা করবো।
আশা করি এর মাধ্যমে পাঠকদের অসন্তোষ কিছুটা হলেও কমবে। যারা যারা এ ব্যাপারে আমাকে সুপরামর্শ দিয়েছেন, তাদের সকলকে আবারও অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধর্মকে না বলাটা শতভাগ বাস্তব। অন্তত আমি নিজের জীবন দিয়ে দেখেছি। ধার্মিক থাকার সময় আমি ‘পরে আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নিবো’ এই ভেবে হঠাৎ হঠাৎ মন্দ কাজ করেছি, এখন একদমই করিনা, স্রেফ একদম না। কারণ এখন আমি নিজের কাছে নিজে জবাবদিহি করি।
ছোট বেলা থেকেই আমাদের শেখানো হয়েছে, আমরা আসলে পশু, ধর্ম এই পশুগুলোকে বেঁধে রাখে। ধর্ম না থাকলে পশুগুলো সাথে সাথে হত্যা, লুন্ঠন শুরু করবে। কথাটা চরমভাবে ভুল। আমাদের সবার মাঝেই হয়তো একটা খারাপ স্বত্তা আছে, তবে সেই স্বত্তাটাকে খুব সহজেই বিচারবুদ্ধি, শিক্ষা দিয়ে সরিয়ে ফেলা যায়। তখন আর চলার জন্য ধর্মের প্রয়োজন থাকেনা, একেবারেই না।
আপনার শেষ কয়েকটা লেখা, আংশকাজনকভাবে হিপোক্রেসিতে আক্রান্ত। এইটাই স্বাভাবিক। সকল ধার্মিক আদতে একজন হিপোক্রেট ছাড়া আর কিছুই না। এইটা আমি সেদিন আমার বন্ধুকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছি-
তুই ভুতে বিশ্বাস করিস?
অবশ্যই না।
কেন?
কারণ এইটা একটা কুসংস্কার, পৃথিবীতে কেউ কোনদিন সচক্ষে ভুত দেখেনাই। বিজ্ঞানের ফলে আমরা জানি ভুল বলে কিছু নেই, দুরের বনে যে শো শো শব্দ সেইটা পাতার আওয়াজ, যে আগুন সেটা মিথেন গ্যাস।
তুই জ্বিনে বিশ্বাস করিস?
অবশ্যই করি।
কিন্তু এইটাও তো পৃথিবীতে কেউ কোনদিন দেখেনাই। এইটাও তো একই ধরণের কুসংস্কার।
বলছে তোরে। আমার পাড়ার হুজুরের তিনটা জিন আছে। এছাড়াও আমি অনেকের কাছে জিনের গল্প শুনছি।
কিন্তু তুই কী দেখছিস?
আমার দেখার দরকার কী! কুরআনে স্পষ্টভাবে জিনের কথা আছে।
তারপর সে হিপোক্রেসি ঢাকার জন্য হাজারটা কথা বলতেই থাকলো। যেটা আদতে আপনি করেন।
রাজনৈতিক ছড়া লেখাটাই অনেক ভালো এরচেয়ে 🙂
@রায়হান আবীর, :yes:
জ্বিনের ব্যাপারটা আমাকেও চিরকাল খুব বিরক্ত করত :-Y। তবে আমার ক্ষেত্রে কারণটা একটু ভিন্ন — এর মধ্যে যে সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদ সেটিকেই অপছন্দ করতাম। ভয় দেখানো আত্মায় যদি বিশ্বাস করতেই হয় তবে দেশীয় ভূত কি দোষ করল, আরব দেশ থেকে এদের আমদানি করবার প্রয়োজনটি কি?
একটা কথা অবশ্য সর্বজন-স্বীকৃত। বাংলাদেশের সব মিষ্টির দোকানের প্রধান ক্রেতা জ্বিনেরা। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
মিঃ আবিদকে এর আগেও আমি সদালাপে কিছু প্রশ্ন করেছিলাম ইসলাম এবং সন্ত্রাসবাদ নিয়ে। তখন ও উত্তর দেন নি। এখনো সেই কাঁসর ঘন্টাই বাজাচ্ছেন।
ইসলাম কি উনি বোঝেন না। কারন ইসলাম বুঝতে গেলে ধর্ম জিনিসটাকি সেটা গভীরে বোঝা জরুরী।
একজন মানুষ নামাজ পড়ল না হজ পড়ল তাই দিয়ে মুসলমানের নির্মান হয় না-ইসলাম একটি সম্পূর্ন বিধানের কথা বলে যেখানে মানুষের সামাজিক পারিবারিক রাজনৈতিক এই তিন অস্তিত্বের জন্যেই নির্দেশ আছে। এখন আমি রাজনৈতিক, সামাজিক অস্তিত্ব কে অস্বীকার করব-আর পারিবারিক অস্তিত্বকে মানবো-তাহলে আদতে ইসলামের বদলে মডারেট হাঁসজারুর জন্ম হবে। রাজনীতি এবং সমাজ ছাড়া ইসলামের অস্তিত্বই নেই-কারন ওই দুটই মানুষের সব থেকে গুরুত্বপূর্ন নির্মান-ইসলাম এটা মানে এবং কোরান ও সেই লক্ষ্যেই রচিত।
পুজো করল না মাথা ন্যাড়া করল তাই দিয়ে হিন্দু ধর্ম ও হয় না। হিন্দু দর্শনের গভীরেও সেই একই ভাবে মানুষের সত্ত্ব নিয়ে আলোচনা-তবে এখানে একেশ্বরবাদের মতন আইন গুলো ঈশ্বর প্রেরিত বা-তা ব্যাক্তি উপলদ্ধি নির্ভর এবং যার জন্যে হিন্দু ধর্মে স্বাধীনতা বেশী।
ইসলাম এবং খ্রীষ্ঠান ধর্ম যেখানে শুরু করে ঈশ্বরকে ভয় পেয়ে, সেখানে ভারতীয় দর্শনে বলে ভয় পেলে আদতেই কোন সত্যে
পৌঁছানো যায় না। উপনিষদ বলে নির্ভীক মনই জীবনে উন্নততর উপলদ্ধির [সত্যের] জন্ম দিতে পারে। তবে ইসলামে সুফীরাও আল্লাকে ভালোবেসেই ধার্মিক হতে চান-তারাও ‘ধর্মভীরু” ইসলামের বিরোধি। তারাও আল্লাকে সুপার মাফিয়া রুপে মানেন না-তারা ভালোবেসে মানেন। এই ক্ষেত্রে সুফী এবং বৈষ্ণবদের মধ্যে আমি কোন পার্থক্য দেখি না।
প্রতিটা ধর্মই পেঁয়াজের মতন। অনেক লেয়ারে থাকে। প্রতিটা লেয়ার একেটা রিয়ালাইজেশন। ওপরের লেয়ারগুলো ছাড়ালে সব ধর্মই এক।
কোরান এবং গীতার রচয়িতারা বেশ পন্ডিত লোক ছিলেন-তাদের জীবনে উপলদ্ধিও ছিল বেশ গভীর-যার জন্যে দুটো গ্রন্থেই
মানুষের পারিবারিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক-তিনটে জীবনেরই নির্দেশ আছে।
সমস্যা হচ্ছে এখানেই রাজনীতি এবং সমাজের বিবর্তন হচ্ছে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির ফলে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই কোরানের রাজনৈতিক এবং সামাজিক নির্দেশের আজ কোন মুল্য নেই। ব্যাক্তি জীবনে কিছু আছে। কিন্ত এই বাস্তবটা ত মুসলিমরা মানতে চাইছে না-তারা ইসলামিক সমাজ, ইসলামিক পলিটিক্যাল সিস্টেম চাইছে। যা একটা রাষ্ট্রকে শুধু ধ্বংশই করতে পারে বা ভিখিরী বানাতে পারে।
হিন্দুদের মধ্যে নেহেরু এটা অনেক আগেই বুঝিয়েছেন। তবে বিজেপি উলটো দিকে হাঁটার চেষ্টা করেছে-কিন্ত সফল হয় নি। কারন,
ভারতের অধিকাংশ মানুষ আস্তে আস্তে বুঝছে, ধর্ম দিয়ে রাষ্ট্রকে ডোবানো যায়, বাঁচানো যায় না।
@বিপ্লব পাল,
আমার মনে পড়েনা আপনি কখনও সদালাপে আমাকে ইসলাম ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন কিনা। আপনি সদালাপে যে কখনও লিখেছেন, সেটাই আমার চোখে পড়েনি। ভুল হলে শুধরিয়ে দেবেন। তবে হ্যাঁ, ভিন্নমতে আপনি সম্পাদক হিসেবে যোগ দেয়ার কিছুদিন পর পর্যন্তও আমি ভিন্নমতে লিখতাম। তবে আপনার সাথে সরাসরি ইসলাম ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আমার কখনো আলোচনা হয়েছে বলে আমার মনে পড়েনা। হলেও হয়ে থাকতে পারে। তবে হ্যাঁ, কুদ্দুস খান, অভিজিৎ, কামরান মির্জা এবং ড. জাফর ইকবালের সাথে আলোচনা হতো, তা মনে আছে।
আমি নিজেও বোধহয় ‘মডারেট ইসলাম’, ‘আসল ইসলাম’ ইত্যাদি কোনো বিষয়ের অবতারনা করিনি আমার আগের তিনটে লেখায়। এমনকি, ‘মডারেট মুসলিম’ লেখাটাতেও মডারেট মুসলিমের সুনির্দিষ্ট কোনো সঙ্গা দিইনি। আমি কেবল দেখানোর চেষ্টা করেছি ধর্মের ব্যাপারে নিঃস্পৃহ ও মডারেট মনোভাবসম্পন্ন মানুষ রয়েছেন ইসলাম ধর্মেই। এমনকি তাদের অনেকে মৌলবাদী মনোভাব বা মৌলবাদী রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থানও নিয়েছেন। সাথে এটাও দেখানোর চেষ্টা করেছি যে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেও সাম্প্রতিককালে মৌলবাদী মনোভাবের উত্থান হচ্ছে যেটা সামগ্রিকভাবে এলার্মিং।
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে মডারেট মনোভাবসম্পন্ন কেউ থাকতে পারেনা, থাকলে সেটা ঠিক না; তারা ভন্ড, হিপোক্র্যাট ইত্যাদি কথাগুলো কিন্তু বিভিন্ন পাঠকের বলা। বলাতে কোনো সমস্যা নেই। আমার যুক্তিগুলো সবার কাছে যে গ্রহনযোগ্য হতে হবে, সেটা আশা করার কারনও নেই।
আর আপনি ধর্মের ব্যাপারে যা যা বলছেন, তার কিছু কিছু সত্যি। আমি যেহেতু ধর্মকে ডিফেন্ড করছিনা, সে কারনে এ বিষয়ে আপনার সাথে তর্কে গিয়ে লাভ নেই। আর আপনার এই কমেন্টটা যদি ফোরামের মূল পেজ থেকে সরিয়ে দেয়া আমার ‘মুসলিম সন্ত্রাসবাদ ও ইসলাম’ প্রসঙ্গে হয়ে থাকে, তবে ওটা নিয়ে কেন আলাপ করতে চাইনে তা লেখাটার ‘প্রাককথন’-এ আমি উল্লেখ করেছি।
আপনাকে আবারও অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্যে।
পাঠকদের কারো কারো মন্তব্য পড়ে আমার মনে হলো, মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্যের বিষয়ে আমার সার্বিক অবস্থানটাকে একটু ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। পারিবারিক ও পেশাগত ব্যস্ততার কারনে সামান্য যে ‘ফ্রি টাইম’টুকু পাই, তার বেশীরভাগই ব্যয় করি লেখালেখিতে (এবং প্রাসঙ্গিক পড়াশুনাতে)। তারপরও একেকটা লেখা নামাতে সপ্তাহ, দু’সপ্তাহ, মাস লেগে যায় যেহেতু ব্যস্ততার কারনে একটু একটু করে এগুতে হয়। ফোরামে একটা লেখা দিলে বিশ, পঁচিশ, ত্রিশটা কমেন্ট পড়ে। এর কম বা বেশীও পড়ে। কোনো পাঠক লেখাটা পড়ে আমার প্রদত্ত কোনো তথ্যে মৌলিক ভুল আছে এমনটা মন্তব্য করলে (যেমন বুশের ক্যাথোলিক কানেকশনের তথ্যটা) স্বভাবতই আমার দায়ীত্ব হয়ে যায় ভুলটা স্বীকার করে নেয়ার অথবা পাঠকের ভুলটা ধরিয়ে দেয়ার।
যারা সহমত বা তৃতীয়মত প্রকাশ করেন, তাদেরকে সৌজন্যমূলক ধন্যবাদটুকু দেয়া সহজ এবং সময়সাপেক্ষ নয়। তবে সময়াভাবে অনেকসময় সেটুকু করাও সম্ভব হয়না। যারা যুক্তি দিয়ে বিরুদ্ধমত প্রকাশ করেন তাদের মন্তব্যকেও যদিও আমি সমানভাবে শ্রদ্ধা করি, কিন্তু প্রতিমন্তব্য করার মাধ্যমে বিতর্কে জড়ানো থেকে সাধারনত বিরত থাকি যেহেতু আমার পক্ষে অতখানি সময় বের করা সম্ভব হয়না। কেননা অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ধরনের বিতর্ক তথা মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য চলতেই থাকে। আর যে সমস্ত পাঠকদের মন্তব্যে ঝাঁঝ মাখানো সম্বোধন, বিশেষন বা বিদ্বেষপূর্ণ কথাবার্তা থাকে, সেগুলোর উত্তর দিইনে প্রতীকী প্রতিবাদ স্বরূপ যেহেতু কোনো লেখকের ব্যক্তিগত পরিচয়ের কারনে তার প্রতি অলেখকসুলভ মনোভাব দেখানো আমার দৃষ্টিতে উচিত নয়।
সবচেয়ে সহজপন্থা হলো মন্তব্যের জন্যে সমস্ত পাঠককে সার্বিকভাবে সৌজন্যমূলক ধন্যবাদ জানানো। এবং সেটা আমি সবসময় করার চেষ্টা করি এ জন্যে যে, লেখাটা পড়ে একজন পাঠক যখন নিজের মূল্যবান সময় ব্যয় করে একটা যুক্তিপূর্ণ মন্তব্য লেখেন (সহমত, বিরুদ্ধমত বা তৃতীয়মত), তখন লেখকের নৈতিক দায়ীত্ব হয়ে যায় পাঠকের মন্তব্যের উত্তর দেয়া।
আশা করি সময়াভাবে আমার প্রত্যুত্তর বা প্রতিমন্তব্য করার সার্বিক অপারগতাকে পাঠকরা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর লেখার বক্তব্য বা উদ্দেশ্য কেউ যদি বুঝে না থাকেন, তাহলে সেটা আমার বুঝানোর অক্ষমতা এবং সেই দায়-দায়ীত্ব স্বীকার করে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্য করার জন্যে পাঠকদেরকে আবারও অসংখ্য ধন্যবাদ।
জনাব আব্দুর রহমান আবিদের প্রবন্ধ ‘মুসলিম সন্ত্রাসবাদ ও ইসলাম’ দীর্ঘদিনের পুরোনো এবং পূর্বে অন্য ব্লগে প্রকাশিত হবার কারণে প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে লেখকের নিজের ব্লগে প্রকাশ করা হলো। এ বিষয়ে মুক্তমনা নীতিমালার ২.১৬ তে বলা হয়েছেঃ
মুক্তমনার সদস্যরা তাদের নতুন লেখা মুক্তমনায় প্রকাশ করবেন সেই প্রত্যাশা রইলো।
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আবিদ সাহেব মাঝে মাঝে অস্পষ্ট, ভাসা ভাসা, ধোয়াশাপূর্ন নিবন্ধ লিখে পাঠক/পাঠিকাদের বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলতে চেষ্টা করছেন। তা আরও সুস্পষ্ট হয় যখন দেখা যায় তিনি কারও মন্তব্যে তেমন প্রতি মন্তব্য করেন না বা কারও কোন প্রশ্নের তেমন উত্তর দেন না। অথবা মনে করেন পাঠক এমন কোন মন্তব্য বা প্রশ্ন করেন না যার উত্তর দেওয়া তার কাছে গুরুত্বপূর্ন মনে হয়। ব্যপারটা যদি এরকম চলতে থাকে তাহলে আমি বিনয়ের সাথে সবাইকে অনুরোধ করব- অতঃপর আমরা তার কোন নিবন্ধ পাঠ করব না, আর যদিও বা কৌতুহল বশতঃ পড়ি কোন মন্তব্য বা প্রশ্ন করব না। আমার মনে হয় তাহলে এটা হতে পারে তার ধোয়শা সৃষ্টির অপচেষ্টার একটা যথার্থ প্রতিবাদ।
@ভবঘুরে,
একজন লেখক যদি পাঠককে অবহেলা করেন তবে পাঠকও সেই লেখককে অবহেলায় ফেলে রাখবে, আমি বা আপনি না বললেও। তাই আপনাকেও আমি অনুরোধ করবো, অন্যেরা কি করবে সেটা তাঁদের হাতেই ছেড়ে দিতে। আপনি নিজে কি করবেন সেটা জানান, কিন্তু অন্যদের কোন অনুরোধ করিয়েন না। এভাবে চললে মুক্তমনায় এক ধরণের গ্রুপিং হয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা রয়ে যাবে, যা একান্তই কাম্য নয়। আশা করি ভুল বুঝবেন না, আমার মন্তব্যে।
আবিদ ভাই
আপনার অন্য লেখা সম্পর্কে কিছু বলার ছিল, এখানে বলে যাচ্ছি।
লেখকের নুতন পোষ্টে মন্তব্যের অপশন বন্ধ করাটি পছন্দ করলাম না। তিনি মন্তব্য বন্ধ করার পেছনে যে যুক্তি দিয়েছেন তা গ্রহনযোগ্য হল না আমার কাছে। কারণ উনি নিজেই লিখেছেন যে ২০১০ সালেও উনার মূল আদর্শের পরিবর্তন তেমন হয়নি। আর লেখাটি এই সময় দেওয়ার কারণই বলে দেয় যে উনি উনার লেখাটিকে বর্তমান সময়েও যুক্তিযুক্ত মনে করেন। এহেন ক্ষেত্রে শুধু লেখা দিয়ে কোন মন্তব্য গ্রহন না করার মানসিকতাকে আমি বলবো পলায়নকর মানসিকতা। উনি যদি শুধুমাত্র পড়ার জন্যই দিতে চান তবে অন্য ফোরামের লিঙ্ক এখানে দিয়ে দিলেই চলতো। আমি আশা করবো উনি মন্তব্য প্রকাশের সুযোগ দিক, অথবা মুক্তমনা লেখাটি প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে নিক।
আপনার নিজের বিশ্বাস নিয়ে আমার আপত্তি করার কিছু নেই। তেমনি আপনার লেখা প্রকাশের স্বাধীনতায় কোন আপত্তি নেই আমার কাছে। আমি মনে করি, যে কারোর যে কোন বিশ্বাসের স্বাধীনতা রয়েছে, যতক্ষন না তা আমার ক্ষতি করছে। আমি বরং আশা করবো মুক্তমনায় আপনি নিয়মিত হবেন। কিন্তু আমি (অন্যরাও করতে পারে) যেটা করবো আপনার লেখার দুর্বল যুক্তিগুলোকে তুলে ধরবো। এ কারণেই মন্তব্য প্রকাশের প্রয়োজনীয়তার কথা আগের অংশে বলেছি। আমি যেটা মনে করি, আপনার প্রবন্ধ এবং অন্যদের মন্তব্য পড়ে একজন তৃতীয় ব্যক্তি (হতে পারে আস্তিক, হতে পারে সংসয়বাদী) যেন নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারে।
এবার উক্ত লেখা সম্পর্কে কিছু বলছি। আপনার উক্ত লেখাটির মূল অংশ হিসেবে আমি পেয়েছি প্রবন্ধের শেষ প্যারায়। আমার কাছে লেখাটির দুর্বলতা একটিই যে আগে থকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তারপর যুক্তির দ্বারস্থ হওয়া। কিন্তু যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছেন সেগুলো সঠিক আছে কিনা, আগে তো সেগুলোকে যাচাই করে নেওয়া উচিত। আমি একে একে কিছুটা বলি।
এটা হতে পারে ধর্ম মানব সভ্যতার অংশ ছিল। কিন্তু সেটা সব সময় হবেই, থাকবে এরকম উপসংহারে চলে যাওয়ার আগে যুক্তি লাগবে। ধর্ম অন্যান্য দর্শনের মতই পরিবর্তনশীল। উপরে আভজিৎ’দা দেখিয়েছেন যে ইউরোপ সহ উন্নত বিশ্বে ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে।
আপনি কি ইতিহাসকে অস্বীকার করছেন? খ্রীষ্টান, ইসলাম ধর্মের আগমনে প্যাগান ধর্মগুলো ধ্বংস হয়। আপনি অবশ্য প্যাগানদের ধর্ম বিশ্বাসকে ধর্ম বলে স্বীকার করতে চাইবেন না। কিন্তু ইতিহাস আপনার পক্ষে কথা বলে না যে কোন ধর্মবিশ্বাসই কারো জন্যে কখনও সমস্যা ছিলনা।
এখানেও কথা আছে, ধর্মকে পুঁজি করা যায় কারণ ধর্মে সেই element গুলো আছে, বিশেষ করে কোরানে। আমি আপনার কাছে আগের মন্তব্যে একটি বিষয় জানতে চেয়েছিলাম, এখানেও আবার বলছি। উপরে আল্লাচালাইনাও বলেছে, ইসলামকে যদি টিকতে হয় তবে সংস্কার করেই টিকতে হবে। কিন্তু আমি বুঝি যে ইসলামকে পরিবর্তন সম্ভব নয়, কারণ কোরান আল্লাহর তৈরী। কোরানের অপরিবর্তনীয়তা (যদিও সেটাও প্রশ্নসাপেক্ষ) এক সময় ইসলামের শক্তি ছিল, কিন্তু সেটাই আজ সবচেয়ে দুর্বলতায় পরিণত হয়েছে। যেহেতু ইসলাম সংস্কারযোগ্য নয়, তাই এটা ধীরে ধীরে হয় বাতিল হবে, শুধু টিকে থাকবে কিছু উগ্রপন্থীদের কাছে। আমার প্রশ্ন ছিল আপনার কাছে, কোরান কেন ঈশ্বরের তৈরী, এই বিষয়ে কোন প্রমান পারলে দিয়েন। মূল যুক্তি কিন্তু এখানেই ঘোরাফেরা করে। আর যদি বলেন যে, আপনি বিশ্বাস করেন কোরান এক আল্লাহর বাণী, কোন যুক্তির প্রয়োজন নেই, তাহলে আসলে এত কথা বলার প্রয়োজন নেই। শুধু লেখার শুরুতে একটি ডিস্ক্লেইমার দিয়ে দিলেই হল।
এখানেও একই কথাই বলবো। ইসলামী সন্ত্রাসবাদকে কৃত্রিম সমস্যা বলে পাশ কাটিয়ে চলে গেলে সেই সত্যের দেখা আর পাবেন না। সমস্যা সর্ষের ভেতরেই। আপনার দেখানো সমাধানের পথেই বলি কেন আপনার মনে হচ্ছে যে শায়খ আবদুর রহমান, কিংবা ওসামা বিন লাদেনের মত লোকেরা শিক্ষিত নয়? আমি তো মনে করি তারা কোরান হাদিসে আমার/আপনার চেয়ে অনেক বেশি জ্ঞানই রাখেন। আমি যে কথাটি বলি, সেটাই আবার বলি – আসলে তারাই সত্যিকারের ইসলামের বাহক, অন্তত একদিক দিয়ে তারা সত্য। আর আপনি যে মডারেট ইসলামের কথা বলছেন তারাও কিন্তু কাফির, অবিশ্বাসীদের দলেই, অন্তত বাংলা ভাই বা লাদেনদের চোঁখে। এখন সিদ্ধান্ত আপনার নেওয়ার পালা কোন দিকে যাবেন।
ততদিন ভাল থাকুন। আরো লিখে চলুন।
@স্বাধীন,
সম্পূর্ণ একমত।
@আবিদ ভাই,
পুরনো কোন লেখা আমরা যখন ব্লগে পোষ্ট করি তখন আমরা সেই লেখাটা বর্তমান সময়ের উপযোগী বিবেচনা করেই করি। আপনার পাঁচ বছর আগের পুরোনো লেখাটাকে বর্তমান সময়ের উপযোগী ভেবেছেন বলেইতো আপনি এটাকে মুক্তমনায় পোস্ট করেছেন, তাই না?। এক্ষেত্রে মন্তব্যের অপশন বন্ধ করে দেওয়াটা কি সঠিক কোন কাজ হলো বলে আপনি মনে করেন?
মন্তব্যের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়াটা যদি আপনার লেখক সত্ত্বার উপরে অবিচার হয়ে থাকে, তবে মন্তব্যের সুযোগ না দেওয়াটাও পাঠকদের জন্য বিরাট অবিচার। একটা জিনিষ খেয়াল করবেন, আমরা যে যাই লিখি না কেন, তার প্রাণভোমরা কিন্তু পাঠকরাই। পাঠকদের কারণে আমরা লিখি। অনেকেই হয়তো মুখে বলেন যে তারা নিজেদের আনন্দের জন্যেই লিখে থাকেন। এই মুখের কথাটা আংশিক সত্যি হতে পারে, তবে পুরোপুরি যে সত্যি নয় সেটা টের পাওয়া যায় লেখাগুলোকে প্রকাশ করার লেখকের আগ্রহ দেখেই। কাজেই, সেই প্রাণভোমরা পাঠকদেরকে অবহেলা করলে পাঠকের নয়, আখেরে ক্ষতিটা হয় লেখকেরই। ব্লগেতো এটা আরো বেশি পরিমানে ঘটে। এখানে মন্তব্য প্রতিমন্তব্যের মাধ্যমে লেখকের সঙ্গে পাঠকের একটা যোগাযোগ তৈরি হয়। মন্তব্য করতে না দিলে সেই যোগাযোগটা ঢিলে হয়ে যায়। আপনার সুযোগ আছে, আপনি মন্তব্যের অপশন বন্ধ করে দিলেন। ভাল কথা। একবারও কি ভেবে দেখেছেন যে, পাঠকেরও কিন্তু সুযোগ আছে লেখকের লেখাকে উপেক্ষা করার। তবে এগুলোও বড় কথা নয়, সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ব্লগে লেখা পোস্ট করে ঘোষনা দিয়ে মন্তব্য প্রদানের সুযোগ বন্ধ করে দেওয়াটা পাঠকের জন্য খুবই অবমাননাকর। পাঠক এখানে আসেও মিথস্ক্রিয়া করার জন্যে। তাকে সেই সুযোগটা থেকে কেন বঞ্চিত করা হবে? সেই অধিকার কি লেখকের আছে? আমি মনে করি নেই। আমি আশা করবো সিদ্ধান্ত বদল করে আপনি আপনার ওই লেখায় মন্তব্য করার অপশনটা চালু করে দেবেন।
আরেকটি কথা। আমি খেয়াল করে দেখেছি যে, আপনার লেখায় আপনাকে পাঠকেরা যে সমস্ত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করে তার অনেকাংশেরই আপনি কোন মন্তব্য করেন না। সব জিনিষ সবার জানা থাকবে এমন কোন কথা নেই, লেখকের সব যুক্তিই যে অন্যদের চেয়ে ভাল হবে এমনও কোন কথা নেই। কাজেই, জানা না থাকলে সেটা স্বীকার করতে বা অন্যের যুক্তি নিজের যুক্তির চেয়ে শক্তিশালী হলে সেটাকে মেনে নেওয়াতে আমি অন্তত কোন লজ্জা দেখি না। এখানে আমরা সবাই-ই শিখতে এসেছি। কেউ-ই মহাপন্ডিত নয়। কিন্তু আপনি যদি প্রশ্নগুলোকে ক্রমাগত উপেক্ষা করতে থাকেন, তবে অপমানিত বোধ করে একসময় সবাই আপনাকে প্রশ্ন করা থেকেই বিরত থাকবে। আপনি কি সেটা চান?
বলতে পারেন যে, সবার সব প্রশ্নের উত্তর দেবার মত অত সময় আপনার নেই। এই কর্মব্যস্ততার যুগে সময় আসলেই একটা বিরাট ফ্যাক্টর। তারপরে আমি বলবো যে, যখন কোন একটা লেখা পোস্ট করবেন, আগে থেকেই কিছুটা সময় বের করে রাখবেন যাতে করে আলোচনায় অংশ নিতে পারেন। আমি লক্ষ্য করে দেখেছি যে, অনেক সময় মূল লেখার চেয়েও আলোচনা অনেক বেশি উপভোগ্য হয়, তথ্যের আদান-প্রদান অনেক বেশি পরিমাণে ঘটে থাকে সেখানে।
আপনার পরবর্তী লেখাসমূহে আপনার আরো বেশি সক্রিয় অংশগ্রহন আশা করছি। আপনার মত একজন বিদ্বজন সক্রিয়ভাবে আলোচনায় অংশ নিলে আমাদের মত সাধারণ পাঠকদের বিরাট উপকার হবে। অনেক কিছুই শিখতে পারবো আমরা ওই সমস্ত আলোচনা থেকে।
মুক্তমনায় আরো বেশি বেশি লিখবেন সেই প্রত্যাশা রইলো।
@ফরিদ আহমেদ,
ধন্যবাদ ফরিদ ভাই সহমতের জন্য। মন্তব্য করতে পারবো না, এটি দেখে পাঠক হিসেবে নিজেকে কেমন যেন প্রতারিত মনে হচ্ছিল, তাই বাধ্য হয়ে বিশাল মন্তব্যটি করা।
@ফরিদ আহমেদ,
ফরিদ ভাই, “মুসলিম সন্ত্রাসবাদ ও ইসলাম” লেখাটা পোষ্ট করা আসলে উচিৎ হয়নি। হুট করে মনে হলো তাই দেয়া, আগ-পাছ না ভেবে। এটা অবশ্যই উচিত হয়নি।
মন্তব্যে-প্রতিমন্তব্যে অংশগ্রহনের ব্যাপারে বলবো, আসলে সত্যিই সময়ের জন্যে পেরে উঠিনে। একেবারে নীচে একটা ব্যাখ্যা দিয়েছি কেন পারিনে। আপনার পছন্দ নাও হতে পারে।
লেখার মৌলিক কোনো তথ্যের ব্যাপারে কিন্তু নিশ্চুপ থাকিনে। কিন্তু যুক্তি-পাল্টা যুক্তি একটা ক্রমাগত বিষয় যা খুব সহজে শেষ হয়না এবং সেখানে এতখানি সময় বের করতে আমি সত্যিই অপারগ।
আমি নিজেও ধর্ম-বিষয়ক লেখালেখি কমিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক ছড়া লেখায় মন দিচ্ছি যেন বেশী বেশী মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যের মধ্যে নিজেকে টানা না লাগে। ভাল থাকবেন।
@স্বাধীন,
সহমত। :yes:
@স্বাধীন,
“মুসলিম সন্ত্রাসবাদ ও ইসলাম” লেখাটা পোষ্ট করা আসলে উচিৎ হয়নি। হুট করে মনে হলো তাই দেয়া, আগ-পাছ না ভেবে। এটা অবশ্যই উচিত হয়নি।
মন্তব্যে-প্রতিমন্তব্যে অংশগ্রহনের ব্যাপারে বলবো, আসলে সত্যিই সময়ের জন্যে পেরে উঠিনে। একেবারে নীচে একটা ব্যাখ্যা দিয়েছি কেন পারিনে। আপনার পছন্দ নাও হতে পারে।
লেখার মৌলিক কোনো তথ্যের ব্যাপারে কিন্তু নিশ্চুপ থাকিনে। কিন্তু যুক্তি-পাল্টা যুক্তি একটা ক্রমাগত বিষয় যা খুব সহজে শেষ হয়না এবং সেখানে এতখানি সময় বের করতে আমি সত্যিই অপারগ।
ধর্ম-বিষয়ক লেখালেখি কমিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক ছড়া লেখায় মন দিচ্ছি যেন বেশী বেশী মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যের মধ্যে নিজেকে টানা না লাগে। ভাল থাকবেন।
ইসলামকে ডিফেন্ড করে আপনি এই পর্যন্ত তিনটি পোস্ট লিখেছেন এবং তিনটি পোস্ট পড়েই আমার মন ভালো হয়ে গিয়েছে (আমার মনের গ্রাউন্ড স্টেট বোধহয় খারাপ থাকা)। কিন্তু আপনার ইসলামের উতপাতকে অন্যান্য ধর্মগুলোর উতপাতের সমপর্যায়ে নামিয়ে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা দেখে মন আবার খারাপ হয়ে গেলো। ব্যাপারটাকে আমি তুলনা করবো পোলিও আউটব্রেকের সময় প্যাপিলোমা ভ্যাক্সিনের প্রচার চালানোর সাথে। আত্নবিশ্বাসের সাথে আপনি যাত্রা ধরলেন আমরা দেখলাম, কিন্তু যাত্রা শেষে পৌছুলেননা কোন জাগাতেই। আপনার ভাষ্য আমি বুঝিনি, তাই সে ব্যাপারে মন্তব্য করতে পারছি না। তবে মন্তব্য করবো যেটা আপনার ভাষ্য নয় সেই ব্যাপারে। আমার পোস্টের একটা উল্লেখযোগ্য পয়েন্ট ছিলো হযরত ব্যাপারে- যতো ভালো কাজই সে করে থাকুক যৌন নির্যাতন, বিশেষত শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের পক্ষে কোন ডিফেন্স থাকতে পারে না। এটা নিয়ে আপনার কোন বক্তব্য পেলাম না। আমার আরও একটি পয়েন্ট ছিলো “আল্লা আছে নাকি, কোথায়?” আপনার কাছ থেকে উত্তর পেলাম না কোন। মডারেট মুসলিম একটি আপেক্ষিক বিষয়। নিজামী হয়তো বাংলা ভাইয়ের চেয়ে মডারেট, বাংলা ভাই লাদেনের তুলনায় মডারেট, আর লাদেনও মডারেট হযরতের তুলনায়; সেটি না হয়ে থাকলে মডারেট মুসলিমের সংজ্ঞা কি? জানতে পারলাম না আপনার কাছ থেকে। বোরকা, টুপি-দাড়ি ও পোশাক-আশাক, আচার-আচরণে বিদেশের মাটিতে সাংস্কৃতিক যুদ্ধ ঘোষণা করার পক্ষে ডিফেন্স কোথায়? জানলাম না। এরকম আরও পাঁচ-সাতটা আছে সেদিকে নাহয় নাই-ই গেলাম। একটি পয়েন্টই আপনি ছুয়ে গিয়েছেন খানিকটা, সেটা হোল বোমা। আর সেটা করে আমার পোস্টে যেই কয়েকটা ভবিষ্যদ্বাণী আমি করেছি তার কয়টাকে সত্যি প্রমান করেছেন?
১। পিছলামো- আপনাকে ধরা তো সম্ভব না কোনভাবেই। তবে আপনার পিছলে যাওয়ার স্টাইলে নতুনত্ব রয়েছে। আপনি ইসলাম ডিফেন্ড করে চলছেন অথচ হযরতের অপকর্মগুল কেনো ঠিক, কোরানের অসুস্থ আয়াতগুলো কেনো ঠিক, একজন আল্লা থাকাটা কেন অসম্ভব নয় এইসব ব্যাপারে আপনার কোন বক্তব্য পাওয়া গেলো না। আমি মনে করি এটা হবে একটা স্বচ্ছ পদক্ষেপ যদি আপনি কোরানের ও ইসলামের ইতিহাসের একটা সারমর্ম লিখে পোস্ট দেন। আপনার ভাষ্য আমরা জানতে পারবো এবং সেটা নিয়ে বিতর্ক করতে পারবো। ক্রমাগত পিছলিয়ে যাওয়া আমাদেরকে কোথাও পৌছুচ্ছে না।
২। তুলনামূ্লক আলোচনায় নামা- এটা নিজেই নিজেকে ব্যাখ্যা করে।
৩। বোগাস যুক্তি উপস্থাপনা করে চলা- অবান্তর কথা বলেছেন বেশ কিছু। বস্তুত আপনার পোস্টের শেষ অর্ধেককে আমি প্রকারগতভাবে (চাতেগরিচাল্ল্য) অবান্তর বলবো। আফগান চিল্ড্রেন্স ফান্ডের কোন ওয়েবসাইট বা উইকি লিঙ্ক পেলাম না, তাই আমি সন্দেহ করছি। প্যাট রবার্টসন (যে কিনা কোন পিএইচডিধারী নয়) সম্পর্কিত তথ্যগুলো আপনি কোথায় জানতে পেলেন আমি জানতে চাই। এবং অভিজিত তো উপরে গ্রাফ দিয়েছেনই তারপরও আবার বলছি- পশ্চীম ইউরোপের সবকটি এবং পূর্ব ইউরোপেরও বেশীরভাগ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ নাস্তিক।
আমার মনে হয় আপনি অনুধাবন করতে পারেন যে- নাস্তিকতা, মানবতাবাদ ইত্যাদি একটি ইন্টেলেকচুয়ালি সুপিরিয়র অবস্থান, অপরপক্ষে যেকোন ধর্মই বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে নীচুস্তরের অবস্থান। নিজেকে আপনি জাতেও তুলতে চাচ্ছেন আবার ইসলামকেও আপনার চাই। You can’t have it both way I’m afraid! আপনি যদি আসলেই ইসলামকে ডিফেন্ড করতে চান, তবে আপনাকে ইসলামের সংস্কার করতে হবে। মার্টিন লুথার যেমন খ্রীষ্টধর্মকে সংস্কার করে প্রোটোস্ট্যান্টিজমের জন্ম দেন তেমনি। এবং লুথারের মতোই, সেটা আপনি করতে পারবেন না ইসলাম যে আমার আপনার প্রত্যেকের জীবনকে বিষিয়ে তুলছে এই সত্যকে অস্বীকার করে। অন্য কোন ইসলামিস্টের কাছ থেকে এটা আমি আশা করিনা, আপনার কাছ থেকে করছি- যুক্তির খেলাকে আমরা যেনো ফুটোবল খেলা বানিয়ে না ফেলি; যে- ৯০ মিনিট খেলবো, প্রতিপক্ষকে গোল করতে দিবো না, নিজে অন্তত একটা গোল করবো। একটি বুদ্ধিবৃত্তিক ডিসকোর্স বরং হওয়া উচিত এমন যেখানে দুই পক্ষের উদ্দেশ্যই হবে সত্যকে উদঘাটন করা, খেলায় জিতা নয়; কিংবা যুক্তি দিয়ে দিয়ে বারংবার পিছলে যাওয়ায় নয়। আপনার ভবিষ্যত দিনগুলো হোক সবধরণের ডিলুশনমুক্ত এই কামনায়।
@আল্লাচালাইনা,
সুন্দর মন্তব্য। :yes:
আবিদ ভাইকে আমিও বলবো ক্রমাগত পোষ্ট না দিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহন করার জন্য। একটি লেখা থেকে যত না শেখা যায় তার চেয়ে বেশি জানা যায় আলোচনা হতে।
@আল্লাচালাইনা,
বুশের প্যাট রবার্টসনকে ‘Afghan Children’s Fund’-এর নিয়োগের লিঙ্কঃ
http://whitehouse.georgewbush.org/news/2001/120901.asp
লিঙ্কটা লিঙ্ক বাটন চেপে লিঙ্ক হিসেবে দেয়া গেলনা কম্পিউটারের অসযোগিতার কারনে। কপি এ্যান্ড পেষ্ট করে দিতে হলো। কষ্ট করে দেখে নেবেন। ধন্যবাদ।
বাড়ীতে বোরকা পরা স্ত্রী এবং শালী থাকলে ধর্ম( বিশেষ করে ইসলাম) কে “না” বলা আরও অসুবিধা জনক।
(দোহাই, এটাকে ব্যক্তিগত আক্রমন বলে মনে করবেন না)
@ফরহাদ, এটা কিন্তু সত্যিই ব্যক্তিগত আক্রমণ । কেন আবার স্ত্রী এবং শালীকে আনা। থাকতে দিন না বোরকা পরা স্ত্রী এবং শালীকে মডারেট মুসলিম হিসাবে ।
আমার পড়া ওনার শেষ ২টা লেখা অস্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট বক্তব্যহীন।
পরম পরিতাপের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আপনার আগের লেখাটির মতো এই লেখাটিও ধোঁয়াটে, অস্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট বক্তব্যহীন। ধর্মকে না বলা সম্ভব নয় কেন, তা কখনওই বুঝতে পারিনি, পারলাম না আপনার লেখা পড়েও। আপনার লেখা ও মন্তব্য থেকে আমার ধারণা হয়েছে, আপনি স্পষ্টতই ধর্মঅন্তপ্রাণ ও সার্বিক ধর্মচর্চা করে অভ্যস্ত, কিন্তু মুক্তমনায় লেখার সময় ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাসকে উপস্থাপনের চেষ্টা করেন উদারতার মোড়কে। ফলে ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং উদারকামিতার দ্বন্দ্বে আপনার বক্তব্য হয়ে পড়ে অস্বচ্ছ, সঙ্গতিশূন্য এবং ক্ষেত্রবিশেষে দুর্জ্ঞেয় ও দ্ব্যর্থবোধক।
হতে পারে, আমার বোঝার ভুল। তাই আগাম ক্ষমা চেয়ে রাখি।
@একজন নির্ধর্মী,
ওকি দাদা আপনিও দেখি আমার মত ব্যক্তি আক্রমন করছেন, ঘটনা কি? নাহ আমরা বোধহয় আর মানুষ হতে পারলাম না। নাস্তিক নাস্তিকই থেকে গেলাম।
😀
লেখকের লেখায় মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকলাম এই কারনে যে পুর্ব অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছে কোন কারনে লেখকের পাঠকের বক্তব্য পছন্দ না হলে তিনি আর কোন উত্তর দেন না। আমি আবার নিউটনের তৃতীয় সুত্রে পরম বিশ্বাসী(!) লোক। ঢিল মারলে পাটকেলটি খেতে হয়, এই মতবাদে বিশ্বাসী। আগের পোষ্টে ঢিল মেরে পাটকেল ভাগ্যে(!) জোটেনি। তাই আর ও পথ মাড়াতে চাচ্ছি না।
ধন্যবাদ।
@সাইফুল ইসলাম,
সত্যিই ব্যক্তিগত আক্রমণ মনে হইসে? 😕
তাহলে মডারেটরদের অনুরোধ করবো আমার ওপরের মন্তব্যটি মুছে দিতে। ব্যক্তিগত আক্রমণ আমার লক্ষ্য ছিলো না। নিজের সম্পর্কে যে-কথাগুলো লেখক নিজেই তাঁর লেখায় প্রকাশ করেছেন, সেগুলোরই পুনরাবৃত্তি এবং তাঁর লেখা ও মন্তব্য পড়ে যে-ধারণাটি আমার গড়ে উঠলো, সেটি ব্যক্ত করাটাই ব্যক্তি আক্রমণসূচক, জানা ছিলো না।
নাহ্, কিছুই শেখা হলো না এ জীবনে! পরকালই ভরসা 😉
@একজন নির্ধর্মী,
কি আর বলব দুঃখের কথা দাদা, আমিও কি আর জানতাম নাকি ছাই। লেখকের আগের পোষ্টের মাধ্যমে আমার দিব্যচক্ষু খুলিয়া গিয়াছে।
সুতরাং, সাবধানং in ভবিষ্যতং।
ধর্ম কে ‘না’ বলা খুবই সম্ভব এবং বাস্তব । আমার নিজের কথাই বলি, আমার চারজনের পরিবারে তিনজনই ধর্মকে ‘না’ বলে দিব্যি আছি, আমাদের দৈনন্দিন বাস্তব জীবনে কোন প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করিনা কখনো । (যদিও এটা স্বীকার করছি যে আমাদের আশপাশের কিছু কিছু লোক আমাদের জোর করে হলেও ধর্মের প্রয়োজনীয়তার কথা শেখাতে চায় 🙂
মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্যকারীদের সবাইকে ধন্যবাদ। আমার লেখার কোনো কোনো বিষয় নিয়ে কেউ কেউ সহমত প্রকাশ করেছেন, কেউবা আবার বিরুদ্ধমত প্রকাশ করেছেন। কেউ আবার ভিন্ন এঙ্গেল থেকে কোনো কোনো বিষয়কে দেখার চেষ্টা করেছেন। এসবই মুক্তবুদ্ধির চর্চা এবং চিন্তার খোরাক।
সবাইকে আবারও অসংখ্য ধন্যবাদ প্রবন্ধটা কষ্ট করে পড়ে মন্তব্য করার জন্যে। সবাই ভাল থাকুন।
আবিদ ভাই
মুক্তমনায় স্বাগতম। আগের লেখাটিও পড়েছি কিন্তু ব্যস্ততার কারণে মন্তব্য করা হয়নি।
গত লেখা এবং এই লেখার আলোকে নিজের বক্তব্য কিছুটা তুলে ধরি। আপনার আগের লেখাটিতে আপনি নিজেও স্বীকার করেছেন যে “মডারেট ইসলাম’ নামকরণটি সঠিক নয়। বরং মডারেট ধার্মিক কিংবা মডারেট মানুষ হলে ঠিক ছিল। আমিও মনে করি আপনার লেখার মূল বক্তব্যে যদি আপনি মডারেট ইসলামকে ডিফেন্ড করার চেষ্টা না করে মডারেট মানুষকে ডিফেন্ড করতেন তবে আমি আপনার পক্ষে থাকতাম।
বাস্তবতা এটাই যে মডারেট ইসলাম সম্ভব নয়। ইসলামের প্রধান স্তম্ভ হল এক আল্লাহ এবং তার কোরানের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা। এখন কোরান এমন এক পুস্তক যেটা সয়ং ঈশ্বরের বাণী এবং এর প্রতিটি বাক্যে সম্পূর্ণ বিশ্বাস আনতে হবে। আপনি কোন বাক্য মানবেন, আর কোনটা মানবেন না সেরকম কোন অপশন নেই।
এবার বলি আমি কেন ইসলাম বা কোন ধর্মকেই স্বীকার আর করি না। প্রথম প্রশ্নই হল যে আপনি কি বিশ্বাস করেন যে কোরান, বাইবেল কিংবা অন্যান্য ধর্মগ্রন্থগুলো ঈশ্বরের সৃষ্ট? আমি নিজের যুক্তি দিয়ে, বিজ্ঞানের আলোকে, ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞানের আলোকে এই সিদ্ধান্তে এসে উপণিত হয়েছি যে উক্ত ধর্মগ্রন্থগুলো কোন না কোন মানুষের তৈরী, যেমনটি তৈরী সক্রেটিস, কনফুসিয়াস, বৌদ্ধ দর্শনের গ্রন্থগুলো। আমাদের ইসলাম, খ্রীষ্টান ধর্মগ্রন্থগুলো দর্শনের অন্যান্য গ্রন্থগুলোর মতই মানুষের মাঝে নৈতিকতা তৈরীর জন্য, শোষন দূর করার জন্য কাজ করার জন্যই এসেছিল।
পার্থক্যটি এখানেই। আপনি মডারেট ইসলামের কথা বলে আসলে যেটা বলছেন যে ধর্মগ্রন্থগুলো কোন মানুষের তৈরী নয়, সেগুলো ঈশ্বরের তৈরী। আমি আপনাকে অনুরোধ করবো, ঈস্বর আছে কি নেই সেই তর্কে না গিয়েই এমন কোন যুক্তি দেখান যাতে আমি বিশ্বাস করতে পারি যে ধর্মগ্রন্থগুলো কোন মানুষের তৈরী নয়। ধর্মগ্রন্থগুলোতে কি এমন আছে যেটাতে প্রমানিত হয় যে সেগুলো কোন ঐশ্বরিক বাণী? তার আগে আকাশ মালিকের এই ব্লগেই কিছু লেখা আছে সেগুলো পড়ে নিতে পারেন।
অবশ্যই এক সময় ধর্মের কারণে সমাজে কিছু উপকার হয়েছিল, আজও হয়তো কিছু কিছু মানুষের কাছে ধর্মের প্রয়োজনীয়তা টিকে আছে। কিন্তু সেটার জন্য ধর্মকে আকড়ে ধরে থাকতে হবে সকলকেই সেটা বোধহয় ঠিক নয়। আমার মতে ধর্ম এখনো টিকে আছে বা আরো বহুদিন টিকে থাকবে তার একটি কারণ হচ্ছে স্বর্গীয় ইউটোপিয়তা। মানুষ আসলে সব সময় চায় এক ধরণের ইউটোপিয় সমাজ যেখানে কোন শোষন থাকবে না , হিংসা থাকবে না। গণতন্ত্র বলেন সমাজতন্ত্র বলেন, ধনতন্ত্র বলেন বা বিজ্ঞানই বলেন কোন কিছুই মানুষকে সেই সমাজ দিতে পারে না, বাস্তবতার নিরিখে।
এক মাত্র ধর্মই দেয় সেই কাঙ্ঘিত সমাজের স্বপ্ন, হোক না সে মরণের পরে। নিজে অবিশ্বাসী হয়েও মাঝে মাঝে ভাবি ক্ষতি কি হত যদি আসলেই পূণর্জন্ম থাকতো। এক জীবনের হতাশাগুলো আরেক জীবনে পুষিয়ে নিতে পারতাম। তো বুঝতেই পারছেন কেন আপনার ধর্মকে মানুষ যুক্তিবাদের চেয়েও প্রিয় বলে মনে করে। সেখানে কোন ঐশ্বরিক ব্যাপার নেই। দারিদ্রতা যত কমে যাবে, বিজ্ঞান যত এগুবে, শিক্ষার হার যত বাড়বে ধর্ম এমনিতেই ঝরে যাবে। ধর্ম যারা আঁকড়ে ধরে রেখেছিল তারাই একদিন ধর্মকে ঝেরে ফেলবে, আমার বা আপনার করণীয় এখানে কমই। আমি আপনি চিন্তা করতে পারি নিজে কি করবো সেটা নিয়ে। এই যেমন আমি ধর্মকে ঝেরে ফেলেছি, আরা আপনি তাকে আরো কিছুদিন ধরে রাখতে চাচ্ছেন। তারপর, চিন্তা করুন পরবর্তী প্রজন্মের কথা। তার পরের জন্মের কথা। আমাদের পূর্বপুরুষের লেজের মত সেটা একদিন খসেই যাবে।
আরো লিখে চলুন। মুক্তমনায় আবারো স্বাগতম।
@স্বাধীন,
খুব ভাল বলেছেন। সম্পূর্ন সহমত। :yes:
@স্বাধীন, :yes:
অন্য অনেক মন্তব্যকারীদের মত বলছি, লেখকের মূল কথাটা বোঝা গেল না।
একবার মনে হচ্ছে বলতে চাইছেন ধর্মের বিরূদ্ধে যুদ্ধ করে কোন লাভ নেই, কারণ … বেশ কিছু উদাহরণ। বিস্ময়কর মন্তব্য, স্পার্টাকাসকেও লেখক একই উপদেশ দিতেন নাকি, দাস-প্রথার বিরূদ্ধে যুদ্ধ করে তো ভাই লাভ নেই, দেখুন গ্রীস, রোম, মিশর, আসিরিয়ার সুদীর্ঘ ইতিহাস…অতএব অযথা ঝামেলা না করে ঘানি টানুন?
আর হিন্দু-খ্রীস্টান প্রতিক্রিয়াশীলতার বিরুদ্ধে এখনও যুদ্ধ করে যেতে হচ্ছে, এটা খুব trivial একটা কথা হল। করতে তো হবেই, বলার কি আছে। “অনন্তকালের” জন্য সব কিছুর সমাধান করে ফেলব, এটা একটা ধর্মীয় বিভ্রান্তি, আধুনিকতায় এর কোন স্থান নেই।
আরেকবার মনে হচ্ছে বিশেষভাবে ইসলামকে আক্রমণ করা হচ্ছে কেন এটা নিয়ে লেখক বিরক্ত। এটার জবাবও খুব সোজা, যার কাছে যেটা গুরুত্বপূর্ণ সে সেটা নিয়েই আলাপ করবে। রামমোহন সতীদাহ নিবারণ করতে গিয়ে অনবরত ইসলাম-নিন্দা করলে চলত কি?
@অভিজিৎ
বহু বছর পূর্বে আবিদ সাহেবের লেখার দিকে তাকিয়ে আমিও অবাক হতাম, এখন আর হইনা। তবে অপশনের ব্যাপারে এসে কিছুটা কনফিউজড হয়েছি। সে হিসেবে স্বদেশে ও প্রবাসে আমার চেয়ে, তাঁর ও তাঁর মত অনেকের অপশনের দুয়ার অধিক মুক্ত ও খোলা। তবে কেন মুক্ত পরিবেশে এসেও তাঁদের মাঝে জীবন ও জগতটাকে একবারও ভিন্নচোখে দেখার, ভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করার আগ্রহ বা অনুভুতি জাগেনা? আর আমি কেন, কী ভাবে, কোন্ জিনের ইশারায় সম্পূর্ণ বিপরীত ধারায় বড় হয়ে এমন হলাম? এর একটা বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ বোধ হয় আপনার কোন একটা লেখায় পড়েছিলাম।
এশার লিখেছেনঃ
ভাল বলেছেন। আমি আর একটু লিখি।
ইহুদী, খ্রিস্ট ও ইসলাম ধর্মের মূল সেমিটিক, তার মধ্যে শেষোক্ত দুটির মূল মন্ত্র হচ্ছে proselytization – ধর্মান্তরীকরণ। প্রাচ্যের দোরগোরায় ইসলাম ও খ্রিস্ট ধর্ম আসার আগে সেখানকার বেশীরভাগ লোকজনের ধারণা ছিল না তারা কোন ধর্মের মানুষ, আজো বেশীরভাগ চীনা লোক বলতে পারবে না তাদের ধর্ম কি। এমন কি যে proselytizing বৌদ্ধ ধর্ম সেও ছিল syncretist, পুরাতন দেব-দেবীর পুজা যথেষ্ট মাত্রায় তার মধ্যে ছিল ও আছে, আর হিন্দু ধর্মে বুদ্ধকে বিষ্ণুর দশাবতারের একজন বলে অনেক সময়ই চিহ্নিত করা হয়। বলা যেতে পারে হিন্দু-বৌদ্ধ-জৈন ধর্মের ছিল এক বড় ঘ্যাঁট, বিপ্লব পাল যেমন বলেছেন হিন্দু ধর্ম হচ্ছে ধর্ম বা দর্শনের মিউজিয়াম। হিন্দুরা ইসলাম আসার আগে জানত না যে তারা হিন্দু, আর হিন্দু নামটা তো পশ্চিমেরই দেয়া।
proselytization না থাকার ফলে হিন্দুদের মধ্যে বিশ্ব-উম্মা বোধ কখনই আসে নি। আমি খুব সাধারণ একটা উদাহরণ দেব। শ্রীলঙ্কায় সিংহলী-তামিল যুদ্ধকে প্রথম থেকেই বৌদ্ধ-হিন্দু দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখা যেতে পারত। আমি এখানে ধর্মীয় ভূমিকা পুরোপুরি অস্বীকার করছি না, কিন্তু সারা পৃথিবীর এবং বাংলাদেশের হিন্দুরা এটা সিংহলী-তামিল যুদ্ধ হিসেবেই দেখেছি, তামিলরা হিন্দু বলে তাদের কোন অতিরিক্ত মমত্ববোধ হয় নি। এমন কি ভারতেও একমাত্র তামিলনাড়ু ছাড়া শ্রীলঙ্কার তামিলরা কোন সমর্থন পায় নি। অথচ ফিলিস্তিনী-ইজরায়েল সমস্যা যেন বাংলাদেশীদের জন্য জীবন-মরণ সমস্যা। বাংলাদেশীরা না জানে ফিলিস্তিন কোথায়, না জানে তারা কি ভাষায় কথা বলে। অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হলে তো পৃথিবীর অন্য অংশগুলোর কথা কি মনে রাখা উচিত নয়?
আমি একবার এক বাংলাদেশী বন্ধুকে বলেছিলাম যে আমি দুটি দেশে যাব না – সৌদি আরব, কারণ তারা আমাকে মক্কায় ঢুকতে দেবে না, আর পাকিস্তান। বন্ধু বলেছিল আর ইজরায়েল? আমি বলেছিলাম ইজরায়েল তো বাংলাদেশের কোন ক্ষতি করে নি, বরং ইজরায়েল একটি রাষ্ট্র যে বাংলাদেশকে অনেক আগেই স্বীকৃতি দিয়েছিল (৪ঠা ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২, তবে কিছু সূত্র বলে ১৯৭১এ যুদ্ধ শুরু হবার পর পরই) যখন পাকিস্তান, সৌদি আরব ও চীন বাংলাদেশকে জাতিসঙ্ঘে ঢোকার বিরুদ্ধে মুসাবিদা করছিল। অথচ আমার বাংলাদেশী পাসপোর্ট বলে পৃথিবীর সব দেশে যাওয়া যাবে ইজরায়েল ছাড়া।
ফিলিস্তিনীদের মানবিক অধিকারের ব্যাপারে ন্যায্যসঙ্গত দাবি আছে, কিন্তু অনেক বাংলাদেশীর ইহুদী-ঘৃণার কোন মাথামুণ্ডু আমি করতে পারি না, বিশেষতঃ যখন তারা ইহুদীদের সাথে সম্যক পরিচিত নয়।
@দীপেন ভট্টাচার্য,
এ রকম হাজারটা উদাহরণ খাড়া করা যায়। ছোটবেলায় পাঠ্যবইতে পড়তাম – আরব দেশ, ধূ-ধূ মরূভূমির দেশ, বালি আর বালি। অথচ পাশে পশ্চিম বংগ, একই ভাষা, সংস্কৃতি। কিছুই পড়তাম না। এমন কি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের প্রাকৃতির লীলাভূমির অপরূপ দৃশ্যের কথা পর্য্যন্ত পাঠ্যপুস্তকে স্থান ছিল না। বার্মা তো দুরের কথা। বছর বিশেক আগে দেখলাম দ্বিতীয় শ্রেনীর পাঠ্য বইতে কী সুন্দর করে লেখা – Hashem is writing a letter to Kashem. Kashem lives in Iran. They are friends. ইত্যাদি।
হাশেম আর কাশেমের বন্ধুত্বের যোগসূত্রটি কী?
সোজা উত্তর পাওয়া যাবে আশমানী কিতাবে। অংকের সমীকরণ দিয়ে জিনিষটি সহজেই বোঝা যাবে।
* কোন অমুসলমান তোমার বন্ধু হবে না। কোন অমুসলমানকে সাহায্য করো না, সাহায্য নিও না।
* অমুসলমান কে ধর্মান্তরিত কর অথবা হত্যা কর।
বাক্য দুটো perfect বঙ্গানুবাদ নয়। তবে কোরানের একাধিক স্থানে লেখা আছে এই রকম। কোরান অবশ্য অবশ্য অনুসরণ করতে হবে। এমনি নির্দেশ। ইস্রাইল ইহুদী দেশ। কাজেই শত্রু। ইরান যখন ইস্রাইলকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে দিতে চায়, মুসলমান হিসেবে খুশি হওয়ারই কথা। আর বাংলাদেশের পাশপোর্টে “ইস্রাইল ব্যতিরেকে” লেখা থাকার কারণ এইটিই।
ফজলে লোহানী সাহেব অনেক আগেই মারা গেছেন। তাঁর “যদি কিছু মনে না করেন” ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান নিশ্চয়ই অনেকের মনে আছে। দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে বলে ছিলেন, “একটি ছোট পাখীরও বাসা থাকে, কিন্তু প্যালেস্টাইনদের তাও নেই, নিজ বাসভূমি থেকে তারা বিতাড়িত।” তিনি কখনও বলেছেন বলে শুনিনি – পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতিদেরও একই অবস্থা।
উপরের প্রথম তারাচিহ্নিত বাক্যদ্বয় থেকে এর উত্তর মিলতে পারে।
@দীপেন ভট্টাচার্য,
এটা আমার কাছেও এক বিশাল কৌতূহলের বিষয়। কী কারনে আমি ঠিক নিজেও জানিনা ছোটবেলায় ইহুদীদের সম্বন্ধে একটা কেমন কেমন অনুভূতি ছিলো।
হলোকাস্ট নিয়ে পড়াশোনা করার পর এবং এর পর জার্মানীর কোথাও বোমা ফুটতে না দেখে তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে বহুগুন । শ্রদ্ধা আরো বেড়েছে এই ক্ষুদ্র জাতি থেকে যে পরিমান নোবেল লরেট বেরিয়েছেন তার লিস্ট দেখে।
নির্যাতিত হওয়া সত্বেও কী করে ঘুরে দাঁড়ানো যায় জাতি হিসেবে তা হয়তো মুস্লিমদের শেখা উচিত ইহুদিদের কাছে।
@দীপেন ভট্টাচার্য,
বাংলাদেশীদের সেই ঘৃণা এসেছে আসমানী কিতাব থেকে যেখানে বলা আছে ইহুদীরা বিশ্বাসঘাতকের জাতি।
আমি আল্লাচালাইনা লেখা কিংবা আবিদের প্রতিক্রিয়া কোনটির মধ্যেই না ঢুকে এটুকু বলতে পারি যে, ধর্মকে ‘না’ বলা মোটেই অবাস্তব কিছু নয়। আমার নিজের উদাহরণ তো আছেই, আমার ধারনা আমাদের অধিকাংশ মুক্তমনা সদস্যরাই সেটা প্রমাণ করে দেখিয়েছে।
শুধু মুক্তমনাতেই নয়, আজকে যে কোন বাংলা ব্লগে গেলেই মুক্তবুদ্ধির লেখা সমৃদ্ধ বহু প্রবন্ধ চোখে পড়ে। বহু লেখকই ধর্মকে ক্রিটিকালি দেখছেন এবং লিখেছেন। আজকে একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে – তথ্য যেখানে মুক্ত, সেখানে সত্যিটা যাচাই করে নেয়া অনেক সহজ। এই কিছুদিন আগেও তথ্যের অবাধ প্রবাহ যখন রাষ্ট্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিলো তখন আমরা এইভাবে বিভিন্ন সাইটে এতো বেশি মুক্তবুদ্ধির লেখা সমৃদ্ধ রচনা আমরা দেখিনি।
শুধু ব্লগ কেন, পৃথিবীর দিকে দেখুন – আসলে ইউরোপের দেশগুলোতে লোকজন এখন ধর্মের ধারই ধারে না। চার্চগুলো খালিই পড়ে থাকে। অনেকেই মনে করেন, নাস্তিকতাকে ধর্ম হিসবে দেখলে ‘ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং রিলিজিয়ন’ সম্ভবত ধর্মহীনতার দিকেই রায় দিবে। ছোটবেলা থেকে যদি মগজ ধোলাইয়ের মত স্রেফ পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ধর্ম বিশ্বাসটা মাথায় জোর করে ঢুকিয়ে না দিয়ে পরিণত বয়সে এসে ‘সব কিছু দেখে শুনে, যাচাই বাছাই করে’ ধর্মকে গ্রহণ করার অপশন দেয়া হলে আমরা আবিদ এবং আবিদের মত অনেককেই নাস্তিক হিসেবেই পেতাম – এটা আমি এখন সত্যই মনে করি।
ধর্মগুলো এখন প্রগতির অন্তরায়, বিজ্ঞানের অন্তরায়, নারীমুক্তির পথে প্রধান বাধা। ধর্মগুলো নৈতিকতার নামে পুরোন আমলের রদ্দিমার্কা জিনিস শেখাতে চায়। মানুষের উদ্ভব সম্বন্ধে ভুল ধারনা দেয়, বিজ্ঞানের নানা অপব্যাখ্যা হাজির করে। আর জিহাদ, ধর্মযুদ্ধ, জাতিভেদ, নিম্ন বর্ণের উপর অত্যাচারের বৈধতা – এগুলো তো আছেই। এগুলোকে ‘না’ বলা যদি এতোটাই অবাস্তব হত তাহলে আমরা পৃথিবীতে থাকতাম না।
আরো একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে। বহু গবেষনায়ই বেরিয়ে এসেছে যে দারিদ্রের সাথে ধর্মের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ আছে। যদি কেউ কোন দেশের ধর্মীয় প্রভাব এবং পার ক্যাপিটা গ্রস ডোমেস্টিক প্রডাক্টের প্লট করেন তবে গ্রাফটা দাঁড়াবে অনেকটা এরকম –
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/uploads/2009/10/wealthvsreliogisity.jpg[/img]
এই গ্রাফটা আমি আগেও মুক্তমনায় দিয়েছি। এটি অধ্যাপক ভিক্টর স্টেঙ্গরের ‘নিউ এথিজম’ বইয়ে আছে । ইন্টারনেটেও অনেক সাইটে গ্রাফটা পাবেন।
আমেরিকা এবং কুয়েতের মত দু’ একটি দেশ ছাড়া বাকী সব কমবেশী দেশই এই গ্রাফের কোরিলেশন সর্মথন করে (এ দুটি দেশ কেন ব্যতিক্রম সেটা আমি আগে ব্যাখ্যা করেছি)। গ্রাফ থেকে ধর্ম এবং দারিদ্রতার একটা স্পষ্ট সম্পর্কই পাওয়া যায়। সেজন্যই আমি বলি, যে সমস্ত দেশ যত দারিদ্রক্লিষ্ট, সে দেশেই যে ধর্ম নিয়ে বেশি নাচানাচি হয়, আর শাসকেরাও ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তা বোধ হয় বলে দেবার দরকার নেই খুব একটা। সেজন্যই দারিদ্রক্লিষ্ট তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে ধর্ম খুব বড় একটা নিয়মক হয়ে কাজ করে। কিংবা ব্যাপারটা উল্টোভাবেও দেখা যেতে পারে – ধর্ম নিয়ে বেশি নাচানাচি করা হয় বলেই কিংবা জাগতিক বিষয় আশয়ের চেয়ে ধর্মকে মাত্রাতিরিক্ত বেশি গুরুত্ব দেয়ার কারণেই সে সমস্ত দেশগুলো প্রযুক্তি, জ্ঞান বিজ্ঞানে পিছিয়ে, এবং সর্বোপরি দরিদ্র। আপনি বাংলাদেশের ব্যাপারটাই দেখুন – মোল্লাদের তোয়াজে রাখতে তারা ফেসবুক বন্ধ করে দেয়। সে দেশ অর্থ বৈভব জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত হয়ে যাবে – এটা কি আশা করা যায়? ধর্মের রশিই আমাদের পেছনে টেনে রেখেছে অনেকটাই।
@অভিজিৎ,
সহমত অভিজিৎ’দা।
আর এও সত্য যে আমেরিকার কেবল্ নিউজের ওয়েবসাইটগুলোতে সে খবর পড়ে শত শত আমেরিকান এর প্রচন্ড নিন্দা জানিয়ে কমেন্ট বিভাগে অসংখ্য কমেন্ট করেন। তাই যদি না হতো আমেরিকার জনগন ওবামাকে প্রেসিডেন্ট না করে বুশের মতো অন্য একজন কট্রর কনজারভেটিভকেই প্রেসিডেন্ট হিসাবে ভোট দিতো। পৃথিবীতে সব ধর্মের মধ্যেই কম বেশী চরমপন্থী বা ফেনাটিসম বিদ্যমান আছে। পৃথিবী যতই জ্ঞানে-বিজ্ঞানে অগ্রসর হচ্ছে, এইসব ফেনাটিসম সব ধর্মের থেকেই আস্তে করে ধীরে ধীরে বিদায় নিচ্ছে বা নিতে বাধ্য হচ্ছে। একমাত্র ইসলাম ধর্মেই এই ফেনাটিসম পুর্নোদ্যমে নতুন ডেফিনিশন ধারন করে সারা পৃথিবী জুড়ে বিস্তার লাভ করে চলছে। এর কারন কি?
আসলে আমার মনে হয়, ‘something is going wrong with muslims in everywhere’.
@ব্রাইট স্মাইল্,
আপনি তো মনে হয় লেখকের মূল বক্তব্য ধরতে পারেননি। উনি কিন্তু ইসলামিক টেরোরিজম বা ফ্যানাটিসিজমের পক্ষে কোন সাফাই গাননি বা অস্বীকার করতে চেষ্টা করেননি।
ওনার মূল বক্তব্য আমি যেটা বুঝেছি তা হল যে ফ্যানাটিসিজম ওনার মতে খৃষ্টান এবং হিন্দুত্ববাদীদের মাঝেও এখন ছড়াচ্ছে, কিছু উদাহরন দিয়ে উনি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। যেটা অস্বীকার করা যায় না। বিতর্ক হয়ত করা যায় কোন ধর্মাবল্বীরা এতে এগিয়ে আছে সেটা নিয়ে।
পৃথিবীর সব ধর্মের মধ্যেই কম বেশী ফ্যানাটিসিজম আছে, আপনিই বলেছেন। আবিদ ভাই যা বলতে চাচ্ছেন তাহল যে আমরা যদি চোখ কান বুজে শুধু এক ধর্মের পেছু লাগি (পেছু লাগতে কিন্তু উনি বা আমি কেউই মানা করছি না) আর ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যদের ব্যাপারে চোখ কান বুজে থাকি তবে তা হবে খুবই প্রশ্নবিদ্ধ। কারটা বেশী কারটা কম এমন যুক্তি খুব ভাল শোনাবে না।
ভুলে যাবেন না বর্তমানে বিশ্ব অতিক্রম করছে অর্থনৈতিকভাবে এক চরম সংকটের মধ্যে। এই অর্থনৈতিক মন্দার পেছনে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির কিছু ভূমিকা নিঃসন্দেহে আছে, আমরা সবাই যার ভুক্তভোগী। এক্ষেত্রে আমরা মুসলিম দেশগুলির থেকেও বেশী ভুক্তভোগী। আমরা আমেরিকাবাসীরা হয়ত বোমার ঘায়ে মরছি না, তবে অন্যভাবে ভুগছি।
@আদিল মাহমুদ,
ঘুরে ফিরে সেই একই কথা। সব ধর্মেই তো সহিংসতা আছে, কাজেই শুধু ইসলামের পেছনে লাগা কেন? লাগতেই যদি হয় তবে সবার পেছনেই লাগা উচিত, নতুবা কারো পেছনে না। এটা ইসলামবাদীদের আর মডারেট মুসুলিমদের একটা কৌশল, সবই সমান বলে পৃথিবীতে সমস্যা সৃষ্টির পেছনে ইসলামের অনন্য ভূমিকাকে আড়াল করা। অন্যদের ব্যাপারে ইচ্ছাকৃতভাবে চোখ কান বুজে থাকার প্রশ্ন উঠছে কেন? ইসলামিস্টরা কুরান ও হাদিসের আয়াতের অনুসরণ করে গোটা দুনিয়ায় যে অসহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, যার কুফল আমরা সবাই, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, নাস্তিক প্রতিনিয়ত মুখোমুখী হচ্ছি, মলে, এয়ারপোর্টে, সিনেমা হলে, স্কুলে, বৈশাখী মেলায় ইত্যাদি যায়গায়। সব যায়গায় তো ইসলামী জঙ্গীরা হূমকি দিয়েছে। আর কোন্ ধর্মের অনুসারীদের জন্য ঘটছে এরকম সমস্যা?। নারীদেরকে আর কোন্ ধর্মে তাদের ধর্মীয় বিধানের জন্য অপমানকর শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে ও তাদের ব্যক্তিস্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হচ্ছে এই বর্তমান কালেও? চোখ কান চোখ কান বুজে থাকার প্রাসঙ্গিকতা কোথায়?। অন্য ধর্মের উগ্রবাদীদের দ্বারা সমাজে সমস্যা সৃষ্টি হলে প্রচলিত আইনেই তো তার সমাধান হয়। যেহেতু ইসলামে উগ্রবাদীদের ক্ষেত্রে এই সব বিব্রতকর সত্যের মূল খুঁজতে গেলে সবই কুরান ও হাদীসের দিকে অঙ্গুলী নির্দেশ করে, তাই কুরান ও হাদীসে বিশ্বাসী মডারেট ইস্লামিস্টরা সব ধর্মই সহিংসতার ব্যাপারে সমান এই ধুয়া তোলে, এই বিব্রতকর সত্যকে এড়ানর লক্ষ্য। আর কিছু উদারবাদীরাও এই চতুর কৌশলের ফাঁদে পড়ে মডারেট ইসলামিস্টদের এই ধুয়া সমর্থন করে ঠিকই তো ঠিকই তো বলে। এটা কারটা বেশি কারটা কমের ব্যাপার নয়। এটা মাত্রার ব্যাপার নয়। এটা গুনগত পার্থক্যের ব্যাপার। ইসলামের উগ্রতা একেবার ভিন্ন এক পশূ। এটা কুরান ও হাদীস থেকে আসছে। যা সব মুসলিমদের জন্য সর্বকালের জন্য মানা আবশ্যিক। যা অন্য কোন ধর্মের ক্ষেত্রের বেলায় সত্য নয়। অন্য ধর্মের বইগুলো বর্তমানের অধিকাংশ অনুসারীরাই মানুষ রচিত ইশ্বর অনুপ্রাণিত বই বলেই মনে করে। ইতিহাসের বইএর মত। ওল্ড টেস্টামেন্টের (যা খ্রীষ্টানের মূল ধর্মগ্রন্থ নয়) বাণীগুলিও তাই, প্রাচীন ইস্রাইলীদের ইতিহাস, সেখানে যা সহিংসতা আছে, তা সবার জন্য সর্বকালের জন্য নয়, আর ঐ অহিংসতাগুলি খুবই নির্দিষ্ট, স্পেসিফিক । এছাড়া খ্রীষ্টান মৌল্বাদীরা যা করেছে এবং করছে, তা যীশুর বানী ও জীবনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। কিন্তু ইসলামের ব্যাপারে একই কথা বলা যায়না।
@যাযাবর,
আসলে লেখকের টপিক ও মূল লেখা একটু অসামঞ্জস্যপূর্ন। উনি আসলেই কি বলতে চাচ্ছেন তা আমার কাছেও পরিষ্কার নয়। আমার যা মনে হয়েছে তা আমার নিজের অনুমান।
টপিক পড়ে মনে হয়েছিল যে লেখায় ধর্মকে পুরোপুরি না বলা অর্থাৎ বিতাড়ন বিষয়ে উনি ওনার যুক্তি দেবেন।
এটা হতে পারে দুটি দৃষ্টিকোণ থেকে।
১। ধর্ম ছাড়া জীবন সমাজ অচল এটা প্রমান করা।
২। ধর্মের হয়তবা অতটা জীবন মৃত্যু মাত্রার প্রয়োযনীয়তা নেই, তবে বাস্তবে ধর্মহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় এটার পক্ষে যুক্তি দেওয়া।
কিন্তু লেখা পড়ে আমার মনে হল যে তিনি আসলে এ লাইনে কথা বলেননি। তিনি খুব সম্ভবত অন্য ধর্মেও মৌলবাদের (মৌলবাদ না বলে মনে হয় ফ্যাসীজন বলাই ভাল, কারন প্রথাগত ধর্ম মানা মানেই আসলে মৌলবাদী) সম্ভাব্য উত্থান সম্পর্কে সতর্ক করতে চেয়েছেন। উনি যা বলতে চাচ্ছেন তা অনেকটা; আমরা ধরে নেই যে ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মগুলির বিষদাঁত অনেক আগেই ভেঙ্গে গেছে। সেগুলি ভাঙ্গিয়ে ফ্যানাটিসিজম আর সম্ভব নয় এই ধারনা ভুল। নবরুপে হয়ত সেসব ধর্মের লোকেরাও সেসব ধর্ম ভাংগিয়ে ফ্যাসীজম উষ্কে দিচ্ছে। তার কিছু উদাহরন তিনি দিয়েছেন।
বর্তমান বিশ্বে কোন ধর্ম শুধু ধর্মের নামে মানুষের জীবনে বিশ্বব্যাপী অশান্তি করার চেষ্টা করছে সে ব্যাপারে কোন দ্বি-মত আমার নেই। তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াতে আমি কোন বাধা দেই না, উতসাহই দেই।
তবে তার সাথে সাথে বিশ্বমোড়ল আমেরিকা, যারা কিনা সংবিধান মতে সেক্যুলার তার রাষ্ট্রপতি যখন ধর্মের দোহাই পেড়ে উষ্কানিমূলক বক্তব্য দেন, কোন দেশের সব শিশুর মন থেকে কোন বিশেষ ধর্ম নিকেশ করার শপথ নেন তাকে কেন হালকা ভাবে নিতে হবে পুরোপুরো অস্বীকার করতে হবে তা আমার মাথায় ঢোকে না। এর সাথে ইসলামের বিপদ হালকা করে দেখার প্রবনতা জাতীয় পালটা যুক্তি তেমন জুতসই মনে হয় না। ইসলামী ফ্যানাটিসিজমের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবেই বলে অন্যদের সম্পর্কে স্পীকটি নট নীতি পালন করতে হবে আমি এতে বিশ্বাসী নই, আপনি হয়ত তেমন বিশ্বাস করতে পারেন, তা আপনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। আমার তাতে কিছু বলার নেই। আবিদ সাহেব কোন পক্ষের সাফাই এখানে গেয়েছেন বলে আমার অন্তত মনে হয়নি।
@আদিল মাহমুদ,
কিন্তু ভাই আপনি যখন বললেন “আপনি তো মনে হয় লেখকের মূল বক্তব্য ধরতে পারেননি।” তখন আমি ভাবলাম আমি হ্য়ত লেখকের মূল বক্তব্য ধরতে পারিনি কিন্তু আপনি নিশ্চিত পেরেছেন। কিন্তু এখন দেখছি লেখক বক্তব্য আপনার কাছেও পরিষ্কার নয়। 😕
@ব্রাইট স্মাইল্,
কথা সত্য।
আমি নিজেও নিশ্চিত নই ধরতে পেরেছি বলে। আপনাকে বলা আমার উচিত হয়নি।
তবে কারো কারো মন্তব্য দেখে মনে হল অনেকে ধরে নিয়েছেন যে উনি অন্য ধর্মের ফ্যাসীজমের ছূতায় ইসলামী ফ্যাসীজম হালাল করার অপচেষ্টা করছেন। সেটা নিঃসন্দেহে উনি করেননি বলেই আমার মনে হয়েছে।
@আদিল মাহমুদ,
আমার মতে লেখক বলতে চেয়েছেন যে অন্য ধর্মেও ফ্যাসীজম আছে, শুধুমাত্র ইসলামী ফ্যাসীজমকে নিয়ে এতো তোলপাড় হচ্ছে কেনো? এতে লেখক ইসলামী ফ্যাসীজম সমর্থন করছেন বলে উপসংহার টানা যাচ্ছেনা। বস্তুতপক্ষে ইসলামী মতবাদগুলো সম্পর্কে লেখকের মনোভাবও পরিষ্কার নয়।
তবে আমি শুধু বলতে চেয়েছিলাম ইসলামী ফ্যাসীজমের জন্য বর্তমান পৃথিবী যেভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সেটা অন্যান্য ধর্মের বেলায় খাটেনা। এর নিশ্চয়ই কোন কারন আছে।
@আদিল মাহমুদ,
আবিদ সাহেব ইসলামী ফ্যাসীজম এ বিশ্বাস করেন না। তার পুরাতন লেখাগুলো আমি মুগ্ধ হয়ে পড়তাম। যতদূর জানি, আবিদ সাহেব যৌবনে দেশে ছিলেন বুয়েটের একজন মেধাবী ছাত্র ও আওয়ামী লীগ সমর্থক, প্রবাসে কর্মজীবনে একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার, ব্যক্তি জীবনে একজন তাবলিগী পরহেজগার মুসলমান। তখনকার সময়ে তার গাড়ির সিডিতে শাহনাজ রহমত উল্লার গান বাজতো, হয়তো বন্যার রবীন্দ্র সঙ্গীতও। আজ তার গাড়িতে কী বাজে, তিনি আর তার আল্লাহই জানেন।
ইদানিং তার লেখায় বিষয় বস্তুর চেয়ে ব্যক্তিগত দিকটাই প্রধান হয়ে আলোচিত হয়, কারণ তিনি নিজেই ব্যক্তিগত বিষয় বিশ্বাস, চিন্তা, ধারণা, লেখায় টেনে আনেন। তার ডানে স্ত্রী, বামে শালী, উভয়েই বোরকা পরা, সন্দিহান কৌতুহলি এক শ্বেতাঙ্গিনীর প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন- এ যেনো, Buy one get one free.
এটা লেখার কি আদৌ কোন প্রয়োজন ছিল? ব্যাপারটা পাঠকের কাছে শুনতে কেমন লাগে?
@আকাশ মালিক,
আমার মনে হয় লেখক, একদিকে উনি ধার্মিক অন্যদিকে তিনি অনেক ব্যাপারেই উদার আছেন, নিজের এই একটা ইমেজ সৃস্টি করছেন। ধার্মিক হয়ে যে উদার হওয়া যায় নিজকে একটু অন্যভাবে উপস্থাপন করে সেটা প্রমান করতে চাচ্ছেন। যদিও বিষয়টা বিতর্কিত।
এটা আমার ধারনা এবং ধারনাটি ভুলও হতে পারে।
@আকাশ মালিক,
আবিদ ভাই কি বলতে চান সেটা মনে হয় কারো কাছেই পরিষ্কার নয় মনে হচ্ছে। আমি কয়েকতা সম্ভাবনা বিবেচণা করেছি মাত্র। উনি তেমন আলোচনায় অংশগ্রহন করেন না বলে রহস্য দূর হচ্ছে না। আমরাই জল্পনা কল্পনা করে যাচ্ছি।
আমরা মনে হয় মূল লেখা বাদ দিয়ে ওনার ব্যাক্তিগত জীবনে একটু বেশী আগ্রহী হচ্ছি বা ব্যাক্তিগত জীবন ধারা দিয়ে প্রভাবিত হচ্ছি। উনি গান না শুনলে আমার খুবই অবাক হই, তবে আপত্তি করার কিছু দেখি না। যতক্ষন না উনি বলপূর্বক অন্য কাউকে গান শোনায় বাধা দিচ্ছেন ততক্ষন আমার আপনার সমস্যা কি বলেন? আমার কাছেও খুবই অবাক লাগে, গান ছাড়া আবার মানুষ বাঁচে নাকি? তবে ওনার কাছে নিশ্চয়ই সে জীবন পদ্ধুতি কোন ধরনের শান্তি মনে এনে দিচ্ছে। উনি ওনার মত ভাল থাকুন। এত ধরনের চরিত্র আছে বলেই তো জীবন এত বিচিত্র। আমরা ব্যাক্তি আবিদ বাদ দিয়ে লেখক আবিদের লেখা নিয়েই আলোচনা করি।
সবাই সবার বিশ্বাস নিয়ে থাকুন না, শুধু নিজের অন্ধ বিশ্বাসের বশতঃ অন্যের সমস্যার কারন না হয়ে দাঁড়ালেই তো হল।
আপনার লেখাটি কৌতূহলদ্দীপক এই অর্থে যে পুরো লেখাটি পড়ে আপনি কী উপস ংহারে পৌছুলেন তা বুঝতে পারিনি।
প্রথমে আমার ধারনা বলি আগের লেখা সম্বন্ধে।
আল্লাচালাইনার মন্তব্য থেকে আমি বুঝেছি যে হিন্দু ধর্মকে না বলা বলতে উনি বোধ হয় প্রাক মুস্লিম যুগে ভারতবর্ষে দলে দলে নিম্নবর্গীয় হিন্দুদের ইসলাম গ্রহন করাকে বোঝাতে চেয়েছেন ।
মধ্যযুগে ক্রীশ্চানিটিকে না বলা মানে বোধহয় রেঁনেসা পরবর্তী সময়ে ইউরোপ যে দীর্ঘ শীতনিদ্রা ভেঙ্গে আবার জ্ঞান বিজ্ঞানে মনোনিবেশ করে সেটা বোঝাতে চেয়েছেন।
ভুলও হতে পারে। সেটা এখানে গুরূত্বপূর্ন নয়।
আপনার লেখা পড়ে আমার কাছে মনে হচ্ছে আপনি বলতে চাইছেন,”দেখো শুধু ইসলাম ই যে খারাপ তাই না, এরাও অনেক খারাপ”। (এ স্বাভাবটা জাকির নায়েকের ভেতর প্রকট ভাবেই আছে) ।
আল্লাচালাইনা ইস্লামকে না বলতে চাইছেন আর আপনি তাকে বোঝাতে চাইছেন যে সেটা হয়তো ভালো কিন্তু এগুলো নিয়েও বলতে হবে এবং মাথা ব্যাথা থাকতে হবে।
“পায়ের ব্যাথায় আপনার বুকে স্টেটোস্প্যাথ লাগিয়ে বসে থাকলে” আপনি বোধ হয় খুব খুশী হবেন কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে তাতে করে সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বস্তু শক্তির অপচয় হবে।
যোদ্ধাই তার নিজের অবস্থান থেকে লড়ছেন। আপনার যদি অন্যধর্ম গুলোর ব্যাপারে আপত্তি থাকে তবে ইন্টারনেট ঘাটুন। আল্লাচালাইনার চেয়েও অনেক ভালো ভাবে হিন্দু কিংবা ক্রীশ্চানিটিকে না বলা হচ্ছে সারা বিশ্ব জুড়ে। আগ্রহীরা খুজে পাবেন না সেটা কোনোভাবেই সম্ভব না।
আপনি যেখানে শেষ করেছেন তা নিয়ে বলতে চাই, প্রথমে আপনার অবস্থান পরিস্কার করুন। আপনি কী মানুষ নাকী মুস্লিম? কাদেরকে নিয়ে আপনার মাথাব্যাথা বেশী? মানুষ নাকী মুস্লিম মানুষ?
যদি মানুষ হন তবে মাঝে মাঝে মডারেট মুস্লিম নিয়ে লেখার ফাঁকে ফাঁকে আফ্রিকা নিয়েও লিখুন কষ্ট করে। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে আমার বুকে ব্যাথা হবে কিন্তু আফ্রিকা নিয়ে হবেনা সেটা তো উচিত না, নাকী বলেন?
আমাদের বোধ হয় প্রথমে মস্লিম থেকে মানুষ হওয়া দরকার সবার আগে। তার পর মানবতা নিয়ে গান গাওয়ার প্রয়োজন হলে গাইবো।
আমি আমার খুব প্রিয় একটি উক্তি দিয়ে শেষ করি,
Men is condemned to be FREE-Jean Paul Sartre
@এশার,
আপনার সাথে অনেক ক্ষেত্রেই সহমত পোষন করছি।
আসলে একজন ধার্মপ্রান মানুষের সাথে একজন নিধার্মীকের দৃষ্টিভংগিতে পার্থক্য থাকবেই। সম্প্রদায়ের বৃত্তে আবদ্ধ একজনের পক্ষে এই বৃত্তমুক্ত একজনের চিন্তার পার্থক্য থাকবেই।
আবার জাতীয়তার বৃত্তে আবদ্ধ কারো পক্ষে পুরোপুরি মানবিক হওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনা। যাদিও জাতীয়তাকে এখন কিছুটা নিরীহ মনে হয় কিন্তু ২য় বিশ্বযুদ্ধে এর নারকীয় তান্ডব আমরা দেখেছি।
এখন সম্প্রদায় এবং জাতিভুক্ত ব্যাক্তি কি সব সময় আবদ্ধই থাকেন নাকি মুক্ত ও হতে পারেন ? আমি চিন্তার মুক্তির কথাই বলছি। মানে একজন বাঙ্গালী, পাকিস্থানী বা ফরাসী নীজ নীজ পরিচয়কে অক্ষুন্ন রেখেই একাধারে মানবিক হয়ে উঠতে পারে কিনা ? আবার সাম্প্রদায়ভুক্ত কোন ব্যাক্তির পক্ষে নীজের সাম্প্রদায়িক পরিচয়কে অক্ষুন্নরেখে সেটা হতে পারে কিনা ? অর্থাৎ মানূষ হয়ে উঠার পক্ষে তার জাতি ও সাম্প্রদায়িক পরিচয় একটা অপরিহার্য বাঁধা কিনা ?
আমার মনে হয় পারেন, ইতিহাসে এর অসংখ্য উদাহরন আছে। মানবতার এযাবৎ কালের সচেয়ে বড় প্রকাশ আমরা যাদের মধ্যে দেখতে পাই যেমন গান্ধী, মাদার তেরেসা, ঈশ্বরচন্দ্র, রুমী, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল আরো অনেকের নাম বলা যাবে যাদের ক্ষেত্রে জাতি বা সাম্প্রদায়িক পরিচয় তাদের মধ্যে মানবিকতার বিকাশের ক্ষেত্রে কোন বাঁধা হয়ে উঠতে পারেনি। এগুলিকে আমরা যদি ব্যাতিক্রম মনে করি তবে মানবিকতার আদর্শ মাত্রার ব্যাপারে আমাদেরকে আগে একমত হতে হবে। কারন প্রত্যেকটি জাতি বা সম্প্রদায়ভুক্ত ব্যাক্তি তাদের সন্তানদের স্নেহ করে। কিছু পাগল ছাড়া বাকীরা এব্যাপারে একমত।
তারা নীজের দেশ, জাতি, ভাষা এসব ভালবাসে।
আসলে বেশীর ভাগ ধার্মিক ব্যাক্তি মনে করে নিধার্মিকরা পশু গোত্রের কারন তাদের কোন মূল্যবোধ নেই। এটা ঠিক না বরং নিধার্মিকরা বোঝেন যে মূল্যবোধের কোন স্থায়ী রূপ নেই। এটা জীবন সংগ্রামের ধরনের সাথে সাথে পাল্টায়। তবে নিধার্মিকদের এটা মনে করাও ভুল হবে যে তাদের দ্বারা অমানবিক কিছু করা সম্ভব না। সাম্প্রদায়িক ব্যাক্তিরা ক্ষেত্র বিশেষে অনেক অমানবিক কাজ করে ধর্মের নামে। অনেক নিধার্মিক যেটা করে মতবাদের নামে।
আমি আসলে বলার চেষ্টা করছি ধার্মীক বা নিধার্মীক হওয়াটা মানবতাবাদী হবার জন্য চূড়ান্ত কোন অপরিহার্যতা নয়। এই দুটি ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান থেকেই যেমন মানবিক আচরন করা সম্ভব আবার আমানবিক আচরনও করাও সম্ভব।
জাতি বা সম্প্রদায় এর কোন পরিচয়ই একটা মানূষকে পুরোপুরি ধারন বা প্রকাশ করতে পারে না। পারে না তার ফেলে আসা হাজার বছরের সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করতে। সুতরাং আব্দুর রহমান আবিদ একাধেরে একজন বাঙ্গালী,বংলাদেশী, মুসলিম,সুন্নি,পারিবারিক, সামাজিক শিক্ষার উত্তারাধিকারের পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষার দ্বন্দ্ব নিয়ে বহমান একটি সত্তা। এটা সবার জন্যই সত্য। এই দ্বন্দ্ব শুধু ব্যাক্তি জীবনের ব্যাপার না , প্রতিটি সমাজ, রাষ্ট্রে কম বা বেশী মাত্রায় বহমান। তাই মানূষের মধ্যে সম্ভাবনার বীজ সব সময়ই থেকে যায়।
যাদিও এটা খুব জনপ্রিয় উক্তি কিন্তু বাস্তব সম্মত না। মানূষকে যদি আগে ধর্মমুক্ত হয়ে মানবতাদের চর্চা করতে হয় তবে এই অর্ন্তবর্তিকালের দৈর্ঘ্য কত হবে কেউ বলতে পারে না। সে পর্যন্ত কি ধার্মিক ব্যাক্তিবর্গ তাদের সন্তানদের প্রতিপালন বন্ধ রাখবে ? দুস্থদের সেবা করবেনা ? কোথাও মানবিক বিপর্যয় হলে ত্রান পাঠাবেনা ?
@আতিক রাঢ়ী,
আপনার পুরো মন্তব্যের সাথেই কম্বেশী একমত্।
কিন্তু তারপরো আমি মনে করি বেনামধারী মানবতার চেয়ে নামধারী(ইসলাম) মানবতা অনেক বেশী ক্ষতিকর।
একটা সময় দেখেছি পাড়ার মসজিদে বছরের কোনো একটা সময়ে বিশাল অনুষ্ঠান হতো সৌদী আরব থেকে আসা দুম্বার মাংস দিয়ে।
আমি সহ আরো অনেকে সেসব অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে কিছু কথা শোনার বিনিময়ে। তারা কী বলতো আমি ভুলে গেছি কিন্তু আমার ধারনা বাংলাদেশে একটা বিশাল জনগোষ্ঠী আছে যাদের কাছে এ ধরনের অনুষ্ঠান হচ্ছে ইদের মতো। আমি অনেকের কথা জানি যারা নিয়মিত চিল্লায় যোগ দেয় নির্বিঘ্নে কিছুদিন ছুটি কাটানোর জন্য (কারন এসময় তাদেরকে কাজ করতে হয়না)।
এ ব্যাপারটা নিয়ে আমার কোনো অনুযোগ নেই কিন্তু সমস্যাটা হবে দুম্বার মাংস যখন এই মমত্ববোধের বিনিময়ে কিছু চেয়ে বসবে (যেটা বাংলাদেশে অহরহ হয়)।
ব্যাক্তিগত ভাবে আমি বোধহয় এই বিনিময় প্রত্যাশী মমত্ববোধের বিরুদ্ধেই দাড়াবো এবং বেহেশতপ্রাত্যাশী দানবীরের দান নিয়ে ভুলে যাওয়ার উপদেশই দেবো।
কারন কোনো না কোনো এক সময় এসব ঘটনা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে সমাজ এবং সভ্যতায়।
আর সন্তান প্রতিপালনের ক্ষেত্রে বলতে পারি, পৃথিবীতে বোধ হয় এমন কাউকে খুজে পাওয়া কষ্ট হবে যে নিজের প্রয়োজন না মিটিয়ে অন্যের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করে।
সবশেষে আমি মনে করি, কোনো মানুষ ভালো কিংবা খারাপ যাই করুক না কেনো তা পুরোটাই তার নিজের ব্যাপার।
কিন্তু কারো গায়ে যদি ইস্লামের লোগো লাগানো থাকে তবে বোধহয় বিশ্বজুড়ে বিশাল একটা দর্শক সংখ্যা বের হবে যাদের স্বাভাবিক ডিফেন্স মেকানিজম ঐ ব্যাপারটিতে স্কেপ্টিক হতে উতসাহ যোগাবে।
আগে ধর্মের সংজ্ঞাটা লিখে কাকে হাঁ বা না বলবো বলাই ভাল।
ধর্ম ভারতের অগ্রগতির অন্যতম অন্তরায়। এবং নানান ধর্মর উপস্থিতি, সেই অবস্থাকে আরো জটিল করেছে। সেই ক্ষেত্রে সব ধর্মর ওপরে ভাল রকমের সেন্সরশিপ না থাকলে ভারতের রাজনীতিতে মুশকিল আছে।
ধর্ম মানে ধৃ+অনট= যা ধারন করে। বাঁচতে গেলে প্রত্যেকেরই নিজস্ব কিছু দর্শন দরকার হয়-সেটাই তার ধর্ম। সেই ধর্মের উপাদান সে পরিবার, নিজের প্রতিষ্ঠানিক ধর্ম, অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ইত্যাদি থেকে শেখে। সুতরাং ধর্মকে না বলা, আর নিজেকে অস্বীকার করা একই কথা। আসল কথাটা হল প্রতিষ্ঠানিক ধর্মগুলো থেকে এই জীবন ধর্ম মানে জীবনে বেঁচে থাকার রসদ কিছু পাওয়া যাবে কি না।
আমি ছোটবেলা থেকেই ধর্ম আর বিজ্ঞান পাশাপাশি পড়েছি। এতে একটা ব্যাপার খুব পরিস্কার হয়েছে আমার কাছে। আসলে ” ডিসিসান” বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যে সব সময় একটা গাইডলাইনের দরকার হয়-কারন প্রতিটা মুহুর্তে আমরা বোধে অবোধে অসংখ্য সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।
সুতরাং প্রশ্নটা হল, গাইডলাইন হিসাবে ধর্ম, আরো ভালভাবে বললে প্রতিষ্ঠানিক ধর্ম কতটা উপযোগী?
আজ থেকে একশো বছর আগেও এই উপযোগিতা স্বীকার না করলে ভুল হত-কারন সেই সমাজের রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেস কম হত। এটা আমি আগে ব্যাখ্যা করেছিলাম।
কিন্ত বর্তমানে গাইডলাইন হিসাবে ধর্মের কেন দরকার?
সত্য কথা বলার জন্যে? ধুস যে বুদ্ধিমান দুদিন বাদেই বুঝে যাবে চরিত্রের এবং কথার ইন্ট্রিগিটি না থাকলে সফল হওয়া মুশকিল।
পরকীয়া না করার জন্যে?
জীবনের আসল উদ্দেশ্য বলে কিছু নেই-বিজ্ঞান থেকে একটাই জিনিস বেড়িয়ে আসে সন্তানের প্রতিপালনই আমাদের সর্ববৃহৎ জীবন ধর্ম। সুতরাং এমন কিছু করা উচিত না, যাতে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত নষ্ট হয়।
শুধু এইটুকু সিম্পল রুল মেনে চললেই বাকী আর কোন আইন লাগে না।
পরোপকার করার জন্যে?
আলট্রুইজম আমাদের জীনেই আছে। কারন ওটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ন সারভাইভাল টেকনিক। সব থেকে বড় কথা আমার ছেলে মেয়েরা ত একা একা বাঁচতে পারবে না-তাদের সুস্থ নিরাপদ সমাজ চাই। সুতরাং সেই নিরাপদ সমাজের লক্ষ্যে আমাদের মতন পিতা মাতাদের কাজ করে যেতেই হবে। এটাত কমন সেন্স-আমি আগে বলেছিলাম/
তাহলে ধর্ম কেন? কিসের জন্যে? যুক্তি চাই।
হিন্দু ধর্ম কোন ধর্ম না=ওটা ধর্মের মিউজিয়াম। আমি নিজে যে মতাদর্শ প্রচার করি ব্লগে, সেটা যদি আশ্রম খুলে করতাম ভারতে, আমার দর্শনটাও হিন্দু ধর্মে স্থান পেত। এটাই হিন্দুধর্মের শক্তি যে তা নিজেকে সব সময় বদলে নেয়। জাতিভেদ প্রথা ভারতে আছে এখনো কিন্ত সরকারি বা বেসরকারি কোন অফিসে তা মানা ক্রিমিনাল অপরাধ বলে গণ্য হয়। জনগণের মধ্যে বেঁচে থাকলেও সরকারি অবস্থান কিন্ত হিন্দু ধর্মের সব বাজে প্রথার খুব পরিস্কার ভাবে বিরুদ্ধে। এই অবস্থানটাই বিজেপি বদলাবার চেষ্টা করেছে। পারে নি। তবে তাদের চেষ্টা জারি আছে।
ইসলামের আগমন-১৮৫০ সাল পর্যন্ত হিন্দু ধর্ম সব থেকে বাজে অবস্থার মধ্যে দিয়ে গেছে। কারন ইসলামের সংস্পর্ষ থেকে হিন্দু ধর্মে কিছুই প্রায় সংশ্লেষ হয় নি। কারন সমৃদ্ধ ভারতীয় দর্শনের সামনে আরব থেকে আগত ইসলামিক দর্শন ছিল বেশ বালখিল্য। শিখ ধর্ম একমাত্র সংশ্লেষন। কিন্ত ইংরেজ যখন এল, তখন সাথে করে শুধু খৃষ্ঠান ধর্ম আসে নি-উন্নত তর পাশ্চাত্য দর্শন ও এল। সেই পাশ্চাত্য দর্শনকে, নিজের বলে আত্মসাত করে নতুন হিন্দু ধর্মের পথা চলা, যার অগ্রদূত অবশ্যই বিবেকানন্দ।
একটা আশ্চর্য্য জিনিস খেয়াল করতে হবে। ইসলাম এবং খ্রীষ্ঠানরা যেসব দেশ জিতেছে, সর্বত্র সেখানে লোকেদের হয় মুসলমান বা খ্রীষ্ঠান বানিয়েছে। ভারত দুক্ষেত্রেই ব্যাতিক্রম। কেন এমন হল? এর কারন অবশ্যই সমৃদ্ধ দর্শন। আল বিরুনী থেকে ম্যাক্সমুলার, যারাই ভারতীয় দর্শনের চর্চা করেছেন-তারা স্বীকার করেছেন ভারতীয় দর্শন সমৃদ্ধ। ফলে সমকালীন মুসলিম এবং খ্রীষ্ঠান শাসকরা ধর্ম সংস্কৃতির দিক দিয়ে ভারতীয় দের ঘাঁটাতে চান নি।
কিন্ত এসবই অতীত। আজকের বিজ্ঞানের যুগে কিবা ইসলাম কি বা সমৃদ্ধ ভারতীয় দর্শন-সবই আউটডেটেড। কারন আমি নিজে বাজি নিয়ে বলতে পারি-যেকোন জীবন দর্শনের উত্তর বিজ্ঞানেই সব থেকে ভাল পাওয়া যায়। কেন পাওয়া ্যায় , টাও পাঁচ বছর আগে মুক্তমনাতেই লিখেছি।
তাই মানব সভ্যতা থেকে যাবতীয় ধর্মগ্রন্থ গুলোকে বিদায় করলে, সভ্যতার আশু মঙ্গল।
@বিপ্লব পাল,
আপনি কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং বিবেকের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন? তাহলে সেন্সরশিপ কিভাবে সমর্থণ করেন? ধর্মকে যদি পরাজিত করতে চান, সেটাত বৌদ্ধিক এবং নৈতিক প্রতিরোধের মাধ্যমেই করা যায়, কোন নিপিড়ণমূলক ব্যবস্থারত দরকার নেই। আপনার আগের লেখাগুলো পড়ে মনে হয়েছে যে আপনি উন্মুক্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিশ্বাস করেন; তার সাথে সেন্সরশিপ সমর্থন করাটা ঠিক মিলাতে পারছিনা।
@মোঃ হারুন উজ জামান,
সতীদাহ প্রথা, জাতিভেদ ত আইন করেই বন্ধ করতে হয়েছে। পরম স্বাধীনতা বলতে কিছু হয় না-তাহলে রাষ্ট্রের আইন বলেই কিছু থাকবে না।
@বিপ্লব পাল,
আগের পোস্টে আপনি “সেন্সরশিপ” শব্দটা ব্যবহার করেছেন। সেজন্য আপনার কথাটা ভুল বুঝেছি। সেন্সরশিপ শব্দটা সাধারনতঃ রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক কিংবা শৈল্পিক *প্রকাশের*ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ব্যবহার করা হয়। যেমন কোন বই, খবরের কাগজ, চলচ্চিত্র কিংবা সংগীত নিষিদ্ধ করে দেওয়াটা হল সেন্সরশিপের উদাহরণ। রাষ্ট্রের সব আইন কানুনকে সেন্সরশিপ বলা হয়না। সতীদাহের উপর নিষেধাজ্ঞাটা সেন্সরশিপ নয়।
এটা সম্বন্ধে কোন দ্বিমত নেই। একটা রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল পরিকাঠামোই হল এর সমাজ নিয়ন্ত্রক আইন কানুন। তবে সব গণতান্ত্রিক দেশেই মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রায় নিরন্কুশ; অর্থাৎ সেন্সরশিপ অত্যন্ত কম। সেই তুলনায় অন্যান্য কাজের উপর বিধিনিষেধ অনেক বেশী।
@বিপ্লব পাল,
বিপ্লব দা , আমার মনে হয় চীন ও ব্যাতিক্রম।
@আতিক রাঢ়ী, হ্যা, কিন্ত চীনেও ত সেই একই ব্যাপার -ওখানেও সেই বৌদ্ধ দর্শন আর কনফুসিয়াসের দর্শন জনমানসে ছিল।