আল্লাচালাইনা’র ‘কেন ইসলামকে না বলবো’ খুব আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। এমন ক্ষুরধার লেখনী, আবেগের এমন শৈল্পিক প্রকাশ, এর আগে খুব একটা চোখে পড়েনি। মুক্তমনায় আমিও তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। যাহোক ঈশ্বর, ধর্ম, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে ওনার ক্ষোভকে উনি যথেষ্ট আবেগঘন ভাষাতে তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছেন। তবে আবেগের ঘনঘটায় সামগ্রিকভাবে যুক্তির কিছুটা অনুপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। ওনার লেখার কিছু কিছু বিষয় নিয়ে ওনার লেখাতেই হয়ত মন্তব্য করা যেত। কিন্তু মন্তব্যের কলেবর অনেকটা বড় হয়ে যাবে বলে আলাদা করে এই লেখাটা লেখা।

আমি যদি বলি “আসুন আমরা চিৎকার করে ঘুষকে ‘না’ বলি”, তবে এর মাধ্যমে ঘুষের বিরুদ্ধে তা হবে আমার একধরনের symbolic (প্রতীকী) প্রতিবাদ। মানুষ বুঝবে আমার অবস্থান সামগ্রিকভাবে ঘুষের বিরুদ্ধে এবং নীতির মানদন্ডে আমাকে মূল্যায়ন করবে একজন যোদ্ধা হিসেবে। সমস্যা হলো, ধর্ম ব্যাপারটা এতটাই inclusive (অন্তর্ভূক্তকারী) একটা ব্যাপার যে, মানুষ স্বভাবতই এখানে এই ‘না’ টার কোনো না কোনো deterministic (নিরূপনকারী) একটা অর্থ খোঁজার চেষ্টা করবে। আল্লাচালাইনা ধর্মকে ‘না’ বলে দেয়া বলতে আসলে ঠিক কি বুঝিয়েছেন তা স্বভাবতই আমার কাছে ততটা পরিষ্কার নয়। অবশ্য, এটা আমার বুঝার অক্ষমতাও হতে পারে। ধরে নিই, উনি মানুষের ‘ধর্মবিশ্বাস’কে ‘না’ বলা বুঝিয়েছেন এবং বর্তমান যুগের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামী ধর্মবিশ্বাসকে ‘না’ বলেছেন। কারন হিসেবে মুসলিম সন্ত্রাসবাদের কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি উনি কোর’আনের অমানবিক কিছু আয়াতের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন এবং একইসাথে ইসলামের নবীর অমানবিক কিছু কিছু কার্যকলাপের বিষয়েও উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি ঈশ্বরের অস্তিত্বে ওনার অবিশ্বাস কেন, সেটারও কিছু কিছু বিবরন দিয়েছেন।

পৃথিবীর রক্তাক্ত ইতিহাসের বড় একটা অংশের পেছনে রয়েছে ধর্মের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পৃক্ততা এবং সামগ্রিকভাবে ধর্মের বিরুদ্ধে কারো প্রতীকী ‘না’ অবস্থানও একধরনের প্রতিবাদ এবং মানবতার নিরিখে প্রতিবাদী মানুষটা একজন যোদ্ধা। যেহেতু ধর্মবিশ্বাসের পেছনে রয়েছেন একজন অদৃশ্য ঈশ্বর (আরও একধাপ এগিয়ে হয়ত বলা যায় ‘কল্পিত’ ঈশ্বর), ওনার যুদ্ধের একটা অংশ সেই অদেখা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যা ওনার প্রবন্ধটাতে উনি সুস্পষ্টভাবেই তুলে ধরেছেন। ওনার যুদ্ধের এই অংশটা নিয়ে আসলে বিতর্কে গিয়ে লাভ নেই কেননা এটা বিশ্বাস অবিশ্বাসের ব্যাপার এবং ঈশ্বর মানুষটা আমাদের সকলেরই ধরাছোঁয়ার বাইরে।

ওনার যুদ্ধের দ্বিতীয় অংশটা হলো ধর্ম তথা ধর্মবিশ্বাসের বিরুদ্ধে যা ধর্মগ্রন্থ, ধর্মীয় মহাপুরুষ, ধর্মপালন, ধর্মের প্রয়োগ, ইত্যাদি সবগুলো বিষয়কেই সামগ্রিকভাবে অন্তর্ভূক্ত করে। এই অংশটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে কেননা ব্যাপারটা পার্থিব (এগুলোর উপস্থিতি, চর্চা ও প্রয়োগের ক্ষেত্র পৃথিবী) এবং সামগ্রিকভাবে দেখলে ধরাছোঁয়ার মধ্যে। আমি কালের ওপরে উঠে কেবল ইসলাম ধর্মের বিরোধীতাকে নয় বরং সনাতনি বা প্রাতিষ্ঠানিক সবগুলো ধর্মের বিরুদ্ধে ওনার সামগ্রিক ‘না’ অবস্থানকে (যা উনি নিজেও ওনার লেখায় বা প্রতিমন্তব্যে দাবী করেছেন) যুক্তির আলোয় দেখার চেষ্টা করবো।

উনি বলেছেন, হিন্দু ধর্মকে মানবতার প্রয়োজনে একসময় আমরা ‘না’ বলেছি এবং এখন ইসলামকে ‘না’ বলার সময় এসেছে। এই স্টেট্‌মেন্টটা থেকে খুব সহজেই কিন্তু এই অনুসিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় যে, ইতিহাসের কোনো এক সময়ে হিন্দু ধর্মকে ‘না’ বলে আমরা অনন্তকালের সফলতা পেয়েছি এবং হিন্দু ধর্ম ‘না’ হয়ে গেছে। বাস্তবতা কি আমাদেরকে তা বলে? হ্যাঁ, হিন্দু ধর্ম থেকে অমানবিক সতীদাহ প্রথাকে তুলে দেয়া হয়েছে। বর্ণবাদকেও হয়ত নামিয়ে আনা হয়েছে সহনীয় পর্যায়ে। কিন্তু ভারতের হিন্দু মৌলবাদী রাজনৈতিক দল, বিজেপি’র বিপুল ভোটে গত নির্বাচনের বিজয়কে বিবেচনায় আনলে যে কেউই সহজেই এই অনুসিদ্ধান্তে পৌঁছুতে পারবেন যে, হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসের প্রগাঢ়তা সাম্প্রতিককালে বরং বেড়েছে। সারাজীবন যিনি মানুষের গান গেয়েছেন সেই ভূপেন হাজারিকা’র বিজেপিতে যোগদান (হোক তা নির্বাচনে পাশ করার জন্যে), ভারতের গোরাখপুরের চরমপন্থী ‘হিন্দু ইউভা বাহিনী’র কর্মী একদল যুবকের আমেরিকার এ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে বসে রিচ্যুয়াল পালনের মহড়া, সর্বোপরি ভারতের রাজনীতিতে বিজেপি’র (যা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের হিন্দু ভার্শন) সাম্প্রতিক উত্থান- এ সবই কিন্তু একটা বিশেষ সিগ্‌নাল দেয় যে, ‘something is going wrong somewhere’ (কোথাও একটা সমস্যা হয়ে গেছে)। হিন্দু মৌলবাদের দৈত্যটা আবার যেন মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে! তবে কি হিন্দু ধর্মকে পূনর্বার ‘না’ বলার সময় এসেছে? তাহলে ঠিক কাকে বা কোন্‌ বিষয়টাকে আমরা এখন ‘না’ বলবো হিন্দু ধর্মের? হিন্দু ধর্মবিশ্বাসকে? রামায়ন, বেদ কিম্বা গীতাকে? দেব-দেবীকে? নাকি, হিন্দু ধর্মপালনের কোনো রীতি-নীতিকে? জটিলতার এখানেই শেষ নয়। হিন্দু ধর্মকে শত বা হাজার বছর আগে যে ‘না’টা আমরা বলেছি সেই একই ‘না’ কি আজও বলবো, নাকি ভিন্ন কোনো ‘না’ বলবো?

উনি এও বলেছেন, মধ্যযুগে মানবতার প্রয়োজনে খৃষ্টধর্মকে একসময় আমরা যেভাবে ‘না’ বলেছি, ইসলামকে সেভাবেই আজ ‘না’ বলার সময় এসেছে। একইভাবে, এই স্টেট্‌মেন্টটা থেকেও একই অনুসিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় যে, খৃষ্ট ধর্মকে ‘না’ বলে আমরা অনন্তকালের বিজয় পেয়েছি। বাস্তবতা কি তাই? হ্যাঁ, চার্চের শাষনকে eliminate (দূরীভূত) করা গেছে। রাষ্ট্রের শাষন ব্যবস্থাকে চার্চের বা বাইবেলের রাহুমুক্ত করা গেছে। আমার ঠিক জানা নেই মধ্যযুগে খৃষ্টধর্মকে আমরা কিভাবে ‘না’ বলেছিলাম। তাকি খৃষ্টধর্মকে? বাইবেলকে? মহাপুরুষ জেসাসকে? নাকি চার্চের শাষনকে? খৃষ্ট ধর্মবিশ্বাস, বাইবেল বা মহাপুরুষ জেসাসকে ‘না’ বলে থাকলে তাতে আমরা খুব একটা সফল হয়নি কেননা সংখ্যার দিক দিয়ে খৃষ্ট ধর্মাবলম্বীরা আজো পৃথিবীর সংখ্যাধিক্য ধর্ম অনুসারী। পৃথিবীতে চার্চের সংখ্যা একদিকে যেমন এককভাবে মসজিদ বা মন্দিরের সংখ্যার চেয়ে সম্ভবত বেশী, তেমনি করে চার্চগামী মানুষের সংখ্যাও এককভাবে মসজিদ বা মন্দিরগামী মানুষের সংখ্যার চেয়ে সম্ভবত বেশী। পরিসংখ্যান মতে, সমসাময়িক ধর্মগ্রন্থগুলোর মধ্যে সর্বাধিক প্রকাশিত ধর্মগ্রন্থ হলো বাইবেল। আর যদি চার্চের শাষনকে ‘না’ বলে থাকি তবে কেন তা বলেছি, তা বোধগম্য এবং আমাদের বিজয় পাওয়ার কারনটাও ব্যাখ্যাযোগ্য। আর চার্চের শাষনকে ‘না’ বলা দলটার মাঝে খৃষ্ট ধর্মাবলম্বীদেরই যে সুবিশাল একটা অংশ ছিল যাদের প্রয়োজন পড়েনি ঈশ্বরবিশ্বাস বা বাইবেলকে ‘না’ বলার, তা প্রমানের জন্যে বোধহয় পরিসংখ্যান বা তথ্য-সূত্রের প্রয়োজন নেই। ঠিক যেমনি করে বর্তমান বিশ্বের কোনায় কোনায় ‘শরিয়া আইন’ ও তথাকথিত ‘ইসলামী শাষন’-এর বিরুদ্ধে লড়ছেন অসংখ্য মুসলমান। হ্যাঁ, তারা হয়ত এখনও ততটা সুসংহত নয়, তথ্যের সার্বিক নিয়ন্ত্রনকারী পশ্চিমা মিডিয়াতে এখনও হয়ত তাদের সম্বিলিত voice (কন্ঠ) তৈরী হয়নি কিম্বা তাদের বিক্ষিপ্ত বিজয়ের কাহিনী বিশ্ববাসী এখনও হয়ত জানতে শুরু করেনি। তাছাড়া পজিটিভ শক্তিকে রাষ্ট্রের আইন-কানুন মেনে চলতে হয়, পাল্টা বোমা মেরে সরব প্রতিবাদ করা তাদের পক্ষে তো আর সম্ভব নয়। নেগেটিভ শক্তির বহির্প্রকাশ সবসময়ই সহিংস, তাৎক্ষনিক ও সরব; প্রচারটা সেকারনেই ব্যাপক। পক্ষান্তরে পজিটিভ শক্তির বহির্প্রকাশ সাধারনভাবে অহিংস, ধীরলয়ে, তুলনামূলক নীরব, কিন্তু সুসংহত; প্রচারটা সেকারনেই অধিকাংশ সময় নোটিসবিহীন। পজিটিভ শক্তিকে যুদ্ধ করতে হয় আইনের মধ্যে থেকে (প্রচলিত আইন দিয়ে) এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলে। আর ইতিহাস সাক্ষী, অহিংস বা non-aggressive (অনাগ্রাসী) হলেও চুড়ান্ত বিজয় সবসময় পজিটিভ শক্তির পক্ষেই হয়। বাংলাদেশের ৬৪ টা জেলায় একসাথে বোমা হামলা চালিয়ে সরব উপস্থিতির জানান দিয়েছিল যে চরমপন্থী ইসলামী দল জেএমবি, সেই দলের শীর্ষস্থানীয় দুই নেতা, জেএমবি’র সকল সদস্য ও সমর্থকদের তথাকথিত ‘ইসলামী শাষন’-এর স্বপ্নদ্রষ্টা, শায়খঃ আব্দুর রহমান ও বাংলা ভাইকে বাংলার মাটিতেই বিচারের মাধ্যমে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বিজয়ী হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষ। কেউ যদি ধর্মীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশীদের এই প্রতিবাদ ও বিজয়কে যথেষ্ট সরব মনে না করেন, তবে তা অনেকাংশেই তার বুঝার অক্ষমতা।

আবার ফিরে আসি খৃষ্টধর্মে। খৃষ্ট ধর্মাবলম্বীরা পৃথিবীর সংখ্যাগুরু নাকি সংখ্যালঘু ধর্ম অনুসারী, পৃথিবীতে চার্চের সংখ্যা মসজিদ বা মন্দিরের সংখ্যার চেয়ে কম নাকি বেশী, তাতে কার্‌ কি আসে যায়? ক’জন খৃষ্ট ধর্মাবলম্বী চার্চে গেল আর ক’জন গেলনা, তা নিয়েই বা কার্‌ মাথাব্যথা? কিন্তু মাথাব্যথা সেটা যখন দেখা যায়, আমেরিকার প্রখ্যাত ও leading (অগ্রগামী) ক্যাথোলিক প্রিষ্ট, প্যাট রবার্টসন (যিনি Christian Broadcasting Network, CBN-এর স্বতাধিকারী যেটা প্রায় ৭১ টা ভাষায় ১৮০ টার ওপর দেশে তার evangelical message প্রচার করে, যার আমেরিকান evangelical ভক্তের সংখ্যা ৪০ থেকে ৬০ মিলিয়নের মধ্যে এবং যিনি আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, জর্জ বুশের American Religious Right-এর অন্যতম প্রধান মৈত্রী) হাইতির সাম্প্রতিককালের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সেটাকে ‘ঈশ্বরের রোষ’ হিসেবে অভিহিত করেন। কিম্বা তিনি যখন ভেনিজুয়েলার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজকে assassinate (গুপ্তহত্যা) করার প্রস্তাব দেন। ইসরায়েলের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, এরিয়েল শ্যারোন কমাতে (coma) চলে গেলে সেই তিনিই (প্যাট রবার্টসন) যখন সেটাকে বলেন ‘ঈশ্বরের রোষ’ এই যুক্তিতে যে, গাজা ও ওয়েষ্ট ব্যাংক থেকে ইহুদীদের কিছু কিছু আবাস (স্থাপনা) উচ্ছেদ করে ফিলিস্তিনী মুসলমানদের প্রতি অনুগ্রহ দেখানোয় শ্যারোন প্রকারান্তরে ইসরায়েলের পবিত্রভূমিকে অপমান করে ঈশ্বরকে রাগান্বিত করেছেন। মাথাব্যথা সেটা যখন এহেন রেডিক্যাল ও চরমপন্থী প্যাট রবার্টসনের স্থাপিত CBN University’র (যার বর্তমান নাম Regent University) মত ‘লো রেটিং’-এর একটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা ১৫০ জনেরও বেশী গ্রাজুয়েটকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বুশ তার এ্যাডমিনিষ্ট্রেশনে নিয়োগ দেন। মাথাব্যথা সেটা যখন এহেন চরমপন্থী একজন ধর্মগুরুর টাকায় ক্যাম্পেইন চালিয়ে বব্‌ ম্যাক্‌ডোনেল-এর মত চরম কন্‌জার্‌ভেটিভ একজন রিপাবলিকান (যিনি নিজেও CBN University থেকে পাশ করা এবং ডিগ্রী প্রোগ্রামের থিসিসে কর্মজীবী মহিলাদেরকে ‘সমাজের জন্যে ক্ষতিকর’ বলে উল্লেখ করেছিলেন যিনি) জনগণের ভোটে ভার্জিনিয়ার গভর্ণর পদে নির্বাচিত হন। মাথাব্যথা সেটা যখন ইসরায়েলী সৈন্যরা নিরীহ ফিলিস্তিনী নারী ও শিশুদের মিসাইলের আঘাতে হত্যা করলে কিম্বা বোমা মেরে গাজা উপত্যখার কোনো হাসপাতাল উড়িয়ে দিলে আমেরিকার কেবল্‌ নিউজের ওয়েবসাইটগুলোতে সে খবর পড়ে শত শত আমেরিকান নারকীয় উল্লাসপূর্ণ কমেন্ট করেন কমেন্ট বিভাগে এই বলে যে, গাজা উপত্যখার অনুকরনে পৃথিবীর সমস্ত মুসলমানদেরকে হত্যা করা হোক, প্রতিটা পশ্চিমা দেশ থেকে মুসলমানদেরকে লাথী দিয়ে বের করে দেয়া হোক, কিম্বা গোটা পৃথিবীর তাবৎ মুসলমানকে ক্রিশ্চিয়ানিটি, জুডাইজম বা অন্য ধর্মে দীক্ষিত করা হোক। এ সবই কিন্তু একটা বিশেষ সিগ্‌নাল দেয় যে, ‘something is going wrong somewhere’ (কোথাও একটা উল্টোপাল্টা হয়ে যাচ্ছে)। খৃষ্টধর্মীয় মৌলবাদের দৈত্যটা আবার যেন মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে! তবে কি খৃষ্টধর্মকে পুনর্বার ‘না’ বলার সময় এসে গেছে আমাদের? কিন্তু এখনতো আর মধ্যযুগীয় চার্চের শাষন নেই। কিম্বা নেই মধ্যযুগের মত ক্ষমতার প্রতিযোগিতা চার্চের সাথে সম্রাটের। তাহলে ঠিক কাকে বা কোন্‌ বিষয়টাকে আমরা এখন ‘না’ বলবো খৃষ্টধর্মের?

উল্লেখ্য, আমরা যারা কেউ কেউ হাততালি দিয়ে সমর্থন দিচ্ছি মুসলমানদের বিরুদ্ধে খৃষ্টান, জিউ বা হিন্দুদের এহেন নারকীয় উল্লাস ও বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাবকে এই যুক্তিতে যে, ‘every action has a reaction’ (প্রতিটা ক্রিয়ারই একটা প্রতিক্রিয়া আছে), তারা নিজেরা বোধহয় এটা ভুলে যাচ্ছি যে, আমাদের এহেন action-এরও কিন্তু কোথাও না কোথাও একটা reaction আছে। আফটার অল্‌ (সর্বোপরি), শত্রুর শত্রু কিন্ত সবসময় বন্ধু নয়। একটা দলের মৌলবাদী শক্তির উত্থান বা সন্ত্রাসকে দমন করার পথ্য হিসেবে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা আরেক দলের মৌলবাদী শক্তিকে যদি উস্কানী আর ইন্ধন দিই আমরা (যা বোধহয় প্রকারান্তরে একসময়ের ‘না’ বলা কোনো কোনো ধর্মকে নতুন করে আবার ‘হ্যাঁ’ বলার সমতূল্য), perhaps we are standing on the wrong side of the history (আমরা সম্ভবত ইতিহাসের ভুল দিকে দাঁড়িয়ে আছি)। কেননা সাপ যদি একবার গর্ত থেকে বের হয়ে এসে ফণা তোলে, তখন তার পরিচয় কেবল একটাই তা হলো ‘সাপ’- না বন্ধু, না শত্রু। সামনে যাকে পাবে, তাকেই দংশন করবে।

সবশেষে আসুন, ভারতের সেক্যুলার নীতিমালার কংগ্রেস পার্টির একজন নেতার কথা কল্পনা করি, যিনি হিন্দু মৌলবাদের সাম্প্রতিক উত্থানের বিরুদ্ধে লড়ছেন। যিনি লড়ছেন হিন্দু মৌলবাদী রাজনৈতিক দল, বিজেপি’র বিরুদ্ধে তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করার জন্যে। লড়ছেন গুজরাটের মুসলিম নিধনের বিরুদ্ধে। লড়ছেন মুসলিমদের বাবরী মসজিদ সুরক্ষার জন্যে। সংসদে আইন পাশ করার জন্যে লড়ছেন যেন নিম্নবর্ণের হিন্দু, পাহাড়ি উপজাতি এবং মুসলমানদের জন্যে সরকারি চাকরিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কোটা চালু করা হয়। সংসদে আইন পাশ করার জন্যে লড়ছেন যেন সংখ্যালঘু মুসলমানদেরকে ভারতীয় পুলিশবাহিনী ও সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেয়া হয়। লড়ছেন শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার জন্যে যেন বাচ্চাদের স্কুলগুলোতে এমন পাঠ্যবিষয়কে অন্তর্ভূক্ত করা হয় যেখানে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়ীকতার বিরুদ্ধে বাচ্চাদেরকে শিশুবেলা থেকেই শিক্ষা দেয়া হবে যেন বড় হয়ে তারা ভিন্ন বর্ণের এবং ভিন্ন ধর্মের মানুষের সাথে সহনশীল ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করতে শেখে। মন্দিরের হিন্দু পুরোহিতদের জন্যে সরকারি উদ্যোগে ট্রেইনিং-এর ব্যবস্থা করার পক্ষে লড়ছেন যেখানে পুরোহিতদেরকে ধর্মীয় সহনশীলতার বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলা হবে যেন মন্দিরগামী সমস্ত মানুষদেরকে তারা ধর্মীয় সহনশীলতাকে শিক্ষা দিতে পারেন। পাশাপাশি, হিন্দু ও মুসলিম নেতৃত্বকে একই প্ল্যাট্‌ফর্মে ডেকে এনে মুখোমুখি বসার সুযোগ করে দিচ্ছেন যেন তারা পারষ্পরিক পার্থক্যকে উপলব্ধি করে এবং তা মেনে নিয়ে দূরত্বকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্যে সচেষ্ট হয় যেন এর মাধ্যমে পারষ্পরিক সহিংসতাকে পরিত্যাগ করা সম্ভব হয়।

আমি সামান্যও কেয়ার করিনা তিনি যদি বাড়ী থেকে বের হওয়ার আগে পুজার ঘরে ঢুকে ভগবানের মূর্তির সামনে ঝুলানো ঘন্টাটা ধরে তাতে মৃদু টুংটাং আওয়াজ তুলে থাকেন। আমি সামান্যও কেয়ার করিনা তিনি যদি ঘর থেকে বের হওয়ার আগে স্ত্রীর সামনে মুখ নীচু করে ধূপের ধোঁয়া তার চোখে-মুখে লাগাতে দেন স্ত্রীকে। আমি সামান্যও কেয়ার করিনা তিনি যদি ঘর থেকে বের হওয়ার আগে স্ত্রীর ভালবেসে দেয়া লাল তীলক কপালে এঁকে দিতে দেন প্রশ্রয়ের হাসি হেসে এবং দিনভর সাবধানে ও সযত্নে মুখখানা ধুয়ে নেন যেন তীলকখানা মুছে না যায়। তার যুদ্ধ হয়ত ভারতের আশি কোটি হিন্দুর হৃদয় থেকে ভগবান বিশ্বাসকে উচ্ছেদ করার জন্যে নয়। তার যুদ্ধ হয়ত আশি কোটি ঘরকে রামায়ন, বেদ কিম্বা গীতাবিহীন করার জন্যে নয়। তার যুদ্ধ হয়ত আশি কোটি ঘরকে গনেশের মূর্তিবিহীন করার জন্যে নয়। কিন্তু মানবতার নিরিখে তিনি একজন যোদ্ধা এবং একজন শক্তিশালী যোদ্ধা। কেননা তার enemy line (শত্রুরেখা) অনেক ছোট ও well defined (সুস্পষ্টভাবে সংগায়িত), তার লক্ষ্য ও কর্মপদ্ধতি সুনির্দিষ্ট এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে ও ধর্ম নিরপেক্ষতার পক্ষে তার যুদ্ধে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশী।

আমার নিজস্ব সীমাবদ্ধতার জন্যে আমি যদি তাকে ‘যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নাও পারি, তবুও একসময়ের অমানবিক সতীদাহ প্রথার প্রচলনকারী, মনুষ্যত্ববিহীন বর্ণবাদের প্রচলনকারী সনাতনি হিন্দুধর্মের বর্তমান কালের জারজ সন্তান মডারেট হিন্দু ধর্মের কাচ্চি-বিরানীখোর একজন মডারেট হিন্দু বলে তাকে অপমান করার ধৃষ্টতা আমি অন্তত দেখাবো না।

লেখাটা শেষ করবো আমার খুব পছন্দের বিখ্যাত একটা ‘প্রেস রিলিজ’এর উল্লেখ করে। নাইন-ইলেভেন-এর দু’মাস পর এবং আফগানস্থান আক্রমনের প্রায় মাস তিন/চার আগে প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ প্যাট রবার্টসনকে Afghan Children’s Fund-এর পরিচালকের পদে নিয়োগপ্রদানকালে নিম্নোক্ত প্রেস রিলিজ দিয়েছিলেন হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে।

PRESIDENT APPOINTS DR. PAT ROBERTSON TO MANAGE AFGHAN CHILDREN’S FUND
Press Briefing by the President

White House, December 9, 2001

THE PRESIDENT: Good afternoon. As you know, today is Sunday- the Lord’s day, a day of rest, and a day of prayer- not to mention the only Federal holiday that comes 52 times a year. And so it seems only appropriate that I break with my usual Sunday routine of six straight hours of televised sports to make a very important announcement to the good people of this country.

Last week, one of this nation’s great moral pillars, Dr. Pat Robertson, announced his retirement from the Christian Coalition of America. This mighty institution, which under Dr. Robertson’s stern guidance has so successfully protected America from all manner of smut-peddlers, Jesus-killers, lesbos, fetus-murderers, faggots, and Darwinists, is of course the same one that was so gloriously responsible for installing both my father and myself in the Executive Branch. For all these things, we are eternally grateful- which is why today, it is my pleasure to return the favor by appointing Dr. Robertson to the highly compensated position of General Manager of the Afghan Children’s Fund.

In his new position, Dr. Robertson will have absolute authority to apply the full balance of the fund to work to bring Christian relief to the Godless, unwashed pre-adult hordes of Afghanistan. With the nearly $35 million that has been raised to date, the fund will make it possible for Dr. Robertson to not only bathe Afghanistan’s children in the bright light of Christ’s love, but to also equip every last boy and girl with their very own keepsake Gideon’s bible- to be embossed with the special commemorative message, “Spiritual Salvation From the Taxpayers of the United States of America.”

I regret that Dr. Robertson can not be here with us this morning. But he is busy, tirelessly crusading to do his part to alleviate yet another American challenge- the energy crunch. He has, however, sent a telegram, in which he states, “Dear Mr. President. I am both honored and humbled to accept this immensely lucrative appointment, and I want to assure the American people that during my tenure, the Afghan Children’s Fund will not rest until the scourge of Islam has been sandblasted off the souls of each and every Afghan child, or until the depleted fund can no longer contribute to my many mortgages, which ever comes first.” Beautiful sentiments from a beautiful man. I’m sure he’ll do a bang-up job.

God bless America, and God bless Pat Robertson.

[বঙ্গানুবাদঃ (জর্জ বুশের বক্তব্য)- শুভ বিকাল। আমরা সবাই জানি আজ রোববার- যা ঈশ্বরের দিন, আরামের দিন, প্রার্থনার দিন এবং বলার অপেক্ষা রাখেনা যা একমাত্র সরাকারি ছুটির দিন যা বছরে ৫২ বার আসে। কাজেই টিভির পর্দায় টানা ছয় ঘন্টার খেলা দেখার নিয়ম ভাঙ্গার উপযুক্ত কারন হলো, দেশবাসীকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ঘোষনার কথা জানানো।

গত সপ্তায় জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ নৈতিক স্তম্ভ, ড. প্যাট রবার্টসন Christian Coalition of America থেকে অবসর নিয়েছেন। এই শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানটা যা ড. রবার্টসনের দৃঢ হাতের পরিচালনায় আমেরিকাকে সফলভাবে রক্ষা করেছে সব ধরনের শরীরী-ব্যবসায়ীদের, যীশু-হত্যাকারীদের, মেয়ে-সমকামীদের, ভ্রূণ-হত্যাকারীদের, ছেলে-সমকামীদের, এবং ডারউইনবাদীদের কুচক্র থেকে এবং সেই একই প্রতিষ্ঠান যা মহামান্বিতভাবে স্থাপন করেছে আমার বাবা ও আমাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমায়। এ সব কিছুর জন্যে আমরা চিরকালের জন্যে বাধীত এবং এটা আমার জন্যে অত্যন্ত সন্মানজনক Afghan Children’s Fund-এর অত্যন্ত সুবিধাভোগী, জেনারেল ম্যানেজার পদটাতে ড. রবার্টসনকে নিয়োগ দেয়া।

তার নতুন পদে ড. রবার্টসনের চুড়ান্ত ক্ষমতা থাকবে ফান্ডের পুরো অর্থ ব্যবহার করে আফগানস্থানের ঈশ্বরবিহীন, অপবিত্র, অপ্রাপ্তবয়ষ্কদেরকে ক্রিশ্চিয়ান রিলিফের আওতায় আনার ব্যাপারে। অদ্যাবধি যে ৩৫ মিলিয়ন ডলার উঠেছে, তার বদৌলতে ড. রবার্টসন আফগানস্থানের শিশুদেরকে কেবল জেসাসের ভালবাসাভরা উজ্জ্বল আলোয় পূণ্যস্নান করাতেই সমর্থ হবেননা, শেষের চেয়ে শেষতম প্রতিটা বালক-বালিকার প্রত্যককে একান্ত নিজের রাখার জন্যে একটা করে Gideon’s bible দেয়া হবে স্যুভেনির হিসেবে- যার ভেতর খঁচিত থাকবে সবিশেষ শুভেচ্ছাপূর্ণ বাণী- “আমেরিকার ট্যাক্স প্রদানকারীদের পক্ষ থেকে ধর্মীয় মুক্তি স্বরূপ”।

আমার আফসোস হচ্ছে ড. রবার্টসন আজকের এই সকালে আমাদের মাঝে উপস্থিত থাকতে পারেননি বলে। তবে তিনি ব্যস্ততম, অনিদ্রিত সংগ্রাম করছেন তার দায়ীত্ব পালনে- আরেকটা আমেরিকান চ্যালেঞ্জকে প্রশমিত করার জন্যে- ‘এনার্জি স্বল্পতা’। তিনি অবশ্য একটা বাণী পাঠিয়েছেন যাতে বলেছেন- “জনাব প্রেসিডেন্ট, এই আকর্ষনীয় পদে নিয়োগ পেয়ে আমি খুবই সন্মানিত বোধ করছি এবং আমেরিকান জনগনকে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে এ পদে আমার অবস্থানকালে Afghan Children’s Fund একটুও বিরতি দেবেনা যতক্ষণ না প্রতিটা আফগান শিশুর আত্মা থেকে ইসলামের অভিষাপকে ধূলিস্বাৎ করা হবে কিম্বা এই ফান্ড ফুরিয়ে যাবে আমার আরো বিভিন্ন কর্মকান্ডে, যেটার উদ্ভব ঘটবে সর্বাগ্রে”। সুন্দর একজন মানুষের কাছ থেকে এটা সুন্দর একটা আবগের প্রকাশ। আমি নিশ্চিত, উনি আঘাত-হানার মত কার্য সম্পন্ন করবেন।

ঈশ্বর আমেরিকাকে আশীর্বাদ করুন। ঈশ্বর প্যাট রবার্টসনকে আশীর্বাদ করুন]

আসুন আমরা এর ঠিক উল্টো দৃশ্যপটটা কল্পনা করি। আমেরিকার ওক্‌লাহোমা প্রদেশের হোয়াইট সুপ্রিমিষ্ট খৃষ্টানদের একটা কাপুরুষ সন্ত্রাসী দল আফগানস্থানে গিয়ে কাবুলের সর্বোচ্চ ভবনে আত্মঘাতী বিমান হামলা চালিয়ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ৩,০০০ নিরীহ মানুষকে হত্যা করলো আফগানস্থানের নোংরা ফরেন পলিসির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ স্বরূপ। বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি আফগানস্থানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই প্রতিশোধ স্বরূপ আমেরিকায় সামরিক হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেন এবং হামলা চালানোর আগ দিয়ে সেদেশের ধর্মীয় নেতা মোল্লা ওমরকে মিলিয়ন আফগানী আফা’র (সেদেশের টাকার) American Children’s Fund-এর দায়ীত্ব দিলেন যুদ্ধোত্তর যুদ্ধে নিহত বাবা-মা’দের পিতৃহারা, মাতৃহারা প্রতিটা এতিম খ্রীষ্টান শিশুর প্রত্যককে একান্ত নিজের ব্যবহারের জন্যে মখমল কাপড়ে জড়ানো একটা করে কোর’আন উপহার দেয়ার জন্যে স্যুভেনির হিসেবে- যার ভেতর খঁচিত থাকবে সবিশেষ শুভেচ্ছাপূর্ণ বাণী- “আফগানস্থানের ট্যাক্স প্রদানকারীদের পক্ষ থেকে ধর্মীয় মুক্তি স্বরূপ”।

মনুষ্যত্বের এতবড় অপমানকে চোখে ঠুলি এঁটে না দেখার ভান করে বর্তমানকালের মুসলমান ঠেঙ্গানোর জনপ্রিয় কোরাস গানে অংশগ্রহন করে আমাদের বিবেক ও rationality (মননশীলতা) কে পদতলে মাড়াচ্ছি কিনা তা ইতিহাসই একসময় বিচার করবে।

সবাই ভাল থাকুন।

আব্দুর রহমান আবিদ
রচনাকালঃ মে ২০১০

*** লেখাটা যখন প্রায় শেষ করে এনেছি, তখন দেখলাম ফেসবুককে অনির্দিষ্ট কালের জন্যে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। অন্যান্যদের মত আমিও এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।