ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোসহ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশে রাত সাড়ে আটটার দিকে ফেসবুক ব্যান করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন–বিটিআরসি’র উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে রাত সাড়ে ৯ টায় গ্রামীণ ফোনের মোবাইল ভার্সন ও প্রক্সি সার্ভার দিয়ে ফেসবুকে লগইন করা গেছে।

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুক ডটকম-এর প্রতিষ্ঠা ব্যক্তিমালিকানায়, ২০০৪ সালে। তবে বাংলাদেশে এটি ব্যাপক আকারে জনপ্রিয়তা বছর আটেক আগে। অনলাইনে বিনামূল্যে নিজের প্রোফাইল বানানো, ছবিসহ নিজের মনের কথা প্রকাশ, বন্ধু-বান্ধাব তৈরি, চ্যাটিং, প্রিয় ব্যাক্তিত্ব বা সাইটের নামে ফ্যানকাব খোলা–ইতাদি সুবিধার কারণে এর একটি বড় ব্যবহারকারী ছাত্র-ছাত্রীরা। ইন্টার সাইট পরিসংখ্যানকারী এলেক্সা ডটকম-এর তথ্য অনুযায়ী, ফেসবুক বাংলাদেশে দ্বিতীয় জনপ্রিয় ওয়েব সাইট। সার্চ ইঞ্জিন গুগলের পরেই এর স্থান।

ফেসবেকার্স ডটকম-এর তথ্যমতে, বাংলাদেশে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় আট লাখ ৭৬ হাজার, ২০জন। প্রায় ছয় লাখ ৪২ হাজার ৯২০জন পুরুষ ও দুই লাখ ২২ হাজার ৪৪০ জন নারী ব্যববহারকারী। চলতি মাসের (২৮ মে পর্যন্ত) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এক মাসেই ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৬০ হাজার।

ফেসবুকে বিশ্বের প্রধান ভাষাগুলোর পাশাপাশি বাংলাতেও অ্যাকাউন্ট খোলা ও ভাব বিনিময়ের সুযোগ আছে। সেখানে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, সুকান্তসহ বাঙালির গর্ব নানা ব্যক্তির নামে ফ্যানকাব। এমন কি বিভিন্ন দেশি-বিদেশী তাঁরকার নামে রয়েছে একই রকম ফ্যান কাব। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, সিপিবিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন তো বটেই এমনকি অনলাইন একাধিক বাংলা পত্রিকা ও ব্লগের রয়েছে গ্রুপ। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করে একাধিক গ্রুপ রয়েছে এই সাইটে। গ্রুপগুলো জনমত গঠনে বিনামূল্যে তাদের প্রচার চালায় ফেসবুকে।

ফেসবুকে ‘৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণস্বার দল’ নামক গ্রুপের অধিকারী ও ব্লগার মাহমুদুল হাসান রুবেল একজন পুরনো ফেসবুক ব্যবহারকারী। বাংলাদেশে এই সাইটটি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার খবরে তিনি বলেন, ‘আমরা ১২৫ জন গ্রুপ সদস্য ফেসবুক ব্যবহার করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে প্রায় ৪ লাখ গণসাক্ষর সংগ্রহ করেছি। এখন সাইটটি এদেশে বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের কাজ বেশ খানিকটা বাধাগ্রস্থ হবে।’