ভারত বিভক্ত হয় ১৯৪৭ সালে। জন্ম নেয় নতুন দু’টি রাষ্ট্র ভারতবর্ষ ও পাকিস্তান। দুইশত বছর ইংরেজরা চালিয়েছিল সাম্রাজ্যবাদের রাজত্ব, তার পূর্বে ছিল মোঘল সাম্রাজ্য। ইংরেজ শাসনামলে অবিভক্ত ভারতকে করেছিল নিপীড়িত, শোষিত। সভ্যতাও দিয়েছিল সেই সাথে। কিন্তু,দেখা যায় যতটুকু শিক্ষা পায় অন্যান্য নারীরা মুসলিম নারী সে তুলনায় অনেক পিছিয়ে থাকে ।মুসলিম নারীদের পিছিয়ে থাকার মূল কারণ হিসেবে দেখা যায়, তাদের ধর্মীয় ও পর্দা প্রথাকে। অসংখ্য নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে মুসলিম নারীদের কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছানো প্রায় দুঃসাধ্য ছিল। এই কারণে কেবল মাত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাঝেই তাদের শিক্ষা সীমাবদ্ধ ছিল।
এখন দেখা যাক এই প্রসঙ্গে হুমায়ুন আজাদের কিছু কথা:
“ নারী সব চেয়ে পীড়িত ছিল ভারতে, তাই ওখানেই প্রথম দেখা দেন নারী ত্রাতা: রামমোহন রায় ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। রামমোহন নারীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সহমরণ বিষয়ক প্রবর্ত্তক ও নিবর্ত্তকের সস্বাদ প্রথম প্রস্তাব করেন ১৮১৮ তে, দ্বিতীয় প্রস্তাব ১৮১৯ এ। এ বিষয়ে তার শেষ লেখা সহমরণ বেরোয় ১৮২৯ এ। বিদ্যাসাগর বিধবা বিবাহ প্রচলিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক প্রথম প্রস্তাব করেন ১৮৫৫ তে। এবং একই বছর প্রকাশ করেন দ্বিতীয় প্রস্তাব। পৃথিবীর আর কোথাও তাদের, অন্ততঃ রামমোহনের আগে নারীর পক্ষে কোন পুরুষ কিছু লেখেননি, লড়াইয়ে নামেনি।
রামমোহন ও বিদ্যাসাগর পৃথিবীর দুই আদি নারীবাসী পুরুষ—মহাপুরুষ। তাঁরা কর্মবীর হিসেবেও অসামান্য। তবে রামমোহন ও বিদ্যাসাগর নারী মুক্তি বা নারী স্বাধীনতার কথা বলেননি। মুক্তি ও স্বাধীনতার কথা বলা যায় সভ্য সমাজে। তাঁরা নারীর জন্য দাবী করেছেন দু’টি সামান্য জিনিষ—বেঁচে থাকা ও জীবনযাপনের অধিকার যা তখন হিন্দু নারীদের জন্য ছিলো মুক্তির থেকেও অনেক বড়।(নারীঃ হুমায়ুন আজাদ পৃঃ ২৭১)
নারী মুক্তির কথা আলোচনার সাথে আর একজনের নাম অবধারিত ভাবে এসে পড়ে। তিনি হচ্ছেন বেগম রোকেয়া। রংপুরের পায়রাবন্দ গ্রামে ১৮৮০ সালে তাঁর জন্ম।সম্ভবতঃ মৃত্যু হয়েছিল ৯-ই ডিসেম্বর ১৯৩২ সালে। তিনি উগ্র পিতৃ্তান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে সব সময় ছিলেন সোচ্চার। বেগম রোকেয়ার অবদান আলোচনায় এলে আমরা তাঁর অনেক কিছুই মূল্যবান তথ্য পাবো। তাই এটা পরে আলোচনার ইচ্ছে পোষণ করছি।
ধর্ম ও নারী- আলোচ্য বিষয়ে আমি কোন মতান্তর পাইনা। সকল ধর্মগ্রন্থের রচয়িতা পুরুষ। সুতরাং সব কিছুই পুরুষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। এটাই নিয়ম হয়ে গেছে যুগ যুগ ধরে। তাই দেখা যায় শিক্ষার আলো ধর্মগ্রন্থ ও কুরআন পাঠের মাঝে সীমাবদ্ধ ছিল। ধীরে ধীরে তা স্বামীর কাছে পত্রলেখা ও বিবিধ কারণে পড়াশোনার আবির্ভাব ঘটে। তাও সীমিত পরিমানে।
আমাদের সামাজিক রীতি হল: পুরুষ শিক্ষিত হবে, সে সংসারের যাবতীয় খরচপাতির যোগানদার হবে। স্ত্রী হবে তার অনুগত গৃহপালিত দাসী বিশেষ। আদি হতে অধুনা পর্যন্ত এ চিত্রের কেবল রঙ বদল হয়েছে। আজ পর্যন্ত দেখা যায় অবস্থান ভেদে যে তিমিরে নারীর অবস্থান, সেই তিমিরেই বিদ্যমান। তফাত এইটুকু যে আগে ছিল অশিক্ষিত স্ত্রী, এখন শিক্ষিত স্ত্রী। সূচনা পর্বে ইতিহাস লিখিনি কেন? ইতিহাস আসবে।যদিও আমি ঐতিহাসিক নই, তবু সূচনা পর্বে কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
আমার এই রচনার বিশেষ বক্তব্য হচ্ছে নারী ও পুরুষের অবস্থান ভেদ, শিক্ষায় নারীর অনগ্রসতার কারণ। ছাড়াও নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এ ক্ষেত্রে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
আমাদের সমাজে কি ভাবে একজন নারীর জীবন অতিবাহিত হয় সেটা তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
আমাদের সমাজে পুত্র সন্তানকে কন্যা সন্তান অপেক্ষা বেশি মনোযোগ দেবার ব্যাপারটি খুবই উল্লেখযোগ্য। দেখা যায় জন্মের পর থেকে কন্যা সন্তানটিকে অবহেলা করার মূল সূত্র হয়ে যায়। মায়েদের ধারণা পুত্র মানেই নিরাপদ, পুত্র মানেই উপার্জনের নিঃশ্চয়তা। মা হয়ে তার কন্যার প্রতি এই অবহেলার কারণ হচ্ছে, একদা ঐ মা-ও বৈষম্যের শিকার হয়েছিল। এখনকার অবস্থানে হয়তো নারীটিকে রূপচর্চা,লেখাপড়া সব দিক দিয়েই নিজকে তৈরি করতে হয়। অনেক আগেও মূলত যেমন নারীদের রূপ, দৈহিক সৌন্দর্য নিয়া ব্যস্ত থাকতে হতো। যে কোনো উপায়ে ফর্সা হবার আপ্রাণ চেষ্টা, ত্বকে উজ্জ্বলতার জন্য অবিরল প্রচেষ্টা যতো, ব্যক্তিত্বে ততোটা নয়। সর্বদা একই ভুল করা হয়। মানুষের দেহ চামড়া সম্পুর্ণ ক্রোমোজমের চরিত্র, প্রাকৃ্তিক পরিবেশ, জল বায়ুর উপর নির্ভরশীল।
তবুও লেখাপড়া যেনো অনেকটা বিয়ে হবার কারণেই শেখা। শিক্ষা জীবনের অবসানের আগেই বিবাহ নারীটির জীবনকে আরো অন্ধকারাচ্ছন্ন করে ফেলে।তাকে অনেকটা মেরুদন্ডহীন প্রানীতে পরিণত করে। বিবাহের পরে অধিকাংশ নারীকেই দেখা গেছে তার পাঠ অসম্পুর্ণ রেখে সংসার, হাঁড়ি, বাসন, রান্না ঘরের মাঝে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বিবাহের ফলে নারী অধীন হয়ে পড়ে পুরুষের। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে নারীর যোগ্যতা পুরুষের চাইতে বেশি হলেও তাকে একান্ত বাধ্য দাসীর মতো থাকতে হয়।
নারীর এইরকম অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা তার জন্য যেনো মৃত্যুর শামিল হয়ে পড়ে।
এমন বহু নারী আছে যারা অত্যন্ত মেধাবী ছিল।বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বর থেকেও কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ। কিন্তু এখন দেখা যায় সে একজন সাধারণ গৃহিণীর মতোই পেঁয়াজ কাটায় এবং নানা ধরণের রন্ধনে রত। সংসারের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে তার মেধা ধীরে ধীরে অন্তর্হিত হয়। সন্তান প্রতিপালনের পর যৌবন পেরিয়ে প্রৌঢ়ত্বে পা দেয়া রমণীটি স্বামী হতে পুত্রের উপর অর্থনৈতিক দিক দিয়ে নির্ভরশীল হতে বাধ্য হয়। তার মেধা, তার সম্ভবনা তার জীবনের যা কিছু চাওয়া পাওয়া সব কিছুর অপমৃত্যু ঘটে।
শতরকম প্রতিভা নিয়ে জন্মানো নারীটা্র সমস্ত প্রতিভা একদিন বিলুপ্ত হয়ে যায়।
একটা ছোট উদাহরণের মাঝে একটা সামাজিক বা পারিবারিক চিত্র তুলে ধরলেই ব্যাপারটা আরো পরিষ্কার হবে।
একজন লেখক তিনি লিখতে গেলে তার চারপাশের পরিমণ্ডল থাকে সুবিন্যস্ত,সুসজ্জিত। তার কামরাটায় থাকে পিনপতন স্তব্ধতা, কোলাহলমুক্ত, অথবা তিনি যে পরিবেশ পছন্দ করেন সেই পরিবেশ অনুযায়ি তৈরি হয়ে যায় সব কিছু। একজন শিল্পী যখন গান পরিবেশন করেন,তার পেছনে তাকে সাহায্য করে কতো বাদ্যযন্ত্র, বেহালা, তবলা, সেতার, আলো ইত্যাদি। নানা প্রকার সাহায্যে গান হয়ে ওঠে ব্যঞ্জনায় মুখর। কিন্তু শিল্পীর এই পেছনের মানুষের অবদানের কথা কারো মনে থাকেনা। খোঁজ নেয়না কেউ ঐ নেপথ্যের ব্যক্তিদের। তিনি হন জনপ্রিয়।
অনু রূপভাবে একজন লেখকের (এখানে লেখকের কথাই বলছি আরো নানা পেশার মানুষজনও এর মাঝে পড়েন) লেখার পেছনে কতো স্বজনের অবদান।বিশেষতঃ প্রাকৃ্তিক নিয়মে যা প্রয়োজন তা তিনি পান অনায়াসে।
পক্ষান্তরে একজন নারী যখন শুধুমাত্র বিদ্যালয়ে শিক্ষা অর্জনের জন্য পাঠরত থাকে,তখন দেখা যায় সংসারের মা অনেক সময় মেয়েটার সাথে বৈষম্যমূ্লক আচরণ করে।
নারী সে হোক শিল্পী, গৃহিণী অথবা লেখক। তার ক্ষেত্রে দেখা যায় চিত্রটা আলাদা। সংসার, স্বামী, পুত্র, কন্যা সব কিছু সামলিয়ে যদি কখনও অবসর হয় সে ফাঁকে লিখতে বসতে পারে। লিখতে বসলেও নানা প্রতিবন্ধকতা। মেয়ে হোক বা নারী হবার কারণে বিভিন্ন ভাবে তাকে নিরুৎসাহিত করা হয়—মেয়েমানুষ, মহিলা মানুষ, মেয়েছেলে বিভিন্ন খেতাব দ্বারা। এরপরে বলা হয় তার যতোদুর তাতো হলোই, অর্থাৎ লেখাপড়া সমাপ্ত বা অর্ধসমাপ্ত হবার পরে তার মূল কাজ সম্পর্কে সচেতন করা হয় প্রচ্ছন্নভাবে। স্বামীর সেবা, পুত্রসেবা, শ্বশুর শাশুড়ি সেবা, সামাজিকতায় স্বামীর সাহচর্যে তাকে অলংকৃ্ত করা, এই কাজই ঐ নারীটার। মূলতঃ বুদ্ধিমতি নারীটাকেও বেশ বোকা বা অবলা হিসাবে দেখতে হয়। পুরুষরাও এইপ্রকার নারী পছন্দ করে। তারা এই বিশ্বাস করে যে, প্রতিবাদী নারী, বুদ্ধিমতি নারী তাদের জন্যে ক্ষতিকর।
সাহিত্য রচনা বা যে কোন লেখনীতে নারীটাকে প্রতিনিয়ত বাধার সম্মুখীন হতে হয়, তিরস্কৃত হতে হয়। প্রতিকূল অবস্থানকে দৃড়ভাবে মোকাবিলা করে কেউবা হন প্রতিষ্ঠিত।আবার কেউ বা ধীরে ধীরে নিজকে গুটিয়ে ফেলেন সংসারের শান্তি বজায় রাখার জন্য। অনেক স্বামী গর্ব করে বলেন, তিনি তার স্ত্রীকে সকল স্বাধীনতা দিয়েছেন। অর্থাত পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দেয়া নারীটা আসলেই শৃংখলিত। এর সমস্ত কুফল শুধু নিজ দেশ নয়, পুরো পৃথিবী কতো সম্ভাবনা থেকে বঞ্চিত হয়।প্রশ্ন হচ্ছে-একটা বিশাল শক্তি, বিরাট সম্ভবনাকে ঘরের মাঝে আবদ্ধ করে পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় কারা?
ধর্মীয় ভাবেও নারীদের বিভিন্ন বাধা বিপত্তির নির্দেশ প্রদান করা হয়। এই নির্দেশ নারীদের মনে জ্ঞান হওয়া অবধি ভয়-ভীত, মনের মাঝে এমনভাবে গেঁথে বসে যে পরবর্তিতে তারা শিক্ষা দীক্ষায় স্বাবলম্বী হলেও সামাজিক এবং ধর্মীয় কারণে পদে পদে তারা বাধাগ্রস্থ হয়। পুরুষের কথায় কথায় ধর্মীয় উদ্ধৃতি, তার মাঝে সঞ্চার করে ভয়-ভীতি।
এ প্রসঙ্গে কোরানে উল্লেখ:
দেখুন আল্লাহ্ কি বলেছেন ৪:৩৪ আয়াতে:
পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল। এজন্য যে, আল্লাহ্ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সেমতে নেক্কার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ্ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোকচক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ্ সবার উপর শ্রেষ্ঠ। (তফসীর মারেফুল কোরআন, অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দিন খান)
এখানে বলা যেতে পারে ছোট বেলা থেকেই মেয়েটা ধর্মীয় ভাবে শাসিত, শোষিত, এবং বড় হবার পর বিবাহিত জীবনের অবধারিত খারাপ পরিণতির জন্য শংকিত। এই ধর্মীয়ভীতি যতোটা নারীদের বেলায় প্রযোজ্য পুরুষের বেলায় তা অনেক শিথিল।
সাহি মুসলিমে লেখা আছে:
জাবির বর্নীত: একদা আল্লাহ্র রসুল এক রমণী দেখিলেন। তার পর তিনি তাঁর স্ত্রী জ়য়নাবের নিকট আসিলেন। জয়নাব তখন চামড়া পরিষ্কার করিতে ছিলেন। রসুলুল্লাহ জয়নাবের সাথে যৌনসংগম করিলেন। তারপর তিনি তাঁর সঙ্গীদের বলিলেন: একজন স্ত্রীলোক শয়তানের রুপে বাহির হয় এবং ফেরত যায়। কাজেই তোমরা কেহ বাহিরে কোন রমণী দেখিলে তোমাদের স্ত্রীর নিকটে চলিয়া আসিবে। এর ফলে তোমাদের মনে যা ছিল তাহা দূর হইবে। (সাহি মুসলিম, ভলুম ২, হাদিস ৩২৪০, প্রকাশক কিতাব ভবন, দিল্লি, ইংরাজি অনুবাদ অধ্যাপক আব্দুল হামিদ সিদ্দিকী, বাংলা অনুবাদ, লেখকের)
তিরমিজি হাদিসে লেখা:
মুয়াদ বিন জাবাল বলিলেন:
একজন স্বামী তার স্ত্রীর অতিথি। শীঘ্রই তার স্বামী স্ত্রী কে ছাড়িয়া চলিয়া যাইবে। তাই বিশ্বের কোথাও কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীকে বিরক্ত করে তবে আল্লাহ্ সেই স্ত্রীকে ধ্বংস করিবেন। (হাসান) (জামি তিরমিজি, ভলুম ২, হাদিস ১১৭৪, পৃ: ৫৪০, ইংরাজি অনুবাদ আবু খালীল, প্রকাশক দারুসসালাম, রিয়াদ, সৌদি আরব। বাংলা অনুবাদ লেখকের)
পুরুষ ও মানুষ, স্ত্রীলোকটাও তাই, অথচ দেখা যাচ্ছে শাসনের বেড়াজালে আবদ্ধ নারীটা প্রতিক্ষণ থাকে সন্ত্রস্ত।একজন উপার্জনশীল নারী যতোটুকু পরিশ্রম করে বাড়ি ফেরে, পুরুষটা তার চাইতে অনেক কম পরিশ্রম করে গৃহস্থালীর পরিচর্যায়। কেননা ঘর গেরস্থালির কাজটুকু একান্তই নারীর জন্য প্রযোয্য। পুরুষটা ক্লান্ত, শ্রান্ত হয়ে বাড়ি ফেরার পর তার গৃহে কাজ কর্ম নাই বললেই চলে। পক্ষান্তরে, কর্মজীবি নারীকে দেখা যায়, তার কর্মক্ষেত্র থেকে আসার পর পরেই সংসারের প্রত্যাহিক কাজকর্ম, স্বামীসেবা ইত্যাদিতে মন দিতে হয়। কর্মজীবি নারীটা মূহুর্তেই পরিণত হয় দাসী রূপে।
বয়ঃসন্ধি হতে একজন নারীকে বিবাহ সম্পর্কে নানা ভয় ভীতি সর্বদা তাড়িত করে। কোন কারণে স্বামী অসন্তুষ্ট হলে তাকে ভীতিকর শারিরীক নির্যাতন(কিছু ক্ষেত্রে) ও তালাক শব্দটার ভয়ে ভীত হতে বাধ্য করেছে। সর্বদা অজানা আশঙ্কায় আতংকিত হতে হচ্ছে নারীটাকে। কেননা ধর্মই তাকে ভীত হতে বাধ্য করছে। এছাড়াও ইসলাম ধর্মে স্বামীকে একের অধিক বিবাহের অনুমতি দেওয়াতে অনিশ্চয়তায় ভোগে বিবাহিত রমণীরা।
মূলত দরিদ্র দেশের নারীদের এই শোচনীয় অবস্থান হতে মুক্তির দরকার। প্রগতিশীলতা তাদের কিছুটা হলেও মুক্তি এনে দিতে পারে। কিন্তু,এ পথও বহু কন্টকপূর্ণ।নারীদের সচেতনতাই তাদের সাফল্যের চাবিকাঠি। নারী ধীরে ধীরে পঙ্গু হয় মনে। দেহে যতোটুকু দুর্বল তার চাইতে মানসিক ভাবে পর্যুদস্ত বেশি। অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা, সামাজিক বাধা, ধর্মীয় অনুশাসনের বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে তাকে আসতে হবে সম্মুখে। নিজকে পরিণত করতে হবে মানুষ রূপে, দাসী রূপে নয়।
Web-site ta valo laglo.
@একা…
আমি মুক্তমনার পাঠক অনেকদিন, আপনারও কিছু কিছু লিখা পড়েছি… কিন্তু কখনো কারও লিখারই কোনো মন্তব্য করিনি… তাই বলে আমার কোনো মতামত ছিলো না এমন নয়… যা হোক, অবশেষে শুরু হল…
আপনার লিখা ভালো লেগেছে। মনে করি, এরকম লিখাগুলো আরও বেশি বেশি আসা দরকার…
তবে বিপ্লব রহমানের মত আমিও মনে করি ‘নারী অধিকার, নারী মুক্তি’ বিষয়টি রাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক ভাবেই এর সমাধান করতে হবে। সর্বোপরি, এই প্রশ্নটি সমাজ পরিবর্তনের প্রশ্নের সাথে পুরোপুরি যুক্ত। :yes:
কথিত নারী মুক্তির আন্দোলন এখনো নব্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এনজিও-সমূহের ঘেরাটোপে বন্দী।
দাতা গোষ্ঠির অর্থ ও গাইড লাইনে চালিত এসব এনজিও দিয়ে ইটিং, মিটিং, সিটিং অ্যান্ড শিটিং হতে পারে, অল্প কয়েকজন নারী হাঁস-মুরগীর চাষ করে খানিকটা ‘ভালো’ও হয়তো থাকতে পারেন, কিন্তু ইতিহাস স্বাক্ষী, নারী মুক্তি তো দুরের কথা, গুরুতর কোনো নারী অধিকারও সালমা আলী, ফরিদা আখতার, নায়লা খান, শিরীন আখতার গংদের দিয়ে আদায় করা সম্ভব নয়।…
নারী অধিকার, নারী মুক্তি — এসবই রাজনৈতিক বিষয়। রাজনৈতিকভাবেই এর সমাধান হতে হবে। পাশাপাশি চাই, সমাজ সচেতনতা।
একা, আপনার লেখায় এসব বিষয়ের অন্তর্ভূক্তি অতি জরুরী ছিল। অনেক ধন্যবাদ। :rose:
@বিপ্লব রহমান,
“নারী অধিকার, নারী মুক্তি — এসবই রাজনৈতিক বিষয়। রাজনৈতিকভাবেই এর সমাধান হতে হবে। পাশাপাশি চাই, সমাজ সচেতনতা।
আপনার মন্তব্য কে শ্রদ্ধা জানিয়ে, আসলেই ঠিক বলেছেন,ব্যাপারটা নজর বা মনে থাকলে ও কী ভাবে যেনো এড়িয়ে গিয়েছে 🙁 ।তবে ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই লিখব। অনেক ধন্যবাদ সু-পরামর্শ দেবার জন্য। 🙂
বাহ্ ! এই তো !
কথাগুলোকে বুকের গভীরে জমিয়ে না রেখে এভাবেই সবার মধ্যে ছুঁড়ে দিন। যারা সাহস পাচ্ছে না কথা বলতে, তারাও এগিয়ে আসুক…
পৃথিবীতে কথারাই সবচাইতে শক্তিশালী।
@রণদীপম বসু,
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ । 🙂
একা,
আপনার চমৎকার লেখার জন্য ধন্যবাদ।
নারী মুক্তি সম্ভব, তবে কিছু শর্ত সাপেক্ষে।
নারীর সমান অধিকার ও স্বাধীনতা সম্পুর্নই নির্ভর করছে তার অর্থনৈতিক সাবলম্বিতার ওপর। সমাজ বিজ্ঞানের সূত্র থেকে জেনেছি, কৃষিকাজের প্রচলন করেছিল নারীরা। শারিরীক শক্তির আধিক্যের কারনে দল বেধে পুরুষরা যখন শিকারে বেরোত, ঘরের নারীরা তখন বাচ্চা কাচ্চা প্রতিপালনের উদ্দেশ্যে ঘরে থাকা ছাড়াও আর একটা গুরুত্বপূর্ন কাজ করতো তা হলো- বাসস্থানের আশে পাশের জঙ্গল থেকে ফল মূল ইত্যাদি খুজে আনত খাবার হিসাবে, খাওয়ার পর উচ্ছিষ্ট থেকে যে চারা বের হয়ে আবার ফল ধরে তা তার নজরে আসল ও তা পরবর্তিতে তাকে উৎসাহিত করে সেসব প্রয়োজনীয় উদ্ভিদকে আশে পাশে উদ্দেশ্যমূলকভাবে লাগাতে যা পরিশেষে কৃষিকাজে রূপান্তরিত হয়। কৃষিকাজ উদ্ভাবনের পরই কিন্তু মানূষ সত্যিকার অর্থে সভ্যতার দিকে এক উল্লম্ফন দেয়। জঙ্গলাচারী যাযাবর পশুশিকারী মানুষ থেকে তারা স্থায়ীভাবে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীতে পরিনত হয়, সুস্থির একটা সমাজ গড়ে তোলে, মানুষ খাবারের জন্য তথা শিকারের পিছনে সারাক্ষন ব্যতিব্যস্ত না থেকে বিশ্রামের বেশ ফুসরত পায় ও তারা তাদের মস্তিষ্ক ব্যবহার করা শুরু করে, তখন থেকেই মানুষ নানা রকম কলাকৌশল, প্রযুক্তি আবিষ্কার করতে শুরু করে যা মানবজাতিকে ভবিষ্যতে সত্যিকার সভ্য একটা সমাজ গঠনের দিকে অনেক দুর এগিয়ে নেয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে- সভ্যতার ভিত গড়ে দেয় যে প্রযুক্তি তার আবিষ্কারক হলো নারী। কিন্তু যেই সে প্রযুক্তিটি পুরুষের হাতে চলে যায়, নারী তখন আস্তে আস্তে পুরুষের অধীন হতে শুরু করে। সেই যে অধীন হলো- পরে নানা ধর্মের নানা নীতি-নিয়মের কথা দিয়ে তাকে আরও আষ্টে পৃষ্ঠে বেধে ফেলা হয়। তার কারনও সুস্পষ্ট। আদিকালে মানুষের বিনোদনের তেমন বিশেষ সুযোগ না থাকায় যৌনতাই ছিল প্রধান উপায় যার সহায় ছিল নারী, প্রাগৈতিহাসিক আমলে জনসংখ্যা খুব কম থাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি করে গোষ্টির শক্তি বাড়ানো, সন্তানদের লালন পালন করা ইত্যাদি অতি জরুরী কাজের জন্য নারীর গুরুত্ব বাড়লেও শুধুমাত্র পেশীশক্তির আধিক্যের কারনে পুরুষরা নারীদেরকে ঘরের বেড়াজালে আটকে ফেলে ও নানা ধর্মীয় রীতি নীতি দিয়ে নারীদেরকে ঘরে আটকে রাখাকে আরও পাকাপোক্ত করে। এভাবেই কেটে গেছে হাজার হাজার বছর। নারীদেরকে যতদিন বাইরের কাজের জন্য প্রয়োজন না হয়েছে ততদিন পর্যন্ত তার অধিকার ও স্বাধিনতা নিয়ে পুরুষরা তো দুরের কথা নারীরা নিজেরাও তেমন কোনদিন সোচ্চার হয়নি। ঘরের মধ্যে থাকতে থাকতে নারীদের অবস্থা এক সময় এমন হয়েছিল যে তারা এক পর্যায়ে নিজেদেরকে গৃহপালিত পশু ছাড়া আর কিছু ভাবত না ও তাতেই তারা সন্তুষ্ট ছিল। শিল্পবিপ্লব শুরু হওয়ার পর, বিশেষ করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্যপকভাবে পুরুষ মানুষ ইউরোপে মারা যাওয়ার পর, কলকারখানায় কাজের জন্য নারীদের ডাক পড়ে, আর এর ফলেই নারীরা তাদের অধিকার ও স্বাধিনতার বিষয়ে সচেতন হতে শুরু করে।বিগত এক শতাব্দিতে ইউরোপ আমেরিকা তথা উন্নত বিশ্বে নারীদের অবস্থানের আমূল পরিবর্তন ঘটে গেছে, তারা কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সব ক্ষেত্রেই পুরুষের সমান সম্মান ও অধিকার ভোগ করে। তার কারনও অর্থনৈতিক। সেখানে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবারই কাজ করে অর্থোপার্জনের সুযোগ আছে, ফলে সেখানে নারীকে পুরুষের আয়ের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয় না, যার ফলস্বরূপ নারীকে পুরুষেরও সার্বিক অধীনে থাকতে হয় না। এতে নারীরা পুরুষের সমান স্বাধিনতা ও অধিকার ভোগ করে। পিছিয়ে রয়েছি কেবল আমাদের মত দরিদ্র দেশ গুলো , বিশেষ করে মুসলিম দেশ গুলো। এসব দেশে শিল্পের তেমন উন্নতি ঘটেনি, সুযোগ ঘটেনি কর্ম সংস্থানের, নারীদের কর্মসংস্থান তো দুরের কথা পুরুষদেরই এক বিরাট অংশ থাকে বেকার। এমন পরিস্থিাতিতে ইসলামি অনুশাসন যদি নাও থাকত তাহলেও নারীদের সম অধিকার ও স্বাধীনতা প্রাপ্তি হতো অসম্ভব। মুসলিম দেশগুলোর নারীরা সত্যিই মনে হয় হতভাগা। এসব দেশে শিল্পের উন্নতি ত্বরান্বিত করার তেমন সমন্বিত কোন উদ্যোগ যেমন নেই যাতে নাকি কর্ম সংস্থান বৃদ্ধি পায়, তেমনি উদ্যোগ নেই আধুনিক বিজ্ঞান ও পযুক্তি নির্ভর সচেতন একটি সমাজ কাঠামো গড়ে তোলার কোন উদ্যোগ। তার ওপর গোধের ওপর বিষফোড়ার মত ইসলামি বিধি বিধান নারীদেরকে একেবারে চার দেয়ালে আটকে ফেলেছে কঠিন ভাবে। এমত অবস্থায় মোহাম্মদকে আবার এ ধরাধামে এসে নারীদেকে মুক্ত করে দিয়ে যাওয়া ছাড়া তো আমি নারী মুক্তির আর কোন উপায় দেখি না। তবে বাস্তবে, সমাজের ব্যপক শিক্ষা সচেতনতা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক উন্নতি ছাড়া নারীদের পরিপূর্ন স্বাধিনতা সমাজে একটা বিপর্যয়ও ঘটাতে পারে। বিবাহ বহির্ভুত যৌন সম্পর্ক, অবাধ মেলামেশা ইত্যাদির কারনে নানা রকম সামাজিক ও নৈতিক বিপর্যয় ঘটতে পারে। তাই একটা সুষ্ঠূ সমাজ ব্যবস্থা যেখানে নারী পুরুষ সমান অধিকার ও স্বাধিনতা নিয়ে বাস করবে তা গড়ে তুলতে গেলে আগে দরকার ব্যপক শিক্ষার প্রসার ও শিল্পের বিস্তার।
@ভবঘুরে,
আপনার মন্তব্য কে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি,
আমি ইতিপুর্বে আগুনের ব্যাবহার যখন মানুষ শিখল বা ততোধিক পুর্বে যখন “মাতৃ্তান্ত্রিক”
পরিবার ছিল। ওটা নিয়ে কিছু লিখেছি। কেনো “মাতৃ্তান্ত্রিক” পরিবার বিতাড়িত হল তা নিয়েও কথা আছে। যাই হোক একসময় লেখা দেবো। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। 🙂
ধুস , মানুষের মুক্তিই সম্ভব না-নারী মুক্তি ত অনেক দূর।
পৃথিবী্তে কেওই মুক্ত না। আমরা সবাই কিছু না কিছুর অধীন।
নারী মুক্তি ইত্যাদি কাল্পনিক পাথরবাটি না ঘেঁটে-নারী র্নিযাতন এবং নারী পুরুষের সমানাধিকার নিয়ে বলা উচিত। গৃহে নারী যেমন গৃহপালিত দাসী-ঠিক তেমনিই পুরুষও বারান্দায় বাঁধা বলদ। এর কোনটাই মিথ্যে না।
@বিপ্লব পাল, :yes:
@বিপ্লব পাল,
আমার লেখায় আপনার মন্তব্য পেয়ে নিজকে সৌভাগ্যবান মনে করছি।আপনি বলেছেন,
“ নারী মুক্তি ইত্যাদি কাল্পনিক পাথরবাটি না ঘেঁটে-নারী র্নিযাতন এবং নারী পুরুষের সমানাধিকার নিয়ে বলা উচিত। গৃহে নারী যেমন গৃহপালিত দাসী-ঠিক তেমনিই পুরুষও বারান্দায় বাঁধা বলদ। এর কোনটাই মিথ্যে না। “
প্রবন্ধটার মুল বক্তব্যটাই ছিল”নারী পুরুষের সমানাধিকার”।
কিন্তু এই বিষয়টা ধাপে ধাপে আসবে। আগে মুক্তি পরে আপনার বা সবার বক্তব্য অনুযায়ী নারী নির্যাতন বন্ধ। তবু,সব মিলিয়ে আপনার কথা কে স্বাগতম। 🙂
@বিপ্লব পাল,
হমম…এটা কি Freudian slip? মানুষের মুক্তি = পুরুষের মুক্তি। আপনার পা-টা একটু “টানলাম” আর কি! 😀
বাপস! পৃথিবীতে কেহই মুক্ত নয়! পুরুষ হচ্ছে বারান্দায় বাঁধা বলদ। কার বারান্দায়? এর মধ্যে গার্হস্হ জীবনের কি কোন গূঢ় অর্থ লুক্কায়িত? 🙂
অনেক দিন পর আপ্নার একটা লেখা পড়লাম। এই লেখায় আপনি যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তার জন্য আপনাকে জানাই আমার ধন্যবাদ। আপনার দেয়া উদাহরণ আবং যুক্তি শৈলি খুব ভাল লগল। আমি আশা করছি আপ্নার লেখা থেকে অনুপ্রেরনা পেয়ে অনেক মানুষ জন এই ব্যাপারে সচেতন হবেন। আপ্নার প্রতি রইল আমার শুভ কামনা।
@yousuf,
এই প্রথম মনে হয় আমার কোনো রচনায় আপনার মন্তব্য পেলাম। ভালো লাগলো, আপনি লিখেছেন,
“আমি আশা করছি আপ্নার লেখা থেকে অনুপ্রেরনা পেয়ে অনেক মানুষ জন এই ব্যাপারে সচেতন হবেন। “
অবশ্যই এই কথা আপনার,আমার ,সকলের। আপনাকে শুভেচ্ছা। 🙂
@একা,
চমৎকার লিখেছেন। আপনাদের এই লেখাগুলো সমাজে নারীদের সচেতনতা বাড়াতে নিঃসন্দেহে সাহায্য করবে। কেউ কাউকে স্বাধীনতা দেয়না, স্বাধীনতা অর্জন করে নিতে হয়। :yes:
@ব্রাইট স্মাইল্,
“ আপনাদের এই লেখাগুলো সমাজে নারীদের সচেতনতা বাড়াতে নিঃসন্দেহে সাহায্য করবে। কেউ কাউকে স্বাধীনতা দেয়না, স্বাধীনতা অর্জন করে নিতে হয়।
এমন শক্তিশালী মন্তব্যকে কুর্নিশ। :yes:
আচ্ছা বাংলাদেশে নারীদের অবস্থার পরিবর্তন বা পরিবর্তনের অভাব সম্বন্ধে কি কোন সার্ভে-টার্ভে আছে বা হচ্ছে?
এই কথাটাই আল্লহ তার পাক কালাম শরীফ কোরানে অন্যভাবে বলেছেন-
الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاء بِمَا فَضَّلَ اللّهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنفَقُواْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ
পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে।
একটু দ্বীমত পোষণ করি- তফাৎ আগে ছিল অশিক্ষিত সেবিকা, এখন শিক্ষিত সেবিকা। স্ত্রী নামক সেবিকার কাছ থেকে উন্নত সেবা, উন্নত বিনোদন পাওয়ার লক্ষ্যে শিক্ষার মাধ্যমে পুরুষের স্বার্থে নারীকে ট্রেনিং দেওয়া হয়।
ভাল লেখার জন্যে :rose2: :yes:
@আকাশ মালিক, ভাই
আপনার মন্তব্য পড়ে আমি অভিভূত। কেননা, আপনার লেখার এক নং ভক্ত আমি। আপনার ভালোলাগা মানে আমার লেখা সার্থক। 🙂
আমি গতকাল ছোট বোনের সাথে এই ব্যাপার নিয়ে কথা বলছিলাম।যদিও ভাল ভাবে বোযাতে পারছিলাম নাহ ব্যাপারটি;তবে আপনার লেখাটি এখন আমার রেফারেন্স ।আশা করি আজ বোঝানোটা কঠিন হবে নাহ একেবারেই।
আমি আবার বলছি লেখাটি খুবই ভাল হয়েছে ।ধন্যবাদ।
খুবই খুবই ভাল লেখা।খুব সত্য তুলে ধরেছেন।খুব ভাল লেগেছে লেখাটি পড়ে।অনেক অনেক ধন্যবাদ। :yes: :yes:
@আনোয়ার রানা,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ,সত্য জানার চেষ্টা অনেকেই করতে চায়না। আপনার সচেতনতা আমাকে মুগ্ধ করল।
@ প্রিয় পাঠক-
” প্রথম প্রস্তাব করেন ১৮১”
এই অংশটা আমার সন্দেহ আছে,হয়তো প্রিন্টিং ভুল হতে পারে।তাই,আমি পরিবর্তন না করে বইএ যা আছে হুবহু দিয়েছি।এই ভুল আমার নয় বইয়ের হতে পারে,কারো কাছে”নারী”এই অংশটা স্বঠিক থাকলে জানাবেন অনুগ্রহ করে।
@একা,
১৮১৮
@ফরিদ আহমেদ,
আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ। আমাকে সাহায্য করার জন্যে।
@একা, আপনার লেখার জন্য ধন্যবাদ আর ধন্যবাদ সহজ সত্য অনুধাবনের জন্য। ধর্মের বাধা আপনি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন তবে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি না ধর্মের বাধা উত্তরনই একমাত্র পথ। ধর্মের বাধা উত্তরন হল প্রাথমিক কাজ আমাদের বাংলাদেশের মত দেশগুলোর জন্য।অমুসলিম আফ্রিকাতেও নারীরা পরাধীন এবং নির্যাতিত।
আপনার লেখার শিরোনামের উত্তরে বলতে চাই যে, নারীমুক্তির প্রথম শর্ত নারী শিক্ষা, দ্বিতীয় শর্ত নারী শিক্ষা, তৃতীয় শর্ত নারী শিক্ষা। একমাত্র কামাল আতাতুর্ক এর তুরস্ক ছাড়া অন্যান্য মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে নারী স্বাধীনতা তলানিতে ঠেকে আছে। অন্যান্য ধর্ম অনুসারী দেশগুলো সেই তুলনায় অনেক উদার তবে নারী নির্যাতনের মাত্রায় তারা মুসলিম দেশ গুলো থেকে কম যায় না। সামাজিক অর্থনিতি এক্ষেত্রে মূল প্রভাবক মনে করি। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী দেশগুলোতে নারী নিজের অধিকার সচেতন। তারা এই অবস্থান গড়ে তুলেছে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে সামাজিক অর্থনিতিতে প্রত্যক্ষ্য ভূমিকা রেখে। আমাদের মত দেশগুলোর অর্থনিতিতে নারী অবদান সামান্যই।নারীরা জনসংখ্যার অর্ধেক হয়েও অবদান রাখতে না পারায় আমাদের অর্থনিতিও বাধাগ্রস্ত। আশাবাদি এই আমার ধারনা, নারী মুক্তি শুধু সম্ভব ই নয় অতি শিঘ্রই নারী মুক্ত হতে যাচ্ছে আমাদের দেশে এর মুল কারন সরকার নারী শিক্ষায় ২ দশক আগেই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। ইতমধ্যেই পরিবর্তনের ছোয়া লেগেছে। উচ্চশিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহনের হার ব্যাপক বেড়েছে এবং আগামী ১ দশকের মধ্যেই আমরা তাদের পদচারনা দেখব সমাজের প্রতিটি ধাপে। বর্তমান সরকারের মন্ত্রিপরিষদ দেখুন, দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নারীদের এই অবস্থান কিন্তু অনেক অগ্রগামি দেশকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে। সূতরাং আমাদের দেশে ইসলাম নারীদের বাধা দেয়নি, যোগ্যতা প্রমানের পর নারী তার যোগ্য অবস্থানেই পৌছে যাবে।দেখুন বাংলার সংস্কৃতি কি সুন্দর করেই না নারীমুক্তির ডাক দিয়েছে:
চেয়ে দেখ উঠেছে নতুন সূর্য
পথে পথে রাজপথে চেয়ে দেখ রংয়ের খেলা
ঘরে বসে থেকে লাভ কি বল
এস চুল খুলে পথে নামি , এস উল্লাস করি
দুঃখিনী দুঃখ করো না, দুঃখিনী
আধারের সিধ কেটে আলোতে এস
চোখের বোরখা নামিয়ে দেখ জোছনার গালিচা
ঘর ছেড়ে তুমি বাইরে এস
চেয়ে দেখ রংধনু, চেয়ে দেখ সাত রং
দুঃখিনী দুঃখ করো না, দুঃখিনী
মিছিলের ভীর ঠেলে, সামনে এস
দুঃখের পৃষ্ঠা উল্টে দেখ সপ্নের বাগিচা
ঘরে বসে থেকে লাভ কি বল
এস হাতে হাত রাখি , এস গান করি
দুঃখিনী দুঃখ করো না, দুঃখিনী
( জেমস এর “দুঃখিনী দুঃখ করো না” এ্যালবামের গান)
ভাল থাকবেন-
@Oni,
ধন্যবাদ আপনাকে।