আমি অনেক চিন্তা ভাবনা করে দেখলাম-বেশী জানা শুনা করাটা অর্থহীন তাতে সুখ তো আসেই না বরং দুঃখ, বেদনা, দুঃশ্চিন্তা, মানসিক চাপ ইত্যাদি বেড়ে যায়। বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যাজিৎ রায় তার বিখ্যাত হীরক রাজার দেশে ছায়াছবিতে রাজার মুখ দিয়ে বলিয়েছেন – জানার কোন শেষ নাই জানার চেষ্টা বৃথা তাই । ইদানিং রাজার মুখনিসৃত সেই কথাগুলোকে বড় বেশী বাস্তব আর সত্য মনে হয়। আপনি অবলা জন্তু জানোয়ারের কথা চিন্তা করে দেখেন- তারা কত সুখী । সারা দিনে তাদের একটাই কাজ খাদ্য সংগ্রহ করে খাওয়া, আর কিছুই না আর তাতেই মহা খুশী। যারা বনের মধ্যে থাকে মানে বন্য প্রানী তাদের জন্য বিষয়টা কিছুটা কষ্টসাধ্য কিন্তু গৃহপালিত পশু যেমন – গরু, মহিষ, হাস মুরগী; আহা তারা কতই না সুখী, খাদ্য তাদের জোগাড় করতে হয় না, মানুষরাই কষ্ট করে তাদের খাদ্য জোগাড় করে দেয়। তাদের পরিনামটা অবশ্য একটু নির্মম- জবাই করে তাদের মাংস খায় হিংস্র মানব কুল, কিন্তু তাতে কি , যতদিন বেচে থাকে ততদিন তো মজাসেই থাকে, তাই না ? অবশ্য ত্যদোড় কেউ কেউ বলতে পারেন- পশু পাখীরা যে মহা সুখে দিন যাপন করে তা আমি জানলাম কি করে ? ওরা তো কথা বলতে পারে না । কথাটা ঠিক ।অকাট্য যুক্তি। আসলে বিষয় হলো- ওরা কথা বলতে পারে না ঠিকই , তবে ওদের অভিব্যক্তি দেখে তো মনে হয় ওরা মোটেও দুঃখে দিন কাটায় না।
আমাদের চার পাশের খেটে খাওয়া মানুষগুলোকেই দেখেন না, তারা কত সুখী । অথচ ওরা জানা শোনা বা জ্ঞান বিজ্ঞান অর্জনের কোন ধার ধারে না। দরকারও মনে করে না । আপনি তাদের পোশাক পরিচ্ছদ, বাড়ীঘর, খাদ্য খাবারের মান দেখে যদি সিদ্ধান্ত করেন তাহলে কিন্তু মহা ভুল করবেন। আপনি ওদের সাথে আলাপ করে দেখেন, তাহলেই আপনি টের পাবেন ওরা কত সুখী। একজন রিক্শাঅলা দৈনিক দু’তিনশ’ টাকা আয় করেই মহাখুশী। সারাদিন রিকশা চালিয়ে যে টাকা পায় তা দিয়ে দু্ কেজি চাল, কিছু তেল লবন আর সামান্য শাক মাছ কিনে নিয়ে বাড়ী গিয়ে সে ভীষণ খুশী ও সুখী , সেই সাথে খুশী তার স্ত্রী ও বাল-বাচ্চারা , কারন তাদের আর না খেয়ে উপোস করতে হবে না । ঠিক একারনেই, কয়েক বছর আগে লন্ডনের স্কুল অব ইকোনোমিক্স একটা জরীপ চালিয়েছিল দুনিয়া ব্যপী আর তাতে তারা আশ্চর্য হয়ে আবিষ্কার করেছিল, পৃথিবীতে বাংলাদেশের লোকরাই সবচাইতে সুখী। তার মূল কারন ছিল বাংলাদেশের গরীব মানুষদের চাহিদা নিতান্তই সীমিত। আর বলা বাহুল্য এ গরীব মানুষগুলো কখনই বেশী জানা বা জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করে না, করার দরকারও মনে করে না । পক্ষান্তরে একজন লেখাপড়া জানা তথাকথিত শিক্ষিত লোক যে অনেক জানে অনেক বোঝে তার কথা চিন্তা করেন। আপনার কথাই ধরুন, হয় আপনি চাকরি করেন নয়তো ব্যবসা করেন। কোন এক সময় দেখা যাবে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশী হয়ে যাচ্ছে। যা আয় করেন তা দিয়ে পরিবারের চাহিদা মিটছে না । আগে সস্তা বাড়ীতে ভাড়া থাকতন এখন দামী বাড়ীতে ভাড়া না থাকলে মান মর্যাদা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নতুন একটা গাড়ী কেনা চাই, গাড়ী হলে বাড়ী বানানো চাই, নইলে কমপক্ষে একটা ফ্লাট। সব হলো- তাহলে এবার একটু বিদেশ বেড়াতে যাওয়া চাই। খালি চাই , চাই আর চাই। এই চাই আর চাই এর ক্ষিদে মিটাতে আপনাকে অনেক সময় অসৎ রাস্তায় নামতে হয়, চাকরীতে ঘুষ খেতে হয় নয়ত দু নম্বরী ব্যবসা ধরতে হয় বৈধ ব্যবসার পাশাপাশি। ফলে বাড়ে টেনশন, দুঃশ্চিন্তা, ভয়, কখন না জানি আবার ধরা খেতে হয়। জেল জুলুম জরিমানা তো আছেই , তাছাড়া বড় টেনশন হলো- সম্মান হানি, পরিচিত জনের মধ্যে জানাজানি হয়ে গেলে আর মুখ দেখানোর জায়গা থাকবে না । যে স্ত্রী পুত্র কন্যা এতদিন আপনার বৈধ বা অবৈধ আয়ে মজাসে দিন কাটাচ্ছিল তারাও কিন্তু আপনাকে অন্য চোখে দেখা শুরু করবে। যা আপনার মানসিক যন্ত্রনা আরও বাড়িয়ে দেবে। পরিনামে আপনি হবেন চরম এক অসুখী ব্যক্তি। এই চাই চাই ভাবটা যে সব সময় নিজ থেকে আসে তা কিন্তু না । এটা আসে পাড়া প্রতিবেশী ও পরিচিত বন্ধুবান্ধবের থেকেও। তারা কেউ কেউ নিত্য নতুন গাড়ী কিনছে, দামী বাড়ী করছে, সদ্য পরিবার শুদ্ধ সিঙ্গাপুর ঘুরে এসেছে। সুতরাং কিছু একটা না করলে আপনারও মান থাকে না । অর্থাৎ প্রতিযোগীতা। বাজার অর্থনীতির এই প্রতিযোগীতার দিনে আপনার খালি চাই আর চাই, আর তা পুরন করতে যেয়ে আপনার নাভিশ্বাস , পরিশেষে সর্বনাশ। যা আপনাকে করে তুলছে দুনিয়ার সব চাইতে চরম অসূখী ব্যক্তি। তবে হ্যা, নতুন একটা গাড়ী কিনলে বা বাড়ী বানালে বা ফ্লাট কিনলে কিছুক্ষন আপনি একটু সুখ পেতে পারেন , কিন্তু তা খুবই অস্থায়ী। শুধু যে মানসিক টেনশন বা অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা কিন্তু না, আপনি কিন্তু আপনার সুন্দর নিরোগ শরীরটাকেও খুব তাড়াতাড়ি ধ্বংস করে ফেলছেন। যুবক বয়েসে যে আপনাকে দেখে পাড়ার সুন্দরী মেয়েরা আপনাকে প্রেম পত্র দিত, চাইলে আপনি হতে পারতেন বাংলা ছায়াছবির মুটকি নায়িকার চমৎকার রোমান্টিক নায়ক, সেই আপনি কিন্তু চল্লিশ পার হওয়ার সাথে সাথেই নানারকম ব্যধিতে আক্রান্ত। আপনার মাথায় টাক, ভুড়ি বেড়ে হয়েছে জাপানের সুমো কুস্তিগীরের মত। দেখতে অনেকটা কোলাব্যাঙ এর মত। মাত্রারিক্ত টেনশন ও দুঃশ্চিন্তা আপনার রক্তের কোলেস্টেরল বাড়িয়ে আপনার রক্ত নালীকে করে ফেলবে রুদ্ধ, হঠাৎ করে যে কোন সময় আপনি হতে পারেন বাকরুদ্ধ মানে পরপারে চলে যেতে পারেন। যদি ভাগ্য ভাল থাকে, বাই পাস সার্জারী করে আপাততঃ রক্ষা। কপাল একটু খারাপ হলে প্যরালাইজড হয়ে পড়ে থাকতে পারেন বাকী জীবনটা । তা যদি না হয় , ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এর কোন না কোনটাতে আপনি হতে পারেন আক্রান্ত। মোট কথা , সে সুখের জন্যে আপনি এত জ্ঞান, বিদ্যা বুদ্ধি কলাকৌশল ধান্ধাবাজি রপ্ত করলেন তা কিন্তু আপনার ধরা ছোয়ার বাইরেই রয়ে গেল।
এবারে আসেন জ্ঞানের কথায়। আগে আপনি জানতেন আল্লাহ দুনিয়া বানিয়ে আদম আর হাওয়া কে দুনিয়ায় পাঠিয়ে দিয়েছেন, আর আপনি হলেন কোন এক দুর প্রজন্মের তাদের এক বংশধর। আপনি তাতেই খুশী ছিলেন। আপনি মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তেন, রোজা রাখতেন, আল্লাহ আল্লাহ করে তার কাছে মাঝে মাঝে খামোখাই মাফ চাইতেন, আর ভাবতেন মরার পর বেহেস্তে গিয়ে সত্তর হুর নিয়ে মজা ফুর্তি করবেন অনন্তকাল। নিয়মিত সাংসারিক কাজ তথা চাকরি বা ব্যবসা যাই করেন না কেন তার ফাকে এ কাজ গুলো করে যেতেন, পরিবার দেখতেন বাল বাচ্চা মানুষ করতেন- সম্ভব হলে একবার হজ্জ করতেন ইত্যাদি । কত সুখী জীবন একটা । অতিরিক্ত চাওয়া পাওয়ার কিছুই দরকার নেই আপনার।
কিন্তু হঠাৎ করে , আপনার মাথায় পোকা ঢুকল- কিভাবে বিশ্ব জগত সৃষ্টি হয়েছে, কিভাবে দুনিয়াতে জীব জন্তু , মানুষ ইত্যাদি সৃষ্টি হয়েছে। আর খুজতে গিয়েই শুনলেন সব আজব কথা বার্তা। কোন এক শূন্য থেকে নাকি- মহাবিস্ফোরনের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে মহাবিশ্ব, আর বানর জাতীয় প্রানী থেকে নাকি উদ্ভব ঘটেছে মানুষের। তো আপনি এবার পড়লেন গ্যাড়াকলে। কোনটা সত্য ? আদম হাওয়া নাকি বানর তত্ত্ব? এখান থেকেই শুরু হলো আপনার অশান্তি। আপনি জানার চেষ্টা করলেন আরও , দেখলেন যে বানর তত্ত্ব বা মহাবিস্ফোরন তত্ত্ব কিন্তু আসলেই বানোয়াট কিছু না , তার পিছনে যথেষ্ট যুক্তি তর্ক আছে। ব্যাস আর যায় কোথা।আপনার মধ্যে এবারে শুরু হয়ে গেল একটা আন্তঃঝড়। আপনি পড়ে গেলেন মহা দ্বিধা দ্বন্দ্বে। কোনটা সত্য – আদম হাওয়া তত্ত্ব নাকি বানর তত্ত্ব? এর পর থেকে আপনি যতই জানতে থাকবেন আপনার আন্তঃঝড় আরো বাড়তে থাকবে । আপনি আগে নামাজ রোজা করে মানসিক শান্তি পেতেন, যা আপনার কর্মক্লান্ত দিনটাকে ভুলিয়ে দিত। এখন আপনি সন্দিহান হওয়াতে নামাজ রোজাতে ভাটা পড়বে, কর্মক্লান্তি ভোলার কোন রাস্তা আপনি পাবেন না। এছাড়াও আপনি অর্জিত বিষয়ে আশে পাশের মানুষের সাথে মত বিনিময় করতে গেলে তারা আপনাকে নাস্তিক মুরতাদ বলতে পারে যা আবার আপনার সম্মান হানির কারন ঘটতে পারে। অথচ আগে আপনি এত কিছু জানার ধার ধারতেন না , তখন ছিলেন আপনি মহাসুখী এক ব্যাক্তি। এখন জানার তথা জ্ঞানের রাস্তায় আসার পর আপনার মানসিক সুখ উধাও। আগে বিপদে পড়লে আল্লাহ কে ডেকে তার কাছে সাহায্য চাইতেন, আল্লাহ সাহায্য করুক না করুক, আপনার মানসিক প্রশান্তি তাতে এসে যেত যা আপনার বিপদ উত্তোরনে বেশ কাজ দিত। এখন বিপদে পড়লে কারও কাছে সাহায্য চাইতে পারেন না , ফলে মানসিক প্রশান্তিও আসে না। ডেল কার্নেগীর দুশ্চিন্তাহীন নতুন জীবন বই ও আর আপনাকে দুশ্চিন্তা মুক্ত করতে পারে না । আলেক্সান্ডার পোপ তার A Happy Man কবিতায় বলেছেন-
He is happy who is satisfied with what he has.
তাই আপনি যতটুকু জানেন ততটুকু নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন, বেশী জানলেই সমস্যা।
দুনিয়াতে বোকা লোকরাই সব চাইতে সুখী । মুর্খ, পাগল, শিশু- এদের চাইতে সুখী কেউ দুনিয়াতে নাই। একবার বেগম জিয়া বলেছিলেন- পাগল ও শিশুরা ছাড়া আর কেউ নিরপেক্ষ নয়, কথাটা নিয়ে তখন বহু সমালোচনা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা হলো- উনি সঠিক কথাই বলেছিলেন। মানুষের জ্ঞান বুদ্ধি বাড়লে, সে আর নিরপেক্ষ থাকতে পারে না। যত বেশী জানবেন ততই আপনার মাথার মধ্যে নানারকম চিন্তা ভাবনার উদয় হবে। ততই নানারকম প্রশ্ন আপনার মন ও মানস কে আন্দোলিত করবে। আপনি তার উত্তর খুজে না পেলে মানসিক অশান্তিতে ভুগবেন। জানার কোন শেষ নাই , জানার চেষ্টা বৃথা তাই। এ তত্ত্বে আস্থাবান হোন, বোকা থাকুন ও সুখী জীবন যাপন করুন।
শিশুকাল ছিল ভাল, যৌবন কেন আসিল….. :-Y
বার্টান্ড রাসেলের প্রস্তাবিত “Ten Commandments” এর শেষেরটি
“বোকার স্বর্গে বাস করাদের সুখ দেখে হিংসা করো না, কারণ ওই অবস্থাকে সুখ ভাবা একমাত্র ‘বোকা’দের পক্ষেই সম্ভব।”
@রনবীর, :yes:
এই কথাটাই আমারও প্রায়ই মনে হয়, তবে ক্ষোভ বা শ্লেষ অনুসারে নয়, একরকম কউতুক হিসেবে- দুনিয়াটা বোকার স্বর্গ। আবার মাঝে মাঝে দুঃখের সময়ও মনে হয়, ক্যান যে মূর্খ হইলাম না! এটা ঠিক আপনি যেই দৃষ্টিকোণ থেকে লিখেছেন সেখান থেকেই। সুতরাং এই চিন্তাটা একই সাথে স্বান্তনা আর দুঃখের দোসর। তবে এমন দিন আসবে যেদিন আমাদের এইসব ভেবে দুঃখ, স্বান্তনা, ক্ষোভ কোন কিছুই লাভের উপায় থাকবে না- কারণ তেমন বোকাই আর তুলনা করার জন্য জুটবে না। তেমন দিন যদিও খুব নিকটবর্তী নয়…তবুও ত আগুয়ান।
বেশ রাগ করে লিখেছেন বা হতাশ হয়ে, বোঝা যাচ্ছে। তবুও বলি, চালিয়ে যেতে তো হবেই আমাদের। আপনি যখন মুক্তমনা, তখন আপনি নিঃসন্দেহে মূর্খতার মধ্যে মুক্তি খুঁজবেন না।
শুভেচ্ছা, ভালো থাকবেন।
একটা লেখা দিয়ে যাই। একটু পড়ে দেখবেন।
ব্যাপক মজাদার লেখা। আশাকরি রম্যরচনা হিসেবেই লিখেছেন। সমস্যা তো একটাই, মন তো মানে না। ইচ্ছা করে কি আর মূর্খ থাকা যায়?
নিদারুণ হতাশ, অভিমান, ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
শিশুদেরকে মূর্খ ও পাগলের দলে মিশানোটা মানতে পারলাম না।
ভালো লিখেছেন।অকাট্য যুক্তি। তাই ভালো লাগল।সেই সাথে অনুরোধ আরো সবার লেখা পড়ুন।
ওহ হ্যাঁ শিশুরা কিন্তু পাগলের দলে পড়েনা। তাই না?
@আফরোজা আলম,
অন্যের লেখাও পড়ি। আপনার লেখা তো বটেই।
@ভবঘুরে,
ভালো লিখেছেন।
আসলে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে বোধহয় আপনার কথাই ঠিক। বিষ্ঠাতে তো বিষ্ঠাভোগী প্রাণীরাই আনন্দ পাবে তাই না?
মহাভারতের একটা গল্প বলি,
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের শেষে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও অর্জুন একসাথে হাঁটছিলেন।তো সেসময় যুদ্ধে মৃতদের দেহগুলো শকুনরা টেনে-হিঁচড়ে ভোজন করছিল। তাই দেখে অর্জুন কৃষ্ণকে বললে, দেখতো কৃষ্ণ এই শকুনরা এসব খেয়ে কি আনন্দ পাচ্ছে? আমারতো রীতিমতো ঘেন্না হচ্ছে। তখন কৃষ্ণ বলল, তাই? তারপর কৃষ্ণ অর্জুনকে মায়ার সাহায্যে শকুন বানিয়ে দিল এবং পচাগলা মাংসগুলো খেয়ে আসতে বলল। সেগুলো খেয়ে আসার পর কৃষ্ণ অর্জুনকে বলল, খেতে কেমন লাগল? অর্জুন বলল, এমনভোজন অনেকদিন ধরে করি নাই।
তবে দ্বিতীয় প্যারাটা একটু অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে। কারন,মূলবিষয়তো ছিল মূর্খদের সুখ বিষয়ে। আর যারা নিজের দেহ আর মনের সুস্থতার দিকে না তাকিয়ে, এইভাবে অনর্থক মিথ্যাসুখের জন্য নিজের দেহ আর মনের ক্ষতি করে অর্থ-বিত্তের পেছনে ছুটে তারাতো বিশ্বাসীদের চেয়েও মূর্খ।(যার যোগ্যউপায়ে অর্থ উপার্জন করছে আমি তাদের কথা বলছিনা)
তবে পরবর্তী আর্গুমেন্টগুলো বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অনেকাংশেই সঠিক। চারদিকে এত মূর্খতার ছড়াছড়ির মধ্যে একজন জ্ঞানবুভুক্ষের পক্ষেই টিকে থাকা আসলেই মুশকিল। তার মন অতটা শক্ত না হলে তাকে মানসিক কষ্ট ভোগ করতেই হবে। হয়ত মূর্খরা বলবে যে,এত কষ্ট করে এইসব জিনিস জেনে তোমার কি লাভ হবে? সে হয়ত তখন আমলে নিল না। কিন্তু বারংবার যদি কানের মধ্যে এরকম কথা শুনতে থাকে তাহলে আমলে না নিয়ে কি আর উপায় থাকবে? ফলশ্রুতিতে মানসিক কষ্ট, কারন, সে নিজের মতো কাউকে না পেয়ে নিজেকে আসলেই বড় একা ভাববে।
যে সুখের উৎস মূর্খতা তা চাই নে। ওটা বড়ই বিপজ্জনক।
লিখেছেন ভালো তবে এর বিপক্ষে অনেক আর্গুমেন্ট দাঁড় করান সম্ভব।
সাধারন ভাবে মূল আর্গুমেন্ট যুক্তিপূর্ন।