একটি সুন্দর ষড়যন্ত্র হচ্ছে এক শ্রেনীর নারীকে অপর শ্রেণীর নারীর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে। এইভাবে কর্মজীবি নারীর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া হয় গৃহিণীকে । পুরুষ বিচরণ করে ঘরে বাইরে—দু’জগতেই। আর নিজের ক্ষমতা দিয়ে নারীকে দু’দলে লিপ্ত রাখে চিরশত্রুতায়।
বাড়ীর প্রগতিশীল পরিবেশে আমি বড় হবার কারণেই ছোটোবড় সবার কথার যথেষ্ট মূল্য দেয়া হতো। বিভিন্ন ঘটনাবলী, নানা ব্যপার, যা অনেকেই পাশ কাটিয়ে যেত আমি তা পারতাম না। সে কথা থাক।
গত ২১ জুন বুধবার রাত আটটায় এক ঘটনা (দৈনিক প্রথম আলো ) জানলাম আলমডাঙ্গা বলে এক ছোট অঞ্চলে ক্লাস টু’তে পড়া এক মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে মা ভালো রান্নার আয়োজনে ব্যস্ত। মেয়েটির পিতা কাজি অফিসে গেল হবু জামাইটিকে সাথে নিয়ে। কর্মরত নির্বাহী কর্মকর্তা খবরটি রিপোর্টারের মাধ্যমে জানার পরই নির্বাহী কর্মকর্তা কাজি অফিসে যাবার পথে তাদের আটক করেন। কন্যাটির মাতা এই খবর পেয়ে বিলাপ শুরু করেন: কেন মেয়েটির বিয়ে ভেঙ্গে দেয়া হল? মেয়ের মায়ের বক্তব্য হল- দুইদিন আগে হোক বা পরে হোক, মেয়ের বিয়ে দিতে হবে; অতএব এখন বিয়ে দিতে সমস্যা কোথায় ? বাল্য বিবাহের কু-ফল এবংশাস্তি যাই হোক, এসব বিষয়ে তাদের মাথা ব্যথা নাই। বিয়ে ভাঙ্গার পর মেয়েটির মুখ হাস্যজ্জল হল।তার প্রথম কথা“ কাল থেকে আবার স্কুলে যাবো পড়াশোনা করব।”
দেখা যাচ্ছে, সচেতনতার অভাব ও নানা প্রতিবন্ধকতার কারনে এখনো মেয়েদের অবস্থান কোথায় ? যুগযুগ ধরে এ ঘটনা ঘটে আসছে।
নারীর প্রতি সহিংস আচরনের উৎপত্তি আজ নয় । যুগযুগ ধরে এ ঘটনা ঘটে আসছে। গত কয়েক দশকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সমাজ ব্যবস্থার আমূ্ল পরিবর্তণ হলেও আমাদের নারীরা আজো নিগৃহীত।
দেখুন এই ঘটনাটি: ( ২০০০ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারী বেলা ১টা ) ফেরদৌসী আক্তার (দিনাজপুর) তার সহপাঠীর বিয়ের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় ছেলেটি বাড়ীর পেছন দিক দিয়ে ঢুকে এসিড নিক্ষেপ করে মেয়েটির প্রতি। ঝলসে যায় মেয়েটির হাত, পা। গলে গেল তার দুই চোখ। দেড় মাস চিকিৎসা শেষেও দৃষ্টি শক্তি আর ফিরে পায়নি মেয়েটি। এর পরও মেয়েটি ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা চালিয়ে যায়। বাধা বিপত্তি পেরিয়ে ২০০৬ সালে এইচ এস সি পাশ করে বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষনা ইন্সটিটিউটে(সম্মান) পড়াশোনা করছে মেয়েটি।
২০ এপ্রিল ২০০৭ একটি টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান আপ্রান চেষ্টা করছিল একজন মেয়ের পোড়া মুখখানি যেনো দর্শকের নজরে না পড়ে। কিন্তু মাইক্রোফোনটা মুখের কাছে ধরতেই অনেক জাগা জুড়ে বিভৎস মুখখানি নজরে এলো। মেয়েটি কফিন সদৃশ সাদা বিছানায় পড়ে আছে। মেয়েটির জীবনই ভ্রাম্যমান কফিন। ছয় মাসের গর্ভবতী এই নারীকে ৫০ হাজার টাকার জন্য কেরোসিনের আগুনে পুড়তে হল। কেবল তাই নয়, সেই সাথে অর্ধেক বেড়ে ওঠা ভ্রুণটিকেও মেরে ফেলা হোল।
এই বাংলাদেশেই তো কত বিখ্যাত গুনীজন আছেন। উঠতে বসতে তাঁরা নারী উন্নয়নের কথা বলেন। নির্বিঘ্নে আমরা এসব দেখি। কতো মিটিং, মিছিল হচ্ছে নারীদের ভাগ্যের উন্নতির জন্যে। কিন্তু এসব কিছুর ফলাফল শূন্য।
এখন আবার আস যাক, যে কথা শুরুতে বলেছিলাম।
এক শ্রেনীর বিরুদ্ধে অপর শ্রেনী নারীকে কলহে লিপ্ত করার চেষ্টা বহু কূফল বয়ে বেড়াতে হচ্ছে নারী সমাজকেই।
পুরুষের শরীর পেশল হয়। এটা জৈবিক, তবে আধুনিক কালে পেশীর মুল্য একেবারেই কমে গেছে। এখনও নারী যেহেতু আর্থিকভাবে পুরুষ নির্ভর, তাই যে কোন শ্রেনীর সাথে তার সম্পর্ক হয় অস্থির ও অনিশ্চিত। এই জন্যেই কোটিপতির স্ত্রী একদিনে দাসী হয়ে যেতে পারে। তাই তারা পরগাছার মত জীবন ধারন করে হয় পরগাছার পরগাছা। নিজেদের রক্ষার জন্যে এই সব হতভাগীনিরা হয়ে ওঠে প্রচন্ড সংরক্ষনশীল। এই নারীরা মেনে নেয় যেমন দাস প্রভুর সমৃদ্ধিকে মনে করে নিজের সমৃদ্ধি। এই জন্যেই পুরুষ শানীত নারী অপেক্ষা নির্বোধ নারীকে পছন্দ করে। আর নির্বুদ্ধিতাকে রমণীয় বলে প্রশংসা করে।
যখনই সেই শানিত নারীটি প্রতিবাদী হয়ে ওঠে, হয়ে ওঠে সচেতন, তখন তার ভাগ্যে নেমে আসে অন্ধকারের অমানিশা, এসিড নিক্ষেপ, দৈহিক নির্যাতন, ধর্ষণ ইত্যাদি। কোনো মেয়ে অত্যাচারিত হলে আমরা মেয়েরাই প্রায়শঃ বলি যে মেয়েটারই দোষ। আমরা মেয়েরাই দু’দলে বিভক্ত হয়ে কলহ করি। কেননা, এ কলহের সূ্ত্রধর পুরুষ দ্বারা তৈরী এবং তারা তখন নিরাপদ দূ্রত্বে বসে কেবল কলহে লিপ্ত নারীদের তামাশা উপভোগ করে।
নারীর প্রতি সহিংস আচরনের উৎপত্তি আজ নতুন নয়। যুগ যুগ ধরে ঘটে আসছে নানা ঘটনা। কোন মেয়ে হোস্টেলে একা থাকলে প্রতিবেশীরা তাকে বাঁকা চোখে দেখে। এদের মাঝে দেখা গেছে মহিলা, বা গৃহিনীর সংখ্যাই বেশী। একা থাকে এক মেয়ে যার নাম মৌ (ছদ্বনাম)। সপ্তাহের তিন দিনই দেখা যায় কেউ না কেউ—ভাই, বোন আসে তাকে দেখার জন্যে। তথাপি প্রতিবেশী মহিলারা মৌকে “পতিতা” বলতেও বাকী রাখেনা।
মায়েরা তাদের নিজেদের কন্যাকে মিশতে দেয়না হস্টেলে থাকা ঐ মেয়েটির সাথে।
আজ যে শাশুড়ী, কোন এক সময় সেও যে বউ ছিল ভুলে যায় তা। কিন্তু চিরন্তন রীতি আজও বদলায়নি। আজও দেখা যায় শাশুড়ী দ্বারা বহু বউ নিগৃহীত হচ্ছে। অথবা শাশুড়ীর নিপীড়ন হয় আধুনিক বউএর নিকট হতে।
নারী দ্বারা নারী নির্যাতনের বহু ঘটনাই আছে যা ছোট আকারে বলে শেষ করা যায়না। তাই দেখা যায় যে নারীর শত্রু শুধু পুরুষই নয়। তাদের শত্রু হিসেবে রয়েছে পুরুষ মন্ত্রে দীক্ষিতা একপাল নারীও। এরা পূ্রুষের চর হিসেবে কাজ করে নারীর সাংঘাতিক ক্ষতি করে।
তথ্য সূত্র – হমায়ূন আজাদ (নারী )
আপনার লিখাটি পড়ে ভাল লাগলো।
জানেন মহানবীর সম্পূর্ণ জীবনটাই হাদিস? মনে হয় জানেন?
জানেন একটা হাদিসকে ব্যাখ্যা করতে হলে কতকিছু জানতে হয়? কত দিক চিন্তা করতে হয়? মনে হয় জানেন না।
ইললামে বোরকা পড়ে পর্দার কথা নেই। এইটা আমাদের করে নেওয়া। ইসলামে পর্দার মূল কথা হল নারী ও পুরুষকে তার সতর ঢেকে চলতে হবে। নারীর জন্য সতরটা একটু বেশি।
পর্দা নারী ও পুরুষ সবার জন্যই ফরজ। সেটা আপনাদের মত মানুষগুলো জানেনা। পর্দাকে নারীর সাথে যুক্ত তা নিয়ে বেহুদা তর্ক করে।
আমার বোন পর্দ করে চলে। তাই বলে সে কিন্তু ঘরে বসে থাকে না। আমার বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরীরত।
ইসলামকে ধর্ম জানলে এর চাইতে বেশি বোঝা আপনার জন্য সম্ভব নয়।
ইসলাম একটি জীবন ব্যবস্থা।
যে সময় নারীকে জন্মের পর জীবন্ত কবর দেওয়া হত সেই সময় ইসলাম ঘোষনা করলো যে তার তিনটি মেয়েকে ভালভাবে মানুষ করলো সে যেন বেহেস্তের নিশ্চয়তা পেল। ছেলেদের ব্যাপারে কিন্তু এই রকম বলা নেই। তাই বলে কি আমাদের অপমান করলো।
নারীকে জীবন্ত কবর দেওয়া শুধু বন্ধই করলো না তাকে উত্তরাধিকার বানানো হল। আপনি বলবেন বাবার সম্পত্তির অর্ধেক দিয়ে নারীকে অধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু নারী ইসলামে ৮ স্থান থেকে সম্পত্তি পায়। যেখানে পুরুষ পায় ৫ স্থান থেকে। জানেন? মনে হয় না। আমি পুরুস হয়ে কিন্তু এইটা ভবিনাযে ইসলাম পুরুষকে ঠকিয়েছে।
ধর্মকে হাজারবার কসতে থাকলে মনে হয়তবা শান্তি পাবেন। কিন্তু তাতে নারীর কোন লাভ হবে ন।
ভাবছিলাম এই ক্যাচালে ঢুকবো না। কিন্তু বিপ্লব, বন্যা আর অন্যান্যদের উত্তর-প্রত্যত্তরের পর কিছু কথা লেখার তাগিদ অনুভব করছি।আমি আমার বক্তব্য দিচ্ছি বিবর্তন মনোবিদ্যা বা ইভলুশনারী সাইকোলজির সাম্প্রতিক গবেষণার উপর ভিত্তি করে, আমার নিজস্ব কোন অনুমানের উপর নয়।
প্রথমতঃ বিপ্লব যেটা বলার চেষ্টা করেছে, নারী থেকে নারীর প্রতিযোগিতা থেকেই হিংসা। শুনে মনে হতে পারে হিংসা ব্যাপারটা নারীর একচেটিয়া। আধুনিক বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের উপসংহার কিন্তু ভিন্ন। একটু ব্যাখ্যা করি।
বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের অনুকল্প অনুযায়ী যৌনতা সংক্রান্ত হিংসা কিংবা ঈর্ষার ব্যাপারটি আসলে (বায়োলজিকালি) পুরুষদের একচেটিয়া হবার কথা। সেই ঈর্ষাকে নামাঙ্কিত করা হয়েছে ‘স্কেসুয়াল জেলাসি’ হিসেবে। কেন? কারণ হচ্ছে, সঙ্গমের পর গর্ভধারণ এবং বাচ্চা প্রসবের পুরো প্রক্রিয়াটা নারীরাই নিজেদের মধ্যে ধারণ করে, পুরুষদের আর কোন ভূমিকা থাকে না। ফলে এই বায়োলজিকাল এই প্রক্রিয়ার জন্যই পুরুষরা নিজেদের পিতৃত্ব নিয়ে কখনোই ‘পুরোপুরি’ নিশ্চিত হতে পারে না। আধুনিক ‘ডিএনএ’ টেস্ট আসার আগ পর্যন্ত আসলে কোন পুরুষের পক্ষে একশত ভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলা সম্ভব ছিলো না যে তিনি তার সন্তানের পিতা। কিন্তু মাতৃত্বের ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়। মাকে যেহেতু গর্ভধারণ করতে হয়, প্রত্যেক মাই জানে যে সেই তার সন্তানের মা। অর্থাৎ, পিতৃত্বের ব্যাপারটা শতভাগ নিশ্চিত না হলেও মাতৃত্বের ব্যাপারটা নিশ্চিত। এখন চিন্তা করে দেখি – মানুষ যখন বনে জঙ্গলে ছিলো – হান্টার-গ্যাদারার হিসেবে জীবন চালাতো, তখন কোন সুনিয়ন্ত্রিত একগামী পরিবার ছিলো না। ফলে পুরুষদের আরো সমস্যা হত নিজেদের ‘পিতৃত্ব’ নিয়ে। পিতৃত্বের ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেলফিশ জিনের ধারকেরা সেলফিশভাবেই চাইবে তার দেহেরই প্রতিলিপি তৈরি হোক। কিন্তু চাইলেই যে নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে তা তো নয়। সম্পর্কে প্রতারণা হয়। তার স্ত্রী যে অন্য কারো সাথে সম্পর্ক তৈরি করে গর্ভ ধারণ করবে না, তা সে কিভাবে নিশ্চিত করবে? আদিম বণ জঙ্গলের কথা বাদ দেই আধুনিক জীবনেও প্রতারণার ব্যাপারটা অজানা নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকায় শতকরা প্রায় ১৩ থেকে ২০ ভাগ পুরুষ অন্যের সন্তানকে ‘নিজ সন্তান’ ভেবে পরিবারে বড় করে। জার্মানীতে সেই সংখ্যা ৯ থেকে ১৭ ভাগ, ইত্যাদি। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় অন্যের (অর্থাৎ নন- জেনেটিক) সন্তানকে নিজ সন্তান ভেবে বড় করার এই প্রতারণাকে বলা হয় কাকোল্ড্রি (cuckoldry)। এখন কথা হচ্ছে, বায়োলজিকালি এর প্রভাব কি? প্রভাব হচ্ছে, কাকোল্ড্রি ঘটলে সেটা পুরুষের জন্য এক ধরণের অপচয়। কারণ সে ভুল ভাবে অন্যের জিনের প্রতিলিপি নিজের প্রতিলিপি হিসেবে পালন করে। এর ফলে নিজের জিন জনপুঞ্জে না ছড়িয়ে সুবিধা করে দেয় অন্যের জিন সঞ্চালনের, যেটা ‘সেলফিশ জিন’ পরতপক্ষে চাইবে না ঘটতে দিতে। ফলাফল? ফলাফল হচ্ছে, পুরুষেরা মূলতঃ ‘সেক্সুয়ালি জেলাস’ হিসেবে বেড়ে উঠে। তারা নিশ্চিত করতে চায় যে, তার পার্টনার বা স্ত্রী, কেবল তার সাথেই সম্পর্ক রাখুক, অন্য পুরুষের স্মপর্ক এড়িয়ে কেবল তার সাথেই চলুক। এইটা বজায় রাখতে পারলেই সে শতভাগ না হোক, অন্ততঃ মানসিক নিশ্চয়তা পাবে যে, তার সম্পর্কে কাকোল্ড্রি ঘটার সম্ভাবনা কম। এজন্যই ইসলামিক দেশগুলোতে কিংবা অনুরূপ ট্রেডিশনাল সমাজগুলোতে মেয়েদের হিজাব পরানো হয়, বোরখা পরানো হয়, কিংবা গৃহে অবরুদ্ধ রাখা হয়, বাইরে কাজ করতে দেয়া হয় না – এগুলো আসলে প্রকারন্তরে পুরুষতান্ত্রিক ‘সেক্সুয়াল জেলাসি’রই বহিঃপ্রকাশ। আসলে এগুলো করার মাধ্যমে পুরুষেরা নিশ্চিত করতে চায় যে, কেবল তার জিনের প্রতিলিপিই তার স্ত্রীর শরীরে তৈরি হোক, অন্য কারো নয়। কারণ কাকোল্ড্রি ঘটলে সেটা তার সময় এবং অর্থের অপচয়। আমি এলেন মিলার এবং সাতোসি কানাজাওয়ার বই থেকে উল্লেখ করি –
In evolutionary terms, men who are cuckolded and invest their financial and emotional resources in offspring of other men end up wasting these resources, as their genes will not be represented in the next generation. For this reason, men have a strong evolutionary reason to be sexually jealous, while women, whose maternity is always certain, do not.
পুরুষদের ঈর্ষার ব্যাপারটা না হয় বোঝা গেল। কিন্তু মেয়েদেরটা? মেয়েদেরও ঈর্ষা হয়, তবে সেটা সেক্সুয়াল জেলাসি নয়। মেয়েরা বিবর্তনীয় পটভুমিকায় একজন পুরুষকে রিসোর্স হিসেবে দেখে এসেছে। কাজেই একজন পুরুষ সেক্সুয়ালি আরেজন মেয়ের সাথে সম্পর্ক করলে মেয়েরা যত না ঈর্ষান্বিত হয়, তার চেয়ে বেশি হয় তার স্বামী বা পার্টনার কারো সাথে রোমান্টিক কিংবা ‘ইমোশনাল’ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে। ডেভিড বাস, ওয়েসেন এবং লারসেনের নানা গবেষনায় এর সত্যতা মিলেছে। যেমন, এই পেপারটার কথা বলা যায় – Buss, D.M., Larsen, R.J., Westen, D., & Semmelroth, J. (1992). Sex differences in jealousy: Evolution, physiology, and psychology. Psychological Science , 3:251-5 ইত্যাদি।
আরো একটা ব্যাপার বলে রাখি। আমি উপরে আপর্থিব এবং স্নিগ্ধার মন্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেও বলছি – ‘পুরুষ ও নারীদের বংশাণুর মধ্যে কোন তফাত নেই’ বলে ঢালাওভাবে অজ্ঞাতভাবেই ‘সাম্যবাদ’ প্রচার করা হয়েছে তা বোধ হয় ঠিক নয়। আসলে বায়োলজিকালি ডিম্বানু এবং শুক্রানু আলাদা। আকার, আয়তন প্রাচুর্য, বৈশিষ্ট – সব কিছুতেই। পুরুষের স্পার্ম উৎপন্ন হয় হাজার হাজার, আর সেতুলনায় ডিম্বানু উৎপন্ন হয় কম। ডিম্বানুর আকার শুক্রানুর চেয়ে বড় হয় অনেক। অর্থাৎ, বায়োলজিকালি চিন্তা করলে ‘sperm is cheap’ আর ‘egg is valuable’। স্পার্ম চিপ বলেই (সাধারণভাবে) পুরুষদের একটা প্রবণতা থাকে বহু সংখ্যক জায়গায় তার প্রতিলিপি ছড়ানোর। সেজন্য তথাকথিত আধুনিক ‘মনোগোমাস’ সমাজেও দেখা যায় পুরুষেরাই বেশি প্রতারণা করে সম্পর্কে, আর ট্রেডিশনাল সোসাইটিগুলোতে হারেম রাখার কিংবা শক্তিশালী সেনাপতিদের যুদ্ধ জয়ের পর নারী অধিকারের উদাহরণগুলোর কথা না হয় বাদই দিলাম। এগ ভালুয়েবল বলেই প্রকৃতিতে women are choosy, তারা নিশ্চিত করতে চায় কেবল উৎকৃষ্ট জিনের দ্বারাই যেন তার ডিম্বানুর নিষেক ঘটে। পুরুষেরা যে সংস্কৃতি নির্বিশেষে মেয়েদের চেয়ে বেশি ভায়োলেন্ট, বেশি প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের হয় কিংবা পর্ণগ্রাফির বেশি ভক্ত – এগুলো কেবল সোশাল সায়েন্সের মডেল কিংবা সংস্কৃতির ধুয়া তুলে দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না।
বিষয়টা ইন্টারেস্টিং। খুব বেশি সময় নেই, না হলে আরো কিছু লেখা যেত। মূল কথা হচ্ছে আমরা যত হাদিসের রেফারেন্স দেই কিংবা কোরান নিয়ে পড়ে থাকি না কেন, কিংবা স্ট্যান্ডার্ড সোশাল সায়েন্সের মডেল কিংবা অন্য সামাজিক দৃষ্টি কোন থেকে ব্যাখ্যা দেয়া গেলেও বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানই সঠিকভাবে বলতে পারে কেন সামাজিক ছকগুলো ঠিক এমনভাবেই আবর্তিত হয়। আমি মুক্তান্বেষার এবারের ষষ্ঠ সংখ্যায় এ নিয়ে বিস্তারিত লিখেছি। সেটাও পড়া যেতে পারে।
সবাইকে ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
সঠিক পর্য্যবেক্ষন।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এমন চমতকার এবং যুক্তিপুর্ন বিশ্লেষনের জন্য। :yes:
@অভিজিৎ দাদা –
”
চরম সত্য কথা – :yes:
@ একা
আমি লক্ষ্য করেছি এবং চাক্ষুস দেখেছি- প্রথমটি গ্রামের দিকে বেশি হয়। আর দ্বিতীয়টি শহরের দিকে হয়।
ধুস কি সব আলোচনা।
হিংসা ছাড়া নারীর নির্মানই সম্পূর্ন না। বিবর্তনের কারনে নারীর চাই উন্নততর পুরুষ, যাতে তার সন্তানদের রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেস আরো ভাল হয়। ফলে নারীর মানসিকতার মধ্যেই পুরুষদের মাথা ঘুরিয়ে দাও টাইপের একটা ব্যাপার থাকে-কারন সারভাইভাল স্ট্রাটেজি হিসাবে সেটা দরকার। এবার সব নারীরই সেটা দরকার-ফলে নারী বনাম নারীর প্রতিযোগিতা সর্বত্র-সেখান থেকেই হিংসা।
এগুলো বিবর্তনের জন্যেই এসেছে-থাকা দরকার ও।
@বিপ্লব,
তোমার এই ধরণের চরম যান্ত্রিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাগুলো পড়ে আমি মাঝে মাঝে হা হয়ে থাকি! বিবর্তনের ফলে তুমি যে কি ইউনিক এক প্রজাতিতে পরিণত হয়ে যাচ্ছো কে জানে! তুমি কি আসলেই এসব কথা বলে মজা দেখো নাকি মিন করে বলো তা এখনও বুঝে উঠতে পারলাম না। তোমার সাথে কথা বলার সময় তো তোমাকে এত উদ্ভট মনে হয় না :-Y
@বন্যা আহমেদ,
১। বিবর্তনের জন্যে নারীর দরকার শক্তিশালী পুরুষ-আসলে একাধিক পুরুষ। কারন একটি পুরুষের সাথে সন্তান হলে, জেনেটিক্যালি মিউটেশন ভাল নাও হতে পারে-তাই সারভাইভাল গেমের জন্যে একাধিক সমর্থ পুরুষ থেকে সন্তান নেওয়াটাই বিবর্তনের জন্যে ভাল। এই জন্যে নারী বহুগামী। সেই একই কারনে পুরুষ ও বহুগামী।
২| কিন্ত বহুগামিতার প্রকাশ নারী ও পুরুষে আলাদা। আগেকার দিনে পুরুষ যুদ্ধ করে একাধিক নারী হাসিল করত-এখন করে টাকা দিয়ে।
৩| কিন্ত বিবর্তনের মায়া খেলাতে নারী শক্তি এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা কোন দিনই পায় নি। ইন্দিরা গান্ধীর মতন মহিলা ব্যাতিক্রম। ফলে নারীর একাধিক পুরুষ দখল করার একমাত্র উপায় নারী সুলভ মায়াজালের বিস্তার-মানে পুরুষের মাথা ঘুরিয়ে দিয়ে আকৃষ্ট কর। এবং এই ব্যাপারে নারী বনাম নারীর প্রতিযোগিতা চলে সমাজ ও জ়ীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে।
৪| ঠিক এই কারনেই একজন নারী অন্যজনকে হিংসা করে-শত্রু হয়ে ওঠে। সবটাই পুরুষ দখলের বিবর্তনের মায়াখেলা।
****
আমি এর সমর্থনে জার্নাল পেপার ডাউনলোড করে দিতে পারি!
রাত অনেক গভীর-তাই আর বাম্প করলাম না! :guru:
@বিপ্লব পাল,
ইন্দিরা গান্ধীর মতন মহিলারা ব্যাতিক্রম না হয়ে সংখ্যায় যখন বাড়বে (অবশ্যই বাড়বে), তখন সারভাইভাল ফিটনেস ধরে রাখার জন্য সারভাইভাল স্ট্রাটেজির পরিবর্তন হবে আর মেয়েরাই তখন সারভাইভাল গেমটা খেলবে। পুরুষমানুষের জন্য এটা একটা শুভ লক্ষন যে সারভাইভাল ফিটনেস রক্ষার জন্য তাঁদের আর এখনকার মতো দিনে-রাত্রে বিরাট রকমের চিন্তা-ভাবনা করার প্রয়োজন হবেনা।
বিপ্লব রহমান ও অভিজিৎ এর সাথে সহমত।
আর এ পুরুষতন্ত্রকেই ভেঙ্গে ফেলার জন্যে নারীবাদীরা আন্দোলন করে।
একা,
আপনার লেখাটি পড়তে পড়তে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইসের কথা মনে পড়ছিল। লক্ষ্যনীয়, তিনি একই সঙ্গে একজন নারী ও কালো মানুষ। নারী হিসেবে তার ওপর রয়েছে কয়েক হাজার বছরের শোষন-নির্যাতন। আবার নারী হিসেবেও তাই।
কিন্তু একজন কন্ডোলিৎসা যখন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি জর্জ ডাব্লিউ বুশের পক্ষে ইরাকে বোমা হামলার নির্দেশ দেন, তখন তিনি আর শোষিত মানুষের পক্ষে থাকেন না। এমন কি নির্যাতত নারীর প্রতিভূও থাকেন না। ক্ষমতা হচ্ছে এরকমই এক হাতিয়ার।
আরো ছোট পরিসরে, পরিবারে যে শাশুড়ি গৃহবধূকে অথবা যে গৃহবধূ গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতন করেন, তিনিও কিন্তু পরিবারে হয়ে উঠেন একেকজন ছোট মাপের কন্ডোলিৎসা রাইস। তবে এ ক্ষেত্রে তার ক্ষমতার উৎস কিন্তু রাষ্ট্র নয়, বরং সম্পত্তি, স্বামী বা ছেলে, অর্থাৎ পুরুষতন্ত্র।
এ পর্যায়ে নারী নির্যাতনের মাত্রাটি একটু ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে ভেবে দেখার জন্য আপনাকে বিনীত অনুরোধ জানাই। ভাবনাটিকে উস্কে দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
@বিপ্লব রহমান,
:yes:
এর চেয়ে চমৎকারভাবে কি করে ব্যখ্যা করা যেত তা আমি জানি না।
@বিপ্লব রহমান,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ । 🙂
একার প্রবন্ধটি কিছুটা বিতর্কমূলক—তা ঠিক, তবে আমার মনে হয় মেয়েদের অর্থনৈতিক মূক্তিই হচ্ছে সর্ব প্রকার অত্যাচার থেকে পরিত্রানের পথ।
উদ্ধৃটি আমার কাছে খুবই যথাযোগ্য মনে হয়েছে।
@আবুল কাশেম, ভাই ,
”
আপনার কথা সাথে সম্পুর্ণ একমত পোষন করে আবার বলছি ।
অর্থনৈ্তিক স্বাধীনতা সব সময় যে
ফলাফল ভালো কিছু বয়ে আনছে তা কিন্তু নয় । বিশেষ দরকার আমাদের সামাজিক দৃষ্টি ভঙ্গি বদল করা । দেখা যাচ্ছে অর্থনৈ্তিক দিক দিয়ে স্বাধীন নারী ও কিন্তু সামাজিক পেষনে পিষ্ঠ। সুতরাং ,আবার পরিস্থিতি যে তিমিরে সেই তিমিরেই থাকছে । প্রয়োজন ধর্মিয় বেড়াজাল থেকে মুক্তি , তাহলে ই দেখা যাবে অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে ।
আপনাকে ধন্যবাদ সময় অপচয় করে আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় সামিল হবার জন্য ।
@একা,
খুবই আগ্রহ উদ্দীপক কথাবার্তা। কৌতুহল জাগলো মনে। কীভাবে জানলেন যে ধর্মীয় বেড়াজাল থেকে মুক্তি পেলেই অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? কী করে নিশ্চিত হলেন এতটা? বাকী অর্ধেক সমস্যার সমাধানই বা কীভাবে হবে? আশা করি এ বিষয়টা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন।
আপনার লেখার কোনটা আপনার বিশ্লেষণ আর কোনটা হুমায়ুন আজাদের কথা সেটা বুঝতে পারছি না। দয়া করে হুমায়ুন আজাদের অংশগুলো উদ্ধৃতির মধ্যে পুরে দেবেন কী? তাহলে অন্তত আপনার ভাবনাটা বুঝতে সুবিধা হতো। এই লেখায় আমার কাছে হুমায়ুন আজাদের উক্তির চেয়ে আপনার চিন্তা-ভাবনাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এই লেখার শিরোনাম এবং বিষয়বস্তুকে যদি পুরুষ বিদ্বেষী হিসেবে আমি আখ্যায়িত করি তাহলে কী আমাকে দোষ দেয়া যাবে? আমি নিজে একজন পুরুষ, নির্বিবাদী পুরুষ। মেয়েদের পরম কোন বন্ধু হয়তো নই। কিন্তু তাই বলে মেয়েদের শত্রু হিসাবেও নিজেকে ভাবতে পারছি না কিছুতেই। অথচ আপনার লেখার মাধ্যমে আমাকে আপনি নারীর শত্রুই বানিয়ে ছেড়েছেন। আমি যদি এরকম নারী বিদ্বেষী শিরোনাম দিয়ে ঢালাওভাবে সব মেয়েদেরকে এক কাতারে ফেলে তাদের দোষারোপ করে কোন লেখা লিখি তাহলে আমাকে কী কেউ বিন্দুমাত্রও ছাড় দেবে?
খাঁটি কথা বলেছেন। বন্যা আর স্নিগ্ধাই হচ্ছে তার জ্বলন্ত প্রমাণ। 😀
@ফরিদ আহমেদ,
হায়, ফরিদ ভাই, হায়!!!! শেষ পর্যন্ত বন্যা কিনা আপনার চোখেও ধুলো দিলো? 🙁 আরে, বন্যা নিজে বড় চাকরি করে বলে যে সারাক্ষণই আমার ক্যারিয়ারের দুরাবস্থা নিয়ে কুকথা বলে (শ্রেণীবৈষম্য), মুক্তমনা নিয়ে কোন কথা বলতে গেলেই যে মডারেটরদের বলে আমার সদস্যপদ বাতিল করে দেয়ার হুমকি দেয় (ক্ষমতার অপব্যবহার), আর সবচাইতে দুঃখের কথা – একদিন বিবর্তনের চেইনে টিকটিকি আগে না তেলাপোকা আগে জিজ্ঞেস করাতে যে আমাকে ভয়ংকর অপমান করলো (অসহায় একজন অ-জ্ঞানী নারীকে হেয় প্রতিপন্ন করা) এসব কিছুই কি আপনি গোণায় ধরবেন না?!
এই লাগাতার মানসিক নির্যাতনের কি তাহলে কোনই সুরাহা হবে না? কোনদিন না? :-Y
@স্নিগ্ধা,
:lotpot: :lotpot: :lotpot:
@স্নিগ্ধা, আহারে, স্নিগ্ধা, তোর মত অসহায় ‘নারী’ আর আছে নাকি!!!!!!!!!!!
@স্নিগ্ধা,
আপনিতো দেখছি বিরাট গ্যাড়াকলে পড়েছেন। যতদিন পুরুষ আর পুরুষতন্ত্র এই দুনিয়াতে আছে ততদিন আমিতো কোন সুরাহাই দেখছি না।
বন্যা যে আপনাকে এরকম নির্যাতন করে এটা আসলে বিশাল এক ষড়যন্ত্রেরই অংশ। একা তার প্রবন্ধের শুরুতেই কিন্তু সেই ষড়যন্ত্রের আভাস দিয়েছেন।
আমার মনে হচ্ছে বন্যার আপনার পিছনে এই ক্রমাগত লেগে থাকার, আপনাকে অহরহ অপমান এবং নির্যাতন করার মূলে ঘরে বাইরে বিচরণ করা পুরুষ তথা ক্ষমতাবান অভির চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্রই আসল। 😉
@ফরিদ আহমেদ,
আপনার অনেক প্রশ্নের জবাব আমি স্নিগ্ধা কে দিয়েছি আপনি অনুগ্রহ করে পড়ে নেবেন কি ?
আর হুমায়ূন আজাদের নারী থেকে আমি ভাবাংশ নিয়েছি । আপনাকে ধন্যবাদ ।
একা,
‘মেয়েরাই মেয়েদের শত্রু’ জাতীয় প্রচলিত কথাগুলোকে আমার খুব সরলীকরণ বলে মনে হয়। আমি আসলে মনে করি (আগেও বেশ কয়েকটা পোষ্টে বলেছি), সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত মেয়েদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। একটা উদাহরণ দেই, আপনি যে ছোট্ট মেয়েটার বিয়ের কথা বলেছেন, সেই মেয়েটারই যদি বড় হয়ে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে একটা ছেলের মতই অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীনতা পাওয়ার সুযোগ থাকতো তাহলে হয়তো তার মা এই ‘বিয়ে দিয়ে দেওয়াকেই’ একমাত্র সমাধান বলে মনে করতো না। এখানে একটা মেয়ে আরেকটা মেয়েকে কিভাবে দেখছে এবং কি বলছে সেটা খুবই ছোট সমস্যা। আবার ধরুন, শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় আসে তারা নারীদের প্রতিনিধিত্ব করে না, তারা বরং বর্তমান পুরুষতান্ত্রিক সমাজের রাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবেই কাজ করে। তারা কি ইচ্ছা করলেই মেয়েদের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে, আমাদের দেশের ধর্মভিত্তিক চরম বৈষম্যমূলক পারিবারিক আইনে সংশোধন আনতে পারবে? প্রথমতঃ তাদের ইচ্ছাই হবে না, দ্বিতীয়ত ইচ্ছা থাকলেও তারা সেটা করে উঠতে পারবে না। আমাদের সমাজে একটা মেয়ের একা সাবলম্বী হয়ে হোষ্টেলে থাকাকে ভালো চোঁখে দেখা হয় না তার পিছনে কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজের দৃষ্টিভঙ্গীই দায়ী, আশে পাশের মেয়েরা কি বললো বা কিভাবে দেখলো তার চেয়ে অনেক বেশী দায়ী এই সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গী। রাষ্ট্র এবং সমাজ যতক্ষণ পর্যন্ত মেয়েদের সমানাধিকার না দিবে ততক্ষণ পর্যন্ত মেয়েদের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। স্নিগ্ধা এবং অপার্থিব এর সাথে একমত পোষণ করেই বলছি, নারী হলেই নারীর সাথে ভালো থাকতে হবে এমনটা আশা করাই তো ঠিক নয়, মানব চরিত্রের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলো নারী এবং পুরুষ দু’জনার মধ্যেই সমানভাবে বিরাজ করে। এখানে মেয়েদের আলাদা করে দেখাটাই তো ভুল দৃষ্টিভঙ্গীর বহিপ্রকাশ।
@বন্যা আহমেদ,
”
” এই ধরণের মতবাদ বা বিতর্ককে স্বাগতম । 🙂
একা,
আসলে আমাদের সমাজে নারীদের সম্মান দেয়া হয়না।
এটাই বাস্তবতা!
পশ্চিমে দেখবেন ছেলেরা তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নেমে দরজা খুলে দাঁড়ায়।
কোথাও গেলে কোট খুলে নেওয়া আতিথেয়তার প্রকাশ!
আমাদের সার্টিফিকেট আছে, কিন্তু সামাজিক,ব্যাবহারি্ক, মেয়েদের সম্মান করার শিক্ষা,
মেয়েদের সমঅধিকার দেয়ার শিক্ষা অতটা নেই!
এতে ভারতীয় উপমহাদেশের ঐতিহ্য, সমাজব্যবস্থার কোন প্রভাব থাকতে পারে!
আর সেটা খুব উজ্জল নয় এই উপমহাদেশে।
আর মেয়েরা যেহেতু এই প্রক্রিয়ার মধ্যে বেড়ে উঠছে, এর বাইরে তারা কিছু শিখছেনা!
পরবর্তিকালে এসবই নিজেদের পরিবারে প্রয়োগ করছে।
ব্যতিক্রম যে নেই তা না!
কেন আমাদের সমাজ এত নারীবিদ্বেষী! এটা গবেষণার বিষয় হতে পারে!
ধন্যবাদ!
@লাইজু নাহার,
আপনার উক্তি
যথার্থ বলেছেন ।
একা – পোস্টের বিষয়বস্তু আলোচনার যোগ্য হলেও, শিরোনামের সাথে দ্বিমত পোষণ করছি। নারীর শত্রু ‘পুরুষ’ – এটা ভাবার চাইতে, আমি নারীর শত্রু ‘পুরুষতন্ত্র’ এটা বেশি যৌক্তিক মনে করি। মানছি, পুরুষতন্ত্রের প্রণেতা পুরুষই, কিন্তু লিঙ্গ-বৈষম্য অধ্যুষিত সমাজব্যবস্থায় সেতো যে কোন তন্ত্র বা ধারণার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
এবং, সেকারণেই নারী বলেই যে সে অন্য নারীর প্রতি সবসময় সহ্নদয় আচরণ করবেই এমন কোন কথা থাকে না। ব্যাপারটা আমার কাছে পুরুষতন্ত্রেরই প্রসারণ। নারীরাও পুরুষতন্ত্রের ধারক হয়েই থাকেন। অবশ্য, সেক্ষেত্রেও পালটা যুক্তি রয়েছে যে বহু বছরের সামাজিক প্রচলন (norms) এবং লিঙ্গ-বৈষম্যের শিক্ষা (gender-socialization) নারী এবং পুরুষ উভয়কেই এভাবে ভাবতে শেখায়। সেটা ঠিক। কিন্তু, অপার্থিবের মতো আমিও মনে করি যে নারী মাত্রেই ‘নিষ্পাপ’ বা ‘ভিক্টিম’ বা ‘ইনট্রিনসিক্যালি ইনোসেন্ট’, এটা আসলে লিঙ্গভিত্তিক চিন্তাকেই ধারণ করে।
আর, একটা কথা বলি কিছু মনে করবেন না, এবং এটা নারীবাদ আমার প্রিয় বিষয় বলেই বলছি – লেখার পর পোস্ট করার আগে একটু পড়ে নিলে অনেক ছোটখাটো ভুল এড়ানো যায়। অনেক জায়গায় বাক্যগঠনে ঘাটতি রয়েছে, যেটা আপনার বক্তব্যকেও দুর্বল করে দিচ্ছে 🙂
আশা করছি ভবিষ্যতেও এ বিষয়ে আপনার লেখা পড়তে পারবো।
@স্নিগ্ধা,
আপনি বলেছেন ,
“নারীর শত্রু ‘পুরুষ’ – এটা ভাবার চাইতে, আমি নারীর শত্রু ‘পুরুষতন্ত্র’ এটা বেশি যৌক্তিক মনে করি। মানছি, পুরুষতন্ত্রের প্রণেতা পুরুষই, কিন্তু লিঙ্গ-বৈষম্য অধ্যুষিত সমাজব্যবস্থায় সেতো যে কোন তন্ত্র বা ধারণার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। “
হয়তো তাই হবে।আপাতাতঃ আমার কাছে যা গ্রহন যোগ্য তাই লিখেছি । ভবিষ্যতের জন্য আপনার কথা মাথায় রাখলাম ।আপনাকে ধন্যবাদ ।
@একা,
মন্তব্যের উত্তরের জন্য ধন্যবাদ! নিচে একটি প্রতিমন্তব্যে দেখলাম আপনি ধর্মীয় বেড়াজাল থেকে মুক্ত হলেই অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে মনে করছেন। এ ব্যাপারে আরেকটু ব্যাখ্যা করবেন কি? কারণ, আপনি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসলেও সামাজিক কারণে মেয়েরা নিগৃহীত হচ্ছে এবং পরিস্থিতি যে তিমিরে সে তিমিরেই থেকে যাচ্ছে বলছেন। তাহলে ধর্মই এক্ষেত্রে পুরুষকে নারীর শত্রু হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে বা সেক্ষেত্রে মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে? ধর্ম এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতা – এ দু’টোকে কি আপনি সমান গুরুত্ব দিচ্ছেন, নাকি কোন একটির প্রয়োজনীয়তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন?
@স্নিগ্ধা,
“আপনি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসলেও সামাজিক কারণে মেয়েরা নিগৃহীত হচ্ছে এবং পরিস্থিতি যে তিমিরে সে তিমিরেই থেকে যাচ্ছে বলছেন। তাহলে ধর্মই এক্ষেত্রে পুরুষকে নারীর শত্রু হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে বা সেক্ষেত্রে মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে? ধর্ম এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতা – এ দু’টোকে কি আপনি সমান গুরুত্ব দিচ্ছেন, নাকি কোন একটির প্রয়োজনীয়তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন? “
আপনার প্রশ্নের জবাব কিছুটা দিতে চাইছি ,
এখন মূ্ল প্রসংগে ফিরে আসি । প্রতিদিন কর্মজীবি নারী পুরুষ তাদের কর্ম স্থলে যায় । দেখা হয় প্রস্পরের সাথে ।রাস্তায় যাতায়াত কালে নারী ্পুরুষের দেখা হয় । সুতরাং ধর্মীয় কারণ গুলো অনুসরণ করলে একজন পুরুষের যদি কোন নারীকে দেখে কামনার উদ্রেক হয় তাৎক্ষনিক তিনি কী করবেন?কর্ম স্থল ত্যাগ করে তাড়াতাড়ি বাড়ি যাবেন তার ইচ্ছে পুরণ করতে ?
অনুরুপ ভাবে একজন কর্মজীবি নারী কর্ম স্থলে থাকা অবস্থায় তার কর্মজীবি স্বামীর ডাকে সাড়া দিয়ে কর্ম স্থল ত্যাগ করবেন ?
দ্বিতীয়ত ঃ
বাংলাদেশ সহ এশিয়ার বেশীভাগ দেশে কর্মজীবি নারীটি তার উপার্জনের অর্থ স্বামীর হাতে তুলে দেয় ।
কিছু ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম থাকতে পারে । কিন্তু বেশীর ভাগই দেখা যায় এই চিত্র ।
সুতরাং ,
ধর্মীয় বেড়াজালে যেভাবে পুরুষাধিপত্য দেয়া হয়েছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেই নারী কিছু হলেও মুক্তি পেত। অতএব ,অর্থনৈ্তিক স্বাধীনতা এবং সেই সাথে ধর্মের বেড়াজাল থেকে মুক্তি,
আপাতঃদৃষ্টিতে কিছু হলেও সমাধান। আরো সেই সাথে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে তাদের(পুরুষের) মনোভাব
বদল করতে হবে । নারীকে দিতে হবে প্রকৃ্ত মর্যাদা ।
@একা,
আপনার লেখা এবং মন্তব্যসমূহ যতবারই পড়ছি ততবারই মুগ্ধ হচ্ছি। নারীবাদ বা নারীমুক্তি নিয়ে এতদিন আমি যে তিমিরে বন্দি ছিলাম সেখান থেকে মুক্ত করে আলোর ভূবনে নিয়ে আসছেন আপনি। এত অসাধারণভাবে নারীমুক্তির ধারণাকে আমার কাছে কেউ ব্যাখা করতে পারেনি আগে কখনো।
এই যে দেখুন কত সহজে চোখে আঙুল দিয়ে আপনি দেখিয়ে দিলেন যে একটা মাত্র হাদিসের কারণে মেয়েরা কীভাবে ধর্মের বেড়াজাল দিয়ে অর্ধেক বন্দি হয়ে আছে। আমিতো এটা আগে জানতামই না। তবে, এই ক্ষেত্রে আমার কিছু সম্পূরক জিজ্ঞাসা এবং কৌতুহল আছে। আশা করি সেগুলোর জবাব দিয়ে আমার অজ্ঞানতাকে দূর করতে সাহায্য করবেন।
ধর্মীয় বেড়াজালের ক্ষেত্রে আমার ধারণা ছিল যে আপনি সব প্রতিষ্ঠিত ধর্মকেই দায়ি করেছেন। এখানে শুধুমাত্র একটা হাদিসের উল্লেখ করায় এবং সেটার ব্যাখ্যা করে কীভাবে ধর্ম নারীদের বন্দি করে রেখেছে সেটা বলাতে বুঝতে পারলাম যে, ধর্ম বলতে আসলে আপনি শুধু ইসলামকেই বুঝিয়েছেন। (অন্য ধর্মের কোন ভার্সের উল্লেখ না থাকায় বা অন্য ধর্ম সম্পর্কে কিছু না বলাতে সহজভাবে এটাই বুঝেছি আমি। ভুল হলে ক্ষমা করে দেবেন।)
আপনার ব্যাখ্যার সূত্র ধরেই বলি। আমার যদি ভুল না হয়ে থাকে, তবে এই বিশ্বের মাত্র এক পঞ্চমাংশ লোক ইসলামের অনুসারী। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, চার পঞ্চমাংশ নারীই ধর্মীয় বেড়াজালের অর্ধেক বন্ধন থেকে মুক্ত। এবার আসা যাক, মুসলিম প্রধান দেশগুলোর কথা। আচ্ছা, কতজন মুসলমান এই হাদিসটা জানে বা মানে? এই হাদিসটা যারা জানে না তারতো নিশ্চয় এটার প্রয়োগ ঘটাবেন না। এই হাদিসকে নারীমুক্তির অন্তরায় হিসাবে দেখিয়ে আপনি লিখেছেন।
বাংলাদেশ দিয়েই শুরু করি। যারা এই হাদিস জানে না, তারাতো নিশ্চয়ই এটার প্রয়োগ ঘটাবেন না। বাংলাদেশের মানুষের যে ধর্মীয় জ্ঞান তাতে মনে হয় না যে খুব বেশি সংখ্যক লোক এই হাদিস জানে। বেশিরভাগইতো জন্মসূত্রে মুসলিম। আর যারা জানে তারা কী সবাই-ই এটার প্রয়োগ ঘটান? অফিসে আসার পথে অন্য নারীদের দেখার সাথে সাথেই কামার্ত হয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করে বাড়ির দিকে ছুট লাগান? কতজন কর্মজীবি নারী স্বামীর ডাক পেয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করে স্বামীকে সন্তুষ্ট করতে বাড়ির পথ ধরেন? এরকম ঘটনা ঘটলেতো বাংলাদেশের অফিসগুলোতে কোন কাজই হতো না। ঘন্টায় ঘন্টায় লোকজন অফিসে আসতো আর একটু পরেই বাড়ির দিকে দৌঁড় দিতো ইচ্ছাপূরণ করতে। আমার কর্মজীবনে এরকম ঘটনা কিছু দেখেছি বলেতো মনে পড়ছে না। নাকি আমি অন্ধ ছিলাম? যে হাদিসের কোন প্রয়োগই নেই বলতে গেলে সেই হাদিস কী করে তবে নারী মুক্তির পথে অর্ধেক বাধা হয়ে দাঁড়ায়?
অন্য মুসলিম প্রধান দেশগুলো স্বচক্ষে দেখিনি আমি। তবে, যেটুকু তথ্য পাওয়া যায় বইতে বা অন্য সূত্র থেকে, তাতেও মনে হয় না যে সেখানকার অবস্থা বাংলাদেশের থেকে একেবারে ভিন্নতর।
তো, এই হাদিসের ফলে নারীমুক্তির ক্ষেত্রে তেমন কোন বিরাট সমস্যাতো আমি দেখতে পাচ্ছি না। নাকি কোন কিছু এড়িয়ে যাচ্ছে আমার চোখ?
হুম!! আশ্বস্ত হলাম এক্ষেত্রেও। অর্থনৈতিকভাবেও দেখছি সারা পৃথিবীতে নারীরা মোটামুটি মুক্ত। সামান্য যেটুকু সমস্যা আছে তা শুধুমাত্র বাংলাদেশ আর এশিয়ার বেশ কিছু দেশে। আশা করছি অল্পদিনেই এই দেশেগুলোও বাকী বিশ্বকে অনুসরণ করবে। নারীরা আর তাদের অর্জিত টাকা পয়সা তুলে দেবে না স্বামীদের হাতে।
আপনাকে আবারো অশেষ ধন্যবাদ দিচ্ছি নারীমুক্তির বিষয়টি চমৎকারভাবে ব্যাখ্যা করার এবং এর প্রতিবন্ধকগুলোকে সুস্পষ্টভাবে সনাক্তকরণ করে দেবার জন্যে। ভাল থাকবেন।
@ফরিদ আহমেদ,
ইতিপূর্বে আমি “বিবাহ “নামক প্রবন্ধে লিখেছিলাম ।
“কোন পুরুষ স্ত্রীকে শয্যায় আহবান করলে সে যদি
অস্বীকার করে এবং প্রভাতকাল পর্যন্ত রাগান্বিত অবস্থায় রাত্রি যাপন করে তাহলে
ফেরেশ্তাতা ঐ স্ত্রীকে অবিশম্পাদ দিতে থাকে ( বুখারি শরীফ হাদিস নং -৪৮১৪) ।
এই হচ্ছে নারীর পুরুষ দ্বারা রচিত ধর্মীয় গ্রন্থের চরম পরিণতি ।
যেখানে ফেরেশ্তারাও(?) নারীকে অভিশম্পাদ দেয় । নারীর ইচ্ছে অনিচ্ছা , শারিরীক সমস্যা ,
মানসিক কষ্ট থাকতে নেই । যৌন সঙ্গমে যদি অনিচ্ছা প্রকাশ করে কোনো কারণে
তখনো তাকে এ ভাবেই শাসিত হতে হয় ।অফিস ফেরত স্ত্রীর যদি শারীরিক কারণে বা যে কোনো অফিসের ঝামেলায় মন ভালো না থাকে তথাপি তাকে স্বামীর আহবানে সাড়া দিতে হবে ।
আমার তো মনে হয় এই হাদীস জানেনা এমন মুসলিম কম ই আছে ।
“
“
আপনার কথা যথার্থ, তবে ইসলাম ধর্মে বলা আছে কুরাণ ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অংশ, আর সর্বকালের সবসময়ের জন্য প্রযোজ্য । কুরাণে বা হাদীসে যা বর্ণিত আছে তার থেকে চুল পরিমাণ বিচ্যুত ঘটলে সে হবে “মুনাফিক”। যারা ইসলামের সব চাইতে শত্রু।
এখন কথা হচ্ছে কে কি ভাবে করছে । আপনি কি লক্ষ্য করেছেন ইদানীং কি
পরিমাণ মুসলিম মেয়েরা বোরকা ,হেজাব,নেকাব করছে ? বিজ্ঞান যেখানে কোথায় চলে গেছে আমরা সেখানে কোথায় অবস্থান করছি । চলার পথে এইরুপ পন্থা পথ কি বাধা হয়ে দাঁড়ায়না? নিশ্চয়ই দাঁড়ায় কেউ স্বীকার করুক বা নাই করুক ।
অন্যান্য ধর্মের কথা জিজ্ঞেস করেছেন,এক ইসলাম নিয়ে গবেষণা শেষ হচ্ছেনা । অন্যান্য ধর্মের খবর বিশদ ভাবে না জেনে বলাটা উচিত বলে মনে করছিনা।
তাছাড়া সকল ধর্মেরই স্বরুপ দেখা যায় কোনো না কোনো ক্ষেত্রে মিলেই যায় ।
@ ফরিদ আহমেদ
আর একটা কথা বলে নিতে চাই ,
@একা,
একদম ঠিক কথা, বাংলাদেশ সহ প্রতিটা মুসলিম দেশের সমাজে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে কোরান-হাদিসের রীতি-নীতি, রাষ্ট্র চলছে কোরান সুন্নাহর আইন-কানুনে, সুতরাং সাধারন লোক কোরান-হাদিসের অর্থ জানুক আর না জানুক তাতে বিশেষ কিছু যায় আসেনা।
@একা,
শয়তানের জেন্ডার আছে কিনা ইসলাম বিশেষজ্ঞ কেউ বলতে পারেন? ফেরেশতারা সম্ভবত পুংলিংগ বলে ধারনা পাওয়া যায়, নিশ্চিত নই অবশ্য।
নয়ত সে স্ত্রী লোকের বেশেই কেন ঘোরাফেরা করবে তার ব্যাখ্যা?
ফুয়াদ ভাই কি বলেন?
@আদিল মাহমুদ,
হা হা আপনি ঠিক বলেছেন , 🙂 এই প্রসঙ্গে আমি কিছুদিন পর লেখা দেব ।ওটা আলাদা প্রসঙ্গ । যদিও ,
এই কথার সাথে আপনার কথা মিলে যাচ্ছে । এই নিয়ে ভিন্ন ভাবে লেখার ইচ্ছে আছে আমার। আসলে কি জানেন সমস্ত ধর্মীয় গ্রন্থ গুলোই মানুষের সকল প্রকার প্রশ্নের জবাব দিতে ব্যর্থ । এক এক জাগায় এক এক বিবরণ। অনেক ক্ষেত্রে ই প্রশ্নের বেড়াজালে বিদ্ধ। কেননা গ্রন্থ সমূহের কোন গ্রন্থাকার নেই ।
@একা,
শয়তান পুরুষের ছদ্মবেশে (আপনার লেখার আগে আপাতত ধরে নিলাম সে নারী পুরুষ কিছুই নয়) মহিলাদের কাছে এসে কুমন্ত্রনা দেয় কিনা এ নিয়েও আমার আগ্রহ আছে। মুশকিল হল এ জাতীয় প্রশ্ন ধর্ম বিশেষজ্ঞদের করলে তারা ক্ষেপে ওঠেন।
তবে হাদীস নিয়ে ইঁদুর বেড়াল খেলা সত্যঅ তূলনাবিহীন। যেসব হাদীসে ভাল ভাল কথা আছে, নিজেদের দাবীর পক্ষে যায় সেগুলি ঘটা করে শোনানো হয়। যেগুলি শোনালে মানুষের মনে প্রশ্ন জাগবে সেসব হাদীস বেচারারা সহজে আলোর মুখ দেখে না।
নারী নির্যাতনের ঘটনার এই খবরগুলো হৃদয়বিদারক। তবে এগুলো নতুন কোন খবর নয়। বাংলাদেশে এরকম অহরহ ঘটে চলেছে অনেক দিন ধরেই কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এটা কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তবে পুরুষরাই যে ষড়যন্ত্র করে এক নারীকে অন্য নারীর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিচ্ছে সেটা একটা ষড়যন্ত্রতত্ত্ব, এর কোন বিবর্তনগত ভিত্তি নেই। বা পুরুষেরা দুই নারী বা নারীগোষ্ঠির মধ্য বিবাদ বাধিয়ে দিয়ে দুরত্বে থেকে উপভোগ করে সেটাও এক ব্যক্তিগত ধারণা বা তত্ত্ব। এই ধারণার ভিত্তি কোথায় বোঝা কঠিন। তাছাড়া নারীদের এক পুরুষ কে আরেক পুরুষের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়ার উদাহরণও প্রচুর আছে। তাই এই ধরনের উক্তি ঢালাও সামান্যীকরণ (Sweeping generalization/stereotyping). দোষে দুষ্ট। নারীদের বিরুদ্ধে নারীদের নির্যাতন বা অপকর্মকে আলাদা করে দেখার কোন কারণ দেখি না। নারীদের বিরুদ্ধে নারী, নারীদের বিরুদ্ধে পুরুষ, পুরুষদের বিরুদ্ধে পুরুষ, আর পুরুষদের বিরুদ্ধে নারী, সবটারই ত এন্তার উদাহরণ আছে। ভাল মন্দ উভয় লিঙ্গতেই বিদ্যমান। একটা বিষয়ে জোরাল দ্বিমত পোষণ করছি সেটা হল যে মেয়েদের সব নেতিবাচক দিক বা কর্মই যে পুরুষদের দ্বারা প্রভাবিত তার ইঙ্গিত করা। এটা বলে প্রকারান্তরে এটাই বোঝান হচ্ছে যে মেয়েদের অপকর্ম থেকে নিজেকে বিরত রাখার বা অপকর্মে লিপ্ত হবার নিজস্ব সিদ্ধান্তক্ষমতা বা বিচারবুদ্ধি নেই। এটা বলার আরেক অর্থ হল এই যে নারীরা স্বকীয়ভাবে (অর্থাৎ বংশাণুগত ভাবে) নিষ্পাপ। তারা কখনই খারাপ কাজ করতে পারে না, যদি না পুরুষেরা তাদেরকে করতে বাধ্য করে বা প্ররোচিত করে। এ সবই লিঙ্গবাদী ধারণা। মেয়েরা যে স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে (পুরুষদের দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে) খারাপ কাজে (নারীর বিরুদ্ধে নারী তার কেবল এক বিশেষ ক্ষেত্র) লিপ্ত হতে পারে তার বিস্তারিত আমি আমার নারী দিবসের লেখা নারীরা সব পারে-২ তে আলোচনা করেছি। কোন কোন ক্ষেত্রে কোন পুরুষের দ্বারা প্রভাবিত হতেই পারে। কিন্তু সেটা নিছক পুরুষ বলেই নয়। নারীর অনেক অপকর্ম অন্য নারীর দ্বারাও প্রভাবিত হতে পারে। যেটা বলতে চাচ্ছি সেটা হল যে যে কোন রকম ঢালাও সামান্যীকরণের কোন বৈজ্ঞানিক (বা বৈবর্তনিক) ভিত্তি নেই। নিজের অপকর্মের দায় অন্যের উপর চাপান নতুন কিছু নয়। আমরা দেখেছি ধর্মীয় জঙ্গীবাদীদের বা সাম্যবাদী জঙ্গীদের অপকর্মের দায় (নিরাপরধদের নৃশংসভাবে হত্যা করা) অনেক প্রগতিবাদীরাও সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা বা পশ্চিমা সমাজের উপর চাপাতে চেষ্টা করেন। পুরুষ প্রজাতি যে স্বকীয়ভাবে অশুভ (Intrinsically Evil) এই ধারণা লিংগ নারীবাদীদের, যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। পুরুষ ও নারীদের বংশাণুর মধ্যে কোন তফাত নেই।
পুরুষদের দ্বারা নারী নির্যাতনকে অনেকে পুরুষদের ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ এ সুবিধাজনক অবস্থায় থাকার কারণে ঘটে বলে মত দেন। কথাটা অনেকটা সত্যি। ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ কথাটাই মুখ্য, পুরুষ নয়। তাই ত আমরা দেখি অনেক গৃহকর্ত্রীর দ্বারা ১২ বছর বা কম বয়সের কাজের ছেলেরা দৈহিক ভাবে নির্যাতিত হয়, সামান্যতম কারণে। সব কিছু বলার পর এটাই বলতে হয় নারী নির্যাতন বা লিংগ বৈষম্য আমাদের এক সামাজিক অভিশাপ। এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এর অবসান হোক এটাই আমাদের সবার কামনা।
@অপার্থিব, ভালো বলেছেন। :yes:
নারীর বড় শত্রু নারীই এমন কথা প্রায়শই শোনা যায়। শুধু বাংলা সিনেমাই নয়, বাস্তব জীবনেও দেখা যায় বঊ এর উপর শ্বাশুড়ির নিষ্ঠুর অত্যাচার; অবশ্য উল্টাটাও মাঝে মাঝে দেখা যায়। বউ-শ্বাশুড়ির এই ধস্তাধস্তি যে শুধু আমাদের অঞ্চলে তা নয়, এমনকি পাশ্চাত্য দেশেও দেখা যায়। অনেক সিরিরালে মজা করে শ্বাশুড়ি বউ এর খুন্সিটি দেখানো হয়, অবশ্যই আমাদের মতন খুনাখুনির পর্যায়ের নয়। এ দেশে একটি স্ল্যাং আছে, Mother in law’s tongue.
এবার একটু উলটা কথা বলি; মহিলারা কি অনেক সময় নিজেদের পণ্য করে খেলো করেন না? আমি বলতে পারি না এটাও পুরোপুরি পুরুষতন্ত্রের সাইড এফেক্ট কিনা, তবে সত্যতা যথেষ্ট আছেই বলে আমি মনে করি।
হুমায়ুন আজাদের “নারী” গ্রন্থে গর্ভধারণ নিয়ে কিছু মন্তব্য খুব চমকপ্রদ লেগেছিল। গর্ভধারণের প্রক্রিয়াটা কোন নারীর জন্যই স্বস্তির না। এই প্রক্রিয়ার শেষে যে শিশুটা জন্ম নেয়, সেই শিশুটা নারীর জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পাওনা হলেও প্রক্রিয়াটা যে বেদনাদায়ক তাতে সন্দেহ নেই। এই গর্ভধারণের প্রক্রিয়াটাকেই পুরুষতন্ত্র বিভিন্নভাবে কলঙ্কচিহ্নিত(stigmatize) করেছে। ভবিষ্যতে বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাহায্যে হয়ত নয় মাস ধরে গর্ভধারণ করার প্রক্রিয়াটা থেকে নারীকে মুক্তি দেওয়া যাবে, গবেষণাগারেই হয়ত একটা ভ্রুণ থেকে একটা মানবশিশুর বিবর্তন নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তখন নারীকে দমিয়ে রাখার আরেকটা অস্ত্র ধ্বংস হবে।
বিষয়টা হয়ত অতিমাত্রায় কল্পনাবিলাসী না। এখনই তো ডিম্বকোষকে গবেষণাগারে অপ্রাকৃতিকভাবে উর্বর করা হচ্ছে, যাকে বলে “ইন ভিট্রো ফারটিলাইজেশন” বা আইভিএফ।
@পৃথিবী,
আপনি ঠিকই বলেছেন, বিজ্ঞানের সাহায্যে গর্ভধারণ প্রক্রিয়া থেকে নারীকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টা মোটেও অবাস্তব বা কল্পনাপ্রসুত নয়। বিষয়টি ম্যাস স্কেলে রুপ নেয়াটা আর সুদুর পরাহত নয় বলে আশা করছি।
@পৃথিবী,
একটি গর্ভস্থ সন্তানের বাবা হিসেবে আমার অভিজ্ঞতা হতে বলতে পারি যে গর্ভবতী অবস্থায় মা ও শিশুর যে সংযোগ স্থাপিত হয়, তা অনন্য। এই সংযোগ কিন্তু পরবর্তীকালে শিশুর বিকাশে গুরুত্তপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর শুধুমাত্র শিশুর জন্মদানই মা’র speciality
নয়, শিশুর পুষ্টি বিকাশে মাতৃদুগ্ধ অনন্যসাধারণ। নারী ও পুরুষের এই প্রাকৃতিক পার্থক্য স্বীকার করে নিয়েই নারীর অধিকার নিশ্চিত করাটাই শ্রেয়। বিজ্ঞান এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকে পাশ কাটাতে পারবে হয়ত ঠিকই, কিন্তু করবে কিনা আমার সন্দেহ আছে। কারণ গত ৫ দশকের অভিজ্ঞতায় বিজ্ঞান দেখছে প্রাকৃতিক স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে বদলে দেবার প্রচেষ্টার তুলনায় প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার সাথে সমন্ব্য করার প্রচেষ্টাই বেশি কার্যকর এবং কম ক্ষতিকর।
@FZ,
আত্মদান বা আত্মোসর্গ-এর ভুমিকায় শুধু মেয়েরাই থাকবে কেন, ‘মা ও শিশুর সংযোগ স্থাপন’ বা ‘শিশুর বিকাশে গুরুত্তপূর্ণ ভূমিকা’ ইত্যাদি ক্ষেত্রেতো এতদিন ধরে মেয়েরাই অবদান রেখে আত্মোসর্গ করে আসছে, তো বিজ্ঞানের কল্যানে এবার না হয় রোল পাল্টে এইসব ক্ষেত্রে গর্ভস্থ সন্তানের বাবারাই অবদান রাখুক এবং আত্মোসর্গের কি মহিমা সেটা উপলব্দি করুক। আর শিশুর পুষ্টি বিকাশের বেলায় বিজ্ঞানের কল্যানে মাতৃদুগ্ধ-এর বিকল্পও তৈরী হবে বলে আমার বিশ্বাস।
@ব্রাইট স্মাইল্,
যদি বিজ্ঞান সত্যই মা’র রোল বাবাকে যথাযথভাবে দিতে সমর্থ হয়, তাহলে কোন সমস্যাই হত না, কিন্তু পৃথিবী যা বলছেন তা হ্ল মা-বাবার জায়গায় গবেষণাগারেই সন্তান উৎপাদিত হবে, যাতে আমার আপত্তি। আর মাতৃদুগ্ধের বিকল্প আসবে বলে আমার মনে হয়না, আর আসলেও ততদিন পর্যন্ত তো অন্তত মা’র ভূমিকা গুরুত্ত্বপূর্ণ থাকবে, তাই না ? সুতরাং প্রাকৃতিক সুবিধা বা অসুবিধাকে হিসেবে রেখেই আমাদের নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
এ ছাড়া নারীরা তাদের সর্ব নাশের মূল – পুরুষতন্ত্রের উদ্ভাবিত ধর্ম – এর অনুগত হতে ব্যস্ত।
বলি, অন্তত উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে নারীদের সম-অধিকারের বিষয়ে কতজন নারী সোচ্ছার?
নারীদেরকেই তাদের দুর্দশার কারণ খোঁজে বের করতে হবে, এর সমাধানে এগিয়ে যেতে হবে।