এলোমেলো রাজনৈতিক ছড়া- দুই
[আলোচিত বিষয়ঃ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পুলিশ]
১
মৃত্যুর কামনা হলে শতভাগ
চলে আসো মেডিকেলের বহির্বিভাগ;
পাঁচটাকা খরচে কাটো যে টিকিট
সময় পেরিয়ে যাবে টিক টিক টিক…
ঘন্টা-ফন্টা নয়, বসো পুরোদিন
টার্ন পেলে ধরে নাও বড়ই সুদিন।
জ্বর-জ্বারী, পেট ব্যথা, নাকি আলসার?
আমার সময় নেই ওসব শোনার;
সমস্যা না শুনেই দিই ‘ডিসিশন’
খস-খস লিখে ফেলি ‘প্রেস্ক্রিপ্শন’;
গরীবের আছে টা কে, করবে কম্প্লেইন?
“মরো-বাঁচো, হু কেয়ার্স্? নো প্রব্লেম”।
চাও যদি শুনি আমি রোগীর কথা
সেথা আসো, প্র্যাকটিস করছি যেথা।
সেবা-টেবার নিকুচি, কে ধারে সে ধার?
‘মাল’ ফ্যালো চাও যদি ‘ভেরী গুড কেয়ার’।
শুধু কি মুখের কথা হওয়া ডাক্তার?
ষোল আনা পোষাবো টাকা খরচা’র।
টাকা পেলে রোগী দেখি কত সিন্সিয়ার!
তবু কেন গালি দাও? ডাকো যে ‘চামার’?
২
মার্কেটে ভারী দাম- ‘হবু জামাই’
কারনটা কিছুনা- খুব যে কামাই।
বেতনের দশগুন একদিনে তুলি
মোরালিটি, মানবতা সবই গেছি ভুলি।
পাঁচ সুতা রড নয়, দেয় তিন সুতা
থোড়াই আমি কেয়ার করি, নেই মাথাব্যথা।
কি আমার যাই আসে? মেশালে খালি-
এক ভাগ সিমেন্টে দশ ভাগ বালি।
‘মাল’টা যে বেশী দেবে, কাজটা যে তার
লাভ নেই জমা দিয়ে শুধু টেন্ডার।
সড়ক ও জনপথ- এধারে টাকার ঘাঁটি
ওধারেও কম নয়- এল.জি.ই.ডি.।
সিটি কর্পোরেশন আর পাবলিক হেল্থ্
পৌরসভায়ও টাকার অঢেল জমায়েত।
আশেপাশে ঘুরঘুর করে ঠিকাদার
আমি আর কেউ নই- ‘ইঞ্জিনিয়ার’।
৩
গায়ে পরা পোষাকাদি বিশেষ ধরন
মিলবে না কারো সাথে চালটি-চলন;
আইন আর শৃংখলা রক্ষাকরণ
দায়ীত্ব সেটি তার করা যে বরণ।
মাগার, দায়ীত্বের সীমাহীন এমন অবহেলা
সেটিই মূখ্য যেন, কাজটি পহেলা;
ধ্বংসে আইন নিজে, ভাঙ্গে শৃংখলা
চিনেছো যে ঠিকই তাকে! নামটি ‘ঠোলা’।
ছোট পদে ‘মাল’ কম, তিনি রোগাসোগা
খেয়েদেয়ে তরতাজা, যিনি হন দারোগা;
কাম-কাজে ফাঁকিবাজ, বুদ্ধিতে অগা
গ্যাঞ্জামে তার কাজ- সবার আগে ভাগা।
চুরি-জারি, হাইজ্যাক, চাঁদার সালিশ?
নাকে তেল; ঘুমোয় ওরা মাথায় বালিশ।
আর কিছু না পারুক, হলে উনিশ-বিশ
ঘুষ নিতে হাতদুটি করে নিশ-পিশ।
কি আর হবে আফসোসে! করে বা নালিশ
‘মোষ্ট ইন্কম্পিটেন্ট’ ওরা, বাংলার পুলিশ।
আব্দুর রহমান আবিদ
রচনাকালঃ এপ্রিল, ২০১০
কাগজে পড়লাম ডেন্টাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা বিরিয়ানী
খাওয়ার লোভ দেখিয়ে পথশিশুকে ইনজেকসন দিয়ে দাঁত তুলে
প্রাকটিক্যাল করছে!
এরাই এভাবে শিখে জাতির সেবা করবে!
বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেক সেক্টরে এই অবস্থা!
এর শেষ কোথায়?
ধন্যবাদ!
@ আব্দুর রহমান আবিদ,
চমৎকার, চমৎকার চমৎকার।
সে তো হতেই হবে, হুজুরের মতে অমত কার?
আপনার ছড়া কয়েকবার পড়লেই মুখস্ত হয়ে যাবে। খুবই ভালো লেগেছে।
ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পুলিশ
গর্বে কেন তোরা ফুলিস?
না, হবে না। আমার দ্বারা ছড়া লেখা হবে না। এ কাজ শুধু আব্দুর রহমান আবিদেরই সাজে। :yes: