ব্যবসা: পীরগীরী
(যেমন দেখিয়াছি ও বুঝিয়াছি)
-মোকছেদ আলী*
আবহমানকাল হইতে অর্থ উপার্জনের যত প্রকার পথ ও পদ্ধতি আছে- তন্মধ্যে ধর্মীয় বিশ্বাস ও অনুভূতিকে মূলধন করিয়া অর্থ উপার্জন সবচেয়ে সহজ, নিরাপদ ও লাভজনক। যে কোন ধর্মের অনুসারী হউক না কেন, যদি এইরূপ বিশ্বাস জন্মাইয়া দেওয়া যায় যে, অমুক পীর, তমুক দরবেশ বা ঠাকুর সন্ন্যাসীর যদি মুরিদ বা শিষ্য হওয়া যায় তাহা হইলে ইহকালের উন্নতি ও পরকালের মুক্তি হইবে, তখন সেই শিষ্য বা মুরিদ স্বেচ্ছা প্রণোদিত হইয়া সেই সব পীর বা ঠাকুরদের কদমে বা শ্রীচরণে অগাধ অর্থ ঢালিয়া দিতে কোনই কার্পন্য করে না।
এক শ্রেণীর সুচতুর মনোবিজ্ঞানী (?), হয় সে নিজে, না হয় অন্য কাহাকেও ব্যবহার করিয়া অগাধ অর্থ উপার্জন করিয়া থাকে। বাস্তব প্রমাণ: আমি বাল্যকালে দেখিয়াছি- আমার বাড়ির নিকট অনুকূল ঠাকুরকে। দেশে বিদেশে তাহার অসংখ্য ভক্ত সৃষ্ট করা হয়। অনুকূল ঠাকুর তাহার আশ্রমের নাম দেয়, ‘সৎসঙ্গ আশ্রম’। প্রতি বৎসর মহোৎসবকে উপলক্ষ করিয়া সহস্র সহস্র ভক্তের আমদানী করা হয়। ভক্তগণ তাহাদের ইহকালের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পরকালের নরকের কঠিন শাস্তি হইতে অব্যহতি লাভের আশায় ঠাকুরের শ্রীচরণতলে অগাধ অর্থ ঢালিয়া দিতেন। আমি দাঁড়াইয়া ঠাকুরের সামনের নোটের পাহাড় দেখিয়া হাঁ করিয়া চাহিয়া থাকিতাম, আর ভাবিতাম মানুষের এত টাকা থাকিতে পারে?
আরও দেখিয়াছি- কলিকাতার দক্ষিণেশ্বরের কালী বাড়ির রামকৃষ্ণ পরম হংস দেবের মঠে। স্বামী বিবেকানন্দ প্রমুখ সুচতুর মনোবিজ্ঞানীগণ খুব জোরালো ও হৃদয়গ্রাহী বক্তৃতার মাধ্যমে জনগণ ও ভক্তগণকে অর্থ প্রদানে প্রলুব্ধ করিতেন। আরও দেখিয়াছি- সিরাজগঞ্জের হোসেনপুরের পীর সাহেবের বাড়িতে ওরস উপলক্ষে মুরিদগণ নগদ অর্থ গরু, ছাগল, চাউল, ডাইল নজরানা দিতে। আর হালে দেখিয়াছি- এনায়েতপুরের পীরের দরবারে। আটরশির বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে, চন্দ্রপাড়ার পীর সাহেবের পাক দরবারে, টাঙ্গাইলের প্যারাডাইস পাড়ার পীরের দরবারে।
আরোও দেখিয়াছি- কুষ্টিয়ার উদি বড়ির পীর সাহেবের দায়রা পাকের ওরসে। মুরিদ বা শিষ্যগণ অকাতরে শত শত গরু, ছাগল, মোরগ-মুরগী, নগদ অর্থ পীরের পাক কদমে নজরানা দিতে। মুরিদ বা ভক্তগণ পীর বা গুরুর চরণে দক্ষিণা বা নজরানা দিয়া আত্মতৃপ্তিলাভ করে। শুনিয়াছি- আজমীরে ও পশ্চিম দেশের বহু মশহুর পীরদের দরবারে লক্ষ লক্ষ ভক্ত কোটি কোটি টাকা অর্পন করেন। মুরিদ বা ভক্তদের প্রধান উদ্দেশ্য ও বিশ্বাস থাকে তাহাদের মনোস্কামনা পূর্ণ হওয়া। সমগ্র বিশ্বে এইরূপ বহু দরবার, আস্তানা, মঞ্জিল, আশ্রম, মঠ প্রভৃতি বিভিন্ন নামে অর্থ উপার্জনের ফ্যাক্টরী আছে।
এই ধরনের ফ্যাক্টরীতে খুব বেশি ক্যাপিটাল ইনভেষ্ট বা মূলধন লগ্নি করিতে হয় না। প্রাথমিকভাবে কিছু এজেন্ট নিয়োগ করিতে হয়। এজেন্টগণ অত্যন্ত কৌশলে সাধারণ মানুষের কাছে পীরের মাহাত্ম ও কেরামতির কথা বলিয়া তাহাদের মনে পীরের প্রতি ভক্তি ও বিশ্বাস সৃষ্টি করে। যার ফলে মানুষটি ভাবে, ঠাকুরের বা পীরের কদমে অর্থ নজরানা প্রদান করিলে, পীরের দয়ায় (নট্ দোয়ায়) তাহার ইহকালের যাবতীয় আজাব, গজব, দুঃখ-দূর্দ্দশা দূর হইবে। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পাইবে। পরকালে পীরের সহিত বেহেস্তে প্রবেশ করিবে। এই বিশ্বাস যখন কোনো মানুষের মনে দৃঢ় হয়, তখন সে আর কোনই বুঝ মানে না। পীরের কদমে, ঠাকুরের চরণে যথা সর্বস্ব প্রদান করিতে কিছুমাত্র দ্বিধা করে না। এইরূপ পীর বা ঠাকুর বংশানুক্রমিক হিসাবে বাংলাদেশের বহু গ্রামে দেখা যায়। তাহারা শিষ্যগৃহে বা মুরিদ বাড়িতে স্বয়ং গিয়া হাজির হয়। মুরিদ বা ভক্তের নিকট হইতে মৌসুমভেদে শষ্য ফসল সংগ্রহ করে, নগদ অর্থও আদায় করে।
বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানের অগ্রগতির যুগে এই সব পীর খোনকারদের মুরিদের সংখ্যা হ্রাস পাইতেছে। ইহার কারণ দ্বিবিধ: প্রথম- অনেক পীরের বা ঠাকুরের সন্তানগণ উচ্চশিক্ষা লাভ করিয়া বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের চাকুরী বা ব্যবসায়ে লিপ্ত থাকায়, পিতা পিতামহের ঐতিহ্যকে ধরিয়া রাখিতেছে না। ফলে ছোট খাট পীরগণের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হইতেছে।
দ্বিতীয়- মুরিদের সন্তানগণও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ায়, তাহারাও আর পিতা পিতামহের পীর ও ঠাকুরগণকে দান দক্ষিণা, নজরানা প্রদান করিতেছেন না এবং মান্যও করিতেছেন না। ফলে স্বাভাবিক নিয়মেই এই পেশা বিলুপ্ত হইতেছে। কিন্তু পেশাটি একেবারে বিলুপ্ত না হইয়া এককেন্দ্রিক বিরাট আকার ধারণ করিতেছে। যেমন, জমিদারী উচ্ছেদ হওয়ায় সরকারী লোক খাজনা আদায় করিতেছে। কিন্তু খাজনা বন্ধ হয় নাই। সেইরূপে ডিক্টেটরশীপের আকার ধারণ করিয়া পীর ঠাকুরদের ব্যবসা জমজমাট চলিতেছে। বর্তমানে যুগের ডিক্টেটররূপী পীরগণ মুরিদগণের নিকট হইতে বিভিন্ন কায়দায় অগাধ অর্থ আয় করিয়া, আবার জনকল্যাণের জন্য তাহার সিংহভাগ ব্যয়ও করিতেছেন। মাদ্রাসা স্থাপন, হাসপাতাল গঠন, মসজিদ নির্মাণ প্রভৃতি অনেক জনহিতকর কার্যেও সেই অর্থ ব্যয় করিতেছেন। ফলে অর্থ প্রদানকারী মুরিদ স্বচক্ষে দেখিতেছেন যে, তাহার দেয়া অর্থ নিজে সবটুকু ভক্ষণ করিতেছেন না। জনকল্যাণের কাজেও ব্যয়িত হইতেছে। ফলে সে ভবিষ্যতে আরোও অর্থ প্রদান করিতে যথেষ্ঠ উৎসাহ পাইতেছে।
রামকৃষ্ণ দেবের আশ্রমে শিষ্যদের নিকট হইতে প্রাপ্ত অর্থ সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে জনসেবার কার্যে ব্যয় হইতেছে। দেশের প্রধান প্রধান শহর বন্দরে “রামকষ্ণ সেবাশ্রম” নামে একটি করিয়া প্রতিষ্ঠান আছে। কেন্দ্র হইতে বার্ষিক বাজেটের মাধ্যমে বরাদ্দকৃত অর্থে বিনামূল্যে বা বিনা বেতনে স্থানীয় দরিদ্র বালক বালিকাদের লেখা পড়া শিক্ষা দেওয়া হয়। এবং রোগীর চিকিৎসা করা হয়। আশ্রমের স্বামীগণ (যদিও তাহাদের স্ত্রী নাই, ব্রহ্মচারী, তবুও তাহারা স্বামী) শহরের শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকেন।
অনুকূল ঠাকুরের আশ্রমেও দেখিয়াছি, দূর দূরান্ত হইতে বালক বালিকা, যুবক- যুবতী আসিয়া মাটিতে পাটি বিছাইয়া একসঙ্গে বসিয়া লেখাপড়া শিক্ষা করিতে। উচ্চ শিক্ষিত শিক্ষকগণ শিক্ষাদান করিতেন।
আটরশি, শর্ষিনা, চরমোনাই, বেজেরডাঙ্গা, হাদোল প্রভৃতি স্থানে মাদ্রাসায় তালবেলামগণ বিনামূল্যে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হইতেছে। ইহা খুবই উত্তম ব্যবস্থা।
কলেজের একজন অর্থনীতির অধ্যাপক একদিন কথা প্রসঙ্গে বলিলেন- বর্তমান যুগে অর্থ উপার্জনের যত প্রকার পথ আছে, তন্মধ্যে সিনেমার ব্যবসায়ে শতকরা ৭০ পাউন্ড আয় হয়। অন্য কোন পেশায় এক স্মাগলিং ছাড়া এইরূপ মুনাফা অর্জিত হয় না। তবে স্মাগলিংয়ে ঝুকি আছে- হানড্রেট পারসেন্ট। হালে আর একটি ব্যবসা চালু হইয়াছে, যাহার মুনাফা সর্বাধিক। তবে এই ব্যবসায়ে যেটা মূলধন, সেটা ট্যালেন্ট। এই ব্যবসায়ে কোন যন্ত্রপাতি, দোকানপাট, ওজন বাটখারা বা গজ কাঠিরও দরকার হয় না। লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা আয় হয়। এই আয়ের উপর সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণও নাই। অর্থাৎ ইনকাম ট্যাক্স, সারট্যাক্স, সুপার ট্যাক্স প্রভৃতি ট্যাক্স বা কর আদায়ের কোন আইন আজ পর্যন্ত কোন সরকার প্রণয়ন করেন নাই। যাহারা আইন প্রণয়ন করিয়া কর আদায় করিবেন; তাহারাই পীরের মুরিদ হন এবং পীরের কদমে নজরানাস্বরূপ অগাধ অর্থ প্রদান করেন। দেশের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত স্বয়ং প্রেসিডেন্ট, প্রধান মন্ত্রি, সংসদ সদস্য ও উচ্চ পর্যায়ের সরকারী কর্মচারীবৃন্দের অধিকাংশই এই সব পীরের মুরিদ হন এবং দরবারে গিয়া হৃদয়গ্রাহী বক্তৃতার মাধ্যমে পীরের মাহাত্মের কথা প্রচার করেন। ফলে অশিক্ষিত সাধারণ মানুষ পীরের মুরিদ হয় ও সহস্র সহস্র টাকা পীরের পাক কদমে নজরানা প্রদান করিয়া আত্মতৃপ্তি লাভ করেন।
এই পীর মুরিদী কারবারটি বাংলা দেশের উর্বর ভূমিতেই বেশি জম জমাট হইয়াছে। কারণ, এখানকার সর্বস্তরের বাসিন্দাই ধর্মভীরু। মজার ব্যাপার- জীবিত পীর ঠাকুরের চেয়ে পরলোকগত পীর ঠাকুরদের মাহাত্ম বেশি করিয়া প্রচার করা হয়। মৃত পীরগণ তাহাদের রূহানী হাত দ্বারা মুরিদদের সকল বালা মুছিবত দূরীভূত করিয়া দেন। কখনও কখনও শক্তিশালী পীর কায়া বদলাইয়া অলৌকিকভাবে তাহার আশেকান মুরিদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাতও করিয়া থাকেন। পীরের দরবারের কর্মকর্তাগণ তখন জোরে শোরে গাহিয়া উঠেন-‘কায়া বদলইছেরে বাবা কায়া বদলাইছে, ছিন্নি বিতরণের লাগি বাবা হাজির হইয়াছেরে বাবা হাজির হইয়াছে।’
পীরের দরবারের কর্মকর্তাগণ ব্যবসায়িক বুদ্ধি খাটাইয়া, পীরের খাদেম সাজিয়া, পীরের গদ্দিনিসীন নায়েব হইয়া, পীরের আশেকান, জাকেরান, ভক্তদের কাছে ছাপানো মনি অর্ডার ফর্ম, পীরের দরবারে নজর নেয়াজ টাকা পয়সা পাঠানোর অলৌকিক ফজিলতের অপূর্ব বর্ণনা বাংলা, ইংরেজী, উর্দ্দূতে বিজ্ঞাপন সাইজের কাগজে ছাপাইয়া পাঠাইয়া দেন, যাহাতে ভক্তগণ সহজেই মনি অর্ডারযোগে খাদেমের নামে নজরানার টাকা পয়সা পাঠাইতে পারেন। নজরানার টাকা আলাদা ও মান্নতের টাকা আলাদাভাবে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া থাকে প্রচারপত্রে। মনস্তত্বের কি অপূর্ব কৌশল!
তারপর কিছুদিন বাদে প্রেরকের নামে খাম চলিয়া আসে। খামের মধ্যে কিছু গোলাপ ফুলের শুকনা পাঁপড়ি ও কিছু সুগন্ধি চিনির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খাগড়াই থাকে। ইহা পীরের দরবারের ‘মহা পবিত্র তবাররক’। পরম ভক্তির সহিত আশেকান জাকেরান ভক্তগণ আত্মীয় স্বজনসহ একটু একটু করিয়া আস্বাদ গ্রহণ করেন। আশেকানদের দৃঢ় বিশ্বাস- এই মহা পবিত্র তবাররক ভক্ষণে তাহাদের যাবতীয় রোগ বালাই, দুনিয়াভী আপদ বিপদ দূরীভূত হইবে ও অর্থনৈতিক উন্নতি হইবে। বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর, মনস্তত্ববিদ বিজ্ঞানীদের আরেকটি কৌশল বাক্য।
আশেকানদের প্রেরিত অর্থে খাদেম বাবাজীগণ তাহাদের চেহারা মোবারকের জৌলুস বৃদ্ধি করেন। একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে এই ক্যাপিট্যাললেস বিজনেস চালু আছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রায় গ্রামেও ব্যবসা চালু আছে। সুচতুর সাহসীনি মহিলারা এই ব্যবসায়ে নেতৃত্ব দেন। তাহাদেরকে পীরানী বলে। Pরানীর ভক্তগণ চাউল, ডাইল, টাকা পয়সা পীরানীর পাক কদমে নজরানা প্রদান করেন। পীরানী সাহেবান ভক্তদের প্রদত্ত অর্থে রানীর হালেই বিরানী ভক্ষণ করেন। মৃত পীরের দরবারের কর্মকর্তাগণ নানা কৌশলে প্রয়াত পীরের কেরামতির কথা ভক্তদের নিকট প্রচার করেন। দামুকদিয়ার সোলেমান বাবা, ভেড়ামারার ঘোড়াশাহ্ বাবার আস্তানায় এইরূপ প্রচারের ফলে বহু অর্থ আয় হয়।
এই ধরনের ব্যবসা সকলের দ্বারা সম্ভব হয় না। আবার পজিশন মাফিক স্থান হওয়াও দরকার। এই কর্মে বিশেষ সাহস ও ধৈর্যের প্রয়োজন। যিনি এই ব্যবসায়ের পরিচালক হইবেন, তাহাকে অবশ্য কয়েকটি বিশেষগুণের অধিকারী হইতে হইবে। ১) ধর্মবিদ্যায় বিশেষ বুৎপত্তি থাকিতে হইবে। ২) যুক্তিশাস্ত্র ও মনোস্তত্ব বিদ্যায়ও পারদর্শী হইতে হইবে। ৩) রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ন্যায় সাংগঠনিক ক্ষমতা থাকিতে হইবে। ৪) চেহারাটাও নাদুস-নুদুস আকর্ষণীয় হইতে হইবে- যাহাতে একনজর দেখা মাত্রই দর্শনকারীর হৃদয় ভক্তিতে গদ গদ ভাবের উদয় হয়।
এই ধরনের ব্যবসায়ে যাহারা পূর্ণমাত্রায় সাফল্য অর্জন করিয়াছে- তাহারা যদি দেশের আপামর জনগণের কল্যাণের চেষ্টা করেন তবে তাহাদের সেই চেষ্টা স্বল্প সময়েই ফলপ্রসূ হইতে পারে। মুরিদ বা ভক্তগণ তাহাদের ধর্মীয় গুরু বা পীরের নির্দেশে জান কোরবান করিতেও কুণ্ঠিত হয় না। গুরুগণ ইচ্ছা করিলে ভক্তদের নির্দেশ দিয়া স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে কোন একটি বিশেষ এলাকার যথেষ্ঠ উন্নতি বিধান করাইতে পারেন।
অত্যন্ত আনন্দের কথা- পীরের মুরিদগণ, ঠাকুরের ভক্তগণ পরস্পর সহোদর ভ্রাতা মনে করে ও একের দুঃখে অপরে দরদ নিয়া আগাইয়া আসে। এই ভ্রাতৃত্ববোধটাকে বুদ্ধিমত্তার সহিত ব্যবহার করিতে পারিলে দেশের সংহতি ও ঐক্য দৃঢ়তর হইয়া কল্যাণ ও শান্তি ডাকিয়া আনিতে পারে।
অনুলিখন: মাহফুজ
*মোকছেদ আলী (১৯২২-২০০৯)। স্বশিক্ষিত।
দারুণ লাগল। মোকছেদ আলী সমন্ধে জানতে ইচ্ছে করছে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আপনার দারুন লাগল বলে আমারও ভালো লাগলো। আশা করি ধীরে ধীরে তার সম্পর্কে, বিশেষ করে তার লেখা সম্পর্কে জানাতে পারবো। সেজন্য একটু ধৈর্য তো ধরতেই হবে।
মোকছেদ আলীকে জাঝা! :guli:
অনুলেখক মাহফুজ, জিন্দাবাদ! :clap2:
মোকছেদ আলীর ‘ব্যবসা: পীরগীরী’ ছয়টি অংশে বিভক্ত। এটি হচ্ছে প্রথম অংশ।