আশিকুর রহমানের ‘এটা একটি স্বাভাবিক ঘটনা’তে একটি মন্তব্য লিখতে গিয়েছিলাম। পরে দেখলাম যে মন্তব্যটা অনেক দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে। তাই ভাবলাম আলাদা করেই পোস্ট দিয়ে দেই।
খুব স্বল্প সময়ে লেখা এটি। তাৎক্ষণিক আবেগের বহিঃপ্রকাশও রয়েছে বেশ ভালভাবে। সর্বোপরি, বেশ অগোছালো লেখা এটি। সাধারণতঃ কোন লেখা দুই তিনবার সম্পাদনা না করে আমি কখনোই প্রকাশ করি না। কিন্তু কেন যেন এই লেখাটিকে সম্পাদনা করতে ইচ্ছে করছে না কিছুতেই। আশা করি আমার এই অনীচ্ছাকে সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
১৯৯৬ সাল। হেমন্তের হিমহিম সময়। ঢাকার বাইরের একটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অপূর্ব সুন্দর সবুজ ক্যাম্পাস।
আওয়ামী লীগ সরকার মাত্র কয়েক মাস আগে ক্ষমতায় এসেছে। ছাত্রলীগ তখনো মাথা তুলে দাঁড়ায়নি সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছাত্রদল তাদের গুন্ডামি চালিয়ে যাচ্ছে নির্বিচারে। দেশে যে সরকার পরিবর্তিত হয়েছে সেটাকে গ্রাহ্যেই আনছে না তারা। পরিস্থিতি যখন ছাত্রলীগের সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলো তখন একদিন রাতারাতি পুলিশ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ছাত্রদলকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয় ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের মত ঢোঁড়া সাপের কাছে এরকম পরাজয় সহজে মেনে নিতে পারেনি ছাত্রদলের পান্ডারা। প্রায় প্রতিদিনই গেরিলা কায়দায় টুকটাক আক্রমণ চালাতো তারা। একদিন এক পড়ন্ত বিকেলে বেশ বড়সড় অতর্কিত আক্রমণ চালায় তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরের একটি জনাকীর্ণ বাজারে এসে এলোপাতাড়ি গোলাগুলি শুরু করে তারা। এই হামলাতে সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে সাথে সাথেই মারা যায় দুজন নিরীহ ছাত্র। এর প্রতিবাদে ভাইস-চ্যান্সেলরের বাসায় আগুন জ্বালিয়ে দেয় ছাত্রলীগ। কারো কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর না করেই জান নিয়ে কোনক্রমে ঢাকা পালিয়ে যান তিনি সপরিবারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী প্রশাসন পুরোপুরি অচল হয়ে যায়। একে ওকে এখানে সেখানে বসিয়ে কোনক্রমে জোড়াতালি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন চালু করার চেষ্টা করা হয় সাময়িকভাবে।
ছাত্রদের দাবীর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই জোড়াতালি দেয়া প্রশাসন একজন তরুণ শিক্ষককে নিহত দুজন ছাত্রের একজনের লাশ তার দেশের বাড়ী রংপুরে পৌঁছে দেবার দায়িত্ব অর্পণ করে। সেই সময় টেলিফোন ব্যবস্থা একেবারেই মান্ধাতার যুগের মত ছিল। ওই ছাত্রের বাবা-মায়ের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন যোগাযোগই করতে পারেনি। তাদের সন্তান যে আর জীবিত নেই এই খবরটাও তারা তখনো জানে না।
সেই তরুণ শিক্ষকের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় কী করে তাদের সন্তানের লাশ অপ্রস্তুত বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে। কী করে সে মুখোমুখি হবে সেই নিহত ছাত্রের শোকাহত মায়ের, বজ্রাহত বাবার?
কয়েকজন ছাত্রকে সঙ্গী করে সন্ধ্যায় রওনা দিয়ে ভোররাতে লাশ নিয়ে রংপুরে পৌঁছোয় সেই শিক্ষক। কবরের নিস্তব্ধতায় ছেঁয়ে আছে বাড়ীটা। যতটুকু না শান্ত হবার কথা তার চেয়েও অনেক বেশি শান্ত সেই বাড়ী। বাড়ীটা কি জানে যে কী ভীষণ ঝড় আসছে কিছুক্ষণের মধ্যেই। নাকি জেনেই শান্ত হয়ে আছে আসন্ন বিপদের প্রতীক্ষায়। শান্ত বাড়ীর বাইরে বিশাল কালো নিস্তব্ধ আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকে জীবন সম্পর্কে অনভিজ্ঞ সেই শিক্ষক। তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে সে। ঘুম থেকে জাগিয়ে স্নেহময় পিতা আর মমতাময়ী মায়ের হাতে তাদের অতি প্রিয় সন্তানের লাশ কীভাবে সে হস্তান্তর করবে তার হিসাব নিকাশ করতে করতে পাগলপ্রায় অবস্থা তার। কীভাবে কোন শোকাহত মানুষকে সান্ত্বনা দিতে হয় তার যে কিছুই জানে না সে।
হঠাৎ করেই কালো অন্ধকার চিরে একফালি আলো এগিয়ে আসে। আলোর পিছন থেকে কেউ একজন অনুচ্চস্বরে বলে, লাশ নিয়ে এসেছেন আপনারা, তাই না? এদিকে আসুন। ওর বাবা গিয়েছিল বাজারে কাল বিকালে। সেখানেই পত্রিকায় দেখেছেন তার ছেলে মারা গিয়েছে। সাথে সাথে বিকট চিৎকার দিয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে গিয়েছিলেন তিনি বাজারের মধ্যে। মা খবর জানার পর থেকে বারবার মুর্ছা যাচ্ছে। সারাদিন কেঁদে কেঁদে আচ্ছন্নের মত পড়ে আছে তারা। আজকেই লোক পাঠানোর কথা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফিরিয়ে আনার জন্য।
লাশ নিয়ে উঠোনে যেতে না যেতেই হঠাৎ ভোজবাজির মত ঘুম থেকে জেগে উঠে নিস্তব্ধ বাড়ীটা। শোকের মাতম ভেসে আসতে থাকে স্তব্ধ বাড়ীর আনাচ কানাচ থেকে। ভোর রাতের নির্জনতাকে বিদীর্ণ করে তীক্ষ্ণ কন্ঠে চিৎকার করে আহাজারী করে উঠেন গভীরভাবে শোকাহত কোন রমণী। মৃত সন্তানের নাম নিয়ে আকুল কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। সাথে যুক্ত হয় আরো অসংখ্য নারী কণ্ঠের বিলাপ।
কোথা থেকে ভগ্ন স্বাস্থ্যের এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি এসে হুমড়ি খেয়ে পড়েন তরুণ শিক্ষকের বুকের উপর। অবাধ্য আবেগে আকুল হয়ে ডুকড়ে কেঁদে উঠেন তিনি। তার শরীরের অনিয়ন্ত্রিত কম্পন কাঁপন জাগায় শিক্ষকের বুকেও। ছেলের বয়েসী শিক্ষককে আঁকড়ে ধরে রুদ্ধশ্বাসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে তিনি বারবার শুধু বলতে থাকেন, ‘স্যার আমার তরতাজা জোয়ান ছেলেটাকে আপনাদের কাছে পাঠিয়েছিলাম আমি। আপনারা ওর লাশ নিয়ে এলেন কেন? আমার ছেলেটাকে আপনারা বাঁচতে দিলেন না কেন স্যার? কি অন্যায় করেছিল আমার বাচ্চাটা যে ওকে এভাবে মেরে কবর দিতে নিয়ে এলেন? ওর মাকে আমি কী জবাব দেবো? ছেলের শোকে সেতো মরে যাবে স্যার।’
পুত্রহারা এক শোকাতুর পিতাকে গভীর আবেগে বুকে জড়িয়ে সজল চোখে নিকষ কালো নিস্তব্ধ আকাশের নীচে নীরব দাঁড়িয়ে থাকে সেই তরুণ শিক্ষক। এর জবাব তাঁর জানা নেই। কিংবা জানলেও এই গভীর বেদনায় আচ্ছন্ন পিতাকে বলার মত সাহস যে তাঁর নেই।
ফরিদ ভাই,
লেখাটা পড়ে শুধু ‘খারাপ লাগলো’ বলাটা একটা আন্ডারস্টেইটমেন্ট …… কী বলবো ঠিক বুঝতে পারছি না। তাই শেষ পর্যন্ত কেবল ‘পড়েছি’ এটাই জানালাম ।
@স্নিগ্ধা,
হুঁ, খারাপ লাগারই কথা। তবে কথা হচ্ছে যে, যেটুকু বলেছি ওটা কিন্তু সাগরে ভাসমান হিমশৈলীর দৃশ্যমান অংশ মাত্র। জলের তলাতেই রয়ে গেছে মূল অংশটা। মূল অংশটা আরো বেশি মর্মান্তিক, আরো বেশি করুণ, আরো বেশি বেদনাবিধুর, আরো বেশি যন্ত্রণাময়।
আপনার বেদনার কিছুটা ছোঁয়া যেন গায়ে এসে লাগলো। আজ রাতেই একজনকে ফাঁসী দেয়া হবে জেনেও বাসায় গিয়ে তাঁর স্বজনদের তা বলতে পারিনি, সে ঘটণা এতো বছর পরেও ভাবায়। কি নির্মম এই রংগমঞ্ছে আমরা শুধু দর্শক হয়েই থাকি। সমবেদনা জানিয়ে আপনার উপলব্ধিকে বিরক্ত করতে চাই না।
@আশরাফ আহমেদ,
উপলব্ধিটুকু অনুভবের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমি ছাত্র রাজনীতির বিপক্ষে ছিলাম না কখনো। কিন্তু এখন ছাত্র-রাজনীতির কথা ওঠলেই কিছু টেন্ডারবাজির দৃশ্য ছাড়া আর কিছুই মাথায় আসে না !
হয়তো আমার চিন্তাশক্তিই হ্রাস পেয়ে যাচ্ছে ইদানিং।
লেখাটা বেশ সংবেদনশীল হয়েছে।
@রণদীপম বসু,
চরম সত্যি কথা। আগে যেখানে ছাত্র রাজনীতি বললে বায়ান্ন, আটান্ন, ঊনসত্তুর বা একাত্তর চোখে ভাসতো, এখন ছাত্র রাজনীতি বললেই গুন্ডা-পান্ডা ছাত্র নেতাদের টেন্ডারবাজীকেই চোখে দেখতে পাই আমরা।
কিছু কিছু লেখায় মন্তব্য করার মত শব্দ খুঁজ়ে পাইনা। এটাও সেরকম একটা লেখা।
@আতিক রাঢ়ী,
ধন্যবাদ আপনাকে। আমার প্রায় সব লেখাই দেখেছি আপনি পড়েন।
@ফরিদ আহমেদ,
অন্য সবার লেখার প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, আপনার লেখায় আমি সাহিত্য রস খুঁজে পাই।
সাহিত্যের প্রতি আজন্ম দূর্বলতা সত্ত্বেও সময়ের অভাবে আজকাল পড়তে পারি খুব কম। তাই নেটের মিনিএচার সাহিত্য জগতে আপনি আমার প্রিয় একজন সাহিত্যিক। চেষ্টা করি আপনার সব লেখা পড়ার। 🙂
@আতিক রাঢ়ী,
😀
লেখাটা পড়ে মন্তব্য করার মত কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা!!বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আমাদের দেশের বাবা মা কবে নিশ্চিন্ত জীবন যাপন করতে পারবে? সেই দিন কি আমাদের দেশে নিকট ভবিষ্যতে আদৌ আসবে যেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে গিয়ে কোন বাবা মার সন্তান আর লাশ হয়ে ঘরে ফিরবে না! কোন শিক্ষককে আর ছাত্রের লাশ বহন করতে হবেনা …
@নন্দিনী,
একটি নিকষ অন্ধকার সময়ের ভিতর দিয়ে আমাদের বাংগালিদের জীবন অতিবাহিত হচ্ছে,যদিও তা হবার কথা ছিল না, কারন হলো ১৯৭১ সাল।কিন্তু দূভার্গ্য আমার ও আমার বংগ জননীর ১৬ কোটি বাংগালির আজও আমরা আমাদের সঠিক নের্তৃত্ত খুঁজে পাইনি। তাই যতক্ষন পর্যন্ত না আমরা আমাদের পথ নির্ধারন করতে পারব ততক্ষন আমরা শুধু হা-হুতাশ করা ছাড়া অথবা মুক্তমনা বা এই জাতীয় বল্গে লেখাজুখা ছাড়া আর কোন পথ খোলা আছে বলে মনে হয় না। কি বলেন আপামর জনগন ???
ফরিদ আহমেদের লেখা বরাবরই প্রান ছোঁয়া লেখা,তারই ধারাবহিকতায় এই লেখাটি আমরা আবারো উপহার পেলাম।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
লেখাটা পড়ে মন্তব্য করেছেন বলে অশেষ ধন্যবাদ রইলো।
@নন্দিনী,
সেই সুদিনের প্রত্যাশাটুকুই শুধু করে যেতে পারি আমরা।
@ফরিদ আহমেদ,
এই যন্ত্রনা ভুলবার নয়, যাবে না, এবং না।
স্বাধীন দেশ নামক এই বাংলাদেশে শিক্ষককে দিয়ে ছাত্রের লাশ বহন করানো মানি না।
আমি জবাব চাই।
@আশিকুর রহমান,
না মানলেও অনেক কিছুই ঘটে এই দেশে। সেগুলোকে ঠেকানোর কোন উপায় আছে বলেও জানা নেই কারো। বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ পড়বে আর সেই ভারী লাশ কোন শিক্ষকের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হবে তার বাবা-মায়ের কাছে পৌঁছে দেবার এটাই এখন গতানুগতিক রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
@আশিকুর রহমান,
দুঃখজনক সত্যি হচ্ছে যে, না মানলেও এটিই ঘটবে, এটিই বাস্তবতা।
ছাত্র রাজনীতির করাল থাবার শিকার সামগ্রিকভাবে পুরো ছাত্র সমাজ বা দেশই হয়। তবে সরাসরি সংঘাতে যারা প্রান হারান আমার দেখা মতে তাদের বেশীরভাগই হল আবু বকর বা মাসুমের মত গরীব ঘরের ছেলে। শহরের স্মার্ট ছেলেদের হলে থাকতে হয় না, গোলমালের আচ পেলে পালাতেও পারে তাড়াতাড়ি তাই তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার কম।
এ কারনেই মনে হয় ছাত্র রাজনীতির কালো থাবা থেকে ছেলেপিলেদের বাচাতে কেউই তেমন সিরিয়াসলি চিন্তা আসলে করেন না। মারা তো যাচ্ছে গরীব ঘরের ছেলে পিলে। তাদের কথা আর কে ভাবে। বড়জোর একটা গরু ছাগ্ল বা ব্যাংক লোন মাফ করে দিলেই তো যথেষ্ট।
আমি মানি যে হয়ত এখনো অতটা দেরী হয়নি, হয়ত আমার বিশ্বাসের বাইরে সত্যিই ছাত্র রাজনীতিকে আবারো ৫০/৬০ এর ধারায় ফিরিয়ে নেওয়া যাবে। বিশ্বাস করতেই চাই। তবে কতদিনে? সেই সংস্কার হলেও অন্তত দুচার বছরে হবে না। অতদিনে আমরা আর কয়জন আবু বকরকে হারাবো? কি জবাব দেব তাদের বাবা মার কাছে? বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্রের আত্মত্যাগ? হাসিমুখে মেনে নিন, আপনার ছেলের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না, ছাত্ররাজনীতির গৌরবের দিন আমরা ফিরিয়েই আনব ইনশাল্লাহ?
আর একটা হিসেব আমাকে কেউ এখনো পরিষ্কার দিতে পারলেন না, সবারই কথা শুনে বুঝছি যে ছাত্র সংগঠন সে রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক যাই হোক না কেন তার খুবই দরকার আছে। কারন তারা ছাত্র প্রতিনিধি, ছাত্রদের হয়ে নানান দাবী দাওয়া সমস্যা মেটায়। খুবই ভাল কথা। এখন প্রশ্ন হল বর্তমান দলীয় কাঠামোর ছাত্র সংগঠন গুলি সাধারন ছাত্রদের দাবী দাওয়া সমস্যা মেটাতে কতটা সাফল্যের পরিচয় দিচ্ছে কেউ? আগন্তুক সাহেবের থেকে শুধু শুনলাম যে তারা অন্তত জামাত শিবির ঠেকাচ্ছে বলে উনি মনে করেন। বাকিরা আর কি মনে করেন? ছাত্র রাজণীতির মূল উপযোগিতা বলতে আমরা যা বুঝি তাই যদি এরা না করে তবে তাদের জিইয়ে রেখে খামোখা লাশ ফেলার ঝুকি আমরা কেন নেব? বন্ধ করে দিলে কি এমন ভয়াবহ ক্ষতি হবে?
@আদিল মাহমুদ,
আমার মতে জামাত-শিবির কে আটকে রাখার মত কোন ক্ষমতাই অন্য দুদলের ছাত্র নেতা দের নাই। তারা যদি এক হয় তবে হয়তো বা সম্ভাবনা থাকে। আর এ ছাড়া যেটুকু বাধা দেয়া যাচ্ছে তাতে তেমন কিছুই হবার নয়।
আর দেয়ালে শেষ পর্যন্ত পিঠ না ঠেকা পর্যন্ত এই দুই দল একত্র হতে পারবে এই আশা বৃথা। দেয়ালে পিঠ ঠেকলে তখন আবার পুরো বাংলাদেশ একত্র হবার আশা করা যায়। নাইলে আর কোন উপায় দেখি না।
@তানভী,
যুদ্ধপরাধীদের বিচার আসলেই করা গেলে জামাত শিবিরের বিষদাত অনেকটা এমনিই ভেঙ্গে যাবে। দল তো শিবিরেরই খালাতো ভাই, আর লীগের হাতে কোন ঐশী ক্ষমতা আছে বলে আমার জানা নেই। হতেই পারে যে কিছু প্রতিষ্ঠানে লীগ বা বাম/ ইউনিয়ন আসলেই শিবির ঠেকাতে পারে, তবে সামগ্রিক বিচারে মনে হয় না এই পয়েন্ট ছাত্র রাজনীতি চলবে নাকি চলবে না এই বিতর্কে গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে।
ছাত্রলীগ কোনদিন নিষিদ্ধ ছিল? তাতে জামাত শিবিরের উত্তরোত্তর পুষ্টি সাধনে কতটা বাধা তারা দিতে পেরেছে? আমি অন্তত এখনো এর কোন দালিলিক প্রমান (যেমন পত্রিকা রিপোর্ট, কলাম) পাইনি যাতে এ যুক্তিতে আস্থা রাখতে পারি।
এরকম একটা কাহিনী অনেক আগে পড়েছিলাম। এখন বলেন, উন্নত জীবনের আশায় একটা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রী যদি বিদেশে পাড়ি জমায় তবে কি তাকে বেঈমান বলবেন? মাথাই যখন প্রায় নিষ্ক্রীয় তখন কেবল পদযুগল একটা দেহকে কত দূরই বা টেনে নিয়ে যেতে পারে?
ফরিদ,
তোমার বরাবরের লেখার মতো এ লেখাটাও হৃদয় ছুঁয়ে গেল। অনুমান করছি সেই তরুন শিক্ষকটিই ফরিদ আহমেদ।
আমার ছোট ভাই প্রদ্যোত দাস, ৯০ এর দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের ছাত্র। তখনকার পরিস্থিতিতে একটি পোষ্টার করেছিল যার সারমর্ম ছিল — যদি আর একটি প্রাণের বিনিময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি ফিরে আসে তবে আমাকে গুলি করা হোক জাতীয়।
এর পর আরও কত প্রাণ ঝরে গেল। মায়ের বুক খালি হল। শান্তি আসল না। যার প্রতিফলনে বাংলাদেশের আনাচে কানাচের আকাশকে নিকষ কালো নিস্তব্ধ করে তুলছে।
@গীতা দাস,
মৃতের সারি-ই বাড়ছে দিদি। মায়েদের আহাজারীতে বাতাসের শুধু ওজন বাড়ছে দিনকে দিন। কিন্তু শান্তি আর আসছে না কিছুতেই।