ভাবছি দর্শন শাস্ত্রের প্রচলিত কিছু শব্দার্থ বিশ্লেষণ করে গুটি কয় হাল্কা ধরনের পোস্ট দেব সামনে। আমি দেখছি মুক্তমনায় লেখেন অথচ দর্শনের প্রান্তিক কিছু ব্যাপারে খুব অস্পষ্ট ধারনা রাখেন আমাদের অনেকেই। অনেকেই জানেন না আদি কারণ সম্বন্ধে, অক্কামের ক্ষুর কিংবা প্যাস্কালের ওয়েজার সম্বন্ধে, কিংবা গুলিয়ে ফেলেন নাস্তিকতাও একটি ধর্ম কিনা এ বিষয়ে। আমি এর আগে মেসবাহউদ্দিন জওহের নামে এক ভদ্রলোকের সাথে বিতর্ক করতে গিয়ে এগুলো নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু লিখেছিলাম। ভাবছি ছোট আকারে দু চারটি লেখায় বিষয়গুলো আবারো তুলে আনবো। মুক্তমনা ব্লগে বিষয়গুলোর আলাদা উপস্থিতি দাবী করে বলে আমার ধারণা।
:line:
আমি দেখেছি অনেকেই বুঝে হোক, না বুঝে হোক, এই ব্যাপারটি মাঝে মধ্যে এভাবেই আউরে দেন যে, আস্তিক্যবাদের মত নাস্তিক্যবাদও একধরনের বিশ্বাস। আস্তিকরা যেমন ‘ঈশ্বর আছে’ এই মতবাদে বিশ্বাস করে, তেমন নাস্তিকরা বিশ্বাস করে ‘ঈশ্বর নেই’ – এই মতবাদে। দুটোই নাকি বিশ্বাস। যেমন, এই ব্লগে শামীম সাহেব রায়হানকে উত্তর দিতে গিয়ে বলেছেন –
‘নাস্তিক মানেই বিশ্বাসী। তারা বিশ্বাস করে যে “ঈশ্বর নেই”। কিন্তু “ঈশ্বর নেই” এটি প্রমানিত সত্য নয়। শুধু যুক্তি দিয়েই বুঝানো সম্ভন “ঈশ্বর নেই” বিবৃতিটি আসলে ফাকিবাজি। ‘
নাস্তিক মানেই বিশ্বাসী, কিংবা নাস্তিকতাবাদও একটি বিশ্বাস – এগুলো ঢালাওভাবে আউরে দিয়ে নাস্তিক্যবাদকেও এক ধরনের ‘ধর্ম’ হিসেবে হাজির করার চেষ্টাটি আমি বহু মহলেই দেখেছি। নাস্তিকদের এভাবে সংজ্ঞায়ন সঠিক কি ভুল, তা বুঝবার আগে ‘নাস্তিক’ শব্দটির বুৎপত্তিগত অর্থটি আমাদের জানা প্রয়োজন। ‘নাস্তিক’ শব্দটি ভাংগলে দাঁড়ায়, নাস্তিক + কন বা নাস্তি+ক। ‘নাস্তি’ শব্দের অর্থ হল নাই, অবিদ্যমান। ‘নাস্তি’ শব্দটি মূল সংস্কৃত হতে বাংলায় এসে ‘ক’ বা ‘কন’ প্রত্যয় যোগে নাস্তিক হয়েছে যা তৎসম শব্দ হিসেবে গৃহীত। ন আস্তিক = নাস্তিক – যা ন ঞ তৎপুরুষ সমাসে সিদ্ধ এবং আস্তিকের বিপরীত শব্দ। আরো সহজ করে বাংলায় বললে বলা যায়, না + আস্তিক = নাস্তিক। খুবই পরিস্কার যে, সঙ্গত কারণেই আস্তিকের আগে ‘না’ প্রত্যয় যোগ করে নাস্তিক শব্দটি তৈরী করা হয়েছে। আস্তিকরা যে ঈশ্বর/আল্লাহ/খোদা ইত্যাদি পরম সত্ত্বায় বিশ্বাস করে এ তো সবারই জানা। কাজেই নাস্তিক হচ্ছে তারাই, যারা এই ধরণের বিশ্বাস হতে মুক্ত। তাই সংজ্ঞানুযায়ী নাস্তিকতা কোন বিশ্বাস নয়, বরং ‘বিশ্বাস হতে মুক্তি’ বা ‘বিশ্বাসহীনতা’। ইংরেজীতে নাস্তিকতার প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘Atheist’। সেখানেও আমরা দেখছি theist শব্দটির আগে ‘a’ প্রিফিক্সটি জুড়ে দিয়ে Atheist শব্দটি তৈরী করা হয়েছে। নাস্তিকতা এবং মুক্তচিন্তার উপর বহুল প্রচারিত গবেষণাধর্মী একটি ওয়েব সাইটে শব্দটির সংজ্ঞায়ন করা হয়েছে এভাবে –
Atheism is characterized by an absence of belief in the existence of gods. This absence of belief generally comes about either through deliberate choice, or from an inherent inability to believe religious teachings which seem literally incredible. It is not a lack of belief born out of simple ignorance of religious teachings.
সহজেই অনুমেয় যে, ‘absence of belief’ শব্দমালা চয়ন করা হয়েছে ‘বিশ্বাস হীনতা’কে তুলে ধরতেই, উলটোটি বোঝাতে নয়। Gordon Stein তাঁর বিখ্যাত ‘An Anthology of Atheism and Rationalism’ বইয়ে নাস্তিকতার (Atheism) সংজ্ঞায়ন করতে গিয়ে বলেন,
‘When we examine the components of the word ‘atheism,’ we can see this distinction more clearly. The word is made up of ‘a-‘ and ‘-theism.’ Theism, we will all agree, is a belief in a God or gods. The prefix ‘a-‘ can mean ‘not’ (or ‘no’ ) or ‘without’. If it means ‘not,’ then we have as an atheist someone who is not a theist (i.e., someone who does not have a belief in a God or gods). If it means ‘without,’ then an atheist is someone without theism, or without a belief in God’. (Atheism and Rationalism, p. 3. Prometheus, 1980)
আমরা যদি atheist শব্দটির আরো গভীরে যাই তবে দেখব যে, এটি আসলে উদ্ভুত হয়েছে গ্রীক শব্দ ‘a’ এবং ‘theos’ হতে। গ্রীক ভাষায় ‘theos’ বলতে বোঝায় ঈশ্বরকে, আর ‘a’ বলতে বোঝায় অবিশ্বাস বা বিশ্বাসহীনতাকে। সেজন্যই Michael Martin তাঁর ‘Atheism: A Philosophical Justification’ বইয়ে বলেন, ‘According to its Greek roots, then, atheism is a negative view, characterized by the absence of belief in God.’ (Atheism: A Philosophical Justification”, p. 463.,Temple University Press, 1990) ।
আসলে নাস্তিকদের বিশ্বসী দলভুক্ত করার ব্যাপারটি খুবই অবিবেচনাপ্রসুত। ব্যাপারটাকে আরেকটু পরিস্কার করা যাক। ধরা যাক, এক মুক্ত-মনা যুক্তিবাদী ব্যক্তি ভুতে বিশ্বাস করেন না। তবে কি সেজন্য তিনি ‘না-ভুতে’ বিশ্বাসী হয়ে গেলেন? শামীম সাহেবদের যুক্তি অনুযায়ী তাই হবার কথা। এভাবে দেখলে, প্রতিটি অপ-বিশ্বাস বিরোধিতাই তাহলে উলটোভাবে ‘বিশ্বাস’ বলে চালিয়ে দেওয়া যায়, তা সে ভুতই হোক, পঙ্খিরাজ ঘোড়াই হোক, অথবা ঘোড়ার ডিমই হোক। যিনি পঙ্খিরাজ ঘোড়া বা চাঁদের চড়কা-বুড়ীর অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন না, তিনি আসলে তাঁর সংশয় এবং অবিশ্বাস থেকেই তা করেন না, তার ‘না-বিশ্বাসে’ বিশ্বাসী হবার কারণে নয়। যদি ওই ব্যক্তিটিকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কেন ওগুলোতে তিনি বিশাস করেন না, তিনি হয়ত জবাবে বলবেন, ওগুলোতে বিশ্বাস করার মত যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় নি বলে। কিংবা হয়ত বলতে পারেন, এখন পর্যন্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ওগুলো সত্ত্বার বাস্তব অস্তিত্ব কেউ প্রমাণ করতে পারেন নি, তাই ওসবে বিশ্বাস করার প্রশ্ন ওঠে না। এটি পরিস্কার যে, এই বক্তব্য থেকে তার মনের সংশয় আর অবিশ্বাসের ছবিটিই আমাদের সামনে মুর্ত হয়ে ওঠে, বিশ্বাসপ্রবণতাটি নয়। ঈশ্বরে অবিশ্বাসের ব্যাপারটিও কিন্তু তেমনি। নাস্তিকেরা তাদের সংশয় আর অবিশ্বাস থেকেই ‘নাস্তিক’ হন, ‘না-ঈশ্বরে’ বিশ্বাস থেকে নয়। সে জন্যই মুক্ত-মনা Dan Barker তাঁর বিখ্যাত ‘Losing Faith in Faith: From Preacher to Atheist’ গ্রন্থে পরিস্কার করেই বলেছেন – ‘Basic atheism is not a belief. It is the lack of belief.’ (পৃঃ ৯৯)। আসলে সত্যি বলতে কি, ‘বিশ্বাস’ ব্যাপারটিই দাড়িয়ে আছে একটি ‘অপ-বিশ্বাসমূলক’ প্রক্রিয়ার উপর। আমি একবার একজনের সাথে বিতর্কের সময় ড. হুমায়ুন আজাদের সাক্ষাৎকার থেকে একটি প্রাসঙ্গিক উক্তি উদ্ধৃত করেছিলাম। উক্তিটি এখানেও খুব প্রাসঙ্গিক। ড. হুমায়ুন আজাদ তাঁর একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,
‘যে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই, যার কোন অস্তিত্ব নেই যা প্রমাণ করা যায় না, তাতেমানুষকে বিশ্বাস করতে হয়। মানুষ ভুতে বিশ্বাস করে, পরীতে বিশ্বাস করে বা ভগবানে, ঈশ্বরে বা আল্লায় বিশ্বাস করে। এই বিশ্বাস সত্য নয়, এগুলোর কোন বাস্তব রূপ নেই। মানুষ বলে না, আমি গ্লাসে বিশ্বস করি বা পানিতে বিশ্বাস করি, মেঘে বিশ্বাস করি। যেগুলো নেই সেগুলোই মানুষ বিশ্বাস করে। বিশ্বাস একটি অপবিশ্বাসমূলক ক্রিয়া। যা সত্য, তাতে বিশ্বাস করতে হয় না; যা মিথ্যে তাতে বিশ্বাস করতে হয়। তাই মানুষের সব বিশ্বাস ভুল বা ভ্রান্ত, তা অপবিশ্বাস।’
নাস্তিকেরা সঙ্গত কারণেই এই সমস্ত প্রথাগত অপবিশ্বাসের বাইরে। “ঈশ্বর নেই” বিবৃতিটি যদি শামীম সাহেবের কথামত ‘ফাঁকিবাজি’ হয়, তবে অশ্বত্থামা, ট্যাশ গরু, বকচ্ছপ, থর জিউস, জলপরী, ফ্লাইং স্পেগেটি মন্সটার – এগুলো নেই বলাও একধরণের ‘ফাঁকিবাজি’। নয়?
যা হোক শেষ করি ধর্মকারী সাইটে বর্ণিত একজন নিধর্মীর কিছু অমৃত বচন উল্লেখ করে –
নাস্তিক্যবাদকে ধর্মের সঙ্গে যারা তুলনা করে থাকে, তাদের বলতে ইচ্ছে করে:
১. নাস্তিক্যবাদ ধর্ম হলে “অফ” বাটনকে টিভি চ্যানেল বলতে হয়।
২. নাস্তিক্যবাদ ধর্ম হলে টাককে বলতে হয় চুলের রং।
৩. নাস্তিক্যবাদ ধর্ম হলে স্ট্যাম্প না জমানোকে হবি বলতে হয়।
৪. নাস্তিক্যবাদ ধর্ম হলে বাগান না করাও একটি শখ, ক্রিকেট না খেলাও একটি ক্রীড়া, কোকেইন সেবন না করাও একটি নেশা।
এই চমৎকার উপমাগুলোর পাশাপাশি আমিও অনুরূপ কয়েকটি উল্লেখ করে তালিকার শ্রীবৃদ্ধি করি –
নাস্তিকতাও একটি বিশ্বাস হলে বোবা লোককে ‘ভাষাবিদ’ হিসেবে ডাকতে হয়।
নাস্তিকতাও একটি বিশ্বাস হলে দন্তহীন ব্যক্তিকে ‘দাঁতাল’ আখ্যা দিতে হয়।
নাস্তিকতাও একটি বিশ্বাস হলে উপোস থাকাকেও এক ধরনের ‘খাদ্যগ্রহণ’ বলতে হয়।
নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস কিংবা ধর্ম হলে চাকরী না করাটাও একটি পেশা।
নাস্তিকতা একটি ধর্ম হলে বই না পড়াকেও বলতে হয় ‘পাঠাভ্যাস’।
নাস্তিকতা বিশ্বাস হলে পোষাক খুলে ফেলাটাও এক ধরনের পোষাক পরিধান।
নাস্তিকতা ধর্ম হলে চশমা না পরাটাও এক ধরনের সানগ্লাসের ফ্যাশান।
নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস হলে চিরকৌমার্যও বিবেচিত হওয়া উচিৎ এক ধরনের ‘বিবাহ’ হিসেবে।
নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস হলে নির্লোভী থাকার চেষ্টাকেও এক ধরনের ‘লোভ’ বলতে হয়।
নাস্তিকতা একটি ধর্ম হলে নিরোগ স্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়াটাও এক ধরনের রোগ!
পাঠকেরা কি বলেন? 😀
নাস্তিক্যবাদ একটি ধর্ম হলে নাসা একটি গোয়েন্দা সংস্থার নাম
নাস্তিক্যবাদ একটি ধর্ম হলে ফেসবুক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা
নাস্তিক্যবাদ একটি ধর্ম হলে কেজিবি একটি সোশাল নেটওয়ার্ক
অভিজিৎ,
বার বার স্টেংগার আর ডকিন্সস কে টেনে আনার কি দরকার। নিজের বিচার বুদ্ধির উপর ভিত্তি করেই যুক্তি দেয়াটাই ভাল। তা ছাড়া স্টেংগার আর ডকিন্সস এর বিশ্লেষোণের সংগে আমি ত দ্বিমত পোষণ করছি না। কতবারি না বললাম যে ডকিন্স, স্টেংগার আর আমি আমার স্বাধীন ইচ্ছা মন্দ ও ইশ্ব্ রের অস্তিত্ব রচনায় এটাই দেখাতে চেয়েছি যে ধর্মবাদীদের দেয়া ইশ্বরের ধর্মগুলি পরপ্সপর বিরোধী। সেখানে ডকিন্স, স্টেংগার আর আমি ধর্মবাদীদের দেয়া ইশ্বরের সংজ্ঞাকেই ধরে নিয়েছি, সংজ্ঞার ভুল বা নির্ভুলতা যাচাই না করে। “গুণ” ও “সংজ্ঞা” এক ব্যপার নয়। এই ব্লগে আমার ফোক্সটা হল সংজ্ঞার উপর। আমার আপত্তি টা সংজ্ঞায়। ধর্মবাদীদের দেয়া ইশ্বরের সংজ্ঞা যুক্তির বিশ্লেষণে অসংগতিপূর্ণ। কিন্তু ধর্মবাদীদের দেয়া ইশ্বরের সংজ্ঞা যুক্তির বিশ্লেষণে অসংগতিপূর্ণ বলে তাদের ই দেয়া সেই সংজ্ঞা অনুযায়ী তাদের দেয়া ধর্মগুলি যে পরস্পর বিরোধী সেটা প্রমাণ করতে দোষ কোথায়? ধর্মবাদীদের দেয়া সংজ্ঞার যৌক্তিক ভুল এক স্বতন্ত্র টপিক হিসেবে লিখব আশা করি।
@অপার্থিব,
আপনার মন্তব্যের কোথায় যেন আমি উষ্মার ছোঁয়া পাচ্ছি। ঠিক আছে আপনার বক্তব্য আমি শুনলাম। আপনিও আমার বক্তব্য শুনেছেন। এবার বোধ হয় আমরা ইস্তফা দিতে পারি।
টেনে আনা দরকার কারণ, গডকে যারা সায়েন্টিফিক হাইপোথিসিস ধরে ব্যাপারটাকে ফলসিফায়েবল মনে করেন, এবং বাতিল করেন – এই দৃষ্টিভিঙ্গিটাকে ঠিকমত গোনায় ধারা হচ্ছিলো না। সেজন্যই আপনার দ্বিতীয় সংজ্ঞা অনুযায়ী নাস্তিকতা বিশ্বাসের পর্যায়ভুক্ত মনে হচ্ছিলো। এই বিষয়ের উপর দর্শনের কাজগুলো উল্লেখ করাটাই ছিলো মূখ্য।
হুমম 🙂 । মন্তব্যটা একটু রূঢ হয়ে গেলো না ? নিজের বিচার বুদ্ধির উপর ভিত্তি করেই আমি যুক্তি দিচ্ছি বলে মনে করি। উপরন্তু সেই যুক্তির সাপোর্ট হিসেবে বা রেফারেন্স হিসেবে ডকিন্স, স্টেঙ্গর এবং অন্যান্য “নিউ এথিস্ট” মুভমেন্ট-এর দর্শনগত অভিব্যক্তির কথা বয়ান করেছি। আপনিও নিজস্ব যুক্তি দিয়েছেন এবং সেটার সাপোর্ট হিসেবে ড্রেঞ্জের উল্লেখ করেছেন। আমি কিন্তু বলছি না যে, আপনি নিজের বিচার বুদ্ধির উপর ভিত্তি করেই যুক্তি দিচ্ছেন না 🙂 ।
তা হলে তো ঝামেলা মিটে গেল। আমার আর কিছু বলার নেই। আপনিই প্রথমে বলেছিলেন, স্টেংগর বা ডকিন্স কেউ মনে হয় না যুক্তিশাস্ত্র যত্ন সহকারে পড়েছেন। তারা দুজনই ব্যবহারিক বিজ্ঞানী, ইত্যাদি। সেটা নিয়ে আলোচনা করতেই তো আমার এত কথা বলতে হল। আমি জযদি জানতাম – আপনি স্টেংগার আর ডকিন্সস এর বিশ্লেষোণের সংগে দ্বিমত পোষণ করেছেন না – তবে কি আমি এত ভ্যাজ ভ্যাজ করতাম, বলেন?
এনিওয়ে – লিখবেন জেনে ভাল লাগলো। আপনার লেখার প্রত্যাশায় রইলাম। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আপনার সাথে আলোচনা করতে সব সময়ই ভাল লাগে।
@অভিজিৎ,
উষ্মা নয়, যুক্তির আলোচনা রসিয়ে লিখিনা বলে কাঠখোটটা শোনায় সেটাই হয়ত। কিছুটা ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটেছে স্বীকার করব একই কথা বার বার বলতে আর শুনতে গিয়ে। ডকিন্স আর স্টেংগারের সংগে আমার একটাই ইস্যু সেটা হল যে ধর্মবাদীদের ইশ্বরের সংজ্ঞাকে valid বলা। এরপরের বাদ বাকী সব কিছু ত যুক্তিপূর্ণ বিশ্লেষণ। ঠিক আছে এখানেই ইস্তফা দিতে পারি আমরা।ইশ্বরের সংজ্ঞা নিয়ে একটু পরে লিখব ইচ্ছে আছে।
অভিজিৎ,
তুমি যে আমার বক্তব্য বুঝতে পারছনা সেটা মোটামুটি আমার কাছে (তোমার কাছে নয়) পরিস্কার। হয়ত আমার ভাষার দুর্বলতার জন্য। আমি যা বলছি বা বোঝাতে চাইছি সেটা wikipedia’s ignosticism এ সুন্দর ভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে। এতে অন্তত এটাও প্রমাণ হবে যে শূধু আমি একাই এই কথা বলছিনা। নীচে wikipedia’s ignosticism এর প্রাসংগিক অংশ উধৃত করলাম (ড্রেঞ্জ এর বক্তব্য বিশেষ করে প্রণিধান যোগ্য, ড্রেঞ্জ একজন পেশাদার দার্শনিক) ঃ
Ignosticism and theological noncognitivism are generally
synonymous,[2] but the relationship of ignosticism to other
nontheistic views is less clear. While Paul Kurtz finds the view to
be compatible with both weak atheism and agnosticism,[3] other
philosophers consider ignosticism to be distinct.
In a chapter of his 1936 book Language, Truth, and Logic, A. J. Ayer
argued that one could not speak of God’s existence, or even the
probability of God’s existence, since the concept itself was
unverifiable and thus nonsensical.[4] Ayer wrote that this ruled out
atheism and agnosticism as well as theism because all three
positions assume that the sentence “God exists” is meaningful.[5]
Given the meaninglessness of theistic claims, Ayer opined that there
was “no logical ground for antagonism between religion and natural
science”,[6] as theism alone does not entail any propositions which
the scientific method can falsify.
Like Ayer, Theodore Drange sees atheism and agnosticism as positions
that accept “God exists” as a meaningful proposition; atheists judge
it to be “false or probably false” and agnostics consider it to be
inconclusive until further evidence is met.[7] If Drange’s
definitions are accepted, ignostics are neither atheists nor
agnostics. A simplified maxim on the subject states “An atheist
would say, ‘I don’t believe God exists’; an agnostic would say, ‘I
don’t know whether or not God exists’; and an ignostic would say, ‘I
don’t know what you mean when you say, “God exists” ‘.”
Ignosticism is not to be confused with apatheism, a position of
apathy toward the existence of God. An apatheist may see the
statement “God exists” as meaningless, yet they may also see it as
meaningful, and perhaps even true.[8]
@অপার্থিব,
ড্রেঞ্জ-এর Ignosticism কিংবা Non-Cognitivism আর্গুমেন্টগুলোর সাথে আমি পরিচিত, কিন্তু আমি বলতে চাই যে, ঢালাওভাবে যেভাবে বলে দেয়া হয় – An atheist would say, ‘I don’t believe God exists’; an agnostic would say, ‘I don’t know whether or not God exists’; and an ignostic would say, ‘I don’t know what you mean when you say, “God exists” ‘.” – এই প্রপোসিশনের বাইরেও ইদানিং অনেক কাজ হচ্ছে। যেমন, don’t know what you mean by God – এটা পতাকার মত বহন করা হয়না, অন্ততঃ অনেক দার্শনিকই করেন না। তারা মনে করেন- গড সংক্রান্ত অনেক সংজ্ঞাই (যেমন আব্রাহামিক গড কিংবা মহাবিশ্বের পরিকল্পণাকারী ইত্যাদি) সংজ্ঞায়িত, এবং টেস্টেবল। সেজন্যই ‘গড ডিলুসন’ বইয়ে মন্তব্য করা হয়েছে, This becomes an important theme in the book, which he calls the God Hypothesis.[15] He maintains that this idea of God is a valid hypothesis, having effects in the physical universe, and like any other hypothesis can be tested and falsified.[The God Delusion, page 50. ] আপনি এ প্রসঙ্গে উইকিতেও দেখতে পারেন। এই অনুকল্পের উপর বিগত কয়েক বছরে খুব ভাল কাজ হয়েছে। স্টেঙ্গরের সর্বশেষ বইটিতে এ নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে।
অভিজিৎ,
স্টেংগরের সংজ্ঞা আর ডকিন্স এর সংজ্ঞা এক নয়। ডকিন্সের সংজ্ঞাও যুক্তিভিত্তিক দর্শনের নিরীখে নির্ভুল নয়। স্টেংগর বা ডকিন্স কেউ মনে হয় না যুক্তিশাস্ত্র যত্ন সহকারে পড়েছেন। তারা দুজনই ব্যবহারিক বিজ্ঞানী। যুক্তির সূক্ষ দিক নিয়ে হয়ত চিন্তা করেন না।
“super-human”, “supernatural intelligence” who deliberately designed and created the universe ” এই বাক্য যুক্তির আলোকে ভ্রান্তপূর্ণ। সংজ্ঞার টার্গেটের অস্তিত্ব বা অস্তিত্ব প্রমাণ করেতে হলে সংজ্ঞকে অবশ্যই বস্তুনির্ভর হতে হবে। উপরের বাক্যের শব্দগুলির কোন বস্তুগত অর্থ নেই যাকে নিয়ে যৌক্তিক ভাবে বিশ্লেশণ (মধ্যান্য স আসছে না কী বোর্ডে কেন জানি) করা যায়। এই শব্দগুলির কোন সার্বজনীন অর্থও নেই। যে যার খুশি মত অর্থ করতে পারেন। তাহলে সেটা নিয়ে কি করে যৌক্তিক আলোচনা হতে পারে। যুক্তির নিয়ম নিছক বিনোদনের জন্য আসেনি। যুক্তি (অর্থাৎ তর্ক বা ডিবেট )এর জন্য এর প্রয়োজন। যুক্তির নিয়মকে খাট করে দেখার কোন কারণ নেই। যুক্তি মানেই বাস্তবতার সংগে বিরোধ নয়। এইরকম উক্তি করাটা ও নাস্তিকতা একটা ধর্ম বলার মত হেতুদোশ। যেমন টি একজন করেছেন। ইশ্বরের কোন যুক্তিসম্মত সংজ্ঞা যে নেই সেটা কোন খবর হবার কথা নয়। পেশাদার দার্শনিক (যারা যুক্তিশাস্ত্র পড়েন ও বোঝেন) তারা এটা ঠিকই জানেন। জনপ্রিয় বা প্রচলিত সংজ্ঞা যুক্তির আলোকে ভ্রান্ত হলেও সেই সংজ্ঞা কে ভিত্তি করে যে ধর্মগুলি ব্যক্ত করা হয় সেগুলো যুক্তির নিয়ম দ্বারা স্ববিরোধপূর্ণ প্রমাণ করা যায় যেটা আমি, স্টেংগার আর ডকিন্স দেখিয়েছেন। ইশ্বরের জনপ্রিয় বা প্রচলিত সংজ্ঞা যুক্তিশাস্ত্রএ নিয়মের পরিপন্থী বলা আর সেই সংজ্ঞা কে ভিত্তি করে যে ধর্মগুলি ব্যক্ত করা হয় সেগুলো যুক্তির নিয়ম দ্বারা স্ববিরোধপূর্ণ প্রমাণ করা এই দুটর মধ্যে যে কোন বিরোধ নেই সেটা অভিজিৎ বুঝতে পারেছেনা ,এটাই আমাকে অবাক করছে।
@অপার্থিব,
এটা বোধ হয় ঢালাওভাবে বলে দেয়া ঠিক হল না। ভিক্টর স্টেঙ্গর যেমন একজন পদার্থবিজ্ঞানী (Professor Emeritus of Physics and Astronomy, University of Hawaii), ঠিক তেমনি তিনি দার্শনিকও। না হলে তিনি University of Colorado র Adjunct Professor of Philosophyর পদে আসীন থাকতে পারতেন না। আর, ডকিন্স দর্শশাস্ত্র না পড়ালেও বিশ্বের খ্যাতনামা চিন্তাবিদদের একজন হিসেবে গৃহীত। স্টিভেন ওয়েনবার্গ এবং অন্যান্যদের মত তিনিও বিজ্ঞানের দার্শনিক। তার ব্লাইন্ড ওয়াচমেকার, গড ডিলুশন প্রভৃতি বইগুলোতে প্রান্তিক বিজ্ঞানের পাশাপাশি দার্শনিক চিন্তাধারারও সমন্বয় ঘটেছে। কাজেই তারা ” যুক্তিশাস্ত্র যত্ন সহকারে পড়েননি”, কিংবা “যুক্তির সূক্ষ দিক নিয়ে চিন্তা করেন না” বলাটা নিতান্তই আপনার ব্যক্তিগত অভিমত। একই বিশেষণ বা অভিমত যে কেউ অপার্থিব বা অভিজিতের উপরও প্রয়োগ করে তাদের উড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু সেটা বোধ হয় আলোচ্য বিষয় হওয়া উচিৎ হবে না।
আসলে ডকিন্সের বাক্যটির মোদ্দা কথা হল – কোন সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী (God is a being than which no greater being can be thought), যাকে ঈশ্বর নামে অভিহিত করা হচ্ছে, তার দ্বারা এই মহাবিশ্ব এবং জীবনের সৃষ্টি এবং ডিজাইন করা হয়েছে কিনা। আমি আগেই বলেছি এটি একটি টেস্টেবল হাইপোথিসিস। তারা মহাবিশ্ব ও জীবজগতের প্রকৃতি, বিবর্তনের বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনায় এনে এই হাইপোথিসিস অনেকেই টেস্ট করেছেনও, সেজন্যই ডকিন্স এবং স্টেঙ্গর দু’জনেই উপসংহারে পৌছেঁছেন – “The Universe and life do not look at all designed, they look just as they would be expected to look if they were not designed at all”. কেবল তারা “দর্শনশাস্ত্র যুক্তি সহকারে পড়েননি” বলে এড়িয়ে গেলে হবে না!
আমি কিন্তু বুঝতে পারছি। আমি কেবল বলতে চেয়েছি, আপনার দেওয়া দ্বিতীয় সংজ্ঞানুসারেও নাস্তিকতা বিশ্বাসের ব্যাপার হয় না। এই দ্বিতীয় সংজ্ঞার গোত্রভুক্তরা “গড”কে (প্রচলিত সংজ্ঞার ভিত্তিতেই হল না হয়) একটি হাইপোথিসিস হিসেবে বিবেচনায় এনে তার অস্তিত্ব পরীক্ষা করেছেন এবং পরিশেষে বাতিল করেছেন। দর্শনশাস্ত্রের পরবর্তী এই এডভান্সমেন্টগুলো হয়তো আপনার চোখে পড়ছে না। 🙂
আপনার “অবাক লাগলেও” আমার কিন্তু বেশ ভাল লাগছে এই দেখে যে, অনেকদিন পর অপার্থিবের কন্ট্রিবিউশন দেখা যাচ্ছে মুক্তমনার পাতায়! এটাই বা কম কিসে! 😉
আমার আগের মন্তব্যের কিছু ঢিলা অংশ মেরামত করা যাক। আমি লিখেছিঃ
যে ধর্মগুলি বলা হয়েছে সেগুলো ত যুক্তির নিয়ম লংঘন করে না ।
যুক্তির নিয়ম লংঘন করে না বলতে বোঝাতে চেয়েছি যে ধর্মগুলির বর্ণনাগুলি অবচনবাক্য নয, বচনবাক্য। যুক্তির আলোচনায় বচন আর অচনবাক্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোন উক্তি বচন না অচনবাক্য সেটা হিল্লে না করে যুক্তিতে এগুনো অনুচিত। কিন্তু স্টেঙ্গর ও ধর্মবাদীদের ইশ্বরে সংজ্ঞা বচনবাক্য নয়। তাই তার অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব cannot be tested by the standard method of science.
@অপার্থিব,
একটা উদাহরণ দিয়ে শুরু করি। সবাই জানে ঘোড়ার অস্তিত্ব আছে। ইউনিকর্ণের অস্তিত্ব নেই। কিন্তু তার মানে এই নয় ইউনিকর্ণ সুসংজ্ঞায়িত নয়। ইউনিকর্ণের শিংওয়ালা কাল্পনিক ছবি বহু সাইটেও পাওয়া যাবে। ইউনিকর্ণের অস্তিত্বে অবিশ্বাসী হওয়া মানে দর্শনগত ফ্যালাসিতে পড়া বলে আমি মনে করি না।
ব্যাপারটা পুরোপুরি না হলেও আংশিকভাবে ঈশ্বরের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যুগ যুগ ধরে ধর্মবাদীরা এবং আস্তিকেরা বিভিন্নভাবে ঈশ্বরের সংজ্ঞা দিয়ে এসেছেন, বৈশিষ্ট বা গুণ আরোপ করেছেন। তাদের দেওয়া সংজ্ঞা এবং বৈশিষ্ট বিচার করলে কিছু এট্রিবিউট অবশ্যই পরষ্পরবিরোধী। কিন্তু এট্রিবিউটের পরষ্পর বিরোধিতা এড়িয়েও সংজ্ঞা দেয়া সম্ভব হতে পারে। যেমন গড ডিলুশন বইয়ে রিচার্ড ডকিন্স (গড হাইপোথিসিস চ্যাপ্টার দ্রঃ) যে সংজ্ঞা দিয়েছেন সেটা বিবেচনা করা যাক। তিনি বলেছেন,
“I shall define the God Hypothesis more defensibly: there exists a super-human, supernatural intelligence who deliberately designed and created the universe and everything in it, including us.”
উপরের স্টেটমেন্টটি অনেকদিক থেকেই একটি টেস্টেবল হাইপোথিসিস, এবং সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে পরষ্পরবিরোধিতা এড়িয়েই । ডকিন্স তার বইয়ে এই টেস্টেবল হাইপোথিসিসটি নিয়ে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকেই আলোচনা করেছেন, এবং এ ধরণের গড যে নেই তা তার বইয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। আমার মনে হয়না এতে কোন দার্শনিক যুক্তি লঙ্ঘিত হয়েছে। স্টেংগরের উক্তিটিও এই প্রেক্ষিতে বিবেচনা করতে হবে।
@অভিজিৎ দা,
:yes:
আমরা যেমন বলতে পারি বকচ্ছপ, ভুত বলতে আসলে কিছু নেই ঠিক তদ্রুপ বলতে পারি ঈশ্বর বলতে আসলে কিছু নেই। শুধু সনাতন যুক্তির কাটামো ঠিক রাখার জন্য বকচ্ছপ, ভুত , ঈশ্বর এগুলোর অস্তিত্ব নেই – একথা না বলতে দেয়া বাস্তবতার সাথে প্রতারণার সামিল। যুক্তিকে অবশ্যই বাস্তবতার সাথে সংগতিপূর্ণ হতে হবে।
আপনাকে ধন্যবাদ।
অভিজিৎ,
লেখার অনুরোধ করারা জন্য ধন্যবাদ। সময়ের অভাবে নিয়মিত লেখা সম্ভব হয়ে উঠেনা। ভিক্টর স্টেঙ্গর আসলে ইশ্বরের ধর্মবাদীদের সংজ্ঞাকেই বেছে নিয়েছেন। সেই সংজ্ঞা বেছে নিলে তা যে যুক্তির নিয়মকে ভংগ করে সেটা ত নতুন কোন ব্যাপার নয়। আমি আমার স্বাধীন, ইচ্ছা, মন্দ ও ইশ্বরের অস্তিত্ব লেখায় সেটাই দেখিয়েছিলাম।
সমস্যাটা হল স্টেঙ্গর ও ধর্মবাদীদের ওই সংজ্ঞাটাই ত যুক্তির নিয়মকে লংঘন করে। উনি (আর আমাই আমার স্বাধীন, ইচ্ছা, মন্দ ও ইশ্বরের অস্তিত্ব লেখায়) এটাই যুক্তির দ্বারা শুধু প্রমাণ করি যে ইশ্বরের (যদিও ভুল ভাবে সংজ্ঞাইত) ধর্মসমূহ পরস্পর বিরোধী। যে ধর্মগুলি বলা হয়েছে সেগুলো ত যুক্তির নিয়ম লংঘন করে না। ইশ্বরের একটা স্বংসম্পূরণ সংজ্ঞা দিয়ে তারপর সেই ইশ্বরের ধর্মগুলির বর্ণনা দেয়া যেতে পারে বাড়তি ক্লজ হিসেবে। শুধু ধর্মগুলির বর্ণনা দিলেই ইশ্বর সংজ্ঞায়িত হয়ে যায় না। যেটা স্টেঙ্গর can be tested by the standard method of science বলছেন সেটা হল সেই ধর্ম বা properties গুলি। ইশ্বরের সংজ্ঞা নয়।
@অপার্থিব,
ঈশ্বর যেহেতু নিজে এসে তার অস্তিত্বের কোন প্রমাণ দিচ্ছেন না কিংবা সংজ্ঞা বাৎলে দিচ্ছেন না, সেক্ষেত্রে ধর্মবাদীদের দেয়া সংজ্ঞাগুলোকে যুক্তির কষ্টিপাথরে যাচাই করে বিশ্লেষণ করায় আমি কোন দোষ দেখি না।
হ্যা আপনি আপনার লেখায় স্বাধীন ইচ্ছার কষ্টিপাথরে ঈশ্বরের কর্মকান্ড এবং অস্তিত্বকে বিশ্লেষণ করেছিলেন। কিন্তু একটু ভিতরে ঢুকলে আপনি দেখবেন যে, আপনিও অস্তিক এবং ধর্ম্বাদীদের দেয়া সংজ্ঞাগুলোই বিশ্লেষনে এনেছিলেন। যেমন, আপনি মন্দের যুক্তি শুরুই করেছিলেন এই বলে – আস্তিকদের দাবি ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, সর্বকরুণাময় এবং সর্বজ্ঞ …। এখানে “আস্তিকদের দাবি”… শব্দগুলোর ব্যবহার লক্ষনীয়। ঈশ্বর এসে তার কোন সংজ্ঞা দিয়ে যাননি, সেহেতু আমাদের ধার্মিকদের দেয়া সংজ্ঞার উপরেই নির্ভর করতে হয়।
আরো একটি ব্যাপার আমার মনে হল (যদিও সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ), আপনি যে “স্বাধীন ইচ্ছা”র যুক্তি দিয়ে ঈশ্বরকে খন্ডন করেছিলেন, তার সাথে আপনার পরবর্তী লেখা যেটাতে ফ্রি উইলকে ইল্যুশন বলে অভিহিত করেছিলেন – সেটার সাথে সাংঘর্ষিক। ফ্রি উইল বা স্বাধীন ইচ্ছা বলে যদি কিছু না থাকে, তবে সেটাকে ঈশ্বরের অস্তিত্বের বিপক্ষে জোরালো যুক্তি হিসেবে হাজির করা যায় না কিন্তু 🙂
এটা আমি এর পরের মন্তব্যে বিশ্লেষণ করছি।
নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস কি না সেটা নিয়ে বেশ তর্ক বিতর্ক হল। বিলম্বে হলেও আমি সহজ ভাবে এর একটা নিষ্পত্তি করতে চেষ্টা করছি (হয়ত বেশী আশা করছি)। যেটা নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস এর দাবীদাররা ভুলে যান বা গুলিয়ে ফেলেন সেটা হল ইশ্বর অবশ্যই আছেন এই দাবীকে মেনে না নেয়া আর ইশ্বর অবশ্যই নেই এই দাবী করা দুটো এক জিনিষ নয়। প্রথমটাকে নাস্তিকতার সংজ্ঞা হিসেবে মেনে নিলে তা কখনই বিশ্বাস হতে পারেনা। দ্বিতীয়টিকে নাস্তিকতার সংজ্ঞা হিসেবে মেনে নিলে তা কখনও কখনও বিশ্বাস হতেও পারে। সেটাই বোঝাতে চাই এখানে।
আমার এই বিলম্বিত বক্তব্য একটি মূল লেখা হলে শিরোনাম দিতাম “নাস্তিকতা কখন একটি বিশ্বাস হয়”। স্পষ্টতই আস্তিকতা বা নাস্তিকতার সংজ্ঞায়ন নির্ভর করে ইশ্বরের সংজ্ঞায়নের উপর। ইশ্বর যদি সুসংজ্ঞায়িত হত তাহলে ইশ্বর আছেন বা ইশ্বর নেই দুটোই গ্রহণযোগ্য বচন হত ও বস্তুনির্ভর সাক্ষ্য প্রমাণ পেলে এই দুটো বচনের সত্যতা বা মিথ্যাত্ব নিরূপন করা যেত। বলাই বাহুল্য (যদিও অনেকে এখনো তা উপলব্ধি করতে পারেন নি) যে ইশ্বরের প্রচলিত সংজ্ঞা যুক্তিশাস্ত্র নির্ভর দর্শনের নিরীখে সুসংজ্ঞায়িত নয়। কাজেই ইশ্বরের প্রচলিত সংজ্ঞা মেনে নিলে ইশ্বর আছেন বা ইশ্বর নেই এই দুটো বক্তব্য ই যুক্তিশাস্ত্র নির্ভর দর্শনের নিরীখে অর্থহীন বাক্য । যুক্তির নিয়ম লঙ্ঘন না করে ইশ্বরের সংজ্ঞা দেয়া অবশ্যই সম্ভব। তার সাথে অবশ্য ইশ্বরের প্রচলিত ধারণার কোন মিল নেই। কিন্তু এইরকম সংজ্ঞা মেনে নিলে নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস হতেও পারে। এমন একটি সংজ্ঞা হল ইশ্বর হল প্রকৃতির নিয়মের (অর্থাৎ পদার্থ বিজ্ঞানের নিয়মের) আদি কারণ। পদার্থ বিজ্ঞানের নিয়মের আদি কারণ আছে বা নেই দুটোই সাক্ষ্য প্রমাণহীন গ্রহণযোগ্য বিশ্বাস। একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝান যাক। প্রাণ সুসংজ্ঞায়িত একটি ধারণা। তাই পৃথিবীর বাইরে মহাবিশ্বে প্রাণ আছে বা নেই দুটো বলাটাই গ্রহনযোগ্য বিশ্বাস।
যখন কেউ বলেন নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস তখন তিনি সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে ইশ্বর একটি সুসংজ্ঞায়িত ধারণ বলে ধরে নেন আর নাস্তিকতার দ্বিতীয় সংজ্ঞাটিকে বেছে নেন।
@অপার্থিব,
অনেকদিন ধরেই কিছু লিখছেন না। মুক্তমনার পক্ষ থেকে জোর দাবী জানাচ্ছি নতুন লেখা লিখবার, এবং নিয়মিত হবার। মুক্তমনা এখন নতুন সদস্যদের প্রানচঞ্চল পদচারণায় মুখরিত থাকে। বাংলাদেশেও নিয়মিত বেরুচ্ছে যুক্তি আর মুক্তান্বেষার মত পত্রিকা – মুক্তমনা সদস্যদের দ্বারাই। এই সময় আপনার কাছ থেকে বেশি করে লেখা চাচ্ছি।
অপার্থিবের চমৎকার উক্তিটির সূত্র ধরে কিছু মন্তব্য করা যাক। উনি ঠিকই বলেছেন – যেটা নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস এর দাবীদাররা ভুলে যান বা গুলিয়ে ফেলেন সেটা হল ঈশ্বর অবশ্যই আছেন এই দাবীকে মেনে না নেয়া আর ঈশ্বর অবশ্যই নেই এই দাবী করা দুটো এক জিনিষ নয়। নাস্তিকেরা আসলে আস্তিকদের দেয়া ঈশ্বরের যুক্তিগুলোকেই খন্ডন করেন, কিংবা অভিমত দেন যে যুক্তিগুলো ঈশ্বরের অস্তিত্বের পেছনে আসলে জোরালো কোন যুক্তি নয়। কাজেই অপার্থিবের দেয়া প্রথম সংজ্ঞা অনুযায়ী নাস্তিকতা যে কোন বিশ্বাসের ব্যাপার নয়, তা নিয়ে বোধ হয় কেউই সন্দেহ পোষণ করবে না।
এবার দ্বিতীয় সংজ্ঞায় আসি। অপার্থিব বলেছেন,
প্রচলিত সনাতন দর্শনের দৃষ্টিকোন থেকে এই উক্তি খুবই সঠিক। কিন্তু বিগত কয়েক দশকে দর্শনশাস্ত্রেরও বিবর্তন ঘটেছে। ঈশ্বর সংজ্ঞায়িত নন, কিংবা ঈশরকে প্রমাণ বা অপ্রমাণ কোনটাই করা যায় না – এগুলো বক্তব্যকে আর ঢালাওভাবে পতাকার মত বহন করা হয় না। যেমন জুডিও-খ্রিস্টান-ইসলামিক গডের অনেক এট্রিবিউট যে সুসংজ্ঞায়িত তা ধর্মগ্রন্থ থেকে পাওয়া যায়। যেমন, সেই ঈশ্বর একজন ব্যক্তি ঈশ্বর – তিনি রাগ ক্ষোভ ঘৃণা প্রকাশ করেন, অবিশ্বাসীদের শাস্তি দেন, তার জন্য আরশ বা সিংহাসন রয়েছে, ইত্যাদি। এখন এধরণের গড যদি মহাবিশ্ব তৈরি করে থাকেন, জীবন তৈরির পরিকল্পনা এবং নকশা প্রণয়ন করে থাকেন, প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে থাকেন তবে কিন্তু সেদাবীগুলো আমাদের পরীক্ষা করে যাচাই করতে পারার কথা। এবং অনেকে কিছুই যাচাই করে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরাই তা করেছেন। বিবর্তন তত্ত্বই প্রমাণ করেছে জেমস আশারের ৪০০৪ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে ঈশ্বরের বিশ্বসৃষ্টির কেচ্ছা কাহিনী কিংবা ২৩৪৮ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে নূহের প্লাবনের কেচ্ছা মিথ্যা। ঈশ্বর থাকলেও তিনি যে প্রার্থনায় কোন সাড়া দেন না তা মায়ো ক্লিনিকের উপর রোগীদের সার্ভে থেকে বেরিয়ে এসেছে।
আসলে ঈশ্বর প্রার্থনায় সাড়া দেন কিনা কিংবা সত্যিকার গড কে – এই হাইপোথিসিসগুলো কিন্তু সহজেই পরীক্ষা করে নির্ণয় করা যায়। যেমন মৃত্যুপথযাত্রী হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ বা খ্রীষ্টান রোগীর জন্য আলাদা করে প্রার্থনার ব্যবস্থা করা হল। দেখা গেল ইসলামী প্রার্থনাতেই রোগী কেবল ভাল হচ্ছে – কিংবা মুসলিম রোগী প্টাপট সেরে উঠছে, আর বাকিরা পটল তুলছে, তাহলে সাথে সাথে আমরা বুঝে নিতাম ইসলামী আল্লাহই সত্যিকার গড। কিন্তু এ ধরণের ঘটনা ঘটেনি। বরং মায়ো ক্লিনিক ডিউক ইউনিভার্সিটির স্টাডিগুলো প্রার্থনার সাথে রোগির ভাল হওয়ার কোন সম্পর্ক খুঁজে পায়নি। আসলে আব্রাহামিক গড হিসবে চিত্রিত অনেক এট্রিবিউটই যে পরীক্ষা করে ভুল প্রমাণ করা যায় তা পদার্থবিজ্ঞানী ভিক্টর স্টেংগর দেখিয়েছেন তার God: The Failed Hypothesis বইয়ে। তিনি বলেন , “I detailed in my books – God: The Failed Hypothesis that evidence of God such as Abrahamic God fails all tests”.
আবার, ঈশ্বরকে সংজ্ঞায়িত করতে যে ধরণের গুনাবলী আরোপ করা হয় পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে সেগুলো পরষ্পর বিরোধী কিনা। যেমন, কেউ যদি চারকোনা বৃত্তের অস্তিত্ব দাবী করে, সেটা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করা যাবে এই ধারনাটি পরষ্পর বিরোধী। ধর্ম-দর্শন নির্বিশেষে যে বেশিষ্ট্যগুলো দিয়ে ঈশ্বরকে সচরাচর মহিমান্নিত করা হয় সেগুলো সবই দেখা গেছে যুক্তির কষ্ঠিপাথরে খুবই ভঙ্গুর। যেমন, ঈশ্বরকে বলা হয় ‘পরম দয়াময়’ (all-loving) এবং সর্ব শক্তিমান (all-powerful or omnipotent), নিখুঁত (perfect), সর্বজ্ঞ (omniscient) ইত্যাদি। কিন্তু সর্বশক্তিমত্তা (omnipotence) এবং সর্বজ্ঞতা (omniscience) যে একসাথে প্রযোজ্য হতে পারে না তা যুক্তিবাদীদের দৃষ্টি এড়ায়নি। আমি এই লেখায় কিছুটা আলোকপাত করেছিলাম। ভিক্টর স্টেঙ্গর তার বইয়ে Omniscient, omnibenevolent এবং Omnipotent God থাকাটা যে যোউক্তিকভাবে অসম্ভব তা দেখিয়েছেন। একই কথা বলেছেন, মাইকেল মার্টিন এবং রিকি মনিয়ার তাদের The impossibility of God বইয়ে। কাজেই ঈশ্বরের কোন এট্রিবিউট পরীক্ষা করে কিংবা যৌক্তিকভাবে পরীক্ষা করে বাতিল করে দেয়া যাবে না – তা নয়। রিচার্ড ডকিন্সও মনে করেন ধার্মিকদের দেয়া ঈশরের অনেক সংজ্ঞাই টেস্টেবল হাইপোথিসিস, এবং তিনি গড ডিলুশন বইয়ে অনেকগুলোই খন্ডন করেছেন।
এরকম অনেক হাইপোথিসিস কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরীক্ষা এখনই করা যায়, কিছু কিছু হয়তো প্রযুক্তি উন্নত হলে করা যাবে। সেজন্যই ভিক্টর স্টেঙ্গর তার নিউ এথিজম বইয়ে বলেন –
The new atheists firmly assert that the personal, abrahamic God is a scientific hypothesis that can be tested by the standard method of science. And we have seen that it has failed the test.
তারপরেও যে ঈশ্বরের প্রোপার্টির কথা উপরে বলা হল তার বাইরেও ঈশ্বরের অজস্র সংজ্ঞা থাকতে পারে। কবি সাহিত্যিক থেকে শুরু করে ভাবুক দার্শনিকটি পর্যন্ত যে যার মত ঈশ্বরকে সংজ্ঞায়িত করেন। কেউ প্রেমিকার চোখে, কেউ বা রাত্রির জ্যোৎস্নায়, কেউ কবিতায়, কেউবা গানে, কেউ সুরা-সাকীতে, কেউ জনসেবায়, কেউ প্রকৃতিতে কিংবা কেউবা আবার সচিন তেন্ডুলেকরের ব্যটিং-এ ঈশ্বরকে খুঁজে পান। এধরনের অব্যক্ত মানবিক আবেগ, উপমা, মনের ভাবগত প্রতিরূপকে সঠিক বা ভুল প্রমাণ করার কিছু নেই, বিজ্ঞান ওসব নিয়ে কাজও করে না।
এই চমৎকার উপমাগুলোর পাশাপাশি আমিও অনুরূপ কয়েকটি উল্লেখ করে তালিকার শ্রীবৃদ্ধি করি –
নাস্তিকতাও একটি বিশ্বাস হলে বোবা লোককে ‘ভাষাবিদ’ হিসেবে ডাকতে হয়।
নাস্তিকতাও একটি বিশ্বাস হলে দন্তহীন ব্যক্তিকে ‘দাঁতাল’ আখ্যা দিতে হয়।
নাস্তিকতাও একটি বিশ্বাস হলে উপোস থাকাকেও এক ধরনের ‘খাদ্যগ্রহণ’ বলতে হয়।
নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস কিংবা ধর্ম হলে চাকরী না করাটাও একটি পেশা।
নাস্তিকতা একটি ধর্ম হলে বই না পড়াকেও বলতে হয় ‘পাঠাভ্যাস’।
নাস্তিকতা বিশ্বাস হলে পোষাক খুলে ফেলাটাও এক ধরনের পোষাক পরিধান।
নাস্তিকতা ধর্ম হলে চশমা না পরাটাও এক ধরনের সানগ্লাসের ফ্যাশান।
নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস হলে চিরকৌমার্যও বিবেচিত হওয়া উচিৎ এক ধরনের ‘বিবাহ’ হিসেবে।
নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস হলে নির্লোভী থাকার চেষ্টাকেও এক ধরনের ‘লোভ’ বলতে হয়।
নাস্তিকতা একটি ধর্ম হলে নিরোগ স্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়াটাও এক ধরনের রোগ!
@অভিজিৎ দা,
এই যুক্তি অনুসারে তাহলে কি ঈশ্বর বিশ্বাস এক ধরণের নাস্তিকতা?
@বকলম,
বুঝলাম না। এই যুক্তি অনুসারে তাহলে কি ঈশ্বর বিশ্বাস এক ধরণের নাস্তিকতা হয় ক্যামনে?
আমি তো বললাম, নাস্তিকতা হল বিশ্বাসের অভাব!
@অভিজিৎ দা,
তেমন কিছু না
যে রকম উলটা পালটা ব্যাপার দেখছি তাতে তো তাই মনে হচ্ছিল।
@অভিজিৎ,
শূন্যর ধারনাকে এর সাথে কিভাবে মেলানো যায়?
শূন্য যদিও মানে শুণ্য, কিন্তু এর অস্তিত্ত্ব তো অস্বীকার করা যায় না।
@আদিল মাহমুদ,
শূন্যতা আসলে কেমন? চিন্তা করেও একুল ওকুল পাইনা। কিছুদিন আগেও ভাবতাম যে বোধ হয় ভ্যকুয়াম মানেই পরম শুণ্য। কিন্তু তার তো একটা অস্তিত্ব আছে। তাহলে সেটা তো পরম শুণ্যতা হতে পারেনা। পরম শুণ্যতা আমি তাকেই বলব, তখনই বলব যখন আমাদের এই সম্পুর্ন মহাবিশ্ব উধাও হয়ে যাবে অর্থাত সবকিছুর অস্তিত্ব অনস্তিত্বে বিলীন হয়ে যাবে। তাই যদি হয় তাহলে পরম শুণের অস্তিত্বকে আমরা কিভাবে ব্যাখ্যা করব? আমার মনে হয় এই সব কিছুর অনস্তিত্বে আমাদের কোন অভিজ্ঞতা নেই বিধায় পরম শুন্যকে অনুধাবন করা আমাদের জন্য খুবই কঠিন। যখনই চেষ্টা করি পাগল পাগল লাগে… :-X
@মিঠুন, আদিল ভাই,
পরম শুণ্যের ধারণা আমার আছে, মাঝে মাঝেই হয়। পকেট খালি (অর্থাৎ শুণ্য) হয়ে গেলে। 😀
সরি একটা সিরিয়াস ব্যাপারের মধ্যে একটু ফাইজলামি করে বসলাম।
@মিঠুন,
😛
সে ধারনা আমারও হয় ভাই, বোধ করি সবারই হয়। 😀
@মিঠুন,
মহাবিশ্বের সব কিছুই উধাও, মানে পরম শূন্যের ধারনা আসলেই অসম্ভব।
প্রচলিত যে শূন্য বা ভ্যাকুয়াম সেটা যে আদতে শূণ্য নয় তা জানতে পেরেছি এই মাত্র কিছুদিন আগে। সেটাও এখনো হজম করে উঠতে পারিনি।
@মিঠুন,
পরম শুণ্যতার যদি অস্তিত্ব থাকে তবে অনস্তিত্বেরও অস্তিত্ব আছে। 😕
বেশী চেষ্টা না করাই ভাল, বিপদের সম্ভাবনা আছে। 🙁
@আদিল মাহমুদ,
শূন্যের ধারনা আসলেই জটিল। এরিস্টটল কিংবা পিথাগোরাসদের সময় শূন্যতার ধারনা এক রকম ছিলো, নিউটনের সময় এক রকম, আর আইন্সটাইনের রিলেটিভিটি রঙ্গমঞ্চে আসার পর দেশ কাল (space-time) সব মিলিয়ে শূন্যতা প্যাচ খেয়ে গেছে। আর স্ট্রিং থিওরী তো বলছে এর হিডেন মাত্রাও আছে। আর কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান আসার পরে বিজ্ঞানীরা জেনেছেন – যে শুন্যকে শুন্য বলে মনে করা হয় এর অভ্যন্তরে ঘটে চলেছে নানা প্রক্রিয়া – উৎপন্ন হচ্ছে ভার্চুয়াল পার্টিকেল, আবার তা নিমেষমধ্যেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কাজেই শূন্য আসলে সে অর্থে শূন্য নয়। পুরো ব্যাপারটাই আসলে জটিল গবেষণার বিষয়। সম্প্রতি একটা বই পড়েছিলাম The Void নামে – সেটাতে খুব চমৎকারভাবে এ সব কিছু বর্ণনা করা হয়েছে। দেখি যদি সময় পাই মুক্তমনায় লিখব এগুলো নিয়ে। হাল্কা কিছু আওয়াজ দিয়েছিলাম যদিও আগে এখানে।
@অভিজিৎ,
লেখাটা পড়লাম। বলা যায় এক নিঃশ্বাসেই পড়লাম। শূন্যের ধারনা হজম করা আসলেই খুব কঠিন। আমি নিজে সামান্য কিছু পড়াশুনার ব্যার্থ চেষ্টা করেছিলাম, সবই বদহজম হয়েছিল বলা যায়। মনে হয় শক্তি থেকে পদার্থ সৃষ্টি হচ্ছে E=MC**2 জাতীয় কিছু হবে।
আমি তো সরল ব্যাখ্যার জন্য ঈশ্বরের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া আর কোন গতি দেখি না।
দেখি, পূর্নাংগ লেখা লিখেন।
একটা কথা পরিস্কার করা দরকার যে দর্শনের বিষয়ে সঠিক ব্যখ্যার জন্য অভিধান বা Wikipedia র আশ্রয় নেয়াটা ঠিক হবেনা। কারণ এগুলো দর্শন শাস্ত্রে পন্ডিত দের দ্বারা লেখা নয়। এ নিয়ে তর্ক করতে হলে যুক্তি শাস্ত্রের নিয়ম মেনে চলাটাই মুখ্য আর পেশাগত দার্শনিক (অর্থাৎ দর্শন শাস্ত্রের অধ্যাপক বা স্নাতক ছাত্র এদের লেখাই বেশি নির্ভরযোগ্য হবে, যদি রেফারেন্স দিতেই হয়। যুক্তির নিয়মের জন্য আপনাদের “যুক্তিবিদ্যা পরিচিতি” নামে মুক্তমনায় প্রকাশিত আমার লেখাটা পড়তে অনুরোধ করছি। নীচে বাংলা ব্লগে আমার পূর্বে প্রকাশিত “যুক্তি, বিশ্বাস ও অভিমত” লেখাটির কিছু প্রাসঙ্গিক অংশের পুনোরুক্তি করলাম।
প্রথমেই যেটা খেয়াল করা দরকার সেটা হল কোন বাক্যে যদি অস্পষ্ট বা অসংজ্ঞায়িত কোন ধারণার অবতারণ করা না হয় আর তা যদি সুস্পষ্টভাবে হয় সত্য না হয় মিথ্যা হয় তাহলে তাকে যুক্তির পরিভাষায় বচন (Proposition) বলে। অনেক বিশ্বাস বাক্যে কিছু অস্পষ্ট বা অসংজ্ঞায়িত ধারণা বা শব্দের অবতারণা করায় বাক্যটির বস্তুনির্ভর কোন অর্থ হয় না যার দরূণ সেই সব বিশ্বাসবাক্যের পরম সত্য বা মিথ্যা গুণ থাকতে পারেনা। তাই সেই সব বাক্য বচন হিসেবেও গণ্য করা যাবে না। এই ধরণের বাক্যকে অনবধারণযোগ্য বাক্য বা ধারণা (Non-Cognitive) বলা হয়। এর উদাহরন হলঃ (১) ইশ্বর আছেন। (২) আত্মা আছে। এই দুটো বাক্য যতই আমাদের কাছে খুব স্বাভাবিক এবং অর্থবহ মনে হোক না কেন কিন্তু এটা যুক্তির কঠোর বিচারে ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রকাশ মাত্র। এর কোন বস্তুনির্ভর অর্থ নেই “ইশ্বর” ও “আত্মা” শব্দ দুটির কারণে। এর কোনটিই সুসংজ্ঞায়িত নয়। এ দুটো শব্দের জনপ্রিয় বা বহুল প্রচলিত “সংজ্ঞা”র সবগুলি যুক্তির চূড়ান্ত বিচারে ভ্রান্তিপূর্ণ এবং স্ববিরোধপূর্ণ। বিদগ্ধ দার্শনিক মহলে (যারা যুক্তিশাস্ত্রে পারদর্শী) এই ভ্রান্তির কথাটা সুপরিচিত ও সুস্বীকৃত। এ দুটো বাক্যকে সত্য বলাটা ভুল ত বটেই অসত্য বলাটাও যুক্তির বিচারে ভুল, কারণ এই বাক্যদ্বয়ের বস্তুগত সত্যতা বা অসত্যতা কোনটাই নেই বা অর্থবহ নয়। অবশ্য ইশ্বরের এমন সংজ্ঞা দেয়া সম্ভব যা সুস্পষ্ট, সে ক্ষেত্রে ইশ্বর আছে বলাটা যুক্তি বিরুদ্ধ হবেনা, যদিও সে ইশ্বর আছে কিনা সেটা হয় হয়ত জানা সম্ভব হবেনা। বলাই বাহুল্য এই ধরণের সংজ্ঞা বহুল প্রচলিত বা জনপ্রিয় নয়। এর উদাহরণ এভাবে দেয়া যায়ঃ বিজ্ঞানের সাম্প্রতিকতম অভিজ্ঞানের দরূণ এটা এখন বলা যায় যে মহাবিশ্ব ও প্রাণের সৃষ্টি হয়েছে পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মের অভিব্যক্তির পরিণামে। কিন্তু পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মের উৎপত্তির কোন আদি কারণ কি আছে নাকি পদার্থবিজ্ঞানের নিয়ম আসলে সদা বিরাজমান, স্বয়ম্ভূ এর কোন আদি কারণ নেই, এই প্রশ্নের উত্তর জানা নেই এবং কখনও জানা যাবে না। লক্ষ্য করার বিষয় যে এই প্রশ্নের সুস্পষ্ট সত্যতা মিথ্যাত্ব আছে, যদিও আসলে কোনটা তা আমাদের জানা নেই। দুটো সম্ভাবনার কোনটাই যুক্তবিরুদ্ধ নয়। তাই যদি ইশ্বরের সংজ্ঞা হিসেবে কেউ বলেন সে ইশ্বর হল পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মের আদি কারণ এবং বলেন যে সেই আদি কারণ আসলেই আছে তাহলে তা এক অবধারণযোগ্য বচনবাক্য হিসেবে গণ্য হবে ও গ্রহণযোগ্য হবে। আবার এটাও বলা যায় যে একই সংজ্ঞায় ইশ্বর নেই সেটা বলাটাও গ্রহণযোগ্য হবে। এখানে প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে বলি কি কারণে “ইশ্বর আছেন” এই বাক্যটি অধিকাংশের কাছে স্বাভাবিক ও অর্থবহ মনে হয়। পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মের উৎপত্তির কোন আদি কারণ আছে কি মেই বা থাকলে সেটা কি তা মানুষের জানা নেই। সাধারণ মানুষের কাছে পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মের দ্বারা মহাবিশ্ব ও প্রাণের সৃষ্টির সূক্ষ্ণ ও জটিল তথ্য জানা বা বোঝা সম্ভব নয় তাই তাদের দৃষ্টিতে মহাবিশ্ব ও প্রাণের সৃষ্টিটাই রহস্য । যেহেতু দৈনন্দিন জীবনের অনেক উপকরণই মানুষের সৃষ্টি সেহেতু প্রকৃতির সবকিছু ই কাহার বা কোন কিছুর দ্বারা সৃষ্ট এই বিশ্বাস সহজাত ভাবে তাদের মনে আসে। পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মের উৎপত্তি বা সৃষ্টিই যে আসল রহস্য সেটা তাদের পক্ষে হৃদয়ঙ্গম করা সম্ভব নয়। পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মের উৎপত্তি অজানা থাকায় সৃষ্টির মূল কারণটাই অজানা। এই অজানা সব মানুষের মধ্যে এক বিশেয অনুভূতির সৃষ্টি করে। সাধারণ মানুষের কাছে অজানাটা হল মহাবিশ্ব সৃষ্টির কারণ আর বিজ্ঞান সচেতন মানুষের কাছে অজানাটা হল মহাবিশ্ব সৃষ্টির কারণের কারণ (অর্থাৎ পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্রের সৃষ্টির কারণ) । যাহোক এই পরম অজানাটা যে বিশেষ অনুভূতির সৃষ্টি করে তাকেই মানুষ নানা ভাষায় নানাভাবে ব্যক্ত করার চেষ্টা করেছে। এই অনুভূতিই মরমীয়াবাদের (Mysticism) জন্মদাতা। মরমীয়াবাদ আসলে কোন মতবাদ নয়। এই অজানার অনুভূতির এক প্রকাশ মাত্র। মরমীয়ারা(Mystics) এমন কোন গভীর সত্য বা তথ্য সম্পর্কে অবগত নন যা বিজ্ঞানীরা জানেন না। অজানার অনুভূতিকে তাঁরা কাব্যিক ভাষায় ব্যক্ত করে এবং সেই সঙ্গে তাঁদের নিরাসক্ত জীবন যাপনের দ্বারা সম্মান অর্জন করে সাধারণ্যের কাছে এক আবেপূর্ণ ভক্তির সৃষ্টি করেন। আইনসটাইনও এই অজানার অনুভূতির কথা স্বীকার করেছিলেন। সব বৈজ্ঞানিকেরাই এই অজানার কথা বলেন বা অনুভব করেন। আসলে দার্শনিক সংজ্ঞায় নাস্তিক তাকেই বলা যায় যিনি দাবী করেন যে পদার্থ বিজ্ঞানের নিয়ম স্বয়ম্ভূ, এর কোন আদি কারণ নেই, কাজেই তাদের কাছে কোন অজানা নেই আর সেহেতু অজানার কোন অনুভূতিও নেই। এরকম নাস্তিকের সঙ্খ্যা অবশ্য খুবি কম। এখানে এটা জোর দিয়ে বলা দরকার যে যারা পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মের উৎপত্তি অজানা বলে স্বীকার করেন তাদের অনেকেও পদার্থ বিজ্ঞানের নিয়ম স্বয়ম্ভূ, এর কোন আদি কারণ নেই এই সম্ভাবনাকে নাকচ করে দেন না। কিন্তু আদি কারণ থাকতে পারে এই সম্ভাবনাকেও নাকচ করেন না। এদেরকে দার্শনিক অজ্ঞেয়বাদী বলা যায়। আবার অনেকে পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মের উৎপত্তির আদি কারণ অজানা বলে স্বীকার করলেও আদি কারণ যে আছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত। এরা দার্শনিক অর্থে আস্তিক হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হবেন। তবে এই দার্শনিক আস্তিক, নাস্তিক আর অজ্ঞেয়বাদীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ধর্মের আস্তিক, নাস্তিক আর অজ্ঞেয়বাদীদের কোন মিল নেই। আনুষ্ঠানিক ধর্মের আস্তিক, নাস্তিক আর অজ্ঞেয়বাদীরা সবাই কম বেশী হেত্বাভাসের(Logical Fallacy) স্বীকার। কারণ ধর্মীয় বিশ্বাসবাক্যগুলি অবচনবাক্য। অবচনবাক্যজনিত মত বা বিশ্বাসের অস্তিত্ব, অনস্তিত্ব বা অজানা হওয়া, এর কোনটারই যৌক্তিক ভিত্তি নেই।
এবার আসি অভিমতের প্রসঙ্গে। অনেক অভিমতই ব্যক্তিগত রুচি বা আদর্শের প্রতিফলন মাত্র, এর কোন পরম সত্যতা বা মিথ্যাত্ব থাকতে পারেনা। আর তাই সেটা বচন হতে পারে না। আর বচন নয় বলে সেইরকম অভিমতকে কেউ সত্য বলে দাবী করলে তা যুক্তির নিয়ম লঙ্নন করবে। একই কথা বলা যায় বিশ্বাসের বেলায়ও। এটা পরিস্কার করা দরকার যে অভিমত বা বিশ্বাস থাকলেই যে সেটা যুক্তির পরিপন্থী হতে হবে তা নয়। যদি বিশ্বাসের বস্তু স্পষ্ট ও বস্তুনির্ভরভাবে সংজ্ঞায়িত হয় ও বিশ্বাসবাক্যটি বচনবাক্য হয় তাহলে সেই বিশ্বাস যুক্তির পরিপন্থী হবে না, বিশ্বাসবাক্যটি আসলে সত্য না মিথ্যা সেটা অবশ্য অন্য ব্যাপার। এর উদাহরণ হল পৃথিবীর বাইরে মহাবিশ্বে প্রাণের অস্তিত্বে বিশ্বাস করা। প্রাণের ধারণা জীব বিজ্ঞানে সুসংজ্ঞায়িত। মহাজগতে প্রাণের অস্তিত্বে বিশ্বাস করা যুক্তিবিরুদ্ধ নয়, যদিও বিশ্বাসের সত্যতা বা মিথ্যাত্ব এখনও অজানা। আরেকটা উদাহরণ হল পক্ষীরাজ ঘোড়া আছে এটা বিশ্বাস করা। পক্ষীরাজ ঘোড়ার সুস্পষ্ট সংজ্ঞা দেয়া যায়, ঘোড়ার মত দেখতে প্রাণী যার পাখা আছে ও উড়তে সক্ষম। যদি ঘোড়ার আকৃতির প্রাণীর পাখা দিয়ে উড়াটা পদার্থবিজ্ঞান (সঠিক ভাবে বলতে হলে বায়ুগতিবিজ্ঞানের) কোন নিয়ম লঙ্ঘন না করে তাহলে এই বিশ্বাস যুক্তির নিয়ম বিরুদ্ধ হবে না, কারণ এটা হয় সত্য নয় মিথ্যা অর্থাৎ বচন বাক্য। সেই বিশ্বাসই যুক্ত্বির নিয়মবিরুদ্ধ যে বিশ্বাসের বস্তু অস্পষ্ট বা যার সর্বগ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা নেই বা যে বিশ্বাসবাক্যের কোন সুস্পষ্ট সত্য বা মিথ্যা মূল্য নেই(অর্থাৎ বচন নয়) আগেই বলেছি কোন ব্যক্তিগত মত যদি বৈজ্ঞানিক সত্যকে বা যুক্তির নিয়মকে লঙ্ঘন না করে তাহলে সেই মত যুক্তিবিরুদ্ধ নয়। কিন্তু যুক্তিবিরুদ্ধ নয় মানেই যৌক্তিক বা নির্ভুল নয়। আধুনিকোত্তরবাদীরা (Post Modernists) , ধর্মবাদীরা ও কিছু অধ্মাত্ব্যবাদীরা সুকৌশলে তাদের কোন কোন মতবাদকে নির্ভুল বলে দাবী করেন এই যুক্তি দেখিয়ে যে তাদের বিশ্বাস ত যুক্তিবিরুদ্ধ নয়। একটা সাধারণ ভ্রান্ত উক্তি (কখনো পরোক্ষ ভাবে) হল “যেহেতু ভুল প্রমাণিত হয়নি অতয়েব তা নির্ভুল”। এই ধরনের উক্তি হল পূর্বোক্ত হেত্বাভাসের(Logical Fallacy) একটা উদাহরণ। এই বিশেষ উদাহরণের হেত্বাভাসকে অজ্ঞতার যুক্তি(Argument from Ignorance) বলা হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সাক্ষ্য প্রমাণ দ্বারা যাচাই না হওয়া পর্যন্ত যুক্তিবিরুদ্ধ নয় এমন যে কোন বিশ্বাস বা মতবাদ অপ্রমাণিত, ঝুলমান বা অনিশ্চিত হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হবে। এই অপ্রমাণিত, ঝুলমান বা অনিশ্চিত অবস্থার যথার্থ অবধান আমাদের সংস্কৃতিতে অবর্তমান। আমাদের সংস্কৃতিতে যুক্তি ও সাক্ষ্যের অভাব হলেও কোন উক্তি বা মতবাদকে হয় সঠিক বা ভ্রান্ত বলে তাৎক্ষণিক রায় দেয়া হয় । যারা কোয়ান্টাম বলবিদ্যার বিখ্যাত শ্রোডিঙ্গারের বিড়ালের কথা জানেন ও বোঝেন তারা এই ঝুলমান বা অনিশ্চিত অবস্থার ব্যাপারটা হৃদঙ্গম করতে পারেন। বিড়ালটি হয় জীবিত নয় মৃত বটে, কিন্তু পর্যবেক্ষণের পূর্বে জীবিত বা মৃত কোনটাই বলা যাবে না। এখানে স্মরণ করিয়ে দেয়া দরকার যে ভুল/নির্ভুল বা সত্য মিথ্যা বচন বাক্যের বেলায় প্রযোজ্য। কিন্তু দৈনন্দিন বিতর্কে দেখা যায় যে বিতর্কের বিষয়বস্তু হল অবচনবাক্যকে নিয়ে। আগেই বলেছি যে অবচনবাক্যকে নিয়ে সত্য না মিথ্যা এই তর্ক অবান্তর। এই ক্ষেত্রে একজন সুতার্কিক বিতর্কের বিষয়বস্তুটা যে অবচনবাক্য এবং সেহেতু সত্য না মিথ্যা কোনটা বলা ঠিক নয়, অথবা অপরপক্ষ বাক্যটি সত্য বা মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য যে যুক্তি দেখাচ্ছেন সেটা যে ভ্রান্ত তার প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত দেখা যায় যে একপক্ষ বাক্যটিকে সত্য আর অন্য পক্ষ উক্তিকে মিথ্যা প্রমাণ করার আপ্রাণ চেষ্টায় রত। আর যদি তর্কের বিষয়বস্তু বচনবাক্যই হয় তাহলেও উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের আগে তা সত্য না মিথ্যা তর্ক করাটা অবান্তর। এক্ষেত্রে অবশ্য তর্কে লিপ্ত না হয়ে সত্য বা মিথ্যার সপক্ষে উভয় পক্ষ নিজ নিজ সম্ভাব্য যুক্তি অভিমত হিসেবে পেশ করতে পারেন মাত্র। তবে হ্যা যদি কোন পক্ষের কাছে বিষয়ের পক্ষে বা বিপক্ষে অকাট্য (ও অবশ্যই বস্তুনির্ভর) যুক্তি বা সাক্ষ্য প্রমাণ থাকে তাহলে সেটা পেশ করে সত্য বা মিথ্যা চূড়ান্ত রায় আবশ্যই দিতে পারেন সেই পক্ষ।
ফুয়াদ,
গত দুইদিন ধরে মুক্তমনায় ঢোকার চেষ্টা করে বিফল হয়েছি। জানিনা কি সমস্যা ছিল।
আপনি অক্সফোর্ডের রেফারেন্স দিয়ে দেখিয়েছেন যে নাস্তিকতার ভিত্তিও বিশ্বাস।
আমি আপনাকে Encyclopedia Britannica এর রেফারেন্স দিচ্ছি, সেখানে নাস্তিকতা সম্পর্কে লেখা আছে-
“a disbelief in the existence of deity”
A. T. DEV এর ডিকসনারিতেও disbelief শব্দটি লেখা আছে।
আশাকরি এবার আদিলমাহমুদ ভাই এর ব্যাখ্যা বুঝতে পারবেন। তাও যদি না বোঝেন তাহলে আমি পরাজয় মেনে নিচ্ছি… :-X
আমিও গত দুইদিন ঢুকতে পারিনি
atheist= somebody who does not believe in God or deities
Microsoft® Encarta® 2009.
Wiki-Pedia এর ব্যাখ্যাটা ভাল করে দেখুন:
Atheism can be either the rejection of theism,[1] or the position that deities do not exist. In the broadest sense, it is the absence of belief in the existence of deities.(Wiki-Pedia)
এবার আশা করি ফুয়াদ ভাইয়ের কনফিউসন দূর হবে।
@মিঠুন,
আমি আসলে বুঝি না ডিক্সনারীর শাব্দিক অর্থ নিয়ে পেচানোর কি মানে আছে। এটা আরো অনেক কিছু নিয়েই হয়। সেক্যুলার কথাটার মানে কি এই নিয়েও কিছুদিন পর পরই ব্লগে ব্লগে তর্ক হয়। মূল উপজীব্য থাকে কোন ডিক্সনারীতে কি অর্থ লেখা আছে। আরে, ডিক্সনারীর অর্থ বাদ দিয়ে বাস্তবের নিরিখেই চিন্তা কর না।
@আদিল মাহমুদ,
মানেটা তো এখন পুরো স্পষ্ট আদিল ভাই। ঐ যে নিজেদের লেজ কাটা গেছে বলে অন্যদেরটাও কাটতে হবে!! :rotfl:
@মিঠুন,
সেটা আমি জানি, অনিচ্চাসত্ত্বেও বলতে বাধ্য হয়েছিলাম। যদিও জানি না ধার্মিকেরা কেন নিজেকে অন্ধবিশ্বাসী স্বীকার করতে এত হীনমন্যতায় ভোগেন। যেখানে ধর্মের মূলেই আছে বিশ্বাস, যেখানে যুক্তিতর্ক প্রমানের কোন অবকাশ নেই সেখানে তারা তাদের দাবীর স্বপক্ষে যুক্তি বের করতে কোমর বেধে লেগে যান। হাস্যকর।
@আদিল ভাই,
oxford dictionary তে godless এর অর্থ করা হয়েছে wicked, দেখুন কারবার।
dictionary তে অর্থ করার সময় সাধারণ মানুষ কি বুঝে বা সাধারণত একে কি অর্থে নেয়া হয় এর উপর জোর দেয়া হয়, বাস্তবে এর অর্থ কি হওয়া উচিত তা অনেক সময়ই বিবেচনায় আনা হয় না। ভালো থাকুন।
@সৈকত চৌধুরী,
সেটাই তো আমি সোজা বাংলায় বোঝাতে চেয়েছি, ডিক্সনারিগুলি অক্সফোর্ড হোক আর বেহেশতি হোক; যতটা সম্ভব সহজ ভাষায় লিখতে চেষ্টা করে। এজন্য অনেক সময় অতিসরলিকরন হয়ে যায়। হাইপোথিসিস আর থিয়োরী হয়ে যায় সমার্থক। নুডলসের বাংলা কোন এক ডিক্সনারীতে একবার পড়েছিলাম “এক প্রকার শিমাই জাতীয় খাদ্য”। সাধারন বর্ণনায় হয়ত ভুল নয়, তাই বলে নুডলস আর শেমাই মিল থেকে তো অমিল বেশী।
বিশ্বাস আর অন্ধবিশ্বাসের পার্থক্যও একই কারনে ডিক্সনারী করে না। এ নিয়ে এর সময় নষ্ট করার কোন মানে নেই। পুরো মিনিংলেস।
মিঠুন,
ফুয়াদ ভাইকে আর বেশী কিছু বলা ঠিক নয়। এরপর উনি ধরে নেবেন ও বলা শুরু করবেন সব নাস্তিকে মিলে ওনার পেছনে লেগেছে। সাদা চোখে ব্যাপারটা তো অনেকটা তেমনি।
@আদিল মাহমুদ,
আপনি যদি বিশ্বাস কে যুক্তিকবিশ্বাস আর অন্ধবিশ্বাস বলে আলাদা করেন , তাহলে আমার কোন সমস্যা নেই। এখানে কাছাকাছি বিষয়ের একটি পোষ্ট দেখতে পারেন ।
যাইহোক,
এ জন্য ধন্যবাদ ।
@ফুয়াদ,
প্রশ্নের জবাব কি প্রশ্নে হয়?
বিশ্বাসকে আমি অবশ্যই যুক্তিগ্রাহ্য বিশ্বাস আর অন্ধবিশ্বাস এই দুই ভাগে ভাগ করব। দুয়ের পার্থক্য আগে কয়েকটা উদাহরনে বোঝাবার চেষ্টা করেছি।
তবে ন্য ধরনের কিছু বিশ্বাসও আছে যেগুলি মানসিক, যেমন আমি বিশ্বাস করি যে অমুকে আমকে ভালবাসে এধরনের।
@আদিল মাহমুদ,
ok, এইবারে ক্ষেমা দিচ্ছি।
@মিঠুন,
আপনার যা ইচ্ছে তাই বলুন, আপনাকে কেউ না করতেছে না । বরং এখন যা লিখেছেন তা আপত্তিকর , তাও আমি আপত্তি করব না । খুশি মনে লিখে যান ।
মনে হচ্ছে অনেক ধার্মিকের ধারণা যে নাস্তিকরা স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রমাণ পেলেও বিশ্বাস আনবে না। আমি এ প্রসঙ্গে নিচের উক্তিটি পোস্ট করার লোভ সামলাতে পারছিনা:
Truth does not demand belief. Scientists do not join hands every Sunday, singing, “Yes, gravity is real! I will have faith! I will be strong! I believe in my heart that what goes up, up, up must come down, down, down. Amen!” If they did, we would think they were pretty insecure about it.
— Dan Barker
যাইহোক ধর্মে বিশ্বাস আমি আনব শুধুমাত্র অকাট্য প্রমাণ পেলে
অবকুর্স… কোকেইন না সেবন করা একটি সখ্ত নেশা.. 😀
@আরিফ,
এক লাইনের অর্থ ব্যাপক। 🙂
হাহাহা, বিশ্বাস দেখি বড় কনফিউজিং শব্দ। আচ্ছা এটাকে দর্শন বললে কি কোন প্রব্লেম? আমি ভুতুড়ে গল্পে বিশ্বাস করিনা, সেই সব পেচাল নিয়ে এত মুল্যবান সময় নষ্ট করার পক্ষেও না। আমাদের ভাবার মত অনেক জটিল ব্যাপার আছে, জটিল সমস্যা আছে, ধর্ম সেইসব জটিল সমস্যার একটা শাখা মাত্র। শাখা প্রশাখা নিয়ে এত মত্ত হলে, কোনদিন মানব্জাতি বা আমাদের ছোট্ট দেশ টায় শেষ হয়ে যাবে, অলরেডি সেইপথে যাত্রা শুরু হয়ে গেছে।
একটা রুপকথার গল্পে বিশ্বাস করিনা, সেটা প্রতিষ্ঠা করার জন্য এত তোড়জোড় কি খুব প্রোয়োজন? পুকুরে এত বড় ষোল মাছ থাকতে চুনোপুঁটি নিয়ে এত হইচই!!
আমি এতসব নিয়ে না-যাই ।
অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে লেখা আছে, the belief in the existence of God and Gods, and the activities that are connected with the worship of them.
আর এথিইজম সম্পর্কে লিখা আছে, the belief that God does not exist
কথা হইলো অক্সফোর্ডের গাধা গুলোর মুক্তমনা আইসা ক্লাস করা উচিত । না-জানে , তারা নাস্তিকতারে বিলিফ কয় ।
আমি ভাবতাছি , মুক্তমনায় অক্সফোর্ডের টিচার রা কোন পদ্ধতিতে শিক্ষা নিব তা নিয়া । এ ব্যাপারে আদিল মাহমুদ ভাইয়ের মতামত জানতে চাইতেছি । 😀
@ফুয়াদ,
Dictionary.com -এ atheism এর সংজ্ঞাঃ
the doctrine or belief that there is no God
http://www.merriam-webster.com -এ atheism এর সংজ্ঞাঃ
the doctrine that there is no deity ( doctrine:a principle or position or the body of principles in a branch of knowledge or system of belief)
dictionary.cambridge.org -এ atheist এর সংজ্ঞাঃ
someone who believes that God or gods do not exist
@ফুয়াদ,
অবশ্যই আমার মত পেতে পারেন।
বিনা পয়সায় উপদেশ দিতে সবসময় ভাল লাগে, আর চাইলে তো কথাই নেই! যাকে বলে গাটের পয়সা খরচ করেও দিতে রাজী। আপনাকে যদিও কোন কথা বলা মানে বৃথা সময় নষ্ট তাও জানতে চেয়েছেন বলেই বলা।
দয়া করে মনে কিছু নেবেন না, একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করবেন। belief শব্দটা দেখেই কি আনন্দে উদ্ববাহু নৃত্য করা শুরু করা উচিত হয়েছে?
এটা আসলে এমন একটা পয়েন্ট যা নিয়ে কথা বলা মানে সময় নষ্ট। এর কিছুটা তূলনা করা যায় সাধারনভাবে তত্ত্ব বলতে যা বোঝায় আর বিজ্ঞানের চোখে তত্ত্ব বলতে যা বোঝায় এই দুইটা জিনিস এক নয় এই আর্গুমেন্ট থেকে। যে ভুলটা সব বিবর্তন বিরোধী শুরু করেন। “বিবর্তন শুধুই তত্ত্ব, কোন প্রমানিত সত্য না”। তারা গুলিয়ে ফেলেন যে সাধারন মানুষের চোখে হয়ত “হাইপোথিসিস” আর “থিয়োরী” এই দুয়ের মাঝে কোন বিভেদ নেই, কিন্তু বিজ্ঞানের চোখে বিরাট পার্থক্য আছে। যাক সে কথা, আরেক দিকে চলে যাচ্ছি মনে হয়।
বিশ্বাস কি প্রাকটিক্যালী এমন কিছু বোঝায় যার মানে কোন যুক্তিপ্রমান ছাড়া কিছু আকড়ে বসে থাকা? অক্সফোর্ড বই দর্শনের বই নয়। তারা সাধারনভাবে যা বোঝায় তাই লিখেছে। এতে কোন বড় ভুল নেই।
কিছু উদাহরন দেইঃ
আপনি আইনষ্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদে “বিশ্বাস” করেন। তাই না? আচ্ছা, অত জটিল দরকার নেই, কারন ও জিনিস আমি নিজেই বুঝি না। ধরা যাক, নিউটনের ৩ সূত্র “বিশ্বাস” করেন”। করেন কিনা? আবার গডের অস্তিত্ত্বেও “বিশ্বাস” করেন। তাই না? এই দুই শ্রেনীর বিশ্বাসের কি তূলনা হয়? কোন পাগলে বলবে যে গড, মা কালী, দেব দেবীতে বিশ্বাস আর বিজ্ঞানের কোন তত্ত্বে বিশ্বাস একই ব্যাপার? শব্দগত কারনে অক্সফোর্ড এই দুইকে এক করে লিখেছে। বিশ্বাস বা belief সাধারন অর্থে দুটোই বোঝাতে পারে। এক, কোন প্রমানিত সত্যে বিশ্বাস; যেমন বিজ্ঞানের তত্ত্ব ( এই বিশ্বাস সবার কাচ্ছে এক হবে)। আবার বিশ্বাস বলতে এমন কিছুও বোঝানো হতে পারে যার কোন যৌক্তিক ভিত্তি নেই, শুধুমাত্র ব্যাক্তিগত বিশ্বাস। অক্সফোর্ড এই দুই বিশ্বাসকেই এক করে একটি belief ব্যাবহার করেছে।
এখন এই দুই শ্রেনীর বিশ্বাসের ভিত্তীতে মিল বেশী নাকি অমিল বেশী? যেকোন নাস্তিককে যদি গডের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয় তাহলে প্রথমেই বলবেন যে আমি গডে বিশ্বাস করি না। আসলেই তো তাই। এতে তো কোন ভূল নেই। তিনি বিশ্বাস শব্দটা ব্যাবহার করতে বাধ্য, কারন তার আর বিকল্প শব্দ নেই। সেটাই অক্সফোর্ড ডিক্সনারীতে লেখা আছে। এখন অতি আস্তিকেরা এর মানে দারুন মেধার সাহায্যে ইন্টারপ্রেট করেন যে “নাস্তিকতা আস্তিকতার মতোই একটি অন্ধবিশ্বাস, নাস্তিকেরা আস্তিকদের মত যতই যুক্তিপ্রমান দেওয়া হোক না কেন কোনদিনই তাদের বিশ্বাস ত্যাগ করবে না”। এই ইন্টারপ্রেটেশন সম্পুর্ণ ভুল, এবং বলতে বাধা নেই এই ইচ্ছাকৃত ভুলটা করা হয় পুরো নাস্তিক প্রজাতির উপর একটা জাতিগত বিদ্বেষ থেকে। নিজেরা যেহেতু অন্ধবিশ্বাসী, তাই নাস্তিকদেরও একই দোষে অভিযুক্ত করলে দায়ভার অনেকটা কমে। আর কোন কারন নেই এহেন উদ্ভট তর্ক শুরু করার।
আমি বিশ্বাস করি যে ভীন গ্রহের মানুষ বলে কিছু নেই। কেন করি না? খুবই সংগত কারন। এখনো বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কোন প্রমানিত যুক্তিপ্রমান পাইনি বলেই করি না। কোনদিন পাওয়া গেলেই মেনে নেব। এখন কি বলা যায় যে আমার এই belief “that Alliens do not exist” শুধুই একটি অন্ধবিশ্বাস যার কোন যুক্তি নেই? আমি সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে অন্ধবিশ্বাস বশত এই বিশ্বাস আকড়ে বসে আছি? নাকি বলা যাবে যে যারা এলিয়েনে বিশ্বাস করেন তারাই কল্পকাহিনীর জগতে পড়ে আছেন? আর, খেয়াল করেন, এটা বোঝা খুব গুরুত্ত্বপূর্ণ; আমি তো কোনদিন বলছি না যে প্রমান পাওয়া গেলেও আমি কোনভাবেই ভিন গ্রহের মানুষের অস্তিত্ব মেনে নেব না। এখানেই বিশ্বাস আর অন্ধবিশ্বাসের পার্থক্য যা আপনারা কিছুতেই ইচ্ছাকৃতবাহবে বুঝতে চান না।
আপনি বিশ্বাস শব্দটা নিয়েই পড়ে আছেন। শামীম সাহেবের সাথে যেই বিতর্ক হয়েছে তার মূল প্রতিপাদ্য শব্দ ছিল না। আপনি মনে হয় সেটাই বোঝেননি। মূল প্রতিপাদ্য ছিল যে শামীম সাহেবের মতে নাস্তিকতা শুধুমাত্র একটি বিশ্বাস নয়, অন্ধবিশ্বাস, কারন নাস্তিকেরা কোনদিন গডের অস্তিত্ত্বের প্রমান পাওয়া গেলেও তা মেনে নেবেন না।
অক্সফোর্ড ডিক্সনারী বিজ্ঞান বা দর্শনের বই না। তারা সাধারন মানুষের বোঝার জন্য সব জিনিসই সহজভাবে লিখে। তাই বিশ্বাস আর অন্ধবিশ্বাসে তফাত করেনি।
@আদিল মাহমুদ,
পৃথিবীতে তিন কিসিমের লোক আছে। একদল বুইঝা লাফায়, আরেকদল কিছু না বুইঝাই লাফানি দেইখা লাফায় আর শেষের দল সবার লাফানি দেখে।
ফুয়াদ ভাইয়ের লাফানি দেখতে কিন্তু খারাপ লাগেনা, যথেষ্ঠ বিনোদনের যোগান দেয়। 😀 😀 😀
@মিঠুন,
যা নগদ তাই হাত পেতে নেন।
@আদিল মাহমুদ,
দুঃখিত আবার ফিরে আসতে হলো। আপনি দয়া করে আপনার ব্যাখা আমার উপর চাপাবেনা না। আমি কস্মিন কালেও বলিনি যে নাস্তিকেরা প্রমান পেলেও তা মেনে নেবেনা। আমি এর আগে অন্যত্র আপনাকে বলেছি, প্রমানিত সত্য পেলে বিশ্বাস লাগেনা। পানিকে বিশ্বাস করতে হয় না বা পানিযে শুন্য ডিগ্রী তাপমাত্রায় বরফে পরিনত হয় এটি পরিক্ষিত সত্য এটা নিয়ে দুনিয়ার মানুষ বিশ্বাসী আর অবিশ্বাসীতে বিভক্ত হয় নি। যা প্রমান করা যায়নি বা যায়না তা নিয়েই মানুষের বিভাজন। ঈশ্বরের বিষয়ে (পক্ষে/বিপক্ষে) প্রমানিত সত্য এসে গেলে নাস্তিক বা আস্তিকের কোন বিভাজনই থাকবেনা। ইশ্বর সংক্রান্ত প্রমান আসার আগে একদল মানুষ কি বিশ্বাস করে সেটা নিয়েই আমি বলেছি, নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস।
অক্সফোর্ডওয়ালারা শব্দ খুজে না পেয়ে belief ব্যাবহার করে ফেলেছে, কিন্তু মারিয়াম-ওয়েবষ্টার বা Dictionary.com ওয়ালারা যে Doctrine শব্দটি ব্যাবহার করেছে এ সম্পর্কে আপনার কি বিশ্বাস?
@আদিল মাহমুদ,
যাইহোক আদিল ভাই,
কষ্ট করে কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ ।
কেয়ারফুল আদিল ভাই , কি বলতেছেন বুঝতেছেন তো । ডিকশনারী যারা লেখে তারা প্রতিটি শব্দের মূলগত অর্থের দিকে লক্ষ্য রেখেই লেখে । আমরা কোন শব্দের অর্থ তা বিজ্ঞানের বা অর্থনিতির বা সমাজ নিতির বা ইতিহাসের ই হোক না কেন , না বুঝলে আমরা ডিকশনারীর আশ্রয় নেই । ডিকশনারী প্রতিটি বিষয় যতদূর সম্ভব হিসাব নিকাশ করেই লিখা । ফিলসফির ছাত্র যদি ফিলসফির কোন ট্রাম না বোঝে , তাহলে সে ও ডিকশনারীর আশ্রয় নেয় । আর অক্ষফোর্ডের টিচার রা যে না বুঝে লিখে নাই , তা আপনি ভাল করেই জানেন । তারা ফিলসফির ব্যপারটি নিশ্চিত হয়েই লিখেছে ।
আর দেখেন ডিকশনারী তে ডিসবিলিভ শব্দটা ইয়ুজ করতে পারত । তারা তাও করে নি , একদম পরিষ্কার করে লিখেছে the belief that
। তবে, এটা বলতে পারেন আপনি অক্সফোর্ডের কথা মানেন না , এই কথা ঠিক আছে ।
আমি একটি গল্প বলি, আপনি রাগ করিয়েন না, অফেন্সিভ হিসাবেও নিয়েন না , নিন্দুক হিসাবে নিয়েন , আপনি তো জানেন ই কবির কথা “নিন্দুকেরে বাসী আমি সবার চেয়ে ভাল, যুগজনমের বন্দু আমার আধার ঘরের আলো” । যাইহোক, পারার বড় ভাই, কবিতা লিখে , ভালই লিখে ,খুব ই ভাল । তাই পারার ছোট ভাইয়েরাও তার কাছে কবিতা নিয়ে আসে । সে দেখে শুনে কাটা কাটি করে ঠিক করে দেয় । একদিন এক ছেলে কি করেছে , রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক অপ্রচলিত কবিতা এনে তাকে দিয়ে বলেছে, আমি লিখেছি একটু দেখে দিবেন । তো বড় ভাই কেটে কুটে নুতুন শব্দ দিয়ে ঠিক করে দিল । তখন ঐ ছেলে বলল এটা তো রবি ঠাকুরের কবিতা ।
আপনিও ঐ বড় ভাইয়ের মত হয়ে গেছেন । নাস্তিকদের সাথে থাকুন । আরো বড় হবেন ।
ফুয়াদ ভাই আদিল মাহমুদের পোস্টটা পড়েছেন তো? আপনার উপরের পোস্টের জবাব সেখানেই আছে, আবার পড়ে দেখুন
@ফুয়াদ,
আপনার কোন কথাই আমি অফেন্সিভ হিসেবে নেই না, কাজেই চিন্তা ও দূশ্চিন্তা করবেন না। খোলা মনে যা আসে বলে যাবেন। আমি আস্তিক নাস্তিক এসব তেমন বুঝতে চাই না, যার কথায় যুক্তি আছে তার সাথে আছি। কাজেই অযাচিত পরামর্শের কোন কারন দেখি না। টিপিক্যাল আস্তিক সাইট বলে যেগুলো আছে সেগুলো আমার কাছে অর্থহীন সময় নষ্ট ছাড়া কিছুই মনে হয় না তাই নাস্তিকদের সাইটেই আপাতত লেগে আছি।
আপনি ভাল যুক্তি দেখানে সে আপনি কোরান হোক আর রিচার্ড ডকিন্সই হোক আমি মেনে নেব। বাস্তবিকতার বিচারে আপনি আমি আমরা সবাই আস্তিক নাস্তিক দুই গ্রুপের সাথেই আছি, আপনি হয়ত নানান কথার বেড়াজালে স্বীকার করবেন না এই আরকি।
আপনাকে এই বিষয়ে যা বলার আগেই বলেছি, কাজেই আর বলার কোন কারন দেখি না। তবে যেনে রাখুন যে অক্সফোর্ড কোন স্পেসিফিক বিষয়ের ডিকশনারী নয়। যেকোন বিষয়ের স্পেসিফিক টার্ম জানতে হলে আপনাকে সেই বিশেষ বিষয়ের ডিকশনারীর সাহায্য নিতে হবে। অক্সফোর্ড আকড়ে ধরে থাকলে হবে না। কারন একই, অক্সফোর্ড হল পুরোপুরি ভাষাগত, এখানে খুব বেশী গভীরে যাবার উপায় নেই। উদাহরন হিসেবে মেডিক্যাল ডিক্সনারী, ইঞ্জিনিরারিং ডিক্সনারীর কথা বলা যায়।
আপনি নিজেকে প্রশ্ন করেন (যদি ঠাণ্ডা মাথায় পারেন আর কি) বিশ্বাস আর অন্ধবিশ্বাস দুইটি টার্ম এক কিনা? তাহলে ধরতে পারবেন।
আর আপনি রাগের মাথায় কি লিখেছেন নিজেই জানেন না।
“বিশ্বাস কি প্রাকটিক্যালী এমন কিছু বোঝায় যার মানে কোন যুক্তিপ্রমান ছাড়া কিছু আকড়ে বসে থাকা? অক্সফোর্ড বই দর্শনের বই নয়। তারা সাধারনভাবে যা বোঝায় তাই লিখেছে। এতে কোন বড় ভুল নেই”
এতে আমি অক্সফোর্ডের ভুল কোথায় আছে বলেছি? আমার মুখ দিয়ে বের করতে চাচ্ছেন যে অক্সফোর্ড ওয়ালারা ভুল, নাস্তিক আর তাদের দালাল পাতি নাস্তিকেরা অক্সফোর্ডকেও মানে না। “এতে কোন বড় ভুল নেই” এই বাক্য তাই আপনার চোখে পড়েনি, তাই না? আপনি নিজে কিছুতেই বিশ্বাস আর অন্ধবিশ্বাসের তফাত ধরবেন না পণ করে আছেন, আপনাকে বোঝাবে কে?
সাধারনভাবে আমরা অনেক শব্দই নিত্য ব্যাবহার করি যেগুলি আসলে বিষয়ের গভীরে না গেলে ভুল ধরা যায় না। যেমন, বাংলাদেশে সাধরনত আমরা প্রায়ই বলি, আমি মার্কেটিং এ যাচ্ছি (বাজার করা)। যদিও বিদেশে সবাই বলে আমি শপিং এ যাচ্ছি, কারন বানিজ্যের ভাষায় এটাই সঠিক। আগেই উদাহরন দিয়েছি THEORY HYPOTHESIS এর। মাইক্রোস্ফট ওয়ার্ডে HYPOTHESIS লিখে Synonym সার্চ করুন। দেখবেন THEORY এসেছে! এখন কি আমি ধরে নেব যে এই ডিক্সনারীওয়ালারা ভুল লিখেছে? না, তারা খুব ভুল লিখেনি। কারন তারা সাধারন মানুষের বোঝার জন্য সহহজভাবে লিখেছে। বিজ্ঞানের ভাষায় যা ভুল সাহিত্যের ভাষায় সেই ভুল ত গুরুতর নয় যে ঐ ধরে চেচামেচি করতে হবে। তবে বিজ্ঞানের জগতে আলোচনা হলে অবশ্যই এই দুয়ের তফাত বুঝতে হবে।
আগে ডিক্সনারীতেই দেখেন না BELIEF বা বিশ্বাসের মানে আসলে কি। BELIEF মানেই BLIND BELIEF কোন ডিক্সনারীতে আছে? DOES NOT BELIEVE আর DISBILIEVEএর অর্থগত পার্থক্য কি? DISBILIEVE THAT GOD EXISTS হলে কোন সমস্যা থাকত না?
বিশ্বাসের একটি অর্থ পাবেন OPINION, আরো অনেক SYNONYM পাবেন; যেমন আইডিয়া, কন্সেপ্ট, ট্রাষ্ট, কনফিডেন্স, কনভিকশন। এত কথা বলার মানে BELIEF কথাটার মানে অন্ধবিশ্বাস ছাড়া যে আরো অনেক অর্থে বোঝানো হতে পারে তা আগে বোঝার চেষ্টা করেন যদি পারেন। সেজন্যই বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত নিঊটনের সূত্রে আস্থা আনাকেও যেমন BELIEF বলা যায় তেমনি মা কালীর অস্তিত্ব বিনা প্রমানে মেনে নেওয়াকেও একই শব্দ BELIEF বলা যায়। এই সোজা কথার ব্যাখ্যা না দিয়ে কেবল লেগে গেছেন নাস্তিক তুলে গালাগালি করতে। তবে আমাকে জিজ্ঞাসা করা হলে আমি এই দুই শ্রেনীর বিশ্বাসে পার্থক্য আনব। প্রথম শ্রেনীকে বিশ্বাস বলব, আর দ্বিতীয় শ্রেনীকে অন্ধবিশ্বাস বলব। মুশকিল হল, জগতে যেহেতু আস্তিকের সংখ্যা অনেক অনেক বেশী, আর “অন্ধবিশ্বাস” বা “ব্লাইড ফেইথ” শুনতে অনেকটা গালির মতন শোনায় তাই কেউ আর অপ্রমানিত বিষয়ে অন্ধভাবে বিশ্বাস আনাকে প্রকাশ্যে ব্লাইন্ড ফেইথ বলতে চান না। অনেকটা কানাকে যেমন প্রকাশ্যে কানা বলা যায় না তেমন আর কি। ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেও দেখেছি যেকোন আস্তিককেই অন্ধবিশ্বাসী বলা হলে তারা প্রচন্ড রেগে যান। ব্যাক্তিগত অপমান হিসেবে ধরে নেন।
এর পর যদি না বোঝেন তো কে আপনাকে বোঝাবে?
আমার মনের কথাটা বলেছেন। সব ধার্মিক ব্যাক্তি(আস্তিক মাত্রই ধার্মিক নয়) খুব ভালো করে জানে যে সে অন্ধবিশ্বাসী, সেটা নিয়ে তারা মনে হয় কিছুটা বিব্রতও থাকে তাই সবার ঘাড়ে এটা চাপাতে চায়।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
হক কথা বলেছেন। ফুয়াদ ভাইয়ের লেজ কাটা পড়েছে। এখন তিনি চান নাস্তিকদেরও লেজ কাটা এটা প্রমান করতে। :laugh:
ফুয়াদ ভাই অন্যের লেজ কাটার থেকে নিজেরটা আবার জোড়া লাগাতে পারেন কি না সেই চেষ্টা করুন।
@শাফায়েত,
তার আগে আপনি, আদিল মাহমুদ ভাই আমার যে কমেন্টের ব্যপারে জবাব দিতে চাইছেন সেই কমেন্ট টি পড়ে দেখুন । তার পর আমার জবাব টি বুঝবেন । আমি জাস্ট বিলিভ শব্দকে হিলাইট করেছি । যা দিয়ে পুরো পুরি সব ধরনের বিলিভ কাভার করে । এর মানে এই নয় যে, অন্ধবিশ্বাস বলে , বিষয়কে অন্য দিকে টেনে নেওয়া ।
@ফুয়াদ,
“তার আগে আপনি, আদিল মাহমুদ ভাই আমার যে কমেন্টের ব্যপারে জবাব দিতে চাইছেন সেই কমেন্ট টি পড়ে দেখুন । তার পর আমার জবাব টি বুঝবেন ।”
ভাই অনেক চেষ্টা করেও বুঝতে ব্যার্থ হলাম। আপনি ভয়ানক দুর্বোধ্য- আপনাকে বোঝে সাধ্য কার!!! :-Y
@আদিল মাহমুদ, আচ্ছা যেহেতু যুক্তি বা ডিকশনারীর সংজ্ঞা আপনার পছন্দ নয় এইবার কিছু এনসাইক্লোপিডিয়া থেকে উদাহরন দিচ্ছিঃ
Atheism, as defined by the Stanford Encyclopedia of Philosophy and the Routledge Encyclopedia of Philosophy, is the denial of the existence of God (সুত্র)
এই অংশটি একটু খেয়াল করুনঃ
Attempts to Dilute the Definition of Atheismঃ
Charles Bradlaugh, in 1876, proposed that atheism does not assert “there is no God,” and by doing so he diluted the traditional definition of atheism. Since 1979, many atheists have followed Bradlaugh’s thinking further and stated that atheism is merely a lack of belief in any god.[7][8] The motive for such a shift in meaning appears to be to an attempt to shift the burden of proof regarding the existence of God to the theism side.[7]
In the article, Is Atheism Presumptuous?, atheist Jeffery Jay Lowder, a founder of Internet Infidels which owns and operates the Secular Web. The Secular Web is one of the principle websites for atheists, agnostics and skeptics on the internet, states that “I agree (with Copan) that anyone who claims, “God does not exist,” must shoulder a burden of proof just as much as anyone who claims, “God exists.”[7] In short, the attempt to redefine atheism is merely an attempt to make no assertions so no facts need be offered.[7] The attempt to redefine atheism, however, is not in accordance with the standard definitions of atheism that encyclopedias of philosophy employ which is that atheism is a denial of the existence of God or gods
@শামীম,
দেখুন, এনসাইক্লোপিডিয়া বা ডিক্সনারীর টিপিক্যাল সংজ্ঞা নিয়ে তেমন মাথা ঘামাই না।
আরিফ সাহেবের এক লাইনের কমেন্টের অর্থ কিন্তু অনেক ব্যাপক।
আমার কাছে মূল ব্যাপার হল, নাস্তিকদের “বিশ্বাস” বলতে যা সংজ্ঞায়িত করা হচ্ছে সেটা কি অন্ধবিশ্বাস কিনা সেটা। শুধু বিশ্বাস দিয়ে তো কোন কথা হচ্ছে না। যেকোন নাস্তিকই তো গড নেই তাতে “বিশ্বাসী”। এখন আসল কথা হচ্ছে এই “বিশ্বাসী” হবার কারন কি সেটা।
এখানেই আপনার সাথে এখানকার সবারই মতভেদ হচ্ছে বড়দরে। আপনি কোন এক কারন বশত; ধরে নিয়েছেন যে জগতের সব নাস্তিকই অন্ধবিশ্বাসী। কেমন যেন ভবিষ্যতবক্তার মত অমোঘ বানী দিয়ে দিয়েছেন যে এদের কিছুটা উদার মনে হলেও আসলে এরা তা নয়, এরা উপযুক্ত যুক্তিপ্রমান পেলেও গডে বিশ্বাস করবে না, কারন এরা অন্ধবিশ্বাসী। শুধু আপনি নন, প্রায় সব বিশ্বাসীই এমনি বিশ্বাস এবং প্রচার করেন। ফুয়াদ সাহেবকে এর কারন বলেছি।
একজন নাস্তিক কি বলল তাতে কি সবাইকে বিচার করা যায় বা নাস্তিকতার ভিত্তি বদল হয়ে যায়? আপনার দেওয়া কোটের শেষ লাইনেই বেশ কনফিউজিং কথা আছে। “The attempt to redefine atheism, however, is not in accordance with the standard definitions of atheism that encyclopedias of philosophy employ which is that atheism is a denial of the existence of God or gods “
শামীম সাহেব আসলে ঈশ্বর-ধর্ম এসবেই বিশ্বাস রাখেন, কিন্তু বিশ্বাসকেতো আর জোর করে মন থেকে সরানো যায়না, আর উনি মনে হয় ঈশ্বর-ধর্মে বিশ্বাস করাটাকে একটু আনস্মার্টও মনে করেন যদিও এটা সঠিক না। তাই মুক্ত-মনায় আলোচনায় এসে নিজকে একটু আলাদাভাবে উপস্থাপন করে এটার নাম দিয়েছেন “সংশয়বাদী আস্তিক”। সংশয়বাদীতার জন্য মুক্ত-মনায় বিতর্কে অংশগ্রহন করাটা সুবিধাজনক ছিল।
সময় হলে আমার একটি পুরানো লেখা পড়ে দেখতে পারেন ঃ ঈশ্বরের অস্তিত্ব সংক্রান্ত দার্শনিক যুক্তি খন্ডন 1 2 3
অভিজিত দা, মেজবাহ উদ্দিন জওহের সাহেবের সাথে আপনার বিতর্কের লেখা গুলো কোথায় পাবো? পড়তে ইচ্ছুক। প্লিজ…।
@opu,
মেজবাহউদ্দিন জওহের এর প্রবন্ধের লিংক নিচে দিলাম।
আস্তিকতা বনাম নাস্তিকতা – মেজবাহউদ্দিন জওহের
এর প্রত্যুত্তরে অভিজিত লিখেছিল ‘আস্তিকতা বনাম নাস্তিকতার’ প্রত্যুত্তরে।
মিথ্যা কথা। একজন নাস্তিক তখনই আস্তিক হয় যখন সে কোন বিপদে পড়ে,তার কোন প্রিয়জন মারা যায় তখন।মানুষের দুর্বল মন তখন তৃণ খন্ড ধরে হলেও শান্তি পেতে চায়, সে আস্তিক হয় এই জন্য নয় যে সে এতদিন যে সমস্ত প্রশ্ন করছিল তার সমস্হ উত্তর পেয়ে গেছে।
@ফরহাদ,
এটা খুবই সত্য কথা।
নাস্তিক টু আস্তিক হবার একটা বড় কারন এটাই। জীবনে কোণ তীব্র সংকটে পড়লে এটা হতে পারে। এর মাঝে কোন সংশয়বাদ বা গবেষনা করে কোন বিশেষ ধর্মগ্রন্থের সত্য আবিষ্কারের কোন সম্পর্ক নেই।
পাশ্চাত্য বিশ্বে আজকাল বেশ কিছু লোকে ইসলাম ও বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহন করছে। এদের মধ্যে বেশ বড় সংখ্যক মানুষ পাশ্চাত্যের অতিমাত্রায় বস্তুগত জীবন, পারিবারিক জীবনে আশান্তি, বর্ণবাদের স্বীকার এ সমস্ত কারনে মানসিক শান্তি খোজার জন্যই ধর্মের আশ্রয় নিচ্ছে। এর মাঝে কোন গবেষনালব্ধ সত্য আবিষ্কারের সম্পর্ক নেই।
@আদিল মাহমুদ,
আজকাল একদল নতুন প্রকারের তথাকথিত শিক্ষিত আস্তিকের আবির্ভাব হয়েছে ইন্টারনেটে, যারা নিজেকে সংশয়বাদী মানতে রাজী কিন্তু নাস্তিক বলতে রাজী নয়। এদের কেউ কেউ আবার এও দাবী করেন যে, তারা আরজ আলী মাতব্বরের সত্যের সন্ধানে, হুমায়ুন আযাদের আমার অবিশ্বাস, ও নারী, আখতারুজ্জামানের বিবর্তনবাদ, আহমেদ শরীফের বিচিত্র ভাবনা, এ সকল বই পড়ে সংশয়বাদী নাস্তিক থেকে বিশ্বাসী আস্তিক হয়েছেন। কারণ তারা তাদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান দ্বারা বুঝতে পেরেছেন ঐ সকল বইয়ে যা কিছু বলা হয়েছে তা ভুল, এর উল্টোটাই সত্য।
তাদের গবেষণালব্ধ জ্ঞানটা কি, প্রক্রিয়াটা কি? একজন সংশয়বাদী বলছেন-
এখানে আস্তিক্যবাদের উপর জ্ঞানার্জন এর প্রক্রিয়াটি কি ব্যাখ্যা করা হয় নাই। এই প্রকারের মানুষ সাধারনত প্রথমাবস্থায় নিজেকে আস্তিক রূপে প্রকাশ করেন না। যৌবনে রক্ত গরম অবস্থায় হুজুগের বসে যারা নাস্তিক হয়, তারাই পরবর্তিতে বার্ধক্যে আস্তিকে ফিরে যায়। জ্ঞান, যুক্তি, প্রশ্ন, গবেষণার মাধ্যমে নাস্তিক হয়ে কেউ কোনদিন কোন অবস্থায় আস্তিকে ফিরে যাবেনা।
যদি বলা হয়, আমার বিশ্বাস আমার স্ত্রী আমাকে ভালবাসেন। কথাটা ঠিকই আছে। জ্ঞান এখানে সীমিত।
আমার মনে হয় (সংশয়বাদী) আমার স্ত্রী একজন মানুষ, কথাটা কেমন হয়? অথবা আমার বিশ্বাস আমার স্ত্রী একজন মানুষ, এখানে বিশ্বাস শব্দের কোন অর্থ হয়?
অজ্ঞানতার অপর নামই বিশ্বাস। আর বিশ্বাসের উপরই ধর্ম প্রতিষ্ঠিত।
@আকাশ মালিক,
যার উক্তি কোট করলেন ওনার সাথে আমার আরেক যায়গাতেও একই বিষয়ে তর্ক হচ্ছে। যদিও এবার ক্ষেমা দিচ্ছি।
এখানে দেখতে পারেন।
@আকাশ মালিক,
‘আজকাল একদল নতুন প্রকারের তথাকথিত শিক্ষিত আস্তিকের আবির্ভাব হয়েছে ইন্টারনেটে, যারা নিজেকে সংশয়বাদী মানতে রাজী কিন্তু নাস্তিক বলতে রাজী নয়।’
সে যা বলেছেন… 😀
@আদিল ভাই,
ভাই আপনে পারেনও। শামীম সাহেব এর সাথে এই বিতর্ক আরেক ব্লগে গিয়ে শুরু করলেন!! একবারও বুঝলেন না উনি ওনার বিশ্বাসে গো ধরে আছেন। আপনি যতই স্পেসিফিক প্রশ্ন করেননা কেন উনি সোজা কথায় উত্তর দিবেননা। তর্ক করাটাই তো বৃথা।
আপনাকে সেলাম… :rose2: :rose2: :rose2:
শামীম-এর কয়েকটি মন্তব্য পড়ে (সবগুলো পড়ার প্রবৃত্তি হলো না) মনে হলো, যুক্তিহীনতাও এক ধরনের যুক্তি 🙁
@একজন নির্ধর্মী,
ধুর মিয়া বুজেন না ক্যন!! তিনার কথা হইল,
“যাহাই হউক, শেষতক তালগাছখানি আমাকেই দিতে হইবে,(নাইলে খেলুম না!!!)”
এই তর্ক চলতেই থাকবে, ঈশ্বর মনে হয় কোন দিনই এই জগতে ধরা দিয়ে তর্কের অবসান ঘটাবেননা, আর মানুষও যুগ যুগ ধরে এই তর্ক চালিয়ে যেতে থাকবে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
না, যদিও আমরা এখনো ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্ক করছি, তিনি আসলে অনেক আগে নিৎশের আমলেই মারা গেছেন।
শামীম,
ধন্যবাদ আপনার দীর্ঘ জবাবের জন্য। আপনি আমার মূল প্রশ্নের জবাব যদিও সরাসরি দেননি। আপনার চোখে সংশয়বাদী আর নাস্তিকের পার্থক্য কি তা পরিষ্কার হল না।
দুনিয়ার বেশীরভাগ লোকে মধ্যপন্থী হয় এটা মানি, তাই বলে নাস্তিকতা একটি বিশ্বাস বা নাস্তিক আর সংশয়বাদীতে কোন তফাত আছে বলে মনে হয় না। গ্রে এরিয়া আছে তাও ঠিক। তবে আমার মনে হয় এই গ্রে আরিয়া আস্তিকদের মাঝেই বেশী। যেমন, কাল আরেকজন অন্য একটা ব্লগে তিনি কেন আস্তিক তার সহজ কারন বললেন। তার মতে ঈশ্বর যদি আসলেই না থাকে তাহলে তো কোন ঝামেলাই নেই, কিন্তু যদি থেকেই থাকে তাহলে তো পরকালে বিরাট ঝামেলায় পড়ে যাবেন। কি দরকার বাপু নাস্তিক ঘোষনা দিয়ে সেই ঝুকি নেবার? তার চেয়ে সেফ সাইডে থাকার জন্য আস্তিক হওয়াই ভাল। আমার ধারনা বেশীরভাগ আস্তিকই আসলে এমন কিছু একটা চিন্তা করেন। এই ভদ্রলোক সরাসরি বলে ফেলেছেন।
“নাস্তিককে আস্তিক হতে হলে সংশয়বাদী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই যেতে হয়।“
– এটা মনে হয় ঠিক হল না। বহু নাস্তিক আস্তিক হয়েছেন, অহরহই হচ্ছেন। তবে তারা কিন্তু সংশয়বাদ ত্যাগ করে বিশ্বাসের জগতে পদার্পন করছেন বলেই আস্তিক হচ্ছেন। কারন আস্তিকতা হল তর্কের অতীত পুরোপুরি বিশ্বাস। আস্তিকতা তো বিবর্তনবাদের মতন কোন বৈজ্ঞানিক বিষয় না যে সংশয়ী মন নিয়ে নানান রকম পরীক্ষা নীরিক্ষা করে তবেই যাচাই করা যায়। আস্তিকতা হল বিশ্বাসের ব্যাপার। সংশয়বাদের কোন অস্তিত্ত্ব নেই।
1. হতে পারে কিছু নাস্তিক মুখে যা বলেন আসলে তা না। হতে পারে যে তারা ঈশ্বরের অস্তিত্ত্বের নিশ্চিত প্রমান পেলেও না মেনে নেবেন না, নাস্তিকই থেকে যাবেন। কিন্তু সবাইকে সেই কাতারে ফেলা তো ঠিক না। বিশেষ করে আস্তিকতার পক্ষে নিশ্চিত কোন প্রমান যখন এখনো পাওয়া যায়নি তাই এই তত্ত্বের যথার্থতা সম্পর্কে বলা যায় না। “কারন তারা মনে করে তারা চিরকালের জন্য অবিশ্বাসী, যাই বিশ্বাস করতে বলা হবে, এরা বলবে বিশ্বাস করিনা”। এটা কিন্তু পুরোপুরি আপনার ব্যাক্তিগত বিশ্বাসের কথা। ভুল হলে মাফ করবেন, তবে আপনার এ বাক্যের মধ্যে কেমন যেন ব্যাক্তিগত রেষারেষির গন্ধ পাওয়া যায়। আমি আগেই আপনাকে বলেছি যে এই ব্লগের প্রায় সব নাস্তিকই একাধিকবার বলেছেন যে নিশ্চিত প্রমান পাওয়া গেলেই তারা আস্তিকতা মেনে নেবেন।
আমার কাছে নাস্তিক আর সংশয়বাদীতে কোন পার্থক্য এ কারনেই নেই। তবে যেসব নাস্তিক পণ করে আছেন যে যত শক্ত বা যুক্তিগ্রাহ্য প্রমান দেখানো হোক তারা আস্তিকতা মেনে নেবেন না তাদের কথা ভিন্ন।
@আদিল মাহমুদ,
‘বহু নাস্তিক আস্তিক হয়েছেন, অহরহই হচ্ছেন। তবে তারা কিন্তু সংশয়বাদ ত্যাগ করে বিশ্বাসের জগতে পদার্পন করছেন বলেই আস্তিক হচ্ছেন। কারন আস্তিকতা হল তর্কের অতীত পুরোপুরি বিশ্বাস।’
ঠিক বলেছেন। সংশয়বাদী হলে আবার বিশ্বাসী হয় কেমন করে?
“নাস্তিককে আস্তিক হতে হলে সংশয়বাদী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই যেতে হয়।“ – তাই এটা একটা পুরোপুরি ফাউল কথা।
‘তবে যেসব নাস্তিক পণ করে আছেন যে যত শক্ত বা যুক্তিগ্রাহ্য প্রমান দেখানো হোক তারা আস্তিকতা মেনে নেবেন না তাদের কথা ভিন্ন’।
আদিল ভাই এরা আর তখন নাস্তিক থাকেনা, গোয়াড় বিশ্বাসীতে পরিনত হয়। শামীম ভাই আসলে নাস্তিকতা বলতে যা বুঝছেন তা বিশ্বাস বৈকি কিছু নয়।
ধন্যবাদ।
@মিঠুন,
শামীম সাহেব আসলেই ধরে নিয়েছেন যে সব নাস্তিক আসলেই ঐ শেষোক্ত শ্রেনীর; মানে যত শক্ত বা যুক্তিগ্রাহ্য প্রমান দেখানো হোক তারা আস্তিকতা মেনে নেবেন না। পরিষ্কার বলেও দিয়েছেন। তবে এটা যেহেতু ওনার বিশ্বাসের ব্যাপার সেহেতু এ নিয়ে তর্ক করা বৃথা। ঈশ্বরের অস্তিত্ত্বের হাতে নাতে প্রমান পাওয়া গেলে এটা ভেরিফাই করা যেত।
তার আগ পর্যন্ত আমি নাস্তিকদের সংশয়বাদী নাস্তিক হিসেবেই বিশ্বাস করব, আর উনি হয়ত সব নাস্তিকদের “বিশ্বাসী নাস্তিক” ধরে রাখবেন।
তবে নাস্তিকতা থেকে আস্তিকতায় সংশয়ের মাধ্যমে আসতে হয় ওনার এই কথা মনে হয় মারাত্মকভাবে ভ্রান্ত।
@আদিল মাহমুদ,
আদিল ভাই, ঈশ্বরের অস্তিত্ত্বের নিশ্চিত প্রমান পেলে তা কি কারও বিশ্বাসের জন্য বসে থাকতো?
@সৈকত চৌধুরী,
ওটা আমার কথা নয়, শামীম সাহেবের তেমনি বিশ্বাস। আমার তেমন মনে হয় না তা আগেই ওনাকে বলেছি। উনি তা মোটেও মানতে রাজী নন। উনি ধরেও নিয়েছেন যে নাস্তিকতাও আস্তিকতার মতই একটি অন্ধ বিশ্বাস। এমনকি যারা জেনে বুঝে পড়াশুনা করে নাস্তিক হয় তারাও আসলে কোন যুক্তিগ্রাহ্য প্রমান পেলেও আস্তিক হবেন না। গো ধরে নাস্তিকই রয়ে যাবেন।
এমন ধারনা ওনার এডভান্সড কেমন করে হল তা উনিই ভাল জানেন। উনি আসলে এই বিশ্বাসের ওপরেই তর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন।
@আদিল মাহমুদ,
আসলে ম্যালা কথা অলরেডি হয়ে গেছে, এবং সত্যি বলতে কি আমার ধৈর্যচ্যুতি ঘটেছে। তাই এই পোষ্টে এটাই আমার লাষ্ট কমেন্ট।
একজন নাস্তিক (তর্কের খাতিরে ধরুন, গোয়াড় আজন্ম নাস্তিক), হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিল যে সে আস্তিক ফলে সে আস্তিক হয়ে গেল- এভাবেতো বিষটি ঘটেনা। প্রক্রিয়াটি একটি ধীর এবং ক্রমাগত। ধরাযাক ঐ নাস্তিক আস্তিক্যবাদের উপর জ্ঞানার্জন শুরু করে ফলে প্রাথমিক ভাবে তার প্রচলিত বিশ্বাসে (নাস্তিক্যবাদে) সে সন্দেহ পোষন করতে থাকে। একই সাথে তার নতুন ধারনাও তার কাছে ধোয়াশা মনে হয়। কিছুদিন সে সংশয়ী ভাবে দোদুল্যমান অবস্থায় থাকে অবশেষে সে যখন আস্তিক্যবাদে নিশ্চিত হয় (যতদিন না হয় ততদিন সংশয়ে চলতেই থাকে) তখন সে সকল সন্দেহ ঝেরে ঝুরে আস্তিকে পরিনত হয়, অথবা তার পূরাতন মতবাদে ফেরত যায়।
বিশ্বাস সম্পর্কেঃ
আসুন দেখি বিশ্বাস কি, Faith is in general the persuasion of the mind that a certain statement is true।
নাস্তিকদের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত কিভাবে প্রকাশ করে ? ‘ঈশ্বর নেই’। যদিও নাস্তিক শব্দটি না-বোধক, যেমন প্রবন্ধের লেখক বলেছেন। কিন্তু ‘শুন্যের’ ধারনা দিয়ে হা-বোধক হিসাবে এভাবে তাদের সিদ্ধান্তটি এভাবে প্রকাশ করাযায়ঃ ‘জগত ঈশ্বর শুন্য’ (না-ঈশ্বর আছে এই ধরনের উদ্ভট হা-বোধক বিবৃতির দরকার পরেনা)। এখন উক্ত বিবৃতিটিকে সত্য মেনে নিলে সংজ্ঞানুসারে এটি একটি বিশ্বাস । আমি শুধু এই কথাই বুঝিয়েছি এর চেয়ে বেশী কিছু নয়।
আমার মনে হয় আমাদের বিরোধ যতনা ‘নাস্তিক’ সংজ্ঞার সাথে যুক্ত তার চেয়ে ‘বিশ্বাস’-এর সংজ্ঞার সাথে যুক্ত।
আমি আগেই বলেছি যে এখানকার বেশীরভাগ ব্লগার আসলে সংশয়বাদী যদিও তারা নিজেদের নাস্তিক দাবী করছে। এই কারনেই তারা নাস্তিক আর সংশয়বাদকে গুলিয়ে ফেলছে। কারন আপনার নিচের বিবৃতিটি লক্ষ করুনঃ
‘পাওয়া গেলে মেনে নেব’-একটি অসম্পুর্ন বাক্য (এক ধরনের হেয়ালি)। পরের প্রশ্নটিতে বুঝা যাবে তারা আসলে আস্তিক/নাস্তিক/সংশয়বাদী। প্রশ্নঃ আপনার কি মনে হয় পাওয়া যাবে? হা / না / জানিনা।
তারা আস্তিকতা মেনে নেক বা না নেক এ ব্যাপারে আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই সে ব্যাপারে তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিবেন।
সংশয়বাদ ও নাস্তিকতাবাদঃ
এ নিয়ে অনেক কথা হয়ে গেছে। সংক্ষেপে শুধু এটুকুই বলি, নাস্তিকতাবাদ যদি হয় lack of belief তবে সংশয়বাদ doubt of belief।
@শামীম,
“আসলে ম্যালা কথা অলরেডি হয়ে গেছে”
– আমারো তাই মনে হয়। ধণ্যবাদ আপনার ব্যাখ্যার জন্য।
@শামীম,
আসলেই হুদাই প্যাচাল পারছি আপনার লগে।
‘এই ব্লগে আমি নতুন। তাই আমার জানা ছিলনা এখানেও কিছু এলিট লেখক আছেন যাদের সমালোচনা করতে নেই। সমালোচনা যাই হোক, এদের সমালোচনা করাই যে ভূল- আমি জানতাম না। এখন আপনার কথায় হুশ হলো, এখন থেকে কঠিন ভাবে আমার এই ভূল সংশোধনে মনোনিবেশ করবো। দূখঃ হলো, কাদা খেলাম আমি, দোষও হলা আমার!!’
আপনি মোটেও কাদা খাননি। আপনি নাস্তকিতাকে বিশ্বাস মনে করেন, এটা আপনার ভুল ধারনা। অভিজিতদা আপনার ধারনা ভুল দেখালেও আপনি তা স্বীকার করছেন না। নাই করতে পারেন- আপনার ব্যাক্তিগত বিশ্বাস নিয়ে কারও কিছু বলার নেই (সংশয়বাদীরাও দেখি বিশ্বাস থেকে মুক্ত নয়!!)। কিন্তু আমি আপনাকে কখন বললাম যে সমালোচনা করতে নেই? এখানে সবাই আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষন করছে। তা করতেই পারে, কিন্তু তাত আপনার এমন গাত্রদাহ হল যে উল্টোপাল্টা বকা শুরু করলেন!! কাদা কে ছুড়ছে তা বোধ হয় যথেষ্ঠ পরিস্কার।
ধন্যবাদ।
@শামীম,
নাস্তিকদের সম্পর্কে এই মুল্যায়ন কি সঠিক হলো, এই মন্তব্য করাটি কি একধরনের গোয়ার্তুমী নয়? আমার মনে হ্য়, আমরা যতই উদার হই না কেন মনের অজান্তে গোড়ামী ভাবটা চলে আসে। ‘সংশয়বাদীরা নাস্তিক নয়’ এটা প্রমান করায় কি এমন ফায়দা আছে আমি বুঝিনা। শিক্ষানবিস ঠিক কথা বলেছেন “আমি বোধহয় একইসাথে নাস্তিক, সংশয়বাদী, অজ্ঞেয়বাদী, নির্ধার্মিক”।
@ব্রাইট স্মাইল্,
১)সমাজে কিছু ষ্টেরিওটাইপ আছে। সেটা ভাঙ্গা। নাস্তিক্যবাদকে কেউ চ্যালেঞ্জ করলেই ভেবে বসে যে সে আস্তিক এমন কি ধার্মিক। নিচের উদৃতিটি খেয়াল করুনঃ
-লিখক আকাশ মালিক, উৎসঃ বর্তমান প্রবন্ধ
২) মধ্যপন্থাই সর্বোৎকৃষ্ঠ পন্থা। ঈশ্বর আছেন কি নাই- তা নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যাথা নাই। ‘ঈশ্বর নাই’, ‘ঈশ্বর নাই’ করে চেচালে আরেক দল একই ভাবে বা আরো জোরে চেচাবে ‘ঈশ্বর আছে’ । মানুষের অমুল্য সম্পদ সময়। তাকে আরো ভালো কাজে ব্যাবহার করা উচিত।
সংশয়বাদী জগতে আপনাকে স্বাগতম। এই জগতে কিছু আস্তিক পন্থী সংশয়বাদীদের (Agnostic theism, ৮ নং কমেন্টে আমার উত্তর দেখুন) দেখা পেলেও পেতে পারেন, আপত্তি নেই তো ?
@শামীম,
সংশয়বাদী জগতে নাস্তিকরা শুরু থেকেই আছে। তাকে স্বাগতম জানানোর কিছু নেই।
নাস্তিকরা সংশয়বাদ আর নাস্তিক্যবাদ কে আলাদা করে দেখেনা।আপনার ভুল ধারনা পরিত্যাগ করুন।
ধন্যবাদ।
@শামীম,
না কোন আপত্তি নাই, আপনি যত গভীরে যেয়ে বিষয়টাকে ক্লাসিফাই করার চেস্টা করছেন (যেমন আস্তিক, আস্তিকপন্থী সংশয়বাদী, নাস্তিকপন্থী সংশয়বাদী, নাস্তিক) এত গভীরে যেয়ে জীবন দুর্বিষহ করার ইচ্ছা আমার নাই।
@ব্রাইট স্মাইল্,
আমারও একই প্রশ্ন। নাস্তিক হতে হলে সংশয়বাদী হতেই হবে। কেউ যদি সংশয়বাদী না হয়ে শুধুমাত্র গোয়াড়ের মত নাস্তিক হতে চান তবে তিনি আর নাস্তিক থাকেননা, বিশ্বাসী হয়ে যান। সংশয়বাদ থেকেই নাস্তকিতার জন্ম। তাই সংশয়বাদ আর নাস্তিকতাকে কখনও আলাদা করা যায়না। নাস্তিকতা হল বিশ্বাস থেকে মুক্তি। সংশয়বাদী মন হতে হলে বিশ্বাস থেকে মুক্তি পেতেই হবে। এ কারনেই নাস্তিকতাও যে এক ধরনের বিশ্বাস – শামীম সাহেবের এ দাবী গ্রহনযোগ্য নয়। নাস্তিকতার ব্যুত্পত্তিগত অর্থ বিশ্লেষন করে অভিজিতদা প্রথমেই তা পরিস্কার করে দিয়েছেন। এর পরেও শামীম সাহেব নাস্তিকতাকে বিশ্বাস বলে প্রচার করায় অবাক না হয়ে পারছিনা।
হ্যা, সকল সংশয়বাদী হয়ত নাস্তিক নন, তবে সকল নাস্তিক অবশ্যই সংশয়বাদী। আমাদের আদিল মাহমুদ ভাইও কিন্তু সংশয়বাদী কিন্তু তিনি নিজেকে নাস্তিক বলে দাবী করেন না। একারনেই শিক্ষানবীসের সাথে আমি সম্পুর্ন সহমত যে- “আমি বোধহয় একইসাথে নাস্তিক, সংশয়বাদী, অজ্ঞেয়বাদী, নির্ধার্মিক”।
ধন্যবাদ।
@শামীম:
আপনার ধারনা ভুল, আপনার ব্যাক্তিগত বিষয় নিয়ে আমার মনে হয়না কারো আগ্রহ আছে যতক্ষন না আপনাকে কেউ ব্যাক্তিগত পর্যায়ে চিনে। এখানে কথা হচ্ছে ‘কোন এক ব্যাক্তি’ নিয়ে, সে আপনিও হতে পারেন বা আপনার মতাদর্শে বিশ্বাসী অন্য কেউ হতে পারে, এটা কোন বিষয় না।
গাধামি আসলে এক প্রকার চালাকি! রাত হইল অন্ধকারাচ্ছন্ন দিন! দিন হইল আলোকিত রাত!
“নাস্তিকতাও একটা ধর্ম” কথাটা কাউকে বলতে শুনলে আমার মনে হয়, “মানুষ আসলে দ্বিপদী গরু”।
@পৃথিবী, :laugh:
@পৃথিবী,
আপনি যদি আস্তিক হন তবে প্রমান করুনঃ “ঈশ্বর আছে”
আপনি যদি নাস্তিক হন তবে প্রমান করুনঃ “ঈশ্বর নাই”
কিন্তু শর্ত হলোঃ আপনি আরেক পক্ষের কাছ থেকে সংজ্ঞা, বৈশিষ্ঠ, যুক্তি ইত্যাদি নিতে পারবেননা অর্থাৎ স্বাধীন ভাবে আপনাকে প্রমান করতে হবে। আপনি যেটি প্রমান করতে পারবেন, আমি সেটিই বিশ্বাস/স্বীকার (আস্তিক / নাস্তিক) করব।
আমাকে প্রমান করতে বলবেননা কারন আমি কোনটিই প্রমান করতে পারবনা।
@শামীম, “বা্র্ডেন অব প্রুফ” এর কথা কিন্তু আগেই বলা হয়েছে। আমি যেহেতু স্রষ্টার অস্তিত্বের কথা দাবি করিনি, তাই প্রমানের দায়বদ্ধতাও আমার নেই।
ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি স্রষ্টার ধারণাটাই অপ্রয়োজনীয়, স্রষ্টাকে ছাড়াই বিজ্ঞানীরা বস্তুজগত সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করছেন। “আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন” আর “আমি জানি না” আমার দৃষ্টিতে একই পরিমানে শিক্ষণীয়। অক্কামের রেজর দিয়ে এই অনাবশ্যক তত্ত্বকে ঝেড়ে ফেলাই উচিত।
কোন কিছুর নৈর্ব্যক্তিক অস্তিত্ব থাকলে তা প্রমান করা লাগে না, কোন কিছু প্রস্তাব করলেই তা প্রমান করা লাগে। কোন প্রস্তাবনা প্রমান করতে গেলে তো কারও না কারও সংজ্ঞা আপনাকে গ্রহন করতেই হবে। অশ্বডিম্বের কথাই ধরুন।
@শামীম, তাছাড়া আমার কমেন্টটা আপনাকে উদ্দেশ্য করে করা হয়নি, প্রশ্নবানে বিধ্বস্ত ডেসপারেট আস্তিকদের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। আমি জানি আপনি নাস্তিকতাকে ধর্ম বলেননি, “বিশ্বাস” বলেছেন। দয়া করে ব্যক্তিগতভাবে নিবেন না।
@পৃথিবী,
নারে ভাই, ব্যাক্তিগত ভাবে নেই নাই।
আপনি গাধামি-চালাকি, রাত-দিন এর সম্পর্ক উল্লেখ করলেন তো তাই এটাই দেখাতে চাইলাম, আস্তিক-নাস্তিক অনুরূপ একটা সম্পর্ক আছে। (সংজ্ঞানুসারে) নাস্তিকদের অস্তিত্বের জন্যই আস্তিকদের দরকার।
আমার ধারনা আর আপনার সুত্র ধরেঃ নাস্তিকরা হলো অবিশ্বাসী-আস্তিক। :laugh: :lotpot:
শামীম,
নাস্তিকতা কিংবা সংশয়বাদিতাকে বিশ্বাস কিংবা ধর্ম এই ধরনের উক্তি দিয়ে প্রকাশ করাটা ভুল। আমার কাছে মনে হয় নাস্তিকতা শব্দটির একটা সীমাবদ্ধতা আছে। অর্থাৎ শুধুমাত্র ঈশ্বরের অস্তিত্বে সংশয় পোষনকারীরাই নাস্তিক। অনেক নাস্তিক বিশেষ কোন সামাজিক কিংবা রাজনৈতিক দর্শনে সংশয় প্রকাশ নাও করতে পারেন। যেমন, লেনিনিজমে, ভাগ্যে কিংবা অ্যস্ট্রলজির মতো কোন বিষয়ে। আর সংশয়বাদিরা যেকোন বিষয়েই সংশয় পোষন করতে পারেন, যেটা শুরুই হয় ঈশ্বরের অস্তিত্বের ব্যাপারে সংশয়ের মধ্যদিয়ে। তার অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান, অনুভব এবং সত্য-নিষ্ঠ যুক্তির নিক্তিতে চুলচেড়া বিচার-বিশ্লেষনের পরেই শুধুমাত্র তা তার কাছে গ্রহন-যোগ্য বা পরিত্যাজ্য হবে। এখানে বিশ্বাসের প্রশ্নটা অবান্তর এই জন্যে যে, জ্ঞান কিংবা অভিজ্ঞতা এবং যুক্তির ক্রমবিবর্তনে কোন বিষয় গ্রহন-ত্যাগের মাত্রাটি নির্ভর করে। সেই জন্যেই কোন সংশয়বাদী ঠিক কতোটা সংশয়ী সেই মাত্রাবোধটিও কখনো সখনো বিবেচনার দাবী রাখে। কাজেই সকল সংশয়বাদীই প্রকারান্তরে নাস্তিক।
বিশ্বাস জিনিসটি এক্ষেত্রে একেবারেই ভিন্ন। এর ব্যাপ্তী অনেক বেশী। বিশ্বাস যুক্তি, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা নির্ভর হতেও পারে নাও হতে পারে। তবে সাধারনতঃ যেখানে মানুষ অন্ধকার দেখে, যেখানে বিষয়টি লব্ধ জ্ঞান, যুক্তি কিংবা অভিজ্ঞতার অতীত সেখানেই দুর্বল চিত্তের মানুষ কখনো কখনো বিশ্বাসের আশ্রয় নিয়ে থাকে। কাজেই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশ্বাসের কোন ভিত্তি নেই। সংশয়বাদীরা অস্পস্ট ক্ষেত্রে কখনো কখনো ধারনার আশ্রয় নিয়ে থাকেন, তারা এটিকে বিশ্বাস বলতে নারাজ। কারন, বিশ্বাস এবং ধারনার মাঝে বিস্তর ব্যাবধান। ধারনাকে কেউ স্বতঃসিদ্ধ ধরে নিলে সেটি হবে বিশ্বাসের নামান্তর। বিশ্বাসের বিবর্তন ঘটেনা তবে ধারনার বিকাশ কিংবা পরিবর্তন বা পরিবর্ধন ঘটতে পারে। সেই জন্যে আজকাল যারা ধর্মকে বিজ্ঞানে পেঁচিয়ে যুগপোযোগী করার চেষ্টা করে তারা আসলে আমার দৃষ্টিতে বিশ্বাসী নয়। কারন ধর্ম একটি মধ্যযুগীয় বিশ্বাস নির্ভর সামাজিক দর্শন। তারা আসলে একধরনের কপট বিশ্বাসী, ছদ্মধার্মিক কিংবা প্রতারক। যেমন জাকির নায়েক!
আবার মনুষ্য সমাজে বিশ্বাস জিনিসটি পুরোপুরি পরিত্যাজ্য নয়। যেমন, রবীন্দ্রনাথের ভাষায় “মানুষের প্রতি বিশ্বাস হাড়ানো পাপ”। খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বাণী। মানুষকে বিশ্বাস করে ঠকা ভালো, বিশ্বাস হাড়ালে নিজেরই অস্তিত্ত্ব বিপন্ন হয়। কারন মানুষ পরষ্পরের মস্তিষ্কের খবর জানে না। আবার ইতিহাস বলে মোহাম্মদ সত্যবাদী ছিলেন এই জন্যে সবাই তাকে বিশ্বাস করতো। এই বিস্বাসটি সত্যতা এবং যুক্তি নির্ভর। তবে যখন মানুষ পরস্পরের মস্তিষ্কের খবর রাখার মতো পর্যায়ে আসবে (যেমন বিপ্লব পালের “উত্তরপুরুষ”-এর তিন্নির মতো) তখন সম্ববতঃ রবীন্দ্রনাথের ঐ বাণীটি তাৎপর্য হাড়াবে। অবশ্য তখন তিন্নিরা তাদের হোমোস্যাপিয়েন্স না বলে ভিন্ন ডিজিটাল প্রজাতির প্রাণী বলে দাবীও করতে পারে!
@কেশব অধিকারী,
আপনার কথাতে অনেকটা একমত। তবে সমস্যা হলো নাস্তিকেরা সবসময়ই সংশয়বাদীদের সমগোত্রীয় ভাবেন। কিন্তু সংশয়বাদীরা নাস্তিকদের নিয়ে কি ভাবে এটা বলতে গেলেই যত সমস্যা।
সংশয়বাদীদেরও আস্তিক, নাস্তিকদের নিয়ে নিজস্ব একটা ভাবনা থাকতে পারেতো, নাকি তাও পারেনা? কিন্তু মজার ব্যাপার হলো সংশয়বাদীরা নাস্তিক, আস্তিক এই দুই পক্ষ থেকেই বুলির (bully) স্বীকার।
আপনার এই দাবী মানতে পারলামনা। আস্তিক্যবাদ ও নাস্তিক্যবাদ এরা হলো নিশ্চিত ক্লাবের সদস্য (যদিও তার বিপরিত মেরুর) কিন্তু সংশয়বাদীরা অনিশ্চিত ক্লাবের মেম্বার। সংশয়ের প্রকার অনুসারে সংশয়বাদীরা কয়েক ভাগে বিভক্তঃ যেমন
দৃঢ় সংশয়ী (Strong agnosticism)ঃ এরা বলে, চরম সত্য যেমন আমার পক্ষে কোনদিন জানা সম্ভব নয়। তেমনি তোমার পক্ষেও নয়।
মৃদু সংশয়ী(Weak agnosticism)ঃ চরম সত্য এখন জানা সম্ভব নয়, তবে ভবিষ্যতে (জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতিতে) জানা সম্ভব হতে পারে। তত দিন আমি মন্তব্য স্থগিত রাখবো।
প্রগতিশীল সংশয়ী(Pragmatic agnosticism)ঃ চরমসত্যকে প্রমান বা অপ্রমান করা যায়না, তাই এ নিয়ে মাথা ঘামানোর কোন দরকার নেই।
নাস্তিক্যবাদী সংশয়ী(Agnostic atheism)ঃ এরা মনে করে সাধারন ভাবে চরম সত্য নাই। কিন্তু তার প্রমান সম্ভব নয়।
আস্তিক্যবাদী সংশয়ী(Agnostic theism)ঃ এরা সাধারন ভাবে মনে করে চরম সত্য আছে, কিন্তু প্রমান সম্ভব নয়।
(সুত্রঃ উইকিপিডিয়া)
এখানে দেখা যাচ্ছে, নাস্তিক্যবাদি সংশয়ীরা, সংশয়বাদের একটা ক্ষুদ্র অংশ কিন্তু এরা আদতে নাস্তিক নয়, শুধু মিলগত কারনে এদের এই গ্রুপে ফেলা হয়। আবার আস্তিক্য বাদী সংশয়বাদীরাও আছেন যারা আস্তিক নন, কিন্তু তাদের সাথে ধারনা গত কিছু মিল আছে।
তাই সংশয়বাদীদের নাস্তিকদের কাতারে ফেলা একপেশে। তবে যদি নাস্তিকরা তাদের সংশয়বাদী মনে করতে পারেন তবে তাদের স্বাগতম। শুধু সংশয়বাদীদের নাস্তিক বলবেননা এটাই আবদার (সংশয়বাদীরা নিশ্চিত ক্লাবের মেম্বার হতে চায় না)।
বারট্রান্ড রাসেলের একটি মন্তব্য দিয়ে শেষ করছিঃ That sort of God (non-anthropomorphic) is, I think, not one that can actually be disproved, as I think the omnipotent and benevolent creator can।
@শামীম,
কোরানের সর্বপ্রথম সুরার সর্বপ্রথম আয়াত- জালিকাল কিতাবু ফি লারাইবা ফিহ, এই সেই বই যে বইয়ে কোন সংশয় নেই।
সংশয়বাদীদের কোরানের ভাষায কাফির বলা হয়।
@আকাশ মালিক,
“কাফির”
নাস্তিক বলা হয় এটা কিন্তু দেখাতে পারলেন না। এইবার ধরা 🙂 ।
@আকাশ মালিক,
আমি একটু কনফিউসড্, তিনি কি কোথাও বলেছেন যে তিনি ধর্ম মানেন? সংশয়বাদী হলে কি ধর্ম মানা যায়? এখানে সম্পর্কটা কি?
@ব্রাইট স্মাইল্,
আমি নিজেই কনফিউসড, আমিকি কোথাও বলেছি আমি ধর্ম মানি?
আর আমি কি কোন ধর্ম বলতে কি কোন বিশেষ ধর্ম কে বুঝিয়েছি?
কিন্ত আমার ব্যাক্তিগত বিষয় নিয়ে অনেকের আগ্রহ দেখে আমি যারপরনাই ভিষন খুশী। আমার যদি এই ব্লগে পোষ্ট দেবার ক্ষমতা থাকত তবে আমি এই আগ্রহের জন্য সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে একটা পোষ্ট দিতাম।
@শামীম,
ভাই, আপনি একটু ধৈর্য্য ধরে নাস্তিকতা, সংশয়বাদ, অজ্ঞেয়বাদ এগুলো সম্পর্কে সময় নিয়ে জানেন এবং তারপর তর্ক করেন তাহলে আপনার ও আমাদের সুবিধা হয়। এখানে আপনি সংশয়বাদকে(SCEPTICISM) অজ্ঞেয়বাদের(AGNOSTICISM) সাথে গুলিয়ে ফেলেছেন।
না ভুতে বিশ্বাসী?
না খোদায় বিশ্বাসী?
মজার কথা।
হা হা হা…..
আসলেই নাস্তিক বলে আলাদা করে দেয়ার মত কিছু আছে বলে মনে হয় না। নাস্তিক, নির্ধার্মিক, অজ্ঞেয়বাদী, সংশয়বাদী- এদের মাঝে এমন কোন প্রথাগত বিভেদ নেই, যা আছে সব বুদ্ধিগত এবং অহিংস। এরা সবাই একই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। আমাকে এই ৪ বিশেষণের যেকোন একটি বললেই চলে, কোনটাতেই আমার আপত্তি নেই। আমি বোধহয় একইসাথে নাস্তিক, সংশয়বাদী, অজ্ঞেয়বাদী, নির্ধার্মিক।
আমি কস্মিন কালেও নাস্তিক্যবাদকে ধর্ম বলিনি। সুতরাং আমি যা বলিনি তার দায় আমার না।
আপনার লিখার চালাকিটা হলো আপনি সংশয় আর অবিশ্বাসকে এক করে ফেলেছেন। সম্ভবতঃ আপনি সংশয়বাদী (Skeptic/agnostic) আর নাস্তিকদের (Atheist) একই মনে করেন।
সংশয় (Skepticism) আর অবিশ্বাস(non-belief) কি একই জিনিষ? আপনি অবিশ্বাসী/নাস্তিক বলতে কি বুঝায় তার সংজ্ঞা দিয়েছেন। দয়া করে সংশয়বাদ কি তার সংজ্ঞাটা দিবেন কি।
কোন কিছুর নিশ্চয়তার ধারনার উপর ভিত্তি করে আমরা দুইটি ভাগে বিভক্ত করতে পারি। নিশ্চিত ও সংশয়ী।
সংশয়ীরা ‘ভুত আছে’ বা ‘ভুত নাই’ এর কোনটির উপর তারা আস্থাবান নন (কারন গবেষনাগারে তারা ভূত নিয়ে পরিক্ষানিরিক্ষা করতে পারেন নাই)। তাই তারা ভূত নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত দানে বিরত থাকেন।
নিশ্চিত দলে আস্তিক ও নাস্তিক দুই গ্রুপই আছেন। তারা তাদের ভুত সংক্রান্ত স্ব-স্ব ধারনার উপর নিশ্চিত ভাবেই বিশ্বাস করেন (যদিও ভুত কে নিয়ে তারাও কোন পরিক্ষা নিরিক্ষা করতে পারেনি)। এই ভূত নিয়ে কোন গবেষনা করতে না পারার পরও ভূত-বিশ্বাসীরা ঘোষনা দিল ‘ভূত আছে’। আবার একই ভাবে ঐ ভুত নিয়ে গবেষনা না করার পরও শুধু ভূত বিশ্বাসীদের দাবী পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে ভূত-অবিশ্বাসীরা সিদ্ধান্ত দিল ‘ভূত নেই’।
ধরা যাক এখন ভূত নিয়ে অবিশ্বাসীরা তারা তাদের নিজের ঘোষনা বা সিদ্ধান্তকে বিশ্বাস করেনা। কারন তারা চায়না তাদের কোন কিছুতে ‘বিশ্বাসী’ টাইটেল জুটুক। তাহলে তাদের কি বলা যাবে?
নাস্তিকরা ঘোষনা / সিদ্ধান্ত দিলঃ ‘ঈশ্বর নেই’ (ঈশ্বর নিয়ে গবেষনা না করেই নয় শুধু আস্তিকদের দাবী পরিক্ষা-নিরক্ষা করে)। কিন্তু হঠাৎ দাবী করে বসল আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে (ঈশ্বর নেই) বিশ্বাসী নই। কারন বিশ্বাসী শব্দ আমাদের জন্য নয়। তবে তাদের কি বলা যাবে?
বাজে কথা। এই না-ভুত আপনাদেরই আবিস্কার। একটি গ্লাসে যখন পানি থাকেনা আমরা বলি গ্লাসে পানি নেই, বা গ্লাশটি শুন্য। শামীম সাহেবেরা কখোনো বলেনা গ্লাশে অ-পানি আছে। কোন কিছু নেই বললেই নেগেটিভ কনোটেশন আসে আপনাদের মাথায় কারন আপনারা শুন্যের ধারনার সাথে পরিচিত নন। ‘রহিম উত্তরে যায় নাই’ – এর মানে আপনারা করেন ‘তবে নিশ্চই রহিম দক্ষিনে গিয়াছে’ কিন্তু আদতে রহিম হয়তো কোথাউ যায় নাই, তার স্ব-স্থানেই স্থীর আছে। শামীম সাহেবেরা শুন্যের ধারনার সাথে পরিচিত, তাই ভুতে অবিশ্বাস বলতে ‘ভূত যে নেই’ তাই বুঝে তাদের নতুন করে নেগেটিভ কিছু তৈরী করতে হয়না।
@শামীম,
আমি বলিনি যে আপনি নাস্তিক্যবাদকে ধর্ম বলেছেন। কিন্তু নাস্তিকতাকে বিশ্বাস বলে চালাতে চেয়েছিলেন সেটা তো সত্য, সেই যুক্তি খন্ডন করা হয়েছে। উপরন্তু যারা নাস্তিকতাকে ধর্মের সাথে তুলনা করেন, সেইটাও বাতিল করা হয়েছে।
যুক্তির বলিহারি! এই মহান যুক্তি অনুসারে আমরা এখন থেকে শুধু ঈশ্বর কিংবা ভুত নয়, সেই সাথে বক-রাক্ষস, অশ্বত্থামা, ট্যাশ গরু, বকচ্ছপ, থর জিউস, জলপরী, ফ্লাইং স্পেগেটি মন্সটার সহ যে কোন কিছুর প্রসঙ্গ উঠলেই কেবল বলব – আমরা এগুলো আছে কিংবা নেই – কোনটির উপরই আস্থাবান নই। তাই না? তা বলুন। সে আপনার মত ‘সংশয়ী’র জন্য ঠিক আছে। কিন্তু যতক্ষন না ওগুলোর অস্তিত্বের স্বপক্ষে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, ততক্ষন আমি ওগুলোতে নিজেকে অবিশ্বাসীই বলব, তা আপনার যতই গাত্রদাহ ঘটাক না কেন। আর দর্শন শাস্ত্রের ‘বার্ডেন অফ প্রুফ’ এবং অন্যান্য প্রেক্ষিত বিবেচনায় আমার অবস্থানটি মোটেই ভুল কিছু নয়।
@অভিজিৎ,
আপনার প্রতিভার প্রশংসা না করে পারছিনা। আপনিই বিতর্ক করবেন আবার বিচারও করবেন আপনি। তাহলে বুঝা যাচ্ছে যেহেতু বিষয়টি আপনার মাধ্যমে সমাধা হয়ে গেল (এর আগে হয় নি) তাই আপনার নাম কোন রেকর্ড বুকে যাওয়া উচিত। 😀
কারো ব্যাক্তিগত বিশ্বাস কি হবে সেটা আমি নির্ধারন করতে পারবনা চাইও না। আমার এত কথা বলার উদ্দেশ্য, সংশয়াবাদী ও নাস্তিক্যবাদে যে পার্থক্য আছে সেটা তুলে ধরা। আমি যেহেতু সংশয়বাদী, তাই আমি আপনার মতো নিশ্চিত করে বলতে পারছিনা যে, আমি প্রমান করে ফেলেছি, শুধু বলব আমি চেষ্টা করেছি।
আপনার সাথে আমার ব্যাক্তিগত কোন সমস্যা নেই। আমরা এখানে যুক্তির খাতিরেই যুক্তি দেই। গ্রহন করা না করা ব্যাক্তিবিশেষের উপর নির্ভর করে। তাই কোন বিষয় পারসোনালি নিবেননা বলেই আশা করি।
যেহেতু এটা দর্শনশাস্ত্রের কোন ফোরাম নয় তাই সবাইকে দর্শন শাস্ত্রে বোদ্ধা ভাবা ঠিক নয়। তাছাড়া দর্শন শাস্ত্র কোন চটি বই নয় যে নিমিষেই সব জানা হয়ে যাবে। তাই কোন টার্মিনলজি উল্লেখ করলে অন্তত সংক্ষিপ্ত ব্যাখা দিলে পাঠকের বুঝতে সুবিধা হয়।
@শামীম,
আমি দর্শন ও তত্ত্বীয় কথাবার্তা তেমন বুঝি না। তবে এইটুকু বুঝি যে (আপনার ব্যাপার জানি না) নাস্তিক বলতে আমরা যারা বুঝি তাদের সাথে সংশয়বাদীদের পার্থক্য আসলেই নেই।
অন্তত এখানকার নাস্তিকেরা কিন্তু একটি কথা সবসময়ই বলেন যে ঈশ্বর আছে তেমন কোন যুক্তিগ্রাহ্য অকাট্য প্রমান পাওয়া গেলে তারা মেনে নিবেন। আস্তিকে পরিনত হবেন। তারা কিন্তু আস্তিকদের কায়দায় গো ধরে বসে নেই যে তুমি ঈশ্বররে পক্ষে যত যাই যুক্তি দাও না কেন আমার বিশ্বাস টলাতে পারবে না। শুধু বর্তমানে প্রমানের অভাবে মেনে নিতে পারছেন না।
সংশয়বাদ ব্যাপারটাও কি একই না? সংশয়বাদীরা কোন বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেন কারন তারা সেই বিষয়ে কোন যুক্তিগ্রাহ্য প্রমান এখনো পাননি বলেই। পেলেই মেনে নিবেন। হতে পারে সেটা ভুতপ্রেত বা ইয়েতী, কিংবা খোদ ঈশ্বরের অস্তিত্ত্ব।
আপনার কি মনে হয়?
@আদিল মাহমুদ,
Religious skepticism is a type of skepticism relating to religion, but should not be confused with atheism. Religious skeptics question religious authority and are not necessarily anti-religious but are those skeptical of a specific or all religious beliefs or practices. Some are deists, believing in a God but rejecting mainstream religions. Socrates was one of the first religious skeptics of whom we have records; he questioned the legitimacy of the beliefs of his time in the existence of the various gods.
http://en.wikipedia.org/wiki/Religious_skepticism
আপনার বিশ্বাস আপনার ব্যাক্তিগত। কিন্তু মনে রাখবেন নাস্তিক কখনোই আস্তিক হতে পারে না। আপনি যদি যা বলেছেন তাই যদি আপনি মনে করেন, তাহলে বলতে হয় আপনি নাস্তিক না সংশয়বাদী তা নিয়েও আপনি সংশয়ে আছেন, আর এখনকার অধিকাংশ নাস্তিকও যদি মনে করে যে তারা বিশ্বাস করবে প্রমাণ পেলে, তাহলে বলতেই হয়, এরা সবাই দুর্বল প্রকৃতির নাস্তিক।
@আদিল ভাই,
সহমত। স্রস্টার অস্তিত্বে যারা সংশয় প্রকাশ করেন তারাই নাস্তিক।
সংশয়বাদী আর অবিশ্বাসীর মধ্যে হয়ত সংজ্ঞাগত পার্থক্য আছে। কিন্তু তাই বলে তারা দুই বিপরীত মেরুর নয়। বরং একের সাথে অন্যের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কারন অবিশ্বাসী হতে হলে আগে বোধ হয় সংশয়বাদী না হওয়া ছাড়া উপায় নেই।
কিন্তু সংশয়বাদী হয়ে কোন ভাবেই আস্তিক হওয়া যায়না। আস্তিক হতে হলে সংশয় ঝেড়ে ফেলতেই হবে। তাই বলা যায় সংশয়বাদ এবং বিশ্বাস দুই বিপরীত মেরুর এবং সংশয়বাদ হল অবিশ্বাসের পূর্বশর্ত আর এক্ষেত্রে এই দুটিকে এক করে দেখলে বোধ হয় কোন চালাকি করা হয়না।
এখানে অভিজিতদার লেখার মূল সুর হল নাস্তিক্যবাদ যে কোন বিশ্বাস না, তা শামীম সাহেবকে বোঝানো; কারন এই ব্লগে উনি এর আগে নাস্তিক্যবাদও যে এক ধরনের বিশ্বাস তার প্রচার করেছিলেন। অভিজিতদা ওনাকে ওনার ভুলটা ধরিয়ে দিলে উনি সেদিকে না গিয়ে অযথাই সংশয়বাদ আর অবিশ্বাস এর মধ্যের পার্থক্য নিয়ে উঠে পড়ে লাগলেন, যেখানে একটি সাধারন কমন সেন্স বলে যে দুইয়ের মধ্যে আসলে বেসিক কোন বৈপিরিত্ব তো নেইই বরং রয়েছে এক সেতু বন্ধন। শামীম সাহেব আশা করি এদিক সেদিক কাদা না ছুড়ে নিজের বোঝার ভুলে মনোনিবেশ করবেন।
ধন্যবাদ।
@আদিল মাহমুদ,
আপনি আমার মনের কথা বলতে বলেছেন বলে বলছি, আশা করি কেউ এটা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করবেননা, করলেও আমি প্রমান করতে পারবনা।
আমার মনে হয়, এখানকার বেশীরভাল লোকই আসলে নাস্তিক নয়, সংশয়বাদী, কিন্তু তারা সেটা নিজেও জানেনা। বিশ্বের বেশীরভাগ লোকই আস্তিকতার আড়ালে বা নাস্তিকতার আড়ালে আসলে সংশয়বাদী। আমার কেন জানি মনে হয় এখানকার বেশীরভাগ লোকই বারট্রান্ড রাসেল, আইনষ্টাইনকে নাস্তিক হিসাবেই জানেন কিন্তু আসলে উনারা নিজেদের সংশয়বাদী হিসাবেই দাবী করেছেন।
দুনিয়ার বেশীরভাগ লোকই মধ্যপন্থী (পরিসংখ্যানে যাকে বলে কেন্দ্রিয় প্রবনতা বা সেন্ট্রাল টেন্ডেন্সি)। এই ব্লগের বেশীর ভাগও এর ব্যাতিক্রম নয়। তবে আমি স্বীকার করি ‘আমি নাস্তিক’ এটি বলা, ‘আমি সংশয়ী’-বলার চেয়ে অনেক বেশী সেক্সি। তাই আমি তাদের দোষ দেই না। কিন্তু আমিতো এক নাদান আসল কথা বলে ফেসে গেছি।
আস্তিক —- সংশয়বাদী—- নাস্তিক। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আস্তিকককে নাস্তিক বা নাস্তিককে আস্তিক হতে হলে সংশয়বাদী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই যেতে হয়। এবং বেশীরভাগ লোকই সংশয়বাদে একবার প্রবেশ করলে এর থেকে বের হওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। আস্তিক-সংশয়বাদী-নাস্তিক এই বিভাজন সাদা কালোর মতো অনেক সহজ নয়। এর মাঝখানে কিছু গ্রে এরিয়া থাকে, কিন্তু এই জন্য তো সাদাকে সাদা আর কালোকে কালোই বলতে হয় নাকি?
সত্যিকারের নাস্তিকদের সংখ্যা কম হওয়াতে আমাদের মনে হতে পারে এরা গোয়াড় নয়। কিন্তু যে ব্যাক্তি নাস্তিক অবস্থায় জন্মেছে এবং অশিক্ষিত, এদের সাথে তর্ক করলে বুঝা যাবে এরাও আসলে গোয়াড়। বেশিরভাগ আস্তিকই আস্তিক হিসাবে জন্ম নেয় (কারন তাদের পিতা-মাতা আস্তিক ছিল) এবং শিক্ষার অভাবে এদের গোয়ার্তুমি হয়। এই ব্লগের বা বেশীরভাগ তথাকথিত নাস্তিক, আসলে আস্তিক অবস্থা থেকে (শিক্ষার মাধ্যমে) সংশয়বাদী প্রক্রিয়ায় (প্রায়) নাস্তিক হয়েছে। তাই তারা (অতটা) গোয়াড় নয় (তার পরও তারা যে বিশ্বাস করে ‘ঈশ্বর নেই’ এই বিশ্বাসটি তাদের মধ্যে নেই, কারন তারা মনে করে তারা চিরকালের জন্য অবিশ্বাসী, যাই বিশ্বাস করতে বলা হবে, এরা বলবে বিশ্বাস করিনা)।
@মিঠুন,
এই ব্লগে আমি নতুন। তাই আমার জানা ছিলনা এখানেও কিছু এলিট লেখক আছেন যাদের সমালোচনা করতে নেই। সমালোচনা যাই হোক, এদের সমালোচনা করাই যে ভূল- আমি জানতাম না। এখন আপনার কথায় হুশ হলো, এখন থেকে কঠিন ভাবে আমার এই ভূল সংশোধনে মনোনিবেশ করবো। দূখঃ হলো, কাদা খেলাম আমি, দোষও হলা আমার!!
আসলেই আমি এক নাদান, ‘কমন সেন্স’-এ থাকার পরও যুক্তি দিতে গেলাম! সেতুর দিকে না তাকিয়ে আমি তাকালাম তার নীচে, যেখানে বিরাট ফাক তাতে!
@শামীম,
বিচার করলেন কোথায়। তিনি এখানে যুক্তি খণ্ডন করেছেন বলে দাবি করেছেন যে অধিকার সবার আছে।
মানুষ তো নাস্তিক হয়েই জন্মে। দয়া করে বোঝেন -ঈশ্বরে বিশ্বাস না করাই নাস্তিকতা। নাস্তিকরা গোয়ার হওয়ার কোনো কারণ আছে নাকি? কি লিখলেন তা কি আবার দয়া করে পড়ে দেখবেন? আর অভিজিৎ দার লেখাটাও দয়া করে আবার পড়েন।
” ধরা যাক, এক মুক্ত-মনা যুক্তিবাদী ব্যক্তি ভুতে বিশ্বাস করেন না। তবে কি সেজন্য তিনি ‘না-ভুতে’ বিশ্বাসী হয়ে গেলেন?”
– এই উদাহরনটা অনন্য হয়েছে।
@আদিল মাহমুদ,
আরে সাহেব, ধাঁধাঁটা ধরতে পারলেন না। শামীম সাহেব সংশয়বাদী হতে রাজী, কিন্তু নাস্তিক হতে রাজী নয়। এটা নিছক সংশয়বাদীতা ও নাস্তিক্যবাদীতা শব্দ দুটোর সংজ্ঞা বা অর্থ নিয়ে তর্ক বলে আমার মনে হয়না, এর অন্তরালে আল্লাহ লুকায়ীত আছেন। যে আল্লাহর কারণে এত কথা, তার মন্তব্যও শুনা উচিৎ। আল্লাহর কাছে নাস্তিক/ সংশয়বাদী তো, যেই লাউ সেই কদু।
@আকাশ মালিক,
জি না স্যার। ব্যাপারটা মনে হয় অত সোজা না। আপনি ধরেই নিচ্ছেন কেন যে শামীম সাহেব ইসলাম মানেন?
এখন যদি তিনি দাবী করেন যে তিনি কোরানে কি লেখা আছে না আছে তার গুরুত্ত্ব দেন না কারন তিনি সংশয়বাদী তাহলে যাবেন কই?
সংশয়বাদী মানে যদি ৫০-৫০ তেমন কিছু বোঝায় (মানে প্রমান পাওয়ার আগে বিশ্বাস অবিশ্বাস কোনটাই করবেন না) সে অর্থে একজন আদর্শ সংশয়বাদীকে একই সাথে আল্লাহ, মা কালী, ভীম ভবানি, রাম লক্ষন সীতা মা, থর, জিউস, ভুত প্রেত, পরী, জীনদের রাজ্য ওকাব দেশ সব কিছুর ব্যাপারেই সংশয়বাদী হতে হবে।
কোন সংশয়বাদী যদি বলেন যে তিনি আল্লাহর ব্যাপারে সংশয়বাদী, কিন্তু মা কালীর ব্যাপারে পূর্ণ অবিশ্বাসী তাহলে তার যুক্তিবোধে গুরুতর সমস্যা আছে।
@আকাশ মালিক,
আপনি তো ভাই দেখছি অন্তর্যামী। আপনার কাছে কোন কিছু আসলেই লুকানো মুশকিল। ভাই দয়া করে এর পর থেকে আমার কমেন্টগুলি আপনিই করে দেন না। আমি টাইপিং করার কষ্ট থেকে বেচে যাই। (জোক, সিরিয়াস নেবার দরকার নেই)
ব্যাপারটা গণিতিক ভাবে এই ভাবে দেখা যেতে পারে।
সমগ্র মানবজ্ঞান বা এপিস্টমলজী একটা ইনফাইনাইট [ আসীম] সেট।
সেখানে ধর্মীয় জ্ঞান A একটা ফাইনাইট সেট।
সুতরাং অধার্মিক জ্ঞান A* ( কম্লপ্লিমেন্টারী) একটা ইনফাইনাইট [অসীম] সেট।
এবার
A==A*
হতে গেলে A কে একটি অসীম সেট হতে হয়। অর্থাৎ মেনে নিতে হবে মানুষ্যকৃত আবিষ্কৃত এবং অনাবিষ্কৃত সব জ্ঞানও ধর্মীয় জ্ঞান। কিন্ত ঈশ্বর বা আল্লারা যা হেগে ছড়িয়ে গেছেন, সেটাত খুবই সীমাবদ্ধ কোরান বা গীতার নর্দমায়। নতুন জ্ঞান [শ্লোক বা আয়াত] সেখানে ঢোকার সুযোগ নেই-তাই তা অসীম জ্ঞান হতে পারে না।
মানুষের জ্ঞান যদি আবার ধর্মীয় জ্ঞান বলে মানা হয়-তাহলে একটা বিতর্ক হতে পারে। কিন্ত কোরান বা গীতা মানুষের লেখা, তাই মানবজ্ঞানই ধর্মীয় জ্ঞান-এমনটাত কোন ধার্মিক বলে না।
@বিপ্লব পাল, মার্জনা করবেন,কোরান মানুষের লেখা নয়। এটা সৃস্টিকর্তার বানীসমৃদ্ধ একটি পবিত্র গ্রন্থ।
@সামান,
কিভাবে বোঝলেন?
@বিপ্লব পাল, so bad idea. but you have to keep in mind religion will be stay in this world. bcz man find peace in religion.
পরবর্তীতে ইংরেজিতে করা মন্তব্য প্রকাশিত হবে না।
-মুক্তমনা মডারেটর
আমি তাকে ছোটখাটো একটা জ়বাব দিয়ে এসে দেখি আপনি লিখছেন…।
আপনার সাথে আমারটা মিলছে ভালো। 🙂
@সৈকত চৌধুরী,
দেখলাম। আপনার উত্তরটা তো ভাল হয়েছে। টু দ্য পয়েন্ট। আপনে জবাব দিবেন জানলে তো আর এই পোস্ট দেওয়ার দরকার ছিলো না। 🙂
এর চেয়ে ঘুমালে ভাল ছিলো। তাই করি গা … লেখা অপেক্ষা ঘুম উত্তম ।
“পাঠকেরা কি বলেন?”
– হাম্বাঃ