(১)
গোকুর নাথ। না তিনি বাঙালী নন। ফ্লোরিডা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের ছাত্র ছিলেন- অতীতে নিজেকে র্যাশানালিস্ট বলে দাবী করতেন। গত দুই দশক ধরে ইস্কনের শিষ্য। আজ তিনি আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন, কেন তিনি, ধর্মে বিশ্বাস হারিয়ে আবার ধর্মে ফিরে এলেন। এখানে আস্তিকতা বা নাস্তিকতা অপ্রাসঙ্গিক। কারন বৈষ্ণব ধর্ম ও এক ধরনের অদ্বৈতবাদ-তাই ঈশ্বর বিশ্বাস ফিরে পাওয়া কথাটা ব্যাবহার করাটা টেকনিক্যালি ভুল। কিন্তু ব্যাবহারিক দিক দিয়ে ঠিক।
আগে বাংলাদেশী ফোরামে কিছু ধার্মিকের সাথে পরিচয় হয়েছিল। যারা এক সময়ে র্যাশানিলিস্ট ছিলেন, কিন্ত আবার ইসলামে আস্থা ফিরে পেয়েছেন। একাধিক উদাহরন আমি নিজেই দেখেছি।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, বিজ্ঞান ভিত্তিক, যুক্তি ভিত্তিক একটা জীবন শুরু করেও অনেকে আবার সেই ধর্মের কোলেই ফিরে যাচ্ছে। যুক্তিবাদ কি তাহলে অসার? প্রবীর ঘোষের সংঠন সেই মুষ্টিমেয় কজন। তার থেকে রাম-শ্যাম যদু মার্কা গুরুদের ও অনেক বেশী বড় সংগঠন। ব্যাপারটাকে আমরা যুক্তিবাদিরা -ভাল জিনিসের কদর কম, বা খুব কম লোক বোঝে ইত্যাদি দিয়ে আত্মশান্তনা দিয়ে থাকি।
কিন্ত কেন লোকে ধর্ম ছাড়ছে না?
আমরা কি ঠিক বুঝছি? ঈশ্বরের সপক্ষে যুক্তিগুলো এতই হাস্যকর-সেটা আমি একদম প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বুঝে আসছি। আমার মাথার ওপর ঈশ্বরের দশমনি বোঝা কেও চাপায় নি ছোটবেলা থেকে। ফলে জ্ঞান হওয়ার পর থেকে আদৌ কোন দিন আমি ঈস্বরে বিশ্বাস করতাম কিনা জানি না। ফলে আমার জীবনে ঈশ্বরের বিশ্বাস হারানোর হ্যাপা পোহাতে হয় নি কোনদিন-কারন ঈশ্বর বাবাজী কোনদিনই আমার বুদ্ধির প্রাচীর ভেদ করে ঢুকতে পারলেন না। ঈশ্বরের অনস্তিত্বের এই সামান্য যুক্তিগুলো সংখ্যা গরিষ্ঠ লোকে বুঝবে না-এটা কোন যুক্তিতে বুঝবো? বেঁচে থাকতে গেলে যথেষ্টই বুদ্ধির দরকার হয়। সাধারন মানুষের বুদ্ধি এত কম না, যে তারা বুঝবে না ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই। এতবড় গোজামিল, চোখে না পড়ার কিছু নেই।
তারপরেও কিছু কিছু যুক্তিবাদি আবার ধর্মে ফিরে আসছে কি করে? প্রশ্নটা নিয়ে আমাদের গভীরে ভাবা উচিত।
(২)
মানুষের নির্মানের মূলে যৌক্তিকতা না অযৌক্তিকতাবাদ? না মানবতাবাদ? শুধু যুক্তিবাদ দিয়ে কি জীবন ধারন করা সম্ভব? পৃথিবীর সেরা সেরা গান, সাহিত্য-সব কিছুই ত ঈশ্বরকেন্দ্রীক। যার পেছনে কোন যুক্তি নেই। অঙ্কুর নাথ যেমন বললেন, আমি হরে কৃষ্ণ নাম উচ্চারন করি হাজার বার-তাতে নাকি আষাঢ়ের বর্ষন ধারার মতন নেমে আসে পরম শান্তি। দুঃখ নেই। সে নাকি সচ্চিদানন্দ ( সদাই যে আনন্দে থাকে) । ধর্মপ্রান মুসলমানদের কাছেও, নামাজটা সেই সিগারেট বিড়ি টানার মতন অভ্যেস। একটু টান দিলে, মনটা চাঙ্গা থাকে। তার কি যাই আসে, ঈশ্বর আছে কি নেই? সেত প্রাণে খুশী। আর মৃত্যুত সবারই নিয়তি। সে যদি খুশী মনে মরতে পারে-ক্ষতি কি। মঠে থাকে, কোন কেলেঙ্কারী নেই জীবনে, নিষ্ঠাবান ব্রহ্মচারী। আমি যুক্তিবাদি, সে সচ্চিদানন্দ-আলটিমেটলি দুজনেই মারা যাব। ১৩ বিলিয়ান বছরের মহাবিশ্বে কি পার্থক্য হবে এতে? জীবনের উদ্দেশ্য যদি অন্যমানুষের ক্ষতির কারন না হয়, তাহলে কেন তার জীবনের উদ্দেশ্যে যুক্তিবাদ আসবে?
ইয়াং জেনেরাশনে অধিকাংশই যুক্তিবাদি হয় তাদের জীবনের স্বাধীনতার ওপর ধর্মের খবরদারি দেখে। কয়েকজন ব্রিলিয়ান্ট ইরানিয়ান ছাত্রকে চিনতাম-তারা যথেচ্চার মদ্যপান করত, আর শুয়োরের মাংস খেতে খেতে মোল্লাদের গালাগাল দিত। অনুমান করি, তাদের মূল ক্ষোভের কারন, মোল্লা ব্যাটাদের জন্যে তাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ছিল না-যৌবনে প্রেমটেম করাও ছিল রাষ্ট্রের চোখে ভয়ংকর। অর্থাৎ ধর্মের কুপ্রভাবে, তারা যৌবন ধর্ম ঠিকটঠাক পালন করতে পারে নি বলে রাগ। দক্ষিন ক্যালিফোর্নিয়াতে বেশ কিছু বাংলাদেশী মেয়ে ধর্মকে গুলি মেরে আমেরিকান মেয়েদের মতন জীবন যাপন করত। তারা আস্তিক না নাস্তিক জানি না-তবে মোল্লাদের খপ্পর থেকে বেড়তে পেরে খুব খুশী।আবার ইন্টারনেটের কিছু পৌঢ় ধার্মিক দাবী করেন-তারা এককালে বামপন্থী যুক্তিবাদি প্রগতিশীল ছিলেন-ইদানিং ইসলামের মাহাত্ম্য বুঝে, আবার হাড়িকাঠে গলা দিয়েছেন। এর মধ্যে তারা নাকি পরম শান্তির সন্ধান পাচ্ছেন! হিন্দু বামপন্থীদের মধ্যেও এমন আকছার ঘটে। যৌবনে মার্ক্সিট ( অবশ্য সেটা মাছভাতের থেকে কি আলাদা জিনিস তা অধিকাংশ বাঙালী কমিনিউস্টই জানে না) , মধ্যযৌবনে সেনস্ট্রিস্ট, সেখান থেকে বার্ধক্যে রক্ষনশীল জ্যাঠামশাইদের সর্বত্রই দেখি।
ধর্ম সংক্রান্ত এই পরিবর্তনগুলো আমাদের জীবনে কেন আসে?
(৩)
এর সাথে ঈশ্বরের অস্তিত্ব অনস্তিত্বের সম্পর্ক নেই। আসলে সবাই একটা বস্তুবাদি ‘কমফর্ট জোন’ বা সুখের সন্ধানে। এর মূলে অবশ্যই আমি কে বা জীবনের উদ্দেশ্যকি এই প্রশ্নগুলি। তবে এইসব প্রশ্ন বিদ্ধ হয়ে কোন প্রানী কিছু করে না। সমাজ আর পরিবেশ এর উত্তরগুলো আমাদের জোর করে গিলিয়ে দিয়ে থাকে। মৌমাছিদের জৈবচক্রে “জীবনের উদ্দেশ্য কি” তাই নিয়ে নিশ্চয় প্সশ্ন ওঠে না। হাজারে হাজারে সবাই যা করছে, তারাও তাই করে। ক্যানোনিক্যাল ধর্মগুলো-মানে যে ধর্ম গুলো কখন কি করিতে হইবে তাহা লিপিবদ্ধ করিয়াছে-তাদের অনুসারিরা আচরনে পুরুষ মৌমাছি। “ব্যাক্তি-স্বাতন্ত্রের” প্রশ্ন সেখানে নেই-স্বাধীন অস্তিত্বের কথা সেখানে ভাবা নিষিদ্ধ-পুরুষ মৌমাছির মতন আচরনই সেখানে সিদ্ধ।
শিল্প বিপ্লবের আগে এসব নিয়ে সমস্যা ছিল না। নাস্তিক ছিল না যে তা না-কিন্ত যুথবদ্ধ জীবন ছাড়া একাকী বেঁচে থাকা ছিল অসম্ভব। অথচ আজ আমেরিকার যেকোন শহরে ৩০ বছরের নীচে অধিকাংশ নারী বা পুরুষ একাই থাকে। সবারই প্রায় একাধিক যৌন সঙ্গী। তাই নিয়ে কেও চিন্তিতও নয়। এবং এইসমস্ত দেশ সমূহ, প্রোডক্টিভিটিতে পৃথিবীর সবার ওপরে। পাশ্চাত্যের এই সব দেশ সমূহের সমস্যা হল-জন সংখ্যা হ্রাস। কারন, অনেক মেয়েরাই সন্তান ধারনে অনিচ্ছুক। তবে রাশিয়ার অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে সেটাও সমস্যা না। মূল কথা ফার্টালিটি রেট ২ এর ওপরে থাকা দরকার। রাশিয়াতে ১৯৯৫ সালে ১ এর নীচে নেমে গিয়েছিল। বর্তমান রাশিয়ান সরকার, মা হওয়ার জন্যে বিভিন্ন ইনসেন্টিভ চালু করে। তিন সন্তান হলে এস ইউ ভি, চার সন্তান হলে বিনা পয়সায় ফ্ল্যাট–এসব করে, বর্তমানে রাশিয়াতে ফার্টিলিটি রেট আবার দুই এর কাছাকাছি। সুতরাং ধর্মের ভয় দেখিয়ে, শুধু রক্ষনশীলতার মাধ্যমেই রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেস ধরে রাখা যায়, তা ঠিক না। মেয়েদের দোখজের ভয় না দেখিয়ে, শরিয়ার চাবুক না মেরে, লোভ দেখিয়েও রাষ্ট্রের জন সংখ্যা ধরে রাখা যায়।
তবে সন্তানের জন্ম দিলেই ত হল না-তাদের মানুষ করার ব্যাপারও আছে। রক্ষনশীলদের ধারনা, শক্তিশালী পরিবার থেকেই ভবিষ্যতের শক্তিশালী নাগরিক বেড়োবে। কথাটা আংশিক সত্য। ভারত বা চীনের দিকে তাকালে দেখা যাবে, এখান কার ছাত্রদের সাফল্যের মূল কারন, তাদের পরিবার ছেলে মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে অনেক বেশী যত্নবান। সেই তুলনায় পাশ্চাত্য সমাজ অনেক পিছিয়ে পড়েছে। আমেরিকার সেরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে এশিয়ানরা এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ।
কিন্তু এর সাথে ধর্মের সম্পর্ক কোথায়? চীনারা ত ধর্ম মানে না। ভারতের সেরা ছাত্ররা-[যারা বিজ্ঞান বা প্রযুক্তিতে নিজেদের ছাপ রেখেছে]-তারা হয় নাস্তিক বা নাস্তিক্য হিন্দুধর্মের অনুসারী। আমি অবশ্য ভারতীয় সফটোয়ার ইঞ্জিনিয়ারদের এই ক্যাটেগরীতে রাখছি না-এদের অধিকাংশই বৌদ্ধিক বিষয়গুলিতে নিরক্ষর। মোদ্দাকথা পারিবারিক রক্ষনশীলতাকে ধর্মের সাথে গোলানো উচিত না। ধর্মহীন মানেই রক্কনশীলতার বিরোধিতা-এই ধারনাকে আমি ভূল বলে মনে করি। নাস্তিক চীনারাও রক্ষনশীল-আমি নিজেও ব্যাক্তিগত জীবনে রক্ষনশীল। কারন মূল কারন অনেক-
(১) আমাদের দেহ-মনের সিস্টেমটা একটা মেশিন-যা বিবর্তনের ফলে এসেছে। এবং আমাদের বিবর্তন হয়েছে সমাজবদ্ধ ডিসিপ্লিন্ড জীব হিসাবেই। ফলে দেহ বা মনের সঠিক যত্ন না নিলে-বা ডিসিপ্লিনড জীবন, যেমন অত্যাধিক মদ্যপান না করা, ধূমপান বা নেশা না করা, যথেষ্ঠ নিদ্রা, ঠিক ঠাক আহার-শারীরিক কসরৎ -ইত্যাদি না করলে, আমরা শীঘ্রই অসুস্থ হয়ে পড়ব। এর সাথে সাথে অহঙ্কারহীন, ক্ষমাশীল জীবন পালন করলে, আমাদের রক্তচাপটাও ঠিক থাকে। এতে কেও ধর্মের গন্ধ পেলে মুশকিল। আবার কেও যদি মনে করে এর জন্যে ধর্মে ফিরে যেতে হবে সেটাও মুর্খামি। খুব স্বাভাবিক বৈজ্ঞানিক যুক্রিতেই আসে আমাদের অহঙ্কারহীন থাকা উচিত। কারন, আমরা যে ‘আমি’ ‘আমি’ করছি-সেটা ত স্বতন্ত্র কিছু না। বাবা-মা-বন্ধু-শিক্ষক-পুস্তক-লেখক-সমাজ-পরিবেশ আমাদের যা শিখিয়েছে তার থেকে একটা ‘আমি’ তৈরী হয়েছে। তাছারা সেই ‘আমি’ বাঁচেই বা কদ্দিন? ১০০ বছর? ১৩ বিলিয়ান বছরের মহাবিশ্বের কাছে, তা কতটুকু সময়? পলকের ও কম।
(২) অনেক লিব্যারালদের ধারনা-অন্যের ক্ষতি না হলে বা অন্যের অধিকার ক্ষুন্ন না হলে, আমাদের সব কিছু করার স্বাধীনতা আছে। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। কারন এখানে ভাবা হচ্ছে ব্যাক্তি আমির স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে। অর্থাৎ আমি বা আপনি সমাজ থেকে পৃথক এক স্বতন্ত্র সামাজিক জীব। এটি সম্পূর্ণ বস্তুবাদ বিরোধি আদর্শবাদি ধারনা-কারন সকালে উঠে ব্রেকফাস্ট খাওয়া থেকে রাতে শুতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত আমার প্রতিটি কাজের জন্যে সমাজ এবং রাষ্ট্রকে দরকার হয়। আমার খাদ্য, শিক্ষা, চাকরি, বাসস্থান-এই ইন্টারনেট-সব কিছুই সমাজ বা রাষ্ট্রের উৎপাদন থেকে এসেছে। আমি নিজেও এই উৎপাদন ব্যাবস্থার অংশ-তার বাইরে আমার অস্তিত্বই নেই। সুতরাং এই উৎপাদন ব্যাবস্থাকে ক্ষতি করে, এমন কিছু করার স্বাধীনতা আমার থাকতে পারে না। এই উৎপাদন ব্যাবস্থাকে ক্ষতি না করে, সব কিছুই আমরা করতে পারি।
এই প্রসঙ্গে যেসব দম্পত্তি ইচ্ছা করে চাইল্ডলেস বাই চয়েস থাকেন বা সন্তান নিচ্ছেন না-তাদের স্বাধীনতার বিশ্লেষনে আসা যেতে পারে। এর অধিকার কি থাকা উচিত? কারন তারা এই উৎপাদন ব্যাবস্থার শরিক হয়েও, নিজেদের কর্তব্য করছেন না। লিব্যারালদের মতে, এই স্বাধীনতা থাকা উচিত পূর্ণাঙ্গ। এখন ভারত বা বাংলাদেশে দম্পতিরা এমন করলে, তাদের ট্যাক্স মকুব করা উচিত-কারন তারা জনসংখ্যা কমিয়ে রাষ্ট্রের সেবা করছেন। অন্যদিকে ইউরোপে এমন করলে, তাদের ওপর প্রচুর ট্যাক্স চাপানো উচিত। কারন সেখানে জনসংখ্যা হ্রাস হচ্ছে। বাস্তবে সেটাই হচ্ছে-ইউরোপে সন্তান না থাকলে প্রচুর ট্যাক্স দিতে হয়-স্বাধীনতা থাকলেও, পেনল্টি দিতে হয়। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে এই স্বাধীনতার ব্যাপারটা ভীষন ভাবে পোষ্ট-মডার্ণ। ধার্মিকদের মতন কোরান বা বাইবেলের ম্যানুয়াল ধরে এ খর্ব করা যায় না-আবার স্থান কাল পাত্র না বিবেচনা করে-এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। ভারতের মতন জন বহুল দেশে, মুসলিমদের জন্মহার খুবই বেশী-যে কারনে-তারা সন্তান ঠিক ঠাক মানুষ করতে পারেন না। এবং বর্তমানে ভারতীয় মুসলিমদের মধ্যে শিক্ষার হার ভারতের আদিবাসিদের থেকেও খারাপ। আমেরিকান মুসলিমদের মধ্যেও এই ধরনের গোঁড়া মুসলিম আছে-তবে তারা ব্যাতিক্রম। সেই জন্যে আমেরিকাতে মুসলিমরা , সাদা আমারিকানদের থেকেও ভাল করছে। কিন্ত ইউরোপ বা ভারতে তারা নিদারুন ভাবে পিছিয়ে। একই ধর্মের লোকেরা দুই দেশে দুই ধরনের পার্ফমান্স দিচ্ছে-কারন, ধর্মের আসলেই কোন ভূমিকা নেই। মূল কথা হল দেশ-কাল-পরিস্থিতি বুঝে লোকেরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কি না। সেটাই আসল কথা।
অর্থাৎ এই রক্ষনশীলতার ব্যাপারটা আমরা আমাদের সমাজের রিপ্রোডাক্টিভ সিস্টেমের ফিটনেসের জন্য উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। সেটাকে ত্যাগ করা বা গ্রহন করাটা-সম্পূর্ণ ভাবেই পরিস্থিতি নির্ভর সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত। সার্বজনীন সর্বকালীন ধর্ম বা উদারপন্থা-এর কোনটারই কোন বাস্তব অস্তিত্ব নেই। যেকারনে কোরান বা বাইবেল, বর্তমান মানুষের জীবনে অর্থহীন-ঠিক একই কারনে উদারনৈতিক চিন্তাধারা বা লিব্যারালিজমও অর্থহীন। কারন প্রতিটি পরিস্থিতি স্থান কাল পাত্র ভেদে আলাদা। তাদের জন্যে কোন সার্বজনীন, সর্বকালীন আইন বা গাইডেন্স থাকতে পারে না।
কিন্তু তাহলে রাষ্ট্রের আইন কি হবে? সেখানে ত এই পোষ্টমডার্ন দর্শন চলবে না। তাহলে আইনের বই এর সাইজ, বহুতল বাড়ির সাইজকে ছাড়িয়ে যাবে! সেখানে কিছু গাইডেন্স আনতেই হবে। অর্থাৎ কিছুটা এম্পিরিসিজম বা সমাজবিজ্ঞানের গবেষনাকে কাজে লাগিয়ে, রাষ্ট্রকে তার স্বার্থের জন্যে পজিশন নিতেই হবে। সামাজিক আইনগুলি থেকে ধর্মের বিসর্জন একান্ত ভাবেই দরকার। সেখানে বিজ্ঞানের গবেষনা আসুক। আমাদের উদ্দেশ্যত নাগরিক এবং রাষ্ট্রের মঙ্গল।সেখানে পাশ্চাত্যের আইন, শরিয়া আইন এসব না বলে, সমাজ বিজ্ঞানের গবেষনার ওপর ভিত্তি করে আইন আনা হৌক। আমেরিকাতে আস্তে আস্তে তাই হচ্ছে। গোটা বিশ্বের যেকোন উন্নত দেশেই তাই হচ্ছে আস্তে আস্তে। সেখানে আল্লার আইনের নামে এক অন্ধকারযুগকে আনার কোন মানে নেই। অথচ মুসলীম বিশ্বে এই ভাবেই পুরুষের হাতে নিগৃহীত হচ্ছে অসংখ্য নারী। বিয়ার খাওয়ার জন্য যদি কোন নারীকে বেত্রাঘাত মারা হয়-তাহলে মানতেই হবে, মেয়েদের জন্যে শরিয়া আইনের চেয়ে জঙ্গলে গিয়ে বাস করা ভাল। সেখানে স্বাধীনতাটুকুত আছে। ভারতে হিন্দু পুরুষের হাতেও একই ব্যাপার আগে হত-কিন্ত রাষ্ট্র যেহেতু নারী পক্ষে, গত দুই দশকে শহরের কিন্ত অনেক পরিবর্তন এসেছে। গ্রামে অবশ্য এসব প্রগতি অনেক দূর। মৌলবাদিরা পাশ্চাত্যের আইন, পাশ্চাত্যের নগ্ন নারী-নারীর যৌনতার স্বেচ্ছাচারিতা ইত্যাদি ধুয়ো তুলে, শরিয়া আইনকে টেকাতে চাই। কিন্ত বাস্তব সত্য হচ্ছে পাশ্চাত্যে আইন গুলি আস্তে আস্তে সমাজ বিজ্ঞান নির্ভর হচ্ছে। এটা ঠিকই নারী স্বাধীনতার সাথে সাথে নারীদের মা হওয়ার ইচ্ছা কমেছে। কিন্ত তাতে ধর্মের মতন অন্ধযুগকে ফেরাতে হবে কেন? রাশিয়ার মতন ইন্সেন্টিভ স্কীম চালু করলেই ত মিটে যায়। আবার এটাও দেখা গেছে, কিছু কিছু আমেরিকান পরিবার, নিজেদের স্বার্থের জন্যে ছেলে মেয়েদের যথেষ্ট যত্ন নিচ্ছেন না। ওবামার বাবা ওবামাকে ছেড়ে পালিয়েছিলেন। আমেরিকায় বাবা-মা ছেড়ে পালানো খুব সাধারন ব্যাপার। কিন্ত এই ব্যাপারে মিডিয়া খুব সরব এবং আইনও সেই সব বাবা মাদের কঠোর শাস্তি দিয়ে থাকে, যদি দোষী প্রমানিত হয়। এর জন্যে কি ধর্মের আইন লাগে? জীবনের একটা পরিস্কার উদ্দেশ্য থাকলেই এসব এমনিতেই আসে। ধর্মের আফিং খাইয়ে দিয়ে এইসব করানো অর্থহীন। তাতে সাইড এফেক্ট অনেক বেশী।
(৪)
যাইহোক এবার কিছু ব্যাক্তিগত সমস্যার কথায় আসি। আমাদের উপমহাদেশে নাস্তিক হিসাবে পরিবার পরিজনদের মধ্যে বেশ অসুবিধায় থাকি প্রায় সকলেই। কোন মাসিমা পুজোর প্রসাদ দিলে, আমি নাস্তিক, তাই প্রসাদ খাই না-এমন সাধারনত আমি বা কোন বোধ সম্পন্ন নাস্তিকই বলবে না-কারন আমরা তাকে আঘাত করতে চাই না। কোন ধার্মিক মুসলমান বন্ধু যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছে, তাদেরকেও নিশ্চয় বলা ঠিক না, আল্লা নেই, তুমি বোকামো করছ। হ্যা, সে যদি আল্লার সপক্ষে প্রমান দিতে চাই, আমি তাকে পরিস্কার ভাবেই গাধা বলব। কিন্ত সে যদি মানসিক শান্তির জন্যে বা তার নিত্য কাজের মধ্যে স্বস্তির জন্যে নামাজ পড়ে, তাকে যেচে গিয়ে গাধা নিশ্চয় আমরা কেওই বলি না। উচিত ও না। পূজোর ব্যাপারটাও তাই। তিথি নক্ষত্র মেনে অনেকে পুজো করেন-আমেরিকায় যে এতটা হিন্দু রয়েেন, সেই নিয়েও অনেকে গর্ব করেন। আমি হাঁসি। হ্যাঁ বা না বলি না। কি বলব? এসব অনর্থক তর্কে জড়ানো অর্থহীন। এত ধেড়ে বয়সে যাদের বুদ্ধি হয় নি, তার বুদ্ধি কোনদিন হবে বলে আমার মনে হয় না। সে যদি তার তিথি নক্ষত্র নিয়ে সুখে থাকে, থাকুক। সুখী থাকাটাই যখন জীবনের ধর্ম, তথন কেও বোকামো করে সুখে আছে না বুঝে সুখে আছে-তা দেখে কি হবে? শুধু তার সুখের কারনে অন্যের দুঃখ না হলেই হল।
তবে হ্যাঁ কেও যদি তার ধর্ম পৃথিবীর সেরা বলে গর্ব করে, আনন্দ পেয়ে থাকে, তাতেও আমার আপত্তি নেই। যতক্ষন সেই আনন্দ, ব্যাক্তিটি নিজের মনের মধ্যে রাখতে পারবেন। যখন সে নিজের ধর্ম সেরা-এইসব নিয়ে বলতে আসবে, তাকে পরিস্কার বলা উচিত, আপনার বিষ্টার গন্ধ শুঁকে আপনি সচ্চিদানন্দ হোন-সেই দুর্গন্ধ আর বেশী ছড়াবেন না, তাহলেই হল। আমার ধর্ম আপনার ধর্মের চেয়ে ভাল-এই ধরনের যুক্তিগুলোর ভিত্তি আমার বিষ্ঠা আপনার থেকে ভাল-এই স্তরের। এইসব অর্থহীন সময় নষ্ট না করে, ধর্ম বা বিজ্ঞান, বিষয় যাই হোক না কেন-তা কি করে আরো মানব কল্যানে লাগানো যায়, সেই নিয়েই চর্চা করা উচিত।
@বিপ্লব পাল,
ঢাকার প্রতি এত depressed কেন? ঢাকায় একদিনও থাকবেননা তা কি হয়? যদি প্লেনে আসেন তাহলে তো ঢাকাতেই নামতে হবে। আমার বাসায় দাওয়াত রইলো।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে ঢাকার বাইরে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থা সম্পর্কে আমার জ্ঞান একেবারেই সীমিত। তাই ঢাকার বাইরের ব্যাপারে আপনাকে সাহায্য করতে পারছিনা। আসলেই ছোটবেলা থেকেই ঢাকাতেই বড় হয়েছি তো। গ্রামগঞ্জের ব্যাপারে আমি এক্কেবারেই আনাড়ী। তবে ঢাকাতে এলে আমি আপনাকে গাইড করবো।
@তৃতীয় নয়ন, আরে না না কোন অনীহা না-আগে ঢাকা দেখেছি। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রান ত গ্রামেই-তাই না। আমি পশ্চিম বঙ্গে গেলেও কলকাতায় থাকি না দু একদিনের বেশী। ভারত বা বাংলাদেশকে চিনতে হলে, তার গ্রামে যেতেই হবে।
@বিপ্লব পাল,
আপনি নদীর বিরল সৌন্দর্য দেখতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রামে কিছু জনবিরল এলাকা আছে সেগুলতে যেতে পারেন। বান্দরবন, রাঙ্গামাটি এসব শহর থেকে নৌকা ভাড়া করে কয়েকদিনের জন্য বেরিয়ে যেতে পারেন পুরোপুরি ক্যাম্পিং ষ্টাইলে। নো বাথরুম, নো কিচেন নো বেডরুম। সবই নৌকোয় আর আশে পাশের জংগলে।
@আদিল মাহমুদ,
Yes, I very much do that in India and USA…But in USA it is always organized. Being back to nature in most natural way, is always a gift you enjoy..
একটা অফ বিট পোষ্ট করছি। পরের বছর জানুয়ারী বা ফেব্রুমাসে কয়েক দিনের জন্যে বাংলাদেশ ঘুরতে যেতে চাই। ঢাকা দেখার ইচ্ছে নেই-আমি বরিশাল, ময়মনসিংহ,নোয়াখালি-এই সব জায়গা গুলো ঘুরতে চাই। আরো দক্ষিনের দুর্গম নদী দ্বীপগুলোতে যেতে পারলে আরো ভাল লাগবে। আসলে আমাদের ইতিহাসের সাথে এই সব জায়গাগুলো এত জড়িয়ে গেছে, নিজের চোখে দেখার খুব ইচ্ছা আছে। ঢাকা থেকে গাড়ি ভারা করে বেড়িয়ে পড়লে সেটা কি সেফ হবে? নাকি ট্রেনে গিয়ে লোক্যালি গাড়ি ভাড়া করা ভাল? না কি নৌকা ছাড়া অনেক জায়গায় উপায় নেই?
@বিপ্লব পাল,
ধণবাদ আপনার আমাদের দেশের প্রতি আগ্রহের কারনে (আমাদের কথাটা আসলে রাজণৈতিক অর্থে, জাতিগত অর্থে এর কোন মানে নেই)। দূঃখজনকভাবে আমাদের দেশের পর্যটন অত্যন্ত দূর্বল, ভারতের তূলনায় কিছুই না। ঢাকা চিটাগাং এর বাইরে থাকার ব্যাবস্থাও খুব বাজে। পর্যটনের কিছু মোটেল আছে, সেগুলি আগে বুকিং দিলে ভাল।
আমি উত্তর আমেরিকায় গাড়ি চালাই প্রায় ১০ বছর, কিন্তু আমাদের দেশে চালাতে সাহস করব না। ঢাকা/চিটাগাঙ্গের বাইরে মনে হয় না গাড়ী রেন্ট পাবেন, গাড়ি রেন্ট ঢাকায় আছে খুব সীমিত আকারে, তাও মনে হয় ড্রাইভার সমেত করতে হয়। আপনাকেও তেমনি করতে হবে, ঢাকার বাইরে যেতে হলে আপনি তেমন গাড়ি রেন্ট করে যেতে পারেন, দিনে ৩-৫ হাজার টাকা মনে হয় লাগবে।
শস্তা উপায় হবে ট্রেন/বাসে গিয়ে রিক্সা, বেবী টেক্সী ভাড়া করা। বেবী টেক্সী (এখন মনে হয় সব সিএনজি) খুব ভাল উপায় হতে পারে, ট্রেন/বাস ষ্টপ থেকে সরাসরি ভাড়া পাবেন, দিন হিসেবে নিতে পারেন। তবে, এদের সাথে অনেক সময় প্রফেশনাল ছিনতাইকারীদের যোগ থাকে, এ ব্যাপারে খুব সাবধান। বুড়ো কিসিমের চালক ভাড়া করা মনে হয় কিছুটা সেফ।
শীতকালে বেশীরভাগ যায়গায় নৌকা চলে না। ময়মনসিং ঢাকা থেকে ট্রেনে ঘন্টা দুয়েক লাগে বাকীটা রিক্সা/সিএনজি তে কাভার করতে পারবেন।
নোয়াখালী ঘন্টা ৪ লাগবে, তবে চিটাগাং থেকে গেলে আরো কম সময়।
বরিশাল লঞ্ছে যেতে পারেন, সেটাই বেটার। তবে শীতকালে আমাদের নদী নালা বেশীরভাগই শুকনো থাকে, তাই নৌপথ বড় নদীগুলি ছাড়া বন্ধ।
@বিপ্লব পাল,
বিপ্লব দা, বরিশাল এলে শুধু আমাকে একবার জানাবেন। আপনার guidance এর পুরো দায়িত্ব আমার। আমি আপনাকে নদীর দেশের এমন সৌন্দর্যের সন্ধান দেব যে আপনি আর তাকে ছেড়ে ফিরে যেতে চাইবেন না।
@মিঠুন,
ভারতে আমার বাড়ির সামনে নদী-ঠিক এই নদীদের সন্ধানেই যেতে চাইছি, আদিল চাই ভয় দেখাচ্ছেন! ১৯৯৯ সালে যখন গিয়েছিলাম ঢাকায় তখন চারিদিকে শুধু জল সেপ্টেম্নর মাসে। উনি বলছেন শীত গ্রীষ্মে গেলে নদীগুলো দেখায় যাবে না-সবাই শুকিয়ে যায়। মানে নভেম্বর মাস ঘোরার জন্যে ঠিক হবে বোধ হয়।
@বিপ্লব পাল,
ঠিক ভয় না, সাবধান করছি আরকি। আপনি নদীর সৌন্দর্য দেখতে চাইলে আগষ্ট সেপ্টেমবর মনে হয় বেষ্ট। ওই সময় সবচেয়ে ভরা থাকে। তাহলে চাদপুর যেতে কিন্তু কোনভাবে ভুল করবেন না, ওখানে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা সব এক হয়ে সাগড়ে পড়ে। ঢাকা থেকে লঞ্চ আছে ডিরেক্ট যা বরিশাল খুলনাতেও যায়।
ধার্মিকের ও যুক্তি আছে। সেটাকে ধর্মীয় অস্তিত্ববাদ ( Theist existentialism) বলে.-সেটা হচ্ছে আমি ওই ভাবে ‘বেটার’ থাকি-আনন্দে থাকি। তাই যুক্তিবাদ কথাটা না বলে, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভংগী কথাটা ব্যাবহার করা ঠিক।
তবে তার পরেও যুক্তিটা মানা গেল না।
(১) আমেরিকাতে সব থেকে বেশী নবেল লরিয়েট এই মুহুর্তে। আমেরিকা বেশ ধার্মিক দেশ। যে দেশে মাত্র ৩০% লোক ডারউইনে বিশ্বাস করে-তাদের দেশেই সব বিজ্ঞান-একে কি বলবেন? ভারতে শিক্ষিত অংশের মধ্যে এত % ডারুইন বিরোধি পাবেন না।
(২) বৌদ্ধ দর্শন এবং ভারতীয় বিজ্ঞান একই সাথে শ্রেষ্ট অবস্থানে পৌছে ছিল।
আর্যভট্ট, বরাহমিহির এরা বিজ্ঞানী ছিলেন না? শুধু ডারউইন আর আইনস্টাইনই বিজ্ঞানী ছিলেন? আল জাবর বিজ্ঞানী ছিলেন না? ৭০০-১৩০০ শতাব্দিতে বিজ্ঞানের চর্চা আরবেই টিকে ছিল।
আরো ভাল করে ইতিহাস পড়ুন। দেখুন বিজ্ঞানের আবিস্কারের সাথে ধর্মের না-সম্পর্ক্টা সাম্রাজ্যবাদের। আরব সাম্রাজ্যবাদ যখন শীর্ষে-তখন আরব বিজ্ঞান ও শীর্ষে। ইউরোপ এবং আমেরিকার জন্যেও এক কথা খাটে। সামরিক শক্তিতে বলিয়ান হতেই মূলত বিজ্ঞানের আবিস্কার এবং বিজ্ঞানীদের সামাজিক গুরুত্ব বাড়তে থাকে। আজকের আমেরিকাও তাই-৭০% বিজ্ঞানের গবেষনার পেছনে সামরিক উদ্ভাবনা কাজ করছে। ডারউইন বিগিউলে বেড়িয়েছিলেন-সেটা কোন ভারতীয়র পক্ষে সেদিন সম্ভব ছিল না। তাও ১৯১১-১৯৩০ সাল পর্যন্ত ভারতও বিজ্ঞান জগতে সিভি রমন, মেঘনাদ সাহা, সত্যেন বোস এবং জগদীশ চন্দ্রবোস কে আনতে পেরেছে। রেডিওর জন্যে মার্কনি নোবেল পেলেন, কিন্তু জগদীশ চন্দ্র পেলেন না। অথচ আজকে এটা ইতিহাস স্বীকৃত, জেসিবোসই প্রথম আবিস্বারক। মেগনাদ সাহা ৫ বার নমিনেটেড হয়েছেন-কিন্ত সব বারেই, তার জন্যে লবি করা জন্যে কেও ছিল না। সত্যেন বোসকে নোবেল না দিয়ে ভুল হয়েছে, সেটা শীর্ষ স্বানীয় সব পদার্থবিদই বলেছেন-ফের্মি, ডিরাকের সাথে তার এক সারিতেই বসার কথা। এর পর থেকে ভারতের বিজ্ঞান চর্চার মান নেমে গেছে-সেটা অন্য কথা। কিন্ত ওই কুড়ি বছর ভারতের বিজ্ঞান শত অসুবিধার মধ্যেও ইউরোপের সাথে পাল্লা দিয়েছে। এবং মনে রাখবেন সিভিরমন নিজে নাস্তিক বা নাস্তিক্য হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করলেও, নিজে ছিলেন চূড়ান্ত রক্ষনশীল। আব্দুস সালামও ধার্মিক ছিলেন। যদিও আজকের আমেরিকাতে বিজ্ঞানীদের মধ্যে অধিকাংশই নাস্তিক-তার মানে কিন্ত এই নয় কেও ধর্মে বিশ্বাস করলে বড় বিজ্ঞানী হতে পারবেন না। হিন্দু ধর্মে নাস্তিক্য ধর্মের স্বীকৃতি থাকায় ধর্মের সাথে ব্যাক্তিজীবনের সংঘাত হিন্দু বিজ্ঞানীদের মনে খুব একটা আসে না-বিশেষ করে যারা ছাপ রেখে যাওয়ার মতন কাজ করার ক্ষমতা রাখে। আমার প্রিয় একজন ভারতীয় অধ্যাপক, যাকে আমি নিজের দেখা সেরা পদার্থবিদ্যার শিক্ষক বলব-তিনিও নাস্তিক্য হিন্দু ধর্মের অনুসারী ছিলেন। এই দক্ষিন ভারতীয় শিক্ষকটি কপালের তিলক কেটে ক্লাস নিতেন-উনার মতন গভীর জ্ঞান খুব কম লোকেরই আছে! সত্যেন বোসের ছাত্র ছিলেন! সত্যেন বোস নিজেও নাস্তিক্য হিন্দুধর্মেরই অনুসারী ছিলেন। তবে মেঘনাদ সাহা যাকে বলে একদম মুক্তমনা স্টাইলের কট্ট্রর নাস্তিক মানুষ ছিলেন।
সুতরাং ধার্মিক হলেই ভাল বিজ্ঞানী হতে পারবেন না-সেটা ভুল ধারনা। ধর্ম বলতে তিনি কি বুঝছেন সেটাই গুরুত্বপূর্ন। ধর্ম=ধৃ+অনট-যা আমাদের ধরে রাখে। বা যে দর্শন আমাদের ধারন করে। কেও ঈশ্বর মানুক বা না মানুক, প্রথাগত দর্শন মানুক বা না মানুক, একটা ব্যক্তিগত দর্শন সবাইকে ধরে রাখে। সেটাই ধর্ম। আমার নিজস্ব দর্শন আছে বাঁচার জন্যে-সেটাই আমার ধর্ম। সেটা প্রথাগত ধর্ম হতে হবে-তার কোন মানে নেই। এবং এটাই বাস্তব ৬০০ কোটি লোকের আসলেই ৬০০ কোটি ধর্ম আছে।
জানতে ইচ্ছে করে, ধর্ম ঝেড়ে ফেলে দিলে বিশ্বের বা মানব জীবনের ক্ষতিটা কি হবে?
জঞ্জালযুক্ত বই পড়ে, চর্চা করে অনুসরণ করে জঞ্জালমুক্ত পৃথিবী কি আশা করা যায়? পর্ণোগ্রাফিক বই স্কুলে ঘরে, খোলা বাজারে থাকবে আর বেশ্বালয় থাকবেনা এ কি হয়?
যুক্তিবাদ আর ধর্মের সহাবস্থানের অপর নাম প্রতারণা। তাই যে দেশে জালালউদ্দিন রুমি বা রামকৃ্ষ্ন এর জন্ম সে দেশেই মানবতার বাণী নিভৃতে কাঁদে আর সে দেশে আজও একজন ডারউইন, গ্যালিলিও, আইন্সটাইন, কোপার্ণিকাসের জন্ম হয়নি।
উপাসনা ও তা থেকে প্রাপ্ত শান্তিতে যদি কোন আস্তিক তার কর্মকান্ড সীমাবদ্ধ রাখে তবে কারো কোন সমস্যা হবার কথা না। কিন্তু মানুষ দেয়াল না, তার উন্নতি ও অবনতি আছে। অনুশীলন থেকে উৎকর্ষতা জন্মায়। উপাসনাকারি ধীরে ধীরে আচার নিষ্ঠ হয়ে উঠে। তার পক্ষে স্বাধীন চিন্তা বজায় রাখা সম্ভব হয়ে উঠেনা।
জালালউদ্দিন রুমি বা রামকৃ্ষ্ন মধ্যে যে ভক্তি ও উদারতার প্রকাশ দেখা যায় তা আসলে সাম্প্রদায়িকতার গন্ডি ছাড়িয়ে বিশ্ব মানবতাবাদের জগতে উত্তরনের নমুনা।
যার পিছনের প্রেক্ষাপট তৈ্রি করে আবার যুক্তিবাদ।
এখন কথা হচ্ছে, ভক্তি ও যুক্তির মধ্যে কোনটা চর্চা করা ব্যাক্তি ও সমাজ জীবনে অধিকতর কাম্য হওয়া উচিৎ ? ভক্তের সবচেয়ে বড় সমস্য ও সুবিধা যে ,সে দেখে, কেবল মাত্র যেটুকু সে দেখতে চায়। আর যুক্তির সমস্যা ও সুবিধা হলো, তার দেখার কোন শেষ নেই। ফলে মানব সভ্যতার যা কিছু উন্নতি তা যুক্তিবাদের ফসল।
তাই সবাইকে বলবো একটি বিজ্ঞান মনস্ক ও যুক্তি নির্ভর সমাজ ব্যাবস্থা তৈ্রিতে সকলকে সাধ্যমত অবদান রাখতে কাজ করে যাওয়া উচিৎ।ভক্তিবাদ প্রচারের লোকের অভাব নেই।
@আতিক রাঢ়ী,
ধার্মিক হয়েও যে অন্যের ক্ষতি না করে বিশ্বমানবতার বানী ছড়ানো যায় সেটা জালালউদ্দিন রুমি বা রামকৃষ্ম দেখিয়ে গেছেন। তাই জঞ্জালমুক্ত বিশ্ব গড়তে অতি আবশ্যিকভাবে ধর্ম ঝেড়ে ফেলতে হবে তা মনে নয় ঠিক না।
তবে এর সাথে আরেকটি আবশ্যিক শর্ত থাকা উচিত, তাহল ধর্ম চর্চা হতে হবে সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তি পর্যায়ে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বা যেখানেই অন্য মতের মানুষের আনাগোনা হতে পারে সেসব যায়গায় যেমন বিদ্যালয়, অফিস আদালত এসব যায়গায় ধর্মের চর্চা (সে যতই বিশ্ব মানবতার উদাত বাণী বা ভাল ভাল কথা হোক না কেন) কড়াভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। এই নিয়মটা মোটামুটিভাবে মেনে চলার কারনেই পাশাত্য বিশ্বেও বেশীরভাগ মানুষ ধার্মিক হলেও ধর্মের আনুসংগিক সমস্যাগুলি অনেক কম।
@আতিক রাঢ়ী, এবং আদিল মাহমুদ
আপনারা সবাই একটু ভাবাবেগে অতিসরলীকরন করলেন।
রামকৃষ্ণ বা জালালুদ্দিনের ভক্তিভাব কিন্ত মানুষের মধ্যে বিবর্তনের পথেই এসেছে-কারন আমাদের সবার জীনেই আছে আলট্রুইজম-ওটা ত বাঁচার জন্যে ভীষন ভাবে দরকার।
তাহলে জীনের মধ্যে এত প্রেম গেল কোথায়? কেন হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা হয়?
আমাদের জীনের মধ্যে ভালবাসা আর হিংসা দুটোই আছে। এবং বাঁচার প্রয়োজনে দুটোর ব্যাবহার হয়।
ভেবে দেখুন। যদি এমন হত এক বাংলাদেশী মুসলমান কৃষকের ৩০ একর জমি আর দুজন ছেলে মেয়ে আছে, সেকি তার পাশের বাড়ির হিন্দু কৃষক, ধরা যাক তার ৫০ একর জমি আছে-তাকে ভারতে পাঠাতে বাধ্য করত? সমস্যা হচ্ছে ঐ মুসলিম কৃষকের ৩ বিঘা জমিও নেই-আর ১০টা ছেলে মেয়েকে প্রতিপালন করতে হয়। সর্বদাই তারা অর্ধভুক্ত-দিনে একবেলা খেয়ে থাকে। দাঙ্গা হলে, সে ওই হিন্দু কৃষককে তাড়িয়ে, ৫ বিঘা দখল করে-বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কিছু বাড়াতে পারে আর কি। ভালোবাসা আর হিংসা-দুটোই শ্রেফ সারভাইভাল গেম। আমি মশাই আমেরিকায় ভাল খাই দায় ঘুরে বেড়ায়-আমার পক্ষে –“সবাই মানুষ-হিংসা করোনা, ভালবাস এই সব বড় বড় কথা বলা এবং মানা সম্ভব”। কারন বেঁচে থাকার জন্যে আমাকে হিংসার সাহায্য নিতে হচ্ছে না। কিন্ত আমি যদি আজ আমেদাবাদের হকার হতাম, এবং দেখতাম দাঙ্গার ফলে কোন মুসলমান দোকানীর ঘর দখল করে ব্যাবসাটা আরেকটু ভালো করা সম্ভব, আমি হয়ত তাই করতাম। কারন পেটের জ্বালায় মানুষ মোটেও যুক্তিবাদি থাকে না-তখন যুক্তি একটাই সারভাইভাল।
ধর্ম মানুষকে কি শেখায় তাতে কিছু যায় আসে না। আসল বাস্তব হচ্ছে বিবর্তনের ফলে আমরা হিংসা এবং ভালবাসা দুটোরই উতরাধিকার পেয়েছি এবং চাই বা না চাই-বেঁচে থাকার জন্যে আমাদের এই উভয় নীতিরই প্রয়োগ করতে হয়। সুতরাং চাই এমন রাজনৈতিক সিস্টেম যেখানে সাপ্লাই থাকবে আমাদের ডিমান্ডের থেকে বেশী-এবং সবার হাতে তা ঠিক ঠাক পৌছানোরও দরকার।
মুসলিম দেশগুলিতে হিংসা এবং র্যাডিকালিজমের উত্থানের পেছনে ধর্মের চেয়েও আমি জনসংখ্যার বর্ধিত চাপকেই দায়ি করব বেশী। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্থানে ধর্মীয় দাঙ্গার মূল কারন, বেঁচে থাকার রসদের অপ্রতুলতা-জনসংখ্যার অত্যাধিক বৃদ্ধি।
আমেরিকাতে আমরা সাদাদের চেয়ে অনেক বেশী উপায় করি-তাদের থেকে ভাল জায়গায় থাকিও। সেই জন্যে কি নিম্ন মধ্যবিত্ত সাদা চামরার লোকেরা আমাদের প্রতি হিংসাত্মক আচরন করবে? মোটেও না। কারন ২৫০০ ক্যলোরি খাবার আর সেক্স পেতে তাকে কোন কষ্ট করতে হয় না। এটাই বাংলাদেশে হয় না। ওখানে হিন্দুরা একটু ভাল করলে, মুসলিমরা হিংসাত্মক হতেই পারে-ধর্মের জন্যে ঠিক না-ওটা ওপরের কারন-জাস্ট এই ভেবে যে ওরা আমাদের রিসোর্স কেড়ে নিচ্ছে। বেসিক শ্রেনী দ্বন্দ। সেটাই ধর্মীয় দাঙ্গার রূপ নিয়ে থাকে।
@বিপ্লব পাল,
আপনার কথায় কঠিন যুক্তি আছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামা আসলেই বাধানো হয় কোন কায়েমি স্বার্থ হাসিলের জন্যই। উন্নত বিশ্বে তাই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানো এত সহজ নয়। তাই আমাদের দেশের সাথে পাশ্চাত্য বিশ্বের তূলনা আসলেই অনেকটা অসার। তারপরেও অবশ্যই বলতে হবে যে পাশ্চাত্যে যদি মানুষের ধর্মীয় পরিচয় এত বড় করে দেখা হত তবে নিশ্চিতই জীবন এত সহজ হত না। বিশেষ করে রাষ্ট্র কোন ধর্মের স্পনসর হলে অবস্থার অবনতি হবে জ়িপি হারে।
তবে যে বেটা কোন সংখ্যালঘুর সম্পত্তি মেরে খাবার তাল করে সে অন্য যেকোন ছল চাতূরী করেই মনে হয় তা করবে। এক্ষেত্রে সহজ উপায় ধর্ম। যেমনি যে স্ত্রীকে পেটায় শরীয়তি আইনের দোহায় দিয়ে সেকি শরিয়া না থাকলে নেহায়েত ভাল মানুষ হয়ে যেত? মনে হয় না। আমি জাষ্টিফাই করছি না, শুধু সাধারণ ভাবনায় যা আসে বলছি।
তবে যাই বলেন সাম্প্রদায়িক সমস্যা যে শুধু সম্পত্তির লোভ থেকে হয় তা মোটেও নয়। বাবড়ি মসজিদ ভাংগতে যে হাজার হাজার হিন্দু জড় হয়েছিল তারা নিশ্চয়ই সবাই সম্পত্তি হাত করতে যায়নি। তাদের মতে কোন আদর্শ প্রতিষ্ঠার স্বার্থেই তারা জড় হয়েছিল। বলতে পারেন যে স্বার্থবাদী নেতারা তাদের ব্রেনওয়াশ করেছিল, তবে এরাও নেহায়েত সাধু নয়। পাশ্চাত্য বিশ্বে এভাবে মানুষের ব্রেনঅয়াশ মনে হয় না এত সহজ, কারন ধর্মের বিষদাত সেখানে গজাতেই দেওয়া হয় না।
@আদিল মাহমুদ,
দুটো কারনে সহমত না
(১) গুজরাত ভারতের ধনীতম প্রদেশ হওয়া সত্ত্বেও ওখানে দাঙ্গা বেশী-তাই মনে হতে পারে, এটা ধর্মগত তফাত। কিন্ত সেটা ঠিক না। মুসলিমরা আমেদাবাদ এবং সুরাটের প্রাইম স্পটগুলোর আদি বাসিন্দা-কারন এগুলো মুঘল শহর ছিল এককালে। এখন রিয়াল এস্টেটের ওখানে আকাশ ছোয়া দাম। বাংলাদেশের হিন্দুদের যেমন করে কম দামে সম্পত্তি বেচে ভারতে আসতে হয় ওখানেও সেই ভাবে দাঙ্গার ছায়া ফেলা হচ্ছে, যাতে করে মুসলিমরা তাদের চোদ্দপুরুষের সম্পত্তি ফেলে পালাতে বাধ্য হয়।
(২) ভারতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের গনরাগের কারন হল-সেই বস্তবাদি। অধিকাংশ মুসলিমই গরীব প্রান্তিক শ্রমিক-তাদের ধর্মের বিরুদ্ধে আবার রাগ কেন? না শুধু ধর্ম না। এখানে ব্যাপারটা হচ্ছে অধিকাংশ ভারতীয় মুসলিমরাই ৫-১০ জন ভাইবোনের সাথে জীবন যুদ্ধ করতে করতে বড় হয়েছে-কঠিন আর্থ সামাজিক কারনের জন্যে, তাদের অধিকাংশই অপরাধি জীবনে ঢুকেছে। ভারতের ২০% মুসলমান কোন কোন রাজ্যে ৭০% অপরাধী। এবার ভারতে হিন্দুরাও ত গরীব। ফলে তাদের মনে একটা ভয় ঢোকানো এবং দেখানোও খুব সহজ মুসলমানরা তাদের সম্পত্তি এবং ব্যাবসার দখল নেবে আস্তে আস্তে কারন তাদের দ্রুত হারে বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে। এবং মুসলমানরাও ত তাদের ধার্মিক পরিচয়ে এত মশগুল, যে, এই ধারনাকে তারা নিজেদের ব্যাবহার দিয়ে আরো প্রশয় দিয়ে থাকে। ফলে এখন গোটা দেশটাই আগুনের ওপর আছে। কংগ্রেস যদ্দিন ক্ষমতাই আছে কিছু হবে না। বিজেপি একক ক্ষমতা হাতে পেলে, কি হবে কিছু বলা যাচ্ছে না।
@বিপ্লব পাল,
আপনার ১ নং পয়েন্ট নিয়ে আপনারই একটা লেখা আগে পড়েছিলাম।
তবে ২নং পয়েন্টেঃ
ভারতে মোসলমানরা ক্রাইম বেশী করে এমন কোন ষ্ট্যাটিষ্টিক্যাল ট্রেন্ড আছে?
ভারতের মোসলমানরা খারাপ অবস্থায় আছে এটা জানি, তবে ভারতীয় কিছু মোসলমানদের মতে এর কারন ভয়াবহ রেসিজম। আমাদের দেশেরও প্রচলিত ধারনা সেটাই। আর কি করান হতে পারে?
ভারতে মোসলমানরা কেমন আছে এটা আমার কাছে কিছুটা ধাধার মত লাগে। একদিকে কয়েকজন মোসলমান প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী মিনিষ্টার…।আরেকদিকে অন্যকিছু বিপরীত ভয়াবাহ উদাহরন।
গত বছর আমাদের একটা ডানপন্থী পত্রিকায় ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের আসল চেহারা বিষয়ক একটা লেখা পড়েছিলাম। তাতে একটা উদাহরন ছিল শাবানা আজমী নাকি মোসলমান বলেই বোম্বেতে বাড়ি পাচ্ছেন না। অবস্থা কি এতই খারাপ? এহেন সুপারষ্টারদের এই হাল হলে সাধারণ মোসলমানদের কি হয়?
http://sheddy73.wordpress.com/2008/08/18/racism-against-muslim-actors-in-india/
http://www.india.com/entertainment/movies/was_emraan_hashmi_a_victim_racism_5679
@আদিল মাহমুদ, সাবানা আজমীর ঘটনাটা সত্য। ভারতে হিন্দু-মুসলমানরা একই কমিনিউটিতে থাকে না। প্রফেশনাল মুসলিমদের সাথে হিন্দুদের কোন পার্থক্য নেই ভারতে-ধর্ম বা সংস্কার কোন কিছুতেই না। সবাই সেই বলিউডি আর ক্রিকেট কালচার এ মগ্ন-ক্রিকেট , বলিউড আর জব চেঞ্জ করা ভারতের আধুনিক মিডল ক্লাসের ধর্ম। এরা কুসংস্কারাচ্ছন্ন সবাই ষোলআনা। তবে বাকী গরীব মুসলিমদের কে শোষন করে না কে? রাষ্ট্র, রাজনীতিবিদ, তাদের নিজের ধর্মের বড়লোক-সবাই। শোষন এবং বঞ্চনার ক্ষেত্রে ধর্ম আনা হাস্যকর। আসলে ধর্মটা উপসর্গ মাত্র। শুধুত ধর্মে মানুষে আলাদা হয় না-ভাষা বা অনেক কিছুতেই আলাদা হয়। লিমিটেড রিসোর্স থাকলে সেটাকেই কাজে লাগানো হয়।
মুসলিমদের মধ্যে বেশী অপরাধের হারের লিস্ট স্যাচার কমিটির রিপোর্টে ছিল।
http://www.faithfreedom.org/2009/05/02/sachar-committee-report-uncovered-backwardness-of-indias-muslims-part-5/
আগন্তক
অনেক ধন্যবাদ। হিন্দুদের মধ্যেও রেসিজম পুরোমাত্রায় আছে-তবে ওরা আড়ালে আবডালে করে। ঘরের মধ্যে বলে। বাংলাদেশের মুসলমানদের অনেকেই সেই চক্ষুলজ্জাটুকুরও বালাই রাখে না।
আসলে যারা নিজেদের হিন্দু বা মুসলমান ভাবে, তাদের দুটো গোত্র-ধান্ধাবাজ নইলে অজ্ঞ বা মূর্খ। এটা আমি প্রকাশ্যেই বলি। আমরা সবাই মানুষ এই কথাটার মশাল বাতিকা চারিদিকে ছড়িয়ে দিতে হবে। এই নিয়ে আমার একটা ইউ টিউব ছিল
httpv://www.youtube.com/watch?v=auCq6ThgwN0
আদিল মাহমুদ এবং আগন্তুকের কাছ থেকে বাংলাদেশে হিন্দুদের বঞ্চনার কাহিনী পড়ে খুব কষ্ট পেলাম। যদিও আমি নিজেও বাংলাদেশে থাকি কিন্তু এসব বিভৎস সাম্প্রদায়িকতার কাহিনী কতটুকুই বা আমাদের কানে আসে? এসব শুনে মাঝে মাঝে নিজের দেশের মানুষের উপর চরম ক্ষোভ হয়। ভাবতে অবাক লাগে যে এখনো এই সমাজে এই পরিমানে সাম্প্রদায়িকতা থাকতে পারে।
বলা হয় বাংলাদেশের মানুষ নাকি খুব অসাম্প্রদায়িক। এই কি তার নমুনা? ঈদ আর দূর্গাপুজা পাশাপাশি পালিত হলেই দেশ অসাম্প্রদায়িক হয়ে যায় না। সত্যি সত্যিই যদি অসাম্প্রদায়িক কোন মানসিকতা আমরা অর্জন করতে না পারি তাহলে কেন মিছি মিছি নিজেদের অসাম্প্রদায়িক বলে আস্ফালন করা দরকার? কেন এই ভন্ডামি?
আসলে মধ্যপ্রাচ্য অথবা আফগানস্তান, পাকিস্তানের মুসলমানদের থেকে বাংলাদেশের মুসলমানরা গোঁড়ামী এবং ধর্মান্ধতায় খুব একটা পিছিয়ে নাই।
@তৃতীয় নয়ন,
আমি যেসব বলেছি সেগুলিকে কেউ মনে হয় আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িকতা বলে মনে করবে না। সাম্প্রদায়িকতার সংজ্ঞা বেশীরভাগ মানুষের কাছে মানে হল বাবড়ি মসজিদ বা গুজরাট টাইপের দাঙ্গা। সেজন্য সাম্প্রদায়িক সমস্যা ভারতের যতটা না চোখে পড়ে আমাদেরগুলি পড়ে না। আমাদের দেশে আসলেই দাঙ্গা হয় না, হলে হয় একচেটিয়া অত্যাচার।
সাম্প্রদায়িকতা নেই কোনদিন বলা যাবে? যেদিন মানুষের ধর্মীয় পরিচয় গৌণ হয়ে যাবে সেদিন, যেদিন সংখ্যালঘু বলে কেউ থাকবে না সেদিন।
@আদিল মাহমুদ,
একমত। ধর্মের উচ্ছেদ না হলে, সাম্প্রদায়িকতা যাবে না।
ইতিমধ্যে কয়েক রাউন্ড তীব্র বকুনির স্বীকার হলাম এই সত্যগুলো লেখার জন্যে।মা-বাবাকে না বললেই হত।তাঁরা ভয়ে আছেন কারো রোষে পড়ি নাকি!আমিও ভয় পাই তাদের কথা ভেবে।তাই ছদ্মনাম! নইলে শিবির ইতিমধ্যে তিনবার আমায় হত্যার হুমকি দিয়েছে!
ভাইজানেরা মুক্তমনার নিরাপত্তার ব্যবস্থা কি?মনে রাখবেন আমাদের প্রতিপক্ষ কিন্তু খালি তর্ক করে না,বোমাও মারে!! 😉
হ্যা-এই অস্বাভাবিক ব্যাপারটা আমি ও লক্ষ্য করেছি। বাংলাদেশের হিন্দুরা কি এতই ভয়ে থাকে যে তাদের ব্যাবহার একদম মেয়েলী হয়ে গিয়েছে?
সংখ্যালঘু এবং গুরুর ব্যাপারটা আপেক্ষিক। আমেরিকাতে আমরাত সংখ্যালঘু-তবুও কখনোই সেটা এখানে আমরা অনুভব করি না। অবশ্য আজকাল এখানে যা অবস্থা -চাকরী, এপার্টমেন্ট, কন্ডো /টাউন হাউস কম্পপ্লেক্স, পার্ক-সর্বত্রই দেখি ভারতীয়রা সংখ্যাগুরু। তাই সংখ্যালঘুদের মানসিক অবস্থা কেমন হয়-জানার সৌভাগ্য হল না।
বাংলাদেশী হিন্দুরাই এই ব্যাপারে সত্য তথ্য আমাদের জানাতে পাড়বে।
@বিপ্লব পাল,
আমি নিজেকে ‘হিন্দু’ বলি না তবে,হিন্দু উত্তরাধিকার আমার রক্তে আছে।বিবেকানন্দের লেখা পড়ে আমি প্রথাগত ধর্মে জলাঞ্জলি দিই ক্লাস সেভেন এ,আর রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতের সাথে যৌক্তিক আন্তরিকতা খুঁজে পেয়ে ধর্ম ব্যাপারটিকে তাকে তুলে দিই স্কুল ছাড়ার আগেই! অজ্ঞেয়বাদী জীবনের পদে পদে অত্যন্ত তিক্ত সব অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে।এবং এর প্রায় সবই ছিল আমার বাবা-মা’র ধর্ম-প্রীতির জন্য।
হ্যাঁ বাংলাদেশের হিন্দুরা রহস্যজনকভাবে অত্যধিক নম্র।এর কারণটা বোধহয় তসলিমাই ঠিক বলেছিলেন…
বাবরি মসজিদ যখন ভাঙ্গা হয় আমি তখন শিশু।দেখেছি বাবা-মা’র চোখে অন্ধকার।দিনরাত আশঙ্কায় থাকতেন বাবা মা।স্কুলে যখন গেলাম ,অনেকেই বিব্রত করত ‘চাঁড়াল’ বলে,কারণ মামারা ‘সাহা’।তখনো ধর্ম ,জাত মানতাম।বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম বৈশ্য সাহা হওয়া সত্ত্বেও এই ‘মণ্ডল’ উপাধির মোড়লিপনা টিকিয়ে রাখতে ‘চাঁড়াল ‘ গাল খাওয়া কেন?উত্তরে বাবা বললেন,ভারতে চলে যেতে হলে এই টাইটেল থেকে কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে।অবস্থা তখন এতই খারাপ।আমি তখনকার কথা বলছি যখন আমারই শহরের মেয়ে এবং আমার বাবার জুনিয়র তসলিমার মুন্ডুর দাম নির্ধারিত হয়েছে।
না আমার বাবা ভারতে পালান নি।আমার দুই পিসি থাকা সত্বেও ভারতে একটি টাকাও বাবা পাচার করেননি।কোন হিন্দু ভারত-প্রীতি দেখালে আমার গা জ্বালা করে।কিন্তু আসলেই কি তারা অন্যায় করে?
তসলিমা তার ‘লজ্জা’ তে বৈষম্যের যে ছবি এঁকেছেন তা এক জ্বলন্ত সত্যি।ভারতে এ,পি,জে,আবুল কালাম রাষ্ট্রপতি হন।আর বাংলাদেশে স্বাস্থ্যবিভাগের শ্রেষ্ঠতম অফিসারদের মধ্যে একজন হয়েও শুধুমাত্র হিন্দু হবার ‘অপরাধে’ আমার বাবাকে ‘সিভিল সার্জন’ না করে সমপর্যায়ের ‘এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর’ করা হয়!কারণ একটা শহরের স্বাস্থ্যের সর্বময় ক্ষমতা একটা হিন্দুর হাতে দিতে পারত না বি,এন,পি-জামাত সরকার!বাবা বলেছিল যে,ওই সময় বাংলাদেশে একজনও হিন্দু সিভিল সার্জন ছিল না।যাহোক চাকরির শেষ পর্যায়ে বাবা ডিরেক্টর হয়েছেন।কিন্তু কোনদিন কি তিনি পারবেন এই বঞ্চনা ভুলে যেতে?
আমাদের শহরের বিখ্যাত গায়িকা মিতালি মুখার্জির ভাই মুসলিম বিয়ে করার পর তার ওপর মৌলবাদীদের হামলা হয়েছিল বলে মা’র কাছে শুনেছিলাম।শাহরুখ খান যেদিন পালিয়ে গৌরীকে বিয়ে করেছিলেন সেদিন তিনি আজকের ‘বাদশাহ’ খান হন নি।তিনি এতই দরিদ্র ছিলেন যে মায়ের জানাজার খরচটাও খুব কষ্টে যোগাড় করতে হয়েছিল তার।গৌরী ছিল সেনাকর্মকর্তার মেয়ে।
বাংলাদেশের কোন হতভাগ্য হিন্দু যুবক যদি কোন মুসলিম সেনাকর্মকর্তার মেয়ের সঙ্গে এহেন কীর্তি করে,তবে পরের দিনই তাঁর বুলেটে ঝাঁঝরা দেহ পাওয়া যাবে কোন ডাস্টবিনে।
আমি দুঃখিত যদি আমি একটুও আবেগপ্রবণ হয়ে থাকি।তবে কাঠখোট্টা যুক্তিবাদী মানুষ হিসেবে আমার বদনাম আছে।হিন্দু নামের জন্য আমিও অজস্রবার ‘মালাউন’ গাল খেয়েছি।আমি ‘নম্র’ ছিলাম না।তাই সেকেন্ডারি স্কুলে উঠে পালটা ‘যবন’ ডাকতে ছাড়তাম না।
ব্যক্তিগতভাবে অজ্ঞেয়বাদী হওয়া সত্ত্বেও ব্যাপারটা নিয়ে লিখলাম শুধু বিপ্লবদা’র জন্য।অন্যথায় আস্তিক্যবাদী হিন্দুধর্মকে আমি তীব্রভাবে ঘৃণা করি।
ইন্টারনেটের ভুতুড়ে আচরনের কারণ (যা মুলত গদাইলস্করী চালের ফলে উদ্ভুত) মাঝে মাঝে গলায় দড়ি দিতে ইচ্ছে করে।এডিট করতে পারছি না।কারণ পেজ আসছে না।ক্কোটেশন পড়বে শুধু তসলিমার লাইনে।
@আগন্তুক,
আপনার মন্তব্যটি ঠিক করে দেয়া হয়েছে।
কোটেশন উদ্ধৃত করার সময় অনেকেরই এখনো ভুল হচ্ছে। যারা এখনো পারছেন না, তারা আরেকবার নীচের লিঙ্কটি দেখে নিন –
উদ্ধৃতি দিবো কিভাবে?
এ ছাড়া দেখুন প্রায়শ জিজ্ঞাস্য বা সাহায্য পাতাটি।
@বিপ্লব পাল,
বাংলাদেশে নন-মুসলিম নাম ধারন করার কি জ্বালা তা আমি জানি, খুব ছোটবেলা থেকেই দেখেছি, হিন্দু হবার কাফফারা ত আরো ব্যাপক, তবে তখন মনে হয় ব্যাপারটাকে আসলে এনজয় করতাম। শুনলে আজব মনে হবে, তবে শিশু অবস্থায় মানুষের মধ্যে অনেক নিষ্ঠুরতা দেখা যায়। ক্লাসের দুয়েকজন হিন্দু সহপাঠীকে কতভাবেই না নাস্তানাবুদ করতাম সেই শিশুকাল থেকেই। শিশুদের মনোবিকাশ তো তার পারিপার্শিক থেকেই হয়। যে শিশুদের মাথায় ঢোকানো হয় হিন্দু মানেই নোংরা, আল্লাহর শত্র্ নিশ্চিত দোযখে যাবে সেই শিশুদের আর কি দোষ? ময়মুরুব্বীদের দেখেছি, এখনো দেখি কারো হিন্দু নাম শুনলেই কিভাবে প্রথমেই তিতা অষুধ খাবার পর মুখ বিকৃত করেন। আড়ালে জাতপাত তুলে গালিগালাজের তো কথাই নেই। আমাদের অঞ্চলে হিন্দুদের কোড নাম “ড্যান্ডা”, আমি জানি না এই নামেই উতস কি। তবে এখনো এই নাম মামা চাচাদের মাঝে চলে। মালাউন শব্দটা শুনেছি অনেক পরে।
আমি কিন্তু গ্রাম অঞ্চলে থাকিনি কখনোই, সারা জীবন ঢাকায় মানুষ, পড়েছি দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে। স্কুলের বাধ্যতামূলক ইসলাম ধর্ম ক্লাসে বেচারাদের যে কি বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হত সে এক করূন কাহিনী। দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ও দেখেছি হিন্দু সহপাঠিরা কোনভাবেই আমাদের সাথে সহজ হতে পারে না, তাদের হোষ্টেল আলাদা, চলাফেরাও নিজেদের মধ্যে।
যেই ছেলে শিশুকাল থেকেই এমন পরিবেশে বড় হয় তার মানসিক বিকাশ আর কেমন হবে? সর্বক্ষনিক একটা অজানা ভীতির মধ্যে থাকবে।
ভারতীয়দের মধ্যে এই মানসিকতা তূলনামুলকভাবে কম থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কারন ভারতে আধুনিক শিক্ষার ছাপ পড়েছে আমাদের থেকে অনেক আগে। টোল তুলে আধুনিক বিদ্যালয় না করলে যে এগুনো যাবে না তা তারা বুঝেছে ১০০ বছর আগে, আর আমরা এখনো উত্তরত্তর মাদ্রাসা শিক্ষায় বাজেট বাড়িয়ে চলেছি।
নাহ লেখাটা পড়ে মজা পেলাম না। লেখার ধার কমে যাচ্ছে বিপ্লব দা।
সমস্ত প্রবন্ধটি পড়ে শিরোনাম থেকে উপসংহার উদ্ধার করতে পারি নাই। মনে হয় প্রশ্নটি ছিল, একজন মানুষ প্রথমে আস্থিক তারপর নাস্থিক হয়ে আবার আস্থিকে কেন ফিরে যায়? একটি কথা মনে রাখা ভাল, নাস্থিক আর অবিশ্বাসী শব্দদুটোর অর্থ সমান নয়। এখানে যে অর্থে নাস্থিক শব্দ ব্যবহার হয়েছে সে অর্থে একজন মানুষ একইসাথে বিশ্বাসী আবার নাস্থিকও হতে পারে। আমি ভুতে বিশ্বাস করি কিন্তু আল্লাহ বিশ্বাস করিনা। ভুতের অস্থিত্বে বিশ্বাস করেও আমি নাস্থিক। দুনুটাই অন্ধ বিশ্বাস, এর জন্যে যুক্তি-প্রমান বা বস্তুবাদী জ্ঞানের কোন প্রয়োজন হয়না। পক্ষান্তরে অবিশ্বাসী হতে হলে কার্য-কারণ নির্ণয় বা বস্তুবাদী যুক্তিবাদী জ্ঞান অর্জন অত্যাবশ্যকীয়। বার্ধক্যতা, মানসিক বা দৈহিক দূর্বলতা, মৃত্যু বা পরকালের ভয় এর কোনটিই নাস্থিক্য থেকে আস্থিক্যে ফিরে যাওয়ার কারণ নয়। একজন মানুষ প্রথমে আস্থিক তারপর নাস্থিক হয়ে আবার আস্থিকে ফিরে যায় কারণ সে উল্লেখিত জ্ঞান অর্জন করে নাস্থিক হয়নি অর্থাৎ সে কোনদিনই (সংশয়বাদী/অবিশ্বাসী) নাস্থিক ছিলনা। সংশয়বাদী/ অবিশ্বাসী কোনদিন আস্থিক হতে পারেনা বা আস্থিক্যে ফিরে যেতে পারেনা।
ন্যুড ক্লাব ও তার সুপ্রভাব/ কুপ্রভাব নিয়ে যে শালীনতার-ভদ্রতার প্রশ্ন উঠেছে, কালের বিবর্তনে সুদুর ভবিষ্যতে প্রশ্নটিই অবান্তর-হাস্যকর হয়ে যাবে।
@Akash Malik,
@Akash Malik,
কালের বিবর্তনে এই মানব গোষ্ঠি বা ধর্ম ও হারিয়ে যাবে। আল্লা যাবে আস্তাকুড়ে। সেসব সত্য। কিন্ত সাম্প্রতীক অতীতে তাকালে দেখা যায় বর্তমানে আমেরিকান মিউনিসিপালিটিগুলি নুড ক্লাবের ছাড়পত্র দিতে চাইছে না। শহরের বাইরে গিয়ে ক্লাব করতে বলছে। এটা ঠিকই ফ্যামিলি ব্যাপারটাই হয়ত আগামী ২০০ বছরের মধ্যে ইতিহাস হয়ে যাবে। ছেলে মেয়েরা কম্যুনিটিতে মানুষ হবে-বাবা মায়ের কাছে না। হতে অনেক কিছু পারে। সেসব আমরা জানি না। আমরা শুধু আমাদের কালে সমাজ ও সভ্যতাকে কি করে আরো উন্নত করা যায় সেই বিতর্কে নিয়োজিত।
লোকের নাস্তিকতা থেকে আস্তিকতায় ফেরার একটা মূল কারন হচ্ছে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানসিক দুর্বলতাও বাড়ে-আসলে নানান টানা পোড়েনের মধ্যে থেকে সে নিজেকে বোঝায় যে আল্লার নামে সব ছেড়ে দিয়ে কাজ করলেই, মনে বেশ শান্তি আসছে-ব্যার্থতার জন্যে নিজেকে দোষারোপ করতে হচ্ছে না। তাছাড়া পারিপার্শিক সমাজের সাথেও মিশতে সুবিধা- মিঠুন চক্রবর্ত্তী এই কারনে নাস্তিকতা থেকে পরম আস্তিকতায় ফিরে যান।
আসলে এরা কেওই বস্তুবাদি দর্শন পড়ে নাস্তিক হয় নি।
তাছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মৃত্যুর ভয়। মৃত্যুভয় জয় করলে, নাস্তিক হওয়া এবং থেকে যাওয়া খুবই সহজ। নিৎসের মতন মরনে কি যায় আসে, জীবন ক্ষনিকের এক্সিডেন্টাল বাতিকা-এই মর্মে কেও ঢুকলে, নাস্তিকতা থেকে কেও বেড়োয় না। সমস্যা হচ্ছে, নিৎসের মতন জীবনের উদ্দেশ্য অর্থহীন ভাবলে দৈন্যন্দিন জীবন পালন ও কঠিন হয়।
@Akash Malik,
১০০% সহমত পোষন করছি। :music:
ধন্যবাদ।
মেয়েদের পোষাক নিয়ে হিন্দুদের মধ্যে আস্তে আস্তে জড়তা কাটছে ভারতে-তবে মুসলিমদের মধ্যে বাড়ছে। আগে বোরখা পড়া মেয়ে আমাদের ওদিকে ছিল বিরল প্রজাতি-এখন তারাই প্রধান উপজাতি। আবার জ্যাঠামশাইদের প্রতিবাদ ও আসছে-স্কুলে দিদিমনিদের সালোওয়ার পড়া নিয়ে বেশ কিছু ঝামেলা হয়েছে, যা পেপারে এসেছে। এমনকি মিশনের স্কুলগুলোতে সাদা কাপড়ের যায়গায় রঙীন শাড়ি পড়া নিয়েও আগের বছরই বিতর্ক হয়েছে। এগুলো ভাল লক্ষন। গনতন্ত্রে বিতর্ক চলুক।
তবে আমাদের দিকের এই রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলগুলো হচ্ছে সব থেকে গোঁড়া-ভাবা যায়-আমাদের সপ্তাহে ছদিন মেয়েদের মুখ দর্শন বন্ধ ছিল। টিভিতে খেলা আর সংবাদ ছাড়া অন্যকিছু দেখার অনুমতি নেই! তাও ১৬-১৮ বছর বয়সে। যেহেতু এগুলো সব থেকে ভাল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল-সেহেতু ক্যারিয়ারের জন্যে না পড়ে উপায়ও থাকে না। ফলে আমার বন্ধুদের মধ্যে একটা বড় অংশই ধর্মের এইসব বাজে দিকের সাথে খুব ভালো করেই পরিচিত। আবার দর্শন চর্চা ওখানে ভাল রকম হত-তাই সেই ভাবে পুরোপুরি কেও ধর্মমুক্তও হতে পারে নি। কারন ওই ট্রেনিংগুলো জীবনে কাজে আসে।
@ আদিল মাহমুদ ,
তর্ক হতে পারে কোনটা তবে ঠিক? পাশ্চাত্য মত অতি উদারতা নাকি অতি রক্ষনশীলতা? আমার মতে দুয়ের মাঝামাঝি। তবে এই লাইন নির্নয় করা সহজ নয়।
আসলে এর কোন সমাধান নেই। এই বিতর্ক অনন্তকাল ধরে চলতেই থাকবে। এই নিয়ে ভাবাই অর্থহীন। আপনি ঠিকই বলেছেন এই লাইন নির্ণয় করা সহজ নয়।
@ বিপ্লব পাল,
আমিও ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত কো এডুকেশনের পড়লেও হাইস্কুল এবং কলেজ পুরা বয়েজ । যার ফলে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আমারো আপনার মত সমস্যা হচ্ছে। আমি যতই সহজ হওয়ার চেষ্টা করি না কেন, ছোটবেলা থেকে মেয়েদের সাথে একেবারেই না মেশার কারণে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অনেক মেয়ের মধ্যে পরে আমিও মাঝে মাঝে অস্বস্তি বোধ করি।
এখনো বাংলাদেশের সমাজে ছেলেমেয়ে বন্ধুত্ব নিয়ে সংস্কার রয়েছে। ভাবতে অবাক লাগে। বেশীরভাগ অভিভাবক, পিতামাতাই এখনো বিপরীত লিঙ্গের সাথে বন্ধুত্ব মেনে নিতে পারেনা। আমি বুঝিনা এর কারণ কি। শোনা যায় এখন যুগটা নাকি খুব আধুনিক। নতুন প্রজন্ম বিপরীত লিঙ্গের সাথে বন্ধুত্ব করছে। অথচ এই নতুন প্রজন্মেরই অনেকের মধ্যেই যখন তাদের বাড়িতে বিপরীত লিঙ্গের বন্ধু নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে টাবু কাজ করতে দেখি তখন আমি বিস্মিত হই!
@তৃতীয় নয়ন,
এই ব্যালেন্স লাইন খোজা আসলেই অত্যন্ত কঠিন; এটা শেষ পর্যন্ত অনেকটা ব্যক্তিগত রূচি যা যার যার কালচার বা ধর্ম দ্বারা চরম ভাবে প্রভাবিত তার উপর নির্ভর করে। দেশ, কাল ভেদে এই দৃষ্টিভংগীর আকাশ পাতাল পার্থক্য হবে। তাই ২০০ বছর পরে আমাদের দেশেও যে নাইট ক্লাব/ন্যুড বার পাশ্চাত্যের থেকেও আরো বেশী হবে না তেমন নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।
তাই আমাদের বাংগালীর চোখে আজ যা অশালীন পাশ্চাত্যের মানুষের কাছে তা অত্যন্ত স্বাভাবিক। মাত্র ৩ হজার বছর আগেও ভাই-বোনের বিয়ে ছিল খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। আজ আমাদের শুনলে কেমন মনে হয়? দক্ষিন ভারতে শুনেছি মামা এবং আপন ভাগ্নীর বিয়ে এখনো সামাজিক রেওয়াজ, আমাদের শুনলে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ন মনে হয় না?
তবে ভারতীয় বই পুস্তক পড়ে আমার নিশ্চিত ধারনা হয়েছে যে ছেলে-মেয়ের স্বাভাবিক মেলামেশা ভারতের সামগ্রীকভাবে তো বাংলাদেশ থেকে অনেক বেশী বটেই, এমনকি পশ্চীম বংগেও বেশী। তবে আমাদের দেশের এখনকার প্রজন্ম মনে হয় এদিক দিয়ে একটু ভাল অবস্থায় আছে।
ছেলে মেয়েদের স্বাভাবিক মেলামেশায় বাধা দেওয়ায় যে শুধু মেয়েদের সাথে মেলামেশায় জড়তা আসে তা নয়, এটার অন্য অনেক এফেক্ট ও আমার মনে হয় আছে যা আমরা সাদা চোখে দেখি না। এটা আসলে আমাদের মানসিতা পুর্ণ করার পথে একটা বাধা, যার কারনে আমাদের দেশের বেশীরভাগ ছেলেময়ের ম্যাচুওরিটি আসতে দেরী হয়।
ঠিক একথাটিই আমি বলতে চাইছি।
শুধুমাত্র পোষাকের জন্য মানূষ নষ্ট হয়ে যায় এমন উদ্ভট ধারনা আমার বহু আগেই ভেঙ্গেছে।
আমাদের দেশে অতি রক্ষনশীলতার নামে ছেলে মেয়েদের স্বাভাবিক মেলামেশারই বলতে গেলে পথ নেই। আমি নিজে ১-১০ পর্যন্ত কো-এডে পড়েছি, এই দীর্ঘ ১০ বছর জীবনে মনে হয় হাতে গোণা দুয়েকবার সহপাঠিনীদের সাথে ভাব বাচ্যে হা/না গোছের কথা হয়েছে। তাতে কি মানুষ সত চরিত্রবান হচ্ছে? মোটেও না। ফলাফল হল অধিকাংশ ছেলের প্রথম যৌন অভিজ্ঞতা হয় হয় কাজিন না হয় বাড়ির ঝি চাকরের সাথে।
তর্ক হতে পারে কোনটা তবে ঠিক? পাশ্চাত্য মত অতি উদারতা নাকি অতি রক্ষনশীলতা? আমার মতে দুয়ের মাঝামাঝি। তবে এই লাইন নির্নয় করা সহজ নয়।
@আদিল মাহমুদ,
আর এটা নিয়ে লিখতে গিয়েই তসলিমা ভিলেন হয়ে গেলেন। নিকটাত্মীয় বা পারিবারিক বন্ধুদের হাতে মলেস্টেড হয় নি এমন মেয়ে বাংলাদেশে বা ভারতে বিরল। আমেরিকাও অবশ্য কম যায় না। কিন্ত এখানে ঘটনা প্রকাশিত হয়, দোষিরা অনেক ক্ষেত্রেই শাস্তি পায়।
আমি বয়েজ স্কুলে পড়েছি আগাগোড়া ৫-১২। রামকৃষ্ণ মিশনের হোস্টেল চত্তরে সোম-শনি পর্যন্ত মেয়েদের প্রবেশ পর্যন্ত নিশিদ্ধ ছিল। আই আই টিতে গিয়ে বান্ধবীদের সাথে মিশতে সমস্যা হত। এটা খুবই অস্বাভাবিক জীবন। আমাদের ধ্যান করে কামনা প্রশমিত করার উপদেশ দেওয়া হত। সেটা করা যায় ঠিকই-কিন্ত তা অস্বাভাবিক জীবনের জন্ম দেয়।
@তৃতীয় নয়ন,
কানাডায় খুব সম্ভব ২০০৩ সালে থেকে গে ম্যারেজ আইনসিদ্ধ করা হয়েছে, তখন আমেরিকায় এর কড়া প্রতিবাদের ঝড় উঠে, বুশ নিজেও এর বিরুদ্ধে কিছু কথা বলেছিলেন। তবে এখন শুনি যে কিছু ষ্টেট এ মনে হয় আইন আছে। কানাডা সাধারনভাবে এসব ব্যাপারে আমেরিকা থেকে অনেক এগিয়ে।
তবে কল্পিত মেয়ের ভবিষ্যত ক্যারিয়ার প্রশ্ন সম্ভবত আপনি ইচ্ছে করে এড়াচ্ছেন, এখনো বাবা নাহলেও এ প্রশ্নের জবাব আপনার কাছে মনে হয় না অজানা। বিশেষ করে আমরা যারা বাংলাদেশী তাদের পক্ষে নিজের মেয়ের অমন পেশা কল্পনা করে সহজভাবে মেনে নেওয়াটা হবে অত্যন্ত বিস্ময়কর। পাশাত্যের লোকেরাই চাইবে না, তো আমরা কোন ছার, আস্তিক নাস্তিকে তেমন কিছু ইতর বিশেষ হবে না।
@আদিল মাহমুদ,
পাশ্চাত্যে এসব পেশায় যারা আসছে তাদের বাবা-মা অথবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কি মতামত? তারা কি সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছে? কেউ কি স্বেচ্ছায় এই পেশায় আসে? আমি শুনেছি ন্যুড বারে কাজ করে অনেক স্বামী-স্ত্রী। হয়তো স্ত্রী স্ট্রীপার। আর স্বামী অন্য কোথাও কাজ করে। অথবা vice versa. এতে তাদের দাম্পত্য জীবনে কোন সমস্য হচ্ছে না। আমি শুধু কৌতুহলের কারণেই এসব জিজ্ঞাসা করছি। লিবারেল হওয়া মানেই যে সংগীকে ন্যুড বারে কাজ দিতে হবে তা বলছিনা।
এও শুনেছি পাশ্চাত্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার অনেক খরচ বলে অনেক মেয়ে দেহব্যবসা করে সেই খরচ মেটায়। এবং এসব মেয়ের মধ্যে বেশীরভাগই বিদেশী। আই মিন এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য আফ্রিকা থেকে আগত।
@তৃতীয় নয়ন,
>> খুব বেশী ভাবে বলে ত মনে হয় না। কিন্ত তারা ত আমাদের থেকে জীবন সংগ্রামে অনেক ব্যার্থ। তাদের ব্যার্থতা অনুসরন করতে যাব কি দুঃখে?
না-স্ট্রীপার হওয়ারজন্যে কোন বাবা-মা তার কন্যাকে তাজ্যকন্যা করেছে এমন জানা নেই। তবে সেই আমেরিকান সমাজ মেইন স্ট্রিম আমেরিকান সমাজ না।
হ্যা, সবাই স্বেচ্ছাতেই আসে। মুলত কলেজ ছাত্রীরাই এই কাজ করে-কাঁচাটাকার লোভে। এবং তাদের বয়ফ্রেন্ড বা স্বামী অনেক ক্ষেত্রেই আছে। কিন্ত আমেরিকান পুরুষদের জীবনে গড়ে ৮ টি বিয়ে (গড়ে ৫৬ জন যৌন সঙ্গীনী)-মেয়েদের ও কাছাকাছি স্টাটিস্টিক্স। আমি সেই জীবন চাইব কেন? আমি ত ওদের চেয়ে অনেক ভাল আছি-অনেক বেশী প্রোডাক্টিভ সমাজ এবং আমার জন্যে। বিবর্তন মানলে আমার সাফল্যের চাবিকাঠি আমি সারা জ়ীবন কজন মেয়ের সাথে শুয়েছি তা না-আমার সন্তানেরা মানুষ হল কি না-সেটাই আসল।
@তৃতীয় নয়ন,
আশা করি বিপ্লবের জবাব থেকে পাশাত্য বিশ্বের দৃষ্টিভংগী অনেকটা বুঝতে পেরেছেন।
আমি আরো পরিষ্কার বলি যে; এদেশে আপনি হয়ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আপনার পাশের ফ্ল্যাটের প্রতিবেশী হিসেবে আপনি হয়ত একজন মোটর মেকানিক বা এমনকি বাথরুম পরিষ্কারকারী মেঈডকেও মেনে নিবেন, কিন্তু যেই মাত্র জানবেন যে পাশের ফ্ল্যাটে কোন ন্যুড ড্যান্সার এসে ভাড়া নিয়েছে অই মাত্র আপনি সেখানে থেকে পালাবেন। ফলাফল? যারা এসব প্রফেশনে আছে তাদের আসলে ভদ্রস্হ কোন যায়গায় ঠাই হয় না। তাদের ছেলেমেয়েও থাকলেও অন্য দশটা মানুষের ছেলেমেয়ের মত ভাল স্কুল কলেজে পড়ার সূযোগ খুব কমই পায়।
পাশ্চাত্যে যতই চেচাই না কেন যে সব পেশাই সমান, ন্যুড ড্যান্সার ও প্রফেসর সবারই অধিকার সমান তার পরেও আকাশ পাতাল পার্থক্য আছে। সমান এই অর্থে যে রাষ্ট্রীয় বা আইনের চোখে এদেশে আসলেই পার্থক্য নেই। কোন সরকারী অফিসে, মলে বা হাসপাতালে এই দুইয়ের কেউ গেলে দুজনকেই একই লাইনে দাড়াতে হবে, অধ্যাপক সাহেব বা সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার বলে কোন স্যার স্যার বা হুজুর হুজুর নেই। কোন ন্যুড ড্যান্সার থানায় গিয়ে ধর্ষনের মামলা দিতে চাইলে পুলিশ কোনদিন হেসে খুন হবে না বা ধমকিয়ে বিদায় দেবে না, অন্য দশটা কেসের মতই সমান গুরুত্ত্ব দেবে। আমাদের দেশে যেমন অনেকে ধর্ষিতা হলে পুলিশ প্রমান করার চেষ্টা করে যে মেয়েটির আসলে চরিত্র খারাপ এখানে কোনদিন তেমন কিছু হবে না। প্রফেশনাল পতিতাও রেপকেস দিতে পারে। এখানেই আমার কাছে পাশ্চাত্য কালচারের মহত্ত্ব।
তবে এত কিছুর পরেও বলতে হবে যে আইনের চোখে সমান অধিকার ব্যাহারিক অর্থে পেলেও সামাজিকভাবে তারা আসলেই মূল সমাজ থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন থাকে। এদের থাকতে হয় শহরের কিছু চিহ্নিত কিছু এলাকায়, জীবন সঙ্গী হিসেবে কোন ভদ্রলোকে (মানে পেশায়) এদের খুব কমই বেছে নেবে, হয়ত আড়ালে আবডালে দুদিন মজা লুটবে। কোন ইঞ্জিনিয়ার বা ডাক্তারের জীবন সংগী/সংগিনী ন্যুড বা জ়েন্টেলম্যান ড্যান্সার এমন উদাহরন পাওয়া গেলেও তা তবে ব্যাতিক্রম, সাধারন নয়। এদের জীবন সংগী বা বন্ধুবান্ধব সাধারণত হয় অপরাধ জগতের সাথে সম্পর্কযুক্ত লোকজন। তাই মানুষজন এদের প্রতিবেশী হিসেবে না চাইলে তাদের যে খুব দোষ দেওয়া যায় তা নয়।
আমিও শুনেছি কলেজ় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু মেয়ে টিউশন ফি বা খরচ মেটাতে এই পেশা পার্ট টাইম হিসেবে বেছে নেয়। এসব পেশার সুবিধা হল পয়সা অনেক বেশী, সাধারণ পেশায় হয়ত ঘণ্টায় বড়জোর ১০ ডলার পাওয়া গেলে এসব পেশায় ৫০ ডলার কোন ব্যাপার না। আমি প্রথম আসার পরেই এক বন্ধু বলেছিল যে মেয়ে তোমার সাথে একই ক্লাসে আছে রাতে হয়ত দেখালে সেই তোমার বাড়ি আসছে ল্যাপ ড্যান্স দিতে। আমি দুবার আমেরিকা/কানাডা দুদেশেই বিশ্ববিদ্যালয়ে গেছি, কোনদিন মনে হয়নি আমার ক্লাসের কোন মেয়ে এসব পেশায় আছে। অবশ্য তার মানে এই না যে কেউ নেই। অবশ্যই আছে। তবে তার অন্যদিন হল এসব পেশায় একবার নামলে আবার ভদ্রপেশায় বা জীবনে ফিরে যাওয়াটা খুব কঠিন। এমন বহু কাহিনী শুনেছি।
আর এদেশে মনে হয় আমাদের দেশের মত ঘোষনা করে ত্যাজ্য পুত্র/কণ্যা করার রেওয়াজ নেই। বাবা মা মেয়ে ন্যুড ড্যান্সার হল বলে যেমন হয়ত খুশী হবে না তেমনি ঘরের দরজা তার জন্য সারা জীবনের জন্য বন্ধ হল তেমন ঘোষনাও দেবে না। এর মূল কারন এদেশের কালচারে ১৮ বছরের পর ছেলেময়েকে অনেকটা ভিন্ন সত্ত্বার ধরে নেওয়া হয়। যেহেতু ব্যক্তি স্বাধীনতাকে অনেক বেশী দাম দেওয়া হয় তাই এ নিয়ে কেউ আর বাড়াবাড়ি করে না। বাবা মা ছেলেয়ের সম্পর্ক তখন হয়ে যায় অনেকটা ফরমাল।
খুবই চিন্তা জাগানিয়ে লেখা যা আস্তিক নাস্তিক সবারই বোঝা উচিত।
নাস্তিক কিছু মানুষ কেন বুড়ো বয়সে এসে আবার আস্তিক হয়ে যায় এটা জানা মনে হয় খুব কঠিন কিছু না। কারন মানসিক দুর্বলতা। মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীর মন দুইই দূর্বল হয়, তখন মানুষ অনেকটা নিরুপায় হয়ে কন বিশ্বাসের মাঝে শান্তি খুজে বেড়ায়। একই কারনে কিছু ঘোর নাস্তিক জীবনের কোন সঙ্কটময় সময়ে যেমন কঠিন রোগে পড়লে বা কোন ভয়াল দূর্ঘটনা থেকে অলৌকিকভাবে বেচে উঠলে রাতারাতি আস্তিক হয়ে উঠেন। যিনি জন্ম থেকে নাস্তিক তার জন্য মনে হয় এ পরিবর্তনের সম্ভাবনা অনেক কম। আবার যিনি আস্তিক-নাস্তিক-আস্তিক তার জন্য এর সম্ভাবনা অনেক বেশী, ষ্ট্যাট নিলে নিশ্চয়ই দেখা যাবে যে তিনি শেষ বয়সে আবার আস্তিক হলে তার পুরানো ধর্মে ফিরে যাবার সম্ভাবনাই নিশ্চয়ই অনেক বেশী। কারন তার মাঝে ধর্মের বীজ সবসময়ই ছিল যা খুব ছোটবেলায় তার মাথায় খুব ভালভাবে গেড়ে দেওয়া হয়েছে, মাঝখানে কিছুদিন শুধু সুপ্ত অবস্থায় ছিল। তবে পাশ্চাত্যের অনেক মানুষ পারিবারিক মূল্যবোধের সংকট, অতি মাত্রায় আত্মকেন্দ্রিক জাগতিক জীবনের জ্বালা জাতীয় কারনে প্রাচ্য দেশী কালচারের প্রতি আকৃষ্ট হন, এভাবেই কিছু নাস্তিক-আস্তিক বা ধর্ম পরিবর্তন হয়।
“অনেক লিব্যারালদের ধারনা-অন্যের ক্ষতি না হলে বা অন্যের অধিকার ক্ষুন্ন না হলে, আমাদের সব কিছু করার স্বাধীনতা আছে। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারনা।” – এতে আমি পুরোপুরি একমত এবং মনে করি এই সহজ এবং অতি গুরুত্ত্বপূর্ণ পয়েন্টটি সব লিবারেলদের বোঝা উচিত। এটা বুঝতে না পারার কারনে অনেক সময় যেমন ধার্মিকদের এক এক্সট্রীমে দেখা যায় তেমনি লিবারেলদের দেখা যায় আরেক এক্সট্রীমে। যেকারনে অতি লিবারেলিজমকে কিছু সময় ভন্ডামির মত লাগে। যেমন ধরা যাক; আমাদের ইসলামী বাংলাদেশে ষ্ট্রীপ বা ন্যুড ক্লাব নিষিদ্ধ, পাশ্চাত্য আমেরিকায় আইনসিদ্ধ। আইনসিদ্ধ করার কারন পাশ্চাত্য মতে এতে কাউকে জোর করে ঢোকানো হচ্ছে না, যার ইচ্ছে যাবে যার ইচ্ছে যাবে না। তাই কারো ক্ষতি করা হল না। এ জাতীয় যুক্তির মাঝে আসলে বড় ফাক আছে। আমি আপনি আস্তিক নাস্তিক লিব্বারেল কনজারভেটিভ যেই হই না কেন আমরা কোনদিন চাইব আমাদের ছেলেমেয়েরা ওইসব যায়গায় যাক? লিব্রারেল (ধরে নিলাম এখানে নাস্তিক) হলে ছেলেমেয়ে মন্দির মসজিদে পড়ে যাক যেমন চাইবেন না তেমনি নিশ্চয়ই চাইবেন না ওইসব ন্যুড বা ষ্ট্রীপ ক্লাবে যাক। বিদেশেও কোন ভদ্রলোকে শখ করে পরিবার নিয়ে ওসব যায়গার ধারে কাছে থাকে না। আল্টিমেটলি দেখা যায় গরীব শ্রেনীর মানুষদেরই সেসব যায়গায় থাকতে হয়। কাজেই যে হয়ত কোনদিন এসব যায়গায় যাবে না তারও মাশুল গুনতে হচ্ছে।
এটাও সবার মানা উচিত যে কেউ যদি ব্যক্তিগত জীবনে আল্লাহ/ভগবান/কালী যাকেই ডাকাডাকি করে যদি মানসিক শান্তি পেতে পারেন তবে তার সেই সুখ কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারো নেই। আল্লাহ আছে কি নেই সেই ভুলে যদি অন্য কারো কোন ক্ষতি না হয় তবে তার বিশ্বাসে অন্যের কি সমস্যা? আজকাল উগ্র ধার্মিকদের মানুষ গালাগালি করে তারা ঈশ্বর বিশ্বাস করে এ জন্য নয়, তারা ধর্মের নামে মানুষ মারে বা অন্যের ক্ষতি করে এই জন্য। তবে ধার্মিকদের দায়িত্ব এখানে অনেক বেশী, তাদের বুঝতে হবে যে তার ধর্ম চর্চা হতে হবে সম্পূর্ণ ব্যাক্তি পর্যায়ে, কোনভাবেই রাষ্ট্রীয় বা গোষ্ঠী পর্যায়ে নেওয়া উচিত না। মুশকিল হল ধর্মবাদীরা এটা মেনে নিতে পারেন না, তারা নিজ ধর্ম প্রচার ও অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলাকে পবিত্র দায়িত্ত্ব বলে মনে করেন।
@আদিল মাহমুদ,
স্ট্রিপ ক্লাবে গেল ক্ষতি হবে কন? নোবেল রিচার্ড ফেইনম্যানস্ট্রীপ ক্লাবে বসেই অনেক তত্ত্ব উদ্বভাবন করেছেন। যে যায় তার ক্ষতি হয় না। ক্ষতি হচ্ছে মেয়েগুলোর। কারন এরা অধিকাংশই ছাত্রী। কাঁচা টাকার লোভে এ পথে আসে। কেও তাদের জোর করে নি। কিন্ত পরবর্ত্তী কালে এদের অধিকাংশই ড্রাগের নেশায় ভুগে আত্মহত্যা করে। এই কারনেই স্ট্রীপ ক্লাব বন্ধ করা উচিত। মেয়েরা দেহ দেখালেই সমাজ উচ্ছন্নে যাবে এমন ভাবার কারন নেই। কোন প্রমানও নেই। কিন্ত টাকা পয়সা নিয়ে সেক্সের সাথে জড়ালে,
অন্য সমস্যা আছ। সেই জন্যেই টাকা-পয়সা নিয়ে সেক্স বা দেহ প্রদর্শন বন্ধ করা উচিত। কিন্ত দেহ দেখাচ্ছে বলে বীচে বিকিনি পড়া বন্ধ করা উচিত-এমন যুক্তি ঠিক না। কারন তাতে সমাজের কোন ক্ষতি হয় না বরং ভাল হয়। বিকিনি পড়ার জন্যে মেয়েগুলো শরীর চর্চা করে। আর আমাদের মহিলারা সেসবের বালাই নেই বলে, মোটা হয় এবং নানান রোগে ভোগে।
@বিপ্লব পাল,
আমি কার ক্ষতি হয় বা ক্ষতি কম বেশী সে পয়েন্টে যেতে চাইনি, শুধু বলতে চেয়েছি যে সমাজে অনেক সময় অতি উদারতার নামে ক্ষতিকর কাজকারবার করা হয়। আপনি নিজেই বললেন এগুলিতে আসলে মেয়েদের ক্ষতি হয় বেশী, পুরোপুরি সত্য। আমি আপনি মাসে দুয়েকবার ওসব যায়গায় ঢু মারলে আমাদের কিছুই হবে না, বাড়ির লোকেও জানলে আমাদের ত্যাজ্য পুত্র করবে না, বাঙ্গালী বউ শুধু এজন্য আমাদের ছেড়ে পালাবে এমন সম্ভাবনা খুবই ক্ষীন। কিন্তু যে মেয়ে একবার এসব যায়গায় গেছে তার আর বাকি জীবনে সূস্থ পথে আসাটা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। তবে অনেক জ্ঞানী গুনী নিয়মিত গনিনাকলয়েও গমন করেন, তার মানেই এই দাড়ায় না যে তাদের মেধার বিচ্ছুরন সেখান থেকে ঘটে।
যাই হোক, এসব হিপোক্রিটিক অতি লিবারেল কাজকারবারের অবশ্যম্ভাবী
ফলাফল হল ধর্মবাদী লোকজন পাশ্চাত্য সমাজ নারী অধিকারের নামে নারীকে পণ্য করে…..কেবল মাত্র অমুক ধর্মই নারীকে প্রাপ্য মর্যাদা দেয় এ জাতীয় প্রচারনা চালাতে পারে। আমাদের বাংগালী বা অন্য সব মোসলমান কমিউনিটির অনেকে তাদের ছেলেপুলে টিন এজে যাবার সময় কয়েক বছর দেশে পাঠায়। তাদের চোখে পাশ্চাত্য সমাজ মানেই মদ নারী উশৃংখলতা, এখানে শুধু টাকাই আছে আর কিছুই নেই।
ড্রেস কোডের সাথে উচ্ছনে যাওয়ার সম্প্ররক আসলেই নেই, তাই বীচে বিকিনি পরায় আমি যেমন কোন সমস্যা দেখি না তেমনি অফিসে বিকিনি পরায় আমার আপত্তি আছে।
@আদিল মাহমুদ,
সেত আমেরিকাতেই আছে। অফিসে বিকিনি কেন, একটু রিভিলিং ড্রেস পড়ে আসার জন্যে, বাড়ি ফেরত পাঠানো দেখেছি ক্যালিফোর্নিয়ায় খোদ আমাদের অফিসে। সুতরাং এখানেও লোকজন স্থান-কাল-পাত্র বুঝেই এসব মাত্রা নির্নয় করে। অতি লিব্যারালদের নিয়ে আমি বিরক্ত। কারন তারাই ধর্মের মৌলবাদিদের বলার সুযোগ করে দিচ্ছে।
@আদিল মাহমুদ,
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বীচে বিকিনি পরাতেও আমাদের দেশের লোকজন চরম সমস্যা দেখবে। তাদের এই sense টি গড়ে উঠে নাই যে স্থান-কাল-পাত্র- পরিস্থিতি ভেদে পোশাক-পরিচ্ছদে ভিন্নতা আসতে পারে। বোধকরি এটি পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হওয়া সত্বেও বাংলাদেশের কক্সবাজার সি বীচের আন্তর্জাতিক মানের সি বীচে উন্নীত না হওয়ার অনেকগুলি কারণগুলির মধ্যে একটি। যেখানে নিকটবর্তী দেশ থাইল্যান্ডের সি বিচগুলোতে প্রচুর বিদেশী পর্যটক এবং ভারতের গোয়াতেও নির্বিঘ্নে অনেক পর্যটক বিকিনি পরছে সেখানে কক্সবাজারের অবস্থা একবারে লেজেগবরে।
@বিপ্লব পাল,
আপনিই বলুন বাঙালী সমাজে কয়টা মেয়েকে ছোটবেলা থেকে দৌড়ঝাপ, লাফালাফি, খেলাধুলা, শরীরচর্চা করার সূ্যোগ দেয়া হয়? তাদেরকে ছোটবেলা থেকেই এমন পোশাক পরানো শুরু করানো হয় যাতে তাদের এসবের সমস্ত পথ বন্ধ হয়ে যায়। তাদেরকে পঙ্গু হওয়ার শিক্ষা দেয়া হয়। অথচ একটা ছেলেকে এসব হ্যাপার কোনটাই পোহাতে হয় না। ঢাকা শহরে এমন একটি খেলার মাঠও খুজে পাওয়া যাবে না যেখানে মেয়েরা খেলে। সমস্ত মাঠ, খোলা ফাঁকা জায়গায় সবসময় ছেলেদের দখলে থাকে। খেলাধূলা যেন শুধুই ছেলেদের জন্যই। মেয়েরা যে খেলতে পারে এটা কেউ ভেবেই দেখেনা। মেয়েদের খেলা নিয়ে বাঙ্গালী সমাজ বিদ্রুপ করে।বাঙ্গালী সংস্কৃতিই বাঙ্গালী মেয়েদের পঙ্গু করে রাখে। সংস্কৃতিই লিঙ্গবৈষম্যের অন্যতম সূতিকাগার।
@বিপ্লব পাল, খুব ভাল লিখেছেন
@আদিল মাহমুদ,
এটা আপনি কি বললেন? আমেরিকাতে নাকি শুনেছি হাজার হাজার গোগোবার, স্ট্রীপ ক্লাব। বিপ্লব পালের একটি লেখাতে পড়েছিলাম এক লস্এঞ্জেলসেই নাকি ত্রিশ হাজ়ারের মত গোগোবার। এসব জায়গায় শুধু গরীব লোকজনই যায়? কেমন জানি খটকা লাগছে। তাহলে যারা ওখানে যাচ্ছে তাদেরর পরিবার পরিজন কি ভাবছে?
আপনি ন্যুড ক্লাব, স্ট্রীপ ক্লাব নিয়ে যতই রক্ষণশীল হননা কেন, ওসব জায়গায় যাওয়ার অদম্য কৌতুহল অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই আছে। ওখানে যদি কেউ যেতে না চাইত তবে ওসব গড়ে উঠতো না।
ন্যুড ক্লাব , স্ট্রীপ ক্লাবের মত তো সাধারণ নাইট ক্লাব সম্পর্কেও একই কথা বলা যায়। একজন নাস্তিক লিবারেল তার ছেলেমেয়েদের সাধারণ নাইট ক্লাবে যেতেও যদি বাঁধা দেন তাহলে আপনি কি বলবেন?আপনার কাছে নাইট ক্লাব ভাল আর ন্যুড ক্লাব, স্ট্রীপ ক্লাব খারাপ জায়গা হতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশ থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে নতুন আগত একজন ভদ্রলোক তো সাধারণ নাইট ক্লাব দেখেই রি রি করে উঠবেন। সেক্ষেত্রে আপনি কি বলবেন? আপনার ছেলেমেয়েকে কি অন্তত নাইট ক্লাবে যেতে দিবেন?
বাঙালীরা জাতিগত রক্ষণশীলতার জন্য নাইট ক্লাব, স্ট্রীপ ক্লাব , ন্যুড বার ইত্যাদির নাম শুনে রি রি করে উঠে। ভাবখানা এমন এসব জায়গায় গেলে তাদের চোদ্দ পুরুষের অর্জিত সমস্ত নৈতিক মূল্যবোধ, মানমর্যাদা সব নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তাদেরও এসব জায়গাইয় যাওয়ার অদম্য কৌতুহল রয়েছে। সমাজের ভয়ে সবাই মুখ বন্ধ করে রাখে। কেউ নিজের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করতে সাহস পায় না।
এই ক্লাব সংস্কৃতি পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই জ়ায়গা করে নিয়েছে। আপনাকে স্বীকার করতেই হবে পশ্চিমে ( এবং প্রাচ্যেরও অনেক দেশে) তরুণ প্রজন্মের বিনোদনের অন্যতম জায়গা হলো এই নাইট ক্লাব। আমরা বাঙালীরা যতই নাক সিটকাই না কেন।
@তৃতীয় নয়ন,
আমেরিকাতে ঠিকই হাজার হাজার ষ্ট্রীপ ক্লাব ইত্যাতি হেনতেন আছে। তবে তার মানে এই না যে সেগুলি শহরের সব যায়গায় সমানভাবে ছড়িয়ে থাকে।
সেগুলিতে শুধু গরীব লোকজন যায় তেমন আজব দাবী আমি করিনি। আপনি ভুল বুঝেছেন, যদিও আমার ধারনা বিপ্লব ঠিকই বুঝেছেন কারন তিনি সেখানে থাকেন। তিনিও একমত হয়েছেন যে অতি মাত্রায় লিবারেলিজম উগ্রবাদ বা রক্ষনশীলতাকেই আসলে সাহায্য করে।
আপনাকে একটু আগে বুঝতে হবে যে আমেরিকায় মানুষ যখন পরিবার নিয়ে থাকে তখন তারা কি কি ক্রাইটেরিয়ায় বাড়ী খোজে। তারা প্রথমে দাম, ক্ত বড় বাড়ি, কাজের যায়গা থেকে কতদুরে সেটা দেখে, তারপর ভাল স্কুল এরিয়া খোজে, নেইবোরহুডের আশে পাশের এলাকা কেমন দেখে, ক্রাইম ষ্ট্যাট দেখে। সাধারনতঃ নাইট ক্লাব, ষ্ট্রীপ ক্লাব এসব যায়গার আশে পাশে ক্রাইম রেট হয় অনেক বেশী। তাছাড়াও ভদ্রলোকরা পরিবার নিয়ে কোন ন্যুড বার এর কাছে স্রেফ রুচির কারনেই কোনদিন থাকতে চায় না। বিদেশের পরিবেশ অনেক উন্মুক্ত খোলামেলা হলেও যতটা মনে হয় ততটা নয়। বিশেষ করে যারা এখানে প্রফেশনাল তাদের অফিসে যদি কেঊ শুনে যে মিঃ আদিল নিয়মিত ন্যুড ক্লাবে যায় তবে তারা মুখে কিছু কোনদিন বলবে না ঠিকই তবে ব্যাপারটা মোটেও ভাল চোখে দেখবে না। আমাকে তারা লম্পট হিসেবেই দেখবে, যতই মুখে বলুক না আমরা ন্যুড ক্লাবের বিরুদ্ধে নই।
বিষয়টা আসলে কারা সেখানে যায় সেটা নয়, বিষয়টা হল এসব এয়্যডাল্ট ক্লাব শহরের যেসব এলাকায় থাকে (সাধারনত ডাউন টাউনের এক ধারে) সেসব যায়গার আশে পাশের আবাসিক এলাকাগুলিতে ভদ্রলোকে শখ করে থাকতে চায় না, যেহেতু ডিমান্ড কম তাই সেসব যায়গায় বাড়ির দাম বা ভাড়া তূলনামূলকভাবে কম থাকে। তাই সাধারনতঃ গরীব মানুষদের এসব যায়গার আশে পাশে থাকতে হয়। ব্যাতিক্রম কিছু থাকতেই পারে।
মানূষের কৌতূহল বা ইচ্ছে হলেই যে সব কিছু জায়েজ করে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন? ধরুন, কয়টা পুরুষ মানুষ আছে যার পরস্ত্রীর সাথে লটর পটরের জন্য জীবনের অন্তত কিছু সময় ইচ্ছে করেনি? এখন কি আমরা এই ব্যাপারটাকে সহজভাবে নেওয়া শুরু করব? এই ব্যাপারটাকে এখনো আমরা ভাল চোখে দেখি না বলেই মানুষে কাপড় বদলানোর মত স্বামী স্ত্রী বদল করে না। এ জাতীয় বহু কিছু আছে।
আমি সাধারণ ভাবে আমাদের উপমহাদেশীয় কালচার থেকে পাশ্চাত্য কালচার বহুগুলে পছন্দ করি, তার মানে এই না যে সে কালচারে খারাপ কিছুই নেই, উদারতার নামে তারা যা যা করে তার সবই ভাল। যারা ন্যুড ক্লাব ষ্ট্রীপ ক্লাবের সমর্থক তারা নিজের ১৮ বছর বয়সী ছেলে মেয়ে সেখানে যাওয়া শুরু করেছে শুনলে খুব খুশী হবে বলে মনে করেন? প্রশ্নটা আগেও করেছিলাম। ধরেন না আপনার ১৫ বছরের মেয়ে তার এইম ইন লাইফ ঠিক করল ন্যুড ক্লাবে নাচা, তারপর ১৮ বছর হলেই ব্যাস, আর পায় কে, একেবারে কর্মে পরিনত করে দেখালো। আপনি দায়িত্ববান বাবা কি উদারতার পরিচয় দিয়ে তাকে বাহবা দেবেন নাকি ১৫ বছর বয়সেই কষে দুই ধমক দিবেন?
পশ্চীমের কত ভাল ভাল পরিবারের ভাল ভগাল ছেলেমেয়ে যে অতি উদারতার জন্য ঝরে পড়ে তার হিসেব কি কেউ রাখে?
নিজেকে উদার প্রমান করার জন্য আমরা অনেক কিছুই মুখে বলি কিন্তু মানি না।
পশ্চীমে ক্লাব সংষ্কৃতি খুবুই জনপ্রিয়, ঠিক। তার মানে এই না যে ন্যুড ক্লাব জাতীয় যায়গাগুলি খুব সুস্থ বিনোদনের উপায়। এইসব জিনিস জনপ্রিয় করার মূল কারন পয়সা, এসব ব্যাবসাযাবাভ লাভ মারাত্মক। ব্যাবসায়ীরা যেখানে লাভ দেখে সেটাকেই জনপ্রিয় করে তুলে, আর এসব আদি রসাত্মক বিষয়ের প্রতি তো মানূষের নিষিদ্ধ কৌতূহল থাকেই। এখানে তো ইলেক্ত্রনিক গেইম ও খুব জনপ্রিয়, অনেক ছেলে মেয়ে এসব ইলেক্ট্রোনিক গেমের আকর্ষনে কোনরকম দৈহিক পরিশ্রম জাতীয় খেলায় আগ্রহ বোধ করে না। এটা বলা যায় একটা সামাজিক ব্যাধি হয়ে দড়িয়েচছে। জনপ্রিয় হলেই যে উপকারী বা দরকারী এমন কোন কথা নেই।
নাইট ক্লাব পাশ্চাত্য সমাজের জন্য অনেকতা দরকার, কারন নাইট ক্লাব তাদের সোসালাইজেশনের জন্য তাদের কালচারে খুব দরকারী, যা আমাদের বাংলা কালচারে দরকারী না। কারন আমাদের সোসালাইজিশনের অন্য কিছু উপায় আছে। শুধু নাইট ক্লাবে যাওয়াকে কেউ এখানে খারাপ চোখে দেখে না, আমিও দেখি না। তাই নাইট ক্লাব আমি খারাপ চোখে না দেখলেও আমার প্রথম জেনারেশনের ছেলেকে সেখানে যেতে দেখলে খুব দূঃখই পাব। এ জাতীয় সমস্যা এখানে খুবই প্রকট।
@আদিল মাহমুদ,
যারা ন্যুড ক্লাব ষ্ট্রীপ ক্লাবের সমর্থক তারা নিজের ১৮ বছর বয়সী ছেলে মেয়ে সেখানে যাওয়া শুরু করেছে শুনলে খুব খুশী হবে বলে মনে করেন? প্রশ্নটা আগেও করেছিলাম। ধরেন না আপনার ১৫ বছরের মেয়ে তার এইম ইন লাইফ ঠিক করল ন্যুড ক্লাবে নাচা, তারপর ১৮ বছর হলেই ব্যাস, আর পায় কে, একেবারে কর্মে পরিনত করে দেখালো। আপনি দায়িত্ববান বাবা কি উদারতার পরিচয় দিয়ে তাকে বাহবা দেবেন নাকি ১৫ বছর বয়সেই কষে দুই ধমক দিবেন?
:
>>Actually I did come across an American father who was proud of the fact that his daughter is a stripper. He was open about it. He was liberal. His argument is-her life is her life-she had freedom to do things as long as it is not harmful or illegal. What he missed is last part-
being a GoGo dancer is harmful to the girls because they tend to commit suicide due to unbalanced life thanks to raw money.
@বিপ্লব,
ব্যাতিক্রম সবখানেই আছে। সাধারণভাবে বিদেশেও কেউ, বিশেষ করে শিক্ষিত বা প্রফেশনাল ক্লাসের লোকজন চাইবে না যে তার সন্তান ন্যুড ড্যান্সার হোক।
আপনি নিজে কি চাইবেন আপনার ছেলে জেন্টেলম্যান্স ক্লাবে উদম হয়ে নাচছে? ? স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকার সময় কি এসব অঞ্চল থেকে শতহাত দূরে থাকেন না? ন্যুড ক্লাব তো বহু দুরের ব্যাপার, একটা এডাল্ট ভিডীও ষ্টোর ও গলির মাথায় থাকলে ওই গলিতে ভদ্রলোকে থাকতে চায় না।
উত্তর আমেরিকায় আছি ১০ বছরের উপর হল, এদেশের কালচার মোটামুটি এখন বুঝি। ইউরোপের কথা জানি না, সবসময় শুনি তারা আরা বেশী লিবারেল।
আজ যদি আমি প্রস্তাব দেই যে আমাদের দেশের মাদ্রাসাগুলি বন্ধ ঘোষনা করা হোক তাহলে মোটামুটি ৯০% লোক রে রে করে তেড়ে আসবেন, কিন্তু নিজের ছেলেমেয়েকে কি তারা সেইসব মাদ্রাসায় পাঠাবেন? কোনদিন না। মাদ্রাসায় পরবে দরিদ্র শ্রেনীর লোকেরা। ভদ্রলোকেরা নিজেদের ছেলেময়েকে পাঠাবেন না, কিন্তু বন্ধ করার প্রস্তাব ও কিছুতেই মানবেন না। উত্তর আমেরিকাতেও এসব এডাল্ট ক্লাব সমপর্কে মানুষের মানসিকতা প্রায় একই।
সমকামিদেরকেও কি এদেশের সমাজ সহজভাবে নেয়? আমার কোনদিন মনে হয় না এখনো নেয় বলে। আমি যে বছর প্রথম আসি তার মাত্র কিছুদিন আগে আমার সেই ছোট শহর যেখানে অনেক বছর পর পর এক আধটা ক্রাইম ঘটে সেখানে এক সমকামী ছেলেকে ইন্টারনেটে সমকামীতার লোভ দেখিয়ে আর ২ জন ছেলে পৈশাচিক কায়দায় খুন করে। এ ঘটনা হয়ত এক্সট্রীম, কিন্তু সমকামীদের মারধোর গালিগালাজের স্বীকার হওয়া মোটেও আনকমন না। কেউ ধরে নেবেন না আমি আবার সমকামীদের ঘৃণা করি। তবে সমকামীদের সাথে নিজের ছেলের বন্ধুত্ত্ব হোক এটাও বেশীরভাগ বাবা মাই মনে হয় চাইবেন না।
@আদিল মাহমুদ,
আমার মনে হয় সময়ের সাথে সাথে এ সব ছুৎমার্গ চলে যাবে। বাংলাদেশে এমন অনেক অভিভাবক আছেন যারা নিজের ছেলেকে বিধর্মীদের সাথে মিশতে দিতে চান না। আমেরিকায় কিছুদিন আগেও সাদা চামড়ার লোকেরা তাদের ছেলেমেয়েদের কালোদের সাথে মিশতে দিতে চাইতো না – ভাবতো সন্তান নষ্ট হয়ে যাবে। সমকামীদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাবের সাথে মানে ‘সমকামীদের সাথে নিজের ছেলের বন্ধুত্ত্ব হোক এটাও বেশীরভাগ বাবা মাই মনে হয় চাইবেন না’ – এই বক্তব্যের সাথে উপরের উদাহরণগুলো মিলিয়ে দেখুন – দেখবেন ব্যাপারটা আপনার চোখেই খেলো বলে মনে হবে। আসলে কোন বিশেষ ধর্মের উপর যেমন মানুষের ভাল খারাপ খুব বেশি নির্ভর করে না – তেমনি সেক্সুইয়াল ওরিয়েন্টেশনের উপরও নয়। সমকামীদের যেমন সমকামিতার লোভ দেখিয়ে খুন করা হয়, তেমনি আবার অনেক মেয়েকেও পয়সা প্রতিপত্তি কিংবা বিয়ের নাম করে ধর্ষণ করা হয়, এমন উদাহরণও কিন্তু আছে। কাজেই বিচ্ছিন্ন ভাবে কাউকে একঘরে করার কোন যুক্তি নেই। আমি জানিনা সমকামী কারো সাথে আপনার কখনো মোলাকাৎ হয়েছে কিনা, আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি তারা আমার আপনার মতই ভাল মানুষ। তারা নিজেরা সংখ্যালঘু বলে মানুষের প্রান্তিক অধিকারগুলো নিয়েও তারা অনেক বেশি সচেতন থাকে। আমার অফিসের অনেক মহিলা কর্মীই মনে করেন সমকামী পুরুষদের সাথে বরং তারা অনেকেই বেশি সচ্ছ্বন্দ্যে কাজ করতে পারে – কারণ কোন যৌন হ্যারাসমেন্টের ভয় থাকে না। স্নিগ্ধা একটা লেখা লিখেছিলো অনেক আগে নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে – আপনিও পড়ে দেখতে পারেন –
সমকামীতা সম্পর্কিত কিছু ব্যক্তিগত মতামত
এ প্রসঙ্গে আপনার মতামত পেলে ভাল লাগবে।
@অভিজিত,
আমি একমত যে একসময়ে সমকামীদের সম্পর্কেও মানুষের রিজার্ভেশন অনেক কমে যাবে। রিজার্ভেশন এখনো আছে এই কারনে যে সমকামীদের সম্পর্কে ধর্মওয়ালাদের মদদে জোর অপপ্রচার চালানো হয়। তাদের নরকের কীট, বর্বর অসভ্য পশুরও অধম এসব কথাবার্তা চালানো হয়। তবে মানুষ এখন দ্রুত বুঝতে পারছে ব্যাপারটা আসলে তা না। এখনো যেমন কালোদের সম্পর্কে চালানো হয়; প্রমান করার চেষ্টা করা হয় যে কালো মানেই বর্বর, সব কালোই ক্রিমিনাল। আমি পাশ্চাত্য কালচারকে অনেক দোষ ত্রূটি থাকার পরেও পছন্দ করি তার একটা বড় কারন এই কালচারে আমাদের মত মোটামুটিভাবে শিশুকাল থেকেই মানুষে মানুষে ভেদাভেদের বিষমন্ত্র দেওয়া হয় না এই জন্য। এ কারনে মানুষ শুধু মানুষ হিসেবেই এ কালচারে সম্মান পেতে পারে।
হ্যা, আমি আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতায় দুয়েকজন সমকামীর সাক্ষাত পেয়েছি, তবে তাদের সাথে অই পর্যায়ের ঘনিষ্টতা হয়নি যে এ বিষয়ে কথা বলি। তাদের দেখেছি এভারেজ থেকে অনেক নম্র ভদ্র ও ঠান্ডা মেজাজের। হতে পারে এটার কারন তাদের জীনের গঠানগত বা সংখ্যালঘূ মানুষ বলে হয়ত একটা জানা শংকায় ভোগেন তাও হতে পারে। কিছুটা তিক্ত হলেও আমার একই ধরনের অবজার্ভেশন আছে বাংলাদেশের হিন্দুদের সম্পর্কেও। তারাও বেশীরভাগঈ খুব নম্র ভদ্র, গলা তুলে কথা বলেন এমন হিন্দু মনে হয় না তেমন দেখেছি বলে। মোটামুটিভাবে জানি যে প্রায় বেশীরভাগ পুরুষ সমকামীই এমন। তবে লেসবিয়ানদের সম্পর্কে আমি নিশ্চিত না তেমন কিছু বলরে পারি বলে, ধারনা নেই।
তবে সমকামীদের সাথে বাবা মা ছেলে মেয়ে মিশতে দিতে চায় না মনে হয় সমকামী মানেই খারাপ এই ধারনা থেকে না; বরং তাদের আশংকা থাকে যে নিজের ছেলেমেয়েকেও যদি আবার না সম বানিয়ে দেয়।
@আদিল মাহমুদ,
খুবই জটিল প্রশ্ন। এখনো তো বাবা হই নাই। এসব অনেক দূরের ব্যাপার।দেখি কি করা যায়। 🙂
সময়ই বলে দিবে কি করতে হবে।
ইউরোপের সমাজ আরো বেশী লিবারেল এটা আমিও শুনেছি। ওখানে তো সমকামীদের বিয়ে হচ্ছে। অবশ্য তা উত্তর আমেরিকাতেও হচ্ছে।
মানুষের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বিতর্কিত বিষয়। হিন্দু দর্শন ( আস্তিক বা নাস্তিক), ইসলাম দর্শন, মার্ক্সবাদ, এমন কি আধুনিক ডারুইনিয়ান ঐতিহাসিক বস্তুবাদ সমাজ ব্যাতীত মানুষের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব স্বীকার করে না। যেমন ধরা যাক “আমি খাচ্ছি” -আপাত দৃষ্টিতে এই কাজটি স্বতন্ত্র। কিন্ত কেন খাচ্ছি? যাতে সামাজিক ভাবে আমি কাজে লাগতে পারি। আবার অন্য কেও ভাবতেই পারে, নিজের প্রান ধারনের জন্যে খাচ্ছি? কিন্ত প্রান ধারন করি কেন? শুধু শুধু ১০০ বছর বেঁচে থাকতে? নাকি কিছু উদ্দেশ্য থাকে? যদি ধরে নিই কিছু উদ্দেশ্য থাকে বেঁচে থাকার, সেটা কি এমন হতে পারে, শুধু এই ‘আমি’ অস্তিত্ব টেকাতেই আমরা বেঁচে থাকি? প্রানবিজ্ঞান তা ত বলে না। প্রানী জগত বলে, সন্তানকুল, অর্থাৎ একটা জেনেটিক পুল কে বাঁচাতে আমরা বাঁচি। বা এই খাওয়া দাওয়া করছি। যাতে সন্তানদের বাঁচাতে পারি। বা খাওয়াতে পারি। তাদের পরিবেশের জন্যে মানুষ করতে পারি। তাহলে যেখানে স্বতন্ত্রে কাজের সুযোগ নেই, সেখানে মানুষের স্বতন্ত্র মডেলের সুযোগ কোথায়?
বিপ্লবদা,
যে ধরনের লেখা আমাকে ভাবায় ঐ ধরনের লেখা আমার ভাল লাগে।সেই দিক থেকে আপনার লেখাও আমার খুব পছন্দের।আমি আপনার সাথে তর্ক করার সাহস দেখাব না।আমার তা নেইও।কিন্তু একটা ব্যাপার এ আপনার মতামত জানতে চাই।”
একজায়গায় আপনি বললেন, ” অনেক লিব্যারালদের ধারনা-অন্যের ক্ষতি না হলে বা অন্যের অধিকার ক্ষুন্ন না হলে, আমাদের সব কিছু করার স্বাধীনতা আছে। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। কারন এখানে ভাবা হচ্ছে ব্যাক্তি আমির স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে। অর্থাৎ আমি বা আপনি সমাজ থেকে পৃথক এক স্বতন্ত্র সামাজিক জীব।”
আমার কেন যেনো ঠিক মনে হয় নি।কারন,আমি যদি নিজেকে সমাজের অংশ না ভাবি তাহলে অন্যের ক্ষতি করতে আমার সমস্যা কোথায়?আমি নিজেকে সমাজের অংশ ভাবি বলেই তো অন্যের ক্ষতি যাতে না হয় সেই কাজ করব।তাই না?আমার নিজের যদি কোনো স্বতন্ত্র অস্তিত্ব না থাকে তাহলে তো সমাজেরই কোনো অস্তিত্ব থাকার কথা না।কারন সমাজ বলতে আমরা তো সমাজের মানুষকেই বুঝি তাই না?এখন আমি যদি মনে করি যে সমাজে কারো কোনো স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নেই তো আমি কার জন্য কাজ করব?
অধিকন্তু,লেখার শেষের দিকে আপনি বলছেন যে,কারো মনে আঘাত হানা ঠিক নয়।আমার প্রশ্ন, কেন?আপনি যদি সমাজের ভাল চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই তার ভুলটা ধরিয়ে দিতে হবে।(আমি এখানে অবশ্যই ধর্মানুভুতির কথা বলছি)আপনি কেন তাকে বলবেন না?কারন আপনি জানেন যে তার একটা স্বতন্ত্র ব্যক্তি স্বত্তা আছে।তার ভাল মন্দ তাকেই বুঝতে দেওয়া উচিত।
আপনার এই কথাগুলো কি স্ববিরোধী হয়ে গেল না?
সবার শেষে বলি আমার এই কথাগুলি লিখলাম শুধুমাত্র আপনার লেখাটা ভালভাবে বোঝার জন্য।
ধণ্যবাদ
সাইফুল ইসলাম।
@সাইফুল ইসলাম, নিশ্চয় আপনার প্রশ্ন গুলি খুবই ভ্যালিড। কিন্ত যে নামাজ পরে কিছুটা মানসিক শান্তির জন্যে তার সাথে আস্তিক, নাস্তিক বিতর্কে কি লাভ হবে যদি না সে তার আল্লার কথা প্রচার না করে বেড়ায়? আমাদের লড়াইটা প্রচারকদের বিরুদ্ধেই থাকা উচিত। অধিকাংশ মুসলমান বা হিন্দুই আসলে ঈশ্বর স্বরন করে, একটু স্বস্তি পেতে।
@বিপ্লব পাল,
হ্যাঁ।এ নিয়ে কলেজ লাইফে একটা ‘অকবিতা’ লিখেছিলাম।নৃতত্বও তাই বলে।যেখানেই অজ্ঞানতা সেখানেই ঈশ্বর।আক্ষরিক অর্থেই
“অন্ধকারে দু’ চোখ আলোয় ভরাও প্রভু” – তা সে আলো যতই অলীক হোক না কেন!
@সাইফুল ইসলাম,
আমরা কি আদৌ অন্য কারুর জ্ন্য কাজ করি-না নিজেদের জেনেটিক পুল বাঁচাতে কাজ করি? আলটুইজমের আধুনিক তত্ব বলে স্বার্থহীন আলট্রুইজম বলতে কিছু হয় না। আলটিমেটলি আমরা নিজেদের জীনপুলের সেবাতেই নিয়োজিত।
@সাইফুল ইসলাম,
আপনার ইমেইলে ব্লগ একাউন্ট-এর তথ্য পাঠানো হয়েছে। দয়া করে দেখুন পেলেন কিনা। আমাদের ডেটাবেস থেকে দেখলাম যে, আপনি মন্তব্য করার সময় দুটো ইমেইল ব্যবহার করেছেন। দুটোতেই লগ-ইন এর তথ্য পাঠানো হয়েছে। লগ ইন সংক্রান্ত কোন সমস্যা বোধ করলে আমাদের জানাবেন।