ধর্মগ্রন্থের মতো রবীন্দ্রনাথের জঠর থেকে বিজ্ঞান বের না করলে চলে না?
-অনিশ্চিত
সাম্প্রতিক বিজ্ঞানের আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের সাথে ধর্মগ্রন্থগুলোর বাণী, উপদেশ বা ঘটনার সাদৃশ্য খুব কম। ধর্মগ্রন্থগুলো একটি সময়ের প্রতিনিধিত্ব করেছে, সে সময়ের মানুষের কল্পনার সীমাকে মেনে গণ্ডীবদ্ধ অলৌকিকতার কথা বলেছে কিন্তু সেগুলোর ব্যাখ্যার দিকে যায় নি- কল্পনার ব্যাখ্যা হয় না। পুরাকালের মানুষের কল্পনাশক্তি প্রখরতা অনেক মিথের জন্ম দিয়েছে। ধর্মগ্রন্থগুলো সেগুলোর প্রভাব থেকেও বের হতে পারে নি। এ সময়ে যখন সাম্প্রতিক উদ্ভাবনাগুলো ধর্মগ্রন্থের এসব অলৌকিকতা ও মিথের ব্যাখ্যা তুলে ধরছে, তখন একদল মানুষকে দেখা যাচ্ছে জোরজবরদস্তি করে ধর্মগ্রন্থগুলো বিজ্ঞানময়; বা বিজ্ঞান একমাত্র ধর্মগ্রন্থ থেকেই উৎসারিত– এ সম্পর্কে নতুন কল্পনা ফেঁদে জোর করে প্রমাণের চেষ্টা করছে। ফ্যালাসির বাতাবরণে ছালচামড়াবিহীন বাণীও উদ্ভাবিত হচ্ছে বেশ। এখন যা কিছুই উদ্ভাবিত হোক না কেন, একদল সরোষে জানাবে- তাদের ধর্মগ্রন্থে এই কথা অনেক আগেই বলা ছিলো; যদিও উদ্ভাবনের আগে এ সম্পর্কিত কোনো কথাই তারা বলতে পারে নি। এই প্রবণতা কিছুকাল আগেও বেশ কম ছিলো- সম্প্রতি বেশ বেড়েছে এবং ‘জনপ্রিয়’ বাংলা ব্লগগুলোই তার প্রমাণ। ধর্মকে জোর করে প্রমাণের কিছু নেই, বিজ্ঞানের সাথে মেলানোরও যুক্তি নেই, দুটো দুই ভুবনের বাসিন্দা- বিজ্ঞানের অগ্রসরতার সাথে সাথে একদল মানুষ এই বোধ থেকেও সরে যাচ্ছে। ধর্ম কি তাহলে সময়ের হুমকির মুখোমুখি? টিকে থাকা যখন প্রধান হয়ে দাড়ায়, উপায়ান্তর না দেখে মানুষ তখন নানা কৌশলের আশ্রয় নেয়। ধর্মকে যারা জোর করে বিজ্ঞানময় করতে চাচ্ছেন, তারা কি আর তবে উপায়ান্তর দেখছেন না? ধর্ম কি তাহলে বিশ্বাসহীনতার হুমকির মুখে পড়েছে?
ধর্মের মতোই একদল রবীন্দ্রানুরাগী রয়েছেন এদেশে-ওদেশে। প্রয়োজন থাকুক বা না থাকুক, তারা জোর করে রবীন্দ্রনাথকে দিয়ে সবকিছু বলাবেনই। একবার একটি সভায় একদল জানালেন- রবীন্দ্রনাথ নাকি হেন কিছু নেই, যা নিয়ে কাব্য রচনা করেন নি। আমি জানালাম- ল্যাপটপের ব্যাটারির আয়ু কমে কেন- এ নিয়ে রবীন্দ্রনাথের কোনো রচনা আমার চোখে পড়ে নি। তারা ক্ষিপ্ত হলেন। বললেন, রবীন্দ্রনাথের সময়ে কি ল্যাপটপ ছিলো? আমি বলি- ছিলো না। তাহলে আপনারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কালোত্তীর্ণ, সর্বকালের সেরা ইত্যাদি বলেন কেন?
এই পৃথিবীর কোনোকিছুই সর্বকালের সেরা হতে পারে না। সর্বকালের ধারণা আমাদের নেই, থাকতে পারে না। আমরা কেবল সুদূর অতীত এবং অদূর ভবিষ্যতের কথা কল্পনা করতে পারি। পৃথিবীর সব মানুষ, শিল্প বা সৃষ্টিকে থাকতে হবে এর মধ্যেই।
***
গতকাল ১০ মে তারিখে প্রথম আলোতে জাবেদ সুলতান এবং মুহতাশিম বিল্লাহর ‘কবি ও বিজ্ঞানী’ নামে একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের লেখা কয়েকটি ছত্রের মাধ্যমে লেখক প্রমাণ করতে চেয়েছেন- নিলস বোর, হাইজেনবার্গ, শ্রোয়েডিংজার যে সেসময় কোয়ান্টাম তত্ত্বের ধারণাকে বিকশিত করছিলেন, রবীন্দ্রনাথ তার মর্মার্থ বুঝতে পেরেছিলেন। উল্লেখ্য, কোয়ান্টামের অনিশ্চয়তার তত্ত্বকে সে সময় মানতে যারা নারাজ ছিলেন, তাদের দলে ছিলেন আইনস্টাইন, পোলোনস্কি, রোজেনবার্গের মতো বিজ্ঞানীরা। দুপক্ষেই যুক্তিতর্কের রেশ ছিলো, যদিও শেষ পর্যন্ত আইনস্টাইনদের যুক্তি টেকে নি।
রবীন্দ্রনাথ এ নিয়ে কী বলেছিলেন?
ব্যক্তিগতভাবে কোয়ান্টাম তত্ত্ব বা অনিশ্চয়তার সূত্র ঠিক কিনা বা কোন অংশটি ঠিক, এ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোনো লেখা আমি পাই নি। রবীন্দ্রনাথ বিশুদ্ধ পদার্থবিদ্যার অনুরাগী ছিলেন, এ প্রমাণও মেলে না কোথাও। কিন্তু নিলস বোরদের পক্ষে প্রথম আলোর লেখক তুলে ধরেছেন রবীন্দ্রনাথের এই কথাগুলো-
আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ.
চুনি উঠল রাঙা হয়ে।
আমি চোখ মেললুম আকাশে-
জ্বলে উঠল আলো
পুবে পশ্চিমে।
গোলাপের দিকে চেয়ে বললুম ‘সুন্দর’
সুন্দর হল সে।তুমি বলবে এ যে তত্ত্বকথা, এ কবির বাণী নয়।
আমি বলব এ সত্য,
তাই এ কাব্য।
এখন আসুন দেখি, নিলস বোররা কী বলতে চেয়েছিলেন। তাঁরা একটি বাক্সে জীবিত বিড়াল আর পরমাণু বন্দুক ভরে বাক্সটি আটকে দিয়ে কী ঘটে সেই হাইপোথিসিস নিয়ে কোয়ান্টাম তত্ত্বের ব্যাখ্যা করছিলেন। এখানে বিড়ালটি যদি নড়াচড়া করে তাহলে বন্দুকের গুলি বের হয়ে বিড়ালটি মারা যাবে। প্রশ্ন ছিলো, বাক্স বন্ধ করার পর বিড়ালটি কি জীবিত ছিল নাকি মৃত? এটা বলা কি সম্ভব?
এ অবস্থায় বাক্স না খুলে বলা মুশকিল। সুতরাং এখানে বিড়ালকে জীবিত-মৃত দুটিই ধরা যায়, এটি নির্ভর করবে ব্যক্তির উপর; কোনটি ঠিক তা নিশ্চিত হওয়ার কোনই উপায় নেই। কিন্তু বাক্স খোলার পর ব্যক্তির বিশ্বাস বা ধারণা যাই থাকুক না কেন, বিড়ালটি হয় জীবিত পাওয়া যাবে, অথবা মৃত। ঠিক তেমনিভাবে, আলো কণা ও তরঙ্গ উভয় ধর্মই বহন করছে। নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করার পর অর্থাৎ আলোকে দেখার শর্তানুসারে ব্যক্তির অবস্থান ঠিক করবে আলোর ধর্ম কণাধর্ম নাকি তরঙ্গধর্ম। একটি বিড়াল যেমন একই সাথে জীবিত ও মৃত হতে পারে না, ঠিক তেমনি আলোও একই সাথে কণা ও তরঙ্গ হতে পারে না। ব্যক্তি যখন যে ধর্ম দেখতে চায়, তখন সেটি দেখতে পাবে। আলোকে কণা দেখার প্রস্তুতি নিলে ব্যক্তি আলোকে কণা আকারে দেখবে, তরঙ্গাকারে দেখার চিন্তা থাকলে সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে।
এখন বলুন, কোয়ান্টাম তত্ত্বের এই অংশের সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথার মিল কোন দিক দিয়ে খুঁজব? রবীন্দ্রনাথের চেতনা যখন যেটি দেখতে চেয়েছে, সেটি তখন সেই রঙের হয়েছে বলে? তাই যদি হয়, তাহলে বলা দরকার, পৃথিবীর অনেক কবিসাহিত্যিকের লেখা থেকেই হাজার হাজার বিজ্ঞান খুঁজে পাওয়া যাবে। উদাহরণ হিসেবে যদি বলি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই লিখেছিলেন-
আমি চিনি গো চিনি তোমারে, ওগো বিদেশিনী-
তুমি থাক সিন্ধুপারে, ওগো বিদেশিনী।আমি আকাশে পাতিয়া কান, শুনেছি শুনেছি তোমারই গান…
রবীন্দ্রনাথের এই লাইনগুলো শুনে কি মনে হয় না আজ থেকে প্রায় একশ বছর আগেই রবীন্দ্রনাথ দূর গ্রহের বাসিন্দাদের ঠিকুজি বের করে ফেলেছিলেন, শুনেছিলেন-বুঝেছিলেন তাদের কথা? আজকের বিজ্ঞানীরা ভিনগ্রহের বাসিন্দাদের খুঁজে পাওয়ার জন্য হন্যে হয়ে সার্চ করছেন। ভবিষ্যতে কখনও তেমন পাওয়া গেলে তখন হয়তো কিছু পাঁড় রবীন্দ্রভক্ত এই লাইনগুলো ফেলে প্রমাণ করার চেষ্টা করবে- দেখো, কয়েকশ বছর আগে রবীন্দ্রনাথ এই কথা বলে গিয়েছিলেন!
***
ধর্মগ্রন্থ নিয়ে কথা শুরু হয়েছিলো। ধর্মগ্রন্থগুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে সমাজের প্রতিনিধিত্বকারীর ভূমিকা পালন করেছিলো। সময় বদলের সাথে সাথে সেগুলোর ভূমিকাও হ্রাস পেতে থাকে। যেহেতু কোনোকিছুই সর্বকালের প্রতিনিধি হতে পারে না, সে হিসেবে ধর্মগ্রন্থও সর্বকালের প্রতিনিধি হিসেবে থাকতে পারে না। থাকলে প্রমাণস্বরূপ বিভিন্ন কাল থেকে অন্তত একটি করে উদাহরণ থাকতো, প্রতিটি কালের কোনো না কোনো প্রতিনিদিত্ব থাকতো। কোনো ধর্মগ্রন্থেই সেটি নেই। সেটি যেহেতু নেই, ধর্মগ্রন্থগুলোর এই সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখেই বিজ্ঞানের সাথে তুলনা করা বা আলোচনা করা উচিত। ধর্মকে ধর্মের জায়গায় রাখা উচিত, বিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের জায়গায়। না হলে দুটোকেই অপমান করা হয়। যারা ধর্মকে বিজ্ঞানময় প্রমাণের চেষ্টা করছেন, তাদের মনে রাখা উচিত- প্রডাক্টিভ আর রিপ্রডাক্টিভ কখনো একসাথে মেশে না, যেমনি মেশে না আনপ্রডাক্টিভ আর প্রডাক্টিভ ভ্যালু।
একই কথা রবীন্দ্র পাঁড়ভক্তদের জন্যও। বাঙালী জাতির ভাষা ও সাহিত্যের একটি অন্যতম ভিত রচনা করে দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। বিশ্বসাহিত্যে বাংলা সাহিত্য প্রথম সগৌরবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারাই। বাঙালির মনমানস গঠনে এখনও রবীন্দ্রনাথ অদ্বিতীয়। যুগে যুগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো মানুষ আসেন একজনই, তারা তাদের নিজেদের কালসহ আশেপাশের কয়েকটি শতকও আলোকিত করে রাখেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনেক বিষয় নিয়েই লিখেছেন। তাঁর মতো বিষয়বৈচিত্র্যে মাতোয়ারা সাহিত্যিক খুব কমই পাওয়া যাবে- বিশ্বপরিমণ্ডলেও। তার মানে এই নয় যে, দুনিয়ার যাবতীয় বিষয় নিয়েই তিনি লিখেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এতো এতো বিষয় নিয়ে লিখেছেন যে, চাইলে যে কেউ তাঁর লেখা থেকে উদ্ধৃতি বা লাইন নিয়ে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করতে পারবে- তথাকথিত ধার্মিকরা যে কাজটি এখন করছেন। এই পাঁড় ধার্মিকরা ক্ষীয়মাণ ধর্মের রাজত্বকে পুনরায় বাড়ানোর এক হাস্যকর চেষ্টায় রত। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রে তো তা করার দরকার নেই। পুরো আকাশে তিনি এখনও জ্বলজ্বলে সূর্য। বালির গরম দিয়ে তাঁকে আর উত্তপ্ত করার দরকার নেই।
এই কাজে রবীন্দ্রনাথের কৃতিত্ব বা অবদান খাটো হয় না; কিন্তু রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলে সংক্ষুব্ধ, বিক্ষুব্ধ হতেন অবশ্যই। বরং এরকম উপমা যারা দেন, সবকিছুতেই রবীন্দ্রনাথকে প্রতিষ্ঠার প্রয়াস যারা চালাচ্ছেন, তাদের লেখা বা চিন্তার অযোগ্যতা প্রকাশ পায়। আরেকদিক দিয়ে, সেটা জান্তে হোক বা অজান্তে, এগুলো রবীন্দ্রনাথকে হেয় করার একধরনের প্রয়াশ হিসেবেও দেখা যায়। সুতরাং দোহাই, রবীন্দ্রনাথকে থাকতে দিন তাঁর জায়গাতেই; ধর্ম নিয়ে বকধার্মিক বেড়ে গেছে সমাজে; রবীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রে তা চাই না।
(অনিশ্চিতের লেখাটি মুক্তমনায় পাঠিয়েছেন নুরুজ্জামান মানিক)
রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীতে প্রথম আলো পত্রিকার শুক্রবারের ফিচার পাতা অন্য আলোতে রবীন্দ্রনাথের মজার ঘটনা অংশে রবীন্দ্রনাথের একটা মজার উক্তি দেখেছিলাম। উক্তিটা হল এরকম যে,
“আমি লিখি কি, আর মানুষে অর্থ করে কি”!! কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে কবি এই উক্তি করেছিলেন তা আমার পুরোপুরি মনে নেই। আসলে বাস্তবে হয়ও তাই। কবিরা লেখেন তাদের মনের আনন্দে, আর আমরা সেই লেখা নিয়ে বেহুদা কামড়া কামড়ি করি। আমরা যারা মুক্তমনার নিয়মিত পাঠক তারা সবাই কি বিজ্ঞানী? না। তবে এইটা সত্য যে আমরা সবাই বিজ্ঞানমনস্ক। রবীন্দ্রনাথও বিজ্ঞানমনস্ক ছিলেন, তাই তার লেখায় বিজ্ঞানের কথা বা ভাব আসতেই পারে। এটা নিয়ে ঝগড়া করে রবীন্দ্রনাথকে বিজ্ঞানী বা কিছু একটা প্রমাণ করতে চাওয়ারতো কোন মানে নেই। এতে শুধু শুধুই রবীন্দ্রনাথকে ছোট করা হয়। এটা সত্য যে তিনি বিশ্বজনীন কবি। মানুষের বাস্তব জিজ্ঞাসা তার কবিতায় আসবে সেটাইতো স্বাভাবিক। রবীন্দ্রনাথ যদি কোয়ান্টাম ফিজিক্স নিয়ে আদতেই চিন্তা করতেন তবে তা তিনি সরাসরিই বলে যেতেন। কারন বিজ্ঞান কোন লুকোছাপার ব্যপার না। বিজ্ঞান হল সরাসরি মত প্রকাশের জায়গা। এখানে লুকচুরির কোন স্থান নেই। আর কবিতা বা সাহিত্য হল সম্পুর্ন আলোছায়ার খেলা। আপনি যে কোন সাহিত্যের যে রকম ইচ্ছা অর্থ করতে পারেন। সেটা ব্যক্তিগত প্রকাশভঙ্গি বা মনোভাবের ব্যপার।
বিপ্লবদা,
বিষয়টাকে যে আমার ‘স্টপগ্যপ’ বলতেও কোথায় যেন বাঁধছে। মনে হচ্ছে ওতো অপবিজ্ঞানেই বেশী ব্যবহৃত। কবিগুরু বিজ্ঞানী ছিলেননা অবশ্যই তবে তাঁর সমকালীন বিজ্ঞান মনস্কতার অস্বীকার রবীন্দ্রপোলব্ধির অক্ষমতা ছাড়া কিছুই না। ডঃ অভিজিৎ এর ভাষ্যে তা একেবারেই পরিষ্কার।
মিস ছন্দা-র
‘আমি’কবিতাটি অবশ্যই কোয়ান্টম ফিজিক্স এর কথা বলে।’
উপরোক্ত কথার সাথে আমিও দ্বিমত পোষন করছি। এব্যাপারে আপনার দৃষ্টিভঙ্গী থেকে আমি একটু বাইরে আসতে চাই যদি ঠিকঠাক আপনার বক্তব্য বুঝে থাকি। আমার মনে হয় যেহেতু কবিগুরু বিজ্ঞানী নন আর তাঁর ‘আমি’ কোন বৈজ্ঞানিক প্রকাশনাও নয় কাজেই এর পরীক্ষাকল্পে ফ্রেমওয়ার্ক রচনার প্রশ্নই আসেনা। কিন্তু দেখুন, ব্যাপারটাকে কি এভাবে ভাবা যায় না? বিজ্ঞান তো প্রতিনিয়ত কঠিন বাস্তবতায় প্রকৃতির অতলান্ত রহস্যের কিনারা করতেই ব্যস্ত! সেখানে পরিশিলিত পরিভাষায় থাকে সত্যের সুস্পষ্ট প্রকাশ। বিজ্ঞানী তাঁর নির্মিলিত নিরাসক্ত দৃষ্টি দিয়ে তায় দেখেন, আর উদ্ভাসিত হন ইউরেকা ইউরেকা বলে! আর সেই সুস্পষ্ট সত্যটাকেই কবি দেখেন সমসাময়িক কালের মিথষ্কৃয়ায় তাঁর মাধুর্য মন্ডিত মনস্তত্বের ভেতর দিয়ে। রবি উদ্ভাসিত কবিকে নিয়ে যখন বিতর্ক তখন আরেক অসামান্য কবির একটা উদাহরণ দেই, টেলিস্কোপে চাঁদের বিক্ষুব্ধ অবয়বটা যখন নিশ্চিন্ত, তখন অভাবী কবি সুকান্ত লিখলেন, ‘পূর্ণিমার চাঁদ যেনো ঝলসানো রুটি’। সুকান্ত তো চোখে দূরবীন লাগিয়ে চাঁদ দেখেছিলেন বলে শুনিনি। কিন্তু তাঁর সাহিত্য প্রকাশের মধ্যেকি বিজ্ঞান মনঃস্তত্ত্বের অস্তিত্ত্ব নেই?
ঠিক এমনি করেই আমাদের বাংলার কবি রবি তাঁর কাব্যিক আ্যবস্ট্রাক্টের মধ্যে দিয়ে বিজ্ঞান মনস্তত্ত্বের কিরণ ছড়িয়েছিলেন। বিজ্ঞানের সত্য ধারনের জন্যে যেমন পরিশিলিত পরিভাষা অনুধাবনের প্রয়োজন ঠিক তেমনি কাব্য-সাহিত্যের রসাস্বাদনেও দরকার সমকালীন মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গীর আনুশীলন সাহিত্যের পরিশিলিত পরিভাষায়। কবিগুরুর সাহিত্য নির্মানের বিশেষত্ত্ব বোধ হয় এখানে যে, ব্যক্তি, সমাজ, দেশ-কালের সীমানা ছাড়িয়ে কালত্তীর্নের অব্যক্ততারে হাতছানী দেয়! আর তাইতো স্থান, কাল, পাত্র নির্বিশেষে রবীন্দ্র সাহিত্য যেন স্বতঃসিদ্ধ ভাবেই স্বতস্ফূর্ততায় নিয়তই পাঠকের মনের কথাটাই বলে। এর সাথে সমকালীন বাস্তবতা আর চেতনার দ্যোতনা নিশ্চই আছে। আর বিশ্বজুড়ে তৎকালীন মণীষীকুলের সাহচর্য্যের প্রভাব নিশ্চই এতে রয়েছে। ন ইলে রবিকাব্যের দ্যোতনা রবির ভাস্বরতা নিয়ে কালোত্তির্নের পথে যাত্রা করলো কিকরে?
লেখাটি বেশ ধারালো। রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান মনস্কতা প্রসঙ্গে অভিজিৎ বেশ পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। অনেকের মতে রবীন্দ্রনাথ ‘বিশ্বপরিচয়’ লিখেছিলেন সত্যেন বসুর অনুরোধেই। বইটিতে কিছু তথ্যবিভ্রাট আছে এবং সত্যেন বসু বইটি প্রকাশের আগেই তা দেখেছিলেন। তার পরেও তিনি গুরুত্ব দিয়েছিলেন যে রবীন্দ্রনাথ লিখিত বইটি রবীন্দ্রপ্রেমীরা পড়বেন এবং বিজ্ঞান সম্পর্কে তাঁদের জ্ঞানের পরিধি বাড়বে। এ প্রসঙ্গে আরো একটি ঘটনা উল্লেখ করা যায় – হুমায়ূন আহমেদের ‘কোয়ান্টাম কেমিস্ট্রি’ বইটা কিন্তু শুধুমাত্র হুমায়ূন আহমেদের নাম দেখেই কিনেছেন অনেকে। [এখানে কেউ যেন মনে না করেন যে বিজ্ঞানী হিসেবে হুমায়ূন আহমেদকে আমি কম গুরুত্ব দিচ্ছি। হুমায়ূন আহমেদ নিজে থেকে রসায়নের অধ্যাপনা ও গবেষণা ছেড়ে না দিলে বাংলাদেশের বিজ্ঞানশিক্ষার্থীরা হুমায়ূন আহমেদের কাছ থেকে অনেক কিছু পেতেন।] ত্রিশের দশকে কোয়ান্টাম মেকানিক্স যখন প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে – তখনো স্ক্যানিং ব্যবস্থা এখনকার মতো এতটা উন্নত হয়নি। তাই শ্রোডিংগারের বিড়ালের উদাহরণটি তখন ভ্যালিড ছিল। এখন কিন্তু বাক্সের বিড়াল জীবিত কি মৃত তা স্ক্যান করে দেখা সম্ভব। একটা আলট্রাসনোগ্রাফি করলেই বোঝা যাবে, তার জন্য বাক্স খোলার দরকার হবে না। আমরা আসলে যা নিয়ে কথা বলছি তা হলো – বিখ্যাত ব্যক্তিদের সম্পর্কে অতিরঞ্জনের বিষয়ে। এটা ঠিক বিজ্ঞানের পর্যায়ে পড়ে না। রিচার্ড ফাইনম্যান বলেছিলেন – প্রেম বিজ্ঞান নয়। কিন্তু এখন প্রেমের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা করা হচ্ছে প্রতিবছর ভালবাসা-দিবসে। ‘আমারই চেতনার রঙে পান্না হলো সবুজ’ – লাল নয় কেন? রবীন্দ্রনাথ লাল বললে লালই হতো। কারণ এটা বিজ্ঞান নয়। তবে আমি মনে করি কেউ যদি কবিতায় বিজ্ঞান খুঁজে পান তাতে দোষের কিছু নেই -এটাও একধরণের বিজ্ঞান-প্রেম। কিন্তু আমাদের জন্য ক্ষতিকর হচ্ছে তখন যখন কোয়ান্টাম মেথডকে অনেক বিজ্ঞান-পড়া মানুষও বিজ্ঞান মনে করেন। এ নিয়ে মুক্তমনারা সারাক্ষণ সোচ্চার। অনিশ্চিত একটা ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারেন যে – ধর্মের অপব্যবহার যতটা হয়েছে এবং হচছে – বিজ্ঞানের অপব্যবহারও কিন্তু কোন অংশে কম হচ্ছে না। অপবিজ্ঞানকে বিজ্ঞানথেকে আলাদা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের।
হ্যা, আপনি ঠিকই বলেছেন যে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বলে কিছু নেই। কারণ সব কিছুই আপেক্ষিক। শ্রেষ্ঠ বলতে বুঝায় অতীত ও অবস্থিত বর্তমানের চেয় উন্নততর। কিন্তু তা ভবিষ্যতের চেয়েও উন্নত হবে এটা বলা পাগলামর লক্ষণ। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্ধ অবেগ ও বিজ্ঞান সচেতনতার অভাবে মানুষ কোন সত্যকে চিরন্তনের আসনে বসায় যার কোন অস্তিত্ব নেই। আর ধর্মের বিষয়ে তো কোন কথাই নেই। বিশ্বাসীরা একটু সুযোগ পেলেই কারও মধ্যে ঐশ্বরিক কোন শক্তি খুজে পাবে। যেমন ধার্মীকরা রবীন্দ্রনাথের মধ্যে সনাতন ধর্মের প্রতি প্রগার প্রেম খুজে পেয়ে তাকে ধর্মগুরুর আসনে বসায় অথোচ তারা খোজই রাখেন না যে তিনি আসলে হিন্দুই ছিলেন না। আবার একদিন ইস্কন নামে এক সনাতন ধর্মের পত্রিকা দেখিয়ে একজন আমাকে বললেন য়ে আইনেষ্টাইনের সকল আবিস্কার নাকি বেদ থেকেই পেয়েছেন, তিনি নিয়মিত বেদ পড়তেন। পত্রিকাতে তার সঙ্গে ভারতীয় দুজন বিজ্ঞানীর সাক্ষাতকারের কথা উল্লেখ আছে।তখন আমি বললাম যে তাহলে বেদেই উল্লেখ আছে সৃষ্টিকর্ত নেই। তখন তো সে রেগে বারুদ। আমি বললাম যে যদি আইনেষ্টাইন বেদ থেকে সব আবিষ্কার করে থাকেন তাহলে আপেক্ষিকতার সূত্রও ওখান থেকে পেয়েছেন আসর ই সূত্র সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব নাকচ করে। তখন তার এক খথায় জবাব আমি নাস্তিক। এই হল এদের অবস্থা। যাই হোক আপনার লেখা ভাল লাগল।
>> [1] কোয়ান্টাম বাস্তবতাটা ঠিক-কিন্ত ইন্টারপ্রেটেশন-সেটা যে স্টপগ্যাপ মেজার নয় আপনি জানলেন কি করে?
[২] মেসেজ দিয়ে বিজ্ঞান হয় না। সেই মেসেজকে পরীক্ষালদ্ধ সত্যের মধ্যে বিশ্লেষন করার ক্ষমতা না থাকলে, তা বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্তই না। ‘আমি’ কবিটার কি কোন পরীক্ষা ফ্রেম ওয়ার্ক দাঁড় করানো যেতে পারে? যদি না হয়, তবে এই আলোচনাতে বিজ্ঞান আনা প্রলাপ।
@Biplab Pal
Message দিয়ে, বিজ্ঞান না হ’লেও তার থেকে বড় কিছু হয়।সেটা হ’ল মানুষের দুয়ারে পৌঁছে যাওয়া,কল্যাণে আসা।এত কষ্ট করে প্রমাণ করে ।,Cat theory(যে কোন বিজ্ঞাণ) র কি লাভ যদি সেটা সহজ ভাষায় সাধারণের কাছে বলা না যায়!বিড়ালটি মৃত না জীবিত দেখবে নির্ভর করবে ব্যক্তির ওপর।মানুষ প্রত্যক্ষ নির্ভর এটাই তিনি বলেছেন এই “আমি “কবিতায়।Conception ,clear না হ’লে সহজ করে কোন কিছু বলা যায়না। রবীন্দ্রনাথের সাথে আইনেসটাইনের সাক্ষাৎকার হয়েছিল।বিজ্ঞাণী করেছেন তার কাজ,গবেষণা।কবি করেছেন তার কাজ প্রচারণা। এভাবেই মিলে মিশে হয় মানবতার কল্যাণ।ওঁরা দুজন কোথাও আর নেই।ওদেরকে নিয়ে টানা হেচঁরা করে আমরা যদি এই lesson টুকু নিতে পারি তবেই খুলবে সামনে যাওয়ার দোর।
রবীন্দ্রনাথ ছোট বেলা থেকেই বিজ্ঞান চর্চা করতেন। তার জীবন স্মৃতি প্রবন্ধে এর বিশদ বিবরন আছে। তবে “সত্য’ বিজ্ঞান না সাহিত্যের -ওবজেক্টিভ না সাবজেক্টিভ-এটা নিয়ে বিতর্ক এখনো থাকবে-যতদিন না বিজ্ঞান আরো উন্নত হয়-এবং ‘বাস্তবতা’ (রিয়ালিজম) ও ‘অবাস্তবতা'( এন্টি-রিয়ালিজম) একটি বৃন্তে মিশে যায়।
:yes: @ অভিজিৎ
ক্ষুব্ধ মন নিয়ে সামহোয়্যার ইন ব্লগের জন্য এই লেখাটি লিখতে বসেছিলাম। প্রথম আলোতে এ সম্পর্কিত লেখাটি পড়ে এতোটাই ক্ষুব্ধ ছিলাম যে, এক বসায় এক টানে লেখা শেষ করে সামহোয়্যারে ছেড়ে দিয়েছি। ফলে বেশ কিছু জায়গায় খাপছাড়া লাইন এসে গেছে। থাকুক না হয়, বিক্ষুব্ধ মনের প্রমাণ হিসেবে।
কবুল করে নিই, আমি বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী নই। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ার সময় দুটো কোর্সে পদার্থবিদ্যা ছিলো- এর পরে ব্যক্তিগত আগ্রহ কিছু লেখাপড়া করেছি। কিন্তু পদার্থবিদ্যা সম্পর্কে আমার গভীর কোনো জ্ঞান নেই। যেটা আছে, বেসিক ইনস্টিংক্ট। মশা কামড়ালে যেমন মস্তিষ্কের নির্দেশনা ছাড়াই হাত উঠে যায় মশা মারার জন্য, তেমনি এসব লেখা পড়লে চিন্তাভাবনা ছাড়াই মাথায় রক্ত উঠে যায়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালির মনমানসে এমন গভীরভাবে আছেন যে, তাঁকে বাদ দিয়ে বাংলা বা বাংলা সাহিত্যের কথা চিন্তা করা বাতুলতামাত্র। তিনি লিখেছেন প্রচুর- আজও অবাক হয়ে ভাবি একজন মানুষের পক্ষে এতোকিছু লেখা সম্ভব!- ফলে তাঁর লেখায় স্বাভাবিকভাবেই অনেক বিষয়ই চলে এসেছে। তার মানে এটা নয় যে, তিনি সচেতনভাবে সবকিছু নিয়ে ভেবেছেন কিংবা যে বিষয়গুলো নিয়ে তিনি লিখেছেন, সবগুলো বিষয়েই তিনি পঞ্চিত। সেটা হওয়া সম্ভব নয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেও কোথাও এ দাবি করেন নি। তিনি মানুষের সীমাবদ্ধতার কথা জানতেন। কিন্তু একদল মানুষের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই বিষয়গুলোই ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রচারের যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, সেটা সত্যিই উদ্বেগজনক। মনে রাখা দরকার, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন মানুষ, পুরাণে কথিত দেবতা নন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে যখন আমরা বিচার করতে বসবো, তখন তাঁর কাল, সময় এবং পারিপার্শ্বিকতাকে মাথায় রেখেই বিচার করতে হবে।
মুক্তমনাকে ধন্যবাদ লেখাটি প্রকাশের জন্য। মানিক ভাইকে ধন্যবাদ এখানে পাঠানোর জন্য। অভিজিৎকে ধন্যবাদ প্রতিক্রিয়া দেবার জন্য।
অফটপিক: মুক্তমনার বাংলা ব্লগ ওপেন করলেই অ্যাভাস্ট অ্যান্টিভাইরাস জানান দেয় যে এখানে ভাইরাস আছে। কিন্তু মূল ওয়েব সাইট ওপেন করলে এমনটি হয় না। এ বিষয়ে ওয়েব ডিজাইনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আরেকটি বিষয়: লেখার ১৪ নম্বর লাইনে লেখা আছে ‘এই ব্লগ’। সেটা সামহোয়্যারের জন্য ঠিক ছিলো। এখানে সেটা ঠিক করে ‘এই’ শব্দের জায়গায় ‘সামহোয়্যার ইন’ বসিয়ে দেওয়ার জন্য অ্যাডমিনকে অনুরোধ করছি।
@অনিশ্চিত,
আপনার পরামর্শ মোতাবেক আপনার লেখার ‘এই ব্লগ’ বদল করা হল। তবে কোন নির্দিষ্ট ব্লগের নাম করা থেকে বিরত থেকে সার্বজনীন একটা রূপ দেয়ার চেষ্টা করা হল। দেখুন ঠিক আছে কিনা।
ভাইরাস-এর ব্যাপারটি আরেকটু স্পষ্ট করলে ভাল হয়। আমার কম্পিউটার থেকে সবকিছু ঠিকই দেখাচ্ছ। আপনি কি AVAST ব্যাবহার করেন? AVAST এ সম্ভবত রিডাইরেকশনের কারনে এন্টিভাইরাস ম্যাসেজ আসে। এক ভদ্রলোক মেইল করে এটি জানিয়েছিলেন। আপনি কোন এন্টি-ভাইরাস ব্যাবহার করেন এবং কি ম্যাসেজ আসছে সেটা একটু বিস্তারিতভাবে জানালে বাধিত হব।
পরিশেষে, আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ, আবারো। মুক্তমনায় আপনার উপ্সথিতি আরো অধিকহারে আশা করছি।
@অনিশ্চিত,
আমার পিসিতে এতদিন নরটন এন্টিভাইরাস ছিল। আপনার মন্তব্যের পর অ্যাভাস্ট অ্যান্টিভাইরাস ডাউনলোড করে নিলাম। যে ফাইলগুলোতে সমস্যা দেখাচ্ছিলো, সেগুলো ঠিক করা হয়েছে। আশা করি আর সমস্যা পোহাতে হবে না।
অনেক ধন্যবাদ আমাদের অ্যাভাস্ট এর ম্যাসেজটি জানানোর জন্য।
আপনি অসম্ভব রেগে আছেন।”আমি”কবিতাটি অবশ্যই কোয়ান্টম ফিজিক্স এর কথা বলে।তা কবি যে থিওরী পড়েই আয়ত্ত্ব করুন না কেন? Messageটাই কি মূখ্য নয়? ধর্ম ও বিজ্ঞান আলাদা এই প্রচারণাই ধর্মকে এমন স্বয়ংসম্পূর্ণ করে দিয়েছে।ধর্ম বলে কিছু নেই এটি প্রচারের সময় এখন।Drug Addictদের যেভাবে চিকিৎসা করা হয় সেভাবে।তবেই তারা বুঝবে কেমন হিপ্নোটাইজড হ’য়েছিল।ধর্ম প্রচারক আর ধর্মহীনতা প্রচারক একইভাবে কাজ করছে।ওনারা একে অন্যের বদনাম করত আর এরা ওদের সবার বদনাম করছে।সাধারণ মানুষ বিজ্ঞান বুঝবে কেন?সে বুঝবে জীবন?বিজ্ঞানীকেই সহজ করে,জীবনের ভাষায় বলতে হবে কথা।
চমৎকার এবং সময়োপযোগী লেখা নিঃসন্দেহে অনিশ্চিতের। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সংশয়ী মন খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর, তায় আবার বাঙ্গালীর মধ্যে। ‘বাঙ্গালীর মধ্যে’ কথাটা ইচ্ছে করেই বললাম – কারণ আমাদের মধ্যে ব্যক্তিপূজার প্রাবল্য এতই বেশি যে, এর বাইরে কিছু চিন্তা করতেও আমাদের বাধে।
ধর্মান্ধরা যেমন ধর্মগ্রন্থের প্রতিটি আয়াতে, শ্লোকে বিজ্ঞান খুঁজে পান, তেরশ-চোদ্দশ বছর আগেকার মধ্যযুগীয় আইন কানুনকে ঐশ্বরিক মনে করে, সমাজ, বিজ্ঞান দর্শন সব কিছুই খুঁজে পান, তেমনি রবীন্দ্র জোয়ারে নিমজ্জিত রবীন্দ্র-প্রেমিকেরাও – আজ রাজনীতি অর্থনীতি, দর্শন, বিজ্ঞান, মানবতাবাদ, আন্তর্জাতিকতাবাদ, কোয়ান্টাম মেকানিক্স – এমন কোন ক্ষেত্র নেই – যেখানে রবীন্দ্রনাথের নিত্য নতুন অবদান আবিস্কৃত হচ্ছে না। সমাজতন্ত্রের ব্যর্থতা কেন? বলে দেয়া হচ্ছে – কবিগুরু নাকি সেই বিশের দশকেই ‘রাশিয়ার চিঠি’তে নস্ট্রাডামুসের মতই আমাদের জন্য সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছিলেন। আইনস্টাইন-রবীন্দ্রনাথ সাক্ষাৎকার টেনে বলে দেয়া হচ্ছে – তিনি আইনস্টাইনের চেয়েও ভালভাবে কোয়ান্টাম মেকানিক্স বুঝেছিলেন। তার কৃষি কর্মকান্ড, সমবায় প্রচেষ্টা, ক্ষুদ্র ঋণ – সব কিছু শান্তিনিকেতনের সাথে জোড়াতালি দিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে রাবীন্দ্রিক-অর্থনৈতিক মতবাদ। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষানীতি, আইনী ভাবনা, আন্তর্জাতিকতাবাদ, ঔপনিবেশিকতাবাদ, নারীচিন্তা সবই নতুন নতুন ‘গবেষনার’ আলোকে আমাদের সামনে নানা রঙ্গে নানা ঢঙ্গে উপস্থাপন করার চেষ্টা চলছে। রবীন্দ্র-বিশেষজ্ঞরা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তাদের গবেষনা-সন্দর্ভ লিখছেন, আমরা আম-জনতা সেগুলো গোগ্রাসে গিলে চলেছি…
কিন্তু মিথ আর অতিকথনের বাইরে গিয়ে রবীন্দ্রনাথকে বোঝার চেষ্টা করে ক’জনা? মুক্তমনায় একবার বিভিন্ন তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে একটা প্রয়াস নেয়া হয়েছিলো একসময় ‘Tagore without Illusion‘ রবীন্দ্র-স্তাবকেরা প্রীত হননি। ডান, বাম, মধ্যপন্থি – সব জায়গা থেকেই আক্রমণ এসেছিলো। কেউ কেউ এমন যুক্তিও দিয়েছিলেন, রবীন্দ্রনাথকে সমালোচনা করে আমরা নাকি মৌলবাদীদের হাতকে শক্তিশালী করে তুলছি। অদ্ভুত এ যুক্তি। মৌলবাদীদের খাতিরে কি আমরা মিথ আর অতিকথনে গা ভাসিয়ে দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে পয়গম্বর বানিয়ে ফেলব? অপার্থিব পরিস্কার করেই তখন বলেছিলেন –
Critical thinking which Mukto-Mona promotes, also involves a critical look at widely held views and beliefs on personalities and offer contrarian factual data if applicable. This is an integral part of critical thinking, to those who apotheosize such personalities it may seem as nit picking, cynical thing to do….
কিন্তু কে শোনে কার কথা। ব্যক্তিপুজার প্রাবল্য আমাদের সংস্কৃতিতে এতই বেশি যে, প্রগতিশীল তকমাধারীরাও ‘ট্রিটিকাল থিংকিং’ -এর মাহাত্ম বুঝতে পারেন না, বুঝতে চান না। ধর্মের ক্ষেত্রে যাও বা গোঁজামিলটুকু কেউ কেউ দেখতে পান, রবীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রে সেই বিশ্লেষণটাই তারা ভুলে যান। আবার আরেকদল আছেন যারা মার্কস-এঙ্গেলসকে বানান দেবতা। ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বলার চেষ্টা করেন এংগেলস নাকি ডারউইনের চেয়েও ভাল বিবর্তন বুঝেছিলেন। মস্তিস্কের বিকাশ নিয়ে এঙ্গেলসের বিশ্লেষণ এতটাই নিখুঁত ছিলো যে তা রীতিমত বিজ্ঞানীদের অবাক করে দিয়েছিলো। অথচ তারা খোঁজটুকু করার চেষ্টা করেননা যে, এঙ্গেলসের এ ভাবনা ল্যামার্কিয়ান দোষে দুষ্ট বিধায় বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র থেকে পরিত্যক্ত হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু ওই যে বললাম ব্যক্তিপূজার প্রাবল্য স্ব স্ব ক্ষেত্রে এতটাই বেশী যে, বাক্স’র বাইরে গিয়ে চিন্তা করা অনেক সময়ই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। ব্লগার অনিশ্চিত সেই কাজটিই করেছেন – যা প্রতিটি মুক্তমনার করা উচিত – মিথ এবং অতিকথনে গা না ভাসিয়ে দিয়ে ক্রিটিকাল থিংকিং-কে প্রমোট করা – তা কোরাণ বা বেদই হোক, কিংবা হোক সয়ং রবীন্দ্রনাথ।
এবার উলটো পিঠটা একটু দেখি। আমি মনে করি না রবীন্দ্রনাথ বিজ্ঞানী ছিলেন না বলে তার বিজ্ঞানে কোন জ্ঞান থাকতে পারবে না। তিনি পয়গম্বর হয়ত ছিলেন না, কিন্তু বিজ্ঞান-মনস্ক হতে তার আসলে বাধা ছিলো না। রবীন্দ্রনাথ আসলে ছিলেন সেসময়ের বিজ্ঞানের খোঁজ খবর রাখা আধুনিক মানুষ। এটা বললে রবীন্দ্রনাথের অযাচিত প্রশংসাও করা হয়না, আবার ছোট করারও অবকাশ নেই। আমি আমার একটি লেখায় এগুলো নিয়ে লিখেছিলাম। আবারো বলি তাহলে। রবীন্দ্রনাথের বাল্যকাল থেকেই শুরু করা যাক। মাত্র সাড়ে বারো বয়সে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ একটি অস্বাক্ষরিত বিজ্ঞানভিত্তিক প্রবন্ধ লেখেন; শিরোনাম-‘গ্রহগণ জীবের আবাসভূমি’। এটি কিন্তু এখন স্বীকৃত যে, ‘গ্রহগণ জীবের আবাসভূমি’ই রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত গদ্য রচনা । পরবর্তী জীবনে রবীন্দ্রনাথ অন্ততঃ দু’জায়গায় সেই কিশোর বয়সে লেখা রচনাটির উল্লেখ করেছিলেন। এই লেখার অনেক অনেক বছর পার করে শেষ বয়সে এসে কবিগুরু একশো পনের পৃষ্ঠার আরেকটি বিজ্ঞানভিত্তিক বই লিখলেন, নাম – ‘বিশ্বপরিচয়’। শুধু তাই নয়, তিনি বইখানি উৎসর্গ করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়কার কৃতি শিক্ষক, উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্র নাথ বসুকে। এগুলো কিন্তু রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞানসুলভ মননকেই তুলে ধরে।
আইনস্টাইন-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাক্ষাৎকার নিয়ে অনেক জলই হয়ত ঘোলা করা যাবে। রবীন্দ্রনাথ সত্যই কোয়ান্টাম মেকানিক্স বুঝতেন কিনা সেটা নিয়ে সংশয় করার যথেষ্ট কারন আছে। তবে তারপরেও কিন্তু বলা যায়, রবীন্দ্রনাথ যেহেতু আধুনিক বিজ্ঞানের খোঁজখবর রাখতেন, সেহেতু বিজ্ঞানের মূলনীতিগুলো আয়ত্ব করা হয়ত তার জন্য কঠিন ছিলো না। সেজন্যই সত্যের প্রকৃতি নিয়ে তিনি আইনস্টাইনের অবস্থানের বিপরীতে মত দিয়েছিলেন। কবির কথা ছিলো – ‘সত্য তো মানুষের ভেতর দিয়েই প্রতিভাত হয়।’ মজার ব্যাপার হল, আমরা মেনে নেই বা না নেই, ১৯৮২ সালে অ্যালেইন অ্যাস্পেক্ট আইনস্টাইনের ই.পি.আর মানস পরীক্ষাকে পূর্ণতা দান করেন একটি ব্যবহারিক পরীক্ষার মাধ্যমে, তা কিন্তু সত্যের প্রকৃতি নিয়ে আইনস্টাইনের ধারনার বিপরীতেই যায়। সেজন্যই হয়ত নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রসায়নবিদ প্রিগোঝিন পরে মন্তব্য করেন:
“The question of meaning of reality was the central subject of a fascinating dialog between Einstein and Tagore. Einstein emphasized that the science had to be independent of the existence of any observer. This led him to deny the reality of time as irreversibility, as evolution. On the contrary Tagore maintained that even if absolute truth could exist, it would be inaccessible to the human mind. Curiously enough, the present evolution of science is running in the direction stated by great poet.’
তবে সবাই যে প্রিগোঝিনের সাথে একমত হয়েছেন তা নয়। বিশেষ করে বার্ট্রান্ড রাসেল কবিগুরু সম্বন্ধে কখনই উঁচু ধারণা পোষণ করতেন না। তিনি একবার রবীন্দ্রনাথের বক্তৃতা শুনে এসে রবীন্দ্র-দর্শন সম্বন্ধে বলেন : ‘আমি দুঃখিত যে রবীন্দ্রনাথের সাথে আমার একমত হওয়া সম্ভব নয়। অনন্ত (infinite) সম্বন্ধে তিনি যা বলেছেন তা অস্পষ্ট প্রলাপমাত্র (vauge nonsense)। রবীন্দ্রনাথের বক্তৃতা সম্বন্ধে তার মন্তব্য ছিলো – ‘It was unmitigated rubbish’।
রবীন্দ্রনাথ যে আধুনিকবিজ্ঞানের তত্ত্বগুলো সম্বন্ধে ভালই ওয়াকিবহাল ছিলেন, তার আরেকটি প্রমাণ পাওয়া যায় স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর সাথে তার সম্পর্ক থেকেও। বন্ধু এবং হিতৈষীর বাইরেও রবীন্দ্রনাথের আরেকটি বড় পরিচয় ছিলো যে, তিনি জগদীশ চন্দ্রের টেকনিকাল পেপারগুলো সাধারণ মানুষদের কাছে জনপ্রিয় করে তোলেন। যেমন, ১৯০১ সালে বঙ্গদর্শনে প্রকাশিত (শ্রাবণ সংখ্যা) একটি লেখায় জগদীশ চন্দ্রের কাজের উপর ভিত্তি করে রবিঠাকুর রচনা করেছিলেন একটি প্রবন্ধ – ‘জড় কি সজীব?‘ । তার ও আগে আষাঢ় সংখ্যায় লিখেছিলেন ‘আচার্য জগদীশের জয়বার্তা’ নামের আরেকটি প্রবন্ধ। রবীন্দ্রনাথের হয়ত সংশয় ছিল প্রবন্ধগুলোর মান ও গুণ নিয়ে, তাই জগদীশচন্দ্র বসুকে একটি চিঠিতে বলেছিলেন –
এখানে উল্লেখ্য ইলেক্ট্রিশ্যান (The Electrician) সে সময়কার জনপ্রিয় বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা ছিলো। এ থেকে বোঝা যায়, রবীন্দ্রনাথের পড়াশোনার ব্যপ্তি কম ছিলো না।
জগদীশ চন্দ্র বসু রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান বিষয়ক লেখার প্রশংসা করে বলেছিলেন :
যা হোক এগুলো কোনটি রবীন্দ্রনাথকে ‘পয়গম্বর’ করে তুলে না, বরং এই সত্যই আমাদের সামনে হাজির করে যে, তিনি ছিলেন পড়াশোনা করা স্বশিক্ষিত একজন আধুনিক মানুষ। এইটুকু কৃতিত্ব রবীন্দ্রনাথ বোধ হয় পেতেই পারেন।
I agree with the gist of Avijit Roy’s comments. Besides being an extra-ordinary poet, and Tagore was also a well-educated, highly enlightened and modern person who kept up with the times.
Tagore did know science and its latest developments as well as any non-scientist would be able to know. I mentioned in a previous post that I read Tagore’s “Our Universe” while I was a physics student at Dhaka University. I read the book at about the time we had completed a couple of courses in quantum mechanics. I was truly impressed that he seemed to correctly understand the concepts of quantum mechanics, something that many physics students and even some teachers I know apparently did not. But I am not sure whether he could have solved the Schrodinger equation for the hydrogen atom, one of the simplest quantum mechanics problems!
As you might be able to guess, I am a Tagore admirer but not a Tagore worshipper. Tagore’s body of work speaks to me of a person of immense breadth of mind and extra-ordinary creativity. As a Bengali, I feel that the myriad-minded poet was able to capture and brilliantly articulate every thought and emotion, with all of their strands and nuances, that form the mosaic of the Bengali experience. I am so addicted to Tagore that a CD of Tagore songs is still my favorite travel companion when I go on long road trips, and it has been so for more than twenty years!
Yet I acknowledge, like Anishchito and Avijit Roy, that Tagore was human and had his share of shortcomings. He has been criticized for his rather lukewarm stance on the issue of Indian independence and his apparent softness toward the British (in spite of his rejection of knighthood on the Jalianwalabag issue and instances of anti-imperialist/anti-colonial writing), his outlook on women (mildly male supremacist and condescending), and finally his alleged indifference to the Muslim part of the Bengali diaspora, some evidence to the contrary notwithstanding (Musamanir Golpo, Ghare Baire, etc.). It will take a long article discuss my own views on these criticisms and I do not wish to do it here. I will summarize my views by saying that while some of these criticisms might be motivated by communalism of some Muslims and by political ideology (especially of the doctrainaire left), most of these criticisms do have some validity. Even if we agree with these criticisms, we can still say that Tagore’s humanism and universality of spirit transcend his alleged and actual shortcomings, and he was indeed one of the towering giants of the twentieth century.
But acknowledging his flaws also means that we do not deify him, that we should think of him as a giant among human beings, but a human being nevertheless. It also means that we do not elevate him to the status of a “biggani” just because he was knowlegeable about “biggan.” He was not a substantive and rigorous philosopher either, although he thought deeply about, and expressed himself eloquently on, philosophical questions. His exchange with Einstein shows a dogmatic insistence on the subjectivist position, a position that can be easily refuted by standard philosophical arguments. Quantum mechanics told us that *observability* and *measuribility* of reality were subjective but that is different from saying that *existence* of reality itself was subjective. I would be very interested to know what contemporary Marxists thought of Tagore’s views on subjectivity of reality because for them objectivism was an article of faith. Some of you may know, or might be interested to know that Marxists initially rejected even Einstein’s theory of relativity because they thought, incorrectly, that it contradicted objectivism.
While I find the spiritualist strand of his thinking and writing the most fascinating and rich, I find his talk about “living in harmony with the infinite” a little vaccous and contrived. While I would not go so far as calling any of the opinions or work of Tagore “unmitigated trash,” as Bertrand Russell did (and Russell was somewhat of an arrogant man), we have to admit that some of his work falls below the high standard that shines brilliantly through the almost the entirity of his literary production.
What has touched me most about Tagore’s writing, is the enlightened spiritualism that anchors itself in a pantheist metaphysics, the view that one can find God’s presence in everything. Let me end my post by quoting two of my most favorite lines, which are signature Tagore spiritualism,
“Ei klanto dhorar shamolancholo ashone,
tomai korigo namoshkar.
Oi stobdho tarar mouno mantra bhashane,
tomai korigo namashkar.”
Now, I have a question to my friends who think Tagore was a “biggani.” In the second line, is Tagore saluting “thee” in the “soundless speech of the silent star,” or is he talking about radio astronomy? 🙂
Regards,
M. Harun uz Zaman
P.S. Please forgive my poor transliteration and translation.