হজরত আলি দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন কিন্তু মুয়াবিয়া আলি পরিবারের পিছু ছাড়লেন না। হজরত হাসান (রাঃ) ঘরমুখো নিরীহ সরল স্বভাবের মানুষ ছিলেন, রাজনীতি বা ক্ষমতালোভী ছিলেন না তবে নারীলোভী ছিলেন। হজরত আলির ভক্তগণের চাপে হাসান প্রথমে অস্বীকার করে পরে অনিচ্ছাকৃতভাবে খেলাফত গ্রহণ করেন। হাসানকে ক্ষমতা থেকে সরানো এখন হজরত মুয়াবিয়ার (রাঃ) জন্যে মাটির পুতুল ভাঙার মতোই সহজ। এক নাগাড়ে দীর্ঘ তিন যুগের শাসনকার্য পরিচালনায় দক্ষ মুয়াবিয়া সবগুলো কাজ করেন সুপরিকল্পিতভাবে। তিনি জানেন ধর্ম অশিক্ষিত ও দুর্বল মানুষকে ধোঁকা দেয়ার একটি সহজ অথচ শক্তিশালী অস্ত্র, তা দিয়ে উন্নতশীল রাষ্ট্রগঠন বা গণকল্যাণমুখী কোনো কাজ সাধন হয় না। তাই মাঝে-মাঝে তিনি প্রয়োজনে খুব সতর্কতার সাথে ধর্ম ব্যবহার করতেন কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনায় ধর্মের ধারে কাছেও যেতেন না, বরং তিনি পার্শ্ববর্তী খ্রিস্টান রাজ্য বাইজানটাইন, আরমানিয়ার রাষ্ট্র পরিচালনা পদ্ধতি অনুসরণ করতেন। পরবর্তীতে ঐ সকল এলাকা দখল করে বহু খ্রিস্টান ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী লোকজনকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত করেন। বহুজাতিক সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাজতন্ত্রের আদলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হজরত মুয়াবিয়া ধর্মনিরপেক্ষ এক শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়ে তোলেন। যুদ্ধকালীন কঠিন দুর্যোগপূর্ণ সময়ে সিরিয়ার জনগণ সবসময় তাদের নেতার পাশে থেকে সমর্থন দিয়েছেন। পক্ষান্তরে হজরত আলির ধর্মতান্ত্রিক ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্থায় মানুষ অনাস্থা এনে দলে দলে মুয়াবিয়ার দলে আসতে থাকে। হজরত আলির একান্ত বাধ্য সৈন্যগণ এমনকি নবী বংশের হজরত হাসানের আপনজন চুরি দুর্নীতি মিথ্যাচারে জড়িয়ে পড়েন। হাসান একদিন দুঃখ করে বলেন, এই দুনিয়ায় নবীর আদর্শ কোরআন হাদিসের অনুসারী একজন মানুষও কি বেঁচে নেই?
হজরত মুয়াবিয়া কুফা ও বসোরার অবস্থা পরখ করার লক্ষ্যে দুইজন গুপ্তচর পাঠালেন। একই সাথে কুফার অদূরে ৬০ হাজার সৈন্য মোতায়েন করে হাসানকে পত্রমারফত জানিয়ে দিলেন- “স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করো নইলে অস্ত্রের মাধ্যমে কুফা দখল করা হবে”। হাসান তাঁর পিতার রক্ষিত ৪০ হাজার সৈন্য থেকে হজরত কায়েসকে সেনাপতি করে ১২ হাজার সৈন্য মুয়াবিয়ার মুকাবিলায় সীমান্তে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে পারস্যের প্রাচীন বিলাসবহুল কুসুম কাননে বিশ্রাম নেন। বিশ্রামরত অবস্থায় হাসানের কাছে খবর এলো যে, সেনাপতি হজরত কায়েস আর বেঁচে নেই, সৈন্যগণ রণভঙ্গ দিয়ে পলায়ন করেছে। পালিয়ে আসা হাসানের নিজের সৈন্য ও বিক্ষুদ্ধ জনতা দৌঁড়ে এসে তাঁর রঙ্গমঞ্চের তাঁবু ছিড়ে ছিন্নভিন্ন করে তাদের মনের ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করলো। যে মখমল কার্পেটে বসে তিনি আয়েশে আরাম করছিলেন, একজন লোক হেঁচকা টানে কার্পেটটি উঠিয়ে নেয়, তারা হাসানকে কাফের মুশরিক বলে গালি দিতে লাগলো। অবস্থা বেগতিক দেখে হজরত হাসান পালিয়ে আত্মগোপন করলেন। ভীরু ভীত্ হাসান মুয়াবিয়ার কাছে সংবাদ দিলেন যে, তিনি বিনা যুদ্ধে দুটি শর্তে আত্মসমর্পন করতে রাজি আছেন। শর্তনামায় হজরত হাসান লিখলেন : এক. কুফায় বাবার পৈত্রিক সম্পত্তি রাজস্বখাতে জমাকৃত সোনা-দানা টাকা-পয়সা আমাকে দিতে হবে, যাতে বাকি জীবনটুকু কাটাতে আমাকে আর্থিক সমস্যায় পড়তে না হয়। দুই. আমার বাবা ও আমাদের পরিবারের নামে জুমার নামাজে খুৎবা পাঠে অভিশাপ দেয়া বন্ধ করতে হবে। মুয়াবিয়া ইচ্ছে করলে বলপূর্বক কুফা দখল করতে পারতেন। কুফার সামান্য ধনের পিপাসা মুয়াবিয়ার নেই, আছে নবী মুহাম্মদের বংশের রক্তপান করার নেশা। বুদ্ধিমান মুয়াবিয়া অপ্রয়োজনে তাঁর একটি সৈন্যও হারাতে রাজি নন। হাসানের দুটো শর্তই তিনি মেনে নিলেন। তবে দ্বিতীয় শর্তের ব্যাপারে বললেন- রাষ্ট্রীয়ভাবে আলি পরিবারকে অভিশাপ দেয়ার বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেয়া হলো, তবে জনগণ যদি স্বেচ্ছায় তা চর্চা করে তাতে সরকারের কিছু বলার থাকবে না। হজরত আলির অন্ধ সমর্থক, বেঁচে থাকা অবশিষ্ট শিয়াদের পানে ব্যক্তি স্বার্থপর হাসান ফিরে তাকালেন না। রাজস্ব কিছু সম্পদ নিয়ে তিনি স্বপরিবারে মদিনায় চলে যান। কুফায় হাসান আত্মসমর্পন করার কিছুদিন আগেই বসোরার গভর্নর (নবীবংশের) ওবায়দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হজরত মুয়াবিয়াকে চিঠি লিখে আত্মসমর্পন করে তার দলে যোগ দিয়েছিলেন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরির অভিযোগে আলির যুগেই অভিযুক্ত হয়েছিলেন। স্বেচ্ছায় বসোরার গভর্নরপদ ত্যাগ করার আগে রাজভাণ্ডার শূন্য করে নিয়ে যান। মুয়াবিয়া এখানেও অসন্তুষ্ট হলেন না। এখন শুধু হাসান আর হোসেনের প্রাণ দুটো হাতে এলেই হয়, মুয়াবিয়ার মিশন সম্পূর্ণ কমপ্লিট।
সমস্ত আরব বিশ্বের একচ্ছত্র অধিনায়ক সম্রাট মুয়াবিয়া রাজকীয় বেশে কুফায় প্রবেশ করলেন। জনগণ প্রফুল্লচিত্তে ফুলের মালা দিয়ে তাঁকে বরণ করলো। কুফা নগরীকে বসোরার অন্তর্ভুক্ত করা হলো,দামেস্ক হলো মুসলিম সাম্রাজ্যের রাজধানী। এবার গোপনে সকলের অগোচরে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলে নিলেই হয়। হজরত মুয়াবিয়া (রাঃ) গুপ্তচরের মাধ্যমে হজরত হাসানের স্ত্রী যায়েদা বিনতে আশাত বিন কায়েসকে জানিয়ে দিলেন যে, যায়েদা যদি তার স্বামী হাসানকে হত্যা করতে পারে তাহলে তাকে একলক্ষ দিরহাম পুরস্কার দেয়া হবে এবং খলিফার পুত্রবধু করে রাজপ্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হবে। একদিন হাসান রোজা ছিলেন,যায়েদা তার স্বামীকে দুধে বিষ মিশিয়ে ইফতার করতে দেন। বিষ পানের চল্লিশ দিন পর ৬৭০ খ্রিস্টাব্দে আরবি ৫০ হিজরির সফর মাসে হজরত হাসান (রাঃ) ইহলোক ত্যাগ করেন। যায়েদা স্বামীকে হত্যা করে যখন মুয়াবিয়ার কাছে তার পুরস্কার দাবি করলেন, হজরত মুয়াবিয়া যায়েদাকে একলক্ষ দিরহাম পাঠিয়ে দিয়ে বললেন- স্বামী হত্যাকারী মহিলাকে আমার পুত্রবধু বানাতে পারি না। মুয়াবিয়া এবার ভাবলেন, নিজে ক্ষমতায় থাকতেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা উমাইয়া বংশের হাতে রাখার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করতে হবে। প্রথমে বিশ্বস্ত ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করলেন, স্বপুত্র এজিদকে রাজপুত্র ঘোষণা দিয়ে রাজতন্ত্র কায়েম করবেন। বিষয়টা সারা দেশে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করলো। হজরত মুয়াবিয়া তাঁর পুত্র এজিদকে রাজকুমার, না খলিফা ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং গণতান্ত্রিক পন্থায় জনগণের সমর্থনে না বল প্রয়োগ করে পুত্রের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অর্পণ করেছিলেন, এ নিয়ে ঐতিহাসিকগণের মধ্যে সীমাহীন মতোবিরোধ দেখা যায়। আমরা প্রবন্ধ সংক্ষিপ্ত রাখার লক্ষ্যে দু-একটি উদাহরণের প্রতি আলোকপাত করবো। ইবনে খালেদুন তাঁর Qayd ‘AL-Shareed min Akhbar Yazeed’ বইয়ের ৭০ পৃষ্ঠায় বলেছেন : Mu’awiyah was eager for people’s agreement to give allegiance to his son Yazeed. He resolved to take allegiance to Yazeed as crown prince. So he consulted the grandest companions, the masters of the people and the district’s governors. They all accepted. Delegations from the districts came with acceptance to give allegiance to Yazeed. Many companions gave him the allegiance as well. Hafij Abdul ghoni says, ‘His (Yazeed) caliphate is reightful, sixty of the companions of the prophet gave him the allegiance. Abdullah Ibn’Umar was one of them’.
এই তথ্যানুযায়ী নবীর সহচরী ৬০ জন সাহাবি স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুয়াবিয়ার প্রস্তাব সমর্থন করেছিলেন। সুতরাং এজিদকে ইসলাম বিরোধী বললে সাহাবিদেরকেও অপমান করা হবে। হয় এজিদ ও সাহাবিগণ সত্যের পথে ছিলেন, না হয় যে অপরাধে এজিদ দোষী সেই অপরাধে সাহাবিগণও দোষী। মুয়াবিয়া তাঁর পুত্র এজিদকে বলেন- ‘O my son, I have arranged everything for you, and I have made all the Arabs agree to obey you. No one will now oppose you in your title to the caliphate, but I am very much afraid of Husayn Ibn Ali, Abdullah Ibn Umar, Abdur Rahman Ibn Abu Bakr, and Abdullah Ibn Zubayr. Among them Husayn Ibn Ali commands great love and respect because of his superior rights and close relationship to the Prophet. I do not think that people of Iraq will abandon him until they have risen in rebellion for him against you. As far as possible, try to deal with him gently. But the man who will attack you with full force, like a lion attacks his prey, and who will pounce upon you like a fox when it finds its opportunity to pounce, is Abdullah Ibn Zubayr. Whenever you get a chance, cut him into pieces’. (ইক্বদ আল ফারিদ, ভলিউম ৪, পৃষ্ঠা ২২৬ )। আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়েরকে এজিদ কেটে কুটরো টুকরো করেছিলেন কিনা জানা যায়নি তবে পিতার অসম্পূর্ণ কাজটি তিনি পূরণ করেছিলেন। এজিদ অত্যন্ত নৃশংস অমানুষিকভাবে হজরত হোসেনকে (রাঃ) কারবালা প্রান্থরে স্বপরিবারে হত্যা করেন। মৌলানা সাঈদ কুতুবের লেখা ‘Social Justice in Islam’ বইয়ের ২০৯-২১০ পৃষ্ঠায় আমরা আরও দেখতে পাই- After the oath was taken to Yazid in Syria Muawiya gave Syed ibn Aas the task of gaining the acceptance of the people of the Hejaz. This he (Syed ibn Aas) was unable to do. So Muawiya went to Mecca with an army and with full treasury. He called together the principal Muslims and addressed them thus: ‘you all know that I nave lived among you, and you are aware also of my ties of kindred with you. Yazid is your brother and your nephew. It is my wish that you take the oath of allegiance to Yazid as the next Caliph. Muawiya was answered by Abullah ibn Zubair, who gave him a choice of three things to do, first he might do as Allah’s Massenger had done and appoint no successor, second he might do as Abu Bakr had done and nominate a successor, third he might do as Umar had done and hand over the whole matter to a council of six individuals. Muawiya’s anger was kindled, and he asked Abullah ibn Zubair, ‘Have you anymore to say?’ ‘No; said Abullah ibn Zubair. Muawiya turned to the others and said ‘And you?’ ‘We agree with what Abullah ibn Zubair said’ they replied. Then Muawiya addressed the meeting in threatening terms-‘I stand to my words and I swear by Allah that if any of you speaks one word against the decision that I take up, no word of answer will he receive, but first the sword will take his head and no man can save his life’. So the people took the oath. (ঈষৎসংক্ষেপিত)। মৌলানা হজরত রসিদ আখতার (দেওবন্দি) তাঁর ‘তাহজীব আওর তামাদ্দুনে ইসলাম’ বইয়ের ১ম পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন যে- হজরত মুয়াবিয়া (রাঃ) সাধারণ মানুষকে জোরপূর্বক এজিদকে খলিফা মানতে বাধ্য করেছিলেন। একই বক্তব্য পাওয়া যায় সিরিয়ান লেখক হজরত রসিদ রেজার ‘ইমামাতুল উজমা’ বইয়ের ৯৯ পৃষ্ঠায়। অধ্যাপক সাইয়্যেদ আকবর এলাহাবাদী তার ‘মুসলমানৌ কা উরজ ও জাওয়াল’, পৃষ্ঠা ৫৩ এবং সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদি তার ‘খেলাফত আওর মুলকিয়াত’, পৃষ্ঠা ১৬৪/১৬৫ বইয়ে উভয়েই মুয়াবিয়াকে অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক এজিদকে খলিফা মানতে বাধ্য করার দায়ে অভিযুক্ত করেন। তবে সুখের কথা হলো কোনো প্রকার সংঘাত, প্রাণহানী ছাড়াই হজরত মুয়াবিয়া তাঁর রাজতন্ত্র কায়েম করার ইচ্ছে সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছিলেন। ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর এজিদ তার পিতার স্থলাভিষিক্ত হন। উমাইয়া বংশ ৬৬১ থেকে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এক নাগাড়ে প্রায় ৯০ বৎসর রাজত্ব করেছিলেন। তাই হজরত মুয়াবিয়া (রাঃ) আরব বিশ্বে উমাইয়া রাজতন্ত্রের স্থপতি হিসেবেই চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। মিথ্যা, প্রতারণা, প্রবঞ্চণার উপর ভিত্তি করে যে ইসলামের জন্ম, জগতের অগণিত নিরপরাধ শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষের রক্ত পান করে যার বিকাশ, প্রাসাদ ষড়যন্ত্র তার বেঁচে থাকার অনিবার্য অবলম্বন।
– সমাপ্ত
নোটঃ এই সিরিজটি লিখতে গিয়ে বহু গ্রন্থের সাহায্য নেয়া হয়েছে। ইসলামের ইতিহাসের প্রেক্ষাপট পর্যালোচনায় সবচেয়ে প্রমান্য দলিল হিসেবে গন্য করা হয় সহি বুখারি, সিরাত এবং তারিখ আল্ তাবারি’র তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুককে। এগুলো ছাড়াও মৌলানা সাঈদ কুতুবের ‘আদালাহাল ইজতিমাইয়্যা ফিল্ ইসলাম’, সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদির ‘খেলাফত ও রাজতন্ত্র’, খিলাফত ওয়া মুল্কিয়াত, মুসলমানৌ কা উরজ ও জাওয়াল, রাবিউল আবরার ওয়া নুসুসুল আখবার সহ বহু গ্রন্থের সাহায্য নেয়া হয়েছে। কিছু রেফারেন্সের সচিত্র সাইটেশন এখানে দেয়া আছে।
আকাশ মালিক, যুক্তরাজ্য নিবাসী মুক্তমনা সদস্য। ধর্ম, রাজনীতি এবং সমাজ নিয়ে নিয়মিত লিখে আসছেন। ই-মেইল : [email protected]
একনাগাড়ে পুরোটা পড়লাম, আকাশ মালিক ভাই কে ধন্যবাদ, ইসলামের ভেতরের সত্যটা, ইসলামের মূলভিত্তিটা নানারকম তথ্য উপাত্ত থেকে বিশ্লেষণ করে আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্যে।
এই সমস্যা বর্তমানে বাংলাদেশ ও।আমার বাড়ীর পাশের মসজিদের হুজুর সব সময় ব্যক্তিগত হাদিস বলে, উল্টা পাল্টা বুঝাইয়া মানুষের কাছে টাকা দাবি করে মসজিদের জন্য , টাকা দিলে নাকি অনেক ছোঁয়াব পাওয়া যাইব। আর নিজে বিভিন্ন রকম কথা বইলা সুবাহানাল্লা, মাশাল্লা ,আর নাউঝুবিল্লা বলে চিল্লাচিল্লি পারে,সাথে সাথে পাবলিকও চিল্লায়। এক দিন ১ বন্ধু(নতুন হুজুর হইছে) বললাম তুই কোথা থেকে আসলি? বন্ধু উত্তর দিল আল-হামদুলিল্লা। যখন বন্ধুদের সাথে ব্যপার টা শেয়ার করলাম, তখন সবাই হাসাহাসি করল।
উন্নত বিশ্ব এই পন্থাইয় অবলম্বন করে,তারা চায় আমরা সবসময় ধর্ম নিয়া ব্যস্ত থাকি, তাহলে আমরা আমাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হব না, আর ওরা আমদের মাথায় সব সময় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাবে।
নিবন্ধটি প্রকাশিত হলে তা সত্যি সত্যি বাজিমাৎ করবে। ইসলামি ধর্ম ভাঁড়দের আস্ফালন অনেকাংশে কমে আসবে। আমি বইটিকে দারুণ একটি সৃষ্টি বলব যা বিগত ১৪০০ বছর ধরে উন্মাদ ইসলাম ধর্মাবলম্বিদের গালে বিশাল শক্তপোক্ত চপেটাঘাত হিসেবেই আছড়ে পড়বে। তবে ঠিক জানি না বইটা শেষ পর্যন্ত তাণ্ডব নৃত্যের ইসলাম ধর্মকে কোথায় ঠেলে নিয়ে যাবে।
হজরত মুহম্মদ (দঃ) এর বহুল প্রচারিত হাদিসঃ “তোমরা সত্য গোপন কর না, সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢেক না” সত্যিই আজ হাস্যকর মনে হচ্ছে।
@সত্য অনুসন্ধানি,
আপনার বেশ কয়েকটি গুরুত্তপূর্ণ মন্তব্য পড়লাম, যা আগে চোখে পড়েনি। ধন্যবাদ সুচিন্তিত মন্তব্য, পরামর্শ ও সমর্থনের জন্যে। আপনি বলেছেন বোকার স্বর্গ ডাউনলোড করতে পারেন নি। আপনার ই-মেইল এড্রেসটি নিচের ঠিকানায় দিন আমি সম্পূর্ণ বইটি (সর্বশেষ আপডেইটেড) আপনাকে পাঠিয়ে দেবো। উল্লেখ্য, পুরনো ভার্সনে বেশ কিছু ভুল ছিল, নতুন ভার্সনে তা সংশোধিত করা হয়েছে।
[email protected]
যুগে যুগে নানাভাবে ইসলামের ইতিহাসের বিকৃতি সাধন করা হয়েছে এবং মানুষ সেই চক্রনতের ফাঁদে পা দিয়েছে । আমি অবাক হলাম যে কীভাবে একজন মুসলমান হয়ে আপনি হজরত হাসান (রাঃ) কে নারীলভী আক্ষা দিলেন ? মূয়াবীয়া চক্রান্তকারী- এ ব্যাপারে কারো সন্দেহ নাই কিন্তু তাই বলে হজরত হাসান (রাঃ) কে নারীলভী আক্ষা- এটা কোন কথা হোলো? একটা বই এর reference দিলেই সব হয়ে গেলো? আমি আর অবাক হলাম যে অন্যান্য ব্লগাররাও কিছু না বুঝেই বাহবা দিছছেন ।
@তারেক,
ভাই আপনাকে ধন্যবাদ। আমি আপনার সাথে সম্পূর্ন একমত- “আমি আরো অবাক হলাম যে অন্যান্য ব্লগাররাও কিছু না বুঝেই বাহবা দিচ্ছেন।”
তাদের মাঝে অজ্ঞতা, মূর্খতা, হিংসা, নীচতা কাজ করছে। যারা এসব লিখেছে, হয়তো তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাদি খুঁজলে দেখা যাবে, তাদের জীবনটাই দুষ্কর্মে ভরা। মুক্ত-মনার নামে তারা শয়তানী-পাপাচারে লিপ্ত। নিজেদের পাপ-কে জায়েজ করার জন্যেই তারা এসব করছে। সুতরাং ধৈর্য ধরুন।
@তারেক,
আর্কাইভ থেকে খুঁজে খুঁজে মুক্তমনার পুরাতন লেখাগুলো পড়ছেন দেখে ভাল লাগলো। সাহাবী মুয়াবিয়াকে সন্দেহাতীতভাবে চক্রান্তকারী মেনে নিলেন কিন্তু হাসানকে নারী লোভী মানতে পারছেন না। হজরত মুয়াবিয়ার পুত্র এজিদের সাথে হাসান-হোসেন পরিবারের শত্রুতার কারণ রাজনৈতিক বা ক্ষমতার লোভ ছিল সত্য তবে নিঃসন্দেহে নারী লোভও এই লড়াইয়ে ইন্ধন যুগিয়েছিল যার সমাপ্তি ঘটে কারবালায়। সংক্ষেপে ঘটনাটা বলি-
মুয়াবিয়ার ছেলে এজিদ একজন বিবাহিত নারীর প্রেমে পড়েছিলেন। মহিলা ছিলেন আবদুল জব্বার নামের এক ভদ্রলোকের স্ত্রী, নাম তার জয়নাব। এজিদের মা কলে-কৌশলে আবদুল জব্বারের সঙ্গে জয়নাবের তালাক আদায় করে নিতে সক্ষন হন। সব সাব্যস্ত, এজিদের সাথে জয়নাবের বিয়ে হবে। মোসলেম নামের একজন লোককে দিয়ে অফিসিয়েলি বিয়ের পয়গাম পাঠানো হয় জয়নাবের কাছে। পথে পয়গাম বাহক মোসলেমের সাথে দেখা হয় হজরত হাসানের। হাসান মোসলেমের কাছে জয়নাবকে বিয়ের প্রস্তাবের অনুরুধ করেন। জেনে শুনে এই কান্ড কেন? দেখা যাক হাসানের বউ কয়জন ছিলেন-
১) উম্মে কলসুম বিনতে আল-ফাজাল
২) খাওলা বিনতে মানজুর
৩) উম্মে বাশার বিনতে আল মাসউদ
৪) যায়েদা বিনতে আল-শাত বিন কায়েস (এই স্ত্রী হাসানকে বিষ পান করায়েছিলেন)
৫) উম্মে ইসহাক বিন তালহা
৬) জায়নাব বিনতে সা’বি বিন আব্দুল্লাহ (বলা হয়, যাকে নিয়ে বিষাদ সিন্ধুর রচনা, যে বিয়ের করুণ পরিণতি কারবালা)
৭) বাক্কলীইয়া
৮) জামীয়া
৯) সাফিয়া
এতো বউয়ের কী দরকার? নারী কি বাজারের গরু-ছাগল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আরেকজনের ঘটকের কাছে খবর দিবেন আপনিও তাকে চান। ঘরে এতগুলো বউ রেখে আরেকজনের সাব্যস্ত বউয়ের প্রতি নজর কেন? মুয়াবিয়ার শক্তিশালী সেনাবাহিনীর সাথে হাসানের সৈন্যদল যখন জীবন মরণ যুদ্ধে রত, হাসান তখন কোথায় ছিলেন জানেন? ভাই, অন্ধভাবে ভক্তি করলেই বাস্তবকে অস্বীকার করা যাবেনা, সত্য একদিন বেরিয়ে আসবেই।
@ আকাশ মালিক,
কি বলব? মন্তব্য করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। শুধু এটুকই বলব যে এটা আমার পড়া এখনো পর্যন্ত বেস্ট লেখা ( আমার দৃষ্টি কোন থেকে বলছি। অসাধারণ ইনফরমেটিভ একটা লেখা। এক নাগাড়ে ৬ টা পার্ট পড়ে শেষ করলাম।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই লেখাটার জন্য। সেই সাথে ফুলের শুভেচ্ছা। (F)
ভাইয়া আমি আপনাকে একটা ইমেইল পাঠিয়েছি একটু দেখবেন প্লিজ।
না বুঝে যদি কেউ কাউকে ভালো বলে তবে তার জন্য আল্লাহ শাস্তি দিবেন, আর নবী বংশের উপর কথা বললে সাবধান দুনিয়ার মানুষ ।
আমি আপনার কথা গুলি মানতে পারলাম না। এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আপনি কোন সত্য ঘটনাই জানেন না। যদি না জানেন তবে কোন প্রকৃত আউলিয়ার কাছ থেকে জেনে নিবেন। আর যিিন কলব জিন্দা করতে পারে তিনিই আউলিয়া।
যুক্তি খন্ডন ঃ হযরত মুয়াবিয়া ছিলেন একজন সাহাবী আর হযরত ইমাম হাসান আর হোসেন (রঃ) ফুলের মত পবিত্র ছিলেন। আর আজ পযর্ন্ত কোন ইসলামী মনিষি উনাদের নামে কোন প্রকার খারাপ কথা তাহাদের বইতে লেখেন।ি আপনি মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন ্।
@েমাজােম্মল,
আমি নিজের থেকে এসব লিখি নাই। যে সকল বই থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে তা ছবি সহ এখানে পাবেন।
@েমাজাম্মেল,
১ম থেকে শেষ পর্ব অর্থাৎ ৬ষ্ঠ পর্বে বিভক্ত অনুসন্ধানি এই লেখাটিকে ভূয়া প্রমাণ করার সাধ্য আমার জানা মতে বর্তমাণ দুনিয়ার কারো নেই। আমার স্নাতক পর্যায়ের লেখাপড়ার বিষয়ই ছিল ‘ইসলামের ইতিহাস’। অসংখ্য গাঁজাখুরি ইসলামের ইতিহাসের বই পড়ে পরীক্ষা দিয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারি কিন্তু আমি নিজেই ছিলাম কনফিউজড, জানতাম না এ ইতিহাস এতখানি সবিস্তারে। আকাশমালিকের এই লেখাটি একটি বিধ্বংসি অস্ত্র নিঃসন্দেহে ঐ সব মূর্খদের জন্য যারা এমন সুন্দর লেখাটি থেকেও প্রয়োজনিয় জ্ঞান অর্জন করতে পারল না। এই লেখাটি সত্যিই আমার ইণ্টারনেট চর্চার পূর্ণ সাফল্য এনে দিল। অনেক প্রশ্নের সঠিক জবাব আমি পেয়েছি এখান থেকে যা আমি বহুদিন ধরে খুঁজেছি। বহু ইসলামি পণ্ডিতকে (!) অনুরোধ করেছি সে সবের ব্যাখ্যা দিতে কিন্তু পাইনি বরং উলটো তারাই আমাকে নাস্তিক আখ্যায় আখ্যায়িত করেছে ওসব বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্য। ইসলামি শাস্ত্রে এই বিষয় গুলিকে ইচ্ছা করেই পাশ কাটিয়ে রাখা হয়েছে যাতে আসল ঘটণা কেউ জানতে না পারে। মূলত আমাদের বিশ্বাসে গাঁথা ইসলাম এক প্রকারের আমাদের দেশীয় মাজার বা খানকা ব্যবসার অনুরূপ। আজ এর বিশালত্ত্ব দেখে অবাক হবার কিছুই নেই। ভারতের কুম্ভ মেলা যেখানে লাখ লাখ নেংটো সাধু সন্নাসি পূন্য স্নানের উদ্দেশ্যে মিলিত হয় তার বিশালত্ত্বও ইসলামের হজ্জ্বের চাইতেও অনেক বেশী কিন্তু উদ্দেশ্য হিসেবে সেটাও ভূয়া। তাই বিশালত্ত্ব দিয়ে কোন কিছুর সত্যতা বিচার্য নয়। যে বিশ্বাস মিথ্যা কলুষিত স্থাপনার উপরে নির্মিত তার ভিত্তিমূলে না পৌঁছাতে পারলে সে বিষয়টিকে শ্রেষ্ঠ মনে হতেই পারে। আপনি আরো ভাল করে ভেবে দেখুন। প্রায় দেড় হাজার বছরের একটি ধর্মের বিকাশ পথে কত ঘটণাই আজ আমাদের অজানা। লেখক এখানে তার সাধ্যমত বিভিন্ন হাদিসের তথ্য সুত্র তুলে ধরেছেন। যে কোন ধর্মপ্রাণ মানুষের জন্য চট করে তার ধর্মের ক্ষত দেখে বিশ্বাস করাটা অত্যন্ত শক্ত তথাপিও সে সবের সাপেক্ষে সহিহ বা সর্বসম্মত সত্য হাদিসের বর্ণনা তো লেখাটিকে এক বিন্দুও মিথ্যা বলছে না, আমি নিজেও তা মিলিয়ে দেখেছি। আপনার কাছে এটা ভূয়া মনে হলে তার রেফারেন্স দিন, আমিও আপনার সাথে তার প্রতিবাদ করব কিন্তু রেফারেন্স ছাড়া শুধু কথার কথায় আমি আপনার মতের সাথে একমত মোটেই নই……..
ই বুক কবে পড়তে পারবো সেই অপেক্ষায় আছি । অত্যান্ত সুন্দর আর নিখুত একটা লেখা । 🙂
এই সব গল্পই টুকরো টুকরো করে অনেক জায়গায় পড়েছি। আজ একটানে পুরোটা পরলাম ধারাবাহিকভাবে একসাথে। খুব ভালো লাগলো। বইটা হয়ত ছাপিয়ে ফেলেছেন। সেটা সংক্রান্ত পোস্টে কেউ নির্দেশ করলে ভালো হয়।
আমার বেশ কিছু মন্তব্য ছিল। যেমন অন্তত উক্তির ক্ষেত্রে এবং বিতর্কিত তথ্যের ক্ষেত্রে পাদটীকা জরুরি। আর প্রয়োজন সঙ্গতি। একই ব্যক্তির নাম পর্বভেদে পরিবর্তিতভাবে লেখা হয়েছে। আর শেষ পর্বের এতগুলো ইংরেজি উক্তিকে বাংলা করে দিলেই বেশি ভালো হত। লিখায় ব্যক্তিগত মতামত বা বিশ্লেষণ যদি একেবারেই না থাকত, কোনো ক্ষতিই হত না। ইতিহাসটাই যথেষ্ট এর সম্পর্কে স্বাভাবিক সিদ্ধান্তে আসার জন্য।
অনেক সাধুবাদ আপনাকে এই কর্মের জন্য।
@ধ্রুব,
বইটা ই-বুক হিসেবে আমাদের সাইটে রাখা আছে। আমার ধারণা মূল বইয়ে আকাশ মালিক অসংখ্য পাদটীকা যোগ করেছেন। পুরো বইটা পাবেন এখানে –
যে সত্য বলা হয়নি – আকাশ মালিক
বই আকারে বেরুনোর কথা শিগগীরই। আকাশ মালিক ভাল বলতে পারবেন এ ব্যাপারে
@অভিজিৎ,
লেখা গুলি হাতে পেয়ে কি যে আনন্দ হচ্ছে বলে বুঝাতে পারব না। সবগুলি PDF ফাইল ডাউনলোড করেছি কিন্তু বোকার স্বর্গ PDF ফাইলটি পর পর দুই বার ডাউনলোড করেও কি এক অজ্ঞাত কারণে খুলতে পারলাম না। ওটা পড়ার জন্য মনটা আনচান করছে খুব। প্লিজ হেল্প করুন……..
[…] ৬ষ্ট পর্ব […]
Thanks a lot to Akash Malik, for such a Book. I don’t know this Book will be published in Bangladesh or not. So I copied it and distribute among my friends [Who don’t have internet access and those don’t want to see it from net – Apologies for this type of unauthorized copy]. Once again Thanks to Mukto Mona and Avijit Daa. Special thanks to Akash Malik again for reference, but I can’t read/understand Urdu or Arabics.
বিরুদ্ধমত মোকাবেলার ইসলামী সমাধান হচ্ছে হত্যা। আয়েশার কাফেলা থেকে পৃথক হয়ে যাওয়া নিয়ে মক্কার যে সকল কবিকুল কাব্য চর্চায় মেতেছিলেন তাদের পরিনতি কাকতালীয় ভাবে হুমায়ুন আজাদের মত হয়েছিলো। মুতাজিলাদেরও একই পরিনতি হয়েছিলো। কিন্তু সৌভাগ্য যে মানুষটাকে হত্যা করা গেলেও তার ছুড়েদেয়া যৌক্তিক প্রশ্নগুলো মহাকালের গায়ে খোদাই হয়ে যায়। সেটাই আমাদের আনুপ্রেরনা। আশাকরি আমরা থেমে যাব না।
তথ্য বহুল, সুন্দর লেখাটির জন্য ধন্যবাদ। পরবতির্ সময়ে এই ধরনের অারো মজার মজার লেখা উপহার দেেবন আশা রাখি।
জানি এবারের বই মেলায় বের হচ্ছে আপনার বই। কি নামে ও কোন প্রকাশনী থেকে বের হচ্ছে জানালে খুজে পেতে সুবিধা হতো।
বিশাল ফ্যান আমি এই নিবন্ধের। অনেকজনকে পড়ালাম। আচ্ছা, প্রকাশিতব্য বইটার নাম জানতে পারি?
(আলোচনার সুবিদার্থে রায়হান আবীরের মন্তব্যটি পঞ্চম পর্ব থেকে শেষ পর্বে স্থানান্তরিত হল – মডারেটর)
@রায়হান আবীর,
বইটির নাম এখনো সাব্যস্ত হয়নি। অন্যান্য প্রবন্ধ নিয়ে যথাস্থানে টিকা, ফুটনোট সহকারে সম্পূর্ণ বইটি পি ডি এফ আকারে, সম্ভবত বাংলাদেশে প্রকাশের আগে ‘মুক্ত-মনা’য় প্রকাশ করা হবে। আমার সহকারি বন্ধু ‘টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া’ হৈন্য হয়ে দৌড়াচ্ছেন, কোন প্রকাশক বইয়ের লেখার সাথে দ্বিমত পোষন না করলেও মৌলবাদীদের ভয়ে বইটি প্রকাশে সম্মত হচ্ছেন না। অনেক শুভানুধ্যায়ী ই-মেইল করে পরামর্শ দিয়েছেন নতুন সরকারের অবস্থা পরখ করে বাংলাদেশে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্যে।
লেখাটি পড়ার জন্যে সকল পাঠকবৃন্দকে এবং ‘মুক্ত-মনা’য় প্রকাশের জন্যে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
-আকাশ
@Akash Malik, সংগ্রহে রাখার মতো একটা বই হবে। অপেক্ষায় থাকলাম। মৌলবাদীদের ব্যাপারটা আসলে ইগনোর করার মতো না। ঝামেলা ওরা বাধাবেই। 🙁
@Akash Malik,
আপনার লেখাটি পড়ে সত্যিই আমি অভিভুত হয়েছি। এক অসাধ্য সাধন করেছেন আপনি। নিশ্চই এটি এত দিনে বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। হয়ে না থাকলেও আশা করি একদিন না একদিন হবেই। বই আকারে প্রকাশিত হয়ে থাকলে কোথায় ও কি নামে তা পাব বিস্তারিত জানাবেন। আর ই-বুক থেকে ‘বোকার স্বর্গ’ অধ্যয়টি ডাউন লোড করে দেখলাম PDFটি ওপেন হচ্ছে না, অন্যগুলি হচ্ছে। ওটার বিষয়ে একটু খেয়াল করবেন। দারুণ এই নিবন্ধটির জন্য আপনাকে যে কি বলে যে অভিবাদন জানাব সত্যিই ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আপনি আমার হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে অকৃত্রিম শুভেচ্ছা গ্রহন করুন। মৌলবাদিদের আস্ফালন আগেও ছিল এখনও আছে। আজ থেকে ১৪৪০ বছর আগের পরিবেশ সম্বন্ধে তা দেখে অনুমান করাও সম্ভব। ভিন্ন মতকে দমন করতে তারা আজও তৎপর কিন্তু এখন মনে হয় অতটা সহজ নয়। আজকের যুগের ইণ্টারনেটকে দমিয়ে রাখা যে ওদের দ্বারা সম্ভব নয়। তাই বইটি যতদিন না বই আকারে প্রকাশিত না হয় তত দিন এটা সুবিধা জনক ভাবে ই-বুক আকারেই থাকুক আগ্রহি পাঠকদের জন্য। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই নিবন্ধটি এক বিশাল আলোড়ন তুলবে। প্রথম দিকে অনেকেই না বুঝে অনেক প্রতিক্রিয়া দেখাবে কিন্তু তাদের ভিতরে কিছু প্রশ্ন চোরকাঁটার মত গেঁথে যাবেই। গত ১৪০০ বছর ধরে যে মিথ্যাটিকে ধ্রুব সত্য জ্ঞাণে তপস্যা করেছি আমরাই তাকে হঠাৎ করে মিথ্যা হিসাবে আবিষ্কার করা যে কোন আমাদের মত ধর্মপ্রাণ মানুষের পক্ষে খুবই কষ্টের। ভেজাল খেতে খেতে আমাদের মন মগজ সবই ভেজাল হয়ে গেছে তাই আসল আর নকলের প্রভেদ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। অনেক দূষ্প্রাপ্র প্রশ্নের উত্তর আমি খুঁজে পেয়েছি আপনার লেখাটি থেকে আর সেই সাথে বুঝতে শিখেছি মানুষ হিসাবে এই দূর্লভ জীবনের মূল্য। আমিও চাই মানুষ খাঁটি ধার্মিক না হয়ে সত্যিকারের মানবিক বোধ সম্পন্ন মানুষ হয়ে উঠুক। দুনিয়া জুড়ে হাজারো ধর্ম আজ মানুষকে হায়েনার চাইতে পিশাচ আর উন্মত্ত করে মানুষে মানুষে যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে সেই মিথ্যা ধর্ম-বর্ম ভেঙ্গে খান খান হয়ে যাক। মুক্ত হয়ে যাক মানুষ মানুষের কাছে। পৃথিবীতে সত্যিই ধর্ম বলে কিছুই নেই, এ উপলব্ধিটুকু মেনে নিতেই ধর্ম শাসনের বেড়ি পরা মানুষের বুঝতে কিছুটা সময় লাগবে। আমরা সেই শুভ দিনের অপেক্ষায় আছি যেদিন সারা পৃথিবী হয়ে যাবে এক রাষ্ট্র একই মুক্তধরার মানুষের। ধন্যবাদ আপনাকে, ভাল থাকবেন।
আমি আকাশ মালিককে তার মূল্যবান গবেষণালব্ধ সিরিজটি মুক্তমনায় প্রকাশের জন্য আন্তরিক অভিবাদন জানাচ্ছি। তার প্রচেষ্টা সত্যই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।