হে নাস্তিক, তোমাকে ভালবেসে

হে নাস্তিক, তোমাকে ভালবেসে হেমলকের পেয়ালা শুষেছি,
সমাজের মুখে চুনকালি মেখে, ট্রয় ছেড়ে হিপ্পি হয়েছি,
গীটার ভর্তি নেশা নিয়ে হেঁটেছি সান ফ্রান্সিস্কোর পথে পথে… ।

হে নাস্তিক, তোমাকে ভালবেসে বাকেট লিস্ট করেছি,
রেড লাইট স্ট্রিট, সি গ্রেড সিনেমা, কেরু, গাঁজা, ন্যুডিজম,
ইরোটিক, ঠিক-বেঠিক, আব-জাব … সব রেখেছি।

হে নাস্তিক, তোমাকে ভালবেসে উৎচ্ছন্নে গেছি ,
অগ্নি সাক্ষী রেখে লিভ টুগেদারের প্রতিজ্ঞা করেছি,
পরকাল ছেড়ে ইহকালীন হয়েছি, ছেড়েছি শান্তির ছায়াতল ।

হে নাস্তিক, শুধু তোমাকে ভালবেসে নিজেকে শস্যক্ষেত্র বানাইনি,
শরীর বাদে মনের পর্দা করেছি, তেঁতুলের ফতোয়া অস্বীকার করেছি,
নিজেকে দিয়েছি সর্বোচ্চ সম্মান।

হে নাস্তিক তোমাকে ভালবেসে,
ফেরদৌস এর প্লট বেচে হাবিয়ায় বুকিং দিয়েছি,
স্ব-সম্মানে অস্বীকার করেছি,তোমার হুরেদের সর্দারনী হতে।
শুধু তোমাকে ভালবেসে , শুধু তোমাকেই ভালবেসে।

কাজলী মেয়ে

ও কাজল চোখা মেয়ে,
অকারণ উদাস কেন,
কাহার পানে চেয়ে?

কাজল চোখা মেয়ে,
ঠাশ বুনটের অন্ধ শহর,
নোনতা নোনতা চুমুক প্রহর
খুব লুকানো স্মৃতির বহর
বুকের খাঁদে নোনতা নহর
সব জানি গো মেয়ে।

উষ্ণ উগ্র স্রোতা জলে,
হাওয়া চলুক তোমার পালে
ফাগুণ রঙা আগুন লাগুক
রঙচটা এক দেয়ালে
আপত্তি কি?

অধম বন্ধু

আমাদের বন্ধুত্বের কোন জাত ছিল না,
কোন একটা পরিচয় হয়ত দেয়া যায়,
তাতে জগতের কিছুই উদ্ধার হবে না।

তুই বলিস, সব কিছুর জাত থাকতে হবে কেন?
আমি লক্ষি মেয়ের মত মেনে নিয়েছি।

যতবার হোঁচট খেয়েছি তুই সামলে নিয়েছিস,
যতবার খাঁদের কিনারায় গেছি,
তুই হ্যাঁচকা টানে তুলে নিয়েছিস।

অথচ উড়াল পঙ্খী হয়ে তোকে ডাকিনি
তুই হেসেছিস, বলেছিস মাটিতে নামলে খবর দিস
ততদিনে তোর দুঃখগুলো রোদে শুকিয়ে রাখব,
ভেজা দুঃখে তোর ঠান্ডা লাগে, সে কথা কি আমি জানি না!

আমি আজীবন তোর অধম বন্ধু-ই থেকে গেলাম
আর তুই অধমের আলো হয়েই আগলে রাখলি।

ও কিছুই না-১

একটা প্রাপ্তি পথ হারিয়ে, অপ্রাপ্তি-ই থাকুক
মাঝ দুপুরে একটা কাক, একলা না হয় ডাকুক
একটা ছেলে না-ই বা হল, একটু এলোমেলো
একটা মেয়ের এ সব ভেবে, কি-ই বা এসে গেলো !
একটা বই এর মলাট ছেঁড়া, তাতেই বা কি?
এক আনার গল্প হল, ষোল আনাই বাকি ।

হে শুভব্রত

হে শুভ, হে শুভব্রত,
আমার মত পথ ভ্রষ্টদের জন্য যে নির্দেশিকা আপনি রেখেছেন,
স্বল্প জ্ঞানে পুরোটা বোঝার ক্ষমতা তুচ্ছ মনুষ্যের নেই ।
তবুও আপনার জীবন বিধান, আপনার নির্দেশিকা, রোজ তিলাওয়াত করি,
তাফসিরে ভারাক্রান্ত হয় হৃদয়, আপনি প্রেমশীল, পরম প্রেমালু।
হে শুভ,
আপনি দিয়েছেন প্রেমরস, প্রণয়ের সুবাস,
আপনি পাপীদের জন্য রেখেছেন পেমহীন কাম এর কঠিন শাস্তি,
আর পুণ্যবানদের জন্য বরাদ্দ, প্রেহেস্ত ।
সে প্রেহেস্ত এ আছে, প্রেম এর নহর, আর অনন্ত কাম।
সবই আপনার, শুধু আপনার দয়া ।
আমিন!

এই আমি

ওয়ালেটে থাকে খুচরো জোনাক ,
রদ্দুর ভরা বুক
স্বপ্ন সেখানে চুমু দেয় রোজ
লুটোপুটি খায় সুখ।
টাকাকড়ি নেই তবুও ধনী
বন্ধু শত শত,
জীবন যাচ্ছে বেহিসাবে
যেন,পাতা ওড়াবার মত।
স্বপ্ন তোমাদের স্কাই হাই
আমি খুঁজি মেঘ,
হয়ত আমি মানুষ-ই নই
পুরোটাই আবেগ ।

ও কিছু না-২

একলারও একটা ‘এক’ থাকে
নিখোঁজেরও থাকে ‘খোঁজ’,
নিরুদ্দেশ এর ‘উদ্দেশ্য’’ থাকে
সুবোধ হারায় ‘রোজ’ ।
শূন্যের মাঝে ‘অসীম’ থাকে
স্মৃতিরও থাকে ‘ফ্রেম’
তুমিহীন মানে, তুমি আছ
অপ্রেমেও থাকে ‘প্রেম’।

ও কিছু না-৩

ভালবেসে যবে সেজদা দিয়েছ, ব্রহ্মাণ্ড করেছ পর,
হৃদয়খানা আজ থেকে তবে, তোমার কাবাঘর ।
জানি কখনো পথ ভুলে যাবে, মেঝেতে জমবে ধুলো
কাফের চোখ ঝাপসা হবে, জমে স্মৃতিগুলো

মেয়েটি অহংকার ভালোবেসেছিল

বহুকাল আগে, রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস আপডেট করেছি,
বড় বড় করে লিখে দিয়েছি , রিলেশনশিপ উইথ “অহংকার” !
ও আমার ফুয়েল, ও আমার একমাত্র প্রেম।
যেদিন অহংকারে সাথে আমার উপাধি জুড়েছি ,
সেদিন লোকে বলেছে , তোমার ধ্বংস নিশ্চিত।
তুমি পতনের মূলে যাবে । তুমি ভস্ম হবে ।
ওরা কি জানে ?
আমি সেই মূলে-ই যেতে চাই, ধ্বংসের আগুনে পুড়ে ভস্ম হতে চাই ,
পতনের সীমান্তটা অতিক্রম করতে চাই ।
সবাই ঊর্ধ্বগামী, আমি না হয় পতনাসক্ত, ‘’উল্টো’’ পথিক ।
অহংকার যতদিন আমার পায়ে চুমু দেবে, ততদিন আমি মানুষ থাকব ।
তারপর আমার মৃত্যু হবে, অহংকারের বুকেই সমাধি হবে ।
সমাধি ফলকে লেখা থাকবে “ মেয়েটি অহংকার ভালোবেসেছিল”