গতকাল ৩ ডিসেম্বর চিরবিদায় নিলেন অভিজিৎ রায়ের মা এবং অধ্যাপক অজয় রায়ের স্ত্রী শেফালী রায়। দীর্ঘদিন থেকে তিনি অসুস্থতায় ভুগছিলেন। পুত্র অভিজিৎ রায়ের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ধকল আর কখনো কাটিয়ে উঠতে পারেন নি।
সারাটি জীবন তিনি সার্বক্ষণিক সঙ্গী ও সাক্ষী হয়ে ছিলেন অধাপক অজয় রায়ের বর্ণিল ও সংগ্রামী জীবনের।
তাঁর মরদেহ দান করা হয়েছে ঢাকার আদ-দ্বীন হাসপাতালে।
‘আমার মা খুব সাধাসিধে আটপৌরে জীবন যাপনে অভ্যস্ত। যত ঝুট-ঝামেলা এড়িয়ে সবার সাথে মানিয়ে শুনিয়ে থাকতে পারাতেই তার শান্তি। তার জীবনের উদ্দেশ্য সংসারটাকে ঠিক রাখা আর আমাদের দু-ভাইয়ের মঙ্গলেই সীমাবদ্ধ। ওই যে ছোটবেলায় কিছু প্রবচণ পড়েছিলাম না – ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে’ – আমার মা ছিলেন এই প্রবচণ বাস্তবায়িত করার প্রচেষ্টার সার্থক প্রতিভূ। ছোটবেলা থেকে তাইই দেখে এসেছি। তা না হয়ে উপায়ও ছিল না।’
-অভিজিৎ রায়
(৬.২২.২০০৯/তিনি বৃদ্ধ হলেন/মুক্তমনা ব্লগ)
অভিজিৎ খুন হয়ে না গেলে দেখত যে মা শেফালী রায় পৃথিবীর বাকি সব মানুষের উদ্দেশ্যে, তাদের কাজে লাগতে নিজের নিথর দেহখানিও দান করে গেছেন। মা হয়ত বা ছেলের কাছেই শিখেছেন ও করেছেন উচিৎ কাজটি।
ওরা শুধু দিয়েই যায়, অন্যের তরে।
শ্রদ্ধাঞ্জলি।
বড় আশচর্যের ব্যাপার বাংলাদেশের কোনো দৈনিক পত্রিকায় এ খবরটি দেখলাম না। অন্তত আমার চোখে পড়েনি। তারা সবাই কি ইচ্ছে করেই খবরটা ছাপালো না?
সম্ভবত ২০০৬ সালে অজয় স্যারের সাথে দেখা করতে তাঁর বাসায় গিয়েছিলাম। তখন এক মুহূর্তের জন্য দেখা হয়েছিল শেফালী রায়ের সাথে।
আজ অভিদা বেচে থাকলে হয়ত তাকে সান্তনা দেয়ার কথা ভাবতাম…
হ্যাঁ, মানুষ এক সময় মারা যায়, কিন্তু পুত্র হারানোর মত এক বিশাল দু:খ এবং এর সাথে হত্যার বিচার না দেখে যাওয়ার কষ্ট নিয়ে চলে গেলেন। জানিনা সে দু:খের মাত্রা কতটা ছিল, কতটা ছিল সে মর্মবেদনা। শুধু অনুমান করতে পারি তাঁর কিয়দাংশ।
অজয় স্যার বড্ড একা হয়ে গেলেন।
বিনম্র শ্রদ্ধা, রত্নগর্ভা!