লিখেছেন: অতনু চক্রবর্তী

একটি দেশের মেরুদণ্ড হচ্ছে সেই দেশের বুদ্ধিজীবী ও মেধাবী সন্তানেরা। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যখন বুঝতে পারে বাংলাদেশের কাছে তাদের পরাজয় আসন্ন তখন তারা বাংলাদেশের মেধাবী সন্তানদের হত্যা করে বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়ার এক নীল নকশা প্রণয়ণ করে। এই ষড়যন্ত্রের বলি হিসেবে শহীদ হয়েছেন আমাদের অসংখ্য মেধাবী মানুষেরা যাদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে বড্ড প্রয়োজন ছিল। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সেই ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞ থেকে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া একজন গুণী মানুষের কথা বলতে বসেছি। তিনি আবদুস সাত্তার খান।

আবদুস সাত্তার খান (From Wikipedia, the free encyclopedia)

আবদুস সাত্তার খান ছিলেন একজন বিশ্ববিখ্যাত বাঙালি রসায়ন বিজ্ঞানী। ১৯৪১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় নবীনগর উপজেলার খাগাতুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শৈশবেই তাঁর পিতৃবিয়োগ ঘটে। এর পরে তাঁর ছেলেবেলা কাটে নানার বাড়িতে ।

সেই সময়ের বাংলাদেশের অনগ্রসর এক গ্রাম থেকে পড়ালেখার প্রাথমিক ধাপ শেষ করাটা খুব সহজ ছিল না।কিন্তু সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে বাড়ি থেকে অনেক দূরের পথ পাড়ি দিয়ে আবদুস সাত্তার খান স্কুলে যেতেন। তাঁর পড়ালেখায় সর্বদা অনুপ্রেরণা যোগাতেন তাঁর মা। যুক্তরাষ্ট্রের পামবিচ পোস্ট পত্রিকায় এই প্রসঙ্গে তিনি নিজেই বলেছেন,

“ জ্ঞান অর্জনই ছিল আমার সারা জীবনের লক্ষ্য। মায়ের কথা আমার মনে পড়ে। আমি যাতে ক্লাসে প্রথম হই—এই আশায় মা রাতের পর রাত জেগে কাটিয়েছেন। বাড়ির কাছ থেকে দুই মাইল দূরের স্কুলে কাদা, খাল আর দিগন্তছোঁয়া ধানখেত পেরিয়ে স্কুলে যেতাম। স্কুলে মাথার ওপর জীর্ণ ছাদ, সামান্য বৃষ্টিতেই পানি চুইয়ে পড়ত। ভিজতাম, কিন্তু শিক্ষকেরা নিষ্ঠার সঙ্গে শিখিয়েছেন গণিত, বিজ্ঞান আর বাংলা।”

তিনি পড়ালেখা করেছেন রতনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে।এই বিদ্যালয় থেকে তিনিই প্রথম জুনিয়র বৃত্তি পান।মাধ্যমিকে এই বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়া প্রথম ছাত্রটিও তিনি। এরপর তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হলেন এবং সেখান থেকেও যথারীতি কৃতিত্বের সাথে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পড়বার জন্যে তিনি বিষয় হিসেবে বেছে নিলেন রসায়ন কে। রসায়নে তিনি ১৯৬২ সালে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে স্নাতক ও ১৯৬৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করলেন। ১৯৬৮ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি এইচ ডি সম্পন্ন করবার পড় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ই রসায়ন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর যোগ দেবার অব্যবহিত পরেই শুরু হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধ। সৌভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান হানাদারবাহিনীর হাত থেকে। এরপরে ১৯৭৩ সালে সংকর ধাতু প্রকৌশল সম্বন্ধে উচ্চতর লেখাপড়ার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।
আবদুস সাত্তার খান যখন উচ্চতর গবেষণার উদ্দেশ্যে দেশের বাইরে পাড়ি জমান তখন সারা বিশ্বেই জেট ইঞ্জিন সম্পর্কিত প্রচুর গবেষণা হচ্ছিল। রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের বিমান আবিষ্কারের একদম গোড়ার দিক থেকেই বিমানে পিস্টন ইঞ্জিন ব্যবহৃত হত। কিন্তু এই ইঞ্জিনের অনেক গুলি অসুবিধা ছিল। সবচে বড় অসুবিধা দুটি ছিল ঘর্ষণের ফলে পিস্টনের ক্ষয় হয়ে যাওয়া এবং পিস্টনের ইঞ্জিনের মাধ্যমে চালিত বিমানের সীমিত গতি। আর তাই বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে যখন ফ্রাংক হুইটলে নামক একজন ব্রিটিশ বিমান বাহিনীর কর্মকর্তার সুবাদে বিশ্ব জেট ইঞ্জিনের সাথে পরিচিত হল তখন তা প্রযুক্তির গতিময়তা ও অগ্রসরতার পথে একটি মাইলফলক স্থাপন করল।

জেট ইঞ্জিনের ক্রিয়াকৌশলের মূল ধারণাটি স্যার আইজ্যাক নিউটনের তৃতীয় সূত্রের উপর ভিত্তি করে দাঁড় করানো।খুব সহজভাবে বলতে গেলে, জেট ইঞ্জিন হলো এমন এক প্রকার ইঞ্জিন যা বায়ুমন্ডলের বাতাসকে এর ভেতরে টেনে নিয়ে প্রথমে ঘনীভূত করে এবং পরে জ্বালানী মিশ্রিত করে বিষ্ফোরণের মাধ্যমে প্রসারিত করে এর পেছন দিক দিয়ে নির্গত করে দেয়। ইঞ্জিনের পশ্চাতের নির্গমপথ দিয়ে তীব্র বেগে গ্যাস বের হবার সময় নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী এই গ্যাস যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, তা-ই ইঞ্জিনকে সামনের দিকে চালনা করে।

তাত্ত্বিক ভাবে একটি জেট ইঞ্জিনের তিনটি অংশ থাকে।

কমপ্রেসরঃ ইঞ্জিনের এই অংশে বায়ু গ্রহণ করা হয়।কম্প্রেসরের সামনে থাকা একটি বিশেষ ডিজাইন সম্পন্ন ফ্যানের সাহায্যে বাইরে থেকে টেনে আনা বায়ুকে উচ্চ চাপে সংকুচিত করা হয়।

দহন কক্ষঃ এখানে জ্বালানির দহন সম্পন্ন হয়। উচ্চ চাপ যুক্ত বায়ু কমপ্রেসর থেকে দহন কক্ষে প্রবেশ করলে জ্বালানী ধারক থেকে ধীরে ধীরে প্রবেশকৃত জ্বালানীর দহন সম্পন্ন হয় যা প্রচণ্ড তাপের (প্রায় ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) সৃষ্টি করে। এই ভীষণ উত্তাপের ফলে সংকুচিত গ্যাস হঠাৎ প্রসারিত হয়ে যায় এবং ইঞ্জিনের পেছন দিয়ে প্রচণ্ড বেগে বাইরে নির্গত হয়।

টারবাইনঃ দহন কক্ষে দহন সম্পন্ন হওয়ার পর প্রচণ্ড উত্তপ্ত গ্যাস (Exhaust Gas) বাইরে নির্গমণের সময় বিশেষ ভাবে বাঁকানো একটি টার্বাইনের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং বায়ু প্রবাহের ফলে এই টার্বাইন টি ঘুরতে থাকে। জেট ইঞ্জিনের পেছনের অংশে থাকা এই টারবাইনটি একটি শ্যাফটের মাধ্যমে কমপ্রেসর ও সামনে থাকা ফ্যানটির সাথে যুক্ত থাকে। ফলে বাইরে নির্গমণ কৃত গ্যাস (Exhaust Gas) প্রভাবে যখন টার্বাইনটি ঘুরতে শুরু করে , তখন টার্বাইনের সাথে সাথে এর সাথে যুক্ত কমপ্রেসর ও ফ্যানটিও ঘুরতে থাকে আর তাই প্রাথমিক অবস্থায় ইঞ্জিনটিকে একবার চালু করে দিলে জ্বালানী সরবরাহ বন্ধ না হওয়া অবধি ইঞ্জিনটি নিজে নিজেই চলতে থাকে।

জেট ইঞ্জিনের মূল সুবিধা হল এটির শক্তি-ভর অনুপাত এর পূর্বে প্রচলিত বিভিন্ন ইঞ্জিনের তুলনায় অনেক বেশি। অর্থাৎ এটি এর ভরের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকরী শক্তি উৎপাদন করে।

কিন্তু অসুবিধা হল জেট ইঞ্জিনের এই দহন কক্ষ আর টারবাইনে যে প্রচণ্ড উত্তাপের সৃষ্টি হয় তা ইঞ্জিন তৈরিতে ব্যবহৃত প্রচলিত ধাতুগুলির পক্ষে সহনীয় নয়। সুতরাং ইঞ্জিনের দক্ষতাকে বাড়াতে হলে এবং সর্বোচ্চ পরিমাণ কার্যকরী শক্তি পেতে গেলে এমন কোন উপাদান দ্বারা এই সকল অংশকে তৈরি করতে হবে যেগুলি প্রকৃতপক্ষে উচ্চ তাপ সহনীয়, টেকসই এবং জেট ইঞ্জিনে ব্যবহারের জন্যে যথাযথ কার্যকরী। সংকর ধাতু এই ধরণের গুণাগুণ সম্পন্ন হওয়ায় ঠিক এই কারণেই জেট ইঞ্জিন তৈরিতে ধীরে বিভিন্ন ধরণের এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছিল এবং বিজ্ঞানীরা আরও অধিক কার্যকরী শক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে উন্নততর সংকর ধাতু উদ্ভাবনে গবেষণা করছিলেন। তাই এই সংকর ধাতু প্রকৌশল নিয়ে গবেষণার লক্ষ্যে আবদুস সাত্তার খান ও যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে যোগদান করেন। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানী মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এমস (AMES) গবেষণাগারে তিনি যুক্ত হন।

১৯৭৬ সালে তিনি যোগ দেন সেই সময়ে মহাকাশযান সম্পর্কিত গবেষণার জন্য বিখ্যাত নাসা লুইস রিসার্চ সেন্টার গবেষণাগারে ( বর্তমানে এটি নাসা জন এইচ গ্লেন রিসার্চ সেন্টার নামে পরিচিত)। এখানে থাকার সময় রকেট ইঞ্জিনে ব্যবহৃত সংকর ধাতু নিয়ে গবেষণা করেন তিনি। ১৯৭৮ সালে তিনি প্রাট ও হুইটনির অর্থায়নে মার্কিন যুদ্ধবিমান এফ-১৫ ও এফ -১৬ এর ইঞ্জিনের জন্যে নিকেল ও তামার সংকর ধাতু নিয়ে উল্লেখযোগ্য গবেষণা করেন। এ সময় তিনি উচ্চ শক্তি সম্পন্ন এক ধরণর নিকেল ভিত্তিক সংকর ধাতু (high strength nickel based alloys) উদ্ভাবন করেন। এই সংকর ধাতু ব্যবহারে ইঞ্জিনের জ্বালানি দক্ষতার অভূতপূর্ব বৃদ্ধি ঘটে। তার এই আবিষ্কারের জন্যে তিনি ১৯৮৬ সালে “United Technologies Special Award” অর্জন করেন। পরবর্তীতে উন্নত বিমান ইঞ্জিন তৈরিতে এটি একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

পরবর্তীতে তিনি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আলস্টমে যোগ দেন। এখানে তিনি দ্রুত গতির ট্রেনের উচ্চতর দক্ষতা সম্পন্ন ইঞ্জিনের জন্য সংকর ধাতু তৈরিতে গবেষণা করেন।

আবদুস সাত্তার খান তার পুরো কর্মজীবনে চল্লিশটির ও বেশি বিভিন্ন ধরণের সংকর ধাতু উদ্ভাবন করেছেন। জেট ইঞ্জিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশে কিংবা অন্যান্য বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত গ্যাস টারবাইন তৈরিতে উচ্চতর তাপসহিষ্ণু এইসব সংকর ধাতু পরিবেশ বান্ধব এবং টেকসই হওয়ায় এদের ব্যবহার বহুল প্রচলিত এবং বিস্তৃত। বাণিজ্যিকভাবে এইসব সংকর ধাতু ব্যবহৃত হয় স্পেস শাটলে ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর বিভিন্ন ধরণের বিমান তৈরিতে। তার উদ্ভাবিত এইসব সংকর ধাতুর আরেকটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল এদের স্বল্প ভর। এসকল সংকর ধাতু দ্বারা তৈরি বিমান ইঞ্জিনগুলি হালকা হওয়ায় তা বিমানকে আরও দ্রুত গতিসম্পন্ন করে তোলে। আলস্টমে থাকবার সময় তার উদ্ভাবিত সংকর ধাতুগুলি দ্রুত গতির ট্রেন ইঞ্জিন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

অসম্ভব মেধাবী এই মানুষটি তার সমগ্র গবেষণা জীবনে বিভিন্ন বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান থেকে সম্মাননা ও পদকে ভূষিত হয়েছেন।১৯৯৩ সালে আবদু সাত্তার খান জেট ইঞ্জিনের তলা ক্ষয়ে যাওয়া রোধে আচ্ছাদন তৈরির বিশেষ কৌশল উদ্ভাবনের জন্যে “ প্রাট এণ্ড হুইটনি” থেকে বিশেষ সম্মাননা প্রাপ্ত হন। ১৯৯৪ সালে উচ্চগতিসম্পন্ন জেট বিমানের ইঞ্জিন ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ‘ইউনাইটেড টেকনোলজিস রিসার্চ সেন্টার অ্যাওয়ার্ড অব এক্সিলেন্স’ পদকে ভূষিত হন। ১৯৯৬ সালে যুক্তরাজ্যের রয়েল সোসাইটি অব কেমিস্ট্রি থেকে আবদুস সাত্তার খান ফেলো হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্য থেকে পেশাজীবী বিজ্ঞানী হিসেবে রয়েল সোসাইটি অব কেমিস্ট্রি থেকে স্বীকৃতি পান তিনি। শুধু তাই নয় যুক্তরাষ্ট্রের সোসাইটি অব মেটালসেরও সদস্য তিনি।

পেশাদার বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়ার পরও তার বিজ্ঞান সাধনা থেমে থাকেনি।
অবসর নেওয়ার পর কর্মযোগী এই মানুষটি অধ্যাপক হিসেবে ফ্লোরিডা স্টেটস ইউনিভার্সিটিতে যন্ত্রকৌশল বিভাগে যোগ দেন। এখানে তার প্রচেষ্টায় নির্মিত হয় কার্বন ন্যানো টেকনোলজি-সম্পর্কিত বস্তুগত বিজ্ঞান ও জৈব রাসায়নিক প্রযুক্তির প্রয়োগের ওপর একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান।

দেশ থেকে যাওয়ার পর ও এই মানুষটি দেশকে ভোলেন নি। ১৯৯১ সালে বন্যা দুর্গত মানুষের সাহায্যের জন্যে তিনি দেশের বাইরে থেকেই ৬১০০০ ডলার সংগ্রহ করেন এবং রেড ক্রসের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রেরণ করেন। তার প্রচেষ্টাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং টেক্সাসের লামার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপন হয় যার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং গবেষকগণ সেখানে গিয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ এবং গবেষণা করতে পারেন।

গোটা বিশ্বকে দুহাত ভরে দিয়েছেন তিনি। অসংখ্য সম্মাননা ও পদকের জীবনের বিভিন্ন সময়ে তার নামের সাথে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন অসামান্য আবিষ্কারের মালিকানা। বিশ্বের যে কোন প্রান্তে খুব সহজে পৌঁছে যাওয়ার এই দিন আর এই গতিময় , ছন্দবদ্ধ বিজ্ঞানের যুগ আনবার এই যাত্রায় আবদুস সাত্তার খান ছিলেন একজন অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব যার অবদান অনস্বীকার্য। ২০০৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তিনি পরলোকগমন করেন। কেউ কি ভেবেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অচেনা অজানা কোন এক খাগাতুয়া গ্রামের ধানক্ষেতের সীমানা দিয়ে ঝড়বৃষ্টির মাঝেও কোন রকমে স্কুলে যাওয়া সেই ছেলেটি, রাত জেগে হারিকেনের টিমটিমে আলোয় চোখে উজ্জ্বল স্বপ্ন বুনে অধ্যবসায়ী মেধাবী সেই কিশোরটি বিশ্বনন্দিত বিজ্ঞানী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবেন অনুপ্রেরণার এক অন্যতম দৃষ্টান্ত হিসেবে যার হাত ধরেই লেখা হবে বিজ্ঞানের গতিময়তার আধুনিক অধ্যায়ের বড় একটি অংশ ! আর তাই তিনি না ফেরার দেশে চলে গেলেও তার কর্মযজ্ঞময় জীবন আমাদের কাছে উদ্দীপনার বাতিঘর হিসেবে সদা জাজ্বল্যমান হিসেবে জাগরূক থাকবে।

সহায়িকাঃ

১। https://www.thedailystar.net/news-detail-25481
২।https://www.nasa.gov/centers/glenn/about/history/lewisfld.html?linkId=33661894
৩। http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2012-08-24/news/283264
৪। পপুলার সায়েন্স , জুন ১৯৯০
৫। https://www.youtube.com/watch?v=ZxTMi9GJQIo